রোম নগরী যখন পুড়ছিল, রোম সম্রাট নিরো নাকি তখন নিরাপদ দূরত্বে বসে বাঁশী বাজাচ্ছিল। কথাটি শুনে আসছি সে ছোট বেলা থেকে। এটি কি সত্যই কোন ঐতিহাসিক ঘটনা, নাকি ফিকশান, তা আমি জানি না। সত্যি হলে তা কবেকার ঘটনা, ঘটনার প্রেক্ষিত কী, তাও জানার সুযোগ হয় নি। তবে বাক্যটি একটি বহুল প্রচলিত ঐতিহাসিক প্রবচনে পরিণত হয়ে গেছে। কোন ভয়াবহ কিংবা দু:খজনক ঘটনার প্রতিক্রিয়ায় কেউ আনন্দ উল্লাস করলে, এ বাক্যটি উচ্চারিত হয়ে থাকে। উক্তিটি শুনে প্রায়শ: ভাবতাম-এটাও কি সম্ভব? একটি রাজ্য পুড়বে, আর তার সম্রাট মনের আনন্দে বাঁশী বাজাবে?
বলা বাহুল্য, সে ঘটনা যদি সত্যও হয়ে থাকে, নিশ্চয় তা কোন বর্বর যুগের ঘটনা। কিন্তু আধুনিক স্বাধীন বাংলাদেশের দেশপ্রেমিক রাজনীতিবিদ, যারা ক্ষমতায় আছেন এবং যারা ছিলেন বা ক্ষমতায় যাবার স্বপ্নে বিভোর , তাদের আচরণ দেখলে মনে হয়, সত্যিইতো, রাজ্য পুড়লেও কোন কোন সম্রাট বা সম্রাজ্ঞীরা বাঁশী বাজাতে পারেন। আজ আমাদের দেশের আম জনগণ যখন অকারণে, বিনা দোষে বোমার আঘাতে প্রাণ দিচ্ছে, জীবন্ত অগিদগ্ধ হচ্ছে, পিষ্ঠ হচ্ছে যানবহনের চাকার তলে, রাজপথ, রেল পথ যখন অবরুদ্ধ চোরাগুপ্তা সন্ত্রাসী হামলায়, রোম নগরীর মত কেবল ঢাকা নগরী নয়, পুড়ছে যখন সারা বাংলাদেশ, তখন আমাদের তথাকথিত মূল দলের আপোষহীন দু-নেত্রী-যারা ইতোমধ্যে এদেশের অবিসংবাদিত সম্রাজ্ঞীর আসনে নিজেদের অধিষ্ঠিত করতে সক্ষম হয়েছেন-যাদের পদতলে এদেশের বড় বড় ডিগ্রিধারী তাবত রাজনীতিবিদরা কৃপা ভিক্ষায় নতজানু হয়ে জুহুকুম মহারাণী বলে গলা শুকিয়ে ফেলছেন-সে সম্রাজ্ঞীদের একজন মহানন্দে বিভিন্ন প্রকল্পের শ’য়ে শ’য়ে ভিত্তি প্রস্তর স্থাপন করে যাচ্ছেন, নিত্য-নতুন সুশোভিত পোশাকে, সভার পর সভায়, ঘন্টার পর ঘন্টা বক্তৃতা দিয়ে উন্নয়নের ফিরিস্তি দিয়ে। আর অন্যজন লোকচক্ষুর অন্তরালে শীততাপ নিয়ন্ত্রিত কক্ষে বসে জনবিচ্ছিন্ন গণআন্দোলনের একের পর এক ওহি নাজিল করে যাচ্ছেন। এত মৃত্যু, এত কান্না, এত আহাজারী, তাদের প্রাত্যহিক জীবনের সুখ-শান্তি ও ভোগ-বিলাসে এতটুকু ব্যাঘাত ঘটাতে পেরেছ বলে মনে হয় না। বরং একে অপরের প্রতি তীর্যক বাক্যবাণ বর্ষণ করে নিজেকে নিষ্কলুষ গণতন্ত্রী ও দেশপ্রেমিক ও জনদরদী দাবী করছেন। যে কোন ভাবে ক্ষমতায় টিকে থাকা কিংবা ক্ষমতায় যাওয়ার এক নির্মম নিষ্ঠুর খেলা খেলছেন। পুনর্বার নির্বাচিত হওয়ার কলা-কৌশল নির্ধারণ করছেন। বোমাবাজী নাশকতার মাধ্যমে নিরীহ জনগণের জীবন হরণ করে দিনের শেষে প্রেস ব্রিফিং করে স্বত:ফূর্ত আন্দোলনের জন্য হাঁদারাম জনগণকে অভিনন্দন জানাচ্ছেন। কেহবা জীবন বলিদানকারী জনতাকে তাদের জীবনের বিনিময়ে আন্দোলন প্রতিহত করার জন্য ধন্যবাদ জানানোর মত মশকারা করছেন। অথচ জনগণ প্রতিদিন প্রাণ দিচ্ছেন আমাদের নেত্রীদের ক্ষমতারোহন কিংবা ক্ষমতা রক্ষার বেদীমূলে। বোকারাম(?) জনগণ যেন ঐ সমস্ত সম্রাজ্ঞীদের ক্ষমতালিপ্সু রাজনীতির বলির পাঠা।
এর পরও কি আমরা জনগণ চুপ করে সবকিছু সহ্য করে যাব? ঢাকা মেডিকেল কলেজের বার্ণ ইউনিটের চিকিৎসাধীন অগ্নিদগ্ধা গীতা সেনের মত আমরা কেন জ্বলে ওঠে বলতে পারব না, আমরা তোমাদের খাই না, আমরা তোমাদের পড়ি না, আমরা তোমাদের বানাই। আমরা সুস্থ সরকার চাই।
প্রিয় জনগণ-দেশ মানে তো একটি ভূখণ্ড নয়। জনমানব ছাড়া কোন ভূখণ্ড দেশ হয় না। তাই দেশপ্রেম মানে দেশের মানুষের প্রতি প্রেম। আর সে মানুষকে জীবন্ত পুড়িয়ে যারা ক্ষমতায় যেতে চায় কিংবা ক্ষমতা ধরে রাখতে চায়, তারা কেহ দেশপ্রেমিক হতে পারে না। তারা ভণ্ড, তারা প্রতারক, তারা স্বার্থপর, লোভী। তাই রোমের মত কেবল ঢাকা নগরী নয়, সমগ্র বাংলাদেশ আজ যখন পুড়ছে, আমাদের জননেত্রী ও দেশনেত্রী দু’জন নিরুর মত বাঁশি বাজাচ্ছেন নিরাপদ দূরত্বে বসে।
কিন্তু আমরা জনগণ কেন সেটা মেনে নেব ? এ দেশতো কারো বাপ-দাদার মৌরসী সম্পত্তি নয়। এদেশ যোল কোটি মানুষের। আমরা যুদ্ধ করে এদেশ স্বাধীন করেছি-ইতিহাসের নজিরবিহীন আত্ম-ত্যাগের মাধ্যমে। এখানে কেউ রাজা-রাণী, আর কেউ প্রজা নয়। আমরা ষোল কোটি মানুষ এদেশের মালিক। দু’জন অবিবেচক, আত্মম্ভরী, মুখরা রমনীর জেদাজেদীর কাছে আমরা সবাই কেন এত অসহায় হয়ে পড়ব ?
কেহ কেহ দুই নেত্রীর মধ্যে সংলাপ-সমঝোতার মাধ্যমে নির্বাচনের কথা বলছেন। কিন্তু সংলাপ-সমঝোতার ফলে উভয় পক্ষের অংশ গ্রহণের মাধ্যমে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হলেই কি সমস্যার সমাধান হবে? নাকি নতুন করে সমস্যার শুরু হবে? যারা নির্বাচনে হারবে, তারা কি সে নির্বাচনের ফলাফল মেনে নেবে? তারা কি সংসদের যাবে? জাতি কি চলমান রাজনৈতিক সংঘাত থেকে, আদর্শহীন পরিবারতান্ত্রিক রাজনীতি থেকে মুক্তি পাবে? ইতিহাস বলে, না, তা কখনো হবার নয়।
তাই আসুন, আমরা জনগণ প্রত্যেক জেলায় জেলায় শহীদ মিনারে গণজাগরণ মঞ্চের মত সমবেত হয়ে আওয়াজ তুলি-যথেষ্ট হয়েছে, আর নয়। এবার তোমরা বিদায় হও! দুই জোট এর বিপরীতে জনগণের একটি বিকল্প জোট, যার নাম হতে পারে গণজোট, জনজোট বা এজাতীয় অন্য কিছূ, গড়ে তুলি। পরিবারতন্ত্রের বিপরীতে সত্যিকার গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ কায়েমের দিকে দেশকে এগিয়ে নিই। এ ছাড়া মুক্তির কোন বিকল্প নেই।
সত্যি বলতে গেলে, ঝলসানো নরমাংস ছাড়া এখন আর আমাদের রাজনীতিবিদদের নৈশভোজ জমে না।
সবকিছুই ঠিক ছিল, শেষে কি বললেন!!! সেই মাইনাস টু (-2) ফরমুলা??? গতবার নাহয় কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কেরানীকে বসানো হয়েছিলো, এবার কি বিশ্ব ব্যাংকের কেরানীকে ডাকবেন _ তবে দেটাকেই হারাবেন ।
দেশের এই দুই দল থেকেই ভালোকিছু বের করে আনতে হবে । নাহলে আম ছালা দুটোই যাবে ॥
খুবই চিন্তায় আছি। এখনই এই অবস্থা; ৫ তারিখের নির্বাচনের পর কি হবে ?
বিকল্প হিসেবে অর্থাৎ তৃতীয় পক্ষ যেই আসুক তাতে কোন কাজ হবে না…বরং সে ক্ষমতার বশীঁভূত হয়ে দেশে একটা অরাজকতা সৃষ্টি করবে…
আর আন্দোলন ! ……
সে সময় তো আমরা আগেই বিসর্জন দিয়ে এসেছি…
যখন সরকার সংসদে তত্তাবধায়ক ব্যাবস্থা বাতিল করল তখন সবাই কি জানত না যে ভবিষৎতে দেশে একটা অরাজকতার সৃষ্টি হতে পারে !…
সবাই এটা জানার পর ও কেউ আন্দোলন করেন নি…আর এখন আন্দোলন করে কাজ হবে মনে হয় না !!
অনেকে বলেন, একটা সামাজিক ও সাংস্কৃতিক আন্দলনের মাধ্যমে গনতন্ত্রের প্রয়োজনীয়তা এবং চাহিদা যখন একটা বৃহত্তর জনগোষ্ঠি অনুভব করতে সক্ষম হবে তখন সঠিক নেতৃত্ব তার জায়গা করে নেবে। সেটা একটা সময় সাপেক্ষ ব্যপার। লেখক যে সর্বজন বা মেজরিটি সমর্থিত দল গঠনের কথা বলেছেন, সেটা ভাল প্রস্তাব। কিন্তু মানুষের সেই আস্থা অর্জন কি একদিনে সম্ভব? তবে আমার মনে হয় দেশের সব দলগুলো এতটাই পঁচে গেছে, তাতে একজন ভাল ডিক্টেটর বা ফিলোসফার কিং-এর দরকার হয়ে পড়েছে, যে ক্রমান্বয়ে গনতন্ত্রের দিকে চলবে এবং শেষে দেশ যখন উপযুক্ত হবে তখন জনগনের প্রতিনিধির কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করবে।
@শাখা নির্ভানা,
এই কাজটাই যখন বঙ্গবন্ধু করতে চেয়েছিলেন তখন উনার কি পরিনতি হয়েছিল মনে আছে তো !!!
এখনো অনেক মানুষ “বাকশাল” শব্দটাকে অনেকটা গালি হিসেবে ব্যবহার করে ! :-Y
@তারিক,
এই ধরনের ডিক্টেটর বা ফিলোসফার কিং তখনই কাজ করতে পারে, যখন তাদের বৃহত জনগোষ্ঠির ভিতরে গ্রহন যোগ্যতা এবং জনপ্রিয়তা থাকে। তা না হলে ঐ শাসক শৈরাচার হয়ে যায়। আসলে দেশ স্বাধীন করা যতো শক্ত, দেশকে গড়ে তোলা, সঠিক পথে নিয়ে আসা তার থেকে বেশী শক্ত। এই শক্ত কাজটা এখন অপশক্তির হাতে। এমন একটা শক্তির কাছে এই পবিত্র দায়িত্বটা ছেড়ে দিয়ে আমদের ভবিষ্যত আমরা পিচ্ছিল করে ফেলছি, যে পিচ্ছিল পথের শেষ প্রান্তে অপেক্ষা করছে আমদের জন্য নরকের তলাহীন গহবর।
@শাখা নির্ভানা,
আচ্ছা তখন তো বঙ্গবন্ধুর জনপ্রিয়তা ছিল, কি বলেন আপনি?হয়ত তাঁর কিছু লোক কিছু খারাপ কাজ করেছে, আমি সঠিক জানি না যে শেখ সাহেব সেগুলো জানতেন কিনা।তবে স্বাধীন হবার ঠিক পর পরেই শেখ সাহেবের জনপ্রিয়তায় কতখানি ধ্বস নেমেছিল বলতে পারেন?
আমি যদিও বাকশালের সমর্থক নই, তবু কেন জানি আজ মনে হচ্ছে যে, গনতন্ত্রের নামে আজ যে বীভৎসতা শুরু হয়েছে, তার চেয়ে বাকশাল হয়ত ভালই ছিল। বঙ্গবন্ধু শাসক কেমন ছিলেন জানি না, নির্ভরযোগ্য কোন বই আমি পড়িনি ( যেমন ধরেন যে কেউ তাঁর একতরফা স্তুতি করেছে, আর কেউ দিয়েছে এক তরফা গালি), তবে নেতা হিসাবে তিনি অবশ্যই অসাধারন ছিলেন বলেই মনে হয়।
তাহলে বাকশাল গড়ার মাত্র কিছুদিনের মধ্যেই তিনি সপরিবারে নিহত হলেন কেন?র নাকি তাঁকে সাবধান করেছিল, আর তিনি কানে নেন নি এই বলে যে, বাংলাদেশের মানুষ তাঁকে মারবে না। এটা আমি তাঁর সরলতাই বলব, পাশাপাশি অদুরদর্শিতাও। তবে আমার বিশ্বাস যে বাকশাল আর যাই হোক, সামনে যে বি এন পি জামাত থ্রেট অপেক্ষা করছে বাংলাদেশের জন্য, তার চেয়ে বাকশাল যথেষ্ট ভাল ছিল( আমার ভুল হতে পারে)। অন্তত এতে তো আর যুদ্ধাপরাধীরা ক্ষমা পেয়ে যেত না ( আমি ভাবছি যে যদি সামনে বি এন পি জামাত ক্ষমতায় এসে এইসব যুদ্ধাপরাধীদের ছেড়ে দেয় রাষ্ট্রপতির ক্ষমা নামের নাটকের মধ্যে, তাহলে এটা হতে পারে আমাদের কফিনে ঠোকা শেষ পেরেক)।
তবে আমি জানিনা যে বঙ্গবন্ধু কন্যা এই কাজ পারবেন কিনা ( অবস্থা দেখে মনে হয় যে না পারারই কথা), সেক্ষেত্রে বিকল্প কাকে সাজেস্ট করা যায় বলতে পারেন? আমার নিজের মনে হচ্ছে যে সত্যি আমাদের দেশে একজন সৎ একনায়কের দরকার হয়ে পড়েছে। কামাল পাশা বা মাহাথির মহাম্মাদ এর মত কেউ একজন হয়ত। এমন কেউ কি এই দেশে এখন আছে?
( ড ইউনুস কে অবশ্যি বাদ রাখতে চাই আমি, আসলে নোবেল শান্তি পুরষ্কার নিয়েই ঘাপলা আছে বলেই মনে হয়, না হলে হেনরি কিসিঞ্জার নোবেল শান্তি পুরষ্কার পাবেন কেন, জিনি কিনা পাকিস্তানের লেজুড়বৃত্তি করতে গিয়ে মুক্তি যুদ্ধের সময় ৭ম নৌবহর পাঠিয়েছিলেন।
সোভিয়েট কে আমার পছন্দ না হলেও, সেই সময় তারা যদি ভারতের পাশে না দাঁড়াত তবে মুক্তি যোদ্ধা আর মিত্র বাহিনীর সম্মিলিত শক্তিও আমেরিকাকে ঠেকাতে পারত বলে মনে হয় না। আর আমেরিকার ব্যাপারটা যদি শুধুই রাশিয়াকে এক হাত দেখে নেয়া হয়, তবুও সমস্যা ছিল। চীন মনে হয় পাকিস্তানের পক্ষ নিয়ে ভারতের বিরুদ্ধে সত্যি যুদ্ধ শুরু করত, আর আপনি জানেন যে তখন ভারত এত শক্তিশালীও ছিল না। সেক্ষেত্রে যদি ভারতীয় সেনাবাহিনী বাংলাদেশ কে সাহায্য না করত, তবে ইয়াহিয়ার পেশাদার কশাই বাহিনীর সাথে সল্প মেয়াদের প্রশিক্ষন প্রাপ্ত মুক্তি যোদ্ধারা কত খানি পেরে উঠতো এতে আমার খুবই সন্দেহ আছে)।
@শাখা নির্ভানা,
সহমত।
কিন্তু স্বাধীনতার পর বাংলার মানুষের কাছে বঙ্গবন্ধুর জনপ্রিয়তা ও গ্রহন যোগ্যতা নিঃসন্দেহে ছিল আকাশচুম্বী। উনার আশেপাশের কিছু অসাধু মানুষের ক্ষমতা এবং অৰ্থের লোভের কারনে বঙ্গবন্ধুর সেই নিৰ্মম পরিনতি বরন করতে হয়, আর দেশটা চলে যায় রসাতলে। ঐ অপশক্তির হাতে ৰ্ধষিত হয়/হচ্ছে আমাদের মহান মুক্তিযুদ্ধ, মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও দেশগঠনের মূলনীতি।
শক্তির মত অপশক্তিকেও ধবংস করা যায় না, কিন্তু রুপান্তর ঘটানো সম্ভব !!
দেশের মানুষ যদি উপযুক্ত পরিবেশে(সময়ে) উপযুক্ত প্রভাবক হিসেবে কাজ করতে পারে তাহলে ঐ অপশক্তিরও রুপান্তর ঘটানো অবশ্যই সম্ভব। (O)
ধন্যবাদ ভাই।
কাকে চাইবেন বিকল্প হিসেবে…. এতো ঠক বাছতে গাঁ উজাড়ের অবস্থা । বাম বলুন আর বিকল্প জোটই বলুন …. সবাই তো ঠাকুর ঘরে কে রে, আমি কলা খাই না …।
@অসীম, বাংলাদেশ পুড়ছে-আর সম্রাজ্ঞীরা বাঁশি বাজাচ্ছেন! আর এরশাদ দেখাচ্ছেন ভানুমতির খেল!!
এই লোকটা দুনিয়াতে না থাকলে মনে হয় কিছু লোক হার্ট ফেইল করবেন। এই দুর্দিনে মানুষকে কিছুটা যদি হাসাতে পারেন তবে এই এরশাদ চাচ্চুই পারবেন, এবং পারছেন। এই মহান রোমিও তাঁর বিখ্যাত ডিগবাজীর মাধ্যমে চিরকালই লোক হাসিয়েছেন, এখনো হাসাচ্ছেন, ইনশাল্লাহ যতদিন বেঁচে আছেন ততদিন আমাদের বিনোদন দিয়ে যাবেন।
প্রথমদিন মনোনয়ন পত্র জমা দিয়ে। ২য় দিন নির্বাচন বর্জন করা, এবং তার পরে আবার যে কালকেই নিজের ভুল (!) বুঝতে পেরে আবার নির্বাচনের সিদ্ধান্ত নেবেন না, এবং তারপরের দিন আবার নতুন করে ভুল বুঝে আবার নির্বাচন বয়কট করবেন না, এমন আমি ভরসা করতে পারি না। আমি কাল প্রচুর হেসেছি। ধন্যবাদ এরশাদ কাকু কে। তাই আমরা বিকল্প হিসাবে এরশাদ কে ভোট দিতে পারি, আরো বেশি করে বিনোদনের পাশাপাশি, কবিতা পড়ার জন্য। তবে এতে কিছু টেকনিক্যাল সমস্যা আছে। এরশাদকে ভোট দিয়ে ক্ষমতায় তুললে মনে হয় এই দেশের মানুষদের দেশ ছেড়ে পালাতে হতে পারে, ( কবিতা পড়ার ভয়ে )। 😉
@দারুচিনি দ্বীপ, :clap
@দারুচিনি দ্বীপ, [img]https://fbcdn-sphotos-a-a.akamaihd.net/hphotos-ak-prn2/1467443_531081883655425_2126015384_n.jpg[/img]
@অসীম, হেফাজতী হুজুরের দোয়া প্রাপ্ত ব্যক্তি, হুহ তাকে নিয়ে মস্করা করতে নেই 😀 । তবে দাড়িটা যথেষ্ট লম্বা হয়নি। আরেকটু লম্বা না হলে শরিয়াহ কায়েম করতে সমস্যা হতে পারে ইনার জন্য 😉
@দারুচিনি দ্বীপ,
হাসি ঠাট্টার বাইর.ও কিন্তু এখানে চিন্তা করার ব্যাপার আছে। বাংলাদেশের রাজনীতিতে এরশাদের মত পতিত কমিক্যাল স্বৈরাচার, ‘৭১ এর চিহ্নিত ঘাতক দালাল চক্র খুবই গুরুত্বপূর্ন, এটা আমাদের গনতন্ত্রের চরম ব্যার্থতার আরেক প্রমান।
@আদিল মাহমুদ, সেতো অবশ্যই আদিল ভাই। তবে আমার কেন জানি মনে হয় যে এই রাজাকার চক্রের একটা নীতি আছে, আর এই নীতি বা আদর্শের জন্যই তারা এইসব জালাও পোড়াও করছে, আর বি এন পি যেন এদের বি টিমে পরিনত হয়েছে। আপনার নিশ্চয়ই মনে আছে যে এক রাজাকারের ফাঁসির আদেশের পর কি তান্ডব টাই না করেছিল জামাত। আর সরকার কেন জানি ঠেকায় নি, বা ঠেকাতে ব্যর্থ হয়েছে, সঠিক বুঝতে পারছি না। আর খালেদা জিয়া এইযে পুলিশের সাথে জামাতে সঙ্ঘর্ষ এবং এতে কিছু নিহতের ঘটনা কে ৭১ সালের মত আরেকটা গনহত্যা বলে অভিহিত করে প্রথম বারের মত টানা হরতাল দেয়া শুরু করে। এটা কি সাইদির রায়ের সময়ে না? ঠি মনে নেই; মনে হয় গো আজমের ৯০ বছরের কারাদন্ডের পর ( আসলে জামাই আদর বলেই মনে হয়; যেমন খানাদানার আইটেম দেখলাম) থেকে কেন জানি সব আগ্রহ ফিকে হয়ে এসেছিল।
এখানে আমরা সবাই কিন্তু দেখতে পাচ্ছি যে বি এন পি প্রত্যক্ষ ভাবেই এখনো জামাতের লেজ ধরে আছে! এটা কি শুধুই ভোটের রাজনীতি, নাকি এমন কিছু গোপন ব্যাপার স্যাপার আছে জা আমরা জানি না? আপনি কি মনে করেন?
আর এরশাদ লোকটা স্বৈরাচার কোন সন্দেহ নেই, কিন্তু এই লোকের অনেক অসংলগ্ন কথা অনেকদিন থেকেই শুনে আসছি তো। তাকে যখন উৎখাত করা হয়, আমি তখন খুবই ছোট। কিন্তু পড়ে এইসব ইতিহাস খানিকটা জেনেছি। আচ্ছা আপনি কি মনে করেন, এরশাদের এইসব ভেল্কিবাজীর পেছনে কোন জিনিস্টা কাজ করছে?শুধুই তো নিজেকে খেলো করার জন্য তিনি এইসব কান্ড করছেন বলে মনে হয় না, যদি সিরিয়াসলী চিন্তা করি। কারন পাগলও নাকি নিজের ভাল বুঝে, সেখানে এরশাদ মোটেও পাগল নন, বরং আমার মনে হয় যে তিনি অতিশয় ধুর্ত ব্যক্তি, সম্ভবত খালেদা বা হাসিনাদের চেয়েও অনেক বেশি চালাক এই লোক! তবে কেন এর এই অতিমাত্রার আনপ্রেডিক্টেবল আচরন বলতে পারেন?
কিসের আশায় সে নিজেকে টোপ হিসাবে ব্যবহার করে জনগণের থুতুর শিকার হচ্ছে? সত্যি ব্যাপারটা আমার খুবই আজব লাগে।কিন্তু সমস্যা হল যে যদি এই বিষয় নিয়ে কারো সাথে ( পরিবার, আত্মীয়-স্বজন , বন্ধু বান্ধব এরা) আলাপ করতে যাই, তবে শুনতে হয় যে খেয়ে দেয়ে আমি নাকি কোন কাজ পাচ্ছি না, আর তাই এই এরশাদ এর মত পাগল ছাগল, যে কিনা সকালে এক কথা বলে, আর সেটা সন্ধ্যায় লঙ্ঘন করে কেন তাকে নিয়ে চিন্তা করছি! আসলে কিসের আশায় এরশাদের এই বোকার অভিনয় করে যাওয়া আর জনগণ কে ঘোল খাওয়ানো ( আমার তাই মনে হয় যে এরশাদ আসলে বোকা সেজে আছে)? আর আমরাই বা কেমন? পত্রিকার পাঠকদের মন্তব্যগুলো অনলাইনে পড়লেই বোঝা যায় এইসব।
যদিও আমার সন্দেহ হয় যে এরশাদ আসলে অতি ধুরন্ধর লোক, কিন্তু এসব করে তার লাভ কি? আর তাছাড়া সে যদি লীগের সাথেই এই ঝামেলা না করে নির্বাচনে আসত, তবে নাম মাত্র হলেও সে প্রধান বিরোধী দলে পরিনত হত ( বি এন পি নির্বাচন বর্জন করলে), যেখানে কেন এই নাটক? ৯১ সাল থেকে নির্বাচন গুলোতে এরশাদ ৩য় দল হিসাবে কিন্তু একেবারে কম আসন পায়নি। ৩০ থেকে ৪০ এর মধ্যে হয়ত হবে সংখ্যাটা। সেক্ষেত্রে কি এই নির্বাচন নাটকে লীগ কে চটিয়ে এরশাদ কি কোনপ্রকার সুবিধা করতে পারবে, নাকি এটিও একটা নাটক মাত্র? আপনার মতামত আশা করছি এ ব্যাপারে। ধন্যবাদ।
@দারুচিনি দ্বীপ, আচ্ছা আদিল মাহমুদ ভাই, আরেকটা কথা ছিল। এইযে যুদ্ধাপরাধী রাজাকার চক্র, এরাই বেশি ভয়াবহ, নাকি এরশাদের মত স্বৈরাচার? অনেক দেশেই হয়ত স্বৈরাচারীরা পরে নির্বাচন করতে পারছে পরবর্তি তে, ( সঠিক জানা নেই) তবে যুদ্ধাপরাধীদের এইরকম জামাই আদরের নজীর মনে হয় বাংলাদেশ ছাড়া কোথাও নেই, কি বলেন আপনি?
আজো কি দুনিয়ায় নাৎসি শিকার চলছেই না? সেক্ষেত্রে বাংলাদেশে জামাত সেবা, বা ধর্মীয় রাজনীতির পরোক্ষ সমর্থক কিন্তু একেবারে কম নেই। আমি আগে ভাবতাম যে ৫% জামাত এমন কিবা করতে পারবে, তবে পরে মনে হয় কয়েকমাস আগে আপনার করা একটা মন্তব্য পড়ার পড়েই অনুভব করতে শুরু করেছি যে আমরা বেশ মোটা দাগে জামাত কে ভুল জাজমেন্ট করি, আর এটাই মনে হয় জামাতের বড় শক্তি, আর এটাকে কাজে লাগিয়েই জামাত সব লিমিট ক্রস করে ফেলেছে। ভবিষ্যতে বাংলাদেশের মানুষদের মনে হয় হুজুগ থেকে বেরিয়ে এসে বাস্তবের মাটিতে পা দেয়া উচিত!! না হলে কপালে শনির দশা আছে বলেই আমার মনে হয়।
আচ্ছা একটা অপ্রাসঙ্গিক কথা বলি কিছু মনে করবেন না, আর জানা থাকলে দয়া করে উত্তরটা দেবেন। আর সেটা হল যে সত্যি কি আমেরিকা তে হিটলারের ছবি নিয়ে র্যালী করা হয়? আর এটা মার্কিন সরকার সহ্য করে?
@দারুচিনি দ্বীপ,
কানাডা, আমেরিকাতে আমার জানা মতে হিটলারের ছবি নিয়ে মিছিল মিটিং করায় কোন আইনী বিধি নিষেধ নেই। সেখানে ইউরোপীয় বেশ কিছু দেশের মত হলোকাষ্ট ডিনাইয়াল এন্টি-সিমেটিক আইন নেই। তবে দাংগা বাধাতে পারে এমন যে কোন ধরনের চিত্র প্রদর্শনীই নিষিদ্ধ করা যেতে পারে।
এরশাদ আর রাজাকার বাহিনীর মাঝে আকাশ পাতাল তফাত আছে। এরশাদ মূলত নীচু শ্রেনীর অর্থ ও ক্ষমতা লোলুপ, লম্পট কিসিমের লোক। ক্ষমতা দখল/নিয়ন্ত্রনে সে নৃশংসতা কিছু দেখিয়েছে কিন্তু তা রাজাকার বদর বাহিনীর ধারে কাছে নয়।
রাজাকার বাহিনীর ঘটনা কিছুটা ভিন্ন। এদের মূল মোটিভেশন টাকা পয়সা বা ক্ষমতা এসবে ছিল না, যদিও মধ্য বা নীচু পর্যায়ে অবশ্যই এসবের লোভ স্বাভাবিকভাবেই এসে যায়। এরা ছিল মূলত এক ধরনের আদর্শ কেন্দ্রিক, সেই আদর্শের সাথে তারা কোন রকম আপোষে যাবে না। আজ পর্যন্ত বদর নেতাদের কাউকে ৭১ সালের জন্য বিন্দুমাত্র দূঃখিত লজ্জিত হতে দেখেছেন? দেখবেন না। এ কারনেই এরা বুক ফুলিয়ে বলতে পারে যা করেছি ঠিকই করেছি। যতই গাল দেন, কাজটা কত বড় সাহসের (স্বাধীন বাংলায় বুক ফুলিয়ে এসব বলা) সেটা চিন্তা করতে হবে। এ সাহস এরা প্রায় সেই আদর্শের কাছে। এরশাদকে জেলের ভয় দেখালেই সে দেখেন কেমন প্যান্টে হিসি করে দেয়। এ কারনে রাজাকার বদর বাহিনীর কাছে এরশাদ নস্যি।
একদল হল হিংস্র হায়েনা, এদের যতই আদর করে দুধ মাংস খেতে দেন এরা কোনদিন পোষ মানবে না, আপনি পেছন ফিরলেই আপনার গায়েই আরেক কামড় দেবে। আরেক জন হল নেড়ি কুকুরের মত, মাঝে মাঝে ভয় দেখানোর চেষ্টা করে, হাতে ইঁট নিলেই ভয়ে আধা মাইল ভেগে যায়।
বড় দুই দল ছাতা না ধরলে এরশাদের বাকি জীবন জেলেই কাটাতে হত। তার জাতীয় পার্টি বড় জোর ৯৬ এর নির্বাচন পর্যন্ত টিকতো। জামাতের জন্য সেভাবে বলা যায় না। এরা যেভাবেই হোক নিজেদের পথে ঠিকই করে নিতে পারে।
যুদ্ধপরাধীদের এভাবে দুধ কলা দিয়ে পুষে মোটা তাজা করায় সম্ভবত আমরাই ইউনিক। আমরা কেউ মহত্ব দেখাতে গিয়ে, য়ার কেউ বিপক্ষ রাজনৈতিক দলকে সাইজ করতে গিয়ে কি জিনিস পেলে পুষে বড় করেছি যা একদিন দেশের অস্তিত্ব ধরে টান দেবে তা দুই দলের কোন নেতাই বুঝতে পারেননি।
আমি বহুবারই বলেছি যে ৫% বলে জামাতকে তুচ্ছ তাচ্ছিল্য করটা অতি বড় বোকামী। এই ধরনের অদ্ভূত আবেগী দ্যান ধারনা মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের লোকেরই থাকে। জামাতিরা অনেক ম্যাচিউরড, তারা ৫% হলেও ঠিকই জানে ঠিক কি ঔষধ ব্যাবহার করলে শাহবাগের মত গনআন্দোলন তুংগে থাকলেও ভেংগে ফেলা যায়। সেই ঔষধ ব্যাবহারেই তারা টেক্কা মেরে গেছে, ট্রাম্প কার্ড দেখানো একেই বলে। সত্যিই, প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে এদের কাছে মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের শক্তি শিশু মাত্র। এখন আশা করি কিছুটা টের পাচ্ছেন ৫% লোকের ঝাল। ৫% এর চেয়েও বড় কথা ডেডিকেশন। ৫% ডেডিকেটেড লোক ৫০% হাফ হার্টেড লোকের চেয়ে শক্তিশালী। অবশ্য এটাও মনে রাখতে হবে যে এরা মোটে ৫% এমন কথাও ঠিক না। বিএনপি সমর্থকদেরও এক বড় অংশ মূলত জামাতেরই সমর্থক বলা খুব ভুল হবে না, আইডিওলজিক্যালি পার্থক্য খুব বেশী নয়। বিএনপি জামাত মিত্রতা কোনদিন দলের ভেতর থেকে চ্যালেঞ্জে পড়ে না, বরং বাহবা পায়। আগে যাও বা পেত, দিনে দিনে সে বাধার পরিমান শূন্য হয়ে গেছে। ‘৯১ সালেও ততকালীন ছাত্রদলে জামাতের সাথে মিত্রতা কেন্দ্র করে বড় ধরনের বিভাজন ছিল। এখন আর এসবের বালাই নেই। আমি বুঝি না এদের বাদ দিয়ে কিভাবে মুক্তিযুদ্ধের স্বপক্ষ শক্তি সেই গতবাধা ৫% জামাতি বুলি আউড়ে যায়। দূঃখের কথা হল যে আমার আশংকা এক দলীয় নির্বাচন যত এগিয়ে আসবে এরা আরো চরম সন্ত্রাস সৃষ্টি করবে, যা হয়ত এখনো শুরুই হয়নি। বিএনপিকেও এরা নির্বাচনে যেতে দিতে চাইবে বলে মনে হয় না।
@আদিল মাহমুদ,
এইটাই যদি জনতা বুঝত রে ভাই, তাহলে তো এই সমস্যার সমাধান অনেকটাই হয়ে যেত। আমরা যত না বড় বাঙ্গালী, তারচেয়েও বেশি আ'[লীগ আর বি এন পি। আর সবার আগে তো এক বিশেষ পরিচয় আছেই আর সেটা হল “আমরা আগে মুসলিম, পরে অন্য কিছু”। কাজেই জামায়তের প্রতি অবচেতন মনেই ভালবাসা থাকবে না কেন? এই “আগে মুসলিম পরে মানুষ” এই সম্প্রদায় যদি বুঝতো যে গরু ছাগল কোন ধর্ম পালন করে না, বরং ধর্ম পালন করে মানব সম্প্রদায়, সেক্ষেত্রে হয়ত তারা ভাবতে পারতো যে আগে মানুষ পরে মুসলিম বা অমুসলিম, আ’লীগ বা বি এন পি।
আমি ভাল করে লক্ষ করে দেখেছি যে এই দেশের তথাকথিত প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষায় শিক্ষিত লোক গুলোই শিক্ষার ( নাকি কু শিক্ষা?) গরমে এতটাই গরম থাকেন যে, গঠন মুলক কোন চিন্তা তো করতে পারেনই না, (বা করতে চায়ই না ) উলটা “আমি অশিক্ষিত না, কাজেই আমি ভালই বুঝি, এবং তোমার কাছ থেকে আমার জ্ঞান নেবার দরকার নেই” এই জাতীয় কথাবার্তা বলে থাকে; এরা বোঝেও না যে নিজেরাই কিভাবে নিজেদের সাথে প্রতারনা করে থাকে। শুধুমাত্র প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষাই যে প্রকৃত শিক্ষিত হবার মান দন্ড নয় এতাই বেশিরভাগ লোক বুঝতে চায় না, আর সবচেয়ে বড় কথা হল তর্কে শুধুই জিতে যেতে চায়!
কাজেই বোঝেন ঠ্যালা, এই যদি হয় আমাদের মানসিকতা, সেখানে আমাদের শেখাবে কে? কথায় আছে, ” চালাক শেখে দেখে, আর বোকা শেখে ঠকে”। আমরা যে ঠেক শিখিনা, সেখানে আমরা ঠিক কোন দলটিতে পড়ি বলেন তো? 🙂 কাজেই এই দেশ নষ্টদের দখলে যাবে না তো কোন দেশ যাবে ?
সেটা তো অবশ্যই তবে নেতারা বুঝতে পারেন নি আসলে নাকি বুঝতে চান নি, কারন এতে কোটি কোটি টাকা খরচ করে নির্বাচনে গিয়ে জেতার পরে, ৩০ হাজার টাকা সম্মানীর বিনিময়ে জনসেবা করতে গিয়ে সেখান থেকেই কি করে যেন ৩০ হাজার কোটি টাকার ( ইচ্ছে মত অঙ্কটা বসিয়ে নেবেন) মত বা তার কাছাকাছি টাকার মালিক বনে যান সেটা মনে হয় না আমরা কেউ বুঝি, বা বুঝলেই আমরা কি বা করতে পারি? ভোটের আগে এইসব নেতারা দোয়া নিয়ে যান; পারলে পায়ে ধরেন, নানা আশ্বাস দেন, শপথ করতেও বাদ রাখেন না, এবং নির্বাচন পার হয়ে গেলে, এদের টিকিও দেখা যায় না, আর শুরু হয় আমাদের পা ধরার পালা ( সাধারন মানুষরা অসাধারন দের পা ধরে)।
আর যেখানে বেশিরভাগ মানুষের কাছেই দেশের চেয়ে দল বড়, মানবতার চেয়ে ধর্ম পরিচয়ের ভিত্তিতে নির্ধারিত জাতীয়তা বোধ বড়, সোজা কথা মানুষের চেয়ে মুসলিম পরিচয়টাই অনেক অনেক বেশি বড়, সেখানে আমরা মার খাব না, কলুর বলদের মত ঘানি ঘোরাব না, তবে কারা ঘূরাবে?
আমরা আসলে বলির পাঠা বা কোরবানীর পশুর মত; পার্থক্য এক্টাই যে এইসব ধর্মীয় ব্যাপারে পশু কোনদিন ছুরির তলায় মাথা দিতে চায় না, আর আমরা স্বেচ্ছায় ছুরির তলায় মাথা দিয়ে দেই। এটাই মনে হয় আশরাফুল মাখলুকাত তথা সেরা সৃষ্টির বিশিষ্ট! :-s অথচ আমরা ভেবে দেখি না যে কোন অপরিচিত স্থানে গেলে অনায়াসে হিন্দু সাজতে পারে মুসলিম, আর মুসলিম সাজতে পারে হিন্দু, কেউ ধরতেও পারবে না। এমনতো না যে মুসলিম রক্ত লাল আর হিন্দু রক্ত সবুজ, যে মানুষ এটা দেখে ধরে ফেলবে!! কিন্তু এই কথা কাকে বুঝাতে যাবেন আপনি? যারা বুঝেও বুঝতে চায় না, তাদের মনে হয় না বুঝানো সম্ভব!! আমি বুঝব না তো আমাকে বুঝাবে কোন শা…. ।
সে আর বলতে? এই ৫% দেখেন সীতাকুন্ডতে কি করছে আর হুমকি দিয়ে রেখেছে যে সারা বাংলাদেশকেই তারা নাকি সীতাকুণ্ড বানাতে পারে। আগে এদের কথা বিশ্বাস করতাম না। এখন বুঝি যে এরা শুধু শুধু হুমকি দেয় না, এমনকি সারা দেশেও এইটা বাস্তবায়নের ক্ষমতা রাখে। এখন কথা হল যে এরা এই কাজ শুরু করলে বাংলাদেশের সরকার কি সেনাবাহিনী দিয়েও এদের সহজে মোকাবিলা করতে পারবে? যেখানে এদের বড়ভাইদের কে আফগানিস্তানে মোকাবেলা করতে গিয়ে NATO পর্যন্ত চুড়ান্ত বিজয় অর্জন করতে পারে নি?
আর তাই বড্ড ভয় হয়, কোনদিন হয়তো ঘুম থেকে উঠেই দেখব যে দেশটা রাতারাতি অন্য মেরুতে চলে গেছে!!
পারফেক্ট। একেবারে সঠিক কথা। তবে এইটা আমার নিজের বুঝতেই এতদিন লেগেছে, যেটা আপনি আগেই বুঝেছেন। আর আমার সমমনা বাকিরা বোঝার আগেই না জানি দেশের ক্ষমতা চলে যায় জঙ্গিদের হাতে।
আমার এই কথায় হয়ত অনেকেই ভাবতে পারেন যে আমার রজ্জুতে সর্পভ্রম হচ্ছে, কিন্তু যা শুরু হয়েছে, এতে আর শান্তিতে থাকতে পারছি কই?
এটাও সত্যি কথা, খুবই সত্যি কথা। যেখানে দেশের অন্তত ১ তৃতীয়াংশ মানুষ প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ ভাবে রাজাকারদের প্রতি প্রনয় ভাব নিয়ে থাকে, সেখানে আর কিবা বলার বা করার থাকতে পারে? এর মধ্যে যোগ হয়েছে কিছু নব্য গণতান্ত্রিক যারা কিনা এদের ভাবনাটা আরো বেশি উস্কে দিতে সাহায্য করছে, মানবাধিকারের কথা বলে। আমি আগেই বলেছিলাম যে আমি খুবই হতাশ, আর এইসব আদর্শ বাদী, আরো ভাল করে বলতে হয় যে ইসলাম পন্থীরা ( আমি জানি যে সব মুসলিম ইসলাম পন্থী না, কারন আমিও মুসলিম আর আমি ধর্ম নিরপেক্ষ) ক্ষমতায় গেলে কি হতে পারে, সেটা আমরা দেখেছি, অথচ জানি হিসাবে আমরা এতটাই দীনহীন হয়ে পড়েছি যে এর পরেও আমাদের চোখ খোলে না।
ঐযে আগেই বলেছিলাম বি এন পি হয়ে গেছে জামাতের বি টীম!! কাজেই এই জামাত একদিন বি এন পির ঘাড়ে চড়ে ক্ষমতায় এসেছিল, আজ তারাই বি এন পি কে নিয়ন্ত্রন করতে পারছে। এটাই যেন আমাদের গণতন্ত্রের সত্যিকার পরাজয়।
@দারুচিনি দ্বীপ,
কিছুটা ষড়যন্ত্র তত্ত্বের মত শোনায়, কিন্তু আমার ধারনা দুটি উক্তি অংগাংগি ভাবে জড়িত।
আমি এক সময় মনে করতাম যে মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস বিকৃতি জাতীয় কাজকাবার বিএনপি করে থাকে মুক্তিযুদ্ধের ক্রেডিট নিজ দলের ঝুলিতে ছিনতাই করতে। কিন্তু সম্প্রতি আমার এই ধারনায় চিড় ধরেছে। আমার মনে হয় এই কাজটা এই দল এতটা নিষ্ঠা এবং নির্লজ্জতার সাথে অন্য কারনে করে; সেটা হল ইচ্ছেকৃতভাবে মুক্তিযুদ্ধকে বিকৃত করা। আগে ছিল শুধু স্বাধীনতা ঘোষনা ছিনতাই। এখন কিন্তু আর তা না। তারা এখন ৩০ লাখ শহীদের সংখ্যা নিয়েও সংশয় প্রকাশ করে জামাতি কায়দাতেই।
সাঈদীর রায়ের পর সারা দেশে জামাতিদের তান্ডবের পর যখন পুলিশের গুলিতে কিছু মরে তখন তারা সেটাকেও তূলনা করে পাক হানাদারদের হত্যাকান্ড, হেফাজতিদের গায়েবী ম্যাসাকার হয় ২৫শে মার্চের গনহত্যার তূল্য……এসবের উদ্দেশ্য আসলে কি? কথায় কথায় কেন তারা এভাবে হাস্যকর ভাবে ৭১ টেনে খাটো করে? আমার ধারনা উদ্দেশ্য খুব সরল নয়। মূল উদ্দেশ্য ‘৭১ সম্পর্কে লোকের মনে অনাগ্রহ এবং অনীহা জাগানো, সকলকে ধারনা দেওয়া যে ‘৭১ এ আসলে মুক্তিযুদ্ধের স্বপক্ষ শক্তি যা যা ভয়াবহ সব ব্যাপার স্যাপার হয়েছে দাবী করে এর সবই আসলে ভূয়া। ৩০ লাখ শহীদের কাহিনী ভূয়া, ২৫শে মার্চ ম্যাসাকারও হেফাজতি ম্যাসাকারের মতই ভূয়া……
কথা হল উদ্দেশ্য কি? আমার ধারনা বিএনপি জামাত মিত্রতা শুধু ভোটের হিসেব নয় (সফিককে আমার পোষ্টে যেমন বলেছি)। এখানে তীব্র আদর্শিক মেলবন্ধনের ব্যাপার আছে। কেহ বা কাহারা (আমি নিজেই নিশ্চিত নই এরা ঠিক কারা) চায় বাংলাদেশ থেকে মুক্তিযুদ্ধের আদর্শ নাম ব্যাপারটি চিরতরে ধ্বংস করতে, সমস্যা হল কাজটি দ্রুত সংবিধান সংশোধন করে করার মত নয়, তাই স্লো পয়জনিং এর মাধ্যমে এগুতে হচ্ছে দীর্ঘ পরিকল্পনার মাধ্যমে। বিএনপি জামাতের রাজনীতির অন্যতম বড় বাধা হল এই মুক্তিযুদ্ধের আদর্শ, তাই এই জোটের জন্য এর বিরুদ্ধে নামা ছাড়া তেমন গত্যন্তর নেই। ধর্মনিরপেক্ষ ধারার শক্তির উতস ঠেকাতে হলে এর বিকল্প নেই। আরেক থ্রেট হল সংখ্যালঘু সম্প্রদায়, তাদের তো ২০০১ সালে যেভাবে সাইজ করা হয়েছে জানেনই, এবার এই জোট জয়লাভ করলে ২০০১ সালকেও ছাপিয়ে যাবে। এরা আর তেমন সমস্যা নয়। নীচে দেখেন বলেছি কিভাবে বিএনপি জামাত জোট দিনে দিনে অটূট হয়ে দাঁড়িয়েছে। বিএনপির সাধারন সমর্থকরাও বেশীরভাগই ডানপন্থী ধারার (বলতে গেলে সকলেই)। ওনারাও ভারত বিরোধীতা কিংবা ভারতের/হিন্দুর দালাল ধর্মনিরপেক্ষ ধারার আওয়ামী লীগ নিশ্চিহ্ন করার কার্যে মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস বিকৃতি করনে খুশীমনেই সায় দেবে।
এরশাদ কিছু না। তার মূলনীতি হল সে কিছুতেই জেলে যেতে চায় না। ভোটের আগে সে নিশ্চিত হতে চায় কোন দল জিতবে, সে থাকনে বিজয়ীর দলে যাতে জেলে যেতে না হয়। দুই দলই এই ভয় দেখিয়ে তাকে হাতে রাখে। এরশাদের দোনোমনো দেখে এখনো বোঝা যায় যে সে নিশ্চিত হতে পারছে না সামনের দিনগুলিতে কি হতে যাচ্ছে। সত্য বলতে তার নির্বাচনে আসার সংবাদে আমি বুঝেছিলাম যে আওয়ামী লীগের অবস্থা যতটা খারাপ ভাবছিলাম সম্ভবত অতটা খারাপ অবস্থা নয়।
@আদিল মাহমুদ,
সত্যি কথা। কাজেই আর বুঝতে নাকি থাকে না যে এদেশের আসলে পক্ষ মাত্র দুটি, একটা হল স্বাধীনতার পক্ষের, অন্যটা বিপক্ষের। আরো ভাল করে বলতে গেলে বলতে হয় যে মুক্ত মন বনাম ধর্মীয় মৌলবাদের মধ্যের দ্বন্দ। আজ যে আওয়ামী নেতারা টুপি মাথায় দিয়ে ঘোরেন, সেটা মনে হয় সাধ করে না। এনারা বুঝে গেছেন যে এই সমাজে টুপি পরে চুরি করাও জায়েজ।কিন্তু টুপি ছাড়া মানুষের ভাল চিন্তা করতে গেলেও দোষ হয়ে যায়।
একেবারে সঠিক কথা, আর সাইদিকে চাঁদে দেখার খবর যেখানে অনেকে বিশ্বাস করে, সেখানে আর বুঝতে বাকি থাকে না যে দেশটা প্রায় রসাতলে চলে গেছে।
আর দেখেন খালেদা জিয়া বি এস এফের গুলিতে যে বিজিবি ( তখনকার বি ডি আর) সদস্যদের কে বীর শ্রেষ্ঠ খেতাবে ভুষিত করার জন্য আন্দোলন করেন; যেন বীর শ্রেষ্ঠ খেতাব এতই সস্তা, যে সীমান্ত সঙ্ঘর্ষে ( যেহেতু ঘটনাটা ভারত সীমান্তে) হলেই বীরশ্রেষ্ঠ দেয়া যেতে পারে, যেখানে মুক্তি যুদ্ধের সময়েই মাত্র ৭জন পেয়েছেন এই সর্বোচ্চ সম্মান। কি নগ্ন ভাবেই না তাদের হেয় করা হয়েছে আর সেই সাথে অন্যসব মুক্তি যোদ্ধাকেও !
এখানে আর কি বলব, যেখানে মুক্তি যুদ্ধের আদর্শ আর চেতনা নয়ে খোদ মুক্ত মনা ব্লগেই এমন কিছু লেখা আর মন্তব্য পড়তে হয়েছে যেগুলো ছিল মোটামুটি বিদ্রূপাত্মক ( নাম ধাম বলব না, আপনি নিজেই দেখেছেন ব্যাপারটা) যে তাতে মাথা ঘুরে গেছে পুরোপুরি, সেখানে অন্যদের আর কি বা দোষারোপ করব?
সেটা তো অবশ্যই। অমুসলিমরা আদৌ মানুষ নাকি? সংখ্যালঘু, আরো পরিষ্কার ভাষায় বলতে গেলে হিন্দু সম্প্রদায়ের প্রতি এইরকম বিজাতীয় বিদ্বেষ মনে হয় না আগে এতটা বেশি ছিল। যেটা শুরু হয়েছে নতুন শতাব্দীতে। যেখানে সবাই ধর্মের ভেদাভেদ ভুলে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে এগিয়ে যাচ্ছে মানবতার বিজয়ের জন্য, সেখানে আমরা মুসলিম রা আজো পড়ে আছি সেই মধ্য যুগে। একজন মুসলিম হিসাবে আমি এইসব নিয়ে খুবই অস্বস্তি অনুভব করি। কাজেই এবার ক্ষমতায় যদি এইসব সাম্প্রদায়িক শকুন রা চলে আসে, তবে মনে হয় না এই দেশে হিন্দু সম্প্রদায়ের কপালে ভাল কিছু আছে।
২০০১ সালে আমার সবচেয়ে যেটা মনে বাজে, সেতা হল পুর্ণিমা ধর্ষন। এবং তারপরে এটাকে সরকারী ভাবে অস্বীকার করা ( তাই নয় কি? ভুল হলে সংশোধন করে দেবেন প্লিজ, অনেকদিন আগের কথা, কিছু ভুল হতে পারে) হয়, এবং এর প্রামান্য চিত্র ধারন করার অপরাধে (!?) শাহরিয়ার কবির কে রিমান্ডে অমানুষিক নির্যাতন সইতে হয়। সেই সময় আমি নিজে আমার পরিচিত প্রায় প্রত্যকে বি এন পি সমর্থক কে ( আমার কথা হয়েছে অবশ্যই আমার সমবয়সী বা দু এক বছরের বড়দের সাথে) বলতে শুনেছি যে, ৭১ সালে জন্মালে নাকি তারা রাজাকার হত, কারন তখন যেহেতু দেশটা ছিল পাকিস্তান, আর তাই রাজাকাররা দেশের (?) সমর্থন করে দোষের কিছু করেনি ! শিউরে উঠতে হয় এইরকম কথা শুনলে। যেসব ছেলেমেয়েদের বয়স সেই সময় ছিল ১৮ বছরে আশে পাশে ( কিছু কম বা বেশি) , তারা কিভাবে কোন প্ররোচনায় এইসব কথা বলে? এমনি এমনিতে আর বলে না, পরিবারের পাওয়া শিক্ষাটা থেকেই বলে। এদের মুখে আর এইসব শুনি না। এখন বড় হয়ে গেছে না, কাজেই হিসাবে করে কথাবার্তা বলে, কিন্তু দিল মে তো পাকিস্তানীই রয়ে গেছে অনেকে।
তবে এইটুকু বলতে পারি যে আমাদের এই প্রজন্মের কৃতকর্মের ফল ভোগ হবে আমারদের পরের প্রজন্ম কে। আমরা যেটা শিখাব, আজ আমাদের ছোট ভাই বোনেরা, আর ভবিষ্যতে আমাদের ( আমার প্রজন্মের কথা বলছি) সন্তানরা সেটাই মাথায় নিয়ে বেড়াবে। সেখানে আমরা যদি কিছু কোমল মতি শিশুকে এইভাবে প্রোগ্রাম করা শুরু করি, তবে মনে হয় না এদের মাথা থেকে সেই ভুত সহজে নামবে। আর সাথে আছে সেই প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষার দেমাগের ঠ্যালা।
মুক্তি যুদ্ধের বীরঙ্গনারা যেমন আমাদের পুর্বপুরুষদের ক্ষমা করবেন না, তেমনি পুর্নিমার মত এই যুগের বিরঙ্গনারা ক্ষমা করতে পারবেন না, আমাদের কে। কারন পুর্নিমার বয়সী বোন কিন্তু আমাদেরও আছে। অথচ পুর্নিমা কে আমাদের সিংহভাগ কেন বোন ভাবতে পারলাম না, কেন তার প্রতি ন্যায় বিচার করলাম না? শুধু কি সে হিন্দু বলে?
সেক্ষেত্রে আমার নিজের প্রজন্মের প্রতি আমার এক্টাই মেসেজ থাকবে আর তা হল, কাল নির্যাতিতা হয়েছে আমার বোন পুর্ণিমা হিন্দু পরিবারে জন্ম নেবার অপরাধে (!), সেই দিন আর বেশি দূরে নেই, যেদিন আমাদের নিজদের বোনদেরও ( মুসলিম পরিবারে জন্ম হবার পরেও) সম্ভ্রম হানী করতে বাধবে না হয়ত এইসব শকুন দের । আর সেইদিন আমাদের বুকফাটা আর্তনাদ ( যা কিনা এখনও শুধুই স্বজাতিকে ( ধর্মীয়) কেন্দ্র করে আবর্তিত হচ্ছে, শুনে কি কারো মনে কোন সহানুভুতি জাগবে, নাকি জাগা উচিত? বাইবেলের নহুম অধ্যায় পরেছেন না?
” ধ্বংস হোক সেই রুধিরাক্ত নগর, মিথ্যা আর লুন্ঠনে ভরা নগর; শিকার তো পালিয়ে যায় না। …. সবাই তোমার এই ধ্বংসের কথা যে শুনবে, সেই দেবে করতালি, এমন কে আছে যারা তোমার দুষ্প্রবৃত্তির নির্যাতন ভোগ করেনি?”
আমাদের কপালেও এমনটা জুটতে পারে, যদি আমরা এখন থেকেই মানুষেকে মানুষ না ভেবে মুসলিম, হিন্দু খ্রিষ্টান ভাবতে থাকি!
এতাই অদ্ভুত তাই না আদিল মাহমুদ ভাই? ভারতকে ছাড়া আমরা নড়তে চড়তে পারি না, অথচ দেখেন কি বিজাতীয় বিদ্বেষ ভারতের প্রতি। আর মুক্তি যুদ্ধের ইতিহাস? যদি দেশের অর্ধেক লোকই এটা নিয়ে মাথা না ঘামায় আর টিপ্পনী কাটে মুক্তি যুদ্ধের চেতনাটা কে, সেখানে আমি তো কেয়ামতের আলামত স্পষ্ট দেখতে পাচ্ছি।
মুক্তি যুদ্ধের চেতনাটা যে আসলে ধর্মনিরপেক্ষ চেতনা, সেইটা কি এরা বুঝেও বুঝে না? কিছু গর্দভ মৌলবাদী মুসলিম এইসব না বুঝতে পারে সাম্প্রদায়িকতার ঠ্যালায়, কিন্তু কিছু তথাকথিত প্রগতিশীল রা কি এটা বুঝে না? আর বুঝে না যে ধর্ম পালন করা বা না পালন করার স্বাধীনতা সব কিছু ব্যক্তির ইচ্ছায় হওয়া উচিত, কোন ভাবেই রাষ্ট্রীয় পর্যায় না, আর এই ধর্ম নিরপেক্ষ চেতনাটা আসলে এই দেশের তথা পুরা মানবজাতির জন্যই কত বেশি জরুরী? নাকি বুঝেও না বোঝার ভান করে?
যদি এটাই হয় তবে আমি তো কিছু ভেকধারী প্রগতিশীলদের কে, প্রতিক্রিয়াশীলদের চেয়ে অনেক বেশি দোষ দেব। প্রতিক্রিয়াশীল রা না হয় প্রোগ্রামড হয়ে আছে, কিন্তু অন্য পক্ষ? এরা তো সেই সমস্যা দ্বারা আক্রান্ত নয়। আমি আর বুঝতে পারছি না যে কি বলব। শুধু এটুকুই বলতে চাই যে সব কিছুরই একটা সীমা নির্ধারন করে দেয়া উচিত, সেখানে আমাকে যদি শুনতে হয় যে এই সীমানাটা কে নির্ধারন করবে, কোনটাকে গোল্ডেন স্ট্যান্ডার্ড বলা হবে, সেক্ষেত্রে আমি সেই প্রশ্নের জবাব দিতে অক্ষম।
শুধু এটুকুই বিশ্বাস করি যে কোন কিছু নিয়েই খুব বেশি মাতামাতি করাকে আমি কাজের কাজ মনে করি না ( যে কোন কিছু, ব্যক্তি স্বাধীনতাও এর মধ্যে অন্তর্ভুক্ত)
@আদিল মাহমুদ,
🙂 আপনার কথাটা খুবই সত্য, সাথে দেখেন আমার কালকের করা অনুমানটাও মিলে গেছে। হয়ত আমার আগেই খবরটা পড়ে ফেলেছেন, তবু ইনকেস যদি মিস করে থাকেন তাই লিঙ্ক দিলাম আবারো প্রথম আলোর ।
সরকারের সঙ্গে দর কষাকষিতে এরশাদ
সেই এরশাদই এখন রাজনীতির কেন্দ্রে
মানে আমার অনুমানটাও হয়ত সঠিকই ছিল । আমি যেমন্টা বলেছিলাম 😀
দেখি এখন কোথাকার জল কোথায় গিয়ে দাঁড়ায়। :rotfl:
@আদিল মাহমুদ, গ্রেপ্তার হলে আত্মহত্যার হুমকি এরশাদের
সময় করে এখানে একটা ঢুঁ মারবেন দয়া করে 😉
@দারুচিনি দ্বীপ,
বহু আগেই দেখছি। সে গ্রেফতার হয়ে জেলে গেলেও বলবে আমি তো ট্রিগার টেনেছিলাম, গুলি বাসি হয়ে গেছিল, ফুটেনি। গুলি না ফুটলে আমি আর কি করতে পারি।
@আদিল মাহমুদ,
:hahahee: :hahahee: :lotpot:
আর এরশাদ সাহেব সার্কাস দেখাচ্ছেন। আচ্ছা মনোনয়ন পত্র জমা দেবার একদিন পরেই কেন নির্বাচন বর্জন করলেন তিনি! কয়েকদিন সবুর করলেই পারতেন। আমার কেন জানি মনে হয় এই এরশাদ চাচা দু এক দিনের ভিতরেই আবার নির্বাচনে যাবার ঘোষণা দেবেন, আর তারপর আবার প্রত্যাহার। এই দুর্যোগের দিনে এরশাদ সাহেব কিছুটা বিনোদন দিতে পারছেন, এতে কিছুটা উপকার হচ্ছে আর তা হল, প্রান ভরে হাসতে পারছি!! আমি এই লোকের উপর কোনদিন রাগ করি না, কারন এই কৌতুকাভিনেতা না থাকলে আমরা যে হাসতে ভুলে যেতাম 😀 ( দেশের এই অবস্থায়)
সবশেষে রাজনৈতিক দলের ঘোষণা লেখাটির ভাবকে বিপন্ন করেছে। বিশেষ করে লেখক যখন একজন রাজনীতিবিদ।সুনির্দিষ্টভাবে বললে গণফোরাম তো করেছেনই।
@গীতা দাস,
বেলুন তো ফুটো করে দিলেন দিদি…… :lotpot:
Pants on fire নামে একটি বাগধারা শুনে এবং ব্যবহার করে আসছি সে ছোট বেলা থেকে। এটি কি সত্যই কোন ঐতিহাসিক ঘটনা, নাকি ফিকশান, এটি ঠিক কখন থেকে ইংরেজি ভাষায় ব্যবহৃত হয় তা আমি জানি না…………… যদিও এখন এটি রাজনৈতিক ব্যাপার স্যাপার বোঝানোর জন্য ইলেকট্রনিক মিডিয়ায় বড্ড ব্যবহৃত হয় 😉 😉 😉
@গীতা দাস,
কিন্তু দিদি, সংকটাত রাজনৈতিক। চলমান রুগ্ণ রাজনীতির বিপরীতে সুস্থ ধারার বিকল্প রাজনীতি ছাড়া এ সংকট থেকে উত্তরণের কোন উপায় আছে কি?গণফোরাম তো সুদীর্ঘ ২০ বৎসর ধরে সে চেষ্টা করে যাচ্ছে,একা পারছে না। সমমনা আরো সংগঠন,ব্যাক্তির ঐক্য অপরিহার্য।
ক্ষমতা নিয়ে কমড়াকামড়িরত নেতানেত্রীদের গায়ে আগুন দিয়ে দেখা যেতে পারে আগুনে বেগুনপোড়া হতে তাদের কেমন লাগে।
রোম পোড়ার সময় সম্রাট নীরোর বাঁশি বাজানোর কাহিনী নাকি নিছকই গুজব এমন একটি ইতিহাস ভিত্তিক লেখা কোথায় পড়েছিলাম। উনি নাকি আদৌ তখন রোমেই ছিলেন না ইত্যাদী নানান ঐতিহাসিক তথ্য……। এতে কিছু যায় আসে না, কারন গল্পটার অন্তর্নিহিত তাতপর্যের কাছে ইতিহাসের তেমন গুরুত্ব নেই।
বাংলাদেশে বর্তমানে যা চলছে তা বাইরে থেকে কেউ দেখলে চরম আতংকিত এবং একই সাথে বিস্মিত হবে যে এই অবস্থাতেও কিভাবে সাধারন জনতা এখনো এটা স্বাভাবিক আছে। এর কারন মনে হয় এই চক্র আমাদের দেশে নিয়ম করেই আসে, তাই মানুষের কাছে এসবই স্বাভাবিক। কিছুটা অস্বাভাবিক হল আন্দোলনের নামে মানুষ পোড়ানোর উদীয়মান সংস্কৃতি, এটাও সম্ভবত স্বাভাবিক হয়ে যাবে।
আপনার কথা ঠিক, সমঝোতা জাতীয় কিছু হয়ে হয়ত বা সব দলের অংশগ্রহনেই নির্বাচন হবে, তাতেও পরিস্থিতির এমন কিছু উন্নতি হবে না। অনেকের যেমন ধারনা দুই দলের নেত্রী আলোচনায় বসলেই ম্যাজিক সমাধান বা দুই নেত্রী বাদ হয়ে গেলেই (আপনি যেমন পরিবারতন্ত্রের অবসান চাচ্ছেন) সব মুশকিল আসান ব্যাপার তো অত সহজ না।
মৌলিক গনতান্ত্রিক চেতনারই অভাব থাকলে পরিবারতন্ত্র ফন্ত্রের দোষ দিয়ে কিছু হবে না। আজকের এই অবস্থা হঠাত করে একদিনে হয়নি বা কেবল নির্বাচন সংগঠন নিয়ে হয়নি। অন্ধ দলপ্রেম, দল বিদ্বেষ, গুজবের ওপর ভিত্তি করে মেতে ওঠা, রাজনীতিতে ধর্মের মিশেল দিয়ে কৃত্রিম ইস্যু তৈরী করা এই জাতীয় মৌলিক বৈশিষ্টাবলী গনতান্ত্রিক পরিবেশ বিকাশের পরিপন্থী। এসব থেকে নিস্কৃতি না পেলে দল, নেতা/নেত্রী, সরকার ব্যাবস্থা বদল এসব কোন কিছুতেই কিছু আসবে যাবে না।
আমাদের দেশে গনতান্ত্রিক পরিবেশ আসলে কোনকালেই ছিল না। দুই দলের সমর্থকদের মাঝেই এখন চরমপন্থী মনোভাব তুংগে। সামনের দিনগুলি হবে আরো কন্টকময়।