মানুষ আসলে একটি গ্রুপের মাঝে থাকতে পছন্দ করে। এই যেমন মুক্তমনা বা সচল বা সামহোয়ারইন সবাই একটি গ্রুপ। আরো বড় গ্রুপ যদি চিন্তা করেন তবে ধর্মীয় গ্রুপ গুলো, কিংবা একেকটি জাতি বা রাষ্ট্রকে চিন্তা করতে পারেন। ছোট হোক বা বড় হোক যে গ্রুপে আপনি স্বাচ্ছন্দ বোধ করেন সেই গ্রুপে আপনি চলতে পছন্দ করেন। গ্রুপের অন্যান্য সদস্যদের প্রয়োজন গ্রুপ বড় করার আবার আপনার নিজেরও প্রয়োজন কোন না কোন গ্রুপে থাকার। এভাবে দু’য়ের প্রয়োজনে আপনি আপনার গ্রুপ খুঁজে পান আবার গ্রুপও আপনাকে খুঁজে পায়। গ্রুপের চেষ্টা থাকে নানান সুবিধে দিয়ে তার গ্রুপকে সুসংহত রাখার। অন্য গ্রুপের আক্রমন হতে গ্রুপ আপনাকে রক্ষা করে। নিজের নানান বিপদে গ্রুপের সদস্যদের আপনি পাশে পাবেন যেটা আপনি পেতেন না যদি আপনি এই গ্রুপের সদস্য না হতেন। তাই কোন না কোন গ্রুপে আপনি সচেতনে কিংবা অবচেতনে যুক্ত থাকেন। এর মাঝে অনেক গ্রুপ হয়তো আসলেই সাংগঠনিক ভাবে বিদ্যমান আবার অনেক গ্রুপ শুধু মাত্র আদর্শে বিদ্যমান। যেমন আপনি হয়তো গণতন্ত্রে বিশ্বাসী। পৃথিবীর যে কোন গণতন্ত্রাকামি মানুষের প্রতি আপনার সহানুভুতি থাকবে। আবার গ্রুপের সদস্যদের মাঝে কোন প্রকার অপ্রীতিকর ঘটনা রোধে গ্রুপ নানান নীতিমালা প্রণয়ন করে থাকে। গ্রুপ সব সময় নিজের ভাঙ্গন রোধে সচেষ্ট থাকে। তাই অনেক সময় কেউ গ্রুপ হতে বের হয়ে চলে যেতে চাইলে সেটাকে প্রতিহত করার চেষ্টা করে। গ্রুপের মাঝে কেউ নিয়ম না মানলে তাকে শাস্তি দেওয়া হয় গ্রুপকে রক্ষার্থে। এই সবই চিন্তা করা যেতে পারে “এজ এ সেলফিশনেস অফ এ গ্রুপ” হিসেবে।
ছোট হোক বড় হোক যে কোন গ্রুপের মাঝে আমরা এই কমন বৈশিষ্ট্যগুলো দেখতে পাবো। এই বৈশিষ্ট্যগুলো যেমন সত্য মুক্তমনা বা সচলের মত ছোট গ্রুপের জন্য তেমনি সত্য প্রাতিষ্ঠানিক ধর্মীয় সংগঠনগুলোর জন্য। এ কারণেই অনেক মানুষ ধর্ম তেমন ভাবে পালন না করলেও শুধু মাত্র তার নিজের বা পরিবারের জন্য গ্রুপে রয়ে যায়। তিনি ব্যক্তিগত ভাবে ধর্ম পালন না করলেও, এমন কি ধর্মে অবিশ্বাস করলেও শুধু মাত্র সামাজিকতা রক্ষার্থে হয়তো জুম্মার নামাজটি, কিংবা ঈদের নামাজটি করেন, কিংবা রোজার মাসে রোজাও রাখেন। অনেকেই প্রশ্ন তুলতে পারেন, জুম্মার নামাজ পড়া বা রোজা রাখা কি ধর্ম পালন নয়? আমার জবাব হচ্ছে হিন্দুদের অনেকে উপোস করে থাকে, সেটা কি রোজা? না, তেমনি এক ওয়াক্ত নামাজ পালন, কিংবা সারা মাস উপোস করাটা ধর্ম পালন নয়। ধর্মে যদি তার বিশ্বাস থাকতো, তার যদি আল্লাহ্র ভয় থাকতো তবে তিনি পাঁচ ওয়াক্তই নামাজ পড়তেন। কারণ ইসলামে এক ওয়াক্ত নামাজও না পড়ার জন্য কোন অজুহাত রাখা হয়নি। এবার আপনি আপনার আশেপাশে তাকিয়ে দেখুন শতকরা কতভাগ মানুষ পান, যারা সত্যিকার ভাবে আসলে ধর্ম পালন করে, বা ধর্মকে ধারণ করেন।
আবার যারা সত্যিকার ভাবে ধর্ম পালন করেন তার মাঝে বেশিরভাগই নিরীহ, সাধারণ মানুষ, যারা মূলত পরকালের ভয় থেকেই পুরোপুরি ধর্ম পালন করেন। এদের মধ্য খুব কম মানুষই কোরনের অনুবাদ পড়েছেন। কোরান সম্পর্কে জানেন এক মাত্র হুজুরদের বয়ান থেকে। আর যে সব হুজুরেরা বয়ান করেন তাঁদেরও বেশিরভাগই কম পড়ুয়া। খুতবার জন্য যতটুকু না জানলেই নয়, তাই জানেন। একই খুতবা আমার সারাজীবনে বার বার শুনে এসেছি জুম্মার বা ঈদের নামাজে। তাহলে প্রকৃত জিহাদী চেতনার মানুষ কিছু হিজবুত তাহরীর মত উগ্র সংগঠন থেকেই পাই, যারা মানুষের ধর্মভীরুতার, অজ্ঞতার, দারিদ্রতার সূযোগ নিয়ে ব্যবহার করে।
এখন কথা হল যে আমাদের শত্রু সকল ধার্মিক নয়। শত্রু প্রাতিষ্ঠানিক ধর্ম, এবং আরো সুনির্দিষ্ট করে বললে ধর্মের মাঝে বিদ্যমান ক্ষতিকর এলিমেন্টগুলো, এবং আরো সুনির্দিষ্টভাবে বললে সেই সব এলিমেন্ট ব্যবহার করে যে সমস্ত ব্যক্তি তারা। আমি দেশে ফোন করার জন্য একবার একটি টেলিকমের লাইন নিয়েছিলাম, এবং সে জন্য আমাকে ক্রেডিট কার্ডের নম্বর দিতে হয়েছিল ফোনে। যে লোকটি নিয়েছিল তারা ব্যবহার কেমন যেন সন্দেহজনক মনে হয়েছিল। আমি ক্রেডিট কার্ড কোম্পানিকে ফোন করে বললাম ঘটনা। সে যেটা বললো, এ রকম ফোনে অনেক লেনদেন হয়, সো ডোন্ট ওওরি। আমি জিজ্ঞেস করলাম ওই ব্যক্তি যদি আমার কার্ড ব্যবহার করে নিজে কিছু অনলাইনে কিনে, তাহলে? সে আমাকে যেটা বললো যে, আমার সেই প্রটেকশান আছে। যদি ওরা দেখে যে সেই জিনিসটি আমার নামে বা আমার ঠিকানায় যায় নি, তবে বুঝবে এটা আমি কিনিনি এবং সে ক্ষেত্রে টাকা আমাকে দিতে হবে না। আর তার চেয়েও যেটা বললো যে এটা করবে সেটা তার জন্য একটি ক্রিমিনাল এক্ট হবে। ক্রেডিট কার্ডের মালিক যেহেতু সে নয়, তাই সে সেটা ব্যবহার করলে আইনত সে অপরাধী। এই ঘটনাটি বলার উদ্দেশ্য হল যে সব ব্যক্তি সাধারণ মানুষের ধর্মভীরুতার, দারিদ্রতার সূযোগ নিচ্ছে সেই প্রকৃত অপরাধী। আমি এই কথাটি বারবার বলার চেষ্টা করি, যে কে প্রকৃত শত্রু সেটা আগে জানুন, তার পর না আপনি যুদ্ধে নামবেন।
এখন এই অপরাধী যেন তেন অপরাধী নয়। এই অপরাধী অনেক চালাক, কারণ তার অস্ত্র সেটাই যেটা মানুষের প্রয়োজন। এর সবচেয়ে বড় শক্তি হচ্ছে সেই মানুষগুলো যাঁদের সে ব্যবহার করে। কিন্তু সেই মানুষগুলো কেন এ রকম ব্যবহৃত হচ্ছে? হচ্ছে কারণ এত বড় গ্রুপের শক্তির বিরুদ্ধে দাঁড়াবার মত ক্ষমতা তার নেই। এ রকম একটি বড় গ্রুপের বিরুদ্ধে তাকে লড়তে দিতে হলে তাঁর প্রয়োজন অন্য একটি কাছাকাছি শক্তির গ্রুপের অবস্থান যেখানে সে তার প্রয়োজনীয় শক্তিটুকু পাবে। যদি তাঁকে সেই গ্রুপটি না দিতে পারেন তবে তার কাছ থেকে কিছু প্রত্যাশা করা ভুল। আর যদি তাকেই অপরাধী বানিয়ে বসে থাকেন তবে আপনি নিজেও বড় ভুল করলেন। ভুল শত্রুর পেছনে নিজের শক্তি খরচ করলেন। শত্রুর স্থলে নিজের ট্যাকনিকাল মিত্রকে নিজের শত্রু বানিয়ে দিলেন।
তাই আমার মতে একটি মুক্তমনা সমাজ দেখতে হলে মুক্তমনা গ্রুপকে বড় করতে হবে। মানুষের কাছে গ্রুপের আদর্শকে তুলে ধরে গ্রুপকে সব সময় বৃদ্ধি করার চেষ্টা করতে হবে। এবং এই গ্রুপে অন্য যে কারোর বিরুদ্ধেই বিদ্বেষ পূর্ণ কথার বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স থাকতে হবে গ্রুপের ভালোর জন্য। প্রায় এ রকম কথাই বিপ্লব’দা বলেছিলেনঃ বিজ্ঞান ভিক্তিক জনসংগঠনের কথা। জীবনটাই একটা যুদ্ধ, বেঁচে থাকার প্রচেষ্টাই একটি যুদ্ধ। এই যুদ্ধে জয়ী হতে হলে আগে তার লক্ষ্য এবং উদ্দেশ্য পরিষ্কার করতে হবে। উদ্দেশ্যহীন ভাবে তীর ছোড়াছুড়ি করলে শুধু সময় আর শক্তির অপচয় হবে। আর সেই অপচয় নিশ্চয়ই আমাদেরকে টিকে থাকতে কোন প্রকার সাহয্য করবে না। তাই যারা নিজেদের মুক্তমনা মনে করেন, নিজেদের মাঝে যুদ্ধ না করে, চলুন লক্ষ্য ঠিক করি, সেই লক্ষ্য অর্জনের জন্য কাজ করি। এই সংগঠনটিকেই বড় করি। মানুষের কাছে এর আদর্শ তুলে ধরি।
নিউটন যা বলেছেন তা কুরানে আছে, আইনস্টাইন যা বলেছেন তা কুরানে আছে এমনকি কুয়ান্টাম মেকানিক্স এর কথাও নাকি কুরানে আছে, তাইলে স্টিফেন হকিংয়ের কথা কুরানে থাকবে না কেন, অবশ্যই থাকতে হবে।
“এই মাত্র সেদিন স্টিফেন হকিং বলিয়াছেন মহাবিশ্ব সৃষ্টিতে ঈশ্বরের ভুমিকা গৌন, আসলে কোন ভুমিকাই নাই। এই ২০১০ সালে পদার্থবিদ স্টিফেন হকিং যে কথা বলছেন, পবিত্র কুরআনে আল্য্যা পাক সেই চোদ্দশত বছর পুর্বেই এই কথা বলিয়া দিয়াছেন।”
(courtesy :http://www.somewhereinblog.net/blog/realAsifM/29241532).
লেখক কে ধন্যবাদ।কথাটা খুব মনে ধরেছে। :rotfl: :hahahee: :lotpot:
“নিজেদের মাঝে যুদ্ধ না করে, চলুন লক্ষ্য ঠিক করি, সেই লক্ষ্য অর্জনের জন্য কাজ করি। এই সংগঠনটিকেই বড় করি। মানুষের কাছে এর আদর্শ তুলে ধরি।” :rose2:
স্বাধীনের ভক্ত হয়ে যাচ্ছি দিনকে দিন।
আহা, সবাই যদি স্বাধীনের মত এমন হতো, তবে বোধহয় অভিধান থেকে ‘ব্যাশিং’ শব্দটাকেই অবলুপ্ত করে দেওয়া যেতো চিরতরে।
@ফরিদ আহমেদ,
কোনটাই বিলুপ্ত হবে না। গসিয়ান ডিস্ট্রিবিউশান যদি মানি তবে উগ্র, নরম এবং মাঝামাঝি এই সব ধরণের জাতই থাকবে। তবে মডারেট সব সময় বেশিই থাকবে। বাকিগুলো গ্রাফের দুইদিকে অল্প পরিমানেই থাকবে 😀 ।
এটা মেনেই চলতে হবে :-X ।
খুবই ভালে লেখা। বিশেষ করে আমার জন্য। এই বিষয়টাকে অনেকদিন থেকে বুঝার চেষ্টা করছিলাম, তেমন একটা সিদ্ধান্তে আসতে পারিনি।
একলা চলে বা ছোটখাট গ্রুপের মধ্যে মতাদর্শগত বিশুদ্ধতা বজায় রেখেও কি সামাজ পরিবর্তনে যথেষ্ট অবদান রাখা যায় কিনা, এই ব্যাপারে আরও কিছু লেখার কেউ একটু রেফারেন্স দিলে বাধিত হই।
@Atiqur Rahman Sumon
ধন্যবাদ মন্তব্যের জন্য।
একলা বা ছোটগ্রুপে চলার ব্যাপারে নিজের চিন্তাটুকু উপরে নিটোলের মন্তব্যে বলেছি। আর সমাজে অবদান তো রাখা যায়ই সব ভাবে। ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র অবদানেই সমাজে পরিবর্তন আসবে। একলা বৃহৎ অবদানের মত চাপ নিয়ে কেউ কাজ করেনি আমার মতে। এমনকি ধর্ম প্রবক্তারাও শুরুতে নিজেরাও জানতো না যে সেটা কতটুকু কাজ করবে। চিন্তা করে দেখুন ধর্ম প্রবক্তা কিন্তু অনেকেই এসেছে, কিন্তু সফল হয়েছে অল্প কয়েকজনই। আর খ্রিষ্টধর্মের বেলায় খ্রিষ্ট ধর্ম প্রচার পেয়েছে জিসাস এর জন্মের কয়েকশত বছর পরে।
যা হোক, এই ব্যাপারে আমার কাছে কোন রেফারেন্স নেই। নিজের মাথায় যা আসে সেগুলোই লিখি। অন্য কারোর কাছে কোন রেফারেন্স থাকলে আশা করি উনার দিবেন।
বাংলাদেশের র্ম হেরা ঈশ্বর, দেবদেবী, নবী-রাসুলের কথা শুনে শুনে বেহেস্তে বা স্বর্গে যাইতে পারলেই হইল, হেরা নাস্তিকদের মত ক্যাচালে যাইতে চায় না, আবার মৌলবাদী জামাত বা বজ্রংবলিদের মত অন্য ধর্মের লোকদের গলা জবাই করতেও রাজি না। সাধারন মানুষ নরমপন্থী, তারা অত গুতাগুতির মাঝে যাইতে রাজি নয়। তারা সুফী-সন্ন্যসীদের মতে চলে, পায়দল হাটিয়া নারায়ণগন্জ যায় ফকিরের মত হইয়া, ইস্তেমাতে কাঁদা মাখিয়া কান্না-কাটি করে, রাধা-কৃষ্ণের লীলাখেলার গান শুনে বউ-বান্ধবীরে ফোন লাগায়। এই ধরনের লোকজন ব্লগে বেশি। সাধারন বাংগালী জীবনেও এদের সংখ্যা বেশি।
লেখা ভালো লেগেছে।
বাংলাদেশের সাধারন মানুষ ঈশ্বর, দেবদেবী, নবী-রাসুলের কথা শুনে শুনে বেহেস্তে বা স্বর্গে যাইতে পারলেই হল, তারা নাস্তিকদের মত ক্যাচালে যাইতে চায় না, আবার মৌলবাদী জামাত বা বজ্রংবলিদের মত অন্য ধর্মের লোকদের গলা জবাই করতেও রাজি না। সাধারন মানুষ নরমপন্থী, তারা অত গুতাগুতির মাঝে যাইতে রাজি না। তারা সুফী-সন্ন্যসীদের মতে চলে, পায়দল হেটে নারায়ণগন্জ যায় ফকিরের মত হয়ে, ইস্তেমাতে কাঁদা মেখে কান্না-কাটি করে, রাধা-কৃষ্ণের লীলাখেলার গান শুনে বউ-বান্ধবীরে ফোন লাগায়। সাধারন বাংগালী জীবনেও এদের সংখ্যা বেশি।
ধর্মের গোষ্ঠীবদ্ধ রুপ এক ধ্বংসাত্মক শক্তি- অনেক যুদ্ধ, অনেক হত্যার ইতিহাস। ধর্ম মানব সভ্যতাকে দিয়েছে যেমনি, নিয়েছেও অনেক। একটি নিরীহ মানুষকে রাতারাতি পাশবিক শক্তিতে রুপান্তরিত করতে ধর্মের জুড়ি নেই। কিন্তু ধর্ম মানে বিশ্বাস, কোনো প্রশ্ন নয়! ধর্মের গোষ্ঠীবদ্ধ রুপ সম্ভবত পথিবীর সবচেয়ে ধ্বংসাত্মক শক্তি- অনেক যুদ্ধ, অনেক হত্যার ইতিহাস। ধর্ম মানব সভ্যতাকে দিয়েছে যেমনি, নিয়ছেও অনেক। একটি নিরীহ মানুষকে রাতারাতি পাশবিক শক্তিতে রুপান্তরিত করতে ধর্মের জুড়ি নেই।কিন্ত সামাজিক ধর্মকে নিন্দা করতে গিয়ে ধর্মবিশ্বাসকে আক্রমন করলে সমস্যা |
আগের মন্তব্য সরিয়ে দেবার জন্য মডারেটরকে অনুরোধ করছি |
@shaibal,
ধন্যবাদ মন্তব্যের জন্য।
@shaibal,
আপনি আসলে কে বলবেন? প্রায়ই দেখি আপনি নানান ব্লগের নানাজনের কথা নিজের মন্তব্য হিসেবে চালান। নিজের কিছু আনুন তো দেখি। ছোটবেলায় পরীক্ষার খাতায় সাহিত্য আলোচনায় নানা সাহিত্যিকের উদ্ধৃতি তুলে দিতাম, মুখস্থ করতাম পরীক্ষায় লেখার জন্য। কিন্তু, আপনি কী উদ্দেশ্যে অন্যের মন্তব্য বা লেখার অংশ নিজের লেখায় সেঁধিয়ে মজা পান, বলবেন কী? সত্যিই বিরক্ত লাগে মাঝেমধ্যে।
সাবলীল লেখা। কিছু কিছু জায়গায় হয়তো তর্ক করা যাবে। যেমন –
‘ধর্মে যদি তার বিশ্বাস থাকতো, তার যদি আল্লাহ্র ভয় থাকতো তবে তিনি পাঁচ ওয়াক্তই নামাজ পড়তেন।’ ঠিক কথা। কিন্তু একইভাবে কিন্তু একজন ধার্মিকও বলে বসতে পারে যে, ‘ধর্মে যদি তার অবিশ্বাস থাকতো, তার যদি আল্লাহ্র ভয় না থাকতো তবে তিনি এক ওয়াক্তও নামাজ পড়তেন না।’ তখন?
ঠিক কথা। কিন্তু মুশকিল হল অনেক সময় ধার্মিকদের শত্রু না বানালেও তারা বিভিন্ন কারণে শত্রু হয়ে যান। ধর্মের বিভিন্ন ক্ষতিকর এলিমেন্টগুলো দেখাতে শুরু করলেই তারা সেগুলোকে ডিফেণ্ড করতে শুরু করেন, স্বাভাবিক বুদ্ধিসুদ্ধি বিসর্জন দিয়ে। আসলে কিছু কিছু ক্ষেত্রে আমার মতে সংঘর্ষ হবেই। সমাজ কিন্তু কেবল মাথায় হাত বুলিয়ে বুলিয়ে এগিয়ে যায় না, বহু ক্ষেত্রেই এগোয় সংঘর্ষের মাধ্যমে। সমাজকে এগিয়ে নিতে হলে কুসংস্কারকে, অন্ধবিশ্বাসকে আঘাত করতেই হবে। আঘাত না করলে পুরোন রীতি, পুরোন জ্ঞান, পুরোন সংস্কার জগদ্দল পাথরের মতোই সমাজের বুকে চেপে থাকে। আমি আমার একটা লেখায় এ প্রসঙ্গে আলোকপাত করেছিলাম এক সময় –
মুক্তমনাদের বিরুদ্ধে আরেকটা অভিযোগ মুক্তবুদ্ধি, নাস্তিক্যবাদ, মানবতাবাদ এগুলোর চর্চা করে তারা গনবিচ্ছিন্ন হয়ে যাচ্ছেন। এর জবাবে প্রবীর ঘোষের মত বলা যায়, যে কোন অসুস্থ সমাজে সুস্থ সচেতন, যুক্তিবাদী মানুষ বিচ্ছিন্ন হতে বাধ্য। পৃথিবীর ইতিহাসে গ্যালিলিও, প্যারাসেলস, ব্রুনো, বিদ্যাসাগর সহ বহু চিন্তাবিদের নাম করা যায় যারা প্রত্যেকেই ছিলেন সমাজে একাকী। একাকী ছিলেন আরজ আলী মাতুব্বর বা আহমেদ শরীফও। কিন্তু এই সব বিদ্রোহী মানুষ গুলো প্রথাগত স্থবিরতাকে চূর্ণ করতে গিয়ে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছিলেন, সে সময়কার বৃহত্তর জনগোষ্ঠি থেকে। সেকালের বিচ্ছিন্ন বিশাল ব্যক্তিত্বদের মূল্যায়ন করার ক্ষমতা ছিল না তৎকালীন মানব গোষ্ঠির সংখ্যাগরিষ্ঠ অংশের এবং মগজ ব্যাচা বুদ্ধিজীবী তকমাধারী ফেউদের। আজ সে সব বিচ্ছিন্ন মানুষেরাই হয়ে উঠেছেন এক একজন মহামানব, শ্রদ্ধেয় আদর্শ ও প্রেরণার উৎস। যে বিচ্ছিন্নতার অর্থ পঁচনধরা, কুসংস্কারাচ্ছন্ন সমাজকে সংস্কারমুক্ত করা, যে বিচ্ছিন্নতার অর্থ শোষনের অবসানমুখী সংগ্রাম, যে বিচ্ছিন্নতার অর্থ মানুষকে বিজ্ঞানমনস্ক করে সুস্থ সংস্কৃতিতে ফিরিয়ে আনা, সে বিচ্ছিন্নতা অবশ্যই কাম্য।
এ ব্যাপারগুলোও মাথায় রাখতে হবে। স্রেফ গ্রুপ বড় করাটাই মূখ্য নয়, অনেক সময় একাকী হয়ে বিদ্রোহ করাটাও আমাদের চোখে প্রগতি। রবীন্দ্রনাথ তো বলেই গেছেন –
যদি তোর ডাক শুনে কেউ না আসে, তবে একলা চলো রে!
@অভিজিৎ দা,
তখন বলা যায় যে, মানুষ সমাজ নামের যে গ্রুপে আছে সে গ্রুপে অন্তত সামাজিকতা বজায় রাখার স্বার্থে এই কাজ করতে হয়। এই ছোট কাজটা না করলে হয়ত তার ব্যক্তিগত বা পারিবারিক বা ব্যবসায়িক কোনো ক্ষতি হয়ে যায়। আমরা ধর্ম পালন না করলেও রাস্তা-ঘাটে চলাচল করার সময় মুরব্বিদের সালাম দিতেই হয় যদিও সালাম দেয়ার ব্যাপারটি সম্পুর্ণ ধর্মীয়।
@অভিজিৎ,
আমি একমত না। বিদ্যাসাগর বা আহমেদ শরীফ জন্মিয়ে না হয় বিদ্রোহ করল-তাতে সমাজ কতটুকু এগোতে পেরেছে????
অন্যদিকে এই মূহুর্তে সেই দিক দিয়ে চীন সব থেকে বেশী উন্নত জাতি-তাদের সমাজে কুসংস্কার বা ধর্মের প্রাবল্য নেই। এবং এটা তারা অর্জন করেছে মাত্র ষাট বছরের মধ্যে দিয়ে-একটি রাষ্ট্রয় পরিবর্তন হিসাবে। তাদের বিদ্যাসাগর বা আহমেদ শরীফ লাগে নি।
সুতরাং মুক্তিবুদ্ধি চর্চা রাজনৈতিক শক্তি না হতে পারলে কিছুই সম্ভব না-শুধু হিরোগিরি করা হবে। তাতে সমাজ বা অধিকাংশ লোকের কিছুই পরিবর্তন হবে না। এত সব মহান ব্যাক্তি জন্মানো সত্ত্বেও আমাদের সমাজের অধিকাংশ লোক আগেও অন্ধ ছিল-এখনো আছে। ইউরোপের বর্তমান উন্নতির জন্যেও তার পেছনে একটা বিরাট ধারাবাহিক গনতান্ত্রিক সমাজতন্ত্রের ইতিহাস আছে।
মুক্তিবুদ্ধি চর্চা রাজনৈতিক শক্তি হতে না পারলে, আমরা যে বিলাসী কাজে মগ্ন আছি সে ব্যাপারে আমার সন্দেহ নেই-এটি আমি যুক্তি দিয়ে আমার আগের দুটি লেখাতে পরিস্কার করেছি।
ধর্ম এবং রাষ্ট্রঃ
সেকুলার স্টেট-ব্যার্থতার কারন
বেসিক্যালি বাঁচতে গেলে একটা সাপোর্ট সিস্টেম লাগে। সেই সাপোর্ট সিস্টেমটা না দিতে পারলে যুক্তিবাদ কেউ পুঁছবে না।
@বিপ্লব পাল,
এই মুহুর্তে উন্নত জাতি কী ভাবে হল একটু ব্যাখায় করলে হত।
@নৃপেন্দ্র সরকার,
সব থেকে ভাল অর্থনীতি-আমেরকাকে জিডিপিতে পেছনে ফেলে দিয়েছে।
প্রাথমিক মাধ্যমিকে ত তারা সবার থেকে ভাল ছিল-এখন উচ্চ শিক্ষার মানেও তারা আমেরিকাকে টেক্কা দিচ্ছে। টেকা দিচ্ছে
রিসার্চেও। দেখুন রা আমার কোম্পানি আমাদের ফিল্ডে আমেরিকাতে সব থেকে বেশী মার্কেট-আমরাও চীনকে ভয় পাচ্ছি।
খাদ্যের দাম ভারতের মতন বাড়ে না। যোগাযোগেও তারা ২০২০ এর মধ্যে ভ্যাকুয়াম টানেল ট্রেন চালাবে যার গতি হবে ঘন্টায় ২০০০ মাইল।
ধর্মের ঝামেলা নেই। মসজিদে ঝামেলা হয়েছিল এই বছর সোজা জেলে পুরে দিয়েছে। মন্দির মসজিদের মতন ফালতু জিনিস নিয়ে ঝামেলা করলে জেলে পোরে-আমাদের মতন তাদেরকে হিরো বানায় না।
চিকিৎসা ব্যাবস্থাতেও তারা আমেরিকার থেকে ভাল এখন।
আর কি শুনতে চান?
হ্যা। আমেরিকাতে আমাদের মত টপ ১০% লোকেরা বিলাসে আছি তাদের থেকে। কিন্ত বিলাসিতা উন্নতির
কোন স্কেল না। আমাদের ছেলে মেয়েরা চীনের মধ্যম মেধার ছেলে মেয়েদের সাথেও স্কুল এডুকেশনে পারবে না।
আর কি কি শুনতে চান??
@বিপ্লব পাল,
আপনি মার্ক্সবাদ, ধনতন্ত্রবাদ নিয়ে অনেক কথা বলেন। তাই ভেবেছিলাম চীনের উপর সংক্ষেপে এই দুই বাদের একটি তুলনামূলক আলোচনা করবেন।
@বিপ্লব পাল,
লেখাগুলো স্ক্রিপে না রেখে একটি ব্লগ খুলে সেখানে রাখলে কিন্তু সব লেখা এক সাথে থাকতো এবং ফন্ট ভাঙ্গার ঝামেলাটা থাকতো না। আমি পড়তে গিয়েছিলাম, কিন্তু ডাউনলোড করতে গেলে বলে টাকা দেওয়া লাগবে 😥 । আপনার ইংরেজী ব্লগের মত একটি বাংলায় ব্লগ খুলে লেখাগুলো সেখানে নিয়ে আসা আমার মতে ভাল।
@স্বাধীন,
আমার বাংলা ব্লগ আছে-কিন্ত এগুলো ২০০৮ সালের পরের লেখাঃ
২০০৭ এর আগে আমরা সবাই পিডিএফে লিখতাম। সুতরাং পিডিএফ রিপোসটরি দরকার। স্ক্রাইব ফ্রি বলেই জানতাম। ওখান থেকে আমি ডাউনলোড করি-কোন টাকা চাই নি। শুধু রেজিস্টার করতে বলে।
আরো দুটো জায়গায় আমার পিডিএফ
গুলো আছে
গুগল পেজ
স্নাইপ
এখান থেকেও ওই আর্টকলগুলো পাবেন,।
@বিপ্লব পাল,
সময় করে পিডিফ গুলোকে বাংলা ব্লগে নিয়ে আসতে পারেন তো। এমনকি পুরোনো তারিখ দিয়েই সেগুলো সংরক্ষণ করা যায়। অনেক কনভার্টার আছে অন্য ফন্টকে ইউনিকোডে পরিবর্তনের জন্য। আপনার হয়তো এটা জানাই আছে।
@অভিজিৎ’দা
ধন্যবাদ মন্তব্যের জন্য। আমি কিন্তু কোথাও বলিনি যে সেই সব সাধারণ মানুষদের সাথে সংঘর্ষ হবে না। বরং তারা যে নিজের গ্রুপের স্বার্থে ধর্মকে ডিফেন্ড করার চেষ্টা করবে সেটাই কিন্তু স্বাভাবিক। যেমন ধরেন কেউ কেউ নিজের সন্তানের মাঝে কোন ভুল খুঁজে পেলেও অন্য সন্তানের সাথে তর্কের সময় নিজের সন্তানকেই ডিফেন্ড করবে সেটাই স্বাভাবিক। তাই সেই সংঘর্ষকে তো অস্বীকার করার উপায় নেই। কিন্তু কেন আপনার আদর্শ যৌক্তিক হলেও সে আপনারটা গ্রহন না করে পুরোনোটাকে আঁকড়ে ধরে থাকার চেষ্টা করছে, সেটা বুঝতে হবে আমাদের। এর কারণ আপনার আদর্শের গ্রুপ যথেষ্ট বড় আকারের নয়, অথবা আপনার যুক্তি এখনো তার কাছে গ্রহন যোগ্য নয়।
উদাহরণ হিসেবে বলা যায়, আদিম মানুষের একাংশ যখন কৃষিকাজ শুরু করে জীবন যাপন করতো তখনও অনেকে তাঁদের আদি পেশা শিকারী জীবন বাদ দিয়ে সাথে সাথে কৃষিকাজ শুরু করেনি। যখন কয়েক জেনেরাশান পর দেখা গেল যে কৃষিজীবি হয়ে চলা অনেক এফেক্টিভ তখনই অনেকে তাঁদের পুরোনো পেশা ছেড়ে নুতন পেশাকে গ্রহন করে। অতদূরে মনে হয় যাওয়া লাগে না। সব ক্ষেত্রেই মানুষের এই সাইকোলজি দেখতে পাওয়া যায়। এখন কেন সবাই মুক্তমনা হয়ে যাচ্ছে না এই বলে যদি কান্না শুরু করি সেটা যে নেহায়েত অযৌক্তিক হবে সেটাই বলার চেষ্টা করছি। পুরো পুরি গান্ধী হয়েও যে টিকা যাবে না সেটা যেমন জানি আবার পুরো হিটলার হয়েও টিকা যাবে না সেটাও প্রমানিত। ব্যালেন্স করেই চলতে হবে বলে মনে করি। এ কারণেই মনে করি যে একা একা আন্দোলন করে আমার মতে সমাজে পরিবর্তন হবে না যদি না সকলকে এর পাদতলে নিয়ে আসতে পারেন। ব্রুনো, গ্যলিলিও, বা হুমায়ুন আজাদ উনাদের অবদান স্মরণ রেখেই বলছি সমাজে পরিবর্তন আসে না, যদি না মাস্ পিপল্ এর মাঝে সেটাকে পৌছে দেওয়া হয়। সে জন্যই মুক্তমনার আদর্শকে ছড়িয়ে দেওয়ার কথা বলি।
@স্বাধীন,
গোষ্ঠিবদ্ধ মানুষের আচরণের একট উদাহরণ না দিয়ে পারলাম না। প্রাসঙ্গিক কিনা বুঝতে পারছি না।
রোজার মাসে একটা প্রশিক্ষণে আমাদের ৫-৬ জন সহকর্মী ময়মনসিংহে ছিলাম প্রায়এক সপ্তাহ। ওই দলে জন্মসূত্রে আমি হিন্দু এবং একজন খ্রীষ্ট্রআন সহকর্মী। একদিন মুসলিম সহকর্মী ইফতারের দাওয়াত দিল যার বাসা ময়মনসিংহ শহরে। আমারা দলে ইফতারসহ রাতের খাবার তার বাসায় খেলাম। পরে একদিন একদিন আমাদের খ্রীষ্ট্রআন সহকর্মী ও একজন মুসলিম সহকর্মী ইফতারের খাওয়াল আমাদের ময়মনসিংহের অফিসে যেখানে শুধু আমরা ৫-৬-জনই ছিলাম। এরপর দিন আমি ও আমার আরেক মুসলিম সহকর্মী ইফতারের দাওয়াত দিলাম আরও কয়েকজনকে। সব মিলিয়ে `প্রায় ১৮-২০ জন। নামাজ না রোজা না, মুসলিম না অথচ ইফতার ভালই উপভোগ করলাম।
@গীতা দাস,
এটি একটি ভাল উদাহরণ দিয়েছেন। তবে এই উদাহরণকে একেবারে ব্যতিক্রমও বলা যাবে না। আসলে আমি ব্যক্তিগত ভাবে দেখেছি আমাদের দেশের সাধারণ মানুষেরা অনেক ক্ষেত্রেই অসম্প্রদায়িক। যেমন ছাত্র অবস্থায় আমার চার রুমমেটের দু’জন ছিল হিন্দু ধর্মের। তখন আমি সব রোযাই রাখতাম এবং তারা প্রতিদিন আমাদের সাথে ইফতার করতো। আবার বুয়েটে একটি হলই আছে শুধু মাত্র হিন্দু ধর্মাম্বলীদের জন্য। তারা যখন পুঁজো করতো তখন আমাদের দল বেধে দাওয়াত থাকতো। আবার এটা শুধু হলে নয়, গ্রামেও দেখেছি পূঁজোর সময় আমরা পুঁজো দেখতে যেতাম, আবার ঈদের দিন তাদেরকেও আসতে দেখেছি। এই চর্চাটি কিন্তু একেবারে ছিল না বা এখনো নেই সেটা কিন্তু নেই।
আবার অনেকে যে সাম্প্রদায়িক মনোভাব পোষণ করে না তাও নয়। যেমন আমার বাবাই আমার হিন্দু রুমমেটদের সাথে বেশি সখ্যতা পছন্দ করেন নি। কোরবানির ঈদের দিন একজন কসাইয়ের হিন্দু নাম শুনে তাকে আর কসাই হিসেবে নেননি। সুতরাং ধর্মের বাণী কিভাবে একজন সাধারণ মানুষ, যিনি কিনা কখনো ঘুষ খায় নি, কখনো মিথ্যে বলেনি বা অন্য কোন অন্যায় করতে কোনদিন দেখিনি, তাঁদেরকে দিয়ে সাম্প্রদায়িক কাজ করাতে পারে সেটা খুব কাছ থেকেই দেখেই ধর্মের অসারতা বুঝতে শিখেছি। এটা যতটা না মানুষটির দোষ তারচেয়ে বেশি দোষ ধর্মের প্রতি অগাধ বিশ্বাসের। পিতা হিসেবে, কিংবা মানুষ হিসেবে উনি যে কোন পিতার মতই। আজ আমার এই অবস্থানের পেছনে উনাদের চেষ্টাই তো মূল। কিন্তু ধর্ম যখন সন্তান এবং পিতার মাঝে দেয়াল হয়ে দাঁড়ায় কিংবা মানুষে মানুষে বাঁধা হয়ে দাঁড়ায়, সেই ধর্মের কোন উপযোগিতা আমি আর খুঁজে পাই না।
ধন্যবাদ আপনাকে মন্তব্যের জন্য।
@গীতা দাস,
দিদি,
অত্যন্ত প্রাসঙ্গিক একটা উদাহরণ। আমি নিজেও এই রোজার মাসে আমির চাচার (আমির হোসেন, বীর প্রতীক, অপারেশন জ্যাকপটে যুক্ত ছিলেন) বাড়িতে ইফতারের দাওয়াত খেলাম। ইফতারের পরে সবাই নামাজ পড়লো, একমাত্র আমি ছাড়া। কিন্তু কেউ-ই এ বিষয় নিয়ে বিন্দুমাত্রও কথা তোলে নি। এঁরা সবাই জানেন যে আমি একজন ধর্ম বিশ্বাসহীন মানুষ। মজার বিষয় হচ্ছে যে, এঁদের মধ্যে বেশ কয়েকজন আবার অনিয়মিতভাবে হলেও মুক্তমনা পড়েন। তারপরেও তাঁদের ভালবাসার কোনো কমতি নেই আমার প্রতি।
ঈদেও গোটা দুয়েক দাওয়াতে গিয়েছি। আমার বাসাতেও ঈদের পরদিন আমার বন্ধুরা এসেছে। এঁরা সবাই-ই বিশ্বাসী লোকজন। সেখানেও আমার নামাজ রোজা নিয়ে কথা বলে নি কেউ। এরকম উদারপন্থি অসংখ্য মুসলমান এখনও বাংলাদেশে আছে। সামান্য কিছু উগ্র মোল্লাদের কারণে এঁদেরকেও এক কাতারে ফেলে দেওয়াটা আসলে খুবই অন্যায় কাজ। মজার বিষয় হচ্ছে যে, এঁরা নিজেরাও এই সব গোঁড়া মোল্লাদের খুবই অপছন্দ করেন।
@গীতা দাস, আপনার ঘটনাটা শুনে ভালো লাগলো, দেশের বেশীরভাগ মানুষ সম্পর্কে আমার ধারণা বা অভিজ্ঞতাও এরকমই। আজকাল অন্ধ মৌলবাদী মানুষের সংখ্যা অনেক বাড়লেও বেশীরভাগ মানুষ মনে হয় এখনো সেরকমই আছে।
কোনো না কোনো গ্রুপে কি থাকতেই হবে? যারা সজ্ঞানে একেবারেই কোনো গ্রুপে থকতে চায় না তাদের ক্ষেত্রে ব্যাপারটা কেমন দাড়াঁয়?
আমরা আমাদের আশেপাশে এমন কিছু দলছুট মানুষ থাকে, যাদেরকে আমরা অনেক সময় পাগলই বলে ফেলি। ব্যাপারটা এমন কেনো হবে যে মানুষকে কোনো না কোনো গ্রুপে থাকতেই হবে? দলবদ্ধভাবে থাকার ব্যাপারটি এসেছে বিবর্তনের মাধ্যমে, মেনে নিচ্ছি। তারপরও বলছি- কেও যদি এই ক্ষেত্রে ব্যতিক্রম হতে চায়?
@নিটোল,
ভাল একটি প্রশ্ন করেছেন। এই দিকটায় কিছু লিখিনি। একটি সময় ছিল আজকের মত রাষ্ট্রের অস্তিত্ব তখন ছিল না। ছিল ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র গোষ্ঠীবদ্ধ সমাজ। তখন মানুষকে যার যার সমাজের নীতি মেনে চলতে হতো। তা না হলে সমাজ থেকে একঘরে করে দেওয়া হতো, বা বের করে দেওয়া হতো। এখন যখন রাষ্ট্র হয়েছে তখন একজন মানুষ আর ক্ষুদ্র সমাজের অংশ না হয়েও চলতে পারে। কিন্তু তারপরেও দেখুন তাঁকে কিন্তু রাষ্ট্রের নীতি মেনে চলতে হবে। তাই আপনার প্রশ্নের জবাব হতে পারে ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র গ্রুপে না থেকেও যে কেউ একা একা আজকের তথ্য প্রযুক্তির যুগে স্বাধীনভাবে বসবাস করতে পারে, কিন্তু সে ক্ষেত্রেও তিনি কোন না কোন বৃহত্তর গ্রুপ যেমন রাষ্ট্রের অংশ হিসেবেই থাকছেন। কিন্তু রাষ্ট্র নিজেও যদি প্রতিক্রিয়াশীল রাষ্ট্র হয় সে ক্ষেত্রে কিন্তু সেই ব্যক্তির স্বাচ্ছন্দতা কমে যেতে পারে।
ধন্যবাদ মন্তব্যের জন্য।
শুরোটা খুবই ভাল লেগেছে।
এটা কি এক ধরনের প্রতারনা নয়?
এটা কেমন উসকানি মুলক কথা মনে হচ্ছে না?
অবিশ্বাসিরা কি বিশ্বাসিদের শত্রু মনে করেন?
আর ধর্মের এলিমেন্ট গুলোর জন্যইতো ধর্মকে যুক্তিবাদিরা বর্জন করেন (আমার এমনটি ধারনা)
@আসরাফ,
প্রতারণা তো অবশ্যই। কিন্তু সেই প্রতারণার পেছনের কারণই তো ব্যাখ্যা করার চেষ্টা করলাম।
শত্রু শব্দটি উসকানি মূলক স্বীকার করি। কিন্তু যারা ধর্মকে ব্যবহার করে নিরীহ মানুষকে খুন করার জন্য তাঁদেরকে তো শত্রু হিসেবেই চিহ্নিত করবো, তাই নয় কি? গোলাম আযম, মুজাহিদ, বাংলা ভাই, লাদেনদের কে তো আমি বন্ধু বলে গন্য করতে পারি না, পারি কি?
অবিশ্বসীরা যেন বিশ্বাসী মাত্রেই শত্রু বলে গন্য না করেন সেই উদ্দেশ্যেই তো লেখাটি লেখা। মনে তো হচ্ছে লেখায় সেটা পরিষ্কার করে তুলে ধরতে পারিনি :-Y ।
ধন্যবাদ মন্তব্যের জন্য।
@স্বাধীন,
নাহ!
আমারই বুঝতে ভুল হয়েছিল।
ধন্যবাদ।
এটার মুল অন্তর্নিহিত কারন হলো যে , মানুষ কনভিনিয়ান্স বা সাচ্ছন্দ্য পছন্দ করে। কঠিন থেকে সহজ রাস্তাটি বেছে নেয়া পছন্দ করে । নেকড়েরা যেমন সহজাত ভাবেই দলবদ্ধ থাকে , মানুষ এবং অনেক স্তন্যপায়ী প্রানী (যেমন , বাঘ ) বিবর্তনীয় শর্ত পুরন করেই স্বতস্ফূর্তভাবে একা থাকতে সক্ষম । একটা বাঘ্র শাবকের জন্য মাত্র কয়েক মাসের মাতৃ সাহচার্যের প্রয়োজন হয়। এই একা থাকার কারনে যেহেতু একটা বাঘকে জীবনের শেষ মুহুর্ত পর্যন্ত খাদ্য সংগ্রহের বা শিকারের জন্য টপ পারফরমেন্সে সম্পূর্ন নিজের ওপর নির্ভর করতে হয় , পেনশন বলে কোন শব্দ বাঘ্র অভিধানে নেই। চিড়িয়াখানা বা সার্কাসের বাঘের ব্যপারটা এখানে অবশ্য ব্যতিক্রম।
@সংশপ্তক,
ধন্যবাদ মন্তব্যের জন্য।
গোষ্ঠিবদ্ধ আচরন-যা মানুষের সেলফ অর্গানাইজেশন থেকে উদ্ভুত-তার সাথে ধর্মের উৎপত্তি এবং ঈশ্বরের জন্মের সম্পর্ক নিবিড়।
এর আগে আমি দুটো লেখা এই বিষয়ে মুক্তমনাতেই লিখেছি
ধর্মীয় পরিচয়ের উৎপত্তি
সংখ্যালঘুদের ওপর অত্যাচার এবং গোষ্ঠিতত্ত্ব
স্ক্রাইবের ডকুমেন্টগুলি ডাউনলোড করে পড়তে হবে-অনলাইন পড়তে গেলে পিডিএফ দেখা যায় না।
@বিপ্লব পাল,
লিঙ্ক গুলোর জন্য ধন্যবাদ। সময় করে পড়বো।
অনলাইনেই পড়া যাবে সেটা নিয়ে আপনারা না কি কাজ করছিলেন? সেটার কাজ কতদূর?
@স্বাধীন,
সাইটটা বাজারে ছারছি এই সপ্তাহেই। এখন শুধু বই এর ই কমার্স আছে। পিডিএফ এর জন্যে প্রকাশকদের সাথে কথাবাত্তা চলছে। প্রযুক্তি রেডি। এখন বই ঢোকানোর অপেক্ষায়। আপাতত প্রিন্ট এডিশন পাওয়া যাবে।