লিখেছেনঃ জয়েন্টু
মানবতাবাদ জিনিসটি কি (?) এটিও কি এক ধরনের মতবাদ -নাকি বিপ্লবী চেতনারই বহিঃপ্রকাশ (?) অথবা মনুষ্যত্বের দায়বদ্ধতা (?) খুবিই জটিল এবং চিন্তার বিযয় ও বটে। কাকতালিয়ভাবে শব্দটি আমাকে বারবার প্রশ্নবিদ্ধ করতে এবং নতুনভাবে ভাবিয়ে তুলতে শুরু করেছে -যদি ও ৯৯৯০-এর নভেম্বরের দিকে ভারতের ত্রিপুরায় শরনার্থী শিবিরে থাকাকালীন জেনেছিলাম আমাদের খোজঁ খবর নিতে নাকি ডেনমার্ক থেকে এক মানবাধিকার কর্মীর দল এসেছে। বয়স তখন ৫ এবং ৬ বছরের মধ্যে। অত্যন্ত আগ্রহী হয়ে ছুঁটে গিয়েছিলাম সাদামানুষের সেই দলকে এক পলকের জন্য দেখবো বলে। অনেকের মুখে-মুখে শুনেছিলাম -এদের অনেকেরই নাকি এলএলবি পাশ করেছে। অধ্যায়নের সর্বোচ্চ স্তর। মনেমনে তখন ভাবনার ঢোল ঝুলতেছিলো আমারও, আমাকে ও একদিন এমন অধ্যায়ন করতে হবে -যেনো এরকম হাজারো মানুষের ভীরে হাততালির গুন্ঝন শুনতে পায় -মানুষের মনে আমি যেমন আনন্দ পাচ্ছি সেভাবে আনন্দ কিংবা উদ্দীপনা যোগাতে পারি। স্বপ্নের বিভোরে ভেসে চলে সেই অবুঝ বালকের মন। স্বপ্ন দেখতে থাকে অনাবিল আনন্দে -সে বুঝতে চাইতো না যে সে কতটা অহেলিত এবং নির্যাযিত। মা-বাবার অবাধ্য হয়ে জীবনের মর্ম কি খুজেঁ চলে -বনে-জঙ্গলে-নদীনালা-খালবিলে। হিন্দী সিনেমা দেখতে বাবার কাছে টাকা চেয়ে নেয় -আর ছুটেঁ যায় সুতাবিহীন ঘুড়ির মতো। উড়তে থাকে আকাশের শূণ্যদ্বীপে -মুক্তমনে -স্বাধীনভাবে। নেই কোথাও বিধিনিষেধ -রিলিজিওন-এর দায়বদ্ধতা। শুধু ঘুরে বেড়ানো আর সময়ে পাঠশিক্ষা এবং ক্ষুধা নিবারণ করা। তবুও সে স্বপ্ন দেখে একদিন এলএলবি পাশ করে -মানুষের প্রশংসা কুড়াবে। কি কঠিন স্বপ্ন সেই অবুঝ বালকের (?) এখন সে অবুঝ বালকটি একাকী বসে চলে যায় সেই সোনালি স্বপ্নের যুগে আর হাসে। কি জটিল মানুষের এই জীবন (?)।
যাহোক, প্রসঙ্গে আসি যা নিয়ে কিছু লিখবো বলে জটিল সৃষ্টির সাহায্য নিয়েছি। প্রসঙ্গটা হচ্ছে “মানবতাবাদ” কিংবা “হিউমিনিজম”কে নিয়ে। আমি এর সচ্ছতা নিয়ে উদ্বিগ্ন এবং সন্দেহ প্রকাশ করি, যখন ব্যাঙের ছাতারমতো গজানো “মানবাধিকার সংস্থার” ফলকগুলোকে বিভিন্ন গণমাধ্যমসমূহে দেখি। “মানবতাবাদ এবং মানবাধিকার” -এর দুয়ের পার্থক্যটা জানতে আমার মনের কৌতুহল বাড়ে। এর জন্য যে তারপর বেশি বই পড়েছি তা ও নয় -বরং সকাল-বিকেলে নিজের মনুষ্যত্ববোধের কাছে প্রশ্ন ছুড়েঁছিলাম আর উত্তর খুজেঁছিলাম। তাই আমার এই লেখাটি কেবলমাত্র এক ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতারই ফসল। এক মানুষের সত্যিকার মনুষ্যত্ববোধ কোথায় তা অনুসন্ধান করতে আমাকে এই ২৬ বছর বয়সে আসতে হয়েছে। এখন নির্ধিদায় বলতে পারি “মানুষের গুণাবলীর স্থান বাইরের কোথাও নয় -বরং একজন ব্যক্তিতেই সেসব নিহিত থাকে আর সেসব গুণাবলীকে আত্ম-প্রচেষ্টার মাধ্যমে আবিষ্কার করা হচ্ছে জীবনের আসল উদ্দেশ্য -তাই স্বপ্রচেষ্টার মাধ্যমে নিজস্ব মনুষ্যত্ববোধকে খুজেঁ পেতে হয় -যা সবকিছুর উর্ধ্বে”। এর আগ পর্যন্ট কেউ সত্যিকার মানবতাবাদী হতে পারবে না -সে যতবড় প্রসিদ্ধ কিংবা নামজাদা মানবতাবাদী কর্মী হোক -যে পর্যন্ট না সে নিজেকে শুধু এক মানুষ হিসেবে চিনতে পারে। পৃথিবীতে বর্তমানে হরেকরকমের ব্যবসা হয় -এরই মধ্যে “মানবাধিকার” ও একটি -যাতে কোনো সন্দেহ নেই। কোনো এক ঘটনার পরবর্তীতে -উক্ত ঘটনারই পরিপ্রেক্ষিতে পত্রিকায় লেখা, কিংবা টিভিতে প্রচার করা, অথবা ওয়েবসাইট-এ নিজস্ব মতামতের উপর ভিত্তি করে অভিব্যক্তি প্রকাশ করা -এই হলো বর্তমান মানবাধিকার কর্মিদের কাজ। খুবিই সীমিত এবং হীন এক ব্যবসা। একদিন এক নামকরা মানবাধিকার কর্মীর সাথে দেখা হলে নিজেই নিজের গোপনতা প্রকাশ করলেন -বললেন যে কোনো এক সময় মালদ্বীপ সরকারের লঙ্ঘনকৃত অপরাধের বিরুদ্ধে লিখতে যাবে শুনে -সরকার নাকি উনাকে ২ কোটি রুপি দিতে রাজী হয় -তার বিনিময়ে তবু ও সংবাদ প্রচার না করা। আমিতো জানি সবগোপনী্য়তা। খেলেও কেউ কি কিছু বলবে -হ্যাঁ, আমি খেয়েছি। দিলে ও কেউ কি বলবে -হ্যাঁ আমি এতো লক্ষ টাকা উনাকে দিয়েছি সে যেনো সংবাদ না ছাপাই। খুবই নিরাপদ পেশা -এককথায় ঠান্ডামাথায় দূর্নীতি। তবুও উনাদের কমবেশি যে মানবিক মূল্যবোধ নেই তা অস্বীকার করছি না।
পার্বত্য চট্রগ্রামে যখন সাম্প্রদায়িক সহিংসতা হয় -মূলত দুধরনের সংবাদ গনমাধ্যমের কাছে পৌঁছাতে সংবাদমাধ্যমে ছাপানো হয়। এক: পাহাড়ি সন্ত্রাসীরা নিরীহ বাঙ্গালীদের পল্লীতে তান্ডবলীলা চালিয়েছে, এর বর্ণনা দিতে রামায়নের কাব্য বানানো হয়, নতুবা- দুই: মাঝেমাঝে আসতে পারে নিরপেক্ষ নমুনায়, যেমন পাহাড়িদের গ্রামে আগুন -যা ঘটেছে মূলত এক অঙ্ঘাত দলের কারণে। এই অঙ্ঘাত দলটি কে বা কারা -ঘটনার পূর্ণাঙ্গ ব্যাখ্যা আর মিলে না। আর দেশহিতৌষী-বরেণ্য-সম্রাঙ্ঘী সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে কে একবিন্দু কথা বলার সাহস রাখে। এখানে এসে সব সত্য ভূ-গর্ভের নিচে চলে যায়। সরকারকর্তৃক লোকদেখানো মানবাধিকার সংঘ ঘটন করা হয় -ঘটনার সত্যটা কতিয়ে দেখবে বলে। আদৌ কি কোনো সত্য উৎঘাটন হয়েছে (?) যা হয়েছে সবটা হয়েছে এর উল্টো -বিকৃতভাবে বাঙ্গালী জাতীয়তাবাদের উপর ভর করে পাহাড়িদেরকে চিহ্নিত করা হয়েছে বিচ্ছিন্নতাবাদী মহল হিসেবে। যাদেরকে নিয়ে মানবাধিকারের সংঘ ঘটন করা হয়েছে -উনারাতো আবার অল্পশিক্ষিত কিংবা নির্বোধ ব্যক্তি ও নন -উনারা ওতো কোনো না কোনোভাবে মানবাধিকারের পেশা নিয়ে জড়িত। তাহলে -সত্য কেনো তবুও গোপন থাকে (?)। কারণ একটাই, উনারা যদিও মানবাধিকারের কথা বলতে চান -কিন্তু সত্যিকার অর্থে মানবতাবাদী হতে পারেন নি -অর্থাত্হ মনুষ্যত্ববোধ সম্পর্কে জ্ঞান পরিধি সীমিত -সোজা কথায়, মানবতা কি জিনিস তা ভালোভাবে হৃদয়ালব্ধী হয়নি অথবা জানেন না। হয়ত বা হতে পারে বাঙ্গালী জাতিয়তাবোধ আদৌ উনাদের পিছু টানে -নতুনা মাইনে কমবে বলে চিন্তা করে। এই হচ্ছে বর্তমান বিশ্বের মানবাধিকার কর্মীদের কার্যকলাপ। হবে না ও কেনই বা -যে আমেরিকা জাতিসংঘকে সিংহভাগ অর্থ যোগান দেয় বিশ্ব শান্তি প্রতিষ্টার জন্য -আর সে আমেরিকাই আবার আফগানিষ্টান এবং ইরাকে বোমা ফাটে সন্ত্রাসী নির্মূল করবে চলনায়। আবার মানবতার দরদ দেখিয়ে উত্তর কোরিয়া, মিয়ানমারের মতো অনগ্রসর দেশগুলোর প্রতি নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে। কি নিষ্ঠুর মানবজাতি (?)। সবদিক দিয়ে অবর্ণিত ক্ষতি নিরীহ জনসাধারণের উপরই সাধিত হচ্ছে।
মানুষের একটাই স্বভাব সহজে অন্য আরেকজনকে প্রভুত্ব আসনে বসিয়ে রাখা -যারপরিপ্রেক্ষিতে রচনা করতে পারে নতুন অন্য এক কেতাব -আমার প্রভু জনমানুষের কথা ভেবেছিলেন বলে নিজের জীবনের কথা চিন্তা করেন নি। আমার প্রভু জনদরদী-হৃদয়বান ব্যক্তিদের একজন -এক কথায় অবিনশ্বর এবং ইত্যাদি…..ইত্যাদি। এইসব হচ্ছে একধরণের সুবিধাবাদী মহলের প্রচারণা। মানবতাবাদের টুপিটি কিন্তু এনারা আগে পড়েন। এনারা চেঁচিয়ে গলাফাতান -যেকোনোভাবে হোক মানুষদের সামনে মানবতাবাদী সাজতে হবে। আবার নিরীহ কিন্তু অল্পশিক্ষিত মানুষেরা এনাদের কথা সহজেই বিশ্বাস করেন -কারণ অধিকাংশ সমাজের জনগোষ্ঠি আদৌ স্বশিক্ষিত হতে পারেননি যদিও উচ্চশিক্ষিত হয়েছেন বটে।
এখন প্রশ্ন হতে পারে “মানবতাবাদ” জিনিসটা কি -বস্তু নাকি ব্যক্তি (?) মানবতাবাদের সত্যিকার তাৎপর্য অন্য আরেকজনকে হৃদয়ক্ষম করানো এক ধরনের দুরদিগম্য ও বটে -কেননা মনুষ্যত্বকেতো নিজের মাঝে আগে খুজেঁ পেতে হয়। মনুষ্যত্ববোধ হচ্ছে নিজেকে আগে শুধুমাত্র মানুষ হিসেবে চেনা -যেখানে আটাঁ থাকবে না রিলিজিওন-জাতি-বর্ণের ভেদাবেদ। নিজেকে আগে অনুধাবণ করা শুধুমাত্র এক মানুষ হিসেবে -তারপর চিন্তার গভীরে নিয়ে যাওয়া সত্যিকার মানবিক গুণাবলীগুলোকে অন্বেষনের প্রয়াসে। নিজেকে বারবার প্রশ্ন করা -এক মানুষ হিসেবে আমার কি কি গুণাবলী থাকার প্রয়োজন (?)। ধরুণ, আমি চিন্তা করছি আমার মানুষ হিসেবে দরকার -অন্ন, বস্ত্র এবং বাসস্থান। তারপর ধারাবাহিকভাবে চলে আসে ভাষাগত-সংষ্কৃতিগত মৌলিক অধিকারগুলোর কথা। যা আমার আছে -অন্যদের ও থাকা আবশ্যক, যা আমি পারি না -অন্যদের ও পারতে বাধ্য করবো না। আমার যা স্বাধীনভাবে চিন্তাবিকাশের অধিকার -আমার মতো অন্য আরেকজনওটো চিন্তা করতে পারে -যা উনার ও মৌলিক অধিকার। আমি যেমন রক্তে-মাংসে গড়া এক মানুষ, সে ও টো এক মানুষ। আমার থাকতে পারে উনার কেনো থাকতে পারে না (?)। অর্থাত্হ -প্রথমে নিজের মূল্যবোধকে আবিষ্কার করা -আর অন্যদের ও সেভাবে দেখা। তাকেই বলে মানবতাবাদ। আর এই মানবতাবাদের সত্যিকার তাৎপর্যকে প্রচারের মাধ্যমে জনমানুষকে সচেতন করার উদ্দেশ্যতাই হচ্ছে মানবাধিকারের সংস্থাগুলোর মূলমন্ত্র হওয়া উচিত বলে আমি নির্ধিদায় মনে করি।
——————————————–
লেখকের পরিচিতি: আমি একজন সাধাসিধে পরিবারের সন্তান। এখনো পড়াশুনা নিয়ে ব্যস্ত। লেখালেখি করি কোনো সখের বসে নয়, বরং মনের ভাবকে ফুটিয়ে অন্যদের মাঝে তুলে ধরাই হচ্ছে আমার উদ্দেশ্য। তাই, ভাষাগতভাবে আদৌ আমি এতটা দক্ষ নই। আমি সত্যিকার মানবতাবাদের বিশ্বাসী। কোনো কিছুকে সহজে যেমন গ্রহণ করি না তেমন আবার উপেক্ষা ও করি না। যুক্তিসম্মত এবং বিজ্ঞানসম্মতভাবে চিন্তা করি, গ্রহণ করার মতো হলে গ্রহণ করি -আর না হলে হারিয়ে দিই চিরতরে। ব্যক্তিস্বাধীনতাকে বেশি গুরুত্ব দিই।
কৃতজ্ঞতা: সাংবাদিক এবং লেখক বিপ্লব রহমানের (দাদার) লেখা মুক্তমনায় পড়তে গিয়ে লেখক অভিজিত দাদাকে আবিষ্কার করি। দু‘জনের লেখায়ই আমার এই লিখনিটির লেখার অনুপ্রেরণা যুগিয়েছে। উনাদেরকে হৃদয়স্থল হতে ধন্যবাদ জানাই।
চমৎকার,সহজ ভাষায় কত সুন্দরভাবেই না আপনি আপনার মনের কথা বলে দিলেন।খুব ভাল লাগলো। আমি জাতিগত বাঙালী। এবং,জানি যে আমাদের জাতির দোহাই দিয়ে বাংলাদেশের সব দল ও সব নেতাই পাহাড়ের জনগনের সাথে অন্যায় করে এসেছে।সহাবস্থানের সুন্দর ও সহজ সমাধানের চেষ্টা না করেই অন্যায় শক্তি ও দুর্নীতিপূর্ন কৌশল অবলম্বন করে এসেছি। খুব লজ্জাবোধ করি যখন দেখি বাংলাদেশ আর্মি পার্বত্য অন্চলের “শান্তিস্থাপনে” নিয়োজিত। আমরা নিজেরাই সেনা অত্যাচারের শিকার ছিলাম ,খুব অতীতে ও নয়, সেই আমরাই কেমন করে সেনা দিয়ে শান্তিপ্রতিষ্ঠা সমর্থন করতে পারি!!!! আপনি ঠিক ধরেছেন যে আমরা কত বড় “হিপোক্রেট”।বাংলাদেশ আমার দেশ, আমার নিজের দেশ ” ইসরাইলি” আচরন করেছে , এর চেয়ে লজ্জা আর কি হয়? পাহারের মানুষেরা নিজেদের ঐতিহ্য ও সমাজ টিকিয়ে রাখতে উপায় না পেয়ে অস্ত্র হাতে নিয়েছিল এবং আমরা তাদের সন্ত্রাসি বলেছিলাম, এতো ইসরাইলি আচরন। এবং, পাহারেও আমাদের ট্র্যাডিশনাল দুর্নীতি শিক্ষাও ভালই দিয়েছি। এসবই আমার কাছে লজ্জার।
আমি জানি যে, ক্ষুদ্র আমাদের বাংলাদেশে বাঙালী জনগোষ্ঠির প্রবেশ ও বসবাস বন্ধ করানো সম্ভব নয়। দেশের সর্বত্র ব্যাবহার করেই উন্নয়ন করতে হবে এবং পার্বত্য অন্চলের উন্নয়নের নেতৃত্বে আনতে হবে পাহাড়ের জনগনকেই।দারিত্রতা পাহাড়ী মানুষদের বিচ্ছিন্ন মনোভাবের মুল কারন,এর সমাধান কে অগ্রাধিকার দিতে হবে।দেশের মুল ভাবধারার সাথে পাহাড়ী জনগনের কিভাবে সেতু নির্মান করা যায় তা ভাবতে হবে এবং তা হতে হবে পাহাড়ি সমাজের অস্তিত্ব সুরক্ষা করে। যোগ্যতানুযায়ী মন্ত্রনালয়ে এমনকি দেশের প্রধানমন্ত্রী বা রাষ্ট্রপতিও পাহাড়ী জনগোষ্ঠি থেকে আসতে পারে। এর মাঝে জাতিগত কোন প্রশ্ন উঠতে পারে না।দেশের মুল বাজারব্যাবস্থায় পাহাড়ী জনগোষ্ঠীকে অগ্রাধিকারভিত্তিতে জায়গা করে দেয়া উচিত। পাহাড়ী জনগোষ্ঠীর পরামর্শ অনুযায়ী পর্যটনমুলক পার্বত্য চট্টগ্রামের পরিকল্পনা করা উচিত এবং পর্যটনশিল্পে নিয়োগের ক্ষেত্রে উপজাতি অগ্রাধিকার দেয়া উচিত।
পাহাড়ের সাথে দেশের যোগাযোগ সুনিশ্চিত করলে আশা করি আমাদের কোন পাহাড়ী ভাইয়ের আর দুঃখজনক বাস্তব অভিজ্ঞতার বিনিময়ে মানবতার আসল রুপ দেখতে হবে না।
আপনার লেখার জন্য অনেক ধন্যবাদ
@অসামাজিক, ধন্যবাদ আপনাকে। অধিকার নিশ্চিত না হওয়ার আগে উন্নয়নের পথে চলা ভয়ংকর হবে। আগেতো সাংবাধিনিক স্বীকৃতি জরুরি -তারপর উন্নয়নের কথা না হয় চিন্তা করা যাবে।
@জয়েন্টু,
মুক্তমনায় আপনাকে স্বাগতম। এখানে নিয়মিত লেখার বিনীত অনুরোধ জানাই। :rose:
আপনার লেখা পড়তে পড়তে বার চোখের সামনে ভেসে উঠছিল খুব কাছ থেকে দেখা লোগাং, নান্যাচর গণহত্যা, ত্রিপুরার একাধিক শরণার্থী শিবির, কল্পনা চাকমা অপহরণসহ পাহাড়ের অসংখ্য মানবাধিকার লঙ্ঘনের রোমহর্ষক সব ঘটনা।…এমন কি এই সেদিন ১৯-২০ ফেব্রুয়ারির বাঘাইছড়ি সহিংসতার ঘটনাও।…
[img]httpv://www.youtube.com/watch?v=-oWdB0Tou-U[/img]
@বিপ্লব রহমান, ধন্যবাদ দাদা। আপনারা সঙ্গে থাকলে অবশ্যই লেখার চেষ্টা করবো। ভালো থাকেন।
মুক্তমনায় স্বাগত জানাচ্ছি। :rose2: ভিন্ন ধরণের একটি বিষয় নিয়ে লেখা শুরু করেছেন। লেখা চালিয়ে যাবেন এই আশা করছি। আর মানবাধিকারকর্মীরা যেন মুখোশধারী না হয়ে মানবতা ও মনুষত্বকে সমুন্নত করতে পারেন সেই আশাবাদ ব্যক্ত করছি। আপনার চিন্তার প্রতিও সাধুবাদ জানাচ্ছি।
কিছু মনে না করলে একটা কথা বলতে চাই। লেখার বানান ভুলগুলো যদি ঠিক করে দিতেন তাহলে পাঠক লেখা পড়তে বেশি স্বাচ্ছন্দবোধ করবে বলে মনে করছি। আবারো স্বাগত জানাচ্ছি মুক্তমনা পরিবারে। 🙂
@লীনা রহমান, ধন্যবাদ আপু। তাই হোক -যেনো সত্যিকার মানবতার বীজ অঙ্কুরিত হয়। আর সরল-নিরীহ আপামর জনসাধারণ যেন এর প্রতারণা থেকে মুক্তি পায়, যেমনটা ধর্মের কুসংকারের অভিশাপকে উপড়ে তুলা জরুরি।
আর আপনি যে বানান পরিশুদ্ধির কথা বলছেন -আসলে আমি এক অতিথি লেখক হিসেবে লেখাটি পাঠিয়েছিলাম। তাছাড়া আমার কোনো বাংলা টাইপিংয়ের কিবোর্ড নেই -কষ্ট করে হলেও ব্লগে ঢুকে লেখাগুলো বাংলাতেই লিখি। তাই কর্তৃকপক্ষ যদি আপনার দাবিটি নজরে আনেন -আর কষ্ট করে বানানগুলো শুদ্ধ করেন -তাহলে অতি কৃতঙ্ঘ থাকিতাম।
@জয়েন্টু, অভ্রের উপর আর কিছু আছে নাকি? অভ্র নামিয়ে নেন না। অনেকঅ সুবিধা হবে আপনার। আমি তো অভ্রতেই সব লিখি ওয়ার্ডে, পরে এখানে পেস্ট করে দেই।কর্তৃপক্ষ এর জন্য এটা করাটা তো বেশ ঝামেলার ব্যাপার। অভ্র নামিয়ে নেন সব সমস্যার সমাধান পাবেন। http://www.omicronlab.com/avro-keyboard.html এখান থেকে নামিয়ে নেন ফ্রী। বাংলা টাইপিং এর জন্যে অভ্রের মত সহজ আর সুবিধাজনক সফটওয়ার আর নেই।
@লীনা রহমান, ধন্যবাদ আপু। আশাকরি প্রতি সপ্তাকে অন্তত একটি করে লেখা শেয়ার করতে পারবো।
বিষয় বস্তু খুব ভাল লেগেছে। আপনার লেখার স্টাইলটাও পছন্দ আমার।
@আসরাফ, ধন্যবাদ ভাইয়া।
@লেখক,আপনার লেখা পড়ে খুব ভালো লাগলো……………কর্তৃত্ববাদীতা কোন ভাবেই কাম্য নয়,কিন্তু আমি আমাদের আশে-পাশের মানুষদের মাঝে কর্তৃত্ব পরায়ন হয়ে উঠার প্রবনতা খুব বেশি লক্ষ্য করা যায়…………।।
মুক্তমনায় স্বাগতম জয়েন্টু। গুরুত্বপূর্ণ একটি ইস্যু নিয়ে লিখেছেন। আরো লিখবেন আশা করছি ভবিষ্যতে।
@অভিজিৎ, ধন্যবাদ দাদা। আপনাদের অনুপ্রেরণা আমাকে আলোকিত হতে সঠিকপথ দেখাবে। সময় হলে অবশ্যই লেখার চেষ্টা করবো, যদিও অঙ্গীকার করতে পারি না।
“মানবতাবাদ” শব্দটা আসলে বেশ বিভ্রান্তিকর একটা শব্দ। ইংরেজিতে humanitarian যা বোঝায়, humanism তা বোঝায় না। একটার অর্থ মানবসেবা, আরেকটার অবশ্য দু’টো অর্থ আছে,
১) ভাষাতত্ত্ব, সাহিত্য প্রভৃতি মানবিক বিষয়কে সম্যকভাবে humanism বলে। এই অর্থে এডওয়ার্ড সাঈদ একজন humanist।
২) আধুনিক যুগে humanism বলতে মানবজাতির পথ চলার জন্য যুক্তিকে আলিঙ্গন করাই বোঝায়। মানবতাবাদ যুক্তিবাদেরই একটি শাখা, তবে যুক্তিবাদ যেখানে জ্ঞানতত্ত্ব নিয়ে কাজ করে মানবতাবাদ সেখানে মানুষের জীবন নিয়ে কাজ করে। এই অর্থে আরজ আলী মাতুব্বর, আহমেদ শরীফরা humanist।
এটা খুব দুর্ভাগ্যজনক যে দু’টো অর্থকে বাংলায় একটি শব্দ দিয়েই প্রকাশ করা হয়। এতে করে তথাকথিত humanitarianদের দোষক্রুটিগুলো প্রায়ই humanistদের কাধে চেপে বসে। বাংলা উইকিপিডিয়াতে দেখুন- যুক্তিবাদ ও মানবতাবাদ।
@পৃথিবী, ধন্যবাদ আপনাকে -ভাইয়া। তাইতো “মানবতাবাদকে” উর্ধ্বে রেখে “মানবাধিকার কর্মীদের” দুর্বলতাকে তুলে ধরতে চেয়েছিলাম, যদিও ভাষাগতভাবে অথোতা শক্তভীত গড়াতে পারিনি।
মুক্তমনায় স্বাগতম। :rose2:
@সৈকত চৌধুরী, :yes: আপনাকে ধন্যবাদ -ভাইয়া।
মুক্তমনায় স্বাগতম।
:deadrose: আমার মনে হয় আপনি ঠিক ধরেছেন। বাঙালী শ্রেষ্ঠতাবাদের অস্তিত্ব অস্বীকার করা যাবেনা কোন ভাবেই। পাহাড়ী মানুষের প্রতি শ্রদ্ধা ও সহমর্মিতা ছাড়া এ মুহূর্তে আর কিছু উপহার দিতে পারছিনা। তবে এ ব্যাপার গুলি নিয়ে ইন্টারনেটে একটি আন্তর্জাতিক আন্দোলন গড়ে উঠুক, এটা চাইব।
@রৌরব, ধন্যবাদ আপনাকে -ভাইয়া।
আমার লেখাটি কিন্তু শুধুমাত্র এক মানুষ হিসেবে মানবিক দৃষ্টিকোণ হতে লিখেছি -যেখানে শুধু বাঙালী জাতীয়তাবোধকে পৃথকভাবে দেখিনি বরং দুনিয়াতে যারা আদৌ অন্যায়কে প্রশ্রয় দিতে সত্যকে লুকাতে চান তাদের মুখোঁজ খুলতে আমার এই লিখনি।
মুক্তমনায় স্বাগতম জয়েন্টু।
একটু দ্বিমত করছি। পার্বত্য চট্টগ্রামের খবর ছাপানোতে আমাদের মূল ধারার প্রিন্ট মিডিয়া (কট্টর জামাতি বা কট্টর জাতীয়তাবাদী ছাড়া) ইচ্ছায় বা অনিচ্ছায় কতখানি সেন্সর করেছে বা ঘটনাসমূহকে কতখানি বিকৃত করেছে জানি না, তবে আমাদের মিডিয়া যে পুরো বিষয়টিকে উলটে দিয়েছে এমন কখনোই মনে হয় নি আমার। বরং মিডিয়া যথেষ্ট সহানুভূতির সাথে পাহাড়িদের উপর বাঙালিদের অত্যাচারের বিষয়টিকে তুলে এনেছে। হয়তো সেটা যথেষ্ট ছিল না, কিন্তু পক্ষপাতমূলক আচরণ করেছে বলে আমার কখনোই মনে হয় নি।
@ফরিদ আহমেদ, আপনাকে ধন্যবাদ ভাইয়া। আপনাদের ভালো লাগা আর মন্দ লাগাই আমার ভবিষ্যত চলাকে আলোকিত করবে। আমি কিন্তু সম্পূর্ণভাবে অস্বীকার করিনি যে একদম কোনো খবর পত্রিকায় আসেনি কিংবা আসছে না। দুই নম্বরে যেটি লিখেছিলাম তা ও অস্বীকার করা যায় না। কেউ কি আদৌ ফলাওভাবে ঘটনার লুক্কায়িত সত্যকে তুলে ধরতে পেরেছেন? কারণ, পার্বত্য চট্রগ্রামের কোনো খবর ছাপানো হলে সেনাবাহিনীর সেন্সরের মধ্যে দিয়ে যেতে হয়। আগেকার দিনে (যা বর্তমানে আন্দোলনেরত) মাষ্টার যা খুসি এক ছাত্রকে পিঠাতে পারত -আর সব দোষ শুধু ছাত্রের উপরই চাপানো হত। পরীক্ষার পরবর্তী উক্ত মাষ্টারের বিষয়ে ছাত্রের ফলাফল ফেল -সে যতমেধাবী কিংবা বিনয়ী হোক -কেউ আর প্রশ্ন করবে না। মাষ্টারের সিদ্ধান্তই চুরান্ত -উনি ভুল ফলাফল দিতে পারেন কিভাবে -নিশ্চয় ছাত্রটি লিখতে পারে নি ভালোভাবে।
সবাইকে কি একমাপে মাপ করা যায় -ভাইয়া (?)। যারা গড়ে আবার তারা ভাঙ্গতে ও পারে সহজে। আপনি যে সহানুভূতি নিয়ে লিখছেন -আপনি কি মনে করেন অন্য আরেকজন সে সহানুভূতি নিয়ে লিখতেছেন।আপনি কিন্তু পক্ষপাত কথাটি হামেসা নিয়ে আনলেন। তাইতো সবকিছুর আগে মনুষ্যত্ববোধকে খুজেঁ পাওয়া জরুরী। ভাবতে হবে মানুষ হিসেবে -এতে পক্ষপাত কথাটি আসার মানে দেখি না।
আপনার লেখার হাত অবশ্যই ভালো। আর চিন্তার প্রবাহটা আমার বেশ ভালো লেগেছে। সত্যিই তো — নিজেকে আবিষ্কার করতে না পারলে অন্যের সত্য বুঝতে পারবো কিভাবে ? অভিনন্দন ও শুভকামনা।
@মোজাফফর হোসেন, :rose:
ধন্যবাদ -ভাইয়া। চলুন গড়ি -নব্য মানবতার ইতিহাস।