মুক্তমনায় বিজ্ঞান বক্তা আসিফের দেয়া আগের একটি পোষ্টে মহাবৃত্তের প্রকাশনা নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়েছিল, অনেকেই গ্রাহক হওয়ার জন্য উৎসাহ দেখিয়েছেন। তারই পরিপ্রেক্ষিতে এখানে মহাবৃত্তের গ্রাহক হওয়ার জন্য আহ্বান জানানো হচ্ছে।
আমরা দীর্ঘদিনের পথপরিক্রমায় অনুধাবন করেছি যে, দেশে একটি স্বয়ংসম্পূর্ণ বিজ্ঞান পত্রিকার অভাব রয়েছে, যার মধ্য দিয়ে নিশ্চিত হতে পারে দেশের বিজ্ঞান চর্চার অগ্রগতি। মহাবৃত্তের প্রকাশনা সেই অভাব পূরণে অগ্রসর হয়েছে। শুধু পত্রিকা প্রকাশ করাটাই উদ্দেশ্য নয়, সেই সাথে এ ধরনের পত্রিকাকে প্রথমে নিয়মিত করা প্রয়োজন। একাজে ইতোমধ্যে এগিয়ে এসেছে মুক্তমনার সদস্যরা। তাই আমরা ডিসকাশন প্রজেক্টের প্রকাশনা মহাবৃত্তের জন্য গ্রাহক তৈরি করার উদ্যোগ নিচ্ছি। আমরা এখানে জোর দিচ্ছি সেইসব প্রিমিয়াম গ্রাহকদের যারা কেবল পত্রিকাটাই কিনবেন না, এটা নিয়মিত চালিয়ে নেবার জন্যই তাদের হাতকে প্রসারিত করবেন। যদি এই আহ্বানে যথার্থ সাড়া পাওয়া যায়, তাহলে ধীরে ধীরে মাসিক বিজ্ঞান পত্রিকার দিকে অগ্রসর হওয়ার মতো জায়গায় পৌঁছুনোর চিন্তা করা যাবে। এই পত্রিকা এবং ডিসকাশন প্রজেক্ট এর বিভিন্ন বিজ্ঞান বক্তৃতাকে কেন্দ্র করে যেসব মাল্টিমিডিয়া তৈরি হয়েছে সেগুলোকে শিক্ষার হাতিয়ার হিসেবে দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চল এবং দেশের বাইরে থাকা বাঙালিদের মধ্যে ছড়িয়ে দেওয়ার প্রচেষ্টা চালানো হবে। পাশাপাশি বিজ্ঞানের বিষয়ের উপর উচ্চমানের প্রামাণ্য চলচিত্র (ডকুমেন্ট্রি ফিল্ম) তৈরি করার চেষ্টা করা হবে। এর মাধ্যমেই সম্ভব হবে আগামীতে সবাইকে বিজ্ঞান আন্দোলনে যুক্ত করা। আসুন শুধু বাংলাদেশ নয়, আমরা পৃথিবীর দূরদুরান্তের অবস্থান করা বাঙালিদের মধ্যে বাংলায় বিজ্ঞানের আলো ছড়িয়ে দেই। বিজ্ঞান জানার মধ্যে দিয়ে নিজেদের অস্তিত্বকে গুরুত্বপূর্ণ করে তুলি। বিজ্ঞান অন্ধকারের প্রদীপ। এ প্রদীপ আরও প্রজ্জ্বলিত হোক, ছড়িয়ে পড়ুক আলো থেকে আলো, অন্তরে অন্তরে।
নীচে পে -প্যালের লিঙ্ক দেওয়া হচ্ছে। এই লিঙ্কটি শুধুমাত্র প্রিমিয়াম গ্রাহক হওয়ার জন্য। সবাইকে মনে রাখতে অনুরোধ করা হচ্ছে যে, এটি কোন সংখ্যাভিত্তিক পত্রিকা বিক্রির আহ্বান নয়। চারটি সংখ্যার প্রিমিয়াম গ্রাহকদের জন্য বাৎসরিকভাবে আপাততঃ ইউ.এস ১০০ ডলার অনুদান ধার্য করা হয়েছে (তবে কেউ যদি এর চেয়ে বেশি অনুদান দিতে আগ্রহী হন, তা আনন্দের সাথেই গ্রহণ করা হবে)।
:line:
মহাবৃত্তের প্রিমিয়াম গ্রাহক হোন |
.
:line:
গ্রাহক হবার পর ডিসকাশন প্রজেক্টের পক্ষ থেকে প্রত্যেক গ্রাহককে মহাবৃত্তের ছাপানো কপিটি অতি সত্ত্বর ডাকযোগে পাঠানোর ব্যবস্থা করা হবে।
ক্রেডিট কার্ডের মাধ্যমে পাওয়া ঠিকানার (পে প্যালের মাধ্যমে যেটা গ্রাহকদের কাছ থেকে পাওয়া যাবে) বদলে অন্য কোন ঠিকানায় যদি পত্রিকাটি পাঠাতে হয়, তবে গ্রাহকদের অবশ্যই [email protected] -এ ইমেইল করে জানাতে হবে।
ডিসকাশন প্রজেক্টের সাথে যোগাযোগের ঠিকানা
[email protected], discussionprojectbd.org
ফোন: ০১৯১২৯১৭৫৫৪।
আমরা মহাবৃত্তের জন্য ফান্ডরেইজিং এর শেষ পর্যায়ে পৌঁছে গেছি। এ পর্যন্ত পে প্যালের মাধ্যমে ১৮৫০ ডলার (পে প্যাল ট্রান্সেকশন সংক্রান্ত বিয়োজনের পর নীট ১৮০২.১৫ ডলার) পাওয়া গেছে। পোস্টটির স্টিকি তুলে দেয়া হচ্ছে। যারা পে-প্যাল অনুদানের মাধ্যমে প্রিমিয়াম গ্রাহক হতে চান, তাদের এই সপ্তাহের মধ্যে করে ফেলার জন্য অনুরোধ করা হচ্ছে। এই সপ্তাহ শেষে পোস্টটির পে প্যালের লিঙ্ক অকার্যকর করে দেয়া হবে।
তার পরে কেউ গ্রাহক হতে চাইলে ডিসকাশন প্রজেক্টের সাথে যোগাযোগ করতে পারেন। ঠিকানা
[email protected]
ফোন: ০১৯১২৯১৭৫৫৪।
যারা আমাদের আহবানে সাড়া দিয়ে প্রিমিয়াম গ্রাহক হয়েছেন, তাদের সবাইকে মুক্তমনার পক্ষ থেকে ধন্যবাদ জানানো হচ্ছে।
পৌষ্টেল খরচটা বাঁচানোর জন্যে আমি বলবো, সুদূর বাংলাদেশ থেকে আমার জন্যে ইংল্যান্ডে পত্রিকা পাঠানোর প্রয়োজন নেই। আমি অন্য উপায়ে ম্যানেজ করে নিব, তারপর ইন্টারনেট ভার্সন তো একদিন আসবে আশা করি, তখন না হয় ডাউনলোড করে প্রিন্ট করে নিব।
আজকে তক্ষশীলা থেকে পত্রিকাটা কিনলাম। পড়া হয়নি এখনও, তবে প্রকাশনার মান বেশ ভাল। মানের বিপরীতে দামটা আমার কাছে ন্যায্যই মনে হয়েছে, তবে বেশিরভাগ পাঠকদের জন্য এটা হয়ত একটু বেশিই হয়ে যাবে। লেআউটটা মুক্তান্বেষার মত সরল করতে পারলে হয়ত দামটা আরেকটু কমিয়ে আনা যেত।
পেপাল দিয়ে দুবার দুভাবে টাকা পাঠানোর চেষ্টা করে ব্যর্থ হলাম। একবার ক্রেডিট কার্ড ব্যবহার করে, আরেকবার সরাসরি ডাইরেক্ট ডেবিট ব্যবহার করে। আর কি ভাবে টাকা পাঠানো যেতে পারে?
@দিগন্ত,
গ্রাহক তালিকায় আপনার নামটা তো দেখছি আছে।
@দিগন্ত,
আকাশ মালিক ঠিকই বলেছেন। আপনার পাঠানো দেড়শ ডলার আমরা কিন্তু পেয়েছি। আপনার ইমেইলে ট্রান্সেকশন ডিটেল পাঠানো হয়েছে।
মহাবৃত্তের প্রিমিয়াম গ্রাহক হবার জন্য অনেক ধন্যবাদ এবং শুভেচ্ছা।
অ টঃ
আজকে পেপারে দেখলাম বাংলাদেশী একদল বিজ্ঞানী পাটের জিনোম সিকুয়েন্স করছেন।
এই বিষয়ে বিস্তারিত লেখাচাই মুক্তমনাতে। কে লিখবে জানিনা কিন্তু লেখাচাই সত্ত্বর।
একদম জমজমাট বির্তক। বিতর্ক খুব ভালো জিনিস।
প্রফেসরস প্রকাশনা সম্পর্কে কিছু বলতে চাই। সাম্প্রতিককালে দেখা যাচ্ছে যে দেশে অনেক প্রগতিশীল ঘরানার মানুষ জামায়াত-শিবিরের প্রকাশনায় লিখছেন। নয়া দিগন্তের ঈদ সংখ্যায় আবুল হায়াত, হুমায়ুন আহমেদ সহ একই ঘরানার সাহিত্যিক লেখা দিয়েছেন বলে বিভিন্ন ব্লগে এর তুমুল সমালোচনা হয়েছে। তাছাড়া সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী, কবীর চৌধুরী, বদরুদ্দীন উমর তো নয়া দিগন্তে কলাম লিখে কুখ্যাত হয়ে আছেন। খুব সম্ভবত দৈনিক সংগ্রামের গতকালের সংখ্যায় নটরডেম কলেজের অধ্যক্ষ ফাদার বেঞ্জামিন কস্তা নারী অধিকার নিয়ে লিখেছেন(এবং তিনি বাইবেলের অনেক রেফারেন্স ব্যবহার করেছেন যা আমাকে বিষ্মিত করেছে)।
আমি আসলে বলতে চাচ্ছি যে এঁরা কেন জেনেশুনে(প্রতারিত হওয়ার সম্ভাবনাও অবশ্য আছে) এসব পত্রিকায় লেখালেখি করছেন তা একটা নিগূঢ় রহস্য বটে, তবে তাই বলে তাদের সবাইকে ইসলামিস্ট বানিয়ে দেওয়া যায় না। একারণে এখানে প্রফেসরসের রাজনৈতিক মতাদর্শ অপ্রাসঙ্গিক বলেই মনে করি।
অন টপিক: ডিসকাশন প্রোজেক্টের ওয়েবসাইটে যতগুলো বইয়ের নাম আছে, সবগুলোই কি আজিজের তক্ষশীলায় পাওয়া যাবে? আমি মূলত এই বইগুলো চাচ্ছি,
১) অরিজিন অফ লাইফ
২) সময়ের প্রহেলিকা
৩) ভবিষ্যতে যাওয়া যাবে, যাবে না পেছন ফেরা
তক্ষশীলা থেকে কি ডিসকাশন প্রোজেক্টের গ্রাহক হতে পারব?
আকাশ মালিকের প্রশ্নের পরিপ্রেক্ষিতে উত্তরটা দিলেও আমি জেনেরিকভাবেই কিছু কথা লিখছি, গত দুই দিনের বিভিন্ন আলোচনার ভিত্তিতে প্রাসঙ্গিক কিছু কথাও এসে যাবে হয়তো, আশা করি বলবেন না যে আপনি কেন বলছেন, আসিফ কেন উত্তর দিচ্ছেনা। এই ব্লগের মূল লেখাটিতেই বলা হয়েছিল যে এটি ত্রৈমাসিক পত্রিকা (‘চারটি সংখ্যার প্রিমিয়াম গ্রাহকদের জন্য বাৎসরিকভাবে ………… ধার্য করা হয়েছে’ ) এবং ভবিষ্যতে এটাকে কিভাবে মাসিকের দিকে নিয়ে যাওয়া যায় তা নিয়ে চিন্তা ভাবনা করা হচ্ছে। আর আসিফ মনে হয় বারবারই বলেছেন যে বিভিন্ন দিক নিয়ে চিন্তা ভাবনা করা হচ্ছে, এই পত্রিকাটা বের করতে যে এক লাখ টাকার মত খরচ পড়েছে সেটাও মনে হয় আগে বলা হয়েছে। আমার মনে হয় না মাসিক পত্রিকাটার মার্কেটিং, এক্সপেন্স ইত্যাদি নিয়ে প্রকাশ্যে এভাবে আলোচনা করার সময় এসেছে কিংবা সেটা সম্পর্কে কোন পরিষ্কার ধারণা আমাদের এখনও আছে। এও বলা হয়েছিল যে আগামী কয়েকটা সংখ্যা চালিয়ে নেওয়াই এখনকার উদ্দেশ্য এবং পাশাপাশি বিভিন্ন অপশানের কথাও চিন্তা করা হচ্ছে। দ্বিতীয় সংখ্যাটা বের করতে পারলে হয়তো কাজ কিছুটা এগিয়ে যাবে। এর পরের সংখ্যাটা জৈব-বৈচিত্রের উপর হবে, মনে হচ্ছে অক্টোবারের মধ্যেই বের করে ফেলা যাবে। যে সামনে এগিয়ে যাওয়ার একটা মাষ্টার প্ল্যান করা হয়েছে, ফান্ডিং এর ব্যবস্থা হয়ে গেছে, আগামী দশ বছর পত্রিকাটা কিভাবে চলবে তার ব্লুপ্রিন্ট কোথাও রাখা আছে এরকম কথা বলতে বা শুনতে আমাদের সবারই ভালো লাগতো। শুনেছিলাম কালের কন্ঠ এভাবেই বের করা হয়েছিল, ওনাদের হাতে ২০০০ কোটি টাকার ব্যবস্থা করা ছিল নাকি আগে থেকেই। কিন্তু দুঃখজনক হলেও সত্যি যে, আমাদের হাতে এই মুহূর্তে বাস্তবতা এটাই যে আমরা এর ধারে কাছেও কোন নিশ্চয়তা দেওয়ার ক্ষমতা রাখি না।
দেশে একটা বিজ্ঞান পত্রিকা চালিয়ে নেওয়াটা যে কত কঠিন কাজ সেটা বোধ হয় কাউকে বুঝিয়ে বলতে হবে না। আর আমাদের হাতে যেহেতু কালো টাকা নেই, এনজিওর ফান্ডিং নেই, অথবা কোন ‘বিশেষ’ সংস্থার পয়সায় আমরা চলি না, আমাদের বা আসিফের মত একজন মানুষের জন্য সেটা আরও অনেক কঠিন কাজ। এখানে আমরা যে টাকা তুলেছি তাতে আমাদের আশা ছাড়িয়ে গেলেও দয়া করে ভুলবেন না যে এটা দিয়ে খুব বেশী হলে একটা সংখ্যা বের করা সম্ভব হবে, আদর্শগতভাবে উৎসাহ প্রদান বা পাশে থাকা ছাড়া ডিসকাশন প্রজেক্টের সাথে মুক্তমনা কোন দীর্ঘমেয়াদি কোন কমিটমেন্ট বা পার্টনারশিপে যাওয়ার মত ক্ষমতা রাখে না। আমি নিজে ভীষণভাবে চ্যারিটি বা ‘বিলানো’র বিপক্ষে, বিলিয়ে দিয়ে যদি কোন জাতি এগুতো তাহলে বাংলাদেশে রাস্তাঘাটে যে পরিমাণ এনজ়িও আছে বা পৃথিবী জোড়া চার্চগুলো যে হারে বিলিয়ে বেড়াচ্ছে তা দিয়ে আমাদের মত দেশগুলো এতদিনে উন্নত রাষ্ট্রে পরিণত হয়ে যেত। সে জন্যই আমরা এখানে কয়েকজনকে গ্রাহক হতে অনুরোধ করেছিলাম, শুধু শুধু সাহায্য করতে নয়। আসিফের আগের পোষ্টে আপনাদের সবার আগ্রহ দেখে উৎসাহিত হয়েই আমি এই কাজটাতে সমন্বয় করার দায়িত্ব নিয়েছিলাম, (যা আমি সাধারণত করতে পছন্দ করি না)। একটা বিজ্ঞান পত্রিকা বের করা হয়তো সম্ভব হবে এরকম একটা ‘উদ্ভট’ স্বপ্ন দেখা ছাড়া এখানে আমার আর কোন স্বার্থই নেই বা ছিলোও না।
আর গত কয়েক বছরে আসিফের ইনভল্ভমেন্ট নিয়ে অনেক কিছু বলার থাকলেও সেগুলো আর বলছি না, অভিজিৎই অনেক কিছু বলে দিয়েছে, অযথা এসব কথা বলতেও ইচ্ছে করে না। সবাইকে অনুরোধ করবো আসুন ক্যাচাল করে নয় কাজ দিয়ে বিচার করি কে কি করতে ইচ্ছুক এবং করার ক্ষমতা বা ইচ্ছে রাখেন। সমকালের মত মেইন স্ট্রিম একটা পত্রিকায় রিচার্ড ডকিন্স বা ডারউইন দিবসকে ফিচার করতে, সমকামিতার লেখা ছাপাতে, আইডির রিবিউটাল প্রকাশ করতে আর বিবর্তনের দর্শন তুলে ধরতে কি ধরণের মানসিকতার প্রয়োজন পড়ে তা মুক্তমনাদের অজানা থাকার কথা নয়। দেশে অনেক সংগঠনের কথাই জানি যারা রুমে বসে দলাদলি, পলিটিক্স করে আর কে ভালো কে খারাপ তার হিসেব করতে করতেই বছরের পর বছর কাটিয়ে দেয়, একটা নিয়মিত পত্রিকা বের করার বা কমিউনিটি তৈরি করার মত ক্ষমতাও এরা রাখে না। আশা করছি, মুক্তমনার সদস্যরা এতদিন যা করে এসেছেন তাই করে যাবেন, খুব ছোট্ট একটা কমিউনিটিও যে কত প্রভাবশালী হতে পারে এবং ভালো কিছু কাজ করতে পারে আর কিছুই না পারলে অন্তত স্বপ্ন দেখতে পারে তারই নিদর্শন রেখে যাবে।
এটাই আমার শেষ মন্তব্য এই পোষ্টে, গ্রাহক হওয়ার আহ্বানটাও সরিয়ে নিলেই মনে হয় ভালো হবে। আমার ধারণা যারা সহযোগিতা করতে চেয়েছেন তারা ইতোমধ্যেই করে ফেলেছেন। আর সহযোগিতা বলতে আমি শুধু পয়সা দিয়ে সাহায্যের কথাই বলছি না, অনেকেই যেভাবে হার্ট ফেল্ট আন্তরিকতা এবং উৎসাহ দেখিয়েছেন তার সবটুকুই আমাদের প্রেরণা হয়ে থাকবে। ধন্যবাদ সবাইকে।
ব্যাপারটাকে এই ভাবে সামারাইজ করা যায়।
আসিফ প্রচন্ড উৎসাহের সাথেই এই কাজ করেছে এবং নিজের অভিজ্ঞতা দিয়ে বুঝেছে পেপারের অর্থনৈতিক ক্ষমতা বিজ্ঞানবাদিদের হাতে না থাকলে মুশকিল আছে। এবং কিছুটা অর্থনৈতিক কারনেই সঠিক বিজ্ঞানপ্রচার করা অনেক সময় ইচ্ছা থাকলেও হয়ে ওঠে না। কারন বাজার।
তবে বিজ্ঞানের রাজনৈতিক পজিশন নেই এটাও বলা ভুল। পরম নিরেপেক্ষ বলে কিছু হয় না-আবার কমিনিউস্ট বিজ্ঞান বনাম ক্যাপিটালিস্ট বিজ্ঞান ও কিছু হয় না। ধর্মের বিরুদ্ধে বিজ্ঞানের অবস্থান নেওয়ার প্রয়োজন নেই এটা ভুল। কারন ধর্ম শুধু ব্যক্তি জীবন না, রাষ্ট্রের ও ব্যাপার। রাষ্ট্র ত লোককে নিয়েই। তাই ব্যাক্তিগত ধর্ম বলে কিছু হয় না। তা রাষ্ট্রকে আঘাত করবেই-সেই জন্যেই ভারত এবং বাংলাদেশের মৌলবাদের ভিত্তি কিন্ত মানুষের ব্যাক্তিগত ধর্ম বিশ্বাস। রাষ্ট্রের ত ধর্ম বিশ্বাস থাকে না।
ফলে ফেসবুক যখন বন্ধ হয়ে যায় আপনি বলতে পারেন না, যেহেতু আমি বিজ্ঞানসেবী আমার কোন অবস্থান নেই। বরং একজন আল্লাবিশ্বাসী উদার বাংলাদেশি যদি বিজ্ঞান না জেনেও তখন সেই অন্যায়ের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করতে পারে, সে কিন্ত প্রগতিশীলতার অনেক বেশী বাহক।
হিন্দু মৌলবাদ কারা ভারতে ছড়াচ্ছে? -অনেক পদার্থ বিজ্ঞানীর নাম আমি লিখতে পারি। মুরলী মনোহর যোশী এলাহাবাদ বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থ বিদ্যার অধ্যাপক। ইসলামিক বিজ্ঞানের পেছনেও অনেক বিজ্ঞানীর হাত আছে। আবার বিজ্ঞান না জেনেও গ্রামের সামান্য যুক্তিবাদিরাও সেই সব অপবিজ্ঞানের বিরোধিতা করছে।
সুতরাং বিজ্ঞান পত্রিকা মানে যদি হয় শুধু বিজ্ঞানকে জানা-আমি মনে করি না শিক্ষাটা সম্পূর্ন হয়। মুরালী মনোহর যোশী মহাবৃত্তের লেখকদের চেয়ে আইনস্টাইনকে বেশী ভালোই জানেন-কিন্ত তাতে কি তার হিন্দু অপবিজ্ঞানের প্রচার আটকেছে?
শুধু কিছু বিজ্ঞান প্রযুক্তি জেনে এই বিজ্ঞান চেতনা আসে না। এর জন্যে রাজনৈতিক সচেতনতা, রাষ্ট্র ,সমাজ, নৃবিজ্ঞান-সব ধরনের বিজ্ঞানকেই অল্পবিস্তর জানতে হয়।
বিজ্ঞানের ইতিহাসকার জর্জ সার্টন বলেছিলেন,
বিজ্ঞানের ইতিহাসকে কোনো প্রকার সামাজিক বা দার্শনিক মতবাদের সমর্থনের যন্ত্ররূপে ব্যবহার করা উচিত নয়। তার ব্যবহার কেবল তার নিজের উদ্যেশ্যেই হোয়া উচিত। সে নিরেপেক্ষভাবে দেখাবে অযুক্তির বিরুদ্ধে যুক্তির কাজ, দেখাবে সর্ব-আকারে সত্যের ক্রম-উদঘাটন – আর সে সত্য সুখকর হোক বা দু:খকর হোক, সাদরে গৃহীত হোক বা অনাদরে প্রত্যাখ্যিত হোক।
মহাবৃত্তের মতো একটা পত্রিকা আমি কেন বের করেছি বা তার অবয়ব এরকম হবে সেটা কি আমি আগেই ভেবেছি ব্যাপারটি ঠিক তা নয়। এটা কি টিকে থাকবে বা থাকবে না সেটাও চিন্তা করিনি। বা সেরকম কোনো ইচ্ছাই আমার নেই। আমি যখন আঠার বছর আগে নদীর পাড়ে ঘুরতাম আর বিজ্ঞান বক্তৃতা দিতাম তখনো আমি চিন্তা করিনি এটা কতদিন চলবে বা আদেৌ চলবে কীনা। আমাকে কেউ সহযোগিতা করবে কীনা বা এটা কিভাবে অর্থায়ন হবে। আমি কাজটি করার প্রচণ্ড আগ্রহবোধ করেছি। লক্ষ্য করে দেখেছি সামনে পিছনে বেশকিছু তরুণ কাজটিকে এগিয়ে নিয়ে যাোয়ার জন্য হাত বাড়িয়েছে। আমি বুঝেছি মানুষ সবসময় চ্যালেঞ্জ এবঙ নতুন কিছু করার প্রতি সবসময় আগ্রহবোধ করে। এটাই স্বাভাবিক প্রক্রিয়া। মহাবৃত্তের সময়ও যখন কিছু বিজ্ঞান প্রেমি মানুষ এগিয়ে আসলো তখনো সেই অনুভূতি আমার মধ্যে কাজ করেছে।
মানুষের সাথে চিন্তার আদান প্রদান যে এতটা আনন্দের তা আমি বক্তৃতা না দিলে অনুভব করতাম না। আপনারা ভাবুন চট্টগ্রাম মুসলিম হলে আমি যখন বক্তৃতা দিচ্ছিলাম তখন সেই বক্তৃতা টিকিট কেটে ১৩০০ দশক শ্রোতা শুনতে এসেছিল। কেন এত লোক এসেছিল তা আমার নিজের কাছে বোধগোম্য না। তবে আমি আমার জীবনকে এই খাতে প্রবাহিত করতে আরো অনুপ্রাণিত হয়েছিলাম। আমি কারো কল্যানের জন্য নিবেদিত করিনি। মানুষের সাথে এই বিনিময় আমাকে অদ্ভুত আনন্দ দেয় এটাই আমাকে এ পথে ঠেলে দিয়েছিল। এটাতে মানুষ যদি উপকৃত হয় বা আনন্দ পায় তাহলে এটা আরেকটা অর্জন। ব্যাক্তি মানুষের যেকোনো সতইচ্ছা বা কর্মকান্ড সমাজে প্রভাব ফেলে।
আমি যখন সায়েন্স ওয়ার্ল্ডের দায়িত্ব নেই তখন এটাকে পত্রিকা বলা যেত না। এক ধরনের বিজ্ঞান বিচিত্রা টাইপের কিছু একটা প্রকাশ করতো। আর খুব অনিয়মিত ছিল। পরবর্তীতে তারা পত্রিকাটা আমার হাতে এক প্রকার ছেড়েই দেয়। কিন্তু আমি তা চাইনি। আমি বলেছিলাম আমি পত্রিকাটা বানাবো। টাকা পযসার ব্যাপারটা আমি অপারেট করবো না। এক ধরনের অনীহা বোধ ছিল। কিন্তু একজন পত্রিকার সম্পাদকের হাতে অর্থনৈতিক ক্ষমতা না থাকলে কী সমস্যা হয় তা আমি হাড়ে হাড়ে অনুভব করেছি এখানে।
এখানে এক ধরনের বিজ্ঞান বিচিত্রা বা জানার আছে অনেক কিছু এরকম বিষয় থাকতো। আর কোরানিক বিজ্ঞান এটাতো জাতীয় সমস্যা। সব কিছুর মধ্যে ধর্ম নিয়ে আসা। প্রত্যেকটা মধ্যবিত্ত বা উচ্চবিত্ত পরিবারে এই সমস্যা বিরাজমান। বিরাজমান শিক্ষাব্যবস্থায়। আমার মনে হয় এটা এক ধরনের অস্তিত্ত্বের সঙকট। গত ১০০ বছরের ভারত বিভক্তির ফলাফল। এটা যে তারা খুব উদ্দেশ্য সাধনের জন্য করে সেটা নয়। বরঙ জনপ্রিয় হবে। বা এটাও হতে পারে সায়েন্টিঢফক প্রসেস বিষয়টাই বোঝে না।
বিজ্ঞান হলো বিজ্ঞান। একটা চলমান প্রক্রিয়া। পর্যবেক্ষণ, পরীক্ষণ, যুক্তির ওপর দাড়িয়ে থাকে। সেই যুক্তি অভিজ্ঞতা আমাদের সময়ের সাথে প্রসারিত হয় সেই সাথে তত্ত্ব প্রয়োগের পরিধি আরো ব্যাপকতা লাভ করে। আর ধর্ম হলো বিশ্বাস। এটা নিজের একান্ত বিষয়। আমরা মরে যাওয়াটাকে মেনে নিতে পারি না তাই আফটার লাইফ বা পরকালের মধ্যে দিয়ে একটা সমাধান খুজি। বা মারাত্মক কোনো সমস্যাকে কাটাতে না পারলে অনেক শিক্ষিত, বোধবুদ্ধিসম্পন্ন মানুষো এর দারস্থ হয়। এর সংগে বিজ্ঞানের কোনো সম্পর্ক নেই।
মজার ব্যাপার হচ্ছে, এখানে সায়েন্স ওয়াল্ডে ঢুকে জানতে পারি প্রফেসর প্রকাশনীর একটা গাইড বই আছে নাম, কারেন্ট অ্যাফিয়ার্স। পরে আমি দেখেছি বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া, কলেজ পড়ুয়া, বিসিএস ক্যাডারের আগ্রহীরা প্রফেসর প্রকাশনীর কারেন্ট অ্যাফিয়ার্স নামক গাইড বইটা নিয়ে হাটে ঘাটে মাঠে ক্লাস রুমে ঘোরে আর মুখস্ত করে। পরে জানতে পারি এটার প্রতিমাসে সার্কুলেশন দেড় লাখ কপি। অনেকেই বের করে কিন্তু প্রফেসরস প্রকাশণী ব্যবসায়ীকভাবে সবচেয়ে সফল। যারা এটা বের করে তারা কোন মতবাদে চলে এটা খুবই অর্থহীন।
সায়েন্স ওয়াল্ডরও এই ধরনের একটা প্রকল্প। আমি যেহেতু বিজ্ঞান বক্তৃতার মতো বিষয়কে পেশাদার অবস্থানে নিয়ে যাবার ক্ষমতা দেখিয়েছি এবঙ কিছু পরিচিতি অর্জন করেছি। তারা এটাই ব্যবহার করতে চেয়েছে। আমাকে আমন্ত্রণ করেছে।
একটা পত্রিকাকে সহসা পরিবর্তন করা যায় না কারণ তার কিছু নির্দিষ্ট পাঠককুল আছে। আছে লেখক গোষ্ঠী, যাদের অনেকে প্রগতিশীর মিডিয়ায় অনেক শক্তিশালী। একটা পত্রিকা সবকিছুই খারাপ থাকে না।
আমি শুরু করলাম। আস্তে আস্তে থিমেটিক বিষয়ের ওপর সঙখ্যাগুলোকে দাড় করালাম। তারপর দেশের বিজ্ঞানচর্চার সাথে বিশ্ববিজ্ঞানের অগ্রগতিকে তুলে ধরার প্রক্রিয়ায় হাত দিলাম। একটানা ৩০ মাসে ৩০ টা পত্রিকা বের করেছি। ডারউইন সঙখ্যা, দ্বিজেন শর্মা সঙখ্যা, বাঙলায় বি জ্ঞান পথিকৃত, শৈবালবিদ নুরুল ইসলাম সঙখ্যা বিষয়গুলো এরমধ্যে বের হয়েছে। প্রতি সঙখ্যা বের হওয়ার পর ৫০০ থেকে ১০০০ হাজার চিঠি আসতো। এর সার্কুলেশন দাড়ালো ১৫ হাজার। কিন্তু আমরা বিজ্ঞাপন পেলাম না। কারণ বিজ্ঞাপন দাতারা শুধু তাদেরই বিজ্ঞাপন দেয় যাদের মাধ্যমে তাদের পন্যগুলো ভোক্তাদের কাছে পেৌছতে পারে আর যারা তাদের ভয়ের কারণ হয়ে উঠতে পারে। এই দুটোর একটা্ও এই বিজ্ঞান পত্রিকার ছিল না। ফলে বিক্রির টাকা দিয়ে পত্রিকা বের করা যায় না। যার মাসিক খরচ সেইসময় ৩লাখ টাকা। তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলেই কাগজের দামসহ অনেককিছুই সহসাই বেড়ে গিয়েছিল। ফলে অন্যান্য ব্যবসা যদি অনেক ক্ষতি হয় তাহলে এরকম সাবসেডি দেওয়া ব্যাবসার প্রতি আগ্রহ হারিয়ে ফেলতে পারে।
আমাকে অনেকে প্রশ্ন করে ইশ কী চমতকার পত্রিকা একটু চেষ্টা করলেন না কেন। তাকে আমার যেমন বোঝানোর নেই, আর যে বলে পত্রিকাটাতো ওই পক্ষের তাকেও কিছু বলার নেই। কারণ সে পত্রিকা পড়ে নি। দ্বিজেন শর্মার মতো মানুষ ১৫টা সঙখ্যায় লিখেছে। অভিজিত, বন্যা, সুব্রত বড়ুয়া, আক্তারুজ্জামান, ড.আলী অসগর, বাঙলা একাডেমির ডিজি শামসুজ্জামান খানের মতো মানুষেরা লিখতেন। বিবর্তন বিষয়ক এত লেখা আর কখনো ছাপা হয়েছে কী না আমার সন্দেহ।
মহাবৃত্ত পত্রিকাটা বের করেছি এক ধরনের আনন্দবোধ থেকে। আবার এও ভেবেছি পৃথিবীর সবত্র ছড়িয়ে থাকা যেসব বাং্গালী আছেন তাদের চিন্তাধারাকেও যুক্ত করা যায় তাহলেও দারুণ কাজ হবে। অতএব বন্যা অভির সং্গে এক ধরনের বিনিময় চলছিল। অনেক দূরে থাকলেো প্রায়শ যোগাযোগ হয়। এত তাড়াতাড়ি আমি এতটা যোগাযোগের যাওয়ার কথা ভাবিনি। মুক্তমনায় মহাবৃত্ত পত্রিকার কথা ছাপা হলে এত লোক রিসপন্স করেছে যে বন্যা ও অভি আদিল মাহমুদ, ইরতিশাদ এর সম্মানিত ব্যাক্তিদের আন্তরিকতা আমাকে মুগ্ধ করেছে। তারা চায় পত্রিকাটা টিকে থাকুক আমিও চাই। তা থাকবে কীনা সময়ই বলবে। বা কীভাবে কাজ করছি তার ওপর। এটা নিয়ে অগ্রিম কথা বলার দরকার নেই।
আর যদি এটা বন্ধ হয়ে যায় তাতেও কোনো সমস্যা নেই। আমি অনেককে বলেছি আরম্ভের সঙখ্যা যদি শেষ সঙখ্যা হয় তাতেও কোনো দু:খ নেই। মাত্র দুই সপ্তাহে ৩০০ কপি বিক্রি করেছি। আমার কাছে খুব অবাক করার বিষয়।এটা অনেক আনন্দেরও। এখন সায়েন্স ওয়ার্ল্ড যারা পড়তো তাদের সংেগ যোগাযোগ করা অনেক সোজা হবে। এটা বের করার পর অনেকের গভীর আন্তরিকতা দেখেছি তা আমাকে অনুপ্রাণিত করেছে। ইতোমধ্যে মুক্তমনা যে আন্তরিতা ও কর্মকাণ্ড দেখিয়েছে তা আমাকে উত্তেজনায় ঘুমাতে দেয় না। আমি পরিচিতজনকদর বলেছি এটা একটা বিশাল বিষয়। চিনিনা জানিনা অনেকগুলো মানুষ এটাকে ভালোবেসে তাদের পরিশ্রমের টাকা দিচ্ছে। এই ঘটনাটিইতো প্রচণ্ড অনুপ্রেরণাদায়ক। সেই ভালোবাসা আমি গ্রহণ করতেও চাই। মহাবৃত্তের মানেই হচ্ছে পৃথিবীকে ঘিরে থাকা সবচেয়ে বড়ো বৃত্ত। মনে হচ্ছে আমরা সত্যিই বাধতে পারবো পৃথিবীতে ছড়িয়ে থাকা বিশালগোষ্ঠীকে। আর যদি বন্ধ হয়ে যায় তাহলে ভাববো একটাতো বের হলো। অন্য কেউ হয়তো চিন্তা করবে। ভূলগুলো কোথায় হলো। আর কাজটা করেছি আনন্দে। ব্যর্থতো হওয়ার প্রশ্ন আসে না। এটাই অর্জন। আসুন সেটাকেই আমরা উপভোগ করি।
জ্যাকব ব্রনোোস্কির সেই কথাটিমার আমরা স্মরণ করি
মানুষ অনন্য সেই কারণে নয় সে শিল্পকলা বোঝে, সে অনন্য সেই কারণেও নয় সে বিজ্ঞান জানে। মানুষ অনন্য সেই কারণে সে বিজ্ঞান ও শিল্পকলার সঙমিশ্রণে এক বিপুল সম্ভাবনাময় জীবনধারা গড়ে তোলে।
আসুন আমরাও সেই সম্ভবনার মধ্যে দিয়ে নিজেদের জীবনকে প্রবাহিত করি।
@আসিফ,
এই রকম জীবনের সংমিশ্রনই তো চাই। কবে পাবো এমন জীবন ????????
আপনার “মহাবৃত্তের” ব্যাপারে দীর্ঘ মন্তব্যের জন্য অনেক ধন্যবাদ।
@আসিফ,
আমরা সকলেই চাই পত্রিকাটি টিকে থাকুক। প্রত্যেকটা কাজ বা সাক্সেসফুল প্রকল্পের পেছনে নিশ্চয়ই একটা দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা বা Business Plan থাকতে হয়। উপরের যে কথাটা ফরিদ ভাই সহ আরো অনেকেই হয়তো জানার আশা করেন। আপনার দীর্ঘ বক্তব্যে সেই কথাটা পরিষ্কার হয়েছে বলে মনে হলোনা।
যেমন ধরুন পত্রিকাটি মাসিক না ষান্মাষিক না বাৎসরিক, এটিকে চলমান, নিয়মিত বা টিকিয়ে রাখতে এডভান্টেইজ-ডিসএডভান্টেইজ কী হতে পারে, প্রচার বা মার্কেটিং কী ভাবে হবে, এক্সপেন্স বা এক্সপেন্ডিচার ও টেইকিং এর অনুমানিক পরিমাণ, গ্রাহক টার্গেট ইত্যাদি নিয়ে নিশ্চয়ই আপনারা ভাবনা চিন্তা করেছেন।
কথাটা নতুন গ্রাহক আকৃষ্ট করায় বা পত্রিকাটিকে টিকিয়ে রাখতে সহায়ক হবে বলে মনে হয়না।
@আসিফ ভাই,
আপনার সফলতা কামনা করি। এগিয়ে চলুন।
এটা আসিফের বিরুদ্ধে সাংঘাতিক অভিযোগ। কারন বিজ্ঞানচেতনার উন্মেষের জন্যে আমরা আসিফের ওপর নির্ভর করছি। সেখানে আসিফ অতীতে যদি জামাত শিবিরের সাথে যুক্ত হয়ে অপবিজ্ঞান প্রচার করে থাকেন-আমার ধারনা মুক্তমনার সবার ব্যাপারটাকে নিয়ে ভাবা উচিত।
আমি ধর্মের বিরুদ্ধে যেমন কোন নোংরা কথা বলবো না
-ঠিক তেমনই ধর্মের কারনে বিজ্ঞানের সত্যের সাথে কোন কম্প্রোমাইজিং
অবস্থানে যাব না। তাতে পত্রিকা না চলে না চলবে। আশা করি মুক্তমনার সবাই এই ব্যাপারে এক হবে। আফিফ যদি অতীতে এই ধরনের কম্প্রোমাইজ করে থাকে, আমি নিশ্চিত নই, বন্যা এই ব্যাপারটা নিয়ে যথেষ্ট ভেবেছে কি না।
তবে আমি চাইব আসিফ নিজের কথা নিজে লিখুক। অর্থাভাবে অনেক সময় এমন হতে পারে-কিন্ত সত্যটা জানা দরকার।
@বিপ্লব,
সায়েন্স ওয়ার্ল্ড অনেক পুরোনো পত্রিকা। আমি যতদূর জানি আসিফ শেষ কয়েক বছরেই তার এডিটর হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছিলেন। আসিফ এডিটর হবার আগে এর ডাইমেশন ভিন্ন ছিলো। আসিফ আসার পরেই কেবলমাত্র সায়েন্স ওয়ার্ল্ডে বিবর্তনের উপর লেখা প্রকাশিত হওয়া শুরু হয়। শুধু তাই নয় ডারউইন দিবস নিয়ে স্পেশাল ইস্যুও তৈরি করেছিলেন তিনি। আমার বেশ কিছু প্রবন্ধ সায়েন্স ওয়ার্ল্ডে প্রকাশ করতে পেরেছিলেন আসিফ যেগুলো ইন্টিলিজেন্ট ডিজাইন সহ বিভিন্ন ছদ্মবিজ্ঞানের রিবুটাল। শুধু সাইয়েন্স ওয়ার্ল্ড কেন, সমকালেও ডারউইন দিবস এবং অন্যান্য স্পর্শকাতর বিষয় যেভাবে পত্রিকায় তুলে এনেছেন, আমি আসলে অন্য কোন মেইনস্ট্রিম পত্রিকায় তা দেখিনি। এ ব্যাপারগুলো সবাই তো দেখেছেন। এমনকি আমার সমকামিতা বইয়ের প্রকাশনার খবর শুধু সমকালেই প্রকাশিত হয়েছিল (এ জন্য আসিফকে নানা ঝামেলাতেও পড়তে হয়েছিলো), যেখানে অন্য পত্রিকাগুলো ছিলো একেবারেই নির্লিপ্ত। বাংলাদেশের পত্রিকায় সমকামিতা নিয়ে ফিচার করে চাকরি টিকিয়ে রাখা সোজা কথা নয়।
আমি আসিফের সবগুলো বইই পড়েছি, কোথাওই আমি ধর্মের সাথে বিজ্ঞানের সমন্বয়মূলক লেখা দেখিনি। বরং বিজ্ঞানকে ডিফেন্ড করা লেখা আসিফের অসংখ্য। এমনকি এবারের যুক্তি পত্রিকায় প্রকাশিত আসিফের লেখাটিও দেখুন – সেখানে অপবিজ্ঞান আর ঈশ্বরবাদিতার খন্ডন স্পষ্ট।
আমার মনে হয় আমরা অতিরিক্ত অনুমান করছি এবং আলোচনা অন্য দিকে চলে যাচ্ছে। যে দেশে মূসা ইব্রাহিমের এভারেস্ট জয় নিয়েই সপ্তাহের পর সপ্তাহ সন্দেহ তৈরি হয়, আসিফ তো তার তুলনায় তুচ্ছ 🙂 আসিফের ব্যাপারটা আসিফই বলুক, আমি বরং ভাগি।
একটি কথাই শুধু বলব, সব কিছু বিচার বিবেচনা করেই মুক্তমনা এগুবে, এ কথা নির্দ্বিধায় বলা যায়, অন্য কোন ভাবে নয়।
@অভিজিৎ,
আসলে আমি ফেসবুকে আসিফ ভাইকে মৌলবাদের বিরুদ্ধে জ্বলন্ত মশাল ইত্যাদি বিশেষণ দিয়ে অনেকের কাছে ( ধর ১০,০০০) মেইল পাঠিয়েছি। এবার পথিকের মেইল পাওয়ার পরে, আমার অবস্থা বেশ খারাপ। সুতরাং এই অভিযোগ গুলির উত্তর আসিফের দেওয়া উচিত। আসিফের উত্তর না পাওয়া পর্যন্ত আমি কিছুই বলছি না।
@বিপ্লব পাল, aএ্যা আমি আবার আপনাকে মেইল করলাম কোথায়?!!! 🙁 🙁 🙁
যা বলার তা তো আমি কমেন্টেই বলেছি। আপনি ভুতূড়ে মেইল পেলেন কোথা থেকে? :-/
বিষয়টা আশা করি পরিষ্কার করবেন।
@পথিক,
ওহো, ওটা লেখা উচত ছিল ব্লগটা পড়ে। না আমি তোমার কাছ থেকে কোন ইমেল পায় নি।
@অভিজিৎ দা,
মুসা ইব্রাহীম কী আসলেই উঠেছেন এভারেস্টে? পেপার পত্রিকায় তার সংবর্ধনার অসংখ্য ছবি দেখলাম, হাসিনার সাথে ছবি দেখলাম, আর স্ত্রীর সাথে ছবি দেখলাম কিন্তু কই এভারেস্টে উঠার ছবি? বাঙ্গালী সপ্তাহ শেষের পর সন্দেহ উত্তোলন করেছে, আমি এখনও করিনাই। আমি ছবি দেখতে চাই।
@রায়হান আবীর,
মূসার দোস্ত বকলম ভাই কই গেলেন? ছবির আপ্লোড বাটনে চাপ দেন 🙂
@অভিজিৎ,
বকলম ভাই এখন নাস্তিকদের জন্য পূর্ন সংবিধান লিপিবদ্ধ করার জরুরী কাজে ব্যাস্ত আছেন। এসব ক্ষুদ্রাতিক্ষুদ্র ব্যাপার নিয়ে মাথা ঘামানোর মত সময় তার এখন নাই।
এই পোস্টে বেশ কিছু বিষয় উঠে এসেছে একটু আলোচনা করতে চাই। প্রথমত মহাবৃত্ত হল ডিস্কাশন প্রজেক্টের পত্রিকা। নারায়ণগঞ্জ ভিত্তিক এই সংগঠনটার প্রাণপুরুষ বিজ্ঞানবক্তা আসিফ। তার বক্তৃতা শোনার সৌভাগ্য কয়েছে বেশ কয়েকবার। একদিন একটা বক্তৃতা শুনেছিলাম, পৃথিবীর জন্য কে কথা বলবে? এই শিরোনামে। স্যাগানের মহাজাগতিক স্বপ্নকে প্রাঞ্জল ভাষায় তুলে ধরে ছিলেন। মহাবৃত্তটা এখনো সংগ্রহ করা হয়ে ওঠে নি। পরীক্ষার পর কিনে ফেলব আশা করি। মহাবৃত্তের বহুল প্রসার কামনা করি। বাংলায় একটা পত্রিকায় বিজ্ঞানের সমস্ত খবর পাবো তা ভেবে খুব ভাল লাগছে। কয়েকটা প্রশ্ন ও পরামর্শ আছে।
দুঃখজনক হলেও সত্যি পাবলিক যা খেতে চায় পত্রিকায় তাই লেখা হয়। পত্রিকা মালিকরা সেই ভেবেই ইনভেস্ট করেন। তাদের কাছে বিজ্ঞান বিষয়টা বেশ স্পর্শকাতর কারণ এটা নিয়ে ঘাঁটাঘাটি করলে কেঁচো খুঁড়তে সাপ বেরোতে পারে। তাই সত্যিকার বিজ্ঞানচেতনা সম্পন্ন বিজ্ঞান পত্রিকা প্রকাশের ঝুঁকি কেউ নেবেন না। যে কারণে মেইনমিডিয়ায় ডারুইনকে নেগেটিভলি তুলে করা হয় তেমনিভাবে এই পত্রিকা সম্পর্কে ধর্মবিরোধী বলে গুজব রটিয়ে দেওয়া হলে তৃণমূল লেভেলে এর গ্রহণযোগ্যতা চরমভাবে হ্রাস পাবে। দেশে ক্লাস-সেভেন এইট নাইনের একটা ছেলের পাঠ্যতালিকার প্রতি বাবা-মা ভালোই নজর রাখেন। আর যদি একবার এটা ধর্মবিরোধী বলে রটে যায় তবে নানা সমস্যা হবে। কারণ প্রবাসী কয়েকজন প্রিমিয়াম গ্রাহকের জন্য এই পত্রকা বের করে আসলে কোন লাভ নাই। মাস পিপল যদি টার্গেট হয় তাহলে পত্রিকার দাম হতে হবে ১৫-২০ টাকা এড় চেয়ে বেশি কোনভাবেই না। পাঠকের কাছে বিজ্ঞান পৌছানোটিই বড হতে হবে। আইন্সটাইনের এই সংখ্যার সব লেখা গুলো তিনটা ছোট সংখ্যায় গেলে অসুবিধা কি? বিত্তবান ও প্রবাসী গ্রাহকদের জন্য যথক্রমে ত্রৈমাসিক বৃহৎ কলেবরের সংখ্যা,বিশেষ সংখ্যা বের করা যেতে পারে। গণভিত্তি না থাকলে পত্রিকাটির মূল উদ্দেশ্য পূরণ হবে না বরঞ্চ তেলা মাথায় তেল দেওয়া হবে। সেক্ষেত্রে সেবা প্রকাশনীর মত এইসব বিশেষ সংখ্যার সুলভ সংস্করণ বের করতে হবে। ত্রিশ-পয়ত্রিশ টাকায় এই পত্রিকার বিশেষ সংখ্যা বের হলে টিফিনের টাকা দিয়ে হয়তো কিন্তু পারবে। এটাকে তৃণমূল লেভেলে নিয়ে যাওয়া হবে কিভাবে সেটাও খুব গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন।
অনেকে ভবিষ্যতে পাঠকপ্রিয়তার প্রশ্নে সায়েন্স ওয়ার্ডের সাথে এর তুলনা করতে চেয়েছেন। আমি বিনীতভাবেই সেটার প্রতিবাদ জানাই। সায়েন্স ওয়ার্ল্ড ছিল প্রফেসরস প্রকাশনের পত্রিকা। জামাত-শিবিরের মালিকানাধীন এই পত্রিকায় সম্পাদক আসিফ ছিলেন এটা আমি জেনেছি বেশিদিন আগে নয়। আমি সায়েন্স ওয়ার্ল্ডের নিয়মিত পাঠক ছিলাম। প্রথম দিকে এর প্রতিটি সংখ্যাই পড়েছি। পরে শেষদিকে আর পড়ি নাই। সায়েন্স ওয়ার্ল্ডে যেসব ছদ্মবৈজ্ঞানিক প্রবন্ধ বের হত (কোরানিক কসমোলজি,বিবর্তন নিয়ে লেখার আগে ডিসক্লেইমার) সেসব সম্পাদকের ইচ্ছা বা অনিচ্ছায় প্রকাশিত হত কিনা তা আমি জানি না। তবে এটা এখন বুঝি যে পাবলিক এইসব খায়। এইসব লেখা মহাবৃত্তে আসবে না বলেই আমার ধারণা। কারণ তা হলে দেশে বিজ্ঞানচর্চা প্রসারে কোন কাজ হবে না এবং প্রিমিয়াম পাঠকরাও হয়তো মুখ ঘুরিয়ে নেবেন। আসিফ যেভাবে সংগ্রাম করে সমকালে ডারুইন দিবস বা মুক্তমনাদের লেখা ছাপিয়েছেন তা দেখে আমি খুব আশাবাদী যে মহাবৃত্ত এর মাসিক পত্রিকা হয়তো এসব থেকে মুক্ত থাকবে ।
একটা ভাল পত্রিকা বের করার সাথে সাথে এটাকে তৃণমূলে পৌছে দেওয়াও বেশ কঠিন। আসিফ এই পোস্টে এসে তার পরিকল্পনা গুলো ব্যাখ্যা করবেন বলে আশা রাখি।
আসলে মুক্তমনা ও ডিস্কাশন প্রজেক্টের মধ্যকার সম্পর্কটা আমি ঠিক বুঝতে পারছি না।
মাসিক পত্রিকা বের করা বা ডকুমেন্টারি ফিল্ম তৈরি করা ডিসকাশন প্রজেক্ট নাকি মুক্তমনা কর্তৃপক্ষের প্রজেক্ট সেটা বুঝতে পারছি না। তবুও পরামর্শগুলো দিলাম। ডিসকাশন প্রজেক্ট যদি মনে করে আমি মুক্তমনার ব্লগার হয়ে তাদের নিজস্ব সংগঠন পত্রিকার ব্যাপারে অনধিকার চর্চা করছি তাহলে আমি আন্তরিকভাবে ক্ষমাপ্রার্থী।
সব স্কুল/কলেজে বিনামূল্যে সরবরাহটা জরুরী, আমি ফরিদ ভাইয়ের এই বক্তব্যে সহমত। প্রবাসী ভাইদেরকে পিডিফ পাঠালেও চলে। এ ছাড়া বিপ্লব’দার পিডিফ রিডার হলে আরো ভাল হয়। তখন স্বল্প মূল্যে আরো বেশি প্রবাসী পাওয়া যাবে। সে ক্ষেত্রে ৫/১০/২০ ডলার হলে পাঠক সংখ্যা বেশি হবে। এই মূহুর্তে একশত ডলার দিয়ে প্রিমিয়াম গ্রাহক হতে পারছি না, তাই এতদিন মন্তব্য করতেও কিছুটা দ্বিধা হচ্ছিল। মহাবৃত্তের সফলতা কামনা করি সব সময়। দেশে একটি ভাল বিজ্ঞান পত্রিকার প্রয়োজন রয়েছে নিঃসন্দেহে।
আগামী সপ্তাহের মধ্যেই আমরা পরীক্ষামূলক ভাবে “সিকিউরড”
পিডিএফ ডাউনলোড সল্যুশন চালু করব-সেই পিডিএফ কেও ইমেল বা কপি বা আপলোড করতে পারবে না। প্রথম পরীক্ষা হিসাবে আমরা কোলকাতার কিছু পত্রিকা চালু করছি-ঢাকার কিছু কিছু পত্রিকার সাথেও যোগাযোগ হয়েছে। এটা করলে পত্রিকার দাম ১- ৫ ডলারে বিক্রি করা যাবে আন্তর্জাতিক বাংলা মার্কেটে।
এটা ঠিকই পত্রিকাগুলিকে গ্রাস রুটে জনপ্রিয় হতে হবে। কিন্ত বাংলাদেশের জন্যেও ১৫০টাকা দাম বড্ড বেশী মনে হচ্ছে । দেশের দাম বোধ হয় ১৫ টাকা আমাদের দিকে। ১০-২০ টাকার বেশী হলে গণবিক্রি করা দেশে মুশকিল। প্রিন্টিং কস্টে পোষাবে না। এই জন্যেই প্রিন্টিং এর কোন ভবিষয়ত আমি দেখছি না। আস্তে আস্তে গ্রামেও ইলাইব্রেরী হবে।
আমার কথাগুলো একটি ভিন্নতর শোনাবে হয়তো। পছন্দ না হলে উপেক্ষা করলেই চলবে।
বিজ্ঞানভিত্তিক বাংলা পত্রিকা মহাবৃত্ত বের হচ্ছে এটা অত্যন্ত খুশির খবর। সেই সাথে আরো আনন্দের বিষয় হচ্ছে মুক্তমনা সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের একে টিকিয়ে রাখার জন্যে আন্তরিকভাবে এগিয়ে আসা।
বিদেশ থেকে সম্পূর্ণ বা বেশিরভাগ অম্লজান সরবরাহ করে বাংলাদেশের কোন পত্রিকাকে বাঁচিয়ে রাখার ব্যপারে আমার কোন আগ্রহ নেই। পত্রিকাকে তার মূল রসদ দেশের ভিতর থেকেই জোগাড় করতে হবে। এটা যে পত্রিকা করতে পারবে না একটা সময় পরে সেটা মহাকালের গর্ভে চলে যেতে সময় নেবে না। মহাবৃত্তের ক্ষেত্রে সেরকম কিছু হবে না বলেই ধরে নিচ্ছি আমি। আসিফ সাহেব নিশ্চয়ই শুধুমাত্র প্রবাসী সদস্যদের গ্রাহক চাঁদার উপর ভিত্তি করে এত বড় একটা কাজে যে হাত দেননি সেটা সুনিশ্চিত। প্রবাসীরা হয়তো মহাবৃত্তের চলার পথকে সামান্য একটু সুগম করবে এটাই আমার ভাবনা।
এই সুগম করার বিষয়েই আমার একটি প্রস্তাব রয়েছে। আবারো বলছি, প্রস্তাবটা বেসুরো মনে হলে উপেক্ষা করলেই চলবে। বাংলাদেশে একটা বিজ্ঞান পত্রিকা বের করার মূল উদ্দেশ্য কী? নিশ্চয় মানুষকে বিজ্ঞান মনস্ক করে গড়ে তোলা, তাই না? শুধু পত্রিকা বের করলেইতো আর মানুষ বিজ্ঞানমনস্ক হবে না। তাদেরকে পত্রিকাটা পড়তে হবে। কীভাবে পড়বে তাঁরা? কিনে। এই পত্রিকার মূল পাঠক যদি স্কুল, কলেজ এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রছাত্রীদের ধরি, তবে সত্যি কথা বলতে আমি তেমন কোন আশা দেখি না। একশ পঞ্চাশ টাকা হয়তো এমনিতে বিরাট কোন টাকা না, কিন্তু আরো অনেক কিছুর ভিড়ে এটাই অনেক টাকা তাদের জন্যে। ফলে, পত্রিকা হয়তো বের হবে ঠিকই, কিন্তু তা পড়ে থাকবে লাইব্রেরির র্যাকে কিংবা প্রকাশকের গুদামে। জমা হবে ধুলোর আস্তর, না হয় আক্রান্ত হবে ছারপোকায়। এর বিপরীতে আমরা যদি এমন করি প্রবাসী গ্রাহকরা যে ১০০ ডলার করে দিচ্ছেন সেটার বিপরীতে তাঁরা কোন পত্রিকা নেবেন না। সব টাকা দিয়ে মহাবৃত্ত কিনে তা বিলি করে দেওয়া হবে বিভিন্ন স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয় বা এলাকভিত্তিক গণপাঠাগারগুলোতে। তাহলে কেমন হয়?
ধরুন, এই মুহুর্তে আমি দেখলাম যে, প্রিমিয়ার গ্রাহক হয়েছেন ষোল জন ব্যক্তি। এদেরকে এক কপি করে দিলে মহাবৃত্তের বিক্রিত কপির সংখ্যা হচ্ছে মাত্র ১৬। এই ষোল জন ব্যক্তিই উচ্চশিক্ষিত এবং বিজ্ঞানমনস্ক। ‘মহাবৃত্ত’ তাঁদের চিন্তা চেতনায় বিরাট কোন পরিবর্তন আনবে না, বা পরিবর্তন আনার প্রয়োজনও নেই। আলোকিত এবং বিজ্ঞানমনস্ক মানুষ এমনিতে তাঁরা।
অথচ দেখুন এই ষোল জনের কাছ থেকে টাকা উঠেছে ১৫০০ ইউ এস ডলার। এর বাংলাদেশি টাকায় রুপান্তরিত মূল্য এক লক্ষ টাকারও উপরে। মহাবৃত্তের এক একটা কপির মূল্য হচ্ছে একশ পঞ্চাশ টাকা। তার মানে পাইকারি মূল্য একশ টাকার বেশি হবার কথা নয়। তাহলে এই এক লক্ষ্ টাকা দিয়ে মহাবৃত্তের এক হাজার কপি কেনা সম্ভব। সারা দেশের এক হাজার গণপাঠাগারে পাঠিয়ে দেওয়া যায় এই কপিগুলোকে। এক একটা পাঠাগারে যদি গড়ে মাত্র দশজন মানুষও এই পত্রিকাটি পড়ে তাহলে পাঠকের সংখ্যা দাঁড়াচ্ছে গিয়ে দশ হাজার। দেশে দশ হাজার মানুষকে মহাবৃত্তের পাঠক করে ফেলা যাচ্ছে বিদেশে মাত্র ষোল কপি মহাবৃত্ত না পাঠিয়েই।
প্রবাস থেকে যারা টাকা দিচ্ছেন, তাঁদেরকে হার্ড কপির বদলে একটা করে পিডিএফ কপি দিয়ে দেওয়া যায়। এতেতো কোন খরচই নেই। আমারতো মনে হয় না তাঁরা কেউই এতে বিশেষ কোন আপত্তি করবেন। কারণ, এঁদের সকলেরইতো লক্ষ্য বাংলাদেশে বিজ্ঞানচর্চায় অবদান রাখা, মানুষকে বিজ্ঞানমনষ্ক করে গড়ে তোলা।
এটা সম্পূর্ণই আমার ব্যক্তিগত অভিমত। আশা করি, এটা নিয়ে কেউ তর্ক-বিতর্কে ঝাঁপিয়ে পড়বেন না। ধারণাটা পছন্দ না হলে জাস্ট গা ঝাড়া দিয়ে ফেলে দিয়েন।
@ফরিদ আহমেদ,
আপনার বলা বেশীরভাগ পরামর্শই খুবই বাস্তববাদী বলে আমিও মনে করি, এবং আমি এ বিষয়গুলির বেশীরভাগই মহাবৃত্তের প্রথম লেখায় আমার প্রথম কমেন্টে বলেছিলাম।
প্রবাসী গ্রাহকেরা প্রাথমিক পর্যায়ে স্পনসর হলেও মূল চালিকা ভিত্তী গড়তে গবে দেশের ভেতরেই, বাইরে নয়। নিঃসন্দেহে সেটার কিছুটা সময় লাগবে, সে সময়টা প্রবাসীরা হয়ত সাহায্য করতে পারেন। তবে এর বিকল্প নেই।
স্কুল কলেজ বিশ্ববিদ্যালয়ে গ্রাহক সৃষ্টির কাজ হবে সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ। প্রবাসীদের জন্য ব্যায়বহুল ডাকযোগে কপি না পাঠিয়ে ওয়েব সংস্করন পাঠানোই ভাল মনে হয়।
বাংলাদেশে এখন যা শুনি তাতে ১৫০ টাকা মনে হয় এমন কিছু ব্যাপার নয়। তবে ছাত্রছাত্রীদের জন্য সেটাও বড় হতে পারে। রংগীন না ছাপিয়ে সাদা কালো ছাপালে মনে হয় খরচ কিছুটা কম পড়ে। অন্তত প্রাথমিক পর্যায়ে যতভাবে সম্ভব বেশী গ্রাহক আকর্ষন করাটাই মূল লক্ষ্য হতে হবে, পরে নিয়মিত বিজ্ঞাপন পাওয়া গেলে হয়ত আপগ্রেড করা যেতে পারে।
@আদিল মাহমুদ,
শহুরে মধ্যবিত্তের জন্য হয়ত সমস্যা হবে না তবে গ্রাম থেকে আগত ছাত্র-ছাত্রীদের জন্য এটা একটা বিরাট সমস্যা হবে। আমার মনে হয় এই শ্রেণীর গ্রাহকই পত্রিকার মূল চালিকাশক্তি হিসেবে কাজ করবে।
@ফরিদ আহমেদ,
উত্তম প্রস্তাব। আমার শুধু পিডিএফ হলেই চলবে। তবে ফরিদের হিসেবে বোধহয় একটু সরলীকরণ হয়েছে। বিদেশে একবার ষোলকপি মহাবৃত্ত পাঠানোর খরচ কিন্তু ১৫০০ ডলার নয়। আমি যতটুকু বুঝেছি এই টাকাটা মহাবৃত্তের জন্য ‘সীড মানি’ (বীজার্থ!?) হিসেবে ওঠানো হয়েছে। তবে ফরিদের প্রস্তাবের মূলকথা – ছাত্রছাত্রীদের হাতে পত্রিকাটা সুলভে পৌঁছানো – এটাই লক্ষ্য হওয়া জরুরি।
@ ফরিদ ভাই, খুব বাস্তব কিছু কথা বলেছেন। মজার কথা হচ্ছে এর প্রতিটা ব্যাপার নিয়েই আমার আসিফের সাথে আলোচনা হয়েছে, আশা করছি আসিফই আপনার মন্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে একটি বিস্তারিত উত্তর দিবেন।
আপনি যদি আগের পোষ্টে দেখেন আমরা আসলে অনেকেই পিডিএফ কপি পাঠানোর সিদ্ধান্তকেই(রায়হানের প্রস্তাব অনুযায়ী) সমর্থন করেছিলাম। আসিফ মুক্তমনার এই বিশেষ গ্রাহকদের হাতে মহাবৃত্তের প্রথম সংখ্যাটা একবার পৌঁছে দিতে খুবই আগ্রহী হওয়ায় এবারের মত পিডিএফ না করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। তবে ভবিষ্যতে এ ছাড়া যে উপায় নেই, সেটা মনে হয় ক্রমান্বয়ে আরও পরিষ্কার হয়ে উঠছে। এই ১৫-১৬ জন গ্রাহককে প্রতি ৩ মাসে একবার করে পত্রিকা পাঠাতে কম করে হলেও ১০-১৫ হাজার টাকার মত খরচ পরে যাবে, অর্থাৎ বছরে ৪ টা সংখ্যা পাঠাতে ৪০-৬০ হাজার টাকার প্রশ্ন আসছে। ১৫০০ ডলার উঠিয়ে যদি ৬০০-৮০০ ডলার শুধু ডাক খরচেই চলে যায় তাহলে সেটা যে বাস্তবসম্মত একটা ব্যপার হবে না সে নিয়ে আসলে কারও কোন সন্দেহ নেই।
আর ইরতিশাদ ভাই যেমন বলেছেন, এটা আসলে শুধুমাত্র একবারের সিড মানি হিসেবে বা দ্বিতীয় সংখ্যাটা বের করার জন্যই তোলা হচ্ছে। আসিফ আশা করছেন যে আগামী ৩-৪ টা সংখ্যা চালিয়ে নিতে পারলে ধীরে ধীরে একটা স্ট্রাকচার হয়তো দাঁড় করিয়ে ফেলা যাবে, প্রিন্ট মিডিয়া ছাড়া আরও অন্যান্য কিছু কাজেও হাত দেওয়া সম্ভব হবে। আর বিজ্ঞাপন এবং/বা অন্য কোন মিডিয়ার ব্যাকআপ ছাড়া কোন মাসিক পত্রিকা চালানো সম্ভব নয়। এই কয়েকজন প্রবাসী গ্রাহক দিয়ে আর এই এক/দেড় লাখ টাকা দিয়ে যে দীর্ঘমেয়াদি কোন পত্রিকা চলবে না সেটা নিয়েও কোন সন্দেহের অবকাশ নেই। এ নিয়ে আসিফের কিছু দীর্ঘমেয়াদি প্ল্যান আছে, আশা করছি উনি কোন এক সময় এগুলো নিয়ে আলোচনা করবেন।
@বন্যা আহমেদ,
সিড মানির বিষয়টা জানা ছিল না। ইরতিশাদ ভাইয়ের মন্তব্য থেকেই জানতে পারলাম প্রথম। আসিফ সাহেবের পোস্টে দেখলাম উনি গ্রাহকের সংখ্যার উপরেই জোর দিয়েছিলেন মূলত। সেই সাথে অবশ্য গ্রাহকদের ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র সহযোগিতার একটা সামান্য আভাসও দিয়েছিলেন। এটাই যে সিড মানির ইঙ্গিত সেটা বুঝতে পারিনি আমি। যেমন আসিফ লিখেছেন,
এই লেখাতেও খুঁজে পেতে দেখলাম মুক্তমনা এডমিনও সে ধরনেরই একটা কথা লিখেছেন।
আমি খুবই দুঃখিত যে এগুলোর কোনটারই অর্থ তখন বুঝতে পারিনি। তবে যতটা না এর জন্যে দুঃখিত তার চেয়েও আরো বেশি দুঃখিত আমি এই ভেবে যে, এই পত্রিকার কোন ভবিষ্যতই আমি দেখতে পাচ্ছি না। যে পত্রিকা শুধুমাত্র তার গ্রাহকদের অনুদানের উপর ভরসা করে প্রথম চারটি সংখ্যা বের করার ভাবনা ভাবে এবং তারপরেই নিজের পায়ে দাঁড়াবে বলে স্বপ্ন দেখে, সেই পত্রিকা যে চারটা সংখ্যা পরেই পরলোকে গমন করবে সেটা বোঝার জন্যে খুব বড় পত্রিকা বিষয়ক পন্ডিত হবার প্রয়োজন নেই।
আসিফ সাহেব দীর্ঘদিন ধরে পত্রিকার সাথে জড়িত আছেন। একটা বিজ্ঞান পত্রিকার সম্পাদকও ছিলেন এক সময়। সদ্য ভূমিষ্ঠ কোন পত্রিকাকে কীভাবে টিকিয়ে রাখতে হয় সে ব্যাপারে তাঁর সুদীর্ঘ অভিজ্ঞতা রয়েছে। সেই অভিজ্ঞতার বলেই ধরে নিচ্ছি যে, তাঁর নিশ্চয়ই সুনির্দিষ্ট কিছু দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনাও রয়েছে মহাবৃত্তকে কেন্দ্র করে। সেগুলো জানার আশায় রইলাম।
সেই সাথে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়, মহাবিদ্যালয় এবং বিদ্যালয়ের পাঠাগার, ছাত্রাবাসের পাঠাগার এবং এলাকাভিত্তিক গণপাঠাগারে মহাবৃত্ত বিনা পয়সায় বিলোনো সম্ভব কি না সেটা জানারও কিঞ্চিৎ কৌতুহল রইলো।
মুক্তমনা ব্লগের একটি বড় বৈশিষ্ট হল যে, সদস্যরা নিজেদের ভিন্নমতগুলো খুব জোরালোভাবেই ব্যক্ত করতে পারেন। এটি ব্লগের একটি বড় শক্তি। ফরিদ ভাই তার দুটি মন্তব্যে খুব স্পষ্ট করেই তার মনোভাব জানিয়েছেন। ব্যাপারটা মোটেই বেসুরো হয়নি, বরং আমার কাছে তো মনে হয়েছে ফরিদ ভাইয়ের মন্তব্য দুটো পোস্টটির আকর্ষণ অনেক বাড়িয়েছে।
আমি আসিফের মন্তব্য ফরিদ ভাইয়ের প্রতি মন্তব্য এবং বন্যা, ইরতিশাদ ভাই সহ অন্যান্যদের আলোচনা থেকে যেটুকু বুঝতে পেরছি তা হল – কিছু জায়গায় ভাষাগত কারণে বোধ হয় দুর্বোধ্যতা তৈরি হয়েছে। বিশেষতঃ লেখা কিংবা মন্তব্যের কয়েকটি জায়গায় গ্রাহক এবং পাঠক পরিপূরক হিসেবে ব্যবহার করা হয়েছে, সম্ভবতঃ শব্দ দুটো আলাদাভাবে ব্যবহার দাবী করে।
আমি যদি ভুল না বুঝে থাকি ফরিদ ভাই নিজেও দুটোর পার্থক্য উপলব্ধি করেননি। যেমন তিনি স্পষ্টই বলেছেন –
মন্তব্যটিতে ফরিদ ভাই খুব নিরাসক্তভাবেই (হয়তো একটু রূঢ়ও শোনাচ্ছে কারো কারো কানে) নিজের বক্তব্য স্পষ্ট করেছেন। হ্যা গ্রাহকদের অনুদানের উপর ভরসা করে পত্রিকা বের করার চিন্তা করলে পত্রিকার সলিল সমাধি ঘটতে বাধ্য। এতে কোনই সন্দেহ নেই। কিন্তু, আমি যতদূর বুঝেছি – আসিফ কিন্তু তার লেখার কোথাও বলেননি, গ্রাহকদের অনুদানের উপর ভরসা করে তিনি সংখ্যাগুলো বের করার চিন্তা করছেন। তিনি যে বিপুল সংখ্যক পাঠকদের কথা ভাবছেন, সেটা বাংলাদেশ থেকেই উঠে আসবে, অন্ততঃ আসিফ তাই ভাবছেন। বিদেশ থেকে পনের বিশ জন অর্থ তুলে তুলে পত্রিকা চালানো হবে – সেটা কিন্তু কোথাওই বলা হয়নি। অথচ ফরিদ ভাই বেশ ক’বারই ব্যাপারটার প্রতি ইঙ্গিত করেছেন। প্রথম মন্তব্যেও বলেছেন – ‘বিদেশ থেকে সম্পূর্ণ বা বেশিরভাগ অম্লজান সরবরাহ করে বাংলাদেশের কোন পত্রিকাকে বাঁচিয়ে রাখার ব্যপারে আমার কোন আগ্রহ নেই’, ইত্যাদি। আমার মনে হয় না ব্যাপারটা সেরকম ভাবে আসিফ ভেবেছেন। ভুল বোঝাবুঝি হয়েছে আমার মতে গ্রাহক এবং পাঠকের ব্যাপারটি না পরিস্কার করার কারণে। এমনকি গ্রাহকদের মধ্যেও প্রিমিয়াম গ্রাহকদের ব্যাপারটা আলাদা (সে কথায় পরে আসছি) । আসিফ যে অগনিত পাঠকদের কথা বলেছেন, তারা পত্রিকার সাধারণ ক্রেতা, আর বলা বাহুল্য এই সংখ্যা উঠে আসতে হবে দেশের ভেতর থেকেই। কাজেই আসিফ যখন বলেন,
অন্যদের কথা জানি না, তবে আমি কিন্তু আসিফের এই উক্তি থেকে বাংলাদেশের অগণিত পাঠক তথা ক্রেতার কথাই বুঝেছি। বিদেশ থেকে অম্লজান সরবরাহকারী ‘প্রিমিয়াম গ্রাহকদের’ কথা নয়। এমনকি ফরিদ ভাই যদি আসিফের প্রথম লেখাটি দেখেন, সেখানে কোন অনুদান চাওয়াও হয়নি। আসলে অনুদান ব্যাপারটিতেই আসিফের প্রবল আপত্তি ছিলো প্রথম থেকেই। তার সাথে বহুবার কথা বলে আমি বুঝেছি যে, তিনি চ্যারিটি অনুদান এগুলোর প্রবল বিরোধী। কারণ চ্যারিটি করে কোন প্রফেশনাল কাজ টিকিয়ে রাখা যায় না। প্রফেশনালিজমের কথা মাথায় থাকে বলেই তিনি তার প্রিয় বিজ্ঞান বক্তৃতাও স্বেচ্ছাসেবক হিসেবে করেন না, কিংবা করেননা কোন অনুদানে। তার বক্তৃতা লোকে শোনে অর্থের বিনিময়েই। এ প্রফেশনাল ব্যাপারটি তিনি প্রথম থেকেই চালু রেখেছিলেন, এমন কি যখন তার দর্শক ছিলো মাত্র দুই তিন জন জন, তখনো। এই ‘বেসুরো’ কথা গুলো হয়তো আসিফের পক্ষে এভাবে বলা সম্ভব নয়, আসিফকে যেহেতু আমি সরাসরি চিনি, তার সূত্র ধরেই ব্যাপারটি উল্লেখ করলাম। আরো একটি জিনিস বোধ হয় আমরা ভুলে যাচ্ছি, আসিফ মহাবৃত্তের আইনস্টাইনের যে সংখ্যাটি বের করেছেন সেটি বিদেশ থেকে কোন ধরণের ‘অম্লজান’ সরবরাহ করা ছাড়াই। পত্রিকা বের করার খরচ তিনি বাংলাদেশে বসেই যোগাড় করেছেন। কাজেই বিদেশী অনুদানের উপর নির্ভর করে তিনি মহাবৃত্তের সংখ্যা বের করতে চাচ্ছেন – এটি যদি ভাবা হয় – তা বোধ হয় ঠিক উপলব্ধি হবে না।
এখন কথা হচ্ছে তা হলে ঘটা করে মুক্তমনা থেকে সাহায্যের কথা বলা হচ্ছে কেন। প্রথমতঃ আগেই বলেছি, অনুদানের ব্যাপারটি আমাদের কারোই মাথায় ছিলো না। এমনকি আসিফের প্রথম লেখাতেও নয়। ব্যাপারটি উঠে এসেছে পাঠকদের আলোচনা প্রতি আলোচনার প্রেক্ষিতে। অনেকেই পত্রিকাটির মান এবং হয়তো লেখকদের নাম দেখে গ্রাহক হতে চেয়েছেন। সেই সাথে তারা হয়তো ভেবেছেন এ ধরণের পত্রিকাকে টিকিয়ে রাখা যায় কিনা। আর বাংলাদেশে নায়ক নায়িকার ট্যাবলয়েড সমৃদ্ধ হাজারো পত্রিকা থাকলেও কোন মেইনস্ট্রিম বিজ্ঞানের পত্রিকা নেই। আমেরিকায় সায়েন্টিফিক আমেরিকান, ন্যাশনাল জিওগ্রাফিক কিংবা ডিস্কোভারের মত পত্রিকা যুগ যুগ ধরে টিকে থাকে, আর আমরা দেশে একটাও বিজ্ঞান পত্রিকা টিকিয়ে রাখা তো পরের কথা চালু করার কথা ভাবতে পারি না। ব্যাপারটা কি দূর্ভাগ্যজনক নয়? ফরিদ ভাই কি মনে করেন জানি না, আমি হাজারো নৈরাশ্যের ভীড়েও আসিফের মহাবৃত্তের মধ্যে আগামী দিনের বাংলাদেশের বিজ্ঞান পত্রিকার অমিত সম্ভাবনা দেখতে পাই।
এখন এই ধরনের একটি পত্রিকাকে টিকিয়ে রাখতে হলে কি করতে হবে? কেবল, – ‘বিদেশ থেকে সম্পূর্ণ বা বেশিরভাগ অম্লজান সরবরাহ করে বাংলাদেশের কোন পত্রিকাকে বাঁচিয়ে রাখার ব্যপারে আমার কোন আগ্রহ নেই’ – বলে আমাদের দায়িত্ব শেষ করে দেব, নাকি আরেকটু বেশি উদ্যোগ নিয়ে পত্রিকাটির পাশে এগিয়ে আসবো? আমার চোখে পত্রিকাটি নিঃসন্দেহে সম্ভাবনাময়, কিন্তু নতুন। আমি শুনেছি প্রতি দিনই পত্রিকাটির বহু কপি বিক্রি হচ্ছে, কিন্তু তারপরেও পত্রিকা টিকিয়ে রাখার মত পাঠক এক মুহূর্তেই আসিফ তৈরি করে ফেলবে এ চিন্তা বাতুলতা মাত্র । একদিন হয়তো পত্রিকাটির পঞ্চাশ হাজার বা তারো বেশি পাঠক তৈরি হবে (আসিফ সায়েন্স ওয়ার্ল্ডের এডিটর হিসেবে সেটি করে দেখিয়েছিলেনও), কিন্তু তার আগ পর্যন্ত এর কাঠামো তৈরি করতে এগিয়ে আসতে হবে বিজ্ঞানমনস্ক লোকদেরই, যারা বিজ্ঞানকে ভালবাসেন, যারা বাংলাদেশে বিজ্ঞান শিক্ষার বিস্তার চান, যারা বাংলাদেশে একটি হলেও নিয়মিত বিজ্ঞান পত্রিকা দেখতে চান।
ঠিক সে কারণেই মুক্তমনা এগিয়ে এসেছে। আমরা মহাবৃত্তের জন্য তৈরি করতে চেয়েছি কিছু প্রিমিয়াম গ্রাহক যারা কেবল পত্রিকাটাই কিনবেন না, এটা নিয়মিত চালিয়ে নেবার জন্যই তাদের হাতকে প্রসারিত করবেন। হয়ত অনুদান কিংবা অম্লজান সরবরাহ বলে এখন মনে হচ্ছে, কিন্তু পাঠক সংখ্যা বেড়ে গেলে এর আর প্রয়োজন পড়বে না নিঃসন্দেহে। আমরা ব্যাপারটিকে অনুদান হিসেবে দেখলেও আসিফ ব্যাপারটি সেভাবে হয়তো দেখতে চাননি। সেই চিন্তা থেকেই আসিফ সম্ভবতঃ – যারা বাৎসরিক গ্রাহক হবেন, তাদেরকে চারটি ছাপানো সংখ্যা প্রেরণ করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। তবে পরে ফরিদ ভাই, বন্যা , ইরতিশাদ ভাই এবং বিপ্লব সহ অন্যান্যদের আলোচনা থেকে বোঝা যাচ্ছে যে এভাবে বাংলাদেশ থেকে পত্রিকা প্রেরণ ব্যয়বহুল এবং বোধ করি বাস্তবসম্মতও নয়। আমি নিশ্চিত, আসিফ এই আলোচনার প্রেক্ষিতে তার মত পরিবর্তন করবেন এবং সঠিক পন্থাটি বেছে নেবেন। পিডিএফ অপশনটি বেশ ভাল অপশন বলে অনেকের কাছেই মনে হচ্ছে। বিপ্লব যদি আর কথামতো সিকিউরিটি ফিচারগুলো যোগ করতে পারেন, তবে পরবর্তী সংখ্যা থেকে তিনি এই পথে কাজ করতে পারবেন আশা করা যায়। তবে একটা বিষয় খেয়াল রাখা প্রয়োজন। আমরা ছাপানো কপি চাই না বলে ঢালাও ভাবে মনে করছি, কিন্তু তালিকায় আমি বেশ কিছু নাম দেখতে পাচ্ছি যারা মুক্তমনার খুব বেশি চেনা নন – হয়তো নীরব পাঠক কিংবা বড় শুভানুধ্যায়ী। তারাও যে ছাপানো সংখ্যা চান না, তা আমি হলফ করে বলে দেবার কেউ নই। কেউ যদি প্রকাশ্যে না করেন (যেমন ইরতিশাদ ভাই কিংবা বন্যা করেছেন), তবেই শুধু আমরা সেটা জানতে পারি কিন্তু তালিকার অন্যান্যরা – যেমন কফিলউদ্দিন মাহমুদ রাজিব কিংবা মোহাম্মদ আনোয়ারুজ্জামান কি চান তা কি আমরা কেউ হলফ করে বলতে পারি? তারা অর্থ যেহেতু দিয়েছেন (তালিকার নাম দেখুন), তাদের একটি প্রত্যাশাও বোধ করি রয়েছে এখানে, তাই না?
পাশাপাশি, আমাদের একটু বাস্তববাদিও হতে হবে। আমরা সবাই জানি, বাংলাদেশে পত্রিকা চলে অধিকাংশই কালো টাকায়। ব্যবসায়ীদের কালো টাকা হালাল করার সাইড মাধ্যম পত্রিকা – অনেক ক্ষেত্রেই। কাজেই, তারা পত্রিকা লস দিয়ে হলেও টিকিয়ে রাখেন নিজের ব্যবসার স্ট্যাটাস বজায় রাখার জন্য কিংবা অন্য বহু কারণে। আমরা তা পারি না। আমাদের পত্রিকার দায়িত্ব নিতে হয় আমাদেরই। আসিফ কিংবা আমাদের জন্য ব্যাপারটি বরং অনেক কঠিন। আমাদের তো কালো টাকা নেই। আমরা পত্রিকা টেকাবো কি করে? আসিফ পত্রিকাটি টিকিয়ে রাখার জন্য পাশাপাশি মাল্টিমিডিয়া প্রডাকশন সহ বহু কিছুর কথাই চিন্তা করছেন। এমনকি টিভিতে অনুষ্ঠানের কথাও। বিপ্লবও বেশ কিছু গঠনমূলক সাজেশন তাকে দিয়েছিলেন ব্যাপারটি কিভাবে টেকানো যায় তার কিছু নিজস্ব সার্ভে উল্লেখ করে। মুক্তান্বেষার মত পত্রিকা তো আমরাই টিকিয়ে রাখতে পেরেছি। অনন্ত যুক্তি বের করে আমাদের চোখে আঙ্গুল দিয়ে দেখিয়েছে, পাঠকের চাহিদা আছে এগুলো পড়ার। আমি আশাবাদী এর মধ্য থেকেই ভাল কিছু উপায় বেরিয়ে আসবে। কিন্তু একটা কথা নিশ্চিত বলতে পারি – উদ্যম হারিয়ে দ্বিধাবিভক্ত হয়ে হাত পা গুটিয়ে বসে থাকলে কিন্তু কিছুই হবে না।
@অভিজিৎ, আচ্ছা সায়েন্স ওয়ার্ল্ডটা কি কারণে বন্ধ হয়েছিল? অনেক আগে আব্বু আমাকে একটা বিজ্ঞান পত্রিকার মাসিক মেম্বারশীপ কিনে দিয়েছিল, কিন্তু সেটা সঙ্গত কারণেই বিজ্ঞাপনে ভর্তি ছিল, তাই আমার মনে হয় না ওটা সায়েন্স ওয়ার্ল্ড ছিল। হঠাত করেই পত্রিকাটার ডেলিভারী বন্ধ হয়ে গিয়েছিল।
@অভিজিৎ,
আমরা যেন কেউ এই মহৎ কাজে উদ্যম না হারাই এ আশাই করছি। 🙂
@অভিজিৎ,
বাংলা ভাষায় ওরকম রংগীন আকর্ষনীয় একটি পত্রিকার পেপার কপি হাতে পাব ভাবতেই ভাল লাগে। তবে কৃচ্ছতা সাধনের লক্ষ্যে আমি ইলেক্ট্রনিক কপির প্রতিই মত দেব।
@অভিজিৎ,
আমি আসিফ সাহেবের কাছ থেকেই উত্তর আশা করেছিলাম। তোমার কাছ থেকে সুবিশাল বক্তব্য পেয়ে যারপরনাই কিছুটা বিস্মিত হলাম। তার চেয়েও বেশি বিস্মিত হলাম এই দেখে যে আমার মূল বক্তব্যকে তুমি মোটেও বুঝতে পারোনি। আমার করা মন্তব্য দুটো মনোযোগ দিয়ে পড়েছো কি না সে ব্যাপারেও ঘোরতর সন্দেহ জাগছে আমার। কারো কোন বক্তব্যকে আংশিকভাবে (আউট অব কন্টেক্সট) তুলে নিলে যে সম্পূর্ণ ভিন্নতর অর্থ বের হয়ে আসে এবং তার ফলে যে ভুল বোঝাবুঝির সৃষ্টি হতে পারে সেটার প্রমাণ এখানেই নিহিত রয়েছে। তোমার এই মন্তব্য হুট করে কেউ পড়লে আমাকে মহাবৃত্তের প্রতিপক্ষ ট্রতিপক্ষ বলে ভেবে বসে থাকলেও আমি তাঁকে কোন দোষ দেব না। আমার বক্তব্যের কোথায় কোথায় আমি কি বলেছি আর তুমি কি বুঝেছো সেটাতে যাবার আগে একটা বিষয় আগেই পরিষ্কার করে নেই। তাহলে বোধহয় সবার জন্যেই সুবিধা হবে। মহাবৃত্ত নিয়মিত প্রকাশিত হোক, পত্রপল্লবে পরিস্ফূটিত হোক, সৌরভে আমোদিত করুক আশেপাশের সমস্ত কিছুকে এটাই আমার একান্ত কামনা। এখানে ভুল বোঝার বিন্দুমাত্রও কোন অবকাশ আমি রাখতে চাই না। নিজে বিজ্ঞানমূর্খ হতে পারি ঠিকই, কিন্তু বাংলাদেশে বিজ্ঞানচর্চার প্রয়োজনীয়তা না বুঝতে পারার মত আহম্মক লোক আমি নই। কাজেই শুধু মহাবৃত্ত নয়, আরো আরো অসংখ্য বিজ্ঞান বিষয়ক পত্রিকা বাংলাদেশে গড়ে উঠেছে, নানা রঙের পত্রিকার নানান পাতায় বাংলাদেশের কিশোর-কিশোরী, তরুণ-তরুণীরা ঘাড় গুঁজে গভীর মনোযোগে চোখ বুলোচ্ছে, সেই স্বপ্ন দেখতে কোন বাধা অনুভব করি না আমি।
ফরিদ ভাই যে একবারও এ বিষয়টাতে ইঙ্গিত করেননি সেটা মনে হয় তোমার চোখে পড়েনি। কোন অনুচ্ছেদের আংশিক পড়লে যে অর্থ বের হয়, পুরোটা পড়লে হয়তো ভিন্নতর হতেও পারে। দেখা যাক, পুরো অনুচ্ছেদে আমি কি বলেছিলাম।
যেখানে আমি লিখলাম যে, আসিফ সাহেব নিশ্চয়ই শুধুমাত্র প্রবাসী সদস্যদের গ্রাহক চাঁদার উপর ভিত্তি করে এত বড় একটা কাজে যে হাত দেননি সেটা সুনিশ্চিত, সেখানে তুমি আমার ঘাড়ে উল্টো দায় চাপাচ্ছো। ক্যামনে কী?
আসিফ সাহেবের বক্তব্যে গ্রাহক এবং পাঠক মিলেঝিলে গেলেও আমি কিন্তু পার্থক্যটা ঠিকই ধরতে পেরেছি। কাজেই, আমি যেটা লিখেছি সেটা আসিফ সাহেবের বক্তব্যের উপর ভিত্তি করেই লিখেছি। তুমি মিলিয়ে দেখতে পারো । মনে হয় না কোন অমিল খুঁজে পাবে। তিনি লিখেছেন,
আমার প্রথম মন্তব্যে প্রিমিয়ার সদস্যদের অনুদানের টাকাকে ব্যবহার করে মহাবৃত্ত কীভাবে অগণিত মানুষের কাছে পৌঁছে দেওয়া সে বিষয়ে একটি সুস্পষ্ট প্রস্তাবনা দিয়েছিলাম। দেখিয়েছিলাম যে তাঁদের সামান্য স্বার্থ ত্যাগে মহাবৃত্তের উদ্দেশ্যকে কীভাবে আরো জোরালোভাবে বাস্তবায়ন করা সম্ভব। আমার একেবারেই খেয়াল ছিল না যে এটা একধরনের অনধিকার চর্চা। যার যার মুরগি যে যেভাবে ইচ্ছে জবাই করবেন। আগে মাথা কাটবেন না, লেজ কাটবেন সেটা তাঁদের বিষয়। আমি এগুলো বলার কে? কাজেই, আন্তরিকভাবে দুঃখ প্রকাশ করে আমি আমার প্রস্তাবনাটি প্রত্যাহার করে নিচ্ছি।
হতদরিদ্র মানুষ আমি। এই মুহুর্তে প্রিমিয়ার সদস্য হবার মত ক্ষমতা নেই। তবে আশা আছে মনে। একদিন হয়তো সামর্থ হবে। সেইদিন একশ ডলার দিয়ে ষাট-সত্তরটা মহাবৃত্তের সংখ্য কিনে ফেলবো। তারপর আমার প্রিয়তম শহর ময়মনসিংহ এবং এর আশেপাশের প্রতিটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে, প্রতিটি ছাত্রাবাসে, প্রতিটি গণপাঠাগারে পাঠিয়ে দেবার ব্যবস্থা করবো সেগুলোকে।
যাযাবর তার দৃষ্টিপাত উপন্যাসে লিখেছিলেন, বিজ্ঞান দিয়েছে বেগ, কেড়ে নিয়েছে আবেগ। কথাটা পুরোপুরি সত্যি নয়। নিরাবেগী বিজ্ঞানও যে কারো কারো মধ্যে অদম্য আবেগ তৈরি করতে পারে তার জ্বলন্ত উদাহরণ হচ্ছো তুমি। এই মন্তব্যটাও সেই আবেগময়তারই ফল। এখানে বিভিন্ন শব্দবন্ধ এবং বাক্যের অন্তঃস্রোতের অন্তরালে যে কটাক্ষ এবং বিদ্রুপ লুকায়িত রয়েছে সেগুলোকে না বোঝার মত স্বল্পবুদ্ধিসম্পন্ন মানুষ আমি নই। তারপরেও সেগুলোকে উপেক্ষা করে গেলাম শুধুমাত্র বিজ্ঞানের সাথে তোমার আতালিপাতালি আবেগের কারণে। নইলে শব্দবন্ধ এবং বাক্যের অন্তঃস্রোত বলো আর বহিঃস্রোতই বলো সব জায়গাতেই কটাক্ষ, বিদ্রুপ আর শ্লেষের মিশেল দিয়ে কড়া ঝালের ঝালমুড়ি বানাতে খুব একটা খারাপ পারি না আমিও।
তোমার মত আমিও আশাবাদী যে ভাল কিছু একটা বের হয়ে আসবে বা আসতেই হবে। ঠান্ডা মাথায় সবদিক ভাবনা-চিন্তা করে উদযোগ নিলেই হবে। উদ্যম হারিয়ে দ্বিধাবিভক্ত হয়ে হাত-পা গুটিয়ে বসে থাকলে যেমন কিছু হবে না, সেরকম অতি উদ্যমী হয়ে কিছু না দেখেই খানাখন্দকে লাফিয়ে পড়লে হাত-পা ভাঙাটাও বিচিত্র কিছু নয়।
@ফরিদ আহমেদ,
মন্তব্য প্রতিমন্তব্য থ্রেড এমনিতেই দীর্ঘ হয়ে গেছে। আমি আর এর উত্তর দিচ্ছি না। আপনার দুটো মন্তব্যই আমি লাইন বাই লাইন পড়েছিলাম। কাজেই মন্তব্য পুরোটা না পড়া সংক্রান্ত আপনার সন্দেহ অমূলক। আমার ব্যক্তিগতভাবে মনে হয়ছে আপনি কেন যেন পুরো ব্যাপারটাই দারুনভাবে অসন্তুষ্ট (আমার ভুল হতে পারে অবশ্য)। যেখানে আমরা সবাই মিলে পত্রিকাটি টিকিয়ে রাখার চেষ্টা করে যাচ্ছি, সেখানে আপনি নস্ট্রাডামুসের মত ‘চারটা সংখ্যা পরেই পরলোকে গমন করার’ ভবিষ্যদ্বানী করে দিলেন, তাতে কি ব্যাপারটা বুঝা যায় না? 😀 । আর আমার একটা ‘দীর্ঘ’ মন্তব্যে বিস্মিত হলে আপনার তিনিটি মন্তব্য যোগ করে দেখুন ওয়ার্ড ডকুমেন্ট-এ কয় পাতা হইবো 🙂
আরেকটা ব্যাপার আপনি বোধ হয় ঘুরায় প্যাচায় ইঙ্গিত করার চেষ্টা করছেন যে, আমি আপনার লেখা এডিট করেছি। এই অংশটায় অভিযোগ খুবই মারাত্মক –
আমি আপনার মন্তব্য কিংবা লেখার একটা বর্ণেও হাত দেই নাই। আমি কি অভিযোগ করার চেষ্টা করছেন, যে আমি আপনার মন্তব্য পালটে দিয়ে আপনাকে ভুল ভাবে কোট করছি? আমি কিন্তু করিনি। আমি জানিনা অন্য এডমিনেরা কিছু করেছেন কিনা, আমি করিনি।
নিজের কাছে একটু পরিস্কার থাকলাম।
@অভিজিৎ,
নাহ! দারুণভাবেতো দূরের কথা পুরো বিষয়টাতে সামান্যতমও অসন্তুষ্ট নই আমি। আমার কথার আংশিক কোট করলে আমাকে নস্ট্রাডামুসই মনে হতে পারে। কিন্তু পুরোটা দেখলে দেখবে যে এটা আসলে একজন শুভাকাঙ্খীর কাছ থেকে একটি বাস্তববাদী পূর্বাভাস। এই পূর্বাভাস না মিললেই খুশি আমি। পুরো পূর্বাভাসটিই করা হয়েছে আসিফ সাহেবের পরিকল্পনার কথা জেনেই।
বিজ্ঞানমূর্খ আমি, তবে কোনভাবেই বিজ্ঞান বিদ্বেষী নই সে ব্যাপারে নিশ্চিত থাকতে পারো।
দেখলে আসলে সেরকমই মনে হবে। তবে অত কঠোরভাবে আসলে বিষয়টাকে নেই নি আমি। আমার মনে হয়েছিল যে আমার একটা শব্দকে কেউ হয়তো প্রতিস্থাপন করেছে। যদিও সেই শব্দে এমন কিছু যায় আসে না। তবে বিষয়টা আমার স্মৃতিভ্রংশতার কারণেও হতে পারে। মন্তব্য বাতায়নে সরাসরি লেখার কারণে কোন সমর্থন দলিলও নেই আমার কাছে। হয়তো আমারই ভুল হচ্ছে, ভুল ব্যাকরণে, ভুল শব্দে আমিই হয়তো লিখেছি তখন। নিশ্চিত না হয়ে হালকা বা কঠোর কোন ধরনের অভিযোগ করাটাই উচিত হয়নি আমার। যাইহোক, আন্তরিকভাবে ক্ষমাপ্রার্থনা করে তুলে নিচ্ছি আমি আমার অভিযোগটুকু।
যে দেশে আছি এখানে ক্রেডিট কার্ড ব্যাবহার করা নিষেধ আছে। দেশগিয়ে প্রিমিয়াম মেম্বার হবার সুযোগ তো থাকছেই নাকি?
@নিদ্রালু, অবশ্যই থাকছে। আপনি দেশে আসলে যোগাযোগ করেন
@আসিফ, আটলান্টার একজন ৫ কপি পত্রিকা কিনতে চেয়েছেন ( প্রতি সংখ্যা ১০ ডলার হিসেবে)। আপনি আমাকে মহাবৃত্তের ১০ কপি পাঠিয়ে দিলে আমি ওনাকে এবং আমেরিকা থেকে যারা প্রিমিয়াম গ্রাহক হয়েছেন তাদেরকে পাঠিয়ে দিতে পারবো। সুইডেন, অষ্ট্রেলিয়া এবং ইংল্যান্ড থেকে এখন পর্যন্ত যারা গ্রাহক হয়েছেন তাদেরকে আপনি আলাদা আলাদাভাবে পত্রিকাটা মেইল করার ব্যবস্থা করুন। মুক্তমনা মডারেটররা আপনাকে সবগুলো ঠিকানা পাঠিয়ে দিয়েছেন।
@বন্যা আহমেদ, আপনাকে দশ কপি পাঠানো হয়েছে। অন্যদেরো পাঠানোর ব্যবস্থা করা হচ্ছে। তবে অস্ট্রেলিয়া, ইউরোপের মতো জায়গাগুলোতে কমন স্টেষণ থাকতো তাহলে ৫/৬ কপি পাঠালে োখান থেকে অস্ট্রেলিয়া এবঙ ইউরোপের বিভিন্ন জায়গায় পাঠানো যেত। এটা সুলভ হতো। নেটোয়ার্কটাো শক্তিশালী হতো। বন্যাকে ধন্যবাদ তার মহাবৃত্তের গ্রাহক তৈরিতে অক্লান্ত চেষ্টা করার জন্য। মুক্তমনা সদস্যদের সহযোগিতা, আন্তরিকতায় আমি মুগ্ধ। এটা আমাকে স্বপ্ন দেখাচ্ছে একটা সত্যিকারের আন্তর্জাতিক মানের সায়েন্স জার্নালের। ধন্যবাদ সবাইকে।
আমরা যারা ঢাকা থেকে গ্রাহক হতে চাই তাদের কে কি করতে হবে ?
@আতিক রাঢ়ী,
আমি আসিফের সাথে কথা বলে আপনাকে জানাচ্ছি কি করতে হবে, দেশের থেকে আরেকজন ফোন করে বললেন উনিও ৫ হাজার টাকা দিতে চান। দেশের গ্রাহকদের কাছে তো আন্তর্জাতিকভাবে মেইল করে পত্রিকা পাঠাতে হবে না, সেক্ষেত্রে আমার মনে হয় গ্রাহক হওয়ার জন্য ১০০ ডলারের বাধ্যবাধকতাটা রাখাও উচিত হবে না।
@বন্যা আহমেদ,
ধন্যবাদ। আমি ফোনে যোগাযোগ করব।
@আতিক রাঢ়ী, আপনি যদি ঢাকায় থাকেন তাহলে ফোনে যোগাযোগ করেন। আপনার সহযোগিতাপূর্ণ মনোভাবের জন্য ধন্যবাদ
@asif,
১৬ তারিখ পর্যন্ত আমি একটু ঝামেলায় আছি। আমি আপনার সাথে ১৭ই জুন যোগাযোগ করব।
@আতিক রাঢ়ী, আপনি আসিফের সাথে যোগাযোগের পরে মুক্তমনা মডারেটরের কাছে বা এই ব্লগে একটু জানিয়ে দিয়েন, তাহলে গ্রাহক লিষ্টে হিসেবটা আপডেট করে দেওয়া যাবে।
আমি ও আমার বোন ইয়াসমিন সাঈদ মহাবৃত্তের গ্রাহক হলাম,কিন্তু গ্রাহক হওয়ার লিষ্টে আমাদের নাম নেই।গ্রাহক হওয়ার পর লিষ্টে নাম আসতে কি দেরী হয় ??
ভাল উদ্যোগ। মহাবৃত্তকে প্রমোট করা আসলেই দরকার ছিল। তবে অন্য বিজ্ঞান সংঘঠনগুলোকে প্রমোট করা যেতে পারে। সবচেয়ে ভাল হয় সমমনা লোকজন নিয়ে একটা নতুন সংঘঠন করা গেলে। আইডিয়াটা অনেকদিন ধরেই মাথায় কিন্তু বলতে সাহস পাচ্ছিলাম না। ঢাকার সবাই এগিয়ে এলেও তো বেশ হয়। একটা ছোটকাগজ বার করা যেতে পারে দুমাস পর পর।সবাই কি বলেন?
সম্ভবত এ-সমস্ত উদ্যোগ এবং সেটা সমর্থন করবার মানসিকতা সম্পন্ন লেখক, পাঠক’রা আছেন বলেই ‘মুক্তমনা’ অন্য আর পাঁচ-দশটা সাইট থেকে আলাদা। এখানকার পাঠক-লেখকরা বারবার প্রমাণ করেছেন, শুধু মুখে-মুখে কিংবা কীবোর্ড-মাউসে নয়; বাস্তবিক পদক্ষেপ এবং সরব অংশগ্রহণের মাধ্যমে সত্যিকার অর্থেই তাঁরা যুক্ত আছেন পরিবর্তনের মহান প্রচেষ্টায়। সকলের জন্য শ্রদ্ধা।
প্রথম যে-দিন ‘মহাবৃত্ত’ র কথা শুনলাম, সে-দিনই আজিজ মার্কেটের ‘তক্ষশিলা’ থেকে ১৫০ টাকা দিয়ে কিনে আনি। দোকানের ভদ্রমহিলা খুব যত্ন করে সীল মেরে, প্যাকেটে করে দিলেন। তারপর থেকে যখনি সময় করতে পারছি, একটা একটা করে পৃষ্ঠা পড়তে চেষ্টা করছি। আশা করছি আর তিন-চার দিনের মধ্যেই একটা রিভিউ লিখে উঠতে পারব। সবার আগে সেটা অবশ্যই থাকবে মুক্তমনার পাঠকদের জন্য।
সবাই ভালো থাকবেন।
পেপ্যাল একাউন্ট দিয়ে মেম্বার হবার চেস্টা করলাম-পারলাম না। এটা একটু ফিক্সড করে দিন প্লিজ।
ফেসবুকে আমার গ্রুপগুলোতে প্রায় হাজার দশেক মেম্বার আছে-তাদের ইমেল করে দিলাম।
গ্রাহক হলাম। পেপাল থেকে পে করতে, নিজেদের পেপ্যাল একাউন্টে ঢুকে
[email protected]
ইয়ে ১০০ ডলার পাঠিয়ে দিন।
যদিও পে-পাল ই-মেইলে তাতক্ষনিকভাবে একটা রিসিপ্ট পাঠিয়ে দেয়, তারপরও মুক্তমনা যদি সময়ে সময়ে গ্রাহকদের তালিকা আপডেট করতেন, তাহলে নতুন গ্রাহকগণ নিশ্চিত হতে পারতেন যে তাদের তথ্য ঠিকানা মুক্তমনায় পৌছে গেছে, আচ্ছা পত্রিকা না হয় পরে আসুক অসুবিধে নেই।
@আকাশ মালিক,
আপনার পাঠানো অনুদান আমরা পেয়েছি। মহাবৃত্তের গ্রাহক হওয়ার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ। মূল পোস্টের নীচের দিকে একটি লিঙ্ক যোগ করা হয়েছে (এ পর্যন্ত যারা প্রিমিয়াম গ্রাহক হয়েছেন), সেখানে গেলেই আপনার এবং অন্যান্য গ্রাহকদের নাম দেখতে পাবেন।
অনেক ধন্যবাদ আবারো।
গ্রাহক হলাম।
@স্নিগ্ধা, তুই কি পয়সা দিয়ে নাকি খালি খালি গ্রাহক হলি? পে প্যালে পয়সা দিয়ে থাকলে তা দেখা যাচ্ছে না, হাপিশ হয়ে গেছে, আর না দিয়ে থাকলে ঠিক আছে 🙂 । আমাকে কি চেক পাঠাবি?
@বন্যা আহমেদ,
বোকার মতো জিজ্ঞেস আবারও জিজ্ঞেস করতে যাচ্ছিলাম, “রাফিদা, তোর কি কোনদিন লজ্জা টজ্জা হবে না রে?!”, পরে ভেবে দেখলাম শততমবার একই প্রশ্ন করে তো কোন লাভ নাই! যা হবে না, তা হবে না 🙁
আমার গলায় পাড়া দিয়ে যে প্রতিশ্রুতি আদায় করলি, সেই হিসাবেই নিকেচিলুম – “গ্রাহক হলাম”।
পে প্যালে দিবো, নাকি তোকে চেক পাঠাবো – সেটা পরে আমরা ঠিক করে নিবো, কারণ তোর সাথে টাকাপয়সার আরো লেনদেন বাকি আছে।
@সবাই,
ইয়ে, সারাক্ষণ ফাজলামি করতে করতে স্বভাব এত্তো খারাপ হয়ে গেসে যে রাফিদার নাম দেখলে আর স্বাভাবিকভাবে কথা বলতে পারি না 🙁 জনগণের জ্ঞাতার্থে জানাই – আমাকে কোনরকম জোরাজুরি করা তো হয়ই নাই, বরং এরকম একটা কাজে কিছু না করে শুধু গ্রাহক হয়েও যদি অংশ নিতে পারি সেটা আমার জন্যই দারুণ একটা প্রিভিলেজ! তাই, জানামাত্রই আমি আগ্রহ প্রকাশ করসি।
@স্নিগ্ধা,
রাত বারোটায় বাসায় এসে তোর গ্রাহক হওয়া দেখে খোঁচানোর লোভটা সংবরণ করতে পারলাম না। ওইটা লেখার উদ্দেশ্যই ছিল এরকম কিছু একটা শোনা 🙂 , অভি আমার মন্তব্য দেখেই বলসিল ‘বুঝবা এবার… ‘।
কিন্তু সিরিয়াসলি, অনেক অনেক ধন্যবাদ গ্রাহক হওয়ার জন্য, একটু পরে ফোন করতেসি।
গ্রাহক হলাম, পে প্যালে দেওয়া ঠিকানায় পত্রিকাটা পাঠালেই হবে আমাকে। ধন্যবাদ মুক্তমনা কতৃপক্ষকে ব্যবস্থাটা করে দেওয়ার জন্য।