আগের পর্বঃ মস্তিষ্কে, অনুরণন সংগোপনে (এক)
মাতৃভাষা, শব্দটার আবেদনই আলাদা! মায়ের মুখে শোনা ভাষা তো বটেই, মায়ের গর্ভ থেকেও শোনা ভাষা এটা। এভাবেই ভাষার বুনিয়াদ। তারপর বর্ণমালায় বই হাতে নিয়ে পড়তে শেখা, লিখতে শেখা। আমাদের এক শিক্ষকের মেয়ে তাকে জিজ্ঞেস করেছিল, মা, তুমি বলেছ, “এ” কে এ বলতে আবার “A” কেও এ বলতে, কোনটা আসল এ? এইভাবে শনাক্ত করতে, এক ভাষাকে আরেক ভাষায় রূপান্তর করতেও আমরা একসময় শিখে যাই। আসল কথা হল, ইটের পর ইট গাঁথা! প্রথম ইটটা না বসালে গাঁথা যায় না দ্বিতীয় ইট! তাই মস্তিষ্ক সপর্কে জানতে গেলে আমাদের প্রথমে যেটা জানতে হবে, তা হল নিউরো এনাটমি। একটা সময় ছিল যখন প্লেটো এরিস্টটল মন বা স্বত্তার অস্তিত্ব নিয়েই ছিল দ্বিধান্বিত। সেই অতীতের দর্শন যুগ পেরিয়ে আমরা এখন পরীক্ষামূলক বিজ্ঞানের যুগে। স্টিফেন হকিং এর মত দর্শনকে মৃত বলছি না, কিন্তু মস্তিষ্ককে কেটেকুটে দেখার মধ্যে, স্নায়ুকোষে আয়নিক ঘনত্বের পরিবর্তন বা মস্তিষ্কের ঠিক কোন অংশ দেহের কোন অংশকে নিয়ন্ত্রন করছে, তা জানার প্রচেষ্টায় এখন আমরা ধোঁয়াশা দর্শনের মুখাপেক্ষী নই। আমাদের জানা শেষ হতে মেলা দেরী এ সত্যি, তবে কোনটা “এ” আর কোনটা “A”, সে আমরা জানি। এই বিল্ডিং ব্লকগুলোকেই একটু নেড়েচেড়ে দেখব আজ।
অনেক ছোটবেলায় পড়েছিলাম পঞ্চ ইন্দ্রিয়ের কথা। বহুদিন ধরেই অ্যারিস্টটলীয় ধারণা অনুসারে আমরা ইন্দ্রিয়কে স্পর্শ, দর্শন, শ্রবন, স্বাদ এবং ঘ্রানে ভাগ করে এসেছি। আমাদের আসলে ভারসাম্য, তাপ, গতি, দিক, ব্যথা, কিছু শারিরীক ঘটনা অনুভব করার মত আরো বেশ কয়েকটি অনুভব প্রক্রিয়া বর্তমান। এই ইন্দ্রিয়গুলোর কাজ আসলে কেবল মাত্র অনুভব করে মস্তিষ্ককে বস্তু, ঘটনা, স্থান, কাল সম্পর্কে তথ্য সরবারহ করা। কিন্তু এইখানেই কি শেষ? একটা খাবার টক না ঝাল না মিষ্টি তার অনুভূতি কিন্তু ঠিক আমরা খাবারের সাথে জিহবার স্পর্শের সাথে সাথেই পাচ্ছি না। স্বাদটা আসলে কেমন, তা বুঝতে পারি খানিকটা পরে। তাহলে এই ইন্দ্রিয়গুলো কিভাবে আমাদের অনুভূতির স্বরূপ নির্ণয়ে সাহায্য করছে? কিংবা, আমি মিষ্টি খাবার পছন্দ করি, হয়তো সামনে দেখলেই তা না চেখেও লোভাতুর হয়ে পড়ি, এই আচরণটাই বা কেন করছি? কিভাবে করছি?এইরকম অসংখ্য ঘটনার পিছনে মস্তিষ্কের তথা স্নায়ুতন্ত্রের বিভিন্ন কাজের অবদান রয়েছে। মস্তিষ্কের কাজগুলোকে খুব সরলভাবে দেখলে প্রধানত তিনভাগে ভাগ করা যায়।
১. তথ্য গ্রহন তথা ইন্দ্রিয়গত বাস্তবতা সৃষ্টি
২. তথ্যের সমন্বয়সাধন এবং
৩. আচরণের নির্দেশনা।
এই কাজগুলো কিভাবে করে মস্তিষ্ক?
স্নায়ুতন্ত্রের মূল অংশ সম্পর্কে মোটামুটি আমাদের সবারই একটা হালকা ধারণা আছে, আর সেটি হল কেন্দ্রীয় স্নায়ুতন্ত্র যা মূলত মস্তিষ্ক এবং মেরুদন্ড নিয়ে গঠিত। আমাদের স্নায়ুতন্ত্রকে আমরা এনাটমি অনুসারে বা কাজ অনুসারে যেভাবেই ভাগ করি না কেন, মস্তিষ্কই এর প্রধান অংশ হিসেবে আবির্ভূত হয়। মস্তিষ্কের এনাটমির দিকে একটু চোখ বুলিয়ে আসি।
মস্তিষ্ক (Brain):
ভাবুন তো একবার, গাড়ির হুড খুলে দেখার মত করে আমরা খুলিটাকে খুলে দেখছি যে মস্তিষ্কটা দেখতে কেমন! উপর থেকে দেখতে অনেক ভাঁজে ভাঁজ হওয়া টিউবের মত দেখতে নরম পদার্থ দেখা যাবে। খেয়াল করে দেখলে বোঝা যাবে, এর সামনে থেকে পিছন পর্যন্ত মাঝ দিয়ে চলে গেছে লম্বালম্বিভাবে একটা তুলনামূলক ভাবে গভীর খাঁজ আর মধ্যাঞ্চলে, ডান এবং বামে দুটি ভাজ। এগুলোকে বলে যথাক্রমে লঙ্গিচ্যুডিনাল ফিসার এবং সেন্ট্রাল সালকাস।
উপর থেকে দেখতে মস্তিষ্ককে এইরকম লাগে। সেন্ট্রাল ফিসার মস্তিষ্ককে ভাগ করেছে ফ্রন্টাল লোব আর পেরিয়েটাল লোবে। পেরিয়েটাল লোবের পরেই যে অংশটা দেখা যাচ্ছে এটাকে বলে অক্সিপিটাল লোব। পাশ থেকে দেখলে বোঝা যায় এই অংশটা ঠিক পেরিয়েটাল লোবের ধারাবাহিক অংশ নয়। মস্তিষ্কের পার্শ্বচিত্রেই এর চারটি লোবকে সনাক্ত করা যাচ্ছে। ফ্রন্টাল এবং পেরিয়েটাল লোবের নীচে মস্তিষ্কের ডান এবং বাম দুইপাশেই আছে একটি করে টেম্পোরাল লোব।
টেমপোরাল লোব আর পেরিয়েটাল লোবের সাথে সংলগ্ন হয়ে আছে অক্সিপিটাল লোব। এই ছবিটাতেই দেখা যাচ্ছে লঙ্গিচ্যুডিনাল ফিসারের মত মস্তিষ্কে ল্যাটারাল ফিসারও আছে যা ফ্রন্টাল লোব এবং টেম্পোরাল লোবকে করেছে আলাদা। এইবার মস্তিষ্কটাকে উলটো করে দেখি।
এইখানে টেম্পোরাল লোবের নীচে বড়সড় আকারের বাদামের মত দুটো অংশ দেখা যাচ্ছে। এদের নাম সেরেবেলাম। আর সেই সাথে দেখা যাচ্ছে অলফ্যাকটরী বাল্বও যারা প্রধানত ঘ্রাণ সংক্রান্ত তথ্য সর্বারহের কাজ করে।
এগুলোর বাইরেও আরেকটি গুরূত্বপূর্ণ বিষয় হল, মস্তিষ্ক পরিবেষ্ঠিত হয়ে আছে রক্তনালী দিয়ে। দেহের অন্যান্য অংশের মত, মস্তিষ্কেও হৃদপিণ্ড থেকে ধমনীর মাধ্যমে রক্ত আসে এবং তা শিরার মাধ্যমে ফিরে যায় বৃক্ক ও ফুসফুসে। ঘাড় থেকে রক্তনালী ব্রেইনস্টেম, সেরেব্রাম, সেরেবেলামকে পেঁচিয়ে শেষঅব্দি মস্তিষ্কের ভিতরের অঞ্চল পর্যন্ত রক্ত সরবারহ করে। মস্তিষ্কে রক্ত সরবারহকারী তিনটা প্রধান ধমনীর ছবি—
মস্তিষ্ক পৃষ্ঠ
মাথার শক্ত খুলির পরেই দেখা মেলে ত্রিস্তর বিশিষ্ট একটি শক্ত আবরণের, যা মস্তিষ্ককে সুরক্ষিত করে। দ্বিস্তরী ফাইবারাস টিস্যুর সন্নিবেশে গঠিত প্রথম স্তরের নাম ডুরা ম্যাটার, অনেকটা ঢিলা থলের মত যার ভিতরে থাকে মস্তিষ্ক এবং মেরুদন্ড। সূক্ষ কানেকটিভ টিস্যুর খুব পাতলা একটি স্তর, অ্যারাকনয়েড স্তর থাকে মধ্যে। এর পর থাকে পিয়া ম্যাটার নামে আরেকস্তর কানেক্টিভ টিস্যু, যা তুলনামুলক ভাবে একটু শক্ত এবং একেবারে মূল মস্তিষ্ক সংলগ্ন। অ্যারাকনয়েড লেয়ার এবং পিয়া ম্যাটারের মধ্যে থাকে সেরেব্রোস্পাইনাল ফ্লুইড(CSF) নামের একটি বর্ণহীন সোডিয়াম ক্লোরাইড এবং অন্যান্য লবনযুক্ত দ্রবণ, যা মস্তিষ্কের জন্য কুশনের মত কাজ করে, ফলে আঘাত পেলে তা মস্তিষ্ক পর্যন্ত পৌছানোর আগেই এটি অনেকখানি কমিয়ে দিতে পারে। এমনকি মস্তিষ্কের খানিকটা প্রসারণের প্রয়োজন হলে মাথার খুলিতে চাপ না দিয়ে যাতে প্রসারন সম্ভব হয়, তার দ্বায়িত্বও এই সেরেব্রোস্পাইনাল ফ্লুইডের।
মস্তিষ্কের অন্তঃগঠন
আমাদের মস্তিষ্ক আমাদের দেহের মতই দ্বিপ্রতিসম অর্থাৎ মাঝ ববাবর দুইভাগে ভাগ করা যায়। যদিও সাম্প্রতিক কালেই বোঝা গেছে মস্তিষ্কের ডান এবং বাম পাশের খন্ডে খানিকটা পার্থক্য আছে। আপাতত মস্তিষ্কের ভিতরের ফ্রন্টাল ভিউ দেখে নেই।
এই ছবিটা মস্তিষ্ককের ভিতরের গঠন সামনের দিক থেকে কেমন দেখায়, তাই দেখাচ্ছে। এখানে গাঢ় এবং হালকা দুইরকমের টিশ্যু দেখা যাচ্ছে, যারা যথাক্রমে, গ্রে ম্যাটার এবং হোয়াইট ম্যাটার নামে পরিচিত। গ্রে ম্যাটারে থাকে প্রধানত স্নায়ূ কোষ এবং রক্তনালী। আর হোয়াইট ম্যাটারে থাকে স্নায়ু কোষের লম্বা এক্সন যাতে ফ্যাট জাতীয় পদার্থের আধিক্য আছে।
মস্তিষ্কের মধ্যভাগে দেখা যাচ্ছে করপাস কোলাসাম নামে একটি অংশ যা মূলত এর ডান এবং বাম হেমিস্ফেয়ারের মধ্যে সংযোগ এবং যোগাযোগ রক্ষা করে। এই অংশে মস্তিষ্কের অন্য অংশের তুলনায় স্নায়ূতন্তুর বা ফাইবারের ঘনত্ব বেশী, প্রায় ২০০ মিলিয়ন নার্ভ ফাইবার সন্নিবিষ্ট থাকে এখানে।
এছাড়াও পাখির ডানার মত বিস্তৃত ল্যাটারাল ভেন্ট্রিকল নামে গহবরের মত একটি অংশ দেখা যাচ্ছে এইখানে। মস্তিষ্কে মোট চারটি ভেন্ট্রিকল আছে, রাইট ল্যাটারাল ভেন্ট্রিকল, লেফট ল্যাটারাল ভেন্ট্রিকল, থার্ড ভেন্ট্রিকল, ফোর্থ ভেন্ট্রিকল। মস্তিষ্কের পার্শ্বদেশীয় ক্রসসেকশনাল ভিউতে তৃতীয় এবং চতুর্থ ভেন্ট্রিকলের দেখা মেলে। এরা মস্তিষ্কের মিডলাইন বরাবর থাকে যা মেরুদন্ডের মধ্যভাগের সাথে সংযুক্ত।
ভেন্ট্রিকল গুলো পূর্ণ থাকে সেরেব্রোস্পাইনাল ফ্লুইড দ্বারা এবং একটি ভেন্ট্রিকলের সাথে আরেকটি ভেন্ট্রিকল সংযুক্ত থাকে যাতে এর মধ্য দিয়ে ফ্লুইড সহজেই একটা থেকে আরেকটাতে যেতে পারে। এদের কাজ আসলে কি, তা এখনো জানা যায় নি, তবে ধারণা করা হয়, এরা মস্তিষ্কের মেটাবলিজমে সাহায্য করে এবং মেটাবলিক বর্জ্য নিঃসরণও এদেরই কাজ। মেরুদন্ডের আঘাত থেকেও সুরক্ষা দিয়ে থাকে এরা।
ফাংশনাল নিউরোঅ্যানাটমি
মস্তিষ্কই আমাদের স্নায়ুতন্ত্রের সবটুকু নয়। সেন্ট্রাল নার্ভাস সিস্টেম, পেরিফেরাল নার্ভাস সিস্টেম, সোমাটিক নার্ভাস সিস্তেম, অটনমিক নার্ভাস সিস্টেম, সিম্প্যাথেটিক ডিভিশন, প্যারা সিম্প্যাথেটিক ডিভিশন এই সবকটাই তাদের নিজেদের কাজ করে যাচ্ছে সর্বদা। মস্তিষ্ক সেন্ট্রাল নার্ভাস সিস্টেমের একটি অংশ। কাজের বিচারে মস্তিষ্কের বিভিন্ন অংশের শ্রেনীবিভাগটা এই রকম…
মাছ, উভচর প্রানী এবং সরীসৃপদের মস্তিষ্ককে তিনভাগে ভাগ করা যায়।
১। প্রোসেনসেফালন বা ফ্রন্ট ব্রেইন বা সম্মুখ মস্তিষ্ক (ঘ্রান গ্রহণ করে)
২। মেসেনসেফালন বা মিডল ব্রেইন বা মধয মস্তিষ্ক (দর্শন এবং শ্রবনের জন্য দায়ী)
৩। রোম্বেনসেফালন বা হিন্ড ব্রেইন বা পশ্চাৎ মস্তিষ্ক (চলাচল এবং ভারসাম্যের জন্য দায়ী)। মেরুদন্ডকে এইখানে পশ্চাৎ মস্তিষ্কের অংশ ধরা হয়।
স্তন্যপায়ীর ভ্রূণের ক্ষেত্রে সম্মুক্ষ মস্তিষ্ক টেলেনসেফালন এবং ডায়েনসেফালনের সমন্বয়ে গঠিত। মেসেনসেফালন মধ্য মস্তিষ্কের জায়গাতে থাকলেও পশ্চাৎ মস্তিষ্ক নির্ধারিত হয় মেটেনসেফালন এবং মায়েলেনসেফালনের সমন্বয়ে। আর সবশেষে থাকে মেরুদন্ড।
পরিণত মস্তিষ্কে টেলেনসেফালন রুপান্তরিত হয়ে ধারণ করে নিওকর্টেক্স, ব্যাসাল গ্যাঙ্গলিয়া, লিম্বিক সিস্টেম, অলফ্যাক্টরী বাল্ব, ল্যাটারাল ভেন্ট্রিকল। আর ডায়েনসেফালন রূপান্তরিত হয় থ্যালামাস, হাইপোথ্যালামাস, পিনিয়াল বডি, থার্ড ভেন্ট্রিকলে। এগুলো মিলেই ফোর ব্রেইন।
ব্রেইন স্টেম গঠিত হয় ভ্রূণের মেসেনসেফালন, মেটেনসেফালন, মায়েলেনসেফালনের রূপান্তরে। পরিণত অবস্থায় মেসেনসেফালন গঠন করে টেকটাম, টেগমেন্টাম, সেরেব্রাল একুইডাক্ট। মেটেনসেফালন গঠন করে সেরেবেলাম, পন্স এবং ফোর্থ ভেন্ট্রিকল। মায়েলেনসেফালনের অংশগ্রহন মেডুলা অব্লাংগাটা এবং ফোর্থ ভেন্ট্রিকল গঠনে।
মেরুদন্ড বা স্পাইনাল কর্ডে থাকে সারভিকাল নার্ভ, থোরাসিক নার্ভ, লাম্বার নার্ভ, স্যাকরাল নার্ভ। আর ফোর ব্রেইন, ব্রেইন স্টেম এবং স্পাইনাল কর্ড নিয়েই গঠিত সেন্ট্রাল নার্ভাস সিস্টেম। আসুন এক এক এদের কাজের আপাত চিত্র দেখি।
মেরুদন্ড বা স্পাইনাল কর্ড
যদিও চলাচল নিয়ন্ত্রন মস্তিষ্কের একটি কাজ, তবুও শেষ্পর্যন্ত মেরুদন্ডই দেহের অধিকাংশ চলাচল নিয়ন্ত্রন করে। মেরুদন্ডের মস্তিষ্কের সাহায্য ছাড়াও কিছু স্বাধীন কার্যক্রম আছে। যেমন হাটুর ঠিক নীচে প্যাটেলা টেনডনকে যদি আঘাত করা হয়, তাহলে হাটুকে কিক মারা থেকে বিরত রাখা প্রায় অসম্ভব। এই ধরণের স্বতঃস্ফূর্ত চলনকে বলা হয় স্পাইনাল রিফ্লেক্স।
ব্রেইন স্টেম
মেরুদন্ড যেখানে খুলির ভিতরে ঢোকে সেইখান থেকে ফোর ব্রেইনের নীচের পৃষ্ঠ পর্যন্ত ব্রেইনস্টেমের বিস্তৃতি। ব্রেইনস্টেমকে তিন অংশে ভাগ করা যায়, হিন্ড ব্রেইন, মিড ব্রেইন এবং ডায়ানসেফালন। আকৃতির দিক থেকে ব্রেইনস্টেম অনেকটা মুষ্ঠিবদ্ধ হাতের সাথে তুলনীয়। হিন্ড ব্রেইন হাতের মত লম্বা এবং মোটা এবং একে ঘিরে থাকে সেরেবেলাম। মিড ব্রেইন হাতের কব্জির মত ছোট্ট এবং ঘনভাবে সন্নিবিষ্ট। আর ডায়েনসেফালন তুলনীয় হাতের মুঠির মত। হিন্ড ব্রেইন এবং মিডব্রেইন প্রকৃতপক্ষে মেরুদন্ডের বর্ধিত অংশ যা মস্তিষ্কের বিকাশের শুরুর দিকেই গঠিত হয়ে থাকে, যা প্রানীতে ইন্দ্রিয় ঘটিত কার্য (সেন্সরী ফাংশন) এবং চলন সংক্রান্ত কার্য(মটর ফাংশন) সম্পাদনের সুযোগ দেয়। ব্রেইনস্টেমের প্রত্যেক অংশই একই একাধিক কাজ করে তবুও, হিন্ডব্রেইন বিশেষভাবে মটর ফাংশনের জন্য এবং মিডব্রেইন সেন্সরী ফাংশনের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। আর ডায়েনসেফালন সম্পাদন করে সেনসরী এবং মটর ফাংশনের সমন্বয় সংক্রান্ত কাজ।
হিন্ডব্রেইন
হিন্ডব্রেইন নিয়ন্ত্রন করে শ্বাস প্রশ্বাস থেকে শুরু করে নাচের মত সূক্ষ মটর ফাংশনগুলো। হিন্ডব্রেইনের সবচেয়ে চোখে পড়ার মত অংশ সেরেবেলাম। বিড়াল বা চিতাবাঘের মত যেসব প্রানী দ্রুত চলাচল করে তাদের সেরেবেলামের আকার বেশ বড় থাকে, আবার যেসব প্রানীরা তুলনামূলকভাবে ধীরে চলাচল করে, তাদের সেরেবেলামের আকার বেশ ছোট। সেরেবেলামের কাজই হল জটিল চলন নিয়ন্ত্রন করা, এছাড়াও কগনিটিভ স্কিল বা শেখার দক্ষতার ক্ষেত্রে সেরেবেলামের ভূমিকা যথেষ্ট।
সেরেবেলাম ছাড়া হিন্ডব্রেইনের বাকি অংশের দিকে খেয়াল করলে আমরা তিনটি আলাদা উপ-অংশ দেখতে পাই, রেটিকুলার ফরমেশন, পন্স এবং মেডুলা। হিন্ডব্রেইনের বিস্তৃতি এবং অন্তর্ভাগ জুড়ে রেটিকুলার ফরমেশন স্নায়ুকোষ(গ্রে ম্যাটার) আর স্নায়ুতন্তু (হোয়াইট ম্যাটার) নিয়ে জালের মত করে জুড়ে। এটা পুরো বিস্তৃতি জুড়েই অনেক ধরনের কাজ করে, তাদের মধ্যে একটি হল ফোর ব্রেইনকে উদ্দীপ্ত করা, যেমন ঘুম থেকে জাগানো। এইসব কারণে, একে অনেক সময় রেটিকুলার অ্যাক্টিভেশন সিস্টেমও বলে।
পন্সের নিউক্লিয়াই সেরেবেলাম থেকে তথ্য গ্রহন করে এবং এর সাথে মস্তিষ্কের অবশিষ্ট অংশের সংযোগ স্থাপন করে। মেরুদন্ডের উপরস্থ প্রান্তে অবস্থিত মেডুলা নিয়ন্ত্রন করে শ্বাস-প্রশ্বাস এবং রক্ত সংবহনের মত অতি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলো। তাই এই অংশটি কোনভাবে আঘাত প্রাপ্ত হলে খুব সহজেই মানুষের মৃত্যু হওয়া সম্ভব।
মিডব্রেইন
মিডব্রেইন বা মধ্যমস্তিষ্কের উপরের দিকে আছে ইন্দ্রিয়গত তথ্যগ্রহনকারী টেকটাম এবং নীচের দিকে মটর ফাংশনের উপাদান টেগমেনটাম। টেকটাম নির্দেশ করে মধ্যব্রেইনের ছাদ আর টেগমেনটাম বোঝায় মধ্য ব্রেইনের ভূমি। টেকটাম সাধারণত চোখ থেকে বিশাল পরিমান ইন্দ্রিয়গত তথ্য গ্রহন করে। এছাড়া মধ্যমস্তিষ্কের উপরের পৃষ্ঠে সুপিরিয়র কলিকুলাস এবং ইনফেরিয়র কলিকুলাস নামে মোট চারটি ছোট্ট ছোট্ট পাহাড় সদৃশ অংশ আছে (ল্যাটিন শব্দ “Collis” এর অর্থ পাহাড়)। সুপেরিয়র কলিকুলাসে চোখ থেকে অনেক সংখ্যক নার্ভ ফাইবার এসেছে তথ্য সরবারহের জন্য, যেখানে ইনফেরিয়র কলিকুলাসে এসেছে শ্রবনযন্ত্র থেকে। এভাবে ইন্দ্রিয়গত তথ্য গ্রহন করা ছাড়াও টেকটাম কিছু চলনের দিকনির্দেশনা দেয়, যেমন শব্দ শুনে শব্দের উৎসের সন্ধানে মাথা ঘুরানোর নির্দেশনা এইসব কলিকুলি থেকেই আসে। এই কাজটা বেশ জটিল, এর জন্য আমাদের মস্তিষ্কের দর্শন যন্ত্র এবং শ্রবণ যন্ত্র কে বহিঃবিশ্বের একটা সাধারন মানচিত্র ভাগাভাগি করতে হয়, যাতে শব্দ শুনে চোখকে ঠিক কোনদিকে ঘুরাতে হবে সেই ব্যাপারে নির্দেশ দিতে পারে। তেমনি দেহের কোন অংশে আঘাত পেলে আঘাতের স্থান দেখার জন্য ঠিক কোথায় তাকাতে হবে, সেই ব্যাপারেও একটা সুস্পষ্ট ধারণা বা অভ্যন্তরীন মানচিত্রের প্রয়োজন হয় আর প্রয়োজন হয় এইসব তথ্যের সাথে মটর ফাংশনের সমন্বয় সাধন (এইক্ষেত্রে অকুলোমটর যা চোখের ঘূর্ণন নিয়ন্ত্রন করে)।
টেকটামের নীচে অবস্থিত টেগমেন্টাম আসলে কোন একক গঠন ন্য বরং অনেকগুলো নিউক্লিয়াসের সমন্বয়। টেগমেন্টামের সুপরিচিত রেড নিউক্লিয়াস নামক অংশটি নিয়ন্ত্রন করে বাহুর চলন এবং সাবস্টেনসিয়াল নিগরা নামক অংশটি ফোরব্রেইনের সাথে সংযোগ স্থাপন করে প্রধানত চলন উৎসাহিত করণে সাহায্য করে। এর পেরিএকুইডাকটাল গ্রেম্যাটার, যা তৃতীয় এবং চতুর্থ ভেন্ট্রিকলের চারপাশে সন্নিবিষ্ট স্নায়ুকোষ দিয়ে গঠিত, তা নির্ধারণ করে প্রজাতির বিশেষ বৈশিষ্ট, যে স্ত্রীলিঙ্গের যৌন বৈশিষ্ট। এইসব নিউক্লিয়াই গুলো ব্যাথা উপশমেও গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা পালন করে।
ডায়েনসেফালন
আগেই বলেছি, ডায়েনসেফালনের মূল কাজ হল ইন্দ্রিয়গত কাজ বা সেন্সরী ফাংশনের সাথে মটর ফাংশনের সমন্বয় সাধন করা। এর প্রধান দুটি গঠন হল, থ্যালামাস এবং হাইপোথ্যালামাস। থ্যালামাসের অবস্থান ব্রেইনস্টেমের বাম শীর্ষে আর এর বামেই হাইপোথ্যালামাস।
হাইপোথ্যামাস ২২টি নিউক্লিয়াসের সমন্বয়ে গঠিত এবং এর ভূমির সাথে সংযুক্ত হয়ে আছে পিটুইটারী গ্রন্থি, যা এর সাথে সম্মিলিত ভাবে হরমোন নিঃসরণ ঘটিয়ে থাকে। হাইপোথ্যালামাসের ভর মস্তিষ্কের মোট ভরের সাথে তুলনা করলে এটা মাত্র শতকরা ০.৩ ভাগ হলেও খ্যাদ্যাভাস, যৌন আচরণ, চলাচল, ঘুম, তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রন, হরমোন নিঃসরণ, আবেগ ইত্যাদি সহ প্রায় সবরকমের আচরণে এর ভূমিকা আছে। এর কারণেই নারী এবং পুরুষের যৌন আচরণ এবং সন্তান লালন-পালনে আচরণগত পার্থক্য দেখা যায়।
ডায়েনসেফালনের আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ, থ্যালামাসে আছে ২০ নিউক্লিয়াস, যদিও তারা আকারে বেশ বড়। থ্যালামাসের সবচেয়ে স্বতন্ত্র্য কার্য হল, ইন্দ্রিয়গত তথ্যসমূহ সেরেব্রাল কর্টেক্সে পাঠানোর ব্যবস্থা করা। যেমন, অপটিক নার্ভ থেকে তথ্যসমূহ আসে থ্যালামাসের ল্যাটারাল জেনিকুলেটে, সেখানে কিছুটা প্রক্রিয়াজাত হওয়ার পর সেসব তথ্যকে পাঠানো হয় মস্তিষ্কের ভিজুয়ায় কর্টেক্স (Visual region of Cortex)। অনেক ক্ষেত্রেই তথ্যের এই যাতায়াতটা খানিকটা ঘুর পথেই হয়। যেমন ঘ্রান সংক্রান্ত তথ্য ডরসোমিডিয়াল কর্টেক্সে পৌছানোর আগে বেশ কয়েকটা সিন্যাপটিক পথ ঘুরে আসে, তবে যেভাবেই আসুক না কেন, শেষ পর্যন্ত তা মস্তিষ্কের যথার্থ স্থানেই পৌছে যায়। থ্যালামাসের কিছু অংশ মটর ফাংশনে সাহায্য করে আবার কিছু অংশ সমন্বয়ের কাজও করে, যেমন ডরসোমিডিয়াল থ্যালামিক নিউক্লিয়াস। এর সাথে প্রায় পুরো ফ্রন্টাল লোবেরই সংযোগ আছে।
ফোরব্রেইন
সংক্ষেপে বলতে গেলে, ফোর ব্রেইনের তিনটি ভাগ, নিওকর্টেক্স বা সেরেব্রাল কর্টেক্স, যেটা অনুধাবন থেকে পরিকল্পনা পর্যন্ত সমস্ত রকম মানসিক কার্যক্রম নিয়ন্ত্রন করে; ব্যাসাল গ্যাঙ্গলিয়া, নিয়ন্ত্রন করে ঐচ্ছিক চলন এবং লিম্বিক সিস্টেম নিয়ন্ত্রন করে আবেগজনিত আচরন যার জন্য প্রয়োজন স্মরণশক্তি।
কর্টেক্স
কর্টেক্স আসলে দুইপ্রকার। একটা নতুন আরেকটা সেই পুরাতন কালের। নিওকর্টেক্সে হোয়াইট ম্যাটারের স্তরের উপর আছে ছয় স্তর বিশিষ্ট গ্রেম্যাটার (New Bark)। এই নিওকর্টেক্সকেই দেখা যায় বাইরে থেকে, যা কেবলমাত্র স্তন্যপায়ী প্রানীদের মধ্যে অনন্য। এর প্রধান কাজ হল একটা অনুধাবন যোগ্য পৃথিবী (Perceptual World) তৈরী করা।
ওল্ডার কর্টেক্সকে মাঝে মাঝে লিম্বিক কর্টেক্সও বলা হয়, যার হোয়াইট ম্যাটারের উপর পাওয়া যায় তিন অথবা চার স্তর বিশিষ্ট গ্রে ম্যাটার। এই অংশটিকে বাইরে থেকে দেখা যায় না, কেবল মিডিয়াল ভিউতে করপাস কোলাসামের উপরে অবস্থিত সিঙ্গুলেট কর্টেক্সকে দেখা যায়। লিম্বিক কর্টেক্সকে ওল্ডার কর্টেক্স বলার কারণ এটা নিওকর্টেক্সের চেয়ে বেশ আগে সৃষ্টি হয়েছে, স্তন্যপায়ী প্রানী ছাড়াও অন্যান্য কর্ডেটেও এর দেখা মেলে, বিশেষ করে পাখি এবং সরীসৃপে। ধারণা কঅরা হয়, লিম্বিক কর্টেক্সের প্রধান কাজ হল কাজে উৎসাহিত করা। এইদুটো অংশকেই একত্রে বলা হয় কর্টেক্স। ভরের দিক থেকে কর্টেক্স সমস্ত মস্তিষ্কের প্রায় শতকরা ৮০ ভাগ জুড়ে আছে এবং এর পৃষ্ঠের ক্ষেত্রফল প্রায় ২৫০০ বর্গ সেন্টিমিটার, যদিও এর পুরুত্ব মাত্র ১.৫ থেকে ৩ মিলিমিটার।
আগেই পড়েছি, মস্তিষ্ককে চারটি লোবে ভাগ করা যায়। প্রত্যেকটি লোব আবার কিছু বিশেষ কার্য সম্পাদন করে। যেমন, দর্শন ইন্দ্রিয়কে সাহায্য করে অক্সিপিটাল লোব, স্পর্শ ইন্দ্রিয়কে সাহায্য করে পেরিয়েটাল লোব। আবার টেম্পোরাল লোব সাহায্য করে দর্শন, শ্রবণ এবং পরিপাকে। এগুলোর সাথে তুলনা করলে ফ্রন্টাল লোব একটু অভিজাত বৈকি। ফ্রন্টাল লোব স্বয়ংক্রিয় এবং একে মস্তিষ্কের পরিচালকও বলা হয় মাঝে মাঝে কারণ এটি সমস্ত রকমের ইন্দ্রিয়গত এবং স্বয়ংক্রিয় কাজের সমন্ব্য ঘটায় এবং সেই সাথে কার্য পন্থাও নির্ধারণ করে।
কর্টেক্সের ভিন্ন ভিন্ন স্তরের ভিন্ন ভিন্ন রকমের বৈশিষ্ট আছে। যেমনঃ
১. বিভিন্ন স্তরের কোষের ধরণ ভিন্ন
২. বিভিন্ন স্তরের ঘনত্ব বিভিন্ন, ঘনত্ব আপেক্ষিক ভাবে শূন্য (Layer 1) থেকে শুরু করে খুব ঘনভাবে সন্নিবিষ্ট (Layer 4) হতে পারে।
৩. ভিন্ন ভিন্ন অংশের ভিন্ন ভিন্ন লেয়ার বা স্তর ভিন্ন ধনের কাজ করে। এইসব ভিন্নতার উপরেরি ভিতি করে বিংশ শতাব্দীর বিজ্ঞানীরা মস্তিষ্কের মানচিত্রায়নের কাজ করেছিলেন।
১৯০৫ সালে আলবার্ট ব্রডম্যান, সেনসরী কর্টেক্স এবং মটড় কর্টেক্স এর চিহ্নিতকরণের কাজও করেছিলেন এসব ভিন্নতার উপরে ভিত্তি করে। যেহেতু কোষের বৈশিষ্ট এবং কাজের ভিন্নতার উপর ভিত্তি করে এই মানচিত্রায়নের কাজ করা হয়, তাই একে বলা হয় সাইটো-আর্কিওটনিক ম্যাপ। যেমন মটর কর্টেক্সের অবস্থান ফ্রন্টাল কর্টেক্সে, যার লেয়ার 5 বেশ পুরু। লেয়ার 5 এর কাজ হল মস্তিষ্ক থেকে নির্দেশনা অন্যত্র পাঠানো। আবার সেনসরী কর্টেক্সের অবস্থান পেরিয়েটাল লোবে, যার লেয়ার 4 বেশী পুরু। লেয়ার 4 এর কাজ হল, দেহের অন্যান্য জায়গা থেকে ইন্দ্রিয়গত তথ্য গ্রহন করা। এখান থেকেই বোঝা যায়, সেনসরী কর্টেক্সের আছে বড় তথ্যগ্রহন কারী স্তর আর মটর কর্টেক্সের আছে বড় নির্দেশনা দানকারী স্তর।
কর্টেক্সকে যে মস্তিষ্কের পরিচালক বলা হয় তা আগেই জেনেছি। মস্তিষ্কের অন্যান্য অংশের সাথে এর একটা গুরুত্বপুর্ণ পার্থক্য হল, মস্তিষ্কের অন্যন্য অংশ শুধু যেইখানে প্রয়োজন সেইখানে যুক্ত হয়েছে কিন্তু কর্টেক্স মস্তিষ্কের প্রায় সকল অংশের সাথে সংযুক্ত আর এইভাবেই সে মস্তিষ্কের সব কাজে অংশগ্রহন করে। এই ব্যাপারটাকে বলা হয় টপ-ডাউন প্রসেস। কর্তেক্স অনুধারন বা পরিকল্পনা ছাড়াও আরো অনেক ধরনের কাজকে প্রভাবিত করে। খ্যাদের সন্ধান, কামনা, আমরা কিভাবে পরাবাস্তব ধারণা, শব্দ, ছবি ইত্যাদিকে আমাদের বোধে অনুবাদ করব, এইসবকিছুর পিছনে কান্ডারী হল কর্টেক্স। কর্টেক্সই হল আমাদের চারপাশের বাস্তবতার স্রষ্টা!
ব্যাসাল গ্যাঙ্গলিয়া
এতক্ষন ধরে অনেকবারই এসেছে ব্যাসাল গ্যাঙ্গলিয়ার নাম, কিন্তু কি করে ব্যাসাল গ্যাঙ্গলিয়া? কোথায় আছে এটা? ব্যাসাল গ্যাঙ্গলিয়া আসলে একগুচ্ছ নিউক্লিয়াসের সমন্বয় যার অবস্থান কর্টেক্সের হোয়াইট ম্যাটারের ঠিক নীচে। এটি গঠিত হয়েছে কডেট নিউক্লিয়াস (Caudate Nucleus), পুটামেন (Putamen) এবং গ্লোবাস প্যলিডাস (Globus Pallidus) নিয়ে। থ্যলামাস এবং তৎসংলগ্ন সাবস্টেনসিয়া নিগ্রা এবং সাবথ্যালামিক নিউক্লিয়াসের সাথে সম্মিলিতভাবে ব্যাসাল গ্যাঙ্গলিয়া গঠন করে একটি সিস্টেম, যা প্রধানত মানুষের ঐচ্ছিক চলনকে নিয়ন্ত্রন করে।
লিম্বিক সিস্টেম
একটা সময় সাইক্রিয়াট্রি ছিল ফ্রয়েড প্রভাবিত, যে মানুষের আচরণকে ব্যাখ্যা করতে চেয়েছিল আবেগ এবং যৌন আচরণ দিয়ে। ঠিক কোন অংশটি এই আচরণগুলোকে নিয়ন্ত্রন করে তা সঠিকভাবে বোঝা না গেলেও একগুচ্ছ ব্রেইনস্ট্রাকচার সনাক্ত করা হয়েছে যাদের সম্মিলিতভাবে লিম্বিক সিস্টেম বলা হয়। এটাও ঠিক, এরা ঠিক কি কি কাজ করে তাও এখনো ভালোভাবে জানা যায়নি। তবে ধারণা করা হয় লিম্বিক সিস্টেম আবেগ এবং যৌন আচরনে গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা রাখে।
লিম্বিক সিস্টেমের প্রধান গঠন উপাদানগুলো হল অ্যামিগডালা, হিপ্পোক্যাম্পাস, লিম্বিক অথবা সিঙ্গুলেট কর্টেক্স। সিঙ্গুলেট কর্টেক্স এর অবস্থান সিঙ্গুলেট জাইরাস এবং সেরেব্রাল হেমিস্ফেয়ারের মাঝে। পরীক্ষায় দেখা গেছে, অ্যামিগডালাকে মস্তিষ্ক থেকে সরিয়ে নিলে আচরণে সত্যিই বিস্ময়কর পরিবর্তন চলে আসে। হিপ্পোকযাম্পাস, সিঙ্গুলেট কর্টেক্স এবং তৎসংলগ্ন গঠনগুলো স্মরণ কাজে বিশেষ ভূমিকা রাখে এবং সেই সাথে স্থানের অনুভূতি বা স্থান সনাক্তকরণেও এর ভূমিকা অনেক। তবে শেষ অব্দি এটা বলতেই হচ্ছে, লিম্বিক সিস্টেমের কাজ সম্পর্কে আমরা এখনো নিশ্চিত নই।
অলফ্যাকটরী সিস্টেম
মস্তিষ্কের সবচেয়ে সম্মুখস্থ অংশ এটা যার প্রধান কাজ ঘ্রাণ গ্রহন। অন্যান্য ইন্দ্রিয়ের চেয়ে এই ইন্দ্রিয়টা বেশ খানিকটাই আলাদা, বলতে গেলে প্রায় পুরোপুরিই ফোর ব্রেইনের অংশ এটি। অলফ্যাকটরী বাল্ব প্রায় সমস্ত গৃহিত তথ্য থ্যালামাসের ডরসোমিডিয়াল থ্যালামিক নিউক্লিয়াসে পৌছে দেইয়ার আগে পাঠায় ঘ্রানের জন্য বিশেষ অঞ্চল পাইরিফর্ম কর্টেক্সে, যার অবস্থান মস্তিষ্কের নীচে। তারপর তা পৌচে যায় ফ্রন্টাল কর্টেক্সে। যেসব প্রানীদের ঘ্রানেন্দ্রিয় খুব ভালো তাদের তুলনায়, মানুষের অলফ্যাক্টরী বাল্ব বেশ ছোট। তারপরও আমাদের খযাদ্যগ্রহন এবং যৌন আচরণে ঘানেন্দ্রিয় ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
সোমাটিক নার্ভাস সিস্টেম
সোমাটিক নার্ভাস সিস্টেম নিয়ন্ত্রিত হয় সেন্ট্রাল নার্ভাস সিস্টেম দ্বারা। আর এই নিয়ন্ত্রনের দ্বায়িত্ব অর্পিত রয়েছে মস্তিষ্ক থেকে আসা ক্রানিয়াল নার্ভ এবং স্পাইনাল কর্ড থেকে আসা স্পাইনাল নার্ভের উপর।
ক্রানিয়াল নার্ভ যেমন তথ্য সংগ্রহকরণের দ্বায়িত্ব পালন করে, তেমনি নির্দেশনা বহনের দ্বায়িত্বো পালন করে। কিছু কিছু নার্ভ একই সাথে দুইরকম কাজই করে।
১২ জোড়া ক্রানিয়াল নার্ভকে তাদের নাম এবং নাম্বার উভয় দ্বারাই চিহ্নিত করা হয়। ১২টা নার্ভের একসেট নিয়ন্ত্রন করে মস্তিষ্কের বাম দিকদিককে আরেক সেট নিয়ন্ত্রন করে ডান দিককে। এইভাবেই দ্বিপ্রতিসম মানব দেহ নিয়ন্ত্রিত হয়। তবে এটা এখনো বোঝা যায় নি, কিভাবে জিহবার মত অপ্রতিসম অঙ্গগুলো নিয়ন্ত্রিত হয়।
স্পাইনাল নার্ভঃ
স্পাইনাল নার্ভের উৎপত্তি স্পাইনাল কর্ডের ভিতর থেকে। স্পাইনাল কর্ডের চারপাশ ঘিরে আছে ছোট ছোট মেরুদন্ডীয় হাড়। এদেরকে পাঁচভাগে ভাগ করা যায়, সারভিকাল, থোরাসিক, লাম্বার, স্যাকরাল এবং কক্কিজিয়াল।
স্পাইনাল নার্ভগুলো, যা আসলে সেন্সরী এবং মটর নার্ভ, কাজের দিক থেকে ক্রানিয়াল নার্ভের মতই। ক্রানিয়াল নার্ভ যেখানে চোখ, কান মুখমন্ডল থেকে ইন্দ্রিয়গত তথ্যগ্রহন করে, স্পাইনাল নার্ভে দেহের বাকি অংশ থেকে তা গ্রহন করে। একইভাবে, ক্রানিয়াল নার্ভ যেমনি চোখ, জিহবা বা মুখের সঞ্চালন নিয়ন্ত্রন করে স্পাইনাল নার্ভ নিয়ন্ত্রন করে দেহের অবশিষ্ট অংশের যেমন হাত, পায়ের সঞ্চালন।
সোমাটিক নার্ভাস সিস্টেমের যোগাযোগ
সেন্ট্রাল নার্ভাস সিস্টেমের মত সোমাটিক নার্ভাস সিস্টেমও দ্বিপ্রতিসম। স্পাইনাল কর্ডের ক্রসসেকশন দেখলে দেখা যাবে, এতে আছে ডর্সাল ফাইবার, ভেন্ট্রাল ফাইবার, স্পাইনাল নার্ভ, সিম্প্যাথেটিক নার্ভ চেইন এবং ভিতরের দিকে গ্রে ম্যাটার ও হোয়াইট ম্যাটার।
মানুষের মত দুপায়ে সোজা হয়ে দাঁড়ানো প্রানীদের দেহে ডর্সাল ফাইবার পাইনাল কর্ডে প্রবেশ করে দেহের পিছন দিক থেকে, যেখানে ভেন্ট্রাল ফাইবার প্রবেশ করে ডর্সাল ফাইবারের তুলনায় সামনের দিক থেকে। ডর্সাল ফাইবার দেহের বহিঃঅংশ থেকে তথ্য সরবারহ করে পৌছে দেয় স্পাইনাল কর্ডের যথাস্থানে আর যেখানে এই ডর্সাল ফাইবারগুলো মিলিত হয় সেই স্থানটাকে বলে ডর্সাল রুট। আর ভেন্ট্রাল ফাইবার নির্দেশনা বহন করে পৌছে দেয় দেহের যথাস্থানে। যেখান থেকে ভেন্ট্রাল ফাইবার দেহের দিকে উন্মুক্ত হয়, তাকে বলে ভেন্ট্রাল রুট। স্পাইনাল কর্ডের মাঝে অনেকটা প্রজাপতির মত আকার নিয়ে আছে গ্রে ম্যাটার, মূলত কোষ দেহ আর বাইরের দিকে আছে হোয়াইট ম্যাটার, হোয়াইটে ম্যাটারই তথ্য পরিবহনের জন্য দায়ী।
ডর্সাল এবং ভেন্ট্রাল ফাইবারের ভিন্ন ভিন্ন কার্যক্রম বিজ্ঞানীদের সাহায্য করেছে দেহের বিভিন্ন অংশের আঘাতের বা অস্বাভাবিকতার রূপের সাথে ফাইবারগুলোর সম্পর্ক। যেমন, কোন ব্যক্তি যদি তার বামহাতের আঙ্গুলের অনুভব করার ক্ষমতা হারিয়ে ফেলে তাহলে চিকিৎসক বা বিজ্ঞানীরা বুঝতে পারে, তার স্পাইনাল কর্ডের C7 এবং C8 ডর্সাল নার্ভ ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। বিপরীত ভাবে, সে যদি ঠিক মত অনুভব করতে পারে সবকিছু, কিন্তু আঙ্গুলগুলো নাড়াতে না পারে, তাহলে বুঝতে হবে ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে এর ভেন্ট্রাল নার্ভ।
স্পাইনাল কর্ডেরও সেন্সরী এবং মটর তথ্যের মাঝে কিছু সমন্বয় সাধনের প্রয়োজন হয়, কিন্তু স্পাইনাল কর্ডের বিভিন্ন খন্ডিত অংশ কিভাবে সেসব সমন্বয় সাধন করে? আসলে স্পাইনাল কর্ডের পরপর দুটো অংশ পরস্পরের সাথে একসাথে কাজ করতে পারে এবং এভাবেই কাজে সমন্ব্য বজায় রাখে। এইধরণের সমন্বয়ের জন্য স্পাইনাল কর্ডের মস্তিষ্কের সাহায্যের প্রয়োজন হয় না। তারা পরস্পর স্বতন্ত্র ভাবে কাজ করতে পারে। যেমন স্পর্শ ইন্দ্রিয়ের তথ্য শুধু সংশ্লিষ্ট স্পাইনাল কর্ড খন্ডে যায় না, একই সাথে থ্যালামাস হয়ে সেরেব্রাল কর্টেক্সেও যায়। একইভাবে সেরেব্রাল কর্টেক্স এবং ব্রেইনের অন্যান্য অংশও চলন নিয়ন্ত্রন করতে পারে, কারণ স্পাইনাল কর্ডের ভেন্ট্রাল রুটের সাথে তারা সংযুক্ত। এইভাবেই মস্তিষ্ক এবং স্পাইনাল কর্ড পৃথক পৃথক ভাবে কাজ করলেও তারা পরষ্পরের সাথে সংযুক্তও।
অটোনমিক নার্ভাস সিস্টেম
আমাদের দেহের অটনমিক নার্ভাস সিস্টেম হচ্ছে আমাদের আচরণ নিয়ন্ত্রনের একটা অদৃশ্য সঙ্গী। আমাদের সচেতন মনের বাইরে এটা সর্বদা করে যাচ্ছে হৃদ সঞ্চালন, যকৃত থেকে গ্লুকোজ নিঃসরণ, আলোর সাথে চোখের মণির সংকোচন প্রসারন ইত্যাদি কাজগুলো। এর উপস্থিতি ছাড়া শুধু মাত্র সেন্ট্রাল নার্ভাস সিস্টেম ও সোমাটিক নার্ভাস সিস্টেম দ্বারা জীবন ধারণ করা কষ্টকর হয়ে যেতো। যখন আমাদের সচেতন মন বা মস্তিষ্ক ঘুমিয়েও থাকে, তখনও এই সিস্টেম তার কাজ চালিয়ে যাচ্ছে।
অটোনমিক নার্ভাস সিস্টেমের আবার দুটি ভাগ আছে, সিম্প্যাথেটিক নার্ভ ডিভিশন এবং প্যারা সিম্প্যাথেটিক নার্ভ ডিভিশন। এরা কাজ করে পরস্পরের বিপরীতে। সিম্প্যাথেটিক নার্ভ ডিভিশন আমাদের প্রস্তুত করে কাজের জন্য, যখন ব্যায়াম করা হয় বা কাজের চাপের মধ্যে থাকা হয়, তখন এটি আমাদের হৃদসঞ্চালনের গতি বাড়িয়ে দেয়, আবার অন্যদিকে পরিপাকের হার কমিয়ে দেয়। এই অবস্থা “Fight or Flight” নামে বেশ সুপরিচিত। আবার শ্নাত সময়ে প্যারা সিম্প্যাথেটিক সিস্টেম আমাদের হৃদসঞ্চালনের হার কমিয়ে দিয়ে পরিপাকের হার বাড়িয়ে দেয়।
সোমাটিক নার্ভাস সিস্টেমের মত, অটোনমিক নার্ভাস সিস্টেমও সমস্ত নার্ভাস সিস্টেমের সাথে যোগাযোগ রক্ষা করে। সিম্প্যাথেটিক সিস্টেম উদ্দীপ্ত হয় স্পাইনাল কর্ডের থোরাসিক এবং লাম্বার অংশে যদিও স্পাইনাল কর্ড সরাসরি লক্ষ্য বস্তুর (অঙ্গের) সাথে যুক্ত থাকে না। বরং স্পাইনাল কর্ড যুক্ত থাকে অটোনমিক নার্ভাস সিস্টেমের সাথে , যা গ্যাঙ্গলিয়া নামক স্নায়ু কোষের সমষ্টি। এই গ্যাঙ্গলিয়াই অভ্যন্তরীন অঙ্গগুলোকে নিয়ন্ত্রন করে। এটা স্পাইনাল কর্ডের সমান্তরালে প্রবাহিত হওয়া সিম্প্যাথেটিক নার্ভে চেইনে সাথে সংযুক্ত থাকে, যা এইধরনের নিয়ন্ত্রনের বার্তা বহন করে।
প্যারা সিম্প্যাথেটিক সিস্টেমও স্পাইনাল কর্ডের সাথে সংযুক্ত, বিশেষ করে স্যাকরাল অংশের সাথে। কিন্তু এর মূল অংশ নিয়ন্ত্রিত হয় তিনটি ক্রানিয়াল নার্ভের মাধ্যমে, ভেগাস নার্ভ শ্নাত করে অভ্যন্তরীন অঙ্গগুলোকে, ফেসিয়াল নার্ভ সাহায্য করে লালা(Saliva) নিঃসরণে, এবং অকুলোমটর নার্ভ সাহায্য করে চোখের মণির স্ফীতি নিয়ন্ত্রনে।
স্নায়ুতন্ত্র একটা জটিল সিস্টেম, আর সেইসাথে এখনো এটা আমাদের বিস্ময়ের জগত। এতোক্ষনের পড়া এইসব এনাটমি আমাদের দিতে পারে একটা হালকা ধারনা, কখনই সম্পূর্ণটা নয়, সম্পূর্ণটা তো এখন জানাই যায়নি। কিন্তু মস্তিষ্কের কোথায় কি হচ্ছে, সেই সম্পর্কে ভালোভাবে বুঝতে গেলে এই জানাটার দরকার আছে, অনেকটা সিড়ি বেয়ে উপরে উঠার মত। তাই কষ্টকরে শিখে নিলাম জিনিসটা। নবম থেকে দ্বাদশ শ্রেনী পর্যন্ত আমার এমন কোন টার্ম ছিল না, যেটাতে জীববিজ্ঞান পরীক্ষার আগে আমার জ্বর আসেনি। এমনি কি বোর্ড পরীক্ষাও দিতে গিয়েছি জ্বর নিয়েই। আমার মত যাদের জ্বর আসার প্রবণতা আছে, তাদের এই নিউরো-এনাটমি পড়ে জ্বর এসে যেতে পারে, হাতের কাছে একপাতা প্যারাসিটামল সাথে রেখেন।:D
তথ্যসূত্রঃ
1. Introduction to Brain & Behavior by Bryan Kolb / Ian Q. Whishaw
2. The Brain and Behavior, An Introduction to Behavioral Neuroanatomy, by David L. Clark , Nashaat N. Boutros, Mario F. Mendez
3. How the Brain work, by MARK Wm. DUBIN
4. Wikipedia
অসাধারণ একটি লেখা।
অনেক উপকার করলেন।
লেখাটা পড়ে আমার মস্তিষ্কেও অনুরণন ঘটেছে তবে সংগোপনে না স্বশব্দে। খুব সহজ ভাষায় সুন্দর করে জটিল একটা বিষয়কে আমাদের উপহার দেয়ার জন্যে অনেক অনেক ধন্যবাদ আপনাকে। (F) (F) (F) (Y) (Y) (Y)
@হোরাস, আরো খানিকটা সহজ হওয়া উচিত ছিল আসলে। স্রেফ তথ্যের সমাবেশটা ঘটিয়েছি… এরপর কখনও এই লেখাটাই আবার হাত দিলে আরো সহজ করার চেষ্টা করব… এনাটমি শুনলে আমার নিজেরই ভয় লাগে, সেটাকে ইন্টারেস্টীং ভাবে উপস্থাপন করাটা একটা ব্যাপার বটে।
আপনার অনুপ্রেরণার জন্য অনেক অনেক ধন্যবাদ। 🙂
অনুগ্রহ পূবর্ক আমার লেখা সমস্যা সমাধানের কোন উপায় জানাবেন কী?
@বাসার, আপনি যদি মুক্তমনায় লিখতে চান, তাহলে মডারেটরদের কাছে লেখা পাঠাতে পারেন, অতিথি লেখক হিসাবে, যদি মুক্তমনা ব্লগার না হয়ে থাকেন। আর সাথে কমেন্ট করতে থাকেন। মডারেটরদের নজরে পড়ে যাবেন। 😉
মুক্তমনা লেখার কিছু নীতিমালা আছে, ঐটা একটু কষ্ট করে পড়ে নিতে পারেন। 🙂
জীববিজ্ঞান যাদের পাঠ্য হিসাবে ছিলনা, তাদের জন্য একটু কঠিন মনে হচ্ছে, আসলে আমার মত পাঠকের জন্য। ধন্যবাদ সুন্দর লেখাটির জন্য।
@বাসার, জীববিজ্ঞান যাদের পাঠ্য ছিল, তাদের জন্যও খুব একটা সহজ না এটা আসলে, পাঠ্যবইয়ে এসব কিছু শেখানো হয় না।
ধন্যবাদ পড়ার জন্য। 🙂
আপু আল্লাহ আপনেরে বাঁচায় রাখুক, এত কঠিন লেখা পড়ায়ে জ্বর আসানোর জন্য :guli: এত পরিশ্রম করে এত কঠিন বিষয়টা নিয়ে লেখার জন্য :guru:
@লীনা রহমান, ওমা, তোমার সত্যি সত্যি জ্বর আসছে? সুবহানাল্লাহ… তোমার উপর রহমত বর্ষিত হোক। খুব খুশি খুশি লাগতেছে, তাও একজনের অন্তত জ্বর আসছে। :rotfl:
স্মাইলি কাজ করতেছে না, নাহয় তোমার জন্য একটা কালো ভূত রাখছিলাম। আমার অতি আদরের কালো ভূত। আর দিনের বেলা আইস… প্যারাসিটামল দিব নে।
@লীনা রহমান, :-[
এইবার পাইছি… নেও, আজ রাইতে ঘুমাইতে পারবা না… ঘুমের মধ্যে খালি মাথার ঘিলু দেখবা, আর ঘুমায়ে গেলে আমার ভূত গিয়ে তোমারে ডেকে দিবেনে। :))
@নীল রোদ্দুর, সমস্যা হইল…আমার ভূতের ভয় নাই…এখানে একটা তেলাপোকার ইমো থাকলেই কাম সারছিল, মুক্তমনা পরিবার থেকে একজন সদস্য হারিয়ে যেত
@লীনা রহমান, 😛 😛 😛
আমি একটা তেলাপোকার ইমো দাবী করতেছি… আপডেটকারী মডারেটর গন। যে নারী রগ কাটতে চায়, তাএ শায়েস্তা করার জন্য আমাকে একটা তেলাপোকার ইমো উপহার দেয়া হোক। প্লিজ। 😉
@নীল রোদ্দুর,
আপ্নেরে পাঠচক্রের খবর কেডা দেয় দেখতাছি…হুহ :rotfl:
মস্তিষ্ক নিয়ে এই আলোচনা মস্তিষ্কে ঢোকানোর মত মস্তিষ্ক আমার নেই। মস্তিষ্কে শুধু এইটুকু অনুরণন অনুভব করলাম যে, আপনাকে যে আমি আরেক বন্যা বলি, সেটা ভুল বলি না। (মন খারাপের কিছু নেই, বন্যারও বেশিরভাগ লেখা আমার মস্তিষ্কের বাইরে দিয়ে চলে যায়, তারপরেও সে আমার প্রিয় লেখক) । :))
@ফরিদ আহমেদ,
ভাইয়া, বন্যা আপু তো মুক্তমনা ভাসায়ে দিছে, আমি কি রোদে সব পুড়ায়ে দিব? 😉
তখন তো কইবেন, এত্তো রোদ, খোদা একটু বৃষ্টি দাও, একটু বাতাস দাও। মরে গেলুম। :-X
@নীল রোদ্দুর,
রৌদ্রস্নানে শুচি হোক ধরা।
@ফরিদ আহমেদ, না না মন খারাপ করবো কেন আমরা, এর চেয়ে বড় পুরষ্কার আর কী হতে পারে? পাঠক যখন বলে ‘আপনি আমার এত্ত প্রিয় লেখক, আপনার লেখা এতই উত্তম যে একটা শব্দও মাথার ভিতরে হান্দায় না!!!’ ফরিদ ভাই, এর পরে থেকে ‘খারাপ’ কিছু বলার থাকলে ব্লগে বইলেন আর এ ধরণের ‘ভালো’ প্রশংসাগুলা ফোন কইরা সরাসরি দিয়েন :)) ।
সাইটের আপগ্রেডের কাজে ব্যস্ত থাকায় আপনার চমৎকার এই লেখাটায় উত্তর দিতে পারি নি।
আমার পিএইচডির বিষয় ছিলো হিউম্যান ব্রেন মডেলিং। তখন থেকেই মস্তিস্কের অংগপ্রত্যঙ্গগুলোর সাথে আমি পরিচিত। কর্পাস ক্যালোসাম, কডেট নিউক্লিয়াস, পুটামেন, ভেন্ট্রিকেলস, হিপোক্যাম্পাস …আরো কত কি! আমার পিএইচডির কাজে মস্তিস্কের আমি ৪৩ টি অংশ মডেলিং করেছিলাম (এখানে কিছু ছবি আছে, দেখতে পারেন)। আমার সেই দুঃসহ স্মৃতি ফিরিয়ে আনলো আপনার লেখাটা।
আমার সেইসব কাজের অনেক্কিছুই এখন ভুলে গেছি। স্মৃতি থেকে কিছু মন্তব্য করি। প্রথমেই আপনি যে ব্রেন কেটে সচিত্র দেখিয়েছেন, এবং বলেছেন –
সাধারণ অর্থে ঠিকি আছে। কিন্তু নিউরোলজি জানা কেউ যখন মস্তিস্কের ব্রেনের ভিউ এর কথা বলেন তখন তারা মূলতঃ তিন ধরণের ভিউ এর কথা বলেন –
করোনাল সেকশন
এক্সিয়াল সেকশন
এবং স্যাজিটাল সেকশন।
মস্তিস্ককে তিন দিক থেকে কাটলে তিন রকমের দেখায়। আপনি যে ফ্রনটাল ভিউ এর কথা বলেছেন, সেটা আসলে করোনাল সেকশন। আমি একটা ছবি দিচ্ছি তাতে ব্যাপারটা পরিস্কার হবে-
[img]http://blog.mukto-mona.com/wp-content/uploads/2011/01/brain_3_view.jpg[/img]
আমি পড়তে পড়তে আরো কিছু মন্তব্য করব আপনার মূল লেখা নিয়ে।
@অভিজিৎ, আমার আগ্রহের সাথে আপনার পি.এইচ.ডি এর বিষয়টাও মিলে গেল! 🙂
কাজটা নাহয় কষ্টকর ছিল, স্মৃতিটা কি আসলেই দুঃসহ ছিল? :S তাইলে তো বিপদ, জীবন তেজপাতা!
Coronal-Horizontal-Sagittal –> ZX-XY-YZ plane
http://upload.wikimedia.org/wikipedia/commons/7/7f/Right_hand_cartesian.svg
এই আইডিয়াটা আগে মাথায় আসলে টেকনিক্যাল টার্মগুলোকে এড়িয়ে যেতাম না। স্রেফ একসাথে তিনটা প্লেন দেখেই মনে হল কথাটা, কিভাবে সহজে মনে রাখা যায়, সেটা আগে মাথায় আসছিল না। ধন্যবাদ ভাইয়া। 🙂
বিবর্তনের গতিপথে এককোষী জীব যখন বহুকোষী জীবে পরিণত হয়েছে তখন দেহের সবখানে বিভিন্ন অঙ্গ প্রত্যঙ্গে ছড়িয়ে থাকা অগণিত কোষের বৈচিত্রময় ক্রিয়াকলাপের সঙ্গে যোগসূত্র রচনা করা এবং পরিবেশের সাথে সুসম্পর্ক রক্ষা করার উদ্দেশে আবির্ভূত হয়েছে স্নায়ুতন্ত্র। স্নায়ুতন্ত্রের সর্বোচ্চ বিকাশ ঘটেছে মেরুদণ্ডী প্রাণীতে। আর এর মধ্যে মানুষই সর্বশ্রেষ্ঠ।
মস্তিষ্কের ক্রিয়া কলাপ নিয়ে লেখাটি ভালো লাগলো। আগের পর্বটিও সুন্দর ছিল।
@মাহফুজ,
একটু বিতর্ক করি আসেন। মানুষ সর্বশ্রেষ্ঠ কি আসলেই? মানুষ তো সবচেয়ে জটিল, এই আরকি! বোঝেও বেশী, খারাপ কাজও করে বেশী। অন্যপ্রানীরা যেখানে অ্যানিম্যাল ইন্সটিঙ্ক- এর কারণে সগোত্রীয় প্রানীকে হত্যা করে, আমরা সেখানে, তার বাঁচার অধিকার আছে জেনেও করি। কে শ্রেষ্ঠ তাহলে? 😀
আর আসলে পরিবেশের সাথে খাপ খাইয়ে নেয়ার উদ্দেশে বিবর্তন হচ্ছে না, বিবর্তনের ফলে এমন কোন বৈশিষ্টের উদ্ভব হচ্ছে, যা হয়ত আগের চেয়ে ভালোভাবে পরিবেশের সাথে খাপ খেয়ে যাচ্ছে।
অনেক অনেক ধন্যবাদ অনুপ্রেরনার জন্য। লেখার বিষয় ছোট হলে লেখার মানের দিকে ভালোভাবে নজর দিতে পারি, বড় হলে আর সেভাবে পারিনা। এইটা হয়েছে সেই সমস্যা। তবুও যে ভালো লেগেছে, জেনে আসলে খুশি লাগছে। 🙂
@নীল রোদ্দুর,
বিবর্তন নিয়ে বিতর্ক করতে চাই না। কয়েকদিন ধরে বন্যা আহমেদের ‘বিবর্তনের পথ ধরে’ বইটা বেশি বেশি করে পড়ছি। তাই যা কিছু সামনে আসে সবকিছুর মধ্যেই বিবর্তন দেখি। গল্প বলুন, কবিতা বলুন, মস্তিষ্ক বলুন সবকিছুতে এখন বিবর্তন খুজি। যখন যে বই পড়ি, সেই বইয়ের প্রভাব মস্তিষ্কের মধ্যে খেলা করে।
যাহোক, আপনি হয়ত সর্বশ্রেষ্ঠ শব্দটি দেখে বিতর্ক করতে চেয়েছেন। দেখুন, আপনার কথাতেই সর্বশ্রেষ্ঠ প্রমাণিত হয়েছে। আপনি বলছেন- “মানুষ তো সবচেয়ে জটিল, এই আরকি! বোঝেও বেশী, খারাপ কাজও করে বেশী।” মানুষ সব কিছুতেই বেশি, সেজন্যই তো বলি যে মানুষ সর্বশ্রেষ্ঠ। যাকে বলে আশরাফুল মাখলুকাত (তবে ধর্মীয় তত্ত্ব অনুসারে নয়)। মানুষ দ্বারা যা সম্ভব অন্য কোন প্রাণী দ্বারা তা সম্ভব নয়। সেজন্যই বলি মানুষ সর্বশ্রেষ্ঠ। এটা সহজ সরল কথা, কোনো জটিল তত্ত্ব নয়।
তবে আপনার
এই কথাটি নিয়ে বিতর্ক চলতে পারে, তবে আমাকে এ ব্যাপারে আরো পড়াশুনা করতে হবে। বেশ কিছুদিন আগে একজনের কাছ থেকে শুনলাম পরিবেশের প্রভাবেই বিবর্তন ঘটে। আবার শুনেছি জিনের কারণে বিবর্তন ঘটছে। এসব তথ্য পেয়ে মাথাটা একটু গোলমেলে হয়ে যাচ্ছে। বুঝতে পারছি, মাথাটা ঠিক করার জন্য অধ্যয়নের বিকল্প নাই।
আমি এতটুকু বুঝেছি, ন্যাচারাল সিলেকশন বলে একটা কিছু আছে। আর এখানেই রয়েছে বিবর্তন। আপনি যেহেতু মস্তিষ্ক নিয়ে কথা বলছৈন, সেখানে বিবর্তন টেনে আনাতে আলোচনা অন্যদিকে মোড় নিচ্ছে।
বোঝাই যাচ্ছে অনেক খাটাখাটনি করে লেখা পোস্ট, ভালো লাগলো এবং লেখকের জন্য থাকলো সাধুবাদ :rose2:।
@আল্লাচালাইনা,
কিছু কিছু জায়গায় যে একটুখানি হলেও ফাঁকি দিয়েছি, দেখেছেন তো? 😉
ধন্যবাদ। 🙂
মা প্রথমেই ভুল ছিলেন কারন , ইংরেজীর A = এই (ei) ; ( এ নয় !) । বস্তুত ইংরেজীতে ‘এ’ ধ্বনি প্রতিনিধিত্ব করার জন্য কোন নির্দিষ্ট বর্ন নেই , যদিও ‘I’ (i) দিয়ে বিশেষক্ষেত্রে একাজ চালানো হয়ে থাকে। এরকম কয়েক মিলিয়ন মায়ের ভুলের কারনে বাংলার শিশুরা take এর উচ্চারন ‘টেক’ শিখে বড় হয় যা আসলে ‘টেইক’ (teɪk ) !
এখানে আমার এই ধান ভানতে শিবের গীত কারন এটা নির্দেশ করা যে , পর্যবেক্ষনগত ভ্রান্তি থেকে ভ্রান্ত উপসংহারে উপনীত হওয়ার উদাহরন বিজ্ঞানে অনেক রয়েছে।
নার্ভাস সিস্টেমকে তুলনা করা যায় তথ্য প্রবাহ ব্যবস্হার সাথে যা অনেকটা নেটওয়ার্কের মত। অটোনমিক নার্ভাস সিস্টেম কিভাবে কাজ করছে যা কিনা একটা অচেতন দেহেও একই ভাবে কাজ করে। বিষ খাওয়ার পর এই নেটওয়ার্ক জ্যাম হয়ে যায় এবং নির্দেশনা জায়গা মত পৌছুতে পারে না।রহস্যটা ঠিক এখানেই। কিডনী কিংবা হার্টের এই ‘রুটিন’ কাজগুলোর মূল নির্দেশনা কোথা থেকে নার্ভাস সিস্টেমে আসছে তাই এখনও রহস্যময় , অনেকটা wikileak এর হিডেন সার্ভার খুজে পাওয়ার মত। ডেইটা নেটওয়ার্কে আছে কিন্তু কোথা থেকে এই এই ডেইটা আসছে এবং কে সেটা লীক করছে তা জানা আরও বেশী জরুরী।
@সংশপ্তক,
আমি আপনার কমেন্টের অপেক্ষায় ছিলাম।
ধান ভাঙ্গতে শিবের গীতটা কিন্তু যথেষ্টই গুরুত্বপূর্ণ একটা ব্যাপার। কারণ, শিশুকালের কিছু ব্যাপার আছে, যা সারাজীবনেও ঠিক করা যায় না বা বদলায় না। আমি বড় হয়েছি এমন পরিবেশে যেখানে সবাই শুদ্ধভাষায় কথা বলে। কিন্তু আমার দাদা-নানার বাড়ি যেখানে, আমার বাবা-মায়ের বড় হওয়া যেখানে, তারা সেই জায়গার বাচনভংগী থেকে কিছু একটা শিখে নিয়েছেন, উনারা ভাই বোনেরা নিজেদের মধ্যে যখন কথা বলেন, তখন একন একটা টোনে কথা বলেন, যেটা আমার সাথে বলা কথার চেয়ে আলাদা। আমি সেইভাবে কথা বলতে পারিনা, কিন্তু ঐ ভংগীর কথা শুনে আমার কখনও মনে হয় না, আমি ভাষাটা চিনিনা। আমার বাবা মা যে বিভিন্ন জনের সাথে ভিন্ন ভাষায় কথা বলেন, এটা উনারা মোটেও সচেতনভাবে করেন বলে মনে হয় না। খুব সম্ভবত আমিও অসচেতন ভাবে আমার মায়ের সাথে একভাবে আর বন্ধুদের সাথে আরেক বাচনভঙ্গিতে কথা বলি, যা আমি জানিনা। কেমন যেন মাতৃভাষা আর সেকেন্ড ল্যাঙ্গুয়েজ শেখার ক্ষেত্রে যে পার্থক্যটা আছে, তেমন একটা ঘটনার মিল পাই আমি। মাতৃভাষায় কথা বলতে আমার কখনই সচেতন হতে হয় না, কিন্তু ইংরেজীতে কথা বলতে কিছুটা হলেও হয়। আবার ইংরেজী ভাষাটা বুঝতে শিখতে কিন্তু আমাকে মেলায় কাঠ খড় পুড়াতে হয়েছে।
ভুলটা অনেক মা করেন সেও সত্যি, আমার মাও করেছেন। আমাদের দেশের শিশুরা আমাদের দেশে প্রচলিত ইংরেজীই শেখে। একারণেই সাবটাইটেল ছাড়া আমাদের অনেকেরই ইংরেজী ছবি দেখে বুঝতে কষ্ট হয়।
অটোনমিক সিস্টেমের নির্দেশনা কোথা থেকে আসছে, এটা যেমন জানিনা, তেমনি আরো অসংখ্য অজানা ব্যাপার আছে বলেই এটা আমাদের কাছে এখনো রহস্যের জগত। আমার কাছে পুরো ব্যাপারটা একধরনের রসায়ন। আমাদের DNA থেকে শুরু করে চিন্তা করা সবকিছুর মূলে অজস্র রাসায়নিক বিক্রিয়া যার ফলাফল হল আমাদের এই দেহের যান্ত্রিকতা। রহ্যসের উদঘাটন হবে এই রসায়নের ব্যাপারগুলো জানতে পারলে।
@সংশপ্তক,
আমার কাছে তো মনে হয় নার্ভাস সিস্টেমের এই অটোনমিক অংশটা সম্পর্কেই আমরা সবচেয়ে বেশী জানি এবং সবচেয়ে ভালো জানি অন্যান্য অংশগুলোর তুলনায় কেননা এইটার সম্পুর্ণটাই কেমিস্ট্রি, এইটা নিউরোসায়েন্সের একটা সম্পুর্ণ আলাদা শাখারই জন্ম দিয়েছে এন্ডোক্রিনোলজি নামে। সিমপ্যাথেটিক গমনপথ বা আড্রেনার্জিক গমনপথ সক্রিয় হলে হার্টরেট বাড়বে, প্যারাসিম্পপ্যাথেটিক বা কোলিনার্জিক গমনপথ সক্রিয় হলে হার্টরেট কমবে, ফাইট ফ্লাইট রেসপন্স ইনহিবিট করবে প্যারাসিম্প্যাথেটিক কার্যক্রম আর বিশ্রাম ইনহিবিট করবে সিম্প্যাথেটিক কার্যক্রম এবং একই নীতি বলবত থাকবে ব্রেইনস্টেম থেকে সূচীত আর সকল গমনপথ যেমন- মূত্রত্যাগ, শ্বসন হার, হজমক্রিয়া, গলধকরণ, বমন ইত্যাদির জন্যও। ব্যাপারটা অনেকটা গণিতের মতোই, এইটার মধ্যে কোন ভুগিচুগি নেই। আচমকা ভিমড়ি খেয়ে ব্লাডারের নিয়ন্ত্রন হারানোর রাসায়নিক ব্যাখা আমরা যতোটা ভালোভাবে জানি অতোটা ভালোভাবে কিন্তু জানিনা সুন্দর ফুলের গন্ধ পেয়ে কবির বইখাতা খুলে কবিতা লিখতে বসে যাওয়ার রাসায়নিক ব্যাখ্যা, কেননা অটোনমিক নার্ভাস সিস্টেম অ্যাসে করা অনেক সোজা সোম্যাটিক নার্ভাস সিস্টেমের তুলনায়। তারপরও সোম্যাটিক নার্ভাস সিস্টেমও কিন্তু খুবই ভালোকরে অ্রাসে করা যায়। ডিপ ব্রেইন স্টিমুলেশন শল্যচিকিতসার কথা শুনে থাকবেন হয়তো, যেখানে গ্লবাস প্যালিডাসে পেসমেকার বসানো হয়। সাবকর্টিকাল স্ট্রাকচার অ্যাসে করা বেশ কঠিন কিন্তু, এইটার জন্য রোগীকে জাগ্রত থাকতে হয়। ডিপ ব্রেইন স্টিমুলেশন একটা জাগ্রত সার্জারি যেখানে কিনা বিশাল বিশাল লম্বা একটা সময় রোগীকে জেগে থেকে ডাক্তারের নির্দেশ মোতাবেক হাত পা নাড়াতে হয় যখন কিনা ডাক্তার তার খুলীটা ফাটিয়ে মাথায় ইলেক্ট্রোড বসিয়ে সনাক্ত করছে কোন আঙ্গুল নাড়ালে কোন জায়গাটা ফায়ার করে ইত্যাদি ইত্যাদি। এইভাবে জায়গামত গ্লবাস প্যালিডাস শনাক্ত করে তবেই সেইখানে পেসমেকার বসানো যায়। অনেক এগিয়ে গিয়েছে এখন নিউরোসায়েন্স।
মানুষ জানে তো। অটোনমিক নার্ভাস সিস্টেমের সিম্প্যাথেটিক গ্যাংলিয়ন থাকে স্পাইনাল কর্ডের কাছে পাশেই, আর প্যারাসিম্প্যাথেটিক গ্যাঙ্গলিয়ন থাকে টার্গেট অর্গানের আশেপাশে যেখানে কিনা সোম্যাটিক নার্ভাস সিস্টেমের একটি মাত্র গ্যাংলিয়ন থাকে স্পাইনাল কর্ডের ভিতরে।
[url=http://www.flickr.com/photos/49962850@N08/5358056400/][img]http://farm6.static.flickr.com/5128/5358056400_4e77593027_z.jpg[/img][/url]
[url=http://www.flickr.com/photos/49962850@N08/5358056400/]Capture[/url] by [url=http://www.flickr.com/people/49962850@N08/]fff71[/url], on Flickr
btw উইকির অটোনমিক নার্ভাস সিস্টেম আর্টিকেলে দেখলাম লেখক বলে বসলেন একটা সম্পর্ণ নতুন অটোনিমিক সিস্টেমও নাকি পাওয়া গিয়েছে যেটা আড্রেনার্জিকও নয় আবার কোলিনার্জিকও নয় :laugh: । এবং বলাই বাহুল্য এতটা বড়সড় একটা ক্লেইম হজম করতে না পেরে কোন সুহৃদয় ব্যক্তি ‘সাইটেশন নিডেড’ মেরে দিয়েছেন।
@আল্লাচালাইনা,
এমন চমৎকার ব্যাখ্যা শুধু আপনিই দিতে পারেন। 🙂
আমার আসলে জানার আগ্রহ ছিলো , মস্তিষ্ক ডেভেলপ করার আগে আমাদের মেরুদন্ডহীন পূর্বসূরিদের রুটিন বা এড হক টাস্কগুলো কিভাবে নিয়ন্ত্রিত হতো , যেখানে নার্ভাস সিস্টেম ছিলো হয় ডিসেন্ট্রালাইজড অথবা কোন নার্ভাস সিস্টেম একদমই ছিলনা। এখন যেমনটা জেলী , স্পন্জ কিংবা একটু চরমভাবে বললে এককোষী ব্যকটেরিরার ক্ষেত্রে লক্ষ্য করা যায়। এখন নিশ্চয়ই বুঝতে পারছেন আমার ইঙ্গিতটা আসলে কোথায় নির্দেশ করছে।
@সংশপ্তক, আপনার প্রথম মন্তব্যটা দেখে আমিও কিন্তু প্রথমে ভেবেছিলাম ‘কেন? আমরা জানি তো কোথা থেকে এই তথ্যগুলো আসছে’। উত্তর দিতে গিয়ে (যদিও উত্তরটা কোনভাবেই আল্লাচালাইনার উত্তরের মত হতো না) ভাবলাম আপনার তো এরকম একটা প্রশ্ন করার কথা না, আপনি নিশ্চয়ই এখানে ‘কোথা’ মানে মস্তিষ্কের কোন ফিজিক্যাল লোকেশন থেকে তথ্যগুলো ট্রান্সমিটেড হচ্ছে সেই কথা বলছেন না, ইন্সট্রাকশানগুলো ‘কীভাবে’ তৈরি হচ্ছে বা এর ‘উৎস কোথায়’ তা বলছেন।
@বন্যা আহমেদ,
ধন্যবাদ। আপনি এবং নীল রোদ্দুর আমার প্রশ্নটা যথার্থই বুঝতে সক্ষম হয়েছেন। যেমনটা ধরেছেন, আমি আসলে জীন-ক্রোমোজম পর্যায়ের ঘটানাবলীর দিকে দৃষ্টি আকর্ষন করেছিলাম। যেমন, একটা ইঞ্জিনের ফিজিক্যাল এ্যাকশনের ব্যাখ্যা অবশ্যই আনবিক পর্যায়ের থার্মোডাইনামিক ব্যাখ্যা থেকে আলাদা হবে।
@আল্লাচালাইনা,
আজকাল তো মনে হয় অনেক ব্রেইনের অনেক সার্জারির জন্যই ফাংশানাল ব্রেইন ম্যাপিং করে নেওয়া হয়। বিশেষ করে, যে সব সার্জারিতে ব্রেইনের ভিতরে প্রবেশ করতে হয় বা ব্রেইনের কোন অংশ ফেলে দিতে হয়। ভাষার জন্য ব্যবহৃত এরিয়াগুলো, সেন্সেশন নিয়ন্ত্রণের জন্য সোমাটোসেন্সরি এরিয়াগুলো বা নাড়াচাড়ার জন্য যে সব মোটর কর্টেক্সগুলো রয়েছে সেগুলোকে ইলেক্ট্রিকালি স্টিমিউলেট করে ফাংশানালি তাদেরকে আইডেন্টিফাই করে নেওয়াটা এখন স্ট্যান্ডার্ড টেকনিক হয়ে গেছে।
ওহ হ্যা, সংশপ্তক কিন্তু ঠিকই বলেছেন, আপনার এই ধরণের ব্যাখ্যাগুলোর কিন্তু কোন জুড়ি নেই।
@বন্যা আহমেদ,
আমার একটা অন্যরকম প্রশ্ন আছে। নিউরোকার্ডিওজেনিক সিনকোপ নামে একধরনের ঘটনা আছে, যার কারন একেকজন রোগীর ক্ষেত্রে একেক রকম। ব্লাড প্রেসার কমে যাওয়া, ক্যারোটিড আর্টারীতে কোনভাবে রক্তপ্রবাহ কমে যাওয়া থেকে শুরু করে অনেক ঘটনার কারণেই এটা ঘটে। আসল কথা হল সাময়িকভাবে দেহে হেমোস্টাসিস কন্ডিশন বিঘ্নিত হয়ে যায়। তার ফলাফলে হয় এই ঘটনাটা। অতিসম্প্রিতি আমি এটার সাথে পরিচিত হয়েছি। আমার ক্ষেত্রে কারণটা কি, এটা এখনো নির্নীত না হলেও চিকিৎসকদের ধারণা, আমার অক্সিজেন ইনটেকে সমস্যার কারনে হতে পারে এটা। এমন কি আমার ঘটনাটা নিউরোকার্ডিওজেনিক সিনকোপই কিনা, তাতেও সন্দেহের অবকাশ আছে। আমার মনোযোগ অন্যদিকে, ক্যারোটিড আর্টারীতে ব্লক বা আর্টারী সংকুচিত হয়ে যাওয়ার ফিজিক্যাল ব্যাখ্যা আছে, কিন্তু হঠাৎ করে স্বাভাবিক ব্লাড প্রেসারের একটা মানুশের ব্লাড প্রেসার কমে যাওয়ার কারণ হতে পারে ভেগাস নার্ভের ইনপুটে সমস্যা, যা হার্টবিট রেট কমিয়ে দিচ্ছে, Fight or Flight কন্ডিশনেও। কোন কেমিক্যাল সাবস্টেন্স এই ভেগাস নার্ভের কাজের পিছনে আছে? সেটা কি জানা গেছে? আমি জানিনা।
নিউরোকার্ডিওজেনিক সিনকোপে আসলে কয়েকটা ঘটা একসাথে ঘটে, কনসাশ ব্ল্যাক-আউট, অতিরিক্ত ঘাম, শ্বাস জনিত সমস্যা, বমিভাব ইত্যাদি। তার মানে আসলে ঐ সময়টাতে কয়েকটা শারীরিক ঘটনা একসাথে অস্বাভাবিক হয়ে যাচ্ছে। সবকটার ফিজিক্যাল ব্যাখ্যা আসলে আলাদা করে বের করা সম্ভব, কিন্তু একসাথে এই সবকটা ঘটনার পিছনে যতটা ফিজিক্যাল ব্যাখ্যা যুক্তিযুক্ত, তারচেয়ে রাসায়নিক ব্যাখ্যা বেশী যুক্তিযুক্ত বলেই আমার মনে হয়।
লেখাটি অত্যন্ত ভাল লেগেছে। মানুষের মস্তিষ্কের গঠন ও কার্যপদ্ধতি সম্পর্কে জানার আগ্রহ আমার অনেক দিনের। নিঃসন্দেহে আপনার এ লেখা বেশ সাহায্য করবে আমাকে।
আমার মনে হয় এখানে ব্যবহৃত বেশ কিছু টার্ম বাংলায় অনুবাদ করে দেয়া যেতে পারে – তাতে লেখাটি আরো সহজবোধ্য হয়ে উঠবে।
@সৈকত চৌধুরী,
জায়গা মত হাত দিয়েছেন। 🙂
আমি অনেক বাংলাই খুঁজে পাচ্ছি না। অনুবাদ করতে পারিনা একদম, বাংলায় সমার্থক শব্দ খুঁজে পাই না। সেইসাথে সেন্সরী ফাংশন বললে যত ভালো বুঝতে পারি, ইন্দ্রিয়গত কার্য বললে তারচেয়ে ধীরে বুঝি।
আপনারা ভালো বাংলা শব্দার্থের খোঁজ দিলে উপকার হত। 🙂
আমি খুব দুঃখিত, ভুল করে মন্তব্য করার অপশনের টিক মার্ক উঠিয়ে দিয়েছিলাম। সৈকত চৌধুরী এটা আমাকে ফেসবুকে না জানালে মনে হয় খেয়ালও করতে পারতাম না। :S
আন্তরিক ভাবে ক্ষমা চাচ্ছি অনিচ্ছাকৃত ভুলের জন্য।
নীল রদ্দুর, সারাদিনই ব্যস্ততার মধ্যে থাকবো, তাই আগেভাগেই আমার মন্তব্যটা দিয়ে যাচ্ছি। বোঝাই যাচ্ছে অনেক কষ্ট করে লিখেছ, কাউকে না কাউকে অবশ্য এই কষ্টটা করতেই হত। আমিও মস্তিষ্কের বিবর্তনের উপর লেখাটা নিয়ে ‘ছ্যঁচড়াচ্ছি’ বেশ কিছুদিন ধরে। অনেকবারই লিখতে বসেছি, কিন্তু মস্তিষ্কের গঠন নিয়ে লিখতে হবে ভাবলেই লেখাটা ছেড়ে উঠে যাই। এখন তোমার লেখায় রেফার করে দিলেই হবে 🙂 । আচ্ছা, এর পরের পর্বগুলোতে কী কভার করা হবে তা কী ঠিক করেছ?
তানভীরের সমালোচনার সাথে একমত পোষণ করেই বলছি যে মস্তিষ্ক নিয়ে লেখা খুব কঠিন। একে তো অনেক কিছু আমরা এখনো জানি না আর যতটুকু জানি তা এত জটিল যে বেশ কিছু ‘বোড়িং’ বর্ণণার পর্ব না সেরে পরবর্তী ‘মজার’ বিষয়গুলো নিয়ে এগুলো সম্ভব না। আমি বেশ অনেকদিন ধরে এ নিয়ে ‘ঘষ্টাচ্ছি’ দেখেই নীল রদ্দুরের জন্য একরাশ সহানুভূতি জানিয়ে গেলাম।
@বন্যা আহমেদ,
আমি তো আপনার স্নেহধন্য। 🙂
আপু, পুরো প্ল্যান করিনি, তবে ভ্রুনের নার্ভ ডেভেলপমেন্ট আর নার্ভ সেলের অ্যাকশন পটেনসিয়াল পরিবর্তনের মাধ্যমে সিগনাল কিভাবে যাওয়া আসা করে এই নিয়ে লিখব ভেবে রেখেছি। বাকিগুলো পরে চিন্তা করব, ধীরে। আরো পড়ি, আইডিয়া চলে আসবে। তবে শেষের দিকে আচরণের পিছনের কারণেই বেশী লেখার ইচ্ছা আছে।
ভ্রুণের নার্ভ ডেভেলপমেন্ট নিয়ে লেখার ইচ্ছাটা বেশী হয়েছে, কারণ মানব স্বত্তার পরিচয় বা কখন থেকে একে মানব স্বত্তা বলা যায়, এটা নিয়ে আমি নিজেই খুব আগ্রহী হয়ে উঠেছি। দেখা যাক, উত্তর পাই কিনা, কিংবা উত্তরের কাছাকাছি যেতে পারি কিনা।
পরিশ্রমী একটা লেখা!
পুরো মস্তিষ্কের ডিটেইল বর্ণনা যেভাবে এসেছে তাতে মনে হচ্ছে পরবর্তী পর্বেগুলোর জন্য একটা সলিড ভিত্তি নির্মাণ হলো। এই সিরিজ নিয়ে ক্রমে আরো বেশি আশাবাদী হয়ে উঠছি।
এবারে সমালোচনা-
এ পর্ব শুরু হয়েছে যেমন চমৎকার ভাবে, কিছু দূর যাবার পরে তথ্যবহুল বর্ণনা একটু ‘ওভারডোজ’ এর মত হয়ে গেছে। আমার মত হচ্ছে, প্রতি অংশের (বা অন্তত বেশ কয়েকটা পার্টের) বর্ণনার পরে সেই অংশগুলো নিয়ে ইন্টারেস্টিং কিছু ‘গল্প’ বলা যেতে পারে। এতে পাঠকের পক্ষে রিলেট করা সহজ হয়। মনেও থাকে ভালো। না হলে টেক্সট বই সুলভ একঘেয়েমি চলে আসতে পারে। অবশ্য এ ধরণের মেগাসাইজ লেখা শেষ করার পরে কেমন ক্লান্তি আসে সেটা বেশ কিছুদিন যাবত টের পাচ্ছি। 😥 এখনই না করা হলেও, পরে কখনো এই মডিফিকেশনটা করার অনুরোধ রইলো। আর লেখার শেষে তথ্যসূত্রগুলো সময় করে যোগ করতে হবে।
সব শেষে :rose2:
আর ইটালিকের ব্যাপারে: ভিজুয়াল এডিটর বন্ধ করে যেখান থেকে ইটালিক শুরু হয়েছে তার শুরুতেই খুঁজে দেখতে হবে ’em’ এমন কিছু চলে এসেছে কি না। থাকলে মুছে দিলেই হবে। আর তা না হলে মডুরা তো আছেনই।
@তানভীরুল ইসলাম,
কথা সত্যি! তবে আমি লেখাটা লিখেছি প্রায় একসপ্তাহ সময় নিয়ে। ধৈর্য্য রাখাটাও কঠিন মনে হচ্ছিল। গল্প আমি দিতে চাই, পরে হয়ত মডিফাই করলে আসলেই দেব। কিন্তু এখন দেয়ার মত ম্যাচুরিটি আমার নেই আসলে। যেমন বেশ কিছু ক্লিনিকাল গল্প আছে, সেগুলো সম্পর্কে কিছুটা জানি, পুরোটা না। এখন দিলে খানিকটা ফাঁদে পড়ে যাব। অন্য প্রানীদের সাথে একটা তুলনামূলক চিত্র দিতে পারলে ভালো হয়। দেখি, সেটা করতে পারি কিনা।
আমি নিজেই এই জিনিসটা কখনো একবারে পড়িনা, ভাগে ভাগে পড়ি। অভিজিৎ দার মেগা সাইজের ব্লগও আমি একবারে পড়তে পারি না। প্রায় এক থেকে দেড় দিন সময় নিয়ে ধীরে ধীরে পড়ি। তাই কিছুটা ধারণা হয়েছিল, আমি একাই হয়ত একবারে এতটা পড়তে পারিনা। 🙂
আর গোলাপের জন্য ধন্যবাদ। 🙂
ছবিসমেত পোষ্ট দিলে নিজেকে বিপদাপন্ন প্রানী মনে হয়। একবার ভিজুয়াল এডিটর অফ করি আরেকবার অন করি। ছবি গুলো কিছুটা সাইজে আনলেও এখন দেখি, একটা অংশের পর থেকে সব ইটালিক হয়ে আছে। কিভাবে যে হয় টেরই পাইলাম না। ২২ টা ছবির যন্ত্রনায় তো আধমরা হয়েই গেছি… তার উপর আরো এডিট করতে হবে। এই লেখা শুরু করে আর কোন কাজেই মনোযোগ দিতে পারছিলাম না বলে সব ছেড়ে ছূড়ে লেখাটাই শেষ করলাম। গাঁদাখানেক টাইপো আছে, জানি। এখন মনে হচ্ছে, ছেড়ে দে মা কেঁদে বাঁচি!
আমার মত আনাড়ি ব্লগারদের জন্য কি সব কিছু MS word এর মত করে দেয়া যায়?
ভুল ধরিয়ে দেন… প্লিজ! তথ্য সংক্রান্ত তো বটেই, টাইপো সংক্রান্তও… আর চাই ভুলের তুলোধুনা করে সুকঠিন আলোচনা।
@নীল রোদ্দুর,
আপনার একটি ট্যাগ ওপেন ছিলো। ঠিক করে দেয়া হয়েছে।
@মুক্তমনা এডমিন,
ধন্যবাদ। 🙂