আবুল কাশেম
মার্চ ৫, ২০১১
৩য় পর্বের পর।
ইসলামী দেন মোহর (মোহরানা) কী জন্যে?
দেন-মোহর ছাড়া আইনত: ইসলামী বিয়ে হতে পারে না। দেন মোহর হল কিছু টাকা বা সম্পত্তি যা বর কনেকে দেবে।
কোরানে আছে,
সুরা নিসা আয়াত নম্বর ৪ (৪:৪)-এ:
আর তোমরা স্ত্রীদেরকে তাদের মোহর দিয়ে দাও খুশী মনে। তারা যদি খুশী হয়ে তা থেকে অংশ ছেড়ে দেয়, তবে তা তোমরা স্বাচ্ছন্দে ভোগ কর।
ভালো কথা! কিন্তু মোহরটা আসলেই কি? এটা কি দান? মোটেই নয়। উপহার? তৌবা তৌবা! না, এটা আসলে মূল্য শোধ ছাড়া আর কিচ্ছু নয়। কিসের মূল্য? নারীর শরীরের মূল্য। শুধু শরীরের মূল্য-ই নয়, একেবারে শরীরের গোপন অঙ্গের মূল্য। শুনতে খারাপ লাগছে? মা-বোন নিয়ে কথা, খারাপ লাগার-ই কথা। কথাটা আমি-আপনি বললে সবাই দুর-দুর করবে,পাত্তাই দেবেনা। কিন্তু সেই একই কথা যদি ইসলামী আইনের বিশ্ববিখ্যাত লেখক মওলানা আবদুর রহমান ডোই তাঁর ‘শারিয়া দি ইসলামিক ল’ বইতে ১৬২ পৃষ্ঠায় স্পষ্টই বলেন, তবে? পাঠক দয়া করে বইটা খুলে দেখুন, মওলানা সাহেবের মতে মোহর অবশ্যই মূল্য শোধ ছাড়া আর কিছু নয়। কিসের মূল্য শোধ, মওলানা সাহেব? মুখ ফুটে বলেন না কেন কথাটা? কিঞ্চিৎ অসুবিধে লাগে? আচ্ছা, আপনি না বলুন, ওদিকে সহিহ্ বোখারি ঠিকই হাটে হাঁড়ি ভেঙ্গে সব গোমর ফাঁস করে দিয়েছে। কেতাবে লেখা আছে বলে বাধ্য হয়েই হোক আর যে কোন কারণেই হোক, কোন মওলানা বেকায়দা অস্বস্তিকর কথা বললেই তার কথাকে সমুদ্রে নিক্ষেপ করাটা আজকাল মুসলমানদের সংস্কৃতি হয়ে দাঁড়িয়েছে। কাজেই xxxx আর আবুল কাসেমের মত গঠনমূলক সমালোচকের দল তো বাদ-ই, ডোই সাহেব-ও বাদ দেয়া যাক। কিন্তু সহিহ্ বোখারি তো বাদ দেবার কোন উপায়ই নেই। ওগুলো তো ইসলামের অবিচ্ছেদ্য অঙ্গ!
দেখুন।
সহিহ্ বোখারি ভলুম ৭ হাদিস ৮১:
উকবার বর্ণনামতে নবী (দঃ) বলেছেন: (বিয়ের) যে সব বিধানের মাধ্যমে তোমাদের অধিকার দেয়া হয়েছে (নারীদের) গোপন অঙ্গ উপভোগ করবার, সেগুলো মেনে চলতেই হবে।
ব্যস। গোপন অঙ্গও বলা হল, উপভোগও বলা হল, দাম দেবার কথাও বলা হল। আর তা কিন্তু বলা হল শুধু পুরুষকে-ই, নারীদের নয়। আর কি বাকী থাকল তাহলে বুঝতে? কাজেই, ‘নারীর আর্থিক নিরাপত্তার’ বক্তৃতা যত লম্বা গলাতেই যত চীৎকার করেই বলা হোক না কেন, মূল্যটা কেন যে শুধু পুরুষকে –ই শোধ করতে হচ্ছে এবং কোন বস্তুর জন্য শোধ করতে হচ্ছে, তা এখন গাধাও বুঝবে।
ইসলামী বিশ্বকোষের (ডিকশনারি অব ইসলাম) ৯১ পৃষ্ঠাতেও কথাটা আছে।
দেখুন আরও একটি হাদিস:
সুনান আবু দাউদ, বই ১১ হাদিস ২১২৬:
বাসরাহ্ নামে এক আনসারি বর্ণনা করলেন:
আমি পর্দায় আবৃত থাকা এক কুমারীকে বিবাহ করলাম। আমি যখন তার নিকটে আসলাম তখন তাকে দেখলাম গর্ভবতী। (আমি ব্যাপারটা নবীকে জানালাম।) নবী (সাঃ) বললেন: ‘মেয়েটি মোহরানা পাবে। কেননা তুমি যখন তাকে মোহরানা দিলে তখন তার যোনি তোমার জন্য আইনসিদ্ধ হয়ে গেল। শিশুটি তোমার ক্রীতদাস হবে এবং শিশুর জন্মের পর মেয়েটিকে প্রহার করবে (এই মত ছিল হাসানের)।‘ ইবনে আবুস সারী বলেছেন: ‘তোমার লোকেরা তাকে প্রহার করবে—খুব কঠোর ভাবে।‘
এবং এই হাদিস।
সুনান আবু দাউদ, বই ১১ হাদিস ২১২১:
মোহাম্মদ ইবনে আবদুর রহমান ইবনে সওবান নবীর (দঃ) এক সাহাবি থেকে বর্ণনা করলেন: আলী নবীর (দঃ) কন্যা ফাতেমাকে বিবাহ করে তাঁর সাথে সহবাস করতে চাইলেন। আল্লাহ্র নবী (দঃ) আলীকে নিষেধ করলেন তাঁর কন্যার সাথে সহবাস করতে যতক্ষণ না আলী ফাতেমাকে কিছু দিয়ে দেন। আলী বললেন: ‘আমার কাছে কিছুই নেই’। আল্লাহ্র রসুল (দঃ) বললেন: ‘তোমার যুদ্ধের পোশাক তাকে দিয়ে দাও।‘ আলী তাই করলেন এবং ফাতেমার সাথে সহবাস করলেন।
যাহোক, এখন দেখা যাক নারীর ‘গোপন অঙ্গ’-কে ‘উপভোগ’-এর যে মালিকানা, তার মূল্য কত হতে পারে। নারীর জন্য তা যতই অমূল্য সম্পদ হোক, শরীরটা হোক তার নিজেরই, কিন্তু তার দাম ধরবার বেলায় নারীকে কি জিজ্ঞাসা করা হয়েছে? পাগল!’বিক্রেতা’ নারী, দাম ধরবার মালিক কিন্তু ক্রেতা, অর্থাৎ পুরুষ! ক্রেতা ইচ্ছে করলেই সে বাজারে প্রচুর ‘মূল্যহ্রাস’ও করে ফেলতে পারে। করে ফেলেছেও। কি চমৎকার উদ্ভট বাজার, তাই না? মূল্যহ্রাসের উদাহরণ চান? নারী রাজী হলে ব্যাপারটা একেবারে মুফত, ফ্রি, পয়সা-কড়ি না হলেও চলবে। লক্ষ লক্ষ গরীব হতভাগ্য বাপ-মায়ের হতভাগিনী মেয়েরা রাজী না হয়ে যাবে কোথায়? অদৃশ্য অর্থনৈতিক দড়ির শৃঙ্খল পরানো আছে না তাদের গলায়? বাপ বাপ বলে রাজী হবে তারা।
আবার খুলে দেখুন মওলানা ডোই-এর ইসলামী আইনের বই, পৃষ্ঠা ১৬৩ আর ১৬৪, কোরান থেকে পুরুষ দু’চারটা আরবি উচ্চারণ করলেই মূল্য শোধ হয়ে গেল। কিংবা একজোড়া জুতো হলেও চলবে। নতুন না পুরনো জুতো তা অবশ্য বলা হয় নি। আমরা ভালো করেই জানি আমাদের স্ত্রীরা কত অমূল্য, কত স্বর্গীয়। তাদের মূল্য শুধুমাত্র একান্ত আবেগ দিয়ে, পরম ভালোবাসা দিয়ে এবং চরম সহানুভূতি দিয়েই শোধ দিতে হবে। তাকে এত অবমাননা করবার, এত সস্তা করার অধিকার ইসলামকে কে দিল?
পাঠক! এখানেই শেষ নয়, এ তো সবে শুরু। এর পরে আছে স্ত্রীকে শত-সহস্র হাতে জড়িয়ে ধরা। আবেগে নয়, ভালোবাসায় নয়, মানবতায় তো নয়ই। জড়িয়ে ধরা শৃঙ্খলে শৃঙ্খলে, আদেশে নির্দেশে, অজস্র তর্জনী-সংকেতে, ইহকাল পরকালের শাস্তিতে শাস্তিতে। ক্ষমাহীন স্পর্ধায় দলিত-মথিত করা তার চলন-বলন, আচার-বিচার, মন-মানস, ব্যবহার-ব্যক্তিত্ব, ধ্যান-ধারণা, জীবন-মরণ।
দেখুন।
১। সহিহ্ মুসলিম, বই ৮ হাদিস ৩৩৬৬:
আবু হুরায়রা (রাঃ) বলেছেন যে, নবী দঃ) বলেছেন, যে স্ত্রী স্বামীর বিছানা থেকে অন্যত্র রাত্রি যাপন করে, ফেরেশতারা তাকে সকাল পর্যন্ত অভিশাপ দিতে থাকে।
২। সহিহ্ মুসলিম, বই ৮, হাদিস ৩৩৬৭:
আবু হুরায়রা (রাঃ) বলেছেন যে, নবী দঃ) বলেছেন: যাঁর হাতে আমার জীবন (আল্লাহ) তাঁর নামে বলছি, যদি কোন স্বামী তার স্ত্রীকে বিছানায় ডাকে, আর সে স্ত্রী সাড়া না দেয়, তবে সে স্বামী খুশী না হওয়া পর্যন্ত আল্লাহ তার প্রতি অসন্তুষ্ট থাকেন।
৩। ইমাম গাজ্জালী, বই এহিয়া উলুম আল দীন, ভলুম ১ পৃষ্ঠা ২৩৫:
নিজের সমস্ত আত্মীয়, এমন কি নিজের থেকেও স্বামীকে বেশী প্রাধান্য দিতে হবে। যখনই স্বামীর ইচ্ছে হবে তখনই সে যাতে স্ত্রীকে উপভোগ করতে পারে সে জন্য স্ত্রী নিজেকে সর্বদা পরিষ্কার এবং তৈরি রাখবে।
৪। ইমাম শাফি শারিয়া আইন (উমদাত আল সালিক) থেকে, পৃষ্ঠা ৫২৫ আইন নম্বর এম-৫-১:
স্বামীর যৌন-আহ্বানে স্ত্রীকে অনতিবিলম্বে সাড়া দিতে হবে যখনই সে ডাকবে, যদি শারীরিকভাবে সে স্ত্রী সক্ষম হয়। স্বামীর আহ্বানকে স্ত্রী তিনদিনের বেশী দেরি করাতে পারবে না।
৫। শারিয়া আইন থেকে (উমদাত আল সালিক), পৃষ্ঠা ৫২৬ আইন নম্বর এম-৫-৬:
যৌন মিলনের জন্য শরীর পরিষ্কার রাখার ব্যাপারে স্ত্রীকে চাপ দেবার অধিকার স্বামীর আছে।
৬। শারিয়া আইন থেকে, পৃষ্ঠা ৯৪ আইন নম্বর ই-১৩-৫:
স্ত্রী যদি বলে তার মাসিক হয়েছে আর স্বামী যদি তা বিশ্বাস না করে, তাহলে স্ত্রীর সাথে সহবাস করা স্বামীর জন্য আইনত: সিদ্ধ।
মানেটা ঠিক বোঝা যাচ্ছেনা বটে, কিন্তু ওই কথাগুলোই লেখা আছে বইতে।
৭। শারিয়া আইন ত্থেকে, পৃষ্ঠা ৫৩৮ আইন নম্বর এম-১০-৪:
নবী (দঃ) বলেছেন, আল্লাহ এবং কেয়ামতে যে স্ত্রী বিশ্বাস করে, সে স্বামীর অনিচ্ছায় কাউকে বাসায় ঢুকতে দিতে বা বাসার বাইরে যেতে পারবে না।
কেন? বাসার বাইরে যেতে পারবে না কেন? স্ত্রী কি গরু-ছাগল, না গাধা? যে স্ত্রী সারা জীবনের সাথী, তাকে বিশ্বাসও করা যাবে না, স্বামীর উত্তেজনার সময়? খুলে খুলে দেখতে হবে তার শরীর? উহ!! সহবাস, সহবাস আর সহবাস! মিলন, মিলন আর মিলন! শরীর, শরীর আর শরীর! যৌবন, যৌবন আর যৌবন! বেহেশতে হুরী, হুরী, আর হুরীর শরীরের বর্ণনা আর যৌন-প্রলোভন! আইন, আইন আর আইন! চাপ, চাপ আর চাপ! বাঁধন, বাঁধন আর বাঁধন! আইনের-বিধানের এই দম বন্ধ করা বজ্র-আঁটুনিই হয়ে দাঁড়িয়েছে ইসলামের সখাত-সলিল, হয়ে দাঁড়িয়েছে প্রকাণ্ড একটা ফস্কা গেরো। আজ যে পৃথিবীর বেশীর ভাগ মুসলমান হয়ে গেছেন ‘নন-প্র্যাকটিসিং’, অর্থাৎ নামাজ-রোজা-হজ্ব-জাকাত না করা মুসলমান, তার প্রধান কারণটাই এটা। পৃথিবীতে আর কোন ধর্ম উঠতে বসতে প্রতিটি দিন মানুষের এত বেশী সময় নেয় না, দশদিক দিয়ে অক্টোপাসের মত এত চেপে ধরে না। ধর্মের নামে অত্যাচার অনাচার ছাড়াও উঠতে বসতে, চলতে ফিরতে, খেতে-পরতে, ব্যবহারে-ব্যক্তিতে, ধ্যানে-ধারণায়, হাঁচ্চি-কাশিতে, ঘরের বাইরে এমনকি বাথরুমে পর্যন্ত যেতে আসতে ইসলামের কিছু না কিছু বিধান আছেই। তা হলে আর মগজ দিয়ে করব টা কি? মানুষ কি প্রোগ্রাম করা রবোট না কি? এ কথাই বলেছিলেন কাজী ওদুদ আর আবুল হূসেন, সেই উনিশ’শো তিরিশ-চল্লিশ সালেই, ‘আদেশের নিগ্রহ’ ইত্যাদি লিখে। এবং এর ফলে মহা ঝামেলায় পড়েছিলেন মওলানাদের হাতে।
“এভাবে চললে বাংলার মুসলমানের সর্বনাশ হয়ে যাবে, ধর্ম বলছে: ‘চোখ বুঁজে মেনে চল, দর্শন বলছে চোখ খুলে চেয়ে দেখ’,- বলে গেছেন আবুল হুসেন সেই আশী বছর আগেই। কেউ কথা শোনেনি, সর্বনাশটা ঘটেই যাচ্ছে প্রায়।
তাহলে আমরা দেখলাম, মুখে ইসলাম যা-ই বলুক, আসলে যৌবনের কামুক উন্মাদনা এবং বাচ্চা বানানোর যন্ত্র হল স্ত্রীর অন্য সবচেয়ে বড় পরিচয়। ইসলাম তো ধরেই নিয়েছে যে স্ত্রীরা ‘তোমাদের পয়সা খরচ করে’ এবং চিরকাল করেই চলবে। তারা কোনদিনই নিজেরা উপার্জন করবে না। কাজেই স্বামীর কর্তব্য হল স্ত্রীর খরচ চালানো।
ভালো! তা, সে খরচটা কত? সেটাও আমার-আপনার বুদ্ধি-বিবেকের ওপর, স্বামী-স্ত্রীর পারস্পরিক ভালোবাসার সম্পর্কের ওপর ছেড়ে দিতে ভরসা পায়নি ইসলাম, খরচের পরিমাণ নির্ধারণ করে দিয়েছে।
ভেবেই পাইনা ইসলাম আর কতকাল মানুষকে বাচ্চা ছেলের মত আঙ্গুল ধরে ধরে হাঁটানো স্পর্ধা দেখাবে। পাহাড়ের গুহা থেকে উঠে এসে মানুষ এখন চাঁদের পাথর কুড়িয়ে আনছে, তার কি কোন সম্মান নেই? এই যে মানুষকে যুগ যুগ ধরে এত প্রচণ্ড পরিশ্রম করে, রাতদিন নাওয়া খাওয়া ঘুম হারাম করে এত গবেষণা করে নানা রকম রোগের ওষুধ বানাতে হল, তখন ইসলাম কোথায় ছিল? হাসপাতালের অসংখ্য রকম মেশিনের অকল্পনীয় সূক্ষ্ম কর্মকাণ্ড দেখলে মাথা খারাপ হয়ে যায়। একটা জাহাজ বা এরোপ্লেনেই বা কত শত কারিগিরী! সুপারসনিক প্লেন, আকাশ ছোঁয়া বিল্ডিং বা টাওয়ার বা সেতু দেখলে, মহাশুন্যগামী রকেট বা সাগরতলের গবেষণার কথা ভাবলে মানুষের ভবিষ্যৎ সম্ভাবনায় মানুষ হিসেবে বুক গর্বে ফুলে ওঠে। সেই মানুষকে বলে দিতে হবে, কার কত খরচ? আইন বানিয়ে লিখে দিতে হবে, চুরি ডাকাতির শাস্তি কি? আশ্চর্য!
এই ব্যাপারে আমরা আরও পড়ব আসছে অনুচ্ছেদে।
এবার আসি খোরপোষের কথায়। খোরপোষ হল স্বামী তার স্ত্রীকে যে ভরণপোষণ দেবে সেটা। এ ভারটা স্বামীকে বইতেই হবে। ভালো! কিন্তু ভালোটা ঐ পর্যন্তই। আসলে এ ব্যাপারে ইসলামের শারিয়া মেনে চললে মানবতা জবাই হতে বাধ্য। বিশ্বাস হচ্ছে না? হবে। হতেই হবে। এর ভেতরে যে কি সাংঘাতিক চালাকি আর নিষ্ঠুরতা আছে, তা-ই আমরা দেখব এবার।
সেই খরচে যাবার আগে একটু কোরান ঘেঁটে দেখা যাক স্বামী তার স্ত্রীকে কি কি দিতে বাধ্য থাকবে।
বাংলা কোরান, পৃষ্ঠা ৮৬৭, তফসির:
কুরতুবী বলেন: এ আমাদের আরও শিক্ষা দিয়েছে যে, স্ত্রীর যে প্রয়োজনীয় ব্যয়ভার বহন করা স্বামীর যিম্মায় ওয়াজিব (বাধ্য), তা চারটি বস্তুর মধ্যে সীমাবদ্ধ: আহার,পানীয়, বস্ত্র ও বাসস্থান। স্বামী এর বেশী কিছু স্ত্রীকে দিলে অথবা ব্যয় করলে তা হবে অনুগ্রহ, অপরিহার্য নয়।
বোঝা গেল ব্যাপারটা? শিক্ষা নয়, চিকিৎসা নয়, শুধু আহার, পানীয়, বস্ত্র ও বাসস্থান। তা-ও ভালোবেসে দেয়া-নেয়া নয়, শুধু বাধ্য হয়ে দেয়া, অথবা অনুগ্রহ করে দেয়া। এই কি স্বামী-স্ত্রীর অনুপম ভালোবাসার বেহেশ্তি সম্পর্ক হল, না মস্ত একটা ঘোড়ার ডিম হল, বলুন আপনারা?
যাক, দীর্ঘশ্বাস ফেলে আর লাভ নেই। এবারে স্ত্রীর ওপরে খরচ দেখা যাক, সে খরচটা কতো? বলে গেছেন ইমাম শাফি ই তাঁর বিশাল শারিয়া আইন (উমদাত আল সালিক) বইতে। আসুন এই সব আমরা এখন তন্ন তন্ন করে দেখি।
চলবে (৫ম পর্বে)।
আচ্ছা এমন কোন হাদীসের কোন খন্ডে যৌন মিলনের সম্পরকে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে।একটু বললে আনেক উপকার হত
এই ভরণপোষণের ব্যপারটা আমার কাছে কিন্তু অন্যরকম।
তুমি এতদিন আমার দেহকে ব্যবহার করেছো এখন তার ভাড়া দাও।
তথ্যপূর্ন লেখার সাথে সাথে কাশেম ভাই এর লেখার হিউমারের লোভ সামলানোও সহজ নয় 🙂 ।
সহি ইসলাম মতে নারীদের তালাক দেবার অধিকার আলোচনা করবেন নাকি?
ইসলাম ডিফেন্ডার ভাইদের সাথে যাইই হোক কোনদিন পারবেন না। তালগাছ সর্বদাই ওনাদের বগলে থাকবে। তবে জয় পরাজয় যাইই হোক ওনাদের নিখুত যুক্তিতর্কে অপরিসীম বিনোদন পাওয়া যায়। আমার অভিজ্ঞতা থেকে এমন কিছু মজার সন্ধান দিচ্ছিঃ
১। আপনি কোরানের বাইরের কোন সূত্র দিলে তা কোনমতেই গ্রহনযোগ্য হবে না। তবে আপনি যেই সূত্র থেকে কোট করেছেন তাদের নামে কিছু বললে কিন্তু উলটা আপনার ওপরেই ঝাঁপিয়ে পড়া হবে বিশিষ্ট ইসলামী ব্যাক্তিদের নামে কুতসা রটানোর দায়ে।
২। সহি হাদীসও বেকায়দায় পড়লে সহি নাও হতে পারে। কিন্তু নিজেদের দাবীর পক্ষে যায় এমন সব হাদীসই ধ্রুব সত্য এটা মেনে নিতেই হবে।
৩। এসব অপ্রীতিকর হাদীস কোট করা হলে দোষ হবে আপনার, কিন্তু যারা এসব লিখে গেছেন আর যারা হাজার বছরের উপর পরম যত্নে এসব লালন পালন করে আসছেন তাদের কিন্তু কোন দোষ নেই। আপনি কোট করতে গেলেন কেন সেটাই বড় অপরাধ।
৪। কোরানের আয়াতের অনুবাদ নিজের যেটা সুবিধের মনে হয় সেটাই হতে হবে (আরবী ভাষার নানান মারপ্যাচ কষে নিজের পছন্দের অনুবাদ বের করা ওনাদের কাছে তেমন কিছু না)। শত শত বছর ধরে যা অনুদিত হয়ে এসেছে তা গ্রহনযোগ্য হবে না। তবে হ্যা, আবারো ১ নং পয়েন্ট অনুযায়ী কিন্তু কোরানের সেসব অনুবাদক ভুল করেছেন এমন কথাও আবার স্বীকার করা যাবে না। এ বড় অদ্ভূত চক্র। বলতে হবে যে “সামান্য মতভেদ” হয়, যেমন মতভেদ নাকি বিজ্ঞানী, রাজনীতিবিদ সবার মাঝেই হতে পারে।
৫। কোরানের বানী ধরে নিজেদের বিশিষ্ট আলেম মোল্লারা প্রচারনা চালালে তাতে কোন সমস্যা নেই। সেসব নিয়ে বক্তব্য চাইলে নিশ্চুপ, কিন্তু সেসব আলেম মোল্লাদের কোট করে একই ব্যাখ্যা আপনি দিলেই ওমনি ইসলাম বিদ্বেষী, অমূকের পেইড এজেন্ট, কোরানের নামে মিথ্যা বিদ্বেষ প্রচারকারী। এসব মোল্লা আলেমদের কিন্তু ভুলেও কোনদিন পেইড এজেন্ড, বিদ্বেষ সৃষ্টিকারী এসব কিছু ওনারা বলবেন না। কি আজগুবি বিচার আর ন্যায়বোধ।
৬। নিজেরা কোন রেফারেন্স হাজির করলে তা থেকে কোট করে দিলেও নিজের পক্ষে না গেলে গ্রহনযোগ্য হবে না
৭। বেকায়দায় পড়লেই ‘কন্টেক্সট বুঝতে হবে”; অমূক আয়াত কেবল মাত্র অমূক পরিস্থিতির জন্যই প্রযোজ্য। কিন্তু আপনি নিজে যদি বলেন যে কোরানের সব বানী সব যুগের জন্য প্রযোজ্য নয় তাতে আবার খ্যাক করে উঠবেন। তবে নিজেদের দাবীর পক্ষে যায় এমন কোন আয়াতের ক্ষেত্রে এত মেহনত করে কন্টেক্সট বোঝার দায় বোধ করেন না।
হাদীস কোরান এসব প্রাচীনপন্থী মূল্যবোধের বই এর সমালোচনা করা আমার কাছে এমন কিছু কৃতিত্ত্বের মনে হয় না, খুবই সহজ কাজ; তাই নিজে তেমন আগ্রহ বোধ করি না। তবে এসব ইসলামিষ্ট ভাইদের যুক্তি আমাকে দারুন মজা দেয়। ধর্ম মানুষকে নৈতিকতা শেখায় এঈ ধারনার পাশাপাশি অনেক সময় যে নৈতিকতা কেড়েও নেয় তাও ভাল ভাবেই টের পেয়েছি।
@আদিল মাহমুদ,
আপনার এই মন্তব্যটি-কি একটি পোস্ট আকারে দেয়া যায়? এটি আলাদা ভাবে সংরক্ষিত হওয়া প্রয়োজন।
@রৌরব,
হেঃ হেঃ, কি যে বলেন 🙂 । তিক্ত অভিজ্ঞতার শিক্ষা।
যাদের মস্তিষ্ক এতটা উর্বর নয় তারা একটু ভিন্ন এপ্রোচ নেন।
শুধু কেন ইসলামের পেছু লাগা…অন্য ধর্ম নয় কেন।
জগতে ধর্ম ছাড়া আর সমস্যা নেই? ধর্ম দূর হয়ে গেলেই পৃথিবীর সব সমস্যা দূর হয়ে যাবে?
@আদিল মাহমুদ,
আপনার সবগুলো পয়েন্ট অভ্রান্ত। আর প্রায় সব সময়ই সমাপ্তিটা হয় নগ্ন
ব্যক্তি-আক্রমন (personal attack) আর ইসলাম বিরোধী আখ্যা দিয়ে।
আপনি যতার্থই বলেছেনঃ
@গোলাপ,
সেটা ভালভাবেই টের পেয়েছি। তাও ভাগ্য ভাল এনাদের সাথে বাস্তব জীবনে মোলাকাত হয় না।
ইসলাম সম্পর্কে ভিন্ন ধারনা পোষন করা যাবে, তবে সমালোচনা করা যাবে না এটা হল বটম লাইন (কারন ওনারা আবার নিজেরা বা নিজেদের ধর্ম উদার না সেটাও স্বীকার করবেন না)।
কিন্তু বহু চিন্তা করেও এটা কিভাবে সম্ভব বুঝতে পারি না। তাই ধর্ম সম্পর্কে আলোচনা করলেই কপালে নানান অভিধা জুটে যাবে তা আগেই মেনে নেই।
@আদিল মাহমুদ, গত কয়েকদিনে হাড়ে হাড়ে এই কথাগুলো উপলব্দি করেছি বিচ্ছিন্ন ভাবে। আপনার মত এরকম চিন্তা করে জড়ো করলে হয়তো এর চেয়েও বেশী হত 🙂
@শ্রাবণ আকাশ,
আমি এমন কিছু চিন্তা করে পয়েন্ট সাজাইনি, তাতক্ষনিকভাবে যা মনে এসেছে শুধু পয়েন্ট করে সাজিয়েছি। ওনাদের সাথে বিতর্কে নামলে এই পয়েন্টগুলি কম বেশী আসতে বাধ্য তাতে কোন সন্দেহ নেই।
আপনিও আরো কিছু যোগ করলে করে দিন। ভবিষ্যতে সবারই এই গাইড লাইন কাজে লাগবে 🙂 ।
আরো বেশ কিছু সাধারন পয়েন্ট আছে, যেমনঃ
বিজ্ঞানের জানা বিষয়ের সাথে কোন আয়াত নানান ভাবে ঘুরিয়ে প্যাঁচিয়ে সম্পর্ক বের করতে পারলে হয় মিরাকল। কিন্তু বিজ্ঞানের সাথে সরাসরি সাঙ্ঘর্ষিক এমন আয়াত নিশ্চিতভাবে হয়ে যাবে রূপক, যার তাতপর্য বা ব্যাখ্যা স্বয়ং আল্লাক পাক ব্যাতীত কেউই জানে না। তবে খুশীর কথা হল যে কেয়ামতের সময় এসব রূপক নাকি বোঝা যাবে।
পশ্চীমের কিছু সাদা লোকে ইসলাম সম্পর্কে ভাল কিছু বললে তা প্রামান্য দলিল, কিন্তু অপরদিকে কেউ কিছু বললে তখন হবে পশ্চীমাদের অন্ধ ইসলাম বিদ্বেষের জ্বলজ্যান্ত প্রমান।
হঠাত করে একটি বাইবেল ডিফেন্ডিং সাইট চোখে পড়ল, তারা কিছু আলোচনা করেছে কিভাবে মুসলমানদের বাইবেল সমালোচনার জবাব দেওয়া যাবে। শুরুটা পড়ে হাসি থামাতে পারিনি। কোরান ডিফেন্ডার ভাইদের মতই হুবহু একই ভাষা, “কন্টেক্সট বুঝতে হবে”, “সহি বাইবেলিয় জ্ঞান আহোরন করতে হবে” 😀
@আদিল মাহমুদ,
এ ব্যাপারে আমরা হুমায়ুন আজাদের একটা রূপক বাণী স্মরণ করতে পারি-
“কোন কালে এক কদর্য কাছিম দৌড়ে হারিয়েছিলো এক খরগোশকে, সে গল্পে কয়েক হাজার ধ’রে মানুষ মুখর। তারপর খরগোশ কতো সহস্রবার হারিয়েছে কাছিমকে, সে-কথা কেউ বলে না।”
গদামের কথা কেউ বলে না!
@শ্রাবণ আকাশ, মরিচ বোকা ইলি তো তাদের কাছে এক মহান সাহাবি……হয়েছেন এখন…
আপনার তথ্যসমৃদ্ধ লেখার ভক্ত আমি। কিন্তু দুঃখের কথা এই যে, আপনার লেখাগুলোর তথা তথ্যগুলোর প্রচার ও পরিচিতি এত কম!
আরো দুঃখের কথা এই যে, আপনার প্রতিটি যুক্তির পেছনে ইছলামীরা কাউন্টার “যুক্তি” দেখিয়ে কোরান হাদিসের কুৎসিত, অশালীন, ভয়াবহ, বর্বর সব বক্তব্য জাস্টিফাই করার জন্য প্রাণ দিয়ে দিতেও রাজি।
@রা নাহি দেয় রাধা,
আদিল মাহমুদ এর খুব সুন্দর উত্তর দিয়েছেন।
এখানে দেখুন কেন ইছলামীদের সাথে তর্ক করা সময়ের অপচয় ছাড়া আর কিছু নয়।
http://www.dhormockery.com/search?updated-max=2011-03-03T00%3A00%3A00%2B08%3A00&max-results=20
@রা নাহি দেয় রাধা,
আপনি ঠিক লিখেছেন আমি যে সব বইয়ের সূত্র দিচ্ছি তাদের বেশির ভাগ বাংলায় অনুবাদ হয়নি–তাই অনেক বাঙ্গালি জানেই না–ইসলামের নাড়িকেন্দ্র কোথায়।
কিন্তু এই সব সূত্র ছাড়া ইসলামকে সঠিক জানা সম্ভব নয়।
সময়ের সাথে সব প্রচার পাবে। এই যে্মন আপনি — এই ভাবেই ধীরে ধীরে হবে।
তবে পারিবিরক শারিয়া ত আমাদের সবার জানা উচিত। কারণ বাংলাদেশেও ত শারিয়া আইন চলছে—হয়ত অনেকেই তা জানেন না–মনে করেন এগুলো ব্রিটিশ আইন।
খালি বিয়া বিয়া বিয়া আর বিয়া! আচ্ছা নারী-পুরুষে প্রেম-ভালবাসার ব্যাপার কী কিছুই বলার নাই সেখানে?
(আশা করি সিরিজ শেষ হলে রেফারেন্সগুলোর একটা লিস্ট দিয়ে দেবেন। চেষ্টা করব সংগ্রহ করে পড়তে)
@শ্রাবণ আকাশ,
কী সর্বনাশ! কবি কি বলেছেন জানেন না?
ভালো বাসা মোরে করেছে ভিখারী 🙁
তোমারে করেছে রানী
এর পরেও ভালোবাসার জন্য কান্নাকাটি :-[
@আফরোজা আলম,
ধূর, কবিগুলা সব নাস্তিক! :))
এমনটি শুধু নাস্তিকরাই বলে! তাই ধর্মে এসব নাই।
@শ্রাবণ আকাশ,
সূত্র থাকবে শেষ পর্বে। সেই পর্বে ভাল করে দেখে নিবেন।
দেন মোহরের আসল স্বরূপ উন্মোচন করে দেয়ার জন্য আবুল কাশেমকে ধন্যবাদ। এই কুৎসিৎ ব্যাপারটা নিয়ে আরো বেশি লেখা দরকার।
আচ্ছা একটা প্রশ্ন। অনেকেই বলেন ইসলাম আসার আগে আরবের মেয়েদের অবস্থা নাকি খুব খারাপ ছিল। ইসলাম আসার পরে মেয়েদের অনেক স্বাধীনতা দেয়া হয়েছে। উইকিপিডিয়াতে দেখলাম লেখা আছে –
http://en.wikipedia.org/wiki/Women_in_Arab_societies
women were of low status or even worse. Women enjoyed no rights whatsoever and were treated no better than a commodity. Not only they were enslaved, but they could also be inherited as a possession. They were subordinate to their fathers, brothers, and husbands[8]. In some instances, women were chattels, effectively property. A woman had no share in inheritance because she was regarded as unwise and incapable of effectively managing her inherited property. There were also patterns of homicidal abuse of women and girls, including instances of killing female infants considered to be a liability. The Qur’an mentions that the Arabs in Jahiliya (the period of ignorance or pre-islamic period) used to bury their daughters alive.[9] The barbaric custom of burying female infants alive, comments a noted Qur’anic commentator, Mohammad Asad, seems to have been fairly widespread in pre-islamic Arabia. The motives were twofold: the fear that an increase in female offspring would result in economic burden, as well as the fear of the humiliation frequently caused by girls being captured by a hostile tribe and subsequently preferring their captors to their parents and brothers.[10] In his book Infanticide: Comparative and Evolutionary Perspectives, Glenn Hausfater details how Qais Bin Assem, a leader of the Tamim tribe, killed every daughter he had for fear of their capture (and his disgrace) in the inter-tribal wars that dominated Arabian society at that time. According to some scholars; during times of famine, especially, poorer families were likely to kill a daughter, regarding her as a burden on a starving family.
এটা কি ঠিক, নাকি এটাও মিথ্যা? এ নিয়ে কি কোন লেখা আছে?
@ফাহিম রেজা,
৩য় পর্বে লীনা রহমান এই একই প্রশ্ন করেছিলেন।
আপনি ৩য় পর্বটা পরে নিন। আপনার উত্তর পেয়ে যাবেন।
মোদ্দা কথায় উইকিতে ইসলামীদের লেখা অনেকাংশে সত্যের অপালাপ। প্রাক-ইসলামী সময়ে আরবের নারীদের অবস্থা অনেক ভাল ছিল। এমনকি আরবে দেশে কয়েকজন সম্রাজ্ঞীও রাজত্ব করে গেছে। সম্পত্তির অধিকার নারীদেরও ছিল।
@আফরোজা আলম , 😛 !!
@অগ্নি,
লজ্জ্বার কিছু নেই :))
বিবাহ না করলে আগাম উপহার পাঠালাম (G)
@আবুল কাশেম, সেই রকম হইসে !!!
আমিও এতোদিন শুনে আসছি যে মোহরানা এমন এক জিনিস( :-s ) যেটা কিনা নারী অধিকার নিশ্চিত করছে । আজকে যা পরলাম খুবি ভালো লাগলো জেনে ।
:rotfl:
@অগ্নি,
এতো খুশি হবার কারন কি? বিয়া শাদী করেন নাই? পুরুষ হইলে আর বিয়া করতে গেলে দেন মোহর থাইকা নিস্তার নাই ভাই। :-Y তাই এতো খুশি হবার কারন নাই। :-[
@আফরোজা আলম, কী জ্বালা। ভালোবাসে হৃদয়টা কেটে দেয়ারও উপায় নাই!
@শ্রাবণ আকাশ,
সে কী কেনো? :-O
@আফরোজা আলম, বলছি ঐ সব “ধর্মীয় বিবাহে” ঐ সব ধর্মীয় মোহরানা-টোহরানা দিতেই হবে। আর মনে মনে “এইযে কিনে নিলাম” ধরনের একটা ভাবনা আসতে বাধ্য!
শুধু ভালোবাসে হৃদয়টা কেটে দেয়ার পথ ধর্ম সেভাবে বলে দেয় নাই!
ইশশ! কি অত্যাচার :-Y
এই কারনে অনেক ইসলামপন্থি নারীদের দেখি রাতের ঘুম হারাম করে কি কি সব নামাজ পড়ে। আর নামাজের কারনে উৎকন্ঠায় নির্ঘুম রাত কাটায়। ব্যপারটা স্বাস্থে্র জন্য হানিকর নয় কি?
@আফরোজা আলম,
“আসসালাতু খাইরুম মিনান নাউম” ঘুম হইতে নামাজ উত্তম । ভোর রাতের অতি আরামের ঘুম ত্যাগ করে যে সালাত কায়েম করে, আল্লার ইবাদাত বন্দেগী করে তার স্বাস্থ্য হানির কোন কারণ নেই ইনশাল্লাহ্। বরং যারা নামাজ না পড়ে শুয়ে থাকে তাদের স্বাস্থ্যহানি হবে এবং তারা আল্লার ক্রোধানলে পতিত হবে,আল্লার অশেষ রহমত থেকে বঞ্চিত হবে। সুতরাং সুস্বাস্থ্যের অধিকারী হতে চাইলে এবং আল্লাহ পাকের নূরানী রহমতের সম্মানিত ভাগীদার হতে চাইলে তাদের অবশ্যই নিদ্রা ত্যাগ করে ইবাদতে মশগুল হতে হবে।
@তামান্না ঝুমু,
আরে আমি যা বলতে চেয়েছি তা হচ্ছে আলাদা কথা। নামাজের অনেক প্রকার ভেদ আছে। ফরজ,সুন্নত, নফল এই সব জানা বিষয়। আমি বলছিলাম কি –
আরো অনেক প্রকার নামাজ আছে , যেমন তাহাজ্জুদ, আরো কী কি সব জানিনা।
বা মনে নাই। এই বিষয়ে আমাদের প্রিয় আকাশ মালিক জানেন ভালো। তাই তাঁর দৃষ্টি আকর্ষণ করে বলছি, হেল্প মি।
আর ভোরে তো উঠিই। কেননা হাটতে হবে না? মানে প্রাতঃভ্রমন যাকে বলে।
আর সেই যে ছোট বেলায় পড়েছিলাম,
সকালে উঠিয়া আমি মনে মনে বলি
সারাদিন যেন আমি ভালো হয়ে চলি
:))
মোহরানার সঠিক ব্যাখ্যাটা জানা ছিল না। এটাকে প্রায়ই ইসলামে নারী অধিকারের একটা ঝাণ্ডা হিসেবে ওড়ানো হয়। অবশ্য এই ব্যাখ্যা জানবার আগেও মোহরানার ব্যাপারটাকে আমার বালখিল্য মনে হত।
সম অধিকারে বশ্বাসী বহু নারীরা বিয়েতে এজন্য দেনমোহর বিহীন বিয়ে করে থাকে।
@গীতা দাস,
দেন মোহর ছাড়া কোন ইসলামী বিবাহ সিদ্ধ হয় না। হয় দেন মোহর নগদ দিতে হবে, নতুবা ঋণ হয়ে থাকবে অথবা মেয়েকে বলতে হবে আমি দেন মোহর মাফ করে দিলাম–অর্থাৎ দেন মোহর আছে কিন্তু স্ত্রী তা মওকুফ করে দিল; যেমন করে অনেক ঋণ মওকুফ করে দেওয়া হয়।
দেন মোহর এড়াবার একমাত্র রাস্তা হচ্ছে অমুসলিম বিবাহ বা সিভিল বিবাহ। আমি জানিনা বাংলাদেশের মুসলিমরা সিভিল বিবাহ করতে পারে কি না। যতটুকু জানি বাংলাদেশের মুসলিমদের জন্য এই ধরণের বিবাহ করা খুবই দু;সাধ্য–কারণ তা করলে ঘোষণা দিতে হবে যে সে ইসলাম ধর্ম ত্যাগ করেছে–যা নিতান্তই অসম্ভব ব্যাপার।
আমি যতটুকু জানি অন্যান্য মুসলিম দেশে–যেখানে শারিয়া আইন আছে সেখানে মুসলিমদের জন্য সিভিল বিবাহ বে-আইনী–এর জন্য জেল এবং জরিমানা, অথবা দুইই হতে পারে।
@আবুল কাশেম,
আপনি ঠিকই বলেছেন। তবে বর বা কনে যে কোন এক পক্ষ অমুসলিম হলে তারা বিশেষ বিবাহ আইনে বিয়ে করতে পারে এবং সে ক্ষেত্রে দেনমোহর লাগে না।
আর আমি যে প্রেক্ষাপটের কথা বলেছি সেখানে নামমাত্র টাকায় দেনমোহর ধার্য্য করে বিয়ে করেছে। নিয়ম মেনেছে। শুধু কাজী আপত্তি করলে তাকে তার ফি টুকু নিশ্চিত করেছে। যেমন, আমার বন্ধু এ্যাডভোকেট কামরুন নাহার হোসেন শহীদ সুমনকে বিয়ে করেছে ১০১ টাকা দেনমোহরে। তা ও কাজী ও আত্মীয় স্বজনের চাপে একটা এমাউন্ট ধরতে হয়েছে।
@গীতা দাস,
সত্যিকার ইসলামী দেশে এই ধরণের বিবাহ স্বীকৃতি পাবে না। যেমন, মালয়েশিয়ান সরকার এই ধরণের বিবাহকে বে-আইনী বলবে। তার কারণ–ইসলামী আইন ইনুযায়ী মুসলিম ও অমুসলিমের বিবাহ হতে পারেনা। অমুসলিমকে ইসলাম ধর্মে দীক্ষিত অথবা দীক্ষিতা হতে হবে প্রথম। তারপর ইসলামী বিবাহ হতে হবে। যদিও কোরান লিখেছে এক মুসলিম পুরুষ এক ইহুদী অথবা খ্রীষ্টান মহিলাকে ধর্মান্তর ছাড়াই বিবাহ করতে পারে–কিন্তু বেশীর ভাগ ক্ষেত্রেই ইসলামী আইন এই ধরণের বিবাহকে নিরুৎসাহ করে।
আর একজন মুসলিমের জন্যে এক হিন্দু, অথবা বৌদ্ধ অথবা অন্য কোন পৌত্তলিক ধর্মের নারী বা পুরুষকে বিবাহ সম্পূর্ন বে-আইনী—ইসলামী আইন অনুযায়ী।
আমরা এখানে ইসলামী আইনের কথা বলছি। কাজীকে ঘুষ দিয়ে অনেক কিছুই করা যেতে পারে। তার অর্থ এই নয় যে ইসলামী আইন বাতিল হয়ে গেছে। এই বিষয় হচ্ছে অনেকটা ট্রাফিক আইনের মত। সবাই ট্রাফিক আইন অমাণ্য করে, ঘুষ দিয়ে পার পেয়ে যাচ্ছে। কিন্তু তার মানে এই নয় যে ট্রাফিক আইন নাই।
আর, আমি ত লিখেছি–দেনমোহর অতি সামাণ্যও হতে পারে। নবীজি অনেক উদাহরণ দেখিয়েছেন যেখানে নারীর যৌনাঙ্গের মূল্য অতিশয় যতসামাণ্য–এই রচনাতেই তা দেখানো হয়েছে।
দেনমোহরের পরিমানটা মুখ্য নয়–মুখ্য ব্যাপার হচ্ছে দেনমোহর প্রথাটা। এই প্রথা একটা বর্বর, অসভ্য, ন্যাক্কারজনক, এবং নারীদের জন্য চরম অবমাননাজনক। এই ইসলামী প্রথা সমস্ত নারী জাতীকে বেশ্যার পর্যায়ে ফেলে দিয়েছে।
@আবুল কাশেম,
তাহলে নারী মানে মুসলমান স্ত্রী আর পতিতা– 😕 নাহ নাহ পতিতা তো এক এক সময় মানুষ বদল করে। তবে ইসলামি বিবাহিত নারী মানে
পাকা পোক্ত রক্ষিতা :-O
@আফরোজা আলম,
আপনি অনেকটা সত্যি বলেছেন। আমি পতিতা এবং বেশ্যা এক ভাবিনা।
আমার মনে হয় পতিতা হচ্ছে যে নারী যে কোনভাবে সমাজ থেকে পতিত হয়েছে, যার ফলে তার দেহ বিক্রি করা ছাড়া আর কোন উপায় নাই। পতিতার পুংলিঙ্গ কি পতিত হবে না?
আর বেশ্যা মনে সাই নারী যে স্ব-ইচ্ছায় যৌন ক্ষুধা মিটায় এবং মিটাতে সাহায্য করে। এই দুয়ের মধ্যে অনেক তফাৎ আছে মনে হয়। বেশ্যার অনেক স্বাধীনতা আছে–একজন গৃহপালিত ইসলামী স্ত্রীর চাইতে। প্রাচীন ইতিহাস থেকে জানা যায় বেশ্যাদের অনেক উচ্চভাবে দেখা হত।
যে যাই হোক, এরাও যে নারী। এদেরকে আমরা কোনক্রমেই ঘৃণার চক্ষে দেখতে পারি না। আমি ব্যক্তিগতভাবে এদেরকে অনেক সম্মান করি।
হ্যাঁ, আমি আপনার সাথে একমত।
@গীতা দাস, মুসলিম পরিচয় দানকারী মেয়েরা করে কি? ঠিক জানা নাই। যদি করে তবে এটা ভাল খবর।
আজকের দিনেও দেনমোহরে শিয়াল চালাক ছেলে পক্ষ বাদ ওআশীল বা উশুল বাদ বলে একটা ব্যাপার জুড়ে দেয়। এতে করে ঐ দেন মোহরটা প্রদান কৃত গহনা ও খাট পালঙ্কের দামের সমান হলে দেনমোহর তো আগে ভাগেই উশুল হয়ে গেল। সুতরাং মেয়েটির হোল ফক্কা। :-Y
নারীর জন্য মোহরানা নির্ধারণ করে তাকে জানিয়ে দেয়া হয় যে সে একটি দাসী ছাড়া আর কিছুই নয় এবং তাকে মোহরানা দিয়ে কিনে নেয়া হয়েছে। এজন্যই স্বামীকে স্ত্রীর উপর এত বেশি ক্ষমতা দেয়া হয়েছে যাকে অসভ্যতা ছাড়া আর কিছুই বলা যায় না। কোরানে স্পষ্ট বলা হয়েছে, পুরুষরা নারীর উপর কর্তৃত্বশীল(২:২২৮)।
আরো কিছু লিংক দিচ্ছি –
A Woman’s Worth Relative to a Man’s
Women in the Qur’an
WIFE BEATING IN ISLAM
( ৪ঃ২৪) বলা হয়েছে তোমরা যাদেরকে সম্ভোগ করেছ তাদের নির্ধারিত মোহর দান করবে,
তার পরেও মুসলিম নারীগন মোহরকে খুব সম্মানের জিনিস মনে করেন।
হাই তুললে বলতে হয় ” আস্তাগফেরুল্লাহ্” কিন্তু কেন , হাই তোলা কি অপরাধ?
@তামান্না ঝুমু,
হাঁচি দিলেও ‘আলহামদুলিল্লাহ’ বলতে হয়। হাঁচি কি কোনো ধরনের রহমত?-এমন অসংখ্য প্রশ্ন তোলা যায় কারণ এই ধর্মে আছে বিচিত্র সব আইন ও নিয়ম-কানুন।একটার কথা মনে পড়ছে।ছোটবেলায় হুজুর আমাকে শিখিয়েছিলেন বাথরুমে ঢোকা ও বের হওয়ার দোয়া!!
@নিটোল,
দৈনন্দিন প্রতিটি কাজে অকাজেই রয়েছে দোয়া দরুদ পাঠ। যেমন , খাওয়া শুরু করতে বিসমিল্লাহ্, শেষ করলে আলহামদুলিল্লাহ্। ঘুমাতে যাওয়ার আগে ও ঘুম থাকে উঠে আলাদা দোয়া পড়তে হয়।নিরিহ পশু পাখিকে হত্যা করার সময় বলতে হয় আল্লাহ হু আকবর মানে আল্লাহ মহান। কাউকে নির্দয় ভাবে হত্যা করার সময় আল্লাহ মহান কেন বলতে হয়? পশু পাখি হত্যা করার সময় আল্লাহ যে মহান তা আল্লাকে স্মরণ করিয়ে না দিলে সে পশু পাখির মাংস খাওয়া হারাম।
@নিটোল,
শুধু কি তাই–স্ত্রী সহবাসের সময়ও দোয়া পড়তে হবে। আশ্চর্য্যের ব্যাপার হচ্ছে এই দোয়া শুধু পুরুষকে পড়তে হবে–যার মর্ম হচ্ছে, হে আল্লাহ এই যোনি যেন এক ভাল সন্তান উৎপাদন করে, একে যেন শয়তানের হাত থেকে রক্ষা করা হয়।
@তামান্না ঝুমু,
মোহরানা যদি এক নারীর জন্য সম্মান হয় তবে এক বেশ্যাকে যে পারিশ্রমিক দেওয়া হয় তাও নিশ্চয় সম্মানজনক। আমার মনে হয় এই পারিশ্রমিক বেশী সম্মানজনক কেননা এক বেশ্যা তার দেহ বিক্রি করছে ইচ্ছামত–যাকে তার ইচ্ছে তাকেই দেহ দিবে–যাকে তার পছন্দ হয় না তার কাছে সে তার দেহ বিক্রি করবে না।
কিন্তু এক স্ত্রীর ত কোন ইচ্ছে অনিচ্ছের উপর মোহর থাকছে না। একবার মোহর দিয়ে দিলে অথবা দিবার অঙ্গীকার পাবার সাথে সাথে ঐ মেয়েটির যোনিসহ সমস্ত দেহ তার স্বামীর মালিকানায় চলে আসবে–চির দিনের জন্যে। স্ত্রী কোনদিন ‘না’ বলতে পারবেনা।
এই ব্যাপারে আরও জানবেন আসছে পর্বগুলিতে।
@আবুল কাশেম, খুব সন্দর বলেছেন।আসলে মোহরের এবং প্রহারের থেকে অপমান নারীর জন্য আর কিছুই নাই।ইসলাম আসলে কোন ধর্ম না, আসলে পুরুষতন্ত্রের সব থেকে ভয়ানক অস্ত্র যা তৈরি হয়েছে বিশেষ ভাবে নারীকে পদদলিত করতে।
@অচেনা,
আপনার মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ।
অনুরোধ;
আপনার ই-মেইল ঠিকানা জানাবেন? আমি আপনাকে এক বার্তা পাঠাতে চাই।
@আবুল কাশেম, আমি আপনাকে একটা ইমেইল করেছি। আপনি আমার ইমেইল ওখান থেকেই আমার ইমেইল জানতে পারবেন।ধন্যবাদ আপনাকে।
@তামান্না ঝুমু, ওইটা আমিও বুঝিনা।ছোট বেলায় শুনেছিলাম যে হাই তুললে নাকি শয়তান মুখ দিয়ে ঢুকে যায় আর হাঁচি দিলে নাকি শয়তান বেরিয়ে যায় তাই মহাপুরুষ পুঙ্গবের( মুহাম্মাদ) এই বিধান। আর নারীর সম্মান নিয়ে আর কিছু নাই বা বললাম কারন এটা ত সবাই জানে যে কি সম্মান ইসলাম নারী কে দিয়েছে।কারন অই দেনমোহোর যেটা আসলে বেশ্যাবৃত্তি সেটা আর উল্লেখ না করলেও চলে। হা ইসলাম সত্যি নারীকে এই সম্মানই দিয়েছে।
আপনার দেয়া কিছু তথ্য আগে জানা ছিলো।কিন্তু বেশিরভাগই জানতাম না। এটা খুবই হতাশাজনক। হতাশাজনক এ কারণেই যে বেশিরভাগ মুসলিমই এসব তথ্য জানেনা। হয়ত তাদেরকে জানানো হয় না। নারী বিষয়ক যেকোনো তর্ক-বিতর্কে তারা বলবেই যে ইসলামেই নারীকে সর্বোচ্চ সম্মান দেয়া হয়েছে।যদি জিজ্ঞেস করা হয়-কোন ধরনের সম্মান?তারা অবধারিতভাবেই বলবে-মায়ের পায়ের নিচে সন্তানের বেহেসত। এরপর যদি বলা হয়-এটা তো জন্মদাত্রীর প্রতি সম্মান দেখানো।খুবই ভালো কথা। কিন্তু সাধারণভাবে নারীদেরকে কোথায় সম্মান দেয়া হল? তখন এরা নিশ্চুপ। কেউ কেউ বলে কোরান-হাদীসে আছে।কিন্তু কেউই ঠিকমত জানেনা। আরেক জন থেকে শুনেই বিশ্বাস করে বসে আছে।
@নিটোল,
আপনি সঠিক লিখেছেন। এই জন্যই এই রচনা লিখা হয়েছে। আমার মনে হয় শতকরা নব্বই ভাগ মুসলিমরা ইসলামের আসল রূপ জানে না। এই লেখার মূল উদ্দেশ্যই হচ্ছে ইসলামের সত্যিকার রূপ তুলে ধরা।
আমি অনুরোধ করব এই হাদিস নম্বরটা জানাতে।