“You betray your whole life if you do not tell what you think and if you do not say honestly and boldly.”
– Charles Krauthammer (1950 – 2018). Author and Fox News Commentator.

এই লেখাটার প্রথমাংশ আমি যেভাবে যতীন সরকারকে দেখেছি। শেষাংশটা বাংলাদেশ প্রতিদিনের সিরাজুল ইসলাম আবেদের সাক্ষাতকার ভিত্তিক।

ময়মনসিংহ নাসিরাবাদ কলেজের খ্যাতিমান অধ্যাপক যতীন সরকার একজন প্রজ্ঞাবান মানুষ, এক বিরাট ব্যক্তিত্ব। অসাধারণ বাকপটুত্বের অধিকারী। যতীন সরকারের অংশগ্রহণে বাংলাদেশ কৃষিবিশ্ববিদ্যালয়ে অনেক আলোচনা সভাতেই প্রাণের সঞ্চার হত। ছাত্রাবস্থা থেকেই আমি যতীন সরকারকে এভাবেই চিনেছিলাম। বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষকতার শুরুতে ১৯৭৬ সালের জুলাই-সেপ্টেম্বর সময়কালে মাস তিনেক আমি সস্ত্রীক বিদ্যাময়ী হাই স্কুলের এক ইংরেজীর শিক্ষকের ভাড়া বাসায় সাবলেটে ছিলাম। এই শিক্ষকের ছোটবোনের সাথেই যতীন সরকারের বিবাহ হয়। শ্বশুর-শ্বাশুরীর সাথে দেখা করা এবং আড্ডা দিতে তিনি প্রায়ই আসতেন। সাদা ধূতি-পাঞ্জাবী এবং কালো রং এর চপ্পল যতীন সরকারের বৈশিষ্ট্য। অন্য কোন পোষাকে যতীন সরকারকে কেউ কোনদিন দেখেনি। একদিন রসিকতা করে বললেন – বাংলাদেশে আমিই একমাত্র হিন্দু, কারণ আমি এখনও ধূতি পড়ি। আমরা মন্ত্রমুগ্ধের মত তাঁর রসভর্তি গল্প শুনতাম। তখন থেকেই তিনি আমাদের প্রিয় “যতীনদা” হয়ে উঠেন। ক্রমান্বয়ে আমি তাঁর দ্বারা দারূণভাবে প্রভাবিত হয়ে পড়ি।

যতীন সরকার একজন আপদমস্তক অসাম্প্রদায়িক মানুষ। ধর্মের প্রতি আমার বিরাগ দৃঢ় হয় যতীন সরকারের সান্নিধ্যে এসেই। সাবলেটে আমি মাত্র তিন মাস ছিলাম। পরবর্তীকালে আমার বিশ্ববিদ্যালয় আবাসনে এক পুরোহিত এসেছিল কালীপুজোর চাঁদা চাইতে। আমি সদম্ভে বলেছিলাম, – যতীন সরকারই আমার ভগবান, আপনার কালী ঠাকুর নয়।

নৌকার এক মাঝির গল্প
নেত্রকোনা পিতৃ গৃহে যেতে খানিকটা নৌকায় যেতে হত। নৌকার এক নিতান্ত গরীব মাঝিকে নিয়ে গল্পটা। মাঝি সারাদিন নৌকা চালিয়ে যা পায় তার একটা অংশ নৌকার মালিককে দিতে হয়। অবশিষ্ট যা থাকে তা দিয়েই মাঝির সংসার চলে। যতীন সরকার আমার মাথায় যে জিনিষটা ঢুকিয়ে দিলেন তা হলো – বিগত পাঁচ বছরে মাঝি নৌকার মালিককে নৌকার যা দাম তার দ্বিগুন দিয়েছে। তারপরেও নৌকাটা মালিকের, মাঝির হয়নি। সত্যিই তো। আমি তো এভাবে চিন্তা করিনি কোনদিন। আমি অবাক বিস্ময়ে যতীন সরকারের দিকে তাকিয়ে থাকলাম। তিনি বলে চললেন – পূঁজিবাদী রাষ্ট্রব্যবস্থায় মাঝি কোনদিনই নৌকার মালিক হবে না। সমাজতন্ত্র ছাড়া জনগনের মুক্তি নাই। সমাজতন্ত্রের সপক্ষে এই ঘটনাটি যতীন সরকারের একটা মস্তবড় উদাহরণ।

সমাজতন্ত্র বনাম ধনতন্ত্র
সেদিন যতীন সরকারের নিকট হাতে কলমে সমাজতন্ত্র শিখেছিলাম। যতীন সরকারের প্রতি আমার আজীবন শ্রদ্ধা। এখনও এই মানুষটাকে শ্রদ্ধা করি। তবে তাঁর কিছু বক্তব্যে ভিন্ন মত তো থাকতেই পারে। এই লেখায় আমি আমার ভিন্নমত প্রকাশ করছি সবিনয়ে।

তিনি বুঝালেন, মালিকটি পূঁজিবাদী, ধনতান্ত্রিক, এবং শোষক। মালিকটি পূঁজিবাদী এবং ধনতান্ত্রিক, এবিষয়ে সন্দেহ নেই, কিন্তু মোটেই শোষক নয়। মালিক তার টাকা ব্যাংকে রাখলে সুদ পেতে পারত। কিন্তু ব্যাংকে না রেখে নৌকা কিনে ভাড়ায় খাটাচ্ছে। কারণ, এতে লাভ বেশী। এটাই ব্যবসা। এটাই ধনতন্ত্র, পূঁজিবাদ। এই ব্যবসাকে সমাজতান্ত্রিকরা ঘৃনার চোখে দেখে। কেউ টাকা বানালে এদেরে গা জ্বলে। নানা ব্যাখ্যা হাজির করে। এরা বুঝতে চাইবে না যে, মালিক নিজে বেশী টাকা লাভ করছে ঠিকই। কিন্তু সাথে ভিন্ন একটা পরিবারের মুখে অন্ন জুটছে। ব্যাংকে টাকা রেখে দিলে মাঝিটির কী দশা হতো? এটা সমাজতন্ত্রীরা বুঝতে চাইবে না। এদের মগজে ঢুকে আছে – পূঁজিবাদ নিপাত যাক, ধনতন্ত্র নিপাত যাক। এই মন্ত্র থেকে এরা বেরিয়ে আসতে পারছে না। নৌকার মালিক সমন্ধে যতীন সরকার কিছু বলেন নি। আমিও জিজ্ঞেস করিনি। এমনও তো হতে পারে যে, নৌকার মালিক এক সময় অন্যের নৌকায় মাঝি ছিল। একদিন ভাবলো এভাবে আর কতদিন অন্যের নৌকায় মাঝিগিরি করবে? “একটা কিছু করা উচিৎ।“ তার নিজের একটা নৌকা থাকলে নৌকার মালিকের মত ভাড়া দিয়ে বসে বসে টাকা উপায় করা যেত। মাঝির মাথায় বুদ্ধি এলো ঝুকির নেওয়ার, একটা কিছু করার। একটু বেশী কষ্ট করে টাকা জমাতে থাকলো। দুবছর কিম্বা তিন বছর টাকা জমিয়ে একটা নৌকা কিনে নিজেই মালিক, নিজেই মাঝি হিসাবে পরিশ্রম করে চললো। এভাবে আরও একটি নৌকা হলো। সেটি ভাড়া দিতে থাকলো। তারপর আরও একটি। এভাবেই সে অনেক গুলো নৌকার মালিক হলো। অন্যরা তার নৌকা চালিয়ে সংসার চালাতে থাকলো। তাদের মধ্যে যার বুদ্ধি-সুদ্ধি বেশী, যে ঝুকি নিতে পারে, তারা নৌকা কিনে মালিক হল এবং অন্য মাঝিদের জন্য কর্ম সংস্থান করলো। এই পূঁজিবাদী, ধনপতি মালিকদেরকেই আমি নমস্কার করি, সালাম জানাই। কারণ, তারা কর্ম সংস্থান সৃষ্টি করে অন্য সংসারের জন্য। এই মাঝিরাই ছোট ছোট ধনপতি এবং পুঁজিবাদী। এরা নিজেরা মুনাফা করে। কিন্তু প্রকারান্তরে সমাজ উন্নয়নে সরাসরি অবদান রাখে। যে মাঝিটির ঝুকি নেওয়ার সাহস নাই, সারা জীবন অন্যের নৌকা চালিয়েই জীবন কাটিয়ে দিবে। সে শুধু অভিযোগই করে যাবে।

ছোট ছোট পূঁজিপতিদের উদাহরণ
পশ্চিম বঙ্গের সেলিনা খাতুন – মাঝির গল্পের মত উদাহরণ প্রচুর দেওয়া যায়। এক সেলিনা খাতুনের গল্প শুনেছি তারই মুখে। দরিদ্র বাবা দরিদ্র ঘরে বিয়ে দিয়েছিল। এক বেলা খাওয়া জুটে কি জুটেনা। ভাবলো – এভাবে তো চলবে না। সংসারে ছেলেমেয়ে হলে তাদের না খাইয়ে রাখা যাবে না। লেখা পড়া শিখিয়ে মানুষ করতে হবে। একদিন বাবার বাড়ি থেকে ৫ কেজি আটা নিয়ে এল। রুটি বানিয়ে রাস্তায় বসে গেল। সব বিক্রি হয়ে গেল। সেই টাকা দিয়ে পরদিন ১০ কেজির রুটি বানিয়ে বসে গেল। সব বিক্রি হয়ে গেল। সেলিনা খাতুনের এখন দুতলা বাড়ি। দুটো অটো রিক্সা ভাড়া দেয়। দুজন ড্রাইভার তার দরকার। অর্থাৎ সমাজ বা রাষ্ট্রের জন্য সে দুটো নতুন চাকুরী সৃষ্টি করেছে।
ধামরাই থানার এক মতিন সাহেব – ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আর্টস গ্র্যাজুয়েট। চাকুরী না করে তিনি এনজিও খুললেন। সহজ শর্তে কৃষি ঋণ দেন। হাস মুরগী এবং গরুর খামারের জন্যও ঋণ দেন। তার এনজিও তে বাংলাদেশ কৃষিবিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক পাশ করা বিশেষজ্ঞদেরকেও নিয়োগ দিয়েছেন। প্রত্যেককে মোটর সাইকেল দিয়েছেন। এর কৃষকের বাড়িতে, ক্ষেতে-খামারে যেয়ে কৃষকের সমস্যা বের করেন এবং তার বৈজ্ঞানিক সমাধান দেন বিনা মুল্যে। শুনেছি তিনি এখন দশ হাজার কোটি টাকার মালিক। এটা নিয়ে আমার কোন আক্ষেপ বা ঈর্শা নাই। কারণ মতিন সাহেবের বাবসায়ী সফলতার কারণে, ধামরাই থানার কৃষকরাও ধনবান। ধানকাটা কম্বাইন হাসবেষ্টর তিনিই চালু করেছেন। তার এন জিও তে কৃষি বিশেষজ্ঞ সহ এখন পাঁচ-ছয় হাজার লোক কাজ করে। অর্থাৎ পাঁচ-ছয় হাজার লোকের ভাগ্য পরিবর্তন করেছেন মতিন সাহেব। এরা আর সরকারী চাকুরীর উপর নির্ভরশীল নয়। নিজের বাড়িতে থেকে চাকুরী করছে এরা।

আকিজ গ্রুপ অব ইন্ডাস্ট্রিজের ধনপতি আর পূঁজিপতি – (অনেকে তাকে সাম্রাজ্যবাদি বলেও গালি দিতে পারেন) আকিজ সাহেবের “আকিজ গ্রুপ অব ইন্ডাস্ট্রি” একটি পরিচিত নাম বাংলাদেশে। আকিজ সাহেবের প্রতিষ্ঠান সমূহে ৬০-৭০ হাজার লোক কাজ করে। অর্থাৎ ৬০-৭০ হাজার সুখী পরিবার তিনি সৃষ্টি করেছেন। শুরুতে তিনি শিয়ালদা স্টেশনে এক ফলের দোকানে কাজ করতেন। তিনি ভাবলেন – এভাবে সারা জীবন চলতে পারেনা – “একটা কিছু করতে হবে।“ একটা কিছু করতে গিয়ে প্রথমে তিনি নিজেই ছোট একটা ফলের দোকান শুরু করলেন শিয়ালদা স্টেশনে। ভালই চলল। কিন্তু মাস্তানদের “চাঁদা” না দিলে দোকান টিকিয়ে রাখা যায় না। বাংলাদেশে এসে তিনি “আকিজ বিড়ি” নামে ব্যবসা শুরু করলেন। এই আকিজ সাহেবই এখন ৬০-৭০ হাজার চাকুরী সৃষ্টি করেছেন। আমেরিকাতে ছোট ব্যবসায়ীদেরকে (Small Business) উৎসাহিত করা হয়, কম সুদে ঋণ দেওয়া হয়। বিনা মূল্যে ট্রেনিং দেওয়া হয়। কারণ এরাই সব চাইতে বেশী চাকুরী সৃষ্টি করে। চাকুরী সৃষ্টি দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নের ধারাকে প্রবাহমান রাখে।
পূঁজিবাদে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি – আমেরিকার পূঁজিবাদ বা ধনতান্ত্রিক সমাজ ব্যবস্থা আর নেত্রকোনার নৌকার মালিকের পূঁজিবাদে কোন তফাৎ নেই। লাভের জন্যই একজন পূঁজিবাদ ব্যবসা করে। ধনপতি বা পূঁজিপতি হতে লোকের দরকার হয়। বেতন বা মাহিনা দেয় বলেই লোকেরা তার কাজ করে দেয়। অর্থাৎ পূঁজিপতিরা সব সময় নতুন চাকুরী সৃষ্টি করে অন্যের জন্য। একটা সমাজ বা রাষ্ট্রের উৎপাদন এভাবেই বৃদ্ধি পায়, দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়ন ঘটে এভাবেই। অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ঘটে পূঁজিবাদী সমাজে, সমাজতান্ত্রিক সমাজে বা রাষ্ট্রে নয়।

মনীষিদের হিতোপদেশ – গরীব মানুষ জ্ঞানী লোকদের জন্য উপকারী প্রাণী। এদের দারিদ্র নিয়ে মিষ্টি কথা বলে মুখে ফেনা তোলা যায়, যশস্বী হওয়া যায়। কিন্তু নিজের পকেট থেকে একটা পয়সাও এরা দেবে না। সমাজতন্ত্রবাদ পৃথিবীর অর্থনৈতিক উন্নয়নে দূর্ভেদ্য প্রাচীর সৃষ্টি করে। সারা দুনিয়ার প্রায় অর্ধেক মানুষের মাথায় এখনও ঢুকে আছে পূঁজিবাদ এবং ধনতন্ত্র দরিদ্রদের শত্রু। রাষ্ট্র একটি পরিবারের মত। এখানে ধনী বলতে কেউ থাকবে না। রাষ্ট্রের সমস্ত সম্পদে প্রতিটি নাগরিকের সমান অধিকার। ধূর্ত রাজনীতিবিদগন সর্বাগ্রে বুঝলো এই সমাজবাদ নীতির উপকারিতা। সমাজসেবার নামে দেশে কর্তৃত্ব দখলে এর চেয়ে মোক্ষম হাতিয়ার আর নাই। কিউবার ফিদেল পিস্তল পকেটে পিস্তল নিয়ে ৬০ বছর দেশের মালিক থাকলো। যখন শরীর আর চললো না, তখন ছোট ভাইকে দেশটা দিয়ে দিল। ফিদেল বলেছে – তোমরা জনগন, তোমাদের ভালর জন্য তো আমি খেটে মরছি। জনগন খুশী। রাশিয়ার পুটিনি পিরামিডের চুড়ায় বসে এখন মাল্টি বিলিয়নীয়ার। তার চারপাশের অলিগার্করাও বিলিয়নীয়ার। তাদের অস্তিত্ব নির্ভর করে পুটিনের অস্তিত্বের উপর। পুটিনকে টিকিয়ে রাখায়ই এদের এক নম্বর কাজ। নিশ্চিত খাবারের বিনিময়ে একটা পোষা কুকুর প্রভুভক্ত হয়। পোষা কুকুরের স্বাধীনতা থাকে না। কুকুর স্বগোত্রীয় কুকুরদের সাথে থাকবে এই বোধটুকু পর্যন্ত লোপ পায়। তাই নিশ্চিত খাবারের বিনিময়ে প্রভু তাকে যেভাবে নাচায়, সে সেভাবেই নাচে। অনুরূপ ভাবে একটি সমাজতান্ত্রিক রাষ্ট্র অন্ন, বস্ত্র, চিকিৎসার মাধ্যমে আমজনতাকে বন্দী করে রাখে। মানুষের মস্তিস্কের উৎকর্ষতাকে পঙ্গু করে দেওয়া হয়। বিংশ শতকের মাঝামাঝি সময়ে সোভিয়েট রাশিয়া নিজ দেশে এরকম সমাজতন্ত্র বা কমিউনিজমকে সুসংহত করার জন্য সমাজতান্ত্রিক সাম্রাজ্যবাদ গড়ে তুলতে তৎপর হয়ে উঠে। এই ঘৃন্য সাম্রাজ্যবাদ ভারত, চীন কোরিয়া, ভিয়েতনামে আস্তানা গাড়তে থাকে। সমাজতন্ত্র/কমুনিজমে মানুষের মেধা এবং শ্রমের মূল্য নাই। মানুষকে কর্মবিমুখ করে। পৃথিবীর অর্থনীতিকে পঙ্গু করে। আমেরিকা এর প্রসারকে ঠেকাতে তৎপর হয়ে উঠে। এবং কোরিয়ার দক্ষিন অংশকে সমাজতন্ত্র/কমুনিজমের ভুত মুক্ত রাখতে সক্ষম হয়। ভিয়েতনামকে মুক্ত রাখে। রাশিয়া, পূর্ব ইউরোপ, ভারত এবং চীন সমাজ্তান্ত্রিক মন্ত্রে আটকা পরে থাকে দীর্ঘ দিন। সবে বেরিয়ে এসেছে। ফলে চীন এবং ভারতের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির গতি এখন আকাশ ছোয়া।
এখনও প্রচুর মানুষ আছে আমেরিকার অর্থনীতিকে পূঁজিবাদী-সাম্রাজ্যবাদী আখ্যা দিয়ে ঘৃনা করে এবং রাশিয়া ইউক্রেন দখল করছে সেটাকেও সমর্থন করছে। কিন্তু এরাই আমেরিকাতে ঢুকে পরার জন্য এক পায়ে খাড়া। কী অদ্ভূত মানুষের বুদ্ধি-বৃত্তি!

যতীন সরকার বললেন তিনি মার্ক্সিস্ট হয়েছেন। কিন্তু মার্ক্সিজমে বিশ্বাস করেন না। কমুনিজমে বিশ্বাস করেন না, করেন সমাজতন্ত্রে। সমাজতন্ত্র এবং কমুনিজমে তফাৎ কী বা কতটুকু বুঝলাম না। এরা সহোদর ভাই-বোন না হতে পারে, কিন্তু মাসতুত ভাই-বোন তো বটেই।

যতীন সরকারের সাক্ষাৎকার
সিরাজুল ইসলাম আবেদের নেওয়া যতীন সরকারের সাক্ষাতকারটি আমার এই লেখাটিকে উদ্বোদ্ধ করেছে।

যতীন সরকারের সমাজতন্ত্র
নৌকার মাঝির গল্পটা দিয়ে যতীন সরকার বুঝাতে চান সমাজতন্ত্রের সুফল। ধনবানের কেন সম্পদ থাকবে? সব সম্পদ গরীবদের মাঝে বন্টন করেই সমাজতন্ত্র সৃষ্টি করতে হবে। তিনি কি নিজের সম্পদ গরীবের মাঝে বিলিয়ে দিয়েছেন? তিনি “বানপ্রস্থ” নামের অট্টালিকায় থাকেন। অট্টালিকা না করে টাকাটা গরীবদের মাঝে বিলিয়ে গরীবদের মত জীবন ধারণ করতে পারতেন। তা তিনি করেন নাই। ওবামা আট বছর বলে গেলেন – “Pay your fair share.” তিনি নিজে মিলিয়নীয়ার। কিন্তু একটা পয়সা কাউকে দেননি।

যতীন সরকার বলেছেন, “সমাজতন্ত্র হবেই। সমাজতন্ত্র একটা ইতিহাসের ধারা।” রাশিয়া, কিউবা, ভেনিজুয়েলার সমাজতন্ত্রের বেহাল অবস্থা দেখে মনে হয়, সমাজতন্তের মৃত্যু হলেই পৃথিবী বাঁচে। পুটিন তার সৃষ্ট পিরামিডের উপরে বসে আছে। রাশিয়ার অর্দ্ধেক সম্পদ তার। বাকী সম্পদ যারা পিরামিডকে ধরে রাখছে তাদের। রাশিয়া, ভেনিজুয়েলা, কিউবা এবং উত্তর কোরিয়ার মানুষ কী হালে বাস করে তা জানার উপায় নেই। তবে সতত তাদেরকে রোবটের মত গাইতে হচ্ছে “সমাজতন্ত্র জিন্দাবাদ”, “কমুনিজম জিন্দাবাদ”। সমাজতন্ত্র বা কমুনিজমের মূলমন্ত্র হলো অন্য লোকের সম্পত্তি বিলিয়ে দেওয়া, নিজেরটা নয়।

তবে পূঁজিবাদের দেশ আমেরিকাতে তথাকথিত স্বল্প আয়ের লোকেরা ট্যাক্স পেয়ারদের ডলার পেয়ে অতি স্বচ্ছন্দে আছে। তাদের বাড়ী, গাড়ীর চাকচিক্য দেখলেই বুঝা যায় তারা অনেক ট্যাক্স পেয়ারদের চেয়েও ধনবান। সরকারের কোন টাকার খনি নাই। ট্যাক্স পেয়ারদের টাকা সরকারের হাত ঘুরে এদের হাতে পৌছে এবং এত স্বাচ্ছন্দ তারা উপভোগ করে। ভোটের জন্য বিশেষ একটি রাজনৈতিক দল পূঁজিপতিদেরকে ঘৃনা করতে শিখায়। তারা শিখায় ধনবানরা তোমাদের শত্রু। তারা আরো আরো ট্যাক্স দিলে তোমাদের আরো টাকা দিতে পারতাম।

সংস্কৃতির নতুন সংজ্ঞা
যতীন সরকার বলেন – “প্রকৃতিকে প্রকৃত রেখে তার সংস্কার করা, এটার নাম সংস্কৃতি। “তাই বুঝি? “সংস্কৃতির” এমন সংজ্ঞা আগে শুনিনি। একটা জনগুষ্টির চালচলন, খাবার-দাবার, চিন্তা-চেতনা, কাজকর্মের উপর একটা বিশেষত্ব তৈরী হয়, যেটা অন্য জনগুষ্টিকে থেকে তফাৎ করে। এই ভিন্নতাই এই জনগুষ্টির “Norm” বা এর সংস্কৃতি। সংস্কৃতির এরকমই সংজ্ঞার সাথেই আমি পরিচিত। একটা জিনিষকে ভিন্ন ভাবে প্রকাশ করা যতীন সরকারের প্রজ্ঞার অংশ। তাঁর “সংস্কৃতির” সংজ্ঞা তাঁর এমনই একটা প্রকাশ। কিন্তু আমার কাছে তাঁর সংজ্ঞাটা উদ্ভটই মনে হলো।

যতীন সরকারের ঈশ্বর
তাঁকে ঈশ্বর নিয়ে সরাসরি কিছু বলতে শুনিনি। তবে যতটা চিনেছি তাতে মনে হয়েছে, তাঁর কাছে ঈশ্বরের গুরুত্ব নেই। কিন্তু আমি তাঁর চেয়ে এক ধাপ উপরে উঠেছি। ঈশ্বরের অস্তিত্ব নিয়ে সংশয়বাদী হয়েছি। সংশয়বাদী থেকে আমার চরমতম উন্নতি হয়েছে। James Webb Space Telescope ১৩.২ বিলিয়ন আলোক বর্ষ দূরে ১৩.২ বিলিওন বছর পূর্বে কিছু তারকাপূঞ্জ দেখতে কেমন ছিল তার ছবি তুলে পৃথিবীতে পাঠিয়েছে। এত বিশাল ‘সময়ের’ তুলনায় মিথ্যাবাদী মানুষ সৃষ্ট ভগবান-আল্লাহদের বয়স এক সেকেন্ডও নয়। আমি আমার বিশ্ব ছেড়ে মহাবিশ্বের বিশালত্ব এবং এর সময়ের বিস্তৃতি দেখে মুগ্ধ থেকে মুগ্ধতর হচ্ছি। আমার হৃদয়ে বিন্দুমাত্র দ্বিধা নেই যে, ঈশ্বরদের কোন অস্তিত্ব নেই (“ঈশ্বরে”র সাথে বহুবচন শব্দটি ব্যবহার করেছি।) স্পষ্ট করেই বলি – নৃপেন্দ্রনাথ সরকার একজন ষোলা আনা নাস্তিক। নাস্তিকতার স্তরে উন্নীত হতে পেরে আমার গর্বের সীমা নেই।

কিন্তু যতীন সরকারের অবস্থান কী? আপনি প্রশ্ন করলে হয়ত এক ঘন্টা দীর্ঘ বয়ান শুনতে পাবেন। আপনি অবাক বিস্ময়ে শুনতে থাকবেন এবং প্রচলিত ধারণার বাইরে নতুন ঈশ্বরের ধারণা পাবেন। কিন্তু যদি প্রশ্ন করি সেই ধারণাটা কী? তখন আপনি বুঝতে পারবেন, আপনি কিছুই বুঝেন নি। যদি প্রশ্ন করি, যতীন সরকার কি ঈশ্বরে বিশ্বাস করেন? তখন আপনি টের পাবেন যে, আপনি হ্যা বা না কোন জবাব দিতে পারছেন না।

সাক্ষাতকারটিতে তিনি বলছেন – “যারা যেটা আছে এইটাকে বিশ্বাস করে না, তারা নাস্তিক। ” আপনি এই বাক্যটা থেকে কী বুঝলেন? নাস্তিক এবং নাস্তিকতা সমন্ধে পরিস্কার কোন ধারণা পাওয়া গেলো? তিনি পরিস্কার করে কিছু বলেন নি। ইচ্ছা করেই বলেন নি। শ্রোতা হিসেবে আপনি একটা গোলক ধাধায় থাকবেন। কথার পরে কথা বলে এমন একটা পরিবেশ সৃষ্টি করবেন যে, আপনি প্রশ্ন করার সুযোগও পাবেন না। শুধু মনে হবে, বিরাট একটা তাত্ত্বিক কথা শুনলেন।
একটু বিশ্লেষণ করি। “যেটা” শব্দের জায়গায় “ঈশ্বর” শব্দ বসালে বাক্যটার একটা অর্থ বেরোয়। তখন এটাও বুঝা যায় যে, তিনি ঈশ্বরে বিশ্বাসী। অর্থাৎ তিনি নাস্তিক নন এটাই আমি বুঝলাম। কিন্তু তিনি তো পরিষ্কার কিছুই বলেন নি। কাজেই আপনি কোন উপসংহারে পৌছুতে পারবেন না। ঈশ্বরের অস্তিত্ব স্বীকার করলে কি কোন অসুবিধা আছে? আছে। বাংলাদেশে আছে। আপনি ত্যাজ্য হবেন। আপনার ঘাড়ে চাপাতির কোপও পড়তে পারে যেকোন সময়ে।

সরকারী পৃষ্ঠপোষকতায় অভিজিৎ রায়, ওয়াশিকুর রহমান বাবু, নীলয়, অনন্তদাসদের খুন করা হলো। কিন্তু বিচার হলো না। শেখ হাসিনার ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয় বলেছেন – নাস্তিক খুনের কোন বিচার করা চলবে না বাংলাদেশে। পরিষ্কার। অস্তিত্বহীন ঈশ্বরে বিশ্বাস না করা অপরাধ বাংলাদেশে। ধর্মীয় সন্ত্রাসীরা আশে পাশেই আছে। সুযোগ পেলেই চাপাতি মারবে। এরকম দেশে নাস্তিক হওয়া বা নাস্তিকের পক্ষে কথা বললে চাপাতির ভয়ে জীবন হাতে নিয়ে থাকতে হবে। বাংলাদেশে হাজার হাজার মানুষ আছে যাদের অন্তর থেকে ঈশ্বরে বিশ্বাস উঠে গেছে। তাদের অনেকেই দেশ ছেড়ে পালাচ্ছে।

মূলতঃ সাক্ষাৎকারীর প্রশ্নের উত্তরে যতীন সরকার তাঁর বক্তব্য রাখছেন। কিন্তু নাস্তিক বিরোধী বক্তব্যটি তিনি যোগ করেছেন উপযাজক হয়ে, বেশ জোড়েসুরে। যারা সাক্ষাতকারটি শুনবে, তাদের কাছে যেন পরিষ্কার বার্তা পৌছে যায় যে তিনি আস্তিক, ঈশ্বরে বিশ্বাস আছে। এটা তাঁর জন্য অত্যন্ত দরকার। তিনি রাষ্ট্রীয় পুরষ্কার পেয়েছেন, বই লিখেছেন। নিজের সন্মান ধরে রাখতে হবে। বই বিক্রি হতে হবে।

সিরাজুল ইসলাম আবেদ সাহেব প্রশ্ন করলেন, “ইসলামের প্রগতিশীল ভূমিকাটা কেমন ছিল?”। কোরান ইসলামের মৌলিক কিতাব। এটা অপরিবর্তনীয়। তাহলে ইসলামে প্রগতিশীলতা আসবে কোথা থেকে? পাথরে সোনার বাটি? ইয়ার্কি না কি? যতীন সরকার বুঝলেন আবেদ সাহেব কী শুনতে চান। তিনি বুঝলেন কী বললে আবেদ সাহেব খুশী হবেন। আবেদ সাহেবকে এবং বাংলাদেশের সংখ্যাগরিষ্টদের খুশী করার এটাই মোক্ষম সুযোগ। প্রশ্নের উত্তরে তিনি যা বললেন তা প্রকৃত ইসলামের সাথে ১৮০ ডিগ্রী তফাৎ। গলায় বেশ জোড় এনে এবং মুখে অতিরিক্ত ডেসিবেল যোগ করে তিনি বললেন, “পৃথিবীতে যদি ইসলামের আবির্ভাব না হতো পৃথিবীর সভ্যতা এক হাজার বছর পিছিয়ে যেত।”

ইসলাম কি একটা সন্ত্রাসী ধর্ম নয়? মুহম্মদ ইসলাম ধর্ম সৃষ্টি করেছেন ধ্বংস যজ্ঞের মাধ্যমে। মুহম্মদ ওহুদ, বদর, খন্দক, ইত্যাদি ৭৩টি যুদ্ধে অগনিত মানুষ খুন করে ইসলাম দাঁড় করেছিলেন। গত ২৫ বছরের ইতিহাসের দিকে তাকালে দেখা যায় পৃথিবী ব্যাপী চলছে ইসলামিক সন্ত্রাস। ৯/১১ এ প্রায় তিন হাজার নিরপরাধ মানুষ খুন করেছে ইসলামিক টেরোরিস্টরা। ইসলাম ভারতে ঢুকে প্রথমেই ভারতীয় সভ্যতা ধংস করতে শুরু করে। নালন্দা বিশ্ববিদ্যালয় ধ্বংস করেছে। লাইব্রেরী পুড়িয়েছে। মুসলমানরা ভারতে কী ভাবে এসেছে এবং কী করেছে তার বিবরণ আছে এম. এ. খানের “Islamic Jihad – A Legacy of Forced Conversion, Imperialism, and Slavery” বই এ (ISBN:978-1-4401-1846-3 (sc), 078-1-4401-1847-0 (dj), 978-1-4401-1848-7 (ebook)।

<a href=”https://trunicle.com/worlds-biggest-holocaust-islamic-invaders-killed-more-than-80-million-hindus-in-india/”মনীষ শর্মা অক্টোবর ২০, ২০২০ তারিখে লিখেছেন,> </a>

মনীষ শর্মা অক্টোবর ২০, ২০২০ তারিখে লিখেছেন, worlds-biggest-holocaust-islamic-invaders-killed-more-than-80-million-hindus-in-india.

যতীন সরকার কি এসব জানেন না? অবশ্যই জানেন। স্বীয় স্বার্থের জন্য তিনি বলেছেন, “পৃথিবীতে যদি ইসলামের আবির্ভাব না হতো পৃথিবীর সভ্যতা এক হাজার বছর পিছিয়ে যেত।” তিনি মজা করে বলেছেন – তিনি আর “বেঁচে” নেই, শুধু “জীবিত” আছেন। কারণ, তিনি আর নতুন কিছু লিখেন না। কাজেই এখন তাঁর একমাত্র কাজ অর্জিত “সন্মান” ধরে রাখা এবং লিখিত বই এর বাজার নিশ্চিত রাখা। সেজন্য দেশের সংখ্যা গরিষ্টদের তোয়াজ করে চলেন। হিন্দু-খ্রিস্টান-বৌদ্ধরা নিয়মিত সাম্প্রদায়িক সন্ত্রাসের শিকার হচ্ছে। দেশত্যাগে বাধ্য করার একটি অলিখিত প্রকল্প বিদ্যমান। যেখানে পশ্চিম বঙ্গে মুসলিম জনসংখ্যা বেড়ে হয়েছে ৩৫%, বাংলাদেশে সংখ্যালঘু জনগুষ্টি নেমে ৫-৬% এসে দাঁড়িয়েছে। । এব্যাপারে যতীন সরকারের একটা বাক্যও কোথাও পাওয়া যাবে না। একেবারে নিশ্চুপ। কবি নির্মলেন্দু গুণও একেবারে চুপ। তিনি ব্যস্ত থাকেন আরও একটি পুরষ্কার পাওয়ার জন্য। পুরষ্কার পেলে প্রতিদান দিতে হয়। দরকার হলে এরা হিন্দু-খ্রিস্টান-বৌদ্ধদের বিরুদ্ধে লিখতেও পিছপা হবেন না।

এরা সংখ্যাগরিষ্টদের প্রিয়পাত্র হতে সব কিছু করতে পারেন। সাদ্দাম হোসেন এবং তার দুই ছেলের মৃত্যুতে নির্মলেন্দু গুণ বড়ই কষ্ট পেয়ে(?) চারপাতার কবিতা (এটাকে কবিতা না বলে গোবিতা বলাই শ্রেয়) লিখে ফেললেন। একটা লাইনে লিখলেন – “সাদ্দাম হোসেনের পুত্ররা কী ক্ষতি করেছিল বুশ-কন্যদের?” এদিকে নিজ দেশে পার্বত্য চট্টগ্রামের একটা জনগুষ্ঠি চোখের সামনে নিশ্চিহ্ন হয়ে গেল। আদিবাসীদের নিয়ে নির্মলেন্দু গুণের মাথা থেকে একপাতা কবিতাও বেরোলো না। ২০১০ সালে খাগড়াছড়ি ঘুরে এসেছি। সারা শহরে মোট নয়জন আদি বাসী চোখে পড়েছে। এক কৃষি অফিসে এক পিয়ন, এক ব্যাংকে ছয়জন কর্মচারী, এক অটো চালক এবং স্কুলগামী এক ছাত্রী। যতীন সরকারও এব্যাপাবে মুখে কুলুপ এটে থাকেন। কারণ কোন লেখা পার্বত্য চট্টগ্রামের আদিবাসী সংস্কৃতির পক্ষে গেলে দেশের সংখ্যাগরিষ্ঠের বিরাগভাজন হবেন। এতদিনে অর্জিত জনপ্রিয়তা নষ্ট হবে। সরকারী পুরষ্কার এবং টাকার সম্ভাবনা শেষ হয়ে যাবে। সাওতালদের বাড়িঘর ভেঙ্গে গুড়িয়ে দেওয়া হলো। কিন্তু এরা কেউ কিছু বললেন না।

সংবিধান থেকে “ধর্মনিরপেক্ষতা” কেটে ফেলা হলো। রাষ্ট্র ধর্মান্তরিত হলো, ইসলাম ধর্ম গ্রহন করল। যতীন সরকার এবং নির্মলেন্দু গুণ একটা কথাও বললেন না। ওয়াশিকুর রহমান বাবু, অভিজিৎ রায়, অনন্ত বিজয় দাসদেরকে খুন করলো। এরা চিরাচরিত নির্লিপ্ত। হিজাব-বুরখায় দেশ ছেয়ে গেল। আরব দেশের অপসংস্কৃতিতে দেশ তলানীতে। কিন্তু এই বুদ্ধিজীবীদ্বয়ের কলম থেকে একটি শব্দও বেরোলো না। কারণ অর্জিত সন্মান নষ্ট হবে। বই বিক্রি থেমে যাবে।

আমি অখ্যাত একজন মানুষ, অর্জিত কোন সন্মান নাই। তাই হারাবারও কিছু নাই। পুরাতন বন্ধু এবং সহকর্মীরা আমাকে ত্যাগ করছে। করুক। আমি মনে করি, আমি যা দেখি বা বুঝি তা প্রকাশ না করাটা আমার স্ববিরোধিতা, আমার অপরাধ। আমি যা লিখি তা বিবেকের এই দংশন থেকেই লিখি। বিখ্যাত কিছু হওয়া বা ফ্যান ফলোয়ার বাড়ানোর জন্য নয়।