আমার বড় মেয়ে ইয়েন ভূমিষ্ঠ হয়েই দুনিয়ার তাবৎ জিনিষ শিখে ফেলে।
ওকে চিত করে শুইয়ে দিলাম। চোখে মেলে তাকাল। বলল – আমার নাম ইয়েন, তুমি আমার বাবুনি। ওর মাকে বলল – তুমি আমার মামনি।
তারপর আকাশের দিকে তাকাল। বলল – ওটা আকাশ। আকাশের রং নীল। একটা চড়ুই পাখী বসল বারন্দায়। বলল – ওটা চড়ুই পাখী। বৃষ্টি পড়ল। বলল – বৃষ্টি পড়ছে। এখনই বিদ্যুৎ চমকাবে। আকাশ থেকে বৃষ্টি পড়ে। মাঠে ফসল হয়। পাহাড় দেখল, পর্বত দেখল। ব্রহ্মপুত্র নদ দেখল। বলল – এটা ব্রহ্মপুত্র নদ। বর্ষায় জল দক্ষিনে বইতে শুরু করল। বলল – জলের গতি দক্ষিনে।
একদিন মন্দিরে গেল। দূর্গার অনেক গুলো হাত দেখল। তার দুটো। বলল – দূর্গার অতগুলোই হাত থাকতে হয়। গনেশের গলার উপরে হাতীর মাথা। একটুও বিচলিত না হয়ে বলল – দেবতাতো! ঠিক আছে। বলল – ওইযে ছোট্ট একটি ইঁদুর, ওটাতে চড়েই গনেশ সারা বিশ্বব্রহ্মান্ড ঘুরে বেড়ায়। লক্ষ্মীর বাহক পেঁচা, সরস্বতীর হাঁস, কার্ত্তিকের ময়ূর। সব কিছু দেখল। জানল। আমাদেরকে কোন দিন একটি প্রশ্নও করল না।
কিন্তু অসুবিধায় পড়লাম আমাদের ছোট মেয়েটাকে নিয়ে। ওর নাম ছ্যাড়া। জন্ম থেকে সে কিছুই শিখেনি। বড় হয়েছে। ওর বয়স এখন বাইশ। কিন্তু কিছু দেখেনি। একদিন চোখ খুলল। চিনল না আমরা কে। আকাশের দিকে তাকাল। চিনল না ওটা আকাশ।
– দিনের বেলা সূর্য্য উঠে কেন?
– আকাশ ওখানে কেন?
– রংটা নীল কেন?
– গাছ এক জায়গায় দাঁড়িয়ে থাকে কেন?
– গাছে পাতা-ফুল কেন হয়?
– পাখী কেন উড়ে বেড়ায়?
চারিদিকে হঠাৎ করে অজস্র নতুন জিনিষ। হাজারটা প্রশ্ন।
আমার দীর্ঘায়িত ছাত্রজীবনের বন্ধু সুমিত এসেছে Boulder, Colorado থেকে। স্ত্রী মল্লিকা, ছোট ছেলে রিক। এখন তেরতে। নয় বছর পর কলেজ স্টেশন। রিকের হোম টাউন। হিউস্টনে কী কী নতুন হয়েছে তাও দেখবে। শুনেছে স্বামী নারায়ণের মার্বেলের মন্দির হয়েছে। রাজস্থান থেকে হাজার হাজার পাথরের মূর্তি এসেছে। ওগুলোকে পর পর বসিয়ে বিরাট মন্দির তৈরী করেছে। তাজমহলের ঝিকিমিকি এখানে দেখা যায়।
হিউস্টন হিমালয় রেস্টুরেন্টে লাঞ্চ। ইয়েন এল। সাথে অহিন্দু(?) স্বামী। জে কুমার। রাজপুত। শৈবাল এল ছ্যাড়াকে নিয়ে। তারপর স্বামী নারায়ণ মন্দির ভ্রমণ। মন্দির প্রাংগনে জুতো খুলে বেদীতে উঠে গেছি। শৈবালরা পেছনে। কোথায় পার্ক করছে কে জানে। আমি সেলফোনে হ্যালো বলছি। সুমিত আর রিকের পড়নে সিল্কের সোনালী রঙ্গের লুঙ্গি উঠে গেছে। আমার পেছনে ঘাড়ে একটা হাত পড়ল। স্বেচ্ছাসেবীর। অনেক কিছু এক সাথে। আমি হতভম্ব। কিছুই বুঝতে পারছি না। আমাকেও বুঝি লুংগি দিচ্ছে পড়তে। ঘুরে দাঁড়িয়েছি। বলল – No cellphone. ভারি বিরক্ত হলাম। – কেন?
– এটাই নিয়ম।
বলতে চেয়েও বলতে পারলাম না – নিয়মের খ্যাঁতা পুড়ি।
পূন্যার্থীরা জুতা-স্যান্ডেল সামাল দিচ্ছেন। ছবিঃ রিক
ছ্যাড়া-শৈবাল বেদীতে প্রবেশ করেছে। যথারীতি জুতো-স্যান্ডেল নীচে। এক মহিলা নাকি রক্তদান করে মন্দিরে এসেছে। কিছুক্ষনের মধ্যেই মাথা ঘুরে পড়ে গেছে। ইমার্জেন্সী সার্ভিস এসে গেছে।
ইমার্জেন্সী ভেহিকল দাঁড়িয়ে। ছবিঃ রিক
ইমার্জেন্সী ভেহিকল দুরে দাঁড়িয়ে। ক্রু ছুটে আসছে। মূমূর্ষূ রোগিণী। হাতে ইমার্জেন্সী গীয়ার। ওদেরও জুতা খুলতে হবে নাকি? কোনটা বেশী জরুরী? রুগিনীর জীবন? নাকি জুতো খুলা? আমার ভুল ভাংগল। সবার উপরে (মানুষ নয়) দেবতা সত্য। তাহার উপরে কেহ নাই। তুচ্ছ মানব জীবন। দেবতার সাথে মানুষের তুলনা? হাজার পূণ্যার্থী এখানে আসে। জন্ম-মৃত্যু দেবতার হাতে, দু-একটা মরলে কী যায় আসে তাতে! হায়রে মূর্খ ব্যাটা নৃপেন সরকার!
হাতে walki-talki. ওগুলোও ওরা ব্যাগে ঢুকিয়ে রাখল। আমি বাংলাদেশ-ভারত থেকে এসেছি। সেলফোন বন্ধ করতে বলাতে বিরক্তি প্রকাশ করেছি। হায়রে সাদা চামড়া! তোরা মানুষ হলি না। যা কিছু বিদেশী তাকেই তোরা সন্মান দেখাস। গ্রহণ করিস। ট্রেনিং মোতাবেক তোদের কাজ করার কথা। এক চুলও এদিক-ওদিক করার নিয়ম নেই। কিন্তু ধর্মের কাছে তোরা নতজানো। তোদের নিয়ম অচল, ট্রেনিং বাতিল। তোদের ছাড় দেওয়ার সীমা নেই। ধৈর্য্যেরও সীমা নেই।
ছ্যাড়া্র প্রশ্ন – সুমিত, রিকের পড়নে লুংগি। অনেক মেয়েদেরও। বললাম – ওরা শর্ট পড়ে এসেছে। হাফ ন্যাকেড। দেবতার অবমাননা হয়। দেবতাদের লজ্জাবোধ আছে, মানুষের নাই। তাই স্বেচ্ছাসেবীরা দেবতাদের লজ্জা নিবারণ করেছে।
ছিলিংএর তলা থেকে একটি ঘন্টা ঝুলানো। আমি লক্ষ্য করিনি। কিন্তু ছ্যাড়া করেছে। প্রশ্ন – ওটা বাজিয়ে দিচ্ছে কেন? আমি ব্যাপারটা বুঝিয়ে দিলাম – দেবতারা ঘুমিয়ে থাকে। এদের প্রনাম এবং প্রার্থনা বৃথা নষ্ট হয়ে যাবে যে!
ছ্যাড়ার বুদ্ধি আছে। বলল – তাই বুঝি শব্দ করে জাগিয়ে দিচ্ছে?
আমি বললাম – ঠিক তাই।
কিন্তু এভাবে প্রশ্ন করতে থাকলে আমি ভয়ানক বিপদে পড়ব ভেবে আমার গায়ে জ্বর এসে গেল।
হিউস্টন দূর্গাবাড়ী – বাঙ্গালীদের বিরাট মন্দির। সামনে বিশাল লেক। আর এক পাশে স্পোর্টস complex. মন্দিরের ভিতরে আছে শিবলিংগ। আমাকে নিশ্চয় প্রশ্ন করবে – ইহা কী জিনিষ?
ছবিঃ ডঃ আলী আজাদ চৌধূরী
আমি কী উত্তর দেব এই প্রশ্নের? মাঝখানে দন্ডায়মান জিনিষটি শিব নামক এক দেবতার বিশেষ একটি অংগ। ইহাকেই হিন্দুরা দেবতা জ্ঞানে পূজা করে। চেয়ে দেখ, ইহার উপর পুষ্পস্তবক এবং চন্দন শোভা পাচ্ছে। আবার দেখ জিনিষটি স্থাপিত দেবী পার্বতীর বিশেষ আর একটি অঙ্গের উপর।
তার পাশেই আছে কালীর ভয়াল মূর্তি। পড়নে একটি সূতাও নেই। মাথার চুল থেকে নখ পর্য্যন্ত নগ্ন। কী বাহারী দৃশ্য! গায়ে কাপড় নেই কিন্তু মাথায় সোনার মুকুট, নাকে নথ, কানে সোনার দুল, কব্জিতে সোনার অলংকার। এক হাতে খড়্গ, এক হাতে মানুষের মাথা, এক হাতে চক্র আর এক হাতে অভয় বাণী। মানুষ মেরে কেটে মাথা দিয়ে মালা পড়েছেন গলায়। কাটা হাত দিয়ে কোমড়ে পড়েছেন কোমড়বন্ধ। মুখ থেকে বেরিয়ে এসেছে এক বিঘত লম্বা জিহবা। ইনি হলেন দেবী! যার হাতে অভয় বাণী। মাটিতে লুটায়ে ভক্তরা করিছে প্রণাম।
ছবিঃ আকাশ মালিক
এই ছবিটা ভিন্ন। অভয়ের বাণী নেই। ইন্টারনেটে খুজলে হাজার রকমের ছবি পাওয়া যাবে।
সুমিতের সাথে স্বামীনারায়ণ মন্দির ভ্রমণ আমার মনে ভয় ধরিয়ে দিয়েছে। হিউস্টন মন্দির প্রতিপালকেরা আমার ভয় কিছুটা লাঘব করেছেন। চিত্র দেখুন। নীল শাড়ী দিয়ে লজ্জাহীনা কালীর সব কিছু ঢেকে দিয়েছে। তবে কি প্রতিপালকেরা নিজেরাও লজ্জিত? তাহলে শিবলিংগটিকেও কেন ঢেকে রাখে না?
টেক্সাস। ২৬ জুলাই ২০১০।
শিব/শিবলিংগ, যিনাত, সশি – কে নিয়ে জনপ্রিয় গান।
http://www.youtube.com/watch?v=DCD3R0oC09g&feature=related
http://www.youtube.com/watch?v=OxIzQAoa6Rs&feature=related
আমেরিকান Monk-রা আমেরিকার হাওয়াই রাজ্জের Garden Island দিপে $16 million বাজেটে একটা শিব মনদির তইরি করছে।
http://www.himalayanacademy.com/
http://www.himalayanacademy.com/ssc/hawaii/temples.shtml
http://www.youtube.com/watch?v=SRGJqwdduIA&feature=player_embedded
anyway, weekend-প্রায় সেশ হয়ে এল। Enjoy rest of it.
নৃপেন্দ্র বাবু,
এই তো চলছে।
আপনার লেখার শুরুটা ভালই ছিল, তবে বিষয় আধিক্য না হলে আরও ভাল লাগত।
@গীতা দাস,
ধন্যবাদ আপনার অকপট Observationএর জন্য। কাজে লাগবে।
ছোটদের প্রশ্ন করতে দিলেই সমস্যা। ধর্ম নিয়ে অন্য ভাবনায় যদি মুসলিম সমাজের কাউকে পাওয়া যায়। তাহলে সেটা আবার সাম্প্রদায়িকতা হয়ে পড়ে। তাই অনেকে এসব নিয়ে মন্তব্যও করতে চায় না।
এই অংশের মনোভাবের সাথে একমত হতে পারলাম না। দেব-দেবীতে বিশ্বাস এবং তাদের প্রতিমা বানিয়ে পূজা করার এমনিতেই যে হাস্যকর দিক আছে, সেটার কথা বলছিনা। কিন্তু মনে হচ্ছে যৌনতাকে আপনি একটি ট্যাবু হিসেবে দেখেন। কিন্তু অন্যরা একই ভাবে দেখবে কেন?
@রৌরব,
আমি তোমার মতের সাথে বেশকিছুটা একমত। Sex-তো আর কোনো taboo নয়। Life comes from male part and female part. Union between male and female. শিবলিংগো জদি তা বোঝাএও তাতে লজ্জা পাওআর কি আছে। শরিরের প্রত্তেকটা “organ”-এর function আছে, এবং important. Open-mined, liberal, progressive লেখকএর “male organ” আর “female organ” নিয়ে এত আপত্তি আর লজ্জা।
আমি আকাস মালিককে লিখেছি, ওটা please দেখে নিও। আমি জে link-টা দিয়েছি তাতে বিভিন্ন “school of thought” শম্পরকে অল্প অল্প লিখেছে। মন চাইলে দেখতে পার। অনেক শময় লাগে। এত শময় কোথায়। ভাল থাকবেন।
“এদেরকে প্রশ্ন করার, স্বাধীনভাবে চিন্তা করার সুযোগ দিলে আমাদের পৃথিবী রামকৃষ্ণ-রুমী নয়, আরো ডারউইন-আইনসটাইন দেখার আশা করতে পারে।”
এক মত।
আমিও ইস্কুলে বাংলা স্যার যখন কপাল কুন্ডলা পড়াচ্ছিলেন জিজ্ঞেস করেছিলাম, ” স্যার মাকালি উল্লুংগ কেন ?” এই ্প্রশ্নে কন হাসা হাসি হয় নি।সবাই চুপ। ছাত্রেরা ও চুপ।স্যারও কিচ্ছু সময়ের বিরতির পর উনি উত্তর দিয়েছিলেন, ” যিনি বিশ্ব চরাচর জুড়ে আছেন তানাকে কি দিয়ে ঢাকবি? ” আমি স্যারের এই উত্তরে খুশি হতে পারিনি। চুপ করে ছিলাম।
এই সব কালী টালি নেই। এরা মানুসের বানানো। তবে এর মনসত্বাত্তিক ব্যাখা করলেও করা যেতে পারে।
বস্তুত পক্ষে লিংগ পুজাকে কন ধার্মিকতার সাথে যোগ করা ঠিক না। যেহেতু এই আচার টা কনও এক জাতি করে বলে এটা ওই জাতির ধার্মিক অংগে এসে গেছে।
আমার এই স্ব- ব্যখ্যা র এই মানে না যে আমি তথাকথিত হিন্দু, মুসলিম বা অন্য ধরমে বিশ্বাসি।
শিব লিংগের ব্যাপার টা অবশ্য রূপক। মাঝে মাঝে মনে হয় হিন্দুদের কি সব ই রূপক। যেমন দুর্গা দেবীর দশ হাত। আসলে ত কাহারো দশ হাত হওয়া সম্ভব না। এখন কার দিনে কারো দশ হাত হলে সবাই তাকে বিকলাংগ বলবে। যাই হক শিব লিংগে আসা যাক। আমার মনে হয় লিংগ পুজার ফিলোসফিক্যল দিক হচ্ছে এই যে – এটা এই চরাচরে সব থেকে বেশী পবিত্র ও জরুরি অংগ যা না থাকলে মানুস এক দিন বিলুপ্ত হয়ে যেত। যা না থাকলে বা যা অকরমন্য হলে ব্যর্থ হত এই জীবন। হিন্দু ধর্মের একটা বিশেস দিক হল এটা extrovert. এই একটাই ধর্ম আছে ধরায় যেখানে মানুসের যোউন (এক সাথে ওই কার আনাতে পারলাম না ) বাসনাকে প্রকশ্যে স্বীক্রিতি (বানান ? রি ফলা আসচে না) দিয়েছে।
আমার সহকর্মীকে ১০ বছরের এক ছাত্রী জিজ্ঞেস করেছিল। তিনি উত্তর দিয়েছিলেন-
It is a representation of a phallic organ resting upon a female sex organ. Together they represent fertility. It is a powerful symbol of temples of Siva. The symbol is revered and honored with gifts of flowers and food. This is to please Siva, for Siva is the destroyer.
বন্ধুর কথা শেষ হতে না হতে ছোট্ট একটি বাচ্চা প্রশ্ন করে বসে- What is phallic organ? সহকর্মী সাহায্যের আশায় আমার দিকে তাকান। আমি বললাম দাদা তোমার ছাত্র, তোমার সাবজেক্টের উপর প্রশ্ন করছে তুমিই বুঝাও।
ঘটনাটা ছিল এ রকম- কম্যুউনিটি ডেভল্যাপমেণ্টের একটি অংশ হিসেবে ছোট্ট একটি প্রজেক্টের সাথে কিছু দিন কাজ করেছিলাম। প্রজেক্টের শ্লোগান হল, পৃথিবীর কোন ধর্মেই ভেদাভেদ নেই, সকল ধর্মই শান্তির ধর্ম। আমাদের কাজ হল জুনিয়র- প্রাইমারি স্কুলের ছাত্র-ছত্রীদেরকে বিভিন্ন উপাসনালয়ে নিয়ে যাওয়া আর বিভিন্ন ধর্মের সিম্বল বা প্রতীক ও উপাসনা পদ্ধতি ব্যাখ্যা করা। ইহুদীদের Synagogue, শিখদের gurdwara, তে তেমন কোন অসুবিধা হয়নি, অসুবিধায় পড়েছিলাম হিন্দু মন্দিরে ও মুসলমানদের মসজিদে গিয়ে। আমার সহকর্মী বেশ হাস্যমুখে গর্বভরে বিন্দি, তিলক, ত্রিশুল এ সব কিছুর বর্ণনা দিয়ে শিবলিঙ্গে এসে কিছুটা নার্ভাস ফিল করলেন। আমাকে একটি কিশোর প্রশ্ন করলো মসজিদে নারী পুরুষ একলাইনে দাঁড়িয়ে নামাজ না পড়ে মেয়েরা পুরুষের পেছনে দাঁড়ায় কেন? আমি উত্তর না দিয়ে ইমাম সাহেবকে ব্যাখ্যা করতে অনুরোধ করলাম। ইমাম সাহেব উত্তর দিলেন- নারী পাশে থাকলে পুরুষের সেক্সুয়েল ইনটেনশন জাগ্রত হতে পারে তাই। বিদ্যুত বেগে একটা ছেলে বলে উঠে- How about women wachting so many buttocks? হায়রে হাসি, একদম হা হা প গে।
প্রশ্ন উঠলো বোরাক নিয়ে আর মা কালীর লম্বা লাল জিহবা, এক হাতে ছোরা, আরেক হাতে গলা কাটা মানুষের মস্তক, শিবের বুকের উপরে এক পা, এ সমস্ত নিয়ে। আমাদের একটা সুবিধা হল, আমরা শুধু বলে দেবো, একর্ডিং টু বাইবেল, একর্ডিং টু বেদ, গীতা, কোরান এ রকম এ রকম। এর পরেও রক্ষা পেতাম না। এটাই স্বাভাবিক, সকল শিশুরই মন, মানসিকতা চিন্তা শক্তি প্রায় একই রকম। এদেরকে প্রশ্ন করার, স্বাধীনভাবে চিন্তা করার সুযোগ দিলে আমাদের পৃথিবী রামকৃষ্ণ-রুমী নয়, আরো ডারউইন-আইনসটাইন দেখার আশা করতে পারে।
@আকাশ মালিক,
ধন্যবাদ সংযোজনের জন্য।
এই নিবন্ধটি লেখার সময় আমার রবিঠাকুরের “আচলায়তন”এর কথা মনে ছিল।
১) আমার অভিজ্ঞতাটা শুধু হিন্দু মন্দিরের উপর ভিত্তি করে। কিন্তু এর ব্যপ্তি সব ধর্মে। আপনার তাৎক্ষনিক প্রতিক্রিয়া তারই সহায়ক।
২) শুরুতে ইয়েনের কথা বলেছি। ওর কোন প্রশ্ন ছিল না। কারণ, সে এইসব দেখে দেখে বড় হয়েছে। কাজেই ওর কাছে সব কিছুই স্বাভাবিক মনে হয়েছে। যেমন মুছলমান ছেলে/মেয়েরা তাদের নিজ ধর্মের কোন নেগেটিভ দিকই দেখতে পায়না কেননা ছোটবেলা থেকেই সবকিছুই “ভাল” জেনে বড় হয়।
৩) ছ্যাড়া এগুলো দেখে বড় হয়নি। তাই জানতে চাচ্ছে। কালির হাতে মুন্ডুকে সে মুন্ডুই দেখবে। ইয়েনের মুন্ডুটি চোখে পড়েনি। ছ্যাড়ার পড়বে। ওকে আধ্যাতিক যে ব্যাখ্যাই দিই না কেন। মুন্ডুটা ওর মাথায় থাকবেই যতক্ষন না মগজ ধুলাই সম্পূর্ণ হয়।
@নৃপেন্দ্র সরকার,
চমৎকার লেখা।
:yes:
দারুন বলেছেন।
@ব্রাইট স্মাইল্,
ধন্যবাদ পড়ার জন্য।
আমি জানি নিবন্ধটিতে বেশী মন্তব্য পড়বে না।
আমি পাঠকদের প্রতি আরও একবার পড়তে অনুরোধ রাখছি।
@নৃপেন্দ্র সরকার,
সত্যি কথা বলি, ছোট বেলা বুঝে না বুঝে মনে মনে আমি দূর্গা ও মা কালীর অন্ধভক্ত ছিলাম, যদিও তা কারো কাছে প্রকাশ করতাম না। এর অন্যতম কারণ ছিল ছোটবেলা আমি মা কে হারিয়েছি। মুর্তি-প্রতিমার দিকে অপলক দৃষ্টিতে তাকিয়ে আমার মাকে কল্পনা করতাম। মাঝে মাঝে মনে হতো দুহাত জোড় করে মাথানত করে পুজো দেই, কিন্তু লোকভয়ে তা করতাম না। আবার এই আমিই বড় হয়ে (মাদ্রাসায় থাকতে) ওয়াজ মাহফিলে দেবতাদের আকাম কুকামের বর্ণনা শুনে মাটির ঢিল ছুঁড়ে মুর্তির নাক ভেঙ্গেছি। পূজা পর্বণে আমার সমবয়সী বন্ধুরা যেত ঢং তামাসা করার জন্যে, আমি সত্যিই যেতাম শ্যামা সঙ্গীত আর কীর্তন বুঝার জন্যে, যদিও কিছুই বুঝতাম না। আজও সীতা সাবিত্রির দেশের, কালী, সরস্বতি, দূর্গার দেশের সেই সময়ের ছোট ছোট ঘটনার লেখা পেলে পড়ি, কিন্তু বিশ্বাস না থাকায় এখন আর সেই মজা পাইনা।
@আকাশ মালিক,
সুনীন গংগোপাধ্যয় তার আত্মজীবনিতে (অর্ধেক মানব) এইসব নারী দেবীদের মূর্তি দেখলে তার যৌন কামনা জাগ্রত হত লিখে ফেঁসে গেছিলেন। তার বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছিল, তবে কল্লা কাটার ফতোয়া কেউ দেয়নি।
আপনার কেস অবশ্য ভিন্ন।
হিউষ্টোন দূর্গাবাড়ির ওয়েব সাইটে আগে মাঝে মাঝে যেতাম গানের জন্য। এর বিরাট মন্দির করেছে জানতাম না। আটলান্টায় মনে হয় ৩/৪ বছর আগে রাজকীয় একটি মন্দির করা হয়েছে ২০ মিলিয়ন ডলার ব্যায়ে। উদ্বোন হয়েছিল রাজকীয় উপায়ে। ছবি দেখেছিলাম, শিল্প কারুকার্য দেখার মত।
@আদিল মাহমুদ,
“অর্ধেক জীবন” না?
@রৌরব,
তাই মনে হয়, নামটা পরিষ্কার মনে আসছে না, অর্ধেক আছে মনে আছে; এরপর মানব, মানবী, না কি যেন নিশ্চিত ছিলাম না।
@আদিল মাহমুদ,
২০ মি-লি-য়-ন ডলার!!! সত্যিই ২০ মিলিয়ন? টাকা গুলো আসলো কোত্থেকে? ২০ মিলিয়ন ডলার ব্যয় করে এ যুগেও মানুষ মগজ ধোলাইয়ের ফ্যাক্টোরি বানায়, বেকার সমস্যার সমাধানে একটা ইন্ডাস্ট্রি করলোনা। :-Y :-Y
অনেক তো হলো ইসলাম, কোরান, হাদিস নিয়ে, এবার একবার রামায়ন, মহাভারত, পুরাণ এর প্রতি দৃষ্টি নিক্ষেপ করুন, দেখবেন মাথাটা আউলা-ঝাউলা হয়ে যাবে। শিবের বউ রামকে পরীক্ষা করতে সীতার রূপ ধারণ করেন। পরে স্বরূপে ফিরে আসলেও শিব তাকে স্ত্রী হিসেবে গ্রহন না করে পার্বতিকে বিয়ে করেন, কারণ শিব সীতাকে মায়ের মত শ্রদ্ধা করতেন। এর আগের ও পরের ঘটনাগুলোর কাছে, আলেফ-লায়লা বা আরব্য উপন্যাসের সিন্দবাদের কাহিনি কিছুই না।
মিশকাত, মকসুদুল মোমেনিন পড়েছেন, একবার ঋগবেদ আর মনুসংহিতা পড়ে দেখুন, নারী বেইজ্জতি, নারী অপমান কারে কয়।
@আকাশ মালিক,
তেমনই তো শুনেছিলাম। ২০ মিলিয়ন আমেরিকান হিন্দু কমিউনিটির কাছে তেমন কিছুই না।
আমি ফ্লোরিডার যেই মাঝারি শহরে ছিলাম সেখানেই এক রাজকীয় মন্দির বানানো হয়েছিল। তার খরচ কত জানি না, তবে কইয়েক মিলিয়ন হবে তো বটেই। তার মূর্তি ও কারুকাজের জন্য ভারত থেকে কয়েকজন কারিগর নিয়ে আসা হয়েছিল কয়েক বছরের জন্য।
আপনি রামায়ন মহাভারত ভুল বুঝেছেন, আগে বিশ্বাস আনয়ন করুন, সব বুঝে যাবেন। তারপরেও কিছু না বুঝলে রূপক। তাতেও সন্দেহ থাকলে বাংলা ইংরেজী অনুবাদ বাদ দিয়ে মূল সংস্কৃত পড়ুন, হিমালয়ের গুহাবাসী মুনি বাবাজীদের সাথে আলোচনা করুন।
@আকাশ মালিক,
তোমার লেখা পরেই বোঝা জায় তমার মনটা খুব ভাল। আমি কাজি নজরুলের লেখা বাংলা কিরতন আর শ্যামাসংঈত এখনও শুনি। নিচে কয়েকটা লিঙ্ক দিলাম। হয়ত তুমিও শুনেছ। শময় পেলে মন চাইলে দেখতে পার।
http://www.youtube.com/watch?v=uWK9X0Kd87s&feature=PlayList&p=D102A7ECA92A3443&index=1&playnext=6
http://www.youtube.com/watch?v=FSRDdLFeGmQ&feature=PlayList&p=ACEE5E478AF45A73&playnext=1&index=3
http://www.youtube.com/watch?v=3Rk4ss1rtMg&feature=related
http://www.youtube.com/watch?v=gUfQcTsHJdg&feature=PlayList&p=D102A7ECA92A3443&index=6&playnext=2
http://www.youtube.com/watch?v=E46dAdVL9tw&feature=PlayList&p=ACEE5E478AF45A73&index=5&playnext=3
ভালও থেকো।
Bye bye
@আকাশ মালিক,
আমার উল্টোটা ছিল। এক সময় ইসলাম ধর্মটাকে ভাল লাগতে শুরু করে।
একটা ফ্রি কোরানও সংগ্রহ করি। কোরান পড়ে আমি হতবাক হয়ে যাই। প্রপাগান্ডায় কী না হয় সেটিই আবিস্কার করি।
কোরানের আয়াতগুলো টপিক অনুযায়ী সাজানোর একটা পরিকল্পনাও করি। কিছুটা করার পর দেখি, সৈয়দ কামরান মীর্জা, আবুল কাসেম অনেক আগেই তা লিপিবদ্ধ করেছেন।
@আকাশ মালিক,
আপনার দেওয়া লিঙ্ক থেকে একটা ছবি জুড়ে দিলাম। উলংগ ছবির বর্ণনা আছে। ছবি চেয়েছিলাম আমার বন্ধু ডঃ আলী আজাদের কাছে। তিনি দিতে বিলম্ব করার কারণে দিতে পারেন নি। কিন্তু Internet এ যে ভূড়ি ভূড়ি ছবি আছে এই জিনিষটি মাথায় আসেনি একবারও। মাথা গেছে।
@ নৃপেন্দ্র সরকার
ধন্নবাদ আপ্নার লেখাটার জন্ন। আপনার বিশ্লেসনটা জানতে পারলাম। আমি একটা লেখা পরেছিলাম “Summaries on Hindu Darshanas”
লিঙ্কটা নিচে দিলাম। লিঙ্কটা কাজ করল কিনা জানালে খুশি হব। আমার কাছে পিডিফ ফাইলটা আছে।
http://docs.google.com/fileview?id=0Bxmb43ISDdJdNzczZGZkMWUtYWZmMi00ODZkLThhYzMtYjFhYTM0YzU0NGJh&hl=en
আমি আরেকটা বই পরে্ছিলাম। “SYMBOLISM IN HINDUISM”
তাতে “SYMBOLISM” গুলও আলচঅনা করেছে।
SYMBOLISM IN HINDUISM
by Swami Nityananda
Language – English
ISBN – 978-81-7597-149-3
Chinmaya Mission West
P.O. Box 129
Piercy, CA 95587
@Truthseeker,
কেমন আছেন, লম্বা হলিডে কাটিয়ে বহুদিন পরে এলেন বুঝি? আপনার দেয়া লিঙ্ক থেকে “Summaries on Hindu Darshanas” লেখাটি ডাউনলোড করে রাখলাম। বেশ তথ্যবহুল লেখা অনেক কিছু জানা যাবে। লিংকটি দেয়ার জন্যে আপনাকে ধন্যবাদ।
@আকাশ মালিক,
আপনাকে অনেক ধন্নবাদ “courtesy mail” করার জন্ন। আপনি যে মনে রেখে লিখেছেন, তাতেই ধন্ন। খুব hectic চলে। research-এর কাজ করে করেও সেশ হয়না। আর মুক্তমনাতে শুধু “intellectual” বিতরকও। সারাদিন এগুলো করলে না খেয়ে মরতে হবে। তবে আপ্নি যে ধইরযো ধরে সব ধরমোমত পরাশনা করেন শেটা বেশ ভাল। “symbolism in hinduism” বইটাতে বিভিন্ন “symbol” গুলও শম্পরকে লিখেছে। আমি ওটা পরেছিলাম। আর ওই pdf file-টা একটা ” brief overview”. এগুলো detail-এ চরচা করতে গেলেও অনেক শময় লাগে। তাহোলে “religious study department”-এ join করতে হবে। এত শময় কোথাএ। ভালও থাকবেন, খুশিতে আর শান্তিতে থাকবেন। “Om shanti Om” সিনেমআর (পুরানোটার) একটা গান শুনেন।
http://www.youtube.com/watch?v=eS29KERO_d4
Life comes from male part and female part. Union between male and female. শিবলিংগো জদি তা বোঝাএও তাতে লজ্জা পাওআর কি আছে। Sex-তো আর কোনো taboo নয়। শরিরের প্রত্তেকটা “organ”-এর function আছে, এবং important. Open-mined, liberal, progressive লেখকএর “male organ” আর “female organ” নিয়ে এত আপত্তি। লেখকএর কি লজ্জা 🙂
ভাল থাকবেন। আমাকে এখন একটা আরটিকেল লিখতে হবে “nanomedicine in cancer therapy”-এর ওপর।
@Truthseeker,
শিবলিঙ্গের পাশে একটা
” এর একটা পর্ণ ভিডিও চালিয়ে রাখলে আরও ভাল হয়, কী বলেন! বাচ্চারা Life creation দেখতে পেত। বাবা-মারা কেন যে দেখায় না!
আপনি যে Life creationএর কথা বলেছেন সেটা সবাই জানে। আমিও জানি। পিপীলিকাও জানে।
আমার ছেলের সাথে একটি ভিন ধর্মী মেয়ের বিয়ে হবে কয়েক মাস পরে। ওখানে গেলে সে আমাকে প্রশ্ন করবেই। আমি কী উত্তর দেব? ভাবুন আমার মত পরিস্থিতি আপনার হল। তখন কী করবেন?
Life Creation তত্ত্ব? Life Creationএর জন্য শিবের এত্ত বড় লিংগ দেখানোর দরকার কী? বড়সড়ই যদি দেখাতে হয় ত হাতীরটা দেখালেও Life Creation দেখানো যেত।
এই সব ব্যাখ্যা শুনতে শুনতে কান ঝালা পালা হয়ে গেছে। যথেষ্ট হয়েছে।
@Truthseeker,
লিঙ্ক কাজ করছে। কিন্তু এটি আমার কোন দিনই পড়া হবে না।
ধন্যবাদ। কারও না কারও কাজে লাগবে।