:: হাইপেশিয়া :: রুকসানা/আলেকজান্ডার দ্যা গ্রেট :: অ্যাডা :: তসলিমা নাসরিন :: হুমায়ুন আজাদ :: দালাইলামা :: সুরের রাণী মমতাজ ::
“এক পায়ে নূপুর তোমার অন্য পা খালি, এক পাশে সাগর আর এক পাশে বালি”- বেশ কিছু সময় ধরে বাংলার মানুষের মুখে মুখে ফেরে এই গান। আপনি আগের লাইনটি পড়ে, যদি এই দ্বিতীয় লাইনে চলে আসেন এবং এ-পর্যন্ত আপনার কাছে যদি একটুও খটকা লেগে না-থাকে, সে-ক্ষেত্রে আমার প্রশ্ন থাকলো, কারা ‘বাংলার মানুষ’? প্রশ্ন থাকলো, খেটে খাওয়া সাধারণ মানুষ -যারা বাংলার সংখ্যাগরিষ্ঠ জনসাধারণ, কি দাম আছে তাদের কাছে এই এক নূপুরওয়ালা পায়ের? মানুষ যখন প্রাপ্তবয়স্ক হয়ে যায়, তখন ভুলে যায় তার শিশুকালের কথা; যখন ফাইনাল ইয়ারে পড়ে, তখন ভুলে যায় ফার্স্ট ইয়ারের কথা; যখন মাটির থেকে দূরে চলে যায়, তখন ভুলে যায় মাটির কাছের মানুষের কথা, মাটির মানুষের কথা। সমস্ত ইন্ডাস্ট্রি, সমস্ত সংস্কৃতাঙ্গণ, সমস্ত মিডিয়া যখন মত্ত আধুনিক সব শ্রোতার অত্যাধুনিক চাহিদা মেটাতে, ঠিক তখনটাতে বাংলার সাধারণ মানুষের চিন্তা-চেতনা, আবেগ-অনুভূতি, চাওয়া-পাওয়াকে সুরের জগতে বাস্তবায়িত করতে নিয়োজিত হয়েছেন কণ্ঠশিল্পী মমতাজ, ভক্তদের কাছে যিনি পরিচিত ‘মমতাজ বুবু’ নামে।
কল্পনার কাব্যিক ঝংকার নয়, ফ্ল্যাট-অ্যাপার্টমেন্ট এর জানু-জানু, ডার্লিং-ডার্লিং খেলা নয়, তার গানে উঠে এসেছে সাধারণ জবীনের প্রেম-পিরিতি, সাথে সাথে উঠে এসেছে অভিযোগ-অনুযোগ, ছল-চাতুরী। অপ্রকাশিত সব বাস্তব সত্য ফুটে উঠেছে গানের কথা হয়ে। নীচের দেয়া গানের কথাগুলো শুধু একটি গান নয়, সাথে সাথে জীবনের প্রতিধ্বণিও-
‘ভাড়া কইরা স্যুট পইরা আমার বাড়ী আইসা / প্রতিদিনই চা খাইয়া যায় কাসেম আলী কাইশা / আমার বাপের কানের কাছে করে প্যান্প্যান্ / এত সুন্দর মাইয়্যার লগে আমায় বিয়া দেন / সে-তো ডেঞ্জারম্যান, সে-তো ডেঞ্জারম্যান / চায় সে আমার বাড়ী-গাড়ী-টিভি-এসি-ফ্যান / সে-তো ডেঞ্জারম্যান, সে-তো ডেঞ্জারম্যান / সিস্টেম করে সবখানেতে সাজে জেন্টেলম্যান।’
মমতাজের অপরিশীলিত উচ্চারণে বলা বেশ কিছু ইংরেজী শব্দের ব্যবহারে নির্মিত ডেঞ্জারম্যান গানটির মিউজিক ভিডিও আছে এখানে-
ভিডিওঃ ডেঞ্জারম্যান গানের মিউজিক ভিডিও
বিশ্ববিদ্যালয়ে থাকাকালীন সময়ে একবার কোনো একটা রাজনৈতিক দলের আমন্ত্রণে প্রায় নামকরা সব ব্যান্ড একেকদিন একেক দল ক্যাম্পাসে গান করে যাচ্ছেন। সবার প্রোগ্রামে স্টুডেন্ট বা শ্রোতা কম বেশি হলো। কিন্তু, যে-দিন মমতাজের প্রোগ্রাম হলো, হলগুলি সব খালি হয়ে গেলো। অনুষ্ঠানস্থলে তিল ধারণের জায়গাটুকুও থাকলো না। প্রাণ খুলে শ্রোতারা তাঁর গান শুনলেন, আনন্দ করলেন, নাচলেন, গাইলেন, চিৎকার করলেন। শুধু করলেন না একটা জিনিস, ‘সত্যটা’ স্বীকার করলেন না। ঘরে ফিরে বললেন-‘ধুর্ মমতাজের গান কোনো ভদ্রলোক শুনে।’ কিন্তু, কি আসে যায়, তাদের স্বীকার-অস্বীকারে, তাদের দেয়া স্বীকৃতির অভাবে মমতাজতো আর থেমে থাকেননি, এগিয়ে গেছেন সব প্রতিকূলতাকে পরাস্ত করে। আজ গাছতলা থেকে দশতলা, সবাই শুনেন মমতাজের গান, শুধু দ্ব্যার্থহীন স্বীকৃতিটুকু দেবার সততা দেখাতে ব্যর্থ হোন সেই সমস্ত ‘ভদ্দরনোকেরা’।
http://youtu.be/MN6nHr9ivC0
ভিডিওঃ লন্ডনে মমতাজ (লাইভ)
গানের কথা সাধারণ, উচ্চারণ অপরিশীলিত, তাহলে আর কি এমন বাকী থাকে, যেটা দিয়ে একজন শিল্পী এতটা উপরে উঠতে পারেন। হুম্, আর বাকী থাকে কণ্ঠ, বাকী থাকে সুর, বাকী থাকে মিউজিক। সুরের জাদু দিয়েই মমতাজ আজ বাংলাদেশের ‘সুরের রাণী’ খেতাবে ভূষিত। মমতাজের সুপারহিট ‘খায়রুন সুন্দরী’ গানের সুরের আদলে করা এই ডুয়েটেও ফুটে উঠেছে মমতাজের সেই তেজস্বী সুরেলা কণ্ঠ-
ভিডিওঃ মমতাজের ডুয়েট
মানিকগঞ্জের এক স্বল্পপরিচিত গ্রামে জন্ম নেয়া মমতাজ, বাবা ‘মধু বয়াতী’র কাছেই শৈশবে গান শিখেছেন, সাথে সাথে ‘মাতাল রাজ্জাক দেওয়ান’ নামের আরেকজন গায়ককে দিয়েছেন গুরুর মর্যাদা। বাবার সাথে সাথে ঘুরে ঘুরে মমতাজ গান শুনেছেন, কখনো কখনো অল্প-স্বল্প গেয়েছেনও। কিন্তু একটা সময় যখন বুঝতে পেরেছেন, এই গানের রাজ্যই তাকে বারে বারে ডাকছে, আপন করে নিতে চাইছে; তখন আর ফিরে আসতে পারেননি। গানকেই করে নিয়েছেন জীবনের ধ্যান-জ্ঞান, জীবনের উদ্দেশ্য।
**********************************************
অডিওঃ ভয়েস অব অ্যামেরিকায় মমতাজের সাক্ষাৎকার (ক্লিক এমপিথ্রি)
**********************************************
আজকের প্রতিষ্ঠিত মমতাজের ব্যক্তিগত জীবনের ঊনিশ-বিশ নিয়ে সমালোচকেরা প্রশ্ন তুলেন। বলেন, ‘আজকের যে মমতাজ তাকে শ্রোতারাই সে মমতাজ বানিয়েছেন’। ভাবখানা এমন যে, মমতাজকে এখন তাদের মনের মত করে চলতে হবে, এমনকি ব্যক্তিগত জীবনেও। অত্যন্ত হাস্যকর তাদের চিন্তা-ভাবনা। বাঙালি কখনো কাউকে সন্মান করে না, সন্মান করে একমাত্র বাধ্য হলে। কৌতুক আছে যে, ‘নরকের সব গেইটে দারোয়ান আছে, যাতে করে নরক থেকে পালিয়ে কেউ স্বর্গে যেতে না পারে। শুধুমাত্র, বাঙ্গালিদের জন্য নির্মিত নরকে কোনো দারোয়ান নেই। কারণ, বাঙালি কেউ নরক থেকে পালিয়ে স্বর্গে যেতে চাইলে, নিজেদের স্বগোত্রীয়রাই তাকে টেনে ধরে রাখে। এরা কারো ভালো সহ্য করতে পারে না, এমনকি সেটা নিজেদের কেউ হলেও।’ সম্পূর্ণ নিজ যোগ্যতায় প্রতিষ্ঠিত আজকের এই সফল মমতাজ। কেউ যদি ধারণা করে থাকেন যে, কোনো বিশেষ শ্রেণীর অনুকম্পায় তিনি সফলতার মুখ দেখেছেন, এতটা উপরে উঠেছেন, তাহলে সেটা হবে নিতান্তই এক ভুল ধারণা। বরং, মমতাজের জীবনের বাস্তবতা ছিলো সম্পূর্ণ উলটো।
দিনের পর দিন বিনা টাকায় অ্যালবামের জন্য কাজ করেছেন মমতাজ। একটা অ্যালবাম যখন সুপার হিট হলো, প্রযোজক যখন গুণতে লাগলো কাড়ি কাড়ি টাকা, তখন মমতাজকে মাত্র দুই হাজার টাকার প্রস্তাব করা হলো পরবর্তী অ্যালবামের কাজ করার জন্য। তাও অ্যালবাম যদি হিট না করে তাহলে এই দুইহাজার টাকাও ফেরত দিতে হবে। দ্বিধাগ্রস্ত মমতাজ শঙ্কিতচিত্তে করে গেছেন সে অ্যালবাম। নিজেকে তিনি চিনতেন-জানতেন, কিন্তু জানতেন কি-না জানি না, বহু যুগ আগে এক মহাপুরুষ বলে গিয়েছিলেন, অত্যন্ত সহজ কিন্তু জটিলের থেকেও জটিল একটি বাক্য- ‘যোগ্যতমের জয়’। আরো একবার সে বাক্যের সত্যতা প্রমাণ হবার মধ্য দিয়েই, মমতাজকে আর পিছনে তাকাতে হয়নি। এমনও সময় গেছে যখন দিনে দুইটা অ্যালবামের রেকর্ডও করেছেন মমতাজ। বর্তমানে মমতাজের অ্যালবামের ঈর্ষণীয় সংখ্যা প্রায় সাড়ে সাতশো।
http://youtu.be/4qLN7jrbqrM
ভিডিওঃ আধুনিক ইনস্ট্রুমেন্টের সাথে মমতাজের গান
বহুসংখ্যক অ্যালবামের সাথে সাথে মমতাজ অর্জন করে গেছেন বিপুল জনপ্রিয়তাও। তারই ধারাবাহিকতায় ২০০৯ সালে মনোনীত হোন সংসদ সদস্য। তাছাড়া, মমতাজ বাংলাদেশের একমাত্র শিল্পী যার জীবনের উপর ভিত্তি করে তৈরী হয় চলচ্চিত্র, আর সেই চলচ্চিত্রে শিল্পী নিজেই অভিনয় করেন। অন্যদিকে, বাংলাদেশে অনুষ্ঠিত ক্রিকেট বিশ্বকাপ ২০১১ এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে রুনা-সাবিনার সাথে যে আরেকজন শিল্পী গান গাইবার বিরল সুযোগ ও সন্মান পেয়েছিলেন, তিনিও সেই মমতাজই।
http://youtu.be/DY5j3nML2fk
ভিডিওঃ ক্রিকেট বিশ্বকাপের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে মমতাজ
http://youtu.be/jGyk5Vb9JxY
ভিডিওঃ ক্রিকেটার আশরাফুলের উইকেট এবং মমতাজের গান
মমতাজ শুধু যে সাধারণ মানুষের জন্য গানই করেছেন তা নয়, সাথে সাথে সাধারণ মানুষের কাছে থাকা সামাজিক দায়বদ্ধতার কথাও ভুলে যাননি তিঁনি। একদিন টাকার অভাবে বাবার চোখের অপারেশান করাতে পারেননি, যার ফলে বাবা ‘মধু বয়াতী’ অকালেই অন্ধ হয়ে যান। সেই অপ্রাপ্তি থেকেই পরবর্তীতে মমতাজ নিজ গ্রাম ও জেলা শহরে প্রতিষ্ঠা করেন দুই দুটি চক্ষু ও শিশু হাসপাতাল। এছাড়া, তিনি ‘মমতাজ ফাউন্ডেশান’-এর মাধ্যমে সহায়তা প্রদান করে যাচ্ছেন বিভিন্নধরণের শিক্ষামূলক এবং সামাজিক কর্মকাণ্ডে।
http://youtu.be/-CSbDev_gPA
ভিডিওঃ সকল মহলে প্রশংসিত ‘মনপুরা’ ছবির জন্য গাওয়া মমতাজের একটি গান
ভিডিওঃ ‘আমি কারো হলে তোমার কেন জ্বলে’ -পর্দায় মমতাজের আরেকটি প্রাণবন্ত উপস্থাপনা
সচেতনতার কথা যদি বলতে হয়, বাংলাদেশের কয়জন কণ্ঠশিল্পী তাদের ওয়েবসাইট পরিচালনা করেন আমার জানা নেই; তবে মমতাজের কিন্তু ঠিকই রয়েছে অত্যন্ত চমৎকার এবং কার্যকর একটি ওয়েবসাইট, যেটা তার সচেতন মানসিকতার আরেকটি উজ্জ্বল, অনুকরণীয় দৃষ্টান্ত।
**************
মমতাজের ওয়েবসাইট
**************
সবশেষে মমতাজের কণ্ঠে হাসন রাজার জনপ্রিয় গান ‘লোকে বলে, ও বলেরে, ঘর বাড়ি বালা(ভালা) না আমার’ দিয়ে শেষ করছি। শুভকামনা থাকলো তিনি নিজের মত করে নিজের বৈশিষ্ট্য বজায় রেখে এগিয়ে যাবেন আর সামনে, বাংলা গানকে তুলে ধরবেন দেশ-বিদেশের অগণিত শ্রোতার কাছে।
http://youtu.be/xVKFhegZIks
ভিডিওঃ মমতাজের কণ্ঠে হাসন রাজার গান
মইনুল রাজু (ওয়েবসাইট)
[email protected]
ধন্যবাদ মইনুল নাচে গানে ভরপুর একটা জীবন্ত পোস্টের জন্য।
একজন একবার বলেছিলেন বিশ্বকাপের ওপেনিং সেরেমনিতে মমতাজ কে না রেখে আর্টসেল কে রাখলে ভাল হত।আমি নিজে ওনার একজন ভক্ত।আর সাধারন মানুষের জীবন গানের মাঝে তুলে ধরা চাট্টিখানি কথা না।ওনার গান বেচে থাকুক আরও অনেকদিন।জয়তু মমতাজ আপা।
@সেপ্টেম্বর অন যশোর রোড,
একজন নয়, অনেকেই আসলে মমতাজ কে বাদ দিয়ে অন্য অনেককে রাখার বযাপারে মত দিতে পারেন। কিন্তু, সেক্ষেত্রে তারা শুধু নিজেদের পছন্দকে গুরুত্ব দিতেন। আপনার সাথে সাথে মুক্তমনাতে আরো অনেককে দেখলাম মমতাজের গান শুনেন বা তাঁর গানের ভক্ত। আসলে সত্যিকারের গান এত শক্তিশালী যে, সেটা আপনা থেকেই নিজের শ্রোতা-ভক্ত তৈরী করে নেয়। ধন্যবাদ আপনার মন্তব্যের জন্য। 🙂
পোস্টের জন্য অনেক ধন্যবাদ।
কেননা, মমতাজের গান- বিশেষ করে তাঁর অসাধারণ কন্ঠ আমার দারুন প্রিয়।
তবে- এটাও ঠিক মমতাজের যেসমস্ত গানের লিংক আপনি এখানে দিয়েছেন, অর্থাৎ মমতাজের জনপ্রিয় গানগুলো আমার পছন্দের তালিকায় রাখি না।
তবে যারা “বুকটা ফাইটা যায়”, “নান্টু ঘটক”, “পোলা তো নয় আশি তোলা ..” – প্রভৃতি গান দিয়ে মমতাজকে বিচার করেন এবং নাক সিঁটকান- তাদের জন্য কিছু গান দিচ্ছি:
১। প্রথমেই মাটির ময়নার বাহাস: “যদি বেহেশতে যাইতে চাও গো” গানটা- (এই গান দিয়াই মমতাজরে চেনা বলা যায়):
httpv://www.youtube.com/watch?v=OQu1rxsuYE8&feature=related
২। মাটির ময়নারই আরেকটি গান: “পাখিটা বন্দী আছে” :
httpv://www.youtube.com/watch?v=DaxWf3kmPgU&feature=related
৩। মনপুরার “আগে যদি জানতাম” : (খেয়াল কইরেন- গলার স্কেল, মানে রেঞ্জ- উঠা-নামা এবং তার উপর অসাধারণ কন্ট্রোল, ফোক/বাউল গানের জন্য যেইটা অপরিহার্য):
httpv://www.youtube.com/watch?v=AU3Dm5pQmqY&feature=related
৪। মুশকিল হইলো- নেটে আসল মমতাজের গানগুলো পাইতেছি না: এইখানকার এই হাসন রাজার গানটার চাইতেও আরো সুন্দর ভার্সন আছে (এখানকার ক্যাটকেটে ইন্স্ট্রুমেন্ট গানটা নষ্ট করছে):
httpv://www.youtube.com/watch?v=xVKFhegZIks&feature=related
====>>> মমতাজকে কোন এক টিভি চ্যানেল মাস কয়েক আগে লাইভ প্রোগ্রামে এনেছিল- মন্ত্রমুগ্ধের মত রাত ৩ টা/ ৪ টা পর্যন্ত শুনেছিলাম। সবকটি গানই ছিল- ফোক/বাউল/মারিফতি ঘরানার গান; সিলেট-মুন্সীগঞ্জ-শরীয়তপুর-সুনামগঞ্জ-ময়মনসিং প্রভৃতি বিভিন্ন অঞ্চলের বয়াতি-বাউলদের গান। অনেক বাউল ফোন করছিলেন- ফাঁকে ফাঁকে মমতাজ সেই সব কবিগান/ পালাগানের আসরের স্মৃতি তুলে ধরছিলেন- অসাধারণ একটা অনুষ্ঠান ছিল। তার জনপ্রিয় গানগুলোর অনেক রিকোয়েস্ট আসছিল- তিনি রিকোয়েস্ট রাখেননি- এমনকি ঐ অনুষ্ঠানের স্পন্সর কোম্পানির এমডি ফোন করে “নান্টু ঘটক” গানের রিকোয়েস্ট করেছিলেন (উপস্থাপিকাও অনুরোধ করেছিলেন- ইনি স্পন্সর কোম্পানির এমডি- ছোট করে নান্টু ঘটক দুলাইন শুনিয়ে দেন)- কিন্তু সেদিন মমতাজও ঐসব গান গাইতে গাইতে এমনই ভাবের জগতে গিয়েছিলেন যে, সবিনয়ে জানিয়েছিলেন- অন্য সময়ে এসব জনপ্রিয় গান অবশ্যই করবেন- তবে আজকের এই পরিবেশে এই গানগুলো ঠিক যায় না …।
@নাস্তিকের ধর্মকথা,
আপনার দেয়া গানগুলোর মধ্যে শেষের দুইটা মূল লেখায় ছিলো। অন্য গানগুলিও অবশ্য আমি শুনেছি। কিন্তু লেখার সময় আসলে জনপ্রিয় গান নয়, তুলে ধরতে চাইছিলাম ওর কণ্ঠের বৈচিত্র। আপনার দেয়া লিঙ্কগুলো সে বৈচিত্রকে আরো সমৃদ্ধ করলো।
আমার লাইভ প্রোগ্রামের বর্ণনা পড়েই ভালো লাগছে। আমার মনে হয় মমতাজ একজন জাত শিল্পী। আরো একজন বিবিসিতে দেয়া মমতাজের সাক্ষাৎকার শুনে খুব মুগ্ধ হয়েছেন বললেন। আমি নিজেও তাঁর কিছু ইন্টারভিউ শুনেছি। সবচেয়ে ভালো লাগে তাঁর কনফিডেন্স। উনি যেটা বলতে চান সেটা খুব নির্ভেজালভাবে বলে ফেলেন। কেমন যেন একটা আলাদা রকমের পার্সোনালিটি আছে উনার।
ধন্যবাদ আপনার অনুভূতি শেয়ার করার জন্য। 🙂
@মইনুল রাজু,
আপনার প্রতিটা লেখায় একটা নতুনত্ব থাকে। এই লেখাও তার ব্যাতিক্রম নয়।
@আফরোজা আলম,
অনেক ধন্যবাদ আপনাকে। ভালো লাগলো আপনার মন্তব্যটা পড়ে। 🙂
পোস্টের জন্য অনেক ধন্যবাদ।
কেননা, মমতাজের গান- বিশেষ করে তাঁর অসাধারণ কন্ঠ আমার দারুন প্রিয়।
তবে- এটাও ঠিক মমতাজের যেসমস্ত গানের লিংক আপনি এখানে দিয়েছেন, অর্থাৎ মমতাজের জনপ্রিয় গানগুলো আমার পছন্দের তালিকায় রাখি না।
তবে যারা “বুকটা ফাইটা যায়”, “নান্টু ঘটক”, “পোলা তো নয় আশি তোলা ..” – প্রভৃতি গান দিয়ে মমতাজকে বিচার করেন এবং নাক সিঁটকান- তাদের জন্য কিছু গান দিচ্ছি:
১। প্রথমেই মাটির ময়নার বাহাস: “যদি বেহেশতে যাইতে চাও গো” গানটা- (এই গান দিয়াই মমতাজরে চেনা বলা যায়):
httpv://www.youtube.com/watch?v=OQu1rxsuYE8&feature=related
২। মাটির ময়নারই আরেকটি গান: “পাখিটা বন্দী আছে” :
http://www.youtube.com/watch?v=DaxWf3kmPgU&feature=related
৩। মনপুরার “আগে যদি জানতাম” : (খেয়াল কইরেন- গলার স্কেল, মানে রেঞ্জ- উঠা-নামা এবং তার উপর অসাধারণ কন্ট্রোল, ফোক/বাউল গানের জন্য যেইটা অপরিহার্য):
httpv://www.youtube.com/watch?v=AU3Dm5pQmqY&feature=related
৪। মুশকিল হইলো- নেটে আসল মমতাজের গানগুলো পাইতেছি না: এইখানকার এই হাসন রাজার গানটার চাইতেও আরো সুন্দর ভার্সন আছে (এখানকার ক্যাটকেটে ইন্স্ট্রুমেন্ট গানটা নষ্ট করছে):
httpv://www.youtube.com/watch?v=xVKFhegZIks&feature=related
====>>> মমতাজকে কোন এক টিভি চ্যানেল মাস কয়েক আগে লাইভ প্রোগ্রামে এনেছিল- মন্ত্রমুগ্ধের মত রাত ৩ টা/ ৪ টা পর্যন্ত শুনেছিলাম। সবকটি গানই ছিল- ফোক/বাউল/মারিফতি ঘরানার গান; সিলেট-মুন্সীগঞ্জ-শরীয়তপুর-সুনামগঞ্জ-ময়মনসিং প্রভৃতি বিভিন্ন অঞ্চলের বয়াতি-বাউলদের গান। অনেক বাউল ফোন করছিলেন- ফাঁকে ফাঁকে মমতাজ সেই সব কবিগান/ পালাগানের আসরের স্মৃতি তুলে ধরছিলেন- অসাধারণ একটা অনুষ্ঠান ছিল। তার জনপ্রিয় গানগুলোর অনেক রিকোয়েস্ট আসছিল- তিনি রিকোয়েস্ট রাখেননি- এমনকি ঐ অনুষ্ঠানের স্পন্সর কোম্পানির এমডি ফোন করে “নান্টু ঘটক” গানের রিকোয়েস্ট করেছিলেন (উপস্থাপিকাও অনুরোধ করেছিলেন- ইনি স্পন্সর কোম্পানির এমডি- ছোট করে নান্টু ঘটক দুলাইন শুনিয়ে দেন)- কিন্তু সেদিন মমতাজও ঐসব গান গাইতে গাইতে এমনই ভাবের জগতে গিয়েছিলেন যে, সবিনয়ে জানিয়েছিলেন- অন্য সময়ে এসব জনপ্রিয় গান অবশ্যই করবেন- তবে আজকের এই পরিবেশে এই গানগুলো ঠিক যায় না …।
@নাস্তিকের ধর্মকথা,
খুবই ভাল লাগছে মমতাজকে নিয়ে এই কথাগুলো শুনতে। একজন শিল্পীকে তার সবচেয়ে জনপ্রিয় শিল্পকর্ম দিয়ে বিচার করা যায় না।
খুব গর্ববোধ হছে মমতাজকে নিয়ে।
ভালো লাগা, না লাগা ব্যক্তিগত ব্যাপার। তবে আমার কাছে মমতাজের গান গার্বেজ মনে হয়। এখানে এত লোকের মমতাজের গান ভালো লাগে দেখে মিথ্যে বলবনা আমি ব্যাপক বিস্মিত। আমাকে নাকউচু ভাবার দরকার নাই, আমি বাউল গানের ভক্ত না হলেও বেশ কিছু বাউল গান আমার ভালো লাগে। কিন্তু মমতাজের গান শুনলে আমার জাষ্ট বিরক্ত লাগে। 🙁
@সাইফুল ইসলাম,
আপনার প্রথম দুই লাইনে কোনো সমস্যাই নেই, সেটা একদমই ব্যক্তিগত ব্যাপার ঠিকই বলেছেন। কিন্তু, সমস্যাটা হচ্ছে তৃতীয় লাইনে। অন্য লোকের ভালো লাগা দেখে বিস্মিত হচ্ছেন কেন? সেটা তাদের ব্যাক্তিগত ব্যাপার নয় কি? বিস্মিত হবার কারণ কি আপনার সাথে তাদের পছন্দ মিলছে না সেটা? আর বাউল গানের ভক্ত বা ভক্ত-না দিয়ে কে নাক উঁচু নীচু নির্ধারণ করা হয় নাকি? আপনার মন্তব্য দেখে আমি জাস্ট কনফিউজড্।
@মইনুল রাজু,
না না। একদমই সাধারন দৃষ্টিকোণ থেকে বললাম আর কী। :))
অনেকেই করে। এই জন্যই বলা। ধরেন মমতাজের গান ভালো না লাগলে অনেকেই মনে করতে পারে যে আমি হয়ত বাউল গান পছন্দ করি না। সেই জন্য বললাম যে বাউল গান আমার অপছন্দের না। 🙂
গান ত এমনই। ভোরে গজল,দুপুরে পপ,সন্ধায় রবীন্দ্র ফাকে মাঝে মধ্যে মমতাজ সব গানই ত ভালো তবে কিনা মুডের ওপর।যার যখন যা ভালো লাগে তাই শুনে। বাচ্চাদের দিয়ে বড়দের দুই একটা গান গাওয়ানো হলে কি আর এমন হয়। এটা ত আর নিয়মিত কিছু না। আমাদের দেশে যখন প্রথম আকাশ সংস্কৃতি আসে অনেক কে দেখেছি শঙ্কিত হতে,সব গেলো, তেমন কিছু ত গেছে বলে মনে হয় নাই। টিভি তে দেখা যায় ঢাকার কথ্য ভাষায় কথা বলে, আমরা যারা ঢাকায় মানুষ হয়েছি তারা খিচুড়ি মার্কা একটা ভাষায় কথা বলি ,এই ভাষাটা নিয়ে অনেকের আপত্তি ,ইচ্ছাকৃত ভাবে ভাষা বিকৃত করা হচ্ছে। কিন্তু যত নাটক হয় তাঁর মধ্যে হয়ত ২৫% নাটকে ৫ % চরিত্র এভাবে কথা বলে। এটা ত অস্বাভাবিক কিছু না, রিয়েলিটি শো এর পরযায়ে পরে। আমরা ব্যক্তি জীবনে যা তা এড়িয়ে যাওয়া ত ভণ্ডামি। অনেক বড় শিল্পিকে বলতে শুনেছি , আহা এখন আর আব্বাস উদ্দিন এর সুর পাই না, সেই ভাটিয়ালি,মুরশেদি লালন এর সুর পাই না। আরে আব্বাস উদ্দিন এর সুর পেতে হলে ত তাকে কবর থেকে ঊঠে আসতে হবে। যায় দিন খারাপ আসে দিন ভাল(নাকি উলটা বললাম !!)। এখনকার প্রজন্ম অনেক ভালো গায়।অনেক প্রাইভেট চ্যানেল হওয়ায় এখন নাটকে সব ধরনের চেহারা সুরুত চান্স পায়। আগে শুধু সুন্দর মুখের ই কদর ছিল। এখন মানুষের কাছে রিয়েলিটির কদর বেড়েছে। এটা ভাল , খারাপ কিছু না। বম্বের সব নায়ক/নায়িকা রা ত এম,পি হবার নেংটি দৌড় এ শামিল।মমতাজ কেন নয়?।যা অনিবার্য , সুন্দর ,প্রত্যাশিত তা মেনে নেয়া ই প্রগতিশীলতা। হাই স্কুলে পরার সময় সুবীর নন্দির গান আমার খুব ভালো লাগত , আমি লুকিয়ে রেকর্ড করে শুন্তাম,পাছে বন্ধুরা হাসে।এখন ত মনে হয় সুবীর নন্দী কে কেউ আর লুকিয়ে শুনে না। মমতাজকেও কিছুদিন পরে আর কেও লুকিয়ে শুনবে না। মানুষ কম বেশী হিপক্রাট (আমি বাদ যাব কেন?) 😀
@সপ্তক,
চমৎকার একটা বিশ্লেষণ দিয়েছেন। (F)
বাচ্চারা আগে আগে প্রেম-ভালোবাসা জাতীয় জিনিস বুঝে ফেললে বড়দের ভাগে একটু কম পড়ে যাবে না, এই জন্যই একটু আপত্তি করা আর কি। :))
(Y)
@সপ্তক,
এই লেখার সেরা মন্তব্য, সেরা বিশ্লেষণ- (Y) :clap :clap :clap :clap :clap :clap :clap
@আকাশ মালিক,
উনি যে পারস্পেকটিভ্ থেকে ভিন্ন একটা স্টাইলে ব্যাখ্যাটা করেছেন, সে গোটা ব্যাপারটাই ভাল লেগেছে, তাই আমি আর স্পেসিক কোনো লাইন উল্লেখ করলাম না। খুব স্বাভাবিকভাবেই কিছুই লাইন নিয়ে অশেষ বিতর্ক করা যাবে, কিন্তু উনার মন্তব্যে যুক্তির চেয়ে দৃষ্টিকোণটা বেশি গুরুত্বপূর্ণ।
@মইনুল রাজু,
সেটাই। আর আমার মনে হয়, অনেক সময় মানুষের আবেগ অনুভুতির উপর যুক্তির প্রভাব খাটেনা। সপ্তক একটা কথা বলেছেন-
এই হিপক্রাসির কথাটাই আমি বলেছি। আমি একসময় সেই ম্যারিয়া যুগে জিপ্সি ও তাদের গান খুব ঘৃণা করতাম। মনে করতাম এরা প্রভুর সেই কোরানে বর্ণীত ঘৃণীত বানর। এদের মিউজিক বা গান তো জঙ্গলের নিশীত রাতের দলবদ্ধ শেয়ালের আর্তচিৎকার ছাড়া আর কিছু নয়। অবশ্য তখনও আমার ডানে বামে দুই স্কন্ধে মুসলমান ও বাঙ্গালি নামের দুই কিরামান কাতিবিন ফেরেস্তা অধিষ্টিত ছিলেন। পরে কাছে ভীড়ে দেখলাম এরা তথাকথিত শালীন পোষাকের ভদ্রলোকদের চেয়ে অনেক সরল সুন্দর মনের মানুষ।
এখানে আমি তাদের কথাই বলছি যারা গ্রাম থেকে শহরে এসে রাতারাতি গ্রামের জীবন ভুলে যায়। বাংলাদেশ থেকে ইংল্যান্ড এসে বাংলাদেশের জীবন ভুলে যায় বা ভুলার ভান করে। আমরা এদেরকে অন্যভাবেও প্রকাশ করি, যেমন অল্পবিদ্যা ভয়ংকর বা কম পানির মাছের বেশ পানিতে আগমণ। তারা এমনই ভান করে যে, বলতে চায় রবীন্দ্র, নজরুল সঙ্গীত, কাদেরি কিবরিয়া, বন্যা, মান্না দে, ভুপেন হাজারিকা, হেমন্ত, সুবীর নন্দীর গানের ক্যাসেট ঘরে রাখার মানেই শিক্ষিতের পরিচয়। সিলেটের আঞ্চলিক ভাষায় সুন্দর সুন্দর প্রচুর বিয়ের গান আছে। একটি বিয়ের ভি ডি ওতে কিছু গান ঢুকিয়েছিলাম, ভদ্রলোকেরা বলে আমি না কি সেকেলে। কথা হলো মানুষের পছন্দ অপছন্দ ব্যক্তিগত ব্যাপার, অন্যের পছন্দের প্রতি আমার ঘৃণা প্রকাশ করা ঠিক না।
অনেক গান তো হলো আমার পছন্দের শেষ একটা গান শুনাই। এই গানে আমি রবীন্দ্রনাথের সেই ভেঙ্গে মোর ঘরের চাবি নিয়ে যাবে কে আমারে গানের আকুতি শুনতে পাই।
httpv://www.youtube.com/watch?v=Y5d0hHhxZdM&feature=related
@আকাশ মালিক,
গানটাতো বেশ ডিফারেন্ট 🙂 ।
httpv://www.youtube.com/watch?v=-CSbDev_gPA&featur
মমতাজকে নিয় ব্যতিক্রমী লেখাটা ভাল লাগল!
আসলেই দেশের গ্রামে বাস করা ৭৫% মানুষদের কাছে মমতাজ ভীষণ জনপ্রিয়।
আমাদের মত ভদ্রলোকদের স্বীকৃতি তার না হলেও চলবে!
আর কে না জানে বাঙালী মুখে এক আর অন্তরে আর এক!
ইউটিউবে মমতাজের “আগে যদি জানতামরে বন্ধু” সত্যিই অপূর্ব!
@লাইজু নাহার,
লেখাতে আমি তাঁর বিভিন্ন ধরণের গান দেয়ার চেষ্টা করেছি। সিঙ্গেল, ডুয়েট, লাইভ, ফিউশান, হাছন রাজা। আমি বুঝাতে চাইছিলাম, যে ধরণের গানই হোক না কেন, মমতাজ গাইতে পারেন, মমতাজ একজন জাত শিল্পী।
আপনি মনপুরার গানটা নীচে দিয়েছেন। ধন্যবাদ। এই গানটা আমি আসলে মূল লেখায় যোগ করে দেব 🙂 । খুবই সুন্দর গানটা।
মইনুল ভাই, আপনার সাথে বরাবরই আমি নিজের চিন্তাভাবনার সাযুজ্য খুঁজে পাই! আপনার শিরোনামটি দেখে আমার মনে হয়েছিল, হয়তো বা এটা একটা বিদ্রূপাত্মক রচনা, যেটা তথাকথিত ভদ্র সমাজের ভদ্দরনোকদের হরহামেশাই করতে দেখি মমতাজকে নিয়ে। কিন্তু এ জায়গায় এসে বুঝতে পারি, আপনি সেই সমাজের বাইরেই অবস্থান করছেন! সত্যি বলতে কি, আমি নিজেও মমতাজের গান নিয়ে খুব একটা উৎসাহী ছিলাম না; কিন্তু টিভিতে মমতাজের একটি লাইভ প্রোগ্রাম দেখার পর থেকে আমি তার গান পছন্দ করতে শুরু করি। সবচেয়ে ভাল লাগছিল যখন গানের মাঝে বিরতি নিয়ে গানের ব্যাখ্যা করছিলেন, আবার কিছুক্ষণ বাদেই গানে ফিরে যাচ্ছিলেন সুরের কোন ব্যত্যয় না ঘটিয়ে। মমতাজের অনেক ফরমায়েশি অশ্লীল গান রয়েছে বটে, কিন্তু সে অনেক আগের কাহিনি। এখন বরং ‘আগে যদি জানতাম রে বন্ধু, তুমি হইবা পর’-এর মত কালজয়ী গান উপহার দিচ্ছেন।
আপনার ভাষায় যিনি ”সুরের রাণী”, তার কি আদৌ দরকার ছিল এমন ‘নিয়োগ-কৃত’ সংসদ সদস্য হওয়ার?
@কাজি মামুন,
উনার ইন্টারভিউতে আমার সবচেয়ে ভাল লাগে, খুব সাবলীলভাবে নিজের দর্শনের ব্যাখ্যা। কে কি ভাবলো তার কোনো পরোয়া নেই। আর, বিবিসি, ভয়েস অব অ্যামেরিকাতে তিঁনি এত কনফিডেন্টলি সাক্ষাৎকার দেন, শুনতেই ভালো লাগে।
একটা কথা বলি, যে সংসদ সদস্যদের নিয়ে আমরা এত কথা বলি, তাঁদের দেখলে আমরা শ্রদ্ধায় উঠে দাঁড়িয়ে যাই; কোনো লেখক, কবি-সাহিত্যিক, অন্যায়ের বিরূদ্ধে প্রতিবাদকারী দেখলে উঠে দাঁড়াই না। কেন? কারণ, চেতন হোক আর অবচেতন মনেই হোক, আমরা পাওয়ারকে, ক্ষমতাকে ভয় পাই। কি ক্ষমতা আছে বাংলাদেশের সবচেয়ে নামী কন্ঠশিল্পীর, একজন সংসদ সদস্যের ক্ষমতার তুলনায়? নীতিবাক্যের অনেক মূল্য আছে, কিন্তু বাস্তবের পৃথিবী একেবারেই অন্যপৃথিবী। সেখানে, মমতাজের জন্য ‘নিয়োগ-কৃত’ হলেও, সংসদ সদস্য হওয়াটাই কি স্বাভাবিক নয়? তিনি সংসদ সদস্য বলেই হয়তো তার পরিচালিত দুইটি হাসপাতাল থেকে মাসে মাসে লক্ষ-কোটি টাকা চাঁদা দিতে হবে না।
রাজু, ক্ষমা চেয়েইএকটা ভিন্ন প্রসঙ্গে জানতে চাইছি……। যখন দেশে ধর্মীয় উত্তেজনা বাড়ছে ঠিক এসময়েই এ ধরণের খোলামেলা গানেরও অনুরাগী বাড়ছে, এটাকে আপনি কি ভাবে ব্যাখ্যা করবেন?
@কেয়া রোজারিও,
আপনাকে এখানে দেখে ভালো লাগছে। 🙂
আমার কাছে ব্যাখ্যাটা খুব সহজ। আপনার প্রশ্নের থেকে শব্দ ধার করেই উত্তরটা দিচ্ছি। একটা হচ্ছে ‘উত্তেজনা’, অন্যটা ‘অনুরাগ’। আরো একটু বাড়িয়ে বললে, প্রথমটার কারণ হচ্ছে ‘অস্বাভাবিক প্ররোচনা’, দ্বিতীয়টা হচ্ছে জীবের ‘স্বাভাবিক প্রবণতা’। এখন কোনটা কতটুকু ভালো বা খারাপ, উচিৎ বা অনুচিত, সেই বিচারের ভার আপনার।
ধন্যবাদ মন্তব্যের জন্য। 🙂
@মইনুল রাজু,
আমার চারপাশে কিছু রুচিশীল, প্রগতিশীল উচ্চশিক্ষিত, সুশীল মানুষের আবির্ভাব হয়েছে, আমি যখন আউল-বাউল, লালন, দেহতত্ত্ব, মুর্শিদী, ভক্তিমূলক বা আঞ্চলিক গান শুনি তারা আমার দিকে ট্যারা চোখে তাকায়, নাক সিটকায়। যেন আমি প্রগতির সোপান থেকে ধপাস করে কয়েক সিড়ি নীচে নেমে গেলাম। শালীনতা, অশালীনতা, রুচি-অরুচি এ সবই তো আপেক্ষিক ব্যাপার। কাল যা অশালীন ছিল আজ তা শালীন, কাল যা ছিল বর্জনীয় আজ তা গ্রহনীয় তার প্রমাণ আমদের সামনেই বিদ্যমান। চাহিদা এবং সময়ই বলে দিবে কে বা কী টিকে থাকবে আর কে কালের গর্ভে বিলীন হয়ে যাবে। বিবর্তন কারো আহাজারিতে থেমে থাকবেনা। আমার কথা হলো, যে গান মানুষের হৃদয়ের কথা বলে, মনের টান ব্যক্ত করে আমি সেই গান শুনি ভাল পাই, হউক সে গান যে কোন ভাষায় যে কোন সুরে। মমতাজের বেশীরভাগ গানের মধ্যে আমি খুঁজে পাই এক প্রতিবাদী, বিপ্লবী, জাগরণের সুর। তেমনি একটি গান এখানে তুলে দিলাম- গানের কলি-
আমি কারো হলে তোমার কেন জ্বলে
আমার কেমন লেগেছিল, তুমি যখন অন্যের হয়েছিলে?
httpv://www.youtube.com/watch?v=mnpSzE1XqIw
@আকাশ মালিক,
এ বোধটা খুব মানুষের মধ্যেই আছে। শুধু ধর্ম বিশ্বাস নয়, শালীনতা, অশালীনতা, রুচি-অরুচি সবকিছুতেই মানুষ চাইয় সবাই তার মত করে ভাবুক, তার মত করে করুক, চলুক, শুনুক। ব্যাপারটা খুব পীড়াদায়ক। আপনার দেয়া গানটা মূল লেখায় যোগ করে দিচ্ছি। ধন্যবাদ। 🙂
মমতাজের গান যে আমার ব্যাক্তিগত ভাবে খুব ভাল লাগে তা না কিন্তু তাই বলে শিল্পের ক্ষেত্রে সবার জন্য কোন স্ট্যান্ডার্ড বেঁধে দেয়াটাকে ঘৃণা করি। তার গান গ্রামে বেশি জনপ্রিয় বলে তাকে ছোট করে দেখতে হবে বা তাচ্ছিল্য করতে হবে এমন যারা ভাবেন তারা নেহাত কূপমণ্ডূক। কারো ভাল লাগবে রবীন্দ্রসঙ্গীত, কারো রক মিউজিক, কারো মমতাজের গান। এটাই বৈচিত্র্য এবং স্বাভাবিকতার প্রতীক। সুন্দর লেখাটার জন্য শুভেচ্ছা। (F) (F)
@আলোকের অভিযাত্রী,
আমিও সেটাই বলতে চেয়েছি। মমতাজের গান খারাপ লাগতেই পারে, কিন্তু তাই বলে যাদের ভালো লাগে তারা জাত গেলো, এমন ভাবার কোনো কারণ দেখি না। তাছাড়া, আরেকটা জিনইস খারাপ লাগে, মমতাজের একটা গান ভালো লাগার পরও সেটা স্বীকার করতে না চাওয়াটা।
ধন্যবাদ আপনাকে। 🙂
অনেক সময় যখন বাসায় মনযোগ দিয়ে কাজ করি, হঠাৎ হঠাৎ নিজের অজান্তে “খায়রুন লোওওওওওও” বলে একটা সুরে বেসুরে চিৎকার করে উঠি! এতদিন তা করে নিজের কাছেই খুব লজ্জিত হতাম। ভাবতাম কি গান গাই!! আপনার এই লেখার বদৌলতে আজ থেকে খায়রুনকে নিয়ে আর লজ্জিত হব না।
@নির্মিতব্য,
ধন্যবাদ মন্তব্যের জন্য।
এই বাচ্চাটাকে দেখেন, কি ভাবে গেয়ে চলছে ‘খায়রুন লোওওও…’
httpv://www.youtube.com/watch?v=PEqHFFvoNXc
@মইনুল রাজু,
এ ধরণের অনুষ্ঠানে বাচ্চাদের দিয়ে যেভাবে বড়দের প্রেমের গান গাওয়ানো হয় সেটা আমার খুব অপছন্দের। আমার মনে হয় এত কম বয়সে এভাবে বাচ্চাদের মিডিয়ায় ছেড়ে দেয়া,বিখ্যাত বানিয়ে দেয়া,জোর করে বড় করে ফেলা বাচ্চাগুলোর জন্য ক্ষতিকর,তাদের স্বাভাবিক বিকাশ ক্ষতি হয়,বাচ্চাদেরকে বাচ্চাদের মতই থাকতে দেয়া উচিত,মিডিয়ায় গান গেতে বা অভিনয় করতেই পারে কিন্তু সেটা তাদের বয়সের ধরণ অনুযায়ী হতে হবে। এটা অবশ্য আমার ব্যক্তিগত মত,কারো দ্বিমত থাকলে জানাতে পারেন।
@শাফায়েত,
বড়দের রুচিশীল প্রেমের গান হলেও সমস্যা ছিলো না, এগুলোতে দেখি সবেমাত্র মায়ের পেট থেকে বের হয়েছে, এমন বাচ্চাদের দিয়ে অশ্লীল গান গাওয়ানো হয়। ইমরান এবং আশা নামের এই দুই বাচ্চা না বুঝেই হেলেদুলে অশ্লীল গান গাইছে এবং আমাদের শিল্পের জগতের তিন দিকপাল সেই গান শুনে যেভাবে হাসিতে গড়িয়ে পড়ছে্ন, তা দেখে গা গুলিয়ে গিয়েছিলো আমার। আমরা কি জাতিগতভাবে রুচিহীনতার রাস্তার শেষপ্রান্তে এসে দাঁড়িয়েছি?
httpv://www.youtube.com/watch?v=fpK-wEJG_FU
@ফরিদ আহমেদ,
এসব ইন্ডিয়াতে করা হয়। ইন্ডিয়ায় বাচ্চাদের যেকোন গান বা নাচের প্রতিযোগিতায় দেখতে পাই যে, ওদের মাধ্যমে অশ্লীল কথার গান গাওয়ানো হচ্ছে ও অশ্লীল কথায় গানের সাথে অশ্লীলভাবে অঙ্গভঙ্গি করে নাচানো হচ্ছে। তাদের প্রতিভা দেখে বিচারক , দর্শক ও গর্বিত বাবামা অভিভূত হয়ে যাচ্ছে। কিন্তু অবুঝ বাচ্চারা যদি তাদের কাছে এসব কথা ও ভঙ্গির অর্থ জিজ্ঞেস করে তখন তারা কি জবাব দেবেন? আমার মনে হয় বাংলাদেশে এসব ইন্ডিয়ার অনুকরণে করা হয়। ছোটবেলায় টিভিতে বাচ্চাদের অনুষ্ঠান দেখতে পেতাম যেখানে ওরা ওদের বয়েস অনুযায়ী কথার গান গাইত। এখন আর দেখতে পাইনা।
@তামান্না ঝুমু,
মিডিয়ার ব্যাপক প্রভাব আছে এই সব ব্যাপারে। একটা গোটা দেশের কালচারই পরিবর্তন করে ফেলতে পারে মিডিয়া। কিন্তু দুঃখের ব্যাপার হচ্ছে, ওরা উচিৎ-অনুচিৎএর ধার ধারে না, যেখান থেকে টাকা আসবে সেখান দিয়েই চলবে, সেটা ইন্ডিয়াতেই হোক আর যেখানেই হোক। ইন্ডিয়ান চ্যানেলের অবস্থা দেখেছি দিন দিন আরো করুণ হচ্ছে।
@মইনুল রাজু,
এই করুণ অবস্থার শিকার কোমলমতি শিশুদের করা হচ্ছে কেন, বাবামায়েরা এতে উৎসাহী ও গর্বিত কেন সেটাই হচ্ছে দুঃখ এবং প্রশ্ন। পুরনোদিনের অসাধারণ সুন্দর কথা, সুর,ছন্দ এবং পরিবেশনায় গাওয়া গানগুলোকে রিমিক্স করে কী সাংঘাতিকভাবে পরিবেশন করা হচ্ছে, কোন কোন দর্শক তা পছন্দও করছে! দেখে দীর্ঘশ্বাস ফেলি আর লজ্জায়-ঘৃণায় চোখ ফিরিয়ে নিই।
@তামান্না ঝুমু,
এতটুকু ছাড় দেয়ার বিনিময়ে ছেলে-মেয়েকে যদি টিভি প্রোগ্রামে উপস্থাপন করা যায়, সত্যি কথা হচ্ছে, অনেক শিক্ষিত বাবা-মা জেনে-শুনেও এই কাজটা করবেন। এমনকি ছেলে-মেয়েরাও খুব উৎসাহ বোধ করবে।
পুরোনো দিনের গান রিমিক্স বা রিমেক করার কিছু ভালো দিকও আছে। আধুনিক মিউজিক দিয়ে সেটার শ্রোতা তৈরী করা যায়, তাহলে কি সমস্যা? যারা পুরোনো দিনেরটা পছন্দ করেন, তারা সেটা শুনবেন। আমি রবীন্দ্র সঙ্গীতেরও রিমেক/রিমিক্স করার পক্ষে। তবে যারা পক্ষে না, তাদেরও নিজস্ব যৌক্তিক যুক্তি আছে। যে যেভাবে খুশি করুক না। তাতে খুব বেশি কি ক্ষতি হয়ে যায়?
আসলে আমি বা আমরা নিজেরাও কনফিউজড্, যদিও আপনাকে প্রশ্ন করছি, কিন্তু নিজেও উত্তর খুঁজার চেষ্টা করছি।
@ফরিদ আহমেদ,
ফরিদ ভাই, একটু গভীরে গিয়ে চিন্তা করে দেখলে বুঝা যায়, এটা আসলে বর্বর একটা উপায়ে প্রাপ্তবয়স্কদের মনোরঞ্জনের চেষ্টা।
আর দিকপালদের দোষ দিয়ে কি লাভ বলেন, তারা তাদের জব করছেন। তাদেরতো আয় রোজগার করে চলতে হবে। এই তিনজন না আসলে, অন্য তিনজন আসতেন। আমরা এগুলো দেখি বলেই উনারা করেন।
@মইনুল রাজু,
দিকপালদের কেনো দোষ দিবোনা? তারা এত বড় বড়(!) গায়ক,সমাজের প্রতি কোনো দায়িত্ব নেই তাদের? গায়ক,লেখক,শিল্পীরা সচেতন হলে সমাজে অনেক পরিবর্তন আনতে পারেন, জন লেনন,বব মার্লিরা সেটার প্রমাণ। আবার টাকা খেয়ে মরিস বুকাইলির মত আবোলতাবোল লিখে মানুষের মাথাও নষ্ট করতে পারে তারা। পাবলিক ফিগারদের সাধারণ মানুষ ফলো করে,তাই তারা যখন দায়িত্বজ্ঞানহীনের মত কাজ করে সেটা ক্ষমা করা যায়না,এই কারণে খেলায় ড্রাগস নিলে সহজে কেও ছাড় পায়না। আর দর্শকদেরতো দোষ আছেই,ভালো-মন্দ না বুঝে যা গেলানো হয় তাই গিলতে থাকি আমরা।
@রামগড়ুড়ের ছানা,
আমি বলতে চাইছি, দিকপালদের দোষ আছে, কিন্তু তাদের সে-দোষ দেখিয়ে লাভ নেই। দিকপালদের দোষ দিয়ে কাজের কাজটা হবে না, দর্শকরা যতদিন যা গিলাবে তা গিলতেই থাকবে। কারণ, দিকপালের কখনো অভাব হবে না। এরা না রাজী হলে অন্য কেউ রাজী হবে।
@ফরিদ ভাই,
এ ধরণের কাজ ভারতে আরও বেশী হয়; এমনকি মুখে ভাল করে বোল ফোটেনি, এমন বাচ্চাদের দিয়ে গাওয়াতে শুনেছি, ”আমি কোলকাতার রসগোল্লা”। ঐ গানে বাপ্পি লাহিরির মত শিল্পীরা পর্যন্ত আনন্দে উদ্বেল ছিলেন!
তবে, বাচ্চাদের দিয়ে বড়দের গান গাওয়ানোর পিছনে একটি যুক্তিও রয়েছে: বাচ্চাদের গলাকে ছোট বেলা থেকেই সব ধরনের গানের উপযোগী করে তোলা। বাচ্চাদের গলা থাকে কাদা-মাটির মত। তাকে যেভাবে ইচ্ছা গড়ে তোলা যায়। এখন বাচ্চারা যদি ‘আমরা নতুন, আমরা কুঁড়ি’ এই ধরনের গান গেয়েই শুধু বড় হয়, তাহলে তখন তাদের গলায় কঠিন গান ঠিক বসতে চায় না। অন্যদিকে, যে বাচ্চাটা ছোট থেকেই কঠিন নজরুল সংগীত (যেমন; উচাটন মন ঘরে.. ) রপ্ত করেছে, সে কিন্তু একটু এগিয়েই থাকে। ঠিক একই কারণে ভারতের বাচ্চারা বাংলাদেশের বাচ্চাদের থেকে সামান্য এগিয়ে রয়েছে, যেটা দু’দেশের যৌথ সংগীত প্রতিযোগিতায় (সুর দরিয়া-এপার ওপার) বেশ ভাল করেই বোঝা গেছে! এমনকি ঐ অনুষ্ঠানের বাংলাদেশী বিচারক রেজওয়ানা চৌধুরী বন্যাও একই কথা বলেছেন!
@কাজি মামুন,
অন্যভাবে কিছু পয়েন্ট তুলে ধরলেন, বেশ ভালো লাগলো। এখন সে দৃষ্টিকোণ থেকেও চিন্তা করার একটা পরিস্থিতি তৈরী হলো।
@রামগড়ুড়ের ছানা,
নিঃসন্দেহে এটি উচিৎ নয়, বাচ্চাদেরকে বাচ্চাদের মত করেই থাকতে দেয়া উচিৎ। একটা জিনিস লক্ষ্য করে দেখলাম, এই সব প্রোগ্রামগুলোতে এসএমএস করে ভোট দেবার একটা ব্যাপার আছে। আর ভোট যেহেতু প্রাপ্তবয়স্করাই দেবে, সেহেতু তাদের পছন্দের গানই বাচ্চাদের দিয়ে গাওয়ানোর চেষ্টা করানো হচ্ছে। হয়তো প্রাপ্তবয়স্কদের জন্য করা সেই গানগুলোর সুর ভালো, কিন্তু তাই বলে বাচ্চাদের দিয়ে সেগুলো গাওয়ানো উচিৎ নয় কখনো। সহমত।
@মইনুল রাজু,
এই গানটা প্রাপ্ত বয়ষ্ক দুজন গায়ক গায়িকা গাইলে, সেটা চ্যানেল আই প্রচার করতো কি না, সে বিষয়ে যথেষ্ট সন্দেহ আছে আমার। কাজেই, শুধু প্রাপ্তবয়ষ্ক দর্শকদের উপর দোষ চাপিয়ে দেওয়া যায় না। রুচি বিকৃতি আর কুশিক্ষাই মনে হয় এর একমাত্র ব্যাখ্যা।
@ফরিদ আহমেদ,
দোষ প্রাপ্তবয়স্কতার নয়, প্রাপ্তবয়স্ক হওয়া মানেতো আর অপরাধ করা নয়।
অন্যদিকে, প্রাপ্তবয়স্ক কেউ গান গাইলে সেখানে প্রাত্যাশা আরো একটু বেড়ে যায়। হতে পারে সে প্রত্যাশা বিকৃত রুচি থেকে, অথবা অন্য কিছু। কিন্তু, বাচ্চাদের দিয়ে যখন গান গাওয়ানো হচ্ছে, তখন সুপারহিট গানগুলো নির্বাচন করা হচ্ছে, যেগুলো তাদের জন্য যথোপযুক্ত কি-না সেটা বিচার করা হচ্ছে না। রুচি বিকৃতির সাথে ইনস্টিঙ্কট ব্যাপারটাও কতটুকু জড়িত সেটাও ভেবে দেখার বিষয়।
@মইনুল রাজু,
এই গানটা কী সুপারহিট গান? বাচ্চাদের জন্য উপযোগী সুপারহিট গানের কি আকাল পড়েছে বাংলা গানের জগতে? একটা বাচ্চাকেওতো কাজলাদিদি বা বুলবুল পাখি ময়না টিয়ে গানগুলো গাইতে শুনলাম না
@ফরিদ আহমেদ,
ফরিদ ভাই, এই গানটা সুপার ডুপার হিট গান। অরিজিনাল গানটা এখানে-
httpv://www.youtube.com/watch?v=RbYGUGWLlS0
কাজলা দিদি বা বুলবুল পাখি ময়না টিয়ে গানগুলো গাইলে সেটা বাচ্চাদের জন্য পারফেক্ট হতো, কিন্তু আমি নিশ্চিত করে বলতে পারি তারা নেক্সট রাউন্ডে যেত না। কম্পিটিশানে রীতি-নীতির চিন্তা কে করে। যে উপায়ে হোক না, চ্যাম্পিয়ন হওয়াটাই মূল লক্ষ্য। নির্দিষ্ট করে নর্ম দাঁড় করানো খুব কঠিন হয়ে পড়ে। কিন্তু, এখন যে নর্ম চলছে সেটা গ্রহণযোগ্য নয় কোনোমতেই।
@মইনুল রাজু,
httpv://www.youtube.com/watch?v=Ppf-UA36ljE
ভাইয়া, ভিডিও এমবেড করেন কিভাবে? আমি পারিনা। টেস্ট কেস হিসাবে এইটা এমবেড করার চেষ্টা করলাম।
@নীল রোদ্দুর,
১।
এখানেতো করতে পেরেছেন। মন্তব্য করার সময় মুক্তমনার দেয়া নির্দেশনা অনুযায়ী “http://” এর বদলে “httpv://” লিখলেই আপনা-আপনিই হয়ে যায়। যেমন, আপনার উপরে দেয়া ভিডিওর লিঙ্ক “http://www.youtube.com/watch?v=Ppf-UA36ljE”। আর, মন্তব্যে এমবেড করার জন্য এই eলিঙ্কের সব ঠিক রেখে শুধু “http://” এর বদলে “httpv://” দিতে হবে
২। আর যদি মূল লেখায় ইউটিউব ভিডিও এমবেড করতে চান। তাহলে ইউটিউওবে যখন ভিডিওটা চালাবেন দেখবেন ভিডিওটার ঠিক নীচেই “like”, “add to” বাটনের পাশে “share” নামে একটা বাটন আছে।ওটাতে ক্লিক করলে এমবেড করার জন্য ইউটিউব আপনাকে একটা লিঙ্ক দেবে, ওটা সরাসরি এনে লেখায় বসিয়ে দেবেন। আর কিছুই করতে হবে না। যেমন, আপনার উপরে দেয়া ভিডিওর লিঙ্ক “http://www.youtube.com/watch?v=Ppf-UA36ljE”। আর, মূল লেখায় এমবেড করার জন্য ইউটিউব থেকে দেয়া লিঙ্ক “http://youtu.be/Ppf-UA36ljE”
৩। এটা হয়তো জানেন, তারপরও বলছি। যেকোনো পেইজ এ রাইট ক্লিক করলে “view page source” নামে অপশান আসবে। ওটাতে ক্লিক করলে, অনেক ইনফরমেশান দেখতে পাবেন, যেটা খুব হেল্পফুল। যদিও এমবেড করার জন্য এ-পদ্ধতি কাজে আসবেনা। অনেক সময় আমার ফন্ট সমস্যার জন্য অনেক শব্দ দেখি না, তখন আমি এ-পদ্ধতি প্রয়োগ করি।
@মইনুল রাজু, এখানে তো ভিডিও এমবেড হল, লেখার ভিতরেও কি এভাবেই করেছেন?
লেখা নিয়ে একটা বিশাল প্রশ্ন… মমতাজের গাওয়া গান যারা লিখেন, তারা অন্যদের জন্য গান কি লিখেন না? তাহলে, মমতাজের গানে যে ভাষা, রস থাকে, অন্যদেরটাই এগুলো নেই কেন? অন্য গায়কগায়িকার গানগুলোতে পরিশিলিত ভাষা আর মমতাজের জন্য আলাদা?
@নীল রোদ্দুর,
প্রথমত, মমতাজের জন্য যে কথার গান লিখা হয় সেটা তথাকথিত আধুনিকরা হয়তো গাইবেন না, জাত যাবে বলে। দ্বিতীয়ত, মমতাজের গীতিকাররা হয়তো অন্যদের জন্যও গান লেখেন, কিন্তু তারা এত কম ফোকাস পান যে আমরা এদেরকে চেনার, এরা কার জন্য গান লিখছেন সেটা জানার প্রয়োজনই মনে করি না। তৃতীয়ত, অপরিশীলিত কথার গান অন্যরাও করেন, কিন্তু মমতাজের সুর/কন্ঠের কাছে তারা হয়তো পেরে উঠছেন না। শরীফ উদ্দিন নামের একজন গায়ক আছেন, যেনি কিছুটা মমতাজের ধারায় গান করেন। একটু ফানি হলেও ইউটিউবে ‘বোরখা পরা মেয়ে পাগল করেছে’ বলে খুঁজে দেখেন, খুব শক্তিশালী গলা।
মমতাজের কন্ঠে গাওয়া আমার প্রিয় গানঃ ওরে ভাতিজার মামু, তোরে লইয়া উদাসী হইয়া হানিমুনে যামু। :))
@সৈকত চৌধুরী,
বিশাল মিস্ হয়ে গেসে, এটাতো কখনো শুনি নাই :)) ।
অন্য সবকিছুর মত আমার গানের রুচিও অপরিশীলিত, খুবই নিম্নমানের। আমি যে সব গান শুনি, সেগুলো ঠিক ভদ্র সমাজের পাতে তোলার মত নয়। বিষয়টা একটু লজ্জারই। তবে, এই লজ্জার বিষয়টা যাতে ফাঁস না হয়ে যায়, সে কারণে কিছু ভা্ন-ভনিতা করতে হয় আমাকে। আমি গান শুনি মূলত গাড়িতে। অন্য অনেক সিডির সাথে রবীন্দ্র সংগীতের একটা সিডিও রেখে দিয়েছি, বেকায়দা ধরনের বিশেষ পরিস্থিতি মোকাবেলায়।
আমার খুব ঘনিষ্ঠ একজন একবার আমার গাড়িতে উঠেছেন। তিনি অত্যন্ত, রুচিশীল, মার্জিত, শুচিস্নিগ্ধ, বিদুষী এবং বুদ্ধিমতী মহিলা। একটু দীর্ঘ পথের ভ্রমণ। কাজেই গান টান শোনা দরকার। তাঁকে মুগ্ধ করার জন্য আমার সেই এক কুমিরের ছানা রবীন্দ্র সংগীতের সিডিটা খোঁজা শুরু করেছি আমি। এই ভদ্রমহিলা আবার শ্যেনদৃষ্টিসম্পন্না। অন্য অনেক সিডির মধ্যে ঠিকই তাঁর বাজপাখির চোখ গিয়ে পড়েছে মমতাজের সিডিটার উপর। আমাকে বিব্রত এবং নাস্তানাবুদ করার প্রবল আগ্রহ থেকেই বিপুল হইচই করে তিনি বলেন যে, অন্য কোনো গান নয়, মমতাজের গানই শুনবেন। আমি যতই ওটাকে তাঁর দৃষ্টিসীমা থেকে সরাতে চাই, ততই তিনি বাচ্চা মেয়েদের মত হাততালি দিয়ে আবদার করেন যে, না ওটাই চালাতে হবে। প্রবল অনীচ্ছায় মুখটাকে কয়লার মত কালো করে সিডিটা প্লেয়ারে দিয়ে অন করি আমি। সেদিন বিধি আমার বিপক্ষে চলে গিয়েছেন পুরোপুরি। আমার দুর্দশাকে হাজারগুণে বাড়িয়ে দিয়ে মমতাজ তাঁর অননুকরনীয় কামকাতর কণ্ঠে গেয়ে উঠেন ইচ্ছা করে বন্ধু তোরে আচার বানাইয়া বয়ামে ভইরা চাইট্টা চাইট্টা খাই।
এই চাইট্টা চাইট্টা খাওয়ার কথা এখনও ভোলেন নি তিনি। সময় সুযোগ পেলেই বেশ রসিয়ে রসিয়ে মমতাজের সেই রসালো গানের কথা স্মরণ করিয়ে দেন আমাকে। 🙁
@ফরিদ আহমেদ,
ফরিদ ভাই, মুক্তমনার একটা শিশুও বুঝবে আপনি ইচ্ছা করেই এই গান ছেড়েছেন। শুধু বেচারী ভদ্রমহিলা চালটা বুঝতে পারেননি। :))
আপনি কি ‘লাল টমেটো’ গানটা শুনেছেন, সামনের দিনগুলোর জন্য এটা কালেকশানে রাখতে পারেন। :)) :))
@ফরিদ আহমেদ,
😀 ক্ষতি কি, একজন তার বন্ধুর কাছে এভাবে মনের আকুতি প্রকাশ করতেই পারে। আর আমারতো মনে হয় বন্ধুর প্রতি মনের দরদটা এই কয়েকটা শব্দে দারুন শুনাচ্ছে। মমতাজের এই গানটি শুনতে পেলে মন্দ হতোনা!
@ব্রাইট স্মাইল্,
ফরিদ ভাইয়ের যদি একটু দয়া হয়, গানের হেডিংটা কি সেটা জানলেও খুঁজে দেখা যেত। :))
@ মইনুল রাজু,
তাছাড়া, মমতাজ বাংলাদেশের একমাত্র শিল্পী যার জীবনের উপর ভিত্তি করে তৈরী হয় চলচ্চিত্র, আর সেই চলচ্চিত্রে শিল্পী নিজেই অভিনয় করেন
সম্ভবত রুনা লাইলার জীবনের উপর ভিত্তি করেও চলচ্চিত্র তৈরী হয়েছে, যেখানে তিনি নিজে অভিনয় করেছেন। ছবিটির নাম মনে হয় শিল্পী।
@হেলাল,
ছবিটির নাম শিল্পী-ই। আমার কয়েক মিনিট দেখার সুযোগও হয়েছিলো। কিন্তু, সেটা রুনা লায়লার জীবনের উপর কি-না সেটা নিয়ে আমার কনফিউশান আছে। তা না-হলে, শিল্পী ছবিটাও মমতাজকে নিয়ে নির্মিত ছবির একই কাতারে পড়বে।
ধন্যবাদ আপনাকে। 🙂