আমি একজন সাম্প্রদায়িক বলছি। হ্যাঁ, আমি একজন ধর্মীয় সংখ্যালঘুর প্রতিনিধি হিসেবে সাম্প্রদায়িক ব্যক্তি বলছি। তবে আমার মনের এ ধারণাটিকে কেউ কেউ আমার ক্ষোভের ও হতাশা্র বহিঃপ্রকাশ, কিংবা অলস মস্তিষ্কের অনুর্বর ভাবনা, অথবা সাম্প্রদায়িক মনোভাবের প্রতিফলন মনে করতেই পারেন। আমি অবশ্য মনে করি এটা আমার জীবনাভিজ্ঞতার ফসল। বিভিন্ন দৃষ্টিকোণ থেকে দেখলে আমরা প্রত্যেকে সাম্প্রদায়িক এবং আমি নিজেও। তা না হলে বাংলাদেশে ধর্মীয় সংখ্যালঘু নির্যাতন হলে আমি অসহায় বোধ করি কেন? নারী নির্যাতন হলেও, মানবাধিকার লংঘন হলেও অসহায় বোধ করি। তবে ধর্মীয় সংখ্যালঘু নির্যাতন হলে আরও বেশি করি।
কারণ কি? কারণ তখন যে আমার দিকেও আঙ্গুল থাকে। দৃষ্টি থাকে।আমি যে জন্মসূত্রে হিন্দু সম্প্রদায়ভুক্ত।বাংলাদেশে যে সম্প্রদায়ে জন্ম সে পরিচয় মুছা অসম্ভব ও অকল্পণীয়।থাবা বাবা নাম নিয়েও রেহাই নেই।নিজেই এখন ধর্মের, ধর্মীয় উন্মাদনার থাবার নীচে।তাছাড়া, প্রত্যেকেই কোন না কোনভাবে, কোন না কোন সময় সাম্প্রদায়িক– এমন সরলীকরণ না করলেও বলাযায় সংখ্যালঘু মাত্রই সাম্প্রদায়িক। দুর্বল অবস্থানের সংকুচিত মন। দড়িতেও সাপ দেখে। কারণ, চুন খেয়ে মুখ তেতেছে বলে দই দেখেও ভয় পায়।
আমার সংখ্যালঘুত্বকে জিইয়ে রাখে শুধু শত্রুপক্ষের লোকেরা নয়, আমি নিজেও।নিজের বলয় থেকে বের হওয়া কঠিন।নিজের মনের পর্দা, পারিবারিক দেয়াল, আত্মীয় পরিজনদের আবরণ, সমাজের বেড়া আর সংখ্যাগরিষ্ঠ হিসেবে নিজেকে ভাবাপন্নদের সংখ্যালঘুদের প্রতি তির্যক দৃষ্টি, আচরণ, আক্রমণ ও আঘাত আমাকে সংখ্যালঘু করে রাখে।
বাংলাদেশে ধর্মীয় সংখ্যালঘুর বিরুদ্ধে কিছু ঘটলে বন্ধুরা বেশি বেশি খোঁজ খবর নেয়। তখন যেন অসহায়ত্ব অনুভবের মনের তারটি আরও সংবেদনশীল করে রাখে। সাহসও পাই। অবশ্য রাঙামাটিতে সেপ্টেম্বরের ঘটনায় আমিও আমার রাঙামাটির জাতিগত সংখ্যালঘু বন্ধুদের খবর নিয়েছিলাম। রামুতে অফিসের এক বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বী নারী ড্রাইভারের বাড়ী এবং মাতৃত্বকালীন ছুটিতে তখন সে বাড়িতে ছিল বলে তার অবস্থান নিয়েও উদিগ্রীব ছিলাম। এটাই মানবিকবোধ। এ বোধের তাড়নায়ই মানুষ মানুষের জন্য। আমি যা করেছি বা আমার বন্ধুরা যা করে তা আরোপিত কিছু নয়। স্বঃতস্ফুর্ত মানবিকবোধের বহিঃপ্রকাশ মাত্র।
তেমনি এখনকার পরিস্থিতিতে বিএন পি নেত্রী নেতা ও জামাতের কর্মীদের কান্ড কলাপও তাদের পৈশাচিক চরিত্রের স্বাভাবিক আচরণ। বাংলাদেশে যিনি দুই দুইবার প্রধানমন্ত্রী ছিলেন তিনি যদি বাংলাদেশের ইতিহাস বিবেচনা না করে গণহত্যা, ফ্যাসীবাদ আর হানাদার বাহিনী এর মত শব্দকে ধর্ষন করেন তখন তাকে ধিক্কার দেয়া ছাড়া আর উপায় কি!
গত শনিবার রাতে বন্ধু রীতা দাশরায় সহ্য করতে না পেরে বাসায় এসে অসহায় গোষ্ঠির প্রতিনিধি হিসেবে নিজের অস্বস্থির কথা জানাল।আমার অনুজা রীতা দাস আমাকে বাসা থেকে বের হতে নিষেধ করে নিজে শনিবার দিন মেয়েকে নিয়ে ভিকারুন্নেছা স্কুলে গেছে হাতের শাখা খুলে।নিজের পরিচয় গোপন করে রাস্তায় অপমান বা আক্রমণ হতে রক্ষা পাবার কৌশলী পদক্ষেপ, এ পরিস্থিতিতে সাহসী হওয়া তো আত্মহত্যার সামিল।
এক ননদের হাজব্যান্ড। নাখাল পাড়ায় থাকেন। রাস্তায় কয়েকজনের কথোপকথন শুনে নিজের পরিচয় গোপন করে জানতে চাইল, আচ্ছা, হিন্দুদের ওপর আক্রমণ কেন? সাঈদীর ফাঁসির জন্য হিন্দুদের ওপর এ নির্যাতন কেন? স্পষ্ট উত্তর, হিন্দুরাই তো তার বিরুদ্ধে সাক্ষী দিয়েছে।
আমার এক সহকর্মী এবারের সংঘাতময় পরিস্থিতিতে কক্সবাজারে আটকে গেছেন। আমিও কক্সবাজার জেলা থেকে ২৭ ফেব্রুয়ারি অফিসের কাজ শেষ করে চলে এসেছি। আর আমার সহকর্মিটির ২৮ তারিখে আসার কথা। বিকালে হরতালের জন্য আর ফিরতে পারেনি। শুক্রবার রাস্তা বন্ধ। আসতে পারেনি। শনিবারদিন বিশেষ গাড়িতে, পুলিশের পাহারায় সরকারি কর্মচারিদের সাথে চট্টগ্রাম পৌঁচেছে। একটা নামী দামী হোটেলে ছিল। সে জানাল, হোটেলের এক দারোয়ান অন্য আরেকজনকে বলছে, জানেন, আমাদের সাঈদী তো লাদেনের চেয়েও বড় মুসলমান। সাচ্চা মুসলমান, সাহসী মুসলমান।
শ্রোতা প্রশ্ন করল, কীভাবে?
আরে উনিতো কাফেদেরকে মুসলমান করতে পেরেছে একাত্তর সালে।এ জনগোষ্ঠী চাঁদে সাঈদীর মুখ দেখে।
দেলু রাজাকারের হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের জোরপূর্বক ধর্মান্তরিতকরণ সাচ্চা মুসলমানের সঠিক পদক্ষেপ বলে বিবেচিত। এই হল সাধারণ জনগোষ্ঠীর সাম্প্রতিক সাম্প্রদায়িক ভাবনার নমুনা।
যে কোন অপ্রীতিকর সামাজিক ও রাষ্ট্রীয় পরিস্থিতিতে ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের ওপর আক্রমণ এ উপমহাদেশের ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের নিয়তি। এবার যুদ্ধপরাধীদের বিচারকে কেন্দ্র করে বাংলাদেশে তাদের যে আর্থিক, সামাজিক অবস্থান ও মানসিক ক্ষতি হয়েছে তা পুরণ হবার নয়। তবুও সংবাদপত্রে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদনের ভিত্তিতে রোববার ( ৩ মার্চ ২০১২) বিচারপতি এএইচএম শামসুদ্দিন চৌধুরী ও বিচারপতি মাহমুদুল হকের বেঞ্চে স্বপ্রণোদিত হয়ে আক্রান্ত হিন্দু পরিবারের নিরাপত্তা নিশ্চিতের আদেশ দেয়।একইসঙ্গে হামলায় ক্ষতিগ্রস্ত হিন্দুদের বাড়িঘর আগের অবস্থায় ফিরিয়ে দেওয়ারও নির্দেশ দিয়েছে আদালত।(বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম)। এটাও একটা পাওয়া।
বন্ধু মাহীন সুলতান ফোন করে আমার মনের অবস্থা নিয়ে তার সহমর্মিতার কথা জানাল। লীনা আপা(মাহবুবা মাহমুদ) ই মেইলে সাহস যোগাল। তাছাড়া, আপনারা, মুক্ত-মনার সাথে সংশ্লিষ্টদের মত কেউ কেউ আশেপাশেই আছেন, সর্বোপরি শাহবাগ, শাহবাগের শুদ্ধ রক্ত, শুভ চেতনা ও সাহসী সমর্থন তো কাছেই আছে, হ্যাঁ, এ সব ভেবেই ভাল থাকার সংগ্রাম করা যায়। ভাল থাকবেন।
সাম্প্রদায়িক কথাটা থেকে মানবিক কথাটি অধিকতর ভাল। ঈশ্বরের শক্তির কাছে অনেক সময় সাম্প্রদায়িকতা টিকেনা ।গুজরাটে বহু পুরুনু প্রতিবেশীর হাতেই প্রতিবেশী হত্যা করা হয়েছিল।আজ আমরা বাংলাদেশে কে কাকে হত্যা করছি? আসুন এ হত্যা লীলা বন্ধ করে বাঙ্গালি /মানুষ হয়ে দেশটাকে সাজাই। সবারই বেচে থাকার অধিকার আছে।আমি সঠিক ধর্মের অনুসারী অথবা আস্তিক না বলে পরকালে ঈশ্বর যে শাস্তি দিবেন মাথা পেতে নিবো
@নিগ্রো,
শুনতে ভালই লাগছে।!!!!!!!!!!!!!!!!
আপনাদের একটা উল্টো ঘটনা শোনাই। আমি এখন ষাটোধর্। ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধে সক্রিয় অংশ নিয়েছি। সামনের কোন সংগ্রামের জন্যও প্রস্তুত আছি।
মুক্তিযুদ্ধের ঠিক আগে অথবা পরে, সঠিক ষ্মরণ করতে পারছি না, আমার এক হিন্দু বন্ধু বান্ধবী ঘটিত ব্যাপারে মুসলমান হওয়ার জন্য আমার কাছে আসে। আমি অনেক কষ্টে তাকে নিবৃত করি। ভাগ্যন বন্ধুটি কোন সাঈদী হুজুরের পাল্লায় পড়ে নাই। আসলে ওই সময়ে এই হুজুরদের তখনো জন্ম হয়নি।
@Karim,
এখনও জাগতিক কারণে অনেকে ধর্মান্তরিত হচ্ছে। স্বেচ্ছায় হওয়া আর জোরপূর্বক ধর্মান্তরিত করানো যে এক নয় এ বিষয়টি আপনার ষাটোর্ধ মাথায় আসার কথা এবং উচিত।
@গীতা দাস,
যে কথাটি বলতে চািনি। বন্ধুর সমস্যা ছিল আন্ত:সাম্প্রদায়িক জাতপাতের সমস্যা। আপনার বয়স খুব বেশী নয় বলে ধরে নিচ্ছি। ষাটোর্ধ বয়সে মাথা কম খেলে, আমি জানি। ১৯৭১ সালে বংগবন্ধুর ডাকে সাড়া দিতে কিন্তু দেরী হয়নি।
আমার অনেক হিন্দু বন্ধু িআছে। তাদের আমি ভালবাসি তারািআমার মত্ িমানুষ বলে, এবং হিন্দু বলে।
@Karim,
ধারণাটি সঠিক নয়।
শ্রদ্ধা রেখেই বলছি যতোদিন আপনারা এই “সংখ্যালঘু” শব্দটি ব্যবহার করবেন ততোদিন সংখ্যালঘু নির্যাতন চলবেই।কেন সরাসরি বলেন না “হিন্দু নির্যাতন”।এটা ঠিক মাঝে মাঝে বৌদ্ধ কিংবা খ্রিস্টান ধর্মাবলম্বীরাও নির্যাতিত হয়।তবু হিন্দুরাই সরাসরি ভুক্তভোগী।সংখ্যালঘু কথা ব্যাবহার মানে আমার কাছে মনে হয় এরা বাঙ্গালী না, বাংলাদেশী না।বাংলাদেশের বাইরের কেউ,মানুষ নয়।যখনই বলবেন বাংগালী হিন্দু নির্যাতন তখনই দেখবেন এই “সংখ্যালঘু” নিয়ে রাজনীতি বন্ধ হবে।
@অগ্নি,
বাংগালী হিন্দু নির্যাতন বললেই কি জামাত শিবিরকে লক্ষ্য ভ্রষ্ট করা যাবে? এত সরলীকরণ? বাংগালী হিন্দু নির্যাতন আর সংখ্যালঘু নির্যাতন বলা সেই তো থোড় বড়ি খাড়া, খাড়া বড় থোড়। সংখ্যা লঘু শুনতে কি নিজের খারাপ লাগে না? লাগে। কিন্তু বাস্তবতাকে এড়িয়ে যাবার তো উপায় নেই।
@গীতা দাস,
আমি যেটা বলতে চাইছি সেটা হলো সঙ্খ্যায় কে কত হলো সেটা ব্যাপার না , আমরা সবাই বাংলাদেশী,বাংগালী।এই বোধটুকু আমাদের সবার নেই।তাহলে ব্যাপারটা এরকম হয়ে গেলো না সঙ্খ্যালঘু বাংগালী আর সঙ্খ্যাগুরু বাংগালী…হাস্যকর।আর ব্যাপারটা থোড় বড়ি খাড়া, খাড়া বড় থোড় এই জন্য নয় যে বাংলাদেশ মুখে মুখে যতই অসাম্প্রদায়িক বলুক বাস্তবে তা নয় সেটা আপনি ভালো ভাবেই জানেন।যতদিন আমরা ভাবব সঙ্খ্যালঘু হিন্দু/বৌদ্ধদের জন্য সঙ্খ্যাগুরু মুস্লিম্রারা এগিয়ে আসবে তার মানে আপনি একটা ধর্মীয় বিভাজন আগেই তৈরি করে দিলেন।কিন্তু আমরা যেদিন এক বাংলাদেশী আরেক বাংলাদেশির জন্য এগিয়ে আসব তখন আর এই বিভেদ থাকবে না, গণিমতের মাল চিন্তা থাকবে না।তখন জামাতি-শিবির জাতীয় শত্রুতে পরিণত হবে কারণ এরা সমর্থন পায় মূলত ধর্মীয় চেতনা থেকেই।
@অগ্নি,
বিভাজন তৈরি কখনো দুর্বলরা করে না।আর বেশির ভাগ বাংলাদেশী বাঙালী মুসলমানরা আগে মুসলিম।মুসলিম ভ্রাতৃত্ববোধের বাঁধনে আষ্ঠেপৃষ্ঠে বাঁধা এবং এ বাঁধন ফসকা গিট্টু না।কাজেই আমি বিভাজন ভুলে ঐ বাঁধনে ঢোকার সাধ্য রাখি না।
লেখাটির জন্য ধন্যবাদ গীতাদি। এ লেখার দরকার ছিল খুব।
@অভিজিৎ,
ধন্যবাদ। আর আপনার কাছ থেকে একটা লেখার দাবি করছি। চাঁদে দেলু রাজাকারের ছবি। ভ্রমাত্মক এ বিষয়টির ব্যাখ্যা নিয়ে একটি লেখা।
@গীতা দাস,
এটা নিয়ে ফান করা যায়, এরকম মতিকন্ঠ স্টাইলে –
চিড়িয়াখানায় সাঈদী
কিংবা
আমিও চাঁদে সাঈদীকে দেখেছি: লুঙ্গি
কিংবা
চাঁদ ও বেবুনের পুটুর পর এবার সানির বুকে ভেসে উঠল সাঈদীর ছবি
সিরিয়াস লেখা কিভাবে সম্ভব কে জানে!
@অভিজিৎ,
:lotpot: :hahahee: (*) :-O
@অভিজিৎ,
:lotpot: :hahahee:
@অভিজিৎ,
হ্যাঁ, মতিকন্ঠ আমি আগেই পড়েছি। চাঁদে দেলু রাজাকারের ছবি সাধারণ মানুষের মধ্যে যে উন্মাদনা সৃষ্টি করেছে,তাদের বিশ্বাসের সাথে ভ্রমাত্মক বিষয়টির সম্পর্ক,সাধারণ মানুষের ধর্মানুভূতি,মানব মনের ঘোর প্যাঁচ—- এ সব আর কি। আপনি তো চমৎকার ভাবে এ সব লেখা ফুটিয়ে তুলতে পারেন।
@গীতা দাস,
আসলেই তাই। ব্যাপারটি নিয়ে ব্যাপক হাস্যরসের সৃষ্টি হলেও মজা পাওয়ার মত কিছু আসলে ছিল না। চাঁদে ছূচা দেখার ছবির বানোয়াট খবর মসজিদে মাইকিং করে করে লোক জড়ো করা হয়েছে, তারপর চালানো হয়েছে ব্যাপক দাংগা হাংগামা।
শুধু জামাত শিবিরকে গালিগালাজ করে দায় সারা উচিত নয়। জামাত শিবির নাহয় প্রচার করেছে, কিন্তু কেন হাজারো মানবাত্মা এই শতকেও এ জাতীয় সংবাদে ঈমান এনে ফেলে সেটা বোঝা জরুরী। যে সমাজের উচ্চশিক্ষিত লোকজনে মসজিদের গম্ভুজ উড়ে যাওয়া, সুদখোর মহিলার সাপে পরিনত হওয়া বিশ্বাস করে প্রচার করতে পারে সে সমাজে জামাত শিবিরকে তেমন মেহনত করতে হয় না।
@আদিল মাহমুদ,
একমত। এসব ভেলকিবাজি উগ্রতাকে উসকে দিচ্ছে।
@ গীতা দাস,
গত কয়েকদিনের ঘটনা প্রবাহে ভীষণভাবে মর্মাহত, একেতো মানুষ মরছে (মারানো হচ্ছে) তারপর স্ববিস্ময়ে দেখলাম পাইকারী দরে নিরীহ, নিরপরাধ হিন্দু সম্প্রদয়ের বসতবাড়ি পুড়িয়ে দেয়া হচ্ছে। মাথার উপড়ে মড়া ঈশ্বর(সরকার) নালিশ জানাবো কার কাছে! করনীয় কিম্বা সমাধান- ভেবে কোন কুলকিনারা পাইনা। ভেতরে ভেতরে অক্ষম ক্রোধে জ্বলে পুড়ে মরি। ঘৃনা জানিয়ে গেলাম ঐ নরপিশাচদের ঘৃন্য কর্মকান্ডের।
@সুমন,
প্রকৃতির নিয়মাবর্তিতার নীতিই বোধ হয় এরকম– ‘দুর্বলের ওপর সবলের অত্যাচার’।
@গীতা দাস, প্রথমের পর্বগুলী পড়িনি, পরে পরে নেব।সত্যি লেখাটা পড়ে আপনার জায়গায় নিজেকে কল্পনা করছি আমি আর শিউরে উঠছি।ভাবছি যে আপনার জায়গায় আমি হলে আজ আমাকেই এমন তটস্থ থাকতে হত।
আমার জন্ম পরিচয় মুসলিম হওয়াতে এই দেশে কতই না সুবিধায় আছি, আর আপনার পরিচয় হিন্দু হওয়াতে আপনি আছেন তার বিপরীত অবস্থায়।সত্যি এই বাংলাদেশ আমরা চাইনি।
এইটাই তিক্ত সত্য।অমুসলিম( পড়ুন কাফের) দের মুসলিম করার জন্যেই আজ জাকির নায়েক মুসলিমদের কাছে নবীর মর্যাদা পাচ্ছে যদিও জানি না যে এই বদমাশটা আসলেই কতজনকে মুসলিম বানাতে পেরেছে।
তবে খুনী রাজাকারদের তুলনায় জাকির কেও আমার নেহায়েত ফেরেশতা বলেই মনে হয়, কারন আর যাই হোক সে তো পরিকল্পিত ভাবে গনহত্যায় অংশ নেয় নি।
আর এইসব খুনির পাপ আজ অনেকের কাছেই মাফ পেয়ে যায়,বিশেষ করে খালেদা জিয়াদের কাছে, আর এজন্যেই তিনি খুনিদের বাচাতে মাঠে নামেন,এর কারনটা কি?
আচ্ছা ৭১ এ ৩০ লাখ শহীদের ভিতর বেশিরভাগই নাকি হিন্দু( ৮০% এর কাছাকাছি নাকি হিন্দু; যদিও সুত্রটি খুব একটা নির্ভরযোগ্য নয়)।এজন্যেই কি অসংখ্য মুসলিম আজ এটা ভুলে যেতে চায়?
সবচেয়ে খারাপ লাগছে এই ধর্মীয় সঙ্ঘ্যালঘুদের প্রতি এই নাশকতার সময়ে, তথাকথিত ধর্মনিরপেক্ষ সরকারের আশ্চর্য নিরবতা দেখে।এরা কি নিজেদের মুসলমানিত্ব রক্ষা করছে কিনা কে জানে!!
@অর্ফিউস,
– বাজে কথা। এসব চাপাবাজিতে বিশ্বাস করবেন না। এসব ইচ্ছেকৃতভাবে মৌলবাদী চক্র ছড়াচ্ছে মুক্তিযুদ্ধ সম্পর্কে বিভ্রান্তি ছড়াতে, মুক্তিযুদ্ধ ইস্যু করে কিভাবে সাম্প্রদায়িকতার মিথ্যা গালগল্প বানানো হচ্ছে এসব প্রমান করতে। এমন কোন তথ্য প্রমান নেই, থাকা সম্ভবও নয়।
তবে ভারতে আশ্রয় নেওয়া শরনার্থীদের মাঝে হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের সংখ্যা ছিল মোট জনসংখ্যার অনুপাতে অস্বাভাবিক রকমের বেশী। এটার স্বপক্ষে শক্ত তথ্য প্রমান আছে।
নিহতের সংখ্যা যাইই হোক, মুক্তিযুদ্ধে পাক/রাজাকারদের প্রথম টার্গেট ছিল হিন্দু ধর্মের লোক। তাদের হাতে ধরা পড়ে বহু লোকে ফেরত এসেছে নজির আছে কিন্তু হিন্দু ধর্মের লোক ছাড়া পেয়েছে এমন নজির অতি বিরল। বহু এলাকায় রাজাকাররা হিন্দুদের বাড়ির দরজা দেওয়া হলুদ দাগ দিয়ে আসত প্রথম লক্ষ্য হিসেবে। হিন্দু নিধনের পবিত্র মিশনে আসা পাক আর্মিরাও ব্যাক্তিগত পর্যায়ে হতাশ হয়েছে মারার জন্য আশে পাশে হিন্দু পাওয়া যাচ্ছে না দেখে এমন কিছু সূত্র আছে। এসব দিক অবশ্যই আমাদের দিকে গবেষনায় আসে না, এই আজগুবি এড়িয়ে চলার প্রবনতা আমাদের না করলেও বিদেশী গবেষকদের বিস্মিত করে।
এটা ভাল করে বুঝতে হবে যে মন্দির মূর্তি ভাংগা কিংবা ঘর বাড়ি জ্বালানো হচ্ছে না মানেই সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত জ্বলজ্বল করছে। প্রতিদিন যে রকম ভাবে মূল ধারার মানুষের কাছে নানান পর্যায়ে ধর্মীয় পরিচয়ের কারনে পৃথক হতে হয় সে জ্বালা অনেক বেশী, আর প্রকাশ্যে জাত ধরে গালিগালাজ এসবের তো কথাই নেই।
ধরেন আমি কানাডায় ভাল চাকরি করি, বেশ আছি। যদি জানি যে আমার প্রতিবেশীর ছেলে স্কুলে শেখে যে অখৃষ্টানের সাথে বন্ধুতা করা যাবে না, চার্চের মাইকে বুলন্দ কন্ঠে শুনি যে অখৃষ্টানরা অভিশপ্ত, তারা চিরকাল নরকে থাকবে তবে আমার কেমন লাগবে? এসব বানী শুনে যারা চোখের পানি ফেলে দেয় তারা আমাকে মারতে আসবে না তবে আমার প্রতি কেমন দৃষ্টিভংগী পোষন করতে পারে আন্দাজ করা খুব শক্ত?
@আদিল মাহমুদ,
এই পুরো কমেন্টটি কি সার্কাস্টিক্যালি বল্লেন কি না বুঝলাম না।
@সফিক,
না, সার্কাষ্টিক কেন হবে? সত্য কথাই বলেছি। ৩০ লাখের ৮০% হিন্দু এমন কোন পরিসংখ্যান নেই। পরিসংখ্যান গত ভাবেও আদম শূমারি দিয়ে যুদ্ধের আগে পরের হিসেবে এমন প্রমান করা যাবে না।
@আদিল মাহমুদ, তা ঠিক বলেছেন, তবে হিন্দুরা নিশ্চয়ই সংখ্যায় অনেক বেশি ছিল কি বলেন?এইযে যেমন আপনি নিজেই বললেন যে
@অর্ফিউস,
এটা মনে রাখতে হবে যে অনুপাত আর সংখ্যা এক নয়।
ততকালীন জনসংখ্যায় হিন্দু/মুসলমান যে অনুপাতে ছিল পাক বাহিনীর হাতে নিহতদের ধর্মীয় পরিচয় সঠিকভাবে নিরুপন করা গেলে সে অনুপাত অনেক বেশীই হবার কথা। মোট সংখ্যায় নিঃসন্দেহে মুসলমানই বেশী থাকবে।
@আদিল মাহমুদ, সেটাও কথা!যাক সবচেয়ে বড় কথা হল যে মানুষ মারা গেছে।এইটা অনেকেই বুঝে না আর তাই ৩০ লাখকে কিছু বদমাশ, ৩ লাখ বানায় এমনকি কেউ কেউ ৩০ হাজারো বানিয়ে দেয়।
@অর্ফিউস,
আসলে নিহতদের সঠিক সংখ্যা আমরা জানি না। এটা বের করার জন্য কোন পরিসংখানও কখনো করা হয় নি। যতদূর জানি তিরিশ লাখ সংখ্যাটির উৎস শেখ সাহেব নিজেই এবং তা তিনি জানিয়েছিলেন পাকিস্তান থেকে মুক্তির পরপরই। যদি আমার এই তথ্য সঠিক হয় তাহলে এটি একটি অনুমিত সংখ্যা, আসল সংখ্যা এর থেকে বেশী বা কম হতে পারে।
আমাদের মুক্তিযুদ্ধের গৌরব নিহতদের সংখ্যা বা তাদের ধর্মবিশ্বাস দিয়ে নির্ণিত নয়। এই সংখ্যা তিরিশ লাখের কম হলেও তা যুদ্ধের মহিমাকে এতটুকু হ্রাস করবে না।
@মনজুর মুরশেদ, সেটা তো বুঝি ভাই।
কিন্তু সমস্যা হল যে কিছু মানুষ আছে এদেশেই যারা জামাত কেন কোন ইসলামিক দলকেই সমর্থন করে না তাদের মধ্যেও একশ্রেণীর লোক আছে যারা কিনা বলে থাকে যে এত বছর আগে কি হয়ে গেছে সেটা নিয়ে পড়ে থাকলে চলবে কে!!
অথচ দেখেন এখনো নাকি নাৎসি শিকার অব্যাহত রয়েছে।
তার মানে নাৎসিরা কিন্তু সেটা ভুলে যায় নি কিন্তু দেখেন আমাদের অনেকেই কেমন ভুলে যেতে চায়।( আগের মন্তব্যটি পুরা আসেনি মুরশেদ ভাই, তাই শেষটুক জুড়ে দিলাম)
@অর্ফিউস,
আমাদের আবেগের বহিঃপ্রকাশ যেমন বেশী, তেমনি আবার কোন কিছু ভুলে যেতেও আমরা বেশী সময় নেই না। সে জন্যেই যুদ্ধাপরাধী দেলু শিকদার সহজেই আল্লামা দেলোয়ার হোসেন সাঈদী হয়ে সমাজে অধিষ্ঠিত হয়।
@আদিল মাহমুদ,
একাত্তরে যুদ্ধের সময় আমি নেহায়েৎই শিশু। তাহলেও সেসময়ে বড়দের উদ্বেগ, উৎকন্ঠা আবছা মনে পড়ে। আমার চাচারা মুক্তিযোদ্ধা ছিলেন। যুদ্ধের শুরুতে আমাদের পরিবার গ্রামে চলে গিয়েছিল। পরবর্তীতে আমাদের বৃহৎ পরিবারের প্রায় সব সদস্যই ভারতে আশ্রয় নেয়। যুদ্ধের কয়মাসের খণ্ড খণ্ড স্মৃতি এখনো মনে পড়ে, যদিও এসবের কতটা সত্যি ঘটেছিল আর কতটা শিশু মনের কল্পনা তা বলা মুশকিল। তবে এসব ঘটনা যে মনে একটা গভীর দাগ রেখে গেছে তা মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসের প্রতি নিজের প্রবল আগ্রহ থেকেই বুঝতে পারি। একটা জিনিস প্রায় সময়ই আমি চিন্তা করি, তা হল মুক্তিযুদ্ধে নিহতদের প্রকৃত সংখ্যা। যতদূর জানি তিরিশ লাখ সংখ্যাটির উৎস শেখ সাহেব নিজে। যদি তাই হয় তাহলে ধরে নিতে হবে এটি একটি অনুমিত সংখ্যা, আসল সংখ্যা এর থেকে কম বা বেশি হতে পারে। আপনার কি অভিমত?
@মনজুর মুরশেদ,
– এটা আসলে শেখ সাহেব বিদ্বেষী এবং স্বাধীনতা বিরোধীদের একটি জনপ্রিয় প্রোপাগান্ডা; দাবী হল বংগবন্ধু মিলিয়ন কি বুঝতেন না তাই ৩ লাখকে ৩ মিলিয়ন বানিয়ে ফেলেছিলেন। একই সাথে বংগবন্ধুকে ছোট করা গেল এবং মুক্তিযুদ্ধ যে আসলে গন্ডগোল যাকে মিথ্যাচার করে নাটকীয় ট্র্যাজেডি বানানো হয় সেটাও প্রমান করা গেল।
আসলে এই প্রোপাগান্ডা সম্পূর্ন মিথ্যা, বংগবন্ধু ৩০ লাখ বোঝাতেই ডেভিড ফ্রষ্টকে ৩ মিলিয়ন বুঝিয়েছিলেন সারা দেশ থেকে প্রাপ্ত নানান তথ্যের ভিত্তিতে, অবশ্যই সেসব একেবারে নিখুত পরিসংখ্যান এমন কথা নেই।
ভাবখানা এমন যে ৩ মিলিয়ন হওয়া সম্ভবই ছিল না, বংগবন্ধু ছাড়া আর কোন সূত্রই এমন নির্দেশ করতে কস্মিনকালেও দেয়নি। বিভিন্ন সূত্রের খবরে দেখা যায় যে ৩ মিলিয়ন হওয়া অবাস্তব কিছু নয়। বেশ কিছু আন্তর্জাতিক তথ্য সূত্র তেমন নির্দেশ করে, ৩০ লাখ এষ্টেমেশন বাস্তব ভিত্তিক- অবাস্তব নয়; যদিও নিশ্চয়তা দিয়ে বলার মত পরিসংখ্যান পাওয়া সম্ভব নয়। যেমন আর জে রামেল যিনি নানান দেশের গনহত্যা নিয়ে বাস্তব তথ্য উপাত্ত ভিত্তিক গবেষনা করেছেন তার মতে এই সংখ্যা ১-৩ মিলিয়ন। কাজেই ৩০ লাখ শুধু বংগবন্ধুর মুখের কথা না, গবেষনা ভিত্তিক এষ্টিমেশনেও সম্ভব। রামেলের সেই গবেষনা পড়েছিলাম, তাতে বংগবন্ধুর মুখের কথা নেই, আছে আন্তর্জাতিক মিডিয়ায় প্রকাশিত বিভিন্ন জেলার নিহতদের সংখ্যা কম্পাইল করে পরিসংখ্যান কষা।
৩০ লাখ বাস্তবে এষ্টিমেশন, পরিসংখ্যান নয়, আমার কথা এটাই। আর যদি ৩০ লাখ না হয়ে ৩ লাখই হত তাতেই বা এমন কিছু এসে যেত? আপনার বাড়িতে ডাকাতের দল ডাকাতি করে ৩০ হাজার টাকা লুটে নিলেও যে শাস্তি আদালত দেবে ৩ হাজার লুটে নিলেও সাজা এমন কিছু কম হবে না।
যারা এটাকে চ্যালেঞ্জ করে নিঃসন্দেহে তাদের উদ্দেশ্য সঠিক ইতিহাসের সন্ধান করা নয়। তারা নিজেরা খেটে খুটে সঠিক উপাত্ত বার করার প্রচেষ্টা নিলে বোঝা যেত যে তারা আসলেই ভাল মনে ইতিহাস গবেষনা করার নিয়তে প্রশ্ন তুলছেন। এখন আরো নুতন চক্রান্ত শুরু হয়েছে, গনহত্যার সংজ্ঞাই মোহতারেমা খালেদা ম্যাডাম বদলে দিতে চাইছেন। আসলে ইন্টারনেট আসার পর ওনাদের ইতিহাস বিকৃতির স্বপ্নময় জগতে বড় ধরনের বাধা পড়েছে।
@আদিল মাহমুদ,
ধন্যবাদ তথ্যসূত্রটির জন্য। আমি ইতিহাসে আগ্রহী বলেই সঠিক সংখ্যাটি জানতে চাই; কাউকে ছোট বা বড় করা আমার উদ্দেশ্য নয়। উপরে অর্ফিউসকে যেমন বলেছি আমাদের মুক্তিযুদ্ধের গৌরব নিহতদের সংখ্যা বা তাদের ধর্মবিশ্বাস দিয়ে নির্ণিত নয়। এই সংখ্যা তিরিশ লাখের কম হলেও তা যুদ্ধের মহিমাকে এতটুকু হ্রাস করবে না। আবারো ধন্যবাদ; যদি আরো কিছু থাকে দয়া করে জানাবেন। শুভেচ্ছা।
@মনজুর মুরশেদ,
Robert Payne এর The Tragedy of Bangladesh and the Phenomenon of Mass Slaughter (1973) বইয়ে এ ইয়াহিয়া খানের একটা দম্ভোক্তি আছে – ‘ওদের ত্রিশ লক্ষ হত্যা কর, বাকীরা আমাদের থাবার মধ্যে থেকেই নিঃশেষ হবে।’
তার মানে ত্রিশ লক্ষ হত্যার প্ল্যান করেই পাক বাহিনী মাঠে নেমেছিল।
এছাড়া ন্যাশনাল জিয়োগ্রাফিকের ১৯৭২ ইস্যুতে মৃতের সংখ্যা ৩ মিলিয়ন বা ত্রিশ লক্ষ লেখা হয়েছিল। এছাড়াও The Portsmouth Herald (Monday, January 17, 1972), Y C Rossiter Curriculum as Destiny: Forging National Identity in India, Pakistan, and Bangladesh সহ অনেক ম্যাগাজিন আর পত্র পত্রিকাতেই “থ্রি মিলিযন” বলা হয়েছিল। মুজিব লক্ষ আর মিলিয়নের পার্থক্য যদি নাও বোঝেন, ন্যাশনাল জিয়োগ্রাফিকের মত ম্যাগাজিনের এত বড় ভুল করার কথা নয়।
প্রাসঙ্গিকভাবে আপনি আবুল কাশেমের এই লেখাটাও দেখে নিতে পারেন।
@অভিজিৎ,
অনেক ধন্যবাদ তথ্যসূত্রগুলোর জন্য।
@মনজুর মুরশেদ, নিহতের কয়েকটা লিঙ্ক দিলাম। আশাকরি হেল্প হবে।
১) নিলোফার চৌধুরী মনি, আপনাকে ক্ষমা চাইতে হবে
২) মুক্তিযুদ্ধে নিহতের সংখ্যা
আর এটা ৭২ সালে সিবিএসে প্রচারিত খবর। ওরা বলছে শুধু খুলনাতেই ১ লক্ষ লোক মারা হয়েছিল। তাহলে সারা বাংলাদেশে কত হতে পারে?
৩) দুর্লভ নিউজ ক্লিপঃ সিবিএস, ১৯৭২। খুলনার গণহত্যা, নিহত এক লাখ।
@হোরাস,
নিলোফার চৌধুরী মনিকে কি লিংকটি পাঠানোর ব্যবস্থা করা হয়েছে? আর মনির বিরুদ্ধে স্মারকলিপিসহ কিছু বাস্তবসম্মত পদক্ষেপ নেয়া যায় না?
@গীতা দাস, কোন লাভ নেই। উনার ৩ লক্ষ শহীদের বক্তব্যের পরই কে যেন একটা ভিডিও শেয়ার করেছিল যেখানে দেখা যাচ্ছে উনি সংসদে দাড়িয়ে বলছেন ৩০ লক্ষ শহীদের রক্তের বিনিময়ে পাওয়া স্বাধীনতা …. ইত্যাদী ইত্যাদী। পরিষ্কার বোঝাই যায় যে এই মহিলা শুধু জ্ঞানপাপী না ভয়ন্কর রকমের ধুরন্ধর এবং ধান্ধাবাজ একজন জ্ঞানপাপী। একে স্মারকলিপি টিপি পাঠিয়ে কোন লাভ নেই।
@হোরাস,
অনেক ধন্যবাদ।
৩ নাম্বার লিঙ্কটা ঠিক মত আসেনি। আবার দিলাম।
https://www.facebook.com/photo.php?v=10151203475068053
@আদিল মাহমুদ,
স্কুলের গণ্ডী না পেরুনো খালেদা ম্যাডামের গনহত্যার সংজ্ঞা আপাতত তার কাছেই থাক।
@মনজুর মুরশেদ,
আশা করি বহু সূত্র পেয়ে গেছেন, বিভ্রান্তির কিছু নেই। নিরপেক্ষ হিসেবে অবশ্যই মানতে হয় যে এষ্টিমেশন মানেই সঠিক ষ্ট্যাটিষ্টিক এমন কথা নেই। তবে নিলুফার মনির মত যারা জেনে বা না জেনে প্রতিষ্ঠিত এষ্টিমেশন মানেন না তাদের উচিত আরো সঠিক এষ্টিমেশন গবেষনা করে বার করে জাতিকে হেদায়েত করা, কেবল মুজিব মিলিয়ন লাখের পার্থক্য জানতেন না বলার মত ছাগলামি না করা।
স্কুলের গন্ডি পেরুনো না পেরুনো আসলে বড় কথা নয়। অশিক্ষিত লোকে বড়জোর ছয় টাকা রোজে পোল পাহারাদার গোছের রাজাকার হত, শিক্ষিত লোকে রাজাকারি করলে পুরো জাতির চিন্তা চেতনা নষ্ট করার দায়িত্ব নেয়।
@আদিল মাহমুদ,
ধন্যবাদ।
সময়ের স্বল্পতার কারণে তথ্যসূত্রগুলোতে একবার চোখ বুলিয়ে গেলাম। উইকিতেও এসম্পর্কিত তথ্যগুলো একপলক দেখলাম। নিহতদের সঠিক সংখ্যা সম্পর্কে আসলেই নানা মুনির নানা মত।
পাকিস্তানি হামদুদুর রহমান কমিশনের মতে সংখ্যাটি ২৬,০০০; অন্যদিকে গণহত্যা নিয়ে সেসময়ের দেশী-বিদেশী রিপোর্ট ও বঙ্গবন্ধুর দেয়া তথ্যমতে নিহতদের সংখ্যা আনুমানিক ৩,০০০,০০০ । সম্প্রতি বিবিসি গোলাম আযমের উপর একটি লেখায় জানিয়েছে, বাংলাদেশের সরকারী হিসাব মতে তিন মিলিয়নেরও বেশী লোককে হত্যা করা হয়েছিল যদিও স্বতন্ত্র গবেষকদের মতে সংখ্যাটি ৩০০,০০০ থেকে ৫০০, ০০০ । লক্ষ্যনীয় যে, স্বতন্ত্র গবেষক কে বা কারা সে সম্পর্কে বিবিসি কোন সূত্র দেয় নি; এই গবেষকদের পরিচয় জানা দরকার।
হাওয়াই বিশ্ববিদ্যালয়ের আর,জে রামেল (যিনি সরকার সমর্থিত গনহত্যা নিয়ে কাজ করেছেন)-র মতে সংখ্যাটি ৩০০,০০০ থেকে ৩,০০০,০০০ এর মধ্যে, তবে তিনি সংখ্যাটি ১,৫০০,০০০ ধরে নেয়াটাকেই বাস্তব-সম্মত হবে বলে মনে করেন।
উইকির তথ্যানুযায়ী, বিএনপি নেতা শমশের মোবিন চৌধুরী ও অন্যান্য বাংলাদেশী বক্তারা যুক্তরাস্ট্রে বলে এসেছেন সংখ্যাটি ৩০০,০০০-র মত হবে। একজন খেতাবী মুক্তিযোদ্ধা হয়ে শমচৌ কোন পরিসংখ্যান ছাড়াই যখন একথা বলেন তখন বুঝতে হবে তিনি দুঃখজনকভাবে জামাত-শিবির আর পাকিস্তানিদের স্বার্থরক্ষারই চেষ্টা করছেন। সেদিন আদৌ আসবে কি যখন মুক্তিযুদ্ধের মত একটি পবিত্র বিষয় ক্ষুদ্র ব্যক্তি/দলীয় স্বার্থে ব্যবহৃত হবে না?
যাই হোক, এ পর্যন্ত যা জানতে পারলাম তা হলঃ মুক্তিযুদ্ধে নিহতদের সংখ্যা আনুমানিক এক থেকে তিন মিলিয়ন, বেশিরভাগ তথ্য এটাই নির্দেশ করে। সঠিক পরিসংখ্যান হলে এই সংখ্যার পরিবর্তন হতে পারে। একটি গ্রহনযোগ্য পরিসংখ্যানের অভাবেই মুক্তিযুদ্ধ-বিরোধী কিংবা ক্ষুদ্র দলীয় স্বার্থবাদীরা নিহতদের সংখ্যা নিয়ে অপপ্রচারের সুযোগ পাচ্ছে।
@মনজুর মুরশেদ,
আসলে সংখ্যাটি কত তা শতভাগ নিশ্চয়তা দিয়ে বলার মত তথ্য কোনদিন পাওয়া যাবে না। অন্য কোন দেশে সম্ভব কিনা সেটাও কথা, আমাদের দেশে আরো অসম্ভব। কারন এ দেশে সোশাল সিকিউরিটি নম্ব্র জাতীয় কিছু সেকালে ছিল না, নাম পরিচয় ঠিকানা বিহীন কত লোক কোথায় মরেছে, লাশ কোথায় গেছে কে বলতে পারে। সরাসরি পাক বাহিনীর হাতে মারা না পড়লেও শরনার্থী শিবিরে, দীর্ঘ পথ চলা, রোগে ভুগে অনাহারে কত মারা গেছে কোনভাবেই হিসেব করা সম্ভব নয়। তবে রিয়েলিষ্টিক এষ্টিমেশন অবশ্যই করা যায়, যারা সেসবও নিখুত হিসেবের অভাবে মানতে চায় না বুঝতে হবে সমস্যা আছে।
নিহতের সংখ্যা কমানোর দাবীদাররা মূলত ৩ গ্রুপের; এক গ্রুপ প্রকৃত ইতিহাস জানতে চায়, এদের সংখ্যা অতি নগন্য। এক গ্রুপ নিখাদ রাজাকার, মুক্তিযুদ্ধ দরদী সেজে সত্য সন্ধানী হবার প্রচেষ্টা। আরেক গ্রুপ রাজনৈতিক কারনে বংগবন্ধু ও আওয়ামী লীগের কোন কৃতিত্ব যে কোন ভাবেই অস্বীকার করা গ্রুপ; মুক্তিযুদ্ধের বংগবন্ধুর ভূমিকা যে কোন ভাবেই খাটো করার প্রচেষ্টা থেকে এরা মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের লোক হয়েও যে কোন রকম বেহুদা তর্ক বাধায়। বিএনপির মুক্তিযোদ্ধা গ্রুপের অনেকে এখন সরাসরি রাজাকারি মতবাদের পক্ষের, আর যারা সরাসরি রাজাকারি মতবাদ সমর্থক নয় তারাও রাজনৈতিক স্বার্থে আওয়ামী ঠ্যাকাও নীতিতে রাজাকারদের নৈকট্য বেশী কামনা করে।
@মনজুর মুরশেদ,
Concrete তথ্য দিয়ে মুকাবিলা করতে না পারলে বংগবন্ধুর দেওয়া সংখ্যাটিকে সঠিক বলে মানতে বাধা কোধায়? এবং কেন?
@Karim,
কঙ্ক্রিট তথ্য যখন নেই তখন একটি নির্দিস্ট সংখ্যা না বলে বংগবন্ধুর দেয়া সংখ্যাটিকে একটি পরিসর বা রেঞ্জের ভিতরে রেখে প্রকাশ করাই আপাতত বেশী যুক্তিযুক্ত বলে মনে করি।
@আদিল মাহমুদ,
আদিল ভাই সফিক ভাইয়ের মত,আমিও কিন্তু পুরোপুরি বুঝি নি আপনার মন্তব্যটা!! 😕
@আদিল মাহমুদ,
তবে হ্যাঁ, এইটুকু যে সার্কাস্টিক এটা ধরতে পেরেছি।আপনার লেখা ধর্মশিক্ষার নামে সাম্প্রদায়িকতার সরল পাঠ এর প্রথম তিনটি পর্ব পড়ে।শেষ করবেন কবে?শেষ করার পর ৪র্থ পর্ব থেকে একটানা পড়ব।
মানে এটুকুর ভাব বুঝতে পেরেছি আরকি!!
@অর্ফিউস,
এটাও সিরিয়াসলিই বলেছি।
অনেকে মনে করে দৈহিক আক্রমনের শিকার না হওয়া কিংবা ভাল চাকরি করা গাড়ি চড়া মানেই ভাল থাকা। সেসব ছাড়াও যে আরো বহু জ্বালা যন্ত্রনা আছে সেটাই বোঝাতে চেয়েছি।
@আদিল মাহমুদ, হুম ভাই এইবার বুঝেছি পুরাটা। 🙂
@আদিল মাহমুদ,
৭১ এ পাকিস্তানি আর্মিদের বোঝানো হয়েছিল, এই দেশে( ততকালীন পূর্ব পাকিস্তান) যারা বসবাস
করে তারা সবাই কাফের। অতএব কাফের নিধন করা প্রত্যেক মুসলমান জিহাদীদের কর্তব্য। সেই কারনে হিন্দু সম্প্রদায় কে একক ভাবে মেরেছে তা নয় মেরেছে তো বটেই সাথে বাংগালিদের’কেও গণহারে মারতে ছাড়েনি। ওরা কেবল রাজাকার, আল-বদর, আল-শামস এদেরকেই সাচ্চা মুসলমান বলে মনে করত।
(আমি যদি ভুল তথ্য না দিয়ে থাকি)।
আপনার মতামত বা নতুন তথ্য জানা থাকলে জানাবেন অনুগ্রহ করে।
@অর্ফিউস,
সবগুলো পর্ব পড়ে সম্ভব হলে জানাবেন।আপনাদের মত বিদগ্ধ পাঠকের মন্তব্য, গঠনমূলক সমালোচনা, আলোচনা বাস্তবতাকে তুলে ধরতে উৎসাহ বাড়াবে।
@গীতা দাস,
অবশ্যই জানাবো।১৫টা পর্ব তো একটু সময় লাগবে।তবু আপনার এই লেখাটা পুরো শেষ করব এটাই আমার ইচ্ছা।সত্যি ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের বিষয়ে তিক্ত কিছু সত্য আপনার লেখায় উঠে এসেছে, যা কিনা সংখ্যাগুরু মাত্রেই অস্বীকার করতে চাইবে কারন সত্য বেশিরভাগ সময় তিতা লাগে।আবার ধন্যবাদ লেখাটার জন্য। ভাল থাকবেন।
দিদি এই রকম বহু তিক্ত অভিজ্ঞতার খন্ড খন্ড স্মৃতি সঞ্চয়ের ঝুলি বইতে বইতে ক্লান্ত আমি। সেই কবে বুদ্ধি বয়স থেকে যে শুরু করেছি এখনো ভরতে বাধ্য হচ্ছি অনাকাঙ্খিত, দূর্গন্ধময়, পঙ্কিল সেই অভিজ্ঞতার ঝুলি। আর পারছিনে, লিখতে ইচ্ছে করে না এ সব নিয়ে আর। চারদিকেই দেখি শুধু ধুধু আধাঁররের খেলা।
@রাজেশ তালুকদার,
লিখুন। লিখে আর কিছু না হোক মনের ফাঁপ তো বের করা যায়। আর সমমনাদের মন্তব্য শুনে মনের অস্বস্তি তো কিছুটা হলেও লাঘব হয়।
অথচ আসল ঘটনা হল, যে অভিযোগগুলিতে তার ফাঁসির আদেশ হয়েছে, সেগুলোর সাক্ষ্য কিন্তু মুসলিমরাই দিয়েছে। তবে কথা হল, সাক্ষী হিন্দু হলেই বা কি?
ভীষণ কষ্ট হল, দিদি! ক্ষোভ, ঘৃণা, লজ্জা, আর এক চরম অসহায়ত্ব গ্রাস করল! এ এক জাতীয় লজ্জা! আমরা আমাদের দেশের একজন সাধারণ মানুষকে এমনকি শাখা পড়ার স্বাধীনতাটুকু নিশ্চিত করতে পারিনি। এমনকি ৪২ টি বছর পার হয়ে যাবার পরও!
@কাজি মামুন,
৪২ বছর পর আবার ৭১ এ ফিরে যাচ্ছি !
আপনার উদ্বেগ খুবই যৌক্তিক; সংখ্যায় স্বল্প, যে ফ্যাক্টরই হউক (ধর্ম, ভাষা, বর্ণ কিংবা নৃতাত্ত্বিকতা) সমসাময়িক সামাজিক অবস্থার একটু ব্যত্যয় হলেই এটা মানসিক ভাবে বাড়তি চিন্তার কারণ হয়ে দাড়ায়। তবে আমি বিশ্বাস করি এমন কিছু হবেনা কেননা বাংলাদেশ সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির দেশ। ভালো থাকবেন 🙂
@সংবাদিকা,
“বাংলাদেশ সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির দেশ” একথা বলে ভুক্তভোগীদের আর কস্ট দেবেন না। গীতা দাসদের হয়তো কিছু হবে না কিন্তু গ্রামে গঞ্জে যারা আছে তাদের কি হাল দেখেছেন? মানুষ কত অমানবিক আর সাম্প্রদায়িক হলে গৃহকর্তার কাছে পানি চেয়ে খেয়ে ঘরে আগুন দিয়ে চলে যায়? যারা এসব করে তাদের ধিক, তাদের ধর্মকে ধিক, আর আমরা যারা এসব নপুংশকের মত তাকিয়ে দেখি তাদের শত ধিক।
@মনজুর মুরশেদ,
সহমত এবং ‘বাংলাদেশ সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির দেশ’ এটি একটি স্টুপিড বাক্য এখন আমার কাছে।
বলিষ্ঠভাবে দ্বিমত। গীতাদাসের শিকড় যে গ্রামে।চাকরিসূত্রে শহরে বসবাস। এখনও আমার মা,শ্বশুর শাশুড়ি গ্রামের মায়ায় আচ্ছন্ন। আর? আর চাকরিজীবীরা ছাড়া চৌদ্দগোষ্ঠীও যে শহরের বাইরে। আবার চাকরিজীবীর মধ্যে সবার ছোট ভাই ও বোনের চাকরি ( কলেজ শিক্ষক)গ্রামে। তাছাড়া, প্রতিবেশি আত্মীয় পরিজনের কি অভাব আছে?
@গীতা দাস,
ধন্যবাদ। আমি আসলে বড় শহরের বাসিন্দাদের সাথে বিশাল বাংলায় বসবাসকারীদের সম্ভাব্য অবস্থা তুলনা করতে চেয়েছি। তবে আপনার যুক্তি অকাট্য, গ্রামাঞ্চলে নিকটাত্মীয়রা দুর্ভোগে পড়লে শহুরে বাসিন্দারাই বা ভাল থাকেন কিভাবে? পোড়া ঘর আবার উঠবে, ভাঙ্গা প্রতিমা জোড়া লাগবে, কিন্তু বারবার ঘটতে থাকা এসব ঘটনা যে মনস্তাত্বিক চাপ তৈরী করে চলেছে তা থেকে মুক্তি পাওয়া সহজ না।
@সংবাদিকা,
আর কি কি হলে পরে এমন কিছু হবে? সংবাদে চোখ রাখুন।
@গীতা দাস,
যা হচ্ছে তা অবশ্যই নিন্দনীয় এবং আপনার উদ্বেগের কারণ অত্যন্ত যৌক্তিক। কিছু জঙ্গি গোষ্ঠী নিজেদের অপকর্ম ঢাকার চেষ্টায় দেশে সাম্প্রদায়িক সংঘাত লাগানোর অপ্রয়াস করছে। আমার দৃঢ় বিশ্বাস অবস্থা ভালো হয়ে আসবে। ভালো থাকবেন।
@সংবাদিকা,
আসল কারন হলো ধর্ম , সব ধর্মই সাম্প্রদায়ীকতার শিক্ষা দেয়। অন্যান্য ধর্মগুলোর নানা রকম সংস্কার হওয়াতে তারা এখন সাম্প্রদায়ীকতা বাদ দিয়ে ইহজাগতিক উন্নতি নিয়ে ব্যস্ত। আর আমরা মুসলমানরা ইহজাগতিক উন্নতি করতে না পেরে , পর জগত নিয়ে বেশী ব্যস্ত হয়ে পড়েছি। যতই এই ব্যস্ততা বাড়ছে, ততই মানুষ সাম্প্রদায়ীক হচ্ছে। বাংলাদেশে বিগত কয়েক দশক যে হারে মসজিদ , মাদ্রাসা বেড়েছে সে হারে স্কুল কলেজ বিশ্ববিদ্যালয় বাড়েনি। তাই আমরা যতই উদারমনা মুক্তমনা বলে চেচাই না কেন , দেশের একটা বিরাট অংশই অত্যন্ত উগ্র সাম্প্রদায়ীক মনোভাব নিয়ে বেড়ে উঠেছে তার পরিবার , মসজিদ ও মাদ্রাসা থেকে। প্রতি নিয়ত বহু টিভি সম্প্রচার ইসলামের মাহাত্ম প্রচার করতে গিয়ে সাম্প্রদায়ীকতা ছড়াচ্ছে। এর পরেও যে কিছু লোক অসাম্প্রদায়ীক বাংলাদেশে রয়ে গেছে এটাই আশ্চর্যের । কারন মনে হয় এটাই এরা এখনও খাটি মুসলমান হয়ে ওঠেনি। একজন প্রকৃত খাটি মুসলমানের জন্য অসাম্প্রদায়ীক হওয়া হলো সোনার পাথরবাটির মত ব্যপার।
@বিদ্রোহী,
বাড়লেই কি! নর্থ সাউথ এর শিক্ষায় ই যে জঙ্গী বানায়।
@বিদ্রোহী,
খুব ভাল বলেছেন।উগ্র মানসিকতার আরেকটা কারন মনে হয় কু শিক্ষা।কাজেই মাদ্রাসা কমিয়ে খালি স্কুল, কলেজ আর বিশ্ববিদ্যালয় বাড়িয়ে বিশেষ কোন লাভ নেই, যদি না মানসিকতায় পরিবর্তন আসে।এই দেশে ধর্ম নিয়ে কিছু বললেই মানুষ তো তেড়ে আসবেই ক্ষেত্রে বিশেষে আপনি নিজের ঘরেই একঘরে হয়ে যেতে পারেন।
ইদানিং মানুষ ধর্মকে ঢাল হিসাবে ব্যবহার করছে খুব ভাল ভাবেই।প্রসঙ্গত হিজাব পরলেই নাকি মেয়েরা পবিত্র হয়ে যায়।
এইখানে পবিত্রতা আর অপবিত্রতাত সংজ্ঞা যদি হয় পুরুষদের সাথে মেলামেশা( স্বাভাবিক ভাবে) সেক্ষেত্রে দেখবেন যে হিজাব নিকাব পরা মেয়েরা কোন অংশেই পিছিয়ে নেই বরং ছেনালীটা এরাই অনেক ক্ষেত্রে বেশিই করে।অথচ ওইযে আছে ধর্মের ঢাল বোরখা আর হিজাব! কাজেই যে যাই করুক সব পবিত্র।আর জিন্স পরা মেয়ে হবে উগ্র; সে যদি সযত্নে পুরুষদের মুখদর্শন এড়িয়েও চলে।
এখানে যেখানে ভাল আর খারাপের মাপকাঠি হল, কে ইসলাম মানছে আর কে মানছে না, সেখানে একজন চোর ছ্যাঁচোড়ও ভাল যদি সে ইসলাম মানে।আর বাকিরা সবাই খারাপ।
@অর্ফিউস,
ধর্ম মানলে চোর হয় কেমন করে!! শুনেছি চোরা না শুনে ধর্মের কাহিনী।:-?
@গীতা দাস, দেখেন ওইসব সংজ্ঞা আজ বদলে গেছে।আপনি নিজেই জরিপ করে দেখুন, অবশ্যই মুসলিম সেজে, হিন্দুর কাছে মনের খবর বলবে না কেউ।আমাদের মাঝে মাঝেই শুনতে হয় যে যতই খারাপ হোক, তবু লোকটা মুসলিম, নামাজ পড়ে আর বোঝে যে সে নামাজ না পড়ে খারাপ কাজ করছে। এজন্যেই আল্লাহ নাকি মাফ করে দেবে মেলা পাপ।
এইসব কথা বললাম কিন্তু প্রমান দিতে পারব না যেহেতু রেকর্ড করে রাখিনি।চোরা ধর্মের কাহিনী শুনুক বা না শুনুক আপনি নিজেই দেখছেন যে হিন্দুদের মধ্যে কত ভাল লোক অত্যাচারিত হচ্ছে আর মুসলিমদের ভিতর কত লুচ্চাও কিন্তু তৌবা পড়লেই সবার নেক নজরে পড়ছে যে আহা লোকটা খারাপ ছিল, ভাল হবে;সেখানে একজন হিন্দু কিন্তু কলেমা না পড়ার আগ পর্যন্ত খারাপই থাকে।
@সংবাদিকা,
আপনি না কথায় কথায় মানুষের মন্তব্য কে ইউটোপিয়া বলেন?এইবার আপনি কি বললেন?বাংলাদেশ সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির দেশ সেটা আমিও জানতাম। ভুলটা ভেঙ্গে গেছে জামাত ক্ষমতায় আসার পর। মনে আছে হিন্দুদের উপর তান্ডব আর পুর্নিমা ধর্ষন?আর শাহরিয়ার কবিরকে রিমান্ডের নিয়ে অমানুষিক নির্যাতন? ভুলে গেছেন সব? নাকি ওগুলো সব ভারতীয় প্রভুদের সাজানো? মনে করে দেখুন তো। 😉
@সংবাদিকা,
আর
দুটোই একই মাত্রার জোক, শুনলেই হাসি পায়।
@কাফের,
একমত।
@কাফের, :hahahee: :hahahee:
স্বাধীনতা যুদ্ধের ঠিক আগে আগে আর পরের কয়েকটা বছরও এই ক্ষুদ্রতা ছিলনা। আমাদের ছোটবেলায় হিন্দু মুসলমান বৌদ্ধ খৃষ্টান তেমন কোন পার্থক্য দেখিনি।
দিনে দিনে বাংলাদেশের মুসলমান জনগোষ্ঠীর ধর্মীয় দীনতা চক্রবৃদ্ধি হারে বেড়েই চলছে। মৌলবাদী সন্ত্রাস, যে ধর্মেরই হোক না কেন, যে জনগোষ্ঠীরই হোক না কেন, যে খানেই হোক না কেন; এড়ানো না গেলে সেখানকার মানুষ অগ্রসর হবার বদলে পেছন পানেই ছুটবে। ভ্রান্তিতে ভাববে; এগুচ্ছে।
ভিনদেশী ধর্মীয় আচার বাঙালির সংস্কৃতিকে বহুকাল ধরে দূষিত করেছে। সরলমনা বাঙালি বুঝে না বুঝেই ধর্মীয় আচারের মত একটি উপাদানকে আমাদের জীবনে অতি গুরুত্বপূর্ন জায়গায় বসিয়েছে।
বাঙালির আপন সংস্কৃতির প্রবল চর্চা এমন ধর্মাবস্থা থেকে উত্তরণের একটি বড় অস্ত্র হতে পারে বলে মনে করি।
খুব দরকারি বিষয়টা নিয়ে লেখার জন্য ধন্যবাদ।
@কাজী রহমান,
ধন্যবাদ আপনাকেও। এখানে মন্তব্যের বাইরেও আপনার ইমেইলে করা মন্তব্য প্রয়োজনীয় ছিল।
সংখ্যালঘু পরিবারে জন্মনিলে সংগ্রাম করে বাঁচতে হয় আর সংখ্যাগুরু পরিবারে জন্মালে লজ্জা নিয়ে বাঁচতে হয়( অন্তত যারা মুক্তমনা)। আমি ত বরং সংগ্রামের জীবনটাই বেশি পছন্দ করবো, লজ্জার জীবনের থেকে।
@অরণ্য,
লজ্জা আর সংগ্রাম। ভাল বলেছেন, তবে সংখ্যালঘু পরিবারকেও লজ্জা নিয়ে, মাথা নীচু করে বাঁচতে হয়।দুর্বৃত্তরা যখন মেয়েকে নিয়ে টানাটানি করে তখন মা বাবার, পরিবাব্রের অন্যান্যদের লজ্জার অনুভূতি অন্যে বুঝবে না।
————-মর্মকথা এটাই। এ মানসিকতা পরিবর্তনের সাধ্য কারো নাই।
@আমজনতা,
ইদানিংকালে আমারও একই মত।
দেশের অবস্থা ভাল নয়। এই মুহুর্তে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর কাছে জাতি একটি নির্দেশনা চায়; অথচ তিনি নিশ্চুপ। পত্রিকা পড়লে মনে হয় সরকার জামাত-শিবিরের দয়ার কাছে পুরো দেশ জিম্মি রেখে অসহায়ের মত তাকিয়ে দেখছে। সরকারের উচিত অবিলম্বে জরুরী অবস্থা ঘোষণা দিয়ে বিশৃঙ্খলা সৃস্টিকারীদের বিরুদ্ধে ক্র্যাকডাউন শুরু করা।
@মনজুর মুরশেদ,
ভদ্র মহিলা শেখ হাসিনাতো একাই দেশ চালান। উনি সবকিছু একা করতে গিয়ে হিমশিম খাচ্ছেন। উনার বোঝা উচিত , একা একা সবকিছু সামলানো সম্ভব নয়। উনি উনার আশেপাশে চামচা না রেখে আওয়ামীলীগের যেসব বড় নেতারা আছে , তাদেরকে নিয়ে বর্তমান পরিস্থিতি মোকাবেলা করা উচিত। উনার বোঝা উচিত যে উনার একার বুদ্ধি কখনোই পর্যাপ্ত নয়। আর অযোগ্য চাটুকারদেরকে মন্ত্রী বানালেই হয়না। দেশ সুষ্ঠুভাবে পরিচালনার জন্য দক্ষ নেতা বা মন্ত্রী দরকার.
[img]https://fbcdn-sphotos-c-a.akamaihd.net/hphotos-ak-ash4/c0.0.403.403/p403x403/484992_4558161596681_1867665797_n.jpg[/img]
ফেবুতে এই নোটটি লিখেছেন জনৈক রাহুল ব্যানার্জি। @ গীতা দি, আর কিছুই বলার নেই। … (U)
@বিপ্লব রহমান,
হুম।
(Y) (Y) (Y) (Y) (Y) (Y) (Y) (Y)
@ভক্ত,
আপনার ইমেজের সাথে আমার লেখার থিম মিলাতে পারছি না।
@গীতা দাস,
সাহসীভাবে মত প্রকাশ করার জন্য অভিনন্দন।
একদম মনের কথাগুলোই বললেন। বিগত কয়েকদিনের সাম্প্রদায়িক হামলার ঘটনাগুলো পড়ে আর শুনে প্রতি মুহূর্তে এই ভাবনাটাই মনে আসছে। ভাবছি বাংলাদেশের মত অন্ধ গোঁড়ামির দেশে সংখ্যালঘুর প্রতিনিধিত্ব করা মানেই দুর্ভাগ্য, ঘৃণায় বিষিয়ে উঠছে মন। আবার পর মুহূর্তেই নিজেকে সংকীর্ণ ও সাম্প্রদায়িক ভেবে সঙ্কুচিত হচ্ছি লজ্জায়।
পারিবারিক পরিচয়কে তো আর মুছে ফেলা যায় না এতো সহজে। আমি যত সহজে আমার জন্মসূত্রীয় ধর্মকে না বলে দূরে ঠেলে দিতে পারছি, আমার পরিবারের বাকিদের পক্ষে তা ততটা সহজ নয়। প্রতিদিন তাই আতঙ্কে কাটাচ্ছি।
সেদিন চট্টগ্রামে এক হিন্দু নারী তাঁর দেবরের সাথে সিটি বাসে বাড়ি ফিরছিলেন। পথের মাঝে ছাত্র-শিবিরের হামলা। স্বামীর মাঙ্গলিক চিন্তার সংস্কারে যে শাঁখা তিনি হাতে পরে ছিলেন, তাই কাল হল। পরিচয় বুঝে নিয়ে, হামলাকারীরা ধরল তাঁর দেবরকে। গাড়ি থেকে টেনে নামিয়ে বেদম পেটাল। তাও রাস্তা ভর্তি লোকজনের সামনে। আমি ঘটনাটা শুনেছি আমারই আত্মীয় এক প্রত্যক্ষদর্শীর কাছে। শোনার পর থেকে ভাবছিলাম, ওই নারীটির কথা। তাঁর এখন কি অবস্থা। এতদিনের ধর্মীয় সংস্কারের উপাদান শাঁখা, যেটা এখন তাঁর পরিচয় আর স্বত্ত্বার অংশ হয়ে উঠেছে সে কি খুব সহজে সেটা খুলে ফেলতে পারবে? গ্রাম্য, স্বল্প-শিক্ষিত একজন নারীর পক্ষে হাজার বছরের বয়ে আনা সংস্কার এক দিনে ঝেড়ে ফেলা অসম্ভব। কারণ এই একদিনে ঝেড়ে ফেলাটা ভয় বা প্রতিবন্ধকতা থেকে আসে, জ্ঞান থেকে নয়। কাজেই এ থেকে শুরু হয় সাম্প্রদায়িক ঘৃণা যা জন থেকে দলে, দল থেকে সম্প্রদায়ে ছড়িয়ে পড়ে। দাবানলের মত এ ঘৃণা আমাদের যে মানবতাবাদী, ধর্মনিরপেক্ষ বাংলাদেশের স্বপ্ন তাকে জ্বালিয়ে, পুড়িয়ে শেষ করে দেবে।
এখনও ৯১ এর দাঙ্গা দুঃস্বপ্ন হয়ে ঘুমে আসে। ছোট বয়েসে বেশী কিছু মনে নেই, শুধু কানে বাজে সমস্বরে চিৎকার-” ডান্ডি হগলরে মার”, …আর চোখে ভাসে আমার সাথে রাতের গভীরে স্কুলের ছাদে লুকিয়ে থাকা ৪০-৪৫ জন মানুষের নিঃশব্দ কাঁপাকাঁপি।
এসবের মাঝে তবুও স্বপ্ন দেখি গণজাগরণ জিতবে, একদিন শেষ হবে সাম্প্রদায়িক মারামারি। তার আগে হয়তো আরো লোক মরবে, আরো বসতভিটা পুড়বে, ভয়ে দেশ ছাড়বে অনেক জন। এর মধ্য দিয়ে আমরা শুদ্ধ হব। সেই সময়ের প্রতীক্ষায়।
@পাপিয়া চৌধুরী,
সহমর্মীর ছোঁয়া পেলাম আপনার মন্তব্যে।
@পাপিয়া চৌধুরী,
৯১ তে অনেক ছোট ছিলাম।তেমন কিছুই মনে নেই।তবে মনে আছে ২০০১ এর পর যখন জামাতের হাত ধরে বিএনপি ক্ষমতায় আসলো।হিন্দুদের উপর ওই নির্যাতন,আর দেখতে চাইনা, আর সেই সাথে সেই নির্যাতনকে সরকারী ভাবে অস্বীকার করে, সেটাকে এইদেশে তথাকথিত ইন্ডিয়ার দালাল আর “র” এর এজেন্টদের কাজ বলে চালিয়ে দেয়ার হীনমানসিকতাও আর কোনদিন দেখতে চাই না ।
কেউ কথা রাখে না
বেশ কয়েক দিন যাবত মন অস্থির। অস্থির একা আমার নয়। সবার সব দেশবাসীর। একটা চাওয়াই ছিল ৭১ এর যুদ্ধাপরাধীদের বিচার। এবং ন্যায্য বিচার। এ বিচার এ দেশের আপামর জনগনের। যারা দল করেন না তাদের আরো বেশী। কেননা তাদের তো
কোনো কিছুর প্রত্যাশা নেই। নেই কোনো মন্ত্রী মিনিস্টার হবার আকাঙ্ক্ষা। তারই পরিপ্রেক্ষিতে ইন্টারনেট জগতে লেখা লেখি। তো সেই লেখা লেখি তো আজ নয়। অনেকদিন অনেক দিনের আশা যুদ্ধাপরাধীদের বিচার হোক।
যেই ধর্মের দোহাই দিয়ে
পাকিরা আমাদের ধংস করতে চেয়েছিল। চেয়েছিল বাংলাদেশ নামের যে দেশের স্বপ্ন সবাই দেখছে তা নস্যাত করতে। দীর্ঘ যুদ্ধের পরে জন্ম নিল
“বাংলাদেশ” নামের আমাদের আজকের গর্বের।
এতো বুদ্ধিজীবী নিধন, এতো নারী ধর্ষণ, এতে যারা পাকিদের সাহায্য করেছিল, যারা নিরীহ ছাত্র, অধ্যাপক, ডাক্তার কাকে বাকী রেখেছিল
হত্যা করতে? যাতে এ দেশের মেরুদন্ড ভেঙ্গে যায়। কিন্তু যায় নাই। এতো হত্যাযজ্ঞের পরেও জন্ম নিল বাংলাদেশের।
আস্তে আস্তে বাংলাদেশের বয়স বাড়তে শুরু করল। এতো দীর্ঘ দিন পরেও বিচার হল না।
যে দলই ক্ষমতায় আসতে চান। সবাই আশ্বাস দেন-
-হবে হবে আমরা যুদ্ধাপরাধীদের বিচার করব, আমাদের ভোট দিয়ে আগে ক্ষমতায় আনুন-
ক্ষমতা এমন জিনিস ঐ মোহে পড়লে কেউ কাউকে চেনে না।
এমন করেই দিনের পরে দিন একে একে সব সরকারই ক্ষমতায় এলে ভুলে যান তারা কী বলেছিলেন। তারা জনগনকে কোন অঙ্গীকার করেছিলেন।
এইবারকার ভোটে বিপুল সংখ্যক তরুন প্রজন্ম নতুন ভোটার হয়। এবং বিপুল ভোটে জয়ী হন বর্তমান সরকার।
এই কারনেই তার জয় (আমার মতে) তার সরকার অঙ্গীকারবদ্ধ ছিলেন যে যুদ্ধাপরাধীদের ন্যায্য বিচার হবে। করবেনই।
কিন্তু হায়, বিগত ৪২ বছর ধরে একের পর এক
সরকার এলো গেলো। কিন্তু, গদীতে বসলে কারো প্রতিশ্রুতির কথা মনে থাকেনা। থাকবে কী করে। তারা তখন জনগনের থেকে অনেকটা
বিচ্ছিন্ন ভাবে বসবাস করেন।
এর মাঝেই কিন্তু ৪২ বছর ধরে অপশক্তি শক্তিশালী হতে শুরু করে। তারা নানান ট্রেনিং পেয়ে
চারা গজাতে শুরু করে। একদিন সেই চারাগাছ পরিণত হয় বিশাল বটবৃক্ষে। ছড়িয়ে পড়ে তার ডাল -পালা। নানান ভাবে তাদের সম্পর্কে
সতর্ক করা হয়। কিন্তু, কোন সরকারই কর্ণপাত করেননি।
তাদের দরকার ভোট ব্যাঙ্ক। তাই তো হায়-
” কেউ কথা রাখেনি”
গণদাবীর মুখে শুরু বিচারকার্য। বিচারের রায়ে মণঃপুত নয় জণগণ। কেনো হবে? এই বিশাল অপশক্তিকে ধংস করতে হলে আগে
তার মাথা
কেটে ফেলতে হবে। কেনোনা পচনের শুরুই মাথা থেকে। ফেস বুক, ব্লগ এ যারা এত দিন যাবত অক্লান্ত
পরিশ্রম করে এসেছেন,তারা এক ডাকে নেমে পড়লেন মাঠে। মাঠ কোথায়? ডাক পড়ল “শাহবাগ গণজাগরণ” মঞ্চে। একে একে শত মানুষ
পরিনত হল লক্ষ্য মানুষে। গণজাগরণ মঞ্চ মানুষের
স্রোতে পরণত হল জনসমুদ্রে। ক্ষোভে জনতা ফেটে পড়লেন। এতদিনের পুঞ্জিভূত বেদনা, এতো দিনের আকাঙ্ক্ষা সব কী বিফলে যাবে?
গণজাগরণ মঞ্চের অন্যতম
পুরোধা রাজীব প্রাণ হারালেন। নির্মম ভাবে ঘাতকের হাতে। ঠিক সেই ভাবে যে ভাবে
হত্যা করতে চেয়েছিল হুমায়ুন আজাদ সার ‘কে। এরা কারা? এতো দিন এরা এতটা শক্তি অর্জন করে ফেলেছে যে সরকার ও হিমসিম খাচ্ছেন এদেরকে বাধা দিতে। আজ শাহবাগ একটা নাম নয় একটা শক্তি। আজ যেনো পুরো দেশ শাহবাগ হয়ে গেছে। সমুদ্রের গর্জন হয়ে গেছে আমাদের প্রিয় দেশ।
এ যেনো অনেকটা অবধারিত ছিল। অনেক সচেতন করা হয়েছিল, সরকার’কে অনেক লেখা লেখি করা হয়েছিল বুদ্ধিজীবী এই তরুনেরা।
এখন
যুদ্ধাপরাধের বিচার ও দেশের চলমান রাজনৈতিক
পরিস্থিতি দেখে একটা কথাই মনে হচ্ছে,
কেউ কথা রাখেনা
শেষ কথা বলছি। গীতাদির লেখা পড়ে চোখে জল আটকাতে পারিনি। কেননা , আমার ছোটবেলা কেটেছিল হিন্দু পাড়ায়। তাদের সাথে আমার যে সখ্যতা গড়ে উঠেছিল।তা আর জীবনে গড়ে ওঠেনি কোনোদিন কারো সাথে।
আমি আমার এই লেখাটা পাঠিয়েছিলাম মুক্তমনা মডারেটরের কাছে। হয়তো তাদের লেখা মনঃপূত হয়নি তাই ছাপাননি। তাতে
আমার কোন ক্ষেদ নেই। আজ মন্তব্য করতে গিয়ে এই লেখাটা দিলাম এই কারনে,যে
সরকার তার দায় কোনো দিন এড়াতে পারবেন না। রামুর ঘটনা থেকে তাদের কী এই বোধোদয় হয়নি, যে জামাতীদের ফাসির হুকুম হলেই সংখ্যা লঘুদের ( গীতা’দি মাফ করবেন আমি আপনাকে জীবনে সংখ্যা লঘু ভাবতে পারিনা, নিজের বোন ভেবে থাকি সব সময়) উপরে হামলা হবে? কী জবাব আছে সরকারের?
@আফরোজা আলম,
দুর্ঘটনা ঘটার পর দায় কে নিল আর না নিল তা দিয়ে কিছু যায় আসে না।
@গীতা দাস,
দুর্ঘটনা ঘটার পর দায় কে নিল আর না নিল তা দিয়ে কিছু যায় আসে না
সহমত-