আমার কিছু জানার ছিল
আকাশ মালিক
‘ধর্মীয় মৌলবাদ নির্মূল করার বাস্তব উপায়’ বাতলায়ে বিপ্লব পাল মুক্তমনায় পরপর যে দুটি প্রবন্ধ লিখেছেন তার অনেক কিছুই আমি বুঝি নাই। প্রথম লেখাটি ছিল ধর্মীয় মৌলবাদ নির্মূল করার বাস্তব উপায় আর দ্বিতীয়টি মৌলবাদ বিরোধি জন সংগঠন। পাঠকদের কাছ থেকে প্রচুর সাড়া পাওয়া গেল। খুব দ্রুতই সংবিধান লিখা, একাউন্ট খোলা, মেম্বার সংগ্রহ করা, চাঁদা কালেকশন করা, লেনিনের পথ ধরে জন সংগঠন করা, এমন কি নাম রাখারও প্রস্তাব এসে গেলো। মনেমনে বললাম, আমার সবকিছু জানার দরকার নাই, আমি না বুঝলেও চলবে। পরে দেখলাম, না বুঝার দলে আমি শুধু একা নই আমার মত আরো দু একজন আছেন। তাদের একজন বললেন-
‘একজন ধর্মবিশ্বাসী কীভাবে বিজ্ঞানমনস্ক হতে পারে, আমি বুঝি না’।
অপরজন বললেন-
‘পরিষ্কারভাবে কুসংস্কারমুক্ত এবং বিজ্ঞানভিত্তিক সংগঠন করতে হলে ধর্মে বিশ্বাসীদের সাথে নিয়ে কিভাবে করা যায় এটা আমার বোধগম্য হচ্ছে না’।
যাকে নির্মূল করা হবে আগে তাকে তো চিনতে হবে। এত কিছু কথা, এত মন্তব্য শোনার পর আমি যদি বলি, ‘মৌলবাদ জিনিষটা কী আর মৌলবাদী কারা’ আমি সেটাই বুঝি নাই, লোকে বলবে সাতখন্ড রামায়ন পড়ে জিজ্ঞেস করছি সীতা কার বাপ। ১৪ কোটি মুসলমানের দেশ বাংলাদেশের কয়জন মুসলমান মৌলবাদী? পৃথিবীতে মৌলবাদ সমর্থন করে এমন মুসলমান কয়জন আছে? বাংলাদেশে ১৫০টা ইসলামী দলগুলোর কোন্ দলটি মৌলবাদী? কোন্ মুসলমান কোন না কোন ভাবে একটি ইসলামী দলের সমর্থক বা সদস্য নয়? ব্যক্তি জীবনে বিজ্ঞান ব্যবহার করেনা, বিজ্ঞানের খায়না, বিজ্ঞানের পরেনা, বিজ্ঞানের সুফল গ্রহন করেনা এমন ব্যক্তি জগতে কি একজনও আছে?
ভয়ে ভয়ে এতদিন জিজ্ঞেস করি নাই, এবার একটু সাহস পেলাম। সত্য কথা গোপন করায় কোন মহত্ব নেই। সত্যকে ধামাচাপা দিয়ে আমি নিজেকে ধোঁকা দিতে পারিনা, তাই শুনতে যতই অবুঝ, অজ্ঞ বা বোকার মত শোনাক না কেন, আমার সত্য কথা বলাটা যদি কারো অপছন্দ বা বিরক্তির কারণ হয়, আমি আগেই ক্ষমা চেয়ে নিচ্ছি।
প্রথম প্রবন্ধটি (ধর্মীয় মৌলবাদ নির্মূল করার বাস্তব উপায়) পড়ে আমার মনে হলো, এই আলোচনা, এই প্রজেক্টের প্রায়োগিক পরিবেশ চাঁদের দেশে থাকতে পারে, দুনিয়ায় নেই। দুনিয়ায় কৃষ্ণ, যীশু, মুহাম্মদ হাজার হাজার বছর রাজত্ব করেছেন, তাদের অনুসারীগণ এমন অবুঝ শিশু নন যে তাদেরকে কলার ভেতর ট্যাবলেট ঢুকিয়ে খাওয়ানো যাবে। বিজ্ঞানের কল্যাণে কৃত্রিম উপায়ে ফসল ফলাতে পারলে মানুষ ধর্ম থেকে দূরে সরে যাবে কেন? আমি তো বরং উল্টোটাই দেখি। আমন, বুরো ধানের ফসল ধ্বংস হওয়ার পরে বিজ্ঞানের কল্যাণে ইড়ি ধানের উৎপাদন যত বেড়েছে, মানুষের আল্লাহ বিশ্বাস ততই বেড়েছে। ধানের মধ্যে মানুষ আল্লাহর মহিমা আবিষ্কার করেছে আর সেই আল্লাহর নৈকট্য পেতে তার সংবিধান কোরান খুলে পড়েছে এবং সেই অনুযায়ী কৃতজ্ঞতার নিদর্শণ স্বরূপ বিজ্ঞান নিয়ে টুইন টাওয়ারে ঢুকেছে, একসাথে আঘাত করেছে বাংলাদেশের ৫ শো টি যায়গায়। আগেই বলেছি আমার অনুমান, আমার বিশ্লেষণ ভুল হতে পারে, তাই সংশ্লিস্ট প্রবন্ধ থেকে কিছু কথা আর পাঠকের কিছু মন্তব্য তুলে ধরবো। দুজন পাঠকের মন্তব্য দিয়ে শুরু করা যাক-
‘আমার মনে হয় বাংলাদেশে এমন কিছু করতে গেলে ধর্মের কথা ভূলেও
সামনে আনা যাবেনা। মানুষের সেন্টিমেন্টে সামান্যতম আঘাত করলে কোন কাজই এগুবেনা’।
লেখক উত্তর দিলেন- ‘বিজ্ঞানে ত ধর্ম লাগে না। তাহলে ধর্মের কথা আসবেই বা কেন? আমি সেটাই ত বুঝি না’।
‘নিশ্চয়ই নাস্তিকতা নামের কোন ধর্ম প্রচারে এই সংগঠন নামবে না। বিজ্ঞান শিক্ষা বিষয়ক সংগঠন আমাদের দেশে কম হলেও আছে, নুতন কিছু নয়। সংগঠন করতে হবে, সদস্য বানাতে হবে সবই বুঝলাম। তবে তার আগে কি ইস্যু নিয়ে কার্যক্রম ঠিক করবেন সেটার একটা শক্ত ভিত্তী দরকার নয় কি’?
লেখক উত্তর দিলেন- ‘নাস্তিকতা নিয়ে ভাবি না-কারন আসলেই নাস্তিকতা কোন ধর্ম না দর্শন না আমার কাছে। নাস্তিকতার প্রচারের ও আমি খুব একটা পক্ষপাতি না। প্রচার চালাতে হবে বিজ্ঞান মুখী চিন্তার’।
বুঝা গেল আমার মত আরো অনেকেই লেখার বিষয়বস্তু পুরোপুরি বুঝতে সক্ষম হন নাই।
এবার দেখা যাক লেখক কী কী বলেছেন-
যুক্তি তর্ক আবেগ দিয়ে কেও জিতে থাকে বা টিকে থাকে বলে জানি না।
যুক্তি দিয়ে মহম্মদকে নীচ এবং মহান-বিড়াল এবং বানর-মহৎ ও ক্ষুদ্র সবকিছুই প্রমান করা যায়। লাভ খুব বেশী হবে না।
(বাংলাদেশে টিভি চ্যানেলে) বিজ্ঞান নিয়ে আলোচনা করলে কেন দেবে না। বিজ্ঞানের চোখ দিয়েই ধর্মকে দেখাতে হবে। মহম্মদ বা কৃষ্ণকে গালিগালাজ করাটা কোন পথ বা সমাধান না।
হিন্দুধর্ম দিয়ে মুসলমানদের সাথে দাঙ্গা বাধানো যায়, কিন্ত ইসলামিক মৌলবাদের সাথে যুদ্ধ করা যায় না। বিজ্ঞানের প্রসার ছারা আরত কোন গতি নেই।
সেই মুসলমান মোটেও সভ্যতার জন্যে ভয়ংকর নয়, যে ইসলামের নেগেটিভ দিকগুলি নিয়ে অবগত-এটা অন্য ধর্মের জন্যেও সত্য।
কারা মেম্বার হবার যোগ্য? যারা বিজ্ঞানের গবেষনা লদ্ধ জ্ঞানকে, সমাজ এবং রাষ্ট্রের জন্যে একমাত্র পথ বলে মনে করেন। তিনি আস্তিক, নাস্তিক, কমিনিউস্ট যে কেওই হতে পারেন।
একজন ধার্মিকের বিজ্ঞান চেতনায় বিশ্বাসী হওয়া আটকায় না যদি তার ধর্ম বলতে সে মানবিকতাকে বেছে নেয়।
ধার্মিক মানে বিবর্তন বিরোধি তাও না।
সব ধার্মিক মানেই বিজ্ঞানের সাথে সংঘাত, সেটা আমি মানি না।
একজন ধার্মিকের বিজ্ঞান চেতনায় বিশ্বাসী হওয়া আটকায় না যদি তার ধর্ম বলতে সে মানবিকতাকে বেছে নেয়। নিজের ধর্মের প্রতি ক্রিটিকাল দৃষ্টিভংগী বজায় রাখে।
বিজ্ঞান চেতনার উন্মেষে প্রতিটা প্রগতিশীল মানুষেরই আমাদের সাহায্য চাই। আস্তিক নাস্তিক সেখানে সকলেই স্বাগতম। আজকে যদি আমি দাবী করে বসি সকলকে নাস্তিক হতে হবে, কারন আমি মনে করি তাহাই ইহজগতের জন্যে উত্তম বা ঠিক সেই কারনে আমি জোর করে নাস্তি্কতার প্রচার করি, সেটাও মৌলবাদের রূপ নেবে। এবং তার সাথে ইসলাম বা হিন্দুত্ববাদের কোন পার্থক্য থাকবে না।
শুধু ধর্মের কারনে কেও সন্ত্রাসী হয় না। এর পেছনে থাকে অনেক রাজনীতি অর্থনীতি শ্রেণীদ্বন্দ।
নাস্তিকতার প্রচারের ও আমি খুব একটা পক্ষপাতি না। প্রচার চালাতে হবে বিজ্ঞান মুখী চিন্তার।
বেশ ভাল ভাল কথা। আবেগ নেই, যুক্তি নেই, তর্ক নেই, ধর্ম নেই, ধর্মগ্রন্থের সমালোচনা নেই, কৃষ্ণ-মুহাম্মদকে গালাগালি নেই, হিন্দু-মুসলমানের দাঙ্গা নেই, নাস্তিকতার প্রচার নেই। এমন একটি সংগঠনে জগতের তাবত বিশ্বাসীরা সদস্য হতে আগ্রহী না হওয়ার কোন কারণ দেখিনা। লেখকের উপরোল্লেখিত এ সমস্ত বক্তব্য শুনে, খুশী মনে মডারেইট মুসলিম, উদারপন্থি, বিজ্ঞান সমর্থক, মৌলবাদ বিরোধী আন্দোলনের অগ্রযাত্রী আবিদ সাহেব লিখলেন-
বিপ্লব, এই কথাগুলোই কিন্তু আমি বহুদিন ধরে বলে আসছি। ভিন্নমত, সদালাপে এসব নিয়ে অনেক লিখেছি। বরং এই কথাটাই ইসলামের বিরুদ্ধাচারী অনেক লেখক মানেননা। আপনি এটা বিশ্বাস করেন দেখে ভাল লাগলো। – ধর্মীয় সন্ত্রাসের কারন প্রসঙ্গে আপনার মৌলিক অবস্থানের সাথে আমার মৌলিক অবস্থানের বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে যে কিছুটা হলেও সামঞ্জস্যতা আছে, তা আশা করি আপনার চোখে পড়বে।
আমি ভাবলাম, এইতো ধর্মগ্রন্থ আর বিজ্ঞানের অপূর্ব সহাবস্থান, একই মোহনায় এসে ভাববাদ আর বস্তুবাদের কি মধুর মিলন। এবার মৌলবাদ পৃথিবী থেকে নির্মূল না হয়ে যায় কোথায়?
তারপর-
মেইন স্ট্রিম মিডিয়াতে নাস্তিকতাকে টানাঃ
ধার্মিক ব্যাবসায়ীরা অতিরিক্ত অর্থ মন্দির মসজিদে ব্যায় করে-আমরা লাইব্রেরী তৈরী করতে ব্যায় করব। মোদ্দাকথা এই নেটওয়ার্কিং টা দরকার। মুসলমানরা মুসলমানদের পাশে দাঁড়ায়-হিন্দুরাও দাঁড়াচ্ছে-নাস্তিকদের মধ্যেও এই সাপোর্ট সিস্টেমটা বানাতে হবে।
নাস্তিকদের ও ব্যাবসাতে নামতে হবে, যাতে এই সাপোর্টগুলো আনা যায়। অধিকাংশ বাঙালী নাস্তিকই সুখী পড়াশোনা করা চাকুরীজীবি লোক-এটা একটা বিশাল সমস্যা নাস্তিক মিডিয়া করার ক্ষেত্রে। কারন মিডিয়া চলে ব্যাবসা প্রমোট করতে-সেখানে নাস্তিকদের ব্যাবসা না থাকলে এই ধরনের মিডিয়া করা খুব কঠিন। আমি এই জন্যে প্রতিটা নাস্তিককে ব্যাবসায় নামার জন্যে উৎসাহিত করব।
কালচারাল আইডেন্ডিটি বাজে জিনিস। হিন্দু বা মুসলিম বলে পরিচয় দিলে সমাজ গ্রহন করে বেশী-কিন্ত সেটার বিকল্প হিসাবেই নাস্তিক সমাজ গড়তে হবে-যেখানে নাস্তিকরা তাদের প্রয়োজনে সাহায্য পাবে। নাস্তিক হওয়ার এই মুহুর্তে সামাজিক ইউটিলিটি শুন্য, বা নেগেটিভ-সেটাই নাস্তিকতার পথে বড় বাধা।
সব ধরনের ধর্মীয় আইন রাষ্ট্র থেকে বাতিল করে, সমাজ বিজ্ঞানকে ভিত্তি করে সামাজিক গবেষনার মাধ্যমে নতুন আইন আনার দাবী জানাতে হবে।
ধর্মটা বিবর্তনের ফলে উঠে আসা একটা সামাজিক প্রোডাক্ট-যার প্রয়োজন ছিল। আজ তা নেই। তাই আস্তে আস্তে উঠে যাবে।
আমি আজ পর্যন্ত শুধু অসম্প্রদায়িক তাদেরই দেখেছি, যারা নাস্তিক-এবং বিজ্ঞানমুখী ও যুক্তিবাদি।
অভিজ্ঞতাই আমাকে শিখিয়েছে ধর্মীয় সহনশীলতার অস্তিত্ব প্রশ্নবিদ্ধ।
সর্ব ধর্ম সত্য এবং সমান-এই কথাটা কিন্ত কোরান বলে না।
মুসলিমদের মধ্যে সাম্প্রদায়িক মনোভাব বেশী কারন কোরান ভীষন ভাবেই একটি সাম্প্রদায়িক গ্রন্থ।
আমার শেষ জিজ্ঞাসা- মুসলমান আর মুসলমানদের ধর্মগ্রন্থ কোরানের এই যে পরিচয় দিলেন, এর পর এই সংগঠনে আবিদ সাহেবের মত অসাম্প্রদায়িক, মৌলবাদ বিরোধী উদারপন্থি, কোরানে বিশ্বাসী মুসলমানদের অংশ গ্রহন এখনও কি আশা করেন?
আমার মনে হয় দারিদ্রতাই মৌলবাদিতার প্রধানতম উতস। যতদিন বাংলাদেশ দরিদ্রতম দেশ হিসাবে গন্য হবে ততদিন কোন সংঠনের কোন কার্য্যক্রমই বাংলাদেশে মৌলবাদ দুর করতে বাস্তব কোন সাফল্য রাখতে পারবেনা। দারিদ্রতা কাটানো মানেই বিজ্ঞানের উন্নতি সাধন অথবা ভাইস্ ভার্সা। তখন এমনিতেই দেশ থেকে মৌলবাদিতা দুর হতে বাধ্য।
সুতরাং এটি হতে পারে স্রেফ একটি বিজ্ঞান সংগঠন যেটার সাথে আস্তিক, নাস্তিক, ধর্মভীরু, ধর্মহীন ইত্যাদি বিষয়গুলো সম্পুর্ন অপ্রাসংগিক এবং সম্পর্কহীন।
আর একান্তই যদি কোন মৌলবাদি বিরোধী প্রচার কার্য্য চালাবার প্রয়োজনীয়তা কেউ উপলব্দি করেন তো অবশ্যই সেটা মৌলবাদ বিরোধী লোকজন দিয়েই সংগঠন চালাতে হবে যেখানে মৌলবাদ বিরোধী নিবেদিত লোকজন প্রচারকার্য্যে সত্যিকারের বাস্তব ভুমিকা রাখতে পারেন।
এখন কথা হচ্ছে কে মৌলবাদি আর কে মৌলবাদি না তা নির্ধারন করার উপায় জানা না থাকলে এই ধরনের সংগঠনের অস্তিত্বও প্রশ্ন সাপেক্ষ হবে।
সোজা কথা সংগঠনটির উদ্দেশ্য যদি হয় বিজ্ঞান চর্চা তো সেটি হবে বিজ্ঞান সংগঠন আর যদি হয় মৌলবাদ বিরোধী প্রচার সংগঠন তবে সেই উদ্দেশ্য মাথায় রেখেই অগ্রসর হতে হবে। আসলে উদ্দেশ্য আগে ঠিক হওয়া দরকার। জগাখিচুরী উদ্দেশ্য নিয়ে মানে একদিকে বিজ্ঞান অন্যদিকে মৌলবাদ বিরোধী ইত্যাদি বিভিন্ন বিষয় মাথায় নিয়ে অগ্রসর হলে সংগঠনের সাফল্য আসার সম্ভাবনা কম। এখানে মনে রাখতে হবে একটি উদ্দেশ্যের বাই প্রোডাক্ট হিসাবে অন্য একটিতে সাফল্য আসবেই।
@ব্রাইট স্মাইল্,
মৌলবাদের বিরোধিতা করার একমাত্র রাস্তা বিজ্ঞান। বিজ্ঞানের দর্শনেই আছে সেই গভীরতা এবং বীজ যা মৌলবাদকে ধ্বংশ করতে পারে। নচেৎ মৌলবাদ বিরোধি আন্দোলন ও আরেকটি মৌলবাদে পরিণত হতে পারে। উদাহরন চান? আলি সিনা। জ্বলন্ত উদাহরণ।
তবে আইনস্টাইন বা জৈবিক বিবর্তন পড়ে ধর্ম বা মৌলবাদ কোনটাই লাঘু হবে না। এর জন্যে ইতিহাস সমাজ বিজ্ঞান এবং নৃতত্ত্ব বিজ্ঞানে জ্ঞান আরো বেশী জরুরী। এই দ্বিতীয় কাজটা মুক্তমনাতে খুব বেশী হয় না-কারন সেই ধরনের গবেষনাগুলোকে নিয়ে আমরা খুব বেশী আলোচনা করি না।
@বিপ্লব পাল,
এই ধরণের বিষয়গুলো নিয়ে আলোচনা আসলেই কম হয় মুক্তমনায়। আশা করি সব ধরণের বিষয়ই আসবে ধীরে ধীরে যখন মুক্তমনার লেখক পরিসর আরো বড় হবে।
@আকাশ মালিক,
বুরো ধানের ফসল ধ্বংস হওয়ার পরে বিজ্ঞানের কল্যাণে ইড়ি ধানের উৎপাদন যত বেড়েছে, মানুষের আল্লাহ বিশ্বাস ততই বেড়েছে।
:yes:
আপনার আসার জন্যই আশাই ছিলাম।
ধর্মীয় মৌলবাদ নির্মূল করার বাস্তব উপায়</strong
অথবা
মৌলবাদ বিরোধি জন সংগঠন।
সংগঠনটির টাইটেল বিশ্লেষণ করলে আর বিপ্লবদার যুক্তিগুলো(জাকির নায়েককেও সদস্য করা যেতে পারে এমন যুক্তিগুলো।) দেখে আমার মনে হয়েছে-
ধর্মীয় কেতাবগুলোতে কোন মৌলবাদ বিষয়ক নির্দেষ নেয়। শুধু কিছু সংখ্যক লোক শুধু নিজেদের স্বার্থসিদ্বির জন্য মৌলবাদি হয়।
যদি তা সত্যি হয়ে থাকে তবে কোন আপত্তি নেয়। আর যদি ধর্মীয় মৌলবাদ বা সাম্প্রদায়িকতা ধর্মীয় কেতাবে থেকে থাকে আর আমাদের ধর্মীয় মৌলবাদ নির্মূল সংগঠনের প্রিমিয়াম সদস্য জাকির নায়েক(নিশ্চয় সে সাধারন সদস্য হবে না) রেফারেন্স হিসেবে তা দেখায় তবে?
বিপ্লবদার-মুসলিম পরিচয়েও খুব ভাল মানুষ হওয়া যায়-উদাহরন ত আমি নিজের জীবনেই দেখেছি। মন্তব্যটি সবাই স্বীকার করে। তাছাড়া তিনি যাদের উদাহরন দিয়েছেন (মগারেট ধার্মিক )তাদের হয়তো সদস্যও করা যায় কারণ তারাও মৌলবাদ সাপোর্ট করেনা। কিন্ত আমরা তাদের উদ্দেশ্যে সংগঠন বানানোর কথা বলছিনা। বলছি যারা ধর্মীয় কেতাব থেকে অনুপ্রাণিত হয়ে চরমপন্থা বেছে নিয়েছে তাদেরকে কি বলে চরমপন্থা থেকে ফেরাব।
আসুন আমরা একটা পরিক্ষা করি বিপ্লবদার লজিকের উপর।
আমাদের মু্ক্তমনার সদস্য আব্দুর রহমান আবিদ ভাইকে অনুরোধ করি একটা আর্টিকেল লিখতে যেখানে লেখা থাকবে-
কুরআন এবং হাদিসের সমস্ত সাম্প্রদায়িক,হিংসাত্বক ও মৌলবাদ সংক্রান্ত আয়াতগুলো হযরত মুহম্মদ (সাঃ) অন্যায়ভাবে যুক্ত করেছেন। তিনি ভুল করেছেন কিন্ত আমরা তা করতে পারিনা।
সে যেহেতু এগুলো সাপোর্ট করে না তার জন্য আসা করি এগুলো লিখতে অসুবিধা হওয়ার কথা না।
গুরু (বিপ্লবদা), আশা করি আমার মন্তব্যে ভূল হলে শুধরিয়ে দিবেন, রাগ করবেন না।
@হেলাল,
ওই হিংসাত্মক এবং সাম্প্রদায়িক আয়াতগুলি স্থান এবং কালের সাপেক্ষে ভুল ছিল না। ইসলাম ছিল ধণী প্যাগানদের বিরুদ্ধে গরীব প্যাগানদের যুদ্ধ করার ডাক-আরো বৃহৎ একটি আরব সামাজিক শক্তির উত্থান। তৎকালীন আরব সমাজের জন্যে তা ঠিকই ছিল-কিন্ত বর্তমানের উন্নত সভ্যতায় সেগুলো অসভ্যতা ছারা কিছু না।
তাহলে দোষটা কার? মহম্মদ তার সময়ের জন্যে যা করণিয় করে গেছেন-দোষটা তাকে যারা ফলো করেছে তাদের-তারা এটা বোঝে নি কোনটা সময়ের উপযোগী-আর কোনটা বর্জনীয়।
সুতরাং ঐতিহাসিক দৃষ্টতে দেখলে মহম্মদকে দোষ না দিয়েই, এই গুলোকে অপসারিত করা যায়।
ধর্মকে নির্মূল না করেও মৌ্লবাদকে নির্মূল করা যায়। পাশ্চাত্য তার প্রমান। আসলে সাহিত্য, দর্শন, যুক্তিবাদ, বিজ্ঞান এসবের সম্মিলীত প্রচেষ্টায় ধর্মীয় প্রভাব কোন সমাজ থেকে কমে আসে। সেই সাথে কমে আসে মৌলবাদ।
এই প্রচেষ্টাগুলো সব সময় সংঘবদ্ধ ভাবে হয় না। অনেকটা সতঃস্ফূর্তভাবে ও আপাত বিক্ষিপ্তভাবে হতে থাকে। কিন্তু এর সামগ্রিক ফল হিসাবে সমাজে গুনগত পরিবর্তন দেখা দেয়।
মুক্তমনা একধরনের কাজ করছে। যার ফলে গন-সচেতনতা বাড়ছে। এখন মাঠ পর্যায়ে এই বিষয়নিয়ে কিভাবে কাজ করা যায় সেটাই দেখার বিষয়। আমার সাধারন জ্ঞানে এটা সত্যিই আসে না কেবল নাস্তিকদের জন্য সংরক্ষিৎ কোন সংগঠনের পক্ষে মাঠ পর্যায়ে কাজ করা সম্ভব।
সংগঠন করতে গেলে আমাদেরকে অবশ্যই সংগঠনের ইতিহাস জানতে হবে, সেই সাথে বাস্তব অভিজ্ঞতা অর্যন করতে হবে।
সংগঠনের কিছু নীতিমালা থাকে আর থাকে কর্মসূচী। ভন্ড কেউ যখন সংগঠনে আসে ভিন্ন উদ্দেশ্য নিয়ে, তবে তাকে একমাত্র কর্মসূচীর মাধ্যমেই ঠেকানো সম্ভব। যেমন বদরের যুদ্ধে অংশ নেয়া মোনাফেকদের দ্বারা সম্ভব হয়নি। যে আল্লার আইন চায় সে বিজ্ঞানের আলোকে আইন প্রনয়নের জন্য চাঁদা দেবে না।
আর কেউ যদি গোলযোগ তৈ্রী করতে চায় তবে সে পরিচয় গোপন করেই ঢুকবে। নিজেকে সে মডারেক ধার্মীক পরিচয় না দিয়ে নাস্তিক সরদার হিসাবেই তুলে ধরবে।
এছাড়া আজকের নাস্তিক আগামীকাল বড় একজন মৌ্লবাদী হয়ে উঠতে পারে। তাই ঝুকি থাকছেই। যুদ্ধে নামলে ক্ষতির সম্ভাবনা থাকবেই। সেটাকে যতটা পারা যায় কমিয়ে আনার পথ সবাইকেই খুঁজতে হবে।
আসলে আমাদেরকে ভেবে দেখতে হবে, এই যে বাংলাভাই গং কে ফাঁসি দেয়া হলো, কারা দিল ? নিশ্চই নাস্তিকরা না । বরং এমন কিছুলোক যারা নীজেদেরকে মুসলমানই মনে করে। মানে মুসলমান = মৌলবাদী এটা ঠিক না।
আমরা মৌলবাদ নির্মূল করতে চাই সমাজ থেকে। সমাজটা যাদেরকে নিয়ে গঠিৎ তাদেরকে দাব দিয়ে এটা হবে না। কোন বাম সংগঠন যদি বলে বেড়াত আগে নাস্তিক হয়ে পরে তাদের দলে যোগ দিতে হবে তবে সংগঠন হতোনা।
তারা বিপরীত দর্শনটা একজন মুসলমান বা হিন্দুর সামনে উপস্থাপন করে। চিন্তায় দ্বন্দ্ব তৈ্রী করে।
ছাত্র ইউনিয় থেকে আমাকে ডাকা হয়েছিল যখন আমি ক্লাস সিক্সে পড়ি। তাদের পাঠচক্রে যোগ দেয়ার আগে আমি হুজুরের কাছে কোরান পড়ছিলাম।কিন্তু এই অপরাধে তারা যাদি আমার মত কাউকে না ডাকতো তবে কাদেরকে নিয়ে তারা কাজ করতো ?
আমাদের নীরব না থকে আলোচনায় অংশ নেয়া উচিৎ, যেহেতু আমাদের অকাংখা অভিন্ন।
সাইফুল ভাইয়ের লেখায় নিজের যুক্তি দিয়েছি। সেখানেই আলোচনা হোক।
বিপ্লব পালের নিবন্ধটি পড়ে আমি confused ছিলাম। খালি মনে হচ্ছিল -বেশী বাড়াবাড়ি হচ্ছে। ধীরে চলা ভাল। নাস্তিক, আস্তিক আর কমুনিস্টের সংগঠন হবে ভেবে শুধু চুপিসারে লিখলাম – খিচুড়ির গন্ধ পাচ্ছি যেন।
সাইফুল ইসলামের নিবন্ধ পড়ে সাহস পেয়ে মনে হল – জগাখিচুড়ি কেটে খিচুড়ি না লিখলেও চলত। আকাশ মালিকের মন্তব্যের জন্য অপেক্ষা করছিলাম।
ধন্যবাদ আকাশ মালিক। :yes: :clap2:
ধর্মীয় মৌলবাদ নির্মূলের জন্যে একটি সংগঠন তৈরী এবং তার কার্যপদ্ধতি বিষয়ক প্রস্তাবনাগুলো আমার কাছেও অবাস্তব মনে হয়েছে। স্বার্থসিদ্ধির হাতিয়ার হিসেবে তৈরী এবং এই স্বার্থপর মানবজাতির মৃত্যুর পর অনন্তকাল ধরে স্বার্থ সংরক্ষনের নিশ্চয়তাদানকারী যে ধর্ম, তাকে ছাড়তে যাবে তারা কোন স্বার্থে? বিজ্ঞানের ব্যবহারের মাধ্যমে তারা ইহকালের ১০০% স্বার্থ ভোগ করবে এবং মৃত্যু পরবর্তী স্বার্থের আশায় ধর্মকে তারা কোনদিনই ছাড়বে না যতদিন পর্যন্ত না তাদের নিজ জ্ঞানে সেটা (মৃত্যুর পরে যে কিছু নেই) বুঝতে পারবে। মৃত্যুর পরে কিছু নেই বলে বিজ্ঞান তা কোনোদিনই প্রমান করতে পারবে না। যা নেই তা তো আর প্রমান করা যায় না। তাই হয়ত আরো বহুকাল অপেক্ষা করতে হবে উন্নত জিন এর আশায়। তখন হয়ত আপনাদেরকে আর কোন সংগঠন বানাতে হবেনা, সব মৌলবাদ এমনিতেই চলে যাবে। আমাদের সবার শুধু নিজস্ব অবস্থান থেকে জ্ঞানের আলো ছড়াতে হবে। অন্ধকারের পিছে দৌড়িয়ে সময় নষ্ট করার কোন মানে নেই।
@Thirsty,
জীবনটা ব্ল্যাক এন হোয়াইট না কালার ফিল্ম।
বিপ্লবদা’র প্রবন্ধে আমি বেশী মন্তব্য করিনি। আমার মনে হয়েছে যে নিজের অভিজ্ঞতা আপনাদের কাজে আসবে না। আমরাও এরকম অনলাইন ভিত্তিক এবং প্রযুক্তির বেশী ব্যাবহারের মাধ্যমে সংঠন বিস্তারের কথা ভেবেছিলাম। বাস্তবে এটা এতটাই বেশী কঠিন যে আমাদের প্রজেক্টগুল অর্থের অপচয় এ পর্যবসিত হয়েছিল। ব্যাক্তিগত এবং সামষ্টিক যোগাযোগ বাস্তব পর্যায়ে না ঘটলে যে কোন আন্দোলন গণভিত্তি পাবে বলে আমার মনে হয় না। আর বাংলাদেশের মানুষ বা পৃথিবীর সকল মুসলমান কুরান না পড়লেও ধর্মের বিরুদ্ধে কিছু বললেই তাদের কাছে আর গ্রহনযোগ্যতা থাকে না।
আকাশ মালিক ভাই, বিপ্লবদা যে ময়দানের কথা বলেছেন, সেখানে ধার্মিক লোকেদের সংখ্যাই বেশী। তাই এরকম একটা সংবিধানের কথা ভাবতে হবে যেখানে স্তর ভিত্তিক সদস্য থাকবেন। সর্বচ্চ স্তরের সদস্যগন নির্বাচিত তখনি হবেন, যখন তিনি সত্যিকার ভাবেই বিজ্ঞানের দর্শনের ভিত্তিতে যাবতীয় সমস্যা সমাধানের পথকেই প্রধান পথ বলে মনে করবেন। তারাই সংঠনের পরিচালনার দায়িত্বে থাকবেন। এ সংগঠনের সমর্থকদের মাঝে এ ধারনাটা আসলেই চলবে যে ধর্মের স্বর্গরাজ্য আসলে কখনই বাস্তবায়িত হয়নি। বর্তমানে অমুসলিম শাসিত অনেক উন্নত দেশ যেমন রয়েছে, তেমনিভাবে এক সময় মুসলিম শাসিত উন্নত দেশ ছিল। উন্নতির পেছনে সেই সব দেশ যুগের চাহিদা পুরনের সামর্থই আসল কারণ।
@আনাস,
খুব সত্য কথা। আসলেই আদর্শ সমাজ, রাষ্ট্র বলে কিছু হয় না। যা আছে তাই নিয়েই কাজ করতে হবে। বাংলাদেশ এবং ভারতে স্ট্রাটেজি এক হতে হবে তাও না। ভারতে ধর্ম নিরেপেক্ষতা এবং উদার সমাজের ভিত যেহেতু কিঞ্চিত বেশী শক্ত সেখানে আরেকটু সাহসী হওয়ায় যায়।
বাংলাদেশের অধিকাংশ মুসলিম যদি কোন সংগঠনকে তার শত্রু ভাবে, সেই সংগঠনের জনভিত্তি কি করে হবে সেটা আমাকে কেও বলবেন?
আবার এটাও ঠিক, তাদের প্লিজ করতে গিয়ে অবৈজ্ঞানিক কিছু মেনে নিলে, সেখানেই সংগঠনের ইতি বা তুলে দেওয়ায় ভাল।
আমি যেটা দেখেছি-সেটা হচ্ছে ধর্মকে ধর্মগ্রন্থ থেকে না দেখে, ইতিহাস আর বিজ্ঞান দিয়ে দেখলে, আরো পরিস্কার দেখা যায়-এবং একজন ধার্মিক তাতে দুঃখ পেলেও আপত্তি করতে পারেন না।
প্রশ্নটা এখানেই যে আমরা কি ধর্মকে সমালোচনা করার সময় সহানুভূতিশীল থাকব না গালাগাল দেবে?
ব্যাক্তিগত ভাবে অনেক ধার্মিকের সাথে আমার দ্বিমত থাকলেও বৈরীতা হয় নি-কারন ধর্মান্ধ ছাড়া সবাই স্বীকার করে একজন ভাল মানুষ হওয়া ধার্মিক হওয়ার থেকে অনেক বেশী জরুরী। শুধু এই টুকু সেন্সই যথেষ্ঠ একসাথে কাজ করার জন্যে।
@আনাস,
. ১০০% সহমত।
একটা পার্শ্ব ইস্যু কি করে প্রধান হয়ে গেল ভাবতে অবাক লাগে। প্রস্তাবিত সংগঠনে আস্তিকদের (বিশেষ কোন ধর্মের প্রেক্ষিতে) সদস্য হয়া যাবে কি না এই প্রসংগ টেনে এনে ও এর উপর গুরুত্ব দেয়ায় এই নন ইস্যুকে ইস্যু বানিয়ে ফেলা হয়েছে। মৌলাবাদ বিরোধী সংগঠন করাটাই মূল বিবেচ্য ছিল, কিভাবে তা বাস্তবায়িত করা যায় সেই ব্যাপার গুলি। ধর্মে বিশ্বাসীরা তার সদস্য হল কি না হল সেটা নিয়ে এত মাথা ঘামানো কেন? জামাতে ইসলামী দল তো চিন্তিত নয় যে যদি সাম্যবাদী কেউ তাদের দলে যোগ দেয়, বা সাম্যবাদী দলেরা তো চিন্তিত নয় যে যদি ইসলামবাদী কেউ তাদের দলে ভিড়ে। আমার তো মনে হয় সংবিধান পরিস্কার হলে ধর্মে বিশ্বাসীরাই তো যোগ দিতে ইতস্তত করবে। আর আর্থিক লাভেরও তো কোন সম্ভাবনা নেই। যোগ দিলেই বা কি। সেটা বরং একটা কৌতুকোদ্দীপক ব্যাপার হয়ে যাবে। কমিক রিলিফ যাকে বলে। আর তা ছাড়া মডেরেট ইসলামী নামের আস্তিকেরা ঐ সংগঠনে যোগ দেবেও না কট্টরদের কুনজরে পড়ার ভয়ে, যদি না তারা কট্টরদের হয়ে অন্তর্ঘাতের লক্ষ্যে যোগ দেয় (মুক্ত চিন্তার সদস্যদের নাম ঠিকানা কট্টরদের সাপ্লাই দেয়া)।
@যাযাবর,
এই ব্যাপারটিতো আমার মাথায় আসেনি। তাহলেতো বড়ই চিন্তার কারন হয়ে দাড়ালো। :-/
কোরানে বিশ্বাসী বলতে কি বোঝায় আমার কাছে পরিস্কার না। বাস্তব এটাই ৯৯% মুসলিম কোরান পড়ে নি।
তাছারা মুসলিম পরিচয়েও খুব ভাল মানুষ হওয়া যায়-উদাহরন ত আমি নিজের জীবনেই দেখেছি। ইতিহাসে রুমি, মৌলনা আবুক কালাম আজাদ এরা এসেছেন। রুমি কি বলেন নি-আমি পূবের নই পশ্চিমের নই
ইসলামের নই, ইহুদির নই, খ্রীষ্ঠানের নই??
আমরা কি তাহলে খলিল জিব্রানের সেই অসাধারন কাব্যকে অস্বীকার করব যেহেতু তা বিজ্ঞান ভিত্তিক না? রবীন্দ্রনাথের কাব্যকে অস্বীকার করব যেহেতু তিনিও ধর্মীয় রক্ষণশীল লোক? নজরুলকে অস্বীকার করবো যেহেতু তিনি শ্যামা মায়ের নেমে গানের পর গান লিখে গেছেন?
নজরুল রুমি এরাও মুসলমান। তালিবান রাও মুসলমান। মুসলমান বলতে মনোলিথিক কিছু হয় না-হয় না হিন্দুর পরিচয় ও। ১২০০ মিলিয়ান মুসলিমের ১২০০ মিলিয়ান ধর্ম, ৯০০ মিলিয়ান হিন্দুর ৯০০ মিলিয়ান হিন্দু ধর্ম-এটাই বাস্তব। তাহলে প্রতিটা হিন্দুর হিন্দু ধর্ম আলাদা, প্রতিটা মুসলিমের কাছে তার ইসলাম আলাদা। বিশুদ্ধ ইসলাম বা হিন্দু ধর্ম বলে কিছু হয় না।
একটি বিজ্ঞানভিত্তিক সংবিধানকে মানলে এসব অসুবিধা হওয়া উচিত না। লড়াই ত শুধু মৌলবাদের বিরুদ্ধে না, লড়াই বিভেদের বানীর বিরুদ্ধেই।
আমরা বিভেদের বিরুদ্ধে কিন্ত তুমি যেহেতু মুসলমান তাই আমাদের সংগঠনের সদস্য হতে পারবে না-এটাত সেলফ ডিফিটিং লজিক। বিভেদের বিরুদ্ধে সংগ্রাম করতে গেলে মিলনের পথ খুলতে হয়-বিভেদকে আরো বাড়াতে হয় না। কারন সেক্ষেত্রে আমিও তার পথেরই পথিক হলাম।
আজকে লোকে ধর্মান্ধ কারন তাদের বিজ্ঞানে শিক্ষা নেই। ওই রায়হান বলে ছেলেটা বিবর্তনের বিরুদ্ধে হেগে বেড়াচ্ছে কেন? কারন ওর লেখা পড়লেই বোঝা যায় বিজ্ঞানের ভিত ওর খুব দুর্বল। তাহলে আসল কালপ্রিট কে? ধর্মের প্রতি ভালোবাসা না বিজ্ঞানে দুর্বলতা। আপনি প্রথমটা বলবেন-আমি দ্বিতীয়টা বলব। আমি মনে করি বিজ্ঞান ঠিক ঠাক শিখলে লোকে মৌলবাদি হতে পারে না। হ্যা অনেক বিজ্ঞানের অধ্যাপকই মৌলবাদি-কিন্ত তারাও বিজ্ঞানের দর্শন বা বিজ্ঞান গভীরে জানে না। দুটো পেপার ছাপালেই বিজ্ঞানকে জানা যায় না। এটাও একটা সার্বিক দর্শন।
@বিপ্লব পাল,
তবেতো মৌলবাদ বিরোধী চেতনায় আসতে গেলে সাধারন মানুষকে বিজ্ঞানের অধ্যাপক হলেও হবেনা, রীতিমত একেকজনকে বিজ্ঞানে নোবেল প্রাইজ ধারী অথবা কমপক্ষে হলেও নোবেল প্রাইজের জন্য মনোনীত ব্যাক্তি হওয়া দরকার বলে মনে হচ্ছে।
@ব্রাইট স্মাইল্,
এর উত্তর আমি আগেও দিয়েছি। শুধু একটু সমাজ বিজ্ঞান আর নৃতত্ত্ব বিজ্ঞান পড়লেই লোকে ধর্ম কি জানতে পারে। অত কিছু জানবার দরকার নেই।
ধার্মিকদের সঙ্গে নিয়ে মৌলবাদের বিরুদ্ধে লড়তে চাওয়াটা আমার কাছে অনেকটা মাদক-ব্যবসায়ীদের নিয়ে মাদকবিরোধী আন্দোলন করার মতো অলীক মনে হয়।
বলতে চেয়েছিলাম:
ধার্মিকদের সঙ্গে নিয়ে মৌলবাদের বিরুদ্ধে লড়তে চাওয়াটা আমার কাছে অনেকটা মাদক-ব্যবসায়ীদের সঙ্গী হিসেবে নিয়ে মাদকবিরোধী আন্দোলন করার মতো অলীক মনে হয়।