ফিজিক্সের সাবসিডিয়ারি ক্লাসে বসে রীতিমত ঝিমুচ্ছে শাহানা। বোরিং একটা ক্লাস। এমনিতেই ফিজিক্স তার পছন্দের বিষয় নয়, তার উপর ক্লাসে আজ ঢুকেছে অনেক পরে, বসেছে সবচেয়ে পেছনের দিককার কোনার একটা বেঞ্চে। বেঞ্চের পেছনে একটা খাড়া দেয়াল। ডানপাশেও তাই। ডানপাশের দেয়ালের খানিকটা আবার স্যাঁতস্যাঁতে – হালকা শ্যাওলা ধরা। গাঢ় সবুজ একটা রেখা উপর থেকে নেমে গেছে মাঝ দেয়াল অব্দি। বৃষ্টির সময় নির্ঘাত ছাদ আর আর দেয়াল চুইয়ে পানি পড়ে। এখন অবশ্য বৃষ্টি টিষ্টি কিছু নেই। খড়খড়া রোদ চারিদিকে, কিন্তু দেয়ালের দিকে চোখ গেলেই কেমন গা ঘিন ঘিনে গা গুলানো একটা ভাব আসছে শাহানার। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সবচেয়ে বাজে রুম গুলোর একটা নিশ্চয়। কী আর করা – সাবিসিডিয়ারি ক্লাসগুলোকে পাত্তা দেয় না কেউ, বেছে বেছে এই সমস্ত রুমগুলোতেই এইগুলো ক্লাস ফেলা হয়। আগেও ভেবেছে শাহানা ব্যাপারটা।
দেয়াল থেকে মন সরিয়ে সামনের দিকে নজর দিল সে। ক্লাসে লেকচার দিচ্ছেন তরুণ শিক্ষক তানভীর কুদ্দুস। ফিজিক্স ডিপার্টমেন্টের নতুন শিক্ষক তিনি। এক দেড় বছর হল মাত্র যোগ দিয়েছেন। কিন্তু শিক্ষক সুলভ ভারিক্কি ভাব একদমই আসেনি। চেহারা ছবি এমনিতে খারাপ নয়, কিন্তু কোথায় যেন একটা গেঁয়ো ভাব লুকিয়ে আছে, যেটা আবার তিনি প্রাণপণে ঢেকে রাখতে চান। কিন্তু ঢাকতে গিয়ে সেটাকে কায়দা করে আরো সামনে নিয়ে আসেন। সব সময়ই ‘ওখে’ বলে বাক্য শেষ করেন কুদ্দুস স্যার। ‘দিস ইজ হাউ ইট ওয়ার্ক্স, ওখে?’ ‘ইউ হ্যাভ টু আণ্ডারস্ট্যাণ্ড, ওখে?’ এর মধ্যে গোটা দশেক বার ‘ওখে’ ‘ওখে’ করে ফেলেছেন স্যার। ওখের চোটে শাহানার মাথা ঝিম্ ঝিম্ করা শুরু করেছে এর মধ্যেই।
লাল টকটকে একটা মাফলার পড়ে ক্লাস নিতে এসেছেন আজ কুদ্দুস স্যার। এই মাফলারটা মনে হয় স্যারের খুব প্রিয়। শীত নেই গ্রীষ্ম নেই – প্রায়ই এই মাফলার গলায় দিয়ে ক্লাসে চলে আসেন। আজও তাই করেছেন। মাফলারের একপ্রান্ত গলার সাথে প্যাঁচানো, আরেক প্রান্ত প্রায়ই ব্ল্যাকবোর্ডের সাথে লেগে লেগে যাচ্ছে। আর যখনই কুদ্দুস স্যার বোর্ডে কিছু লিখছেন, চকের গুড়া গিয়ে মাফলারে পড়ছে। মাফলারের নীচের দিকটার বড় একটা অংশ এর মধ্যেই বিঘৎ খানেক সাদা হয়ে গেছে। তাতে অবশ্য কুদ্দুস স্যারের কোন ভ্রুক্ষেপ নেই। একটু আত্মভোলা গোছের শিক্ষক তিনি। কাউকে পড়া টড়া জিজ্ঞাসা করেন না কখনোই। ক্লাসের ছেলে মেয়েরা বেশি গোলমাল করলে ‘আহ আস্তে, ওখে?’ বলে আবার পড়ানোতে মন দেন। কেউ কোন প্রশ্ন করলে খুব সংক্ষেপে সেটা অবশ্য বুঝিয়ে দেন তিনি। যত জটিল প্রশ্নই আসুক না কেন, কখনোই কুদ্দুস স্যারকে বিব্রত হতে দেখেনি শাহানা। এই একটা সময়েই কুদ্দুস স্যারকে কেন যেন দারুণ সার্প মনে হয় শাহানার। ছোট্ট সেই সময়গুলোতে গেঁয়ো আত্মভোলা মানুষটির ভিতরে খুঁজে পায় চৌকষ এক স্মার্ট মানুষকে।
আজ অবশ্য তেমন কিছুই ঘটছে না। মাফলারে চক মাখামাখি করে জটিল কিছু সমীকরণ লিখছেন কুদ্দুস স্যার। লোরেন্স- ফিটজেরাল্ড ট্রান্সফরমেশন থেকে লোরেন্স ফ্যাকটর বের করেছেন –
স্যার বলে চলেছেন, এগুলো নাকি স্পেশাল রিলেটিভিটি পড়ানোর সময় কাজে লাগবে। আইনস্টাইন তার রিলেটিভিটির থিওরিতে কী সব টাইম ডায়ালেশন না লেন্থ কন্ট্রাকশন ছাতা মাথা বের করতে এই লোরেন্স ট্রান্সফরমেশন কাজে লাগিয়েছেন। এগুলো কেন এতো ঘটা করে জানা দরকার শাহানা বুঝতে পারে না। ব্যবহারিক জীবনে এগুলো কি আদৌ কোন কাজে লাগে? লোরেন্স ট্রান্সফরমেশন দিয়ে টাইম ডায়ালেশন বের করা গেলেই বা কি, আর না গেলেই বা কি! শাহানার মাথা ঝিম্ ঝিম্ করা ভাব কী আর এতে কমবে? ক্লাসে কেউ এ নিয়ে কোন প্রশ্ন করেছে না। তাই কোন গোলমাল নেই। শাহানার ধারণা, তার মতোই কেউ আসলে কিছু বুঝতেই পারছে না। সবকিছু যাচ্ছে মাথার উপর দিয়ে। বিদ্ঘুটে দেখতে দীর্ঘ আর কদর্য সব সমীকরণ তার মাথাব্যাথা আর ঝিমুনি বাড়িয়ে দিয়েছে আরো। ঢুলতে ঢুলতে তার মাথা দেয়ালের শ্যাওলা ধরা জায়গাটাতে ঠোকাঠুকি লাগার উপক্রমও হল বার দুয়েক। গা গুলানো ভাবটা যাও বা চলে গিয়েছিল বলে মনে করেছিলো কিছুক্ষণ আগে, আবার ফিরে এল মনে হয়। নাহ্, সকালে একটা নাপা বা এস্প্রিন খেয়ে ক্লাসে আসা উচিৎ ছিলো।
এর মধ্যে শুরু হয়েছে এক মাছির উপদ্রপ। কোত্থেকে কালো রঙের ঢাউস একটা মাছি শাহানার নাকের সামনে ভন ভন শুরু করেছে বেশ কিছুক্ষণ ধরে। বার কয়েক হাত দিয়ে তাড়াতে চেষ্টা করেও লাভ হচ্ছে না। অলি বার বার ফিরে আসে, অলি বার বার ফিরে যায়। কী মুশকিল, কুৎসিৎ মাছির উপদ্রপের সময় রোমান্টিক গান মনে পড়ার কোন অর্থ হয়? ব্যাগ থেকে রুমাল বের করে শাহানা। রুমালের এক প্রান্ত গিট্টু পাকিয়ে ওৎ পেতে বসে থাকে আবার কখন মাছিটা নাকের সামনে আসবে। রুমালে গিট্টু দিয়ে ঠিক জায়গা মতো চটাস করে বাড়ি দেয়ার খেলাটা শাহানা একসময় শিখেছিলো তার ছোটভাই সোহাগের কাছ থেকে। বাঁদর সোহাগটা সুযোগ পেলেই রুমালে গিট্টু মেরে শাহানার হাতে বা পিঠে বসিয়ে দিত। মাঝে মধ্য ভীষণ ব্যাথা পেত শাহানা। পরক্ষণেই তাড়া করতো সোহাগকে – বাঁদর ছেলে থাপড়ে দাঁত ফেলে দিব। সোহাগ হি হি করে হেসে ভোঁ দৌড়। কাঁহাতক আর ছোটভাইয়ের বিৎলামি সহ্য করা যায়। এক সময় শাহানাও রুমাল গিট্টু লাগানো শিখে ফেলে। শিখে ফেলে কীভাবে গিট্টুকে পিঠের উপর চালান করে দেয়া যায়। সোহাগের পিঠে দু চারবার ঠিকমতো রুমাল চালানোর পর সোহাগটা ঠাণ্ডা হয়েছে। এখন আর রুমাল নিয়ে শাহানার সাথে তাফালিং করার সাহস দেখায় না। একটা সময় পরে শাহানা আবিস্কার করে এই রুমাল গিট্টুর প্রয়োগ কেবল সোহাগের পিঠেই নয়, আরো অনেক জায়গাতেই সার্থক ভাবে প্রয়োগ করা যায়। যেমন, গভীর রাতে পড়ার সময় টেবিল ল্যাম্পের সামনে কোন মথ, মাছি জাতীয় কোন ছোটখাট আপদ অযথাই ঘোরাঘুরি করলে – যাদের হাত দিয়ে ধরতে ঘেন্না হয় শাহানার, সহজেই রুমাল চালিয়ে দেয়ালের সাথে সেপ্টে দিতে পারে সে। পরে একটা টিস্যু এনে পরিস্কার করে ফেললেই হল।
আজকেও সেই একই কাজ করবে শাহানা, যেটা সে বাসায় বহুবার করে হাত পাকিয়ে ফেলেছে এর মধ্যেই। টেবিলের নীচে রুমালে গিট্টু পাকিয়ে রুমাল হাতে নিয়ে বসে আছে কখন মাছিটা দেয়ালের সামনে দিয়ে উড়ে যাবে আর চটাস করে রুমালের আঘাতে তার দেহটা লেপ্টে যাবে দেয়ালের স্যাঁতস্যাঁতে জায়গাটায়। ভাবতেই আনন্দ হচ্ছে শাহানার। এই প্রথম মনে হচ্ছে ঝিমুনি আর মাথা ব্যাথাটা একটু কমছে। তার নারীসুলভ মনের মধ্যে মাছি মারার এমন পৈশাচিক আক্রোশ আছে – কেউ তা বিশ্বাস করবে না!
কিন্তু হতচ্ছাড়া মাছিটা কেবল শাহানার নাকের সামনেই ঘোরাঘুরি করছে, দেয়ালের দিকে যাচ্ছে না মোটেই। নাকের সামনে থেকে তো আর মাছিকে রুমাল দিয়ে বাড়ি মারা যায় না। অবশ্য বাড়ি মারলে যে খুব একটা খারাপ হত তা নয়। শাহানার ঠিক সামনের বেঞ্চে বসে থাকা ছেলেটা মুখ হা করে বাইরের দিকে তাকিয়ে নাক খুটছে – এই কুৎসিৎ দৃশ্যটা থেকে মুক্তি পাওয়া যেত। রুমাল সহ মাছিটা ছেলেটার সাদা জামায় লেপ্টে গেল – আর ছেলেটা নাক খোঁটা বাদ দিয়ে ভরকে গিয়ে লাফিয়ে উঠলো, আর কুদ্দুস স্যার ‘আহ আস্তে, ওখে?’ বলে মৃদু ভর্ৎসনা করলেন – এই দৃশ্যপটগুলো ধারাবাহিকভাবে কল্পণা করে নিজের অজানতেই আমোদিত হয়ে উঠলো শাহানা।
ব্যাপারটা হয়তো ঘটিয়েই ফেলতো শাহানা, কিন্তু দেখল মাছিটা এর মধ্যেই দেয়ালের দিকে সরে গেছে বেশ খানিকটা। আহ্ ভাগ্য ভাল তাইলে সামনের ছেলেটার। ছেলেটাকে বাদ দিয়ে তীক্ষ্ণ চোখে মাছিটাকে লক্ষ্য করছে সে। নিজেকে শিকারী টিকটিকির মতোই মনে হচ্ছে তার। টেবিলের নীচে রাখা রুমাল সমেত হাতদুটো আস্তে আস্তে টেবিলের উপর উঠিয়ে আনছে। আরেকটু দেয়ালের দিকে এগোও বাপু, তখনই দেখবে পিঠে বিরাশি সিক্কার গিট্টুর চোট কেমন লাগে। মাছিটা দেয়ালের দিকে একটু একটু করে এগুচ্ছে আর শাহানার হাতও উঠে এসেছে, এবারই তাক করবে মাছিটাকে …
ঠিক তখনই একটা অদ্ভুত ব্যাপার ঘটল। মাছিটা দেয়ালের দিকে যেতে যেতে হঠাৎ করেই যেন হাওয়ায় মিলিয়ে গেল। এতক্ষণ ধরে মাছিটাকে নজর রাখছিলো তীক্ষ্ণ চোখে, হঠাৎ সেটা রীতিমত হাওয়া হয়ে গেল? এতো হবার নয়।
নাহ কপালটাই খারাপ, নিশ্চয় এক সেকেণ্ডের জন্য আনমনা হয়ে গিয়েছিলো শাহানা। এর মধ্যেই মাছি বাবাজি চম্পট দিয়েছে। ভাবতে ভাবতে সামনের দিকে মুখ ঘুরিয়ে নিতে গিয়েই দেখল মাছিটা আবার উদয় হয়েছে। সেই একই জায়গাতেই – যে জায়গা থেকে একটু আগেই হাওয়া হয়ে গিয়েছিলো বলে সে মনে করেছিলো। আবারো কিছুক্ষণ উড়াউড়ি করে আবারো হাওয়া। এবারো ঐ ঠিক একই জায়গা দিয়ে। মনে হচ্ছে মাছিটা উড়তে উড়তে ঐ জায়গাতে পৌঁছুলেই মাছিটা যেন হাওয়ায় মিলিয়ে যাচ্ছে। মনে হচ্ছে বাতাসের মধ্যে একটা গর্ত আছে – অদৃশ্য ম্যানহোল টাইপের কিছু। সেই অদৃশ্য ম্যানহোল দিয়ে মাছিটা গায়েব হয়ে যাচ্ছে বারে বারেই।
এ কী জুয়েল আইচের যাদু নাকি সাঁইবাবার হাত সাফাই? ঐ জায়গাটাতে আছেটা কী? ঠিক নাকের সামনেই তো খোলা জায়গাটা – বড় জোর বিঘৎ খানেক দূরে, এর পরেই দেয়ালের শুরু। ফাঁকা এই জায়গাতে তো এমন কিছু নেই যে কোন কিছু গায়েব হয়ে যেতে পারে। মাছিটা যে পথ দিয়ে উধাও হয়ে গ্যাছে, সেই পথে নিজের হাতটা বাড়িয়ে দেয় শাহানা। কই সব কিছু তো ঠিকই আছে! হাতটা আরো কিছুটা এগিয়ে নেয় শাহানা। এর পরে আরো কিছুটা। এভাবে হাতটা আরো কিছুদূর আগাতেই দেখে হাতের সামনের আঙ্গুলগুলো এখন আর দেখা যাচ্ছে না। হাতের সামনের দিকটা অদৃশ্য, কিন্তু পেছনের দিকটা দিব্যি দেখা যাচ্ছে।
‘অ্যা’! বিস্ময়ে প্রায় চেঁচিয়ে ওঠে শাহানা।
‘কী হল?’ কুদ্দুস স্যার পড়ানো বন্ধ করে তার দিকে তাকিয়ে আছেন।
‘কিছু না স্যার, সরি!’
বায়বীয় সেই গর্ত থেকে ততক্ষণে হাত বের করে নিয়েছে শাহানা। অপ্রস্তুত ভঙ্গিতে বসে আছে । সাড়া ক্লাসের দৃষ্টি তার দিকে।
‘হাতের কলমটা হঠাৎ করে মাটিতে পড়ে গিয়েছিলো, স্যার’!
‘ও’। কুদ্দুস স্যার তার দিকে কিছুক্ষণ তাকিয়ে থেকে আবার বোর্ডে লেখা শুরু করেন। লরেন্স সমীকরণ শেষ করে এখন ট্রান্সফর্মেশনের ম্যাট্রিক্স সমাধান করছেন বোর্ডে –
ছাত্র-ছাত্রীরাও আবার যে যার মত নিজের কাজে মন দিয়েছে। কেউ কুদ্দুস স্যারের দেখানো সমীকরণ টুকছে, কেউ বা ফুসুর ফুসুর করে পাশের বন্ধুর সাথে খোশগল্প করেছে। সামনের ছেলেটা যথারীতি বাইরে তাকিয়ে নাক খোঁটায় মন দিয়েছে।
শাহানা কিছুক্ষণ অপেক্ষা করে আবারো তার ডান হাতটা বাড়িয়ে দিলো। তবে খালি হাত নয়, এবারে কিন্তু হাতে সত্য সত্যই ধরা রয়েছে তার কলম। কলমটা নিয়ে শাহানা সোজা সেই বায়বীয় গর্ত বরাবর সুট করে প্রবেশ করিয়ে দিল প্রায় অর্ধেকটা। যা ভেবেছিলো তাই। কলমের সামনের দিকটা দেখা যাচ্ছে না। আর পেছনের দিকটা তো তার হাতেই ধরা। আস্তে আস্তে কলমের পুরোটুকু গর্তে প্রবেশ করিয়ে দেয় শাহানা। হাতের আঙ্গুলের পর থেকে ধরে থাকা কলমের আর কিছুই এখন দেখা যাচ্ছে না। এবারে হাতের আঙ্গুলগুলো আস্তে আস্তে মেলে কলমটা ছেড়ে দিলো শাহানা।
কলম মাটিতে পড়ার আওয়াজ শোনার জন্য প্রস্তুত হয়েছিল শাহানা। কুদ্দুস স্যারকে এবারে কী বলবে সেটাও মনে মনে চিন্তা করে ফেলেছিল সে। কিন্তু কোথাও কোন আওয়াজ হল না। কলম মাটিতে পড়েনি। একেবারে উধাও হয়ে গেছে হাওয়ায়। আসলেই কি উধাও হয়েছে, নাকি মেঝেতেই পড়ে আছে? মাথা নীচু করে বেঞ্চের নীচে যতদূর চোখ যায় আড়চোখে দেখে একপ্রস্থ খুঁজে নিল শাহানা। নেই।
চোখ বড় বড় হয়ে গেছে শাহানার। জলজ্যান্ত একটা কলম হাওয়া হয়ে গেল! এমন ঘটনা শাহানা তার জীবনে কখনোই দেখেনি, শোনেওনি। কলমটার জন্য হালকা মত একটু দুঃখভাব হচ্ছে যদিও। হাজার হোক, গত জন্মদিনে ছোট মামার উপহার দেয়া দামী পার্কার কলম ছিলো ওটা। কিন্তু কলম নিয়ে চিন্তা করার সময় নয় এটা। বরং যে ঘটনা তার চোখের সামনে ঘটলো তা নিয়ে রীতিমত শিহরিত শাহানা এখন।
মাছি মারার জন্য যে রুমালটা বের করেছিলো, সেটা টেবিলেই পড়ে আছে। সেটা নিয়েও একই কাজ করলো শাহানা। হাতে তুলে নিয়ে ঠিক সেই জায়গাটায় বাতাসের মধ্যে ছেড়ে দিল। সেটাও মাটিতে না পড়ে হারিয়ে গেল নিমেষে।
এ তো ভারী অবাক ব্যাপার। এগুলো হচ্ছেটা কী বাপু! জিনিসগুলো গায়েব হয়ে যাচ্ছে ক্যামন করে?
শাহানা আবারো হাত বাড়ায় সেই বায়বীয় গর্ত বরাবর। এবারে প্রথমে হাতের আঙ্গুল, ধীরে ধীরে হাতের কবজি, এর পর পুরো ডান হাতই ঢুকিয়ে দেয়। আসলেই হাতটা দেখা যাচ্ছে না।
এবারে আরেকটু সাহসী হয় শাহানা। বাম হাতটাও গলিয়ে দেয় শাহানা গর্ত বরাবর। দুটো হাতই এখন চোখের সামনে থেকে উধাও।নিজেকে হাওয়ার মধ্যে বাদুড়-ঝোলা হয়ে ঝুলে আছে বলে মনে হচ্ছে। ভাগ্যিস একেবারে পেছন দিকের কোনার একটা বেঞ্চে বসেছে শাহানা আজ। কেউ তাকে লক্ষ্যও করছে না। করলে বিপদ হত। দুই হাত বিহীন হয়ে ঝুলে থাকা এমন অদ্ভুত বিকলাঙ্গ শাহানাকে দেখে ভয় পেয়ে চ্যাচামেচি শুরু করে দিত ছেলেপিলেরা।
কিছুক্ষণ অপেক্ষা করে এবারে নিজের মাথাটাও গর্তে গলিয়ে দেয় শাহানা। কেমন শীতল একটা অনুভূতি, কিন্তু কিছুই দেখতে পাচ্ছে না ভিতরে। কেমন যেন কুয়াশা ঘেরা চারিদিক। একবার মা বাবার সাথে দিনাজপুরে গ্রামের বাড়িতে বেড়াতে গিয়েছিলো শীতকালে। সেখানে পৌঁছিয়েই এর পরদিন সূর্য ওঠার আগে অন্ধকার থাকতে থাকতেই বাড়ির বাইরে বেড়িয়ে পড়েছিলো সে। এতো ভোরে বাড়ির বাইরে উঠোনে পা রেখেই শাহানা থমকে গিয়েছিলো। হাল্কা আলো আঁধার আর কুয়াশা সবকিছু মিলিয়ে একটা পরাবাস্তব অনুভূতি যেন ঘিরে ধরেছিলো তাকে। এখনকার অনুভূতিটা অনেকটা সেদিনের দিনাজপুরের কুয়াশাচ্ছন্ন ভোরের মতোই অনেকটা। মাথাটা আরেকটু বেশি করে ঢোকানর সিদ্ধান্ত নেয় শাহানা। কিন্তু আরেকটু ঢোকাতেই সুরুৎ করে পিছলে গেল যেন। তারপর শো করে ঢুকে গেল একদম ভিতরে। আসলেই গর্তে পড়ে যাবার মতই লাগছে। ঠিক গর্তও নয় আবার – কেউ বিল্ডিং থেকে ধাক্কা দিয়ে নীচে ফেলে দিলে মাটিতে পড়ার আগ পর্যন্ত শুন্যে ভেসে বেড়ালে যেমন লাগে – শাহানার অনুভূতি ঠিক তেমন যেন। পড়ছে তো পড়ছেই । এর যেন কোন শেষ নেই। যত এগুচ্ছে সামনের জায়গাটা যেন আরো খুলে যাচ্ছে, আর পেছনের সব কিছু যেন বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। মাথাটাও ক্রমশ ভারী হয়ে আসছে শাহানার। জ্ঞান হারানোর আগে বহু দূর থেকে শাহানা শুনতে পেল কুদ্দুস স্যারের গলা, তিনি পড়িয়ে চলেছেন তখনো –
…আইনস্টাইনের এই সমীকরণের অনেকগুলো সমাধান আছে… সে জন্য আমাদের আগে ইভেন্ট হরাইজনের ব্যাপারটা বুঝতে হবে… এখানে আমরা আইনস্টাইন রজেন ব্রিজ ইকুয়েশন প্রয়োগ করে পাই … আর এখান থেকেই বেড়িয়ে আসে …শোয়ার্ডসচাইল্ড ওয়ার্মহোল … ১৯১৬ সালে কার্ল শোয়ার্ডসচাইল্ড এই সমাধানটা দিয়েছিলেন … অনেকটা স্পেসটাইমের ভেতর দিয়ে সরু একটা টানেলের মত করে এক জায়গা থেকে অন্য জায়গায় নিমেষমধ্যে চলে যাওয়া সম্ভব। …হয়তো সম্ভব সময় পরিভ্রমণও, তাই মনে করেন অনেক বিজ্ঞানী। … ১৯৮৮ সালে ক্যাল্টেক বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষক কিপ থোর্ণ, এভাবে স্পেসটাইম ফুটো করে অন্য সময়ে চলে যাবার একটা উপায়ের কথা বলেছিলেন…একে নাম দেয়া হয়েছে ট্র্যান্সভার্সিবল ওয়ার্মহোল …
এরপর আর কিছু মনে নেই শাহানার। কোন কুক্ষণে যে হতচ্ছাড়া মাছিটাকে তাড়া করার কথা মনে হয়েছিলো …
***
ঘুম ভেঙ্গে শাহানা দেখে বিছানায় শুয়ে আছে। নরম গদির পরিপাটি করে সাজানো বিছানা। গায়ের উপর মোটা একটা কম্বল পাতা। মখমলের মতোই নরম। কম্বলের গায়ে সূচের হাল্কা কাজ করা। বিছানার পাশে একটা তেপায়া স্ট্যান্ড। এ ধরণের স্ট্যান্ড খুব পছন্দ শাহানার। ছিমছাম কিন্তু আধুনিক। তার বন্ধু রেহানার বাসায় এরকম একটা স্ট্যান্ড ছিলো। সেটা নাকি আমেরিকায় আইকিয়া থেকে কেনা। স্ট্যাণ্ডের উপর এর পানির একটা জগ।
শুয়ে শুয়েই দেয়ালের দিকে নজর দেয় শাহানা। পাশের সাদা দেয়ালে একটা পোস্ট মডার্ন আর্ট ঝুলছে। কার আঁকা ছবি ওটা? জন বাল্ডেসারির নাকি রেচেল হুইটার্ডের?
বাড়িটাও খুব চেনা। মনে হচ্ছে বাড়িটাকে বহুদিন ধরে দেখেছে। পায়ের দিকের দেয়ালের দরজাটা লাগানো। পাশের দেয়ালটা প্রায় পুরোটুকু জুড়ে বিরাট একটা জানালা। সেই জানালা দিয়ে বিরাট মাঠ আর আকাশ দেখা যায়। খুব বেশি আসবাবপত্র নেই ঘরটায়। কিন্তু যা আছে সেগুলো খুবই সুন্দর আর ছিমছাম। তার সব পছন্দের জিনিসগুলো খুব পরিপাটি করে মনমতো সাজানো।
ড্রেসিং টেবিলটাও খুব সুন্দর। লাগোয়া বিরাট আয়না। প্রাসধনসামগ্রী রাখার ছোট একটা জায়গা। গলার নেকলেসগুলো ঝুলিয়ে রাখার একটা ক্লিপ আছে। অনেকগুলো নেকলেসের মধ্যে তার সবচেয়ে প্রিয় নেকলেসটাও ঝুলছে। হোয়াইট স্যাফায়ারের ডায়মণ্ডের কারুকাজ করা সেই সরু হোয়াইট গোল্ড চেইনের নেকলেসটা – চাচী সেটা সিঙ্গাপুর থেকে নিয়ে এসেছিলেন তার জন্য বছর কয়েক আগে।
মেঝের দিকে নজর গেল শাহানার। কঙ্ক্রিটের নয়, হার্ডউড ফ্লোরের পরিপাটি মেঝে। হাল্কা কমলা রঙের। আমেরিকান আর ব্রিটিশ মুভিতে এই ধরনের মেঝেওয়ালা বাসা অনেক দেখেছে শাহানা। ঝকঝকে তকতকে মেঝে – যেনো কিছুক্ষণ আগেই মুছে পরিস্কার করা হয়েছে। কোথাও একসুতো ময়লা পর্যন্ত নেই। কিন্তু …
মেঝের মাঝামাঝি জায়গায় একটা কলম আর একটা সাদা রুমাল পড়ে আছে। অনেকটা ছন্দ পতনের মতোই দেখাচ্ছে এখন। এতো সুন্দর করে সাজানো একটা ঘর – যেখানে সবকিছুই নিখুঁতভাবে পরিপাটি করে সাজানো – সেখানে মেঝেতে অযথা একটা কলম আর রুমাল পড়ে আছে কেন এভাবে? আর কলম আর রুমালটাকেই বা এতো চেনাই বা লাগছে কেন শাহানার… কোথায় যেন দেখেছে। আরেকটা জিনিসও ব্যাজায় বিরক্তিকর। ঘরের মধ্যে কী করে যেন একটা মাছি ঢুকে পড়েছে। বার বারই নাকের সামনে দিয়ে উড়ে যাচ্ছে হতচ্ছাড়া মাছিটা।
এরমধ্যে পায়ের দিকের দেয়ালের দরজাটা খুলে গেলো হঠাৎ করেই। গাঢ় নীল রঙের টি শার্ট আর খাকি প্যাণ্ট পরে এক সুদর্শন তরুণ দাঁড়িয়ে আছে দরজায়। চুলগুলো নিখুঁতভাবে ব্যাকব্রাশ করা, টি শার্টের বুকে মাওয়ি জিমের সানগ্লাস গোঁজা, আর বাঁ হাতের কব্জিতে আরমানী একচেঞ্জের মোটা ব্যাণ্ডের ঘড়ি। লোকটিকে খুব চেনা মনে হচ্ছে। তার চালচলন তাকানো সবকিছুই তার খুব চেনা। তারপরেও লোকটিকে চিনতে পারছে না কেন শাহানা? শাহানাকে চোখ মেলতে দেখেই আকর্ণবিস্তৃত হাসি ছড়িয়ে পড়লো তরুনটির চোখে মুখে। হাসি আর তাকানো দেখেই চমকে উঠে শাহানা বুঝলো এ লোকটি তার পরিচিত কুদ্দুস স্যার।
‘ওখে, ইউ আর অলরাইট দেন! খুব ভয় পেয়ে গিয়েছিলাম রাত্রী…’
শাহানাকে কুদ্দুস স্যার ‘রাত্রী’ বলে ডাকছেন! অবাক ব্যাপার। রাত্রী তার ডাক নাম। এ নামটা তার খুব পছন্দের। বাবা মা আর খুব কাছের দু একজন বন্ধুবান্ধবী ছাড়া এ নাম ধরে কেউই তাকে কখনো ডাকে না। কুদ্দুস স্যার তার প্রিয় রাত্রী নামটা জানলেনই বা কীভাবে, আর এ নামে ডাকার অধিকারই বা পেলেন কেমন করে? সব কিছুই ক্যামোন যেন মনে হচ্ছে শাহানার।
‘বিয়ের পর এতো ভয় আমি আর কখনোই পাইনি। ফরএভার টুয়েণ্টিওয়ান থেকে কিছু জামা কাপড় কিনবে বলে আমার সাথে মলে বেড়াচ্ছিলে তুমি, মনে পড়ছে? তারপর হঠাৎ দেখি তুমি পাশে নেই। ভাবছিলাম আইস্ক্রিম কিনতে হেইগেনডাসের স্টলে গেছ বুঝি। ওখানে গিয়েও দেখি নাই। তোমার সেলফোনে কল দিলাম, দেখি বন্ধ। তন্ন তন্ন করে সাড়া মল খুঁজেও তোমাকে পেলাম না। …’
বিয়ে? মলে ঘোরাঘুরি? শাহানা হতভম্ব।
‘তারপর?’ শাহানা উদ্গ্রীব বাকিটা জানার জন্য।
‘জিপিএস ট্র্যাক করে দেকলাম তোমার লোকেশন দেখাচ্ছে বাসায়। আমি তো অবাক। হুড়মুড় করে বাসায় ফিরলাম, দরজা খুলে দেখি তুমি মেঝেতে পড়ে আছ। আমি তাড়াতাড়ি তোমাকে বিছানায় শুইয়ে দিয়ে পাশের বাসায় ডক্টর আজীমকে ফোন করলাম। উনি এসে দেখে গিয়েছেন এর মধ্যে একবার। বলেছেন চিন্তার কোন কারণ নেই। হার্টবিট পালস সবই নরমাল। বলেছেন ডিহাইড্রেশন কিংবা গরম থেকে মাথা ঘুরে পড়ে গিয়ে থাকবে। এর মধ্যে তোমাকে স্যলাইনও দেয়া হয়েছে’।
শাহানা এতক্ষণ লক্ষ্যই করেনি আগে যে বিছানার অন্যদিকে সট্যান্ড থেকে স্যালাইনের টিউব ঝুলছে।
‘বুঝলে?’ কুদ্দুস শাহানার দিকে তাকিয়ে বলে, ‘আজীম জিজ্ঞেস করছিলেন ছোটবেলায় বা কখনো তোমার এপিলেপ্সি ছিলো কিনা । আমি বলেছি যে ছিলো না’।
‘ঠিকি বলেছেন’।
‘হ্যা? আজীম এপিলেপ্সির ব্যাপারটা যে সন্দেহ করেছেন সেটা ঠিক বলছ?’
শাহানা বুঝতে পারে কুদ্দুস ‘আপনি’ সম্বোধন শুনে কনফিউজড ।
‘নাহ, বলছি তুমি ঠিক বলেছ। আমার কখনোই এপিলেপ্সি জাতীয় কিছু ছিলো না’। কুদ্দুসকে আশ্বস্ত করে শাহানা।
কুদ্দুসকে আশ্বস্ত করলেও নিজে আশ্বস্ত হয় না শাহানা। তীক্ষ্ণ দৃষ্টিতে ঘরের মাছিটার দিকে দেখছে এখন সে। মাছিটা ঘরের কোনার দিকে বাথরুমের দরজার কাছে ঘুর ঘুর করছে। প্রায়ই অদৃশ্য হয়ে যাচ্ছে বাথরুমের দরজাটার কাছে গিয়েই।
‘আমার একটু বাথরুমে যেতে হবে’ বলে উঠে দাঁড়ায় শাহানা।
যাওয়ার সময় শাহানা মেঝে থেকে তুলে নিয়ে যায় পড়ে থাকা কলম আর রুমালটা ।
***
তানভীর কুদ্দুস ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ল্যাবে বসে নিজের লেকচার নোট তৈরি করেছেন। অন্য দিনের তুলনায় মন তার একটু উৎফুল্ল। একটু পরেই একটা সাবসিডিয়ারি ক্লাসে তার লেকচার দিতে হবে তাঁর। এ বছর রিলেটিভিটির সবটুকু পড়ানোর ভার তার ঘাড়ে এসে পড়েছে। সাধারণতঃ খুব সিনিয়র টিচারেরা এ বিষয়টা পড়ান। কিন্তু অধ্যাপক মৃন্ময় সেনগুপ্ত স্যার ছুটিতে থাকায় তাকেই দায়িত্ব দেয়া হয়েছে।
কুদ্দুসের অবশ্য খারাপ লাগছে না। অনেকদিন ধরেই তার ইচ্ছে ছিলো এই বিষয়টা ছাত্রদের পড়ানোর। ওয়াটারলু বিশ্ববিদ্যালয়ে তার পিএইচডির কাজের সময় অধ্যাপক লি স্মোলিনের আণ্ডারে লুপ কোয়ান্টাম গ্রাভিটির গানিতিক সমস্যা সমাধানের কাজ করেছিলেন কুদ্দুস। সে সময়ই রিলেটিভিটি আর কোয়ান্টাম গ্রাভিটি নিয়ে দারুণ আকর্ষণ তৈরি হয়েছিল তার। ইচ্ছে ছিলো আরো কিছুটা কাজ করার। কিন্তু তা হয়নি। পিএইচডি শেষ করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে যোগদানের পর ইলেকট্রো ম্যাগনেটিজম, থার্মোডায়নামিক্স আর ক্লাসিকাল ফিজিক্সের উপর কিছু গৎবাঁধা ক্লাসের ভার তার উপর গছিয়ে দেয়া হয়েছিলো। এই বছরটাই কেবল ব্যতিক্রম। তার পছন্দের বিষয় ছাত্রদের পড়াতে পারছেন। তানভীর কুদ্দুস ঠিক করেছেন, তার কোর্সে স্পেশাল রিলেটিভিটি, জেনারেল রিলেটিভিটি সবকিছু কভার করে স্ট্রিং থিওরী, লুপ কোয়াণ্টাম গ্রাভিটি, ইভেন্ট হরাইজন, ব্ল্যাক হোল, হোয়াইট হোল থেকে শুরু করে টাইম ট্র্যাভেল নিয়েও লেকচার দেবেন তিনি ছাত্রদের। এই টপিকগুলো সাধারণতঃ শিক্ষকেরা ক্লাসে পড়ান না তেমনভাবে। ভুতের ভয়ের মতো ইচ্ছে করেই এড়িয়ে চলেন টপিকগুলোকে। অথচ বাইরে এ নিয়ে দারুণ সব কাজ হয়েছে কয় বছরে। বাংলাদেশের ছাত্রদের এগুলো জানা দরকার অল্প স্বল্প হলেও।
অবশ্য পছন্দের বিষয় পড়ানোটাই তার মন প্রফুল্ল হবার একমাত্র কারণ নয়। এরিজোনা স্টেট ইউনিভার্সিটি থেকে একটা চিঠি এসেছে আজ সকালে। পোস্ট ডক্টরেট ফেলোশিপ পেয়েছেন তিনি। এটা একটা বিরাট সুযোগ।
তানভীর কুদ্দুস লেকচার দিতে ক্লাসে ঢুকলেন। খুব আনন্দ নিয়েই পড়িয়ে চলছেন ক্লাসে। লেকচারের ফাঁকে ফাঁকে বোর্ডে লোরেন্স ট্রান্সফরমেশনের সমীকরণগুলো লিখছেন। হঠাৎ পেছন থেকে একটি মেয়েলী গলার আওয়াজ হল -‘অ্যা’।
‘কী হল?’
‘কিছু না স্যার, সরি!’
একদম পেছনের বেঞ্চে একটি মেয়ে অপ্রস্তুত আর লাজুক ভঙ্গিতে বসে আছে।
‘হাতের কলমটা হঠাৎ করে মাটিতে পড়ে গিয়েছিলো, স্যার’!
‘ও’। কুদ্দুস স্যার তাকিয়ে থাকেন মেয়েটার দিকে। বাইরের জানালা দিয়ে সকালের রোদ এসে মেয়েটির গালে পড়েছে। অন্যপাশটা অন্ধকার। আলো আঁধারিতে কেমন অদ্ভুত সুন্দর লাগছে মেয়েটিকে। এই লাজুক মেয়েটিকে আজ বিকেলে টিএসসিতে চা খেতে ডাকলে খুব কী অন্যায় করা হবে?
ক্লাসের পরে মেয়েটির সাথে কথা বলবেন বলে ঠিক করেন তানভীর কুদ্দুস। ব্ল্যাকবোর্ডের সমীকরণের দিকে আবারো মন দেন। লোরেন্স ট্রান্সফরমেশনের সমাধানের শেষদিকে পৌঁছে গিয়েছেন তিনি।
জবরদস্ত.. এবং সাবলীল… দুম করে দড়জা খুলে মাসুদ রানা, থুক্কু কুদ্দুস ভায়ের প্রবেশ. সেরাম…
শিগগিরই অভি দা’র ওয়ার্মহোলে যাবো বলে পাত্তারি গুটাচ্ছি; ভাবছি, ভবিষ্যতটি একবার আগাম দেখে আসা যাক! :))
খুব ভালো। চলুক, হে কল্প-গল্প লেখক। :clap
@বিপ্লব রহমান,
ধন্যবাদ বিপ্লব। আমি ওয়ার্মহোলে না গিয়েও আপনার সাংবাদিক এবং লেখক হিসেবে উজ্জ্বল ভবিষ্যৎ দেখতে পাচ্ছি অবশ্য। আপনি গিয়ে ফিরে এসে জানায়েন ঠিক বললাম কীনা! 🙂
চমৎকার এবং চমৎকার। উপস্থাপনার যাদুতে আচ্ছন্ন গল্প। পুরোটা জুড়ে এক মায়বী আকর্ষণ…আপনরা গল্পের হাত দেখ বিস্ময় লাগছে…সত্যি অপুর্ব!!!
@মাহমুদ মিটুল,
ধন্যবাদ। গল্পটা আপনার ভালো লেগেছে এটাই আমার বড় প্রাপ্তি।
সাহানাকে খুঁজতে খুঁজতে কদ্দুসও কি ওয়ার্মহোল দিয়েই আমেরিকা গিয়েছে? তাদের বিয়ে হলো কোন ফাঁকে, ওরা দেশে ফিরল কি ওয়ার্মহোল দিয়ে নাকি প্লেনে? আসলে বৈজ্ঞানিক কল্পকাহিনী কম বুঝি।
উপদ্রপ আর কুৎসিৎ মনে হয় এভাবে হবে
উপদ্রব, কুৎসিত।
@তামান্না ঝুমু,
আসলে পাঠক হিসেবে (লেখক নয়) গল্পটা পড়ে আমার মনে হয়েছে গল্পের কাঠামোটা খুব সিম্পল। 🙂 প্রথম অংশে দেখানো হয়েছে শাহানা ফিজিক্স ক্লাস করছে বিরক্তি আর ঝিমানি নিয়ে। তারপর এক মাছিকে অনুসরণ করতে গিয়ে বিরল ওয়ার্মহোলের মধ্যে সেঁদিয়ে যায়।
ওয়ার্মহোল দিয়ে বেড়িয়ে নিজেকে দেখতে পায় ভবিষ্যতের পৃথিবীতে যেখানে কুদ্দুসের সাথে তার বিয়ে হয়েছে, তারা থাকছে আমেরিকার কোন বাড়িতে…
আর তৃতীয় অংশে আবারো আমরা ফেরৎ এসেছি বর্তমানের পৃথিবীতে। সেখানে দেখানো হয়েছে কুদ্দুস স্যার ক্লাসে পড়াতে যাচ্ছেন। সেদিন সকালে সবেমাত্র অ্যারিজোনা স্টেট ইউনিভার্সিটি থেকে পোস্ট ডক করার অফার এসেছে। তবে তখনো শাহানার সাথে পরিচয় হয়নি। ক্লাসে গিয়ে পড়াতে পড়াতেই পেছনে কোনার দিকের বেঞ্চে বসা একটি মেয়েকে খুব সুন্দর লাগতে থাকে তার হঠাৎ করেই … উনি ঠিক করেন ক্লাস শেষে মেয়েটির সাথে কথা বলবেন…
এই হচ্ছে সাদামাঠা ভাবে লেখকের গল্পের প্লট। বাকী কল্পনা পাঠকের। কে কিভাবে কোথায় গেল তা আপনি কল্পণা করে নিন।
বানান ভুলগুলো ধরিয়ে দেয়ার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ
@তামান্না ঝুমু,
– খুবই মজা পেলাম কথাটি পড়ে 🙂 আহ, ছুটির অভাবে অনেকদিন দেশে যাওয়া হয় না, একটা ওয়ার্মহোল পেলে বেশ হত 🙂 ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে বড় ঈর্ষা হয়। তারা নিশ্চয়ই যখন তখন ডাল ভাতের মতই ওয়ার্মহোল তৈরি করে যাওয়া আসা করবে 🙁
@এমরান এইচ,
ইমেইল চেক করেন, আর লগ ইন করে মন্তব্য করতে পারেন।
ধন্যবাদ।
@অভিজিৎ,
যে লেখাটিকে সর্বস্তরের জনগণ সাদরে গ্রহণ করিয়া নিল, আপনি কেন আপনার নিন্দাকারীগণকে খুশী করিবার জন্যে ইহাকে ফালতু বলিবেন? হিংসার অনলে জ্বলিয়া পুড়িয়া এই লেখাটিকে কেউ কেউ উর্ধ-পতন, অধঃপতনের লক্ষণ বলিয়াছেন। আসলে তাহারা এভারেষ্ট বিজয়ীদের ভয় পান। এই লেখাটির মাধ্যমে সাধারণ মানুষকে কতো কাছে টানিয়া লইয়াছেন, বিজ্ঞানকে বোধগম্য সহজ ভাষায় সাধারণ মানুষের কাছে কীভাবে পৌছাইয়া দিতে পারেন, ইহাই তাহাদের ঈর্ষার কারণ। তাহারা আপনার বহুরূপী প্রতিভার অপচয় ঘটাইতে ভীষণ চক্রান্তে লিপ্ত হইয়াছেন, আপনি তাহাদের কথায় কর্ণপাত করিবেন না। আমরা আপনার কাছ হইতে আরো প্রচুর গল্প, বিজ্ঞান, কল্পবিজ্ঞান চাই।
@আকাশ মালিক,
আমার কল্পলেখাঘাতে আপনার মত সাধু ব্যক্তিরা সাধু বচন প্রাপ্ত হইয়াছেন, ইহা এই অধমের কম প্রাপ্তি নহে। লেখার প্রকৃতি যাই হোক, আমার পাঠকেরা যে দুর্মুখ নহে, তাহার প্রমাণ আমি অবশ্য পাইলাম।
আপনাকে অশেষ ধন্যবাদ।
@অভিজিৎ দা,
অনেক ধন্যবাদ আমাকে মুক্তমনার সদস্যপদ দেয়ার জন্য 🙂 সত্যই বেশ ভাল লাগছে আপনাদের সাথে এখানে জয়েন করতে পেরে। 🙂 (F)
@এমরান এইচ,
[email protected]
এখানে আপনার ই-মেইল দিয়ে দিন, আমি বই পাঠিয়ে দিবো।
@আকাশ মালিক ভাই, আমি আপনার উপরোক্ত এড্রেসে ইমেইল পাঠিয়ে দিয়েছি।
চমৎকার গল্প! মনটাই ভালো হয়ে গেল। বড় একটা উপন্যাস হলেও এক টানেই পড়া যেতো।
মনে হচ্ছে, ভবিষ্যতের, শাহানা, আর বর্তমান শাহানা এক্সেঞ্জ হয়ে গেছে। এই গল্প টেনে নিয়ে আরো মজার মজার ঘটনা ঘটিয়ে ফেলানো সম্ভব এদের দিয়ে! 🙂
@তানভীরুল ইসলাম,
আমারো। তবে সেটা ভিন্ন কারণে। ফালতু একটা লেখার মাধ্যমে যে দীর্ঘদিন পর আপনাকে মুক্তমনায় টেনে আনা গেল, সেটাই এই মুহূর্তে আমার মন ভাল হবার কারণ। 🙂
@অভিজিৎ দা,
মুক্তমনাতে থাকিই তো নিয়মিত। আগ্রোহদ্দীপক পোস্টগুলো পড়ি। লেখা আর মন্তব্য করায় ভাটা পড়েছে অবশ্য কিছুদিন…
অ্যালগো ল্যাবে ঝিমাতে ঝিমাতে পড়া শুরু করেছিলাম,পড়ার পর ঝিমানি কেটে গেছে। অভিদার কাছ থেকে আরো সায়েন্স ফিকশান দাবি করছি,জাফর ইকবাল স্যারের সায়েন্স ফিকশন গুলো আজকাল আর ভালো লাগেনা।
@রামগড়ুড়ের ছানা,
ঝিমানি কাটাতে আমার সায়েন্স ফিকশন পড়া যখন শুরু করছ, তখন বুঝতেছি তোমার পতন আসন্ন। কোনদিন আবার বিবর্তন পড়া শুরু করবা কে জানে।
আমার এই ভোঁতা মাথায় বিজ্ঞানের থিওরি, গণিতের সমীকরণ, রাসায়নিক বিক্রিয়া এই সব জটিল জিনিস কেন জানি খুব একটা স্বাচ্ছন্দে প্রবেশ করতে চায় না। আমার মত নিরেট মাথাওয়ালা লোকের জন্য গল্পের আঙ্গিকে বিজ্ঞান শিক্ষা বিশেষ উপকার বয়ে আনে নিঃসন্দেহে।
আপনার এই চমৎকার গল্প লেখার বওনির জন্য (F)
এই শুভ প্রচেষ্টা অব্যাহত থাকবে বলে আশা রাখছি।
একি সাথে স্বাধীনকে সুন্দর আলোচনা সূত্র পাতের আর এমরান এইচকে উনার ভাষায়- “লিখতে গিয়ে সাত কাহন লিখে ফেললাম” জন্য বিশেষ ধন্যবাদ।
লেখাটি সাইন্স ফিকশন হলেও এ কটি লাইন গভীর তাৎপর্যময়। (Y)
আর, আমাদের দেশে বিজ্ঞান শিক্ষা প্রসারে ছোটদের জন্য যদি মজার মজার ” সাইন্স ফিকশন ” বই “মুক্তমনার পক্ষ” থেকে বের করার উদ্যোগ নেয়া হয় তাহলে মাইলফলক একটি ভবিষৎ প্রজন্ম তৈরী হবে এ আশা করা যায়।আর এ ব্যাপারে আমাদের অভিজিৎ রায় যদি ভূমিকার রোল পালন করে তা হলে খুব ভাল হয়,সাথে অন্য যারা বিজ্ঞান লেখক আছেন তারা যদি এ কর্মযজ্ঞের সাথে মিলিত হন তাহলে তো তা সোনায় সোহাগায় পরিপূর্ণ হবে।শুধুমাত্র বড়দের জন্য মনোনিবেশ না করে আশা করি বিজ্ঞান লেখকেরা ভবিষৎ প্রজন্মের জন্য এবিষয়ে মনোযোগ দিবেন।
“মুক্তমনা” যেন কিছুতেই কোন বিষয়ে একপাক্ষিক না হয় সে আশাই আমরা করছি। এটা যেন বিজ্ঞান,দর্শন,ধর্ম,সাহিত্য সবকিছু নিয়ে মাতোয়ারা হয়,শুধুমাত্র কেবল বিজ্ঞান বা কেবল ধর্ম নিয়ে যেন পড়ে না থাকে এমন ভরসাই করছি।তা না হলে তা লেবু কচলানোর মতো তিতা হয়ে যায় বা একঘেঁয়েমীপূর্ণ যেন না হয় সেদিকে আমাদের খেয়াল রাখলে ভাল বৈ মন্দ হবে না।
জয় হউক বিজ্ঞানমনস্কতার তথা যুক্তিবাদের
মুক্তি পাক আমাদের বদ্ধমননের।
@মাহবুব সাঈদ মামুন,
ধন্যবাদ, মামুন ভাই।
যদিও গল্পটাতে বিজ্ঞানের চেয়ে ফিকশন ই বেশি, তবুও দারুন মজা পেয়েছি গল্পটা পড়ে। তবে বুঝাই যাচ্ছে গল্পটা দায়সারাভাবে তাড়াতাড়ি লেখা হয়েছে তাই এবারের জন্য দুধের স্বাদ ঘোলে মিটালেও কোন অভিযোগ নেই। কিন্তু এর পরের গল্পে কিন্তু ঠিক ঠিক স্বাদ পাওয়া চাই অভিদা।
গল্পের অন্য সমস্যাগুলোর কথা বলতে চাচ্ছি না। কিন্তু একটা জিনিস একটু বেশিই চোখে পড়ল।
এক শাহানা ওয়ার্মহোল দিয়ে যাতায়াত করার ফলে অন্য শাহানাও ওয়ার্মহোল দিয়ে যাতায়ত করল, এইটা কেমন হল?
@রনবীর সরকার,
তাই হল কী? আমি তো ভেবেছিলাম এক শাহানাই ওয়ার্মহোল দিয়ে ভবিষ্যতে গিয়ে আবার সেই ওয়ার্মহোল দিয়েই ফিরে এল। তবে মল থেকে ভবিষ্যৎ শাহানার হারিয়ে যাওয়াটা রহস্যজনক। এখানে ‘অভিজিতের অসম্ভব্যতার নীতি-১’ এর (যেটি কীনা ফরিদ আহমেদের দ্বারা হেমায়েতপুরে ইতোমধ্যেই পরীক্ষিত) প্রয়োগ ঘটাতে হয়েছে। এ নিয়ে আলোচনা দেখুন এখানে এবং এখানে।।
এতেই আপাততঃ আমার আনন্দ!
ধন্যবাদ পড়ার জন্য।
@অভিজিৎ,
একজন শাহানাতো ভবিষ্যতে গিয়ে আবার অতীতে ফিরে এসেছে। কিন্তু এই শাহানা কোথায় গেল? গল্পের এই অংশ থেকে কিন্তু এটা বোঝা যাচ্ছে যে ভবিষ্যতের শাহানা অন্য কোন ওয়ার্মহোল দিয়ে চলে গেছে। কোথায় চলে গেল!!!! :-s :-s :-s
@রনবীর সরকার,
ওয়ার্মহোল দিয়ে যায়নি, চলে গেছে অভিজিতের ‘অসম্ভব্যতার নীতি -১’ অনুযায়ী (যেটা ফরিদ আহমদ কর্তৃক ইতোমধ্যেই হেমায়েতপুরে পরীক্ষিত, পরে স্যার আর্থার এডিংটন কনফার্ম করেছেন তার ল্যাবে)–
বর্তমানের শাহানা আর অভিষ্যতের শাহানা এক সাথে এক জায়গায় থাকতে পারেনা। সেজন্যই, বর্তমান শাহানা যেই মুহূর্তে ওয়ার্ম হোলের টানেল দিয়ে ভবিষ্যতে পৌঁছিয়েছে, ওমনি মল থেকে তখনকার শাহানা গায়েব হয়ে গিয়েছে।
আপনি আমার কথা একদমই শুঞ্ছেন না। এমনে কী হইবে? এইটা তো ভাই স্কুল লেভেলের পাঠ্যসূচীর মামলা। হ্যারি পটারের Hogwarts School এ ফিজিক্স ১০১ কোর্সে ডিটেল বর্ণনা আছে। দেখে নিন।
@অভিজিৎ,
হ্যা। অভিজিতের ‘অসম্ভব্যতার নীতি -১’ বুঝতে পেরেছি। 🙂
আসলে আগে আপনার অন্য মন্তব্যগুলো না পড়েই মন্তব্য করে ফেলেছিলাম। দুখিত।
গল্পটা না পড়েই কমেন্ট করছি। মুক্তমনায় সিরিয়াস লেখালেখি হয় এটা সবাই জানে ঠিকাছে, কিন্তু মানুষের কাছে, বিশেষ করে কিশোরদের কাছে, বিজ্ঞানকে জনপ্রিয় করার জন্যে কল্প-বিজ্ঞানের কিংবা শিশুতোষ গল্পের কোন বিকল্প নেই। তাই মুক্তমনার লেখকেরা যদি সিরিয়াস লেখার পাশাপাশি মাঝে মাঝে কিছু কল্প-বিজ্ঞান নিয়ে গল্প/উপন্যাস লিখেন সেটাকে আমি বরং সাধুবাদ জানাবো। আমি বরং প্রত্যাশা করবো মুক্তমনার নিয়মিত গল্প লেখকেরা সিরিয়াস লেখাগুলো থেকে কিছু প্লট নিয়ে আরো বেশি বেশি কল্প-বিজ্ঞান গল্প লেখায় হাত দিক। প্রয়োজন হলে মুক্তমনা থেকে একটি ই-বুকের প্রকল্প হাতে নেওয়া যাক। গল্পকারেরা গল্প লিখবেন আর বিশেষজ্ঞরা নিশ্চিত করবেন যেন গল্পের মাঝে অপ-বিজ্ঞান চলে না আসে।
সব শেষে পুরোনো একটি বিষয়ের আবারো অবতারণা করি। এই সাইটিকে আমি নাস্তিকতার সাইট হিসেবে না দেখে বিজ্ঞানের সাইট হিসেবে দেখতে বেশি আগ্রহী। অভি’দা/ফরিদ ভাইয়ের কাছে এইটি একটি বিশেষ অনুরোধ। আমি বিজ্ঞান শিখে নাস্তিকতা শিখেছি, উল্টোটি নয়। আমি বিশ্বাস করি কেউ যদি সত্যিকারের বিজ্ঞান মনষ্ক হয় তার পক্ষে ধর্ম মেনে চলা সম্ভব নয়। তাই নাস্তিকতা প্রচার নয়, বিজ্ঞান প্রচারই আমার কাছে গুরুত্ব পায়। বিজ্ঞানের প্রচার হলে এমনিতেই নাস্তিকতার প্রচার হয়ে যায়। মুক্তমনাকে কিশোর থেকে শুরু করে সকলের কাছে একটি বিজ্ঞান ভিক্তিক সাইট হিসেবে দাঁড় করান, এই আমার অনুরোধ।
@স্বাধীন,
🙂 ব্যপারটা এত সহজ হলে কতই না ভাল লাগত। আমি যখন ধার্মিক ছিলাম, যতই বিজ্ঞান পড়তাম, ততই মনে হত খোদাতালার কী কুদরত !! দ্বীনের নবী কত বড় বিজ্ঞানী ছিল! আমার ক্ষেত্রে যা ঘটেছিল তা হচ্ছে, আমি আমার এক নাস্তিক বন্ধুকে খুব হেদায়েত করতে যেতাম। কোরআনে কিভাবে রিলেটিভিটি, কোয়ান্টাম থিওরী এমনকি স্ট্রিং থিওরী আছে সেগুলো নিয়ে বক্তব্য দিতাম। কিন্তু ধীরে ধীরে আমার নিজের কাছে মনে হতে লাগল, আমি বেশ গোজামিল দিচ্ছি। নিজের কাছে নিজের অবস্থান খরকুটো মনে হতে লাগল। তারপরেও ঈমান টাকে ধরে রাখার জন্য দেয়ালে মাথা ঠুকার মত চেষ্টা করতাম। আসলে সব যৌক্তিক ফাক ফোকর গুলোকেই benefit of doubt এর মধ্যে ছেড়ে দিতাম। কারণ আমার মনে ত একটাই শক্ত খুটি ছিল যে, নবী মুহম্মদ কে নিয়ে ত কোন বিতর্ক নেই এবং তিনি যে আলৌকিক ছিলেন সেটাত নিশ্চিত; তা না হলে কেন এত অমুসলিম দিনে দিনে মুসলিম হচ্ছে, নীল আমর্স্ট্রং চাদের দেশে গিয়ে বায়ুহীন পরিবেশে আযান শুনছে !!! , তাই যেহেতু মুহম্মদ সত্য, তাই বিজ্ঞান দিয়ে ধর্ম কে প্রতিস্থাপন করা যাবে না। ইত্যাদি ইত্যাদি….। এরপর একদিন আমার খুবই প্রিয় এক আস্তিক ছোট ভাই আমাকে ভাড়া করে (প্রতিকী অর্থে 🙂 ) নিয়ে গেল এক নাস্তিক বড় ভাইয়ের বাসায়। আমার দায়িত্ব ছিল “সেই নাস্তিক বড় ভাই যে কত বড় মূর্খ তা প্রমান করে মুচকি হেসে চলে আসা”। সেই যে, তাকে মূর্খ প্রমান করতে যাওয়াই আমার কাল হল। তিনি আমাকে বললেন, আমি কি পারব Random Number তৈরি করার একটি কম্পিউটার প্রোগ্রাম লিখতে ? আমি ত দাত কেলিয়ে টাইম ফাংশন দিয়ে লিখে দিলাম। এরপর তিনি চোখে আংগুল দিয়ে দেখিয়ে দিলেন যে, এটা Random number নয়, একটা Deterministic System এ random number generate করা সম্ভব নয়। তিনি আমাকে চ্যালেঞ্জ করলেন আমি কি যুক্তি দিয়ে প্রতিষ্ঠা করতে পারব যে “এই ইউনিভার্স টা Deterministic System এর মধ্যে পড়ে না” !! আমি সত্যিই টাস্কি খেয়ে গেলাম। অনেক ঘেড় ঘেড় করলাম, আজগুবি অনেক তালগাছ মার্কা কথা বার্তা বললাম কিন্তু নিজের কাছেই মনে হচ্ছিল যে, আমি ধরা খাচ্ছি। এরপর তিনি বললেন যে, নবী মুহম্মদ নাকি মিথ্যা কথাও বলেছেন তার স্ত্রীদের কাছে (দাসী মারিয়া প্রসংগ), এবং বিয়ে করার জন্য আয়াত নাজিল করেছেন (জয়নব প্রসংগ)। আরও কত কথা… আমি হতভম্ব হয়ে গেলাম… নবী মুহম্মদের নামে এভাবে ডাইরেক্ট কটুক্তি হজম করতেও বেশ কষ্ট হচ্ছিল। তবে বাসায় এসে বিভিন্ন সাইট ঘেটে সৈকত চৌধূরীর ‘কোরআন কি আলৌকিক‘ এবং আকাশ মালিকের ‘বোকার স্বর্গ‘ বইটি পড়ে চিন্তা ভাবনার ঝড় উঠল মনে। বিশেষ করে বাণু কুরায়জা গোত্রের এত গুলো মানুষ ঠান্ডা মাথায় যে তিনি হত্যা করার নির্দেশ দিয়েছিলেন এটা আমি ‘যে সত্য বলা হয় নি’ বইটি পড়ার আগে জানতামই না। এই তথ্যটাই আমাকে শক্ত হতে সাহায্য করেছে। এরপর নিজের বিশ্বাস গুলোকে যুক্তি দিয়ে সাজানোর চেষ্টা করলাম। নিজেকে জিজ্ঞেস করলাম, বাবা-মার পরিবার ছাড়া আমার এই ধর্মের কি আসলেই কোন যৌক্তিক ভিত্তি আছে ? উত্তর পেলাম “নেই“। নিজে নিজেই Circular Logic টি টের পেলাম যে, “কুরআন সত্য — কেন ? কারণ মুহম্মদ সত্য — কেন ? কারণ কোরআনে আছে মুহম্মদ সত্য…. আর তাই কুরআন সত্য” — ব্যস,… বহু বছরের কু সংস্কারাচ্ছন্ন চিন্তা ভাবনা থেকে আস্তে আস্তে বের হয়ে আসলাম। এখন আফসোস হয়.. কেন এত দেরি হল আমার এটা উপলদ্ধি হতে!!!
যাই হোক, যে মূল কথাটি বলার জন্য এত কিছু লিখলাম তা হল, “মুক্তচিন্তার প্রসার ঘটানোর জন্য আমার মনে হয় বিজ্ঞানের চেয়েও বেশি প্রয়োজন যুক্তিবাদী মন”, আর সেজন্যই ত আমরা আরজ আলি মাতব্বর, হুমায়ুন আজাদ .. এদের দেখি যারা বিজ্ঞান নিয়ে না পড়াশোনা করেও মুক্তচিন্তার প্রচার করতে পেরেছিলেন। আর সেই সাথে প্রয়োজন যে ধর্ম কে আমরা আলৌকিক জ্ঞান করি, সেই ধর্মের অসারতা গুলোকে চোখে আংগুল দিয়ে দেখিয়ে দেয়া। (যেমন আকাশ মালিকের লেখা গুলো)। নাইলে, হাজার বিজ্ঞান চর্চা সবই উপরআলার কুদরতী বলে মনে হবে; যে কারণে আমাদের দেশে ডাক্তার রা বিজ্ঞান দিয়ে দেখিয়ে দেয় যে রোজা রাখা স্বাস্থ্যের জন্য কত্ত উপকারী!!
পরিশিষ্ট: মন্তব্য লিখতে গিয়ে সাত কাহন লিখে ফেললাম, এজন্য দু:খ প্রকাশ করছি।
@এমরান এইচ,
অনেক ধন্যবাদ বিশাল ও সুচিন্তিত মন্তব্যের জন্যে। আপনার কাছে মনে হতে পারে যে আপনি হয়তো ভিন্ন কিছু বলেছেন কিন্তু আমার কাছে মনে হয়েছে আপনি আমার কথাটাই বলছেন। খুব বেশি ভিন্ন নয়। বিজ্ঞান মানে শুধু এক গাদা কঠিন অঙ্ক করা, পদার্থ বিজ্ঞানের বড় বড় থিউরি পড়া, কেমিষ্ট্রির বিক্রিয়া জানা কিংবা বাইলোজির কঠিন কঠিন বোটানিকাল নাম পড়া নয়। যদি সেটাই হতো তাহলে বহু পিএইচডি ধারী পেতেন না যারা ধর্মকে সত্যি বলে মানে। এই ডিগ্রিধারীরা শুধু ডিগ্রির জন্যে পড়াশুনা করেছে, কিন্তু গবেষণা কি জিনিস সেটা শিখেনি, বিজ্ঞান কি জিনিস সেটা শিখেনি।
আমার কাছে বিজ্ঞান এবং গবেষণা সমার্থক শব্দ। ছোটবেলায় বিজ্ঞানের যে সংজ্ঞা বা ধারণা পেয়েছিলাম সেটাই আমার মস্তিষ্কে গেঁথে আছে। কোন শ্রেণীতে পড়েছিলাম মনে করতে পারছি না, হয় ষষ্ঠ শ্রেণী কিংবা সপ্তম শ্রেণীতে হবে। বিজ্ঞান বলতে আমি যেটা বুঝি তা হলো ১, কোন প্রক্রিয়া ব্যাখ্যা করার জন্যে একটি হাইপোথিসিস দাড় করাবেন। ২, অতঃপর সেই হাইপোথিসিসকে প্রমানের জন্যে কিছু পরীক্ষা চালাবেন। ৩, পরীক্ষা শেষে আপনাকে সিদ্ধান্তে আসতে হবে যে আপনার হাইপোথিসিস কি সঠিক নাকি এর পরিবর্তন লাগবে। ৪, পরবর্তিত হাইপোথিসিস প্রমানে আবার পরীক্ষার ব্যবস্থা করতে হবে। এভাবে যতক্ষণ না পরীক্ষালব্ধ প্রমান দ্বারা একটি হাইপোথিসিসকে প্রতিষ্ঠিত না করা যায় গবেষণা চলতেই থাকবে।
এটি হচ্ছে যে কোন বৈজ্ঞানিক পদ্ধতির একেবারে বেসিক পদ্ধতি। অবশ্য আমি যদি আরো বৃহৎ পরিসরের কথা চিন্তা করে বলি এই পদ্ধতি হচ্ছে দর্শনের বেসিক পদ্ধতি। কিন্তু তার মানে এই নয় যে এই পদ্ধতি কেবল মাত্র বিজ্ঞানের শাখাতেই প্রযোজ্য। এটি প্রযোজ্য হতে পারে সমাজবিজ্ঞানে, এটি প্রযোজ্য হতে পারে অর্থনীতিতে, এটি প্রযোজ্য হতে পারে ইতিহাসবিদ্যায়, এটিপ্রযোজ্য হতে পারে সাহিত্যে। তাই বিজ্ঞান না পড়েও হুমায়ূন আজাদ পেতে পারেন ডক্টরেট অফ ফিলোসফি ডিগ্রী। আরজ আলী মাতুব্বরও হতে পারেন একজন দার্শনিক।
সুতরাং মুক্তচিন্তা করতে হলেও তাকে বিজ্ঞান/দর্শনের বেসিক পদ্ধতিগুলো মেনেই চিন্তা করতে হবে। যদি কোন লেখাতে যুক্তি না থাকে সেটা তখন ধর্মের মতই প্রিচিং হয়ে যায়, আর সেটাতেই আমার আপত্তি। আমি দেখি আমাদের মধ্যে অনেকেই নাস্তিকতা প্রিচিং করে, জাস্ট লাইক এ রিলিজিয়ন। আমি মনে করি না যে প্রিচিং পদ্ধতি কার্যকরি হবে ধর্ম বিশ্বাসীদেরকে তাদের বিশ্বাস হতে সরাতে। তাকে বুঝাতে হলে যুক্তি/বিজ্ঞানের পথেই বুঝাতে হবে।
@এমরান এইচ,
খুব ভাল বলেছেন। নিজের অভিজ্ঞতা থেকে বলেছেন, বলেই হয়তো আমার ভাল আরো ভাল লেগেছে।
আপনার সাত কাহন শুনার ইচ্ছে বেড়ে গেলো। শুনাবেন কিন্তু তা না হ’লেই, বরং দুঃখটা বেড়ে যাবে।
@স্বপন মাঝি,
ধন্যবাদ আমাকে উৎসাহিত করার জন্য। হ্যা, অবশ্যই লিখব। যেহেতু এই পেইজটি মূলত এক বৈজ্ঞানিক কল্পকাহিনীর, তাই এই অফটপিক আলোচনা এড়ানোর জন্যই চিন্তিত ছিলাম 🙂
@এমরান এইচ,
এই বিষয়েও খুব বেশি দ্বিমত নেই যে হ্যাঁ আকাশ মালিক ভাই, কিংবা আবুল কাশেম ভাইয়ের লেখা পড়ে অনেক কিছু জেনেছি, ইসলামের অনেক অজানা তথ্যই জেনেছি। উনাদের সেই কষ্টের প্রতি সম্মান রেখেও বলতে পারি, আমি যদি একজন ধার্মিক হতাম উনাদের একটা কথাও বিশ্বাস করতাম না। সেভাবেই ধর্মীয় বিশ্বাস চলে। আমি বা আপনি উনাদের লেখা থেকে উপকৃত হবো তখনই যখন আমাদের মধ্যে এর মধ্যেই নাস্তিকতা ভিন্ন ভাবে চলে আসে, যেটার বেশির ভাগই শুরু হয় নানান প্রশ্ন দিয়ে, এবং এখানেই যুক্তির কাজ। একমাত্র যুক্তিই পারে আপনার মধ্যে দ্বিধা প্রবেশ করাতে, আপনাকে দ্বন্দ্বে ফেলাতে। একবার দ্বিধা আর দ্বন্দ্ব শুরু হয়ে গেলে যে বিজ্ঞান মনষ্ক সে চাইবে পর্যায়ক্রমিক যুক্তির মাধ্যেম সেটা দূর করতে এবং যার পরিণতি নাস্তিকতা। আর যে বিজ্ঞান/যুক্তি মনষ্ক নয় সে আরো বেশি করে ধর্মকে আকড়ে ধরে তার দ্বন্দ্বকে বিশ্বাস দিয়ে দূর করতে চাইবে এবং সে হয় উঠে আরো বেশি ধার্মিক।
@স্বাধীন,
ধন্যবাদ, উত্তরের জন্য। আপনার কথাটি ঠিক, আসলেই, প্রথম স্থানে দ্বিধা আনাটাই মূল ব্যপার, নইলে, আকাশ মালিক ভাই / আবুল কাশেম ভাই উনাদের লেখা বিশ্বাস করবেনা কেউ যিনি কিনা প্রচন্ড ধার্মিক। তবে, আমার নিজের অনুভূতি গুলো ছিল অন্যরকম। আমি শুধু মাত্র দ্বিধা/দ্বন্দের কারণে এত বছরের ধর্ম বিশ্বাস ত্যাগ করতে খুবই ভয় পাচ্ছিলাম। ভাই, বিশ্বাস করুন, মোটেই সহজ ছিল না কাজটি। আমি ঘুমের মধ্যে ভয় পেয়ে জেগে উঠতাম যে, আল্লাহ বোধ হয় আমার জীবনে গজব পাঠিয়ে দিবেন … তাই সকালে নাস্তিক, বিকালে মুসলিম.. এভাবে বেশ কয়েকদিন পার করেছি। কিন্তু যখন বোকার স্বর্গ, এবং আরও কয়েকটি লেখা (Who Authored Quran – Abul Kashem) পড়েছি, তখনই মনে সাহস পেয়েছি। আমি এটুকু বলতে পারি যে, আমি এসব লেখা গুলো না পড়লে, হয়ত আজানা ভীতির কারণেই চিরকাল শংশয় নিয়ে থেকে যেতাম। প্রত্যেকেরই যারা transition period পার করেছেন, আমার মনে হয়, সবারই এই ভীতি টাও পার করতে হয়েছিল। মন জিনিষটা বড়ই বিচিত্র। কোথায় যেন একটি গল্প পড়েছিলাম এরকম
— “এক বিজ্ঞানী তার ল্যাবরেটরির দরজায় কুসংস্কারাচ্ছন্ন মনের জন্য ঘোড়ার খুর ঝুলিয়ে রাখত, বিশ্বাস করত, যে তাতে নাকি মঙ্গল হয়। আরেক বিজ্ঞানী বন্ধু তাকে প্রশ্ন করেছিল যে, “তুমি বিজ্ঞানী হয়ে এসব বিশ্বাস কর ?”। তখন বিজ্ঞানীটি উত্তর দিয়েছিল “না, মোটেই বিশ্বাস করিনা, তবে শুনেছি, বিশ্বাস না করলেও নাকি এতে কাজ হয় 🙂 ”
— যাইহোক, আপনার আর আমার মূল কথাটি তবে সেই একই। প্রথম স্থানেই প্রয়োজন যৌক্তিক/বৈজ্ঞানিক মনের বিকাশ।
@এমরান এইচ,
আরেকটু দীর্ঘায়ীত করলে আপনার মন্তব্যই একটা সুন্দর প্রবন্ধ হয়ে যেতো। এ লেখায় বিজ্ঞান নিয়ে আলোচনা চলুক, ধর্ম নিয়ে কথা না বলি।
আপনার বাস্তত অভিজ্ঞতালব্ধ একটা লেখা অতি সত্তর মুক্তমনায় চাই। না পেলে দুঃখ পাবো। আমার বইটির পুরনো ভার্সনে কিছুটা ভুল ছিল তা সংশোধন করা হয়েছে। ই-মেইল ঠিকানা দিবেন, আপনাকে সর্বশেষ আপডেইটেড, এবং কাশেম ভাই কর্তৃক ইংরেজিতে অনুবাদিত আমার সম্পূর্ণ বইটি পাঠিয়ে দিবো।
@আকাশ মালিক,
যে সত্য বলা হয়নি বইটি কি বাজারে কিনতে পাওয়া যায়? কারণ ইন্টারনেট থেকে অনেকেই পড়তে চায়না।
@আকাশ মালিক ভাই,
আপনান সাথে সরাসরি আলোচনা করতে পেরে খুবই খুশী লাগছে। ঠিক মনে পড়ে গেল, কৈশোরের কথা। আমি “আল – কোরান দ্য চ্যালেঞ্জ – মহাকাশ পর্ব -১” বই টি পড়েছিলাম, লেখক দেখিয়ে দিয়েছিলেন যে, পানির অণুতে দুইটি Oxygen যে Hydrogen এর সাথে ১০৫ ডিগ্রী কোণ করে থাকে সেটা কোরানেই উল্লেখ আছে ; তা দেখে আবেগে আপ্লুত হয়ে এর লেখক মেজর কাজী জাহান মিয়া র কাছে চিঠি লিখেছিলাম। কখনও ভাবিনি যে, চিঠির উত্তর পাব। একজন বইয়ের লেখকের উত্তর পাওয়া কি যে সে কথা !! যেদিন তাঁর চিঠির উত্তর পেয়েছিলাম, খুশীতে আত্মহারা হয়ে আমার বোর্ডিং এর সকল বন্ধুদের চিঠি টি হাতে নিয়ে দেখিয়েছিলাম, কেউ কেউ ত আমাকে ঈর্ষাও করেছিল 🙂 .. আজ আপনার উত্তর পেয়েও সেরকম ভাল লাগছে। 🙂 তবে, আজ আর সেই বন্ধুরা আশে পাশে নেই, আর থাকলেও তাদের সাথে এ ব্যপারে চুপ করেই থাকতে হত 🙁
হ্যা, অবশ্যই খুশী হব আপনার নতুন এডিট করা বই টি পেলে, আপনাকে প্রাইভেট মেসেজে ইমেইল এড্রেসটি পাঠিয়ে দিব।
আর হ্যা, ভাবছি গুছিয়ে অভিজ্ঞতা থেকে একটা লেখা পাঠাব এখানে। এই পেইজ টি যেহেতু একটি গল্পের, তাই এই টপিকে আলোচনা টা এখানেই শেষ করছি।
@স্বাধীন,
খুব ভাল লাগল। আমার মনের কথা বলেছেন।
একদম সত্য কথা! বিজ্ঞানের আলোয়ে বাস করেও বিজ্ঞানের আলো থেকে এরা সম্পূর্ণ বঞ্চিত।
ওপাশে কুদ্দুস স্যার আর শাহানা দুজনই আবার দুজনকে পেয়ে গেল, শাহানা আর অভিজিৎ বা ফরিদ বা রামগড়ুড়ের ছানা কিংবা কুদ্দুস স্যারের বদলে অন্য কেউ হল না কেন?
@কাজী রহমান,
অন্য কেউ হইলেই বা কী হইতো? শাহানার মাথা ব্যথা কি তাহাতে কমিত? 🙂
গল্পটা পড়তে পড়তে আমার জীবনে ঘটে যাওয়া একটা ঘটনা মনে পড়ে গেল, আমি একদিন ধ্যানে বসে ভুলক্রমে কল্পনার জগতে চলে গিয়েছিলাম শাহানার মত আমার মনেও একেই অবস্থা হয়েছিলো। তাই গল্পটা দারুণ লেগেছে।
@arup,
এইজন্যই বেশি ধ্যান ফ্যান করা ভাল না। 🙂
চমৎকার লিখেছেন। একনিশ্বাসে পড়ে ফেললাম। (F)
তবে ওয়ার্মহোলের দুটো বেসিক সমস্যা কিভাবে গল্পে সমাধান করা যায় সেটা নিয়ে ভাবার চেষ্টা করছি।
১) ওয়ামর্মহোল গুলোর মুখ খুব অল্প সময়ের জন্য খোলা থাকার কথা। তাই যেতে পারলেও ঐ একই ওয়ার্মহোল দিয়ে ফিরে আসার সম্ভাবনাও খুব কম।
২)
(কুদ্দুস সাহেব)
এই একই ঘটনা ঘটতে পারে ভবিষ্যতের শাহানার ক্ষেত্রে। যেমনঃ “এরমধ্যে বাথরুমের দরজাটা খুলে গেলো হঠাৎ করেই। গাঢ় নীল রঙের শাড়ী পরা শাহানা দাঁড়িয়ে আছে দরজায়।” দুজনের মুখোমুখি হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা খুবই প্রবল।
একটু প্যাচ লাগালাম। :))
@হোরাস,
অনেক ধন্যবাদ!
ঠিক। আরো সমস্যা হল, একে তো ওয়ার্মহোল হাইপোথিটিকাল কনসেপ্ট, বাস্তবে আসলেই আছে কীনা আমরা সঠিকভাবে জানি না, আর যদি থাকেও – ওয়ার্মহোল দিয়ে কিছু আদান প্রদান করতে গেলে বিশাল শক্তির প্রয়োজন। এই শক্তিটা যে কী বিশাল তা হয়তো আমাদের ধারণাতেও আসে না। আমি এ নিয়ে আলোচনা করেছি কাজি মামুনের সাথে এখানে।
এক শাহানার প্যাচের জ্বালাতেই বাঁচতেছি না। আর আপনি আবার দুই শাহানা নিয়া আসলেন!
@হোরাস,
তিনবছর ধরে স্টারগেট গেলার সুবাদে ওয়র্মহৌল বিষয়ে আমি প্রায় সবকিছু জানি, এই যেমন একই গ্যালাক্সির ভেতরে ডায়ালকৃত ওয়র্মহৌলের স্থায়িত্ব আটত্রিশ মিনিট, যদিনা অন্যপ্রান্তের ইভেন্ট হরাইজনে কন্টিনিউয়াস ফিউশন চালানোর ফলে গেট অতিরিক্ত এনার্জি সাপ্লাই পায়।
সাধারনত ওয়র্মহৌল স্থানকে বেন্ড করে, কিন্তু এর গতিপথে যদি সৌলার ফ্লেয়ার পড়ে যায়, তবে হিসেব উল্টোপাল্টা হয়ে সময়ও আগে পিছে হতে পারে।
ওয়র্মহৌল সাধারনত ওয়ান ওয়ে, তবে রেডিও সিগনাল টু ওয়ে।
বুঝতেই পারছেন, স্টারগেটের আমি ভালোই ভক্ত। :))
অভিজিৎ-দা,
আপনি যখন গল্পের মত করেই বিজ্ঞানের দুরূহ বিষয় নিয়ে নন-ফিকশন লেখেন, তখন আপনার হাত দিয়েই যে আকর্ষণীয় সায়েন্স-ফিকশন বেরোবে, সে বিশ্বাস আমাদের ছিল। আমার মতে, সায়েন্স ফিকশন তখনই সার্থক হয়ে উঠে, যখন ‘অসম্ভবের সায়েন্স’-এর সাথে আমাদের চেনা-জানা স্বাভাবিক জীবনের অতি পরিচিত চরিত্র ও পরিবেশের মেলবন্ধন ঘটে। সে কারণেই, হুমায়ুন আহমেদের ‘তারা তিনজন’, ‘ফিহা সমীকরণ’ বা ‘নিষাদ’ এখনও মনে দাগ কেটে আছে।
আপনার গল্পটিতে সার্থক সায়েন্স ফিকশনের সেই সূত্র যেন পুরোপুরি মানা হয়েছে! আমরাও ভার্সিটি লাইফে ‘কোথায় যেন একটা গেঁয়ো ভাব লুকিয়ে আছে, যেটা আবার তিনি প্রাণপণে ঢেকে রাখতে চান।’ – এই ধরনের ‘ওখে’ বলা সিরিয়াস অথচ মেধাবী তরুণ শিক্ষক অথবা ‘ব্যবহারিক জীবনে এগুলো কি আদৌ কোন কাজে লাগে?’- সমীকরণ নিয়ে এমন প্রশ্ন করা মেয়ে বন্ধুদের সাক্ষাত পেয়েছি! আর এইসব চরিত্রের মধ্য দিয়েই আপনি ‘সময় পরিভ্রমণের’ গল্প বলে গেলেন, যা কিনা আমার অনেক দিনের কৌতূহলের বিষয়।
তবে অভিজিৎ-দা, আমি কয়েকটি বিষয় নিয়ে কনফিউজড। যেমন:
(১)আপনার গল্পের ‘অদৃশ্য হয়ে যাওয়া’ আর দীপেন ভট্টাচার্যের ‘অদৃশ্য সমচ্ছেদ’ গল্পের ‘অদৃশ্য হয়ে ‘যাওয়া’ কি একই বৈজ্ঞানিক সূত্রে গাঁথা?
(২) আপনারই অন্য একটি লেখায় পড়েছিলাম, বহু জগতের কথা যেখানে একাধিক জগতে হয়ত একই মানুষ থাকবে অন্যভাবে। আপনার গল্পে কি তারই ইঙ্গিত রয়েছে?
(৩)
উপায়টি কি আসলে বাস্তবায়নযোগ্য? বিজ্ঞানীরা কি এমন স্বপ্ন দেখেন?
(৪) গল্পের মাছি, শাহানা, রুমাল বা কলম কি করে সময় ভ্রমণ করে ফেলল বিজ্ঞানীদের সাহায্য ছাড়াই? প্রাকৃতিক-ভাবে স্পেস-টাইম কি কখনো ফুটো হতে পারে?
পরিশেষে,আপনাকে অশেষ ধন্যবাদ মুক্তমনায় এমন জাঁকজমক গল্প নিয়ে ফিরে আসার জন্য।
@কাজি মামুন,
চমৎকার মন্তব্য। আপনার প্রশ্নগুলোও চিন্তাজাগানিয়া। দেখা যাক উত্তর দিতে পারি কিনা ।
‘তারা তিনজন’, ‘ফিহা সমীকরণ’ বা ‘নিষাদ’ আমারও খুব প্রিয় সায়েন্সফিকশন। আমার লেখাটি আমি মনে করি না তেমন ভাল কিছু হয়েছে বলে, হুমায়ুন আহমেদ বা জাফর ইকবালের সায়েন্স ফিকশনের পাশে আমার এই ছাইপাশকে দাঁড়া করালে লজ্জিতই হতে হবে।
হ্যা আমিও এইটেই চেয়েছি। সাদা মাঠা কিছু ঘটনা আর চরিত্রের মাধ্যমে বিজ্ঞানের জটিল বিষয়টাকে একটু নাটকীয়ভাবে তুলে ধরতে। আপনার কৌতুহল নিবৃত্ত করতে পেরে আমি সত্যই আনন্দিত। সময় পরিভ্রমণ শুধু নয় সময় ব্যাপারটাই আমার কাছে নিদারূণ কৌতুহলের বিষয় বেশ ক’বছর ধরেই।
দীপেন ভট্টাচার্যের ‘অদৃশ্য সমচ্ছেদ’ গল্পটার পুরো পর্বগুলো একসাথে পড়া হয়নি আগে। আপনি বলার পরে পড়ে দেখলাম। আমার মনে হল না তিনি ওয়ার্ম হোলের কোন ধারণা এতে ব্যবহার করেছেন। উনি কোয়ান্টাম মেকানিক্সের সেই পর্যবেক্ষণশীল বাস্তবতার সাথে এক ধরণের অদৃশ্য মহাজাগতিক তরঙ্গের মেলবন্ধন করে প্লট তৈরি করেছেন। ওয়ার্ম হোলের সাথে সম্ভবতঃ এর কোন যোগ নেই।
হয়তো আছে, হয়তো নেই। এ বৈজ্ঞানিক কল্পকাহিনিতে মূলতঃ আমি ওয়ার্ম হোলের মাধ্যমে সময় পরিভ্রমণের একটা প্লট তৈরি করেছি। সমান্তরাল মহাবিশ্ব কিংবা অনন্ত মহাবিশ্ব এতে উঠে আসেনি। তবে একটা ব্যাপার হয়তো লক্ষনীয়। বর্তমানের শাহানা আর অভিষ্যতের শাহানা এক সাথে এক জায়গায় থাকতে পারেনি। আপনি হয়তো খেয়াল করেছেন, বর্তমান শাহানা যেই মুহূর্তে ওয়ার্ম হোলের টানেল দিয়ে ভবিষ্যতে পৌঁছিয়েছে, ওমনি মল থেকে তখনকার শাহানা গায়েব হয়ে গিয়েছে। এর একটা ব্যাখ্যা দেয়া সম্ভব পদার্থবিজ্ঞানের সূত্র প্রয়োগে। তবে কাঠামোটা নিতান্তই আমার কল্পণা।
এটা বলা মুশকিল। ওয়ার্ম হোল গাণিতিক ভাবে আছে, বাস্তবেও হয়তো থাকতে পারে, কিন্তু ওয়ার্ম হোল দিয়ে কোন কিছু পাঠানো বা আনা রীতিমত দুঃসাধ্য। মেথিও ভেইজার নামের এক বিজ্ঞানী গণনা করে দেখেছেন যে, মাত্র ১ মিটার ওয়ার্মহোল বানাতে যে পরিমাণ ‘নেগেটিভ এনার্জি’ লাগবে, তা জুপিটারের ভরের সমতুল্য। বুঝতেই পারছেন – আমাদের ক্ষমতার বাইরে এটি। কিপ থোর্নের উদ্ধৃতি দিয়েই বলি –
It will trun out that the laws of Physics do allow sufficient exotic matter in wormholes of human size to hold worm hole open. But it will also turnout that the technology for making wormholes and holding them open is unimaginably far beyond the capibilities of our human civilization.
বৈজ্ঞানিক কল্পকাহিনিতে সব সময়ই কিছু স্বাধীনতা থাকে বিজ্ঞনের পরিসীমার মধ্যে থেকেই কল্পণাকে মেলে ধরার। আমরা দেখেছি – আইনস্টাইনের সমীকরণ অনুযায়ী ওয়ার্ম হোল থাকতে পারে, হয়তো আছেও। কিন্তু সেটার প্রকৃতি কী রকম আমরা জানি না। আমি কেবল সেটার একটা কাল্পনিক মডেল খাড়া করেছি কুদ্দুস স্যারের শ্রেনীকক্ষে, যে ওয়ার্ম হোল দিয়ে মাছি, কলম, রুমাল আর শাহানা গায়েব হয়ে যেতে পারে। 🙂
ধন্যবাদ আপনার মন্তব্যের জন্য।
@অভিজিৎ,
আরেকটু মজা করি..
জিরো পয়েন্ট মজ্যুল কিন্তু এই অফুরন্ত শক্তি ব্যভার করেই স্টারগেট চালু রাখে। কোয়ান্টাম ফোম নামক সাবস্পেস পকেট ব্যবহার করে সে এই জুপিটার-ভর-সম শক্তিই সরবরাহ করতে থাকে ডিপ্লিটেড হবার আগ পযর্ন্ত।
সাধে কি স্টারগেট দশ সিজন ধরে চলেছে… ইট কম্প্লিটলি মেকস সেন্স.. হাহাহা।
বাঙলাদেশে হাতে গোনা যেসব সাইন্স ফিকশন লেখক রয়েছেন, তাদের মধ্যে জাফর ইকবালের নাম অন্যতম। বর্তমানে আরো একজনের নাম যুক্ত হতে চলেছে, তিনি হচ্ছেন অভিজিতৎ রায়। তার সাফল্য কামন করি।
বাহ, দারুন। (F)
@সৈকত চৌধুরী,
তোমাকেও ধন্যবাদ, আর আরো বড় ধন্যবাদ ইমেইল করে বানান আর টাইপোগুলো নজরে আনার জন্য।
নতুন লেখা দাও। তোমার লেখা অনেকদিন ধরেই পেণ্ডিং! 🙂
বিজ্ঞান ও বিজ্ঞানীদের জীবনী সম্পর্কিত রচনা সবসময়ই আমার অত্যন্ত প্রিয়। কারন এই বিজ্ঞানের সৌজন্যেই তো আমরা নূতন নূতন বিষয় অবগত হয়ে ক্রমান্বয়ে উন্নত হতে উন্নততর জীবনের দিকে ধাবিত হতে পারি।
বিষয়টি সম্ভবতঃ বিজ্ঞানী আইনষ্টাইনের সময়ের আপেক্ষিকতার উপর একটি জটিল সূত্রের ব্যাখ্যা। এটা আমরা কি করে বুঝব। এটা তো তারাই ভাল বুঝবে যারা ফিজিক্সে এম.এস. বা পি এইচ ডি করছেন।
তবে আরো বিস্তারিত করে লিখলে আমরা আরো ভাল করে বঝতে সক্ষম হব।
ধন্যবাদ
@আঃ হাকিম চাকলাদার,
ধন্যবাদ আপনাকে!
সুন্দর লেগেছে (Y) (Y) (Y)
@মোহন,
ধন্যবাদ!
শেষের দিকটায় ঠিক সুবিধা করতে পারলাম না 🙁 🙁
(Y)
@অগ্নি,
তাহলে লেখক হিসেবে আমার ব্যর্থতাই বলব। আমার ধারণা ছিলো এই অংশটায় ইঙ্গিত খুব স্পষ্ট। মাঝখানের অংশে কুদ্দুস-শাহানার বিয়ে দেখানো হয়েছে। শাহানাকে ভাল লাগার ক্ষেত্র হয়তো তৈরি হয়েছিলো ওখানেই – সাবসিডিয়ারি ক্লাসে লোরেন্স ট্রান্সফরমেশন পড়ানোর সময় …।
যাহোক লেখাটা পড়ার জন্য ধন্যবাদ।
দারুণ প্লট। সুন্দর গল্প। :clap
তবে ওয়ার্মহোলের বিষয়টায় আরেকটু বলতে পারতেন। যারা আগে ওয়ার্মহোল নিয়ে পড়েনি তাদের হয়তো একটু বুঝতে ঝামেলা হবে, তবে এটা ঠিক তারাও গল্পটা উপভোগ করবে। কিন্তু যারা ওয়ার্মহোল সম্পর্কে জানে তারা বেশি মজা পাবে।
@নিটোল,
ইচ্ছে করেই ওয়ার্মহোল নিয়ে জ্ঞানগম্ভীর আলোচনায় যেতে চাইনি। এটা তো ওয়ার্মহোল নিয়ে আমার কোন বৈজ্ঞানিক প্রবন্ধ নয়। এটা সায়েন্স ফিকশন। ফিকশনটার উপরেই জোর দিয়েছি বেশি।
ওয়ার্ম হোল নিয়ে পলাশের উত্তরে কিছু বলেছি উপরে মন্তব্যে। দেখে নিতে পারেন।
গল্পের প্লট আপনার পছন্দ হয়েছে জেনে ভাল লাগলো।
মাছি, হাত, কল্ম, রুমাল, গিঁট—এই সবের সাথে ওয়ার্মহোলের কী সম্পর্ক কিছু বুঝলাম না।
যারা পদার্থ বিজ্ঞানে পি এইচ ডি করেছে তাদের অবশ্য বুঝতে অসুবিধা হবে না।
গল্পটা কি সময় ভ্রমণের উপর?
তবুও রচনাটি ভাল হয়েছে।
@আবুল কাশেম,
🙂 এইটা অবশ্য আমিও বুঝলাম না। লেখক যে কি ছাতা মাথা লিখছে কে জানে!
হুমম … বড়ই মুশকিল হল। গল্প লিখে আবার আমাকেই যদি ব্যাখ্যা করতে হয়, তাহলে বুঝতে হবে লেখক হিসেবে আমি কতটা ‘সফল’!
এক কাজ করতে পারেন, এখানে অমিত আহমেদের সাথে আমার আর ব্রাইট স্মাইলের কথোপকথোনটা দেখে নিতে পারেন। হয়তো কিছুটা পরিস্কার হলেও হতে পারে।
তা আর বলতে! :-s
পেশা পরিবর্তনের জন্য অভিনন্দন। 🙂
@ফরিদ আহমেদ,
পেশা না নেশা পরিবর্তন তা অবশ্য নিশ্চিত নই। সিগেরেট ছেড়ে গাঞ্জা ধরার মতোই মনে হচ্ছে। 🙂
@অভিজিৎ,
পেশাই হবে। তুমিতো সবসময় পয়সা খেয়েই লেখালেখি করো। কখনো ইহুদি-নাসাদের, কখনো বা জামাতের কাছ থেকে। এইবার কোন গ্রুপ দিছে কে জানে।
হুম! এইবারের পেমেন্ট মনে হচ্ছে আগের চেয়ে বেশি।
@ফরিদ আহমেদ,
হেঃ হেঃ জামাত ইহুদি নাসারা কিছুই বাদ দিলেন না। আপনেরই বিপদ। আপনে কই জানি নিজেই স্বীকার করছিলেন, আমার সাথে ‘মহাবিশ্বে প্রাণ ও বুদ্ধিমত্তার খোঁজে’ বইটা লিখা রয়ালিটির টেকা পাইছেন, আর ঐটা দিয়ে অর্করে খেলনা কিন্যা দিছিলেন।
ইয়াহুদি নাসারা আর জামাতের টেকা আপনের পেটেও পড়তাছে কইলাম…
এইবার দিছে সাইমুম শিল্পী গোষ্ঠী :)) 😉
@ফরিদ ভাই,
এটা কী???? মোটে সার্জারি থেকে উঠে এসে তো আমার রীতিমত হার্ট এ্যটাক হওয়ার মত অবস্থা! কয়েক মাস মুক্তমনা না দেখার ফলাফল যে এটা হবে তা কিন্তু ভাবতেও পারিনি!!! এটাকে কোন ধরণের ‘পতন’ বলে অভিহিত করা ঠিক হবে তা কিন্তু বুঝে উঠতে পারছি না ;-( । অভিজিত রায় যে বিজ্ঞান নিয়ে লেখালেখি ছেড়ে দিয়ে কল্প-বিজ্ঞান গেলানোর পেশায় পদার্পণ করলো সেটাকে আপনি কিভাবে দেখেন আমি জানি না, আমার কেমন যেনো একটা ‘প্রতারণা’ ‘প্রতারণা’ টাইপের অনুভূতি হচ্ছে! আপনার ??
@বন্যা আহমেদ,
আপনার কমেন্টটা দেখে অনেক ভালো লাগছে। আমার ধারণা বেশি খুশিতে অভি’দার এই ‘পতন’ :)) ।
@বন্যা আহমেদ,
একে বলে উর্ধ্ব পতন। আগে লিখতো বিজ্ঞান নিয়ে এখন লেখে কল্পবিজ্ঞান।
প্রতারণা মানে কী, এ হচ্ছে মহাপ্রতারণা। সেই সাথে বাটপারিও বটে। টাকা খাইছে সাইমুম শিল্পী গোষ্ঠীর কাছ থেকে। আমি ওই শিল্পী গোষ্ঠীর হয়ে গান-বাজনা করে আসলাম। আর এখন ওরা টাকা দেয় অভিরে। এর থেকে অবিচার আর কী আছে?
তবে অভি-ই শুরু না। এই রকম প্রতারণা আগেও বহু বহু কামেল পাবলিকে করছে। কার্ল স্যাগান, আর্থার সি ক্লার্ক, আইজাক আসিমভ, এই সব বিজ্ঞান লেখকেরাও কল্পবিজ্ঞান লিখছে দুই হাত খুলে।
তোমার চিল্লাফাল্লা দেখে বুঝছি ভালো আছো এখন। মুক্তমনায় পুনঃ আগমনে স্বাগতম। তুমি আর স্বর্গগত স্নিগ্ধা ছাড়া মুক্তমনা জমে না। 🙂
@বন্যা আহমেদ,
খুব ভালো লাগছে আপনাকে মুক্তমনায় দেখে। এখন কেমন আছেন?
শুরু করলে শেষ না করে ওঠা যায়না টাইপ গল্প। ” সেটিং” এবং চরিত্রের বর্ননার ভাষা ভাল লাগল। অভিজিৎদা আপনার ছোট গল্প +সায়েন্স ফিকশন লেখার এই প্রয়াস মোটেও অপচেষ্টা না। আপনার লেখা আরো গল্প পড়তে চাই।
@সুমনা রহমান,
যাক আপনাকে অবশেষে এখানে পাওয়া গেল। এখন আর মাফ নেই। আপনিও অপচেষ্টা মানে লেখা শুরু করুন। আর হ্যা, ইমেইল চেক করুন।
মোটেও ভালো লাগলো না| ওয়ার্ম হোল নিয়ে বিশ্লেষণমূলক তথ্য সমৃধ্য লেখা চাই| কল্প বিজ্ঞান লেখাতে কল্পনার পরিমান বেশি| ওয়ার্ম হোল এর প্রকৃত তথ্য জানতে চাই|
@পলাশ,
এ লেখাতে তাই থাকবে ধরে নিয়েই লেখাটা লিখেছিলাম; সেটা প্রথম মন্তব্যে বলেছিলামও –
বছর খানেক আগে মিচিও কাকুর ‘ফিজিক্স অব দি ইম্পসিবল’ বইটা পড়ার সময় থেকেই ওয়ার্মহোল নিয়ে সায়েন্সফিকশনের এই প্লটটা মাথায় ঘুরছিলো। আজ নামিয়ে দিলাম। লেখাটাতে সায়েন্সের চেয়ে হয়তো ফিকশনই বেশি; যদিও কুদ্দুস স্যারের পড়ানোতে মানে ওয়ার্মহোল সম্পর্কে বৈজ্ঞানিক তথ্যগুলোতে কোন গাফিলতি রাখিনি।
যাহোক, মূল কথা হল – আপনি যে ‘বিশ্লেষণমূলক তথ্য’ পেতে চাইছেন সে জন্য এ লেখা নয় (এ ধরণের লেখা তো আমি অনেকই লিখলাম), এক্ষেত্রে পাঠকদের একটা হাল্কা গল্পের স্বাদ দেয়াটাই ছিলো মূখ্য।
খুব সাদামাঠাভাবে ওয়ার্মহোল একটি হাইপোথিটিকাল কনসেপ্ট – স্পেসটাইমের মধ্য দিয়ে একধরণের শর্টকাট – যেটা সময় পরিভ্রমণকে বাস্তবতা দিতে পারে বলে অনেক বিজ্ঞানী মনে করেন। এ নিয়ে অনেক বই এবং সাইট আছে। মিচিও কাকুর যে বইটির (Physics of the Impossible) উল্লেখ করেছি সেটা দেখতে পারেন। এছাড়া পড়তে পারেন এই বইগুলোও –
* Jim Al-Khalili, Black Holes, Wormholes & Time Machines
* Byron Hansen and Dennis Meier, The Wormhole Device
* Richard Hammond , The Unknown Universe: The Origin of the Universe, Quantum Gravity, Wormholes, and Other Things Science Still Can’t Explain
* Phil Hornshaw, So You Created a Wormhole: The Time Traveler’s Guide to Time Travel ইত্যাদি।
উইকিতেও এ নিয়ে ভাল আলোচনা আছে। দেখতে পারেন।
খুব ভালো লাগলো গল্পের গাঁথুনি। কুদ্দুস স্যারের প্রতি এক ধরনের জেলাসি (বাংলা শব্দটা অভ্রতে লিখতে পারছি না আপাতত)অনুভব করছি – শেখানোর প্রতি তাঁর আগ্রহের কারণে। একজন পাঠকের মনে এরকম বোধ তৈরি করতে পেরেছেন অভিজিৎ।
@প্রদীপ দেব,
আমিও! 🙂
ধন্যবাদ পড়ার জন্য, আর মন্তব্যের জন্য, প্রদীপ!
বেশ লাগলো গল্পটা। এখন থেকে নিয়মিতই সায়েন্স ফিকশন লিখবেন আশা করি।
(অপ্রাসঙ্গিক: একজন শিক্ষকের তার বর্তমান ছাত্রীকে চা খেতে ডাকার মাঝে একটা অনৈতিক গন্ধ আছে। দেশে অবশ্য এমনটা প্রায়শই হয়।)
@অমিত আহমেদ,
আপনার অপ্রাসঙ্গিক নামাঙ্কিত অংশটাই ভাল লাগলো বেশি।
কুদ্দুস স্যার চা খেতে কিন্তু তখনো ডাকেননি। আপনার মতো করেই ভাবছিলেন কেবল – টিএসসিতে চা খেতে ডাকলে খুব কী অন্যায় করা হবে? কোন কিছু ভাবা আর করে ফেলার মধ্যে কিন্তু অনেক ফারাক। কতো কিছুই তো আমরা ভাবি, তাই না? করা আর হয়ে উঠে কই 🙂
আর শেষ পর্যন্ত কুদ্দুস স্যার সাহস করে ব্যাপারটা করেছিলেন কী না, কে জানে! ব্যাপারটা বরং কুদ্দুসের উপরেই ছেড়ে দেয়া যাক।
@অভিজিৎ,
কুদ্দুসের উপরেই ছেড়ে দেয়া হবে কেন, শেষ পর্য্যন্ত কুদ্দুস স্যার সেটা করতে পেরেছিলেন বলেইতো শাহানার ভবিষ্যতের এরিজোনা স্টেটের বাড়ীটি দেখে আসার সুযোগ ঘটেছিল। আমারতো তাই মনে হয়েছে।
@ব্রাইট স্মাইল্,
পাঠক হিসেবে আপনার দূরদৃষ্টি আছে বলতে হবে। হ্যা, আপনার কথা সঠিক হবার বেশ ভাল সম্ভাবনাই আছে স্বীকার করছি। হয়তো সত্যিই শাহানা ভবিষ্যতের অ্যারিজোনা স্টেটের বাড়িতে গিয়েছিলো। কিন্তু বিবাহপুর্ব পরিচয় আর পরিণয়ের ক্ষেত্রটি টিএসসিতে চায়ের আপ্যায়ন না করেও হতে পারে। হয়তো টিএসসি তে চা খেতে ডাকার ব্যাপারটা শেষ পর্যন্ত কুদ্দুস স্যারের অলস কল্পণাতেই থেকে গেছে! ক্লাসের পরে মেয়েটির সাথে কথা বলবেন বলে ঠিক করেন তানভীর কুদ্দুস। লেখকের বক্তব্য এখানেই শেষ।
ক্লাসের শেষ হবার পরে কুদ্দুস স্যার শাহানাকে কী ভাবে তা ম্যানেজ করেছেন সেই কল্পণার জন্য এই গল্পের লেখক দায়ী নহেন। 🙂
@অভিজিৎ, কুদ্দুস শাহানাকে চা খেতে ডাকলেও কিন্তু গল্পের কোনো ক্ষতি হচ্ছে না। কুদ্দুস বাঙালি এবং গল্প থেকে অনুমান করা যায় সম্ভবত মফস্বলে বড় হয়েছেন। ছাত্রীকে চা খেতে ডাকার মধ্যে তিনি কোনো দোষ খুঁজে নাও পেতে পারেন। দেশে ছাত্রীকে বিয়ে করার ঘটনা তো অহরহই ঘটছে। সেক্ষেত্রে লেখক হিসেবে বাস্তবতার কাছাকাছিও থাকা হলো। গল্পের একটি চরিত্রের দোষ-গুনের দায়বন্ধতা তো লেখকের নয়। বরং একটি চরিত্রের প্রেক্ষিতে যে এ বিষয় নিয়ে আলাপ হচ্ছে (পরোক্ষ ভাবে হয়তো সচেতনতাও তৈরি হচ্ছে) সেটাই লেখকের সার্থকতা ও পাঠকের লাভ।
(লগইন করতে ভুলে গিয়ে এই কমেন্ট হারিয়ে ফেলেছিলাম।)
@অমিত আহমেদ,
তা তো হচ্ছেই না। হয়তো তিনি শাহানাকে সত্যই টিএসসিতে ডেকেছিলেনই। কিন্তু ক্লাস শেষের পরে কুদ্দুস সাহেব কী করেছিলেন সেটা আর লেখকের বক্তব্য নয়, বরং পাঠকের কল্পনার খোরাক।
অবশ্য সেটা আমার তরফ থেকে না বললেও তেমন ক্ষতি হতো না। তবে আপনি প্রথমে কুদ্দুস ব্যাটার কাজে একটা “অনৈতিক গন্ধ ” পেলেন বলেই না লেখক অযথা রাহুল দ্রাবিড়ের মতো ডিফেন্সিভ খেলা শুরু করলো। এর আগে তো দিব্যি মার মার কাট কাটই চলছিলো । 🙂
তো আপনি মুক্তমনার জন্য লিখছেন কবে থেকে?
দারুণ হয়েছে গল্পটা অভিজিৎ’দা! পড়তে পড়তে প্রথম অংশ যখন শেষ হোল, তখন মনে মনে কমেন্ট ভাবলাম, ‘হুমম, ভালো হয়েছে।’ তারপর দ্বিতীয় অংশটার মাঝামাঝি এসে সমালোচনা করার জন্য রেডি হয়ে গেলাম। ধরেই নিয়েছিলাম এমন কোনও জায়গায় মেয়েটা জেগে উঠবে, যেটা তার স্মৃতি থেকে তৈরি করে নেওয়া হয়েছে। গল্পটা যে এরকম একটা টার্ন নেবে, সেটা ভাবিই নাই।
উত্তম জাঝা! 😀
@অন্যকেউ,
ধন্যবাদ অন্যকেউ!
টুইস্ট এণ্ড টার্ণগুলো থেকে আপনি স্বাচ্ছন্দ্যে বেড়িয়ে আসতে পেরেছেন তাতে করে আপনাকেও “উত্তম জাঝা” দেওয়া লাগে! 🙂
ভালো লাগলো সুন্দর করে লেখা এই কল্পবিজ্ঞানটি। (F)
@ব্রাইট স্মাইল্,
পড়ার জন্য আপনাকেও ধন্যবাদ।
অভিজিৎ দা, যেই না আমার নিউজ ফীডে দেখতে পেলাম আপনি লেখা পোষ্ট করেছেন তাও আবার আমার খুবই একটা প্রিয় বিষয় ‘ওয়ার্ম হোল’ নিয়ে, খুশীতে না পড়েই প্রথম মন্তব্য টা করতে ইচ্ছে হল। এখন পড়া শুরু করছি 🙂
@এমরান এইচ,
ধন্যবাদ। পড়ে কেমন লাগলো জানলে ভাল লাগতো।
@অভিজিৎ দা,
খুবই ভাল লেগেছে; গল্প টা পড়ে ত এখন আমার ফিজিক্সের টীচার হতে ইচ্ছা করছে.. lol 😉 🙂 তবে ভবিষ্যতের শাহানা তখন কোথায় ছিল সে ব্যাপারে কৌতুহল টা রয়েই গেল 🙂
@এমরান এইচ,
এটার উত্তর এখানে।
অভিজিতের ‘অসম্ভব্যতার নীতি -১’ অনুযায়ী –
বর্তমানের শাহানা আর অভিষ্যতের শাহানা এক সাথে এক জায়গায় থাকতে পারেনা। সেজন্যই, বর্তমান শাহানা যেই মুহূর্তে ওয়ার্ম হোলের টানেল দিয়ে ভবিষ্যতে পৌঁছিয়েছে, ওমনি মল থেকে তখনকার শাহানা গায়েব হয়ে গিয়েছে।
বলা বাহল্য, অভিজতের ‘অসম্ভব্যতার নীতি -১’ একটি পরীক্ষিত সত্য। এই নীতির বাস্তবতা জনাব ফরিদ আহমেদ একটি বর্তুলাকার চক্র পরীক্ষার মাধ্যমে প্রমাণ করেছেন ২০১০ সালে পাবনার হেমায়েতপুরে। 🙂
বিক্ষিপ্ত সময়ে সিরিয়াস বিষয় লেখালিখি করতে ইচ্ছে হয় না। আমারও তাই। হাল্কা একটা বিষয় নিয়ে গল্প লেখার ইচ্ছে হল আজ। এক ধরণের অপচেষ্টাই বলা যায়।
গল্প টল্প আমি কখনো লিখিনি। আর বৈজ্ঞানিক কল্পকাহিনী লেখার তো প্রশ্নই উঠে না।
বছর খানেক আগে মিচিও কাকুর ‘ফিজিক্স অব দি ইম্পসিবল’ বইটা পড়ার সময় থেকেই ওয়ার্মহোল নিয়ে সায়েন্সফিকশনের এই প্লটটা মাথায় ঘুরছিলো। আজ নামিয়ে দিলাম। লেখাটাতে সায়েন্সের চেয়ে হয়তো ফিকশনই বেশি; যদিও কুদ্দুস স্যারের পড়ানোতে মানে ওয়ার্মহোল সম্পর্কে বৈজ্ঞানিক তথ্যগুলোতে কোন গাফিলতি রাখিনি।
লেখা হিসেবে উৎরে গেছে কিনা তা পাঠকেরাই ভাল বলতে পারবেন।
@অভিজিৎ,
আমি বিজ্ঞান বুঝিনা। কিন্তু, আপনার গল্পের পাকা হাত দেখে আমি অভিভূত হয়ে গেলাম। আপনার কাছে
আরো এই রকম গল্প দাবী রাখছি।
@আফরোজা আলম,
আপনাকেও ধন্যবাদ। আমি পেশাদার গল্প লিখিয়ে নই। আর নিজের গল্প নিয়ে আমি মোটেও সন্তুষ্ট নই। সম্ভবতঃ প্রথম গল্প হিসেবে পাঠকদের দয়া দাক্ষিণ্য পেয়েছি, তাই কেউ তেমন সমালচনা করেননি।
যদি সময় আর সুযোগ হয় এ ধরণের কিছু লেখার চেষ্টা করবো অবশ্যই।