৭ই মার্চকে কেন জাতীয় দিবস ঘোষণা করা হবেনা, সোহরাওয়ার্দি উদ্যানের যে স্থানটিতে দাঁড়িয়ে বঙ্গবন্ধু তাঁর ঐতিহাসিক ভাষণ দিয়েছিলেন সেখানে কেন একটি মঞ্চ নির্মাণ করে বঙ্গবন্ধুর তর্জনী তোলা ভাষ্কর্য স্থাপন করা হবেনা এ মর্মে সম্প্রতি হাইকোর্ট একটি গণ-আকাংখিত এবং কৌতূহলোদ্দীপক রুল জারি করেছেন। গণ-আকাংখিত কেন বলছি তার ব্যাখ্যা দেয়া প্রয়োজন বলে মনে করিনা। কারণ যে স্থানে যে মঞ্চে দাঁড়িয়ে ইতিহাসের মহানায়ক প্রথম বারের মতো বাঙ্গালীকে মুক্তির ডাক দিয়েছিলেন সে স্থানে সে মঞ্চে তাঁর একটি পূর্নাঙ্গ ভাষ্কর্য স্থাপিত হোক এটা মুষ্টিমেয় কিছু মানুষ ছাড়া গোটা জাতিরই প্রত্যাশা। কিন্তু কৌতূহলোদ্দীপক কেন ? হাঁ এই শব্দের ব্যাখ্যার দাবি রাখে। আর এর ব্যাখ্যার শুরুতেই এর কালিক প্রেক্ষাপটটি বিবেচনা করা প্রয়োজন । কখন মহামান্য হাইকোর্ট এই রুলটি জারি করলেন ? উত্তর, যখন বঙ্গবন্ধুর নিজের দল ক্ষমতায় আর স্বয়ং বঙ্গবন্ধুকন্যা ক্ষমতার শীর্ষে। এই রুলটি যদি পঁচাত্তর থেকে বিরানব্বই সালের মধ্যবর্তি কোনো এক সময়ে জারি হত তবে তাতে কৌতূহলোদ্দীপক শব্দটির ব্যবহার একেবারেই অপপ্রয়োগ বলে গণ্য হত। কারণ সেই সময়টিতে বঙ্গবন্ধু নামটি সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ ছিল। কোনো নিষিদ্ধ সময়ে যখন মানুষের স্বাধীনতা অপহৃত এবং মুখে স্কচটেপ সাঁটা থাকে তখন আদালত কারো আবেদনের ভিত্তিতে বা কখনো স্বতঃপ্রনোদিত হয়েই এ ধরণের রুল জারি করে থাকে। কিন্তু যখন বঙ্গবন্ধুর নিজের দল ও নিজ কন্যা ক্ষমতায় তখন কেন এ রকম রোল জারি করতে হবে ? কেন আদালতকেই ক্ষমতাসীনদের স্মরণ করিয়ে দিতে হবে আমাদের গৌরবময় ইতিহাসকে সংরক্ষণ করা প্রয়োজন। টানা দুই টার্ম ক্ষমতায় থাকার পরও কেন আওয়ামীলীগ এই উদ্যোগটি স্বপ্রনোদিত হয়ে নিতে পারলনা ? কেন আওয়ামীপন্থী একজন আইনজীবীকে সরাসরি দলকে উপেক্ষা করে বা পাশ কাটিয়ে সর্বোচ্চ আদালতের স্মরণাপন্ন হতে হলো ? সেই বিজ্ঞ আইনজীবী নিশ্চয় দলের কাছে এই দাবি তুলে ধরতে ব্যর্থ হয়েই আদালতের আশ্রয় নিয়েছেন। তাহলে প্রশ্ন জাগে কেন দল এমন উপলব্ধিতে যায়নি ? সেখানে কীসের অভাব ? সদিচ্ছার না সাহসের ? আওয়ামীলীগের সাহসের অভাব এটা মেনে নেয়া যায়না কেননা এই দলটিই অনেক বিশ্বমোড়লের তর্জনী উপেক্ষা করে যুদ্ধাপরাধীদের বিচার করেছে। দেশের সবচেয়ে উদ্যতশির যুদ্ধাপরাধীকে ফাঁসিতে ঝুলিয়েছে। বিশ্বব্যাংককে চ্যালেঞ্জ করে নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মার উপর ব্রীজ বানাচ্ছে। সুতরাং সেই দলের সাহস নিয়ে সন্দেহ করা বাতুলতা। তবে কি সদিচ্ছার অভাব ? আওয়ামী শীর্ষমহলে কেন এই সদিচ্ছার অভাব ঘটল তার কারণ খুঁজতে গেলে বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ প্রেক্ষাপটকে বিবেচনা করতে হবে।

প্রথমতঃ বর্তমান আওয়ামীলীগ সম্ভবতঃ এমন একটি শক্তির কাছে বাঁধা পড়ে আছে যে শক্তি চায় না বঙ্গবন্ধুকে দলীয় বৃত্ত থেকে বের করে সার্বজনীন করতে। এরা সেই শক্তি যারা জীবিত বঙ্গবন্ধুকে আশ্রয় করে তাদের নষ্ট সাম্রাজ্যের ভিত গেড়েছিল আজ এই একই শক্তিই মৃত বঙ্গবন্ধুকে তাদের বিজ্ঞাপনের মডেল বানিয়ে সেই সাম্রাজ্যকে বিশাল থেকে বিশালতর করছে। বঙ্গবন্ধু এদের জানতেন চিনতেন। তাদের দূর্নীতি চাটুকাবৃত্তিতে অতিষ্ট হয়ে ‘চাটার দল’ বলে অনেক শ্লেষাত্মক মন্তব্য করলেও শেষ পর্যন্ত এই চাটার দলেরই মায়াবী জালে বন্দি হয়ে বঙ্গবন্ধু তাজউদ্দিন আহমদের মতো দীর্ঘদিনের রাজনৈতিক সহযোদ্ধা ও স্বাধীনতাযুদ্ধের মতো একটি দুরূহ কাজের দায়িত্ব পালনকারীকে দূরে সরিয়ে দিয়ে খন্দকার মোস্তাকের মতো ইতিহাসের এক ঘৃণ্য চাটুকার এবং খল-নায়ককে কাছে টেনে নিয়ে সপরিবারে আত্নাহুতি দিয়ে এই ভুলের মাশুল দিয়েছিলেন। বঙ্গবন্ধুকে একক কোনো শক্তি হত্যা করেনি এর পেছনে ছিল দলের ভেতরের দূর্নীতিবাজ অংশ (যারা পূর্বেও সংখ্যায় গরিষ্ট ছিল আজও আছে) ছিল দল থেকে বেরিয়ে যাওয়া হঠাৎ বাম হয়ে ওঠা একদল উচ্চাভিলাসী এবং স্বাধীনতা বিরোধী দেশী বিদেশী চক্র। আওয়ামীলীগ সেই দূর্নীতি আর ভুলের বৃত্ত থেকে আজও বেরিয়ে আসতে পারেনি। দলটির সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের দলের ভেতর হাইব্রিড ও কাউয়াদের দেখতে পেলেও তৃণমূল থেকে শুরু করে শীর্ষ পর্যন্ত সদম্ভে বিচরণ করা দুর্নীতিবাজ চাটা ও তাদের বাল-বাচ্চাদেরকে দেখতে পাননা। অথচ সমগ্র জাতি দেখে বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় ব্যাংক ডাকাতটি তার বিশালাকৃতির ছবির কোনের দিকে বঙ্গবন্ধুর ছবি ছেপে ক্যাপসন দেয় ‘বঙ্গবন্ধুর সৈনিক। বঙ্গবন্ধুর ছবি নিয়ে একটি সবুজ বন উজাড়ে নামে কুখ্যাত বনখেকো রাক্ষসটি বা আস্ত একটি নদী গিলে খাওয়ার মিশনে নামে কুখ্যাত ভূমিদস্যুটি। এই চিত্র তৃণমূল পর্যন্ত প্রসারিত। ছোট থেকে বড় সকল দূর্নীতিবাজ এবং দুর্বৃত্ত ‘মুজিবসৈনিক’ তকমা লাগিয়ে তাদের কুকামগুলি করছে তাদের কেউ প্রতিহত করছেনা। সম্প্রতি ইউনেস্কো কর্তৃক বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ভাষণকে বিশ্ব ঐতিহ্যের স্বীকৃতি দেয়ার পর যে ঢাক-ঢোল পেটানো হচ্ছে তার ভেতরেও রয়েছে একই স্তাবকতার মানসিকতা। ইউনেস্কো ভাষণটিকে স্বীকৃতি দিয়ে অবশ্যই একটি সত্যকে মেনে নিয়েছে কিন্তু স্বীকৃতি না দিলেও এই ভাষণের ঐতিহাসিক আবেদন কিছুই কমত না। লেভ তলস্তয় নোবেল পুরস্কার পাননি বলে তার সাহিত্যমূল্য একচুলও প্রভাব পড়েনি। যারা একাত্তরের ক্রান্তিলগ্নে সেই ভাষণ শুনেছেন তারাই জানেন এর আবেদন তাদের চেতনাকে কতটুকু উদ্দীপ্ত করেছিল কিন্তু যারা এ নিয়ে মাত্রাতিরিক্ত লাফালাফি করেন তারা সেই চেতনাধারী নয় স্রেফ সুযোগসন্ধানী চামচা শ্রেণী। এই দূর্নীতিবাজ চাটুকাররা কেন বঙ্গবন্ধুকে সার্বজনীন করবে ? মৃত এই ব্যক্তিটি তাদের কুৎসিত মুখ ঢাকার প্রসাধনী যে। বঙ্গবন্ধু আপামর মানুষের হয়ে গেলে দুর্নীতিবাজ আর দুর্বৃত্ত-আকীর্ণ পুরো দলটিরই বে-আব্রু আর অসহায় হয়ে যাওয়ার আশংকা আছে।

দ্বিতীয়তঃ বর্তমান আওয়ামীলীগ আর বঙ্গবন্ধুর আওয়ামীলীগ এক জিনিষ নয়। বঙ্গবন্ধুর রাজনীতি ছিল পশ্চিমা শাসক শোষকদের বিরুদ্ধে যাদের প্রধান অস্ত্র ছিল ধর্ম। কিন্তু তিনি পশ্চিমাদের ধর্মাস্ত্রকে ধর্ম দিয়ে মোকাবেলা করেননি করেছেন ধর্ম নিরপেক্ষতা দিয়ে। কিন্তু বর্তমান আওয়ামীলীগ ধর্মকে ধর্ম দিয়ে মোকাবেলা করার নীতিই গ্রহণ করেছে। বিএনপি জন্মগতভাবেই রেডিকেল চরিত্রের কারণ কোনো সামরিক স্বৈরশাসকের চিন্তা দর্শন নিয়ে যে রাজনৈতিক দলের জন্ম হয় তাদের মূল শক্তিই হলো সমাজের ধর্মান্ধ শ্রেণী একই দর্শন স্বৈরশাসক এরশাদের ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য। আওয়ামীলীগ দেখছে সমাজে ধর্মান্ধ শ্রেণীর সংখ্যা বাড়ছে। এই ধর্মান্ধতা শুধু মুসলমানে নয় হিন্দুদের মাঝেও সমানতালে বেড়ে চলেছে কিন্তু এদেশে হিন্দুর আনুপাতিক হার কমে যাওয়ায় ভোটের হিসেবটি এখানে উলট-পালট হয়ে গেছে। হিন্দুকে ভোটব্যাংক হিসেবে আর আস্থায় রাখতে পারছেনা আওয়ামীলীগ তাই রাতারাতি তারা বিএনপি বা জাতীয়পার্টি থেকে অধিক ইসলামী রেডিকেল হওয়ার দিকে ঝুঁকে পড়েছে। বিএনপির ধর্মধ্বজা জামাতকে রুখতে এরা সম চরিত্রের হেফাজতে ইসলামের সাথে গভীর সখ্যতায় জড়িয়ে পড়েছে। শুধু আঁতাত করেই থেমে থাকেনি সেই চরম ডানপন্থী দলটির ধর্মদর্শন ধারণ করে তাদের সুদীর্ঘকালের ধর্মনিরপেক্ষতার আদর্শকে জলাঞ্জলী দিতেও তারা পিছপা হয়নি। এর প্রমাণ দেখা যায় শিশুপাঠ্যের শুদ্ধি অভিযানে। যে শিশুরা আমাদের ভবিষ্যত স্বপ্নের কান্ডারি তাদের পাঠ্য বই থেকে সকল মানবিক পাঠ মুছে দিয়ে সেস্থলে একপেশে পাঠ সংযোজিত করার অর্থই হলো তাদেরকে একটি পঙ্গু অসহিষ্ণু অমার্জিত অসংস্কৃত জেনারেশন হিসেবে গড়ে তোলা। আর সেই চরম নিন্দিত কাজটিই করেছে বঙ্গবন্ধুর আওয়ামীলীগ।

হেফাজতে ইসলাম এমনই এক পশ্চাদপদ শক্তি যাদের কাছে প্রতিকৃতিতো প্রতিকৃতি, শহীদমিনার জাতীয় স্মৃতিসৌধ ইত্যাদিই চরম বেদাতি স্থাপনা। সুযোগ পেলে এগুলি তারা ভেঙ্গে ফেলতেও প্রস্তুত। তাদের দাবির কাছে নতি স্বীকার করে সরকার সুপ্রীমকোর্ট প্রাঙ্গন থেকে ন্যায় বিচারের প্রতীক ভাষ্কর্যটিকে সরিয়ে নিতে বাধ্য হয়েছে। সুতরাং এমন একটি কট্টর দলকে সাথে নিয়ে আওয়ামীলীগ রেসকোর্সে বঙ্গবন্ধুর ভাষ্কর্য নির্মাণে পদক্ষেপ নেবে তা মনে হয়না।

তৃতীয়তঃ ভাষ্কর্য নির্মাণে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ব্যক্তিগত অভিপ্রায় এবং মানসিকতা একটি গুরুত্বপূর্ণ ফ্যাক্টর। আমরা সবাই জানি তিনি খুব ধার্মিক এবং পরহেজগার মহিলা। তিনি বিশ্বাসে যদি সনাতন ইসলামপন্থী হন তবে তাঁর কাছে প্রতিকৃতি মানেই শিরক মনে হওয়া স্বাভাবিক। মুসলমানদের আদি বিশ্বাস মতে প্রতিকৃতি সে মাটিরই হোক আর পাথরেরই হোক দেবতার হোক অথবা ব্যক্তির হোক তাকে প্রতিকৃতি বলা হোক অথবা ভাষ্কর্যই বলা হোক সবই মূর্তি সবই শিরক। যদিও কাগুজে প্রতিকৃতির সাথে তারা ইতোমধ্যে আপোস করে নিয়েছে বা নিতে বাধ্য হয়েছে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী যদি মূর্তি আর ভাষ্কর্যকে একই দৃষ্টিতে বিচার করেন তবে তিনি পিতার একটি মূর্তি নির্মাণ করে তাঁর আত্মাকে বিড়ম্বিত করতে চাইবেননা নিজেও অশেষ গোনাহর ভাগীদার হতে চাইবেননা এটাই স্বাভাবিক।

কিন্তু আমরা যারা রাজনীতির মারপ্যাঁচে বা ভোটের হিসেব নিকেষে নেই যারা স্বাধীনতার মূল আদর্শে বিশ্বাস করি এবং যারা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে সকল দলমতের ঊর্ধে স্থান দেয়ার পক্ষপাতি তারা চাই সোহরাওয়ার্দি উদ্যানে ভাষ্কর্যটি নির্মিত হোক। আদালত কর্তৃক আদিষ্ট হয়ে হলেও আওয়ামীলীগ এই কাজটি করুক। যেখান থেকে আমাদের হাজার বছরের স্বপ্নের পাখিটি পাখা মেলেছিল যেখানে আমাদের বিজয়ের ইতিহাস বাস্তবে মঞ্চস্থ হয়েছিল সেই স্থানের প্রতি ইঞ্চি মাটি আমাদের ইতিহাসের অংশ। সেই প্রতি ইঞ্চি মাটি সংরক্ষণের অধিকার রাখে। এখানে উদ্দেশ্যপূর্ণ বা উদ্দেশ্যবিহীনভাবে যতবড় যত গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনাই গড়ে উঠুকনা কেন তাকে অপসারিত করতে হবে। একাত্তরের ৭ মার্চ বঙ্গবন্ধু যে স্থানে যে মঞ্চে দাঁড়িয়ে সেই ঐতিহাসিক ভাষণ দিয়েছিলেন সেই স্থানে সেই মঞ্চে পৃথিবীর বিখ্যাত কোনো ভাষ্কর দ্বারা বঙ্গবন্ধুর একটি ভাষ্কর্য নির্মিত হোক। সেই ঋজু বুক টান করা তর্জনী তোলা মহানায়ক। যেন সেই ভাষ্কর্যের সামনে দাঁড়িয়ে পরদেশ পরসংস্কৃতিতে নতজানু মানুষগুলি নিজ ভাষা সংস্কৃতি নিয়ে সিনা টান করে দাঁড়াতে শেখে।

যে স্থানটিতে ঐতিহাসিক আত্মসমর্পনের দলিল স্বাক্ষরিত হয়েছিল সেই স্থানটিকে সেই ঐতিহাসিক চেয়ার টেবিল সহ স্বচ্ছ কাঁচ দিয়ে ঘেরাও করে রাখা হোক যেন সজ্ঞানে বা ভুল করে কোনো পাকিস্তানী পর্যটক এখানে আসলে দেখতে পায় তাদের এক উদ্যত দাম্বিক খুনী জেনারেল এইখানে এই চেয়ারে বসে মাথা নিচু করে তিরানব্বই হাজার সৈন্য সহ আত্নসমর্পনের দলিলে স্বাক্ষর করেছিল।

বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে ভারতের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শ্রীমতি ইন্দিরা গান্ধীর অবদান অনস্বীকার্য। সে সময় ভারতের প্রধানমন্ত্রী পদে শ্রীমতি গান্ধীর মতো সাহসী বিচক্ষণ নেত্রী না থাকলে আমাদের মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস হয়তো ভিন্নভাবে লেখা হত। ১৯৭২ সালে শ্রীমতি গান্ধী স্বাধীন বাংলাদেশ সফরে আসলে সমগ্র জাতির পক্ষ থেকে তাকে সম্বর্ধনা দেয়া হয়। সোহরাওয়ার্দি উদ্যানের যে স্থানে মঞ্চ তৈরি করে তাঁকে সম্বর্ধিত করা হয় সেই স্থানে শ্রীমতি গান্ধীর একটি দৃষ্টিনন্দন ভাষ্কর্য নির্মিত হোক যেন ভাষ্কর্যটি দেখতে ভারত থেকে পর্যটকেরা এখানে ছুটে আসেন। যেন তারা দেখতে পান আমাদের স্বাধীনতার মহান বন্ধুকে আমরা বিষ্মৃত হইনি। ভারতকে তাদের নিম্নমানের কয়লা পুড়ানোর ভাগাড় হিসেবে রামপাল উপহার দেয়ার চাইতে এটিই হতে পারে আমাদের দুইদেশের মৈত্রীর নান্দনিক এবং অর্থবহ প্রকাশ।