[নাস্তিক শব্দটা আজকে এদেশে পরিণত হয়েছে একটা জনপ্রিয় গালিতে। নাস্তিকদের সম্পর্কে প্রচলিত কিছু অতিকথন ব্যবহার করেই ধর্ম ব্যবসায়ী আর মৌলবাদী রাজনৈতিক গোষ্ঠী তাদের ব্যাপারে সাধারণ মানুষের মনকে বিষিয়ে তুলছে। অথচ অবিশ্বাসের দর্শন সম্পর্কে সঠিক ধারণা নাস্তিকতাকে এক প্রশংসনীয় জীবনদর্শন হিসেবেই প্রতিষ্ঠিত করতে পারত আজকের বাংলাদেশে। এ ব্যাপারে গণসচেতনতা এবং মুক্ত আলাপ আলোচনাই নাস্তিকদের সম্পর্কে ভীতি আর বিরূপ মনোভাব দূর করতে পারে বলে আমার বিশ্বাস। লস এঞ্জেলেস টাইমসে ২০০৬ সালে খ্যাতিমান লেখক এবং নিউরো সাইন্টিস্ট স্যাম হ্যারিস প্রকাশ করেছিলেন নাস্তিকদের সম্পর্কে ১০ টা প্রচলিত অতিকথন এবং তাদের খন্ডন। এরকম ছোট ছোট লেখা নাস্তিকতার স্বরূপ সম্বন্ধে মানুষকে অল্প সময়ের মধ্যে ভালোভাবেই অবহিত করতে পারে। এগুলোর প্রচারের মাধ্যমেই কাজটা শুরু করা যাক না! আর্টিকেলটার অনুবাদ এর আগেও প্রকাশ হয়েছে কিনা মুক্তমণায় আমার জানা নেই। যদি পূণঃপোস্ট হয়ে থাকে তার জন্য ক্ষমাপ্রার্থী। – অনুবাদক]
বেশ কয়েকটা ভোটগ্রহন থেকে দেখা যাচ্ছে যে নাস্তিকতা শব্দটা যুক্তরাষ্ট্রে এমন এক অসাধারন কলঙ্ক অর্জন করেছে যে একজন নাস্তিক হওয়া এখানে এখন রাজনৈতিক পেশার ক্ষেত্রে এক নিখাদ প্রতিবন্ধকতা (যেভাবে একজন কৃষ্ণবর্ণ, মুসলিম বা সমকামীও না)। সাম্প্রতিক নিউজউইকের ভোটগ্রহন অনুযায়ী, শুধুমাত্র ৩৭% আমেরিকান সবদিক থেকে যোগ্য একজন নাস্তিককে রাষ্ট্রপ্রধান হিসেবে ভোট দেবেন।
নাস্তিকদেরকে প্রায়সই অসহিষ্ণু, নীতিবিবর্জিত, বিষাদ্গ্রস্ত, প্রকৃতির সৌন্দর্য্য সম্পর্কে অন্ধ আর অতিপ্রাকৃতের ব্যাপারে গোঁড়াভাবে প্রমাণ নিয়ে আবদ্ধ বলে কল্পনা করা হয় ।
এমনকি জন লক, এনলাইটমেন্টের অন্যতম একজন মহান জনক, বিশ্বাস করতেন যে নাস্তিকতা “কোনভাবেই সহ্য করা উচিত নয়” কারণ, তিনি বলেছিলেন, “অঙ্গীকার, চুক্তিপত্র আর স্বপথ, যেগুলো মানব সমাজের বন্ধনী স্বরূপ, সেগুলো একজন নাস্তিকের উপর কোন নিয়ন্ত্রন বিস্তার করতে পারে না।“
এটা ৩০০ বছরেরও বেশি সময় আগের কথা। কিন্তু আজকের যুক্তরাষ্ট্রে, খুব সামান্যই পরিবর্তন ঘটেছে। উল্লেখযোগ্যভাবে জনসংখ্যার ৮৭% দাবী করে ঈশ্বরের অস্তিত্বে “কখনই সন্দেহ করা উচিত নয়”। ১০% এরও কম নিজেদেরকে নাস্তিক বলে গণ্য করে – আর দেখে মনে হচ্ছে তাদের সুনামের অবনতি ঘটছে।
যেহেতু ধরে নিতে পারি যে আমরা জানি যেকোন সমাজে নাস্তিকরা প্রায়শই সবচেয়ে মেধাবী আর বিজ্ঞান শিক্ষায় শিক্ষিত মানুষদের মধ্যেই বিরাজমান, সেহেতু দেখা যাচ্ছে যে এই অতিকথনগুলোকে খন্ডন করা একটা গুরুত্বপূর্ণ ব্যাপার, যেগুলো তাদেরকে জাতীগত বিতর্কে একটা বড় ভূমিকা পালন করতে বাঁধা দেয়।
১। নাস্তিকরা বিশ্বাস করে জীবনের কোন অর্থ নেই।
অন্যদিক থেকে বলতে গেলে, ধার্মিক মানুষেরা প্রায়ই উদ্বিগ্ন বোধ করেন যে জীবন অর্থহীন আর কল্পনা করেন যে সেটা থেকে উদ্ধার পাবার একমাত্র উপায় হলো মৃত্যু পরবর্তি চিরকালীন সুখ। জীবন যে দামী সে ব্যাপারে অনেকটাই নিশ্চিত নাস্তিকরা। সত্যিকারভাবে এবং পরিপূর্ণভাবে বেঁচে থাকার মধ্যেই জীবনের অর্থ পরিপূর্ণতা পায়। যাদেকে আমরা ভালোবাসি তাদের সাথে আমাদের সম্পর্কটা এখন আরও অর্থবহ; তাঁদের চিরকাল বেঁচে থাকতে হবে না একে অর্থবহ করার জন্য। নাস্তিকরা এই অর্থহীনতার ভীতিকে …কি বলব…অর্থহীনই মনে করে।
২। মানব ইতিহাসের সবচেয়ে বড় বড় অপরাধের জন্য নাস্তিকরাই দায়ী।
ঈশ্বরবিশ্বাসী মানুষেরা প্রায়শই দাবী করে থাকেন যে হিটলার, স্টালিন, মাও আর পল পট -এর অপরাধগুলো অবিশ্বাস থেকেই অনিবার্যভাবে প্রসূত। ফ্যাসিজম আর কমিউনজমের সমস্যা কিন্তু এটা না যে এরা ধর্মের ব্যাপারে অতিশয় সমালোচনামুখর। সমস্যাটা হলো এরা অনেকটা ধর্মের মতন। এসব শাসনব্যবস্থা একেবারে ভেতর থেকে গোঁড়ামিপূর্ণ আর সাধারণতই কোন নির্দিষ্ট ব্যক্তির প্রতি অপরিসীম শ্রদ্ধার সৃষ্টি করে যেটা ধর্মের প্রথাগত বীরপূজার থেকে কোন পার্থক্য নেই। অউশউইটজ, গুলাগ আর বধ্যভূমিগুলো মানুষ ধর্মীয় গোড়ামি পরিত্যাগ করলে কি হয় তার উদাহরণ নয়; এগুলো হলো রাজনৈতিক, বর্ণবাদী, আর জাতীয়তাবাদী গোঁড়ামির রণমূর্তি ধারণ করে সন্ত্রাসে লিপ্ত হবার উদাহরণ। মানব ইতিহাসে এমন কোন সমাজ নেই যেটা তার মানুষেরা যুক্তিবাদী হবার কারণে ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে।
৩। নাস্তিকেরা গোঁড়া।
ইহুদী, ক্রিশ্চান এবং মুসলিমরা দাবী করেন যে তাঁদের ধর্মগ্রন্থ মানুষের চাহিদার ব্যাপারে এতটাই ভবিষ্যদদর্শী যে সেগুলো একমাত্র একজন সর্বজ্ঞানী ঈশ্বরের সরাসরি নির্দেশনায়ই লিখিত হওয়া সম্ভব। একজন নাস্তিক হচ্ছেন সাদামাটাভাবে একজন মানুষ যে এই দাবীটা নিয়ে মনোযোগের সাথে ভাবনাচিন্তা করেছেন, গ্রন্থগুলো পড়েছেন এবং এই দাবীকে হাস্যকর হিসেবে খুঁজে পেয়েছেন। সত্যতা প্রতিপাদন করা যায় না এমন ধর্মীয় বিশ্বাসকে প্রত্যাখ্যান করতে কাউকেই কোনকিছু বিশ্বাস করতে হবে না, বা গোঁড়া হতে হবে না। প্রোগ্রামার স্টিফেন এফ রবার্টস একবার বলেছিলেনঃ “আমি তর্ক করে বলব যে আমরা দুজনেই নাস্তিক। আমি শুধু তোমার থেকে একজন ঈশ্বর কম বিশ্বাস করি। যখন তুমি বুঝবে যে কেন তুমি অন্যসব সম্ভাব্য ঈশ্বরদের খারিজ কর, তুমি বুঝবে আমি কেন তোমারটাকে খারিজ করি।
৪। নাস্তিকেরা মনে করে এই মহাবিশ্বের সবকিছু বোধগম্য কোন কারণ ছাড়া উৎপন্ন হয়েছে।
কেউ জানেনা মহাবিশ্বের কিভাবে উৎপত্তি হয়েছে। বস্তুতপক্ষে, এই ব্যাপারটা পুরোপরি পরিস্কার নয় যে আমরা মহাবিশ্বের প্রারম্ভ বা সৃষ্টি নিয়ে সঙ্গতিপূর্ণভাবে কোন কথাই বলতে পারি কিনা, কারণ এসমস্ত ভাবনাগুলো সময়ের ধারণার সাহায্য নেয়, আর এখানে আমরা কথা বলছি স্থান-কালেরই উৎপত্তি নিয়ে।
নাস্তিকরা বিশ্বাস করে সবকিছু কোন কারণ ছাড়া ঘটে গেছে – এই ধারণাটা নিয়মিতভাবে ডারউনের বিবর্তনবাদের সমালোচনায় ছুঁড়ে দেওয়া হয়। যেটা রিচার্ড ডকিন্স তাঁর চমকপ্রদ বই ‘দ্য গড ডিলিউজন,’ এ ব্যাখ্যা করেছেন। এটা বিবর্তনবাদের তত্ত্ব সম্পর্কে সম্পূর্ণ ভুল ধারণা দেয়। যদিও আমরা নির্ভুলভাবে জানিনা পৃথিবীর আদি রসায়ন কিভাবে জীববিদ্যার জন্মদান করেছিল, আমরা জানি যে বৈচিত্র্য আর জটিলতা আমরা প্রাণী জগতে দেখি তা ভাগ্যের জোরে উৎপন্ন হয়নি। বিবর্তন হচ্ছে ভাগ্যক্রমে ঘটা মিউটেশন এবং প্রাকৃতিক নির্বাচনের একটি মিশ্রন। ডারউইন “প্রাকৃতিক নির্বাচন” এই শব্দসমষ্টি পেয়েছিলেন গৃহপালিত পশুর প্রজননকারীদের “কৃত্রিম নির্বাচন” এর সাথে সাদৃশ্য থেকে। উভয় ক্ষেত্রে, নির্বাচন প্রজাতি সৃষ্টিতে এক উচু মাত্রার নন-র্যানডম প্রভাব প্রয়োগ করে।
৫। নাস্তিকতার সাথে বিজ্ঞানের কোন সম্পর্ক নেই।
যদিও ঈশ্বরে বিশ্বাস করেও বিজ্ঞানী হওয়া সম্ভব –যেটা কিছু বিজ্ঞানী সামলাতে পারেন দেখা যায় – এ ব্যাপারে কোন প্রশ্ন নেই যে বৈজ্ঞানিক চিন্তাভাবনা ধর্মীয় বিশ্বাসকে সমর্থনের বদলে একে ক্ষয়প্রাপ্ত করে। যুক্তরাষ্ট্রের জনসাধারণকে উদাহরণ হিসেবে নেয়া যাকঃ বেশিরভাগ ভোটে দেখা যায় যে প্রায় ৯০% একজন ব্যক্তিগত ঈশ্বরে বিশ্বাস করেন; কিন্তু জাতীয় বিজ্ঞান একাডেমীর ৯৩% সদস্য তা করেন না। এটা নির্দেশ করে যে কিছু চিন্তার ধরন আছে যা বিজ্ঞানের থেকে ধর্মীয় বিশ্বাসের সাথে কম সমমনোভাবাপন্ন।
৬। নাস্তিকেরা উদ্ধত।
বিজ্ঞানীরা যখন কোন কিছু সম্বন্ধে জানেন না – যেমন মহাবিশ্বের সৃষ্টি কিভাবে হয়েছিলো অথবা কিভাবে প্রথম ‘নিজের কপি তৈরি করতে সক্ষম’ অণুর সৃষ্টি হয়েছিল – তা তারা স্বীকার করেন। কোন কিছু না জেনে তা জানার ভান করা বিজ্ঞানে এক সুগভীর বাধা। অথচ সেটাই হলো বিশ্বাসের উপর ভিত্তি করা ধর্মের জীবনীশক্তির উৎস। ধর্মোপদেশের একটা প্রাসাদসম বিড়ম্বনা হলো যে বিশ্বাসীরা নিজেদেরকে বিনয়ের জন্য কতবার নিজেদের প্রশংসা করে থাকেন, আবার একইসাথে মহাকাশবিদ্যা, রসায়ন আর জীববিজ্ঞানের এমনসব তথ্য জানেন বলে দাবী করেন যা কোন বিজ্ঞানীরাই জানে না। মহাবিশ্বের প্রকৃতি এবং তা-তে আমাদের অবস্থান সম্পর্কে প্রশ্ন বিবেচনা করার সময়, নাস্তিকেরা তাদের মতামত বিজ্ঞানের কাছ থেকে নেন। এটা ঔদ্ধত্য নয়; এটা বুদ্ধিবৃত্তিক সততা।
৭। নাস্তিকেরা আধ্যাত্মিক অভিজ্ঞতা লাভে অক্ষম।
এমন কোন কিছু নেই যা একজন নাস্তিককে ভালোবাসা, পরমানন্দ, মগ্নতা, আর সম্ভ্রমের অভিজ্ঞতা লাভ করা থেকে বঞ্চিত করে। নাস্তিকেরা এইসব অভিজ্ঞতাকে মূল্য দিতে পারে এবং নিয়মিতভাবে সেগুলো খুজতে পারে। নাস্তিকেরা যা করে না তা হলো এসব অভিজ্ঞতার উপর ভিত্তি করে বাস্তবতার প্রকৃতি সম্পর্কে অসত্য (এবং অসমর্থনীয়) কোনকিছু দাবী করা। এতে কোন প্রশ্ন নেই যে কোন কোন খ্রীষ্ট ধর্মালম্বী বাইবেল পড়ে এবং যীশুর কাছে প্রার্থনা করে নিজেদের জীবনকে আরও ভালোর দিকে রূপান্তরিত করতে পেরেছেন। এটা কি প্রমাণ করে? এটা প্রমাণ করে নির্দিষ্ট কিছু মনোসংযোগ সংক্রান্ত নিয়মানুবর্তিতা এবং আচরণ প্রকৃতি মানব মনে গভীর প্রভাব ফেলতে পারে। খৃষ্টানদের এইসব ইতিবাচক অভিজ্ঞতা কি এটাই বলে যে যীশুখৃষ্ট মানব জাতীর একমাত্র ত্রাতা? এর ধারে কাছেও না – কারণ হিন্দুরা, বৌদ্ধরা, মুসলিমরা এবং এমনকি নাস্তিকরাও নিয়মিতভাবে এরকম অভিজ্ঞতার সম্মুখিন হয়েছেন।
বস্তুতপক্ষে, এমনকি যীশু দাঁড়ি যে রাখত সে ব্যাপারেই এ পৃথিবীতে একজন খৃষ্টান নেই যে নিশ্চিত হতে পারে, কুমারী গর্ভে জন্ম আর মৃত্যুর পর প্রত্যাবর্তনের ব্যাপারে তো আরও কম। এগুলো সেই রকমের দাবী না যা আধ্যাত্মিক অভিজ্ঞতা সত্যায়িত করতে পারে।
৮। নাস্তিকরা বিশ্বাস করে যে মানব জীবন এবং মানব উপলব্ধির বাইরে আর কিছুই নেই।
নাস্তিকরা মানব উপলব্ধির সীমাবদ্ধতা বিনা বাধায় স্বীকার করে নিতে পারেন যেভাবে ধার্মিক ব্যক্তিরা পারেন না। এটা স্পষ্টত প্রতীয়মান যে আমরা মহাবিশ্বকে পুরোপরিভাবে বুঝি না; কিন্তু এটা আরও স্পষ্টভাবে প্রতীয়মান যে না বাইবেল না কোরান এ সম্পর্কে আমাদের শ্রেষ্ঠ উপলব্ধি প্রতিফলিত করে। আমরা জানি না মহাবিশ্বের অন্য কোথাও জটিল জীব বসবাস করে কিনা, কিন্তু করতে পারে। যদি করে, তাহলে সেইসব জীবের প্রাকৃতিক নিয়ম সম্পর্কে উপলব্ধি আমাদের উপলব্ধিকে অনেকগুনে ছাড়িয়ে যেতে পারে। নাস্তিকরা বিনা বাধায় এইসব চিন্তাভাবনা করতে পারে। তারা এটাও স্বীকার করে যে যদি প্রতিভাবান মহাজাগতিক প্রাণীরা থেকে থাকে, বাইবেল আর কোরানের ভেতর যা আছে তা তাদের মনে মানব নাস্তিকদের থেকেও কম রেখাপাত করবে।
নাস্তিকের দৃষ্টিভঙ্গি থেকে দেখলে বলতে হয়, পৃথিবীর ধর্মগুলো মহাবিশ্বের আসল সৌন্দর্য্য আর বিশালতাকে পুরোপুরিভাবে গুরুত্বহীন করে দেয়। এরকম পর্যবেক্ষন করার জন্য কাউকে অপ্রতুল প্রমানের উপর ভিত্তি করে কোন কিছুকে স্বীকার করতে হবে না।
৯। ধর্ম যে সমাজের জন্য অত্যন্ত উপকারী সে বাস্তবতাটা নাস্তিকরা উপেক্ষা করে।
যারা ধর্মের ভালো প্রভাবের উপর জোর দেন তারা কখনই উপলব্ধি করেন না যে সেসব প্রভাব কোন ধর্মীয় মতবাদের সত্যতাকে প্রদর্শন করতে ব্যর্থ হয়। এই জন্য আমাদের “ইচ্ছামত-চিন্তা” আর “আত্ম-প্রতারণা” –এর মত শব্দ রয়েছে। সান্তনাদায়ী বিভ্রান্তি আর সত্যের মধ্যে এক গভীর পার্থক্য আছে।
যেকোন ক্ষেত্রে, ধর্মের ভালো প্রভাব সম্বন্ধে নিশ্চিতভাবে বিতর্ক করা যায়। বেশীরভাগ ক্ষেত্রে, এটাই প্রতীয়মান হয় যে ধর্ম মানুষকে ভালো ব্যবহার করার ব্যাপার বাজে কারণ দেয়, যেখানে ভালো কারণ আসলেই রয়েছে। নিজেকে জিজ্ঞেস করে দেখুন, কোনটা বেশী নৈতিক, গরীবকে তার দূঃখকষ্টের জন্য সাহায্য করা, নাকি এই কারণে সাহায্য করা যে আপনি মনে করেন মহাবিশ্বের সৃষ্টিকর্তা আপনাকে তা করতে বলেছেন, করলে তিনি পুরস্কৃত করবেন অথবা না করলে শাস্তি দেবেন?
১০। নাস্তিকতা নৈতিকতার কোন ভিত্তি প্রদান করেনা।
যদি কোন ব্যক্তি এর মধ্যেই বুঝে না গিয়ে থাকে যে নিষ্ঠুরতা খারাপ কাজ, সে সেটা বাইবেল বা কোরান পড়ে আবিস্কার করতে পারবে না –কারণ এইসব বই নিষ্ঠুরতাকে উদযাপন করতে করতে ফেটে পড়ছে, মানবিক এবং স্বর্গীয় উভয় প্রকারই। আমরা ধর্ম থেকে আমাদের নৈতিকতা পাই না। আমাদের পবিত্র গ্রন্থ কোনটা ভালো তা আমরা নৈতিক স্বজ্ঞার আশ্রয় নিয়েই সিদ্ধান্ত নিই, যেটা (কিছু স্তর পর্যন্ত) আমাদের মধ্যে জৈবিকভাবে প্রোথিত আর যেটা হাজার বছর ধরে মানব সুখের কারণ এবং সম্ভাব্যতার ব্যাপারে চিন্তাভাবনার মাধ্যমে পরিশোধিত হয়ে এসেছে।
বছরের পর বছর ধরে আমরা নৈতিকতার ব্যাপারে যথেষ্ট অগ্রগতি অর্জন করেছি, কোরান আর বাইবেল আরও নিবিড়ভাবে পড়ার মাধ্যমে আমরা এই অগ্রগতি সাধন করিনি। উভয় গ্রন্থই দাসপ্রথাকে মার্জনা করেছে – আর তারপরো প্রত্যেক সভ্য মানুষ স্বীকার করেন যে ক্রীতদাসপ্রথা নিদারুনভাবে ঘৃণ্য ও বিভীষিকাময় এক প্রথা। ধর্মগ্রন্থে যা কিছু ভালো আছে – সোনালী নিয়মের মত – সেটাকে পরিমাপ করা যাবে তার নৈতিক প্রজ্ঞার ভিত্তিতে, সেটা মহাবিশ্বের স্রষ্টা হতে প্রাপ্ত তা বিশ্বাস না করেই।
(স্যাম হ্যারিস, লস এঞ্জেলেস টাইমস, ২০০৬)
ঝকঝকে ও সাবলীল অনুবাদ।
যাদের সাধ আছে সাধ্য নেই অর্থাৎ বিদেশী ভাষায় দুর্বলদের জন্য আপনারাই শেষ ভরসা।
আরও চাই, অনুবাদককে ধন্যবাদ ।
আমার জানতে ইচ্ছা করে,
সব কিছু যদি শূণ্য থেকেই সৃষ্টি হয় তাহলে শূণ্য থেকে আর কিছু সৃষ্টি হয় না কেন।
নাস্তিকরা যদি বিশ্বাস করে সব কিছু কারণ ছাড়াই হয়েছে তবে এটা যদি বিশ্বাস করি সব কিছু মহাবিশ্বের একটা শক্তি থেকে হয়েছে এটা কেন বেশি বিজ্ঞানসম্মত হবে না।
পৃথীবির সব প্রান যদি মিউটেশনের কারনে সৃষ্টি হয় তবে প্রান গুলোর জন্য অক্সিজেন সৃষ্টি করল কে যা আর কোন গ্রহে দেখা যায় না? যদি অক্সিজেন গ্রহনকারীরা ন্যাচরাল চয়েজের মাধ্যেমে বেচে থাকে এমন একটা প্রানী কেন পেলাম না যেটার জন্য অক্সিজেন প্রয়োজন নাই। প্লিজ ব্যাকটেরিয়ার কথা বলবেন না ওটা জীব ও জড়ের সেতুবন্ধন বা বিতর্ক আছে। প্রানী গুলো বিচিএ শক্তির উপর নির্ভরশীল নয় কেন?
ধর্মের জন্য টাকা গ্রহন যদি খুব লাভজনক ব্যবসায় হয় তবে বিশ্বের শ্রেষ্ঠ ধনীদের তালিকায় দালাই লামা, আল্লামা সফী বা আইতুল্লাহ খামিনির নাম নেই কেন।
ধর্ম যদি বিশ্বাসের উপর হয়; বিজ্ঞান তার ব্যাখ্যা দিতে না পারলেই ধর্ম কূপমূন্ডকতা হবে কেন। ধর্মের কোথায় বলা আছে সে বিজ্ঞানের ব্যাখ্যা বা আমাদের তৈরি স্টানডার্ডের কাছে দায়বদ্ধ।
স্টেফেন হকিং তার গ্রান্ড ডিজাইনে বলছিল আমাদের মানুষ হিসেবে জ্ঞানের সীমাবদ্ধতা আছে তবে সেই সীমাবদ্ধতা নিয়ে আমরা কেন আসীম ইস্বরকে চ্যালেন্জ জানাই।
যদি স্টেফেন হকিংকে মেনে নেই তবে আমরা মানুষ বা প্রানিরা বিগ ব্যাং এর ফলে সৃষ্ট কোন পদার্থ ছাড়া আর কিছু না।
আমাদের জ্ঞান আমাদের কর্ম আমাদের চিন্তা সবই আপেক্ষিক ও নির্ধারিত।
যদি ইস্বর বা সৃষ্টকর্তা নাই থাকে তবে সময়ের গুনেই মানব সভ্যতা একে ডাস্টবিনে ছুড়ে ফেলবে এর জন্য নাস্তিকতার চর্চার দরকার নাই যা কিনা অপরের মনে আঘাত দেয়।
মানুষের মনে কষ্ট দেয়া মিথ্যা বলার চেয়ে বড় অপরাধ।
@ইফতেখার মাহমুদ বুলবুল,
আপনাকে একটা পাল্টা প্রশ্ন করি- বিগ ব্যাং তত্ত্ব সম্ভবত বিশ্বাস করেন কারন আপনাদের জাকির নায়েক কোরানে সেটা আবিস্কার করেছে, প্রশ্ন করি- উক্ত বিগ ব্যাংএর আগে আল্লাহ কোথায় ছিল ? আর এখনই বা আল্লাহ কোথায় থাকে?
নাস্তিকরা এটা বিশ্বাস করে না , বিজ্ঞান গবেষণা সেই ঈঙ্গিত দিচ্ছে , নাস্তিকরা সেটাই বলে।
এ পর্যন্ত কয়টা গ্রহে গেছেন আপনি ? মনে হয় বিশ্বের সকল গ্রহে আপনি এক রাতেই বোরাক সদৃশ কোন গাধা জাতিয় প্রানীর পিঠে ভ্রমন করে ফেলেছেন।
বিজ্ঞান আর বিজ্ঞানীদের কি খেয়ে দেয়ে কোন কাম নেই যে – ধর্মকে বিজ্ঞানের মাধ্যমে প্রমান করার মত ফালতু ব্যাপার নিয়ে মাথা ঘামাবে ? ধর্মই বরং বিজ্ঞানের কাছে আসে তার যথার্থতা প্রমান করতে , বিজ্ঞান কখনো ধর্মের কাছে যায় না। সেকারনেই না জাকির বা হারুন ইয়াহিয়ার মত টাউটরা কিছু করে কম্মে খাচ্ছে।
মানুষ বা প্রানীরা অবশ্যই তাই।আর ধর্ম বা আল্লাহ হলো মানুষের কল্পনা। ইতর প্রানীরা কল্পনা করতে পারে না বলে তাদের কোন ধর্ম বা আল্লাহর দরকার পড়ে না। ইতর প্রানীরা যদি কল্পনা করতে পারত হয়ত তারা শয়তান বলে কোন এক ঈশ্বরের আবিস্কার করত আর তখন হয়ত তারা মানুষকে ধরে নিয়ে জবাই করে শয়তানকে সন্তুষ্ট করতে চাইত। হতে পারত আপনিও তখন তাদের কাছে একটা দারুন কুরবানীর পশু হয়ে যেতেন।
@ফকির বাবা,
যুক্তিবিদ্যার বা তর্কের একটা বদ দিক আছে যে এটা শেষ হতে চায় না। কিছু মানুষ আছে যারা নিজেদের যেখানে নিশ্চুপ হলে বেশি ভাল সেখানেও তর্ক করে।
আমি জাকির নায়েক থেকে বিশ্বাস করি না কোরান থেকে বিশ্বাস করি সেটা আপনি কী করে আমার উপর ট্যাগ মারেন। আমি তো নাস্তিকো হতে পারি।
ধরুন কালকে আমাকে আমার বাবা বল্ল বাপ আমরা তোর জন্মদাতা বাপ-মা নই স্বাধীনতা যুদ্ধে তোকে কুড়াই পাইছি। এখন যদি আমাকে বলেন তোমার জন্মদাতা বাপের দেশের বাড়ি কই কী বল্ব আপনাকে। আর ধর্ম দর্শন বলে যে সৃষ্টিকর্তা সর্বও আছে; আর বিজ্ঞান তাকে খুজে পায় না বলে আপনি যদি বিশ্বাস করেন সৃষ্টিকর্তা নাই তাহলে আপনি বিশ্বাসের খেলায় ডন ব্যডম্যান। কোন কিছু বিশ্বাস কইরেন না একবার চিন্তা করেন অবিশ্বাস করলে লসের সম্ভাবনা আছে আর বিশ্বাস করলে পুরাই কেল্লা ফতে।( প্রবাবিলিটির সূএ মেনে বল্লাম)
তাহলে মানুষের চাদে যাওয়ার জন্য এত পোষাকের দরকার কী মিউটেশন পদ্ধতি কবজা কইরা একটা গরু-গাধারে পাঠাইলেও চলত। তাহলে মিউটেশেনের কারণ কী? উত্তরঃ দৈবাত। আর দৈবাত কী? উত্তরঃ ন্যাচার। তাহলে ন্যাচারের ক্ষমতা আছে। না না ন্যাচার একটা নিজেও মিউটেশনের ফলাফল। এটা তো ইসলাম ধর্মে আপনাদের যেই সমালোচনা ওই যে; “কোরআন কোথা থেকে আসছে মুহাম্মদ (স) থেকে আর মুহাম্মদ (স) কোথা থেকে আসছে কোরানেই তো আছে।” এই যুক্তির চেয় দূর্বল।
আমিও যাই নাই আপনিও যান নাই।আপনার জানালা খুলুন কয়টা প্রান দেখতে পেলেন। এ পর্যন্ত লাখ লাখ গ্রহ-উপগ্রহ সার্চ কইরা একটা ব্যাকটেরিয়া পাওয় গেল না অথবা প্রান থাকার পরিবেশটাও পাওয়া গেল না বাট আপনি আমারে সজোরে চ্যালেন্জ দিতাছেন আমি কি সব গ্রহ দেখছি নাকি। পৃথীবির ধর্ম গ্রন্ধের ১ পার্সেন্ট হইলেও আমি সত্য প্রমান করতে পারব। তাই আমি সৃষ্টিকর্তাকে বিশ্বাস করাতে বেশি বাস্তব দেখি। তা ভাই আপনি এত বিশ্বাসের সাথে বলেন কেমনে। মৌলবাদীদের কাছে তো ধর্ম গ্রন্ধ আছে তাই তারা ১ পাসেন্ট হইলেও ঠিক আপনে তো দেখি ১০০ পার্সেন্টেই মৌলবাদী।
যাই হোক আমি @অভিজিত্ ভাইকে বলতে চাই আপনি নিশ্চয় বুজতে পারছেন ধর্মকে বিজ্ঞানে মধ্যে টানা টা ফালতু কাজ। আর এ ভিত্তিক আর্টেকেলে @ফকির বাবা মন্তব্য করছেন। তাই @ফকির বাবার মন্তব্যটাও ফালতু।
আচ্ছা কখনো কী শুনছেন এরিস্টটলের এই মন্তব্য বৈজ্ঞানিকভাবে সার্থক বা ব্যর্থ? কারন কী ফিলোসপি একটা বিভাগ এটা সতন্দ্র বৈশিষ্টের অধিকারি এবং স্বাধীন; তেমনি ধর্ম বিশ্বাস একটি বহুজন পালনিয় ধারনা যা সতন্দ্র বৈশিষ্ট নিয়ে আছে। হতে পারে এটা সত্য আবার হতে পারে এটা মিথ্যা কোনটাই প্রমাণ করা সম্ভব না। তাই ধর্মকে বিজ্ঞানের কাছে বা বিজ্ঞানকে ধর্মের কাছে প্রমান করতে হবে না। ধর্ম হচ্ছে সম্পূর্ণ রূপে বিশ্বাস সেটা আবার প্রমানিত হয় কী করে।
তারা ধরলাম টাউট, তা তারা কি বেকার ছিল। আপনি জাকির নায়েকের সবটুকু টাউট বলছেন তা তিনি কি মিথ্যা। উনি তো সুধু প্রচারক আর উনি তাই করতেছেন। এই যে আমি বল্লাম নাস্তিকবাদ থেকে ধর্ম বিশ্বাস প্রবাবিলিটির সূএ অনুসারে বেশি যুক্তগ্রাহ্য। তাহলে নাস্তিকবাদ নিয়ে যারা কথা বলছে তারা কি ধর্মিয়দের চোখে টাউট। কখনই না বরং তারা পুরা সত্য থেকে বিচ্যুত বই কিছু না।
ইতর প্রানীরা কল্পনা করতে পারে না কে বল্ল আপনাকে। আপনি কী হিন্দু ধর্মের পরজন্মের অনুসারে আগে ইতর প্রাণী ছিলেন নাকি।
তা ধর্ম মানে শুধু জবাই করা শিখানো। গ্রেট আপনার চিন্তা ধারা ভাল বুজছেন। আর কোন উদাহরণ ছিল না আপনার কাছে।
একটা গল্প আছে না এক হুজুর সকালে পুকুরের এই প্রান্তে ওজু করতাছে আর………..।
যার মনে যা আছে সে তাই বুজে। থাক ভাই আপনাকে ধর্মীয় হয়ে কাজ নাই আপনি ডেল কর্ণেগীর নীতি গুলা ফলো করতে পারেন। ভাই আপনার নাস্তিক বিশ্বাসের আঘাত করার জন্য দুঃখিত আবার কেস টেস কইরেন না প্লিজ। :hahahee:
@ইফতেখার মাহমুদ বুলবুল,
বিজ্ঞান সৃষ্টিকর্তাকে খোজে না। বিজ্ঞানের কাজ ভৌত বিধি আবিস্কার। তা করতে যেয়ে এখনো পর্যন্ত তারা দেখেনি কোথাও সৃষ্টি কর্তা নামক কোন বস্তুর দরকার পড়েছে কোন ব্যখ্যায়।
বছর ১০/১২ হলো মাত্র বিজ্ঞানীরা বাইরের নক্ষত্রে গ্রহ আবিস্কারের প্রযুক্তি আবিস্কার করেছে। এরি মধ্যে তারা ৩০০০ এর বেশী নক্ষত্রে গ্রহের আবিস্কার করতে পেরেছে পরোক্ষভাবে। অর্থাৎ গ্রহকে এখনো বাস্তবে দেখা সম্ভব হয় নি। যদিও তার মধ্যে বেশ কিছু পৃথিবী সদৃশ গ্রহও আবিস্কার করেছে। এত উতলা হওয়ার কি আছে। আরও কিছু বছর অপেক্ষা করুন, প্রযুক্তির আরও একটু উন্নতি হোক , সরা সরি গ্রহগুলোকে পর্যবেক্ষন করার ক্ষমতা অর্জন করুক , তার পর না হয় আপনি আপনার সিদ্ধান্ত টানবেন।
কিন্তু ধর্ম পন্ডিতরা তো দেখি সব তাদের কিতাবে বিজ্ঞানের যাবতীয় তত্ত্ব আবিস্কার করে চলেছে মহা উৎসাহে। এর মানে কি ?মানে তো একটাই বিজ্ঞান দ্বারা যদি সিদ্ধ করানো যায় তাহলে তাদের কিতাব টিকে যাবে আর তাই ধর্মও । তখন সেটা আর খালি বিশ্বাসের ব্যপার থাকবে না, তাই না ? তার মানে ধর্মই আগ বাড়িয়ে বিজ্ঞানের কাছে আসছে তার টিকে থাকার জন্যে। বিজ্ঞান তো কখনো তার টিকে থাকার জন্যে ধর্মের কাছে সনদ পত্র আনতে যায় না।
তিনি পুরাই মিথ্যা ও ভন্ড। মুসকিল হচ্ছে আপনারা তার সেই ভন্ডামি বা মিথ্যাকে ভালবাসেন ও তা গ্রহন করার জন্য মুখিয়ে থাকেন। জাকির নায়েক একজন মিথ্যার প্রচারক। মিথ্যাকে সত্য আর সত্যকে মিথ্যা বানাতে তার জুড়ি মেলা দায়। পশ্চিমা কোন দেশ হলে লোকটাকে একটা মহা ভাড় হিসাবে চিহ্নিত করত এতদিন। ভাগ্য ভাল উপমহাদেশে তার মিথ্যার বেসাতি করেন তিনি। কারন এ অঞ্চলটা এ ধরনের মিথ্যার জন্য ভাল বাজার।
ধর্ম মানে কি সেটা আপনি ভাল জানেন তবে বাস্তবে আমরা তো দেখছি যারা বেশী করে ধর্ম মানে তারা এক একটা জল্লাদ। তারা এখন শুধু গরুছাগলই জবাই দেয় না , আল্লাহর নামে মানুষ জবাই করতেও বেশ পটু। দেখেন নি কিভাবে তারা রাজিবকে জবাই করেছে ? জবাই ছাড়াও মানুষের ঘরবাড়ী জ্বালানো, যাত্রী ভর্তি গাড়িতে আগুন লাগানো , পিটিয়ে মানুষ মারা – সব কিছুতেই তারা অতি দক্ষ আর এর প্রমান তো হাতে নাতেই। তাহলে ধর্ম অর্থ আমরা আর কি করতে পারি ?
ধর্মকে খুচিয়ে লাভ কি? শুধু শুধু সমাজে অস্থিরতা তৈরী করা । নিজেকে সবসময় শ্রেষ্ঠ ভাবার কোন কারণ নেই। আমার দর্শন আপনার ভাল নাও লাগতে পারে, তাই বলে আমাকে তাচ্ছিল্য করার কোন অধিকার আপনার নেই। ইদানিং ব্লগে দুকলম ধর্ম বিরোধী কথাবার্তা লিখে নিজেকে– আমি কি হনুরে — ভাব লক্ষ্য করা যাচ্ছে। আমার কথা পরিষ্কার, আপনি যেহেতু নিজেকে পরিবতন করতে পারবেন না, তাই অন্যকে পরিবতিত হতে বলার নৈতিক আধিকার আপনার নেই।
@পলাশ, আপনার মন্তব্য পরিস্কার না । কে নিজেকে পরিবরতন করতে পারে না । পৃথিবীতে অজস্র মানুষ নিজেকে পরিবর্তন করতে পেরেছেন । আপনি বললেন,
” আমার দর্শন আপনার ভাল নাও লাগতে পারে, তাই বলে আমাকে তাচ্ছিল্য করার কোন অধিকার আপনার নেই।”
তাহলে প্রশ্ন হল । যদি কোনও আওয়ামী সমর্থক কোনও বি এন পি সমর্থক কে তাচ্ছিল্য করে তাহলে কি তা শাস্তিযোগ্য বলে গণ্য হবে ? যদি হয় তাহলে শাস্তির প্রয়োগ কতটুকু হবে এবং কিভাবে হবে ?
যদি না হয় তাহলে একি ব্যাপার কি এক্ষেত্রেও হওয়া উচিত না?
এখন আ্পনি হয়ত বলবেন ঈশ্বর বা তার ‘প্রেরিত পুরুষ’ কে নিয়ে মস্করা চলবে না । তাহলে আপনাকে এও বলতে হবে কেন চলবে না।
সর্বোপরি বলা যায় নাস্তিকরা ই সব অপকর্মের মূল হোতা । মানে যারাই অপকর্ম করবে তারাই নাস্তিক । সে হিসাবে শিবির , জামাত , এরাও নাস্তিক । নাস্তিক নাস্তিক ভাই ভাই । 😛
আসলে আগের মন্তব্যে ‘নাস্তিকতার চর্চা যারা করেন, তাদের প্রথমদিককার সময়গুলোতে উপযোগী মনে হয়, পরে আর হয়না’ বলে যে উক্তি করেছিলাম, তা ফিরিয়ে নিচ্ছি। আজই ফেসবুকে দেখলাম নাস্তিকতা নিয়ে নানা রং তামাসা। আসলে উপরের মিথগুলোর পাশাপাশি আরো কিছু মিথ আছে, যেমন –
‘ধর্ম বিরোধিতা -এইটা ফ্যাসিস্ট আচরণ।’
কিংবা
‘নাস্তিক হইলে দ্রুত নাম কামানো যায়।’
ইত্যাদি। সেগুলোও খণ্ডন করা জরুরী। আমি লিখেছি-
*********************************************
গতকালের প্রথম আলো পত্রিকায় দেখলাম, এক মন্ত্রী হেফাজতে ইসলামের নেতা শাহ আহমদ শফীর উদ্দেশে বলেছেন, ‘আপনি আমাদের নাস্তিক বলার কে?’ শিরোনাম দেখে উদ্দেশ্য উনার মহত বলে মনে হবে। কিন্তু লেখার ভিতরে ঢুকলেই দেখবেন, উনি বলেছেন –
নিপুণ পলিটিশিয়ানের মতো দুপক্ষকেই তুষ্ট করে দিলেন মন্ত্রী। আর এখন কমন শত্রু তো ইসলামবিদ্বেষী নাস্তিকেরা। নাস্তিকেরা ‘ইসলামের অবমাননা’ করে।তাই তাদের উপযুক্ত শাস্তিই হবে, এ আর নতুন কি! যদিও ঠিক কতটুকু সমালোচনা কিভাবে করলে সেটা ‘ইসলাম অবমাননা’র পর্যায়ে যাবে তা তিনি পরিষ্কার করেননি (হেফাজত তো পুরো সরকারকেই ইসলামের অবমাননার দায়ে অভিযুক্ত করেছে)। অবশ্য এ ধরণের পলিটিশিয়ানরা মূল পরিষ্কার না করে জিনিসপত্র ধোঁয়াশা করেই রাখতে চান। তাইলেই বরং সুবিধা। হাওয়ার তালে তালে চলা যায়। আজকে হাওয়া নাস্তিকদের বিপরীতে, বিপরীত স্রোতেই তিনি ছাতা মেলেছেন। ফারমার নামের একজন ব্লগার দেখলাম আমারব্লগে বলেছেন – ‘অগ্নিকন্যা আজ ‘বায়ুকন্যা’তে পরিণত হয়েছেন; বাতাসে যেদিক নিয়ে যায়, সে পথ ধরেই আজ হাসিনার মন্ত্রিসভায়’ । কথাটা মিথ্যা নয়। এই ধরণের নগ্ন হাওয়াবাজি মন্ত্রী সাহেবা আগেও করেছেন। খেলাফত মজলিসের সাথে একসময় আওয়ামিলীগ শরিয়া চুক্তি করেছিল মনে আছে? তখন এই অগ্নিকন্যাই দুই হাত দুই পা তুলে একে সমর্থন দিয়েছিলেন। তিনিই ছিলেন এই শরীয়াচুক্তির জন্য অন্যতম সোচ্চার মুখ। পরে অবশ্য চুক্তি বাতিল হয়েছিল। এগুলো থেকে বোঝা যায় উনি একাত্তরে জ্বালাময়ী এবং ক্ষুরধার বক্তৃতা দিয়ে অগ্নিকন্যা খেতাব পেলেও, বুদ্ধি আর মননশীলতার অভাবে সেই অগ্নি দাবানলে পর্যবসিত হয়নি, বরং মিইয়ে গিয়েছে, আর তিনি পর্যবসিত হয়েছেন ‘বায়ুকন্যায়’।
এখন, পলিটিশিয়ানরা পলিটিক্স করবেন, এ আর নতুন কি! কিন্তু ইদানীং শাহবাগের উদ্যোক্তাদের মধ্যেও রাজনীতিবিদদের মতোন বুলি শুনছি। ‘ধর্মবিরোধিতা’ করা যাবে না, কারো প্রতি ‘বিদ্বেষ পোষণ’ করা যাবে না, সবাইকে নিয়ে ‘মিলেমিশে’ কাজ করতে হবে – টাইপের অন্তঃসারশূন্য বানী দিয়ে চলেছেন বায়ুকন্যার মতোই।
যেমন, কিছুক্ষণ আগে দেখলাম – একটি পোস্ট দিয়েছেন শাহবাগের গণজাগরণের অন্যতম উদ্যোক্তা তার ফেসবুক স্ট্যাটাসে। উনার মেধা শ্রম এবং লেখালিখি আমার এমনিতে ভালই লাগে। উনার একটি ব্যতিক্রমী অবস্থান ছিল আমার কাছে – ‘সেলিব্রেটি ব্লগার’দের মত আচরণ তার নয়। পোস্টদাতার প্রতি পূর্ণ শ্রদ্ধা রেখেই বলতে বাধ্য হচ্ছি, এবারের এ পোস্ট এ পোস্ট যুক্তির বিচারে মানোত্তীর্ণ হয়নি মোটেই। অতিমাত্রায় সরলীকৃত এবং ধোঁয়াশা-পূর্ণ এ পোস্টের খণ্ডন করতে হলে প্রতিটি লাইনেরই রিবিউটাল দরকার হতো। সময় এবং ধৈর্যে কুলোবে না বলেই ক্ষান্ত দিতে হবে। তবে মূল পয়েন্টগুলো নিয়ে আলোচনা করা যায়।
যেমন উনি বলেছেন –
কেন? ধর্ম বিরোধিতা ‘ফ্যাসিস্ট’ আচরণ হবে কেন? কেবল বিরোধিতা শব্দটা আছে বলেই? তাহলে আমি যদি বলি কমিউনিস্টদের ‘পুঁজিবাদ বিরোধিতা’ও এক ধরনের ফ্যাসিস্ট আচরণ? তখন? তখন কিন্তু আপনিই হাঁ রে রে করে তেড়ে আসবেন। পুঁজিবাদের তত্ত্বের মধ্যে যেমন আপনারা বিরোধিতা করার উপকরণ খুঁজে পান, সেজন্যই আপনারা পুঁজিবাদ বিরোধী, ঠিক তেমনি বিজ্ঞানমনস্ক, যুক্তিবাদী প্রগতিশীল চিন্তাবিদ বহু দার্শনিক ধর্মের মধ্যে বিরোধিতা করার মত নানা উপকরণ খুঁজে পেয়েছেন। সেটার বিরোধিতা অন্যায় হবে কেন?
পৃথিবীতে সব তত্ত্বের, সব ধারণার সমালোচনা হয়, বিরোধিতাও হতে পারে। সেটাকে স্বাভাবিকভাবেই গ্রহণ করতে হবে। ‘বিরোধিতা’কিংবা ‘বিদ্বেষ’ বলে ট্যাগ করে রেহাই পাওয়া যাবে না, এড়িয়ে গেলেও চলবে না। কোন কিছুর বিরোধিতা না করে হাতপা গুটিয়ে চুপ করে বসে থাকলে এখনো বাইবেলের আর চার্চের সবক অনুযায়ী সূর্য পৃথিবীর চারিদিকে ঘুরত; কিংবা আমাদের মানসজগতের পৃথিবীটা গোল না হয়ে থাকত সমতল হয়ে। কিংবা এখনো হয়তো হাজার হাজার নারী সতীদাহের অনলে পুড়ে মরতো। আলোচনা সমালোচনা করে সামাজিক ট্যাবু, কুসংস্কার আর গোঁড়ামিকে প্রশ্নবিদ্ধ করলে যদি ‘বিদ্বেষী’ ট্যাগ পেতে হয়, তবে নাস্তিকেরা বিদ্বেষীই বটে, ঠিক যেমন অনেকেই হিটলার বিদ্বেষী, আপনাদের সবাই গোলাম আজম বিদ্বেষী, কাদের মোল্লা বিদ্বেষী; সভ্য মননশীল বহু মানুষ যেমন ফ্যানাটিসিজম, রেসিজম, সেক্সিজম, বার্বারিজম বিদ্বেষী, ঠিক তেমনি অনেক নাস্তিক থাকবে যারা ধর্মবিদ্বেষী । সরি, কিছু করার নেই এক্ষেত্রে।
আরো দেখি, উনি বলেছেন –
কোন সন্দেহ নেই মার্কিন সাম্রাজ্যবাদ একটা বড় সমস্যা। যে কোন প্রগতিশীল মানুষই মার্কিন সাম্রাজ্যবাদ এবং ইরাক আফগানিস্তান সহ এ ধরণের আগ্রাসনের বিরোধিতা করে, করবে। কিন্তু মার্কিন সাম্রাজ্যবাদ ‘সমস্যা’ হলেও মনে করার কোন কারণ নেই সেটা ইসলামী সন্ত্রাসবাদের ‘কারণ’। ইসলামী এবং অন্য অনেক ধর্মের সন্ত্রাসবাদের উৎস মূলত: ধর্মেই নিহিত; এবং তার উৎস পাওয়া যাবে ধর্মগ্রন্থ, ধর্মপ্রচারকদের জীবনী এবং বিভিন্ন কর্মকাণ্ড খুঁজলেই। যে সাম্রাজ্যবাদী আগ্রাসন বনি কুয়ানুকা, বনি নাদির আর বনি কুরাইজার উপর চালানো হয়েছিল সেটা মার্কিন সাম্রাজ্যবাদের কারণে হয়নি। মার্কিন সাম্রাজ্যবাদের কারণে ‘যেখানেই অবিশ্বাসীদের পাওয়া যাক তাদের হত্যা’ করার আয়াত, ‘তাদের সাথে সংঘাতে লিপ্ত হবার’ আয়াত, বিধর্মীদের উপর ‘জিজিয়া কর আরোপ করার’ আয়াত, ‘গর্দানে আঘাত করার’ আয়াত ধর্মগ্রন্থে লেখা হয়নি। ধর্মগ্রন্থগুলোতে নারীদের অবরুদ্ধ রাখার, শস্যক্ষেত্রের সাথে তুলনা করার আয়াত, যুদ্ধবন্দিনীদের সাথে সহবাসের আয়াত, ব্যভিচারী নারীদের পাথর ছুঁড়ে হত্যার নির্দেশ মার্কিনরা করে যায়নি। যে ব্যাপারটা স্যাম হ্যারিস পরিষ্কার করে বলেছেন – ‘আমেরিকান পলিসি একটা সমস্যা, কিন্তু কিন্তু মুসলিম সন্ত্রাসবাদের উত্থান যদি সমস্যা হয়ে থাকে, তবে সমস্যার মূল কারণ হল, তাদের ফান্ডামেন্টালস অব রিলিজিয়ন’। মূল জায়গা বাদ দিয়ে আশে পাশের ঝোপ ঝাড় কোপালে হবে?
ভারতবর্ষে সতীদাহ, শূদ্রদের উপর অত্যাচার (বেদে পুরানে জাতিবিদ্বেষী শ্লোক গুলো দ্রষ্টব্য, যেখানে শূদ্রের ছোঁয়া লাগলে তার পশ্চাৎ দেশে গরম লোহা দিয়ে ছ্যাকা দেয়ার বিধান আছে ইত্যাদি), ‘মহাত্মা’ রাম নিজেই বেদ পাঠ করার অপরাধে হতভাগ্য শম্বুকের শিরোচ্ছেদ করেছিলেন – এগুলোর কথা ধরুন না। এগুলো কি মার্কিন কিংবা ব্রিটিশ উপনিবেশের ফসল ছিল, নাকি পশ্চাৎপদ হিন্দুধর্মের বিধান? উদোর পিন্ডি বুধোর ঘারে চাপালে হবে?
উনি মন্তব্যে এক জায়গায় বলেছেন,
এই ব্যাপারটা ইদানীং খুব জোরে সোরে প্রচারের আলোয় নিয়ে আসার চেষ্টা হচ্ছে দেখছি– নাস্তিকেরা কেবল নাম কামানোর জন্য নাস্তিকতা করে –যেন এমন একটা ভাব, নাস্তিকদের আদর্শ ফাদর্শ বলে কিছু নেই। তা হত-দরিদ্র অবস্থাতেও আরজ আলী মুক্তবুদ্ধির চর্চার যে নিশান তুলেছিলেন, তা কেবল নোংরামি আর খ্যাতির আশায়? হুমায়ুন আজাদ মৌলবাদীদের কোপ খেয়েছিলেন কেবল নাম কামানোর আশায়? আহমদ শরীফ ঋজু চিত্তে সংস্কার আর অপবিশ্বাসকে প্রশ্নবিদ্ধ করে গেছেন – সেটা স্রেফ নোংরামি ছিল? সারা পৃথিবীতে ভগৎ সিং থেকে শুরু করে আজকের জামানার রিচার্ড ডকিন্স, ডেনিয়েল ডেনেট, ভিক্টর স্টেংগর, স্যাম হ্যারিস, ক্রিস্টোফার হিচেন্স সবাই কেবল নাম কামানোর ধান্দা করেছেন, তাদের বুদ্ধিবৃত্তির ঝাঁপি এবং জ্ঞানচর্চায় অবদান কি স্রেফ শূন্য? কি বলব বলুন? নাস্তিকতা না করেও তো কতজন খ্যাতিমান হয়ে গেল চোখের সামনে। জাকির নায়েক , রাশাদ খলিফা, শমশের আলী, বুকাইলিরা তো নাস্তিকতা বেঁচে খ্যাতিমান হয়নি। কেউ কোরানে বিজ্ঞানে পেয়ে, কেউ ১৯ তত্ত্বের কারিশমা দেখিয়ে কেউ বিবর্তনের মত বৈজ্ঞানিক তত্ত্ব ‘ভুল’ প্রমাণ করে বিরাট বকরাক্ষসের মতোই খ্যাতিমান হয়েছেন। বুজুর্গ মাওলানা সাইদী এমনই খ্যাতিমান যে চাঁদেও তার প্রতিচ্ছবি দেখা যায়। তারপরেও নাম কামানোর দোষ পড়ে কেবল নাস্তিকদের কাঁধেই।
লাস্টলি উনি বলেছেন –
একেবারে নিপুণ পলিটিশিয়ানের বাণী। ঠিক, হেট স্পিচ বাদ দিয়া মিলেমিশে কাজ করতে হবে। জামাত, হেফাজত কাউরেই হেট করার দরকার নাই। আফটার অল ‘বিদ্বেষ’ মানেই তো খারাপ। পুঁজিবাদী আর কমিউনিস্ট, আওয়ামি-বিম্পি, জামাত-মুক্তিযোদ্ধা-যুদ্ধাপরাধী সবাই সমস্ত ‘বিদ্বেষ’ বাদ দিয়ে মিলে মিশে থাকুক। ওম শান্তি।
*****************************************************
@অভিজিৎ,
অখন্ড যুক্তি এবং জোরালো বক্তব্য, যেখানে হাত দেবার উপাই নেই, যেমন,
(Y)
@অভিজিৎ, অসাধারণ অভিযোগ খন্ডন!
:guli: :guli: :guli: :guli:
নাস্তিকরা ভালো-খারাপ তার বিবেক, বিচার-বুদ্ধি ও যুক্তির মাধ্যমে করে। ধর্ম পালনকারীরা তা করে নানা কাল্পনিক গ্রন্থের দ্বারা। ধার্মিকদের বুঝানো যায়না যে হাজার-হাজার বছর পূর্বে রচিত ধর্ম গ্রন্থ গুলো বর্তমানে অচল। ধর্মের সৃষ্টি মানুষকে ধোঁকা দেওয়ার জন্য। কিন্তু অবাক হই যখন দেখি এখনও মানুষ ধর্মের নামে বরাই করে। কাল্পনিক ঈশ্বরকে মানবতার আগে স্থান দেয়!
লেখক ও অনুবাদককে ধন্যবাদ । ভবিষ্যতে নাস্তিকতাবাদ নিয়ে আরও জোরালো লেখা প্রকাশ করার জন্য অনুরোধ রইল।
@প্রশ্নকারী,
অবশ্যই চেষ্টা করবো। আপনাকেও অসংখ্য ধন্যবাদ।
@ ইকবাল নাওয়েদ , ভাই চরম লিখেছেন । :guru:
@তারিক, অনেক ধন্যবাদ ভাই। :guru:
ধন্যবাদ লেখাটির জন্য।
দিগন্ত অনেক আগে করেছিলেন – এখানে। তবে এগুলো লেখার আবেদন পুরোনো হয় না। যত বেশি লেখা হবে ততই ভাল।
তবে এ লেখাগুলো নাস্তিকতার চর্চা যারা করেন, তাদের প্রথমদিককার সময়গুলোতে উপযোগী মনে হয়, পর এর অনেক কিছুই দেখবেন খুব উপর থেকে দেখা (অগভীর বিশ্লেষণ?) বলে মনে হচ্ছে। আগেই সতর্ক করি।
লেখককে এবং অনুবাদককে ধন্যবাদ।
@অভিজিৎ,
ইস, আগে জানলে আর কষ্ট করতে হত না । সুন্দর একটা অনুবাদ করেছিলেন দিগন্ত। 😀
সহমত। প্রথমদিককার সময়গুলোতে উপযোগী বলেই আমি লেখাটা সেলেক্ট করেছিলাম। এমন একটা লেখা যেটা ছোট দ্রুত পড়ে শেষ করা যায়, আবার মোটামুটি সব বড় বড় অভিযোগের সুন্দর সব উত্তর সম্বলিত। তাড়াতাড়ি ছড়িয়ে দেবার ক্ষেত্রে কার্যকরী বলে আমার মনে হয়েছে।
চমৎকার লাগলো কথাটা।
@প্রতিফলন, আসলেই চমৎকার একটা কোট। ধন্যবাদ।
ধর্ম একটি মৃত দর্শনlআধুনিক সভ্যতায় ধর্মের ভূমিকা বিশ্লেষণ করলে আমরা দেখব ধর্মীয় বিশ্বাস মানুষকে ভ্রান্তির জালে আবদ্ধ করে রেখেছেlকার্লমার্ক্স বলেছিলেন ধর্ম হচ্ছে আফিমের মতlধর্মীয় বিশ্বাস মানুষকে নেশার জগতে আচ্ছন্ন করে রাখেlআমরা সম্মহনের কথা জানিlবংশানুক্রমিকভাবে মানুষকে ধর্মীয় বিশ্বাস দ্বারা সম্মোহিত করা হয়lএকটি শিশু যখন জন্মগ্রহন করে তখন কোন ধর্মীয় পরিচয় নিয়ে সে জন্মগ্রহণ করে নাlতার উপর পরিবার এবং সমাজ ধর্মীয় বিশ্বাস চাপিয়ে দেয়lশিশুর মানসিক বিকাশের সময় তাকে ধর্মীয় বিশ্বাস দ্বারা সম্মহিত করা হয়lফলে তার মধ্যে যৌক্তিক বিচার বিশ্লেষণ করার ক্ষমতা হারিয়ে যায়lশিশুটি যখন প্রাপ্ত বয়স্ক হয় তখন যৌক্তিক বিচার বিশ্লেষণ করে সত্যকে গ্রহন করতে পারে নাlধর্মের মনস্তাত্ত্বিক বিকাশ মূলত এভাবেই হয়েছেlধর্মের মূল ভিত্তি হচ্ছে অলিক বিশ্বাসlতাই ধর্মের সাথে বিজ্ঞানের দ্বন্দ্ব আমরা সভ্যতার প্রথম থেকেই দেখে আসছিl”পৃথিবী সূর্যের চারপাশে ঘুরে” এই বৈজ্ঞানিক পর্যবেক্ষণটি বাইবেলের ভিন্নমত প্রকাশ করায় ব্রুনকে আগুনে পুড়িয়ে হত্যা করা হয়েছিলlমুসলিম এবং হিন্দু ধর্মের বিকাশ হয়েছে প্রগতির পথকে রুদ্ধ করেlঅনেক দার্শনিক এবং বুদ্ধিজীবী বিজ্ঞান এবং ধর্মের সহাবস্থানের কথা বলেছেন এবং বলছেনl কিন্তু ইতিহাস বিশ্লেষণ করলে আমরা দেখব ধর্মীয় বিশ্বাসের সাথে বিজ্ঞানের সহাবস্থান কখনই ছিল নাlধর্ম মানুষের মধ্যে যে অযৌক্তিক মনস্তাত্ত্বিক কাঠামোর বিকাশ ঘটায় তার সাথে বিজ্ঞনমনস্ক মনস্তত্ত্বের দ্বন্দ্ব থেকেই প্রগতির বিকাশ হয়lযে সমাজে বিজ্ঞানমনস্কতার বিকাশ হয় না সে সমাজে প্রগতির বিকাশের পথ রুদ্ধ হয়lবিভিন্ন রাষ্ট্রের সামাজিক কাঠামোর তুলনামূলক পর্যালোচনা করলেই তা আমরা বুঝতে পারবlঅপর দিকে আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ ব্যাপার আমাদেরকে স্পষ্ট ভাবে বুঝতে হবে যে,বিজ্ঞান জানা এবং বিজ্ঞান চর্চা করা আর বিজ্ঞানমনস্ক হওয়া এক কথা নয়lবিজ্ঞান জানা অনেক মানুষই ধর্মীয় গোঁড়ামির দ্বারা আচ্ছন্ন থাকেlআবার বিজ্ঞানী না হয়েও বিজ্ঞানমনস্ক হওয়া যায়lএকটি জাতির মধ্যে যদি বিজ্ঞানমনস্ক মনস্তাত্ত্বিক কাঠামোর বিকাশ না হয় তবে সে জাতি প্রগতির পথে অগ্রসর হতে পারবে নাl
@জেন পার্থ,
চমৎকার লেগেছে আপনার মন্তব্য।
@জেন পার্থ,
সহমত। এইজন্যই আমার মন হয় প্রাথমিক শিক্ষা স্তরে বিজ্ঞান চর্চার থেকে বিজ্ঞানমনস্ক শিক্ষাদানের উপরই ফোকাস দেওয়া দরকার। ধন্যবাদ সুন্দর মন্তব্যের জন্য।