লিখছিলাম আসলে সহিংসতা নিয়ে একটি সিরিজ – ‘জীবন মানে যুদ্ধ যুদ্ধ খেলা’। ধুমধারাক্কা সেই সিরিজটিতে সহিংসতার একটি নৃতাত্ত্বিক, সামাজিক বিশ্লেষণ হাজির কারার চেষ্টা ছিলো আধুনিক বিবর্তনীয় মনোবিজ্ঞানের পটভূমিকায়। তিনিটি পর্ব এ পর্যন্ত দেয়া হয়েছে। এটি চতুর্থ পর্ব। তবে সহিংসতা নিয়ে গুতাগুতি করতে গিয়ে দেখি নানা ধরণের আকর্ষনীয় উপাদান উঠে আসছে সহিংসতাকে ঘিরে। বয়সের সাথে যেমন সহিংসতার একটা সম্পর্ক পাওয়া যাচ্ছে, তেমনি কখনো আবার সহিংসতা আর প্রতিভা আবার এক সুতোয় বাঁধা পড়তে চাইছে। কখনো আবার সহিংসতা কিংবা প্রতিভা বিয়ের সাথে সম্পর্কযুক্ত হয়ে পড়ছে। কী মুশকিল! এদিকে আবার আমাদের মুক্তমনার সবার প্রিয় লেখক মইনুল রাজু বাংলাদেশ থেকে বিয়ে সেরে এসেছেন। শিরোনাম দেখেই নিশ্চয় বোঝা যাচ্ছে যে এই পর্বটি এই মুহূর্তে উৎসর্গ করার মত যোগ্য ব্যক্তি মইনুল রাজু ছাড়া আর কেউ হতে পারবেন না। পরলোকগত থুড়ি সদ্য বিবাহিত রাজুর স্মৃতির উদ্দেশ্যে লেখাটি উৎসর্গীকৃত হল।
এই পর্বটিতে বিজ্ঞানের চেয়ে ফ্যান্টাসিই হয়তো বেশি পাবেন পাঠকেরা। তাই পাঠকদের এই পর্বটি খুব বেশি সিরিয়াসলি না নেবার অনুরোধ করছি।
:line:
প্রথম পর্ব
দ্বিতীয় পর্ব
তৃতীয় পর্ব
বয়সের দোষ!
জৈবিকভাবে পুরুষেরা যে নারীদের তুলনায় অধিকতর সহিংস – এটা আমরা আগের বিভিন্ন আলোচনা থেকে জেনেছি। কিন্তু কথা হচ্ছে, পুরুষেরা সব বয়সেই একইরকম সহিংসতা প্রদর্শন করে? না তা কিন্তু নয়। বিভিন্ন সমীক্ষা থেকে দেখা গেছে ভায়োলেন্স ব্যাপারটা পুরুষদের মধ্যে সার্বজনীন হলেও এর ব্যপ্তি বয়সের সাথে উঠা নামা করে। যে কোন দেশেই দেখা গেছে গড়পরতা সবচেয়ে বেশি হত্যাকান্ড এবং সহিংসতা পুরুষেরা করে থাকে যখন তাদের বয়স থেকে পনের থেকে উনত্রিশের মধ্যে[1]। তারপর যত বয়স বাড়তে থাকে সহিংসতা কমে আসে। এমনকি সিরিয়াল কিলাররাও একটা নির্দিষ্ট বয়েসের পরে সেভাবে আর হত্যা করে না। এর কারনটাও স্পষ্ট। কারণ এই বয়সের পরিসীমাতেই পুরুষেরা রিপ্রোডাক্টিভ কম্পিটিশনের চূড়ায় থাকে। আমেরিকায় করা সমীক্ষা থেকে দেখা গেছে, পনের বছর বয়সের দিকে যখন ছেলেদের বয়ঃপ্রাপ্তি শুরু হয় তখনই খুন খারাবির হার বাড়তে থাকে, বিশ বছরের দিকে একদম শীর্ষে পৌঁছায় এবং ত্রিশ চল্লিশ বছর বয়সে পৌঁছানো পর্যন্ত খুন খারাবি চলতেই থাকে[2]। খুন খারাবির শিকার যারা হন, তারাও বেশি হন বিশ বছর বয়সের দিকেই। দেখা গেছে প্রতি বছরে আমেরিকায় প্রতি এক লক্ষ জনে খুনের হার দশ থেকে চোদ্দ বছরে যেখানে মাত্র ১.৬, কিন্তু পনের থেকে উনিশ বছরের সময় সেটা বেড়ে দাঁড়ায় ১০ এ, আর বিশ থেকে চব্বিশ বছর বয়সে তা ১৭.৮[3]। তারপর পচিশ থেকে উনত্রিশ বছর বয়সের পরিসীমায় তা দাঁড়ায় ১৬.৩; বত্রিশ থেকে চৌত্রিশে ১৩.৯; আর পয়ত্রিশ উনচল্লিশ বছরের মধ্যে ১২। সেজন্যই ডেভিড বাস তার ‘মার্ডারার নেক্সট ডোর’ গ্রন্থে বলেছেন[4],
এই সংখ্যাগুলো থেকে এটাই প্রতীয়মান হয় যে,পুরুষেরা যে সময়টাতে প্রজননগত প্রতিযোগিতার সময়ে প্রবেশ করে, সেই সময়েই খুন খারাবির প্রকোপ নাটকিয় ভাবে বেড়ে যায়।
আমরা বাংলাদেশে আমাদের বাপ দাদাদের ঘার ত্যারা আর রগচটা ছেলেপিলেদের দিকে দেখিয়ে বলতে শুনেছি – ‘তরুণ বয়স তো, তাই ছেলের রক্ত গরম। দেখবেন বয়স হলে রক্তও ঠাণ্ডা হয়ে আসবে’। উনারা হয়তো চারপাশের দীর্ঘদিনের অভিজ্ঞতা থেকে এই কথাগুলো বলেন। আসল কারণ হল, যৌনতার প্রতিযোগিতাসূচক ব্যাপারগুলো যখন কমে আসে, তখন এমনিতেই সহিংসতা আর সেভাবে ব্যবহারে প্রকাশিত হয় না। এটাকেই হয়তো চলতি কথায় ‘রক্ত ঠাণ্ডা’ হয়ে যাওয়া বলে ভেবে নেয়া হয়।
ব্যাপারগুলো ‘কমন সেন্স’ হিসেবে জানা ছিলো অনেক আগে থেকেই কিন্তু বিবর্তন মনোবিজ্ঞান রঙ্গমঞ্চে আসার আগ পর্যন্ত প্রাতিষ্ঠানিকভাবে এ নিয়ে কোন গবেষণা ছিলো না। ১৯৮৩ সালে দুই গবেষক ট্রাভিস হির্শি এবং মাইকেল গডফ্রেসন “Age and Explanation of Crime” নামক প্রবন্ধের মাধ্যমে দেখালেন বয়স এবং অপরাধপ্রবনতার এই ধারাটি সংস্কৃতি নির্বিশেষে একইরকম পাওয়া যাচ্ছে[5]। অর্থাৎ, যে কোন সংস্কৃতিতেই দেখা যায় বয়ঃসন্ধির সময় থেকেই পুরুষদের মধ্যে ঝুঁকি নেওয়ার প্রবণতা বাড়তে থাকে, আর তা একেবারে শীর্ষে পৌঁছায় যৌবনের প্রারম্ভে, বিশ থেকে ত্রিশের দশকের সময়টায় তা দ্রুতগতিতে কমতে থাকে, আর মধ্যবয়সে তা আনুভূমিক হয়ে যায়। নীচের রেখচিত্রটি দেখলে ব্যাপারটি আরো ভালভাবে বোঝা যাবে –
ছবি – ট্রাভিস হির্শি এবং মাইকেল গডফ্রেসন তাদের গবেষনায় দেখিয়েছেন যে, বয়ঃসন্ধির সময় থেকেই পুরুষদের মধ্যে অপরাধ-প্রবণতা বাড়তে থাকে, আর তা একেবারে শীর্ষে পৌঁছায় যৌবনের প্রারম্ভে, বিশ বছরের পর থেকে তা দ্রুতগতিতে কমতে থাকে, আর মধ্যবয়সে তা আনুভূমিক হয়ে যায়
দু-চারটি ক্ষেত্রে এই গ্রাফের ব্যতিক্রম পাওয়া গেলেও সার্বজনীনভাবে এই গ্রাফের গড়নের সাথে প্রায় সকল অপরাধ-বিশেষজ্ঞই এখন একমত পোষণ করেন[6],[7]।
অপরাধপ্রবণতা আর প্রতিভা কি তবে এক সূত্রে গাঁথা?
এই অংশের শিরোনাম দেখে অনেকেই হয়তো আঁতকে উঠবেন। কোথায় অপরাধপ্রবণতা আর কোথায় প্রতিভা! কোথায় বাঘেরহাট আর কোথায় সদরঘাট! কিন্তু বাগের হাট থেকে সদরঘাট যাবার রাস্তা যেমন একটু খুঁজলেই পাওয়া যায়, তেমনি অনেক গবেষক মনে করেন অপরাধপ্রবণতার সাথেও প্রতিভার একটা অলিখিত সম্পর্কও পাওয়া যাবে একটু নিবিষ্ট মনে খুঁজলেই। আগের অংশেই অপরাধ প্রবণতা নিয়ে আলোচনা করতে গিয়ে দেখেছি যে, বয়ঃসন্ধির সময় থেকেই পুরুষদের মধ্যে অপরাধ প্রবণতা বাড়তে থাকে, আর তা একেবারে শীর্ষে পৌঁছায় যৌবনের প্রারম্ভে, বিশ থেকে ত্রিশের দশকের সময়টায় তা দ্রুতগতিতে কমতে থাকে, আর মধ্যবয়সে তা আনুভূমিক হয়ে যায়। বিজ্ঞানীরা অবাক হয়ে লক্ষ্য করেছেন ঠিক একই ধারা পাওয়া যাচ্ছে বয়স এবং মানব প্রতিভার মধ্যেও। বিভিন্ন বিজ্ঞানী, সাহিত্যিক, শিল্পীদের জীবনী বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে অধিকাংশরই প্রতিভার স্ফুরণ ঘটে যৌবনের প্রারম্ভেই, আর যৌবনের শেষ হতে না হতেই অতিদ্রুত প্রতিভার মৃত্যু ঘটে যায়। আসলে বয়স হলে প্রতিভাধরদের মাথা যে আগের মত কাজ করে না, এর অনেক উদাহরণই তুলে ধরা যায়। পল ম্যাকার্টনি সেই কবে বিটলসের সময় জনপ্রিয় ছিলেন,ব্যতিক্রমধর্মী বহু গান লিখে সঙ্গিত পিপাসুদের পাগল করে দিয়েছিলেন যাট সত্তুরের দশকে। অবধারিতভাবে তিনি তখন ছিলেন যৌবনের প্রারম্ভে। তার পর বহু বছর পার হয়েছে, গঙ্গা যমুনা দিয়ে বহু জল গড়িয়ে গেছে, তিনি একটিও ‘জনপ্রিয় সঙ্গীত’ দর্শকদের জন্য লিখতে পারেননি। তার অধিকাংশ সময় এখন নাকি ছবি আঁকাতেই কেটে যায়। বিজ্ঞানী স্যার আইজ্যাক নিউটন মহাকর্ষ, আলোর বিচ্ছুরণ সহ তার সফল এবং বিখ্যাত আবিস্কারগুলো তরুণ বয়সেই করে ফেলেছিলেন।আরো পরিস্কার করে বললে তার ২৪ বছর বয়সের মধ্যেই। বিজ্ঞানী আইনস্টাইনের জীবনীর দিকে তাকাই। তার প্রায় সবগুলো আবিস্কারই হয়েছে তাঁর ‘বিস্ময় বছর’ যাকে আমরা অভিহিত করি Annus Mirabilis হিসবে -সেই বছরটিকে কেন্দ্র করে। সে বছরের প্রথমভাগে আইনস্টাইন প্রকাশ করেছিলেন ব্রাউনীয় গতির উপর একটা গবেষণাপত্র- যেটি সে সময় দিয়েছিলো অনুর অস্তিত্বের বাস্তব প্রমাণ, বানিয়েছিলেন আলোর কনিকা বা কোয়ান্টাম তত্ত্ব, আর সে সময়েই প্রকাশ করেছিলেন সবচাইতে জনপ্রিয় আপেক্ষিকতার বিশেষ তত্ত্বটি (Special Theory of relativity)। তার বিখ্যাত সমীকরণ E=mc2 সেসময় বাজারে এসেছিলো একটি অতিরিক্ত (সংযোজনী) তিন পৃষ্ঠার পেপার হিসেবে। একটি পেপারের জন্য আবার পরবর্তীতে পেয়েছিলেন নোবেল। তখন তার বয়স চল্লিশও পেরোয়নি। মূলতঃ সার্বিক অপেক্ষিক তত্ত্ব (General Theory of Relativity) আবিস্কারের পর আইনস্টাইন আরো পঞ্চাশ বছর বেঁচেছিলেন কিন্তু আর কোন বড় ধরনের আবিস্কার করতে পারেননি। মূলতঃ মধ্যবয়স থেকে শুরু করে বার্ধক্যের পুরোটা সময় জুড়েই আইনস্টাইন চেষ্টা করেছেন কোয়ান্টাম বলবিদ্যাকে অসম্পূর্ণ বা ভুল প্রমাণ করতে আর প্রকৃতি জগতের বলগুলোকে একটিমাত্র সুতায় গাঁথতে। তার সেই উচ্চাভিলাসী চেষ্টা কিন্তু সফল হয়নি। বরং জীবনের শেষ বছরগুলোতে তিনি পদার্থবিজ্ঞানের মূল ধারার গবেষণা থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে এক ‘নিঃসঙ্গ গ্রহচারী’তে পরিণত হন[8]। বিজ্ঞানীদের প্রতিভা আর বয়সের সম্পর্ক নিয়ে আইনস্টাইন নিজেই করে গেছেন মজার এক উক্তি[9] –
যে ব্যক্তি ত্রিশ বছর বয়সের আগে বিজ্ঞানে কোন অবদান রাখতে পারেনি, সে আর কখনোই পারবে না।
আইনস্টাইনের এই উক্তির সত্যতা আমরা পাই শুধু তার নিজের জীবনেই নয় পাশাপাশি বহু প্রতিভাধরদের জীবনেই। গনিত এবং পদার্থিবিজ্ঞানের মতো বিষয়গুলোকে বহুদিন ধরেই ‘ইয়ং ম্যান্স গেম’ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে[10]। গনিতবিদ জন ভন নিউম্যান গনিতে যে অবিস্মরনীয় অবদানগুলো রেখে গেছেন, তার প্রায় সবগুলোই ২৫ বছর বয়সের মধ্যে। এর পর থেকে শুরু হয়েছিল মূলত প্রতিভার পতন[11]। জেমস ওয়াটসন যে ডিএনএ তথা যুগল সর্পিলের রহস্যভেদ করার জন্য বিখ্যাত হয়ে আছেন, তিনিও তা করেছিলেন ২৫ বছর বয়সে (সেই আবিস্কারটির জন্য ওয়াটসন পরবর্তীতে নোবেল পুরস্কার লাভ করেন)। তারপর থেকে যত দিন গেছে তার ক্যারিয়ারে আর কোন সফলতার পালক যোগ করতে পারেননি। এধরণের অনেক উদাহরণই দেয়া যায়। বিল গেটস তরুণ বয়সে ‘কম্পিউটার উইজার্ড’বালক হিসেবে পরিচিত ছিলেন, আজকে প্রৌঢ় বয়সে তিনি হাতে কলমে প্রোগ্রামিং টোগ্রামিং বাদ দিয়ে পুরোদস্তুর ব্যবসায়ী হয়ে নিরাপদ জীবন যাপন করছেন।
বিভিন্ন সময়ে গবেষকেরা বিভিন্ন বিজ্ঞানীদের বয়স এবং তাদের জীবনের সাফল্যমণ্ডিত স্বর্ণালী সময়গুলোর তুলনামূলক বিশ্লেষণ হাজির করেছেন। এইচ. সি. লেহমান ১৯৫৩ সালেই তার একটি গবেষণায় দেখিয়েছিলেন দুনিয়ার অধিকাংশ সফল বৈজ্ঞানিক আবিস্কারগুলোই মূলত তরুণ বিজ্ঞানীরা করেছিলেন, বয়স্ক বিজ্ঞানীরা নয়[12]। ১৯৭৯ সালে এস. কোল[13] এবং ১৯৯১ সালে লেভিন এবং স্টিফেন তাদের গবেষণায় আলাদাভাবে দেখিয়েছেন যে, পিএইচডি করার সময় এবং তার পর পরেই বিজ্ঞানীদের উৎপাদনশিলতা এবং কর্মমুখরতা হু হু করে বাড়তে থাকে,আর তারপর থেকেই আবার তা লক্ষ্যনীয়ভাবে কমে আসতে থাকে[14]। ২০০৩ সালে সাতোশি কানাজাওয়া ২৮০ জন প্রোথিতযশা সমসাময়িক বিজ্ঞানীর উপর গবেষণা চালিয়ে দেখান যে,বয়স-অপরাধ রেখচিত্রের মতই (আগের অংশে আলোচিত) প্রতিভার ক্ষেত্রেও বয়ঃসন্ধির সময় থেকেই পুরুষদের মধ্যে প্রতিভার স্ফুরণ বাড়তে থাকে, আর তা একেবারে শীর্ষে পৌঁছায় যৌবনের প্রারম্ভে, ত্রিশ বছরের পর থেকে তা দ্রুতগতিতে কমতে থাকে, আর তারপরে তা একেবারেই আনুভূমিক হয়ে যায়। তার গবেষণাপত্র থেকে পাওয়া ফলাফল নীচে রেখচিত্রের সাহায্যে পাঠকদের জন্য তুলে ধরা হল –
ছবি – সাতোশি কানাজাওয়া সমসাময়িক বিজ্ঞানীদের জীবন নিয়ে গবেষণায় দেখিয়েছেন যে, বয়ঃসন্ধির সময় থেকেই তাদের মধ্যে প্রতিভার স্ফুরণ বাড়তে থাকে, আর তা একেবারে শীর্ষে পৌঁছায় যৌবনের প্রারম্ভে, ত্রিশ বছরের পর থেকে তা দ্রুতগতিতে কমতে থাকে, আর তারপরে তা একেবারেই আনুভূমিক হয়ে যায়।
অধ্যাপক কানাজাওয়া তার ফলাফল সম্পর্কে গবেষণাপত্রে বলেছেন এভাবে[15] –
Fig presents the distribution of the peak age among the 280 scientists in my sample. It is apparent from the histogram that scientific productivity indeed fades very rapidly with age. Nearly a quarter (23.6%) of all scientists makes their most significant contribution in their career during the five years around age 30. Two-thirds (65.0%) will have made their most significant contributions before their mid-thirties; 80% will have done so before their early forties.
বয়সের সাথে প্রতিভার প্যাটার্নটি শুধু বিজ্ঞানে নয়, শিল্প, সাহিত্য,সঙ্গীত কিংবা খেলাধুলার ক্ষেত্রগুলোতেও একই রকম পাওয়া গেছে। যদিও সাহিত্যের সাথে হার্ডকোর গণিত/ বিজ্ঞানের একটু পার্থক্য আছে। সাহিত্যের ক্ষেত্রে দেখা গেছে বহু সাহিত্যিকদেরই প্রতিভার চূড়া স্পর্শ করে মধ্য বয়সে এসে (৪০ থেকে ৫০ বছর বয়েসের মধ্যে) এবং অধিকাংশ সাহিত্যিকেরাই অল্প বয়সে ফুঁরিয়ে যান না, বরং বহুদিন ধরে সাহিত্য চর্চা চালিয়ে যেতে পারেন[16]।রবীন্দ্রনাথ তার বার্ধক্যে এসেও অবলীলায় কবিতা গল্প নাটক উপন্যাস লিখেছেন তরুণ সাহিত্যিকদের সাথে পাল্লা দিয়ে। শওকত ওসমান, সুফিয়া কামাল, শামসুর রাহমান সহ অনেকেই থাকবেন উদাহরণে। পাশ্চাত্যেও এমন উদাহরণ বিরল নয়। মার্কটোয়েন কিংবা আলফ্রেড হিচককের মতো সাহিত্যিক কিংবা শিল্পীরা জীবনের প্রান্তসীমাতে এসেও আমাদের জন্য অসাধারণ সাহিত্য বা শিল্পকর্ম উপহার দিয়েছেন। অবশ্য বিপরীত উদাহরণও খুঁজলে পাওয়া যাবে। কবি সুকান্ত ভট্টাচার্য মাত্র ২১ বছর বয়সে অকাল প্রয়াণের আগেই তার সমস্ত ক্ষুরধার কবিতাগুলো লিখে ফেলেছিলেন। কবি কাজী নজরুল ইসলাম তার বিদ্রোহী কবিতাটি লেখেন তার মাত্র ২৩ বছর বয়সে। আসলে নজরুলের সকল সাহিত্যকর্মই তরুণ বয়সের প্রতিভার বিচ্ছুরণ। ১৯৪২ সালে স্নায়ুরোগে আক্রান্ত হবার পরে পরবর্তী দীর্ঘ চৌত্রিশ বছর কোন সাহিত্যচর্চা করতে পারেননি, বরং একেবারে পক্ষাঘাতগ্রস্ত অবস্থায় জীবণ অতিবাহিত করেন, এবং সেভাবেই মৃত্যুবরণ করেন। পশ্চিমেও এ ধরণের উদাহরণ আছে। প্রথম জীবনে অত্যন্ত সফল সাহিত্যিক হিসেবে বিবেচিত হলেও পরবর্তীকালে প্রতিভার স্ফুরণ আর সেভাবে দেখা যায় নি। এমনি একজন আমেরিকান সাহিত্যিক ছিলেন জ়ে ডি. স্যালিঙ্গার (J. D. Salinger), যিনি তরুণ বয়সে The Catcher in the Rye উপন্যাস লিখে বিখ্যাত হয়েছিলেন, কিন্তু জীবনের শেষ তিন দশক ধরে আক্ষরিক অর্থে কিছুই প্রকাশ করতে পারেননি। তবে ক্ষেত্রবিশেষে বিচ্ছিন্ন ভাবে ফলাফল যাই পাওয়া যাক না কেন,গড়পরতা রেখচিত্রের আকার এবং ট্রেন্ড মোটামুটি একইরকমের পাওয়া গেছে। সঙ্গীতজ্ঞ, চিত্রকর এবং সাহিত্যিকদের বয়স-প্রতিভার তুলনামুলক রেখচিত্র নীচে দেওয়া হল –
ছবি- সঙ্গীতজ্ঞ, চিত্রকর এবং সাহিত্যিকদের বয়স-প্রতিভার তুলনামুলক রেখচিত্র বিশ্লেষণ করলে দেখা যাবে যে তারা একই ধরণের প্যাটার্ন অনুসরণ করে।
উপরের রেখচিত্রগুলো নিয়ে খুব বেশি জটিল আলোচনায় না ঢুকেও কেবল সাদা চোখেই বলে দেয়া যায় যে,বয়স-অপরাধ রেখচিত্রের (age-crime curve) সাথে বয়স -প্রতিভা রেখচিত্রের (age-genius curve) অদ্ভুত ধরণের মিল পাওয়া যাচ্ছে। দুটোর ক্ষেত্রেই দেখা যায় মূলত বয়ঃসন্ধির পর থেকেই গড়পরতা এ বৈশিষ্টগুলোর স্ফুরণ ঘটতে থাকে, শীর্ষে পৌঁছায় যৌবনের প্রারম্ভে, আর মধ্যবয়সের পর থেকে তা দ্রুতগতিতে কমতে থাকে। হয়তো সাধারণ পাঠকদের কাছে পুরো ব্যাপারটি কাকতালীয় মনে হতে পারে,কিন্তু বিবর্তনীয় মনোবিজ্ঞানীরা মনে করেন জৈববৈজ্ঞানিক কারণেই এদের মধ্যে একটা অলিখিত সম্পর্ক থেকে যায়।
আমরা আগের আলোচনা থেকে কিছুটা আলামত পেয়েছি যে, বয়ঃসন্ধি বা পিউবার্টির সময় থেকেই সবার মধ্যে প্রতিযোগিতামূলক মনোভাব দ্রুতগতিতে বাড়তে থাকে,তারা অধিকতর ঝুঁকিপূর্ণ কাজে নিয়োজিত হয়, কারো কারো মধ্যে সহিংসতা বৃদ্ধি পায়, কারো বা মধ্যে প্রতিভা। জৈবিকভাবে চিন্তা করলে, বয়ঃসন্ধির আগে প্রতিযোগিতামূলক মনোভাবের কোন প্রজননগত উপযোগিতা নেই। কারণ সেই প্রতিযোগিতামূলক মনোভাবকে প্রজননগত সফলতায় স্থানান্তরিত করা সেই সময় সম্ভব হয় না। কিন্তু বয়ঃসন্ধিকাল স্পর্শ করার সাথে সাথে প্রতিযোগিতামূলক অভিব্যক্তিগুলো যেন ধাবমান অশ্বের মতোই দ্রুতগতিতে বাড়তে থাকে। যখন থেকে দেহ সর্বপোরি প্রজননের জন্য প্রস্তুত হয়ে উঠে তখন থেকেই প্রতিটি প্রতিযোগিতার ক্ষেত্র (সেটা সহিংসতাই হোক, অথবা হোক বিশেষ দিকে প্রতিভাময় দীপ্তি) স্ফুরিত হতে থাকে তীব্র বেগে। মধ্য বয়সের পর সেই আকাঙ্ক্ষা স্তিমিত হয়ে আসে জৈবিক নিয়মেই। অর্থাৎ, এই তত্ত্ব অনুযায়ী[17]-
অপরাধপ্রবণতা আর মেধা দুটোই আসলে তারুন্যের প্রতিযোগিতামুলক অভিব্যক্তির ফসল, আদিম শিকারী-সংগ্রাহক পরিস্থিতিতে যার চূড়ান্ত নিয়ামক ছিলো প্রজননগত সাফল্য।এই ধারার প্রভাব আজকের সমাজেও একটু চেষ্টা করলেই লক্ষ্য করা যাবে। মারামারি কাটাকাটি এবং সহিংসতায় কম পরিমাণে নিজেকে নিয়োজিত করে বরং বহু পুরুষ তার উদ্দীপনাকে কাজে লাগায় প্রতিভার নান্দনিক (কেউ বৈজ্ঞানিক আবিস্কার, কেউ সঙ্গিত সাধনা, কেউ খেলাধূলা, কেউ শিল্প সাহিত্য সৃষ্টি, কেউবা অর্থোপার্জন) বিকাশে।আসলে এর মাধ্যমে প্রকারান্তরে সে নিশ্চিত করে অধিক নারীর দৃষ্টি, এবং সময় সময় তাদের অর্জন এবং প্রাপ্তি।
প্রতিভা ব্যাপারটাকে কেবল সঙ্গমী মননের অভিব্যক্তি ভাবতে হয়তো অনেকেরই মন সায় দেবে না। কিন্তু আমরা আগের অংশের আলোচনায় দেখেছি যে, অর্থ-প্রতিপত্তি আর ক্ষমতায় বলীয়ান পুরুষেরাই বেশি পরকীয়ায় বেশি আসক্ত হন বেশি। আমরা দেখেছি যে, কেতাদুরস্ত কাপড় চোপড়, দামি গাড়ি, বাড়ি, ঘড়ি এমনকি কথাবার্তা, চালচলন, স্মার্টনেস, শিক্ষাগত যোগ্যতা, রাজনৈতিক বা সামাজিক ক্ষমতা বা প্রতিপত্তি সবকিছুকেই পুরুষেরা ব্যবহার করে নারীকে আকর্ষণের কাজে। তাহলে প্রতিভাই বা তালিকা থেকে বাদ যাবে কেন? নিজের প্রতিভাকে কিভাবে নারীদের আকর্ষণের কাজে ব্যবহার করা যায় তার জ্বলজ্যান্ত উদাহরণ বিজ্ঞানী সম্রাট আলবার্ট আইনস্টাইন। প্রতিভাধর এই বিজ্ঞানী শুধু বিজ্ঞানের জগতেই অসাধারণ ছিলেন না, নারীলিপ্সায়ও ছিলেন অনন্যসাধারণ। মেরী, মিলেইভা, এলসা, আইলস্, বেটি নিউম্যান, মার্গারেট লেনবাখ, টনি মেণ্ডেল, হেলেন ডুকাস – কত নারী যে এসেছে তার জীবনে, কোন ইয়ত্তা নেই। একবার আবার একই সাথে প্রেম করেছেন মা (এলসা) এবং মেয়ের (আইলস) সাথে একই সময়ে, এমন উদাহরণও আছে। আইনস্টাইনের প্রেমময় জীবন নিয়ে ড.প্রদীপ দেব একবার একটি চমৎকার প্রবন্ধ লিখেছিলেন মুক্তমনায় ‘প্রেমিক আইনস্টাইন‘ শিরোনামে[18]। সেই প্রবন্ধটি পাঠ করলে পাঠকেরা বুঝতে পারবেন কী ভাবে নিজের প্রতিভা, যশ এবং খ্যাতিকে আইনস্টাইন প্রতিটি ক্ষণে ব্যবহার করেছেন নারীদের আকর্ষণের উদ্দেশ্যে। একাধিক নারীপ্রীতির ব্যাপারটা শুধু আইনস্টাইনের একচেটিয়া ছিল ভাবলে ভুল হবে।
ছবি- আইনস্টাইন, শ্রোডিংগার কিংবা টাইগার উডস সহ বহু প্রতিভাধরদের জীবন পর্যলোচনা করলেই দেখা যাবে, তারা তাদের স্বীয় প্রতিভার মাধ্যমে আকৃষ্ট করতে পেরেছিলেন একাধিক নারীর সঙ্গ এবং সান্নিধ্য।
বহু বিখ্যাত বিজ্ঞানীরাই নিজের প্রতিভার স্ফুরণ ঘটিয়েছিলেন নারীসঙ্গ কামনায়, কিংবা আরো পরিস্কার করে বললে – অনেক সময় নারীসঙ্গের মাধ্যমে। অরভিন শ্রোডিংগারের নাম আমরা প্রায় সবাই জানি। কোয়ান্টাম বলবিদ্যা কেউ পড়ে থাকলে তিনি শ্রোডিংগারের সমীকরণ পড়েছেনই। শ্রোডিংগার গত হয়েছেন সেই কবে, কিন্তু ‘শ্রোডিংগারস ক্যাট’ এতদিন বাদেও পদার্থবিজ্ঞানের জগতে দার্শনিক আলোচনার কেন্দ্রবিন্দু। কিন্তু অনেকেই হয়তো জানেন না যে, সেই নোবেল বিজয়ী শ্রোডিংগার তার জগদ্বিখ্যাত তরঙ্গ সমীকরণটি তৈরি করেছিলেন যখন তিনি তার এক রক্ষিতাকে নিয়ে নির্জনে ছুটি কাটাতে গিয়েছিলেন। একটি মাত্র রক্ষিতা থাকলে তাও না হয় কথা ছিলো, তিনি আবার পুরোটা সময়েই আরেক নারীর সাথে সম্পর্ক রেখেছিলেন, যিনি তার এক বন্ধু আর্থার মার্চের (Arthur March) স্ত্রী। আর এগুলোর বাইরে তার নিজের স্ত্রী তো ছিলোই। বিজ্ঞানীদের বাইরে প্রতিভাধর কবি, সাহিত্যিক শিল্পী, আর খেলোয়াড়দের মধ্যে নারীলিপ্সার ব্যাপারটা এতটাই প্রকাশ্য যে এটা নিয়ে আলদা করে কিছু লেখার কোন মানে হয় না। মোজার্ট, লুইস ক্যারল, রুশো, দালি, ফিটজেরাল্ড, জেমস জয়েস প্রমুখের বিরুদ্ধে শুধু নারী সঙ্গ নয়, এমনকি বিকৃত যৌনরুচিরও নানা অভিযোগ আছে। সেগুলোতে না হয় নাই বা গেলাম এখানে। আর খেলোয়াড়দের মধ্যে? এই তো কিছুদিন আগেই (ফেব্রুয়ারী, ২০১০) প্রতিভাধর গলফ খেলোয়াড় ‘বিবাহিত’ টাইগার উডসের প্রায় একডজন ‘পরনারীর’ সাথে যৌন সম্পর্ক থাকার কেলেঙ্কারী নিয়ে মিডিয়ায় আলোচনার ঝড় বয়ে যায়। এসব কিছু থেকে অনেকেই অনুমান করেন যে, খ্যাতিমানদের প্রতিভা, অপরাধীদের সহিংসতা এবং তাদের প্রজননগত চাহিদা বা সাফল্য এ সবকিছুই হয়তো আসলে একসূত্রে বাঁধা।
পোলার বিয়া দাও – মাথা ঠাণ্ডা হইবো
আমাদের বয়োজ্যোষ্ঠদের এলাকার ঘার ত্যারা আর রগচটা ছেলেপিলেদের দিকে দেখিয়ে বলতে শুনেছি – ‘তরুণ বয়স তো, তাই ছেলের রক্ত গরম। দেখবেন বয়স হলে রক্তও ঠাণ্ডা হয়ে আসবে’। বয়োজ্যোষ্ঠদের এই মন্তব্যের যৌক্তিকতা নিয়ে উপরে ‘বয়সের দোষ’ অংশে এ নিয়ে বিস্তৃতভাবে আলোচনা করেছি। পাশাপাশি আরেকটি কথাও বাংলাদেশে খুব শোনা যায় । বিশেষ করে উড়নচণ্ডী ছেলের উন্মাদনা যখন অসহীয় পর্যায়ে চলে যায়, তখন প্রায়ই অন্য অভিভাবকেরা ভাগ্য বিরম্বিত পিতাকে উপদেশ দেন – ‘পোলার বিয়া দিয়া দাও – মাথা ঠাণ্ডা হইবো’। সবক্ষেত্রে যে উপদেশ কাজ করে তা নয়, বরং অনেক সময় অযাচিতভাবে আরেকটি নিরীহ মেয়ের জীবন নষ্ট করা হয়। গ্রামের দিকে অশিক্ষিত জনগোষ্ঠির মধ্যে এই ‘পাগল চিকিৎসার’ দাওয়াই হিসেবে পাগলের বিয়ে দেয়াটা খুবই জনপ্রিয়। ছোটবেলায় শুনেছিলাম, আমাদের গ্রামের ‘দীনু পাগলা’ নামে বদ্ধ উন্মাদকে একবার জোর করে মমতাজ বেগমের সাথে বিয়ে দিয়ে দেয়া হয়েছিলো। তারপর দেখা গেল পাগলামি তো কমেইনি, বরং বউয়ের জীবনও দীনু পাগলা অতীষ্ট করে তুলেছে। শেষ মেষ শুনেছিলাম দীনুকে গাছের সাথে বেঁধে রেখে নাকি ‘পাগলের বউ’ মমতাজ বেগম কাজের সন্ধানে বের হত।
কিন্তু কথা হচ্ছে মেয়ের জীবন নষ্ট করা সংক্রান্ত এই ক্ষতিকর ব্যাপারগুলো জানা সত্ত্বেও কেন অভিভাবকেরা অনেক সময়ই ছেলের পাগলামি সারানোর জন্য বিয়ের দাওয়াই বাৎলে দেন? কারণ হচ্ছে কিছু ক্ষেত্রে তারা লক্ষ্য করেছেন আসলেই বিয়ে দিলে ছেলের ‘মাথা ঠাণ্ডা হয়’ (অবশ্য দীনু পাগলার মতো বদ্ধ উন্মাদ – যাদের পাগলা গারদে রেখে চিকিৎসা প্রয়োজন, তাদের কথা এখানে বলা হচ্ছে না)! একটি উদাহরণ দেয়ার লোভ সামলাতে পারছি না। মুক্তমনায় জাহেদ আহমদ নামে আমাদের এক বন্ধু লেখালিখি করতেন, শুধু লেখালিখি নয়- এক সময় আমাদের সাইটে ছিলেন খুবই সক্রিয়, মুক্তচিন্তা এবং মানবতার প্রসারে ছিলেন অন্তপ্রাণ। গত বছর জোর করে বড়ভাই তার ‘পাগলামি সারানোর’ জন্য বিয়ে দিয়ে দিলেন। তারপর থেকেই জাহেদ দেখি উধাও! ঘর সংসার করে নিপাট ভাল মানুষ হয়ে গেছেন। হয়েছেন স্ত্রীর অনুগতভাজন আদর্শ স্বামী। চাকরি-বাকরি, ঘর সংসার, সপ্তাহান্তে বউকে নিয়ে মল-এ ঘরাঘুরি, কিংবা নির্জনে কোথাও একটু বেরিয়ে আসা। মুক্তচিন্তা আর মানবতাভিত্তিক সমাজ গড়ার ‘পাগলামি’ মাথা থেকে বিদায় হয়েছে তা বলাই বাহুল্য।
আসলে বিয়ের পরে ‘জাহিদ পাগলা’র মত কারো কারো মাথা ঠাণ্ডা হবার ব্যাপারটি কিন্তু বিবর্তনীয় মনোবিজ্ঞানের দৃষ্টিকোন থেকে সহজেই ব্যাখ্যা করা যায়। আগেই আভাস দেয়া হয়েছে যে, পুরেষেরা তাদের অর্থ, প্রতিপত্তি, সম্মান, প্রতিভা সহ অনেক কিছুই বিনিয়োগ করে মূলতঃ নারীকে আকর্ষণের কাজে। পরুষদের অপরাধপ্রবণতা কিংবা তাদের পাগলামিকেও সেই দৃষ্টিকোন থেকেই দেখতে হবে। বহুক্ষেত্রেই দেখা গেছে বিয়ের পরে পুরুষেরা আগের মতো ঝুঁকিপূর্ণ কাজে নিয়োজিত হয় না। এমনকি দাগী অপরাধীদেরও অপ্রাধপ্রবণতা কমে আসে বিয়ের পরে, বহুক্ষেত্রে অপরাধজগৎ থেকে অবসর নেয় বহু অপরাধী[19]। এর কারণ হচ্ছে, বিয়ের পর নারীকে আকর্ষণের সেই প্রবৃত্তিগত তাড়না সে আর সেভাবে অনুভব করে না, স্বাভাবিকভাবেই এ ধরণের চাহিদা অনেক কমে আসে। ফলে বিবাহিত পুরুষদের অনেকেই ঝুঁকিপূর্ন কাজ একেবারে বাদই দিয়ে দেয়; ফলে প্রতিভার স্ফুরণ হোক, অপরাধ প্রবণতা হোক, কিংবা হোক কোন নির্দোষ পাগলামি – সবই কমে আসে। সেটাকেই বোধ হয় ‘পাগলা মাথা’কে ‘ঠাণ্ডা করে’ বলে ধরে নেয়া হয়, আর কিছু নয়। গাড়ির ইনসুরেন্স সংক্রান্ত বেশ কিছু জরিপে দেখা গেছে যে, বিবাহিত চালকেরা অবিবাহিত চালকদের চেয়ে অনেক কম দূর্ঘটনায় পতিত হয়। বলাই বাহুল্য, বিবাহিত ড্রাইভাররা অবিবাহিতদের চেয়ে অনেক কম ঝুঁকিপূর্ণ এবং আগ্রাসী ড্রাইভিং করে বলেই তারা তুলনামূলকভাবে কম দুর্ঘটনার শিকার হয়।
পুরুষ মানুষ দুই প্রকারের – জীবিত আর বিবাহিত
নচিকেতার একটা গান আছে –
জনতা জনার্দন শুনে হবেন বড় প্রীত
পুরুষ মানুষ দু’প্রকারের, জীবিত ও বিবাহিত।
পুরুষ মানুষ বেঁচে থাকে বিয়ে করার আগে গো
বিবাহিত মানে প্রকারন্তরেতে মৃত –
পুরুষ মানুষ দু’প্রকারের, জীবিত ও বিবাহিত।
বিবাহিত মানে যে প্রকারন্তরে মৃত -উপরে আমাদের বন্ধু জাহেদের ঘটনাটি এর প্রকৃষ্ট উদাহরণ। জাহেদ বিয়ের পর লেখালিখি একদমই ছেড়ে দিয়েছে, হয়ে উঠেছে ঘোর সংসারী। লেখক লেখা ছেড়ে দিলে তো এক অর্থে প্রতিভার সমাপ্তি, আর সমাপ্তি মানেই প্রকারান্তরে মৃত, কী বলেন! তবে সবাই যে বিয়ে করে জাহেদের মত মৃত হয় তা নয় অবশ্য, আমার মত ‘অর্ধ্মৃত’ হয়েও বেঁচে থাকে অনেকে!
আসলে যে কারণে বিয়ের পর ‘পাগল ছাগলদের মাথা ঠাণ্ডা হয়’, ঠিক একই কারণে প্রতিভার স্ফুরণও ধীরে ধীরে লোপ পেতে থাকে। এটাকে হাল্কা কথা বলে উড়িয়ে দিলে কিন্তু ভুল হবে। আমরা আগের একটি অংশে বিজ্ঞানীদের বয়স -প্রতিভা রেখচিত্রের (age-genius curve) সাথে পরিচিত হয়েছি। আমরা সেখানে দেখেছি যে, বয়সের সাথে সাথে বিজ্ঞানীদের প্রতিভা প্রদর্শনের হার কমতে থাকে। তবে একটি জায়গায় একটু ব্যতিক্রম পাওয়া গেছে। বিজ্ঞানী যদি অবিবাহিত হন, তবে তার প্রতিভা বয়সের সাথে সাথে অন্য সবার মতোই একটু কমে আসলেও প্রতিভার ঝিলিক কম বেশি বিচ্ছুরিত হতে থাকে পুরো জীবনকাল জুড়েই। উদাহরণ চান? হাতের সামনেই একটা বিখ্যাত উদাহরণ আছে – স্যার আইজ্যাক নিউটন। চিরকুমার এই বিজ্ঞানীকে নিয়ে আমরা আগেও দু’চারটি কথা বলেছি। তার সফল এবং বিখ্যাত আবিস্কারগুলো তরুণ বয়সেই (চব্বিশ বছরের মধ্যেই) করে ফেললেও এটি উল্লেখ করা প্রয়োজন যে, তার প্রতিভা কিন্তু লোপ পায়নি। ত্রিশ বছর বয়সে রিফলেক্টিং টেলিস্কোপ আবিস্কার করেন, ৪৪ বছর বয়েসের সময় তিনি বিখ্যাত গ্রন্থ প্রিন্সিপিয়া প্রকাশের জন্য রয়েল সোসাইটিতে পাঠিয়েছিলেন (সেখানেই তিনি মাধ্যাকর্ষণ সূত্র এবং তিনটি গতিসূত্রের ব্যাখ্যা প্রথমবারের মত হাজির করেছিলেন), ৬২ বছর বয়সে প্রকাশ করেন অপটিক্স। অপ্টিক্সের তৃতীয় সংস্করণ নিউটন প্রকাশ করেছিলেন ৮৪ বছর বয়সে, মৃত্যুর মাত্র এক বছর আগে। পচাশি বছর বয়সে মৃত্যুর আগ পর্যন্ত অর্থাৎ পুরো জীবনকাল জুড়েই নিউটন কর্মক্ষম ছিলেন – গনিত, পদার্থবিজ্ঞান, রসায়ন, এমনকি জীববিজ্ঞান সহ এমন কোন শাখা নেই নিউটনের পাদস্পর্শে ধন্য হয়নি। নিঊটন যে এত কর্মক্ষম একটা সময় অতিবাহিত করতে পেরেছিলেন – এর একটা কারণ অনেকেই মনে করেন – তিনি অবিবাহিত ছিলেন।; ফলে ‘প্রকারন্তরে মৃত’ হবার হাত থেকে বেঁচে গেছেন।
ব্যাপারটি কিন্তু কেবল নিউটনের ক্ষেত্রেই সত্য বলে ভাবলে ভুল হবে। গবেষকেরা দেখেছেন যে, অন্ততঃ শতকরা পঞ্চাশভাগ (৫০%) ক্ষেত্রে অবিবাহিত বিজ্ঞানীরা তাদের সবচেয়ে বড় আবিস্কারগুলো যেমন জীবনের প্রাথমিক সময়ে (বিশ বছর বয়সের দিকে) করেন, ঠিক তেমনি পুনর্বার সেরকম কিছু করে দেখাতে পারেন যখন বয়স পঞ্চাশ পেরোয়, কিন্তু বিবাহিত বিজ্ঞানীদের মধ্যে সে ধরণের সফলতার হার শতকরা মাত্র ৪.২ ভাগ[20]। নীচে গবেষণাপত্র থেকে বিবাহিত এবং অবিবাহিত বিজ্ঞানীদের সফলতার একটা তুলনামূলক চিত্র দেয়া হল –
ছবি- বিবাহিত এবং অবিবাহিত বিজ্ঞানীদের প্রতিভা স্ফুরনের তুলনামূলক রেখচিত্র।
গ্রাফগুলোর ট্রেণ্ড দেখলে সবাই একবাক্যে স্বীকার করবেন যে, বিবাহিত বিজ্ঞানীরা আসলে ‘প্রকারন্তরে মৃত’! তারপরেও আমার কথা বিশ্বাস না হলে পড়ুন এই ইংরেজী লেখাটি –
Scientists Discover Married Scientists Are Not As Productive As Single Ones
অবশ্য এ ধরণের ট্রেণ্ডের ফলাফল যাই হোক এর কারণ নিয়ে বিতর্ক করার সুযোগ আছে পুরোমাত্রায়। ‘কমন সেন্স’ থেকেই বোঝা যায় যে, পেশার বাইরেও বিবাহিত বিজ্ঞানীদের বড় একটা সময় সংসার, বাচ্চা কাচ্চা মানুষ করা সহ আণুষঙ্গিক পার্থিব কাজে ব্যয় করতে হয়। আর আধুনিক বিশ্বে পুরুষদের পাশাপাশি মেয়েদেরও কিন্তু নিজস্ব ক্যারিয়ার থাকে। ফলে গৃহস্থালীর কাজগুলো প্রায়শঃই স্বামী স্ত্রীতে ভাগাভাগি করে নিতে হয়; আর এগুলো করতে গিয়ে তাদের একাডেমিক গবেষনার সময় কমে আসে। অবিবাহিত বিজ্ঞানীরা যেহেতু পুরোটা সময় এসমস্ত ঝুট ঝামেলা থেকে মুক্ত থাকেন সেহেতু তারা গবেষণায় প্রতিভা স্ফুরণের সুযোগ এবং সময় পান বেশি। কাজেই প্রতিভা লোপের ব্যাপারটা কতটা জৈবিক আর কতটা সামাজিক – তা নিয়ে সন্দেহ করার অবকাশ আছে। তারপরেও বিবর্তনীয় মনোবিজ্ঞান নিয়ে গবেষণারর কিছু গবেষক দেখিয়েছেন যে, সত্তুরের দশকে কিংবা তার আগে মেয়েদের খুব একটা ‘নিজস্ব ক্যারিয়ার’ ছিলো না। সে সময় গৃহস্থালীর কাজগুলো মূলতঃ মেয়েরাই করতো। ফলে বিবাহিত পুরুষ বিজ্ঞানীদের তেমন একটা বাচ্চা কাচ্চা ঘর সংসার নিয়ে মাথা ঘামাতে হতো না। কিন্তু তারপরেও বিবাহিত বিজ্ঞানীদের প্রতিভার স্ফুরণে কোন উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন পাওয়া যায়নি। ভিক্টোরীয় পুরুষতান্ত্রিক সমাজ হোক, আর আধুনিক জেণ্ডার সচেতন সমাজ হোক, ট্রেণ্ড একটাই – বিয়ের পর একইভাবে প্রতিভার স্ফুরণ কমে আসে একই ধারায়।
ধারার যে দু’একটি ব্যতিক্রম থাকে না তা নয়। আমাদের প্রিয় মইনুল রাজু নিঃসন্দেহে ব্যতিক্রম হিসেবে থেকে যাবেন। বিয়ের পরেও তিনি আগের মতো লিখে যেতে পারছেন, সেটাই ভরসা (যদিও দুর্মুখেরা বলবেন, তিনি তার স্ত্রীর থেকে বহুদূরে আছেন, সেটাই তার সফলতার কারণ; যে সামান্য কটি দিন একসাথে ছিলেন, প্রকারান্তরে মৃতই ছিলেন – একটিও লেখা বের হয়নি তার পেট থেকে)। তবু সেই ভরসাটুকুই বেঁচে থাক। আমাদের যেন রাজুকে দেখিয়ে বলতে না হয় – ‘আহা, ছেলেটা বড় ভাল ছেলে ছিল, কী অল্প বয়সেই …’
——————————————————————————–
তথ্যসূত্র :
[1] Alfred Blumstein, Youth Violence, Guns, And The Illicit-Drug Industry, Journal of Criminal Law and Criminology (Northwestern), Guns and Violence Symposium, vol 86, no. 1, 1995:10
[2] John M. MacDonald, The Murderer and His Victim, Charles C. Thomas, Publisher Ltd, 1986
[3] David Lester, Questions and Answers about Murder, Charles Press Pubs, 1991
[4] David M. Buss, The Murderer Next Door, পূর্বোক্ত, পৃঃ ২৩।
[5] Travis Hirschi and Michael Gottfredson, Age and the Explanation of Crime, American Journal of Sociology, v89 n3 p552-84 Nov 1983
[6] Alfred Blumstein, পূর্বোক্ত।
[7] Margo Wilson and Martin Daly, পূর্বোক্ত।
[8] অভিজিৎ রায়, আলো হাতে চলিয়াছে আঁধারের যাত্রী, অঙ্কুর প্রকাশনী, ২০০৫ (পরিবর্ধিত সংস্করণ ২০০৬)
[9] A person who has not made his great contribution to science before the age of thirty will never do so. – Albert Einstein (Brodetsky, 1942, p. 699)
[10] Mukerjee, M. Explaining everything. Scientific American, 274, 88–94, 1996.
[11] W. Poundstone, Prisoner’s dilemma. New York: Anchor, 1992, p 16.
[12] H. C. Lehman, Age and achievement . Princeton: Princeton University Press, 1953.
[13] S. Cole, Age and scientific performance. American Journal of Sociology, 84, 958–977, 1979.
[14] S. G. Levin, & , P. E. Stephan, Research productivity over the life cycle: Evidence for academic
scientists. American Economic Review, 81, 114–132, 1991.
[15] Satoshi Kanazawa, Why productivity fades with age: The crime–genius connection, Journal of Research in Personality 37, 257–272, 2003
[16] গবেষক ডেভিড গ্যালেনসনের মতে পদার্থবিজ্ঞান এবং গনিতের তাত্ত্বিক বিষয় নিয়ে যারা গবেষনা করেন তারা মুলতঃ ‘কনসেপচুয়াল ইনোভেটর’ (Conceptual innovators), আর শিল্প সাহিত্য নিয়ে সৃষ্টির খেলা যারা খেলেন তারা ‘এক্সপেরিমেন্টাল ইনোভেটর’ (experimental innovators)। তিনি তার গবেষণায় দেখানোর চেষ্টা করেছেন যে, ‘কনসেপচুয়াল ইনোভেটর’রা তাদের জীবনের প্রাথমিক সময়ে বা তরুণ বয়সেই সবচেয়ে বেশি প্রতিভার বিচ্ছুরণ ঘটান, আর অপরদিকে ‘এক্সপেরিমেন্টাল ইনোভেটর’রা ঘটান জীবনের মধ্যবয়সে বা শেষদিকে।
[17] Alan S. Miller and Satoshi Kanazawa, Why Beautiful People Have More Daughters: From Dating, Shopping, and Praying to Going to War and Becoming a Billionaire– Two Evolutionary Psychologists Explain Why We Do What We Do, Perigee Trade; Reprint edition, 2008
[18] প্রদীপ দেব, প্রেমিক আইনস্টাইন, মুক্তমনা
[19] Criminologists have long known that criminals tend to “settle down” and desist (stop committing crime) once they get married, while unmarried criminals continue their criminal careers.
[20] Satoshi Kanazawa, Why productivity fades with age: The crime–genius connection, Journal of Research in Personality 37, 257–272, 2003
গতকাল রাতে The Social Network মুভিটা দেখলাম। কেউ দেখেছেন নাকি? হার্ভার্ড কলেজের হ্যাকিং এক্সপার্ট ছাত্র মার্ক জুকার্বার্গ কিভাবে ফেস বুকের মত একটি সোশাল মিডিয়া তৈরি করে ফেললেন তার চিত্রায়ন আছে মুভিটাতে। তিনি মূলতঃ অবৈধভাবে হার্ভার্ডের মেয়ে ছাত্রীদের ছবি অবৈধভাবে ডাউনলোড করে Face Mash নামের একটা সাইট বানিয়েছিলেন, যেটা হার্ভার্ডের ছাত্রদের (অবশ্যই পুরুষ) মধ্যে দারুণ জনপ্রিয়তা পেয়েছিল, কারন ছাত্ররা সেই সাইটে গিয়ে তাদের বান্ধবীদের মধ্যে “which girl is hotter – left one or right one…” নির্বাচন করতে পারতো। ঠিক একই কারণে তা ছাত্রীদের মধ্যে ক্রোধ এবং উষ্মা তৈরি করেছিলো। সেই থেকে শুরু… তারপর নানা ঘাত প্রতিঘাত পেরিয়ে ফেসবুক।
মুভিটাতে আছে ফেসবুক জনপ্রিয় হয়ে যাবার পরে তার কাছের বন্ধুদের কাছ থেকে কিভাবে মামলা হয়েছিলো, কিভাবে আরেক কম্পিউটার উইজার্ড নেপস্টারের ফাউন্ডার শন পার্কারের সাথে ফেসবুকের কাজে জড়িয়ে পড়া, পরে কোকেন সেবনের অপরাধে শনের ফেসবুক থেকে অব্যহতি সহ নানা আকর্ষনীয় বিষয় আশয়।… দেখতে পারেন মুভিটা সবাই।
মুভিটা দেখতে দেখতেই আমি ভাবছিলাম যে আসলেই আমি লেখাটাতে যে ইঙ্গিত করেছিলাম – প্রতিভা, বয়স, আর অপরাধপ্রবণতা অনেক সময়ই একসূত্রে বাঁধা থাকে। মার্ক জুকার্বার্গ আর শন পার্কারের মত প্রতিভাধরদের জীবনীগুলো তারই প্রমাণ।
ও বলতে ভুলে গেছি – ফেস বুকের প্রতিষ্ঠাতা মার্ক জুকার্বার্গ আজকে পৃথিবীর ইয়ংগেস্ট বিলিয়নিয়ার…। তার বয়স ছাব্বিশও পেরোয়নি।
@অভিজিৎ,
গতকাল ট্রেইলার দেখছিলাম ইয়াহু মুভিজে। ছবি দেখতে হবে লিস্টে ঢুঁকিয়েছি, যদিও কবে দেখতে পারবো জানি না 😥 ।
@অভিজিৎ,
আরেকটি কথা, আপনার এই লেখাগুলো মিলে কি এই বইমেলাতে কোন বই বের হচ্ছে? আপনার এই পুরো সিরিজটি আমার আবার পড়ার ইচ্ছে আছে, কিছু পড়াও শুরু করেছি। বই বের হওয়ার আগে অবশ্যই নিজের কিছু মতামত জানাতে চাই। বিবর্তন মনোবিদ্যা খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয় বলে মনে করি। এর সাথে সম্পর্কিত সমাজের নৈতিকতা , রাষ্ট্রের সংবিধান, অর্থনীতির মত গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলো। তাই আমি চাই বইটিতে কোনভাবেই যেন কোন প্রকার ভুল তথ্য না থাকে। এবং এই বিষয়ে লেখককেও বিশেষ সচেতন থাকার বিনীত অনুরোধ রইল।
@স্বাধীন,
চেষ্টায় আছি। কিন্তু কাজ একেবারেই এগুতে চাচ্ছে না।
অবশ্যই। আপনার অভিমত নিঃসন্দেহে বইটির জন্য গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠবে।
নৈতিকতার উৎস নিয়ে লেখা শুরু করেছি। সেখানে আপনার উদ্বেগটুকু কভার করা হবে বলে ধারনা করছি। চমকপ্রদ কিছু তথ্য থাকবে। দেখা যাক…
অভি বাবুর লেখার মধ্যে একটা নতুন্ত খোঁজে পেলাম। মনঃবিক্ষণের আলোকে দারুণ প্রবন্ধ। তবে প্রবন্ধটি পড়ে আমার মাথায় খুন চেপে গেছে কারণ আমার বয়স ৩০ পার হয় নি আর বিয়ে ও করিনি। দেখি কি অপরাধ শুরু করে প্রতিভাবান হতে পারি? এখন সুর পরিবতন করতে হবে অপরাধ আনে প্রতিভা, আর প্রতিভা আনে বিবতন। কেউ খারাপ পাবেন না একটু মজা করলাম। এত ভঙ্গ বঙ্গ, তবু রঙ্গে ভরা। :guli: :lotpot:
গুরু, আপনার লেখা সিরিয়াসলি না নেবার কোন উপায় আছে? রবীন্দ্রনাথ লেখার সময় পান্ডুলিপিতে যেসব কাটাকুটি করেছিলেন সেগুলোও মহৎ শিল্পকর্ম হিসেবে বিবেচিত। সেরকম আপনার ‘হালকা’ লেখার গুরুত্ব যে কত তা তো দেখতেই পাচ্ছি। মনে হচ্ছে ‘জীবিত’ থেকে ভালই আছি। 😀
@প্রদীপ দেব,
সব পুরুষ বিবাহিত হলেই মৃত হয় না। নচিকেতার গানের দর্শন ও অভিজ্ঞতা কিন্তু সবার ক্ষেত্রে প্রযোজ্য নয়। এ বিষয়ে অভিজিৎ রায়ের ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতাও ভিন্ন বলেই আমার সুদৃঢ় বিশ্বাস। বন্যার সাথে তার খুনসুটি পড়েই আঁচ করতে পারি তারা অনেক ভাল আছে এবং তা থাকবে বলেই আমার প্রত্যাশা। কাজেই আপনিও শীঘ্র তথাকথিত ‘জীবিত’ ( যদি অবিবাহিত থেকে থাকেন) পরিচয় ঘুচিয়ে ফেলুন।
আপনার ব্যক্তিগত বিষয়ে কথা বললাম আপনার মন্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে। এজন্য আগেই দুঃখিত বলে নিচ্ছি। দুঃখিত
@প্রদীপ দেব,
কে যে কারে গুরু কয়! ঘোর কলিকালের লক্ষণ এটাই।
আপনি জীবিত থুড়ি অবিবাহিত আছেন তা তো জানতাম না। আপনি দেখি এই মার্কেটে ‘জর্জ ক্লুনি’ 🙂 । দিল্লিকা লাড্ডু খেয়ে (আমার মতো অচীরেই) কবে মৃত্যু পথযাত্রী হন তা দেখার জন্য অধীর আগ্রহে এবং প্রত্যাশায় বসে আছি।
আর ইয়ে … গীতাদি মনে হয় ঠিকই বলেছেন। লাড্ডু খারাপ না। না খেয়ে পস্তানোর চেয়ে, খেয়ে পস্তানোই ভাল হবে মনে হয়। 🙂
নচিকেতার গানটা ইউ টিউবে খোঁজার চেষ্টা করলাম, কিন্তু ভাল কিছু পেলাম না, কোন এক সদ্যবিবাহিত ব্যক্তির ব্যাকগ্রাউণ্ডে গানটা পেলাম। ভিডিওটা দেখা বাদ দিয়া কেবল গানটা শোনার জন্য দিলাম –
httpv://www.youtube.com/watch?v=d6T13wI2noM
আর লিরিক্স –
জনতা জনার্দন শুনে হবেন বড় প্রীত
পুরুষ মানুষ দু প্রকার, জীবিত বিবাহিত
পুরুষ মানুষ বেচে থাকে বিয়ে করার আগে গো
বিবাহিত মানে প্রকারন্তেরেতে মৃত
পুরুষ মানুষ দু প্রকার, জীবিত ও বিবাহিত।।
জীবিত আছেন তারা হয়নি যাদের বিয়ে
মাঝে মাঝে ভাবি আমি ওদের কাছে গিয়ে।।
কত সুখে আছেন ওরা লাগিয়ে গায়ে হাওয়া
হয়নি দিল্লীর এই লাড্ডু যাদের খাওয়া।
দাড়িয়ে ছাদনাতলায়, পড়েছেন মালা গলায়
সে মালার বকলেস তিনি, সারমেয়ের মতো
একথা বুঝবেন যিনি আছেন আমার মতো।
ভালবাসা সুখেরই নাম কতো প্রলোভন
আসলে কানার নাম পদ্মলোচন
ভুলোনা শুনে বিয়ের সানাই বাদন
বিয়ে হলো বলির আগের ছোট্ট আয়োজন
বিয়ে করে বলেন সুখী, স্ত্রী আমার চন্দ্রমুখী।।
সেকথা আমার কানে শোনায় গুলের মতো।
একথা বুঝবেন যিনি আছেন আমার মতো
জনতা জনার্দন শুনে হবেন বড় প্রীত
পুরুষ মানুষ দু প্রকার, জীবিত বিবাহিত
পুরুষ মানুষ বেচে থাকে বিয়ে করার আগে গো
বিবাহিত মানে প্রকারন্তেরেতে মৃত
পুরুষ মানুষ দু প্রকার, জীবিত ও বিবাহিত।।
আমি ১৫৩ করে দিলাম। সাথে অভিনন্দন। :yes:
আরো একটা ব্যাপার অভিজিত এই আলোচনাতে আনে নি। মেয়েদের সামনে রোল মডেল। ছোট বেলায় আমাদের বাবা মা সামনে নেতাজি সুভাষ, জগদীশ বোস, স্যার রামন এদেরকে আইডল হিসাবে-মানে রোল মডেল হিসাবে বসিয়ে দিত। আমার রোল মডেল ছিল না-তবে আমি ব্যাক্তিগত ভাবে মেঘনাদ সাহার জীবনী পড়ে অনেকটাই অনুপ্রানিত ছিলাম বা আজও আছি।
এখানে সব রোল মডেলই পুরুষ। একজন আমেরিকান পুরুষের সামনেও হেনরি ফোর্ড, বিল গেটস বা স্টিভ জবস -রোল মডেল হিসাবে থাকে।
সেখানে কি আমেরিকা-কি ভারত-কোথাও মেয়েদের রোল মডেল নেই। মাদার টেরেসা কোন স্বাভাবিক সুস্থ মেয়ের রোল মডেল হতে পারে না। রাজনীতিতে ভারতের অনেক মহিলার সামনে তাও ইন্দিরা গান্ধী আছে। কিন্ত বিজ্ঞানে? আমেরিকাতে কজন মেয়ে মেরী কুরীর সংগ্রামের কথা জানে??? জানে না। কারন টিভিতে বলে না। এখানে ব্রিটনি, রিহানা, শাকারিয়া এদেরকে রোল মডেল করে সারাক্ষন টিভি প্রচার চলছে। ত আমেরিকান কিশোরীদের আবর্শন ছারা ভবিষয়ত কি? এসব কিছুই মুক্ত মার্কেটের দান।
কাকে সামনে রেখে বড় হবে মেয়েরা? মেয়েদের বিজ্ঞানী হওয়ার পথে এটা একটা বিরাট সমস্যা-কারন প্রায় সব রোল মডেলই পুরুষ।
@বিপ্লব পাল, হ্যা সে জন্যই তো এই রোল মডেলের কথাটা বলেছিলাম ভবঘুরেকে দেওয়া আগের কমেন্টে।
@বন্যা আহমেদ এবং বিপ্লব পাল,
রোল মডেল নিয়ে উদ্ধুদ্ধকরণের কৌশলও পাল্টাতে হবে। রোল মডেল সৃষ্টি করার মত মোটিভেশন দিতে হবে। আমাদের উত্তর প্রজন্ম মেয়ে শিশুকে বিভিন্ন সাহিত্যিক বা বৈজ্ঞানিকের রেফারেন্স দিতে হবে তবে পুরুষ সাহিত্যিক বা পুরুষ বৈজ্ঞানিক হিসেবে নয়, লিঙ্গ নিরপেক্ষতা শিখাতে হবে। মেয়ে শিশুকে আগেই তার অবস্থান নিয়ে সচেতন করতে হবে যাতে সে গতানুগতিক বলয় থেকে বেড়িয়ে আসতে পারে।
যদিও তা বড্ড কঠিন।
রোল মডেলের কথাটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। মিডিয়া তাকেই রোল মডেল করে যাকে করলে ব্যবসায়িক ভাবে লাভবান হতে পারবে। বাংলাদেশের মিডিয়া এখন ছেলেদের সামনে রোলমডেল করে সেই ডিজুস মার্কা অপদার্থ ছেলেটাকে যে চুলে জেল মেখে পার্টিতে ফুর্তি করে আর কাজকর্মের কথা চিন্তা না করে আড্ডা দেয়,রাত জেগে মোবাইলে কথা বলে। মেয়েদের সামনে মডেল করে সেই মেয়েটাকে যার গায়ের রং ফর্সা,যার ক্যাটরিনা বা অন্য নায়িকার মত ফিগার,যার চিন্তা শপিং,চুল,নখ নিয়ে সীমাবদ্ধ,আর অবশ্যই রাত জেগে কথা বলে।
মিডিয়ার ফাদ থেকে বের হয়ে মুক্তচিন্তা যে করতে পারেনা সে আসলেই বড় অসহায়।
অসাধারণ লাগলো লেখাটা। আমার বিয়ে করার ইচ্ছা নাই, এরকম অ্যামুনিশন আর কেউ তো দেয় না।
অভিজিৎদা কি অবিবাহিত নাকি? 🙂
@সিরাত,
উপরে বন্যার ধাতানিগুলা দেখলেই বুঝবেন, অবিবাহিত না, তবে অর্ধমৃত 🙁
অফটপিক, আপনি তো অন্য ব্লগে ভালোই লেখেন, এখানেও লেখা শুরু করেন।
@সিরাত,
মুক্তমনায় স্বাগতম সিরাত। তোমার তো লেখার বিষয়ের অভাব নেই 😀 , অভি’দার মত বলবো কিছু লেখা এই দিকেও ছাড়তে পারো। দেখো পাঠকের রেস্পন্স কেমন পাও। সেরকম ভাল মনে করলে মুক্তমনাতেও মাঝে মাঝে নিয়মিত লিখতে পারো।
আমি সচল/মুক্তমনা এই দু’টোতেই লিখে যাচ্ছি। ধর্ম নিয়ে লেখাগুলো এখানে দিতে স্বাচ্ছন্দ বোধ করি তাই এখানে দেই। আর রাজনীতি বা অন্যান্য বিষয়গুলো নিয়ে লিখলে সচলে দিই। প্রথম দিকে সচলের লেখাগুলোই মুক্তমনায় দিতাম, এখন আর সেটা করতে ইচ্ছে করে না 🙂 । এনি ওয়ে মুক্তমনায় আবারো স্বাগতম। লেখা দাও না দাও অন্তত মন্তব্য নিয়মিত হইও।
@স্বাধীন,
একটা বিষয় পরিষ্কার হওয়া প্রয়োজন। অন্য ব্লগে প্রকাশিত পুরোনো লেখাকে মুক্তমনা কখনোই উৎসাহিত করে না। সেটা যে সময় কাঠামোতেই প্রকাশিত হোক না কেনো। অনেক সময় হয়তো মডারেটরদের চোখে পড়ে না দেখে অন্য কোনো ব্লগে প্রকাশিত লেখা মুক্তমনায় প্রকাশিত হয়ে যায়। তবে, চোখে পড়ার সাথে সাথেই তা প্রথম পাতা থেকে সরিয়ে নেওয়া হয়। এ ধরনের পদক্ষেপ মুক্তমনা কর্তৃপক্ষ এর আগে একাধিকবারই নিয়েছে।
@মুক্তমনা এডমিন,
জ্বি, সেটা প্রথম দিকে বুঝিনি বলেই দিয়েছি। সে কারণেই এখন আর সেটা করবো না সেটা পরিষ্কার করেই বলেছি। আমার ব্লগ যাত্রা এই সেই দিন মাত্র। শুরুর দিকে ব্লগ কি বুঝে উঠতে কষ্ট হয়েছে। প্রথম দিকে একই লেখা সব ব্লগে দেওয়ার লোভ হতো। এমনও হয়েছে যে সচলের নীতিমালার কারণে মুক্তমনায় আগে লেখা দিয়ে পরে সচলে নিজ ব্লগে হলেও দিয়েছি। এই নিয়ে প্রিয় আরেকটি ব্লগ সিসিবিতে বহু ক্যাঁচাল করেছি। যাক এই ব্যাপারে সহমত যে একেকটি ব্লগের স্বকীয়তা রক্ষায় মৌলিক লেখার প্রয়োজন আছে।
ধন্যবাদ বিষয়টিকে আরো পরিষ্কার করার জন্য।
বিবর্তনীয় মনোবিদ্যার মনোহর মোড়কে পুরে এরকম একটা পুরুষবাদী প্রবন্ধ মুক্তমনায় মুক্ত করার অপরাধে বন্যা যে তোমাকে বাড়ী থেকে এখনও কেনো বের করে দেয় নি, সেটা ভেবেই বিস্মিত হচ্ছি আমি। :-/
মুক্তমনার নারীবাদীদেরও দেখলাম সব নীরব, নিশ্চুপ। এরকম একটা লেখা আমি লিখলেতো মনে হয় ………….. যাক বাকিটা আর বললাম না। 🙁
নারীবাদীরা প্রতিবাদ না করলেও একজন পুরুষবাদী হিসাবে নারীদের প্রতি চরম অবমাননাকর এই প্রবন্ধের বিরুদ্ধে কড়া প্রতিবাদ করে গেলাম আমি। 😀
@ফরিদ আহমেদ,
বিবেকবান ও যুক্তিবাদী পুরুষবাদী। :rose2: এখানে তো অনেকেই স্ত্রীর ভয়ে নারীবাদীর ভাণ করে। ফরিদ তা করে না।
@ফরিদ আহমেদ,
বাড়ি থেকে বের করে দেয় নাই – আপনে এ ব্যাপারে শিওর? 🙂 একমাত্র আদিল মাহমুদই আমার দুঃখ ভাল বুঝবে এখন। আপনে তো আছেন আরামে।
@অভিজিৎ,
এ্যাঁ! আদিল মাহমুদরেও তার বউ বাড়ি থেকে বের করে দিছে। জানতাম নাতো!! আহারে, বেচারা!!! 🙂
আরেকটা তথ্য, দৈনিক পত্রিকার একটা ঈদসংখ্যায় দেখলাম আনিসুল হকের একটা উপন্যাসের নাম ‘আলো হাতে চলিয়াছে আঁধারের যাত্রী’।
উনি কি আর নাম পাননি?
বই আকারে প্রকাশ করার সময় ISBN নম্বর পেতে কি কোন সমস্যা হবে না?
@গীতা দাস,
নামের বিষয়ে সৃজনশীলতা বইয়ের বিষয়বস্তুর মতই গুরুত্বপূর্ন । লেখকরা অন্য বইয়ের নাম ( জেনেরিক নাম হলেও) না ব্যবহার করার ক্ষেত্রে অলিখিত জেন্টলম্যান এগ্রিমেন্ট মেনে চলেন। আনিসুল হক তা করলেই ভালো করতেন।
ইউনিক ISBN নম্বর পেতে সমস্যা হওয়ার কথা নয় , যদি না নিম্নলিখিত ৫ অংশে সব জিনিষগুলো এক হয় :
১) জিএসআই প্রিফিক্স । ফিকশন , নন-ফিকশন ইত্যাদি ।
২) ভাষা-দেশ গ্রুপ ।
৩)প্রকাশকের কোড ।
৪) বইয়ের টাইটেল ।
৫) পরীক্ষক ডিজিট (checksum code) ।
@সংশপ্তক,
আমাকে আলোকিত করার জন্য ধন্যবাদ। ৫টি অংশ সম্বন্ধে জানলাম, তবে প্রত্যেকটা অংশ সম্পর্কে স্পষ্ট কোন ধারণা হল না। এ নিয়ে বিস্তারিত একটা লেখা লিখে ফেলুন ।
@গীতা দাস,
অ্যা, বলেন কি দিদি? আমার বইয়ের টাইটেল কপি কইরা দিলো? চিন্তার বিষয়। যদিও ‘আলো হাতে চলিয়াছে আঁধারের যাত্রী’ টার স্বত্তাধিকার রবীন্দ্রনাথ ছাড়া আর কেউই দাবী করতে পারেনা – কিন্তু একই টাইটেলে দুই বই হয় নাকি?
@অভিজিৎ,
বইয়ের নামের স্বত্তাধিকার রবীন্দ্রনাথ না, লাইনটা রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের তাতো জানিই, কিন্তু বইয়ের নাম হিসেবে ব্যবহার করার ক্ষেত্রে অভিজিৎ রায়। কাজেই সংশপ্তকের মন্তব্যের কথাগুলোই মাথায় ঠুকরাচ্ছিল—–
যা আনিসুল হক মানেন নি।
@গীতাদি,
আমি কোন বিখ্যাত লেখক নই। আর মেইনস্ট্রিম মিডিয়ায় আনিসুল হক যেরকম জনপ্রিয়, অখ্যাত অভিজিৎ রায় তা নন। আমি নিশ্চিত আমার বইয়ের ব্যাপারটা আনিসুল হক জানেনই না, কিংবা তার দৃষ্টি এড়িয়ে গেছে। তবে কেউ তাকে জানালে অবশ্যই বাধিত হব।
@গীতাদি ,
ফেসবুকে আনিসুল হকের সাথে কথা (মানে ম্যাসেজ চালাচালি আরকি) হয়েছে। উনি আমায় বলেছেন যে, তিনি তার পুরো উপন্যাসটা চার পর্বে লিখেছেন -১) ভুল ভর ২) ভাষার ভর, ৩) আলো হাতে চলিয়াছে… ৪) যারা ভর এনেছিল … (তার ইমেইলের ইংরেজী হরফ থেকে বাংলা করেছি, তাই জানি না নামগুলো সঠিকভাবে লিখলাম কিনা)
যা হোক, তিনি কথা দিয়েছেন যে, বইয়ের নাম ‘আলো হাতে চলিয়াছে আঁধারের যাত্রী’ তিনি রাখবেন না। তিনি বই বের করার সময় আমার বইয়ের ব্যাপারটা মাথায় রাখবেন।
কাজেই উনার প্রতি আমাদের আর অনর্থক শ্রাগ না দেখানোই উচিৎ হবে। বরং তার প্রতি সম্মান আমার অনেকটুকু বেড়ে গেলো। তার উপন্যাসের সাফল্য কামনা করছি।
আর গীতাদি, আপনাকেও ধন্যবাদ বিষয়টি নজরে আনার জন্য।
@অভিজিৎ,
আপনি এবং আনিসুল হক দুজনেই সমান তালে নিপাট ভদ্রলোক বলেই বিষয়টি দুজনেই সহজভাবে নিয়েছেন এবং চমৎকারভাবে ইতি টেনেছেন। আমরাও খুশি।
@ফরিদ আহমেদ,
একদিন কি কারণে অভির কম্পিউটারে আমার বল্গ খোলা দেখে গুতাগুতি করলাম, দেখি সেখানে সর্বোচ্চ মন্তব্যকারীর বিভাগে জ্বলজ্বল করছে আদিল মাহমুদের নাম। উনি নাকি সারাদিনে ৬৫ টি মন্তব্য করেছেন 🙂 । আর তার উপর উনার তো একাধিক ব্লগে পদচারণা …।। এর পরেও যে উনি এতদিন বাসায় টিকে ছিলেন এই তো বেশী!!!!!
আহা! বউ বাগড়া না দিলেই সেঞ্চুরিটা ঠিকই করে ফেলতেন তিনি। 🙂
@ফরিদ আহমেদ,
আপনাদের একান্ত ও দোয়ায় সেই সৌভাগ্যও লাভ করতে পেরেছি 😀 ।
দোয়া রাখবেন, এইবার ডবলের দিকে এগুবো।
@ফরিদ আহমেদ,
কি কন ফরিদ ভাই, একা এতক্ষণ এতগুলা ‘প্রতিভাবান পুরুষের’ সাথে বিতর্ক করলাম আর আপনি কন প্রতিবাদ করি নাই!!! আর আপনার মত পুরুষবাদীদের কারণেই এখনও সব পুরুষদের সম্পূর্ণভাবে হোপলেস বলে মনে করি না…।
@বন্যা আহমেদ,
হে, হে, হে!!! তোমারে আর স্নিগ্ধারেতো আমি কমণীয় কোনো নারী বলে মনে করি না। পেশিবহুল পুরুষবাদী নারীই ভাবি। আমার দলেরই লোক। তাই আর উল্লেখ করি নাই আলাদাভাবে তোমার নাম। 😀
@ফরিদ ভাই বের করি কেম্নে বাড়িটা তো দুইজনের নামে:-Y । আমি তো বেগম রোকেয়ার মত নারী রাজত্ব কায়েম করতে চাই না, সম্মানজনকভাবে সমানাধিকার থাকলেই খুশি। আর কেম্নে কেম্নে জানি নাস্তিকতার মতই এ ব্যাপারটাতেও কোন ছেলে কোনদিন আমারে চ্যালেঞ্জ করার সাহস পায় নাই! আর ওদিকে আবার আমি তো দজ্জাল না নিপাট ভালো মানুষ জানেনই 🙂 , ফ্রি স্পীচের অধিকার সবার আছে এটাতেও বিশ্বাস করি । আরেকটা ঝামেলা আছে, বাড়ি থেকে বের করে দিলে ক্রেডিট কার্ডে যে সব জিনিসশ চার্জকরে সেটাও জয়েন্ট একাউন্ট থেকে যায়, তাই অর্থৈতিকভাবেও সেটা ঠিক লাভজনক না। আর অভির লেখার সাইন্টিফিক ডাটার ভুল আমি এখনই ধরাই দিতে পারি, কিন্তু দিচ্ছি না, বেশি চ্যালেঞ্জ করলে দিমু ভাবতেসি! চলেন হিসেব করি অভি বিয়ের আগে কয়টা বই লিখসে আর বিয়ের পরে কয়টা, তাহলেই বোঝা যাবে সবকিছু!!
নাহ বেচারা অভি এখন ওর ‘অপ্রতিভাধর’ নারী ম্যানেজারের ঠ্যালায় বেশ ঝামেলায় আছে, তাই বেশী কিছু আর বলতেসি না, ভহালো কথামনে করাই দিলেন, সেটার রিয়্যকশানও হইতে এই পারে লেখাটা কিন্তু:-) । আর তাছাড়া অতীতে বেশ কিছু নারীবাদী লেখা আর কতাবার্তা লিখে অভির বেশ কিছু এক্সট্রা পয়েন্ট জড়ো হইসে যেগুলা ভাঙ্গায় খেতে পারবে বেশ কিছুদিন।
@বন্যা আহমেদ,
কত মেয়ে স্বামীর পয়সায় কেনা স্বামীর নামের বাড়ি থেকে স্বামীকে বের করে দিচ্ছে। আর এত দুইজনের নামে। দাও ধাক্কা দিয়ে বের করে। দুষ্ট স্বামীর চেয়ে শুন্য বাড়ি ভালো।
ঘর থেকে বের করার আগে ক্রেডিটকার্ডগুলো সব সিজ করে নাও। যাবে কই বাছাধন। দুইদিন না খেয়ে পথে পথে ঘুরলেই সোজা হয়ে যাবে। তখন আর মৃত হতে মইনুল রাজুর মত কোনো আপত্তি করবে না।
ওগুলাতো সব লিখছে বিয়ার আগে। কী কারণে লিখছে সেইটা আর বললাম না এইখানে। পাবলিক এমনিতেই বুঝবো। 🙂
@ফরিদ আহমেদ,
নিজের অজান্তেই হাসি ঠাট্টা ছলে নিজের নারীবাদী স্বরূপ প্রকাশ হয়ে গেল। শিয়ালের গল্পের মত। রঙ মেখে কি আর নিজের পরিচয় বেশিদিন গোপন রাখা সম্ভব!
এক রাত ইন্টারনেটের বাইরে ছিলাম। এতেই দেখি অনেক পেছনে পরে গেছি। লেখাটি মন্তব্যসহ পড়তে গিয়ে বুঝলাম আমার মতামত এসে গেছে। তবে লেখাটি শুরু হয়েছিল নারীর প্রতি পুরুষের সহিংসতা সহ পুরুষের অপরাধপ্রবণতা আর প্রতিভা ও তাদের বয়সের সম্পর্ক নিয়ে। আর মন্তব্যে নারীদের দজ্জাল বানিয়ে ছাড়লেন। পুরুষ প্রতিভার অবনতির জন্য নারীদেরই দায়ী করে ছাড়লেন। এটাই পুরুষদের কারিশমা।
তবে বন্যা আর লীনা রহমান খুবই যুক্তিসঙ্গত সাড়া দিয়েছেন।
অন্যদিকে, সঙ্গীতজ্ঞ, চিত্রকর এবং সাহিত্যিকদের বয়স-প্রতিভার তুলনামুলক রেখচিত্রে নারীদের যে অবস্থান এর জন্য দায়ী কে? আর অভিজিৎএর লেখায় আমার কিছু প্রশ্ন রয়েছে। যেমনঃ অপরাধপ্রবণতা আর প্রতিভা কি তবে এক সূত্রে গাঁথা উপ-শিরোনামে অপরাধপ্রবণতা আর নারী সঙ্গ কামনাকে একই সূত্রে গাঁথা কি ঠিক হল? প্রতিভাবানরা কি নারীর প্রতি সহিংস আচরণ করেছেন?
@গীতাদি,
যাক তাও ভালো দেরীতে হলেও আপনার মন্তব্য পাওয়া গেলো। আমি কিন্তু নারীকে দজ্জাল বানাইনি মন্তব্যে। আমি আগেই দু-হাত তুলে আত্মসমর্পন করে বলেছিলাম – ‘আমি এগুলাতে নাই। আমার বউ দজ্জাল কিসিমের না, নিপাট ভাল মানুষ’ 🙂 , খেয়াল করেননি বোধ হয় মন্তব্যটা। যাহোক, এবার কিছু কৈফিয়ৎ দেই লেখাটি সম্পর্কে।
আমি কিন্তু লেখাটির কোথাও নারী পুরুষের তুলনামূলক আলোচনা করিনি, কিংবা বলিনি যে, নারীরা পুরুষদের চেয়ে কম প্রতিভাবান (যে গ্রাফ গুলো ব্যবহার করেছি সেগুলো সবই জার্নাল থেকে নেয়া এবং হবহু ব্যবহৃত হয়েছে, কিন্তু সেই গ্রাফে বিধৃত নারী পুরুষের প্রতিভা নিয়ে আমি কিন্তু আলাদাভাবে আলোচনা করিনি)। যেটা আসলে বলার চেষ্টা করেছি তা হল – প্রতিভা সম্ভবতঃ একটি সঙ্গমী মননের অভিব্যক্তি যা আমাদের আদিম পূর্বপুরুষদের দ্বারা সেক্সুয়ালি সিলেকটেড হয়েছিল। সেটা ছেলে মেয়ে উভয়ের ক্ষেত্রেই কিন্তু প্রযোজ্য। আমরা যে স্মার্টনেস পছন্দ করি, কথাবার্তায় উইট পছন্দ করি, ইন্টেলিজেন্স পছন্দ করি – এর কারণ হল আমাদের পূর্বপুরুষেরা সেক্সুয়াল সিলেকশনের মাধ্যমে এই গুণগুলোকে নির্বাচন করেছিল – ঠিক যেভাবে এক ময়ুরী নির্বাচন করে বড় ময়ুরপুচ্ছ বিশিষ্ট পার্টনারকে। এখানে আসলে ভাল খারাপ বা কম বেশির কিছু নেই।
কিন্তু সেক্সুয়াল সিলেকশনের কিছু ইউনিক ব্যাপার স্যাপার আছে। সেক্সুয়াল সিলেকশন বেঁচে থাকায় সহায়তা করে না, বরং অনেক সময় স্বাভাবিক গতি ব্যহত করে। ময়ুরীরা দীর্ঘ ময়ুরপুচ্ছ বিশিষ্ট পার্টনার নির্বাচন করতে করতে এমন কাণ্ড করেছে যে, সেই দীর্ঘপুচ্ছ ময়ুরের জন্য এখন এক বোঝা। দীর্ঘ ময়ুরপুচ্ছ ওয়ালা ময়ুর অনেক সময়ই ঠিকমত দৌড়াতে পারে না, শত্রু তাড়া করলে আত্মরক্ষা করতে পারে না, কেবল ময়ুরের সঙ্গমী মনকে প্রাধান্য দিতে গিয়ে তার লেজ বড় করেছে, নাইলে যে ময়ুরী তাকে পছন্দ করবে না। অনেকে একে ময়ুরীর ‘লেজ লিপ্সা’ বলে অভিহিত করতে পারেন, কিন্তু সেটাতে বাস্তবতা পাল্টাবে না। এই ব্যাপারগুলো মানব সমাজেও একটু খোঁজ করলে পাওয়া যাবে।
এখন এই সেক্সুয়াল সিলেকশনের কারণেই, ছেলে মেয়েদের পারস্পরিক চাহিদা পছন্দ, অপছন্দে যেমন মিল আছে, তেমনি আবার কিছু ক্ষেত্রে আছে চোখে পড়ার মতই পার্থক্য। এটা হবার কথাই। যৌনতার নির্বাচন শুধু মানব প্রকৃতি গঠনেই সাহায্য করেনি, করেছে নারী-পুরুষের মানস জগৎ তৈরিতে – পলে পলে একটু একটু করে। আসলে সত্যি বলতে কি যৌনতার নির্বাচনকে পুঁজি করে পুরুষ যেমন গড়েছে নারীকে, তামনি নারীও গড়েছে পুরুষের মানসপটকে। এক লৈঙ্গিক বৈশিষ্টগুলোর আবেদন তৈরি করেছে আরেক লিঙ্গের চাহিদা।
অভিভাবকেরা সবাই লক্ষ্য করেছেন, মেয়ে শিশুরা ছেলে শিশুদের চেয়ে অনেক আগে কথা বলা শিখে যায় – একই রকম পরিবেশ দেয়া সত্ত্বেও। ছেলেদের বাচনিক যোগাযোগের ক্ষেত্রগুলো গড়পড়তা মেয়েদের মত উন্নত না হওয়ায় ডাক্তাররা লক্ষ্য করেন পরিণত বয়সে ছেলেরা সেরিব্রাল পালসি, ডাইলেক্সিয়া, অটিজম এবং মনোযোগ-স্বল্পতা সহ বিভিন্ন মানসিক রোগে বেশি আক্রান্ত হয়। এ ধরনের আরো পার্থক্য আছে। ব্যবহারিক জীবনে দেখা যায় ছেলেরা যখন কাজ করে অধিকাংশ সময়ে শুধু একটি কাজে নিবদ্ধ থাকতে চেষ্টা করে, এক সাথে চার পাঁচটা কাজ করতে পারে না, প্রায়শই গুবলেট করে ফেলে। আর অন্যদিকে মেয়েরা অত্যন্ত সুনিপুন ভাবে ছয় সাতটা কাজ একই সাথে করে ফেলে। এটাও হয়েছে সেই হান্টার –গ্যাদারার পরিস্থিতি দীর্ঘদিন মানসপটে রাজত্ব করার কারণেই। শিকারী হবার ফলে পুরুষদের স্বভাবতই শিকারের প্রতি দৃষ্টি নিবদ্ধ রাখতে হত, ফলে তাদের মানসজগত একটিমাত্র বিষয়ে ‘ফোকাসড্’ হয়ে গড়ে উঠেছিল, আর মেয়েদের যেহেতু ঘরদোর সামলাতে গিয়ে বাচ্চা কোলে নিয়ে হাজারটা কাজ করে ফেলতে হত, তারা দক্ষ হয়ে উঠেছিল একাধিক কাজ একসাথে করাতে। সেজন্যই এখনো এডমিনিস্ট্রেটিভ কাজ গুলোতে যেখানে বাচনিক যোগাযোগ গুরুত্বপূর্ণ একটা ফ্যাকটর – সেখানে নারীদেরই প্রাধান্য বেশি, কারণ তারাই বেশি দক্ষ।
দেখুন, কেন সংস্কৃতি-নির্বিশেষে ছেলেরা সম্পর্কের মধ্যে থাকা অবস্থায় তার সঙ্গীর সাথে বেশি প্রতারণা করে কিংবা কেন পর্ণগ্রাফির বেশি ভক্ত – এগুলো কেবল ‘নারীদের যুগ যুগ ধরে সম্পত্তি বানিয়ে রাখা হয়েছে’ কিংবা ‘তারা শোষিত’ এগুলো দিয়ে ব্যাখ্যা করা যায় না। এর মূল কারণ হচ্ছে যৌনতার পার্থক্যসূচক অভিব্যক্তিগুলোর প্রকাশ।
আরো কিছু ডেটা দেই। ছেলেদের মস্তিস্কের প্যারিয়েটাল কর্টেক্সের আকার মেয়েদের মস্তিস্কের চেয়ে অনেক বড় হয়। বড় হয় অ্যামাগদালা নামের বাদাম আকৃতির প্রত্যঙ্গের আকারও । এর ফলে দেখা গেছে ছেলেরা জ্যামিতিক আকার নিয়ে নিজেদের মনে নাড়াচাড়ায় মেয়েদের চেয়ে অনেক দক্ষ হয়। তারা একটি ত্রিমাত্রিক বস্তুকে সামনে থেকে দেখেই নিজেদের মনের আয়নায় নড়িয়ে চড়িয়ে ঘুরিয়ে ঘারিয়ে বুঝে নিতে পারে বস্তুটি, পেছন থেকে, নীচ থেকে বা উপর থেকে কিরকম দেখাতে পারে। জরিপ থেকে দেখা গেছে, ছেলেরা গড়পরতা বিমূর্ত এবং ‘স্পেশাল’ কাজের ব্যাপারে বেশী সাবলীল, আর মেয়েরা অনেক বেশী বাচনিক এবং সামাজিক কাজের ব্যাপারে। হয়ত এজন্যই ছেলেরা অধিক হারে স্থাপত্যবিদ্যা কিংবা প্রকৌশলবিদ্যা পড়তে উৎসুক হয়, আর মেয়েরা যায় শিক্ষকতা, নার্সিং, কিংবা সমাজবিদ্যায়। এই ঝোঁক সংস্কৃতি এবং সমাজ নির্বিশেষে একই রকম দেখা গেছে। এই রকম সুযোগ দেয়ার পরও বাংলাদেশের অধিকাংশ মেয়েরা বড় হয়ে বুয়েটের চেয়ে মেডিকেলে পড়তেই উদ্গ্রীব থাকে। কোন সংস্কৃতিতেই ছেলেরা খুব একটা যেতে চায় না নার্সিং-এ, মেয়েরা যেমনিভাবে একটা ‘গ্যারেজ মেকানিক’ হতে চায় না অধিকাংশ ক্ষেত্রেই । এটা কি কেবলই মেয়েরা শোষিত কিংবা পিছিয়ে পড়া বলে, নাকি বিবর্তনীয় ‘সিলেকশন প্রেশার’ তাদের মধ্যে অজান্তেই কাজ করে বলে? এই প্রশ্নের উত্তর খুঁলেই আপনি বুঝতে পারবেন কেন হার্ডকোর বিজ্ঞানে মেয়েদের পদচারণা কম। তবে সাহিত্য কিংবা সঙ্গীতের ক্ষেত্রে ব্যাপারটা খাটে না। সেখানে আমার জানা মতে মেয়েদের প্রতিভা মোটেই কম নয়। যদি কোন রক্ষণশীল দেশে মেয়েরা পিছিয়ে থাকে, সেজন্য রক্ষণশীল রীতি নীতি এবং পুরুষতান্ত্রিক পরিবেশ যে অনেকাংশে দায়ী – সেটা মোটেই অস্বীকার করা যায় না।
@অভিজিৎ,
আমি কিন্তু আপনি বানিয়েছেন বলিনি। বলেছি পুরুষ মন্তব্যকারীদের —
একমত , আপনি তা করেননি। আমি গ্রাফে উল্লেখিত নারীর অবস্থান নিয়ে আলোচনা প্রত্যাশা করছি। পরবর্তীতে আশা করি তা পূরণ করুবেন।
যাহোক, আপনার মন্তব্যের পরের ব্যাখ্যাগুলো বরাবরের মতই চমৎকার।
ধন্যবাদ ।
@গীতাদি, ধন্যবাদ আপনি আলোচনায় অংশ নিলেন বলে। লীনা ছাড়া আর কাউকে খুঁজেনা পেয়ে একটু অবাকই হচ্ছিলাম। কালকে এ নিয়ে কন্সট্রাক্টিভ সমালোচনা করতে এসে দজ্জাল বউ, রাগী, মুক্তমনা ব্যান করে দেওয়া থেকে শুরু করে অনেক কিছুই শুনতে হয়েছে, যদিও আমি আসলেই কিন্তু রাগ করিনি, এনাদেরকে বহুদিন ধরে চেনার কারনেই ধরে নিয়েছিলাম ওনারা ব্লগীয় মেজাজে ফাজলামোই করছেন এবং আমি সেই স্পিরিটেই নেওয়ার চেষ্টা করেছি। কিন্তু ওনারা ওনাদের প্রতিভাধর মাথায় তা ঠিক বুঝেছিলেন কিনা তা সম্পর্কে আমি ঠিক নিষচিত নই :-Y । প্রতিভার বানে ভেসে যাওয়া পুরুষ না হলেও মস্তিষ্কের একই কোষগুলো ( যেগুলো থেকে ছেলেদের প্রতিভা বের হয় 🙂 ) ব্যবহার করে ছেলে ডমিনেটেড ফিল্ডে কাজ করে খেতে হয় বলে কালকে ফাইনাল রিভিউটা দিতে সময় পাইনি, যদিও বেস কয়েকটা মন্তব্যেই খন্ডিতভাবে হলেও আমার বক্তব্য বলার চেষ্টা করেছিলাম। আজকেও খুব ব্যস্ত, তাই সংক্ষেপেই সারতে হবে। সময়ের অভাবে আপনার সবগুলো কথা ঠিক মত পড়ে উঠতে পারিনি, একই কথার পুনারাবৃত্তি হলে ক্ষমাসুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন আশা করি। অভির আরেকটা মন্তব্যের উত্তরে আমার মন্তব্যটা দিয়ে দিচ্ছি।
@অভিজিৎ,
একমত না। মেয়েরা বিজ্ঞান এবং প্রযুক্তিবিদ্যাতে পুরুষদের সমান সাফল্য পেতে পারে-এবং সমান দক্ষতায়। অনেক উদাহরন দিতে পারি। নিজের অভিজ্ঞতাও তাই বলে।
এই পার্থক্যটা সামাজিক পার্থক্য-সমাজ একটি কন্যা সন্তানকে বলে দেয় তুমি নারী হও। ( অবশ্য প্রকৃতিগত এবং মনের দিক থেকে অনেক পার্থক্য আছে মেনে নিয়েও বলছি ছেলেদের থেকে মেয়েরা অঙ্ক বিজ্ঞানে পিছিয়ে এটির পেছনে কোন পরীক্ষা লদ্ধ ফল দেখানো অসম্ভব-এটা সামাজিক কারন।)
আমার ছেলে জুনিয়ার স্ট্রাইকার প্রোগ্রামে সকার কোচিং এ যায়। একদিন ছেলে মেয়েদের একসাথে কোচিং ছিল। সব মেয়েরা পিঙ্ক ফুটবল নিয়ে চলে এসেছে। এদিকে মাঠের কোন (প্লাস্টিকে খুঁটি) ছিল অন্য রঙের। কোচ একটা মেয়েকে ড্রিবল করতে বলেছে কোন গুলোর মধ্যে দিয়ে-মেয়েটা চারিদিকে কি যেন দেখল। তারপরে কোচ কে বললো এটাত ছেলেদের জন্যে কারন কোন গুলোর মধ্যে কোন পিঙ্ক কোন সে দেখতে পাচ্ছে না :rotfl:
অভিজিতের ব্যাখ্যা শুনে আমার এই দৃশ্যটাই মনে এল। :-/
@বিপ্লব পাল,
শুনেছি ছেলে আর মেয়েতে ব্রেইনের গঠনে সামান্য হলেও কিছু পার্থক্য আছে। বিষয়টি কি সত্যি ?
@ভবঘুরে,
আরে বিপ্লব নিজেই নারীবাদিদের প্যারোডি করে ভিডিও করেছে – ভার্ভেট মাঙ্কির টয়ের প্রেফারেন্স হাজির করে। এখন আবার উলটো স্রোতে দাঁড় বাইছে। বিপ্লব যে কখন কি বলে তার ঠিক নাই।
আর, ‘মেয়েরা বিজ্ঞান এবং প্রযুক্তিবিদ্যাতে পুরুষদের সমান সাফল্য পেতে পারে-এবং সমান দক্ষতায়।’ সমান দক্ষতায় কিনা কিনা সে নিয়ে বিতর্ক করতে যাচ্ছি না, কিন্তু হার্ডকোর বিজ্ঞানে এবং গণিতে মেয়েদের পদচারণা পুরুষদের তুলনায় অনেক কম। এটা ফ্যাক্ট। এর পেছনে সামাজিক কারণ আছেই, কিন্তু জৈবিক কারণগুলোও গৌন নয়।
@অভিজিৎ,
হা হা হা দারুন বলেছেন! বাস্তবেও তো তাই দেখি- দুনিয়াতে নারী গনিতবিদ খুজতে আয়না নইলে বাটি চালান দিতে হবে। এমনকি নারী প্রকৌশলীদের সংখ্যাও হাতে গোনা। বিষয়টির নিশ্চয়ই কোন জীবতাত্ত্বিক কারন বিদ্যমান। এটা শুধুমাত্র সামাজিক বৈষম্যের কারনে ঘটতে পারে না কারন পাশ্চাত্য সমাজে আর যাই হোক পড়াশুনা নিয়ে নারী পুরুষে কোন বৈষম্য আছে বলে দৃশ্যমান নয়।
@ভবঘুরে,
তাই কি? এখানে প্রেফারেন্সের ব্যাপারটার কিছু গুরুত্ব থাকতেই পারে জৈবিকভাবে। কিন্তু পাশ্চাত্যে এটা বদলাতে শুরু করেছে মাত্র কয়েক দশক আগে (যদিও এখনো বৈষম্য দেখা যায় অনেক ক্ষেত্রেই) , ঐতিহাসিকভাবে এর একটা প্রভাব তো থাকবেই। তারপরো তর্কের খাতিরেই না হয় ধরে নিলাম মেয়েরা হার্ডকোর গণিতবিদ বা কম্পিউটার এ মুখ গুজে পড়ে থাকা প্রোগ্রামার হতে চায় না তারা ম্যনাজেরিয়াল বা কমিউনিকেশন জাতীয় কাজ বেশী পছন্দ করে। মেয়েরা যেহেতু ম্যানেজমেন্ট পজিশান বা এ ধরণের অন্যান্য পেশায় অনেক ভালো করে সেক্ষেত্রে শ’খানেক প্রোগ্রামার বা গণিতবিদ তো তাদের কর্মচারীই থাকতে পারে। (কেউ যদি এই তথ্যটাকে চ্যালেঞ্জ করতে চান তাহলে খুব ব্যাক্তিগত ডাটা থেকেই ডজনখানেক এমন ম্যানেজারের নাম পাঠাতে পারি :-Y । )। (ফাজলামো ইয়ার্কি থেকে এই বিতর্কটা মনে হয় এখন সেক্সিস্ট দিকে চলে যেতে চাচ্ছে, সবাইকে একটু খেয়াল করতে অনুরোধ করছি)
@বন্যা আহমেদ,
শ খানেক বা হাজার খানেক কর্মচারী নারীর অধীনে থাকাটা মনে হয় আসল বিষয় নয়, বিষয় হলো নারী পুরুষের মধ্যে জৈবনিক পার্থক্য বিদ্যমান কি না সেটা। অনেক দেশের প্রধানমন্ত্রী বা রাষ্ট্র প্রধানই তো এখন নারী, তাই না ? আর তখন তো গোটা দেশবাসীই তার অধীনে থাকে।
বিষয়টা ঠিক বোধগম্য হলো না, যদি দয়া করে একটু দৃষ্টান্ত দিয়ে বুঝিয়ে দিতেন ভাল হতো।
পরিশেষে, প্রত্যেকের লেখার মান দেখে আমার মনে হয় অধিকাংশই বেশ উচু দরের শিক্ষিত ও যার যার কর্মক্ষেত্রে শুধু প্রতিষ্ঠিতই নয় খুব ভালভাবে প্রতিষ্ঠিত। তাই আমার ধারনা, আলোচনায় ইয়ার্কি ফাজলামী হালকা থাকলেও কোথায় গিয়ে থামতে হবে সে মাত্রাজ্ঞান প্রত্যেকের খুব ভালই আছে।
@ভবঘুরে,
একমত এবং ধন্যবাদ । এর সাথে আরও কিছু ব্যপার যোগ করা দরকার। কর্পোরেট কালচারে মধ্যম ম্যানেজমেন্ট বা মিডল cadre থেকে পুরুষরা ৯০এর দশকে ধীরে ধীরে বিদায় নিতে শুরু করে। এতে দুটো জিনিষ লক্ষণীয় । অপারেশনস লেভেলে ম্যানেজার পদ কমিয়ে টিম লীডার নামে অনেক গুলো পদ সৃষ্টি করা হয় যারা ম্যানেজারের চেয়ে অনেক কম বেতনে ম্যানেজারের দায়িত্ব পালন করেন । বিপুল সংখ্যক নারীরা এই পদগুলিতে নিয়োগ পান । অন্যদিকে , স্ট্রাটেজিক সহ সব লেভেলে সিনিয়র এক্সিকিউটিভদের সংখ্যা বাড়ানো হয় যাতে পুরুষদের সংখ্যা অনেক গুনে বেশী । সব সিনিয়র ম্যানেজারদের এই সিনিয়র এক্সিকিউটিভদের সাবোর্ডিনেশনে কাজ করতে হয়। আপনি যে কোন দেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংকের বোর্ডরুম গুলোতেও একই অবস্থা দেখতে পাবেন।
@সংশপ্তক, যতই এই পোষ্টটা থেকে বের হোয়ার চেষ্টা করছি ততই যেন আটকে যাচ্ছি। এখানে দুটো কথা বলতে বাধ্য হচ্ছি, আমি এখানে কেন ম্যানেজমেন্টের কথা বলেছি তা আগেই ভবঘুরেকে দেওয়া মন্তব্যে বলেছি। এখন আপনার কথা প্রসঙ্গে আসি,
কোন কোন পেশায় এটা সত্যি হলেও আইটি তে যে নয় তা ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা থেকেই বলছি। আর এই ব্যাঙ্কের মত জায়গাগুলোতে এমনিতেই প্রচুর মেয়ে কাজ করে, সেগুলো নিয়ে আমি কথা বলছিলাম না, আমার ধারণ ছিল আমরা হার্ডকোর বিজ্ঞান বা প্রযুক্তিতে মেয়েরা কেম যায় না তা নিয়ে বিতর্ক করছিলাম, ব্যাঙ্ক বা সুপারস্টোরের পেশা নিয়ে নয়। প্রথম কথা ম্যানেজমেন্ট বলতে আমি খুব লুজ সেন্সে জুনিয়ার সিনিয়র ম্যানেজমেন্ট এবং এক্সেকিটিভ সবার কথাই বলতে চেয়েছি। আইটিতে ( এবং আমার ধারণা প্রচুর ইঞ্জিনিয়ারিং কোম্পানীতেও) সাধারণত বাইরে থেকে এনে কম বেতনে আ্যডমিনিস্ট্রেটিভ ম্যানেজার বসানো হয় না, এখানে আইটির অভিজ্ঞতাওয়ালা ডাকসাইটে কর্মীদেরই ডিজাইন, টেস্টিং বা ডেভেলপমেন্ট এর ম্যানেজমেন্টে বসানো হয় কারণ এই কাজগুলো করতে এই লাইনের ভালো অভিজ্ঞতার প্রয়োজন হয়। এবং এরা যেহেতু কোম্পানীর ডিরেকশান এবং ভবিষ্যতের প্রোডাক্ট ডিজাইনের সাথে যুক্ত থাকে এদের বেতনও অন্যান্য কর্মীদের থেকে অনেক বেশী হয়। আইটিতে ম্যানেজমেন্টকে সাধারণত ( এইচ আর বা এডমিনদের কথা বলছি না এখানে) প্রমোশন হিসেবেই ধরা হয়। আর সাধারণত এদের থেকেই এক্সিকিটিভ পজিশনগুলো ফিল করা হয়। এখনো উঁচু লেভেলের এক্সিকিটিভ পজিশনগুলোতে মেয়েদের সংখ্যা অনেক কম কিন্তু তার কারণ যতটা না মেয়েদের প্রতিভা বা ক্ষমতার অভাব তার চেয়ে অনেক বেশী হচ্ছে মেয়েরা এইসব পেশায় খুব সম্প্রতি ঢুকতে শুরু করেছে এবং সামাজিক কিছু ট্যাবু তো আছেই।
@বন্যা আহমেদ,
অভিজিৎ রায়ের একটা অত্যন্ত চমৎকার ও ভাবনা উদ্রেককারী প্রবন্ধটা আলোচনায় গিয়ে চোখের সামনে অফ-টপিক মন্তব্যের ঝড়ে মুল প্রসঙ্গ হতে সম্পূর্ন লাইনচ্যুত হতে দেখলাম। লাইনচ্যুত পোস্ট সালভেজ করা না বা করাটা মডারেটরদের বিষয়। তাই আপনার পোষ্টটাতে আটকে যাওয়াটা কাকতালীয় ব্যপার হতে পারে। আমার এই উত্তরটা FYI হিসেবে নিলে বাধিত হবো।
আমি যেহেতু ছদ্মনামেই থাকতে আগ্রহী , বাকী অংশের উত্তর দিতে পারছিনা যেহেতু আপনার মত আমাকেও হয়তো আরও ব্যপক আকারে আর্গুমেন্ট অব অথরিটি নিয়ে বলতে হতে পারে যে,
@ভবঘুরে,
তাহলে তো আর চিন্তাই নেই। মডারেটরদের কাজ কমে গেল।
খুব সংক্ষিপ্তভাবে মন্তব্য করার কারণে হয়তো ঠিক মত বোঝাতে পারিনি। তবে আগেও যেমন বলেছিলাম এখানেও বলছি প্রেফারেন্সে ব্যাপারে কোন ছোটখাট জৈবিক ফ্যাক্টর আছে কিনা এখনো জানি না, থাকেতেই পারে। তবে আমাদের সামেন যে ডাটা আছে তা থেকে জৈবিক পার্থক্যই যে এর একমাত্র কারণ তা বলা যাচ্ছে না। আর প্রতিভার অভাবের কারণে এমনটা ঘটছে তা তো বলার কোন প্রশ্নই উঠে না ( আপনি বলেছেন বলছি না)। এখানে ঐতিহাসিক কারণে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ যে সব সামাজিক প্রেক্ষাপট বা সীমাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে সেগুলোকে গোনায় না ধরলে বিশ্লেষণটা সঠিক হয় না। বিপ্লবের উত্তরটা দেখুন, তাহলেই বুঝবেন কত সুক্ষ্মভাবে আমেরিকায় বৈষম্যগুলো তৈরি করা হয়েছে। বিপ্লবের কারণগুলোর সাথে আরও দুই একটা ব্যাপার যোগ করি। ঐতিহাসিকভাবে মেয়েদেরকে শিক্ষকতা, নার্সিং জাতীয় কয়েকটা পেশায় ঢুকতে দেওয়া হত, তার ফলে কয়েকটা ব্যাপার ঘটেছে, একদিকে মেয়েদের সামনে রোল মডেল নেই, তার নতুন ফিল্ডে ঢুকতে ভয় পায়, অন্যদিকে পেশাগতভাবে এর অনেকগুলোতে ( সিভিল, বা মেকানিকাল ইঞ্জিনিরারিং এর মত কাজগুলো) মেয়েরা স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করেনা। োদিকে আবার ইন্ডিয়া বা বাংলাদেশের মত দেশগুলোতে ডাক্তারি বা ইঞ্জিনিয়ারিং এর মত পেশায় না ঢুকলে সহজে চাকরি পাওয়া যায় না তাই বাবা মারাই এখন নতুন করে হলেও মেধাবী মেয়েদের এগুলোতে ঢুকতে উৎসাহ দিচ্ছেন। কিন্তু আমেরিকায় যেহেতু আরও অনেক ফিল্ডেই চাকরি পাওয়া সম্ভব তাই এই তাগাদাটাও তারা ফিল করে না।
আর ম্যানেজমেন্টের কথাটা বলেছিলাম একটু অন্য প্রসঙ্গে। আমার কম্পিউটার সাইন্স ফিল্ডে বেশ কিছু মেয়ে থাকলেও বেশীরভাগই একটু প্রতিষ্ঠিত হয়েই প্রোগ্রামিং ছেড়ে বিজনেস আ্যনালিসিস বা ম্যানেজমেন্ট সাইডে ঢুকে পড়ে, এর কারণে হিসেবেই বলতে চেয়েছিলাম যে এখানে প্রতিভার চেয়ে প্রেফারেন্স কাজ করতে পারে, সেটাকে প্রতিভার অভাব ( আবারো আপনি বলেছেন বলছি না) না বলে প্রেফারেন্স বলতে পারেন যেটার পিছনে আংশিকভাবে জৈবিক কারণ থাকেলও থাকতে পারে।
আরেকটা কারন বলি, এখন অনেক ক্ষেত্রে বদলাতে শুরু করলেও সামাজিকভাবে মেয়েদেরকেই সংসারের বেশীরভাগ কাজ সামলাতে হয় (আমার মা প্রায়ই বলতেন পেশাজীবি মহিলাদের ছেলেদের চেয়ে ২গুণ কাজ করতে হয়, বাইরেরটাও করে, ঘরেরটাও করে, কোনটা থেকেই মাফ নেই), তার ফলে তারা আগে থেকেই খুব ডিমান্ডিং ফিল্ডে যেতে ভয় পায়। আর তারপর বাচ্চার জন্ম এবং লালন পালনেও মারাই ইনভল্ভড থাকে, সেকারনেও মেয়েরা অনেক সময়েই অনেক সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য হয় যেটা পুরুষদের না করলেও চলে। এর মধ্যে কতখানি জৈবিক এবং কতখানি সামাজিক তা বিবেচনার দাবী রাখে।
যাক এ নিয়ে আর বিতর্কে জড়াতে চাই না, আমি যেটা পরিষ্কারভাবে বলতে চাচ্ছি তা হল, এ ধরণের ক্ষেত্রগুলোতে সব কিছুই সামাজিক কারণে ঘটে বলাটা যতটুকু ভুল ঠিক তেমনি সবকিছুই জেনেটিক বা জৈবিক বলাটাও ভুল। এ ব্যাপারে সমাজতত্ত্ববিদেরা যেমন অনেক সময় এক্স্ট্রিমে চলে যান ঠিক তেমনি বিজ্ঞানীরাও এর উলটো ভুলটা করে থাকেন। বিভিন্ন কারনেই মানব বিবর্তন এবং সাইকোলজি বেশ ইউনিক, অনেক ক্ষেত্রেই তা শুধুমাত্র জৈবিক কারন দিয়ে ব্যাখা নাও করা যেতে পারে।
@বন্যা আহমেদ,
এই আর্টিকেলটাতে বন্যা আর তাঁর মায়ের কথার সমর্থন পাওয়া যাচ্ছে।
বন্যা, আমি ‘মৃত’ হ’লেও অভিজিৎ বা ফরিদের মতো পুরুষবাদীতে পরিণত হই নি। 😀
@বন্যা আহমেদ,
এটা আমেরিকার জন্যে ঠিক। ভারতের জন্যে না।
আমার ওয়াইফ ছেলের জন্মের পর থেকে পার্ট টাইম জব করে। কারন ফুল টাইম হলে অনেক স্ট্রেস হয়ে যায়-যেটা ও একবার ফুল টাইম জবে ঢুকে বুঝেছিল।
তবে আমার বিজ্ঞানী বান্ধবীদের সবাই সন্তানের জননী-এবং আমি মনে করি তাদের ও বেশ কঠিন সময় গেছে। তবে তারাও বুদ্ধিমতি-সবাই আমেরিকান বিয়ে করেছে। আমাদের মতন ভারতীয় বিয়ে করলে অনেক খাটতে হত। কারন ছোট বেলা থেকে আমার বাবা মায়েরা আমাদের, ছেলেদের গৃহস্থলীর কাজ শেখায় না-
ফলে আমি কিচেনের কাজে আমি অলস। যদিও পরিস্কার করার
কাজে, মেথরের কাজে আমি এক্সপার্ট!
আবার ভারতে আমাদের দিল্লী অফিসেই দেখেছি সন্তানের মায়েরা
রাত ১২ টা পর্যন্ত কাজ করছে। একজনকে জিজ্ঞেস করলাম সামলাচ্ছ কি করে? বললো মা দেখছে।
@বিপ্লব পাল, এক্ষেত্রেতো দেখি আবার আমার ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতার কথাই টেনে নিয়ে আসতে হবে, কি মুশকিলে পড়লাম রে বাপ, এই পোষ্টটাতে তো মনে হচ্ছে আমার নিজের জীবনের সব কথাই বলে ফেলতে হবে!!!
তাহলে তো আমার কথা ঠিক আছে আমেরিকায় ভারতবাসীদের জন্য। যদিও এক্ষেত্রেও আমার অভিজ্ঞতা অন্যরকম, আমার বাসায় কিন্তু আমার বেশী কাজ করতে হয়না ( হয়তো আমি ভারতীয় না বলে, বাংলাদেশী ছেলেরা হয়তো তোমাদের চেয়ে কম মেল শভেনেস্টিক :lotpot: , আমাকে আমার এক ভারতীয় ডেভ ম্যানেজার বলেছিল যে সে তার বাসায় ডিসওয়াসারটা ঠিক কোথায় তাও জানে না!!! তাকে অনুরোধ করেছিলাম এসব বলে আমার রক্তচাপ বাড়িয়ে না দিতে!!!) । বাংলাদেশী পুরুষবাদী এই লোকগুলোও দেখি বাসার কাজও করে!!!
এখন আসি বাংলাদেশে মেয়েদের প্রসঙ্গে। আমার মা এবং ২ খালাই অত্যন্ত সফল পেশাজীবি মহিলা ছিলেন, একজন ডাক্তার ( ইনি বামপন্থী পলিটিক্সের সাথে এবং ভাষা আন্দোলনেও যুক্ত ছিলেন, জেলও খেটেছেন), একজন ইউনিভার্সিটি প্রফেসর এবং আরেকজন ল-ইয়ার। এবং এদেরকে দেখেছি যতই সাহায্য থাকুক, যতই স্বামীরা হেল্প করুক তারপরও তাদের আমার বাবা বা খালুদের থেকে অনেক বেশী কাজ করতে হয়েছে। আমার মায়ের কথাগুলো তার বাস্তব অভিজ্ঞতা থেকেই বলা। আর একটা জিনিস ভেবে দেখো আমাদের জেনারেশনের যাদের মারা পেশাজীবি মহিলা তারা ইচ্ছা করলেই নাতিনাতনি দেখার কাজে ফুলটাইম সময় দিতে পারবে না। আর আমার হাই-স্কুলের ৮০% মেয়ে বন্ধুই এখন পেশাজীবি তাদেরকে জিজ্ঞেস করলেও একই কথা পাবে। এবার আসি আমেরিকানদের প্রসঙ্গে, আমি আইটিতে এ দেশের বহু ছেলে এবং মেয়ের সাথে কথা বলেছি, এদের ক্ষেত্রে সমস্যা তুলনামূলকভাবে কম হলেও এদের ছেলেরাও পারলে বাসার কাজ বা ছেলে মেয়েদের দায়িত্ব এড়িয়ে চলতে চায়। আমার প্রচুর মেয়ে কলিগকে এ নিয়ে দুঃখ করতে শুনেছি।
এবার আসি রোল মডেল প্রসঙ্গে, হ্যা এটা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, আর এ কারণেই আগের এক উত্তরে এই রোল মডেলের প্রসংগটা এনেছিলাম। একে তো সামনে কোন বড় বড় মেয়ে বিজ্ঞানীর উদাহরণ নেই আর অন্যদিকে ঘরে মাদেরও দেখে শুধু সংসার করতে। তাই আমার প্রায়ই মনে হয়, যে সব বাসায় মারা প্রতিষ্ঠিত পেশাজীবি থাকে সেসব বাসার মেয়েরাও বিয়ে করে শুধু সংসার করার চেয়ে তার সাথে সাথে ভালো কোন পেশায় জড়িত হওয়ার কথা চিন্তা করে।
@বন্যা আহমেদ, আপনি যেভাবে সুন্দর করে বিষয়টা তুলে ধরলেন তার জন্য সাধুবাদ জানাচ্ছি। চমৎকার অবজার্ভেশন। একমত। :yes:
@ভবঘুরে,
তুমি থাক কোথায় ভাই? চাঁদে না পাতালে?
দুজন আন্তর্জাতিক খাতি সম্পন্ন গনিতজ্ঞা আমার ভাল বন্ধু-এক সাথেই পড়াশোনা করেছি বলে ওদের গনিতে অসামান্য দক্ষতা নিয়েও জানি। কলেজে আমার থেকেও গণিতে ওরা অনেক বেশী পারদর্শী ছিল। তাই মেয়েদের বিজ্ঞান হবে না এই সব ঢপে বিশ্বাস করি না। এসব প্রলাপকথন।
এবার আরেকটা ইন্টারেস্টিং তথ্য দিই-আমেরিকাতে ইঞ্জিনিয়ারিং এ মেয়েদের সংখ্যা ১৪%-ভারতে ২৫% এবং বারছে। ভারতে মেয়েদের স্বাধীনতা কম, ডিসক্রিমিনেশন বেশী। তাহলে কেন বারছে? আমেরিকাতে মেয়েদের অবস্থা আসলে কিন্ত ভারতের থেকে খারাপ।
কেন?
শুনলে অবাক হবে গত দুই দশকে ভারতীয় বাবা মায়েরাই চাইছে
মেয়েরা ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজে যাক-তাহলে ভাল বর জুটবে। কারন সেক্ষেত্রে পনে টাকা দিতে হবে না। এই নিয়ে সামাজিক গবেষনাও হয়েছে। অর্থাৎ বাবা মায়েরা উৎসাহী হলেই দেখা যাচ্ছে মেয়েরা ছেলেদের সমান ইঞ্জিনিয়ারিং এ যাচ্ছে-ভারতে কিন্ত মেরিট লিস্ট দিয়েই ঢুকতে হয় [প্রাইভেট কলেজেও]-আমেরিকার মতন সিস্টেম না।
আসলে আগে কি হত। ছেলেরা পড়াশোনা না করলে বাবা মায়ের ঘুম ছুটত-আর মেয়েদের মোটা মুটি পড়িয়ে বিয়ে দিলেই হবে-এই ছিল সামাজিক রীতি। পনবলির শিকার হওয়ার পরে-মেয়ের সিকিউরিটির জন্যে আধুনিক বাবামায়েরা ছাইছে মেয়ে ইঞ্জিনিয়ারিং পড়ুক।
তাহলে আমেরিকাতে মেয়েদের এই হাল কেন? এর পেছনে আছে আনচেকড ধনতন্ত্র এবং বাজার। বাজার মেয়েদের এখানে সেক্স অবজেক্ট হিসাবে প্রজেক্ট করে-তাতে আমার আপত্তি নেই কিন্ত অধিকাংশ মেয়েই ১৮ বছর পেড়োনোর পরে পড়াশোনার চেয়ে দু পয়সা ইনকাম করে ছেলে চড়াতে বেড়িয়ে পরে। ফলে গোল্লায় যায়। এর পেছনে বাজারের ভূমিকা সাংঘাতিক। আমেরিকান মিডিয়া মেয়েদের ব্রিটনিকে আইডল বানায়। ভারতে রক্ষনশীল পরিবেশের জন্যে মেয়েরা এটা পারে না।
অর্থাৎ দেখা যাচ্ছে মেয়েদের পড়াশোনার বা প্রতিভার পেছনে সামাজিক অবস্থানটাই মুখ্য।
@বিপ্লব পাল,
মানতে পারলাম না। আপনি যদিও অনেক যুক্তি দিয়ে আমার না মানাকে পরাজিত করবেন। আমেরিকার সব কিছুই খারাপ এশিয়ানদের অনেকেরই এরকম একটা obsession আছে। গতবার শিলিগুড়িতে আমি আমেরিক্যান শুনেই এক লোক এগিয়ে এসে বলে গেলেন – আমেরিকার অবস্থা ভারতের চেয়েও খারাপ।
মেয়েরাও যে গনিতে ভাল হতে পারে তা আমি স্বীকার করি। আমি বরাবরই লক্ষ্য করছি আমার ক্লাশে মেয়েরা ভাল করছে। এর কারণ হতে পারে মেয়েরা ছেলেদের চেয়ে বেশী serious ক্যারিয়ার নিয়ে।
@ভবঘুরে,
এটা খুব জেনেরালাইজড স্টেটমেন্ট হয়ে গেছে, যে জন্য উপরের বিতর্কগুলোর জন্ম হয়েছে। একটি কথা আমাদের মনে রাখতে হবে যে, বহু বছর ধরে মেয়েদের দমন করে রাখা হয়েছে সামাজিক ভাবেই। তারা ছেলেদের সাথে একসাথে পড়তে শুরু করেছেই তো ক’দিন মাত্র হল। মেয়েদেরকে পর্যাপ্ত সময়ও কিন্তু দিতে হবে উঠে আসতে হলে। আমেরিকায় কালোদের কথা ধরুন। কালোদের খুব কমই শিক্ষায়তনে যায়, বা গেলেও বড় একটা অংশ ঝরে পড়ে। চাকরী ক্ষেত্রেও যে খুব উঁচু পজিশন গুলোতে খুব বেশী কালো চোখে পড়ে তা নয়। এখন যে কেউ উপসংহারে পৌছিয়ে যেতে পারে – কালো গনিতবিদ/বিজ্ঞানী/প্রকৌশলী/সিইও এগুলো খুজতে আয়না নইলে বাটি চালান দিতে হবে। সেটা কি ঠিক হবে? কেউ যদি বলেন, কালোদের বুদ্ধি সুদ্ধি কম – তাই বোধ হয় সাদাদের সাথে পেরে উঠে না। এই উপসংহারে পৌঁছোনো কিন্তু ঠিক হবে না। আসলে বহু বছর ধরে কালোরা আমেরিকায় নিগৃহীত, নিপীড়িত ছিলো। তাদের দাস বানিয়ে রাখা হয়েছিলো যুগের পর যুগ। এই ধারা থেকে বেরিয়ে এসে উঠে দাঁড়াতে হলে তাদের পর্যাপ্ত সময় দিতে হবে, তারপরে না তুলনার প্রশ্ন।
তবে যেটা আমরা বলতে পারি – নারী এবং পুরুষে জৈবিক কিছু পার্থক্য আছে। সায়েন্টিফিক আমেরিকানে His Brain, Her Brain নামের প্রবন্ধটিতে (পুরো লেখাটা পড়তে হলে আপনাকে সাবস্ক্রাইব করতে হবে) নারী পুরুষের মস্তিস্কের জৈবিক পার্থক্যগুলো খুব চমৎকার ভাবে তুলে ধরা হয়েছে। কিন্তু পার্থক্য থাকলেই নারীদের ব্রেন অনুন্নত – সেই উপসংহারে কিন্তু পৌছানো হয়নি। এখন, শধু বাংলাদেশ নয়, সারা পৃথিবী জুড়েই যে এই ‘টেকি’ বিষয়গুলোতে মেয়েদের পদচারণা কম, ছেলেদের তুলনায়। এটা কেন হয়েছে? ছেলে মেয়েদের মস্তিস্কের গঠন এবং প্রকৃতিগত পার্থক্যগুলো কি পেশাগত জীবনে কোন প্রভাব ফেলে? নাকি সামাজিক কারণে? এটা বলা মুশকিল। চার বছর আগে হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের তৎকালীন প্রেসিডেন্ট লরেন্স সামারস একটি কনফারেন্সে ‘ছেলে মেয়েদের মস্তিস্কের গঠনগত পার্থক্যের কারণে’ মেয়েরা কম সংখ্যায় বৈজ্ঞানিক গবেষণার পরিমণ্ডলে প্রবেশ করে – এই কথা বলে মহা বিপদে পড়ে গিয়েছিলেন। ন্যান্সি হপকিন্সের মত জীববিজ্ঞানী এই মন্তব্যের প্রতিবাদে সভাস্থল ত্যাগ করেছিলেন। পৃথিবীর ভাল ভাল গবেষণাগারগুলোর দিকে চোখ রাখলে দেখা যাবে, মেয়েরা ছেলেদের সাথে পাল্লা দিয়েই কাজ করে যাচ্ছে, গবেষণায় সাফল্য পাচ্ছেন। সেই প্রাচীণ কালের হাইপেশিয়া থেকে শুরু করে মাদাম কুরী, মাদাম কুরী, লরা বেসি, সোফিয়া কোভালেভস্কায়া, লিস মিন্টার, ক্যারলিন হারসেল, মেরী অ্যানী ল্যাভরশিয়ে রোজালিন ফ্র্যাঙ্কলিন প্রমুখ বিজ্ঞানীদের নাম আমরা সবাই জানি। কিন্তু তারপরেও সাড়া পৃথিবী জুড়েই ট্রেন্ড দেখলে দেখা যায় – মেয়েরা সে সমস্ত বিষয় পড়তেই আগ্রহী হয় বেশী যেখানে গাণিতিক বিষয়-আশয়ের চেয়ে বাচনিক যোগাযোগের ভাল স্কোপ আছে। ব্যাপারটা কি কেবল সাংস্কৃতিক? আমার তাতেও সন্দেহ আছে। আসলে আমাদের জৈবিক এবং সামাজিক দুটি বিষয়ই গোনায় ধরতে হবে।
@অভিজিৎ,
মুক্তমনার ল্যারি সামার্স হিসেবে আপনার আত্মপ্রকাশে আনন্দবোধ করছি :-D। ল্যারি সামার্সের মতই বিপদে পড়লে আরোই আনন্দবোধ করব।
যাহোক, আগুনে আরো কিছু ঘি ঢালি
httpv://www.youtube.com/watch?v=I7izJggqCoA
[ভিডিও এমবেড করে কিভাবে?]
@রৌরব,
হেঃ হেঃ, বিপদের আর বাকি আছে কি! লরেন্স সামার্সের মতোই অবস্থা মনে হয় হতে যাচ্ছে আমার।
আর বাই দ্য ওয়ে ভিডিও এম্বেডের জন্য http এর পরে একটা v যোগ করতে হবে।
দেখুন – মন্তব্য করার অপশনের নীচে বলা আছে –
ইউটিউব থেকে ভিডিও সংযোগের জন্য ভিডিওর URL কপি করুন এবং লিঙ্কটি পোস্ট করার সময় http:// র বদলে httpv:// লিখুন ( ‘v’ characterটি লক্ষ্য করুন।)
http এর পরে একটা v দিলেই এমবেড হবে। আপনার এই লিংককে এমবেড করে দেওয়া হলো।
@অভিজিৎ,
আমার কমেডির প্রথমেই বলাছিল মেয়েদের সমান প্রতিভা আমি স্বীকার করে নিচ্ছি-কিন্ত নারীবাদিদের বিরুদ্ধে এই জন্যেই যে নারীর গঠনে সমাজ এবং বিবর্তন দুটিই গুরুত্বপূর্ন। নারীবাদিরা আবার তোমার উলটো মুদ্রা-তারা সবটাই সমাজের ওপর চাপাতে চাই। বাস্তব মাঝামাঝি।
দারুণ লাগলো লেখা আর সবার মন্তব্য।
হয়তো প্রাসঙ্গীক হবে না তবু একটা ব্যাক্তিগত উপলব্ধির কথা বলতে ইচ্ছে করছে। নিজে বাবা হবার পর থেকে আমার মনে হয়, যারা এখনো বাবা বা মা হননি তাদেরকে অনেক বড় ক্ষমতা অর্পন করা সঠিক না। কারণ পথ শিশুদের জন্য আগের কষ্ট আর এখনকার কষ্টের মধ্যে বিশাল পার্থক্য অনুভব করি। আগে দুনিয়ার মঙ্গল চাইতাম নিজেকে হিরোর জায়গায় দেখার জন্য এখন সবার ভাল চাই নিজের সন্তানের জন্য একটা সুস্থ ও সুন্দর পৃ্থিবীর কামনায়।
এই যে বাবা হবার আগে ও পরের অনুভুতির পার্থক্য, বিবর্তন মনোবিজ্ঞানে এর কি ব্যাখ্যা আছে ?
@আতিক রাঢ়ী,
ব্যাখ্যা হয়তো অভিজিৎ’দা আরো ভাল দিতে পারবেন। আমি ক্ষুদ্র করে বলি। ব্যাখ্যা আপনার মন্তব্যেই আছে। জীবনের উদ্দেশ্য মূলত যেহেতু জিনের বংশবৃদ্ধি তাই যখন আপনি বাবা হননি তখন আপনি সহমর্মি ছিলেন পুরো জাতির প্রতি। এখনো সেই সহমর্মিতা রয়েছে, কিন্তু সন্তানের সাথে আপনার জিনের সম্পর্ক ০.৫, যেখানে পুরো জাতির সাথে হয়তো .০০০০০১ বা তারও কম। তাই স্বাভাবিক ভাবে এখন আপনার চিন্তা মূলত সন্তান অথবা আপনার নিজের জিন রক্ষা করা। তাই আগে উদ্দেশ্য ছিল জেনেরাল এখন আরো স্পেসিফিক। তাই এখন পৃথিবীকে রক্ষা করতে চান নিজের জিনের জন্য। আবার চিন্তা করে দেখুন এভাবে সবাই নিজের জিনের কথা চিন্তা করলে অটোমেটিক কিন্তু সবাই কিন্তু একটি ভাল পৃথিবীর কথাই চিন্তা করবে, যা মূলত জিনকেই টিকে থাকতে সাহায্য করবে।
@স্বাধীন,
এটা তথ্যগত ভুল। দুজন বাঙালীর মধ্যে জেনেটিক পার্থক্য
৭০-৯০ পিপিএম ( দশ লাখে ৭০/৯০), পিতার সাথে পুত্রের
পার্থক্য ১০/২০ পিপিএমে থাকে। সুতরাং একই জাতির অন্যান্য সন্তানের চেয়ে নিজের সন্তানের ঘনিষ্ঠতা খুব বেশী পার্থক্য কিছু না।
@বিপ্লব পাল,
আমার ইউনিটটা সেভাবে জেনেটিক পার্থক্যের না। এটাকে বলা হয় মনে হয় relationship, কার সাথে কার রিলেশান কত কাছাকাছি সেটার একটি পরিমাপ। যেমন সন্তান বাবা/মা হতে জিনের অর্ধেক করে পায় তাই তাঁদের ক্ষেত্রে r=0.5. সেভাবে দাদা-দাদীর ক্ষেত্রে নাতি-নাতনীর ০.২৫। কাজিনদের সাথে মনে হয় ০.১২৫। এভাবে একই গ্রামে যদি কয়েক জেনেরাশেন ধরে থাকে তবে সে ক্ষেত্রে হিসেবে করলে সেটা কমতে কমতে অনেক কমে যাবে। আর জাতিগত ভাবে সেটা আরো কম হবে। আমার ০.০০০০০১ জাস্ট একটা রাফ তুলনা করার জন্য দিয়েছিলাম। এই মুহুর্তে r এর ব্যাপারটার সঠিক রেফারেন্স নেই। তবে ডকিন্স এর সেলফিশ জিনে পড়েছিলাম বলে মনে হচ্ছে। তাছাড়া বিবর্তনীয় মনোবিজ্ঞানে গোষ্ঠীবদ্ধ মানুষের আচরণের ব্যাখ্যাতেও এটার ব্যবহার দেখেছিলাম। তবে আপনি যে রকম exact value দিলেন সেটা জানা ছিল না। এটার কোন লিঙ্ক থাকলে দিয়েন। পড়ে দেখবো।
@স্বাধীন,
তুমি যা দিলে তা করিলেশন ইউনিট-যার জন্মদাতা হ্যামিলটন। এটা একটা এম্পিরিকাল মডেল। আমি যেটা দিলাম সেটা ডি এন এ তে কটা বেস পেয়ার মিলে যায় তার হিসাব থেকে।
@বিপ্লব পাল,
এটার কয়েকটা লিঙ্ক দেন না, পড়ি।
@আতিক রাঢ়ী,
স্বধীন ইতোমধ্যেই খুব চমৎকারভাবে আপনার প্রশ্নের উত্তর দিয়েছেন। আমি আরেকটু যোগ করি। ‘প্যায়ার বন্ডিং’ এবং ‘প্যারেন্টাল কেয়ার’ দুটি আকর্ষনীয় বৈশিষ্ট্য – যা মানুষেরা বিবর্তনীয় যাত্রাপথে যোগ করে নিয়েছে, যা অন্য প্রাইমেটদের থেকে কিছুটা ভিন্ন। মানব দম্পতিরা দীর্ঘমেয়াদী একগামী সম্পর্ক গড়ে তুলে, এর একটা বড় কারণ , মানব শিশু অন্য প্রানীদের থেকে অনেক বড় মস্তিস্কের আকার নিয়ে জন্মায়। এবং জন্মের পরে তাদের বিশেষ পরিচর্যা লাগে। দীর্ঘ পরিচর্যা এই বিশেষ পরিচর্যা ছাড়া তারা টিকে থাকতে পারে না। এই ব্যাপারটির জন্যই অর্থাৎ ভবিষৎ জিনের টিকে থাকতে সহায়তা করার জন্যই মানুষ সম্ভবতঃ একগামী সম্পর্ক গড়ে তুলে। ব্যাপারটা এক দু দিনে হয়নি, ব্যাপারটা হয়েছে মিলিয়ন বছরের অভ্যাসে। সেটা মাথায় রাখতে হবে। একটি কথা এ প্রসঙ্গে বলা প্রয়োজন – একটি পুরুষ, তাত্ত্বিকভাবে হলেও যে কোন সময়ে এই পৃথিবীর বুকে অসংখ্য নারীর গর্ভে অসংখ্য সন্তানের জন্ম দিতে পারে । কিন্তু একটি মেয়ে একবছরে শুধু একটি পুরুষের শুক্রানু দিয়েই গর্ভ নিশ্চিত করতে পারে – এর বেশি নয়। পুরুষ তাত্ত্বিকভাবে হলেও – শিশুর যত্ন নিয়ে ‘সময় নষ্ট’ করার চেয়ে অধিক নারীর সাথে সম্পর্ক করায় উৎসাহিত হতে পারতো, কারণ এভাবে সে তার জিনের বহুসংখ্যক প্রতিলিপি করতে পারত (ব্যাপারটা যে কোন কোন ক্ষেত্রে হয় না তা নয়, সেজন্যই একটি সম্পর্কে পুরুষেরাই বেশি প্রতারণা করে), কিন্তু দেখা গেছে এভাবে কাজ করলে ‘অসহায়’ হয়ে জন্মানো শিশুরা বাড়তি পরিচর্যাটুকু পায় না। আদিম কালের রূঢ় পরিবেশে, যে দম্পতির শিশুরা (পুরুষের বহুগামীতার কারণে এবং অন্যান্য কারণে) বাড়তি পরিচর্যা পায়নি, তারা টিকে থাকতে পারেনি, ফলে সেই ট্রেইটগুলোই অধিকহারে নির্বাচিত হয়েছিল – যেখানে পুরুষেরা এদিক সেদিক ছোঁক ছোঁক করার চেয়ে নিজের বাচ্চার যত্ন নেবে। মেয়েরাও সেধরনের পার্টনারের প্রতিই আকৃষ্ট হয়েছিল, যে কিনা সম্পর্কে বিশ্বস্ত থাকবে, এবং নিজের সন্তানের যত্ন নেবে, তার প্রতি ভালবাসা অনুভব করবে। স্বাধীন যে কথাটা বলেছে – এভাবে সবাই নিজের জিনের কথা চিন্তা করতে করতে অটোমেটিক একটি ভাল পৃথিবীর কথাই চিন্তা করবে। এভাবেই বিবর্তনের সিমুলেশনগুলো প্রকৃতিতে কাজ করেছে, এবং এখনো করছে।
@অভিজিৎ,
কিন্তু যারা ইচ্ছাকরেই জিন প্রবাহ থেকে বিরিত থাকছে তারাওকি একটা ভাল পৃথিবী চাইতে পারে ? পারলে সেই প্রেরনার উৎস কি ?
বিপ্লব দা নিচে বলেছেনঃ
হয়তো এটাই।
আমি একটা উদাহরন হাজির করছিঃ
ধরুন যুদ্ধ ঘোষোনা করার ব্যাপার এলো, সেই ঘোষক যাদি পিতা বা মাতা হন তবে তার বিবেচনা বোধ একজন চিরকুমারের থেকে বেশী সহনশীল হবে, এরকম কি আশা করা যায় ?
কারন নিজের অভিজ্ঞতা থেকেই বলছি, আগে আমি পথ শিশুদের দিকে এখনকার মত খেয়াল করতাম না। কিন্তু এখন বাবা হবার পর থেকে ওদের দেখলে অনেক বেশী কষ্ট পাই।
আপনাদের আলোচনায় ব্যাপক বিনোদোনিত হলাম!
লেখা উৎসর্গ করার সাথে সাথে যে আমাকেও উৎসর্গ করে দিলেন সেটার কি হবে? আমার বউ আগামী ডিসেম্বার-এ তিন সপ্তাহের জন্য সুইডেন থেকে ইউএসএ আসবে। তাই সে-সময়ের জন্য আগে থেকেই লেখা লিখে রাখছি। যাতে করে দুর্মুখেরা বলতে না পারে, বউ পেয়ে লেখা ছেড়ে দিয়েছে।
অনেক ধন্যবাদ অভিজিৎ’দা। কিন্তু আপনি কি উদাহরণ টানলেন প্রতিভাবানদের নিয়ে? তাদের নারীসঙ্গ কামনার কথা লিখেছেন, প্রতিভাহীনরা কম যায় না-কি? কয়টা উদাহরণ চান? আমি আর আপনি ছাড়া এ-জগতে কে আছে, যাদের ওই সমস্যা নেই। :laugh:
আরেকটা কথা। আপনার লেখার শেষ লাইন। না, আমি কোনো জীবনেও ভালো ছেলে ছিলাম না। 🙂
@মইনুল রাজু,
তাইলে তো আমার থিওরি ঠিকই আছে। এখনো মৃত হন নাই। তাই লেখা বেরুচ্ছে। ডিসেম্বরে দেখা যাবে কত ধানে কত চাল, আর কত গমে কত আটা!
শুভকামনা রইলো।
বিয়ে করার সাথে সাথে প্রতিভা কমে যায় ভুলও হতে পারে।
কারন দজ্জাল কিসিমের বউ কপালে জুটলে তখন সে লোকে নিশ্চয়ই ঘর সংসারে বেশী থাকতে চাইবে না। বেচারার তখন আর উপায় কি থাকবে? জ্ঞান চর্চাই হবে পালাবার উপায়।
@আদিল মাহমুদ,
নাহ। একমত না। জ্ঞানচর্চা করাটা ক্ষুদা আর সেক্সের মতন বেসিক নীড। এটা আমার ব্যাক্তিগত অভিজ্ঞতা।
আমার মনে হয় শেষের কথাটা হবে দর্শন চর্চা।
আর “দজ্জাল কিসিমের বৌ” কথাটা অক্সিমরন-বৌ দজ্জাল কিসিমেরই হয়-আর নারীকে পাওয়া যায় অন্যের বৌ বা প্রেমিকার মধ্যে।
ছাইপাশ লেখার একটা উদ্দেশ্য সফল হইসে। দুইজনের দুইটা ক্লাসিক মন্তব্য পাওয়া গেছে-
:hahahee:
এনি ওয়ে আমি এগুলাতে নাই। আমার বউ দজ্জাল কিসিমের না, নিপাট ভাল মানুষ। 🙂
@অভিজিৎ,
আমি আরেকটা যোগ করি। যদিও মানের দিক থেকে আদিল আর বিপ্লবের পরেই স্থান হবেঃ
“বৌ কে দজ্জাল কিসিমই হতে হয় যাতে তার ভয়ে স্বামী অন্যের বৌ বা প্রেমিকার মধ্যে নারী খোঁজার সাহস না পায়”
@অপার্থিব,
-বৌ কেন দজ্জাল হয়-তার ও বিবর্তন জনিত ব্যাখ্যা দেখেছি নিউজে। তারা বলেন উহার উৎপত্তি ক্ষমতা বলে একটি বস্তু হইতে-নারীর কাছে ক্ষমতার সংজ্ঞা পুরুষদের বলদ বানানো। সংসার হইতেছে একটি বলদে টানা গাড়ি-বৌ গাড়ির চালক, পুরুষ সেটিকে টানে।
@বিপ্লব পাল,
সেটা হলে মন্দ কি। একটা টীমওয়ার্ক তো। একজন ছাড়া অন্যজনের চলবেনা। আর টানার কাজ চালানো থেকে খারাপ নয়। চালকের দায়িত্ব বেশি, চিন্তাও করতে হয়। টানকের এই সব চিন্তা থেকে রেহাই।
@বিপ্লব পাল,
বাহ ! চমতকার সব মন্তব্য দেখে মুগ্ধ হয়ে যাচ্ছি । ছুতো ধরে মুখোশ কেমন করে খুলে খুলে পরে কারো কারো তাই দেখছি ! 🙂
@অপার্থিব,
কিন্তু তারপরেও স্বামীর অন্যের বৌ বা প্রেমিকার মধ্যে নারী খোঁজার সাহসের কোন অভাব হয় না। বৌ-এর দজ্জাল হয়ে লাভ কি?
@অপার্থিব,
উলটাও হতে পারে কিন্তু। এক দজ্জালের ভয়ে যদি অন্য নারীর আশ্রয় খোজে???
@অভিজিৎ,
বুঝলাম!!!
@বিপ্লব পাল,
আপনার জ্ঞানচর্চার উপর আমার আস্থা অগাধ হলেও, আপনাকে উদ্দেশ্য করে কিন্তু ঐ উক্তি করিনি 🙂 । যদিও বিবিধ বিষয়ে আপনার জ্ঞান দেখলে আমি সবসময়ই মুগ্ধ হই, সাহিত্য, ধর্ম, অর্থনীতি, রাজনীতি, দর্শন কি নেই? অনেকটা হীরক রাজার মত সাপ ব্যাং শকুনের ঠ্যাং কি নাই সেখানে?
কথাবার্তা তো মনে হয় ধীরে ধীরে বিপদজনক দিকে মোড় নিচ্ছে, মহিলা সদস্যারা সহসাই বিদ্রোহ করে বসতে পারেন।
@আদিল মাহমুদ,
দেখুন জ্ঞানচর্চার সাথে বৌ এর সম্পর্ক নেই-স্পৃহার সাথেও নেই। এরিস্টটল বৌ এর অত্যাচারে গুহাদ্বারে চিন্তা করতেন-সেই আপদ ও নেই যেহেতু এযুগে অফিস বলে একটি ব্যাপার আছে।
কিন্ত দজ্জাল গিন্নীটাকে মেয়েরা অপবাদ বলে মনে করে এই মূল্যবান তত্ত্বটি আপনি কি করে আবিস্কার করলেন? আমি ত দেখছি নারী ঘটিত ব্যাপারে আপনি আমার থেকেও বেশী আনাড়ি।
আপনি একটি সার্ভে করুন-মেয়েরা কোন উপাধিকে বেশী কভেটেড বলে মনে করেঃ
দজ্জাল বৌ
না
দয়াময়ী বৌ
@বিপ্লব পাল,
বাধ্য হয়েই বলতে হচ্ছে যে নারী মনস্তত্ব সম্পর্কে আপনি মনে হয় বেশ আনাড়ি।
সার্ভের ভয় দেখাচ্ছেন?
নারী জাতি যে মনে যা থাকে মুখে ঠিক তার উল্টা বলে এই বেসিকও ভুলে গেছেন? আপনার সার্ভের ফল যা আসবে তার উলটা ফল গ্রহন করতে হবে 🙂 ।
@বিপ্লব পাল,
@আদিল মাহমুদ, আমার ধারণা ছিল বিদ্রোহ হয় অন্যায় অত্যাচারের বিরুদ্ধে, কতগুলো মেল শভ্যানিস্টিক এবং ‘অপ্রযোজ্য’ প্রলাপের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করবে কে 🙂 ।
@বন্যা আহমেদ,
খোদা বাচোয়া।
@আদিল মাহমুদ, বাঁচলেন কিভাবে? আপনি মেয়েদেরকে এ ভাবে দেখেন দেখেই তো তো বে জায়গায় এই ‘বিদ্রোহ’ কথাটা প্রয়োগ করলেন, দোষটা তো আপনারই পুরোপুরি 🙂 ।
@বন্যা আহমেদ,
উল্টা পালটা ঝাড়ি ঝুড়ি তো আর আপনি খান নাই, আমরা খাই।
কি যাতনা বিষে…
@বন্যা আহমেদ,
সেরকম হইলে ঘরে ঘরে পুরুষ বিদ্রোহের লেহীহান শিখায় পৃথিবী রক্তাভ হইত—তেমনটা দেখি নাই।
অত্যাচারের সাথে সহবাস
পুরুষের লেবাস-
কতগুলো মেল শভ্যানিস্টিক এবং ‘অপ্রযোজ্য’ প্রলাপের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করবে কে
@আদিল মাহমুদ,
এই সবাই চুপ করেন, বন্যা’পা কিন্তু ক্ষেপছে 😛 ।
পরে না আবার মুক্তমনাই ব্যান হয়ে যায়। 😥
@স্বাধীন,
এই ভাবে কেও হাটে হাঁড়ি ভাঙে-দই এ থক করবে না–
@আদিল মাহমুদ,
ঝাড়ি ঝুড়ি খাওয়ার কাজ করে চুম্বন খাওয়ার আশা করাটাই তো ভুল। ইনসাফ খাটায়ে কথা বলেন ভাই। ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ১২ ঘণ্টা কমপিউটারের সামনে বসে কী এমন কুচকুচ হোতা হ্যায়? ৬ ঘণ্টা অফিস আর ৬ ঘণ্টা ঘুম, ব্যস। দুনিয়া ক্যামনে ঘুরে খবর আছে? তারপর বাথরুমের গায়ক আমিতাবচ্চন সেজে আশা করেন -চুম্মা দে রে দে চুম্মা। বাহ, এখন আবার নালিশ। হে ভাই, আমি বলতে চাই ঠিক উলটো কথা- আই মিন বিয়ের আগে সে তো পূর্ণাংগ মানুষই না পুরুষ হবে কী? হাছা কথা কন ভাইছাব, বিয়ের আগে দুনিয়ার লাগি কয়টা প্রবন্ধ লিখেছেন? এই পৃথিবীর জন্যে কয়খান ভালা কাম বিয়ের আগে করেছেন? নাকি ভালা কামের কথা কোনদিন ভেবেছেন? এই দুনিয়ার দিকে ভালভাবে তাকিয়ে দেখার ভাগ্য হলো বিয়ের পরে। বিয়ের আগে তো জন্মই হয় নাই মরবেন ক্যামনে? সকল তো আর সুকান্ত, নজরুল হতে পারবেন না, পারবেন না রাবেয়া বসরী ,শাহ জালাল বা ঊসমানি হতে, কী বলেন?
আমার দ্বীনের নবী মোস্তফায় ইরশাদ ফরমাইয়াছেন- বিবাহ পূর্বে মানুষের ঈমান পূর্ণ হয়না, আর যার ঈমান পূর্ণ হয় নাই সে পূর্ণ মানুষ নয়।
@আকাশ মালিক,
:laugh:
@আকাশ মালিক,
আপনের মনে মনে যে এই ছিল কে জানত। আমার ধারনা ছিল আমার যাবতীয় সব কার্যক্রম বোধহয় শুধু একজন মানুষই দেখেন, এখন দেখি শুধু মানকির নন, নকির ও হাজির আছেন।
আপনি হুবহু আমার স্ত্রীর ভাষা শিখলেন কি করে? আমার কম্পিউটারে বসা নিয়ে যে কি পরিমান অত্যাচার সইতে হয় সে আর বলতে। কম্পিউটার ভাঙ্গার হুমকিও প্রায়ই আসে। আর আপনি ইয়ার্কি করেন।
@আদিল মাহমুদ,
এই ক্ষেত্রে ব্লগের কোন পুরুষটি শোষিত নয় – তা আমি জানতে চাই 🙂 , এমনকি নারীবাদির মুখোশ পরা পুরুষবাদী ফরিদ ভাইও মন্তব্য করতে পারেন নিজেদের অভিজ্ঞতার আলোকে।
@অভিজিৎ,
জেনে অসীম শান্তি পেলাম, মালিক ভাই এর ধাতানী খাওয়ার ব্যাথা অনেকটা আশা দূর হল।
আশা করি মালিক ভাই নিজে দলচ্যূত এমন দাবী করবেন না।
@আদিল মাহমুদ, ভেবে পাইনা আপনারা পুরূষেরা কি করে রাইত দিন ব্লগে পরে থাকেন !!! ব্লগে পরে থাকা ছাড়া আর কি কি কাজ করেন একটা লিষ্ট চাই আপনার কাছে 😀
@নন্দিনী,
ঠিক কথা নন্দিনী। রাত্র দিনে ২৪ ঘণ্টার একেবারে প্রতি ঘণ্টার হিসেব দিতে হবে। নারীর অধিকার লুণ্ঠনে এখন দেখছি বিশ্বাসী অবিশ্বাসী স———ব একাকার। এদেরকে ম্যাগডোনাল্ডে নিয়ে যাওয়ার কথা বলুন, ট্রাউজারের পকেট উল্টায়ে দেখাবে ওয়ালেট খালি। মাসে একবার সিনেমায় নিয়ে যাওয়ার কথা বলুন, তাদের সময় নাই। সন্তানের জন্মদিনে বার্থডে কার্ড দিবে কি, তারিখটাই মনে রাখেনা। এমন মানুষও নারীবাদি হয়! নন্দিনী, এবার কড়া-গন্ডায় হিসেবটা হয়ে যাক, এ ঝগড়া আর ভাল লাগেনা।
@নন্দিনী,
ব্লগীয় বিচারক মালিক ভাই এর কাছে তালিকা আগেই পেশ করা হয়েছে। চেয়ে নিন 🙂 ।
ব্লগবাজি একটা বড় নেশা এখন বুঝতে পারছি। তবে এখন দেখেছি কিছু লোকে আমাদের মত নিরীহ লোকদের ব্লগের নেশা ধরিয়ে দিয়ে নিজেরা সাধু সেজে বড় বড় কথা বলে বেড়াচ্ছেন। পারিবারিক আইনে এদেরও বিচারের আওতায় আনা দরকার।
মালিক ভাই,
বাইরে খাওয়া নিয়ে আমি কিপ্টেমী করেছি এমন অপবাদ আমার ঘোরতর শত্রুও দিতে পারবে না। আর সন্তান না থাকলে বার্থডে কার্ড দেব কাকে??? কি যে সব বলেন।
@আদিল মাহমুদ,
আরে ভাই আপনি একজনকে দিয়ে তো আর জেনেরালাইজড করা হচ্ছেনা। তারপরও আল্লাহর কসম, বুকে হাত দিয়ে বলেন, এর পেছনে কোন স্বার্থ ছিলনা। পারবেন না। বাইরে নিয়ে যাওয়ার আগে মনেমনে কত প্লান করেন, আপনি না বললেও আমি তা জানি। পুরুষকে আমি ভালভাবেই চিনি। পুরুষ তার স্বার্থ ছাড়া কিচ্ছুই কল্পনা করতে পারেনা। আর আমি আমার নিঃস্বার্থ ভালবাসার নিদর্শন স্বরূপ যখন তাকে তারই স্বার্থে একটু ঝাড়ি ঝুড়ি দেই (রূপক অর্থে) তখন সে তা বুঝতেই পারেনা। আমি যদি এই ঝাড়ি ঝুড়ি বন্ধ করে দেই, যদি একটু ছাড় দেই, সকল সাহিত্যিক তসলিমার ‘ক’ এর নায়ক হতে বেশী সময় নিবেনা। আমার সন্দেহ জাগে প্রত্যেক পুরুষের মাঝে একজন বিল ক্লিনটন, হুমায়ুন আহমেদ বাস করে কি না? তখন যারা হিলারি, গুলতেকিন হতে পারেনি তাদের কী হবে?
আমি তো জানতাম বয়সের সাথে মেধা কমে সম্পূর্ন শারীরিক কারনে; মস্তিকের গ্রে ম্যাটার সম্ভবত কমে যায় (হুবহু তা হয়ত নয়, মোট কথা মস্তিকের কর্মক্ষমতা কমে যায়)।
বেশ কিছু ইন্টারেষ্টিং পরিসংখ্যান। তবে একই জাতীয় পরিসংখ্যান কি বিখ্যাত মহিলাদের নিয়ে একই বা কোন রকম প্যাটার্ন পাওয়া গেছে?
@আদিল মাহমুদ,
জ্বী, পাওয়া গেছে । এই প্রবন্ধেই অভিজিৎ রায় Figure : 2, 3 ও 4 এ তা রেখা চিত্রের মাধ্যমে দেখিয়েছেন। রেখা চিত্রগুলোতে দেখানো হয়েছে যে, বয়স বা বৈবাহিক মর্যাদা মহিলাদের মেধার ভেক্টরের ক্ষেত্রে তেমন উল্লেখযোগ্য প্রভাব ফেলে না ।
@সংশপ্তক,
ওহ হো, খেয়াল করিনি।
পুরুষদেরই দেখি কেবল চিত্ত চাঞ্চল্যের ফল হতে পারে আকাশ পাতাল।
এই আলোচনায় অংশ নিতে পারছিনা, কারণ আমি অনেক বছর ধরে ‘মৃত’। রাজুর জন্য সমবেদনা রইলো।
আমার মতে এই কথাটি বদলের সময় এসেছে। বিবাহের পরে আসলে প্রোডাক্টিভিটি কমে না। আমার মতে অনেক ক্ষেত্রে বাড়ে। টুনা-টুনিতে বেশ ভালই সময় কেটে যায়, কাজে কর্মেও আগ্রহ থাকে প্রচুর।
সমস্যাটি শুরু হয় যখন নুতন একজনের আগমন ঘটে। এখান থেকেই বিবর্তনের খেলা শুরু হয়। প্রকৃতি বনাম প্রকৃতির দ্বন্দ্ব শুরু হয়ে যায়। জিন রক্ষার তাগিদ নাকি নিজস্বতা বজায়ের তাগিদ এই দুইয়ের দ্বন্দ্ব শুরু হয়ে যায় এবং অধিকাংশ ক্ষেত্রেই সেলফিশ জিনই জিতে যায়। নিজের সব কিছু ত্যাগ করে জিন রক্ষায় সময় দেওয়াটাই তখন মুখ্য হয়ে যায়। যা কিছু বললাম সম্পূর্ণ নিজের ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা থেকে বললাম। বহু দিন দ্বন্দ্বে ছিলাম করণীয় ঠিক করার ব্যাপারে। শেষে বিবর্তনের কাছে হার মানা ছাড়া কোন গতি দেখলাম না।
এই সিরিজটাতে নিয়মিত আছি। সিরিজ শেষ হলে কিছু বলার থাকলে বলবো।
@স্বাধীন,
এটা ঠিক বলেছে। আসলে সব কিছুই সামাজিক প্রেক্ষিতে। এদেশে কারুর বিয়ে না হলে, সে মোটেও প্রোডাক্টিভ হয় না। বরং সম্পুর্ন আনপ্রোডাক্টিভ হয়-সব সময় ডেটিং সাইট নইলে চ্যাটে বসে থাকে। এগুলো আমাদের সবার অভিজ্ঞতা। আবার ভারতে অভিজ্ঞতা উলটো-ওখানে ডেটিং করার স্কোপ কম বলে আমি দেখি অবিবাহিতরা অনেক বেশী প্রোডাক্টিভ।
@স্বাধীন এবং বিপ্লব,
তোমাদের কথা ঠিকই আছে। আমিও আমার লেখার নীচের দিকে আভাস দিয়েছিলাম –
তারপরেও আরেকটা মজার বিষয়ের দিকে অনেক গবেষক আলোকপাত করেছেন। বিবর্তনীয় মনোবিজ্ঞান নিয়ে গবেষণারত কিছু গবেষক দেখিয়েছেন যে, সত্তুরের দশকে কিংবা তার আগে মেয়েদের খুব একটা ‘নিজস্ব ক্যারিয়ার’ ছিলো না। সে সময় গৃহস্থালীর কাজগুলো মূলতঃ মেয়েরাই করতো। ফলে বিবাহিত পুরুষ বিজ্ঞানীদের তেমন একটা বাচ্চা কাচ্চা ঘর সংসার নিয়ে মাথা ঘামাতে হতো না। কিন্তু তারপরেও বিবাহিত বিজ্ঞানীদের প্রতিভার স্ফুরণে কোন উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন পাওয়া যায়নি। ভিক্টোরীয় পুরুষতান্ত্রিক সমাজ হোক, আর আধুনিক জেণ্ডার সচেতন সমাজ হোক, ট্রেণ্ড একটাই – বিয়ের পর একইভাবে প্রতিভার স্ফুরণ কমে আসে একই ধারায়। ব্যাপারটা ইন্টারেস্টিং।
আমি সাতোসি কানাজাওয়ার পেপার থেকে উল্লেখ করি –
এবং,
তবে লেখাতে উল্লেখ করেছি যে, এগুলো বিজ্ঞানের শক্ত কাঠামোর উপরে দাঁড়িয়ে নেই, কেবল সাম্প্রতিক গবেষণার একটা ক্ষেত্র তৈরি করছে; কাজেই ব্যাপারগুলোকে একেবারে অভ্রান্ত বৈজ্ঞানিক ফলাফল হিসেবে গ্রহণ না করাই বাঞ্ছনীয় হবে এ মুহূর্তে। আমি সেটা বলেছিলামও সতর্কবানী হিসেবে মার লেখার শুরুতেই – এই পর্বটিতে বিজ্ঞানের চেয়ে ফ্যান্টাসিই হয়তো বেশি পাবেন পাঠকেরা। তাই পাঠকদের এই পর্বটি খুব বেশি সিরিয়াসলি না নেবার অনুরোধ করছি। 🙂
@অভিজিৎ,
সিরিয়াস মন্তব্য করলাম কই 😥 । নিজের অভিজ্ঞতার কথা শুধু শেয়ার করলাম। সিরিয়াস একটি মন্তব্য করতে চেয়েছিলাম 😉 । অনেকটুকু লিখেও ফেলি মন্তব্যে। তার পর মনে হল ধূর অভিজিৎ ব্যাটার পোষ্টে মন্তব্য না বাড়িয়ে নিজের পোষ্টের সংখ্যাই বাড়াই না কেন 😛 ? তাই পোষ্ট আকারেই দিয়ে দিলাম সেটাকে আরেকটু টেনে লম্বা করে।
অভিজিৎ দা’র আরেকটি চমৎকার লেখা। :yes:
এই সুযোগে ‘আইনস্টাইনের প্রেম’ কাহিনীও পড়লাম। কত্তো অজানা রে! 😛
:laugh:
হিচকক-কে কি আসলেই অসাধারণ সাহিত্যিক বলতে চেয়েছিলেন, না সিনেমা শিল্পী?
@রৌরব,
হ্যা শিল্পীই বলতে চেয়েছিলাম। আসলে মার্ক টোয়েন আর একগাদা বুইড়া বাঙ্গালি সাহিত্যিকদের সাথে এক সাথে হিচককের নাম চলে আসায় এমনটি মনে হচ্ছে। ঠিক করে দিচ্ছি।
@অভিজিৎ,
হে হে। ভাল কথা…
এর কারণ কি বলে আপনার মনে হয় 😉 ? আমার মনে হয় এটা লোকটার বুড়ো বয়সেও “সঙ্গমী মননের অভিব্যক্তি” … গুজব তো অনেক কিছুই শুনতে পাই।
এ ব্যাপারে মুক্তমনার সবচেয়ে প্রতিভাবান লেখক ফরিদ আহমেদের মতামত জানার জন্য অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছি :rotfl:
@রৌরব,
কথায় বলে না – ষাট বছরেতে হয়না বুড়ো, আসল প্রেমের বয়স এই তো শুরু 😀 –রবীন্দ্রনাথ ওই গোছের কিছু ছিলেন মনে হয়।
@রৌরব,
আমিও। তবে কয়েকদিন ধরেই দেখছি তিনি (আবারো) উধাও। আদিল মাহামুদ সহ আর কার কারো ধারনা উনি এই সময়টায় গাঁজা না কি যেন সেবন করেন, আর তারপরেই হঠাৎ তুরীয় স্ফুলিঙ্গে আবির্ভূত হন। 🙂 এবারের আবির্ভাবে আমাদের উপর দিয়ে কি ধরণের ঝঞ্ঝা বয়ে যায় তার প্রতীক্ষায় আছি।
@অভিজিৎ,
ধারনা যে খুব ভুল না তার প্রমান তো হাতে নাতে পাওয়া গেছে। কমেন্টেই সাহিত্যের এমন ঝিলিক আর কার পক্ষে কি ভাবে মারা সম্ভব?
@আদিল মাহমুদ,
আপনারা সবাই মিলে কী শুরু করলেন বলেনতো। রৌরবকে পুরো ফাজলেমি করে ইচ্ছাকৃতভাবে একগাদা অনুপ্রাস ব্যবহার করে উত্তর দিয়েছি। অনুপ্রাসের অতিরিক্ত ব্যবহার করি আমি মূলত দুটো ক্ষেত্রে। হালকা কিছু লেখার ক্ষেত্রে, নতুবা কারো সাথে ঝগড়া করার ক্ষেত্রে। ওতে সাহিত্যের ঝিলিক পাওয়াটা, আর জমির দলিলে সাহিত্যের উপাদান খুঁজে পাওয়া একই কথা।
@রৌরব,
ভাইরে, আকাশের উপরে তুললেন, নাকি পাতালের তলানিতে নিয়ে ফেললেন, সেইটাইতো বুঝতে পারলাম না। :-X
এত প্রতিভা থাকলেতো সুবর্ণ কঙ্কণ পরা সুহাসিনী সব সুবাসিত সুন্দরীদের নিয়ে সুসমৃদ্ধ সুধাময় সুচিস্নিগ্ধ হতো সময়গুলো আমার। ঘটনাতো ঘটেছে বরং উলটো। মুক্তমনায় লেখালেখি শুরু করার পর থেকেই লহনা ললিত ললনারা সব কপাট খুলে লোপাট হওয়া শুরু হয়েছে আমার ললাট থেকে। শুধু লোপাট হলেও না হয় কোনো আপত্তি ছিল না, কিন্তু সবচেয়ে বড় বিপত্তি হচ্ছে যে, এদের অনেকের সাথেই বেশ পিত্তি জ্বলানো খিস্তিখেউরের ভিত্তিভূমির ভূমিকাও রচিত হয়ে গিয়েছে আমার। আবাল্য আরাধ্য অবলাদের অনাগমণে অনুর্বর, অসফল এবং অশোভিত এখন আমার অল্পজ্ঞ জীবন। 🙁
অভি বরং পুরুষের প্রবল প্রতিভার প্রতি অবলাদের আকৃষ্টতার পাশাপাশি আকসার কোলাহলময় কুৎসিত কলহেরও একটা কো-রিলেশন করে দেখতে পারে। পুরুষের প্রভাময় এবং প্রমাদহীন প্রতিভা থাকলেই যে প্রমীলারা পটাপট তাদের প্রেমে পড়ে না, বরং প্রায়শই পিটাপিটি করার প্রাণান্তকর পণ করে তার উজ্জ্বল উদাহরণ হচ্ছি আমি। 🙂
@ফরিদ আহমেদ,
অসাধারণ। ঠিক যেন শেষের কবিতা!
@রৌরব,
শেষে কি না রবীন্দ্রনাথকেও অপমান করলেন। বেচারা মরে গিয়েও দেখছি বাঁচতে পারবে না আপনাদের এই সব লাঞ্ছনা-গঞ্জনা থেকে।
আর মাত্র ১০ বছর 🙁 🙁 ।
@রামগড়ুড়ের ছানা,
এখনো সময় আছে মৃত্যু থেকে বাঁচতে পারো নিঊটনের মতো। 🙂
অভিজিৎ দা,
দুটো ব্যাপার। প্রথমটা হলঃ
ব্যপারটা কি এভাবে বল যায়, যে অপরাধ প্রবনতা এবং মেধাবিকাশ দুটোই যৌবনের ধর্ম? কারন আপনার লেখায় কিন্তু এটা স্পষ্ট নয় যে, অপরাধ প্রবনতা আর মেধার বিকাশের আসলেই একই উৎস কিনা? আমার বোঝারও ভুল হতে পারে।
আর সাহিত্যিকদের ব্যপারটা মনে হয় অনেকটা অভিজ্ঞতার ব্যাপার। মানে হল একজন লেখক যত বেশি দিন লিখবে ততই তার লেখা ক্ষুরধার হতে থাকবে। কিন্তু বিজ্ঞানের ব্যাপারটা মনে হয় আলাদা। এখানে অভিজ্ঞতা না, সৃষ্টিশীলতাটা বেশি কাজ করে।
ভুলে পুরো উত্তরটা উদ্ধৃতিতে চলে গেছে। 🙁
@সাইফুল ইসলাম,
এখন ঠিক আছে?
@রামগড়ুড়ের ছানা,
আরে মিয়া তুমি না থাকলে কি যে কি হইত। 😀
@সাইফুল ইসলাম,
এই ব্যাপারটা আমি ১৬ নং ফুটনোটে ব্যাখ্যা করেছিলেম একটু। এখানে আবারো উদ্ধৃত করি –
গবেষক ডেভিড গ্যালেনসনের মতে পদার্থবিজ্ঞান এবং গনিতের তাত্ত্বিক বিষয় নিয়ে যারা গবেষনা করেন তারা মুলতঃ ‘কনসেপচুয়াল ইনোভেটর’ (Conceptual innovators), আর শিল্প সাহিত্য নিয়ে সৃষ্টির খেলা যারা খেলেন তারা ‘এক্সপেরিমেন্টাল ইনোভেটর’ (experimental innovators)। তিনি তার গবেষণায় দেখানোর চেষ্টা করেছেন যে, ‘কনসেপচুয়াল ইনোভেটর’রা তাদের জীবনের প্রাথমিক সময়ে বা তরুণ বয়সেই সবচেয়ে বেশি প্রতিভার বিচ্ছুরণ ঘটান, আর অপরদিকে ‘এক্সপেরিমেন্টাল ইনোভেটর’রা ঘটান জীবনের মধ্যবয়সে বা শেষদিকে।
@সাইফুল ইসলাম,
আরেকটি অংশের উত্তর দেয়া বাকি ছিল। প্রশ্ন ছিল-
আসলেই অপরাধপ্রবণতার সাথে মেধার কোন সত্যিকার যোগসূত্র আছে কিনা তা কিন্তু আমরা জানি না। সেজন্যই ‘একই উৎস’ কিনা এনিয়ে কঙ্কলুসিভ ভাবে আমি কিছু বলি নি। তবে, কিছু গবেষণা থেকে যা জানা গেছে তা হল – বয়স-অপরাধ রেখচিত্রের (Age -crime curve) এবং বয়স-প্রতিভা রেখচিত্র (Age- Genius curve) দুটির ক্ষেত্রেই দেখা যাচ্ছে – বয়ঃসন্ধির সময় থেকেই পুরুষদের মধ্যে প্রতিভার স্ফুরণ বাড়তে থাকে, আর তা একেবারে শীর্ষে পৌঁছায় যৌবনের প্রারম্ভে, ত্রিশ বছরের পর থেকে তা দ্রুতগতিতে কমতে থাকে, আর তারপরে তা একেবারেই আনুভূমিক হয়ে যায়।
বিবর্তন মনোবিজ্ঞান নিয়ে গবেষণারত অনেক গবেষক বলার চেষ্টা করেছেন অপরাধ প্রবণতা এবং প্রতিভা আসলে দুটোই সঙ্গমী মননের অভিব্যক্তি। বয়ঃসন্ধির সময় থেকেই পুরুষদের মধ্যে ঝুঁকি নেওয়ার প্রবণতা বাড়তে থাকে, তার আগে তেমন নয়। কারণ, জৈবিকভাবে চিন্তা করলে, বয়ঃসন্ধির আগে প্রতিযোগিতামূলক মনোভাবের কোন প্রজননগত উপযোগিতা নেই।কারণ সেই প্রতিযোগিতামূলক মনোভাবকে প্রজননগত সফলতায় স্থানান্তরিত করা সেই সময় সম্ভব হয় না। কিন্তু বয়ঃসন্ধিকাল স্পর্শ করার সাথে সাথে প্রতিযোগিতামূলক অভিব্যক্তিগুলো দ্রুতগতিতে বাড়তে থাকে। যখন থেকে দেহ সর্বপোরি প্রজননের জন্য প্রস্তুত হয়ে উঠে তখন থেকেই প্রতিটি প্রতিযোগিতার ক্ষেত্র (সেটা সহিংসতাই হোক, অথবা হোক বিশেষ দিকে প্রতিভাময় দীপ্তি) স্ফুরিত হতে থাকে তীব্র বেগে। মধ্য বয়সের পর সেই আকাঙ্ক্ষা স্তিমিত হয়ে আসে জৈবিক নিয়মেই। সে হিসেবে, আপনি যেটা বলেছেন, অপরাধ প্রবনতা এবং মেধাবিকাশ দুটোই যৌবনের ধর্ম বললে মিথ্যে বলা হবে না সম্ভবতঃ।
আরেকটি চমৎকার লেখা।
গ্যালারীতে বসলাম। দেখি আলোচনা কতদূর যায়।
অভিজিতের এই লেখাটি বেশ চিন্তার বিষয়।
বিবাহের পর জীবিত ্পুরুষ মৃত হয়—অনেকেই হয় দেখেছি।
তা হলে নারীদের কী হয়।
্বিবাহের পরে কী মৃত নারী জীবিত হয়?
আমি অনেক নারীকে দেখেছি বিবাহের পূর্বে মুখই খুলেনা। তবে বিবাহের পর তার মুখে খৈ ভাজছে।
তাহলে কি বলা যাবে বিবাহ ব্যাবস্থাটা শুধুমাত্র মেয়েদেরকে চাঙ্গা করার জন্য?
বয়সের সাথে সব কিছুর পরিবর্তন হয় তা সত্যি। আমরা এই প্রাকৃতিক নিয়ম সর্বদাই দেখছি। একটা ফলদায়ক বৃক্ষ যৌবন কালেই সবচাইতে স্বাস্থকর অঢেল ফল দেয়। গাছটা যখন বৃদ্ধ হয়ে যায় তখন তার ফল বিস্বাদ এবং নগণ্য।
আচ্ছা বিজ্ঞান কী কোনদিন পারবে বৃদ্ধকে যৌবনে ফিরিয়ে দিতে? আমি বুঝাচ্ছি recycle করা যাবে নাকি মানুষের বয়স? আজকাল ত দেখছি সবই recycle হচ্ছে। তাহলে মানুষের বয়স recycle হবার যুগ কতদিন পরে আসবে? এব্যাপারে বিবর্তনবাদ থেকে কিছু আস্বাসের বাণী কি আছে?
@আবুল কাশেম,
বিবর্তন কাজ করে বংশাণু (জীন) বা ডিএনএ লেভেল এ। জীনের বা ডীএনএর কোন সেক্স নেই। ডিএনএ বা জীনোম দেখে কারো সেক্স নিরূপণ করা যায় না। লিংগ পার্থক্য ক্রোমজম লেভেল থেকে শুরু হয়। মেয়েদের বা ছেলেদের বিবর্তন কৌশলের তফাৎটা হল phenotype এর ভিন্ন প্রকাশ। কাজেই আপনার প্রশ্নের উত্তরে আমার মত হল না, নারীরাও এই বার্ধক্যের করাল গ্রাস থেকে নিস্তার পায় না। আর বিবাহ পূর্ব নারীর মেনিমুখোতা আর বিবাহ উত্তর নারীদের মুখরতাটা কালচারাল ব্যাপার। পশ্চিমা সমাজে এর উল্টোটাই বরং বেশী সত্য। বয়স রিসাইক্লিং এর ব্যাপারে বিবর্তনবাদ থেকে আশ্বাস তো আমরা পাবই না বরং বিবর্তনবাদ এই ব্যাপারে বেশ কঠিন হৃদয়। পুরানকে হটিয়ে নতুনদের স্থান করে দেয়াই তার লক্ষ্য। বিশেষ করে সন্তান সন্ততি বড় হয়ে যাবার পর বৃদ্ধ পিতা মাতারা বিবর্তনের দৃষ্টিতে প্যারাসাইট ছাড়া কিছু না। তাদের কোন বৈবর্তনিক মূল্য নেই।
@অপার্থিব,
কথাগুলো বলতে একটুও মনে ধরলোনা? যেমনই সুন্দর তেমনই নিষ্ঠুর এই প্রকৃতি। :-/
@আকাশ মালিক,
[img]http://raekasworld.files.wordpress.com/2008/10/vulture_kevin_carter.jpg[/img]
অপার্থিব হয়তো ঠিকই বলেছেন, এই শিশুটিরও তো বৈবর্তনিক মূল্য নেই! তবু মনুষত্যবোধ বলে বোধহয় একটি কথা আছে।… :deadrose:
@বিপ্লব রহমান, @আকাশ মালিক
বিজ্ঞানের টুপী পরে বিজ্ঞানের তথ্য পরিবেশন বা পর্যবেক্ষণ করার সময় ব্যক্তিগত অনুভূতিকে লুকিয়ে রাখি, কারণ তা বিজ্ঞানের আলোচনায় অবান্তর। ব্যক্তিগত জীবনে সেই লুকিয়ে রাখার অবান্তরতাটা নেই, তাই লুকিয়ে রাখি না। বিপ্লবের ছবির শিশুটা যদি কোন বৃদ্ধও হত, আমার মন একই ভাবে কেঁদে উঠত। বিবর্তনের নিয়ম ব্যতিক্রমহীন নয়। পারিসাংখ্যিক। বৈবর্তনিক মূল্য নেই এমন অনেক কিছুকেই মূল্য দেয় এরকম মানুষও বিবর্তনেরই সৃষ্টি। আমিও অন্তর্ভুক্ত।
@অপার্থিব,
ঠিক আছে। চলুক। :yes:
@বিপ্লব রহমান, ঠিক, ঠিক চলুক। :yes: :guli:
@আকাশ মালিক,
আর এখানেই মানুষের কারিশমা। মানুষ এখন বিবর্তন নিয়ন্ত্রনের ক্ষমতা অর্জন করে ফেলেছে। সুতরাং প্রকৃতি নিষ্ঠূর হতে পারে কিন্তু আমরা প্রকৃতিকে আমাদের মত সুন্দর করে তৈরী করে নেব। তাই কোন চিন্তা নেই।
@অপার্থিব,
একটু দ্বিমত পোষণ করছি এব্যাপারে। মানব বিবর্তনে কিছু ইউনিক ব্যাপার ঘটেছে। রিপ্রোডাক্টিভ বয়সের পরও মানব সমাজে মেয়েরা আরও অনেকদিন বেঁচে থাকে। এর কারণ হিসেবে বলা হয় যে নানা নানী দাদা দাদীদের অভিজ্ঞতা এবং নাতী নাত্নী বড় করতে এদের সক্রিয় অংশগ্রহণ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে আমাদের বিবর্তনে। মানুষের বাচ্চা যতখানি নির্ভশীল এবং অসহায় হয়ে জন্মায় আর কোন প্রানীর শিশু এতখানি অসহায় হয়ে জন্মায় না। আর এই অসহায়ত্বের অন্যতম মূল কারণ হচ্ছে আমাদের মাথার এত বড় সাইজ। তাই মানব শিশু বড় করতে বাবা মার যতখানি সাহায্যের প্রয়োজন হয় তা আর কোন প্রানীতে সেটার প্রয়োজন হয় না। আমাদের বুদ্ধিমত্তার বিকাশের পিছনে এই ‘বৃদ্ধ পিতা মাতারা’ পরোক্ষভাবে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে বলেই মনে করা হয়। মানুষের সমাজে একগামিতা (প্রাইমেরিলি ) প্রচলনের পিছনেও এই অসহায়্ত্বকেই একটা বড় কারণ হিসেবে ধরা হয়।
@বন্যা আহমেদ,
হ্যাঁ, কালচারও একটা গুরুত্বপূর্ণ নিয়ামক মানব সমাজে। দাদা দাদী নানা নানীদের পেরেন্টিং এ ভূমিকাটা কালচার বিশেষে খুবই গুরুত্বপূর্ণ । এই কালচার আবার জীনের দ্বারা প্রভাবিত এবং জীনকে প্রভাবিত করে। এটাকে বলা হচ্ছে দ্বৈত উত্তরাধিকার তত্ব (Dual Inheritance Theory) বা বংশাণু-সংস্কৃতি সহবিবর্তন (Gene Culture Coevolution). কোন কোন সমাজে কোন বিশেষ কালচরাল ট্রেইট বেশি কার্যকর। প্রাচ্যের অনেক সমাজে দাদী নানীদের বাচ্চা বড় করার ব্যাপারে ভূমিকা রাখে অনেকখানি। পশ্চিমের সমাজে বাবা মার অবদানই প্রধান। আবার সারা ব্লাফার হারডি মনে করেন অনেক সমাজে বাবা মা বা দাদা নানীর চেয়ে গ্রামের সবার সম্মিলিত অবদানই বেশি কার্যকর। যাই হোক এর পরও বিবর্তনের মৌলিক সত্য যে সন্তান প্রাপ্ত বয়স্ক হয়ে যাবার পর পিতা মাতার বৈবর্তনিক প্রয়োজন ফুরিয়ে যায় সেটা ভুল প্রমাণিত হচ্ছে না। আর মাথা বড় হয়ে যাবার জন্য শিশুদের অসহায়ত্বের ব্যাপারটা আমিও আমার “প্রেমের বৈবর্তনিক ইতিহাস” এ আলোচনা করেছিলাম আর তোমার সাথে মন্তব্যও বিনিময় করেছিলাম। কিন্তু সেটার প্রাসঙ্গিকতাটা বাবা মায়ের মধ্যে বন্ধন দৃঢ় করার ক্ষেত্রে ছিল। স্নতান বড় করায় দাদা নানীর ভূমিকা বা সন্তান বড় হবার পরও বাবা মায়ের ভূমিকার ব্যাপারে নয়।
@অপার্থিব, একটু কনফিউসড হয়ে গেলাম, বিতর্ক করার জন্য নয়, আমি কি ভুল বুঝছি তা জানার জন্য আবারো প্রশ্ন করছিঃ
হ্যা জিনকে প্রভাবিত করে বলেই তো সেটা তার বয়সের উপর প্রভাব ফেলতে পেরেছে এং রিপ্রোডাক্টিভ এজের পরেও মানুষ এতদিন বেঁচে থাকছে।
সেটা তো খুব সাম্প্রতিক ঘটনা, আমার ধারণা ছিল, প্রধাণত টেকনলজির এবং ক্যাপিটালিস্টিক সমাজ এবং নিউক্লিয়ার ফ্যামিলির উদ্ভবের পরেই পাশ্চাত্যে এটা বদলেছে, আগে তো এখানেও প্রাচ্যের মত সমাজ ছিল, না কি ছিল না?
আমি ঠিক নিশ্চিত না এ সম্পর্কে। নানা নানী দাদা দাদী যদি খুব সক্রিয় ভূমিকা রাখেন নাতি নাতিনীদের বেঁচে থাকার ক্ষেত্রে তাহলে তো তাদেরও বৈবর্তনিক প্রয়োজন থাকলো, আমি এখানে কি ভুল বুঝছি?
আমি মনে হয় সামান্য ভিন্ন প্রসঙ্গে কথাটা বলেছিলাম এবার। বলেছিলাম যে, এই অসহায়ত্বের কারণেই দাদা-নানীর এই বাড়তি সাহায্যের প্রয়োজনটা পড়েছে, অন্যান্য প্রাণীর মত হলে সেটার প্রয়োজন হয়তো পড়তো না। আর সেটাই যদি কারণ হয়ে থাকে আমাদের রিপ্রোডাক্টিভ এজ শেষ হয়ে যাওয়ার পরেও এতদিন বেঁচে থাকার তাহলে সেটাও হয়তো ঘটতো না। তবে এটা ঠিক যে মডার্ণ সাইন্সের আবির্ভাবের আগে আসলেই আমরা কতদিন বাঁচতাম সেটা বোধ হয় এখানে উল্লেখযোগ্য একটা ব্যাপার বলে পরিগণিত হতে পারে। বাবা মা মধ্যে বন্ধন দৃঢ় করার সাথে একগামীতার একটা প্রত্যক্ষ সম্পর্ক রয়েছে বলে মনে হয়। এক্ষেত্রেও শিশুরা এত অসহায় হয়ে না জন্মালে হয়তো বাবার কাছ থেকে এই সাহায্যটুকুর প্রয়োজন পড়তো না এবং একগামীতারও হয়ত প্রচলন ঘটার প্রয়োজন পড়তো না। তবে মানছি যে এগুলো্র কোনটাই হাতে কলমে প্রমাণিত অনুকল্প নয়, ফসিল রেকর্ড বা ডিএনএ থেকে এগুলোর প্রমাণ বের করা সম্ভব হবে বলে তো মনে হয় না।
@বন্যা আহমেদ,
গড় আয়ু বৃদ্ধিতে কি সাংস্কৃতিক বিবর্তনের বেশি (বা আদৌ) অবদাল আছে না কি চিকিৎসা বিজ্ঞানের উন্নতি? আমি নিশ্চিত না। রেফারেন্স দিলে সুবিধা হয়।
এখানেই বোধহয় মূল বিতর্ক। আমার মনে হয় না নানা নানী দাদা দাদী দের বেঁচে থাকার প্রয়োজনটা বৈবর্তনিক। এটা কালচারাল। অর্থাৎ যেটা বলতে চাইছি এমন কোন জীন কি নির্বাচিত হয় যা দাদা দাদী নানা নানীদের নাতি নাত্নীদের জন্ম না হয়া পর্যন্ত বাঁচিয়ে রাখে? দাদা নানীরা না থাকলেও সন্তান বাচত শুধু বাবা মায়েদের লালন পালনে। এমনও তো হতে পারে যে গড় আয়ু বাড়ার জন্য মানুষ তার নাতি নাত্নীদের দেখতে পাচ্ছে আর সেই কারণে তাদের সাথে সময় কাটাতে পারছে। যার সাইড এফেক্ট হিসেবে নাতি নাত্নীদের বেড়ে ওঠায় বাড়তি সুবিধা হচ্ছে। এ সবই একজ্যাক্ট সাইন্স না হওয়াতে বা রেফারেন্স না জানাতে আমি নিশ্চিত করে কিছু বলতে পারছি না। হয়ত তুমিই ঠিক।
বাবা মা মধ্যে বন্ধন দৃঢ় করার মূল কারণ তাহলে শিশুর অসহায়ত্ব। অর্থাৎ বাবা মা মধ্যে বন্ধন দৃঢ় করার সাথে প্রত্যক্ষ সম্পর্কটা শিশুর অসহায়ত্ব। একগামিতা তো বাবা মা এর মধ্যে দৃঢ় বন্ধনেরই এক লক্ষণ।
শিশুর অসহায়ত্ব—> বাবা মা মধ্যে দৃঢ় বন্ধন —> একগামিতা। আমিও তাই বলেছিলাম আমার আগের লেখায়। এখানে আমরা একই কথাই বলছি, যদিও একটু ঘুরিয়ে।
@অপার্থিব,
কি নিষ্ঠুর এই বিবর্তনবাদ! এর থেকে আমদের মুক্তির কোন উপায়ই ত নাই দেখছি না। কী হবে এই নিষ্ঠুর বিজ্ঞান শিখে, এত দীর্ঘ্য আলোচনা করে। আল্লা পাক কি আমাদের এই নিষ্ঠুর দানবের হাত রক্ষা করব্রন না—পাঁচ ওয়াক্ত নামায পড়া, রোজা রাখা , হজ্জ্ব করা —-ইত্যাদি! এ সবই কী বৃথা যাবে?
@আবুল কাশেম,
আমার মনে হয় বিবাহের আগে মেয়েদেরকে সাধারণত বাবার সংসারে অপরের আমানত হিসেবে রাখা হয়। সাধারণত বাবা মায়েরা বিয়ে ছাড়া অর্থাৎ স্বামী ছাড়া মেয়েদের নিজস্ব স্বতন্ত্র অস্তিত্ব আছে বলে মনে করেননা। বিয়ের পরে মেয়েটি নিজস্ব একটি সংসারের অধিকারী হয় তা তাকে যতটাই অবহেলা অনাদর করা হোক না কেন। তখন সবাই বলে স্বামীর সংসার হচ্ছে তার প্রকৃত সংসার, এবং এ সংসারের সমস্ত দায়িত্ব তার (যদিও অধিকাংশ সংসারে তার এ দায়িত্ব পালনের জন্য তাকে কাজের মেয়ের মতই মান দেয়া হয়। কাজের মেয়ের সাথে তার পার্থক্য হল গৃহিনী হলেন অবৈতনিক গৃহকর্মী যার মান গৃহকর্মীরও অধম।) এজন্য তার মুখ ফোটে নিজের সংসারে এসে, আর এ মুখ ফোটার আরেকটি কারণ হয়ত বেশি অনাদর, অবহেলা ও অসম্মানের ফলে সৃষ্ট অশান্তি ও বিরক্তি।
আর বিয়ের আগে ছেলেদের কাজের পথে সামাজিকি বাধা থাকে কম, বাবা-মার পক্ষ থেকে প্রায়ই থাকে প্রশ্রয়, নিজের মত বাস্তবায়নের স্বাধীনতা তা বাবা-মা বা সমাজের মনঃপুত হোক বা না হোক। সে তুলনায় একটি মেয়ের প্রশ্রয় বা স্বাধীনতা কিছুই থাকেনা, বরঞ্চ থাকে অনেক সামাজিক ও পারিবারিক বাধা। বিয়ের পর একটি ছেলের ঘাড়ে অনেক দায়িত্ব পড়ে ঠিকই তবে সামাজিক বা পারিবারিক বাধা কিন্তু থাকেনা। অথচ একটি মেয়ের বিয়ের পর সাধারণত তাকে জড়িয়ে থাকা বাধার শেকল আরো শক্ত হয়, দায়িত্ব তো বাড়েই তা সে ঘরে বাইরে যেখানেই হোক।কিন্তু দুঃখের বিষয় সে তার কাজের যথাযথ মূল্যায়ন পায়না। ছেলেটি চাইলেই পারে তার মন মতো কাজ করতে, হয়ত দায়িত্বের চাপে ও ব্যস্ততায় তা হয়ে ওঠেনা কিন্তু মেয়েটিকে হয়ত তার পছন্দের কাজ বা চিন্তাটি ছাড়তে হয়। তাই আমার মনে হয়,
বিয়ের আগে মেয়েদের মাঝে কিছুটা প্রাণের সঞ্চার থাকলেও বিয়ের পর অধিকাংশই কলের পুতুলে পরিণত হয়। মেয়ে এমন একটি সুপ্ত কলি যে প্রাণভরে কলি হিসেবেও আত্মপ্রকাশ করতে পারেনা ফুল হয়ে ওঠা তো যোজন যোজন দূরের ব্যাপার।
@লীনা রহমান, সুন্দর বিশ্লেষন। :yes:
@লীনা রহমান,
পুরুষ তাকে বিকশিত হতে দেয়না, কিন্তু অপবাদ দিবে এরা ইচ্ছে করেই ধর্মের বেড়াজালে নিজেকে আবদ্ধ করে রাখে, এরা বিকশিত হতে জানেনা। এখন শুনা যায় বিবর্তনের কোন এক ধারায় নাকি দাজ্জাল মার্কা একপ্রকার বউ জন্ম নেয়। আল্লাহর এমনই কুদরতি!
@আকাশ মালিক, :yes: :yes:
@লীনা রহমান,
আপনি যা লিখেছেন তার সাথে আমি প্রায় একমত।
আমদের দেশের নারীরা সত্যি আপরিসীম অন্যায় ও নির্যাতনের শিকার হয় প্রত্যেক পর্যায়ে।
এর অন্যতম প্রধান কারণ মনে হয় ধর্মের নাগপাশ।
@আবুল কাশেম,
অভির লেখা থেকে এরকম একটা সিদ্ধান্তে অনেক পাঠকই আসতে পারেন। আর এ জন্যই আমার এত আপত্তি বিবর্তনীয় মনোবিদ্যা নিয়ে। একটু অসাবধান হলেই বিজ্ঞান থেকে পপ বিজ্ঞানের স্তরে পদস্খলিত হয়ে যেতে পারে। সামজবিদ্যা সব কিছুই যেমন সামাজিক প্রেক্ষাপট থেকে বিচার করার চেষ্টা করে বিবর্তনীয় মনোবিদ্যা আবার অনেক সময়ই ঠিক তার উল্টো ভুলটা করে থাকে। আজকে একবিংশ শতাব্দীতে বসে আমরা ভুলে যাচ্ছি যে মস্তিষ্ক এবং বুদ্ধিমত্তার বিকাশের কারণে মানব বিবর্তন অনেক সময়েই অন্য রূপ ধারণ করতে পারে, শুধু জিন ট্রান্সফার এখানে মূখ্য বিষয় নাও হতে পারে, এখানে কালচারাল এবং সামাজিক বিকাশটাও উল্লেখযোগ্য এবং তাই মানব বিবর্তন খুব ইউনিক একে যে কোন একটা ছকে ফেলে বিচার করলে ভুল হয়ে যাবে। আজকে যে মেয়েরা ছেলেদের সমানাধিকার ভোগ করে তাদের ক্ষেত্রে ‘পুরুষ মানুষ দুই প্রকারঃ জীবিত এবং বিবাহিত’ টাইপের কথাগুলো ( ‘কথা’র বদলে এখানে আরও শক্ত কোন শব্দ ব্যবহার করতে ইচ্ছা করছে, কিন্তু ব্লগে শালীনতার নিয়ম ভংগ করতে চাইনা দেখে করলাম না 🙂 । । লীনা এবং স্বাধীন এর উত্তরের সাথে এখানে একমত পোষণ করছি। ট্র্যডিশানাল সমাজগুলোতে অনেক সময়ই মেয়েরা বিয়ের মাধ্যমে প্রথম বারের মত তার একটা আইডিন্টিটি প্রতিষ্ঠা করতে সক্ষম হয় (হ্যা কথাটা অদ্ভুত শোনালেও সত্যি, আমাদের সমাজে মেয়েদের অবস্থা এত্তাই করুন), তার ফলে সমাজে তারা অনেক কিছুতেই সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করতে পারে। কিন্তু যে সম্পর্কে নারী এবং পুরুষ সমান অধিকার ভোগ করে সেখানে এই ‘মরা বাঁচা’র প্রশ্নটা মেয়ে এবং ছেলে উভয়ের জন্যই সমান হওয়ার কথা। আমার চেয়ে অভি কোন অংশে কম ‘জীবিত’ বলে তো মনে হয়না অভির এইসব লেখার সরসতা দেখলে :-Y ( দুঃখিত, ব্যক্তিগত এই উদাহণটি ব্যবহার না করে পারলাম না)। বাচ্চার আপ্লটিমেট দায়দায়িত্ব মেয়েদের বলে এখানে কিছু বাড়তি ফ্যাক্টর কাজ করতে পারে তবে আজকাল তো সেটাও তো বদলাতে শুরু করেছে। আমার মতে এই ট্রাডিশানাল ব্যখ্যাগুলোর বাইরেও আরও কিছু ব্যখ্যা এখানে আসা উচিত আর সবকিছুকেই বিবর্তন এবং মেটিং মাইন্ড দিয়েই ব্যাখ্যা করতে হবে এই মনোভাবটাও পরিহার করা উচিত। অভির লেখাটার লাইন বাই লাইন রিবিউটাল দেওয়ার ইচ্ছা আছে, সময় করতে পারলে আজকেই দেওয়ার চেষ্টা করবো 🙂 ।
@বন্যা আহমেদ, ঘরের ঝগড়া কি ব্লগে আসা ঠিক হচ্ছে। এবার তুমিও লেখ বিবর্তনীয় মনোবিদ্যার ঘোড়ার ডিম।
@বিপ্লব পাল,
একদম ঠিক কথা 🙂 আমার তো আইনস্টাইনের মতো প্রতিভাও নাই, নারীসঙ্গও (সেজন্যই) অনুপস্থিত। তাও দেখি ঝামেলা থেইকা মুক্তি নাই 😀
যাক বন্যার রিবিউটাল দেখার প্রত্যাশায় থাকি … কি আর করা। ‘রিবিউটালের রিবিউটাল’ লিখনের পারমিশন বোধ হয় পাব না 😀
@অভিজিৎ,
তাতে কি -ইচ্ছাত ষোল আনাই আছে।
এটম বনাম আল্লার মল্লযুদ্ধ ছেরে ” তোমায় কে বাসিয়াছে ভাল” টাইপের উপন্যাস লেখায় মন দাও-জীবন নারীময় হইবে।
@বিপ্লব পাল,
😀 , কি কমু? কওয়ার কিছু নাই।
@বিপ্লব পাল,
:laugh:
@বন্যা আহমেদ,
সহমত অনেকাংশেই। আমি এই সিরিজটাতে নিয়মিত আছি এ কারণেই। বিবর্তনীয় মনোবিদ্যা নিয়ে আমার আপত্তি নেই, যদি সেটা সতর্কতার সাথে ব্যবহার করা হয়। আশা করি অভিজিৎ’দা এই বিষয়টি নিজেও সব সময় মাথায় রাখবেন। যতই ফ্যন্টাসি হিসেবে বলুন না কেন, পাঠক দেখবে আপনি লিখছেন বিজ্ঞানের বিষয় নিয়ে। সুতরাং লেখার সময় বাড়তি সতর্কতা থাকতে হবে। আর ঘরে যদি পিয়ার-রিভিউয়ার 😉 থাকে তবে তো পোষ্ট করার আগে রিভিউ করিয়ে নেওয়াটা এক প্রকার ফরজ কাজের মধ্য পরে 😀 ।
@বন্যা আহমেদ,
মুক্তমনায় এই টাইপের শিরোনাম আশা করিনি ! 🙂
অনেক মজা পেলাম। :laugh: :rotfl: 🙂
চলুক। :yes:
আমি অভিজিতের একটা ব্যাপারের সাথে একমত না। সেটা হচ্ছে প্রতিভাবান পুরুষের নারী লিপ্সা নিয়ে। আইনস্টাইনের জীবনে ৭-৮ নারী ছিল-এটা কি খুব বেশী কিছু পাশ্চাত্যের গড়ের তুলনায়? আমেরিকাতে একজন পুরুষ সারা জীবনে ৭ বার বিয়ে করে-৫০-৬০ জন নারীর শয্যাসঙ্গী হয়। সেখানে আইনস্টাইনের পরিসংখ্যান ত সাধু। আমাদের পাতলা বাঙালী পেটে তা না সইতে পারে-কিন্ত পাশ্চাত্যের গড়ের তুলনায় সেসব কিছুই না। ভারতীয় বিজ্ঞানীদের নামে এসব শোনা যায় না। সিভি রামন বা মেঘনাদ সাহা ঋষিতুল্য ছিলেন। সুতরাং আমার মনে হয় প্রতিভাবান হলেই মেয়ে নিয়ে বেশী ছুক ছুক করে এটা কল্পিত লাইন। যে সংখ্যাতত্ত্ব দেওয়া হলে তাতে প্রমানিত হয় না, উনারা গরের চেয়ে বেশী লীলাময় ছিলেন। একজন মুসলিম বিজ্ঞানী যেকারনে আস্তিক হয়-এক জন পাশ্চাত্যের বিজ্ঞানীর ঠিক সেই কারনেই একাধিক সঙ্গিনী থাকে। সামাজিক অবস্থান ছারা এটা আর কিছুই না।
@বিপ্লব পাল,
আমার মনে হয়ে যেটা পরিস্কার করা উচিত ছিল সেটা হল, প্রতিভা নারী লিপ্সার কারণ নয়, একটা বৈবর্তনিক কৌশল (অচেতন)। প্রতিভাবানদের প্রতিভা দ্বারা নারীদের আকর্ষণ করার টোপ হিসেবে কাজ করে (আবারো বলছি বৈবর্তনিক প্রবৃত্তির কারণে, সচেতন ইচ্ছার জন্য নয়), যার কারণে নারীরাই প্রিভাবানদের প্রতি আকৃষ্ট হয়। নারীরা নিজেই আকৃষ্ট হয়ে এগিয়ে আসলে তা প্রত্যাক্ষ্যান করা না করা অন্য বিবেচনার কথা।
@অপার্থিব,
:yes: ।
আদিম কালের শিকারী সংগ্রাহক পরিস্থিতিতে পুরুষদের রিসোর্স ছিল শক্তিমত্তা। দৈহিক মারামারি বা প্রতিযোগিতার মাধ্যমে পুরুষেরা এটি অর্জন করতে চাইতো, আর প্রকারান্তরে নিশ্চিত করতো অধিক নারীর প্রাপ্তি। আজকের সমাজে আসলে আমাদের মাথায় রাখতে হবে, অর্থকড়ি, প্রতিভা, স্মার্টনেস, চৌকষগুণাবলী সবকিছুই বিবর্তনীয় দৃষ্টিকোন থেকে এক ধরণের রিসোর্স। সেজন্যই সেগুলো অর্জনের জন্য প্রতিযোগিতা হয়। মেয়েরাও অর্থ স্ট্যাটাসে বলীয়ান, কেতা দুরস্ত কিংবা স্মার্ট ছেলে পছন্দ করে। এগুলো সবই আসলে সঙ্গমী মননের অভিব্যক্তি। আমি আমার আগের পর্বে (সহিংসতা, নির্যাতন এবং ‘লুল পুরুষ’ উপাখ্যান – একটি বিবর্তনীয় অনুসন্ধান) দেখিয়েছিলাম, যে, অর্থ-প্রতিপত্তি আর ক্ষমতায় বলীয়ান পুরুষেরাই বেশি পরকীয়ায় বেশি আসক্ত হন বেশি। কারণ তাদের রিসোর্স থাকে অন্য প্রতিযোগিদের থেকে বেশি। আমাদের অস্বস্তি লাগলেও ব্যাপারটা এক ধরণের বিবর্তনীয় কৌশলই বটে। জিওফ্রি মিলার তার অসাধারণ গ্রন্থ ‘সঙ্গমী মনন’ -এ (The Mating Mind: How Sexual Choice Shaped the Evolution of Human Nature) এগুলো নিয়ে খুব চমৎকার আলোচনা করেছেন। বিপ্লব, বইটা পড়ে দেখতে পারো।
@অপার্থিব, লেখাটায় বেশ কিছু অসতর্কতা রয়েছে। এর থেকে বেশ কিছু ভুল ধারণার সৃষ্টি হতে পারে( আমার মতে খুব সতর্ক না থাকলে বিবর্তনীয় মনোবিদ্যার যে কোন লেখাতেই তা ঘটার সম্ভবা থাকে খুব বেশী) এখানে পরিষ্কার করা দরকার যে, প্রতিভা থাকলেই পুরুষ নারী লিপ্সু হবে তা নয়, তবে প্রতিভাবান পুরুষেরা তাদের এই ‘বিশেষ গুণ’টিকে নারীদের মনোযোগ আকর্ষনের কাজে ব্যবহার করতে পারে । আর বড় বড় বিজ্ঞানী, খেলোয়ার বা সাহিত্যকদের উদাহরণ যেভাবে দেওয়া হয়েছে সেটাতেও বোধ হয় বোঝার ভুল আছে। তাদের কথা আমরা বেশী জানি কারণ তারা খবরে আসেন, মিডিয়া এসব খবর প্রচার করে তাদের কাটতি বাড়ায়। আইন্সটাইন বা ক্লিন্টন যা করেছে তা এখানে অহরহ ঘটে, আমাদের দেশেও এ ধরণের ঘটনা ঘটে, সামাজিক প্রেসারের কারণে হয়তো কিছু কম ঘটে বা ধামাচাপা দেওয়া হয়। আমাদের দেশে নিম্নবিত্ত সমাজে ডিভোর্স, বহুগামীতা বা পরকীয়তা অনেক বেশী দেখা যায়, সেখানে তো প্রতিভাবান সেলিব্রিটি পুরুষেরা থাকে না। লেখাটা তথ্যগুলো ঠিক আছে ধরে নিলেও এর সবগুলো টোন এবং কনক্লুশানের সাথে কিছুতেই একমত হতে পারছি না।
@বন্যা আহমেদ,
আরে এই কথা আর কতভাবে পরিস্কার করুম! প্রতিবারই পর্ব লিখে তা হলে উপরে ‘সতর্কবানী’ ঝুলায় দিতে হবে। প্রতিভা থাকলেই নারীলিপ্সু হয় না, কিন্তু প্রতিভাকে আইনস্টাইনের মতো অনেক ‘প্রতিভাধরেরাই’ নারীলিপ্সার নিয়ামক হিসেবে ব্যবহার করেছেন। আমি তো করতেসি না 🙂 (অবশ্য এখানে প্রতিভা না থাকাটাও কারণ হতে পারে)।
এর আগেরপর্বেই লিখেছিলাম –
ব্যাপারটা প্রতিভার জন্যও একইভাবে খাটে। কিন্তু এরকম সতর্কবানী প্রতিটি পর্বে দিতে থাকলে তো অবস্থা কেরোসিন হয়ে যাবে। আমি তো ভাবছিলাম বুদ্ধিমানের জন্য ঈশারাই কাফি… 🙁
@অভিজিৎ, <
এই লেখাটার সমস্যাটা ‘একবার না একশবার’ সতর্কবানী দেওয়া হয়েছে কি হয়নি তা তে নয় বরং সমস্যাটা বোধ হয় এর টোনে। ব্যাপারটা অনেকটা সব নবীই রসুল না কিন্তু সব রসুলই নবী ধরণের। আমার মতে, ইচ্ছাকৃত বা অনিচ্ছাকৃত এখানে যেটা পরিষ্কার হয়নি তা হল, প্রতিভাবান ছেলেরা নারীলিপ্সু হলে তারা এই প্রতিভাকে মেয়েদের দৃষ্টি আকর্ষন করতে ব্যবহার করতে পারে রিসোর্স হিসেবে। লেখাটার বিভিন্ন জায়গায়ই বিভিন্ন উক্তিতেই কিন্তু এর উল্টোটাই প্রকাশ পেয়েছে। মনে হচ্ছে যেন ছেলেরা প্রতিভার বিকাশই ঘটায় বা অপরাধের সাথে জড়িয়ে পড়ে যেন শুধুমাত্র মেয়েদের দৃষ্টি আকর্ষন করার জন্য। যেমন ধর নীচের এই উদ্ধৃতিতেঃ
লেখাটার আরেকটা আ্যলার্মিং দিক হচ্ছে দুই একটা গ্রাফে মেয়েদের প্রতিভার কথা আসলেও লেখাটা জুড়েই কিন্তু শুধু ছেলেদের কথাই এসেছে। এটা ঠিক যে জ্ঞান বিজ্ঞানে মেয়েদের পদচারণা বেশিদিনের নয়,কিন্তু গত এক শতকে হিসেব করলে এর সংখ্যা নিতান্তই কমও নয়, এর আগেও খুঁজলে কম হলেও কিছু তো পাওয়াই যায়। লেখকের ইচ্ছাকৃত বা অনিচ্ছাকৃত ভুল বা অবহেলা (লেখককে বহু বছর ধরে চিনি বলে এখন পর্যন্ত অনিচ্ছাকৃত বলেই মনে হচ্ছে ব্যাপারটা 🙂 ) জন্যই হোক না কেন, লেখাটা পড়ে মনে হচ্ছে ছেলেদেরই শুধু প্রতিভা থাকে এবং সেটা নারীসংগ পাওয়ার পরপরি ধ্বংস হয়ে যায় আর ছেলেরাই শুধু মেয়েদের দৃষ্টি আকর্ষন করার চেষ্টা করে মেয়েদের কখনই ছেলেদের দৃষ্টি আকর্ষন করার ইচ্ছা বা প্রয়োজন হয় না। এটা যদি কোন ফালতু ব্লগ না হয়ে বৈজ্ঞানিক কোন লেখা হয়ে থাকে তাহলে আমি আশা করবো যে লেখক এখানে মেয়েরা ছেলেদের আকর্ষিত করার জন্য কি ধরণের রিসোর্স ব্যবহার করে সেটারও উল্লেখ থাকা দরকার। আর মেয়েদের প্রতিভা কিসে ব্যনহৃত হয় সেটাও উল্লেখ করা দরকার। যেখানে সামাজিকভাবে ( এখনো বেশীরভাগ সমাজেই) মেয়েদের প্রতিভা ছেলেদের সমান নয় এটা নিয়ে সন্দেহ প্রকাহ করা হয় সেখানে এই ধরণের তথ্যগুলো ইঙ্কলুড করার খুবই জরুরী বলেই মনে করি। এখানে যদি মানুষের ক্ষেত্রে বিবেচ্য বিবর্তনীয় মনোবিদ্যাই বিবেচ্য বিষয় হয়ে থাকে তাহলে মেয়েদের কথাটা না আনলে লেখাটাকে শুধু ৫০% কমপ্লিট বলা যায়, ওহ না ভুল হল, মেয়েদের সম্পর্কে গ্রাফ ৩ টাতে ভাষা ভাষা ৩ টা লাইন দেওয়া জন্য ৫১% কমপ্লিটও বোধ হয় বলা যেতে পারে।
এখন এই পর্যন্তই, ‘প্রতিভাবান কিছু পুরুষের’ কার্যাবলী ‘তদারক’ করার জন্য এখনই ছুটতে হচ্ছে বলে আর বিস্তারিতভাবে লিখতে পারছি না এখন 🙂
@বন্যা,
বড় সড় সমালোচনার জন্য ধন্যবাদ। যদি কখনো লেখাটা কোন বইয়ের অংশ হয় – তোমার সমালোচনাগুলো নিঃসন্দেহে আমার বক্তব্যকে গোছাতে সাহায্য করবে। কিছু ব্যাপারে আমার মতামত দেই।
জিওফ্রি মিলার, ম্যাট রিডলী, সাতোসি কানাজাওয়া সহ অনেক বিবর্তনবাদী মনোবিজ্ঞানীই কিন্তু প্রতিভা, স্মার্টনেস, ইন্টেলিজেন্স – এগুলোকে যৌনতার নির্বাচন বা সেক্সুয়াল সিলেকশনের ফল বলে মনে করেন। এখন প্রতিভার উদ্ভব আর বিকাশে ‘সেক্সুয়াল সিলেকশন’ ব্যাপারটা কাজ করে থাকলে দৃষ্টি আকর্ষনের মাধ্যমে নির্বাচিত হবার ব্যাপারটি অবধারিতভাবেই বিবর্তনের ইতিহাসে কাজ করেছিলো। আগে হয়তো প্রতিভা কাজ করতো খুব স্পেসিফিক ছোট স্কেলে। যে ব্যক্তি তার উদ্ভাবনী শক্তি দিয়ে নিখুঁত এবং ধারালো অস্ত্র বানাতে পেরেছিলো – এবং গোত্রকে দিয়েছিলো অধিক শিকার এবং মাংসের নিশ্চয়তা, তারা হয়ে উঠেছিলো গোত্রের হার্টথ্রব। এ ধরণের প্রতিভাধর টুল মেকারেরা নারীদের দৃষ্টি আকর্ষণ করতে পেরেছিলো অধিক মাত্রায়। ফলে তারা পার্টনার দিসেবে নির্বাচিত হয়েছিলো। একইভাবে পুরুষেরাও নারীদের বিভিন্ন প্রতিভাকে নির্বাচিত করেছিলো, করেছিলো বুদ্ধিমত্তা, স্মার্টনেস এবং করেছিলো সৌন্দর্যকেও। সেজন্যই নারীরা আজও সৌন্দর্যের প্রতি সচেতন থাকে (বিলিয়ন ডলারের কসমেটিক্স ইন্ডাস্ট্রি মূলতঃ নারীদের জন্যই), কারণ পুরুষেরা সুন্দরীর নারীর প্রতি লালায়িত হয়। ব্যাপারগুলো তো মিথ্যে নয়!
তবে ব্যাপারটা এখন সাইক্লিক হয়ে গেছে। এটা ঠিক প্রতিভাধর হয় কেবল নারীদের আকর্ষণের জন্য – এটা ঢালাওভাবে বলা ঠিক নয়, কিংবা আরো ভাল ভাবে বললে ‘পলিটিকালি কারেক্ট’ নয়, কিন্তু বিবর্তনের ইতিহাসের প্রেক্ষাপট বিবেচনা করলে ‘দৃষ্টি আকর্ষনের’ ব্যাপারটা একেবারে ফেলে দেয়া যাবে না। আর অনেক প্রতিভাধরেরাই (আমি বাদে) যে নিজেদের প্রতিভাকে নারীলিপ্সার কাজে ব্যবহার করেছেন, সেটা তো আমার লেখায় উদাহরণ দিয়েছিই।
তারপরেও লেখায় কিছুটা অসম্পুর্ণতা আছে, সেটা স্বীকার করছি। সেগুলো দেখি ঠিক করার চেষ্টা করব।
এই অসম্পুর্ণতার ব্যাপারটা স্বীকার করে নিচ্ছি। তবে এই লেখাটা একেবারেই পুরুষতান্ত্রিক লেখা। আমাদের মইনুল রাজু সদ্য বিয়ে করে পরলোকগত হয়েছেন, উনার সদগতি করার জন্যই খুব বেশি ব্যালেন্স করতে পারিনি, আসলে ইচ্ছেটাও ছিল না। কারণ, ব্যালেন্স করার জন্য লেখাটি লিখি নি; লিখেছি রাজুকে মৃত প্রমাণ করতে। কাজেই এই লেখায় ব্যালেন্স ভিউ না পাওয়ারই কথা। তবে একটি প্রশ্ন আমাকে প্রায়ই আন্দোলিত করে। ব্লগের নারীবাদীরা তো ফেনিয়ে ফেনিয়ে কেবল নারীদের নিয়ে বহু লেখা অতীতে লিখেছেন, এখনো লিখছেন। সে লেখাগুলোতে পুরুষেরা ‘ব্যালেন্সড’ভাবে উঠে আসে কই? আমি কাঠখোট্টা বিজ্ঞান নিয়ে লিখি বলেই আমার কাছ থেকে কেবল ‘ব্যালেন্স করা’ লেখা আশা করলে ব্যাপারটা একটু অন্যায় হয়ে যায় না? নারীবাদীরা যদি পারে, আমি কেন কেবল পুরুষদের নিয়ে লেখা লিখবার পারুম না? আমারো তো মাঝে মধ্যে পুরুষবাদী হতে মঞ্চায়… 🙁
@অভিজিৎ,
এতক্ষণে অরিন্দম কহিলো বিষাদে ……………
এক মৃত আরেক মৃতরে মৃত প্রমাণ করতে চায়! অন্ধ দেখায় অন্ধরে পথ!! দুনিয়াটাতো বড় আজব জায়গারে ভাই!!!
যাক, লাইনে আসছো এইবার। আমি পুরুষবাদী হবার পিছনে বহু আগে এই যুক্তিই দিছিলাম একবার বন্যারে। মামুন ভাইও তাতে সায় দিছিলো।
পুরুষবাদী হইতে সব পুরুষেরই ইচ্ছা করে। এতে লজ্জার কিছু নাই। তবে, ধর্মেও আছি আবার জিরাফেও আছি ধরনের গাছেরটাও খাইবা সেই সাথে তলারটাও কুড়াবা তা অবশ্য চলবো না। পুরুষবাদী হইতে চাইলে বিশুদ্ধ পুরুষবাদীই হইতে হইবো আমার মতন। নইলে বেইল নাই। 🙂
@ফরিদ আহমেদ,
হ তারপর আপনের মত মাহফুজ সাহেবের দেয়া ‘ধর্ষণকারী’ খেতাব পাই আর কি!
@অভিজিৎ,
:laugh:
আপনার শেষের দিকের মনোভাবের সাথে একমত পোষণ করছি। শুধু নারী-পুরুষের ব্যাপারই নয়, যেকোন ব্যাপারে সার্বক্ষণিক ব্যালান্সের দাবিটা খুব উপকারী বলে মনে হয়না। মাঝে মাঝে এক একটি জিনিসের উপর ফোকাস করার প্রয়োজন পড়ে।
@বিপ্লব পাল,
আরো একটু ব্যাখায় দেই। ময়ুরের পুচ্ছ দিয়ে। মুয়ুরের লম্বা পুচ্ছ ময়ুরীদের আকর্ষন করে আর সেকারণে ময়ুরীরা লম্বা পুচ্ছ ওয়ালা ময়ুরের প্রতি আকৃষ্ট হয়। ময়ুরও সাদরে তাদের গ্রহণ করে। এটাকে কে মুয়ুরের ময়ুরী লিপ্সা বলা ঠিক হবে না। ছেলেদের প্রতিভাটাও ময়ুরের লম্বা পুচ্ছের মত।
আরেকটা কথা আগের মন্তব্যে বলা হয়নি বা অসম্পূর্ণ থেকে গেছে সেটা হল নারীদের আকৃষ্ট হবার ক্রিয়াটি আর তা নরদের গ্রহণ বা প্রত্যাখানের ব্যাপারটি। এটা সামাজিক বা কালচারাল ব্যাপার। রক্ষনশীল সমাজে নারীরা তাদের আকর্ষণ বোধ করলেও সামাজিক ইনহিবিশনের/মূল্যবোধের জন্য তা ব্যক্ত করে না। প্রতিভাবান পুরুষও সেই একই সামাজিক ইনহিবিশনের/মূল্যবোধের জন্য আকৃষ্ট নারীদের (যারা সাহস করে এগিয়ে আসেও) এড়িয়ে চলে, যেটা হয়ত সিভি রামন বা মেঘনাদ সাহার ক্ষেত্রে প্রযোজ্য।
@অপার্থিব, ভাল লেগেছে। :rotfl: :laugh: :lotpot:
@বিপ্লব পাল,
অমর্ত্য সেনের নামেও কি কি যেন শুনেছিলাম? রবি শংকর?
@বিপ্লব পাল,
উনি কিছু কিছু জায়গায় ‘নারীলিপ্সা’ ব্যবহার না করে নারীপ্রেম ব্যাবহার করলে বোধ হয় সঠিক হত।
সাতোশি কানাজাওয়ার ‘Why productivity fades with age: The
crime–genius connection’ এ ব্যপারটা পরিস্কার করা হয়েছে। আমাদের আদি পূর্বপুরুষদের বিশেষ করে দুটো বিষয়ে প্রতিযোগিতামূলক মেধা ব্যয় করতে হতো – খাদ্য সংগ্রহের জন্য শিকার ও বংশ বিস্তারের জন্য নারী । আধুনিক বিবাহিত পুরুষদের এ দুটো বিষয়ে মেধা ব্যয় হ্রাস পাওয়ায় এর সুদূর প্রসারী নেতিবাচক প্রভাব পড়ে তাদের সার্বিক প্রতিযোগিতামূলক মনোভাবে । অনেক ক্ষমতাবান ব্যক্তি ও সফল বুদ্ধিজীবীদের তাই বিবর্তনীয় প্রতিযোগিতামূলক মনোভাব টিকিয়ে রাখতে দুর্নীতি ,বহুগামিতা , বিবাহ-বিচ্ছেদ ইত্যাদির আড়ালে সার্বক্ষনিক শিকারী সেজে থাকতে হয়। দূরদর্শীরা চিরকুমার থাকেন।
@সংশপ্তক,
ঠিক। আমার লেখাটির বড় একটা অংশই পেপারটার উপরে ভিত্তি করে লেখা। আসলেই চিন্তা জাগানোর মত পেপার।
ধন্যবাদ আপনাকে মন্তব্য করার জন্য।
এটার মধ্যে বিবর্তনকে টানা বোধ হয় অনেকেই আপত্তি করবে। কারন বয়সের সাথে আমাদের মস্তিস্কের ক্ষমতাও কমতে থাকে। আমি যদ্দুর জানি ৫০০০ বছর আগে মানুষের গড় আয়ু ছিল ২২ বছর-অর্থাৎ জীবনের বাকী বছরগুলো আধুনিক চিকিৎসা বিদ্যার দান।
তবে এটা ঠিক নারীর ওপর অধিকার অর্জনের জন্যে পুরুষ প্রতিযোগী হয়-আমার একটা গল্প মনে পড়ল। তখন ১১-১২ এ পড়ি আর ভারতে ওই দুটো বছর সব থেকে গুরুত্বপূর্ন-কারন ১২ ক্লাসের পরে যে কম্পিটিটিভ পরীক্ষাগুলি দিতে হয় সেটাই ছেলেদের ক্যারিয়ার গড়ে দেয়। নরেন্দ্রপুর রামকৃষ্ণ মিশনে তখন মাধ্যমিকে রাঙ্ক করা সব কটা ছেলে পড়ে-অর্থাৎ রাজ্যের সেরা ছেলেদের ভীর। এদিকে মিশনের পাঁচিলে চৌহাদ্দিতে মেয়েদের ঢুকতে দেওয়া হত না। মানে কলেজ ক্যাম্পাসের ১২০০ একর জমিতে মেয়েদের প্রবেশ নিষেধ-ব্রহ্মাচর্য শ্রম বলে কথা। শুধু রবিবারে মায়েরা আর বোনেরা আগাম অনুমতি সাপেক্ষে ঢুকতে পারত। তাও হোস্টেলে বা কলেজে ঢোকার অনুমতি তাদের ছিল না। সে এক আজব পৃথিবী। ছাত্ররা একদম নারী বর্জিত পবিত্র জীবনে পঠন পাঠন করবে-এটা হচ্ছে মিশনের গোল ( বা ছাগল) যায় বলুন না কেন।
এদিকে গিল্টি বাই এসোশিয়েশন বলে একটা জিনিস কাজ করে। ওখানে দিনে রাতে ভারতীয় দর্শনের ওভারডোজ চলত। সবাই এক কানে ঢুকিয়ে ওকানে বার করে দিত-তবে কিছু কিছু প্রভাব থাকেই-কিছু না হলেও জীবন জিজ্ঞাসা ঢুকেই যায়। আমার মনে আছে এক গভীর রাত্রে ওখান কার স্টাডি রুমে হঠাৎ করে কার মাথায় ঢুকলো আচ্ছা আমরা এত খাটছি কেন-মানে এত পড়াশোনার চাপ নিয়ে কি হবে?
স্টাডিরুমে তখন ১৭ বছরের ডজন দুয়েক কিশোর। মোটামুটি সবাই পরিস্কার ভাবেই একমত হল-তাদের জীবনে আর কোন লক্ষ্য নেই-তারা একপিস সুন্দরী বৌ চাই জীবনে। আর সেটা ভাল ক্যারিয়ার ছারা আসবে না। আমি একটু অবাক হয়েছিলাম। কারন তখন রেসিডেন্ট সন্নাস্যীদের দর্শনের চাপে আমার ব্রেইন ওয়াশড হয়ে বসে আছে এবং ব্রিলিয়ান্ট ছেলেগুলো শুধুমাত্র সুন্দরী মেয়ে পাবার আশায় পড়াশোনা করছে এটা ভাবতেই পারতাম না। পরে দেখেছি আসলে ওরাই ঠিক ছিল-আমিই মহারাজদের প্রভাবে দর্শনে ডুবে ছিলাম। কে জানে তখন মাথায় মেয়ের চিন্তা ঢুকলে রেজাল্ট আরেকটু বা অনেকটা ভাল হত। কারন মেয়ের চিন্তা মাথায় ছিল না বলে প্রতিযোগি মনোভাবটা উড়ে গেছিল (!)-এসবই তত্ত্ব- তবে অভিজিতের লেখা পড়ে মনে হচ্ছে আমার ব্যাক্তিগত উপলদ্ধির সাথে মিলেই যাচ্ছে।
@বিপ্লব পাল,
আহা রে কি মিসাইলেন! আপ্নের জন্য সমবেদনা। 😀
পরলোকগত থুড়ি সদ্য বিবাহিত রাজুর স্মৃতির উদ্দেশ্যে… 🙂