সাম্প্রতিক দিন গুলোতে কৃত্রিম জীবন সৃষ্টির যুগান্তকারী ঘটনায় যে টাল মাটাল কান্ড হয়ে গেল, সে ডামাডোলে নিতান্তই সাদা মাটা ও সবার কাছে পরিচিত বিষয় ইসলামে নারীর মর্যাদা বিষয়ক পর্বের ৩য় অংশ প্রকাশ করতে দ্বিধা দ্বন্ধে ভুগছিলাম। যাহোক, আপাতত , ঝড়টা একটু থেমেছে তাই সাহস করে ৩য় পর্ব প্রকাশ করলাম। তবে খেয়াল করেছি সম্প্রতি বেশ কিছু শক্তিশালী লেখকের আবির্ভাব ঘটেছে যাদের লেখা অনেক তথ্য বহুল ও গতিশীল। আমি সবাইকে নিয়মিত লেখার আহ্বান জানিয়ে আমার আসল বক্তব্য তুলে ধরার চেষ্টা করছি।
নারীদেরকে কি বিপুল সম্মান ইসলাম প্রদান করে তার একটা বহুল পরিচিত ও বিখ্যাত আয়াত আছে যা সবাই জানেন, তারপরেও সেটাকে একটু ব্যখ্যা করতে হবে কারন সেটা জরুরী বলে মনে করি।
নিজেদের ইচ্ছা অনুযায়ী দুই-দুই, তিন-তিন ও চার-চার রমনীকে বিবাহ কর। কিন্তু তোমরা যদি আশংকা কর যে, সমতা রক্ষা করতে পারবে না তদবস্থায় একই স্ত্রী কিংবা তোমাদের অধীনস্ত দাসী, ইহা অবিচার না হওয়ারই অতি নিকটতর। সূরা-৪: নিসা, আয়াত: ০৩
একজন পুরুষ একসাথে ৪ টা বিয়ে করতে পারবে, এর পরেও বলা হচ্ছে নারীদেরকে বিপুল সম্মান প্রদর্শন করা হয়েছে। কেন চারটা বিয়ে করতে পারবে একজন পুরুষ? উদ্দেশ্য অত্যন্ত পরিষ্কার। স্রেফ পুরুষটি যেন যৌন বৈচিত্র উপভোগ করতে পারে। খোদ নবী নিজে এক সাথে এক ডজনের বেশী স্ত্রী ও ততোধিক দাসী নিয়ে অবাধ যৌন ফুর্তি করতেন, আর তার উম্মতদেরকে যদি মাত্র একটি বিয়ে করতে বলেন তাহলে কেউ কি আর উম্মত থাকবে? সুতরাং ৪ টি বিয়ে করার অনুমতি দেয়ার সোজা অর্থ হলো- নারীকে স্রেফ যৌন ভোগ্য পন্য হিসাবে গণ্য করা।
এখন এ বিষয়ে জাকির নায়েক কি বলেন দেখা যাক। বলা বাহুল্য তার মজলিসে তাকে প্রায়ই এ বিষয়ে প্রশ্ন করা হয় আর সে খুব আত্মবিশ্বাস সহকারে এর উত্তর প্রদান করে। সেটা কেমন? সে শুরু করে ঠিক এভাবে- একমাত্র কোরানেই মানুষকে একটি মাত্র বিয়ে করার কথা বলা হয়েছে। কারন যেহেতু একজন স্বামী তার চার স্ত্রীর সাথে সমতা রক্ষা করতে পারবে না তাই তার পক্ষে একটা ছাড়া দুইটি বিয়ে করা কার্যত অসম্ভব। এ প্রসঙ্গে সে অন্যান্য ধর্মের কিচ্ছা কাহিনী তুলে ধরে। স্বয়ং আল্লাহর প্রেরিত ধর্মের সাথে যে অন্য ধর্মের কোন তুলনা হয় না তা তখন সে তখন বেমালুম ভুলে যান। তাছাড়া একথা একেবারেই ভুলে যান যে, ইসলাম একমাত্র ইসলামকে ছাড়া অন্য কোন ধর্মকে সত্য ও আসল ধর্ম মনে করে না।
জাকির নায়েক মনে করে যে কোরান একমাত্র সে নিজেই পড়ে আর অন্য সবাই নাকে তেল দিয়ে ঘুমায়। আর সে তো ভাল করেই জানে যে মুসলমানরা নামাজের জন্য প্রয়োজনীয় আরবী সূরার দু একটি লাইন ছাড়া তাও আবার আরবীতে, আর কিছু মুখস্ত করা তো দুরের কথা পড়ারও প্রয়োজন মনে করে না। আর তাই তারা সবাই থাকে কোরান ও হাদিস সম্পর্কে একেবারে অন্ধকারে। সে কারনেই জাকির নায়েকদের মত লোকজন মানুষকে দিব্যি ধোকা দিয়ে চলেছে। কেমন করে ধোকা দিচ্ছে তা দেখা যাক নিম্মের আয়াতে-
তোমরা কখনো ভার্যাগনের মধ্যে সমতা রক্ষা করতে পারবে না যদিও লালায়িত হও, তবে সামগ্রিকভাবে ঝুকিয়া পড়িও না যে অপর স্ত্রীকে ঝুলানবৎ করিয়া রাখিবে এবং যদি সংশোধন কর এবং উভয়ে যদি পৃথক হইয়া যায়, তবে আল্লাহ অতিশয় ক্ষমাকারী দয়ালু। এবং যদি উভয়ে পৃথক হইয়া যায় তবে আল্লাহ আপন উদারতায় প্রত্যেককে অমুখাপেক্ষী করিয়া দিবেন। সূরা-৪: নিসা, আয়াত:১২৯-১৩০
খেয়াল করুন, এখানে কিন্তু চারটা বিয়ে করার বিষয়টাকে একটা শর্ত সাপেক্ষে চুড়ান্ত অনুমোদন দেয়া হচ্ছে। কি সে শর্ত? এটা জানা কথা যে একজন পুরুষ মানুষের পক্ষে চারটা বৌকে সমান ভাবে দেখা সম্ভব না কারন কোন বৌ বেশী সুন্দরী ও আকর্ষণীয়া যখন অন্য বৌ হলো কম সুন্দরী ও আকর্ষণহীনা, আর তাই শর্ত দেয়া হচ্ছে- তবে সামগ্রিকভাবে ঝুকিয়া পড়িও না। অর্থাৎ কোন একজনের প্রতি খুব বেশী ঝুকে না পড়লে চার বিবাহে কোন সমস্যা নাই। খুব বেশী ঝুকে পড়লেও তাড়াতাড়ি তা সংশোধন করে একটু কম ঝুকে পড়ার জন্য উপদেশ দেয়া হচ্ছে। যদি সত্যি সত্যি কারও প্রতি বেশী ঝুকেই পড়ে তাহলে স্বামী প্রবরটি অন্যজনকে বিদায় করে দেবে অর্থাৎ কম সুন্দরীকে বিদায় নিতে হবে এখানে। আর বলা বাহুল্য সেই বিদায় তথা তালাক এর পুরো এক্তিয়ার কিন্তু স্বামী প্রবরের। এবারে আমরা উক্ত আয়াত সমূহকে পাশাপাশি রাখি-
নিজেদের ইচ্ছা অনুযায়ী দুই-দুই, তিন-তিন ও চার-চার রমনীকে বিবাহ কর। কিন্তু তোমরা যদি আশংকা কর যে, সমতা রক্ষা করতে পারবে না তদবস্থায় একই স্ত্রী কিংবা তোমাদের অধীনস্ত দাসী, ইহা অবিচার না হওয়ারই অতি নিকটতর। সূরা-৪: নিসা, আয়াত: ০৩
তোমরা কখনো ভার্যাগনের মধ্যে সমতা রক্ষা করতে পারবে না যদিও লালায়িত হও, তবে সামগ্রিকভাবে ঝুকিয়া পড়িও না যে অপর স্ত্রীকে ঝুলানবৎ করিয়া রাখিবে এবং যদি সংশোধন কর এবং উভয়ে যদি পৃথক হইয়া যায়, তবে আল্লাহ অতিশয় ক্ষমাকারী দয়ালু। এবং যদি উভয়ে পৃথক হইয়া যায় তবে আল্লাহ আপন উদারতায় প্রত্যেককে অমুখাপেক্ষী করিয়া দিবেন। সূরা-৪: নিসা, আয়াত:১২৯-১৩০
এখন কি মনে হচ্ছে? কোরান কি সত্যিই পুরুষের জন্য একটি মাত্র বিয়ে করার জন্য বলছে নাকি কৌশলে বহু বিবাহের জন্য মানুষকে উৎসাহিত করছে ? পরিস্থিতি যখন এরকম তখনও জাকির নায়েকদের মত ধুরন্ধর লোকের কিন্তু যুক্তির অভাব নেই। তখন তার যুক্তি হলো- একজন পুরুষ বহু বিবাহ করলেও সমস্যা নেই, কিন্তু একজন নারী একসাথে বহু স্বামী রাখলে সমস্যা আছে। তা হলো- সেক্ষেত্রে সন্তান তার সঠিক পিতৃ পরিচয় পাবে না যা তাকে মানসিকভাবে বেড়ে উঠতে সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে ফলে সামাজিক বিশৃংখলা সৃষ্টির সমূহ সম্ভাবনা আছে। তার মানে হচ্ছে- লোকটা ধরেই নিয়েছে যে আমরা যারা নারীদের অধিকার ও স্বাধীনতা নিয়ে কথা বলি, আমরা চাই যেন একটা পুরুষ যেমন চারটি নারী বিয়ে করতে পারে, তেমনি একটা নারীও চারটি স্বামী বিয়ে করতে পারবে। আহাম্মকের চুড়ান্ত না হলে এ ধরনের অগ্রিম ধারনা কেউ করতে পারে ? আর একটা যুক্তি দাড় করায় তা হলো- কোন কারনে কোন স্থানে যুদ্ধ বিগ্রহ হলে পুরুষের সংখ্যা হঠাৎ করে কমে যেতে পারে সেক্ষেত্রে পুরুষের বহু বিবাহ যথার্থ। তার মানে অগ্রিম ধারনা করে নেয়া হচ্ছে যে মানুষ সব সময় যুদ্ধ বিগ্রহে লিপ্ত থাকবে, নারীরা বিধবা হবে আর তাদেরকে বেচে থাকা অল্প সংখ্যক মানুষ গনহারে আবার বিয়ে করবে। ইসলামের সেই প্রাথমিক যুগে মুসলমানরা সব সময়ই যুদ্ধ বিগ্রহে লিপ্ত থাকত, তাই সে বিষয়টা তখনকার ক্ষেত্রে প্রযোজ্য হতে পারে, তা আজকের দিনে কেন প্রযোজ্য হবে ? তখন আবার পাল্টা যুক্তি দেয়- দুই তিন বিয়ে করতে তো কেউ বাধ্য করছে না। এটা বস্তুত যে একটা উদ্ভট যুক্তি তা কিন্তু যুক্তিদাতারা বুঝতে পারে না। বহু বিয়ে করতে কেউ বাধ্য করছে না ঠিকই কিন্তু কোরানের মত ঐশি কিতাবের নামে চিরকালের জন্য যে বিধান দেয়া হলো তা তো রদ করা যাবে না , আর সেহেতু সেটাকে অপব্যবহার করে সমাজের রিপুতাড়িত লম্পট লোক গুলো একের পর এক বিয়ে করে, কিছুদিন রেখে দু তিনটি বাচ্চার জন্ম দিয়ে পরে পরিত্যগ করে চলে গেলে তাকে কিভাবে দমন করা যাবে? আর এটা তো কোন তাত্ত্বিক কথাও না।খোদ আমাদের এই বাংলাদেশে এরকম বহু কুলাঙ্গার ও লম্পট এ কর্মটি করে দিব্যি পার পেয়ে যাচ্ছে আর সমাজে অসহায় নারীদের সংখ্যা বৃদ্ধি করছে যা সমাজকে একটা দুর্বিসহ মানবিক বিপর্যয়ের দিকে ঠেলে দিচ্ছে। মানুষের বাসায় বা পোশাক প্রস্তুতকারক কারখানাতে যে সব মহিলা কাজ করে তাদের অধিকাংশেরই জীবন ইতিহাস এরকম। ইসলাম কিন্তু এটা ঠেকানোর কোন উপায় রাখেনি। বরং লম্পটদের জন্য বিষয়টা খুবই সহজ করে দিয়েছে। আমাদের সোজা বক্তব্য ও দাবী- পুরুষ বা নারী তারা একই সময়ে শুধুমাত্র একজনের সাথেই বিবাহিত থাকবে উভয়ে পরিপুর্ন ও সমান অধিকার ও স্বাধীনতা সমেত। আর কিছু না। প্রাযুক্তিক অগ্রগতির এ দিনে যদিও সন্তানের আসল পিতা কে তা জানাটা অসম্ভব কিছু নয়, আমি ওদিকে আর গেলাম না। আর তার চাইতে বড় ব্যপার তথাকথিত এসব ইসলামী পন্ডিতদের সীমাহীন ভন্ডামী। খেয়াল করুন তারা শুরু করছে এই বলে যে একমাত্র ইসলাম পুরুষ মানুষকে একটি মাত্র বিয়ে করার জন্য বলেছে, কিন্তু কিছু পরেই সেই একই ব্যক্তি বহু বিবাহের পক্ষে যুক্তি প্রদর্শন করে চলেছে মহা উল্লাসে। এর পরেও শিক্ষিত মুসলমানরা তাদের মত ভন্ডদেরকে বাহবা দেয়, মাথায় তুলে নাচে, জ্ঞানের জগতে কতটা দীন হলেই সেটা সম্ভব সেটা আপনারাই বিচার করুন।
আর একটা বহু বিখ্যাত সুরার আয়াত আছে যা দিয়ে একজন নারীকে সরাসরি পুরুষের অর্ধেক মর্যাদা সম্পন্ন করা হয়েছে যা নিম্ন রূপ:
তোমাদের আপন পুরুষ লোকের মধ্য হইতে দুইজন সাক্ষী রাখ, যদি দুই জন পুরুষ না পাওয়া যায় , তাহা হইলে একজন পুরুষ ও দুই জন স্ত্রীলোক—- সূরা-২: বাক্কারা, আয়াত-২৮২
এটাতেও নাকি নারীদের অমর্যাদা করা হয়নি বলে ইসলামী পন্ডিতদের দাবী। তাদের বক্তব্য- আলোচ্য বিষয়টি হলো কোন চুক্তি সম্পাদনের ক্ষেত্রে। বলা বাহুল্য একটি চুক্তিপত্র করতে সাক্ষীর দরকার হয়। আর এ সাক্ষীর ক্ষেত্রে একজন পুরুষ পাওয়া না গেলে দুইজন নারীর সাক্ষী নিতে হবে। কেন দুইজন নারী একজন পুরুষের পরিবর্তে? তার উত্তরে তাদের ব্যখ্যা- একজন নারীর নানারকম প্রাকৃতিক অসুবিধা থাকতে পারে যেমন- ঋতুকালীন সময়, গর্ভাবস্থা ইত্যাদি আর সেকারনে সে প্রয়োজন হলে সাক্ষ্য প্রদানের সময় কোর্ট কাছারী ইত্যাদিতে হাজির হতে পারবে না। সেক্ষেত্রে দুই জন নারী সাক্ষী থাকলে একজন যদি পূর্বোক্ত সমস্যায় হাজির হতে অপারগ হয় তো অন্য জন সেক্ষেত্রে হাজির হয়ে কাজ চালিয়ে নিতে পারবে।
এক্ষেত্রে কতগুলি স্বতঃসিদ্ধ ধারনা আগে থেকেই করে নেয়া হয়েছে, যেমন-
১। ঋতুকালীন সময়ে নারীরা একেবারে শয্যাশায়ী হয়ে পড়ে ও চলাচল করতে পারে না।
২। নারীরা গর্ভবতী হওয়া মাত্রই চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়ে ।
এখন দেখা যাক, বাস্তব অবস্থা কি। ঋতুকালীন সময়ে খুবই কম সংখ্যক মহিলা সামান্য একটু শারিরীক অসুবিধা বোধ করে। আজকাল কোন মেয়েই তার পিরিয়ডের সময় কাজ বাদ দিয়ে ঘরে বসে আছে এরকম দেখা যায় না। নারীরা গর্ভবতী হওয়ার পর বরং তাকে বসে না থেকে হাটা চলা করার জন্য ডাক্তারী উপদেশ দেয়া হয় তবে কঠিন কাজ করতে নিষেধ করা হয়। প্রসব হওয়ার মাত্র দুই তিন সপ্তাহ আগে তার চলাচল সীমিত হয়ে পড়ে। তার চেয়ে বড় কথা হলো- একটা নারী তো জীবনের সব সময় গর্ভবতী থাকে না। তবে যদি ১৪০০ বছর আগেকার আরব দেশের কথা চিন্তা করি তাহলে বক্তব্য ঠিক আছে। মরুভুমিতে কোন রাস্তা ঘাট ছিল না, উট দুম্বার পিঠে মানুষকে যাতায়াত করতে হতো। তো একজন গর্ভবতী নারীর পক্ষে উট দুম্বার পিঠে চলাচল করাটা ছিল কঠিন। সুতরাং সে দিক থেকে সেই ১৪০০ বছর আগের আরব দেশের প্রেক্ষিতে উক্ত আয়াত ঠিক আছে। কিন্তু আজকেও কি তা ঠিক আছে ? আজকে যোগাযোগ ব্যবস্থার বৈপ্লবিক উন্নতির যুগে গর্ভবতী নারীর জন্য যাতায়াত তো কোন সমস্যা না। কিন্তু কোরান বলছে যে- তার বানী আর নির্দেশ কেয়ামতের আগ পর্যন্ত বহাল থাকবে। এখন শিক্ষিত নারীরা কি বলেন? আপনারা কি চান আপনাদের সাক্ষী এখনও একজন পুরুষের অর্ধেক থাকবে ? অত্যন্ত আশ্চর্যের বিষয়- আমি শিক্ষিত কিছু নারীর সাথে কথা বলে দেখেছি, তারা কিন্তু এ ব্যপারে নীরব। তারা বলে এ ব্যবস্থা সেই প্রাচীন আরবের জন্য প্রযোজ্য ছিল। যখন বলি- কোরানের নির্দেশ কেয়ামত পর্যন্ত । তখন তারা বলে- সবই আল্লাহর ইচ্ছা ও আর কোন যুক্তি না দিয়ে চুপ করে যায় ও সেই বহু বিখ্যাত আপ্ত বাক্য উচ্চারন করে- আল্লাহ বলেছেন ধর্ম নিয়ে বাড়াবাড়ি না করতে। অথবা সবক দেন এ বিষয়ে আরও বেশী পড়তে যদিও নিজেরা পড়াশুনার একেবারেও ধারে কাছে যায় না। এর পর আর শত চেষ্টাতেও তার সাথে আর ইসলাম নিয়ে কথা বলা যায় না। তার চেয়ে বড় কথা হলো- নারী যেমন গর্ভবতী হয়ে সাক্ষ্য স্থলে যেতে অপারগ হতে পারে, পুরুষ মানুষটিও তো অসুস্থ হয়ে বিছানায় পড়ে থাকতে পারে। তাহলে? তাহলে তো যে যুক্তিতে এক জন পুরুষের বদলে দুই জন নারীর সাক্ষীর কথা বলা হচ্ছে সে যুক্তি তো পুরুষের বেলায়ও প্রযোজ্য। তাহলে?
ইসলামী রাষ্ট্রে বা ইসলামী মতে রাষ্ট্রের প্রধান যে নারী হতে পারবে না, তারও মূল কারন কিন্তু আল্লাহর এ আয়াত। কারন একজন পুরুষের অর্ধেক মর্যাদার যে নারী সে তো মেধা বুদ্ধি সব বিষয়েই পুরুষের অর্ধেক। সে কিভাবে একটা রাষ্ট্রের প্রধান হয়? ঠিক একই কারনে ইসলামী মতে- তাদের কোন ভোটাধিকার নেই , থাকাও উচিত নয়। বাংলাদেশে জামাত ইসলাম সহ যে সব ইসলামী দল আছে তাদের সংবিধানেও উল্লেখ আছে নারীরা কখনই দেশের রাষ্ট্রপ্রধান হতে পারবে না। এর কারন কুরানের এই আয়াত। এসব নিয়ে শিক্ষিত মুসলিম নারীদের সাথে কথা বলতে গেলে ওরা বলে- ওটা সেই জমানার ঘটনা , এখনকার না। তাদেরকে আবার এ আইন কেয়ামত পর্যন্ত বলবত থাকার কথা স্মরন করিয়ে দিলে বলে- ওটা তখন আল্লাহ কেন বলেছিল তা আল্লাহই ভাল জানেন। ব্যস আর তাদের সাথে কথা বাড়ে না। একদিন তো এক নারী বলেই বসল- আমরা যদি এ ব্যবস্থা নিয়ে সুখে থাকি তাতে আপনাদের অসুবিধা কোথায়? এখন আপনারাই বলুন এর কি উত্তর দেয়া যায়? কঠিন ইসলামী পরিবেশে থেকে এদের বুদ্ধি বৃত্তিটাই ভোতা হয়ে গেছে। অনেকটা সেই খাচার টিয়া পাখির মত। অনেক দিন খাচায় থাকার পর, তাকে ছেড়ে দেয়া হলেও সে দুরে না গিয়ে খাচার মধ্যেই ফিরে আসে। কিন্তু আসল বিষয় হলো- এভব মুসলিম নারীদেরকে শৃংখলে আটকে রাকার পরও কিভাবে তথাকথিত ইসলামী পন্ডিতরা দাবী করে যে , ইসলাম নারীদেরকে অনেক মর্যাদা দিয়েছে ? এ দাবীটা পরিহার করলেই তো আমাদের আর কোন মাথা ব্যথা থাকে না।
আমার কাজের লোকটা কঠিন নামাজ দার মানুষ। লেখা পড়া তেমন জানে না। আমি তাকে বললাম- এত নামাজ পড়ো রোজা রাখো, কিন্তু আল্লাহ তো তোমার দিকে ফিরেও তাকায় না, যেমন গরীব ছিলে তেমনই রয়ে গেলে চিরকাল। সে বলল- সবই আল্লাহর ইচ্ছা। আমি বললাম- মরার পর কোথায় যেতে চাও। বেহেস্তে ? সে উত্তর দিল- সবাই তো বেহেস্তে যেতে চায়। আমি জিজ্ঞেস করলাম- জানো বেহেস্তে কি আছে? সে বলল- যাবতীয় সুখ শান্তি সেখানে আছে। আমি জিজ্ঞেস করলাম – যেমন ? বলল- সব ধরনের ভাল খাবার, ফল ফুল, ভাল ঘর বাড়ী, যা চাওয়া যাবে তা। আমি বললাম- তুমি জানো না যে সেখানে ৭০ হুর পাবে ফুর্তি করতে আর সুরা বা মদ খেতে পারবে যথেচ্ছ? বলল- না, এসব তো কোনদিন শুনিনি, কোন ইমাম তো মসজিদে কখনো এসব কথা বলে না। আমি আরও বললাম- তুমি তো পুরুষ মানুষ, তোমার জন্য ৭০ হুর আছে, কিন্তু তুমি কি জানো তোমার বউ যদি বেহেস্তে যায় বেহেস্তে তার জন্য কোন ব্যবস্থা নেই ? সে সরল ভাবে স্বীকার করল- তা তো জানিনা। আমি বললাম- তোমার যদি ফুর্তি করার জন্য ৭০ টা হুর দরকার হয়, তোমার বউয়ের জন্য তো কম করেও ৭ টা পুরুষ থাকা দরকার কারন ফুর্তি তো খালি পুরুষ মানুষরাই করে না, মেয়েমানুষেরও তো ফুর্তির দরকার আছে। সে কিছুক্ষন চুপ করে থেকে বলল- সবই আল্লাহর ইচ্ছা , তিনি যা ভাল বোঝেন সেভাবেই ব্যবস্থা করবেন।
কি বুঝলেন? মসজিদ কেন , কোন ইসলামি জলসায় কিন্তু এখন আর হুর পরীর কেচ্ছা বলা বলি হয় না।কারন সহজেই বোধগম্য। প্রথমত: ওটা এক তরফা পুরুষের আনন্দ ফুর্তির বিষয় যা নারীদের কাছ থেকে এখন গোপন করা দরকার। দ্বিতীয়ত: কিচ্ছাটা আধুনিক জগতের সাথে বড়ই অমানানসই যা যৌক্তিকভাবে আধুনিক মানুষকে বোঝানো মুসকিল। ফলাফল হলো- এ বিষয়ে আধুনিক মানুষের মনে প্রশ্নের উদ্রেক হলে তারা ইসলাম সম্পর্কে বিরূপ ধারনা করবে, তাই তা বাদ দিয়ে যাওয়াই বুদ্ধিমানের কাজ। তাই এসকল বোগাস ও আজগুবি লোভ লালসা দেখানোর কায়দা বাদ দিয়ে এখন তথাকথিত ইসলামী পন্ডিতরা নেমেছে কোরানে কি সব বিজ্ঞানের তত্ত্ব ও সূত্র আছে তা আবিস্কারে। কারন এটার বাজার এখন ভাল।
ধর্মপ্রান মুসলিম রমনীগন, দেখুন কোরান আপনাদের কি বলছে-
তোমাদের স্ত্রীগন তোমাদের শস্য ক্ষেত্র, সুতরাং তোমাদের শস্যক্ষেত্রে যে প্রকারে ইচ্ছা অবতীর্ন হও।সূরা-২: বাক্কারা, আয়াত-২২৩
এ সূরার অনেক ব্যখ্যাই ইতোপূর্বে অনেকেই করেছেন খুব ভালই ব্যাখ্যা করেছেন। তার পরেও নিত্য নতুন পাঠক/পাঠিকা যারা এ সাইটে আসেন তাদের জন্য আমার পূনর্ব্যখ্যা। শস্য ক্ষেত্র এর একজন মালিক থাকে। মালিক তার ক্ষেত্রে যেমন ইচ্ছা খুশী ভাবে লাঙল চালাতে পারে, যা ইচ্ছা খুশী চাষ করতে পারে। সেখানে ক্ষেত্রের কোন স্বাধীনতা বা ইচ্ছা নেই। ক্ষেত্র সেখানে বোবা। সে কখনো বলতে পারবে না যে- তুমি এখন আমার উপর চাষ করো না আমার শরীর খারাপ, বা আমার মন ভালো নেই এখন তাই চাষাবাদ করো না। তো একজন স্বামীর কাছে তার নারীর অবস্থানটা যে হুবহু সেরকম মোহাম্মদ কিন্ত সেটাই সুস্পষ্টভাবে এ আয়াতের মধ্য দিয়ে প্রকাশ করেছেন। অর্থাৎ একজন স্বামী যখনই কাম তাড়িত হয়ে উত্তেজিত হয়ে পড়বেন তখনই তিনি তার স্ত্রীকে যেমন খুশী ভোগ করতে পারবেন, সেখানে স্ত্রীটির শরীর খারাপ নাকি মন খারাপ সেটা বিবেচ্য নয়। এমনকি যদি স্ত্রীটি কোন অজুহাত দিয়ে তা প্রত্যাখ্যান করে- তাহলে তা তার জন্যে ভয়াবহ গুনার কাজ। অর্থাৎ নিজে প্রচন্ড কষ্ট দুঃখ পেলেও স্বামীকে তা বলা যাবে না সে সময়ে, কারন তার স্বামী প্রবর তখন প্রচন্ড কাম তাড়িত হয়ে ছট ফট করছেন ও তাকে খুশী করাই হলো স্ত্রীটির প্রধান কর্তব্য। বিষয়টি আসলেই যে তাই , হাদিসে কিন্তু তা সমর্থন করা হয়েছে, দেখুন-
আবু হোরায়রা থেকে বর্নিত, আল্লাহর নবী বলেছেন- যদি কোন স্ত্রীকে তার স্বামী বিছানায় ডাকে (যৌনমিলনের জন্য) আর সে স্বামীর ডাকে সাড়া না দেয় যাতে তার স্বামী রাগান্বিত অবস্থায় ঘুমাতে বাধ্য হয়, তখন ফিরিস্তারা সেই স্ত্রীলোকটিকে সকাল পর্যন্ত অভিশাপ দিতে থাকে। সহি বুখারী-ভলুম-৪, বই-৫৪, হাদিস-৪৬০
দেখুন এখানে যদি স্ত্রীলোকটির ন্যুনতম স্বাধীনতা বা অধিকার থাকত তাহলে উপরোক্ত আয়াত বা হাদিসে একটু সংকেত বা সংযোজন থাকত। যেমন তাহলে আয়াত টি হতে পারত এরকমÑ
তোমাদের স্ত্রীগন তোমাদের শস্য ক্ষেত্র, সুতরাং তোমাদের শস্যক্ষেত্রে যে প্রকারে ইচ্ছা অবতীর্ন হও। তবে স্ত্রীদের প্রতি একটু সংবেদনশীল থাকিও।
আর তাহলেই কিন্তু স্ত্রীটির সুযোগ বা অধিকার থাকত তার শারিরীক বা মানসিক সমস্যার কারনে তার স্বামীর ডাকে সাড়া না দেয়ার আর তাতে কোন গুনাহ হতো না।
অথবা যদি হাদিসটি এরকম হ’ত-
আবু হোরায়রা থেকে বর্নিত, আল্লাহর নবী বলেছেন- যদি কোন স্ত্রীকে তার স্বামী বিছানায় ডাকে (যৌনমিলনের জন্য) আর সে কোন কারন ( শারিরীক বা মানসিক সমস্যা) ছাড়া স্বামীর ডাকে সাড়া না দেয় যাতে তার স্বামী রাগান্বিত অবস্থায় ঘুমাতে বাধ্য হয়, তখন ফিরিস্তারা সেই স্ত্রীলোকটিকে সকাল পর্যন্ত অভিশাপ দিতে থাকে।
তাহলে দেখুন এখানে স্ত্রীটিকে সত্যিকার মানুষ হিসাবে গন্য করা হতো, তার অধিকার ও স্বাধীনতা রক্ষিত হতো। উপরোক্ত আয়াত বা সূরা দ্বারা খুব পরিস্কার ভাবে আল্লাহর বানীর মাধ্যমে মোহাম্মদ নারীদেরকে শুধুমাত্র যৌন যন্ত্র হিসাবে চিহ্নিত করেছে যা আবার হাদিসের মাধ্যমে তা বাস্তবায়ন করেছে। তো এই হলো- ইসলামে নারীর আসল মর্যাদা।বিশ্বাসী নারী পুরুষকে এসব বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করলে বলে আরও পড়তে হবে। কি পড়তে হবে ? অথচ নিজেরাই কিন্তু তা পড়ে না, যা বলে সব অন্যের বলা কথা তোতা পাখীর মত আউড়ে যায়। যেখানে আল্লাহ তার কোরানে বলেছেন- আমি কোরান নাজিল করেছি সহজ ভাষায় যাতে তোমরা বুঝতে পার। আর হওয়ার কথাও তো তাই। মোহাম্মদের তো আর প্রথাগত লেখাপড়ায় দখল ছিল না, তাই তার পক্ষে জটিল করে নান্দনিক কায়দায় কোন কিছু লেখা সম্ভব ছিল না। কোরানের পাতায় পাতায় যে সব সুরা লিপিবদ্ধ আছে তার ভাষা একেবারেই সহজ ও সরল। কোন রকম জটিলতা নেই। বর্তমানকার তথাকথিত ইসলামি পন্ডিতরাই অসাধু উদ্দেশ্যে মানুষকে ধোকা দেয়ার জন্যেই তা জটিল করে তুলছে আর মানুষকে বুঝ দেয়ার চেষ্টা করছে কোরান তা না জানি কোন মহা রহস্যময় করে রচিত। আর সাধারন মুসলমান ভাই বোনেরা সেই রহস্যময়তার গোলকধাধায় ঘুরে মরছে।
@ব্রাইট স্মাইল্,
দেখুন, আমি আপনাকে যতই বলি শাব্বির আহমেদের interpretation-এর মৌলিক ভিত্তিটা (আমি আগেই উল্লেখ করেছি) প্রথম ব্যাপার যাতে আমি আস্থাশীল, আপনি বারে বারে একই কথা বলে চলেছেন যে ওটা আমার পছন্দ মতো হয়েছে -এটাই মূল কথা… … কিন্তু আপনি সুন্দর করে একটু বলেন তো, শাব্বির আহমেদের কাজের মৌলিক যে কয়েকটা ভিত্তি, তার কোনটা কি আপনার মতে অযৌক্তিক? অনুগ্রহ করে উত্তর দিন, অন্য অনুবাদক যারা আছেন তাদের অনুবাদের কোন বৈশিষ্ট্য-এর কারণে সেটা আপনার কাছে বেশি গ্রহণযোগ্য? দেখুন, আমি কিন্তু একবারও বলিনি, আপনি কুরআনের ভুল অনুবাদ পছন্দ করেন, ইত্যাদি… কারণ, যৌক্তিক কারণে আমি আপনার মনের কথা বুঝতে সক্ষম নই… আমি আপনাকে আর দশজনের সাথে তুলনাও করতে চাই না… তাই আপনিও আমাকে আঘাত করে আপনার কথাকে প্রতিষ্ঠিত করতে পারবেন না…
আপনি চাইলেও রকেট সায়েন্স দিয়ে আমার কথা বুঝতে পারবেন না যদি আপনি বুঝতে না চান…
আর হ্যা, আর কুরআন শরীফের ভাবানুবাদ একটাই হবে কেন? অন্য কেউই করতে পারে… এটা মাত্র একটা গুরুত্বপূর্ণ ব্যাপার… তার থেকেও গুরুত্বপূর্ণ একটি ব্যাপার হলো, শাব্বির আহমেদ কুরআন শরীফের ভাষা কে কুরাইশ dialect -এ ধরে নিয়ে কাজ করেছেন (যেটা in fact কুরআন শরীফেই উল্লেখ করা আছে)… – এই কারণেই আমি এটা কে অধিক গ্রহণযোগ্য বলেছি (একমাত্র বলার কোনো কারণই নাই)..
এটা কোনো এক জায়গায় পড়েছিলাম.. মনে নেই.. এখন খুঁজে বের করার মতো সময়ও নাই… দুঃখিত….
যদি আপনি সত্যিই জানতে আগ্রহী হন, তাহলে সময় করে খুঁজে বের করবো…. তাছাড়া মূল আলোচনা-তে এটা খুব একটা প্রভাবক নয় বলে মনে করছি… বরং এটা নতুন বিতর্কের একটা ভাল বিষয়.. তো পরে একসময় এটা নিয়ে কথা বলা যাবে…
@ ফয়সল,তা ২:১ ও ৩৬:১ এর কোন অনুবাদ বা ভাবানুবাদ নাই কেন?শাব্বির ভাইও দেখি ফেইল মারছে। 😀 আপনি নিউটন, ইংরেজী গ্রামারের উদাহরণ টেনে আনছেন ঐগুলাকি কারো জন্য জীবন বিধান যে অনুবাদ বা ভাবানুবাদে অনেক অর্থ হলে সমস্যা হবে।ভাই ভন্ডামির তো একটা লিমিট থাকা উচিত। (U)
ভাই িহন্দু,খ্রিস্টান বা অন্য ধরম িনএ কিছু েলখেবন না ?? বানান ভুলের জন্য দুঃিখত!
Interpretation of 2-223 (Al Quran)
Shabbir Ahmed
2-223. Remember, that women in the society are the guardians of your future generations, just as a garden keeps the seeds and turns them into flowering plants. So, whenever you meet with women socially, treat them with respect, keeping the aforementioned principle in mind. This conduct will go a along way to insure the betterment of the future generations. Send forth good today for tomorrow. Be mindful of Allah’s Laws and know that you will, one day face Him. O Messenger! Give good news to the believers.
(খসড়া অনুবাদ)
মনে রেখ, সমাজে নারীরা তোমার ভবিষ্যত প্রজন্মের অভিভাবক, যেমন একটি শস্যক্ষেত্র বীজ কে গাছে রূপান্তর করে. অতএব, তোমরা যখনি তাদের সাথে মিলিত হবে, এ কথা মনে রেখে তাদের সাথে সম্মানের সাথে ব্যবহার করবে. এই ব্যবহার তোমাদের ভবিষ্যত প্রজম্মের ভালোর জন্য. ভবিষ্যত -এর ভালোর জন্য বর্তমানে ভালো কিছু করা. আল্লাহর আইন মনে রেখো এবং জেনে রেখো যে, একদিন তোমরা তার সামনে উপস্থিত হবে. হে রাসুল, বিশ্বাসীদেরকে সুসংবাদ দাও.
হাদিস টি নিয়ে আমার মনেও প্রশ্ন জাগছে…
ধন্যবাদ এই হাদিসটি উল্লেখ করার জন্য… দেখা যাক, কাহিনী কি…
@ফয়সল,
ভাইজান আপনি কেন কোরানের আক্ষরিক অনুবাদ ব্যবহার না করে ভাবানুবাদ ব্যবহা করতে চান সেটা বোঝা যায়। কিন্তু তা হলে সমস্যা তো আরও বাড়ে বৈ কমে না। কারন তখন কোরানের বানীর একরকম অর্থ হলে অন্যের কাছে সেরকম মনে নাও হতে পারে। তাহলে আদর্শ অনুবাদ কোনটা হবে ? আপনি কোন একটাকে আদর্শ মনে করলে সেটাকেই অন্যরা আদর্শ মনে করবে তার কোন কারন নেই আর ফলে কোরানের প্রকৃত অর্থ বের করা আরও কঠিন হয়ে পড়বে, মানুষ আরও বেশী বিভক্ত হয়ে যাবে, তাই নয় কি ? আপনি সাব্বির আহমদের অনুবাদ ব্যবহার করতে চান কারন, উনি সাম্প্রতিক কালের মানুষ, উনি জানেন কোরানের কোন বিষয় নিয়ে সমস্যা হচ্ছে তাই তিনি সেসবকে পরিহার করে সবার কাছে গ্রহণযোগ্য অনুবাদ উপহার দিতে চান। সেটা তার কাছে গ্রহণযোগ্য হতে পারে, কারন সেটা তার একান্তই নিজস্ব ভাবার্থ বা বক্তব্য , কিন্তু অন্যদের কাছেও গ্রহণযোগ্য হবে এটা ভাবাটা ঠিক নয়। তার চাইতেও বড় সমস্যা হচ্ছে- বর্তমানে যারা অমুসলিম কোরান নিয়ে গবেষণা করেন তাদের অনেকেরই মাতৃভাষা আরবী ও আরবী ভাষায় সুপন্ডিত, ( উদাহরণ- স্যাম শ্যামুন, আপনি এদের সাথে ইসলামী পন্ডিতদের বিতর্ক দেখতে চাইলে চলে যান- http://www.abnsat.com, সেসব বিতর্ক দেখলেই টের পাবেন ওদের কাছে ইসলামী পন্ডিতরা কতটা নাস্তানাবুদ হচ্ছে) সুতরাং তাদের কাছে সাব্বির আহমদের এসব অনুবাদ চলবে না। তারপরেও সাব্বির আহমেদের চাইতে আরও বেশী আরবী জানা বিখ্যাত ইসলামী পন্ডিতদের অনুবাদ দেখুন নিচে-
2:223 Your women are a tilth for you (to cultivate) so go to your tilth as ye will, and send (good deeds) before you for your souls, and fear Allah, and know that ye will (one day) meet Him. Give glad tidings to believers, (O Muhammad). Pickthal
2:223 Your wives are as a tilth unto you; so approach your tilth when or how ye will; but do some good act for your souls beforehand; and fear Allah. And know that ye are to meet Him (in the Hereafter), and give (these) good tidings to those who believe. Yusuf Ali
2:223 Your wives are a tilth for you, so go into your tilth when you like, and do good beforehand for yourselves, and be careful (of your duty) to Allah, and know that you will meet Him, and give good news to the believers. Shakir
2:223 Your wives are a tilth for you, so go to your tilth, when or how you will, and send (good deeds, or ask Allah to bestow upon you pious offspring) for your ownselves beforehand. And fear Allah, and know that you are to meet Him (in the Hereafter), and give good tidings to the believers (O Muhammad صلى الله عليه وسلم) Mohshin Khan
দেখুন এদের সাথে সাব্বির আহমেদের আকাশ পাতাল তফাত। এতে করে কোরানের সমস্যা বাড়ছে বৈ কমছে না তো। আমরা তো এদের অনুবাদ নিয়ে কথা বলি।
@ভবঘুরে, দুঃখিত ভাই দেরি করে উত্তর দেওয়ার জন্য….
১. বর্তমানে translation বলতে গেলে কোথায়ও হয়না, হয় interpretation. এটা বর্তমানে স্বীকৃত যে, translationএর থেকে interpretation অনেক শক্তিশালী – কারণ শব্দের অর্থই শুধু গুরুত্বপূর্ণ নয়, ব্যবহারও অনেক গুরুত্বপূর্ণ ….. পূর্বে আমরা এতটা জানতাম না… কিন্তু আমরা যখন আন্তর্জাতিকভাবে অনেক বেশি সামাজিক, তখন এটা ধরা পরছে, শুধু অনুবাদ অনেক দুর্বল এবং আসল তথ্য সরবরাহ করতে অতটা সক্ষম নয়.. ভাবানুবাদ বা interpretation মানে ব্যাখ্যা নয় যে, আপনি এর অনেক রকম অর্থ করতে পারবেন… উদাহরণ দেই, বলতে পারেন “hello” -এর বাংলা অর্থ কি? আসলে এর কোনো বাংলা অর্থ নেই.. তবে ইংরেজি ভাষাভাষীরা যে সকল ক্ষেত্রে hello ব্যবহার করে, আমরা সেসকল ক্ষেত্রে হয় সালাম দেই বা বলি “কেমন আছেন”, “কি খবর”, ইত্যাদি…. দেখুন এদের অর্থ এক নয় কিন্তু এরা একই ভাব প্রকাশ করে আর তাই এরা এক্ষেত্রে একই… এমন উদাহরণ-এর কোনো শেষ নেই.. এতে interpreter কিন্তু সম্পূর্ণ স্বাধীন নয় নিজের মতো করে বলার মতো…. তবে তার কাছে নির্দিষ্ট কতগুলো পছন্দ আছে … আর তাকে এর মধ্যে থেকে গ্রহনযোগ্যতর একটি বেছে নিতে হবে context-এর উপর ভিত্তি করে…. তাই, আপনার ধারণা সঠিক নয় এবং কুরআন শরীফের অর্থ এতে বিভক্ত হবে না বরং আরো গ্রহণযোগ্য হবে….
২. শাব্বির আহমেদের interpretation-এ কুরাইশ আরবি আর কুরআন শরীফেরই অন্য আয়াতের reference ছাড়া আর কোনো reference অথবা footnote ব্যবহার করা হয়নি…. কিন্তু আপনার উল্লেখিত সকল অনুবাদকই footnote অথবা bracketed text ব্যবহার করেছে … তাদের আরবীও কুরাইশ নয়, যেটা মুহাম্মাদের মুখের ভাষা এবং কুরআন শরীফেই উল্লেখিত আছে যে এটি মুহাম্মাদের মুখের ভাষায় অবতীর্ণ হয়েছে….
৩. আমি বলছিনা আপনার উল্লেখিত অনুবাদকদের সবকিছুই ভুল, কিন্তু তাদের অনুবাদে মৌলিক কিছু সমস্যা আছে যেটাই আসলে গুরুত্বপূর্ণ …. তারা সবাই গুরুত্বপূর্ণ কিন্তু তারা সর্বদা সঠিক হবে এর কোনো কারণ নেই… শাব্বির আহমেদ-এর interpretation যে ১০০ভাগ সঠিক, আমি এটা কখনই বলিনা… বলি, এটা অন্য অনেকের চেয়ে অনেক বেশি গ্রহণযোগ্য…. সেটা তার interpretation-এর কারণেই নয়, তার interpretation-এর ভিত্তি বা foundation-এর কারণে… …আমি এখনো পর্যন্ত logically তার থেকে বেশি গ্রহণযোগ্য আর কোনো অনুবাদক পাইনি…… মনে রাখবেন, মিশরে আরবি ভাষা আছে, কিন্তু সে আরবি আর আরবের আরবি কিন্তু সব ক্ষেত্রে একই নয়….. একটি খারাপ উদাহরণ দিই, আমাদের দেশে কোথাও কোথাও “সোনা” বলতে পুরুষাঙ্গ বোঝানো হয়, কোথাও নিকট কাউকে আদর করে যেমন স্ত্রী, বান্ধবী-কে “সোনা” ডাকা হয়, আর সাধারনভাবে এটা হলো মূল্যবান পদার্থ … কেউ যদি উপন্যাসে লেখে “সোনা, তুমি কি আমাকে সত্যিই বিয়ে করবে?”, আর যদি কেউ ইংরেজিতে অনুবাদ করে এভাবে “Dick, will you really marry me?” অথবা “Gold, will you really marry me?” -সেটা কেমন হবে বলেন তো? একজন interpreter এটা এভাবে অনুবাদ করবে “will you really marry me darling?” অথবা “honey, will you marry me please?”, ইত্যাদি….. -এটা কি অধিক গ্রহণযোগ্য নয়?
৪. বিজ্ঞান হলো বিশেষ ভাবে চর্চিত জ্ঞান, যেখানে পুরনো একজন বিজ্ঞানী বিখ্যাত হলেই তার সমস্ত কথা সকলক্ষেত্রে গ্রহণযোগ্য হবে এমনটা নয়…. negative মানসিকতার হলে আমরা কখনই ভাল কিছু সহজে পাবো না…….. নিউটনের তত্ত্ব সীমিত হয়ে পড়ল যখন আইনস্টাইনের তত্ত্ব প্রকাশ হলো… কিন্তু তার মানে এই নয় নিউটনের তত্ত্ব ভুল আর নিউটন ভুয়া বিজ্ঞানী .. এটাও নয় যে, প্রকৃতি নিয়ে নিউটনের তত্ত্ব সীমিত হয়ে পড়ল বলে প্রকৃতির কোনো নিয়ম নেই…. আবার এটাও ঠিক যে নিউটনের তত্ত্ব নিয়ে চর্চা করার প্রয়োজন নেই কেননা আমাদের কাছে আছে আইনস্টাইনের তত্ত্ব যেটা প্রকৃতিকে আরো ভালোভাবে প্রকাশ করে.. একই ভাবে শাব্বির আহমেদ-এর ভাবানুবাদ আমাদের কাছে বেশি গ্রহণযোগ্য …
৫. তার্কিকেরা তর্কের খাতিরে তর্ক করে, তাতে আমার আপনার কি লাভ… কে কাকে নাস্তানুবাদ করলো, তাতে কার কি যায় আসে…. আপনি যদি কুরআন অনুসরণ করে উপকৃত না হন, এটা অনুসরণ করেন না… আর যদি মনে করেন, আসলে আপনি এটা অনুসরণ করতে চেয়েছিলেন কিন্তু অনুবাদ পড়ে হতাশ হয়েছেন এবং এটাকে অনুসরণযোগ্য মনে করছেননা, তাহলে আমি আপনাকে suggestion দিতে পারি… শাব্বির আহমেদ এর অনুবাদ পড়েন … হয়তো নিজেকে অতটা হতাশ মনে হবে না……….
ভাল থাকবেন..
@ফয়সল,
ভাইজান, আবারও বলতে হচ্ছে- কোরানের বানী যদি প্রকৃত পক্ষে আরবী ভাষীরাই একমাত্র বুঝতে পারে তাহলে ইসলাম শুধুমাত্র আরবদের জন্য। আমাদের জন্য নয়। আমরা যখনই আরবী কোরান বুঝতে যাব, তখন তার নানা রকম অর্থ করব আর এর ফলে আমরা বিপথগামী হয়ে যাব। এ ছাড়াও কোরানের বানীর যে আরবী ভাষা দেখা যাবে তার অনেক শব্দের অর্থই বর্তমানে ভিন্ন। ফলে কোরানের বিভিন্ন আয়াতের যে প্রকৃত অর্থ সেই ১৪০০ বছর আগে ছিল , বর্তমানে তার ভিন্ন অর্থ হবে। মোহাম্মদ বা তার অনুসারীদের উচিত ছিল তার কোরানের প্রকৃত অর্থ কি হবে তা বিশ্লেষণ করে কিছু কিতাব প্রণয়ন করে যাওয়া , কিন্তু দু:খজনকভাবে তিনি তা করে যান নি। তার মৃত্যুর পরে ২০০ বছরের পর কিছু মানুষ সেটা করার চেষ্টা করেছে আর এর মধ্যেই অনেক শব্দের অর্থ পরিবর্তিত হয়ে গেছে। সুতরাং তাদের অর্থও গ্রহণযোগ্য নয়। এর সোজা অর্থ ইসলাম প্রকৃত পক্ষে মোহাম্মদের সময়কার জন্যেই শুধু প্রযোজ্য ছিল, আজকের যুগের জন্য নয়। সাব্বির আহমদ যতই কুরাইশ ভাষা বুঝে কোরানের অর্থ করার চেষ্টা করুক না কেন, সে কি ১৪০০ বছর অতীতে ফিরে গিয়ে তার অর্থ করছে? তা নিশ্চয়ই করছে না, তাহলে তার অনুবাদ সঠিক হবে কেমনে ? বরং সে যেটা করছে-কোরানের যে সব বিষয় নিয়ে বর্তমানে ব্যপক তর্ক বিতর্ক হচ্ছে তা নিজের মত করে আধুনিক যুগের উপযোগী করে অনুবাদ বা তফসির করছে। তা কেন আমরা গ্রহণ করব ? এটা তো মোহাম্মদের আমলকার কোরানের অর্থ নয়।
যাহোক, যে আয়াত নিয়ে আপনার সাথে তর্ক বিতর্ক হচ্ছিল সাব্বির আহমদ তার নিজের মনের মাধুরী মিশিয়ে অনুবাদ করেছে। তার অনুবাদ যে কতটা বিকৃত তা দেখুন কোরানের সবচাইতে বিখ্যাত তাফসিরকার ইবনে কাথিরের তাফসিরে-ইবনে কাথিরের তাফসির
উক্ত আয়াতটি হলো- Your wives are a tilth for you, so go to your tilth, when or how you will,
আর এর অর্থ হলো ইবনে কাথিরের মতে- (…so go to your tilth, when or how you will,) meaning, wherever you wish from the front or from behind, as long as sex takes place in one valve (the female sexual organ), as the authentic Hadiths have indicated.
উক্ত আয়াত নাজিলই হয়েছিল- একজন পুরুষ কিভাবে একজন নারীর সাথে কি পদ্ধতিতে সেক্স করবে তার প্রত্যুত্তরে আল্লাহর আয়াত। আর সেটার ব্যখ্যা কত সুন্দর ভাবে ইবনে কাথির দিয়েছে। অথচ আপনার সাব্বির আহমদ এর আসল অর্থ থেকে তার সম্পূর্ন নিজস্ব ধারণা এখানে উল্লেখ করে তাকেই কোরানের বানী বলে চালাচ্ছে। আল্লাহর বিধাণ মতে- কোরানের বানীর এ ধরণের বিকৃতির অভিযোগে তাকে নিশ্চিত দোজখের আগুনে পুড়তে হবে অনন্ত কাল। এসব নব্য ইসলামী পন্ডিতরা এতটাই বেপরোয়া যে তারা আল্লাহর বিধাণকেও পাল্টে দিতে বদ্ধ পরিকর যে কোন মুহুর্তে।
@ভবঘুরে,
“ভাইজান, আবারও বলতে হচ্ছে- কোরানের বানী যদি প্রকৃত পক্ষে আরবী ভাষীরাই একমাত্র বুঝতে পারে তাহলে ইসলাম শুধুমাত্র আরবদের জন্য। আমাদের জন্য নয়।”
– কুরআন শরিফ মুহাম্মাদের মুখের ভাষায় অবতীর্ণ হওয়ার পক্ষে এটাই যথেষ্ট কারণ যে, উনি প্রথম ব্যক্তি যার কুরআন শরিফ সম্পূর্ণ স্পষ্ট ভাবে বুঝা সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ… যারা অন্য ভাষাভাষী তারা ওই নির্দিষ্ট ভাষা শিখবে এবং তারই আলোকে কুরআনকে অনুবাদ বা ভাবানুবাদ করবে… যেমন, নিউটন ইংরেজিতে তার তত্ত্ব দিয়েছে, তার মানে এই নয় যে, ওটা আমাদের জন্য নয়… আমরা সেটা অনুবাদ/ভাবানুবাদ করে সেটা বুঝবো এবং কাজ করবো…
“আমরা যখনই আরবী কোরান বুঝতে যাব, তখন তার নানা রকম অর্থ করব আর এর ফলে আমরা বিপথগামী হয়ে যাব। ”
– ঠিক বলেছেন… আপনি দুঃখজনকভাবে ইতিমধ্যেই বিপথগামী হয়ে গেছেন (আমার মনে হয়) কিছু সীমিত/ভ্রান্ত অর্থ বহনকারী অনুবাদ পড়ে … আমি উত্তম কিছু দেওয়ার চেষ্টা করছি যেটা আপনাকে সঠিকপথে আনলেও আনতে পারে…
” এ ছাড়াও কোরানের বানীর যে আরবী ভাষা দেখা যাবে তার অনেক শব্দের অর্থই বর্তমানে ভিন্ন। ফলে কোরানের বিভিন্ন আয়াতের যে প্রকৃত অর্থ সেই ১৪০০ বছর আগে ছিল , বর্তমানে তার ভিন্ন অর্থ হবে।”
এজন্য আরো গবেষনার প্রয়োজন… শাব্বির আহমেদ সেটা শুরু করেছেন… আমি খুশি হতাম আমি নিজে যদি একাজে আরো সময় দিতে পারতাম… যাহোক, শাব্বির আহমেদের কাজ অন্তত অন্য অনুবাদকের কাজের চেয়ে অধিক গ্রহণযোগ্য… আরো ভালো কাজ আসার আগে আমাদের এটা নিয়েই চলতে হবে…
” মোহাম্মদ বা তার অনুসারীদের উচিত ছিল তার কোরানের প্রকৃত অর্থ কি হবে তা বিশ্লেষণ করে কিছু কিতাব প্রণয়ন করে যাওয়া , কিন্তু দু:খজনকভাবে তিনি তা করে যান নি।”
তার অতটা প্রয়োজন নেই আর তা সম্ভবও নয়… আপনি নিশ্চয় বলতে চান না মুহাম্মাদের জীবদ্দশায় উনি পৃথিবীর সবগুলো ভাষা পরিপূর্ণ ভাবে শিখে কুরআন অনুবাদ করে বা অনুদিত কুরআন কে approved করে যাবেন…. … আর এর প্রয়োজন নেই, কেননা, কুরআন-এই আল্লাহ বলেছেন, কুরআনকে স্বয়ংসম্পূর্ণ করে নাজিল করা হয়েছে… তার অর্থ হলো, সম্পূর্ণ কুরআনে কোনো সন্দেহ করার মতো ব্যাপার নেই … তাই শাব্বির আহমেদ -এর কাজে কুরআন শরীফের একটি আয়াতের অর্থ বিভিন্ন রকম/সন্দেহযুক্ত হলে উনি অন্যান্য আয়াতের reference নিয়ে সেটাকে সন্দেহাতীত ভাবে interpret করার চেষ্টা করেছেন…
” সাব্বির আহমদ যতই কুরাইশ ভাষা বুঝে কোরানের অর্থ করার চেষ্টা করুক না কেন, সে কি ১৪০০ বছর অতীতে ফিরে গিয়ে তার অর্থ করছে? তা নিশ্চয়ই করছে না, তাহলে তার অনুবাদ সঠিক হবে কেমনে ? বরং সে যেটা করছে-কোরানের যে সব বিষয় নিয়ে বর্তমানে ব্যপক তর্ক বিতর্ক হচ্ছে তা নিজের মত করে আধুনিক যুগের উপযোগী করে অনুবাদ বা তফসির করছে। তা কেন আমরা গ্রহণ করব ? এটা তো মোহাম্মদের আমলকার কোরানের অর্থ নয়।”
– আগেই বলেছি … আমরা তার অনুবাদ/ভাবানুবাদ গ্রহণ করবো, কেননা তার কাজের ভিত্তি অন্যদের (অন্তত পূর্বের খ্যাতনামা অনুবাদকদের) থেকে অনেক বেশি গ্রহণযোগ্য …. অন্যরা ১. কুরাইশ আরবিকে কুরআন শরীফের ভাষা গুরুত্ব দেয়নি, ২. ভাবানুবাদ না করে অনুবাদ করেছে (আমি উদাহরণ আগেই দিয়েছি কেন ভাবানুবাদ অনুবাদ-এর থেকে বেশি গ্রহণযোগ্য) এবং ৩. কুরআন -এর অন্য আয়াত উপেক্ষা করে হাদিসকে অথবা পাদটিকা হিসেবে ব্যবহার করেছে….. তাই কুরআন শরীফের ভাষ্যমতে ওই অনুবাদগুলো অনেক দুর্বল হয়ে পড়ে…
এটি পড়ুন –
http://al-quran.info/?x=y#&&sura=2&aya=222&trans=en-shabbir_ahmed&show=both,quran-uthmani&ver=2.00
এটিতে আপত্তি থাকলে এটা নিয়ে কথা বলতে পারি… বিখ্যাত ধর্মবিদের কোনো অভাব নেই … কিন্তু তার মানে এই নয় যে তারা যা বলবেন তাইই আমাদের মেনে নিতে হবে… আরবি ভাষা শিখে অনুবাদ করা কঠিন কাজ নয় … কিন্তু সঠিক অনুবাদ করা কঠিন … প্রত্যেকের কাজের একটা গ্রহণযোগ্য ভিত্তি থাকা প্রয়োজন… বলতে পারেন, ইবনে কাথির-এর তাফসির আমরা কেন গ্রহণ করবো? সুস্পস্ট-ভাবে কারণ বলবেন… আপনি যে অনুবাদকদের reference দিয়েছেন, তাদের অনুবাদের ভিত্তিগুলোও আমাকে বলতে পারেন যে কেন আপনি তাদের অনুবাদ অনুসরণ করছেন…
শেষ কথা:
আপনি কুরানের যে আয়াতগুলোকে গ্রহণ করতে পারছেন না, সেগুলোকে পারছেননা অনুবাদের কারণে … (কারণ আপনি আসল আরবি পড়ে বুঝতে পারেন না) … আবার আপনি বলছেন এই আয়াত্গুলির এই অনুবাদই আপনি গ্রহণ করছেন (সম্ভবত তর্কের খাতিরে)…. কিন্তু এটা কি contradiction হয়ে গেল না….
অথচ, আমার ক্ষেত্রে এটা বলতে পারি –
“there exists some interpretation for which Quran seems to be acceptable for life”
In mathematically, Let
‘x’ denotes meaning
‘A’ denotes the Quran.
If A(x) is TRUE, that denotes meaning of Quran is acceptable.
If A(x) is FALSE, that denotes meaning of Quran is not acceptable.
then, we have,
exists x. A(x) (এটাই আমাদের জন্য যথেষ্ট)
although, not (forall x. A(x))
আসলে, forall x. A(x) কে আশা করাই উচিত না কারণ আমি আগের উত্তরেই ব্যাখ্যা করেছি (কিভাবে অনুবাদ অনেক সময় সম্পূর্ণ মূল অর্থ প্রকাশ করতে ব্যর্থ হয়)
@ফয়সল,
নিউটনের তত্ত্বের অনুবাদই হয়, ভাবানুবাদ হয় কি করে? নিউটনের তত্ত্বতো পৃথিবীর একেক প্রান্তে যেয়ে মানূষের সুবিধামতো পরিবর্তন হয়ে যায়না তা তত্ত্বটি যে ভাষায় প্রকাশিত হউক না কেন। কোরানের অনেক বর্ননা অস্পষ্ট, তাই ভাবানুবাদের প্রয়োজন হয়ে পরে। আর সমস্যাটা হচ্ছে ইস্লামিষ্টরা যে যার ইচ্ছামতো নিজেদের মনগড়া ভাবানুবাদ করেই যাচ্ছেন। আসল কথা হলো কোরানে এত অসামঞ্জস্যপুর্ন কথা-বার্তা নিহিত আছে যে কোরানের বানীগুলোর মধ্যে শুদ্ধতা ও সামঞ্জস্যতা আনার জন্য অপ্রস্তুত ইস্লামিষ্টদের এইসব মনগড়া ভাবানুবাদের কাজটি হাতে নিতে হয়েছে, তা না হলে যে ইসলামকে রক্ষা করা যাচ্ছেনা।
এখন ইস্লামী পন্ডিতগনের এই একশ রকমের ভাবানুবাদগুলিও মুসলমানগন নিজেদের ইচ্ছামতো, যার যেটা পছন্দ, যার চিন্তা-ভাবনার সাথে যে অনুবাদ বা ভাবানুবাদ গ্রহনযোগ্যতা পায় বা খাপ খায় সেটাকে সঠিক বলে মনে করছেন। আর এখানেই হচ্ছে সমস্যা। চিন্তা করে দেখুন কোরান যদি আল্লাহ প্রেরিত বা গায়েবী কোন সার্বজনীন গ্রন্থ হতো তা হলে এই একশ রকমের ভাবানুবাদগুলির অস্তিত্বই পৃথিবীতে থাকার কথা নয়। আর সেটাই প্রমান করে কোরান মানুষ রচিত একটি গ্রন্থ যার মধ্যে অসামঞ্জস্যপুর্নতা বা অস্পষ্টতা থাকাটাই স্বাভাবিক যার উপর ভিত্তি করে এই সব তর্ক-বিতর্কের অবতারনা করাই যায়!
@ব্রাইট স্মাইল্,
“নিউটনের তত্ত্বের অনুবাদই হয়, ভাবানুবাদ হয় কি করে? নিউটনের তত্ত্বতো পৃথিবীর একেক প্রান্তে যেয়ে মানূষের সুবিধামতো পরিবর্তন হয়ে যায়না তা তত্ত্বটি যে ভাষায় প্রকাশিত হউক না কেন।”
– আমার লেখায় নিউটনের তত্তের উদাহরণ দিয়ে বলা হয়েছে, কোনো কিছু একটি ভাষায় প্রকাশ করা মানে এই নয় যে, সেটা অন্য ভাষাভাষীদের জন্য নয় …… এখানে অনুবাদ আর ভাবানুবাদ নিয়ে কিছু বলার নাই কেননা তত্তগুলি মাত্র তিনটি mathematical statement-এ প্রকাশিত… গণিতের ভাষা অবশ্যই অনেক স্পষ্ট (তবে মানবিক, সামাজিক, ইত্যাদি বিষয় প্রকাশে যথেষ্ট expressive নয়)
“কোরানের অনেক বর্ননা অস্পষ্ট, তাই ভাবানুবাদের প্রয়োজন হয়ে পরে। আর সমস্যাটা হচ্ছে ইস্লামিষ্টরা যে যার ইচ্ছামতো নিজেদের মনগড়া ভাবানুবাদ করেই যাচ্ছেন। আসল কথা হলো কোরানে এত অসামঞ্জস্যপুর্ন কথা-বার্তা নিহিত আছে যে কোরানের বানীগুলোর মধ্যে শুদ্ধতা ও সামঞ্জস্যতা আনার জন্য অপ্রস্তুত ইস্লামিষ্টদের এইসব মনগড়া ভাবানুবাদের কাজটি হাতে নিতে হয়েছে, তা না হলে যে ইসলামকে রক্ষা করা যাচ্ছেনা।”
প্রকৃতি কি অসামঞ্জস্যপূর্ণ? তা হলে কেন বিভিন্ন বিজ্ঞানী বিভিন্ন রকম তত্ত্ব দেন? – আসল কথা হলো, মনগড়া ব্যাখ্যা দিলেই আমরা তা গ্রহণ করবো কেন? তবে কারোর ব্যাখ্যা যদি সুস্পষ্ট ভিত্তির উপর স্থাপিত হয়ে থাকে (আমার মতে) এবং আপনি যদি logically সেই ভিত্তিকে অযৌক্তিক দেখাতে না পারেন, তাহলে আমি কিভাবে আপনার সাধারণ (general) কিছু সমালোচনা গ্রহণ করবো? সবাইকে এক কাতারে ফেলে খামোকা তর্ক করে কি লাভ?
আগে আমার দেওয়া লিঙ্ক-এ যান, ওটা পড়ুন, তারপর আমাকে বলুন ওই interpretation কে আপনি কেন গ্রহণ করতে চান না… ..সবাইকে এক কাতারে ফেলতে যেয়েন না… তাহলে নিজেও ওই একই কাতারে পড়ে যাবেন (formal logic -অনুযায়ী) 😉
” চিন্তা করে দেখুন কোরান যদি আল্লাহ প্রেরিত বা গায়েবী কোন সার্বজনীন গ্রন্থ হতো তা হলে এই একশ রকমের ভাবানুবাদগুলির অস্তিত্বই পৃথিবীতে থাকার কথা নয়।”
– ঠিক বলেছেন… আমারও তাই মনে হচ্ছে… তাই আমি শাব্বির আহমেদের ভাবানুবাদ গ্রহণ করেছি (কারণ আমি আগেই অনেকবার বলেছি) এবং বাদবাকিদের-কে (যে সমস্ত আয়াত শাব্বির আহমেদের ভাবানুবাদের সাথে মিলে না) বর্জন করেছি …. এভাবে আমার দৃষ্টিতে কুরআন শরীফের ভাবানুবাদ একটিই …
… কুরআনের অর্থ বিভিন্ন রকম হবে না এটা ঠিক… তবে আমাদের কুরআন বুঝা সময়ের সাথে সাথে আরো matured হতেই পারে … তাতে তো কোনো দোষ নাই… … আমার মতে কুরআন পূজা করার কোনো গ্রন্থ নয়, বরং আমাদের জীবনের জন্য সরল পথ-প্রদর্শক (এমনটাই দাবি স্বয়ং কুরআনেই)… তাই কুরআন বুঝা বেশি গুরুত্বপূর্ণ যেনো তা আমাদের জীবনকে সরল ভাবে পথ দেখাতে পারে…
ধন্যবাদ আমার লেখা পড়ার জন্য…
@ফয়সল,
আপনি শাব্বির আহমেদের ভাবানুবাদ গ্রহণ করেছেন কারন আপনি কোরানকে যেভাবে দেখতে পছন্দ করেন শাব্বির আহমেদের ভাবানুবাদটা সেই মোতাবেক হয়েছে, আর বাকীদের ভাবানুবাদে এমন কিছু অমানবিক, বিভ্রান্তিমুলক, হাস্যকর তথ্য দেয়া আছে যা শত গোঁজামিল দিয়েও ঢেকে রাখার উপায় বের করা যাচ্ছেনা, তাই বাকিদের কায়দা করে বর্জন করে চলেছেন। এটা বুঝতে রকেট সাইন্সের দরকার হয়না। আপনার দৃষ্টিতে পৃথিবীতে কুরআন শরীফের ভাবানুবাদ একটিই সেটা হলো শাব্বির আহমেদের ভাবানুবাদ! বেশ, বেশ ভালো, ভালো! :clap
তা কোরান আমাদের জীবনের জন্য সরল পথ-প্রদর্শক, স্বয়ং কোরানের এই দাবিটি কি আরবী ভাষার অনুবাদ নাকি শাব্বির আহমেদের ভাবানুবাদ?
@ব্রাইট স্মাইল্,
২:২
Abdullah Yusuf Ali
2. This is the Book; in it is guidance sure, without doubt, to those who fear[8] God.
Shabbir Ahmed
2. Allah’s Guidance is right before you in the form of this noble Book, recorded by the most honorable scribes appointed by the Messenger (80:13-16). The Almighty Himself guarantees the Truth of this Revelation, its explanation and its preservation. And you will find it free of all contradiction ((4:82), (10:37), (15:9), (29:49), (32:2), (52:2-3), (75:17-19)). Therefore, there is absolutely no question or any doubt about the authority and authenticity of this Glorious Scripture. And, you will soon notice as you proceed, that this Book leaves no lingering doubts in a seeking mind. If you remember that this is a Book of guidance, and hence, treat it as such, the hard fact will dawn upon you that this is The Path-finding Guide for all those who wish to journey through life in blissful honor and security.
এখানে দুইজনের অনুবাদ / ভাবানুবাদ দিলাম…
১. এটা স্পষ্ট, কুরআনের ভাষ্যমতে, এটা পথ প্রদর্শক…
২. আরো, কুরআনের ভাষ্যমতে, এটাতে কোনো সন্দেহ নেই…
‘সরল’ শব্দের দুরকম অর্থ জনপ্রিয় –
ক. সরল = সহজ : একটা জিনিস কতটুকু সহজ সেটা অনেক আপেক্ষিক, তাই এই অর্থ বলার কারণ কিছুটা কম… (যেমন, গণিতের বই মূলত খুবই সরল কিন্তু তা বুঝা অনেকের কাছে কঠিন)
খ. সরল = যাতে জটিলতা নাই: এখানে অর্থের দিক দিয়ে সন্দেহ মানে জটিলতা; উপরেল্লিখিত উভয়ের অনুবাদ/ভাবানুবাদ থেকে জানতে পারছি এটা সন্দেহমুক্ত আর তাই এটা সরল..
ভাই, পৃথিবীতে সব কিছু করারই নির্দিষ্ট কিছু নিয়ম আছে… আপনি নিয়মের বাইরে গিয়ে কিছু করবেন আর যখন ভুল বুঝবেন, তখন বলবেন, এটা কঠিন, জীবনের জন্য নয়, এটা যৌক্তিক নয়, মানবিক নয়, ইত্যাদি, তা হলে কিভাবে হবে…. …আচ্ছা এটা না হয় আপনার পুরোপুরি দোষ নয়, অনুবাদকও এর জন্য দায়ী… কিন্তু একটা ভাল অনুবাদ পেলে সেটা গ্রহণ করতে আপনাদের কেন এত কষ্ট?
…. ভিন্ন পথে এগুলে কিছু অন্ধ সমর্থক পাওয়া যায়… আমি মনে করছি না, আপনি সেই সমর্থক হারানোর ভয়তে এটা গ্রহণ করতে পারছেন না….
@ফয়সল,
অনুবাদ্গুলোতে তে দেখা যাচ্ছে কোরান নিজেই বলছে যে কোরান পথ প্রদর্শক। মানে কোরান যে রচনা করেছেন তিনি বলতে চাচ্ছে্ন যে “আমি কোরানে যা লিখেছি সেইগুলি হলো মানুষের জন্য পথ প্রদর্শক।” আপনি যদি এটাতে বিশ্বাস করেন তাহলে আপনাকে আগে দুনিয়ার তাবৎ মানুষের কাছে প্রমান করে দেখাতে হবে কোরানের বানীগুলি শুদ্ধ আর বাস্তবে এই পৃথিবীতে প্রয়োগ করা যথার্ত ও উপযুক্ত। এখন আপনি যদি আপনার একজন পছন্দের অনুবাদকের তাঁর মনগড়া “ভাবানুবাদ” দিয়ে সারা দুনিয়ার মানুষকে কনভিন্সড করাতে চান যে কোরানই হলো একমাত্র গ্রন্থ যার মধ্যে কোন ভুল-ভ্রান্তি নাই (কারন আপনার পছন্দের অনুবাদকের ভাবানুবাদে কোন ভুল ভ্রান্তি ধরা পরে নাই), কোরানের বানীই হলো মানুষের একমাত্র পথ প্রদর্শক, এখানে সন্দেহের কোন অবকাশ নাই, তাহলে এটাতে আপনি কতখানি কৃতকার্য্য হবেন ভেবে দেখুন!
আসল ব্যাপারটা হচ্ছে আপনি কোন অনুবাদ, ভাবানুবাদ পড়ার আগেই জন্ম থেকেই কোরানে বিশ্বাস স্থাপন করে আছেন, যেটাকে বলে অন্ধ বিশ্বাস। কিন্তু আপনি যখনই যুক্তি দিয়ে সেই অন্ধ বিশ্বাসকে প্রতিস্থাপন করতে চাচ্ছেন তখনই লাগছে কনফ্লিক্ট। এই কনফ্লিক্ট থেকে বের হবার জন্য আপনাকে কোরানের এমন কিছু অনুবাদ, ভাবানুবাদের শরনাপন্ন হতে হচ্ছে যা আপনার অন্ধ বিশ্বাসের সাথে সংঘর্ষ করেনা। সমস্যাটা হচ্ছে এখানে।
ভাই, এখানেও সেই একই কথা খাঁটে। আপনার কথিত নিয়মগুলো এই পৃথিবীতে আমার জন্য কে নির্দিষ্ট করে দিল তা বলবেন কি? আপনি ভুল বললেন, আমি কিছুই ভুল বুঝে বলিনি যে কোরান কঠিন, জীবনের জন্য নয় ইত্যাদি ইত্যাদি। যুক্তি দিয়ে কোরানের কথাগুলোকে অমানবিক, অযৌক্তিক, অসামঞ্জস্য, অসংলগ্ন মনে হয়েছে বলেই কোরান অনুযায়ী মানুষের জীবন চালানো অবাস্তব ও জীবনের চরতম ভুল হিসাবে গন্য করছি এবং এটা করাটাই স্বাভাবিক। আপনি কথাটা উলটো করে ব্যাখ্যা দিচ্ছেন।
হাঃ হাঃ আপনি হাসালেন ভাই! আপনি নিজে কি ব্লগে সমর্থন পাওয়া-হারানো ইত্যাদির ভয় করেন? ভয় পাবেন না আপনি যে পথে আছেন, খুব ভালো করেই জানেন অন্য অনেক ব্লগে আপনার সমর্থনের পরিমান কি জোরদার! বরং ভিন্ন পথের সমর্থনের পরিমান কম। সমর্থনের কথা চিন্তা করলে আপনারতো স্বাধীনতা আছেই ব্লগে ব্লগে ঘোরাঘুরি করার। অসুবিধা কোথায়? আমার ক্ষেত্রে এইসব সমর্থন পাওয়া-হারানোর মধ্যে কোন লাভ-লোকসান কাজ করেনা, কারো ক্ষেত্রে হয়তো করে! কিন্তু আমি সে দলে নই। 🙂
@ব্রাইট স্মাইল্,
বিশ্বাস কখনো প্রমানের বিষয় নয়… আপনি কখনই প্রমান করতে পারবেন না আপনি একজন নির্বোধ নন. কিন্তু আপনি সেটা বিশ্বাস করেন .. আর তা যদি না করেন, তাহলে আপনার সাথে তর্ক করা অর্থহীন…
যিনি guidebook লিখেন, তিনিই তো বলবেন যে এটা guide/manual. উদাহরণ দেই, আপনি একটি টেলিভিশন কিনলেন. তার সাথে একটি operating manual পেলেন. আপনি চেষ্টা করতে পারেন এটা প্রমান করতে যে আসলেই ওই manual এর সকল নির্দেশনা যৌক্তিক কিনা… কিন্তু আপনি কি তা করেন? নাকি আপনি maker কে বিশ্বাস করেন এবং ঠিক সেই অনুযায়ী operate করেন? … কারণ আপনি জানেন এটাই সবচেয়ে নিরাপদ.. যে এটা তৈরী করেছে সেই সবচেয়ে ভাল জানবে কিভাবে এটা চালানো নিরাপদ.. আমি-আপনি নই….
আমার assumption এই যে, মানুষ কে কেউ একজন সৃষ্টি করেছে… অতএব, এটাই যৌক্তিক যে, সৃষ্টিকর্তাই জানবেন ভাল আমাদের কিভাবে চলা উচিত…
আমরা অনেক সময় manual তাড়াহুড়া করে পড়তে যেয়ে ভালোভাবে না বুঝে ভুল ভাবে operate করে ফেলি… এটা খুবই সাধারণ… যখন দেখি, কাজ হচ্ছে না, তখন manual আরেকবার ভালোভাবে চোখ বুলাই… আর যদি এটা ভিন্ন ভাষার হয় তাহলে তো কথাই নেই…
এই ব্যাপারটাই ঘটছে কুরআনের ক্ষেত্রে…..
আরেকটি ব্যাপার, একজন ছাত্র কখনই verify করতে পারে না শিক্ষকের দেওয়া guideline সঠিক কিনা… যদি করতে পারতো, তাহলে সে নিজেই শিক্ষক হওয়ার যোগ্যতা রাখে…
আপনি যদি এটা মনে করেন, মানুষের পক্ষে কুরআন-কে verify করা প্রয়োজন এবং সম্ভব, তাহলে আমি বলবো, সেটা প্রথমত প্রয়োজন নয়, আর তা সম্ভবও নয় … যেটা প্রয়োজন সেটা হলো এটাকে সঠিকভাবে বুঝা(‘র চেষ্টা করা) এবং আমাদের বোধগম্যতার মধ্যে কোনো কিছু কে সন্দেহজনক, জীবনের জন্য ক্ষতিকর এবং contradictory মনে হলে বোঝাটাকে justify করা…
১. আমি যথেষ্ট ব্যাখ্যা আগে দিয়েছি যে এই ভাবানুবাদ ‘মনগড়া’ নয়…
২. আমি কাউকে জোর করছি না… আমি আপনাকে একটি choice দিয়েছি.. আপনি গ্রহণ করলে বা না করলে আমার কি?
৩. আমি শুধু এতটুকু করতে চাই – আমার সামনে কেউ কোনো কিছুকে ভুল বুঝলে, আমার সাধ্যমতো তাকে শোধরাতে চাই… না হলে আমি নিজেকে শোধরাতে চাই..
১. আপনি কি কুরআনের মূল ভাষা (কুরাইশ আরবি) জানেন? উত্তর দিন – হ্যা / না
২. উত্তর না হলে, আপনি মূল কুরআন পড়েননি, পড়েছেন তার অনুবাদ… সেক্ষেত্রে আপনার কথা কে শুধরে দেওয়া যায় এভাবে – যুক্তি দিয়ে কোরানের বেশিরভাগ অনুবাদগুলোর কিছু কথাকে অমানবিক, অযৌক্তিক, অসামঞ্জস্য, অসংলগ্ন মনে হয়েছে বলেই কোরান-এর প্রচলিত শিক্ষা অনুযায়ী মানুষের জীবন চালানো বেশ কিছু ক্ষেত্রে অবাস্তব ও জীবনের চরতম ভুল হিসাবে গন্য করছি এবং এটা করাটাই স্বাভাবিক। – এক্ষেত্রে আমি আপনার সাথে অনেকটাই একমত…
আমি এই ব্লগে শুধু এই প্রবন্ধেই যা একটু সময় দিতে পারি… অন্য কোনো ব্লগ -এ লিখি না… এত সময় পাওয়া যায় না… আমার এক বন্ধু এই লিঙ্ক দিলো.. দেখলাম, এই প্রবন্ধের লেখক -এর কিছু তথ্য জানা উচিত, যা আমাকে অনেক সাহায্য করেছে .. হয়তো তাকেও করতে পারে – তাই মন্তব্য প্রদান….
সমর্থন? 🙁 এই যুগে আমাদের দেশে নাস্তিকতা আর ধর্মে অন্ধভক্তদের সমর্থন বেশি … আমার জন্য ততটা নয়.. 🙂
@ফয়সল,
ভাই আপনার যুক্তিতে আপনি ধরা খেয়ে গেছেন, সেটা কি বুঝতে পারছেন?
নিউটনের তত্ত্ব যে ভাষাতেই অনুবাদ করা হোক না কেন, ইংরেজী না জানা মানুষরা কোনদিন অভিযোগ করে নি যে ইংরেজী না জানার কারনে তা বুঝতে অসুবিধা হচ্ছে। আর সে কারনেই সেটা সবার জন্য। কিন্তু কোরানের ব্যপরটা সম্পূর্ন ভিন্ন। আরবী না জানলে তা বোঝা যাচ্ছে না , তাও আবার জানতে হবে কুরাইশদের উচ্চারিত আঞ্চলিক আরবী ভাষা যার চল এখন আবার বর্তমানে নেই। তার মানে কোরানের প্রকৃত অর্থ বোঝার আশা সুদুর পরাহত। এই যদি হয় আল্লাহর নাজেলকৃত কোরানের অবস্থা তাহলে সে কেমনতরো আল্লাহ তা বুঝতে বেশী কষ্ট হয় না।
পরিশেষে, ইসলাম ছাড়া আর কোন ধর্মীয় কেতাব বোঝার জন্য অনুবাদই যথেষ্ট , কারন তাদের কিতাবের বক্তব্য পরিষ্কার, বুঝতে কারও কষ্ট হয় না। একমাত্র কোরানের ব্যপার ভিন্ন, কারন কোরানের বক্তব্য পরিস্কার নয়, বড় হেয়ালীপূর্ণ, আগোছালো,সামঞ্জস্যহীন ও স্ববিরোধীতায় ভরা। তাই কোরানের অনুবাদ পড়ে কোরানে বিবৃত প্রকৃত সত্যি কথাটাই জানা যায় যা আবার আপনাদের বিশ্বাসের পরিপন্থি। আর সেকারনেই আপনার কাছে ভাবার্থক অনুবাদ পছন্দ কারন তাহলে মনের মাধুরী ও গোজামিল দিয়ে বানিয়ে বানিয়ে তা করা যেতে পারে। কিন্তু ভাইজান, এভাবে আপনারা কোরানের বানীর অর্থ পরিবর্তন করাতে আপনারা যে আল্লার বিধাণ লংঘণ করছেন, সেটা কি একবারও ভেবেছেন ? আল্লাহর বিধাণ লংঘন করার শাস্তি কি আপনি ভুলে গেছেন?
@ভবঘুরে,
হা হা হা… আপনি বলতে চাচ্ছেন, ইংরেজি না জানলেও যে কেউ নিউটনের তত্ত্ব পড়তে ও বুঝতে পারবে? হাসলেন ভাই… আপনি হয়তো বাংলায় নিউটনের তত্ত্ব পড়েছেন… কিন্তু যিনি সেটা ইংরেজি থেকে অনুবাদ করেছেন তাকে অবশ্যই ভালভাবে ইংরেজি জানতে হয়েছে… আমার আগের reply টা পড়ুন… একই কথা বারবার লিখতে ইচ্ছা করছে না…
আপনাকে এটা কে বললো? … তবে গুরুত্বপূর্ণ যে সেগুলোতে ছন্দ ব্যবহার করে লেখা হয়নি … তাই সেটা পড়তে হয়তো একটু সহজ হতে পারে…. তবে আমি মনে করি সকল ধর্মগ্রন্থই (আসলে সকল ভিন্ন ভাষার বইই) ভাবানুবাদ হওয়া প্রয়োজন.. এখনকার বেশিরভাগ সচেতন মানুষই তাই মনে করেন…
এটা আপনি মনে করেন, আমি নই… আমার কাছে কুরআনের বক্তব্য (যতটুকু পড়েছি শাব্বির আহমেদের interpretation-এ) পরিস্কার, গোছানো, সামঞ্জস্যপূর্ণ এবং খুবই consistent. আমি আপনাকে আগেই উদাহরণ দিয়েছি, কিভাবে অনুবাদ ভিন্ন বক্তব্য প্রকাশ করে এবং ভাবানুবাদ উত্তম বক্তব্য প্রকাশ করে… আপনি না বুঝলে সেই পয়েন্টে কিছু বলুন…
মনে হচ্ছে বিতর্ক করার জন্য আপনি কিছু সংখ্যক সস্তা বক্তব্য শিখেছেন এবং প্রকৃত কারণ না দেখিয়ে আপনি একই কথা বারে বারে বলে যাচ্ছেন….
হাসলেন মোরে বহুদিন পরে … আপনি দেখছি কুরআন কে বিশ্বাস করেন না কিন্তু আল্লাহর শাস্তি বিশ্বাস করেন… 😀
ভাই, ধন্যবাদ আমাকে নিয়ে ভাবার জন্য…. আমিও কিন্তু আপনাকে নিয়ে একই ভাবি 🙂
আমার নিজের ব্যাপারে আমি অন্তত এ ব্যাপারে সচেতন….
@ফয়সল, তা ২:১ ও ৩৬:১ এর কোন অনুবাদ বা ভাবানুবাদ নাই কেন?শাব্বির ভাইও দেখি ফেইল মারছে। আপনি নিউটন, ইংরেজী গ্রামারের উদাহরণ টেনে আনছেন ঐগুলাকি কারো জন্য জীবন বিধান যে অনুবাদ বা ভাবানুবাদে অনেক অর্থ হলে সমস্যা হবে।আগে হত ট্রান্সলেশন এরপর হয় ট্রান্সলিটারেশন আর এখন আপনি নিয়ে আসছেন ইন্টারপ্রিটেশন।ভাই ভন্ডামির তো একটা লিমিট থাকা উচিত। :-O
@ডেথনাইট,
আপনার নাম টা কিন্তু দারুন… জানতে চাচ্ছি, কেন আপনার মূল নাম প্রকাশে আপনি অনিচ্ছুক? যদি বলেন, এটাই আপনার আসল নাম, তাহলে সন্দেহ প্রকাশের জন্য দুঃখিত…
তবে এটা কোনো সমস্যা নয়… অবশ্যই এটা আপনার ব্যক্তিগত…
২:১
Shabbir Ahmed
1. A.L.M. Alif. Laam. Mim. Allah, Aleem, the Knower, Hakim, the Wise, knows your prayer and understands your needs.
()
৩৬:১
Shabbir Ahmed
1. Y.S. YASIN! O Human being, to whom this Divine Writ is revealed!
()
না ভাই, এখন তো মনে হচ্ছে আপনিই বোধ হয় ফেইল, তাই নয় কি? – স্যরি, একটু joke করলাম…
এটা হতেই পারে, আমরা সব জানবো না… আর এজন্যই আলোচনা করলে জানার পরিধি বাড়ে…
ধন্যবাদ আপনার সন্দেহের জন্য… এটা আমাকেও এ বিষয়ে আরো ভাবাচ্ছে…
মনে হয়, আপনি সমস্যাটাই বুঝেননি… আপনার কাছে পরিচিত কোনো এক ভাষা বিশারদ কে এই প্রশ্ন করুন, কেন পৃথিবীতে সকল মানুষের ভাষা এক নয়? অনেকের ভাষা এক হলেও dialect ভিন্ন হয় কেন? আপনি কি জানেন না, আমেরিকান ইংরেজি আর ব্রিটিশ ইংরেজি উভয়েই ইংরেজি ভাষা কিন্তু তাদের অনেক ভিন্নতা আছে… আমেরিকান ইংরেজিতে লেখা বই ব্রিটিশ ইংরেজি থেকে অনুবাদ করা কতটুকু যৌক্তিক সেটা আপনার বুঝা উচিত (আপনি যদি এখনো অবশ্য এইচ এস সি পরীক্ষা না দিয়ে থাকেন তাহলে এটা বুঝতে আপনাকে আরো কিছু দিন অপেক্ষা করা লাগতে পারে)…
সহজ কথায়, যে পুস্তক যে ভাষায় লেখা হয়েছে, আপনাকে অনুবাদ/ভাবানুবাদ করতে গেলে সেখান থেকেই করতে হবে.. যতটা মূল ভাষা কাছাকাছি থেকে করতে পারবেন, আপনার কাজ ততটাই গ্রহণযোগ্য হবে…
এতক্ষণ যা বলেছেন, যেভাবে বলেছেন, approach ভালই ছিল… কিন্তু এই শেষের একটা কথা দিয়েই আপনি এই আলোচনার আবহাওয়া নষ্ট করতে চাচ্ছিলেন… …আমিও আপনাকে বলতে পারি, আপনি আমার থেকেও ভন্ড, আর তাতে কি লাভ হবে? কাদা ছুড়ে কি ফায়দা.. আমি ধরে নিচ্ছি আপনি আবেগের বশে এটা লিখে ফেলেছেন… যাহোক, পরামর্শ হলো যে – তর্কে যা ইচ্ছা তাই বলতে পারেন, বিতর্কে বা আলোচনায় নয়… তাতে আপনি নতুন কিছু শেখার মানসিকতা হারিয়ে ফেলবেন আর এতে সময় দিয়ে আপনার সময় নষ্ট ছাড়া কিছুই হবে না…
@ফয়সল,ভন্ডামী এজন্যই বলি যে উসমানের হাতের গ্রন্থগত রুপ পাওয়া কুরআনের অনুবাদ/ভাবানুবাদ দিয়ে কি হবে।মুহাম্মদের সময় আরবী লিখিত ভাষা ছিল না বরং কথ্য ছিল যার নাম Sabataean তাই কুরআন কুরাইশ আরবীতে লিখিত এটার কোন প্রমান নেই।আরবী ২৮ অক্ষরের বর্ণমালার জন্ম হয়েছে ১৪০০ সালে।আরবী একটি প্রো সেমেটিক ভাষা।তাই প্রাচীন প্যাগান আরবদের বলা আল্লাহ শব্দটা কুরআনে আছে।কুরআনই আরবীতে লিখিত প্রথম গ্রন্থ। কুরআন গ্রন্থাকারে নাযিল হয় নি তাই লওহে মাহফুজে রক্ষিত কুরআন এনে অনুবাদ বা ভাবানুবাদ করতে হবে। 😛
@ডেথনাইট,
@ডেথনাইট,
সুন্দর বলেছেন.. আপনার তথ্যবহুল প্রতিউত্তর-এর চেষ্টা প্রশংসাযোগ্য..
মুহাম্মাদের সময়ে আরবি লিখিত ভাষা ছিলো … এর প্রমান আছে –
http://en.wikipedia.org/wiki/History_of_the_Quran#Written_text
আপনি বলছেন আধুনিক আরবি ভাষা সন্বন্ধে?
কিন্তু কুরআন -এর ভাষা আধুনিক আরবি নয়… তাই আপনার এই তথ্য কুরআনের লিখিত ভাষার সাথে সম্পর্কযুক্ত নয়..
আমি কোথায়ও পেলাম না…. হিব্রু প্রো সেমেটিক ভাষা হতে পারে (নিশ্চিত নই) … কিন্তু আরবি সেমিটিক, প্রো সেমেটিক ভাষা নয়…
আপনার এই তথ্য ঠিক কোথায় পেলেন? রেফারেন্স দিন please.
কুরআন গ্রন্থাগারে নাজিল হয়নি তাতে সমস্যা নাই যখন আমরা এটাকে গ্রন্থাগারে পাচ্ছি … কুরআন সংকলনের ইতিহাসে আপনার নিশ্চয়ই কোনো সন্দেহ নাই…
বুঝতেই পারছেন, আপনার দেখানো কারণ গুলো যৌক্তিক নিয়ে অনেক প্রশ্ন আছে…
আশা করি এখন আর ব্যাপারটাকে ভন্ডামি বলবেন না…
বি:দ্র: আপনার নামের ইতিহাস তা কিন্তু বললেননা… death night দিয়ে যদি death of night বলতে চান তাহলে খুবই ভালো… কিন্তু দেখলেন তো.. এখানেও ভাবানুবাদ করতে হলো…. সরাসরি অনুবাদ করলে কিন্তু খুব ভয়ঙ্কর (night of death) হয়ে যায়…
আমি যদি দাবি করি, আপনি একজন অপদার্থ এবং একগুয়ে, আপনি নিশ্চিত যুক্তি দিয়ে প্রমান করতে পারবেন না যে, আমার দাবি ভুল. একই ভাবে আপনি যদি আমাকে একই বিশেষন দেন, আমি তা ভুল প্রমান করতে পারবনা…. কিন্তু বাস্তবতা সেরকম নয়.. আমি যদি সত্যিই জানতে চাই, আপনি কেমন, তাহলে আপনার সাথে আলোচনা করে, মিশে, আপনার পাশাপাশি থেকে, কিছুদিন ধরে আপনাকে দেখে, আপনাকে বুঝার চেষ্টা করে – তবেই হয়তো আপনাকে আমি কিছুটা বুঝতে পারবো..
প্রসঙ্গ -এ আসি. কুরআন এবং আরো অন্যান্য ধর্মগ্রন্থ জীবনের প্রয়োজনেই এসেছে. জীবনে নিয়ম-কানুন এর অবশ্যই প্রয়োজন আছে (প্রতিটি রাষ্ট্রের-ই সংবিধান আছে)… ধর্ম চেয়েছে জীবনকে সুন্দর করতে… অন্তত সমাজকে সুন্দর করতে… কিন্তু রাষ্ট্রের আইন যেমন টাকা-ওয়ালাদের কিংবা সরকারের দখলে, ধর্মও তেমন “বকধার্মিক”-দের দখলে… আইনজীবিরা যেমন আদালতে নিজেদের মতো করে অপরাধীকে নির্দোষ আর নির্দোষকে অপরাধী বানায়, তেমনি যুগ যুগ ধরে সকল ধর্মের মতো ইসলামকেও অনেকে নিজেদের সুবিধা মতো করে অনুবাদ করেছে ও ব্যাখ্যা করে থাকে.
মূল প্রশ্ন হলো, নারীদেরকে কিভাবে দেখা হবে সমাজে. প্রথম কথা হলো, নারী আর পুরুষ সমান নয় – একই নয়… (একই হলে আমরা কেন কাউকে নারী বলি আর কাউকে পুরুষ বলি?) … তাই তাদের অধিকার-ও এক হওয়ার কোনো কারণ নেই. প্রত্যেকের অধিকার হতে হবে তাদের জন্য যেটা উত্তম সেটা.
(যেমন, আমাদের অনুভবে মা-এর অবস্থান বাবার থেকে উপরে, আমরা কখনো এটাকে সমান করে দেখতে বলতে পারিনা) … তার অর্থ হলো, অনেক ক্ষেত্রেই নারীদের অবস্থান বা অধিকার পুরুষদের থেকে উপরে দেখা হবে আবার ভিন্ন কিছু ক্ষেত্রে পুরুষদের -কে নারীদের উপরে দেখা হবে… কেননা, শারীরিক, মানসিক, অনুভুতি, ইত্যাদি প্রেক্ষাপটে তারা ভিন্ন…
কেউ কেউ কোরআনকে সৃষ্টিকর্তার পাঠানো বিধান মনে করে… কেউ কেউ করে না… তাতে কার কি ক্ষতি..?? কেউ কুরআনকে অবলম্বন করে অন্যায় করলেও অন্যায় আবার কেউ বিজ্ঞান অথবা রাষ্ট্রীয় আইনকে অবলম্বন করে অপরাধ করলেও অপরাধী. গুরুত্বপূর্ণ হলো আমাদের ব্যক্তিগত দৃষ্টিভঙ্গি আর আমরা কে কি করছি. তাই আসুন, আমরা জোর করে একটা ভাল গ্রন্থ কে খারাপ প্রমান না করি, বরং, চেষ্টা করে দেখি, এই গ্রন্থ আসলে কি বলতে চেয়েছে.
বেশিরভাগ সময় আক্ষরিক অনুবাদ পূর্ণাঙ্গ ভাব প্রকাশ করতে ব্যর্থ হয়.. কোনো ইংরেজি বই বাংলায় অনুবাদ করলে সেটা সহজে বুঝা যায় … তেমনভাবে কুরআনের অনুবাদ অনেক ক্ষেত্রে পূর্ণাঙ্গ ভাব প্রকাশে ব্যর্থ … আরো কিছু যৌক্তিক কারণে (যেমন, কুরাইশ dialect কে কোরআন-এর মূল ভাষা হিসেবে বিবেচনা করা) আমি তাই জনৈক শাব্বির আহমেদ-এর Quran Interpretation -কে better reference মনে করি…
(সুরা নিসা – আয়াত ৪)
আপনি যেখান থেকে এই আয়াতের বঙ্গানুবাদ নিয়েছেন, সেটি অসম্পূর্ণ … আমি খুবই অবাক হচ্ছি কুরআন এভাবে বিকৃত হচ্ছে দেখে … তাছাড়া একটি অনেক ক্ষেত্রেই স্বাতন্ত্র নয়… আপনি এই সুরার পূর্বের আয়াত আর পরের আয়াত মেলালে বুঝতে পারবেন, এখানে প্রসঙ্গ এতিমদের নিয়ে…
এই আয়াতের ভাবানুবাদ
(Shabbir Ahmed)
3. If you fear that the society shall not be able to do justice with orphans, (as may happen in times of war and political turbulence, the government shall announce a state of Emergency). In order to accommodate widows and orphans, men of sound finances and character shall be encouraged to marry these widows; two, three, and four (4:127). If you fear that you shall not be able to deal justly, then you must not take additional wives, and may continue with what you already have (4:129). This will prevent injustice and financial hardship. (Second marriage during peace time is a FRANK violation of the Qur’an).
একইভাবে ১২৯-১৩০ আয়াতকেও আপনি কিছুটা ভুল বুঝেছেন.
Shabbir Ahmed
129. Men who have been permitted a second wife for post-war exigencies (4:3) must understand that: You will not be able to deal equally between your wives however much you wish. But turn not altogether away from one, leaving her as if in suspense between having and not having a husband. Fulfill the rights of each one of them and be mindful of Allah. Verily, Allah is ever Forgiving, Merciful. (Your effort is seen 53:40, and He is the Absolver of your imperfections).
Shabbir Ahmed
130. If the couple separate, Allah will provide for each one of them from His Abundance. Allah is Infinite, Wise. (The Divinely Ordained System is versatile enough to accommodate all circumstances).
আপনি যদি পরবর্তীতে অন্যান্য আয়াত নিয়ে অথবা আয়াতগুলোর যৌক্তিকতা নিয়ে সত্যিই জিজ্ঞাসু হন, আমরা আলোচনা করতে পারি. অন্যথায়, আমার আমার কিছু করার নেই…
@ফয়সল,
কিন্তু ভাই আমাদের কথা সেটা নয়, আমরা কিভাবে নারীকে সমাজে দেখে আসছি বা দেখি সেটা নয়, পরম করুণাময় সর্বদর্শী আল্লাহ কিভাবে নারীকে দেখে সেটা। তিনি কিভাবে নারীকে প্রহার করতে বলেন, নারীকে যৌন যন্ত্র ভাবেন, গৃহপালিত পশু ভাবেন, পুরুষের অর্ধেক মনে করেন এটা। আমরা যেভাবে নারীকে দেখি সেটা সঠিক নাও হতে পারে, কিন্তু আল্লাহ তো সঠিক ভাবে আমাদেরকে বলবেন আমরা কিভাবে নারীদেরকে দেখব, তাই নয়?
আপনার কথা যে কোরানের সাথে সংঘাতপূর্ণ আপনি কি সেটা বুঝতে পেরেছেন?আপনারা উক্ত বক্তব্য প্রদান করেন শুধুমাত্র যখন আমাদের প্রশ্নের সঠিক উত্তর দিতে ব্যর্থ হন। যারা বহু কষ্ট করে আরবী শিখে অনুবাদ করেছেন আপনি তাদেরকে তাচ্ছিল্য করছেন। কিন্তু তার চাইতেও বড় কথা হলো- শুধুমাত্র আরবী ভাষীরাই যদি কোরানের সঠিক অর্থ অনুধাবণ করতে পারে তাহলে তা শুধুমাত্র আরবী ভাষীদের জন্য যা কিন্তু কোরানেও বার বার ফুটে উঠেছে- সেটাও আবার আপনারা গ্রহন করতে রাজী না। এ ছাড়াও নিত্য নতুন অনুবাদ ও ব্যখ্যা আপনারা হাজির করছেন যা কিন্তু কোরানের নীতি বিরোধী। কারন কোরানে আল্লাহ বলছে- আমি কোরানকে সুস্পষ্টভাবে নাজিল করেছি যা তোমরা বুঝতে পার। কিন্তু দেখা যাচ্ছে কোরানের বক্তব্য আমরা সুস্পষ্টভাবে বুঝতে পারছি না বহু চেষ্টা করেও। আর সেই ফাকে আপনারা বিভিন্ন জনে বিভিন্ন অর্থ করছেন। সেটাও কোরানের সাথে সাংঘর্ষিক। কারন আপনারাই একবার রাম কে রহিম , অন্যসময় রহিম কে রাম এভাবে অনুবাদ করছেন। এভাবে আপনারাই কোরানের অর্থকে বিকৃত করছেন, যখন আমরা আপনাদের সে বিকৃত কোরানের অর্থের ওপর প্রশ্ন করছি তখন আবার আপনারাই বলছেন কোরান সঠিক ভাবে অনুবাদ করা হয় নি। দেখুন সব ঘটনার নায়ক আপনারাই , আমরা নই। তখন আমাদেরকে দোষ দেন কেন ?যদি আরবী ভাষার কোরান অনারবী লোকরা সঠিক অনুবাদ করতে না পারে বা না বুঝতে পারে, তাহলে এক. উক্ত আরবী কোরান অনারবী মানুষের জন্য নয়, দুই. এ সমস্যা দুর করনার্থে আল্লাহকে নতুন করে নবী পাঠিয়ে দুনিয়ার প্রতিটি ভাষায় একটা করে কোরান নাজিল করা উচিত। আপনি এ দুইয়ের কোনটার সাথে সম্মত না হলে আপনাকে একজন মতলব বাজ হিসাবে ধরে নিলে আমরা কি খুব অন্যায় করব ?
@ভবঘুরে,
আপনার উত্তরকে সম্মান জানাচ্ছি। আপনার এ অভিযোগ খুবই যথার্থ। আমি আপনার অভিযোগের অনেক অংশ কেই সমর্থন করছি।
তবে, উত্তরের জন্যই উত্তর নয়, সত্যটাই বলছি, আমি নিজেও আপনার মতো বিভ্রান্ত ছিলাম। এখনো যে নই তা নয়। তবে আমার চিন্তাটা একটু ভিন্ন। একটু খুলে বলি।
আমার দুইটা উপায় আছে বিশ্বাস করার-
(১) সৃষ্টিকর্তা আছে
(২) সৃষ্টিকর্তা নাই
যদি (২) বিশ্বাস করি, তাহলে আলোচনা অন্যদিকে চলে যাবে। আপনি চাইলে সেদিকে অন্যদিন আলোচনা করা যাবে।
যদি (১) কে গ্রহণ করি, তাহলে এটা খুবই স্বাভাবিক সৃষ্টিকর্তা আমাদেরকে সম্পূর্ণ স্বাধীনতা দিতে পারেন আবার নাও দিতে পারেন। সৃষ্টির ভালোর জন্য এক বা একাধিক নির্দেশনা পাঠাতে পারেন বা তাদেরকে এমন ভাবে সৃষ্টি করতে পারেন যেন তারা কোনভাবেই খারাপ কিছু করতে না পারে। এটি সম্পূর্ণ তার ইচ্ছার উপর।
তবে, ধরে নিচ্ছি, উনি আমাদেরকে একটা পর্যায় পর্যন্ত স্বাধীনতা দিয়েছেন এবং স্বাধীনতার যেন অপব্যবহার না হয় তাই তার কিছু নির্দেশনাবলীও দিয়েছেন। আমি চিন্তা করতে পারি না, সৃষ্টিকর্তা আমাদেরকে সৃষ্টি করে একটি বিশৃঙ্খল পরিবেশে ফেলে দেবেন কোনো নির্দেশনা না দিয়ে। কেননা তিনি আমাদেরকে যান্ত্রিক ভাবে সৃষ্টি করেন নি। এই সমাজে একেকজন একেকভাবে ভাবে। অনেক ক্ষেত্রেই আমরা বুঝিনা, কোনটা সঠিক। সেক্ষেত্রে আমরা জানিনা কোনটা করা ভবিষ্যতের জন্য অথবা বৃহত্তর জনগোষ্ঠির জন্য উত্তম। আপনি হয়তো ব্যক্তিগতভাবে এটা বুঝেন, কিন্তু অনেকেই তা বুঝে না… আমি মনে করি অনেক কিছুই ঠিক… কিন্তু একদিন বুঝতে পারি, এটা ঠিক নয়। তার মানে আমাদের অভিজ্ঞতা পরিবর্তন হয় এবং আমরা নতুন করে শিখি। এটি ভালো কিন্তু আমরা সবাই যদি অভিজ্ঞতার অপেক্ষায় থাকি, তাহলে কখনই সঠিক কিছু করার নির্ভরতা থাকেনা। সৃষ্টিকর্তা যদি অভিভাবক হয়ে থাকেন, তাহলে এটা খুবই সাধারণ যে, তিনি আমাদেরকে এমন বিভ্রান্তিকর অবস্থার মধ্যে রাখবেন না।
তাই, আমি ধরে নিচ্ছি, (১.১) ধর্মগ্রন্থের অস্তিত্বও যৌক্তিক।
এরপর, প্রশ্ন হলো যে, কুরআন কি সৃষ্টিকর্তার পাঠানো?
উত্তর হতে পারে –
(১.১.১) কুরআন সৃষ্টিকর্তার পাঠানো
(১.১.২) কুরআন সৃষ্টিকর্তার পাঠানো নয়
আবারও যদি ধরে নিই, (১.১.২) ঠিক, তাহলে আলোচনা ঘুরে যাবে… আমরা এটা নিয়ে অন্য কোনো সময় আলোচনা করবো (যদি আপনি ইচ্ছুক হন)। সংক্ষেপে বললে, এ ক্ষেত্রে অনেক জটিল প্রশ্ন এসে যায় যার উত্তর আমার কাছে নেই।
তাহলে বাকি থাকলো (১.১.১).
কুরআন যদি সৃষ্টিকর্তার প্রেরিত নির্দেশনাই হয়ে থাকে, তাহলে এটা আমাদের বোধগম্য হতে হবে। না হলে এটা পাঠানোর কোনো অর্থ নাই।
সৃষ্টিকর্তা আমাদের একটা সাধারণ বিবেচনা দিয়েছেন। সাধারণ ভাল – মন্দ বুঝার একটা ক্ষমতাও তার দেওয়া। তার পাঠানো কোনো নির্দেশনা যদি আমাদের সেই বিবেচনার সাথে সাংঘর্ষিক হয়, তাহলে প্রশ্ন এসেই যায়। সাধারণ প্রশ্ন হলো, আমরা ঠিক ভাবে এটা বুঝতে পারছি তো? আমি একদিন এই প্রশ্নের উত্তর খোজা শুরু করলাম। এবং একদিন পেলাম –
এবার আসুন এ প্রসঙ্গে,
অনেকে কুরআন অনুবাদ করেছেন। কেউ আরবি থেকে অন্য ভাষায় সরাসরি, কেউ অন্য ভাষা থেকে আরেক ভাষায়। আপনি হয়তো জানেননা আরবি ভাষার-ই একাধিক dialect আছে। মুহাম্মদ কুরাইশ dialect কে ব্যবহার করতেন। এবং কুরানের ভাষ্যমতে, কুরআনকেও এই ভাষাতে পাঠানো হয়েছে। এই dialect-এ অনেক শব্দের অর্থের ব্যাপকতা এবং ব্যবহার অনেক ক্ষেত্রে অন্য এলাকার আরবি থেকে বেশ ভিন্ন।
অপরদিকে, ৯০ ভাগ ক্ষেত্রে কুরআন অনুবাদ করা হয়েছে অন্য এলাকার আরবি-র উপর ভিত্তি করে। কিছু ক্ষেত্রে (প্রথম অনুবাদ এ রকম) অন্য ধর্মের মানুষ কুরআন অনুবাদ করেছে। কুরাইশ জনগোষ্ঠী খুব বড় নয়। তাই আরবে অনেক আগে থেকেই অন্য এলাকায় অনেকে বিদেশী আরবি শিখেছে। তাই তাদের শেখা আরবি আর কুরআন শরীফের আরবি সবক্ষেত্রে এক নয়। অপরদিকে, যখন কুরআনকে কেউ মাত্রাতিরিক্ত ভক্তি করে “যাহাই বুঝি তাহাই মানি” মনে করে, তখন অনুবাদ সঠিক হচ্ছে কিনা এমনটা মনে করার অবকাশ থাকে না। আক্ষরিক অনুবাদ-এর মধ্যেও যে ঘাপলা থাকছে সেটা আমরা বুঝিনা। যখন কোনো সন্দেহ দেখা দিয়েছে তখনি অনেকে হাদিসের সাহায্য নিয়েছেন। এভাবে কুরআনকেও কিছু ক্ষেত্রে হাদিসের উপর নির্ভর করা হয়েছে। যেটা খুবই অন্যায়।
কেন আমি, অন্য যে কোনো অনুবাদ থেকে শাব্বির আহমেদ-এর অনুবাদ কে বেশি গুরুত্ব দিই,
ক. তিনি কুরাইশ dialect শিখে, কুরাইশদের সাথে মিশে এ ভাষায় কিছু দক্ষতা অর্জন করে তবেই অনুবাদ কাজ শুরু করেছেন।
খ. তিনি মূলত অনুবাদ করেননি। করেছেন ভাবানুবাদ। আমি নিজেও আগে মনে করতাম, কুরআনকে অনুবাদ করা অযৈক্তিক। ভাবানুবাদ বেশি গুরুত্বপূর্ণ।
গ. যেসব ক্ষেত্রে কুরানের একটি আয়াত অথবা কোনো শব্দের অর্থ অসামঞ্জস্যপূর্ন, অন্যরা বেশিরভাগ-ই হাদিসের সাহায্য নিয়ে অনুবাদ করেছে, সেখানে তিনি কুরআন-এর অন্য আয়াত দিয়ে এই অনুবাদ সম্পূর্ণ করেছেন। যাতে আমি কুরআন কে একটি self-referenced গ্রন্থ হিসেবে পাচ্ছি।
ঘ. আমার কিছু কিছু কুরানিক বিষয় নিয়ে আপত্তি ছিলো। যেমন, পুরুষরা বেহেশতে গেলে হুর পাবে। তাহলে নারীরা কি পাবে, তা কিন্তু বলা নাই। সৃষ্টিকর্তার পাঠানো নির্দেশনা হিসেবে এটা কেমন কেমন লাগে না?
আমি শাব্বির আহমেদের ভাবানুবাদে এর উত্তর পাই। কুরাইশ dialect-e হুর হলো একটা জাতি (যেমন মানুষ)। হুর বলতে পুরুষ হুর-ও আছে আবার নারী হুর-ও আছে। আর হুর মানে “উত্তম সঙ্গী”। এরকম আরো অনেক শব্দের অর্থের ব্যাপকতা জেনে আমি আমার অনেক সন্দেহই দূর করেছি।
দেখুন, আপনাকে আমি খুব ভাল চিনি না। আপনি যদি নিজের পছন্দের কারণে একটি পক্ষ অবলম্বন করেন, আমার কিছু বলার নাই (যেমন, কেউ ফুটবলে ব্রাজিল কে সাপোর্ট করলে আমার কিছু বলার নাই)।
কিন্তু আপনি যদি সত্য জানতে উত্সাহিত হয়ে থাকেন, তাহলে আপনি এবং আমি ভিন্ন নই। তাই “আপনারা” বা “আমরা” এমন শব্দ ব্যবহার না করলে খুশি হব। আমি শুধু আমিই। আপনি শুধু আপনিই।
দেখুন, হতে পারে আমার লেখা অনেক কিছুই নতুন অথবা পুরাতন। কিন্তু আমি আপনার কাছে নতুন। তাই পুরাতনকে দিয়ে আমাকে বিচার করতে হবে এমন নয়। আমার লেখা পড়ে কোনো ক্ষেত্রে সন্দেহ থাকলে জানাতে দ্বিধা করবেন না।
ও হ্যা – কুরআন -এর কোনো আয়াতে যদি সৃষ্টিকর্তার এমন নির্দেশনা থাকে যে নারীকে প্রহার করতে হবে, গৃহপালিত পশু ভাবতে হবে, যৌন যন্ত্র ভাবতে হবে, তাহলে হা হা হা… আমি হাসতে হাসতে মরেই যাবো… কেননা কিভাবে একটিও বিবেকবান মানুষ মুসলমান থাকতে পারে… এমন সৃষ্টিকর্তা কে কেউ কি এতটুকু সম্মান দিতে পারেন? তাহলে সমস্যাটা কোথায়?
…. সমস্যাটা হলো বাক্যের অসম্পূর্ণতা, অর্থের বিকৃতি, ইত্যাদি
ভাল থাকবেন
@ফয়সল,
ভাইজান, হুর বলতে যে কি বুঝায় তা দেখুন নিচের আয়াতগুলোতে, আয়াতগুলোর অনুবাদ করেছেন মুসলিম জাহানের সবচাইতে বিখ্যাত কিছু ইসলামী পন্ডিতগন-
55:56Wherein both will be Qasirat-ut-Tarf [chaste females (wives) restraining their glances, desiring none except their husbands], with whom no man or jinni has had tamth before them. Mohshin Khan
55:56In them will be (Maidens), chaste, restraining their glances, whom no man or Jinn before them has touched;- Yusuf Ali
55: 56Therein are those of modest gaze, whom neither man nor jinni will have touched before them. Pickthal
44: 54So; and We shall join them to Companions with beautiful, big, and lustrous eyes. Yusuf Ali
44: 54So (it will be). And We shall marry them to Hur (fair female) with wide, lovely eyes. Mohshin Khan
44:54Even so (it will be). And We shall wed them unto fair ones with wide, lovely eyes. Pickthal
78:32-33Gardens enclosed and vineyards, And voluptuous women of equal age; Yusuf Ali
78:32-33Gardens and vineyards,And young full-breasted (mature) maidens of equal age, Mohshin Khan
78:32-33Gardens enclosed and vineyards, And voluptuous women of equal age;
উপরোক্ত আয়াত গুলিতে দেখুন পরিস্কার বলা আছে হুর আসলে কারা। আর এরা হলো নারী যাদেরকে কোন পুরুষ বা জীন আগে স্পর্শ করে নি। এর মানে কি ? একজন সুন্দর পুরুষের বর্ণনায় কোনদিন তার বড় ও যৌন আবেদনময়ী চোখের কথা বলা হয় নাকি ?
উক্ত ৭৮:৩৩ এর ব্যপারে ইবনে কাথিরের তাফসির দেখুন-
(And vineyards, and Kawa`ib Atrab,) meaning, wide-eyed maidens with fully developed breasts. Ibn `Abbas, Mujahid and others have said,
(Kawa`ib) “This means round breasts. They meant by this that the breasts of these girls will be fully rounded and not sagging, because they will be virgins, equal in age. This means that they will only have one age.” The explanation of this has already been mentioned in Surat Al-Waqi`ah. Concerning Allah’s statement,
সূত্র: http://www.qtafsir.com/index.php?option=com_content&task=view&id=1404&Itemid=134
আপনার কি এর পরেও মনে হয় এই হুরগুলি হলো কুমারী বালিকা অন্য কিছু ? হুর বলতে যদি নারী পুরুষ উভয় ধরণের সাথী বুঝাতো, তাহলে নারীদের জন্য সাথী বর্ণনায় সেখানে আল্লাহ অবশ্যই বলত- হে বেহেস্তী বাসী নারীগন, আমি তোমাদের জন্য সুঠাম দেহী, পেশীবহুল সাথী বেহেস্তে তৈরী করে রেখেছি। কিন্তু না, প্রতিবার হুরদের বর্ণনাতে দেখা যাচ্ছে- আয়ত চক্ষু বিশিষ্ট, লাস্যময়ী চাহনী এসবের। এর মানে বুঝতে আপনার কষ্ট হওয়ার কথা নয়।আপনি যদি সত্যি মুক্তমনের অধিকারী হয়ে থাকেন মুক্তমনেই কোরান হাদিস পড়ুন , বুঝতে পারবেন ওসবে কি লেখা আছে। আগেই যদি ধরে বসে থাকেন কোরান আল্লাহর বানী তাহলে তো আপনি কিছুই ধরতে পারবেন না। লাল চশমা চোখে দিয়ে চারদিক তাকালে তো সব কিছু লালই দেখায়। লাল চশমাটা একটু চোখ থেকে খুলে চারদিকে তাকান, সব কিছু পরিস্কার আর বাস্তব দেখতে পাবেন, ভাই। সাব্বির আহমদের নিজের ব্যখ্যা করা কোরান পড়ে বিভ্রান্ত না হওয়ার অনুরোধ করছি। হুর নিয়ে বর্তমানে ব্যপক কথা বার্তা হওয়ায়, তা নারীদের প্রতি ব্যপক তাচ্ছিল্যের উদাহরণ হওয়ায় সাব্বির আহমদ নিজের মন মতো অর্থ করছেন যা আবার সেই কোরানের আল্লাহ প্রণীত বিধির পরিপন্থি। এ অধিকার তার নেই। ধণ্যবাদ।
সংশোধণী:
আপনার কি এর পরেও মনে হয় এই হুরগুলি হলো কুমারী বালিকা অন্য কিছু ?
পূন: সংশোধণী:
আপনার কি এর পরেও মনে হয় এই হুরগুলি হলো কুমারী বালিকা ছাড়া অন্য কিছু ?
@ভবঘুরে,
http://ourbeacon.com/wp-content/uploads/admin2/2010/11/QXP200808iv.pdf
পৃষ্ঠা ১৫, একেবারে নিচে পাবেন, কুরাইশ dialect মতে হুর শব্দের অর্থ কি….
আমি পুনরায় লিখছি:
Hoor = Hoori = modest, intelligent companions, male or female.
Men and women of vision who are modest and delightful companions.
The male gender is Ahwar and female is Hawra.
http://www.google.com/url?sa=t&rct=j&q=&esrc=s&source=web&cd=3&ved=0CC4QFjAC&url=http%3A%2F%2Fhanif.free.fr%2Fqxp1-1.doc&ei=q5sGT_TwFIvHmQW518ThBQ&usg=AFQjCNHU5VlwsZAGV0OAK5o4oIAH8POfAQ&sig2=CTlJQdsCpKAn7rTuIAoq5g
এই ডকুমেন্টে তার কাজ কেমন গ্রহণযোগ্যতা পেয়েছে তা জানতে পারবেন পৃষ্ঠা ৭ থেকে ১৫ তে.
তার কাজের foundation বা ভিত্তি সম্বন্ধে বিশদ বিবরণ-ও এখানে পাবেন…
এরপর দয়া করে অন্য কারো অনুবাদ আমার সামনে উপস্থাপন করতে গেলে তার কাজের ভিত্তি সম্বন্ধে আমাকে আগে অবহিত করবেন… এটা বললেই যথেষ্ট নয় যে, অমুক খুব বিখ্যাত, অমুক ওই দেশে এত বছর আরবি শিখেছে, অমুক ওই সময়ে অনেক বই লিখেছে, অমুক কুরআন অনুবাদ করতে হাদিস ব্যবহার করেছে, অমুক খুব পণ্ডিত ছিল, ইত্যাদি … কেননা এসব কোনো ভাবে প্রমান করেনা তার কাজের মান কতটুকু উন্নত এবং বিশেষ করে শাব্বির আহমেদের থেকে উন্নত কিনা…
আপনার লেখা পড়ে ভালোই লাগে। এর আগেও কমেন্ট করেছিলাম, মাঝে বেশ কিছুদিন নেট সমস্যা থাকবার কারনে পড়তে বা কমেন্ট করতে পারিনি।
যাইহোক আপনার একটা জিনিস ভালো লাগে খুব পড়েন, জানতে চাওয়া থেকে হয়ত অনেক প্রশ্ন মনের ভিতর জাগ্রত হয়, অতপর অসীম জানতে চাওয়া থেকে যখন উত্তর গুলো জোকার নায়েকের মত আলেম নামক জালেমদের কাছ থেকে পান তখন বিবেকে হয়ত আগের জামানার রাজাদের চাবুকের মত খুব জোড়ে আঘাত লাগে, বিদ্যান ঐ সকল জীবাত্নার বর্ননার সুচনা যা থাকে – অসীম মিথ্যার বানে উপসংহার আর হাজার চাইলেও তারা মিলাতে পারেনা। তাদের কোরানের তফসীর অনেকটা এমন – লিখতে বসছে গরুর রচনা, উপসংহারে যেয়ে দেখা যায় পশু আর গরু নাই খচ্চর হয়ে গেছে। কেননা তারা জানেনা কোরান কি।
তবে মিথ্যার এই জগতে সত্য আপনে যেভাবে জানতে চাচ্ছেন – পাবেন না। জানিনা আপনে আসলে কি সত্য জানতে চাচ্ছেন কিনা সেটাও জানার বিষয়।
যদিও অনেকটা বলতে চাই- তকদির। যদি তকদিরে না থাকে তবে জানতে পারবেন না। তকদির বিষয় আমি খুবই অধম। হয়ত এইটুকু যাওয়া আপনার তকদির। এর গভিরে যাওয়া হয়ত আপনার তকদিরে নাই। হয়ত আছে। কোরান এক আজব সৃষ্টি। এর গভির গ্যান সবার কপালে জুটেনা। এই যেমন ধরুন আমি এক অধম এর কিছুই জানতে পারলাম না আজও। এইটুকু শুধু বলতে পারি-মানুষই কোরান। সবার উপর মানুষ সত্য – তাহার উপর কিছুই নাই- নজরুল। এই কোরানে যত বর্ন আছে সব মানুষকে জানতে, মানুষকে বুঝতে। মাওলানা রুমী (র:) বোলেছিলেন- মানুষ খোদা নয়, খোদা হতে জুদাও নয়। বায়েজিদ বোস্তামি বলেছিলেন- এই পৃথিবীর সমস্ত জীবাত্না আমি, সমস্ত ধাতু আত্না আমি..। মোহাম্মদ (সঃ) বলেছেন-‘আমিই কাল’; বায়েজিদ বোস্তামী বলেছেন-‘সোবহানী’; বড় পীর আব্দুল কাদের জীলানী বলেছেন-‘আল্লাহর সৃষ্টি কূল আমার আজ্ঞাবাহ’; মনসুর হাল্লাজ ‘আনাল হক’; আর কাজী নজরুল ইসলাম বলেন-‘স্রষ্টা’- “জগদীশ্বর ঈশ্বর আমি পুরুষোত্তম সত্য”। এখন আমি আপনাকে কি বলব?
কাগজের এই কোরানে গ্যান বা নূর থাকেনা, তবে গ্যানের কিছু সামানা মাত্র দেয়া আছে। এই সৃষ্টি জগত হল নারী, যা কিছু উতপাদনশীল তাই নারী বলা হয়েছে। আবার দেখুন আল্লাহ কি বলছেন:সূরা বাকারা ১৬৫- “এবং মানুষের মধ্যে এমন আছে যারা দুর্বল আল্লাহ হইতে সাথী গ্রহণ করে”। এটা আবার দেখুন কেমন ব্যপার?
এই লালনকে দেখুন – জানিনা তিনি কি আলেম নামক জালেমদের মত (জোকার নায়েক) কোরান পড়েছিলেন কিনা- তাঁর গানে পাওয়া যায়-
যিনি রসুল, তিনি খোদা, মুর্শিদ সেও হয়- এই কথা লালন নয় – কোরান কয়, কোরান কয় কোরান কয়..। ঠিকিত- কোরানেও ঠিক একই কথাই খুজে পাই- সুরা নিসা ১৫০-১৫১-১৫২ একটু দেখুন। তাহলে এই লালন কোন কোরান? তার গান যদি বিশ্লেষন করি দেখা যায় তিনি কোরানের আগা গোড়া সব কথাই বাংলায় বলে গেছেন। কোরানেও সেই একই কথা।
যাইহোক অনেক অফটপিকের কথা বলে ফেললাম, আপনার সময় নষ্ট করলাম। তবে এই সকল মানব আকার ধারী জীবগুলোর কাছে কোরান ব্যাখ্যা জানতে না চাওয়াই ভাল বলে মনে করি। যদিও ইহা একদম আমার মত।
ধন্যবাদ।
আপনার কয়েকটি কথা সম্ভবত আমার মন থেকে কোনভাবে চুরি করে নিয়ে আপনি বলে ফেলেছেন।
কিন্তু দুঃখ, মনে প্রাণে জানার পরও আমরা বোধহয় এই ব্যাপারগুলো সম্পর্কে মুখে কুলুপ এঁটে থাকতেই পছন্দ করি। এবং মজার ব্যাপার হচ্ছে এটাও য়ামরা করি হয়রাণীর ভয়ে। মুখ খুলে আমাদের সবার হয়রাণীর ভার নিজের কাঁধে তুলে নেওয়ার জন্য যদি ধন্যবাদ দেই একটা আশা করি ওনানুপাতিক প্রতিদান মনে করবেন না।
আদিল মাহমুদ, ব্রাইট স্মাইল, এমরান সবাইকে,
বিষয় পুরনোই, আপনার কথা সত্য আর আমি প্রথমেই তা স্বীকার করে নিয়েছি। অন্য সবার মত আমি জানি না তবে , আমার ব্যক্তিগত মতামত ইসলাম বর্তমান দুনিয়ায় সব চাইতে বড় হুমকি। বিশ্ব উষ্ণায়ন, জলবায়ূর পরিবর্তন,বিশ্ব অর্থনৈতিক মন্দা ইত্যাদি দুনিয়ার জন্য হুমকি বটে তবে তা বাহ্যিক হুমকি যা চোখে দেখা যায় মাপা যায় তার বিরুদ্ধে বিজ্ঞান সম্মত বাস্তব পদক্ষেপ নিয়ে তাকে ঠেকানোও যেতে পারে, কিন্তু ইসলাম হলো মানবিক দুর্যোগ সম্বলিত হুমকি যাকে আপনি চোখে ঠিক মতো দেখবেন না, মাপতে পারবেন না ফলে এর বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নেয়াটাও জটিল। একমাত্র গণ-সচেতনতাই পারে এ হুমকি মোকাবিলা করতে। ঠিক একারনেই আমি মনে করি এ বিষয়ক নিবন্ধ একটা না একটা ফ্রন্ট পেজে সব সময় থাকা বাঞ্ছনীয়। কারন যারা নুতন এ সাইটে প্রবেশ করে তারা কিন্তু ফ্রন্ট পেজটাই আগে পড়া শুরু করে, যদি আকর্ষণীয় কিছু না পায়, তারা বেরিয়ে যায়, ভিতরে কোথায় কি গুরুত্বপূর্ন নিবন্ধ আছে তার খোজ একমাত্র নাছোড়বান্ধা পাঠক/পাঠিকা ছাড়া আর কেউ নেয় না। এ সাইটে আমি নিজেও যখন নতুন ঢুকেছিলাম আমার মানসিকতাটাও কিন্তু ঠিক সেরকমই ছিল। প্রথমে নারীর অধিকার দিয়ে সিরিজ শুরু করেছি, এর পরই বিজ্ঞান ধরব, তারপর সমাজবিজ্ঞান, দর্শন সবই একে একে আসবে। আর বলা বাহুল্য তার সব হবে ইসলামের সাথে সম্পর্কিত।আগে কোরান ও হাদিসে নারীর কি সব অধিকার আছে সেগুলোকে বের করতে তো দিন। কারন দুনিয়ার ১৫০ কোটি মুসলমানের মধ্যে আনুমানিক ৭৫ কোটি নারী আছে, তাদেরকে আলোকিত না করে আপনি তো ১৫০ কোটি কে আলোকিত করতে পারেন না। আর একজন আলোকিত নারীই পারে তার সন্তানদের আলোকিত করতে। আমার এ প্রচেষ্টায় যদি মাত্র একজন মুসলমান নারীও আলোকিত হয়, তাতেই আমার পরিশ্রম সার্থক মনে করব।
পরিশেষে, না ভাই, আমার ব্যক্তিগত কোন তিক্ত অভিজ্ঞতা নেই, চারদিকে যে সব খারাপ আলামত দেখছি তা থেকে দেশবাসীকে রক্ষার সামান্যতম প্রচেষ্টার বহিঃপ্রকাশ হলো আলোচ্য নিবন্ধগুলো। একই সাথে হাত থাকলেই লেখা যায় কিনা তারও একটা পরীক্ষা নিচ্ছি নিজের ওপর আর শরৎ চন্দ্র চট্টোপাধ্যায়কে ভুল প্রমান করার চেষ্টা করছি, ঐ যে উনি বলেছিলেন- চোখ থাকলে দেখা যায়, কিন্তু হাত থাকলেই লেখা যায় না।
ভবঘুরে
খুব ভালো লাগলো আপনার লেখাটি পড়ে। চমৎকার লিখেন। আমি সময় পেলেই আপনার লেখা পড়ি। আপনার লেখায় অনেক যুক্তি এবং তথ্য থাকে।
এ কথাটি ১০০ ভাগ সত্য যে, মুসলিম নারীরা কখনোই মান্তে চায় না যে ইসলামে তাদের সমান মরজাদা দেয়না। কখনও যদি কুরানের কিংবা হাদিছের উদাহরন দেন তখন তারা আর এ ব্যপারে আপনার সাথে কথা বলবে না। এটা আমি আমার মা, আমার স্ত্রী, আমর সাশুরী কে বলেছি কিন্থু তারা কনো ভাবেই মান্তে চায় না। আমার স্ত্রী আমাকে বলে মুক্ত-মনা পড়ে আমি এসব কথা বলছি। তাই মুক্ত-মনা পড়ে সে এই সব কথা মান্তে চায়না । এবার বুঝুন কার অধিকার নিয়ে কথা বলবো। তবে মুক্ত-মনা আমাকে সত্য সেখায়। আমি একথা বলবোই বলবো। আর ভবঘুরে আপনারা না লিখলে আমরা জানব কি করে। আপনারা লিখুন। তবেই না আমরা জানবো। আপনারা যত বেশি লিখবেন আমরা ততো বেশি জানবো। আপনাদের সকলকে, মুক্ত-মনার সকলকে আমার পক্ষ্য থেকে অনেক অনেক ধন্যবাদ। সবাই ভাল থাকবেন।
@ভবঘুরে,
নিঃসন্দেহে যুক্তিপূর্ন ও বিশ্লেষনধর্মী লেখা। :yes:
কৃত্রিম জীবন সৃষ্টি অবশ্যই একটা যুগান্তকারী ঘটনা। কিন্তু ইসলামের রীতিনীতি নারীদের জীবন যেভাবে দুর্বিষহ করে তুলছে সেগুলো চোখে আংগুল দিয়ে দেখিয়ে দেয়ার যে প্রয়াস আপনি নিয়েছেন তাকে সাধুবাদ জানাচ্ছি। সাদামাটা ব্যাপার বলে এই প্রসংগটিকে আন্ডারএস্টিমেট করার কোন কারন দেখিনা। এই সাদামাটা ব্যাপারটিই যে প্রতিনিয়ত সমাজে কি ভোগান্তির কারন ঘটাচ্ছে তা আর বলার অপেক্ষা রাখেনা। অবশ্যই দ্বিধা দ্বন্ধে না ভুগে চালিয়া যাবেন। ধন্যবাদ।
লেখায় ভাল বিশ্লেষন আছে। বিশেষ করে সুরা নিসার অতি পরিচিত প্রথম আয়াত (আয়াত ৩) এর পরে যে আবার আয়াত ১২৯-১৩০ এ কনফিউশন আছে এটা মনে হয় আমার মত অনেকেই জানেন না।
লেখাটা ভাল হলেও খুব নুতন কিছু নয়, অবশ্য লেখক তার বক্তব্য দিয়েছেন এ সম্পর্কে।
নুতন কিছু হতে পারে এত কিছু বোঝানোর পরেও কেন মানুষ প্রথাগত ধর্মের বেড়াজাল থেকে বের হতে পারে না তার একটা মনস্তাত্ত্বিক বা নৃতাত্ত্বিক বিশ্লেষন। লেখকের বেশ কিছু ইন্টারেষ্টিং ব্যাক্তিহত অভিজ্ঞতা এখানে আছে, আমাদের সবারই বোধকরি কমবেশী এমন অভিজ্ঞতা আছে। এর ভিত্তিতে ভাল একটা পূর্নাংগ লেখা আমরা আশা করতে পারি।
যদিও অপ্রাসংগিক, তবুও এখানেই দিলামঃ
http://www.facebook.com/video/video.php?v=103090883056117&ref=mf
আমাকে কি কেউ এটার ব্যাখ্যা দিতে পারবেন । এই ভিডিওর আসল উৎসটা কোথায়?
প্রয়োজনীয় ও প্রাসঙ্গিক বিশ্লেষণ। এ ধরণের লেখার আবেদন ততক্ষণ ফুরাবে না যতক্ষণ না মানুষের উপর ইসলামিক নির্যাতনের অবসান না ঘটবে। চালিয়ে যান।
@সৈকত চৌধুরী,
ধন্যবাদ, আসলে আমারও তাই ধারনা। ইসলাম বিষয়ে যে কোন একটা লেখা সব সময়ই মুক্ত মনার ফ্রন্ট পেজে থাকাটা বাঞ্ছনীয় মনে করি কারন প্রতিনিয়ত নতুন পাঠক/পাঠিকা এখানে ঢু মারে। বিষয়টা তাদের দৃষ্টি আকর্ষণের জন্য এটা করা জরুরী।
@ভবঘুরে,
আপনি লিখেছেন –
“সাম্প্রতিক দিন গুলোতে কৃত্রিম জীবন সৃষ্টির যুগান্তকারী ঘটনায় যে টাল মাটাল কান্ড হয়ে গেল, সে ডামাডোলে নিতান্তই সাদা মাটা ও সবার কাছে পরিচিত বিষয় ইসলামে নারীর মর্যাদা বিষয়ক পর্বের ৩য় অংশ প্রকাশ করতে দ্বিধা দ্বন্ধে ভুগছিলাম
চলমান ঘটনাকে অস্বীকার করার উপায় নেই,আপনি লিখে যান।সম্প্রতি পত্রিকায়(আজকের প্রথম আলো) দেখলাম,জঙ্গি নেতা বাংলা ভাইয়ের উত্তরসূরি ৬ জন গ্রেফতার করা হয়েছে।তাদের যে কাছ থেকে অস্ত্র বা বোমা পাওয়া গিয়েছে তা অত্যাধুনিক। সুতরাং বাস্তবকে অস্বীকার করার কোনো উপায় নেই,যে এখনও এমন ইসলাম চর্চা হচ্ছেনা যেখানে সবায় নিশ্চিন্তে চলাফেরা করতে পারে। বাস্তব তা বাস্তবই বিজ্ঞান যতোই এগুক তারপরেও এসব ঘটনা ঘটছে। এমন অবস্থা হবে যখন বিপদ দোরগোড়ায় দরজা খটখটাবে তখনও অনেকেই বলবেন,পুরানো প্যাঁচাল ভালো লাগেনা।না লাগুক কারো বা কারো,আপনি লিখে যান। এই ভাবে যদি চেতনা আসে,কারোনা কারো,নিজের বিবেক কে একটু হলেও সান্তনা জানাতে পারবেন “চেষ্টা তো করেছিলাম”।
@একা,
আপনাদের মত সচেতন পাঠক/পাঠিকাই তো আমাকে লিখতে উৎসাহ যোগায়। লেখালেখি মূলত: সমাজের প্রতি দায়দ্ধতা থেকেই করি। অন্য সব জাতিগোষ্ঠি তর তর করে উপরের দিকে উঠতে থাকবে আর আমরা বসে বসে আল্লাহ খোদার নাম নেব, চল্লিশ দিনের ছিল্লায় বেরিয়ে মানুষকে আল্লাহর নামে তসবিহ টেপা শেখাব, আর যারা উন্নতির দিকে এগোচ্ছে তাদেরকে ঘৃনা করতে শেখাব, তাদেরকে জিহাদের জন্যে জঙ্গি করে তুলে ধ্বংসের দিকে ঠেলে দেব পরিনামে নিজেরাও ধ্বংসের দিকে ধাবিত হব, এটা তো আর বসে বসে দেখা যায় না। তাই নিজের যা সামর্থ্য সেটা দিয়েই চেষ্টা করে যাচ্ছি।