সিনেমাটার নাম ইনোসেন্স অব মুসলিম। স্যাম বেসাইল নামে এক আমেরিকান ইহুদি এর ডিরেক্টর। সে শ খানেক ইহুদিদের কাছ থেকে কয়েক মিলিয়ান ডলার তুলে সিনেমাটা বানিয়েছে। ইউটিউবে খুঁজলে ১৮ মিনিটের একটা ট্রেলার পাওয়া যাচ্ছে। বি-গ্রেড সিনেমা-কোন এক্টিং নেই। মহম্মদকে নিয়ে কমেডি। আরো পরিস্কার ভাবে হজরত মহম্মদের দুর্বার যৌন জীবন নিয়ে কমেডি-যাতে সুন্দরী নারী এবং সুন্দর বালকের প্রতি নবীজির অপ্রতিরোধ্য আকর্ষন নিয়ে ব্যাঙ্গ করা হয়েছে এবং সেটাও খুব দুর্বল। সোজা কথায় ফাজিল ফালতু সিনেমা।
কিন্ত তাতে কি? মিশর এবং মধ্যপ্রাচ্যে মুসলিম সমাজ প্রতিবাদে শ্যামাপূজোর কালিপটকার মতন নিজেরাই ফাটছে আর ফাটাচ্ছে! উগ্র মুসলিমদের হাতে কাল প্রাণ হারিয়েছেন লিবিয়াতে আমেরিকান রাষ্ট্রদূত ক্রিষ্টোফার স্টিভেনস। তোলপাড় হচ্ছে আমেরিকান রাজনীতি। কাল পরশুর মধ্যে পাকিস্থান আর আফগানিস্থানে আরো কত লোক লাশ হবে আর লাশ ফেলতে চাইবে জানি না। এর আগেও কোরান পোড়ানো বা টয়লেটে কোরান ট্রাশ করা নিয়ে লাশ হওয়া এবং লাশ ফেলার অভিলাশী উৎসাহে কোন ঘাটতি দেখা যায় নি।
আমি নিশ্চিত মুসলিম সমাজ এখন দুইভাবে বিভক্ত-একদল মর্মাহত, কিন্ত হিংসাত্মক উত্তরে বিশ্বাস করেন না। আরেক দল ধর্ম রক্ষার নামে এই ধরনের হিংসাত্মক কাজ কর্মকেই ধর্মীয় নিদান বলে বিশ্বাস করে। আমার প্রশ্ন হচ্ছে এই যে ধর্মীয় ভাবাবেগ, যাকে ঘিরে এই কান্ড-সেই মিথটি একবিংশ শতাব্দিতে কি আমাদের সমাজ এবং সভ্যতার জন্যে কাম্য না সব থেকে বড় ক্যান্সার?
এটা খুব সহজেই বিচার করা যায়, যদি আমরা এই প্রশ্নগুলি করি।
• ধরা যাক ধর্মীয় ভাবাবেগে আঘাত করা উচিৎ না । তাহলে আমার মতন নাস্তিক নিধার্মিকদের ভাবাবেগেও আঘাত করা উচিৎ না। আমেরিকাতে নিধার্মিকদের সংখ্যা এখন ১৫% এর বেশি, অনেক দেশেই নির্ধামিকরাই সংখ্যাগুরু। কিন্ত প্রতিটা ধর্মগ্রন্থে সে কোরানই হোক, বা গীতাই হোক, নিধার্মিক বা বিধার্মিক বা ঈশ্বরে অবিশ্বাসীদের গর্দভ, শুয়োর থেকে শুরু করে সব ধরনের চোস্ত গালাগাল দেওয়া হয়েছে। তাহলে নিধার্মিক ধর্মের প্রতিনিধি হিসাবে আমাদেরও দাবী করা উচিৎ, আমাদের ধর্মীয় ভাবাবেগে আঘাত করার জন্যে কোরান সহ যাবতীয় ধর্মগ্রন্থ যা নিধার্মিকদের বিরুদ্ধে বিদ্বেশগার করে, তাদের ও নিশিদ্ধ করা হৌক? আমরা কিন্ত কোন ধর্মগ্রন্থ নিশিদ্ধ করার পক্ষে না। কারন আমরা জানি ধর্মগ্রন্থগুলিই ধর্মীয় মূঢ়তার বৃহত্তম প্রমান। ইসলাম যদি সেই ধরনের সলিড কিছু হত-তাহলে “ইনোসেন্স অব মুসলিমের” মতন একটি তৃতীয় শ্রেনীর ভাঁড়ামোতে এর গোড়া নড়ে কেন?
• এর আগে আমেরিকাতে লাভগুরু বলে একটি সিনেমা রিলিজের আগে, হিন্দু ধর্মে আঘাত করা হচ্ছে বলে ভারতীয় হিন্দুরা এর রিলিজ বন্ধ করে দিয়েছিল। তবে হিন্দুদের সমাজ “শিক্ষার” দিক দিয়ে একটু বেশি “বিবর্তিত” বলে লাশ না ফেলে, কোর্টের আশ্রয় নিয়ে সিনেমাটা আটকানোর চেষ্টা করে। সফল হয় নি। এবার ব্যাপারটা ভাবুন। এই হিন্দু ধর্মের ছানাপোনারা দাবী করে, হিন্দু ধর্মের মতন দার্শনিক ধর্ম নাকি হতে পারে না কারন এই ধর্ম সকল ধর্মের মিউজিয়াম। আরে তাই যদি হয়, তাহলে লাভগুরুর মতন একটা সফট পর্ণ ধর্মের ভিত নড়িয়ে দেবে? লাভগুরু তাও সিনেমা হিসাবে ভদ্র ছিল-ইনোসেন্স অব মুসলিম আরো দুর্বল ভাঁড়ামো। তাহলে শুধু এই ধরনের যৌন ভাঁড়ামো করেই ইসলামের নাড়া নড়ানো যায়? সেটাই যদি সত্য হয়, তাহলে বুঝতে হবে, ইসলাম ধর্মের পুরোটাই জঙ্গিবাজি-ধর্মের ভিতরে কিছু নাই-সেই জন্যেই তা এত ক্ষণভঙ্গুর।
• কিন্ত হিন্দু বা ইসলাম ধর্ম এত অগভীর বা এত ফালতু এমন ভাবার কারন নেই । এগুলি বিবর্তনের পথে নির্বাচিত ধর্ম যারা হাজার হাজার বছর ধরে টিকেছে। সুতরাং এদের প্রানশক্তি আছে বইকি। না থাকলে, এরা নির্বাচিত হত না। সমস্যা হচ্ছে বিবর্তনের পথে যে আধুনিক উৎপাদন শক্তির উদ্ভব হচ্ছে, তার সাথে ধর্মগুলি দ্রুত খাপ খাওয়াতে পারছে না। এই ব্যাপারে বৌদ্ধ বা হিন্দু ধর্মগুরুরা কিছুটা এডাপ্টিবিলিটি বা অভিযোজন দেখালেও ইসলামিক সমাজের অভিযোজন হচ্ছে না তেলের টাকার কারনে। ৪০ বছর আগেও ইসলামি সমাজ এত ইসলামিক ছিল না কোন দেশে-কারন তাদের ইসলাম থেকে বেড়িয়ে এসে আধুনিক উৎপাদন শক্তিকে আশ্রয় করেই বাঁচতে হত। অর্থাৎ ইংরেজি শিক্ষা, পাশ্চাত্য দর্শন, আধুনিক রাজনীতি বিজ্ঞান, বিজ্ঞান এবং প্রযুক্তি এর মাধ্যমে গোটা বিশ্বের অর্থনীতির সাথে তাদের যুক্ত হওয়ার একটা পক্রিয়া আরব জাতিয়তাবাদি আন্দোলনের মাধ্যমে শুরু হয়। কিন্ত সৌদি আরব সহ নানান দেশের রাজাদের সামন্ত তান্ত্রিক ক্ষমতা পিপাসা, তেলের টাকায় ইসলামিক জীবন এবং আমেরিকার প্রচ্ছন্ন মদতে ইসলামের চাকা উলটো দিকে ঘুরতে থাকে। এর সাথে একই রকম ধর্মীয় ভাবাবেগাচ্ছন্ন দক্ষিন ভারতীয়দের তুলনা করা যেতে পারে। তাদের খনিজ সম্পদ এত নেই যে তার টাকাতে পায়ের ওপর পা তুলে জীবিকা নির্বাহ সম্ভব। ফলে বাঁচার তাগিদেই তারা গোঁড়া হিন্দুত্ব থেকে বেড়িয়ে আস্তে আস্তে আধুনিকতার দিকে হাঁটতে বাধ্য হচ্ছে।
এই বাধ্যবাধকতাটা ইসলামিক সমাজে আসে নি তেলের টাকার জন্যে। সমাজ, রাষ্ট্র, মিডিয়া বা রাজনীতি যতই শেখাক, আমি হিন্দু বা মুসলমান, বাস্তব এবং বিজ্ঞান ভিত্তিক চিন্তা হচ্ছে- আমি একজন জৈবিক মানুষ। কারন দুদিন না খেতে পাওয়ার পর যদি কোন মুসলমানকে বলা হয় পুজো করলে খেতে পাবে, সেই তাই করবে। এটাত আমি ছোটবেলায়, আখছার দেখেছি পুজোর সময়গুলিতে ভাল খেতে পাওয়ার লোভে, অনেক দরিদ্র মুসলমান প্রসাদ খাওয়ার পাতে বসে। এটাই মানবিক ধর্ম। আবার তারই যখন টাকা হয়, সে পোত্তলিকতার অপরাধ নিয়ে ভাবে। কারন পেটে ভাত থাকলে এই সব মিথ নিয়ে ভাবার অবকাশ পায় লোকে। বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় অনেক হিন্দু ইসলামে ধর্মান্তরিত হয়ে বাঁচার চেষ্টা করেছে। কারন সেটাই জৈবিক ধর্ম।
কালকের মধ্যপ্রাচ্যও সেই মানুষের জৈব ধর্মই পালন করবে বা করতে বাধ্য হবে। মধ্যপ্রাচ্যে তেলের উপায় কমতে থাকছে ইলেকট্রিক গাড়ির জন্যে। তার সাথে যুক্ত অবাধে জনসংখ্যা বৃদ্ধি। ফল এই যে মধ্যপ্রাচ্যের প্রতিটা রাষ্ট্রে এখন তীব্র খাদ্য সংকট ঘণীভূত হচ্ছে। ইসলাম দিয়ে আর নামাজ পরে এই সমস্যার সমাধান হবে না। আধুনিকতা এবং যন্ত্র সভ্যতাকে গ্রহণ করেই তাদের এগোতে হবে। ভারতে এটা আমরা গত ৪০ বছর ধরে দেখেছি। ভারতে আস্তে আস্তে সামন্ততান্ত্রিক সমাজ এবং হিন্দুত্ববাদিরা পিছু হটতে বাধ্য হয়েছে উন্নয়নকে জনগণ অগ্রাধিকার দেওয়ার জন্যে। ফলে মন্দির এবং বাবার সংখ্যা বাড়লেও সমাজ ও রাজনীতির ওপর ধর্মের প্রভাব অনেক কমেছে। বিজেপি কিন্ত সেই নব্বই দশকের পর হুল ফোটাতে পারছে না। নরেন্দ্রমোদিকেও হিন্দুত্ববাদ বাদ দিয়ে উন্নয়নকে হাতিয়ার করে ভোটে জিততে হচ্ছে। আধুনিকতার চাপ।
সুতরাং মধ্যপ্রাচ্যে একবার যখন গণতন্ত্র আসতে শুরু করেছে, এই আশা, দুরাশা বা নিরাশা নয়, যে আস্তে আস্তে ধর্মীয় আবেগ সেখানেও ফিকে হবে। আধুনিক রাষ্ট্র এবং আধুনিক উৎপাদন ব্যবস্থাকে গ্রহণ না করলে, সেই সমাজ খাদ্যাভাবে গৃহযুদ্ধে ধ্বংস হবে যা আজ আমরা আফ্রিকাতে দেখছি। মধ্যপ্রাচ্য সাবসাহারান আফ্রিকার দিকে যাবে -না ইউরোপের পথে আসবে, সেটা আমরা দ্রুতই দেখতে পাব।
খুব ভালো লিখেছেন!!!!
বিপ্লব পাল, আমার কাছে আপনার প্রথম প্রশ্নটি সবচেয়ে যুক্তিযৌক্ত বলে মনে হয়েছে।বি-গ্রেডের একটা মুভির কারণেই কি সব নড়বড়ে হয়ে গেলো?ঐ ইউটিউবেইতো আবার আছে অনেক মুহাম্মাদের প্রশংষা সমৃদ্ধ ভিডিউ।শত ভালো ভিডিওর ভিড়ে এই একটার জন্য কেনো তারা এতো নিরীহ মানুষকে হত্যা করবে।শান্তির ধর্ম শান্তিপূর্ণ উপায়ে কি কিছু করতে পারতো না?যদিও আদি ইসলামিক ইতিহাস তাদের সে শিক্ষা দেয় না।কারণ মুহাম্মাদই যে কোনো কিছুর সমাধা করতো যুদ্ধের মাধ্যমে।
@ফিনিক্স পাখি,
যুদ্ধে মাধ্যমে সমাধানের সব থেকে বড় বইটির নামে গীতা। কিন্ত্ হিন্দুরা যুদ্ধ খুব এখন পছন্দ করে বলে জানি না। যদিও এদের সব দেবদেবীই যোদ্ধা।
সুতরাং সেই কারনে মুসলিমরা দাঙ্গাবাজ না। এর মূলকারন ইসলামিক সমাজের বিবর্তন আটকে যাওয়া রাষ্ট্রঈয় পৃষ্ঠপোষকতার কারনে। ফলে অশিক্ষা সেখানে অনেক বেশী দানা বেঁধেছে।
কোন মানুষ আলাদা হতে পারে না। একজন মুসলিম দাঙ্গাবাজা হলে, একজন হিন্দুও সমান দাঙ্গাবাজ হতে পারে। উন্নত বিশ্বে জন্মালে সেই দাঙ্গাবাজই বিজ্ঞানী হতে পারত। কিন্ত রাষ্ট্র এবং সমাজই মানুষকে দাঙ্গাবাজ বানায়। আর রাষ্ট্র এবং সমাজ যেহেতু বিবর্তনের পথে এসেছে, সেই সামাজিক এবং ঐতিহাসিক বিবর্তনের দিকে চোখ রেখেই ইসলামকে বুঝতে হবে। কোরান হাদিস থেকে ইসলামকে বুঝে কি লাভ আমি জানি না।
:clap
(Y)
অসাধারণ বিশ্লেষণধর্মী একটি লেখা। আমি সেদিন ফেসবুকে একটি স্ট্যাটাস দিয়েছিলামঃ
মুসলিম ধর্মের একটি সমস্যা হচ্ছে, এখানে ধর্মীও ভাবে অসহিষ্ণু হতে শিক্ষা দেয়া হয়। অনেকটা স্বৈরতান্ত্রিক সরকারের মতই এই ধর্ম। জানিনা আমেরিকা মুসলিম রাষ্ট্র হলে আর মিডল ইস্ট ক্রিশ্চিয়ান অধ্যুষিত হলে হয়তো বোমা মেরে অনেক আগেই উড়িয়ে দিতো। আরব বসন্ত যদি ইরান পর্যন্ত না পৌঁছায় তাহলে কিছু আশা করতে পারিনা। আবার এর মধ্যে হাজির মুসলিম ব্রাদারহুড, এদের বিপজ্জনক মনে হচ্ছে। হেজবুল্লাহ ও হামাসের থেকে তারা কিছু কম হুমকি নয়।
@আর্যভট্ট,
কোন ধর্মই মনোলিথিক না, ইসলাম ও না। ইসলাম অসহিষ্ণু হলে আরবে বিজ্ঞানের উন্নতি হত না। ইসলামে অসহিষ্ণুতার উৎস কোরান না-কোরান অন্য কোন ধর্মগ্রন্থ থেকে বিশেষ আলাদা কিছু না।
ইসলামের অসহিষ্ণু রাজনৈতিক রূপে বীতশ্রদ্ধ হয়েই ইসলামের আধ্যাত্মিক দিকের ওপর জোর দিয়ে সুফী ইসলামের জন্ম হয়। এমন ধর্মীয় আন্দোলন হিন্দু ধর্মেও অনেক এসেছে এবং কালক্রমে তা হিন্দু ধর্মের মূল ধর্মে পরিণত হয়েছে যা হিন্দু ধর্মকে করেছে সহনশীল । নইলে যুদ্ধক্ষেত্রে জন্ম যে ধর্মগ্রন্থের তা আরো মার কাটারী।
তাহলে দেখা যাচ্ছে সমস্যাটা হচ্ছে ঐতিহাসিক বিবর্তনে। সুফী ইসলাম ইসলামের মেইনস্ট্রিমে আসতে পারে নি কোনদিন। অথচ সুফী ইসলামের ১০০% মিরর ইমেজ, বৈ ষ্ণব ধর্ম কিন্ত হিন্দু ধর্মে মূল প্রবাহে এসেছে। কেন এমন হল?
এর কারন ইসলাম রাজার ধর্ম হিসাবে বিবর্তিত হয়েছে-আর এখন হচ্ছে রাজনীতিবিদ দের জন্যে। ধর্মের সাথে রাষ্ট্রEর নাড়ী হিন্দু ধর্মে দুর্বল হয়েছে ভারতের ৯০০ বছরের পরাধীনতার ইতিহাসে। ইসলামে এমন হয় নি। সেটাই ইসলামের অসহিষ্ণুতার সব থেকে বড় কারন।
@বিপ্লব পাল, আপনার মন্তব্যে যথেষ্ট উপকৃত হয়েছি, (Y) ধন্যবাদ। হিন্দু ধর্ম আর মুসলিম ধর্মের মধ্যে পার্থক্য বিশাল। হিন্দু, বৌদ্ধ এগুলো হোল ইন্ডিয়ান ধর্ম। আর মিডল ইস্ট, তথা জেরুসালেম কেন্দ্রিক ধর্ম গুলোর প্যাটার্ন কিন্তু আলাদা। মুসলিমরা অনেকটা নাৎসি জার্মান দের মতো। তারা নতুন কিছু নিজের ভিতরে নিতে রাজি নয়। এমনকি আয়াত ও হাদিসের ব্যাখ্যা শুনতেও নয় অনেক ক্ষেত্রে যেখানে তা বিপক্ষে যাচ্ছে। ইনছেন্স অব মুস্লিমস এর পর ত্থেকে তা বুঝাই যাচ্ছে। ক্রিস্টিয়ান রা অনেকেই তাদের ধর্ম গ্রন্থ আপডেট করেছে, কিন্তু মুসলিম দের কাছে কিন্তু তারা কাফির, কারণ আল্লাহ্র দিনের সাথে কিছুই মিশানো যাবে না। এটা হচ্ছে আমাদের নবী ও তাদের একগুয়ে সাহাবী, যাদের শিক্ষা দিক্ষা ছিলোনা তাদের বানানো নিয়ম।
আমরা এখন আর কোন আপডেট চাচ্ছিনা ধর্মে, আমরা শুধু চাচ্ছি, মানবতা বিরোধী অংশ গুলি ধর্ম নামের পবিত্র প্রতিষ্ঠান থেকে বাদ দিতে। যতদিন তা না পারবো আর ধর্মের পথে হাঁটবো না। এই ধর্ম আমার না।
বহুত গুনাহ করলাম, যাই একটু আল্লাহু একবার দিয়া আসি…… :guru:
@আর্যভট্ট,
ধর্ম উইক টেক্সট। উইকটেক্সট এর একটি বাক্য অনেক ভাবে ব্যাখ্যা করা যায়। এই নিয়ে আগে আমি বিস্তারিত লিখেছি।
আর ধর্ম উইক টেক্সট বলেই এর আধুনীকিরন সম্ভব, যার অধিকাংশ আমরা দেখেছি ধর্ম সংস্কার আন্দোলনের মাধ্যমে। লুথেরিয়ান, প্রটেস্টান্ট চার্চ গুলি কেন এল? কেন এল ব্রাহ্ম ধর্ম?
এমন সংস্কার আন্দোলন ইসলামেও এসেছে। এমন এক সংস্কারক ধর্ম বাহাই বা ইসমাইলি। এদের সাথে বর্তমানের হিন্দু বা খ্রীষ্ঠানদের তুলনা করা যায়। এমন অনেক সংস্কার ইসলামে এসেও মূল শ্রোতে আসতে পারে নি কারন, ইসলাম শাসক শ্রেনীর খুব সহায়ক অস্ত্র। গণতন্ত্রের ভিত ইসলামিক দেশগুলিতে যত শক্ত হবে, অন্য ধর্মের মতন নরম ইসলামের ও জন্ম হবে।
@বিপ্লব পাল, আপনার সাথে আমি পুরোপুরি সহমত। অবশ্য ভারতে বিজেপি আজকাল কিন্তু একটা চর্চা করছে মুসলিমদের মতই। মুসলিমরা ধর্মের সাথে রাষ্ট্র, শাসন, বিচার, বিজ্ঞান, সাহিত্য সব গুলাই ফেলছে তো, সেখানেই তাকে অনেক ক্ষমতা দেয়া হয়ে গেছে। মুসলিমরা পান থেকে চুন খসাতে পারেনা, সেখানেও ইসলাম। সবগুলি যুগেই ইসলাম রাষ্ট্রীয়ভাবে শাসকদের ঢাল হিসেবে ছিল, কখনো সরাসরি, কখনো পশ্চাতে। আর এর সুযোগে হাজার বছরে আমাদের মাথায় ইসলামী রাষ্ট্র, ইসলামী সরিয়া(আইন), ইসলামী ফতোয়া এমনভাবে ঢুকিয়ে দেয়া হয়েছে যে, মুসলিমরা আজ চোখে দেখতে জানে, কিন্তু কিছু ভাবতে অক্ষম। ইসলাম ধর্মে সংস্কার কে করবে? এটা আমার প্রশ্ন। কারণ এখন ৩ টি পক্ষের মধ্যে দুটি পক্ষই সক্রিয় ও প্রতিষ্ঠিত। ১ঃ গোঁড়া মুসলিম, বুর্জোয়া মুসলিম, যারা কুরআন হাদিসের অক্ষুণ্ণতা রক্ষায় অস্থির। ২ঃ যারা ধর্মের অসঙ্গতি তুলে ধরে সমালোচনায় ব্যাস্ত ( অধিকাংশ ইতিমধ্যেই ধর্ম ত্যাগ করেছেন) ৩ঃ আপনার কথা মতো একদল সংস্কারক। প্রথম ২ দলের চাপে ৩ নাম্বার আর মাঠে নাই দাদা। কারণ ২১ শতকে যেখানে ইসলামের কিতাব, হাদিস, নবী বিশাল সংকটে সেখানে সংস্কারকরা না সমালোচকরাই বেশি যুক্তিযুক্ত।
দাদা, সংস্কার জিনিসটা কেমন? আমি আমার মতো করে সুদর্শন ধর্ম বানিয়ে নিলাম। আর মানলাম। এর আদৌ কোন অর্থ আছে? প্রটেস্টান্ট, হিন্দুদের ব্রাহ্ম ধর্ম, জেহভান ওয়িটনেস এসব ছোট সংস্কার মূলক মতবাদের দিন ফুরল বলে।
বহুত কুফ্রি করলাম। জাইগা এত্তু :guru: আদায় করি।
ভালো জবাব দিলেন বিপ্লব পাল দাদা… গো অন… (Y) :hahahee:
মাথা ব্যাথা? মাথা কেটে ফেলো হে! এমনই নীতিতে বাংলাদেশ সরকার আন্তর্জাল থেকে ইউটিউব কেটে ফেলেছে। তাই এই বস্তু এখন আমাদের কাছে কাকের কাছে বেল পাকার মতোই অধরা।… ‘ইনোসেন্স অব মুসলিমস’ নামের ছবিটি যাতে ইউটিউবে দেখা না যায়, তাই হীরক রাণীর এই কর্তন অভিযান। জেহাদের উস্কানি বলে কথা।
লক্ষ্যনীয় বাংলাদেশে ইউটিউব ‘ব্লক’ হলেও মৌলবাদীরা কিন্তু বরাবরই ‘আন-ব্লক’ই থেকে যাচ্ছে [ ‘লা ইলা হা ইল্লালহ, নৌকার মালিক তুই আল্লাহ!’] 😛
‘ইনোসেন্স অব মুসলিমস’ নিয়ে উইকিতে একটি লেখা আছে।
http://en.wikipedia.org/wiki/Innocence_of_Muslims
এইসব মন্ত্রীরা (নাকি তাদের তথ্যপ্রযুক্তি পরামর্শদাতাগণ) খুবই চতুর, তারা বেছে বেছে গুগল, ইউটিউব এবং ফেসবুকের এ্যাকসেস বন্ধ করে দিল। দুনিয়ার যাবতীয় খারাপ ভিডিও চোখের আড়াল হল, পাবলিকও আল্হাদে আটখানা, দেখি এবার শয়তানের অনুচরেরা কিভাবে তাদের খারাপ ছবি দেখায় !! ইশ্বরকে ধন্যবাদ যে ইয়াহু বা ডেলিমোশন বাজারে অতটা নাম কিনতে পারে নাই।
(Y)
বাংলাদেশ সরকার গুগল বন্ধ করে দিতে চাইছে??
http://tech.priyo.com/news/internet/2012/09/16/5680.html
বাংলাদেশ গুগল বন্ধ করে দিলে, বাংলাদেশের অসংখ্য ফ্রিল্যান্সার না খেতে পেয়ে মারা যাবে। ১ লক্ষ লোকের রুটি পুঁজি বন্ধ হবে। ধর্মর মতন এক ফালতু জিনিসের জন্যে, বাংলাদেশের ১ লাখ যুবক যুবতীর অন্ন ধ্বংস করবে ?
এটা অবসম্ভাবী ছিল। আধুনিক অর্থনীতি এবং বস্তাপচা মধ্যযুগীয় ধর্মকে নিয়ে চলা এক স্ববিরোধি সমাজ বেশীদিন চালানো সম্ভব না। এই গোঁজামিল কদ্দিন চলে সেই রঙ্গ শুধু দেখি দুনিয়াই।
@বিপ্লব পাল,
সরকার তো সাধারণত সুযোগে থাকেই মুক্ত মিডিয়াগুলো বন্ধ করার। নির্বাচন সামনে বলে কথা। এই সিদ্ধান্তে ধর্মের চিন্তা সামান্যই বলে মালুম হয়।
আর দেশের মানুষ না মতের স্বাধীনতা নিয়ে চিন্তিত, না মিডিয়ার মুক্তি নিয়ে চিন্তিত। একদিন না একদিন রাম রাজত্ব তো প্রতিষ্ঠা হবেই, কারো জন্যে সেইটা ইসলামী শরিয়া, কারো জন্যে সেইটা ক্যাস্ট্রোর কিউবা। তখন তো মুক্ত মিডিয়া এমনিতেই তারা রাখবে না। এখন এর জন্যে এতো প্রিন্সিপল্ড অবস্থান নিয়ে তাদের কী ফয়দা?
@রূপম (ধ্রুব),
রুপম, আমার এসব বিশ্বাস করতে কষ্ট হয়-কিন্ত কালকে আল্লাহর এক মুনিম ফেসবুকে, কি লিখে গেল দেখেন-এই যদি ধর্মান্ধতার লেভেল হয়, বাংলাদেশের মুসলিমদের একটা বড় অংশই যতনা প্রগতিশীল, তার থেকে ও বেশী তালিবানী বলে মনে হচ্ছে। আমি তুলে দিলাম
@বিপ্লব পাল,
আমাদেরকে এর সাথেই বসবাস করতে হবে।
বিপ্লব পালের বিশ্লেষণ ভালো লাগলো। সেই সাথে আদিল মাহমুদের মন্তব্যটাও ফেলে দেবার মতো না। আমি সেই সাথে আরও একটা দিক ভেবে দেখার কথা বলব। এই ম্যুভি বানানোর প্রতিক্রিয়ায় প্রতিবাদ প্রায় সব মুসলিম প্রধান দেশে হলেও আমেরিকা ও ইউরোপের এম্বেসীগুলোতে হামলা হয়েছে কিন্তু শুধুমাত্র তথাকথিত আরব বসন্তের ঢেউ লাগা দেশগুলোতে, অন্য কোথাও সহিংসতা হয়নি, এমনকি আমাদের বায়তুল মোকাররমের সামনেও কোন গাড়ি পোড়ানো হয়নি। সেই যায়গা থেকে এই আক্রমণকে ওই দেশগুলোর নব্য জাতীয়তাবাদী মনোভাবের প্রকাশ এবং সাম্রাজ্যবাদী শক্তির প্রতি আক্রোশ বলে আমার মনে হয়েছে। আল-জাজিরা, সিএনএন, বিবিসি এটাকে যতই অর্থডক্স মুসলিমদের কাজ বলে চালানোর চেষ্টাই করুক না কেন, তাদের প্রচারিত ভিডিওগুলো স্বাক্ষ্যদেয় হামলাকারীদের মধ্যে বেশিরভাগই ছিলো পাশ্চাত্য পোশাক-আশাকধারী তরুণ।
@ফারহানা আহমেদ,
আপনাকে কিছু কথা জিজ্ঞেস করার ছিল।
বায়তুল মোকাররমের সামনে কতোটা গাড়ি পোড়ানো হলে আপনি এই আক্রমনকে অর্থডক্স মুসলিমদের কাজ মনে করতেন? পাশ্চাত্য পোশাক-আশাকধারী তরুণ বলতে কী বোঝাতে চেয়েছেন? বায়তুল মোকাররমের সামনে যারা ছিল তাদের পোষাক কেমন ছিল, আর সাম্রাজ্যবাদী শক্তির প্রতি এদের আক্রমনের কারণটা কী হতে পারে বলে মনে করেন? তথাকথিত আরব বসন্তের ঢেউ সমর্থন করেন কি না, আর এটা কার সৃষ্ট বলে মনে করেন?
@আকাশ মালিক, একটা লাইমের মাখখান থেকে কোট শুরু না করলেও পারতেন। আমি বাংলা টাইপ বেশি পারি না, লেখা-লেখিতেও অত সছন্দ না। সম্ভবত এজন্য আমার বক্তব্য খোলাসা করতে পারিনি। খেয়াল করে দেখেন, আমার মন্তব্যটা কিন্তু লেখকের বক্তব্য এবং কমেন্টারদের বক্তব্যকে মেনে নিয়েই নিজস্ব কিছুটা অবজারভেশন যোগ করার চেষ্টা ছিলো।
বায়তুল মোকাররমের সামনে কতোটা গাড়ি পোড়ানো হলে আপনি এই আক্রমনকে অর্থডক্স মুসলিমদের কাজ মনে করতেন?—- আমার কাছে বাংলাদেশী মুসলমানদের অনেক বেশি অর্থডক্স মনে হয়, বিশেষ করে ধর্মীয় ব্যাপারে। আমার যুক্তি এতটুকুই যে সেই অর্থডক্স পাড়ায় যখন প্রতিক্রিয়ার পরিমাণ অনেক বেশি কম, তখন উত্তর আফ্রিকার দেশগুলোতে এত মারাত্মক প্রতিক্রিয়া হবার পেছনে আরো কারন থাকতে পারে, যার মধ্যে এওকটা হতে পারে মার্কিন এং তাদের মিত্রদের ওই সব দেশগুলোর প্রতি সাম্প্রতিক আচরণ।
@আকাশ মালিক, পাশ্চাত্য পোশাক বলতে বঝিয়েছি, নরমাল জিন্স-টিশার্ট। পোশাকের কথাটা বলার পেছনে কারণ ছিলো, আল-জাজিরা প্থম দিন খুব করে প্রচার করছিলো এইগুলো উগ্রপন্থী সালাফিস্টদের কাজ, তাদের বর্ণনা মতে সালাফিস্টরা নবী মোহাম্মদের মতো পশাক-আশাক পরে ইত্যাদি। অথচ ভিডিও ফুটেজে সেই রকম পোশাকধারী লোক দেখলাম খুবই কম।
এত কষ্ট করে দুই দুটো কমেন্ট টাইপ করার পরেও আমার অবস্থানটা আপনার কাছে ক্লিয়ার হলো কিনা বুঝতে পারছি না। তৃতীয় প্রশ্নটার উত্তর দিতে হবে কিনা সেটাও বুঝতে পারছি না ………….
@ফারহানা আহমেদ,
আল্লাহর নবী গাড়ীতে না চড়ে উটের পিঠে চড়তেন, পাশ্চাত্য পোশাক না পরে আলখাল্লা পরতেন। তার মানে কি বলতে চান এখন যারা পাক্কা মুসলিম তারা গাড়ী বাদ দিয়ে উটের পিঠে চড়বে বা পাশ্চাত্য পোশাক বাদ দিয়ে আলখাল্লা পরবে ? পাশ্চাত্য পোশাক পরলে কি মনে করছেন ভিতরেও সে আধুনিক ও পাশ্চাত্য মনোভাবাপন্ন হয়ে গেল ?আপনার পর্যবেক্ষন অতি সরলীকরন দোষে দুষ্ট।
@ভবঘুরে, আমি বলি নাই। আমার মন্তব্যটা পড়েন আরেকবার, ওটা আল-জাজিরা বলেছে।
@ফারহানা আহমেদ,
আপনার মত অনেক বাম বাঙালীই এই ধরনের চিন্তা পোষন করে যে যেকোন আমেরিকা বিরোধি আন্দলন সে আল কায়দার বোমা গুলিও সাম্রাজ্যবাদি বিরোধি আন্দোলন-বা আমেরিকার আধিপত্যকামীতার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ যা ধর্মীয় রূপ নিয়েছে।
কিন্ত এই ধরনের ধারনা এই জন্যেই ঠিক নয়-যে সাম্রাজ্যবাদ বিরোধি আন্দোলন সব থেকে বেশী তীব্র ল্যাটিন আমেরিকাতে সেখানে কখনোই যীশুর নামে এই আন্দোলন চলে না ( শাভেজ ব্যতিক্রম)।
এই ধারনা আরো ভুল এই কারনে যে সালমন রুশদি থেকে তসলিমা নাসরিনের বিরুদ্ধেও মোল্লারা একই কাজ করেছে। তসলিমা নাসরিন এবং সালমন রুশদির সাথে সাম্রাজ্যবাদের যোগ খুঁজতে গেলে তা হবে অতিহাস্যকর।
@বিপ্লব পাল, ভাইরে, আমি বাম না, সাম্রাজ্যবাদ বলতে ঠিক লেনিনিয় সাম্রাজ্যবাদ বোঝাতে চাইনি।
উত্তর আফ্রিকার দেশগুলোতে ওই ভিডিও-এর বিরুদ্ধে প্রতিক্রিয়া এত মারাত্মক রূপ নেবার পেছনে মৌলবাদ ছাড়াও আরো কারন থাকতে পারে, যার মধ্যে একটা হতে পারে মার্কিন এবং তাদের মিত্রদের ওই সব দেশগুলোর প্রতি সাম্প্রতিক আচরণ। দ্যাটস অল এবাউট মাই এক্সপ্লানেশন।
“” কিন্ত প্রতিটা ধর্মগ্রন্থে সে কোরানই হোক, বা গীতাই হোক, নিধার্মিক বা বিধার্মিক বা ঈশ্বরে অবিশ্বাসীদের গর্দভ, শুয়োর থেকে শুরু করে সব ধরনের চোস্ত গালাগাল দেওয়া হয়েছে।””
আপনার তো দেখি নুন্নতম ধারনাও নেই, আপনি লেখালেখি ছারি দেন ভাই। অন্য কিছু করেন।
@রাহাত,
ধর্মগ্রন্থগুলিতে নিধার্মিকদের বিরুদ্ধে ভাষা এতটাই খারাপ, যে তাই নিয়ে মুক্তমনাতে এত লেখালেখি হয়েছে, এই নিয়ে বেশী লিখলে, তা লেবু কচলানো ছারা কিছু না।
যেমন আপনাকে একটা ওপেন চ্যালেঞ্জ দেওয়া যেতেপারে-কোরানের যেখান থেকে হোক আমাকে দেখান যে পর পর ১০০ টা আয়াতের মধ্যে কোন আয়াত নেই যাতে আল্লা ভীতি প্রদর্শন করে নি বা আল্লার বান্দা কাওকে খিস্তি মারে নি। গোটা কোরানে আল্লাদ আচরন সুপার মাফিয়ার মতন- আমাকে মান, নইলে তোমাকে দেখে নেব-এই গোছের স্টেটমেন্টে কোরান ভর্তি-
Sura72:15 “The disbelievers are the firewood of hell.”
Quran (3:56) – “As to those who reject faith, I will punish them with terrible agony in this world and in the Hereafter, nor will they have anyone to help.”
Quran (8:12) – “I will cast terror into the hearts of those who disbelieve. Therefore strike off their heads and strike off every fingertip of them”
7:166 But when even after this they disdainfully persisted in that from which they were forbidden, We said to them, “Become apes—despised and disgraced!” (Maududi)
2:65 And you know well the story of those among you who broke Sabbath. We said to them: “Be apes—despised and hated by all.” 66 Thus We made their end a warning to the people of their time and succeeding generation, and an admonition for God-fearing people. (Maududi)
কোন কনটেক্সটে কি বলতে চেয়েছিল এসব ভেবে লাভ নেই। ধর্মগ্রন্থ চর্চা ইতিহাস বোঝা ছারা অপ্রয়জনীয়। আমার কোরান দেখে মনে হয়েছে, হজরত মহম্মদ যখন যাকে খিস্তি মারতে চেয়েছে, যখন যাকে বকতে চেয়েছে, যখন যাকে ভয় দেখাতে চেয়েছে, সেটাকে কোরানের মাধ্যমে নাজিল করেছে। ঐতিহাসিক যুগে এটা নতুন কিছু নবী করেন নি-রাজ্য শাসনের সেটাই ছিল উপায়-এমনটা চানক্য হজরত মহম্মদের এক হাজার বছর আগে বলে গিয়েছিলেন। এই নিয়ে অতীতে মুক্তমনাতেই আমার আরেকটা লেখা আছে-
দেরিদার ডিকনস্ট্রাকশন তত্ত্বের আলোকে ধর্মগ্রন্থের ব্যাখ্যা
কোন ধর্মগ্রন্থ পড়ার পর, কোন সুস্থ বুদ্ধিমান মানুষ সেই ধর্মে আস্থা রাখতে পারে না। কারন এগুলিতে এত বেশী স্ববিরোধিতা এবং এবং ডায়ালেক্টিজমের অভাব। নিশ্চয় প্রত্যেক ধর্মে এবং ধর্মগ্রন্থেই ভাল উপদেশ আছে- কিন্ত মানুষের সেই উন্নত বোধ , উপদেশ বা সুপার মাফিয়া আল্লার ভীতি থেকে না এসে, প্রশ্ন এবং মনের দ্বিধা থেকেই আসাই উন্নততর পথ।
@বিপ্লব পাল,
দাদা, শেষ পর্যন্ত আপনিও!
আসলেই এই খাল-বিল, নদী-নালার দেশ বাংলাদেশের মানুষগুলো খুবই শান্তিপ্রীয়, তারা প্রকৃতির সাথে মিলে মিশে থাকতে ভালবাসে। এ দেশ আউল-বাউল, সুফী-সাধক, কবি-কবিয়াল, সাহিত্যিক দার্শনিক, কৃষাণ-কৃষাণী, চাষা-ভুষার দেশ। আরজ আলী, লালন, নজরুল এ দেশেরই মানুষ। বন্যায় ভেসে আসা আরব মরুভুমির আবর্জনা গ্রহন না করতে নজরুল সতর্ক করেছেন। আমাদের বামপন্থি নাস্তিকেরা যদি দিবানিশী সব জায়গায় পুঁজিবাদের গন্ধ না শুঁকতেন আর মধ্যপন্থি আস্তিকেরা যদি আপনার চোখে কোরানখানি বুঝে পড়তেন, এই বাংলাদেশ মুক্তবুদ্ধি চর্চার আদর্শ স্থান ও একটি অসাম্প্রদায়ীক দেশ হিসেবে বিশ্বে পরিচিতি পেতো।
বেশ প্রাসঙ্গিক এবং চিন্তা জাগানিয়া। ভালো লেগেছে। 🙂
বিপ্লব ভাই,
আমার কিছু প্রশ্ন আছে।
১। যুক্তিপূর্ণ ভাবে কি কোনো ধর্মকে সমালোচনা করার অধিকার মানুষের থাকা উচিৎ? যুক্তিপূর্ণ সমালোচনাও যদি কাউকে আঘাত করে তবে সে ক্ষেত্রে সমালোচোকের কি করা উচিৎ? এ ক্ষেত্রে সমাজ ও রাষ্ট্রের দায়িত্ব কি হওয়া উচিৎ?
২। যুক্তিহীন ভাবে কি কোনো ধর্মকে সমালোচনা করার অধিকার মানুষের থাকা উচিৎ? যুক্তিহীন সমালোচনা যদি কাউকে আঘাত করে তবে সে ক্ষেত্রে সমালোচোকের কি করা উচিৎ? এ ক্ষেত্রে সমাজ ও রাষ্ট্রের দায়িত্ব কি হওয়া উচিৎ?
আমি আপনার লেখার একজন ভক্ত। অবশ্যই এ-ব্যাপারে আমার নিজস্ব মত আছে। কিন্তু আপনার মতটা শুনতে চাই যেহেতু দর্শন নিয়ে আপনার অনেক পড়াশুনা আছে।
ধন্যবাদ।
@আদনান,
যুক্তিপূর্ন আলোচনা যাকে আঘাত করে, সে সংজ্ঞা অনুসারে অযৌত্বিক। এক্ষেত্রে রাষ্ট্রএর দ্বায়িত্ব অযৌত্বিক নাগরিকদের সংখ্যা হ্রাস করা। অর্থাৎ বিজ্ঞান শিক্ষার প্রচলন। আমেরিকাতে নোভা বলে একটি সরকারি কোমপানী আছে, যাদের কাজ শিশু এবং কিশোরদের জন্যে বিজ্ঞানের ডকুমেন্টারী তৈরী করা- যাতে প্রতিটা শিশু যুক্তিবাদি এবং বিজ্ঞানমনস্ক মন নিয়ে বড় হতে পারে। তার বদলে রাষ্ট্র এবং মিডিয়া যদি প্রতিটা চ্যানেলে জাকির নায়েক বা ঐ পর্যায়ের ধর্মীয় ছাগলগুলিকে মহামানব বলে তোল্লা দেয়, সে রাষ্ট্র হবে রাজনৈতিক দিক দিয়ে অস্থির এবং কোন না কোনদিন টসকাবে।
যুক্তিহীন সমালোচনার ক্ষেত্রে রাষ্ট্রএর ভূমিকা বৃটিশ আইনেই ব্যক্ত। যতক্ষন না সেই সমালোচনা যতক্ষন না মানুষের বস্তুবাদি ক্ষতি সাধন না করছে-রাষ্ট্র কিছুই করতে পারে না। সেন্সর করতেও পারে না। এটা আইনের ধূসর রাজ্য। আমার ভাবাবেগে আঘাত করেছে, তাই ওকে শাস্তি দাও এটাত কোন আইন হতে পারে না। তবে হ্যা, ওর মিথ্যা প্রচারে আমার ব্যবসার বা পেশাদারী জীবনের ক্ষতি হয়েছে-এটা নিশ্চিত ভাবেই ক্ষতিপূরনের মামলার যোগ্য। আবার কেও যদি অন্যের বৌকে বেশ্যা মাগী বলে গালাগাল দেয়, আমার মনে হয় না রাষ্ট্রর কিছু করার কাছে-কোর্টই বিচার করবে, এটা মানহানির মামলার যোগ্য কি না।
আমার দর্শন নিয়ে মোটেও বেশী পড়াশোনা নেই-আজকাল সময় ও নেই। দর্শন শব্দের বুৎপত্তি দৃষ্টি থেকে। দর্শন নিয়ে পড়াশোনা করা- কথাটার চেয়ে, স্ঠিক প্রশ্ন করা— এবং তার সমাধানের মাধ্যমেই আমাদের এই দৃষ্টিশক্তির উদ্ভব হয়। ভাবতে নিশ্চয় আশ্চর্য্য লাগে যে আমরা চোখের সামনে দেখি, এই পৃথিবীতে কোন হিন্দু বা মুসলিম নেই। শুধু আছে জৈবিক মানুষ। একজন মুসলিম পিতার সাথে হিন্দু পিতা বা মুসলিম মাতার সাথে হিন্দু মাতার কোন পার্থক্য নেই।
বাচ্চাকে না খায়িয়ে মা খাচ্ছে- এমন মা কি হিন্দু বা মুসলিমদের মধ্যে আছে?
অথচ এই সামান্য সত্যটা আমাদের সমাজের ৯৯% মানুষে দেখতে পায় না। কেন? কারন প্রশ্ন তোলে না-প্রশ্ন তুলে যা শুনে আসছে, যা সমাজ তাকে শিখিয়েছে, তার বিরুদ্ধে যেতে সে ভয় পায়। সেই জন্যেই দর্শনের দরকার-যাতে মানুষের দৃষ্টিশক্তির উদয় হয়। আমি মাঝে মাঝে অবাক হয়ে ভাবি, পিতা মাতার কোন ধর্ম হয় না- এই সামান্য সত্যটা প্রতিদিন আমরা দেখছি, বুঝছি-অথচ যেহেতু সমাজ এবং রাষ্ট্র শিখিয়েছে আমার ধর্ম এই- আমি আমার দৃষ্টিশক্তির চেয়েও গরুর পালেই বিশ্বাস রাখছি বেশী। কারন “আমি” দৃষ্টিহীন- এই চোখে থেকেও না থাকার যে রোগ আমাদের সমাজের মধ্যে বাসা বেঁধেছে- তার জন্যে প্রশ্ন, আরো প্রশ্ন তোলা ছারা গতি নেই। প্রশ্নই পারে বাংলার রেটিনা পরিস্কার করতে। পড়াশোনা করতে দিলে, সবাই জাকির ছাগল কিমবা লোকনাথ বাবার ছাগমৃত পান করবে। পড়াশোনা করে অন্ধত্ব ঘোচে না- অন্ধত্ব ঘোচে যখন সে অসংলগ্ন, পরস্পরবিরোধিতাকে দেখতে পেয়ে “প্রশ্ন” করে-এই প্রশ্নেই দর্শনের শুরু এবং শেষ।
@বিপ্লব পাল,
সময় করে আমার প্রশ্নগুলোর উত্তর দেওয়ার জন্য ধন্যবাদ!
আদনান
এখানে আমি ধর্মীয় অনুভুতি নিয়ে কিছু বলতে চাই .. আমি নিজে যখন অনেক ছোট তখন ঢাকায় আসি .. ঢাকায় এসে দেখলাম ঈদের দিনে কোরবানী একটি আনন্দের এবং মুক্ত আলোচনার বিষয় .. এর আগে আমি বইতে ঈদ সম্পর্কে পরেছি, সেখানে ঈদের নামাজ আর মিলনমেলা বেশি তাত্পর্য পেয়েছে .. ওই প্রথম বুঝলাম যে আমি অন্যদের থেকে আলাদা .. শুধু আলাদাই নয় একটা বৈরী ব্যাপার আর ভীতিকর অনুভুতি আমার মধ্যে তখন কাজ করে .. একই গরুকে এক সমাজে বলা হচ্ছে উপকারী জন্তু, তার রক্ষা করা আমাদের কর্তব্য .. সেই গরুই এই একই দেশেই মানুষ মুক্ত আলোতে কেটে টুকরো করছে .. আরবের মানুষেরা জীবনে যত গরু দেখেনি , এই দেশের মানুষেরা এক ঈদে তার বহুগুন জবাই করে .. বাড়ীতে গিয়ে দেখি আমাদের বাগানের প্রতি ইঞ্চিতে খুড়লে পরে গরুর হার-গর পাওয়া যায়(আমার বাবা বলতেন পাখি ওগুলোকে নিয়ে গাছের ডালে বসে এবং ফেলে যায়, আমি ভাবি এত বড় হার পাখি কিভাবে আনে !) .. ছাগল নয়, অন্য কোনো প্রাণী নয় , গরুর উপর এই অতিরিক্ত আগ্রহ আমার কাছে খুব হিংসাত্বক মনে হয় ..
@পরমার্থ,
গরুকে যখন উপকারী জন্তু বলা হয়, তখন গরুর প্রতি ভালবাসার বোধ মনে হয় কমই থাকে। হয়ত ‘উপকারী’ শব্দের প্রয়োগ এই অর্থে যে, মানুষ তাকে নিজের প্রয়োজনে বেশী বেশী ব্যবহার করতে পারে। ব্যাপারটা অনেকটা ‘ক্রীতদাসেরা খুব উপকারী মানুষ’ বলার মতই নয়কি?
মুক্ত আলোতে কেটে টুকরো করাতেই শুধু আপনার আপত্তি? বদ্ধ ঘরে লোকচক্ষুর আড়ালে টুকরো টুকরো করে পরে তা কমিউনিটি সেন্টারে বা রেস্টুরেন্টে বন্ধু-বান্ধব, আত্মীয়-স্বজন নিয়ে আমোদে গ্রাস করায় আপনার আপত্তি নেই তো?
তার মানে, আরবের মানুষেরা আমাদের চেয়ে মহৎ? কিন্তু আরবেরা যে আমাদের চেয়ে অনেক বেশী দুম্বা, উট দেখেছে, সে ব্যাপারে আপনার মতামতটা জানতে খুব মন চাইছে।
গরুর প্রতি এই অতিরিক্ত আগ্রহকে আপনার হিংসাত্মক মনে হচ্ছে কেন, বুঝতে পারলাম না। গরু বেশী উপকারী, তাই তার প্রতি আগ্রহ স্বাভাবিক কারণেই বেশী। আর ছাগল যদি নিজেকে প্রমাণ করতে পারে, তাহলে তার প্রতিও মানুষও অনেক আগ্রহ দেখাবে, হিসেবটা সহজ নয়কি?
তবে গরুর প্রতি আপনার পক্ষপাতটা ঠিক ঠাহর করতে পারছি না। ছাগল না হয় ছোট, তাই বলে সে প্রাণী নয়কি? গরু, ছাগল, দুম্বা, উট- সব প্রাণীর কষ্টেই আমাদের সমান ব্যথিত হওয়া উচিত, কি বলেন?
@কাজি মামুন,
“গরুকে যখন উপকারী জন্তু বলা হয়, তখন গরুর প্রতি ভালবাসার বোধ মনে হয় কমই থাকে” (আপনার বক্তব্য)
গরু উপকারী জন্তু বলতে কি বোঝাতে চাইছি তা আপনি ভালই জানেন .. আমরা গরুর দুধ পান করি .. গরু কৃষিকাজে ব্যবহার হয় .. ভগবান শ্রীকৃষ্ণ রাখল বালক ছিলেন
বলে কথিত .. গরুকে রক্ষা করা ছিল উনার একটি কাজ .. এদেশে একটি জনগোষ্ঠী গরুকে হত্যা করে না ..
কুকুর উপকারী জন্তু, এদেশে কুকুরেরা রাস্তাঘাটে ঘুরে বেড়ায় .. কিন্তু মানুষ কুকুরের প্রতি অনেক সদয় .. এদেশের মানুষ কুকুর খায় না .. বলা হয় শুধু কুকুরের এই জাদুকরী মায়া তাকে মানুষের
সহচরী করেছে .. যে বন্য শিয়াল থেকে গৃহপালিত কুকুর সৃষ্টি হয়েছে সেই শিয়াল আজ বিপন্ন প্রজাতি, কিন্তু কুকুর টিকে আছে মানুষের ভালবাসায় ..
“গরুর প্রতি এই অতিরিক্ত আগ্রহকে আপনার হিংসাত্মক মনে হচ্ছে কেন, বুঝতে পারলাম না” (আপনার বক্তব্য)
আপনি হয়ত কোনদিনই বুঝতে পারবেন না .. বিশেষত গরুর কোরবানী কি সনাতন ধর্মের অনুসারীদের গরু রক্ষার ব্রত পালনেই বিপরীত শব্দ নয় ?
“মুক্ত আলোতে কেটে টুকরো করাতেই শুধু আপনার আপত্তি ..” (আপনার বক্তব্য)
আমি ব্যক্তি স্বাধীনতায় বিশ্বাস করি .. কিন্তু সেই স্বাধীনতা কিন্তু অনেকভাবে আশেপাশের মানুষের ক্ষতি করতে পারে বা তাদের দুঃক্ষ দিতে পারে .. মানুষকে দুঃক্ষ দিয়ে কথা বলা সহজ, কিন্তু ভালবাসা অর্জন করা অনেক কঠিন .. রমজানের মাসে আশেপাশের মানুষের কথা ভেবে আমি জনসমক্ষে দিনের বেলায় খাবার খাই না .. আর এই দেশেরই কিছু মানুষ যেখানে গরু খাচ্ছে না সেখানে কোরবানির জন্য অন্য পশু থাকা সত্তেও গরুকে বেছে নেওয়া তা দুক্ষজনক তা আপনি যাই বলেন .. আর বিতর্কে যেতে চাই না, অনুভুতি নিয়ে নারাচারা প্রসঙ্গে এই ব্যাপারটি উঠে আসলো ..
“আরবের মানুষেরা জীবনে যত গরু দেখেনি , এই দেশের মানুষেরা এক ঈদে তার বহুগুণ জবাই করে .” (আপনার বক্তব্য)
এখানে আমি বলতে চাইছি গরু কোরবানির মধ্যে ইসলামের কোনো বাধ্যবাধকতা নেই .. খোদ আরবের মানুষেরা গরু দিয়ে কোরবানী করে না .. কোরবানী ত্যাগেরই ওপর নাম .. এই ত্যাগের মহিমায় গরুকে ছেড়ে দেওয়া যায় না ?
আবার দেখুন আমার সতীর্থ মেসে আমার সাথে থাকত, সে ছোটবেলা থেকে কি শিক্ষা পেয়েছে জানি না .. সে হয়ত জানে না যে সূর্যের আলোর আধার মোচনের ক্ষমতার কারণে তাকে ঈশ্বরের সাথে তুলনা করা হয় .. গুরুদেবের গান শুনুন “ওই আকাশে আমার মুক্তি আলোয় আলোয়” .. সে আমাকে বলছে তার লজ্জাস্থানে চুলকানি হয়েছে আর ডাক্তার তার অমিতাভ (সূর্যের তথা ঈশ্বরের ওপর নাম) দেখে ফেলেছে .. এসব মানুষের সাথে চললে কি মনে সুখ থাকে বলুন ?
স্পষ্ট কথাগুলো বুঝতে যখন আপনার ও অন্যদের কষ্ট হয়, তখন ভাবি সবাই কি মানুষ হিসেবে অন্যের অনুভুতি বুঝতে পারে না ! .. অনুভুতি থাকলে অনুভুতিতে আঘাত লাগার সম্ভাবনা থাকে ভাই ..
আমি জানি এর পরেও আপনি অনেক তর্ক করবেন .. কিছু মানুষ মুক্ত চিন্তার আর যুক্তির চেয়ে তর্ক করাকেই আর আঘাত করাকেই আনন্দের উত্স ভাবে .. মানুষে মানুষে যখন ভেদ আর দলাদলি তৈরী হয় তখন অন্ধ মানুষের যুক্তি খন্ডিত হয় রাজনীতিবিদদের মত ..
@পরমার্থ,
চিন্তায় এবং ভাবাবাগে আঘাত ছারা নতুন চিন্তা এবং দিক নিদর্শন থাকবে না।
উন্নততর মানুষের ভাবাবেগে আদর্শজনিত আঘাত সম্ভব না-কারন উন্নততর সত্য এবং আদর্শএর রূপ দ্বান্দিক।
@পরমার্থ,
তাহলে দাঁড়াল, মানুষ কুকুর খায় না, কারণ মানুষ কুকুরের প্রতি সদয়। কিন্তু সমস্যা হচ্ছে, পৃথিবীর অনেক জাতি আছে, যারা আবার কুকুর খায়, কিন্তু গরু খায় না। হয়ত তারা গরুর প্রতি সদয়, কুকুরের মত একটা উপকারী প্রাণীর প্রতি সদয় নয়, কি বলেন?
কারণ তারা গরুকে উপকারী প্রাণী মানে ও ভালবাসে, উটকে নয়, তাই তো? আপনার কথা মেনে নিতে আপত্তি ছিল না, সমস্যা বাঁধিয়েছে একটা ডকুমেন্টারি, কিছুদিন আগে যা চাক্ষুষের সুযোগ হয়েছিল এই অধমের। ডকুমেন্টারিটি থেকে যা গো+চরীভুত হল, তা হচ্ছে, উটও (থুক্কু উটনি) গরুর মত দুধ দেয়, উটও মরুচারি আরবদের ভীষণ কাজে লাগে। তো আরবেরা এত উপকারী প্রাণীটিকে কেন কোরবানি দেয় বলুনতো? হয়ত ডকুমেন্টারিটি আগাগোড়া বানানো ছিল, আর তাই…
ত্যাগের মহিমা তো বুঝলাম, কিন্তু কেন গরুকেই শুধু ছাড়তে হবে, তা তো বুঝলাম না, ভাইয়া। এই ছাড় দেয়ার তালিকায় কি অন্যান্য প্রাণীকে রাখা যায় না? আর কোরবানির ত্যাগের ব্যাপারে গরু-খেকো মুসলিমদেরও তো একটা তত্ত্ব আছে, যেমন, তারা বলেন, সৃষ্টিকর্তার হুকুমে ত্যাগ করতে হয় বলেই তো তারা লক্ষ লক্ষ টাকা খরচ করে অকাতরে মুক্ত হস্তে মাংস বণ্টন করেন, অর্থাৎ কিনা, মাংস বণ্টনেই তারা ত্যাগের অপার মহিমা খুঁজে পান। ভালবাসার জিনিস উৎসর্গ করলেই নাকি ত্যাগের মাহাত্ম্য বাড়ে, আর তাই তো তারা গরু কোরবানি দেন, যেহেতু তারা গরুকে উট, দুম্বা, বা ছাগলের চাইতেও অধিক ভালবাসেন। সুতরাং, গরু কোরবানির পেছনেও চাইলে ভালবাসার মহিমা খুঁজে পাওয়া সম্ভব, কি বলেন?
কথাটা যে বিদ্রূপার্থে (অন্য ধর্মের দেবতাকে হেয় করার জন্য) বলা হয়েছে, তা ঢের বোঝা যাচ্ছে এবং সে কারণেই তা নিন্দনীয়। কিন্তু ঘনিষ্ঠ বন্ধুদের আড্ডার জন্য সূর্যের উপমাটি অতটা মন্দ মনে হচ্ছে না কিন্তু।
এখানে উপলব্ধির সীমাবদ্ধতা স্পষ্ট হয়েছে মনে হয়। দেখুন চতুষ্পদী প্রাণী কোরবানি করা মুসলিমদের একটা পর্ব, তো এই অঞ্চলে তো আর মরু এলাকার মত দুম্বা, উট পাওয়া যায় না। সহজলভ্য গরু-ছাগল কোরবানি করেই তুষ্ট থাকে মুসলিমরা। অর্থবানরা বেশী অর্থের বিনিময়ে গরু ক্রয় করে বেশি নেকি সংগ্রহ করে, আর কম অর্থ যাদের, তারাও ছাগল ক্রয় ও কোরবানি করে, আর নিজেদের ধর্মিয় অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখার চেষ্টা করে। এদেশে গরুর পাশাপাশি ছাগলও প্রচুর পরিমাণে উৎসর্গীকৃত হয়, অথচ আপনি ছাগলের উপর নির্দয়তার কথা একবারও বলছেন না। তবে একটা কথা, এখানে যদি সনাতন ধর্ম নাও থাকত, তাহলেও অত্র অঞ্চলের মুসলিমদের গরু কোরবানি থেকে বিরত রাখতে পারতেন না আপনি।
জানি না, আপনি মুক্ত চিন্তা আর যুক্তি বলতে কি বোঝেন, তবে চিন্তা আর যুক্তিকে মুক্ত করে দিয়ে দেখতে পেলাম, পরিবেশ-প্রকৃতির ভারসাম্যের জন্য জীব-বৈচিত্র্য ও প্রানীবৈচিত্র্য খুব জরুরি, আর এজন্য প্রতিটি প্রানি বিলুপ্তির হাত থেকে রক্ষা পাবার জোর দাবিদার। অথচ বিশ্বাস-কেন্দ্রিক পক্ষপাত কাউকে কাউকে কোন একটি বিশেষ প্রাণীর ব্যাপারে ভয়ানক উদার করে তুলছে, একই কায়দায় নিহত হওয়া অন্য প্রাণীদের ব্যাপারে তারা আবার আশ্চর্যজনকভাবে নির্লিপ্ত। এটা সত্যি যে, আমাদের সামাজিক প্রেক্ষাপটে সনাতনধর্মীদের দেখিয়ে দেখিয়ে সোল্লাসে গরুকর্তনের অবর্ণনীয় সব নজির আছে, তবে ধর্মিয় যুক্তির আশ্রয় নিয়ে ধর্মকেন্দ্রিক গরুকর্তন কতটুকু ঠেকানো সম্ভব, তা নিয়ে ভেবে দেখবার অবকাশ আছে বৈকি।
আসলেই বুঝতে পারছি না। সবাই তো আর দক্ষ খেলোয়াড় নয়।
@কাজি মামুন,
আপনি যে একটু বুঝতে পেরেছেন এজন্য ধন্যবাদ .. অনেক জায়গা আছে যেখানে মানুষ মুক্ত মনা ধাচের ঝান্ডা তুলে আকাশের এক কোনায়, আর বলতে গেলে পুরো আকাশটাই তার থেকে যায় চিন্তার বাইরে .. খেলোয়ারের প্রসঙ্গ কেন আসলো ?
@কাজি মামুন,
ভাই একটু নাক গলাব কিছু মনে করবেন না। আসলে গরুকে ছেড়ে দিতে হবে কারণটা সম্ভবত গরু আম্মাজান। আসুন দেখি ভারতীয়রা হিন্দু রা কিভাবে গরু মা কে সম্মান দেয়।
হালচাষ করাও, দুধ দুইয়ে নিংড়ে নাও তার পর আম্মার( গরু মাতা) দুধ দেয়া বন্ধু হলে সন্তানরা ম্লেচ্ছ মুসলিম দেশ বাংলাদেশে আম্মাকে বিক্রি করো, যেন তারা আম্মাকে জবাই করে মাংস খেতে পারে।এখানে অন্যদেশে জবাই হবার জন্য গরু বেচায় দোষ নেই, যত দোষ হল জবাই করে খাওয়াতে।
@পরমার্থ,
না এখানে আপনার ভিতরেও ধর্মানুভুতি আহত হবার ব্যাপারটা লক্ষ করছি যেটা মুসলিম দের সবথেকে বাজে স্বভাব।গরু বেশি খাওয়া হয় কারন গরুর মাংস যেকোন মাংসের থেকে বেশি সুস্বাদু।যারা গরু খায় শুধু তারাই এটা জানে।ধন্যবাদ।
এই ছবিটির পিছনে কিন্তু ইস্রায়েলী বা ইহুদীরা থাকার কোনো আলামত পাওয়া যায়। এখন পর্যন্ত নানা তদন্তে যা বেড়িয়ে এসেছে তাতে মনে হচ্ছে ছবিটি বানিয়েছে ক্যালিফোর্নিয়ার কিছু ইজিপশিয়ান কপ্টিক ক্রিশ্চিয়ান। ইহুদীদের দ্বারা এতো কাচা কাজ হবার সম্ভাবনা কম।
সবাই বলছে এই লিবিয়া, ইজিপ্টএ রায়ট মুসলিম বিশ্বে ধর্মের প্রবল আধিপত্যের পরিচয়ই তুলে ধরছে। আমি তো ভাবছি কি ঘটছে না সেটাই আরো বেশী ইংগিতবাহী। আমার এখনো খেয়াল আছে ২৫ বছর আগে সালমান রুশদী আর স্যাটানিক ভার্সেস এর কথা। ঐ এক উপন্যাসে পুরো মুসলিম বিশ্বজুড়ে কি ঝড় বয়ে গিয়েছিলো। মোহাম্মদকে কেউ ইনডাইরেক্টলি ব্যংগ করছে এটা ভাবতেই সব মুসলিম এর রক্ত গরম হয়ে জিহাদী জোশ চলে আসতো। সেই সময়ে এরকম একটা ছবি রিলিজ হলে তো মনে হয় দেশে দেশে হাজার হাজার ইহুদী-নাসারার রক্তের বন্যা বয়ে যেতো।
কিন্তু আজকে মধ্যপ্রাচ্যের কিছু নাজুক, ক্রান্তিকালীন দেশ ছাড়া অন্য দেশগুলিতে তেমন কোনো সারা নেই। একের পর এক ঘটনায় সাধারন মুসলিম লোকজন ধরেই নিয়েছে যে কদিন পর পর এরকম কিছু একটা ব্যংগবিদ্রুপের ঘটনা ঘটতেই থাকবে। অধিকাংশ লোক তওবা তওবা বলে বলে ব্যপারটা ভুলে যেতে চাইবে। কিছু লোক ঠোট কামড়ে চিন্তা করবে, “দাড়াও সবাই, ইসলামী খেলাফত একবার কায়েম করে নেই। তারপর পুরো দুনিয়া বুঝবে এরকম দু:সাহসের ফল কি হতে পারে”।
আমার তো মনে হয় এসবই হলো belated Islamic Reformation এর birth pangs।
@সফিক,
(Y)
@সফিক,
পাড়ার পাগলাকে রাস্তার বাচ্চারা যেভাবে ঢিল মেরে বা ভেংচিয়ে খেপিয়ে থাকে, আর পাগলাটা বার বার করে, বাচ্চাদের দিকে পাথর ছুড়তে থাকে-ইসলামে এখন ঠিক সেই অবস্থা। এটা তারা না বুঝলে তাদের কপালে আরো দুঃখ আছে।
@সফিক,
(Y)
যেখান থেকে বোঝা যায়, ব্যঙ্গ-বিদ্রুপের দরকার ছিল (এই স্পেসিফিক কুরুচীপূর্ণ ছবিটির কথা বলছি না, সাধারণভাবে)। ব্লাসফেমী হচ্ছে মুক্তবুদ্ধির প্রবাহী রক্ত।
@রৌরব,
“ব্লাসফেমী হচ্ছে মুক্তবুদ্ধির প্রবাহী রক্ত”, অত্যন্ত দামী একটা কথা বলেছেন। কোন সমাজ কতদূর এগিয়েছে, এটা বোঝার জন্যে সেখানে ব্যংগ বিদ্রুপ কতটা এলাউড এটা মাপলেই যথেষ্ট।
আমি খুবই আশান্বিত হয়েছিলাম Everybody Draw Mohammed Day ( http://en.wikipedia.org/wiki/Everybody_Draw_Mohammed_Day) নিয়ে। এর প্রবক্তারা আশা করেছিলেন বছরের কোনো একটি দিনে যদি সারা পৃথিবীর লাখ লাখ লোক একসাথে মোহাম্মদকে নিয়ে ছবি, কার্টুন আকে তবে মুসলিম ফ্যানাটিক রা দিশাহারা হয়ে যাবে। কয়জনকে আর কতলের ফতোয়া দিবে, কয়জায়গায়ই আর রায়ট করবে?
নানা কারনে মুভমেন্টটি ততটা প্রসার পায়নি, তবে যতটুকু হয়েছে সেটাই কম নয়। আজকে মুসলমানদের খেপাতে শুধু কার্টুনই যথেষ্ট নয়, আরও অনেক বেশী ডোজের ব্লাসফেমী লাগে। মোহাম্মদকে নিয়ে সরাসরি সমালোচনাগুলো মিডিয়াতে সামান্য খুজলেই পাওয়া যায়। ১০ বছর আগেও এরকম ভাবা যেতো না। Slowly but surely the tide is turning।
@আদিল মাহামুদ
“নামাজ রোজা বোরখা জাতের রিচ্যুয়াল পালণ না করলে সেটা অনেক বড় সমস্যা।”
সমস্যা এটাই যে আমাদের দেশের মানুষেরা এগুলোকেই মনে করে, সত্- সততা, নীতি -নৈতিকতর আদর্শের মাপকাটি।
অথচ এ দেশে এখন কম বেশি সবাই অসত্,
কথা আর কাজের ক্ষেত্রে সব্ই সম্পূর্ণ বিপরীত।
এখানে শুধু মুহাম্মদের নাম উচ্চারণ করা যায় না, সাথে কিছু না কিছু বলতেই হবে।
এ ব্যাপারে ধার্মিকরা বড় বেশি উগ্র !
@বিপ্লব পাল আপনার বিশ্লষণ ভালো লেগেছে।
হায়রে জনগণ একটা ফালতু মুভি দেখে তাদের অনুভূতি এতটাই আঘাত প্রাপ্ত হয় যে তারা মানুষ খুন করতে নেমে পরে :/ কিন্তু একটা শিক্ষামূলক মুভি দেখে তাদের অনুভূতি কি একটুও দোলা খায় না?দোলা খেলে অবশ্য সমাজটা একটু হলেও উন্নয়নের মুখ দেখত।
@সাদিয়া,
এই আলোচনার দুর্বলতা হলো যে এখানে ধর্মকে দোষারোপ করা হচ্ছে .. কিন্তু মানুষের অনুভুতির ব্যাপারগুলো আসছে না .. আমার মনে হয় কোনো মনোবিজ্ঞানী এখানে মন্তব্য করলে আমরা কিছুটা মুক্ত হওয়া পাব ..
খাদ্যের যোগান অপ্রতুল হলে বেবুনেরা চুলাচুলি আর মারামারি করে সময় কাটায়, .. বেবুনের উপর গবেষণা করে মনোবিজ্ঞানী ড. সাপল্স্কি বলছেন যারা এই রকম মারামারিতে অংশ নেয় তারা কোনো দুর্যোগে (যেমন জীবানুর আক্রমনে) বেশি প্রাণ হারায় .. ফলে সমাজে আবার সাম্যাবস্থার সৃষ্টি হয় .. অর্থাত “যে সহে সে রহে, যে বারে তার বিনাশ হয় ” ..
এ আচরণগত ব্যাপরগুলো কিছুটা জেনেটিক .. এ বিষয়গুলো আলোকপাত করলে মানুষের মনে শান্তি আসে, মানুষের মানসিক চাপ কমে .. মানুষ মানুষকে বুঝতে পারে .. মানুষকে সহজে মানুষ ক্ষমা করতে পারে, ভুল ত্রুটি ভুলে যেতে পারে ..
@সাদিয়া,
আসলে ব্যাধিই সংক্রামক, সাস্থ্য নয়।
এখানে ‘উন্নয়ন’ বলতে কোন উন্নয়নকে বোঝাচ্ছে, বিপ্লবদা? অর্থনৈতিক না সমাজবিবর্তনীয় উন্নয়ন? প্রচলিত ধারণা হল, উন্নয়ন হলে সামাজিক ও ধর্মীয় কুসংস্কারের বিলুপ্তি ঘটে ক্রমশ, যেহেতু দারিদ্র্যের সাথে কুসংস্কারের রয়েছে প্রশ্নাতীত যোগাযোগ।এমনটাই মনে করা হয় যে, দরিদ্ররাই ধর্মের আগাছায় নিমজ্জিত থাকে বেশী, এজন্যই দেখা যায়, ‘শস্যের চেয়ে টুপি বেশি’। অথচ আপনার লেখাতেই প্রথম পাই, তেলের টাকা কিভাবে ধর্মিয় বিস্ফোরণ ঘটিয়েছে মধ্যপ্রাচ্যে।
মানতে পারছি না, বিপ্লবদা। বিজেপি হুল ফোটাতে মাহেন্দ্রক্ষণের অপেক্ষায়, সামনের নির্বাচনে তাদের বিজয় অবশ্যম্ভাবী বলেই মনে হচ্ছে। ভারতের উন্নয়ন যে ভারতকে (যেমনটা মধ্যপ্রাচ্যকে বানিয়েছে তেলের টাকা) আরও ধর্মমুখি করছে না, তা জোর দিয়ে বলতে পারেন? আমি ভারতে যাইনি, তবে ভারতের মিডিয়ায় ধর্মের প্রবল দাপট কিন্তু তেমনটাই ইঙ্গিত দেয়। সবচেয়ে আশংকাজনক হল, দিন দিন তা বেড়েই চলেছে ভারতের শান বৃদ্ধির সাথে সাথে, আপনার তত্ত্বকে অনুসরণ করেই অনেকটা ।
@কাজি মামুন,
প্রচলিত ধারনার সাথে আমার অভিজ্ঞতার অমিল। আমি দেখেছি নিরক্ষর কৃষকরা, যাদের প্রতিটা দিন পেটে বুদ্ধি আর পেশীতে বল নিয়ে জীবন সংগ্রামে টিকে থাকতে হয়, তারা যত না ধর্মবাদি, তার থেকেও বেশী বাস্তববাদি। ধর্মটা পরগাছা শ্রেনীতেই বেশী চলে। ব্যবসায়ীরা ধর্মটাকে পাবলিক রিলেশন এবং নেটোয়ার্কিং এর জন্যে ব্যবহার করে।
আধুনিক উৎপাদন ব্যাবস্থার সাথে এই বিভ্রাট কমতে বাধ্য।
কংগ্রেস আকন্ঠ দুর্নীতিতে নিমজ্জিত থাকা সত্ত্বেও বিজেপির পালে কোন হাওয়া নেই। ধর্মবাদি রাজনীতির অসারতা এটাই প্রমান করে। মোদির সপক্ষে যেটুকু হাওয়া আছে, সেটা মুখ্যমন্ত্রী হিসাবে তার উন্নয়নের রেকর্ডের জন্যে। গত উপনির্বাচনে যেখানে ৭ টি রাজ্যে বিধান সভা নির্বাচন হল, তার মোট ৫২০ টা সিটের মধ্যে তারা পেয়েছে ১৭ টার ও কম। মাত্র ৪ টে রাজ্যে পার্টিটা ক্ষমতায় আছে আগে যেখানে ছিল ১২ টা রাজ্যে। বিজেপি আর সিপিএমের কোন ভবিষয়ত নেই ভারতে।
@বিপ্লব পাল,
বিজেপি অাগামী জাতীয় নির্বাচনে জিতবে বা সংখ্যা গরিষ্ঠতা পাবে, তবে ধর্মের পালে ভর করে নয়, উন্নয়নের প্রতিশ্রুতি দিয়ে, শক্তহাতে দুর্নীতি দমনের প্রতিশ্রুতি দিয়ে। অামার মত শিক্ষিত(!) যুবকেরা নরেন্দ্র মোদীকে প্রধানমন্ত্রী হিসাবে দেখতে চাই, অামরা চাই ভারত তার সবথেকে উন্নত প্রদেশ গুজরাটকে অনুসরন করে বৃদ্ধি পাক।
@অভিষেক,
তার মানে, আপনার কাছে বস্তুগত উন্নয়নই চূড়ান্ত কথা, তা সেই উন্নয়নের তলায় যতই সংস্কারের জঞ্জাল থাকুক না কেন। তো মুসলমান জাতিরও উচিত, মধ্যপ্রাচ্য মডেল অনুসরণ করা, তাই না? সৌদির ঝাঁ চকচকে উন্নয়ন মুসলিমদের জন্য দারুণ অনুসরণ-যোগ্য, কি বলেন?
আপনার নিকট একটি প্রশ্ন রেখে যেতে মন চাইছে। টেকসই উন্নয়ন বলতে কি বোঝায়, আর এর পূর্বশর্ত বা লক্ষণগুলোই বা কি? দয়া করে যদি জানান, বাধিত থাকব।
@কাজি মামুন,
গুজরাটে হিন্দুত্বটা ইসলাম বিরোধি হাওয়া-গোটা ভারতেই প্রায় তাই। মোদি কুসংস্কারকে
ঠেলেছে-সেই অপবাদ দেওয়া যাবে না। বরং উন্নয়নের জন্যে রাস্তার ধারের অনেক মন্দির ভাঙার নমুনা মোদি দেখিয়েছেন যেটা সিপিএম পশ্চিম বঙ্গেও পারে নি।
মোদির যেটা নেগেটিভ দিক-সেটা হচ্ছে গুজরাটে অবহেলিত শ্রেনীর উন্নতি কিছু হয় নি এবং মোদি যত বা সফল তার থেকেও বেশী টাকা দিয়ে মিডিয়া কিনে সফল হয়েছেন। যেটা এখন আমাদের মমতাদিও করছেন।
@কাজি মামুন, প্রথমত, মোদিকে খারাপ ভাবে তুলে ধরা হয়েছ, বাস্তবে তিনি মোটেই খারাপ নন, মোদী মোটেই মুসলিমদের জন্য বিপদ নয়। গুজরাতের দাঙ্গাটা ভারতের বাইরের শক্তি দ্বারা সংঘটিত হয়েছিল। ভারতের উদ্যোগ জগত মোদীকেই চায়।
দ্বীতিয়ত, সৌদির উন্নয়ন পেট্রোলিয়ামের কারণে। ইচ্ছা করলেই সব মুসলিম দেশ ওরকম হতে পারবেনা।
@কাজি মামুন,
অনেক কথা হলো , কিন্তু একটা জিনিস দুক্ষজনক লাগলো যে আমরা এখানে হিন্দু মুসলিম ভাবছি .. আর ধর্ম কোনো “আগাছা” নয় .. সৌদি আরবের মানুষেরা যে উর্দি পরে তা ওই দেশের আবহাওয়ার সাথে বাস করতে হলে, ধুলাবালি থেকে বাচতে হলে প্রয়োজন বলে .. আমি বুড়ো হলেও আর অনেক শিক্ষিত হলেও আমার মা বাবার ছবি ঘরে রাখব, সেখানে ফুল দিব .. আমার স্বর্গীয় বাবাকে কেউ কিছু বললে আমার দিনটাই মাটি হয়ে যাবে(জিদানের মত সফল কর্মপ্রাণ খেলোয়াড়েরও হয়) .. এখানে ধর্ম বড় কথা নয় .. কুসংস্কার বা অবিকশিত জ্ঞান বড় কথা .. বড়কথা দলাদলি, তেলেজলে পরিস্থিতি আর উস্কানি .. আমার মনে হয় গণতন্ত্র আর ক্ষমতার দ্বন্দ যতদিন থাকবে ততদিন রক্ষনশীল/সমাজবাদী/মুসলিম লীগ মতামত/উস্কানি থাকবে ..
কেন যেন মনে হয় এই মুভিটা বানানো হয়েছে মার্কিন নির্বাচন মাথায় রেখে। ওবামা খুব কড়া কোন ব্যাবস্থা নেবে না জানা কথা, রমনি পক্ষ বলা শুরু করেছে ওবামা দূর্বল। মার্কিন জনগনের জিংগোইজম উষ্কানোর মোক্ষম সুযোগ। এই জাতের মুভি বানালে মুসলিম বিশ্বে এমন প্রতিক্রিয়া হবে জানা কথা, বোনাস হিসেবে আমেরিকাতেও কিছু হেট ক্রাইম দেখা যেতে পারে। নেহায়েত ইসলাম/মুসলিম বিদ্বেষ কেন্দ্র করে এই কর্ম করা হয়েছে মনে হয় না। করা হয়েছে আবার ৯১১ বেছে বেছে।
মুসলমান সমাজ আইডেন্টিটি ক্রাইসিসে ভুগছে আর্থ-সামাজিক দূর্দশার কারনেই। আইডেন্টিটির জন্যই নবী মোহাম্মদ বিষয়ে সেন্সিটিভিটি এত বেশী। আল্লাহকে গাল দিলেও মুসলমান মানসে প্রতিক্রিয়া এত মারাত্মক হবে না যতটা না হয় নবী বিষয়ক কোন ফাজলামি করলে। কারন আল্লাহ/গড তাদের মনোপলি নয়, নবী মোহাম্মদ মনোপলি, তাই সেনসিটিভিটি এত বেশী। একই কারনে সত জীবন যাপন জাতীয় অতি মৌলিক নৈতিক স্খলন মুসলমান সমাজে তেমন বড় করে দেখা হয় না (যদিও মুখে স্বীকার করা যাবে না), কিন্তু নামাজ রোজা বোরখা জাতের রিচ্যুয়াল পালন না করলে সেটা অনেক বড় সমস্যা।
@আদিল মাহমুদ,
এটার কারন মুসলিম সমাজের ইউটিলিটি ভ্যালুর অধোগতি। আমি আমেরিকাতে বাংলাদেশী পার্টিতে গিয়ে দেখেছি, লিব্যারাল মুসলিমরা কে রোজা রাখছে তাই নিয়ে আলোচনা করে। এর মূল কারন এই যে ইসলামিয়তের মাধ্যমে তারা সামাজিক গুরুত্ব এবং সমীহ আদায় করার সুযোগ পায়। হিন্দু পার্টিতে মুসলিমদের গালাগাল দিলে গুরুত্ব পাবে, কেও কেও বিরোধিতা করতে পারে-কিন্ত কেও যদি তার ধর্ম নিষ্টা নিয়ে আলোচনা করে, সে হাসির পাত্রে পরিণত হবে। আবার আমার দাদুদের আমলে, তাদের আলোচনাটা কিন্ত আজকের মুসলমানদের মতনই ছিল। তারা দু এক পাত্র বৈষ্ণবীয় বা শাক্ত ভক্তির পদর্শন আড্ডাতে করত। ছোট বেলাতে দেখেছি। অর্থাৎ আধুনিকতার প্রভাব এখনো মুসলিমদের মধ্যে সেইভাবে আসে নি, বা সবার ক্ষেত্রে আসে নি। আস্তে আস্তে আরো দুটো জেনারেশনে, তারাও হিন্দু বা ইহুদিদের মতন ধর্ম উদাসী হবে। আমি দেখি এখানে ছেলে মেয়েদের সব কোরান শিখতে পাঠাচ্ছে, আরা ছেলে মেয়েগুলো মোটেও সেটা খুব একটা পছন্দ করে না।
@বিপ্লব পাল,
মুসলমান সমাজে প্রচলিত ইসলাম কেন্দ্রিক গোঁড়ামি জাতীয় যেসব সমস্যা আলোচিত সমালোচিত হয় সেসব কিছুর মূল কারন আসলে এক যায়গাতেই ঠেকে। সেটা হল কোরান হাদীসের বিধিবিধান/মূল্যবোধ মেনে জীবনের প্রতি পদক্ষেপ চালাতে হবে এই আজগুবি ধারনা মনেপ্রানে বিশ্বাস এবং প্রচার করে যাওয়া। বলাই বাহুল্য বাস্তবে সেটা কোনদিন সম্ভব না, কোরান হাদীসের বহু বিধান কায়েম করার কথা ৯০% মুসলমানই চিন্তা করবে না। মুশকিল হল এটা সরাসরি স্বীকার করা ইসলামী মূল বিশ্বাসের পরিপন্থী। এই সমস্যা মুসলমান সমাজে জন্ম দিয়েছে এক চিরন্তন কনফিউশনের যা থেকে সহজ পরিত্রান নেই। যারা মূল মানতে চায় তাদের নাম হয়েছে মৌলবাদী। অধিকাংশই যদিও চায় বাস্তবতার সাথে মানিয়ে চলতে, কিন্ত তাদের ভেতরেও কোরান হাদীস নবী রসূলের সরাসরি বিরোধীতা করার বিপক্ষে এত ভয়াবহ সব পরলৌকিক শাস্তির ভীতি জন্ম থেকে ঢোকানো হয়ে যে তারাও সরাসরি বিরোধীতা করতে পারে না। যেমন আমিনী হুজুর মহিলাদের সমান উত্তরাধিকার প্রস্তাবের প্রতিবাদে রাস্তায় তান্ডব করলে প্রগতিশীল মুসলমান সকলেই তাকে মৌলবাদী কাঠমোল্লা এসব বলে গাল দেবে, কিন্তু আমিনী যে কোরানের ধারা অনুযায়ীই কথা বলে সেই কোরানের সীমাবদ্ধতা আছে সেটা আবার সরাসরি স্বীকার করবে না। তখন নানান অজুহাত দাঁড় করাবে, আমিনী ইসলাম জানে না, কোরান বোঝা এত সহজ নয়, অনুবাদ বিকৃত হয়েছে হেনতেন। ইসলামের সাথে অন্যান্য ধর্মাবলম্বীদের ইউনিক পার্থক্য এখানে রয়ে গেছে। এটা আসলে পরিষ্কার ভাষায় বলতে গেলে এক ধরনের শিশুসূলভ মানসিকতা।
মুসলমান সমাজ মুখে যতই জোর দাবী করুক আর আত্মপ্রবোধ দেওয়া স্বান্তনা বাক্য সাজিয়ে মন বুঝ দিক দূর্বলতাটা আসলে ঠিকই বোঝে। বোঝে বলেই নিজেদের সব সময় এত থ্রেটেন্ড মনে করে। এই থ্রেট মোকাবেলার মোক্ষম অস্ত্র হিসেবে তারা নিজেদের ইউনিক আইডেন্টিটি কেন্দ্রিক জাতীয়তাবোধে গুরুত্ব দেয় অত্যাধিক। পশ্চীমের ওপর মোল্লা মুনশীদের রাগও এ কারনে বেশী, একে তারা কাফের তার ওপর তাদের দেখানো আধুনিক সভ্যতার বর্তমান ধারায় ইসলামী সমাজে প্রচলিত অনেক বিধিবিধান মুসলমানরাই ছুড়ে ফেলে দিচ্ছে। আরো কাটা ঘায়ে নুনের ছিটার মত শ্রেষ্ঠ জীবন বিধানের জন্মভূমি ফেলে দলে দলে মুসলমানরা কুফরি ভিত্তিক সমাজে সপরিবারে পাড়ি জমাচ্ছে। কাজেই ইসলাম রক্ষার উপায় হল নিজেদের স্বকীয় জাতি হিসেবে প্রকাশ করা যেখানে কোনরকম বিরোধীতার সুর না পাওয়া যায়। এই জাতীয়তার বন্ধন হল নামাজ রোজা হজ্জ্ব যাকাত জাতীয় রিচ্যূয়ালগুলি ঢাকঢোল পিটিয়ে পালন করা। যারা এসবে সেভাবে অংশ নিতে পারে না তারা সামাজিকভাবে সব মুসলমান দেশে হেয় না হলেও পেছনে থাকে। আমাদের দেশেই রোজার মাসে নানান ক্যারিক্যাচার দেখা যায়। ঘুষ খেতে দিতে আপত্তি নেই, কিন্তু অফিস আদালতে কে রোজা রাখছে না তা বড় সমালোচনার বিষয় হয়। আমি এমনও ঘটনা জানি যে অসূস্থতার কারনে রোজা না রাখতে পেরেও কেউ সারাদিন রোজা রাখার ভান করেছে, ওষূধ খেয়েছে গোপনে।
পরিবর্তনের ছোঁইয়া অবশ্যই বিবর্তনের নিয়মে আসছে, তবে গতি অনেক ধীর। তবে পরিবর্তন ধীর এবং ফলপ্রসূ হচ্ছে না সেই মূল সমস্যার কারনে। সেটা সরাসরি স্বীকার না করলে মুসলমান সমাজের অবস্থা থাকবে চিরকালই অন্যদের থেকে পেছনে। ইসলামের সমালোচনামূলক নানান অভিযোগ খন্ডনে আজকালকার ইসলাম ডিফেন্ডারগন আধুনিক কালের জাকির নায়েক জাতীয় ধূর্ত স্কলারদের ব্যাখ্যা হাজির করেন, প্রাচীন কালের বিখ্যাত তাফসিরকারকদের ব্যাখ্যা চেপে যান কারন সেগুলি অভিযোগ সমর্থনই করে। সরাসরি চেপে ধরলে তখন কোনমতে বলে দেন যে অমূকে ইসলাম জানে না, বড় আলেম হলেও তার সব কথাই ঠিক না ইত্যাদী। যেটা ওনারা বুঝতে পারেন না তা হল আজ যে জাকির নায়েক সেভিয়ার তার হাস্যকর তথ্য যুক্তি সম্পর্কেও ১০০ বছর পরের ইসলাম ডিফেন্ডারগন এভাবেই বলবে যে জাকির নায়েক ইসলাম জানত না, তার অনেক কথাই ব্যাক্তিগত মতামত, ইসলামের সাথে কোন সম্পর্ক নেই। মূল সমস্যা সরাসরি স্বীকার না করলে এই চক্র হতে সহজ মুক্তি নেই।
@আদিল মাহমুদ,
বাঘ নাই মুলুকে বানর রাজা। দোয়া করি আপনার এই দীর্ঘ মন্তব্যটি ইসলামি স্কলার বিজ্ঞ আলেম ও পন্ডিত সদালাপি মউলানাদের নজরে আসুক। আপনি রাসুলের কাছে আল্লাহর পাঠানো প্রকৃত আরবী ভাষায় নাজিল হওয়া কোরান বুঝতে হলে সেই আসল আরবী ভাষায় সমস্ত কোরান বুঝে পড়তে হবে। বর্তমান আরবদের আরবী সেই মূল আরবী ভাষা নয়। আমার জানা নাই তবে, অবশ্যই কোরানের কোথাও না কোথাও আপনার সকল প্রশ্নের উত্তর দেয়া আছে।
অতিসত্তর আপনাকে পাকড়াও করা হবে জবরদস্ত পাকড়াওকারীদের মত, অতর্কিতে পেছন দিক থেকে। নিশ্চয়ই আপনার প্রভু চক্রান্তকারীদের মধ্য সব চেয়ে শ্রেষ্ট।
মুসলমান তার ঈমানী দায়ীত্ব পালন করতে কুফরি ভিত্তিক সমাজে আসে শুধুমাত্র ইসলামের মহিমা বিধর্মিদের কাছে প্রকাশ করে সত্যধর্ম ইসলামের দিকে মানুষকে আহবান করার জন্যে, পেটের জন্যে মোটেই নয়। মুসলমানদের আচার আচরণ, চরিত্র ব্যবহার দেখে মুগ্ধ হয়ে কাফেরেরা ইসলামের সুশীতল ছায়াতলে দলেদলে যোগদান করছে তার প্রমাণ কি পান নাই? নিশ্চয়ই এখানে চিন্তাশীলদের জন্যে চিন্তার খোরাক ও বিজ্ঞানীদের জন্যে জ্ঞানের ইঙ্গিত রয়েছে। সুবহানাল্লাহ।
@আকাশ মালিক,
পাকড়াও করলে অসুবিধা নেই। তবে তাদের যুক্তিসংগত জবাব দিতে হবে কেন তারা কোরান হাদীসে বর্নিত নানান বিধিবিধান এড়িয়ে চলেন, কেন সংখ্যাগরিষ্ঠ মুসলমান দেশেও সেসব কায়েমের দাবী ঘুনাক্ষরেও করেন না।
@আদিল মাহমুদ,
এই হলো আসল ব্যাপার। বিপ্লব দা বোধ হয় এর প্রতিই ইঙ্গীত করে বলেছেন-
পেটের কাছে আল্লাহ, মুহাম্মদ, বেহেস্তের লোভ, দোজখের ভয় নাথিং শুধুই কল্পনা, পেট ও জীবন বাস্তব। কিন্তু এখানেও আমরা স্ববিরোধী অবস্থান দেখতে পাই। এই স্ববিরোধীতার শ্রেষ্ট উদাহরণ মুহাম্মদের জীবন আর তার রচিত কোরান। মক্কায় মরা উটের নাড়িভুরি মাথায় ঢেলে দেয়ার পরেও মুহাম্মদ নীরব, আর মক্কা বিজয়ের পরে তার আঙ্গুলের ইশারায় আবু সুফিয়ানের মাথা নত হয়ে যায় তার চরণতলে।
অশিক্ষিত ধার্মিক বাংলাদেশের কৃষক শ্রমিক দিনমজুরেরা সারা দুনিয়ায় ইসলাম কায়েম বা সমস্ত পৃথিবী শরিয়ার অধীনে আসুক, এমন সপ্ন দেখেনা। দুনিয়া কাঁপিয়ে দেয়ার হুমকি ধমকি, তর্জন-গর্জন আসে কোত্থেকে, কারা করে, কখন করে? এ সব কিছুর মূলেই রয়েছে অর্থ আর শক্তি। একজন হাদিস কোরান দেখিয়ে প্রশ্ন তুলেছিলেন- টাকার লোভে মুসলমানরা ইউরোপ আমেরিকায় কাফিরদের দেশে চিরস্থায়ী ভাবে বসবাস করে ইহুদি কাফেরদের জীবনে অভ্যস্ত হয়ে যাচ্ছেন, তাদের সমাজে মিশে যাচ্ছেন, এটা ইসলাম বিরোধী কাজ। সংশ্লিষ্ট হাদিস ও কোরানের আয়াত নিয়ে কতো রকমের ত্যানা প্যাচানী যে দেখলাম, এখন দেখা যায় কেউ আর কাফিরদের দেশ ছেড়ে মুসলমান দেশে হিজরত করতে রাজী নয়। ঐ যে বললাম, পেট, জীবিকা, অর্থ-সম্পদ, শক্তি-বলকে ঘিরে দুনিয়া আবর্তিত হয়। পশ্চিমা দেশের গনতান্ত্রিক পরিবেশে, রাষ্ট্রীয় ব্যবস্থাপনায় নাগরিক মানবাধিকার, শিক্ষা-প্রশিক্ষণ, কর্মসংস্থান সহ সকল প্রকার সুযোগ সুবিধে ভোগ করে সদালাপিরা যে ধর্ম বিলাস বা ফ্যান্টাসী দেখায়, বিপরীত পরিবেশে তা মোটেই করবেনা। ধর্ম ত্যাগে রাজী হতে পারে, পাসপোর্ট ত্যাগ করতে রাজী হবেনা। আর অলরেডি ধর্মের অনেক কিছু তারা বাদ দিয়ে দিয়েছে, বিবর্তনের ধারায়ই তারা বাধ্য হচ্ছে, যদিও তারা টের পায়না অথবা মুখে স্বীকার করেনা। সুবিধাবাদী অবস্থান থেকে তারা কখনো কাফেরদের বন্ধু কখনো শত্রু।
এখানে ব্লগার সফিক বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ কথা বলেছেন যার সবটুকুতেই আমি একমত। যেমন তিনি বলেছেন-
এমন একটা সময় আসবে নতুন প্রজন্মের মুসলমানরা বলবে- তাসলিমা, আযাদ, আহমেদ শরিফ, আরজ আলীরা যা লিখে গেছেন তা তো আমরা জন্মের আগেই জানি। ধর্মকারী ওয়েব সাইট তাদের মনে কোন অনুভুতি জাগাবেনা।
@আকাশ মালিক,
অশিক্ষিত লোকদেরও মোটিভেট করলে মৌলবাদী হয়তবা হতে পারে, তবে তারা শিক্ষিত মৌলবাদীদের মত ভন্ড হতে পারে না, ভন্ডামি করার মত এলেমের জন্য কিছুটা শিক্ষা দীক্ষা লাগে, নয়ত ভন্ডামি হালাল করা যাবে কিভাবে। আমেরিকা মহা ইসলাম বিদ্বেষী দেশ, মুসলমানদের জাতশত্রু ইসরায়েলের গডফাদার সে, এরচেয়ে বড় অপরাধের আর তেমন দরকার নেই। বিদেশ এসেছি পর থেকেই দেখে আসছি ঈমান্দার ভাই ব্রাদারদের আমেরিকার প্রতি সব শানানো যুক্তিপূর্ন অভিযোগ। যেটা আজ পর্যন্ত দেখিনি সেটা হল আমেরিকার স্থায়ীভাবে বসবাসের অনুমতি পাওয়া কোন বাংগালী মুসলমান আমেরিকার ইসরায়েল প্রীতির প্রতিবাদে দেশে ফিরে যেতে। কেউ কেউ ফেরত গেছে সন্তান দেশের কায়দায় বা ইসলামী কায়দায় মানুষ করবে এই কারনে সেটা ঠিক, তবে আমেরিকা ইসলাম বিদ্বেষী এই কারনে কেউ স্বেচ্ছায় ফেরত গেছে এখনো দেখিনি। যার যার যুক্তি তার কাছে, ওনারা অনেকে দুনিয়াময় দারুল ইসলাম কায়েম করবেন এই কারনেই হয়ত যান না, কে বলতে পারে। ওনারা টাকা পয়সা, ভাল চাকরি জীবনের লোভে নিশ্চয়ই ইসলামী মূল্যবোধের সাথে কোন রকম আপোষ স্বেচ্ছায় করেননি। কেউ আমেরিকার মায়া কাটাতে চান না ভাল কথা, তাতে কোন দোষ নেই। তবে যে কারনে আমেরিকার মত দেশে সব ধর্ম বর্নের লোকে সুন্দর জীবন যাপন করতে পারছে সেটার কোনরকম স্বীকৃতি না দিয়ে উলটো সেটা ভেঙ্গে নিজেদের কোলে ঝোল টানার স্বপ্ন দেখাটাই আপত্তির।
দুনিয়ায় আসল ইসলামী দেশ বলতে কিছুই বর্তমানে নেই, অতীতেও কোনদিন ছিল কিনা তাতেও যথেষ্ট সন্দেহ আছে, কিন্তু আপেক্ষিকতার বিচারে অবশ্যই কোন দেশের সাথে অন্য দেশের তূলনা করা যায়। বাংলাদেশ আর আমেরিকা কোন দেশে ইসলামী মূল্যবোধ তূলনামূলকভাবে এখনো বেশী প্রচলিত এর জবাব কোন পাগলেও এক বলবে না। তেমনি বাংলাদেশ আর আরব দেশের জন্য এক জবাব হবে না। আমি আসলেই ইসলামী মূল্যবোধে পূর্ন বিশ্বাসী হলে বাংলাদেশ ছেড়ে কোনদিন অন্তত পশ্চীমা কোন দেশে স্থায়ী হতাম না। এটাই হল মডারেট এবং মৌলবাদীদের কনফ্লিক্ট। মৌলবাদী বেচারারা অন্তত ভন্ড না, তারা যা বিশ্বাস করে তা বলে, ধানাই পানাই করে না। তাদের ধর্ম বিশ্বাস কাফের নাছারার সাথে বন্ধুত্ব করতে নিষেধ করে সরাসরি সেটা স্বীকার করে, কেবল ‘খারাপ’দের জন্যই প্রযোজ্য এই ধরনের ত্যাঁনা প্যাঁচানো আর্গুমেন্টে যায় না। যে সব দেশ ওনাদের নবী অবমাননকারিদের সরাসরি প্রটেকশন দেয় ওনাদের কষ্টার্জিত ট্যাক্সের টাকা খরচ করে সেসব দেশে যারা থাকেন তাদের নিশ্চয়ই যুক্তি আছে যেটা হয়ত আমি বুঝি না।
তবে জেনারেশন থেকে এই মানসিকতার পরিবর্তন হবে। পরের প্রজন্মের অন্তত নিজের সাথে ভণ্ডামি করতে হবে না। কারন তারা নিজের জন্মভূমি কাফের আমেরিকা ব্রিটেন হলেও তার জন্মগত নাগরিক।
এই ধরনের মুভি বানানোর অন্তর্নিহিত উদ্দেশ্য নিঃসন্দেহে মহত কোন কিছু নয় সেটা পরিষ্কার। বাক স্বাধীনতার আড়ালে আইনগত ব্যাবস্থা না নেওয়া গেলেও এর উদ্দেশ্য যে গঠনমূলক চোখে ধর্মের সমালোচনা এমন কিছু মোটেও নয়। শুধু কিছু মুসলমানকে উষ্কে দিয়ে মজা দেখার জন্যও এত টাকা খরচ করবে না। তবে এই জাতীয় ঘটনার বাই প্রোডাক্ট হল লোকের ধীরে ধীরে অভ্যাস হবে। যেদিন কোন রকম প্রতিক্রিয়া হবে না সেদিন আর এসব মুভি তৈরী করার মতন উতসাহ কারোর থাকবে না। বাংলাদেশে সালমান রুশদী নিয়ে ৮৮ সালে মারাত্মক মাতামাতি হয়েছিল, যদিও দেশের ৯৯% লোকেই আসলে পড়েই নি রুশদি আসলেই কি বলেছিল। আজকে আর এই মুভি নিয়ে দেশের লোকের তেমন কোন উত্তাপ নেই যদিও অতি সহজেই ইউটিউবেই ট্রেলার দেখতে পারে। যত উত্তাপ দেখা যাচ্ছে কিছু আরব দেশে। সেসব দেশ নিজেরাই আছে নানান আভ্যন্তরীন সমস্যায়, নানান সন্ত্রাসী গ্রুপ আছে সেখানে সক্রিয়। সাধারন প্রতিবাদকারী ইট পাটকেল বেশী হলে গুলি বোমা মারতে পারে, নিখুত দক্ষতায় রকেট লাঞ্চার মেরে গাড়ি ঘায়েল করার বিদ্যা তাদের থাকার কথা নয়।
এদের একধরণের সেকুলার সমর্থকও আছে যারা সাম্রাজ্যবাদ-বিরোধিতার নামের এগুলির সমর্থন করে। হিন্দুরা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে সংখ্যালঘু অতএব তাদের নিয়ে মুভি বানানো চলবেনা ইত্যাদি।
@রৌরব,
কথাটা সেকুলার না- কিছু বাম সমর্থক আছে যারা আমেরিকার সব কিছুতেই ভূত দর্শন করে। কিন্ত যারা বেশী ভূত দর্শন করে, তারা নিজেরাই আস্তে আস্তে ভূতনাথ হয়ে যায়। এটাই বামেদের ক্ষেত্রে হয়েছে।
মূল্যায়নটা ভাল লেগেছে কারন যুক্তিযুক্ত উপস্থাপন। কোন সে সময়, কোন সে সূচক যা অর্জিত হলে আমরা ধর্মকে না বলতে পারবো। খুব সুন্দর কথা বলেছেন- ‘ফিয়ার ইজ দ্যা কি’। ক্ষুধাই মানুষ কে মানুষ করবে। ক্ষুধার রাজ্যে পৃথবী গদ্যময়। আর ধর্মের কাব্যিকতা নয়- চাই নির্ভেজাল গদ্য-লজিক।
কমরেড,
ধন্যবাদের মত স্থুল সৌজন্যতাবোধে আমি বিশ্বাসি নই।লেখাটা বর্তমান সময়ের সাপেক্ষে শতভাগ প্রাসঙ্গিক।তবে মজার ব্যপারটা কি জানেন,আমরা এমন এক সমাজ যন্ত্রে বসবাস করছি যা ধর্ম নামের এক আদিম আফিমে মাতালগ্রস্থ অন্ধ বেতো ঘোড়া,যা আজও অনেক মর্ম পীড়ার কারন।আমার পুরো নাম পাপলু দাস,আপনার নাম বিপ্লব পাল।আমরা নাও থাকতে পারি কিন্তু আমদের মূল নামের পদবীটা কিন্তু ঠিকই রয়ে যাবে যা আমরা আদৌ গ্রহন করিনি,কেবল মাত্র বোঝার মত বয়ে এসেছি মাত্র।ধর্ম আজও একটা আদিম বানিয্যিক সংঘটন যা প্রতিনিয়ত কেবল ব্যবসা করে যাচ্ছে বংশ পরম্পরায়।আর তাই পরিচয় প্রকাশে চাই স্বাধীনতা ও সতন্ত্র বিশ্বাসবোধের প্রকাশ।কোন ধর্মের বিজ্ঞাপন নয়,হতে চাই মানুষের প্রতিনিধি।
কারন আমি অন্য কিছু নই,আমি সবাই।
এতটুকুই,
পাপলু(শুধুই)
এখানে ট্রেইলার দেখে নিন
http://www.youtube.com/watch?v=X_wTvx6-ok4&feature=channel&list=UL
মুভিটার ট্রেইলার দেখলাম ইউটিউবে। ফালতু, ফিকশান, নিম্নমানের কমেডি মুভি।
মুসলমানরা ধ্বংসাত্মক প্রতিক্রিয়া না দেখিয়ে আলোচনা, শান্তিপূর্ণ মিছিল, প্রচারণা-এগুলোর মাধ্যমে প্রতিবাদ করলে ভাল হত।
(Y)
মুসলমান সমাজকে সত্যের মুখোমুখি হতে হবে। সামাজিক বিবর্তনে যারা অন্যের দেহ ও সম্পদে আঘাত করার অন্যায়টা উপলব্ধি করে উঠতে পারে নি, ব্যবসা তাদের নম্র হবার সুযোগ দিবে। প্রমাণ যুক্তরাষ্ট্রের মুসলমান জনগোষ্ঠি। ব্যবসা মানুষকে বিনয়ী করে। হিংসাত্মক আচরণ অলাভজনক।
@রূপম (ধ্রুব),
ঠিক তাই। এটা আমি বহুদিন থেকে বলে
আসছি, জ্ঞানের থেকে ক্ষুদা, আর ক্ষুদার জ্বলায়
নিজেকে বাঁচানোর সৎ এবং আধুনিক চেষ্টাই এদের মুসলমান, হিন্দু থেকে মানুষ করবে 🙁
@বিপ্লব পাল, চমৎকার বলেছেন….
@বিপ্লব পাল,
চমৎকার লিখেছেন। পড়ে অনেক ভালো লাগলো।