লিখেছেনঃ জুলিয়ান বি. সরকার
একজন সেদিন বলছিলেন, বাংলাদেশে একমাত্র ভেজালমুক্ত খাবার (যদিও এটি খাদ্য নয়) আছে মাত্র একটি। জিজ্ঞেস করলাম কোনটি? উত্তরে বললেন, সিগারেট। কারণ ওটা এমনিতেই ভেজাল বা বিষযুক্ত। আরেকদিন আরেকজন বয়স্ক লোক বললো, বাংলাদেশের শিশুরা ভবিষ্যতে ‘সত্য’ বলে যে একটি শব্দ আছে/ছিলো তা ভুলে যাবে। কথাগুলো যে মোটেও অমূলক নয় তা বোধকরি সামান্য সচেতন মানুষও উপলব্ধি করতে পারবেন।
সত্যিই বাংলাদেশের এখন আর কোন খাদ্যই কেমিক্যাল/বিষমুক্ত নাই। বাংলাদেশে বর্তমান সর্বাধিক ভয়াবহ সমস্যা একটাই, তাহলো খাদ্যে ক্যামিক্যাল/বিষ প্রয়োগ! এ অবস্থা চলতে থাকলে বিকলাঙ্গ প্রজন্ম তৈরী হতে খুব বেশি সময় লাগবে না। আমরা রাজনীতি বুঝি না, বুঝতে চাইও না। আমরা সুস্থভাবে বাঁচতে চাই। বিশেষ করে ভবিষ্যত প্রজন্মকেও বাঁচাতে চাই।
যাহোক, এই যে এতো সুস্বাদু ফল এতে কি একটি মাছিও বসতে দেখেছেন কখনো? কয়েক বছর পূর্বের কথা চিন্তা করুন, মাছের বাজারে দুর্গন্ধে ঢোকা যেতো না। মাছের বাজার ও ফলের বাজারে মাছি ভনভন করতো, জড়িয়ে ধরতো। কোথায় গেলো সেইসব মাছি? বিষাক্ত খাবারের ছড়া-ছড়িতে মাছি মরে সাফ, ভবিষ্যতে মাছি দেখতে জাদুঘরে বা চিড়িয়াখানায় যেতে হবে!
এবার বিভিন্ন পত্রিকার কাটিং থেকে কিছুটা দেখা যাক- কারবাইড, ফরমালিন, মিপসিন, মার্শাল, কারবোফুরান, ইথরিন ও ডাই-এলড্রিন-এর ঝাঁজে দেশি-বিদেশি আম, তরমুজ, আনারস, কাঁঠাল, পেঁপে, কলা, বাঙ্গি ও লিচু সময়ের আগেই লোভনীয় হয়ে উঠেছে। শুধু তাই নয় বিদেশি স্ট্রবেরী, আঙ্গুর, নাশপাতি ও আপেলের অবস্থাও প্রায় একই। গাছ থেকে এসব ফল নামিয়ে বাগানে রাখা অবস্থাই এক দফা ইথাইনিল, ইথরি ও কারবাইড সেপ্র করা হয়। ঢাকায় পৌছানোর পর আবারও মেশানো হয় একই রাসায়নিক। অতিমাত্রায় রাসায়নিক ব্যবহার করায় ফলগুলোর ঘ্রাণ ও স্বাদ পুরোপুরি নষ্ট হয়ে যায়। পুষ্টির বদলে ফলগুলো পরিণত হয় বিষাক্ত খাদ্যে।
বিষাক্ত কেমিক্যাল মিশ্রিত লিচু খেয়ে দিনাজপুরে ১২ শিশুর মৃত্যু এছাড়া অনেক শিশু অসুস্থ হয়ে পড়েছে এবং ছবিটিতে দেখুন কিভাবে আমে বিষ দেয়া হচ্ছে।
বিস্থারিত জানতে গত ২২/৬/১২ তারিখের সংবাদ পত্রিকাটি পড়ুন। লিংক।
এছাড়া ১৯ ও ২১ জুন সমকাল পত্রিকা পড়ার জন্যও সকলকে অনুরোধ করছি- ফলের বাগানে কীটনাশক বিষক্রিয়ায় মরছে শিশু।
ফরমালিন গ্রহণের ফলে শরীরে সৃষ্ট অন্যান্য বিরূপ প্রতিক্রিয়াগুলোর মধ্যে অন্যতম হলো ফুসফুসের সংবেদনশীলতা বৃদ্ধি ও কার্যকারিতায় বিঘ্ন ঘটা, এজমা, লিভার সিরোসিস, ক্যানসার, কিডনির জটিলতা, বিকলাঙ্গ শিশুর জন্ম, মাথাব্যথা, চোখ জ্বালা-পোড়া ইত্যাদি। কেমিক্যাল মিশ্রিত ফল খেলে মানুষের দীর্ঘমেয়াদি নানা রকম রোগে বিশেষ করে বদহজম, পেটের পীড়া, পাতলা পায়খানা, জন্ডিস, গ্যাস্ট্রিক আলসার, শ্বাসকষ্ট, অ্যাজমা, লিভার ও কিডনি নষ্ট হওয়াসহ ক্যান্সারের মত জটিল রোগের সৃষ্টি হয়। এছাড়া মহিলারা এর প্রভাবে বিকলাঙ্গ শিশুর জন্ম দিতে পারে।
এছাড়াও বিভিন্ন ফলের জুসসহ শিশুখাদ্য, রং-বেরঙের নানা খাদ্য ও মিষ্টিতে খাবারের রঙের পরিবর্তে কাপড়ের রঙ এমন কি চামড়ার রঙও ব্যবহার করা হচ্ছে; যা আপনার শিশুর কিডনি, লিভারের মারাত্মক হুমকি স্বরুপ ও ক্যান্সারের কারণ। মাছ, দুধ ও দুগ্ধজাত খাবারে মেশানো হচ্ছে ফরমালিন। ভেজাল মুড়িতে সয়লাব বাজার। মানবদেহের জন্য ক্ষতিকারক ইউরিয়া ও হাইড্রোজ মেশানো মুড়ি দেদার বিক্রি হচ্ছে। এমনকি শুটকিও বাদ পড়ছে না এসব দস্যুদের হাত থেকে!
আপনার প্রিয় সন্তানের হাতে একটি ফল কিম্বা খাদ্য তুলে দেওয়ার অর্থই হচ্ছে তাজা বিষ তুলে দেওয়া। আপনি আপনার প্রিয় সন্তানকে তাজা বিষ খাওয়াতে পারেন কি? অতএব আসুন আজ থেকে আমরা সর্বপ্রকার বিষযুক্ত ফল ও খাবার খাওয়া থেকে বিরত থাকি এবং তীব্র প্রতিরোধ গড়ে তুলি! সরকারকে জাতি ধ্বংসকারী এসব মহা-দুষ্কৃতিকারীদের ফাঁসির কাঠগড়ায় দাঁড় করাতে বাধ্য করি।
এ ব্যপারে সরকারের যে পদক্ষেপ তা মূলত অকার্যকর! কদাচিৎ ভ্রাম্যমান আদালতের দু-এক লক্ষ টাকা জরিমানা এবং কমন ফল নষ্ট করে ফেলায় তাদের তেমন কোন সমস্যা হয়না; ফলের দাম বাড়িয়ে প্রকারনে- উক্ত অর্থ জনগণের কাছ থেকেই আদায় করা হয়। তাছাড়া নিত্য যে চোর চুরি করে একদিন ধরা পড়েও ওই সামান্য অর্থের বিনিময়ে ছাড়া পাওয়াটা তার কাছে প্রেরণা বলেই গণ্য হয়। একটি ফলের বা মাছের আড়তে বছরে একবার-দুবার হানা দিয়ে কিছু টাকা জরিমানা করলে কী হবে, ওই আড়তদার তো প্রতিদিনই এরূপ কাজ করছে এবং জরিমানা দেয়ার পর তো আরো বাড়িয়ে দিচ্ছে ফলের দাম, তার ফলাফলটা কী দাড়ালো, সব জারিমানা তো গিয়ে পড়লো জনগণের ঘাড়ে, তাই নয় কি? একদিন সম্ভবত এটিএন টেলিভিশনে এক আড়তদার বলছিলো, আনারসে কেমিক্যাল না দিলে একটি আনারস ২ দিনের বেশ রাখা যায় না, কেমিক্যাল দিলে রাখা যায় ১৫/২০ দিন। উল্টো ওই সাংবাদিককে আড়তদার প্রশ্ন করলো- এবার বলেন এতো লক্ষ লক্ষ টাকার ফল কি কেমিক্যাল না দিয়ে নষ্ট করে ফেলবো? আড়তদার আরো বলছিলো, এটা প্রশাসনের লোকের জানে তারা মাসে মাসে এসে মাসোহারা নিয়ে যায় তার কাছ থেকে। অতএব ফলে বিষ মেশানো বন্ধ হওয়া দূরের কথা বরং তা বিদ্যুৎ গতিতে বেড়েই চলেছে। সরকারের বর্তমান আইনের যতোটুকু প্রয়োগ করা উচিত ছিলো তাও ঘুষ ও দুর্নীতিবাজ কর্মচারীদের জন্য সঠিকভাবে প্রয়োগ হচ্ছে না। তাই এ আইনের পরিবর্তন প্রয়োজন, তবে কেবলমাত্র কঠোর আইন প্রণয়ন করলেই চলবে না তা প্রয়োগ করার জন্য যাদের নিয়োগ দেয়া হবে তারা যেন ঘুষখোর না হয় সেদিকেও সকলের বিশেষ করে সরকারের দৃষ্টি দেয়া একান্ত প্রয়োজন। কারণ এ সমস্যাটি শুধু ব্যক্তি বিশেষের নয়, সমগ্র জাতির।
আমার প্রশ্ন, একজন সন্ত্রাসী কতজন মানুষ মারে, কিংবা মারতে পারে? তাকে যদি ফাঁসি কিংবা তথাকথিত ক্রসফায়ারে মারা হয় তবে একজন খাদ্যে এবং ফলে বিষপ্রয়োগকারীর কেন ক্রসফায়ার কিংবা ফাঁসি হবে না? তাই শ্লোগান তুলুন- প্রজন্ম হত্যাকারী এসব বিষপ্রয়োগকারীদের কেন ফাঁসি হবে না? আমরা কতিপয় অতি সাধারণ লোক এই মর্মে একটি রীট পিটিশন দায়ের করার চিন্তা করছিলাম, কিন্ত সময় ও অর্থভাবে এবং অনেকের দ্বিমত পোষণের কারণে সেটিও করা যাচ্ছে না। যদি কারো পক্ষে সম্ভব হয় তবে এটি করতে পারেন।
বুদ্ধিজীবী, সাংবাদিকসহ সকল স্তরের ভাই-বোনদের প্রতি বিনীত অনুরোধ, আপনারা খাদ্যে বিষক্রিয়া বন্ধের ব্যাপারে সোচ্চার হোন, জাতিকে নিশ্চিত ধ্বংসের হাত থেকে মুক্তি দিন। সাধারণ জনগণের নিকট আমাদের সবচেয়ে বেশি প্রত্যাশা তারা যেন নিজ নিজ এলাকায় পোস্টার/লিফলেটের মাধ্যমে জনগণকে সচেতন করেন। বিশেষ করে সবাই যেন কিছুদিনের জন্য সর্বপ্রকার ফল কেনা ও খাওয়া থেকে বিরত থাকে তাহালে হয়তো ব্যবসায়ীদের কিছুটা হলেও আক্কেল হবে। ফল বিক্রি না হলে তারা বাধ্য হবে পূর্বের অবস্থায় ফিরে যেতে। কারণ এসব অতি মুনাফা লোভী, জাতি ধ্বংসকারীদের মোকাবেলা করার জন্য আমাদের হাতে কোনো অস্ত্র না থাকলেও এসব খাবার বর্জন করে তাদের শায়েস্থা করা কঠিন নয় বলে আমি মনে করি। দু-এক সপ্তাহ এমনকি দু-এক বছর এসব ফল না খেলেও বাঁচবেন, কিন্তু খেলে তাৎক্ষণিক না মরলেও বংশানুক্রমিক রোগ ব্যাধিতে আক্রান্ত হবেন এটা নিশ্চিত। আপনার প্রিয় সন্তান স্লো-পয়জনিং-এর শিকার হয়ে মরণব্যাধি ক্যান্সারসহ নানা মারাত্মক রোগে ভুগবে –এটি হতে দেয়া যায় না। অতএব নিজেদের অধিকার আদায়ে নিজেরাই সচেতন হোন এবং ভবিষ্যত প্রজন্মকে বাঁচিয়ে রাখুন।
ফুটপাথের একজন ফল ব্যবসায়ীর বা এক-দুজন আড়তদারকে জরিমানা করে এটা বন্ধ করা কোনভাবেই সম্ভব নয়। এর উৎস কোথায় সরকার কি জানে না? বিজ্ঞজনেরা বলেন- ক্ষমতা না থাকলে সে নাকি অন্যায় করতে পারে না যদিও বাক্যটি সম্পূর্ণ সত্য নয় তথাপিও একথা স্পষ্ট যে, ক্ষমতাশালীদের সংম্পৃক্ততা ছাড়া অন্তত বড় বড় অন্যায় সংঘটিত হতে পারে না। আমরা জানি যে, এসব ব্যবসায়ী সিন্ডিকেট অত্যন্ত শক্তিশালী এবং রাজনীতিতেও তারা হয়তো প্রভাবশালী, অতএব এদের প্রতিহত করা আইন দ্বারা সম্ভব হবে বলে বাংলাদেশের ১৬ কোটি মানুষ বিশ্বাস করলেও আমি বিশ্বাস করি না। কারণ এ নিয়ে প্রচুর বুদ্ধিজীবি, সাংবাদিকসহ সকল স্তরের জনগণ প্রচুর লেখালেখি করেছেন কিন্তু ফল যা তাতে দেখছি, এসব দুর্নীতিবাজদের দৌরাত্ম না কমে বরং বেড়েই চলেছে। হয় এদের প্রতিহত করুন নতুবা মরুন। আমরা যে আইন চাই তা প্রয়োগ করলেও এটি প্রতিহত করা সরকারের পক্ষেও সম্ভব হবে বলে বিশ্বাস হয় না কিন্তু আমাদের হাতে একটি অস্ত্র আছে যা প্রয়োগ করে আমরা কিছুটা হলেও এদের থমকিয়ে দিতে পারি; দিতে পারি বিশাল এক ধাক্কা। অতএব আসুন আমাদের অস্ত্রটি প্রয়োগ করে দেখি। এব্যাপারে সকলে একজোট হয়ে কাজ করতে হবে। আসুন সবাই মিলে আর না হোক এক সপ্তাহ সম্ভব হলে বছরের পর বছর এসব ফল খাওয়া বর্জন করি; যে পর্যন্ত ওরা ফলে বিষ দেয়া বন্ধ না করে। নিত্যপ্রয়োজনীয় খাবার যেমন- ভাত-তরকারি-রুটি, মাছ-মাংস ইত্যাদি বিষযুক্ত হলেও খেতেই হবে কিন্তু ফল না খেয়ে থাকা যাবে না কেন? নিজেদের বাড়ির ফল বা স্থানীয় ফলগুলো খেতে পারেন। সুস্থ থাকুন, ভালো থাকুন।
পঁাচ/সাত বছর আগে আমিও বাজার থেকে এরকম ফলই কিনতাম। এখন আর কিনি না মানে কিনতে হয় না। আমার বাড়ি যদিও আম বেল্টে নয়, তবু বাড়িতে (মাত্রই ৩০ ডেসি) প্রায় সব রকম আম ফলাচ্ছি। এখন আর বাজারের টকটকে সব ফলের দিকে ফিরে তাকাই না।অভিজ্ঞতা থেকে বলছি –
১. সম্ভব হলে নিজের বাড়িতে একটা দুটো গাছ লাগান:
২. অসময়ের ফল কিনবেন না – মনে রাখবেন জৈষ্ঠের মাঝামাঝি থেকে আষাঢ়ের মাঝামাঝি পর্যন্ত জাতি আমের (প্রথমে গোপালভোগ, তারপর ক্ষিরসাপাত – ঢাকা শহরে হিম সাগর বলে কথিত, তারপর ল্যাংড়া, সবশেষে ফজলি – এই টাইম টেবিলটা মোটামুটি মেনে চলুন)।
৩. ঝা চকচকে রংগীন ফল (বিশেষত আম ও লিচু) এড়িয়ে চলুন।
@কর্মকারক,
আপনার পরামর্শের জন্য ধন্যবাদ
খুবই গুরুত্বপূর্ণ লেখা। সরকারের উচিত অন্য সব কিছু বাদ দিয়ে খাদ্যে ভেজাল সমস্যা নিয়ে আগে চিন্তা করা,নাহলে নতুন প্রজন্ম পুরো শেষ হয়ে যাবে।
@রামগড়ুড়ের ছানা,
ধন্যবাদ।
সরকার কিংবা বিরোধীদলের কারোই এ নিয়ে চিন-ার কিছু আছে বলে মনে হয় না। কেউ কি দেখেছেন যারা যখনই বিরোধলে থাকে তারা দলীয় স্বার্থ ছাড়া অন্য কোন বিষয় নিয়ে আন্দোলন করে? খালেদা আন্দোলন করে ক্ষমতায় যাওয়ার জন্য হাসিনা করে ক্ষমতায় থাকার জন্য! এই বপরীত চিত্র দেখবেন আবার যখন খালেদা ক্ষমতা দখল করবে তখন, এই হলো এদেশের রাজনীতি। অতএব তাদের দ্বারা কোন আশা নেই। তবে সাধারণ জনগণ ও দেশের চিন-াশীল শিক্ষিত ব্যক্তিদের মাঝেও যে সচেতনতা আছে তারও তেমন কোন খবর আমার জানা নেই।
@জুলিয়ান বি. সরকার,
একদিন সম্ভবত এটিএন টেলিভিশনে এক আড়তদার বলছিলো, আনারসে কেমিক্যাল না দিলে একটি আনারস ২ দিনের বেশ রাখা যায় না, কেমিক্যাল দিলে রাখা যায় ১৫/২০ দিন। উল্টো ওই সাংবাদিককে আড়তদার প্রশ্ন করলো- এবার বলেন এতো লক্ষ লক্ষ টাকার ফল কি কেমিক্যাল না দিয়ে নষ্ট করে ফেলবো?
আড়তদারের কথাটি কিন্তু ফেলে দেবার মত নয়। আসলে ফল, মাছ বা সবজি ইত্যাদি বেশী দিন যদি না রাখা যায় তাহলে এসবের ব্যবসা করা যাবেনা। তাতে কৃষকও লাভবান হতে পারবেনা। তাই এর জন্য দরকার হিমাগার। কিন্তু একজন কৃষক, পাইকার বা খুচরা বিক্রেতার পক্ষে হিমাগার বানানো অসম্ভব। উন্নত বিশ্বে সুপার স্টোরগুলোর ( যেমন- WOOLWORTHS, COLES etc) নিজস্ব হিমাগার থাকে। তাছাড়া বাংলাদেশে এ ধরনের রিটেইল সুপার স্টোর হলে দেশের জন্য মঙ্গলজনক হবেনা, বরং বহু ব্যবসায়ী পথে বসবে। তাই সম্ভাব্য সমাধান হতে পারে প্রত্যেক এলাকায় সরকারি পর্যায়ে ফলমূল-শাকসবজি, মাছ ইত্যাদির জন্য হিমাগার তৈরি করা, সরকারী হিমাগার পরিবহনের ব্যবস্থা করা এবং কৃষক তথা ব্যবসায়ীদের জন্য সহজ শর্তে এগুলো ব্যবহারের সুযোগ দেয়া। । বড় বড় কোম্পানিগুলোতে ভেজাল মেশায় হয়তো শুধু লোভে বশবতি হয়ে, কিন্তু মাছ, শাকসবজি বা ফলমূলের ব্যবসায়ীরা হয়তো শুধু লোভের কারণেই ভেজাল মেশায় তা নয়, হয়তো অনেকটা বাধ্যও হয় ঐ অপকর্মগুলো করতে। কারণ ঐ ক্ষুদ্র বিনিয়োগই হয়তো তাদের শেষ সম্ভল, আর তা রক্ষা করতে যে কোন কিছুই তারা করতে পারে।
তাই শুধু জরিমানা, ক্রসফায়ার বা ফাঁসী সমাধান হতে পারে না।
আপনাকে ধন্যবাদ।
@হেলাল,
আপনি বলছেন, ঐ ক্ষুদ্র বনিয়িোগই হয়তো তাদরে শষে সম্ভল, আর তা রক্ষা করত েয েকোন কছিুই তারা করত েপার।ে কিন্তু যখন বিষপ্রয়োগ হতো না তখন তো আমরা ফল খেতাম, আপনি কৃষক বাঁচার কথা বলছেন, কৃষক এটা করে না, তাদেরকে বিষ দিতে লোভ দেখায় এবং বাধ্য করায় যারা পাইকার। তাছাড়া আজকাল প্রায় সব ফলের বাগানই আগে থেকেই ফরিয়া/পাইকারগণ কিনে রাখে এবং বারবার প্রচুর পরিমাণ বিষ প্রয়োগ করতেই থাকে। এতে কৃষকের কোন লাভ হয় বলে আমার জানা নেই। লাভ বড় বড় আরতদার এবং পাইকারী ব্যবসায়ীদের। এর আগেও তারা লাভ করতো তবে তাদের লাভের পরিমাণ তখন ছিলো সীমিত এবং কখনো কখনো ফল পচে যেতো লোকশান হতো এখন লোকশান তো নয়ই বরং ১০০% লাভ ছাড়া তারা ফল বিক্রি করে না। কেন আমরা পূর্বের অবস’ায় ফিরে যেতে পারি না? যখন বিষ প্রয়োগ হতো না তখন কি ক্ষুদ্র বা বড় ব্যবসায়ীরা ব্যবসা করতো না? করতো তবে অল্প ব্যবসা হতো। এখন তারা অত্যন- লোভী হয়ে গেছে বলে প্রচুর ব্যবসার লোভে এগুলো করে। সকলের মঙ্গল কামনা করছি।
ধৈয্য ধরে পড়ার জন্য অনকে অনকে ধন্যবাদ।
এ বিষয় নিয়ে সরেজমিন সংবাদ করার জন্য ঢাকার বাইরে থেকে মাত্র ঘুরে এসেছি। মাঠ পর্যায়ের চিত্রটি সত্যিই আতঙ্কজনক; হয়তো কল্পনার চেয়েও বেশী।
তবে খাদ্যে বিষ প্রয়োগকারীদের ফাঁসি দিতে চাইলে বোধহয় ‘ঠগ বাছতে গাঁ উজাড়’ দশা হবে। আমার মতে, জনসচেতনতা তৈরির পাশাপাশি সরকারি-বেসরকারি যৌথ স্কোয়াড গঠন করে এর বিরুদ্ধে বিশেষ অভিযান চালানো দরকার। ভাবছি, এ নিয়ে একটি আলাদা লেখা লিখবো। আপাতত এইটুকু।
ভাবনাটিকে উস্কে দেওয়ার জন্য লেখককে ধন্যবাদ। আরো লিখুন। (Y)
@বিপ্লব রহমান,
অনক েঅনক েধন্যবাদ।
তব েখাদ্য েবষি প্রয়োগকারীদরে ফাঁস িদতি েচাইল েবোধহয় ‘ঠগ বাছত েগাঁ উজাড়’ দশা হবে।
একথা সত্য তবে আমার ধারণা সাধারণ ব্যবসায়ীরা যতোটা না দোষী তার চেয়ে বেশি দোষী বড় বড় পাইকারগণ তারা হিমাগার তৈরি করে রাখতে পারে এবং খুচরা ব্যবসায়ীরা দিনে যতোটুকু বিক্রি হবে সেই আন্দাজ করেই বিক্রির জন্য সেখান থেকে কিনে নিবে। এই তো ৮/১০ বছর পূর্বেও রাত ১০টার পর দেখতাম ফার্মগেটে ফলওলারা জোর করে বেশি বেশি ফল কম দামে বিক্রি করার চেষ্টা করতো কারণ তখন বিষ দেয়া হতো না, আর এখন ফলওয়ালারা আমাদের দেখলে ঘাড় বাকা করে ব্যঙ্গাত্মক চাহনি দিয়ে অনিচ্ছায় কথা বলে, বেশি দরকষাকষি করলে বলে যান প্যাচাল পাইরেন না। যখন বিষ প্রয়োগ হতো না তখন কি ব্যবসায়ীরা ব্যবসা করতো না? করতো তবে অল্প ব্যবসা হতো। এখন তারা অত্যন- লোভী হয়ে গেছে বলে প্রচুর ব্যবসার লোভে এগুলো করে। সকলের মঙ্গল কামনা করছি।
খুব দরকারি একটি লেখা। লেখক কে ধন্যবাদ এবং শুভেচ্ছা।
@অচেনা,
ধৈয্য ধরে পড়ার জন্য আপনাকেও অনেক অনেক ধন্যবাদ।
স্বাগতম (C)
জনসচেতনতা জাগানিয়া খুব মৌলিক সমস্যা নিয়ে লেখার জন্য ধন্যবাদ ও অভিনন্দন।
বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন পড়ুয়া ছাত্রদের সাহায্য নিচ্ছেন না কেন? কতিপয় অতি সাধারণ লোক এই মর্মে একটি রীট পিটিশন দায়ের করার ব্যাপারে পিছিয়ে গেলেন কেন? মামলা লড়ার খরচ সহ অন্যান্য ক্ষতিপুরন দাবী করে এগিয়ে যান। নতুন প্রজন্মকে পৃথিবীতে এনে কর্কট থেকে বিকলাঙ্গ, সমূদয় সকল রোগ উপহার দিয়ে কি মহৎ কর্মটি করছি আমরা? আপনারা কতিপয় অতি অ সাধারন মানুষ অনুগ্রহ করে এগিয়ে আসুন।
সবখানে বিষাক্ত আর্সেনিকযুক্ত পানি আর দূষিত বাতাসের কথাও রীটে জুড়ে দিন।
খুব বড় সমস্যার একেবারে গোড়ার কথা তুলে বলেছেন দেখে আশান্বিত হলাম।
@কাজী রহমান,
রীট করার ব্যাপারে দু’জন উকিলের সাথে আলাপ করেছিলাম। টাকা-পয়সার কথা নয়। তারা সরাসরি বললেন, এ করে কি হবে? যারা বিষ প্রয়োগ করে তাদের সিন্ডিকেট কতোবড় তা জি জানেন? সরকারই বা কি করে? তারাও তো এসব ফলমূল খায়! তাছাড়া এ ব্যাপারে যে আইন আছে তাও তো প্রয়োগ করে না সরকার। আপনি আমি এসব করে লাভটা কি? ইত্যাদি।
আমি নিজের টাকা খরচ করে ৪ হাজারের মতো হ্যান্ডবিল/লিফলেট তৈরি করে বিলাতে গিয়ে কতো জনের কতো উপদেশ শুনলাম, যার ব্যাখ্যা দিতে গেলে কয়েক পৃষ্ঠা লিখতে হবে। কেউ বলছেন, এদেশে মানুষ বেশি হয়ে গেছে, দেখছেন না ঢাকার রাস-ায় হাটা যায় না গায়ে গায়ে মানুষ মরুক না কিছু! এসব শুনে হত্যোদম হয়ে পড়েছি।
@জুলিয়ান বি. সরকার,
অত্যন্ত প্রয়োজনীয় একটি লেখা আমাদেরকে উপহার দেয়ার জন্যে আপনাকে ধন্যবাদ। প্রতিবাদ করার সাথে সাথে জনগনকে ফলের বৃক্ষ রোপনে উৎসাহিত করা উচিৎ। বাজার থেকে ফল কিনে খাওয়া কমবে টাকাও বাঁচবে, জানও বাঁচবে।
@আকাশ মালিক,
অনেক অনেক ধন্যবাদ। আমারা অন্যান্য নিত্যপ্রয়োজনীয় খাবার না খেয়ে পারবো না তবে ফল না খেয়ে এদের বিরাট এক ধাক্কা দেয়া বোধকরি সম্ভব। কিন’ সমস্যা যাদের সাথে এবিষয় আলাপ করি, লিফলেট বিতরণ করতে যাই তারা বেশিরভাগই বলেন, এতো বাঙালির কিছু হয় না, বরং এখন ভেজাল না খেলে নাকি অসুস’ হয়ে পড়বে। তাছাড়া রাখে আল্লা মারে কে?????
অত্যন্ত প্রয়োজনীয় একটি লেখা।
বিষয়টিকে নিয়ে আরো লেখালেখি ও সচেতনতা বৃদ্ধি প্রয়োজন।
@সৈকত চৌধুরী, আপনাকে অনেক অনেক ধন্যবাদ।