star-turtle

তামিলনাড়ুতে লোভি মানুষের ফাঁদে পড়েছিল অতি নিরীহ, ক্ষুদে ও সুদর্শন ৪৮০টি সোনালী রঙা তাঁরা কচ্ছপ। এর পর বাস-ট্রাক-ট্রেনে কয়েকশ কিলিমিটার যাত্রা হয়েছে তাদের। বস্তাবন্দীর দীর্ঘযাত্রা পথে অতি বিরল প্রাণীগুলোর আহার-বিহার-বিশ্রাম জোটেনি। এর পর বেনাপোল সীমান্ত দিয়ে সড়ক পথে বাংলাদেশে অনুপ্রবেশ ঘটে তাদের।

শেষমেষ গত ২৩ মে রাতে ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে এলে শুল্ক গোয়েন্দা বিভাগ উদ্ধার করে প্রাণীদের। নইলে বিরল প্রজাতির এই ৪৮০টি স্থল কচ্ছপের উড়াল দেওয়ার কথা ছিল সুদূর মালয়শিয়ায়! তাদের কথিত মালিক কাম পাচারকারী পীর মোহাম্মদ নামে এক ভারতীয় (তামিল) দুটি ব্যাগে কচ্ছপদের নিয়ে মালয়েশিয়া এয়ারলাইনসের একটি ফ্লাইটে (এমএইচ-১৯৭) যাত্রা করার চেষ্টা করছিলেন।

শুল্ক গোয়েন্দারা ওই চোরাকারবারীর বিরুদ্ধে বিমানবন্দর থানায় চোরাচালান ও বন্যপ্রাণী আটক করার অভিযোগে মামলা করেছেন। গ্রেপ্তারকৃত পীর মোহাম্মাদ পুলিশকে জানিয়েছেন, তামিলনাড়ু ছাড়াও ভারতের অন্ধ্র ও কর্ণাটক প্রদেশ থেকে এসব কচ্ছপ সংগ্রহ করা হয়েছে।

এর দুদিন পর ২৫ মে শুল্ক গোয়েন্দারা উদ্ধার করা তাঁরা কচ্ছপগুলোকে বন বিভাগের কাছে হস্তান্তর করেন। তবে দুঃখজনক, দীর্ঘ পথযাত্রা ও অনাহারে এরই মধ্যে ৫০টি কচ্ছপ মারা গেছে। বাদবাকী কচ্ছপগুলোকে বনবিভাগ পাঠিয়েছে কক্সবাজারের বঙ্গবন্ধু (সাবেক ডুলাহাজারি) সাফারি পার্কে।

এ বিষয়ে বন সংক্ষরক (পরিবেশ ও বন্য প্রাণী) ড. তপন কুমার জানাচ্ছেন, কচ্ছপগুলোকে এখন খাবার হিসেবে বরবটিসহ নানা ধরণের শাক-সব্জি সরবরাহ করা হচ্ছে। বিরল প্রজাতির প্রাণী হওয়ায় বন বিভাগ সিন্ধান্ত নিয়েছে কচ্ছপগুলোকে মুক্ত পরিবেশে না রেখে প্রদর্শনীর জন্য সাফারি পার্কেই রাখার। এ ছাড়া এসব প্রাণী এখন একই সঙ্গে চোরাচালান মামলার আলামতও।

তিনি বলেন, আমাদের ধারণা, চোরাকারবারীরা ট্রানজিট রুট হিসেবে বাংলাদেশকে ব্যবহার করে কচ্ছপগুলো স্থল পথে তামিলনাড়ু এলাকা থেকে এ দেশে এনেছিল। পরে তারা তাদের আকাশ পথে মালয়শিয়ায় পাঠানোর চেষ্টা করে। অ্যাকুরিয়ামে প্রদর্শনীর জন্য বিভিন্ন দেশে এ ধরণের কচ্ছপের ব্যাপক চাহিদা রয়েছে।

আরো পড়ুন: উইকিতে কচ্ছপ কাহিনী [লিংক]
৪৮০ দূর্লভ তাঁরা কচ্ছপ উদ্ধার সংবাদ [লিংক]
আন্ধারমানিক নদের পাড়ে কচ্ছপ নিধনের মহোৎসব! [লিংক]
মধুমতিতে মিললো ‘মুখপোড়া কাইট্টা’ [লিংক]

ছবি: দি ডেইলি স্টার।