টুপি দাড়ির সউদি ঝড় কেটে যাবার পর বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিবিসির সামনে উদয় হয়েছেন। সাক্ষ্যাৎকারে তিনি বলেছেন নতুন ‘ব্লাসফেমী’ আইনের নাকি প্রয়োজনই নেই। টুপি দাড়ির সউদি পঙ্গপালের সামনে দুর্দম সাহসে দাঁড়ানো বাংলার জনগন, যারা শেখের বেটির এই বক্তব্যে বগল বাজানোর আনন্দে ভুগছেন, তাদের বলি.. ‘একটু দাঁড়ান ভাইজান, নতুন কোন আইন হবে না, তিনি বলেছেন। তার মানে এই নয় বাংলাদেশে ব্লাসফেমী আইন ইতোমধ্যেই নেই। ভুলে যাবেন না, বস্তাপঁচা ২৯৫ক ধারা আদতে একটি ব্লাসফেমী আইন’।
বিশ্বের কিছু কিছু দেশে এখনো এই আইনের দেখা মিললেও জাতিসংঘ এবং চিন্তা/বাক-স্বাধীনতা নিশ্চিতকারী বেশিরভাগ দেশেই মধ্যযুগীয় এই আইনের কোন নাম গন্ধ নেই। বিবিসির সাথে কথা বার্তায় তিনি যা বলেছেন তা শুনে কারো কারো মনে হতে পারে বাংলাদেশ তাঁর বাপের তাল্লুক বলেতিনি মনে করেন। তিনি বলেছেন কোটেশন // এটা খুব স্বাভাবিক।আমি একজন মুসলমান। এখন নবী করিমসা: সম্পর্কে কেউ যদি আজেবাজে কথা লেখে,আমরাতো চুপ করেবসে থাকতে পারি না। তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হবে।//
প্রধানমন্ত্রী বাংলাদেশ পরিচালনার দায়িত্বে আছেন, কিন্তু এটা তাঁর ভুলে গেলে চলবে না, এই দায়িত্বের মানে এই নয়, যে তিনি ‘আমি একজন মুসলমান’ হিসেবে দেশ চালাবেন। ‘ধর্মনিরপেক্ষ রাষ্ট্রের’ পরিচালনায় তিনি যখন থাকবেন, তখন তাঁর মুসলমানিত্ব কোন বিবেচ্য বিষয় নয়, এবং ব্যাক্তিগত ধর্মবিশ্বাস ব্যক্ত করে তিনি সম্ভবতঃ কোন না কোন আইন ভঙ্গ করেছেন। আমি আইনজ্ঞ নই, কিন্তু বাংলাদেশের সংবিধান এবং আইন সম্পর্কে ওয়াকিবহাল এবং মেরুদন্ডবান কোন আইনজ্ঞ হয়তো এ বিষয়ে আরো নিশ্চিত করে বলতে পারবেন। তবে এটা বলা যায়, ‘প্রকৃত’ ধর্মনিরপেক্ষ কোন রাষ্ট্রের প্রধান কখনোই ব্যাক্তিগত ধর্মবিশ্বাসের আছর রাষ্ট্র পরিচালনায় পড়তে দেবেন না।
একজন মুসলমান হয়ে চৌদ্দশ বছর পুর্বে মৃত সউদি মহাপুরুষের চরিত্র নিয়ে কথা উঠলে ‘চুপ করে বসে থাকতে’ যদি তিনি না পারেন, তবে নাহয় দাঁড়িয়েই থাকবেন, কিন্তু ব্যবস্থা নেবার কথা বলার হুমকির ফসল হবে একাত্তরে ধর্মনিরপেক্ষতার ওপর সৃষ্ট এই রাষ্ট্রের একটা ধর্মীয় চরিত্র তৈরি করা।
তিনি যদি মোল্লামাশায়েখোলেমাদের বাক-স্বাধীনতা নিশ্চিত করতে পারেন, মসজিদ, মক্তব, টেলিভিশন, পত্রিকা, মাহফিলে নিরন্তরবিধর্মী এবং নিধর্মীদের প্রতি ক্রমাগত কটুক্তি, হুমকি, অশ্লীলতা মেনে নিতে পারেন, তখন সেই তিনিই বাংলাদেশের নাগরিক সমাজের একটা ক্রমবর্ধমান নিধর্মী অংশের যৌক্তিক বক্তব্যের বিরূদ্ধে আইনী ব্যবস্থা নেবার কথা বলতে পারেন না। এটা হবে হিপোক্রেসী এবং সম্পূর্নগায়ের জোর।
আগে ধেড়ে ইঁদুর ফাঁদস্থ করুন, মোল্লামাশায়েখোলেমাঅর্থাৎ সউদি সাম্রাজ্যের রাজার পালিত প্রতিনিধিদের সামলান। তারপরে দেশেরসু-সন্তানদের দিকে নজর দেবার নৈতিক সাহস অর্জন করুন। গোটা বিশ্ব আজ সউদি রাজার অঢেল অর্থে পালিত এই মোল্লামাশায়েখোলেমাদের ধর্মপ্রচারের নামে অসহিষ্ণুতা ও জঙ্গীবাদ চাষবাসে রীতিমতো বিরক্ত এবং এদের নিয়ন্ত্রনের উদ্যোগ নেয়া হচ্ছে। মূলতঃ এই পঙ্গপালের দলই পেটের দায়ে দাঙ্গাহাঙ্গামা বাঁধিয়ে ‘ধর্মানুভূতি’ নামীয় জুজু সৃষ্টি করে চলেছে সেই ১৯২৩ সালের ইলমুদ্দী কেসের পর থেকে।
মনে রাখবেন ধর্মসেবনকারী সাধারন জনগন কখনোই ধর্মানুভূতি রক্ষায় রাস্তায় নেমে আসে না, মোহাম্মদের চরিত্রের অজানা দিকগুলি জানতে পেলে বড়জোর মুখটা বিষন্ন করে। আপনার ভোটেও কোন আঁচড় পড়বে না। রাস্তায় বরঞ্চ নেমে আসে তারাই যাদের পেটে লাত্থি পড়ে মোহাম্মদের কল্পিত মহানবীত্ব হুমকির মুখে পড়লে। রাষ্ট্র ও সমাজকে ফুটো পয়সার উৎপাদন দিতে না পারা গলাবাজ এই মোল্লামাশায়েখোলেমা’র পাল এবং তাদের উঠতি ধর্মপেশাজীবি কচিকাঁচারা একদিকে যেমন সমাজ-বিচ্ছিন্ন, চরিত্রে ভিক্ষুক অন্যদিকে তেমনি মাথামোটা ও উগ্র।
আপনি চিন্তাশীল নিরীহ ব্লগারদের দিকে চোখ তুলে তাকাবার আগে আইন প্রণয়ন করে মোল্লামাশায়েখোলেমাদের জিহ্বা নিয়ন্ত্রন করুন। প্রতিশুক্রবার দেশের অসংখ্য মসজিদে যে সকল উগ্র ও অসহিষ্ণুতার বাণী মুসুল্লীদের হৃদয় বিষাক্ত করে চলেছে সে সকল বাণী প্রদান শাস্তিযোগ্য অপরাধের তালিকায় আনুন। যদি সত্যিই বাংলাদেশকে একটা সুখী এবং সমৃদ্ধ রাষ্ট্রে পরিনত হতে দেখতে চান (আমার সন্দেহ আছে),তবে ধর্মের বাড়াবাড়ি নিয়ন্ত্রন করুন। দেশের সন্তানদের সাথে কথা বলুন, হেফাজত জাতীয় যুদ্ধাপরাধী-সমর্থক সংগঠনের সাথে ‘আলোচনা’র পাঁকে না জড়িয়ে ব্লগারদের সাথে আলোচনায় বসুন। এবং অতি অবশ্যই ব্লগার বলতে শুধু আপনার মতো মুসলিম নয়, বিধর্মী এবং নিধর্মীদের নিয়েই আপনার বসা উচিত।
দেশ এগিয়ে নেবার জন্য, যুদ্ধাপরাধীদের বিচারে এই ব্লগাররা, (ধার্মিক এবং নিধার্মিক সন্মিলিত) যে পরিমান পরিশ্রম করছে, দেশের জন্য আপনার এতটুকু মায়া থাকলে তাদের শত্রু ভাবতেন না।
ব্লগাররা এই প্রজন্মের মুক্তিযোদ্ধা, মুখ ফুটে কথা বলা কোন অপরাধ হতে পারে না, মুক্ত-মত প্রকাশ তো নয়ই।
আরিফুর রহমান,
লন্ডন, যুক্তরাজ্য
সূত্র:
১. http://www.bbc.co.uk/bengali/news/2013/04/130407_ms_sheikh_hasina_interview.shtml
২. http://bangla.bdnews24.com/bangladesh/article611159.bdnews
৩. http://www.suprobhat.com/?p=17471
৪. http://www.shaptahik2000.com/shonkha/2006/20060414/iv20060414.pdf
৫. http://www.shaptahik2000.com/shonkha/2006/20060728/fu20060728.pdf
৬. মুক্ত-মনা আর্টিকেল: https://blog.mukto-mona.com/?p=34254
৭. http://www.jjdin.com/print_news.php?path=data_files/398&cat_id=3&menu_id=13&news_type_id=1&index=7
[ ফেসবুক নোট আকারে, এবং আমারব্লগে প্রকাশিত। ]
যত দীর্ঘই হোক…………… সবকিছুরই দুটো প্রান্ত থাকে। শুরুটা হয়েছে, শেষটাও হতে হবে……
কারও ভালো লাগুক, কিংবা কারও কান্না পাক…!! আর তাই ধর্ম, ধর্মান্ধতা ও সৃষ্টিকর্তাদের মুখ থুবড়ে পরা এখন সুধুই সময়ের ব্যাপার।
ব্লগাররা এই প্রজন্মের মুক্তিযোদ্ধা, মুখ ফুটে কথা বলা কোন অপরাধ হতে পারে না, মুক্ত-মত প্রকাশ তো নয়ই।
কথাটির সাথে একাত্মতা প্রকাশ করছি (Y)
(Y) :guru:
আমার ধারনা ছিল মুসলমান মাত্রেই মৌলবাদী। কিন্তু মুক্তমনা ব্লগ পড়ে আমার ধারনা সম্পূর্ণ বদলে গেছে। আমরাও হিন্দু হিসাবে হিন্দু ধর্মের খারাপ দিক গুলোকে সমালোচনা করি। এবার আরও উৎসাহ পাবো । ধন্যবাদ মুক্তমনাকে।
বিবিসি বাংলাদেশ সংলাপের একটি অনুস্ঠান এর videoএখানে দেখতে পারেন।
শাহরিয়ার কবিরের বক্তবে দেখতে পাবেন,১৯৯২ সালে ক্ষমতাশীন বিএনপি ও বিরোধী দল আওয়ামী লীগ কী ভাবে জামাত-শিবিরকে নিষিদ্ধ করতে সংসদে একমত হওয়ার পরেও নিষিদ্ধ করতে পারেনি,শুধুমাত্র এই কারণে যে কোন দলই দাবীটার প্রতি প্রথমে পস্তাব উত্থাপন করতে রাজী হয়নাই।
আপনি যেহেতু এলিট শ্রেণীর মানুষ, আপনার লেখায় কারো মন্তব্যে কোন প্রতিমন্তব্য করেন না। সে জন্য মন্তব্য করতে চাই নি, কিন্তু মুক্তমনায়
এইরকম একটা ভুল ভাল যাতা ইচ্ছা বলে যাবেন আর কেউ কিছু বলবে না সেজন্য মন্তব্য করতে হচ্ছে।
আপনার এই হাস্যকর দাবী মেনে নিলে যে চারজন ব্লগার আর আজকে যে দুজন ফেসবুক ব্যাবহারকারীকে ধরেছে তাদের ছেড়ে দেয়ার আন্দোলন বন্ধ করে দেবেন? কাঠমোল্লাগুলোর করা দাবীর সাথে আপনার দাবীর মৌলিক পার্থক্য কী? ওরা ধর্মবিরোধী লেখা বন্ধ করতে বলে আর আপনি ধর্মের কথা বেশি বলতে বারন করেন। পার্থক্য শাস্তির ডিগ্রিতে। কিন্তু দাবি তো একই। নাকি ভুল বুঝলাম?
@সাইফুল ইসলাম, আপনার তুলনা আপনি নিজেই। আপনাকে দেখলে মাঝে মাঝে সেই বালকটির কথা মনে পরে যে সবার সামনে রাজাকে বলেছিলো, ওমা, রাজা দেখি ন্যাংটা।
যে লোক অবলীলায় বলে, “প্রকৃত’ ধর্মনিরপেক্ষ কোন রাষ্ট্রের প্রধান কখনোই ব্যাক্তিগত ধর্মবিশ্বাসের আছর রাষ্ট্র পরিচালনায় পড়তে দেবেন না”- জর্জ বুশ হতে শুরু করে বারাক ওবামা, ডেভিড ক্যামেরন, সারকোজি সবাই সবার সামনে বার বার বলে যে তাদের খ্রীস্টীয় মূল্যবোধই তাদের রাজনীতির প্রেরণা, সেসব তিনি জানেন না কিংবা জানার দরকার মনে করেন না। এখন পর্যন্ত পৃথিবীর ৯০% এর বেশী লোক মূলত ধর্মবিশ্বাসের ভিত্তিতেই ব্যাক্তিগত ন্যায় নীতি নির্ধারন করে।
নিজের বিরুদ্ধ মতগুলো দমনে এই ভদ্রলোকের যতো আগ্রহ তার কণামাত্র নেই পরমত সহিষ্ণুতার পক্ষে।
@সফিক,
বেক্তিগত ন্যায় নীতি আর রাষ্ট্রীয় ন্যায় নীতির মধ্যে কিন্তু তফাৎ আছে। আপনার বেক্তিগত মূল্যবোধের ওপর নির্ভর করে আপনি আপনার জীবন পরিচালনা করতে পারেন, কিন্তু রাষ্ট্রকে নয়। তার কারন রাষ্ট্রের পরিচালনা মানে সবার কাছে গ্রহণযোগ্য এরকম একটা বেবস্থা চালান। সে জন্যই প্রশ্ন ওঠে পক্ষপাত দুষ্ট কিনা সরকার, বা সংবিধান। সারকযি, জর্জে বুশ, ইত্যাদিত মধ্য পন্থার আড়ালে ডান শক্তি আসলে। এধরনের ডান পন্থীদের রোল মডেল হিসেবে নেয়ার কথা ত কেউ বলছেন না। ধরুন শতকরা ৫৪ ভাগ ভোট নিয়ে এদের একজন ক্ষমতায় এসেছে, এখন বাকিরা যারা বিপক্ষে ভোট দিয়েছে তাদের সব অধিকার কি কেড়ে নেয়া হয় নাকি তারা নিজেদের সুবিধে বঞ্চিত মনে করে। সেটাই আসল ঘটনা। সে টুকুও তো আমাদের নেই। সরকার বদলে বিভিন্ন পরিবরতন ত হবেই কিন্তু কিছু গঠন বেবস্থা যেন এক থাকে। সবসময় এবং সবার জন্য। অবামা নির্বাচিত হওয়ায় সবাই যখন এত উচ্ছসিত হয়েছিল, অনেকেই তখন ভেবেছিলাম সেই তো মার্কিন যুক্ত রাষ্ট্রেরই তো রাষ্ট্রপতি সে আর কত টুকু কি বদলাবে।
@কেউ, নেতারা ব্যাক্তিগত নীতির ভিত্তিতেই রাষ্ট্র পরিচালনা করে। তা না হলে নির্বাচনের আগে কার ব্যাক্তিগত চরিত্র কেমন, কে কবে কি পাপ-পুন্য করেছিলো এগুলো নিয়ে এত ঘাটাঘাটি হতো না। সবার জন্য গ্রহন যোগ্য কোন সিস্টেম নেই। সংবিধান দিয়েই যদি দেশ চালানো যেতো তবে এতো নেতা-নেত্রী নির্বাচন নিয়ে গনতন্ত্রে মাথা ঘামানো হতো না। সংবিধান একটা comprehensive manual নয় যে এখানে রাষ্ট্রের যাবৎ সমস্যার সমাধান আর দিক নির্দেশনা আছে।
খামোকা তর্কের ভিত্তিতে তর্ক করার সময় নেই। সোজা কথায় বলুন যে নেতা নেত্রীর ব্যাক্তিগত মূল্যবোধ কি ভোটারদের কাছে গুরুত্বপূর্ন কি না?
@সাইফুল ইসলাম,
মৌলিক পার্থক্যত কিছু আছেই। প্রথমত আমার মনে হয়েছে লেখক তুলনা করে বলতে চেয়েছেন যে এরকম আইন যদি থাকবেই তাহলে তা একপেশে কেন হবে? কারও জিহ্বা যদি নিয়ন্ত্রন করতেই হয়, তাহলে মোল্লামাশায়েখোলেমাদের ক্ষেত্রে তা বরং আরও বেশী প্রযোজ্য। এ জন্য যে, তারা যে শুধু অন্যকে হীন চোখেই দেখতে শেখান তাতনা, তার চাইতেও বেশী শেখান কিভাবে আগ্রাসি হয়ে উঠতে হয়। বাক স্বাধীনতা সকলের যাতে থাকে, তাইত কাম্য, মোল্লারা ও বলুন না যা তাদের ইচ্ছে। কিন্তু যেই স্কুল অফ থট নিপীড়ন করতে শেখায়, সেক্ষেত্রে বিকল্প বেবস্থার ওপরই জোর দেয়া উচিত।
এটাও লেখকের কাছেই জানতে চেয়েছেন, কিন্তু পাঠিকা হিসেবে আমি কি বুঝেছি সেটা নিশ্চয়ই বলতে পারি। আমার মনে হয় আপনি ভুলই বুঝেছেন। ধর্মবিরোধী লেখা বন্ধ করতে চাওয়া মানে কাওকে তার নিজের ইচ্ছে মত না লিখতে দেয়া, সে কি লিখতে পারবে বা পারবেনা তা ঠিক করে দেয়া, সৃজনশীলতাই বলুন আর বাক স্বাধীনতাই বলুন, দুটোকেই নিওত্রনে রাখা আর কাঁচি চালান। ধর্মের কথা বেশি বলতে বারন করা মানে হচ্ছে নাগরিক জীবনে যেন ধর্ম না আসে, যেন সবকিছুর ওপরে ধর্মকে না রখা হয়। সেই চাওয়াটাও যদি অমুলক মনে করেন, তাহলে কিন্তু খুবই মুশকিল।
তবে আপনি যে যা হচ্ছে, যা চাওয়া হচ্ছে তার মধ্যে যে একটা ভারসাম্য আনার চেষ্টা করছেন, তা মনে হয় ভালই শুধু একদিক থেকে। সবারই এবং সবকিছুরই প্রশ্নের সম্মুখিন হওয়া উচিত। না হলে পুরো ব্যাপারটা বীর পুজা পর্যায়ে চলে যায় আর তাই যেন একমাত্র সত্য বলে মনে করা হতে থাকে। যেমন ধরুন, এইযে মুক্তিযোদ্ধাদের এত শ্রদ্ধা জানান হয়, এত কিছু হয়। ঠিক আছে, খুব ভাল কথা। তার কারন আর নতুন করে বলার কিছু নেই। কিন্তু তার পাশাপাশি এটাও বলতে হবে, এরা প্রতেকেই এক এক জন খুনি। ভাল উদ্দেশে হোক আর যাই হোক তারাওত হত্যা করেছেন অনেক পাকিস্তানি সৈন্য আর রাজাকার, তাদেরওত পরিবার, সন্তান ভালবাসা ছিল। তারাত ছিল ভাড়াটে সৈন্য। রাজাকাররাত আজকে হেফাজত যা করছে তাই করতে চেয়েছিল, অর্থাৎ ইসলামের হেফাজত। …….
@কেউ,
আজকের খবর জানেন তো? মাহমুদুর রহমানকে গ্রেফতার করা হয়েছে, ১৩ দিনের রিম্যান্ডে আছে। “আমার দেশ” সম্ভবত বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। তারমানে হল, আপনাদের বিপ্লব সফল। নাকি? আইনের সমান প্রয়োগ হয়েছে না? খুশি? আসেন বগল বাজাই।
আর আপনি কোন স্কুল অফ থটের কথা বলছেন? ইসলামে আমি তো জানি ৭০ এর উপরে আলাদা আলদা সেক্ট আছে। আপনার আপত্তির সেক্ট কোনটা?
নাগরিক জীবনে ধর্ম থাকতেই পারে, কেউ যদি নাগরিক জীবনে ধর্মের ব্যাবহারে বাধা দেয় আমি অতি অবশ্যই তার বিরোধিতা করব। নাগরিক জীবন আর রাষ্ট্রীয় জীবন আলাদা জিনিস। দুটোর সংজ্ঞা জানা আপনার আর লেখকের জন্য অত্যাবশ্যকীয়।
মুক্তিযুদ্ধ কোন অপশন নয়, মুক্তিযুদ্ধ একটা প্রতিক্রিয়া। একটা চাপিয়ে দেয়া যুদ্ধের প্রতিক্রিয়ায় মুক্তিযুদ্ধ হয়। এই সাধারন সেন্সটুকু আপনার নাই। আপনি আবার মানুষের চেতনা পরিবর্তনের ঝান্ডাধারী সৈনিক!
রাজাকারদের রাজাকারীর সাথে ইসলামের কোন সম্পর্ক নাই, ওটা ছিলো সম্পূর্নই রাজনৈতিক। যেমন আজকের বাঙলাদেশে হচ্ছে। সারা জীবনই ধর্মের নামে নিজেদের স্বার্থের আকামগুলো শাসকরা করে যায়। আর এই জিনিস না বুঝে চেতনা পরিবর্তনকারী নির্ঘুম সৈনিকরা যুদ্ধ করে যায় ধর্মের বিরুদ্ধে আসল শত্রুকে না চিনেই।
@সাইফুল ইসলাম,
শত্রুকে সবাই চেনে, কিন্তু সেই চেনায় কি কোন লাভ হয়? যে শাসক শ্রেনী ধর্মকে ব্যবহার করে কুশাসন করছে, সেই শাসক শ্রেনীকে বিনাশ করে দিলেই সমস্যার সমাধান হবে? ধর্ম যতদিন থাকবে এইসব শাসক শ্রেনীর বিনাশ নাই, একদল যাবে আরেকদল গজাবে। অস্ত্র যতদিন ব্যাবহার করার জন্য মজুদ থাকবে, সেটার সদ্বব্যবহার করতে পৃথিবীতে দুষ্ট লোকের অভাব কোনদিনই হবেনা।
তবে হ্যাঁ, এই ষ্ট্রাটেজিটা খাঁটে ধর্মোন্মাদ লোকদের জন্য যারা ধর্ম বিরোধী, নাস্তিক লোকের বিনাশ চায় কিন্তু ধর্ম বিরোধীতা বা নাস্তিকতার যৌক্তিক সমালোচনা করতে খুব আগ্রহী না।
আইন যখন অন্ধভাবে কেবল বিশেষ কোন জনগোষ্ঠীকে ফেবার করে তখন সে আইনের দোহাই দিয়ে যারা নিজে যা শুনতে চায় না সেই পক্ষকে বর্বরের মত জেল ফাঁসীর ভয় দেখায় তাদের সুবিধার্থেই আমাদের সকলের উচিত সেই আইনের সংশোধন দাবী করা। তাতে অন্তত নিরীহ লোকে আইনের চোখ অন্ধ, সাজা পেলে তো সকলেই পেতো এই ধরনের ভ্রান্ত ধারনার বশবর্তী হয়ে মুক্তকন্ঠের চর্চা করে বিপদে পড়ত না।
ধর্মানুভূতি, আইসিটি এক্ট কি কি সব আছে এগুলি সংশোধন করে ইহা কেবল মাত্র দেশের সংখ্যাগরিষ্ঠ জনসাধারনের ধর্মের অবমাননার জন্য প্রযোজ্য ,সংখ্যালঘু জনসাধারনের ধর্মের জন্য নহে কথাটি যোগ করার জোর দাবী জানাই। এটা কোন স্যাটায়ার নয়। আমরা যতই চেঁচাই ভবি ভোলার নয়, তার চাইতে ভবিষ্যতে যাতে ভ্রান্ত ধারনার বশবর্তী হয়ে আর কেউ বিপদে না পড়ে সেটা অন্তত নিশ্চিত হবে। আইনের এক চোখা ইন্টারপ্রেটেশনের চাইতে এক চোখা আইন বিধিবদ্ধ হয়ে যাওয়াই অনেক উত্তম।
@আদিল মাহমুদ,
আমেরিকায় কিন্তু আইনের পরিবর্তন, পরিবর্ধন ঘটে একের পর এক নতুন কেস সর্বোচ্চ পর্যায়ে আদালতে যাবার পরে, বিশদ আলোচনার পরে।
বাংলাদেশের বর্তমান ধর্মীয় অবমাননা ও এই সংক্রান্ত অন্যান্য আইনগুলি কেবল ইসলামের জন্যে প্রযোজ্য এটা প্রতিষ্ঠার আগে এটা কি দেখা উচিৎ নয় যে অন্য ধর্মের কেউ বিশদ প্রমান সহকারে কিভাবে কোন মোল্লা তার নিজস্ব ধর্মীয় অনুভুতিতে আঘাত হেনেছে এই রকম কোন মামলা করেছে কি না এবং হলে মামলার ফল কি হয়েছে এটা দেখা?
অন্য ধর্মের অনুভুতিতে আঘাত হানা সংক্রান্ত কোনো মামলা যদি অযৌক্তিক ভাবে বাতিল করা হয় তবেই এই আইনগুলিকে একচোখা বলা যাবে।
@সফিক,
আপনার কি মনে হয় বাংলাদেশে ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের পক্ষে এই জাতীয় মামলা বাস্তবে করা সম্ভব? বিএনপি জোটের গত টার্মে সাকা চৌকে ওয়াইসিতে বাংলাদেশের পক্ষ থেকে সেঃজেঃ পদে মনোনয়ন দেবার পর বিরোধী দলের সংসদ সদস্য সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত প্রতিবাদ করেছিলেন। তার জবাবে সাকার জবাব ছিল মালাউন সুরঞ্জিতের ওয়াইসি পদ নিয়ে কথা বলার অধিকার নেই। সুরঞ্জিতের মত নামকরা নেতার সাহসে কুলাবে মামলা করার? যে দেশে ফেসবুকে ছবি ট্যাগ করে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ওপর ভয়াবহ হামলা করা যায় সে দেশে এই সংখ্যালঘু সম্প্রদায় সংখ্যাগুরু সম্প্রদায়ের বিরুদ্ধে ধর্মানুভূতির মামলা দেবে এমন আশা করাটা একটু বাড়াবাড়ি নয় কি?
আর তার চাইতেও বড় কথা সংখ্যালঘুদেরই বা কেন মামলা করতে হবে? ৩ জন ব্লগারের বিরুদ্ধে মামলা করেছে সরকার, যেই ধর্মের অবমাননা হয়েছে অভিযোগ আছে সেই ধর্মের সাধারন কোন নাগরিক নয়, এটা কিন্তু আপনার বলা কথার পরিপ্রেক্ষিতে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ন দিক।
আরেকটি ব্যাপার লক্ষ্য করুন, প্রথম ৩ ব্লগারকে গ্রেফতার করা হয়েছে কিন্তু আমার আপনার মত কোন লোকে তার ধর্মানুভূতিতে আঘাত করেছে এই মর্মে মামলা করার কারনে নয়। আপনার প্রসংগ তেমন কিছু হলে বিবেচনায় আনা যেত। সেই ৩ জনকে মামলা ছাড়াই গ্রেফতার করেছে সরকার। মোদ্দা কথা বাদী এখানে সরকার। বুঝলাম যে হঠাত সরকারের টনক পড়ল; আরে তাইতো, ধর্মানুভূতিতে আঘাতের বিরুদ্ধে আইন আছে অথচ এতদিন এত লোকে ভয়াবহ ভাবে ধর্মানুভূতিতে দিয়ে আসছে এদের বিরুদ্ধে এবার ব্যাবস্থা নেওয়া দরকার। হতেই পারে (যদিও ঘটনা তেমন নয়, ১০ বছরেরও বেশিদিন থেকেই থেকেই ধর্ম নিয়ে বাংলা নেট জগতে উত্তপ্ত তর্ক/বিতর্ক হয়, নেট এ ধর্মানুভূতির ব্যাপারে কোন সরকার অতীতে কারো বিরুদ্ধে মামলা করেনি )। তো সরকার শুধু এই ৩ জনের বিরুদ্ধেই ধর্মানুভূতিতে আঘাতের তথ্য প্রমান খোঁজ করে তড়িত ব্যাবস্থা নিল। অন্য কোন ধর্ম সম্পর্কে সংখ্যাগুরু সম্প্রদায়ের কারো অবমাননাকার উক্তি, বানী কিছুই তাদের চোখে পড়ল না কিংবা পড়ে না এ আমাকে বিশ্বাস করতে বলেন? সরকার নিজে বাদী হয়ে তেমন একজনও কারো বিরুদ্ধে মামলা করতে পারেনি কি কারনে? আমি নিজেই কত দেখেছি তার হিসেব নেই। কালই দেখলাম আলোচিত এক সাইটে হিন্দু ধর্মকে শয়তানের ধর্ম বলা হয়েছে।
সরকার বাহাদুর কেন এক পক্ষকে ফেবার করছে, শুধু রাজনৈতিক কারনে সরকারের বর্তমান দৃষ্টিভংগী যে এমন আচরনের একমাত্র কারন নয় সেটা আমি আপনি সকলেই জানি, বেহুদা তর্ক করে তো লাভ নেই। এ দেশে হেফাজতের মত সংগঠন তাদের গোত্রভুক্ত আলেম মোল্লাদের অপরের ধর্মানুভূতিতে আঘাতের অভিযোগে একই কায়দায় গ্রেফতার করে ৭ দিনের রিমান্ড, এরপর রিমান্ডের আবেদন ছাড়াই কারাগারে পাঠানোর মত একশন কেমন চোখে নেবে তার জন্য কি রিয়েল লাইফ সিনারিওর প্রয়োযন হবে? প্রতিক্রিয়া সরকারও জানে তাই তেমন দূঃসাহস করবে না। ইন্টারনেট সূত্র ছাড়াও ধর্মানুভূতিতে আঘাত জনিত প্রিন্টেড ম্যাটেরিয়াল অজস্র আছে, এমনকি সরকারী সূত্র থেকেও প্রকাশ করা আছে সেসব ব্যাবহার করে সরকার কেন মামলা করে না? ইসলামী কিছু দলের ওয়াজ মাহফিলে প্রকাশ্যে এমন ভাষন আছে যেখানে সরাসরি জেহাদের মাধ্যমে দেশের সংবিধান বাতিলের আহবান আছে, যা রাষ্ট্রবিরোধী বলে অবশ্যই আইনী ব্যাবস্থা নেওয়া যায়।
শুধু বাদীর অভাবে আমাদের অপেক্ষা করা উচিত এমন যুক্তি তত্ত্বীয়ভাবে সঠিক হলেও ব্যাবহারিক ক্ষেত্রে কি হতে পারে সেটা সকলেই জানি।
সাইফুল যেমন নীচে বলেছে আমি সে অর্থে আমার যুক্তি টানিনি। আমার কথা হল যে কাগুজে কিছু আইন থাকতেই পারে যেগুলির প্রয়োগ তেমন হয় না এবং সকলেই সেসব আইনের তোয়াক্কা তেমন করে না। এমন ক্ষেত্রে আপনি হঠাত বেছে বেছে কোন নির্দিষ্ট জনগোষ্ঠির ওপর আচমকা সেই আইন ভংগের কারনে কঠোর ব্যাবস্থা নেওয়া শুরু করলেন সেটাকে খুব স্বাভাবিক প্রক্রিয়া বলা চলে না। আইন আদালতের ক্ষেত্রে আইন জানতাম না এই এক্সিউজ চলে না, কিন্তু বেছে বেছে আইনের প্রয়োগ এবং আইনের হাত থেকে মুক্তি অবশ্যই প্রশ্ন রাখে। আইন প্রয়োগ হলে সকলের জন্য হবে, নইলে কারো জন্য নয়।
জানেন নিশ্চয়ই যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ব্রিটিশ না পাকিস্তান আমলের একটি আইন এখনো আছে যার আওতায় বিভাগীয় প্রধান না কোন প্রাশাসনিক কর্মকর্তার লিখিত অনুমতি ছাড়া কোন ছাত্র ছাত্রীর সাথে কথা বলতে পারে না। এই আইন ভঙ্গের শাস্তি মনে হয় চার আনা বা তেমন কিছু যা বর্তমানে হাস্যকর ঠেকলেও আইনটি এখানো আছে এবং বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ চাইলেই কিন্তু সেটা প্রয়োগ করতে পারে। এই আইন গত ৫০ বছরে ব্যাবহার হয়েছে বলে আমার জানা নেই। তো ধরেন আজ বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ আচমকা জগন্নাথ হলের ছেলের বিরুদ্ধে এই আইন প্রয়োগ শুরু করল সেখানে প্রথমেই আমাদের মনে কি প্রশ্ন আসবে? অবশ্যই এই যুগে এমন আজগুবি আইনের সমালোচনা হবে। তবে সাথে সাথে অবশ্যই ডিসক্রিমিনেশনের কথাটাও আসবে। পরের সমালোচনা যেন না হতে পারে সে জন্য বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে সে আইন সমভাবে সব ছাত্রছাত্রীর ওপরেই প্রয়োগ করে দেখাতে হবে। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ সেটা করতে ব্যার্থ হলে অবশ্যই ডিসক্রিমিনেশনের প্রশ্ন আসতে বাধ্য। এ ক্ষেত্রে সব ছাত্রছাত্রীদের শাস্তি দেওয়া হলে আপনি আপত্তি করতেন না, মেনে নিতেন যে এই প্রসংগ গৌণ, মূখ্য ইস্যু হল হাস্যকর এক প্রাচীনপন্থী আইন।
অবশ্য সকলের জন্য প্রয়োগ করা হলেও ফলাফল কি হতে পারে আগাম আন্দাজ করা এমন কিছু কঠিন নয়। ধর্মানুভূতি আসলেই ঠিক কি এবং কোথায় আহত হয় বলার কোন সর্বসম্মত স্কেল নেই, এই আইনের সবচেয়ে বড় দুর্বলতা এখানেই। যেমন কাউকে ধর্ম তুলে মালাউন, চির অকৃতজ্ঞ/অভিশপ্ত (এটা আমাদের বিদ্যালয়ে ধর্মশিক্ষার পুস্তকে শিক্ষা দেওয়া হয়) এসব চিহ্নিত করা বিবেচনা করা যেতে পারে ধর্মীয় অধিকার, কিন্তু কোরানে বর্নিত ব্লাড মানি আইনের সমালোচনা বিবেচিত হতে পারে ধর্ম অবমাননা।
এ জন্যই আমি ঐকান্তিকভাবেই চাই যে ধর্মানুভূতির সেই ধারাগুলি স্পেসিফিক করে দিতে, তাতে আর বেহুদা লোকে বিপদে পড়বে না, নইলে তাদের ভুল ধারনা হতে পারে যে বাস্তবে সব ধর্মের লোকেই যেহেতু সে আইনের তোয়াক্কা না করেও ঝামেলায় পড়ে না তাই সেও ঝামেলায় পড়বে না।
@আদিল মাহমুদ,আমার মূল কথা হলো যে সবাই যে বাংলাদেশের আইনকে দোষাররপ করছে সেটা ভুল। বাংলাদেশ একটি অরাজক দেশ আর অরাজক দেশে মাৎস্যন্যায় এর মতো আইন শক্তের ভক্ত নরমের যম। আজকে যদি গুলশানে একজন জার্মান নাগরিক ছিনতাই এর শিকার হয় তবে পুরো মন্ত্রী-পুলিশ এর মধ্যে তোলপাড় পরে যাবে। সেই লোক মুসলমান না খ্রীস্টান এটা কেউ দেখবে না।
বাংলাদেশে হিন্দুদের মন্দির ভাংগলে কোনো রব হয় না কিন্তু মসজিদ ভাংগলে তোলপাড় হয়ে যায় এটা কিংন্তু আইনের ব্যর্থতা নয় আইনের শাসনের ব্যর্থতা। দু:খের কথা যে এদেশে হিন্দুদের স্বার্থ এদেশের সরকার তো দূরের কথা এমনকি আমাদের প্রবল পরাক্রমশালী প্রতিবেশী ভারত সরকারও নানা স্ট্র্যাটেজিক কারনে এড়িয়ে যায়। দূর্বল কমিউনিটি হিসেবে আইনের কুশাসনের শিকার হয়ে চলেছে তারা বছরের পর বছর।
আমি বলতে চাই যে আইনের উপরে দোষ না চাপিয়ে আইনের শাসনের উপরে ফোকাস করা বেশী দরকার। এটা ঠিক যে বাংলাদেশের পরিস্থিতিতে আদালতের শরনাপন্ন হওয়া ভয়ের ব্যাপার কিন্তু বার বার শরনাপন্ন হয়েই কিন্তু আইনের শাসনের পরিবর্তন সম্ভব।
আমেরিকার সাউথে একসময়ে কালোদের প্রতি আইন, আদালত, বিচারক, প্রশাসন সবাই ছিলো তীব্র রকমের বিদ্বেষী। আদালত বছরের পর বছর অবলীলায় কালোদের পক্ষে রায়কে ইচ্ছেমতো পাল্টে দিতো। কিন্তু কালোরা কিন্তু বারবার আদালতের শরনাপন্ন হয়েই আইনের একচোখা শাসনকে ধীরে ধীরে সবার কাছে অপাংক্তেয় করেছিলো।
আজকে এই সময়ে কিন্তু অন্তত আদালতের মাধ্যমে পরিবর্তন আনার সুযোগ অনেক বেশী। প্রমানসহ মোল্লারা কেমন করে ওয়াজে, প্রচারণায় অন্য ধর্মকে অবমাননা করে এটা নিয়ে আদালতের শরনাপন্ন হওয়াতে তো আমি তেমন একটা রিস্ক দেখি না। অন্তত ঢাকা শহরের আদালতে। মৌলবাদীরা ছুরি নিয়ে ঝাপিয়ে পড়তে পারে কিন্তু তা তো তারা এখনই করছে।
@সফিক,
ধর্মানুভূতির ধারায় মামলাকারির কোন নির্দিষ্ট ধর্ম হতে হবে এমন কোন পূর্বশর্ত নেই। ফেসবুকে এ প্রসংগটা প্রায়ই আসছে। নাস্তিক, আধা নাস্তিক, বিধর্মী বা উদারপন্থী মুসলমানরাও প্রশ্ন করছে যে উগ্রপন্থী মোল্লাদের বিরুদ্ধে কেন একই ভাবে ধর্মানুভূতিতে আঘাত লাগার মামলা করা যাবে না। ব্লগারদের শাস্তির ব্যাপারে আপোষহীন তৌহিদী জনতার জবাব কৌতূহলের সাথে জবাবগুলি দেখার চেষ্টা করি। তাদের মূল বক্তব্য হল যে হিন্দুরা কেন মামলা করে না, তারা মামলা করলেই তো পারে। এই ধরনের সংকীর্ন ব্যাখ্যা আমাদের মত সমাজে খুবই প্রত্যাশিত। এই ধরনের লোকে সাধারনত মুখে হলেও অধিকাংশ সময় দাবী করে যে তারা কোন ধর্ম বা ধর্মাবল্মীদের প্রতিই বিদ্বেষ পোষন করে না, অন্য সকল ধর্মও তারা শ্রদ্ধা করে। সেটা সত্য হলে অন্য ধর্মের অবমাননা (ধরা যাক অবমাননার স্কেল আছে) হলে তাদেরও সে নিয়ে সোচ্চার হবার কথা। মামলার দায় কেবল সংখ্যালঘুর থাকবে কেন? বিশেষ করে সংখ্যালঘুদের অবস্থা যেখানে সকলেই জানি। তাদের ‘সে’ বলতে গেলে কিছুই নেই। আমি শত্রু সম্পত্তি আইন নামের কালো আইনের ছত্রছায়ায় কিভাবে সব সরকারের আমলে হিন্দু জনগোষ্ঠির সম্পত্তি অমানবিক ভাবে আত্মসাত করা হয়েছে সেসব কিছু তথ্য দেখে শিউরে উঠেছি, তারচেয়েও বড় আশ্চর্যজনক লেগেছে এত বড় একটা অন্যায় যুগের পর যুগ দেশে আইনের নামে হচ্ছে অথচ সে নিয়ে কোন মিডিয়া ক্রেজ তো নেইই, এমনকি হিন্দু সম্প্রদায় নিজেরাও নীরব।
হিন্দুদেরই কেবল দায় থাকবে মামলা করার সে যুক্তি মেনে নিলে সুরঞ্জিত সেনকে বলা সাকার যুক্তিও মেনে নিতে হয়। একই কারনে ধর্মানুভূতির মামলাগুলি নিরপেক্ষ তদন্ত বিচারের স্বার্থে বিধর্মী পুলিশ এবং বিচারক নিয়োগ করতে হবে। আমি তো বিচার নিরপেক্ষ হবার স্বার্থে পাক্কা নাস্তিক তদন্তকারী এবং বিচারক ছাড়া উপায় দেখি না। কারন বিধর্মী বিচারক হলেও পক্ষপাতিত্বের সুযোগ থাকবে।
আমেরিকায় কালোদের আইনী পথে অধিকার আদায়ের যে উদাহরন দিলেন তার পূর্বশর্ত মনে হয় না এখনো বাংলাদেশে হয়েছে বলে। দক্ষিনের ষ্টেট গভঃ গুলি চরম রেসিষ্ট হলেও ফেডারেল গভর্মেন্টের নিরপেক্ষতা এবং চরম দৃঢ়তার ফলেই কালোরা আইনী আশ্রয় পেয়েছে। বিশেষ করে উত্তরের সাদা জনগোষ্ঠিও কালোদের পক্ষে দাঁড়িয়ে যাওয়ায় কাজটি অনেক সহজ হয়েছে। আমাদের দেশের পরিস্থিতি অনেক হতাশাব্যাঞ্জক। ২০০১ সালের নির্বাচনের পর হিন্দু জনগোষ্ঠীর ওপর যে অবর্ননীয় অত্যাচার দিনের পর দিন হয়েছিল সেটা পাবলিক আউটক্রাই তেমন তুলতে পারেনি। যদিও অবাক করা ব্যাপার হল যে মিডিয়া খুব ভালভাবেই ঘটনাগুলি কাভার করেছিল, তারপরেও সেভাবে পাবলিক ইম্প্যাক্ট হয়নি। অনেকটা একই কথা বলা যায় পার্বত্যবাসীদের সমস্যা নিয়ে। এসব ঘটনা অন্তত আমার কাছে প্রমান করে যে আমাদের সভ্যতার মান এখনো সংখ্যালঘুদের অধিকার হজম করার মানের হয়নি।
– মানবাধিকার সংস্থাগুলির অন্তত উচিত এগিয়ে আসা। আমার ব্যাক্তিগত ধারনা আম জনতা এসব ঘটনা খুব স্বাভাবিক ভাবে নেবে না। মালাউন শব্দটা আমি শিক্ষিত জনসমাজেই অনেকের কাছে স্বাভাবিক একটি প্রতিশব্দ হিশেবে আকছার ব্যাবহার হতে শুনেছি। আমার নিজের ডাকনামে নাকি হিন্দু হিন্দু গন্ধ আছে, যুদ্ধের পর পর যাদের জন্ম তাদের অনেকেরই তেমন নাম আমাদের জেনারেশনে খুব সাধারন ছিল। একবার এক কাজে একজন প্রভাবশালী ব্যাক্তি যিনি আবার বিরাট আল্লাওয়ালা মানুষ বলে সকলে দাবী করেন তার কাছে গেছি, আমার ডাকনাম শুনেই তার মুখ কুঁচকে এলো, ঘৃনায় মুখ বাঁকিয়ে বললেন ঐ নামে আমি তোমাকে ডাকতে পারব না, ভাল নাম আদিল ধরেই ডাকবো। মালাউন শব্দ উচ্চারনের জন্য যে মামলা হতে পারে সেটা তাদের দূঃস্বপ্নেও আসবে না। আর মোল্লা শ্রেনীর কথা বাদই থাকল। এসব মামলা আরো জটিলাকার ধারন করতে পারে একজনের ধর্মীয় অধিকার যদি আরেকজনার ধর্মানুভূতি আঘাতের কারন হয় সেক্ষেত্রে। আমাদের দেশের আদালত কি নিজ ধর্মবিশ্বাসের বশবর্তী হয়ে অপরের ধর্মবিশ্বাস বাতিল বা অগ্রহনযোগ্য এই জাতীয় নেগেটিভ প্রচারনা চালানো ধর্মানুভূতিতে আঘার কিনা সেই প্রশ্নের নিরপেক্ষ মূল্যায়ন করতে পারবে বলে মনে করেন? এক্ষেত্রে আদালতের রায় সম্ভবত সংখ্যাগুরুর বিশ্বাসকেই ফেবার করবে যদিও এথিক্যালী সেটা ঠিক নয় এবং সংবিধানের সাথেও সাঙ্ঘর্ষিক।
– শুনতে খুবই ভাল। মুশকিল হল আমরা সকলেই জানি যে আমাদের দেশে আইন হল অনেক সময়ই এক চক্ষু হরিনের মত। সভ্যতার সার্বিক উন্নয়ন ছাড়া আইনের সুষম প্রয়োগের আশা দূরাশা মাত্র। সেটা যখন সম্ভব নয়ই, তখন এই ক্ষেত্রে আমি মনে করি ব্লাসফেমি আইন (মৃত্যুদন্ড না হলেও ব্লাসফেমি আছে বলা যেতে পারে) আক্ষরিকভাবে আগে যেমন বলেছি তেমন করে দেওয়াই মংগলজনক। এতে অন্তত লোকে অসতর্ক অবস্থায় ধরা খাবে না।
ব্লগারদের শাস্তির বিতর্ক যে এক নুতন ভিসুভিয়াস খুলছে না কে বলতে পারে? যেভাবে এতে লোকে তেতে উঠেছে তা খুবই আশংকা জনক। পাকিস্তানের মত ব্লাসফেমি আইনের যথেচ্ছা ব্যাবহার করে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়কে নিশ্চিহ্ন করা, প্রতিপক্ষকে সাইজ করার অপসংস্কৃতি মনে হয় চালু হল বলে। দূর্বল প্রতিপক্ষের নামে কায়দা করে ব্লাসফেমি অভিযোগ তুলতে পারলেই মোটামুটি কর্ম কাবার, আপনার আর তেমন কিছু করতে হবে না, আপনা থেকেই ঘটনা ঘটে যেতে পারে। ব্লাসফেমি অভিযোগে অভিযুক্তদের বাড়ি হামলা করা, খুন করে ফেলাতেও জনতা হয়ত তেমন কিছু মনে করবে না, ধর্ম রক্ষা নবীজির সম্মান রক্ষা বলে কথা। পাকিস্তানেও এমনই আকছারই ঘটে। সিলেটে আজ ফেসবুকে লাইক দেওয়ার অপরাধে একজন ফেঁসে গেল, আরেকজন ফেঁসে গেল বৈঠকে তাকে সমর্থন করতে যেয়ে। ফেসবুকে দেখি এদের ছবিতে কত ঘা জুতা মেরে কত জানি সোয়াব কামানোর আহবান, সাথে অপরাধের প্রমান স্বরুপ অভিযুক্তের ফেসবুক পেজ। সেই পেজে তার নাম ধাম স্কুল কলেজ ছাড়া আর কিছুই নেই। এহেন মোক্ষম প্রমানের ওপর ভর করেই তৌহিদী জনতা তাকে কত ভয়াবহ ভাবে শাস্তি দেওয়া যেতে পারে তা নিয়ে গবেষনা করছে। শিক্ষিত লোকের এই দশা হলে গন্ডগ্রামে কি হাল হতে পারে? বিশেষ করে সংখ্যালঘুর সম্পত্তি আত্মসাতের নুতন দিগন্ত মনে হয় এভাবে অনেকের কাছেই খুলে যাবে। পাকিস্তানে ব্লাসফেমির বিচারে কনভিকশন না দেওয়ার কারনে হাইকোর্টের জজকে আদালতে নিজে কক্ষে খুন করা হয়েছে। বেকসুর খালাস পেয়েও বাঁচা যায় না, এমনকি জেলের ভেতরেও মেরে ফেলা হয়, পাকিস্তানী ভাইরা এতই ধর্মানুভূতি সম্পন্ন। আমাদের দেশেও অভিযুক্ত ব্লগারদের লড়ার প্রস্তাবে অনেক উকিল ভয়ে পিছিয়ে গেছিল।
@আদিল মাহমুদ,
এই সংখ্যাগরিষ্টশব্দটাই আমি মনে করি সমাজে বিভাজন, সাম্প্রদায়ীকতা, জবরদস্তি, অযৌক্তিক দাবী, অন্যায়ভাবে দমন-পীড়ন, রাষ্ট্রের সহানুভুতি, সরকারের পক্ষপাতদুষ্ট আচরণের মূল কী-ওয়ার্ড। ১০ পার্সেন্ট এগেইন্সট ৯০ পার্সেন্ট। এখন বাংলাদেশের ৯০ পার্সেন্ট মানুষ যদি হিন্দু হতেন আর তারা ইসলামের সমালোচনা করতেন তখন অবস্থাটা কেমন হতো? একটা হিন্দুর ঘর পুড়াবার সাহস কি মুসলমানের হতো? এই জিহাদী জোশ, কারবালার হুমকি কি শুনা যেতো? অশিক্ষিত অগনতান্ত্রিক অসভ্য সমাজে যুগে যুগে সংখ্যাগরিষ্টদের জবরদস্তি, জুলুম অত্যাচার সংখ্যালঘুদের উপর হয়েছে আজও তা’ই হচ্ছে।
খুব সচেতন ভাবেই কিছু লোক ইসলামের সমালোচনা বা অবমাননাকে আজকের বাংলাদেশের এই অবস্থার জন্যে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে দায়ী করেন। কিন্তু ইসলামের সকল সমালোচনাই যে কোন না কোন এক সময় অবমানননা রূপে, বিদ্বেষ হিসেবে ধরে নেয়া হয় তা তারা দেখেও দেখেন না। সকল সমালোচনাই ধর্মে বিশ্বাসীদের কাছে অবমানননা। কোন প্রকার সমালোচনাই গ্রহনযোগ্য নয়, সে যতই দার্শনিক, শালীন, ভদ্রভাষা, বৈজ্ঞানিক যৌক্তিক তথ্য-প্রমাণ সহকারে হউক। ধর্মগ্রন্থই তা নিষেধ করে দিয়েছে। তাহলে কী ভাবে, কোন তরিকায় ধর্মগ্রন্থের ভুল প্রকাশ বা সংশোধন করা যায়? পৃথিবীর ইতিহাসে প্রচুর সাক্ষী আছে, এমন দার্শনিক, বৈজ্ঞানিক, কবি সাহিত্যিককে বিদ্বেষপূর্ণ লেখা বা কুৎসা রটনার জন্য নয়, শুধুমাত্র ধর্মগ্রন্থের সাথে ভিন্নমত পোষণ করার কারণে খুন হত্যা অগ্নিদগ্ধ করা হয়েছে। দাউদ হায়দার, শামসুর রহমান, আরজ আলী, হুমায়ুন আযাদ সহ আমাদের চোখের সামনে এর ভুরি ভুরি প্রমাণ আছে। ব্লগের জন্মের অনেক পূর্বে আমরা সেই একাত্তরেই ইসলাম বিদ্বেষী ছিলাম। ক্কাদিয়ানীদের দোষটা কি ইসলামের কুৎসা রটনা?
একটা ব্লগে দেখলাম একজন প্রশ্ন করেছে মুসলমানরা হিন্দু ধর্মের সমালোচনা করলে বা তাদের ধর্মানুভুতিতে আঘাত দিলে প্রতিবাদ করেনা কেন, তাদের কি মুখ নাই? আরেকজন বলেছে তারা আদালতে যায়না কেন? কিছু বুঝলেন? সে নিজের কথা বেমালুম ভুলে গেছে। আমি বলি, তোর মাথায় বিশ্বাসের ভাইরাস নামের কালা পোকা কামড় দিছিলনি? তুই যে আইনের স্মরণাপন্ন না হয়ে আরেকজনকে খুন করলে, রেল লাইনে আগুন দিলে, মানুষের বাড়ি ঘর পুড়ালে মনে আছে? ব্লগে লিখলো একজন আর মন্দির ভাঙ্গলে আরেকজনের, তোর হুশ বুদ্ধি ঠিক আছে? ব্লগ লিখলো কলম দিয়ে তুই জবাব দিলে ছুরি দিয়ে কেন? আসলে তার যুক্তির, মানবতার, উচিৎ, অনুচিৎ, ন্যায় অন্যায় বুঝার দরকার নাই, কারণ তার পেছনে আছে সংখ্যাগরিষ্টতার এক বিরাট শক্তি। আর সেই শক্তির প্রতি অন্যায়ভাবে সংখ্যাগরিষ্টের প্রতিনিধি মুসলমান সরকার পক্ষপাতিত্ব করে। সভ্য, সুষ্ঠ গনতান্ত্রিক, ধর্মনিরপেক্ষ দেশে সংখ্যাগরিষ্টতার বিবেচনায় সরকার পক্ষপাতিত্ব করতে পারেনা।
নাগরিকের পাহারাদারের দায়ীত্ব নিয়ে একটা রাষ্ট্রের সরকার যখন ধর্মের পাহারাদার হয়ে যায় তখন সেই দেশের সব কিছু একদিন নষ্টের হাতে চলে যেতে বাধ্য। সেটাই হচ্ছে বাংলাদেশে।
@আকাশ মালিক,
ধর্মানুভূতি, আইসিটি এক্ট কি কি সব আছে এগুলি সংশোধন করে ইহা কেবল মাত্র দেশের সংখ্যাগরিষ্ঠ জনসাধারনের ধর্মের অবমাননার জন্য প্রযোজ্য ,সংখ্যালঘু জনসাধারনের ধর্মের জন্য নহে কথাটি যোগ করার জোর দাবী জানাই।
আবদার টি ভারত যেয়ে করলে ভাল হয়।
আওয়ামী লীগ আর জামায়াতে ইসলামীর মধ্যে পার্থক্য দিন-দিন কমছে। 🙁
@ আরিফুর রহমান
অসাধারণ লিখেছেন।
এই সহজ কথাগুলো ক্ষমতাসীনরা বুঝতে চায় না কেন? এই কথাগুলো বুঝে ব্যবস্থা নিলে কতো অহেতুক ঝামেলা কমে যেতো। ঝামেলা না কমিয়ে গায়ের জোরে ঝামেলা বাড়িয়েই যাচ্ছে এসব মূর্খের দল।
(Y)
দারুণ লিখেছেন। ভালো বিশ্লষণ।
বাংলাদেশকে তালেবানী রাষ্ট্র বানানোর সুযোগ কম। বাংলাদেশের সংস্কৃতির কারণেই তা প্রায় অসম্ভব। যে কারণে সরকার প্রধান বলতে পেরেছেন, ব্লাসফেমী আইন করার দরকার নেই। কিন্তু বাংলাদেশকে এগিয়ে নেওয়ার জন্য যেসব অগ্রসর আইন প্রণয়ন, পশ্চাতপদ আইন বাতিল এবং রাষ্ট্র কাঠামোর সংস্কার উদ্যোগ নেয়া প্রয়োজন, সেগুলোকে বাধা দেওয়ার জন্যই হেফাজত এসব করছে।
সংবিধানের অনুচ্ছেদ ২ ক অনুযায়ী “The state religion of the Republic is Islam, but the State shall ensure equal status and equal right in the practice of the Hindu, Buddhist, Christian and other religions.”
সংবিধান অনুযায়ী কি বাংলাদেশ একটি ধর্মনিরপেক্ষ দেশ? আমি একটু সন্দিহান এই বিষয়ে।
আপনার লেখা আগুন লেখা।
একটা প্রাসংগিক লেখা এসেছে দেখা যাচ্ছে…
http://bangla.bdnews24.com/opinion_bn/article611946.bdnews
@আরিফুর রহমান,
বলেছিলাম আওয়ামী লীগের পাছা দিয়ে ইসলাম সুঁচ হয়ে ঢুকেছে, নরকের অগ্নিতপ্ত ফাল হয়ে বেরুবে। শুধুই ভোট আর ক্ষমতার লোভে তারা ইসলামিষ্ট মৌলবাদীদের তুষ্ট করে, আমি তা মনে করিনা। এরা আসলেই তাদের অন্তর থেকে ঠিক জামাতি, হেফাজতি, খেলাফতি, জমিয়তি, তালেবানি আদর্শে বিশ্বাসী। বর্তমান আওয়ামীরা শুধু মুখেই মুক্তিযুদ্ধের চেতনা, অসাম্প্রদায়ীক চেতনা, ধর্ম নিরপেক্ষতার কথা বলে, অন্তরে তারা পুরোপুরি এর উল্টোটাই বিশ্বাস করে। হাসিনা, মতিয়া, দিপু মনি, কামরুল, মখা আলমগীর, হাছান মাহমুদ, আইন মন্ত্রী, বন মন্ত্রী এক একটা চরম ভন্ড প্রতারক। পুলিশে, প্রশাসনে, আদালতে, শিক্ষাঙ্গনে, মাদ্রাসা, ইউনিভার্সিটি, কোন জায়গাটায় ইসলামানুভতি নাই? রাষ্ট্রের খতনা করাইয়া মুসলমান বানাইয়া কী পাইল মানুষ? কী দিল সংবিধানের বিসমিল্লাহ? বলেছি তো অনেক আগেই, যতদিন সংবিধানে রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম আর বিসমিল্লাহ থাকবে ততদিন এই দেশে শান্তির আশা করবেন না। ইসলাম যখন ব্যক্তি জীবনে পারিবারিক জীবনে ঘরে থাকে তখন সে সত্যিই শান্তির ধর্ম। আর ইসলাম যখন রাষ্ট্রক্ষমতায় থাকে তখন সে চরম সাম্প্রদায়ীক ভয়ংকর অমানবিক। মক্কা-মদিনার সন্ত্রাসী ইসলাম ইরাক-ইরানের সাম্যবাদী ইসলামকে শান্তিতে থাকতে দেয়নি কোনদিনই।
অশান্তির ইসলাম ছড়িয়ে যাচ্ছে গ্রামে গঞ্জেও। এবার শরিয়ত হানা দিয়েছে আমার এলাকায়-
@আরিফুর রহমান,
দেশ এগিয়ে নেবার জন্য, যুদ্ধাপরাধীদের বিচারে এই ব্লগাররা, (ধার্মিক এবং নিধার্মিক সন্মিলিত) যে পরিমান পরিশ্রম করছে, দেশের জন্য আপনার এতটুকু মায়া থাকলে তাদের শত্রু ভাবতেন না।
আপনি এদেশকে এগিয়ে নেয়ার জন্য আর কি কি কাজ করেছেন একটু বল বেন । আর আপ নার পরিচয় বা কি করেন একটু বল বেন।
(Y) (F)
(Y)
অগ্নী স্ফুলিঙ্গ! অসাধারণ- (Y) (F)
আগুন লেখা, আরিফ!
লেখাটি শেয়ার করা যাচ্ছে না কেন?
ধর্মহীনদের নিধার্মিকানুভূতিতে যারা আঘাত করে, যারা তাদের হত্যা করে, ও প্রকাশ্যে হত্যার ঘোষণা দেয় তাদের বিচার কি মুছলমান নারী নেত্রী শেখ হাসিনা করবেন? নাকি তিনি শুধু মুসলমানদের ধর্মীয় অনুভূতি রক্ষার পাকঠিকাদারিত্ব ধর্মনিরপেক্ষ রাষ্ট্র পরিচালনার নামে নিয়েছেন?
@তামান্না ঝুমু, সুন্দর যুক্তি রেখেছেন।
সঠিক বক্তব্য। মসজিদ সরকারী নিয়ন্ত্রনে এনে মসজিদ কে রাজনীতির বাহিরে রাখার নিশ্চয়তা আনতে হবে। মসজিদ হইতে মিছিল বাহির করা আইন করে নিষিদ্ধ করতে হবে।
যথাযোগ্য বলেছেন । (Y) এবারো রাস্তায় নেমেছে তারাই যাদের ৰ্ধমের দোকান-পাট বন্ধের মুখে আর যারা সৌদী পেট্রডলারের সাহায্যে দেশে তালেবানী শাসন প্রতিষ্ঠা করতে চায় ।
একটি ধর্মনিরপেক্ষ দেশে রাষ্ট্রের সাথে ধর্মের কোন সম্পর্ক থাকতে পারে নাl
(Y)
সহমত।
এই হিপোক্র্যাটদের হাত থেকে আগে মুক্তি দরকার। এরাই সব সর্বনাশের মূলে বিরাজমান! পত্র-পত্রিকার দিকে তাকালে এইসব হিপোক্র্যাটদের ইদানীং দেখবেন কাছা মেরে ছুটেছেন সারেন্ডারের জন্যে!