সেই অনেকদিন আগের কথা। আমি তখন ১০ বছরের বালিকা। প্রাইমারি ইস্কুল শেষ করে গিয়েছি হাই ইস্কুলে ভর্তি হতে। ৬ষ্ঠ শ্রেণীতে ভর্তির দিনের স্মৃতি আমার মনে আজো অম্লান। আমার পরনে ছিল একটি স্কার্ট।হাঁটু থেকে চরণ অবধি ছিল অনাবৃত। বাবরিকাটা কুন্তলরাশি ঘাড় এবং কাঁধের উপর ঝুলছিল। কপালের উপরও ছিল কাটা চুলের রাশি। শখ করে কপালে একটি লাল টিপও পরেছিলাম। আমি বারান্দায় দাঁড়িয়ে বিস্ময়, পুলক ও ভয় মিশ্রিত মনে চারিদিকে চোখ ঘুরিয়ে ঘুরিয়ে দেখছিলাম। ইস্কুলের বিশাল বিশাল ঘর, সামনে বিরাট খেলার মাঠ, মাঠের ওপারে পুকুর, তার পাশে বাজার, অনেক দোকানপাট ও একটি মসজিদ। মনে মনে ভাবছিলাম এই ইস্কুলে আমি পড়ব! এত ছেলেমেয়ে এত শিক্ষক, কাউকেই তো চিনি না। আমি এই পুচকে মেয়ে কোন রুমে গিয়ে বসব, কী পড়ব, কী ক’রে কী হবে? ইত্যাদি। এমন হতবিহবল, ভাবনাচিন্তাময় অবস্থার আকস্মিক পরিসমাপ্তি ঘটল একটি বিকট শব্দ ও রুদ্রমূর্তির আবির্ভাবে। দেখলাম শ্মশ্রুমণ্ডিত, মাথায় গোলটুপিযুক্ত, কপালে এবাদতের আঘাতে সৃষ্ট স্থায়ী কালোটিপ অঙ্কিত, গোল পাঞ্জাবি ও গিরার বেশ উপরে লুঙ্গি পরিহিত এক জলজ্যান্ত বাহ্যিক-ভয়াবহ মানুষ সশরীরে আমার সামনে আবির্ভূত।
আমার তো ভূত দেখার মত অবস্থা! কে এই দেবদূত? তিনি চোখমুখ সম্ভবের অতিরিক্ত কঠিন করে আমার উদ্দেশ্যে দেববাণী নিঃসৃত করতে লাগলেন। জিজ্ঞেস করতে লাগলেন, এই মেয়ে তুই কি হিন্দু? আমি কাঁদো কাঁদো হয়ে বললাম –না। তোর বাবা-মা কি হিন্দু? না। তাহলে কপালে এটা কি লাগিয়েছিস? জানিস না তিলককাটা হারাম! এক্ষুনি এটা ফেলে দে। আমি অশ্রু বিসর্জন দিতে দিতে আমার অতি সাধের টিপখানাও বিসর্জন দিয়ে দিলাম। তোর ঠ্যাং দেখা যাচ্ছে কেন? তুই কি কাক, নাকি বক? তোর পায়জামা কই? চুলের এই দুরবস্থা কেন? চুল কেটে ফেলে দিয়েছিস কেন? উড়না কই? মাথায় কাপড় কই? আমি প্রশ্নে প্রশ্নে জর্জরিত ও নাস্তানাবুদ। আমার হাই ইস্কুলগামী প্রতিবেশী ও কাজিনদের কাছে শুনতাম ইস্কুলের অনেক গল্প। ওদের কাছে আমি আগেই শুনেছিলাম এই ডাকসাইটে মুছলমান খালেদ স্যারের গল্পও। তিনি পৌত্তলিক ছিলেন। কোনো শুভমুহূর্তে, কোনো এক নিবেদিতপ্রাণ ও ইছলামের সম্প্রসার এবং সম্প্রচারে উৎসর্গীকৃতদিল মুছলমানের সহচার্যে এসে তিনি একমাত্র সত্য-শান্তির ধর্ম ইছলাম সম্পর্কে অবহিত হন। এবং শান্তিসাগরে ঝাঁপিয়ে পড়ে দীক্ষিত হন। উনার নাম ছিল সন্তোষ। মুছলিম হওয়ার পর নাম বদলে রাখেন সাইফুল্লাহ খালেদ। তিনি স্ত্রী-পুত্র-কন্যা সমভিব্যাহারে সপরিবারে ঈমান এনেছেন। তার পর থেকে শুরু হয়েছে বিরামহীনভাবে যে কাউকে দেখামাত্রই শান্তিময় উৎপীড়ন।
৬ষ্ঠ শ্রেণী থেকে ১০ম শ্রেণী পর্যন্ত প্রতিটি শ্রেণীতেই খালেদ স্যারের কোনো না কোনো ক্লাস ছিল। ক্লাসে ঢুকেই তিনি তারস্বরে মিলাদ পড়াতে শুরু করতেন। ‘ইয়া নবী সালাম আলাইকা, ইয়া রাসুল সালাম আলাইকা।‘ অথবা গাইতে থাকতেন, দীনের নবী মোস্তফায় রাস্তা দিয়া হাঁইটা যায়। আর অশ্রুসজল চোখে, আবেগবিজড়িত ভারীকণ্ঠে আফসোস করে বলতেন, বনের পশুও নবী চিনে। আর আমরা চিনলাম না! আহা, নবীরে চিনলাম না; নবীরে দেখলাম না ( সুরে সুরে)। ইস্কুলের পড়া নিয়ে উনার তেমন মাথাব্যথা ছিলনা। তিনি ছেলেমেয়েদেরকে সূরা জিজ্ঞেস করতেন। সবার দীনীজ্ঞান পরীক্ষা করতেন নিষ্ঠার সাথে। আমাকে সূরা জিজ্ঞেস করলে আমি প্রায়ই মার খেতাম। কারণ আমি সূরা পারতাম ৪-৫টা। তাও শুদ্ধভাবে না। দীনীজ্ঞান ত ছিলই না। আমাকে একবার জিজ্ঞেস করা হয়েছিল, মাগরিবের নামাজ কয় রাকাত। আমি বলেছিলাম দশ রাকাত। খেয়েছিলাম অধম মার। দীনে জ্ঞানহীনতার জন্য জনসমক্ষে মার খেতে ও হেনস্তা হতে ভীষণ লজ্জা লাগত। মনে মনে প্রতিজ্ঞা করতাম, আজই বাড়ি গিয়ে সব শিখে পাক্কা মমিন হয়ে যাবো ইনশাল্লাহ। কিন্তু প্রতিজ্ঞা পর্যন্তই। এর বেশি এগুনো হয়নি। ধর্মকর্মে উদাসীনতার জন্য নিয়মিত বাড়িতেও মার খেতাম, খালেদ স্যারের হাতেও খেতাম। তবুও আমি উদাসীনই রয়ে গিয়েছিলাম। অবশেষে সেই উদাসীনতার মেঘও কেটে গেল।
ছিলাম ধর্মকর্মে উদাসীন।
তার পরে হয়ে গেলাম পুরোপুরি ধর্মহীন।
স্যার প্রায়ই বলতেন, কে কে বাড়িতে নিয়মিত নামাজ পড়িস দাঁড়া তো দেখি। সবাই দাঁড়িয়ে যেত। সত্যি সত্যিই তোরা সবাই নামাজ পড়িস? নামাজ নিয়ে মিছে কথা বললে কিন্তু আল্লার গজব পড়বে। তার পর দুই একজন ছাড়া বাকি সবাই বসে যেত। তাদের উপর আল্লার তরফ থেকে স্যার নিজের হাতেই গজব ফেলতেন। মিথ্যে বলা ও নামাজ না পড়ার জন্য দ্বিগুণ শাস্তি।
আমাদের ইস্কুলে ছেলেরা বসত একপাশের বেঞ্চিতে আর মেয়েরা বসতো অন্যপাশের বেঞ্চিতে। খালেদ স্যার ভুলেও কভু মেয়েদের দিকে তাকাতেন না। মেয়েদের উদ্দেশ্যে কিছু বলার সময় তিনি হয়ত ছেলেদের দিকে তাকাতেন, অথবা বাইরের দিকে উদাসদৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকতেন, নয়ত চোখ বন্ধ করে রাখতেন। না তাকিয়েই বলতেন, চার নম্বর বেঞ্চের তিন নম্বর মেয়ে, তোর নখে রঙ কেন? এদিকে আয়। মেয়েটি যমদূত দেখার মত ভয়ে নীল হয়ে দুরুদুরু বক্ষে এগিয়ে যেত স্যারের কাছে। স্যার চোখ বন্ধ অবস্থায়ই বলতেন, হাত মুষ্টিবদ্ধ কর। মেয়েটি হাত মুঠো করে রাখত। স্যার চোখ বুজেই মেয়েটির মুষ্টিবদ্ধ হাতের নেলপালিশমাখা রাঙানখে বেরহমভাবে বেত্রাঘাত করতে থাকতেন আর অভিসম্পাত বর্ষণ করতে থাকতেন নেলপালিশ আবিষ্কর্তা ও এর ব্যবসায়ের সাথে সংশ্লিষ্ট সবাইকে। ব্যবহারকারীকে তো অবশ্যই। ফিনকি দিয়ে তাজারক্ত বের হয়ে মেয়েটির রাঙানখ এবং পুরো হাত আরো আরো রাঙা হয়ে উঠত। সে চিৎকার করতে থাকতো, স্যার গো আর কোনোদিন দেবনা। অথবা অমুক বেঞ্চের তমুক, তোর গায়ে পাতলা উড়না কেন? মশারি পরে ইস্কুলে আসিস কেন, তোকে কি মশা কামড়ায়? অমুকের ঠোঁটে রঙ কেন, ঠোঁট কেটে দেব? তমুকের চোখে কালি কেন, চোখ গেলে দেব? ওর চুল দেখা যায় কেন? এর হাত দেখা যায় কেন? এই মেয়েটা ছেলেদের দিকে তাকায় কেন? বাড়িতে তোদেরকে কোনো শিক্ষা দেয়না? তোরা কি কেবল ছেলে ভোলাতে ইস্কুলে আসিস? প্রভৃতি। মেয়েদের দিকে না তাকিয়েও তিনি তৃতীয় নয়নে সবই পরিষ্কার দেখতে পেতেন! স্যার লেইজারের সময় মসজিদে নামাজ পড়তে যেতেন। যে সকল ছেলেদের তিনি নামাজে দেখতে পেতেন না তাদেরকে বেদম মার দিতেন। অনেক সময় মারতে মারতে অজ্ঞান করে ফেলতেন। অন্যান্য স্যাররাও কারণে-অকারণে ছেলেমেয়েদের মেরে অজ্ঞান করতেন। দৈনিক কয়েকটি ছেলেমেয়ের অজ্ঞান হওয়া ছিল নিত্যনৈমিত্তিক ব্যাপার। আমি অবশ্য কোনোদিন বেহুশ হয়নি। বাড়িতে ও ইস্কুলে মার খেতে খেতে হাড়গোড় শক্ত হয়ে গিয়েছিল। যে স্যার যত বেশি সংখ্যক ছেলেমেয়ে অজ্ঞান করতে পারতেন তিনি তত বেশি উত্তম শিক্ষক বলে বিবেচিত হতেন। জ্ঞান ফিরে এলে স্যাররা বেত ঘুরিয়ে ঘুরিয়ে আরো অভিসম্পাত দিয়ে জিজ্ঞেস করতেন, কেমন লাগল? আর করবি? অজ্ঞান-থ্যারাপির ব্যাপারে অভিভাবকরাও কখনো অভিযোগ করতেন না। ভর্তির সময় আদর্শ বাবার মত বলতেন, স্যার আপনাদের হাতে তুলে দিয়ে গেলাম। একটু এদিক-ওদিক হলেই মেরে লাশ ফেলে দেবেন; কোনোই আপত্তি নেই।
স্যার কাউকে নাম জিজ্ঞেস করলে, সে যদি নামের আগে মোহাম্মদ বা মোছাম্মৎ না বলত তবে তিনি ভয়ানক রাগ করতেন। শাস্তিও দিতেন। একদিন এক ছেলেকে জিজ্ঞেস করলেন, এই ছেলে তোর নাম কি। ছেলেটি বলল আলাউদ্দীন। কী! মোহাম্মদ নেই? আছে স্যার, মোহাম্মদ আলাউদ্দীন। আরেকটি ছেলেকেও একই প্রশ্ন করলেন। উত্তর এলো ইব্রাহিম। কী! না- না স্যার, ভুল হয়ে গেছে। মোহাম্মদ ইব্রাহিম। প্রথমবারে মোহাম্মদ কোথায় গিয়েছিল? মুছলমানের ছেলে হয়ে মোহাম্মদ বলতে ভুলে যাস! ছি ছি! এবার তোরা পরস্পরের কানে ধরাধরি করে উঠবস কর। আমাদেরকে উঠবস করতে লাগিয়ে দিয়ে বা গালি দিতে দিতে বা ওয়াজ করতে করতে বা নাতে রাসুল ও হামদে বারি গাইতে গাইতে তিনি টেবিলের উপর মাথা রেখে নিশ্চিন্তে ঘুমিয়ে পড়তেন। দুইটা ছেলেকে ডেকে বলতেন উনার গা টিপে দিতে। তিনি নাক ডেকে আরামে ঘুমোতেন। ঘুম থেকে উঠেই মিলাদ পড়তে শুরু করতেন। অথবা আমাদের দীনীজ্ঞান পরীক্ষা করে হতাশ হয়ে মার দিতেন। তবে উনার অনেক রসবোধও ছিল। শাস্তির কথাগুলোও তিনি অনেক রসিয়ে বলতেন। আমরা মার খেয়েও উনার কথা শুনে হেসে গড়িয়ে পড়তাম। অনেক আদিরসাত্মক কথাও তিনি অবলীলায় বলে যেতেন। ছেলেদের জিজ্ঞেস করতেন, ছেলেরা তোরা যদি দোকানে কলা কিনতে যাস তাহলে কি খোসাযুক্ত কলা কিনবি নাকি খোসামুক্ত কলা কিনবি? ছেলেরা তাৎক্ষণিক জবাব দিত অবশ্যই খোসাযুক্ত কিনব স্যার! কেন কিনবি খোসাযুক্ত? কারণ খোসা-ছাড়া কলায় ময়লা পড়তে পারে বা মাছি বসতে পারে স্যার। তোরা উদলা খাবার কিনবি নাকি ঢাকা-খাবার কিনবি? অবশ্যই ঢাকা-খাবার স্যার। কারণ খোলা খাবারে মাছি বসে। শুনেছিস মেয়েরা-যেসব মেয়েরা পর্দা করেনা ওরাও খোলা খাবার বা খোসাছাড়া কলার মত। ওদের গায়েও মাছি বসে। আর মাছিবসা খাবার কেউ কিনেনা। তখন এসব কথার অর্থ বুঝতাম না। সবাই হাসত উনার কথা শুনে, আমিও হাসতাম। এখন ভাবলে মনে হয় স্যার উনার সন্তানতুল্য ছাত্রছাত্রীদের সাথে এসব কুরুচিপূর্ণ কথাবার্তা কেমন করে বলতেন! ইস্কুলের মোট ছাত্রছাত্রী সংখ্যার অর্ধেক ছাত্রীদের দিকে ফিরে তাকানোও তিনি জঘন্যপাপ মনে করতেন। এত অবজ্ঞা, এত তাচ্ছিল্য করতেন! অনেক সময় বলতেন, তিনি এই পাপ-চাকরি ছেড়ে দিয়ে মাটি কাটার কাজ করবেন; তাও ভাল। কারণ ইস্কুলে মেয়েরাও আসে। তিনি এই অচ্ছুৎ বস্তুদের পানে না তাকালেও তাদের সাথে একই রুমে অন্তত বসতে তো হয়!এতেই নাকি উনার অমার্জনীয় গুনাহ হয়ে যায় প্রতিনিয়ত! তিনি অবশ্য কোনোদিন চাকরি ছাড়েননি।
স্যার লেখাপড়ার কথাও মাঝে মাঝে দু’একটা বলতেন। আমাদেরকে হুট করে কিছু জিজ্ঞেস করতেন। না পারলে মার দিতেন। বেত দিতে দিতে বলতেন, লেখাপড়া করে যে; গাড়িঘোড়া চড়ে সে। লেখাপড়া না করিলে হাতের উপর বেত পড়ে। বেত খেতে কেমন লাগে রে? তিনি ছিলেন রঙ্গরসে ভরপুর একজন মানুষ। তার কঠোরতার মাঝেও ছিল রসিকতা। শুনেছি তিনি এককালে গানবাদ্য বেশ ভালবাসতেন। সেই পাপকর্মের জন্য তিনি সর্বদা অনুতাপও করতেন। তিনি নিজেই বলতেন মুসলিম হবার পূর্বে তিনি নাকি সাক্ষাত শয়তানের অনুচর ছিলেন! একজন সংস্কৃতিবান, রসিক মানুষকে এমন কঠোরে পরিণত করল কী-সে?
ইস্কুলে কোনো সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান থাকলে তিনি সেদিন অনুপস্থিত থাকতেন। কখনো উপস্থিত থাকলেও নাক মুখ সিঁটকাতেন। জাতীয় সংগীত শুরু হলে সবাই দাঁড়িয়ে যায় সম্মান প্রদর্শন করতে। গাইতে পারুক বা না পারুক সবার ঠোঁট কাঁপে। আর খালেদ স্যার মুখ বিকৃত করে বিড়বিড় করতে করতে সেখান হতে উঠে চলে যেতেন। এসব নাকি বেধাতি! তিনি যথেষ্ট পড়াশোনা জানতেন। কিন্তু আমাদেরকে সেসব শিক্ষা না দিয়ে কেবল গোঁড়ামি শেখাতেন। তবুও স্যারের প্রতি আমাদের শ্রদ্ধাবোধ ছিল। আজও আছে অটুট। তিনি যা বিশ্বাস ও অনুসরণ করতেন তা-ই প্রতিটি পদক্ষেপে প্রয়োগ এবং প্রতিফলিত করতে চাইতেন। তাঁর এই আচরণের জন্য কি তিনি আদৌ দায়ী, নাকি এই ভয়াবহ বিশ্বাসটি যে সৃষ্টি করেছে সে দায়ী?
নবী আপু, পদ্য ছেড়ে গদ্য লিখলেন, ভাল লেগেছে।
মজা পেয়েছি পড়ে, আপনার বর্ণনার গুনে। তবে মূল ঘটনা যে অনেক মারাত্মক তা বলাই বাহুল্য। এটা শুধু একটা পৃথক ঘটনা নয়, মৌলবাদের বীজ এভাবেই প্রোথিত হয়। এবং সেই ক্ষেত্রে এই সব মানুষদের ভুমিকা মারাত্মক। যাচাই করে দেখলে জানতে পারবেন সেই মাস্টারটির শেখানো ধর্মীয় ফালতু শিক্ষা অনেক শিশু মনে দাগ দিয়ে গেছে এবং তাদের ফিউচারে এইগুলি হয়ে উঠেছে এক একটা বুলশিট চলনের খতিয়ান।
এদের প্রতি আমার বিন্দুমাত্রও শ্রদ্ধা নেই। কেননা এরাই প্রজন্মকে অন্ধ এবং পুঙ্গু করে দিচ্ছে প্রতিনিয়ত।
@তাপস শর্মা,
অশেষ ঘৃণা প্রাপ্য হচ্ছে পৌরানিক রূপকথার গল্পকারদের।
সেই শিক্ষাই ত যেকোন ধর্ম-শিক্ষক মনেপ্রাণে দিয়ে থাকেন।
অনেক আশার কথা যে এখন আর শিক্ষকেরা আগের মত নির্যাতন করে না। প্রাইমারিতে যখন পড়তাম তখন আমাদের একজন স্যার ছিলেন , যার পিটুনির ভয়ে আমরা তটস্থ থাকতাম। পিটুনি বিষয়ে স্যারকে কিছু বললে তিনি তার নিজের একজন স্যারের উদাহরণ দিতেন যে সেই স্যার কিরকম পিটাতো। সেই বর্ণনা শুনে স্যারের কাছে কৃতজ্ঞ থাকতাম যে আমাদের স্যার সেই স্যারের মত এত মারেন না। :-O
“একজন সংস্কৃতিবান, রসিক মানুষকে এমন কঠোরে পরিণত করল কী-সে?”
আমি অনেক মানুষকে দেখেছি যারা নিতান্তই ভাল, কমল হৃদয়ের মানুষ। কিন্তু ধর্মীয় বিধিনিষিধের ক্ষেত্রে তারায় ভয়ঙ্কর রূপে আবির্ভূত হন। 🙁 :-s 😕
সুন্দর লেখার জন্য অভিনন্দন (Y) (F)
(Y) (F) (F)
@ভক্ত, আপনার জন্যও রয়েছে (F) (F) (F) ভাল থাকুন।
তামান্না আপু,
মনে হয় না, সকল শিক্ষক এমন ছিলেন, আমরা অনেক পিতৃতূল্য শিক্ষকও পেয়েছি, যারা আবার ব্যক্তিজীবনে প্রচন্ড ধার্মিক ছিলেন। এই শিক্ষকেরা কিন্তু আমাদের মাঝে আদর্শের বীজ বুনে দিতেন, সুন্দর জীবনের স্বপ্ন দেখাতেন! তবে আপনার বর্নিত শিক্ষক কাহিনিও অবিশ্বাস করার কিছু নেই, এমন গোড়া শিক্ষকও কেউ কেউ ছিলেন! আর আপনার লেখাটাও খুব সুন্দর হয়েছে, চরিত্রটি আপনার লেখনিগুনে সুন্দরভাবে ফুটে উঠেছে!
আপনার সমাজ চিত্রাঙ্কন চলতে থাকুক। (Y)
@কাজি মামুন, আমাদের অনেক শিক্ষকই কড়া মেজাজের ছিলেন। কয়েকজন আদর্শবান ভাল শিক্ষকও ছিলেন। এখনও যাঁদের কথা মনে হলে শ্রদ্ধা ও কৃতজ্ঞতায় মাথা নুয়ে আসে। খালেদ স্যারও ছিলেন দারুণ রসিক মানুষ। ধর্মান্তরিত ছিলেন বলেই বোধ হয় তিনি ধর্ম নিয়ে একটু বেশি বাড়াবাড়ি করতেন। ধন্যবাদ মামুনভাই।
এর পরিপ্রেক্ষিতে মজার একটি ঘটনা মনে পড়ছে। বুয়েটের পদার্থবিজ্ঞান-২ কোর্সটি নিতেন যে শিক্ষক, তিনি বলতেন কোরানের মাঝে সব বৈজ্ঞানিক সূত্র লুকিয়ে অাছে। অামাদেরকে উদাহরণও দিতেন। যেমন, একবার বললেন, “অামি সকল কিছু জোড়ায় জোড়ায় সৃষ্টি করেছি” এর মাঝে নাকি স্পষ্টভাবে অালোর ওয়েভ-পার্টিকল ডুয়ালিটির প্রতি নির্দেশ করা হয়েছে। অার স্পেশাল রিলেটিভিটি পড়াতে গিয়ে তো বুঁদ হয়ে গিয়েছিলেন মিরাজের মাজেজা বর্ণনে।
@অাকাশ চৌধুরী,
এই সকল সর্বোচ্চ শিক্ষায় শিক্ষিত শিক্ষকদের জন্য বলতে ইচ্ছে করে ” বেশিবিদ্যা ভয়ঙ্কর”
আল্লা সব কিছুর জোড়া সৃষ্টি করেছেন, কিন্তু উনার নিজের জোড়া সৃষ্টি করতে পারেলেন না!
@আকাশ চৌধুরী,
বুয়েটের পদার্থবিজ্ঞানের শিক্ষক বলছেন-কোরানের মাঝে সব বৈজ্ঞানিক সূত্র লুকিয়ে আছে। মাশাল্লাহ, মাশাল্লাহ। তো হুজুরকে বলেন না কেন, হুজুর বিজ্ঞান ছেড়ে ক্লাসে কোরান নিয়ে আসলেই হয়। এই সব ভোদাইদেরে নিয়োগ দেয় কোন্ ভোদাই?
অফ টঃ আপনি বোধ হয় অভ্রতে (আ) লিখতে হলে o+a লিখেন। এভাবে না লিখে শুধু a লিখলেই (আ) হয়ে যাবে।
অতি উত্তম বর্ণনা । একজন মানসিক রোগীকে ও তার মানসিক রোগকে সুন্দর ভাবে উপস্থাপন করেছেন ।
@ইলুমিনেটি, মানসিক রোগী না ব’লে ধর্মীয় রোগী বলা যায়।
@স স
অসীমের জবাব,
প্রথমেই বলে রাখি..ভাষা ও সম্বোধনের ব্যাপারে আপনার সংযত হওয়া উচিত। আপনি দু’টো জিনিসকে গুলিয়ে ফেলেছেন দেখছি। উদাহরণ দিই একটা..আমার প্রচুর বন্ধু মজা করে আমাকে ওয়াসিম ডাকে। কই কোনদিন তো তাদের শুধরাতে যাইনি।নামে কি এসে যায়! যে মানুষ জীবনের অর্ধ বছরে একনামে পরিচয় পেলো ..নাম পাল্টালেও উনাকে আগের নামে ডাকলে সমস্যা কোথায়? সুমন চট্টোপাধ্যায়কে তো আর কবির সুমন বলি না ..দীর্ঘদিনের অভ্যেসে পুরানোটাই আসে। কোন লাইনের সাথে কোন লাইন জুড়ে দিলেন …না বুঝেই একটা মন্তব্য দিলেন। সাইকোলজি ব্যাপারটা কিছুটা বড় অর্থে বুঝানো হয়েছে..মানে আচরণগত বৈশিষ্ট্য কিংবা ব্যক্তিগত চরিত্র। মানসিক ব্যাপারটা সেই একই অর্থ বহন করে না। ৪৬ বছর বয়সে এসে আবার মাস্টারি করতে ভালো লাগে না। আপনি খুব বেশি বেশি মাত্রায় রিয়েক্ট করেছেন দেখছি…কি ভায়া নিজের কাছের কারুর বেলায় এরকম এরকম হয়েছে নাকি? ভালো থাকবেন।
খুবই রাগ হল এ ঘটনা পড়ে।
আপনি কি ‘হেট দা সিন বাট নট দা সিনার’ টাইপের কিছু বলতে চাইছেন। এ বক্তব্যে দ্বিমত। যারা ছোটবেলা থেকেই ব্রেনওয়াশড হয়ে আত্মঘাতী বোমারু তৈরি হয়েছে তাদের ক্ষেত্রে এ বিষয়ে সহানুভূতি থাকতেই পারে, কিন্তু এনার মত যাঁরা ধাড়িবয়সে হঠাৎ ধর্মীয় গোঁড়ামির পথে এভাবে ঝুঁকে পড়েছেন, তার জন্য সমস্ত ঘৃণা সরাসরি তাঁরই প্রাপ্য।
@কৌস্তুভ, গোঁড়ামি তার মধ্যে আগে থেকেই ছিল। সুস্থ মুক্তবুদ্ধি সম্পন্ন মানুষ কখনো হুট করে গোঁড়ামির পথে পা বাড়াতে পারেনা, যদি না তার মস্তিষ্ক বিকৃতি ঘটে। আর ব্রেইন ওয়াশ হওয়ার জন্য তিনি প্রস্তুত ছিলেন, আমাদের আসেপাশের অসুস্থ পরিবেশ কি একজন মানুষের ব্রেইন ওয়াশড হওয়ার পক্ষে অনুকুল নয়?
@কৌস্তুভ,বিশ্বাসের ক্ষেত্রে যদি বিবেক-বুদ্ধি খাটান যেত তাহলে ত পৃথিবীতে ধর্মই থাকত না দাদা।
অবাক হওয়ার ব্যাপার, আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক পর্যন্ত এরকম! আমি শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে বাংলা বিভাগে পড়ি। একজন হুজুর টাইপ শিক্ষক ক্লাস এ ঢুকল, ঢুকেই ছেলেমেয়েদের আলাদা সারিতে বসিয়ে দিল। ক্লাস এর মধ্যেই আল্লার বানী আওড়াতে শুরু করল। সাহিত্যের শিক্ষক কিভাবে এরকম হয়, অবাক হওয়ার ব্যাপার! উনি নাকি আমাদের “চণ্ডীমঙ্গল” পড়াবেন!! :-O
@অস্পৃশ্য সৃজন,
সর্ব স্তরেই আছে সব ধর্মের মোল্লা।
বিজ্ঞানের শিক্ষক, এমন কি বিজ্ঞানীও আছেন এরকম! বিজ্ঞানের সব আবিষ্কৃত তত্ত্ব কোনো বিজ্ঞানী বা বিজ্ঞানের ছাত্র পুরাণে খুঁজে পায়!তবে অনাবিষ্কৃত কিছুই পুরাণ হতে এখনো আবিষ্কৃত হয়নি।
শিক্ষকদের এধরনের আচরণের জন্য ঢালাও ভাবে তাদের কে দায়ী করাটা ঠিক হবে না। আমাদের বুঝতে হবে তারাও এই অসুস্থ সমাজের ই একটা অংশ। আমাদের দেশে শখ করে কেউ শিক্ষক হতে চায় না। সবাই ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়ার হতে চায়। স্কুল এর শিক্ষক রা মুলত অন্য পেশায় যাওয়ার সুযোগ না পেয়ে শিক্ষকতা বেছে নেয়। যার ফলে তাদের নিজেদের পেশার প্রতি সম্মানটা সেভাবে তৈরি হয় না।
আরেক টা ব্যাপার হল আমাদের দেশের শিক্ষার ইতিহাসে দেখা যায়, এদেশের শিক্ষাব্যবস্থা ছিল মুলত ধর্মভিত্তিক। ছাত্রদের প্রহার করা, ভয়ভীতি প্রদর্শন এবং মতবাদ চাপিয়ে দেওয়ার সংস্কৃতি ধর্মীয় শিক্ষা ব্যবস্থা থেকেই এসেছে। শিক্ষক দের সঠিক প্রশিক্ষনের ব্যবস্থা নেই, উন্নত দেশগুলোর শিক্ষা পদ্ধতি সম্পর্কে ও তাদের ধারনা নেই। তাদের শিক্ষকরা তাদের সাথে যে ব্যবহার করেছে, তারাও তাদের ছাত্রদের সাথে একই ব্যবহার করছে।
@নাদিম আহমেদ,আপনি ঠিক কথা বলেছেন। শুধু শিক্ষকরা নন, বাবা-মা এবং শিক্ষক উভয় শ্রেণীই বাচ্চাদের সাথে একই রকম আচরণ করে থাকেন।
অদ্ভূত! ধর্ম মানুষকে যতটা অমানবিক বানাতে পারে,ততটা আর কিছুই নয় বোধহয়।
@ঊর্মি, হুঁ অহরহ উদাহরণ ত আছে চারিদিকে।
লেখাটা খুবই ভাল লাগল @তামান্না ঝুমু,
পেটানো এবং মনে ত্রাস সৃষ্টি করাটা শিশুদের সৃজনশীলতা নষ্ট করে দিতে পারে। ঐ রকম শিক্ষক – ধর্মের কারণে হোক বা অংক না পারার কারণেই হোক, যারা পিটায়ে স্কুল এর মত প্রতিষ্ঠান টিকে একটা ত্রাসময় স্থান বানিয়ে রাখে শিশুদের জন্য, তাদের মুখে একদলা থুথু, আমার ক্ষমতা থাকলে এসব শিক্ষকদের পিটায়ে হাড্ডি ভেংগে দিতাম।
হয়ত এই শ্রদ্ধাবোধ টা ইমোশনাল, বা জানি না কেন, কিন্তু, আমার প্রাইমারি স্কুল জীবনের এই রকম গুন্ডা পান্ডা শিক্ষকদের কথা মনে হলে, আজও মনে খুন চেপে বসে। কারণ আমি স্বাধীন সত্তায় বিশ্বাস করি। আমি একটা গুন্ডার ভয়ে স্কুলের মত একটা সুন্দর প্রতিষ্ঠানে দিনের পর দিন আসতে ভয় পাচ্ছি, এটা মেনে নিতে কোনদিন পারি নি, পারবও না। আমার স্কুল জীবনের অনেক শিক্ষকই আছেন, যাদের আমি শুধু শ্রদ্ধাই করি না, তাদের কথা মনে হলেই মনটা নরম এবং উদাস নষ্টালজিক হয়ে যায়। আবার সেই সাথে অপেক্ষায়ও আছি, ঐসব গুন্ডা (যারা বেত দিয়ে আমাদের পেটাত, তাদেরকে কখনই শিক্ষক বলি না আমি) দের সাথে দেখা হলে, মনের ঝাল মিটায়ে খুশী মত অপমান করব। ত্রাসমুক্ত স্কুল চাই।
@এমরান এইচ, বাচ্চাদেরকে পিটিয়ে হাড্ডি গুঁড়ো করে দেয়া আমাদের দেশের একটা উচ্চমার্গের সংস্কৃতি। ইদানিং অবশ্য সেই ঐতিহ্যে কিছুটা হলেও পরিবর্তন এসেছে। আইন করা হয়েছে ইস্কুলে ছেলেমেয়েদের পিটান যাবেনা।
নও মুসলিমরা জন্মগত মুসলিমদের থেকে বেশী ফ্যানাটিক হতে পারে মাঝে মাঝে। কারন কোন না কোন হতাশা থেকেই তারা ধর্ম পরিবর্তন করে। যে কারনে তাদের মধ্যে উগ্রতা বেশী।
@ভবঘুরে, তাছাড়া তাদের ধর্মান্তর গ্রহণের আগের জীবনের অপরাধ বা পাপবোধও কাজ করে। লোকের বাহবা পাওয়ার ব্যাপারও থাকতে পারে।
চমতকার লেখা। বিবেকানন্দের বানী আছে এই ব্যাপারে হিন্দু মুসল্মান হলে সে হয় শত্রু…এই রকম টাইপ।
যাই হোক কথা হচ্ছে…।
আমি আপনার এই কথার সাথে একমত হতে পারছি না। মানুষের মাথা নামে একখান জিনিস আছে। এটা ব্যবহার না করাই হচ্ছে চরম অপরাধ।কেন একটা মানুষ অন্ধভাবে বিশ্বাস করবে তা সম্পর্কে বিশদ না জেনেই।আসলে সেই মানুষটাই দায়ী যে কি না কোন না কোন কারণে ( ৯০ ভাগ ক্ষেত্রেই ইহকালের অক্ষমতা পরকালে যৌন সম্ভোগের মাধ্যমে পুষিয়ে নেয়ার জন্য যে তীব্র লোভ )সে মিথ্যা কথা গুলো বিশ্বাস করে নিজের গোপন বাসনা চরিতার্থ করার জন্য প্রতারণা করেছে।
@অগ্নি,মন থেকে বিশ্বাস ঝেড়ে ফেলে দেয়া সবার জন্য সহজ হয়না। গ্রন্থে কি লেখা আছে সেটা ত অনেকেই পড়ে দেখেনা। গ্রন্থ পড়ে লোকে দুর্বোধ্য ভাষায়। বেশিরভাগ মানুষই হুইন্না বা উত্তরাধিকারী বিশ্বাসী। তারা অনুসরণ বা অনুকরণ করে। তেমন একটা দোষ তাদেরকে দেয়া যায়না।
@তামান্না ঝুমু,
ভালো লাগল আবার কষ্টও পেলাম। আমার একটা জানা ঘটনা (অন্যের মুখে) বলি।সিলেটে এম.সি কলেজে (যতদুর মনে পড়ে) এক শিক্ষক ধর্মান্তরিত হয়েছিলেন। এরপর ঊনাকে কেউ ভুলে ভট্টাচার্য বাবু বললেই ঊনি নাকি ইষৎ অভিমানে ভুল শুধরে দিতেন। আর এ নামে ডাকতে নিষেধ করতেন। এ নিয়ে আড্ডায় অনেকদিন হাসাহাসি করেছি। আসলে, আমার মনে হয়..এ অবস্হায় ধর্মান্তরিত লোকগুলো একটা অবসেশনে ভোগেন সে সাথে একটা কমপ্লেকসও কাজ করে। না পারে আগের সংস্কৃতি ভুলতে, না পারে নতুন কে মনে প্রাণে মেনে নিতে। এর ফলে দারুণ ক্ষুব্ধ হয়ে সবার উপর একটা জিগাংসা চরিতার্থ করতে চায়। জানি না, এটা কোন মানসিক অসুস্হতা কিনা ? তবে সাইকোলজিক্যালি যে অসুস্হ হয়ে পড়ে, তাতে কোন সন্দেহ নেই।
@অসীম, ধর্মান্তরিতদের ক্ষেত্রে সাধারণত দেখা যায়, ওরা আগের ধর্মটিকে মনেপ্রাণে ঘৃণা করতে থাকে। আর নতুন ধর্মটির অনুশাসন বেশি বেশি পালন করে মানুষকে তাক লাগিয়ে দিতে চায়, নতুন সমাজে নিজের গ্রহণযোগ্যতা নিশ্চিত করতে বা বাড়াতে। আরো আগে কেন এই পথে আসেনি বা এই ধর্মে কেন জন্মেনি সেজন্য দুঃখ, ক্ষোভ ও পাপবোধ ত আছেই। তাই তাদের আচরণে বেশি বাড়াবাড়ি থাকে। ধন্যবাদ।
@অসীম, সাইকোলজিক্যালি অসুস্থতা আর মানসিক অসুস্থতার মধ্যে পার্থক্য কি ? দুইটা একই জিনিস । তোমার স্যারের যেটা হয়েছে, সেটা মানসিক অসুস্থতা নয় । এটা মানসিক সমস্যা । আর ” এ নিয়া আড্ডায় অনেক হাসাহাসি করেছি ” এ কথা বলতে তোমার লজ্জা করল না ! shame on u. সে তো অভিমানবশত ভুল শুধরে দিত, জিঘাংসা চরিতার্থের সাথে এর সম্পর্ক নাই । ওল্টাপাল্টা কথা বল কেন ?
আমাদের স্কুল সমূহে নাস্তিক পরিবারের ছেলে মেয়েদের জন্য ধর্ম বিষয়ের পরিবর্তে বিকল্প কোন বিষয় নাই। ফলে আমাদের ছেলে মেয়েদের অত্যান্ত অনিচ্ছা ও মানসিক যন্ত্রণা নিয়ে ধর্ম বিষয় পড়তে বাধ্য হতে হয়। শীঘ্র এর কোন প্রতিকার আপনাদের জানা আছে কি? এ ছাড়াও আমাদের ছেলে মেয়েদের স্কুলে আরো কিছু বরম্বণা সহ্য করতে হয়। আমার মেয়ে এখন দশম শ্রেণীতে পড়ে। ও ছোটবেলা থেকেই প্রচুর বাইরের বই পড়ে। অস্টম শ্রেণী থেকে সে ‘মুক্তমনার’ নিয়মিত পাঠক। তখন থেকেই সে ধর্ম বিষয়ে বিভিন্ন প্রশ্ন করা শুরু করে। বিজ্ঞান ও ধর্মীয় বিষয়ের উপর পরাশুনা ও আলোচনার জন্য স্কুলে তার সহপাঠিদের নিয়ে একটি আলোচণা চক্রও গড়ে তোলে। বিজ্ঞানের শিক্ষকরা যখন বিজ্ঞানের সাথে ধর্মকে জড়ানোর চেস্টা করেন অথবা ধর্মের সাথে বিরোধ ঘটে এমন বিজ্ঞানকে বিশ্বাস করতে না করেন, তখন স্বভাবতই তারা শিক্ষকের সাথে বিতর্কে জড়িয়ে যেত। অবিভাবকরা যখন বিষয়টা জানতে পারে তখন কিছু কিছু অবিভাবকরা একজোট হয়ে আমার মেয়েকে বয়কটের জন্য জোড় লবিং করতে থাকে। কিন্তু তাদের সন্তানরা সহ ছাত্র ছাত্রীরা এর বিরোধীতা করলে সেই অবিভাবকেরা আপাতত কিছু করতে পারছেন না। এই অবস্থায় আমার কি করণীয় তা বুঝতে পারছি না। আমি কি আমার মেয়েকে আপোষ করতে বলব, নাকি সত্য জ্ঞানের পক্ষে সুদৃড় থাকতে বলব? নাকি আমরা যারা মুক্তমনা অবিভাবক রয়েছি তাদের কিছু করার আছে?
@বুনোগান,
আপনার মেয়েকে বলুন স্কুলে ধর্মীয় বিষয়ে বিরোধে না জড়াতে। শিক্ষরা যা বলেন আপাতত তা নীরবে সহ্য করতে।বুঝতেই পারছেন জান বাঁচানই ফরজ কাজ। :))
আরো কিছু বয়স বাড়লে না হয় এসব নিয়ে ভাবা যাবে।
@বুনোগান, এত কম বয়েসে যে আপনার মেয়ে মুক্তচিন্তা করতে পারছে এটা অনেক বড় ব্যাপার। সে প্রচুর পড়াশোনা করছে ও বন্ধু এবং শিক্ষকদের সাথে তা আলোচনা করতে চাইছে; এটা আরো বড় ব্যাপার। কে কিভাবে নিচ্ছে বা সে দিনেদিনে একা হয়ে পড়ছে সেটা মোটেই চিন্তার বিষয় নয়। তার পরিবারের সাপোর্ট ত আছে। সাধারণত পরিবার থেকেই ত প্রধান বাধা আসে। প্রথাবিরোধীরা সব সময় একাই হয়ে থাকেন। ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর, আরজআলি মাতুব্বর, হুমায়ূন আজাদ প্রমূখ অনেকটা একা ছিলেন। ওকে অনুপ্রাণীত ও উৎসাহিত করতে থাকুন। জ্ঞান-বিজ্ঞানের কথা নিজের ভেতরে রেখে দিলে তাতে কারুর উপকার নেই। জন মানুষের কাছে তা প্রকাশ করতেই হয়, বাজে প্রথার বিরুদ্ধে ঘুরে দাঁড়াতেই হয়। আর আমাদের শিক্ষাব্যবস্থার মথা কী বলব! আপনার দুঃসাহসী কন্যার জন্য রইল :guru:
আপনি মোটেই ওর জন্য দুশ্চিন্তা করবেন না। ও তো আপনার গর্ব।
জটিল লিখেছেন। এমন ধর্মের বারাবারি দেখতে দেখতে ধর্মই আমার থেকে উবে গেছে। আর লেখাটির জন্য (Y)
স্যার এর জন্য :-Y :guli:
@সোহাগ, ধন্যবাদ আপনাকে পড়ার জন্য।
প্রথমত আপনাকে ধন্যবাদ আপনার জীবনের কিছু কথাগুলো শেয়ার করার জন্য । আমি শুধু এটা বুঝতে পারছি যে এইটা লিখতেও আপনার অনেক কষ্ট হয়েছে । আমাদের জীবনে অনেক ঘটনাই থাকে যা হয়ত অনেক দেরীতে বুঝতে পারি।
তবে স্কুল টার নাম জানতে ইচ্ছা করতেছে। আর এইটা বাংলাদেশের কোন জায়গা । :-s :-s :-s
আমাদের স্কুলে অনেক ধার্মিক শিক্ষক ছিলেন, কিন্তু কোনদিনই এমন পরিস্থিতির সম্মুখিন কেই হয় নাই। 🙁 🙁 🙁
আবারো ধন্যবাদ আপনার লিখার জন্য । (F) (F) (F) (F) (F) (F) (F) (F)
@অর্নিবান, ধার্মিক শিক্ষক আমাদের ইস্কুলেও আরো ছিলেন। তবে খালেদ স্যারই ছিলেন একমাত্র ধর্মান্তরিত। নিষ্ঠাবান ধার্মিক হিসেবে তিনি নিজেকে দৃষ্টান্তে পরিণত করেছিলেন।
নতুন মুসলমান গরুর মাংস একটু বেশিই খায়!
@সুষুপ্ত পাঠক,হুঁ, আগে যেটা খাওয়া হয়নি সেটা সুদ্ধ পুষিয়ে নিতে চায়।
আমাদের স্কুলে একজন হুজুর স্যার ছিলেন. উনি ধর্ম পরাতেন. আমাদের ক্লাসে ১২৪ জন ছেলের মধ্যে মাত্র ২ জন হিন্দু ছিলাম. তাই আমাদের ধর্ম ক্লাস হত না. ইসলাম ধর্ম ক্লাসে এসে উনি আমাকে উল্টো পাল্টা কথা বলতেন. বলত এখনো সময় আছে ইসলাম ধর্ম গ্রহন কর. আমি ধর্ম সম্পর্কে এত কিছু জানতাম না. ক্লাস ৪ এ বিদায় হজ নামে একটা প্রবন্ধ ছিল. সেখানে লেখা ছিল ধর্ম নিয়ে বাড়াবাড়ি করো না. একদিন উনাকে বললাম. আপনাদের নবী ত বলেছেন ধর্ম নয়ে বাড়াবাড়ি করো না. আপনি ত আপনাদের নবীর কথা মানেন না আপনার আবার ধর্ম কি. তারপর এর কথা সহজেই অনুমেয়. কি মার য়ে ঐ দিন খেয়েছি এখন ও ভুলি নাই. তারপর থেকে উনার ক্লাসে আর বসিনি. প্রধান শিক্ষককে বলে ঐ ক্লাস না করার অনুমতি নিয়ে নিয়েছিলাম.
আমাদের দেশে এমন অবস্থা প্রায় স্খানে আছে. এদের কি শেখানোর জন্য স্কুলে শিক্ষককতা দেয়া হয় আমি এখনো বুঝি না.
ধন্যবাদ আপু এত কুতসিত একটা সমস্যা এত সুন্দর করে তুলে ধরার জন্য.
@HuminityLover,শুধু ধর্ম বলে কথা নয়, আমাদের দেশের অনেক শিক্ষক ছিলেন যাদের প্রধান কাজ ছিল ছেলেমেয়েদের টিটিকারি করা ও ধোলাই দেয়া। এ ছাড়া ওনাদের ভাত হজম হতনা।
আসলে কিছুই বলার নাই
লেখাটার জন্য একগুচ্ছ (F)
@শান্ত, আপনাকেও ধন্যবাদ। (F)
এর জন্য দায়ী মোহাম্মক দ্বীনবৃক্ষ, দ্বীনরত্ন, দ্বীনাম্ব্রধি, দ্বীন-চূড়ামনি ও তার যন্তর মন্তর ধর্মের মস্তিষ্ক প্রক্ষালক!
@থাবা, হা হা
এই পান্ডা, গুন্ডা, ভন্ড, মাতাল সে নিজে দায়ী। এখন সে কোথায় আছে সেই কথা কন। এতো মার খেলেন তার লুঙ্গী/না ধুতি ধরে টান মারতে পারলেন না, অন্তত তার মুসলমানী চেক করার জন্যে?
@আকাশ মালিক,
আসলে ধর্মীয় মাতলামি যারাই করে তাদের কাউকেই আমার ব্যক্তিগতভাবে দায়ী মনে হয়না। ধর্মও দায়ী না। কারণ ধর্ম ত কোনো জড় বা জীবন্ত বস্তু না। দায়ী মনে হয় যে কোনো ধর্মের প্রবর্তককে। বেশিরভাগ মানুষই কোনো না কোনো বিশ্বাসের অনুসারী পরিবারে জন্মে। জন্মসূত্রে পাওয়া ধর্ম পরিত্যাগ করা সবার জন্য সহজ হয়না। অনেকেই কোনো কিছু আঁকড়ে ধরে বাঁচতে চায়। মৃত্যু ভয় ত আছেই।
স্যার এখন কোথায় আছেন আমি নিজেও জানিনা। তখন লোকমুখে শুনেছিলাম তিনি পরিপূর্ণ মুছলমান হয়েছিলেন। মানে তিনি খৎনাও করিয়েছিলেন।:razz:
@তামান্না ঝুমু,
একমত!
যখনই কোন মানুষ “বিশ্বাসের দাস” হয় (তা যে কোন কারনেই হোক) তখন সে আর Rational আচরন করতে পারে না। বিশ্বাস মানুষের স্বাভাবিক “বিচার বিবেচনা ও চিন্তা-শক্তিকে” অবশ করে দেয়। কিন্তূ তার বিশ্বাসের উৎস সে নয়। তার বিশ্বাসের উৎস হলো তার চারি পাশের পরিপার্শ্বিকতা: তার পরিবার ও সমাজ। সুতরাং তার বর্তমান অবস্থানের জন্যে তকে এককভাবে কোন ভাবেই দায়ী করা যায় না। He is the “victim” of his society and his surroundings!
একই ভাবে “এরাও” তাদের পরিপার্শ্বিকতার শিকার। তারাও তো সমাজের বাহিরের কেউ নয়। They were also a “Victim”.
আপনার স্কুল জীবনের ঘটনা আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য ধন্যবাদ। বরাবরের মতই লেখাটি খুব সুন্দর।(F) (F) (F)
@গোলাপ, আপনার সাথে একমত
তবে আমার মনে হয় যেকোনো ধর্মপ্রবর্তক তার সময়ের সমাজকে আরো বেশি অন্ধকারাচ্ছন্ন করে রাখার দৈববাণী ছড়িয়েছে এবং তা ঐশীবাণী হিসেবে দীর্ঘস্থায়ী বা চিরস্থায়ী হয়ে মানবসমাজের ও মননের ক্ষতিই করছে। তাদের উদ্দেশ্য মহৎ ছিল বলে ত মনে হয়না!
আমারও ভাল লাগছে স্কুলজীবনের কিছু স্মৃতি সকলের সাথে শেয়ার করতে পেরে। ধন্যবাদ।
@মুক্তমনা এডমিন, লেখাটি শেয়ার করতে পারছিনা…
@সাগর,
এটা ফেসবুকের শেয়ার অপশনে সমস্যার কারণে হচ্ছে। সম্ভবতঃ ফসেবুক পুরাতন শেয়ার অপশনের বদলে ‘লাইক’ অপশনে স্থানান্তরিত করছে। শেয়ার অপ্সহন না কাজ করলে আমরাও সেটাতে চলে যাব শিগগীরই। তবে লেখাটির নীচে যে লেখাটি ফেসবুকে শেয়ার করুন নামে যে অপশনটি আছে আপাতত সেটির সাহায্য নিতে পারেন।
লেখাটি এত মজার করে লিখেছেন খুব ভাল লাগল আর শেষের প্রশ্নটি লেখাটির সুন্দর সমাপ্তি টেনেছে।ধন্যবাদ। (W) (F)
@সাগর, আপনাকেও অনেক ধন্যবাদ পড়ার জন্য। (F)