ভূমিকা – অনেক পিড়াপিড়ির পর স্ত্রীর কাছে পরাজয় বরণ করে দুটো শর্তে মেয়ে তিনটিকে মসজিদে মিয়াসাবের (ওস্তাদের) কাছে আরবী শিখাতে রাজী হয়ে গেলাম। শর্ত দুটো ছিলো- (১) মেয়েদের গায়ে মিয়াসাব কোনদিন হাত তুলতে পারবেনা, মেয়েদেরকে হুমকি ধমকি দেয়া চলবেনা। (২) শুধু শনি ও রবিবার মসজিদে যেতে পারবে, অন্যান্য শিশুদের মত স্কুলের হোম-ওয়ার্ক ফেলে সপ্তাহে সাত দিন যেতে দেয়া হবেনা।
স্ত্রী খুশী মনে সান্তনার বাণী শুনালেন- ‘ইংল্যান্ডে মিয়াসাবরা শিশুদের মারধোর করবে কী ভাবে এটা তো বাংলাদেশ নয়’। আমি তার কথায় আশ্বস্ত হতে পারলাম না। এই মাদ্রাসা মসজিদের ওস্তাদ প্রজাতির সাথে আমার ভাল পরিচয় আছে। আমার বাল্যকাল ওস্তাদের বেত্রাঘাত আর চোখের জলেই গড়া। ইচ্ছে ছিল স্ত্রীকে বলি, কোরাণ তো আরবে, ইরানে, পাকিস্তানে, বাংলাদেশে যা, ইংল্যান্ডেও তা। সাহসে কুলায় নাই, তবে স্ত্রীকে রিমাইন্ডার দিলাম- আমি সবকিছু সইতে পারবো, আমার কোন মেয়ের চোখের জল সইতে পারবো না। মাত্র তিন দিনের মাথায় অঘটন ঘটে গেল। সন্ধ্যা সাতটায় পড়া শেষে আমার অপেক্ষায় মেয়ে তিনটি মসজিদের দেয়ালে হেলান দিয়ে দাঁড়িয়ে আছে। তাদের চেহারা দেখেই আনুমান করতে পেরেছিলাম কিছু একটা ঘটেছে। মেজো মেয়ে তাহমিনার (৯) গাল দুটো রক্তলাল, চোখের পাতা তখনো জলে ভেজা। গাড়িতে উঠেই ছোট মেয়ে রোমানা (৫) বললো-
– Abbu, I don’t like that man.
– Who?
– That bearded man.
– Why?
– He hurt my Mejo Apu
আমি আর কথা বাড়ালাম না। ডাইনিং টেবিলে আলাপ উঠলো। বড় মেয়ে ফারহানা (১১) ঘটনার বর্ণনা দিল-
Ustadji was beating a young child with a bamboo stick because he, the young child, was late. Tahmina whispered to me,
“Apa Moni look, what is he doing? He can’t do that.”
Ustadji came to us and squeezed Tahmina’s right chick so strongly with his two fingers that left red marks on her chick. At the same time he said to her, “What’s the matter with you little fatty?” Tahmina burst in to tears.
সেদিন আমি তাদেরকে মুক্তমনায় প্রকাশিত শবনম নাদিয়ার ইংরেজি লেখাটি পড়তে দিয়েছিলাম। আজ তার অনুবাদ করলাম এই আশায় যে লেখাটি হয়তো বাংলাভাষী কোন বাবা মায়ের দৃষ্টি আকর্ষণ করতেও পারে। সরাসরি অনুবাদ নয় বরং লেখাটির মূল থিমটাই ফুটিয়ে তুলার চেষ্টা করেছি।
:line:
আমি যে কারণে নাস্তিক থেকে গেলাম
শবনম নাদিয়া(অনুবাদ- আকাশ মালিক)
কিশোর বয়সের প্রথম দিকেই আমার বিশ্বাসের প্রাচীর ভেঙ্গে একটি একটি করে ইট খসে পড়তে থাকে। বিভিন্ন বিষয়াদী নিয়ে আমি নিজেকে ক্রমাগত প্রশ্ন করতাম, আর এভাবেই একদিন আবিষ্কার করি, মানব সৃষ্ট ধর্মের আসাড়তা। শিশুকালে আল্লাহ বা ধর্ম নিয়ে তেমন ভাবতাম না, আন্যান্য বিশ্বাসীদের মত আমিও মনে করতাম ধর্ম হচ্ছে অকল্পণীয় ভাবনাতীত বিরাট কিছু যার আস্তিত্ব চিরকালই বিদ্যমান ছিল। সেই বয়সে আমি জানতাম, মুসলমানদের আরবী ভাষা শিখতে হয় যেহেতু কোরাণ আরবী ভাষায় লিখা, সকলকে নামাজ পড়তে হয় (যদিও মনে করতাম নামাজ শুধু, মা, বাবা, দাদা, দাদীর মত বড়দের জন্যে, আর বিশেষ করে পুরুষদের সপ্তাহে একবার জুম্মার নামাজ পড়লেই যথেষ্ঠ)।
একজন মুসলমান শিশু হিসেবে আমি মনে করতাম যে, মুসলমান মানেই ঈদ, শবেবরাত, সুস্বাদু খাদ্য, মেহদী-রাঙ্গা হাত, চোখ ঝলসানো সুন্দর চাকচিক্য পোষাক আর কটকট শব্দের নতুন জুতা। অবশ্যই আরো কিছু বিষয়াদীও আছে যেমন, মক্তবে সুরা-হাদীস শিক্ষা, নবীর জীবন চরিত জানা, ভাল-মন্দের পার্থক্য জানা, হালাল-হারাম, পাপ পুণ্য, পাক-নাপাক সম্মন্ধে জ্ঞান অর্জন করা। ব্যস, এভাবেই জগত চলে, আর আমি একদিন বড় হবো, সব কিছু জানতে পারবো যেমন আজ আমার মা বাবা জানেন। আমি বিশ্বাস করতাম, আল্লাহ একজন আছেন এবং সর্বদা থাকবেন, আমি ভাল মানুষ হয়ে বড় হলে তিনি প্রয়োজনে আমার ডাকে সাড়া দেবেন। কিন্তু যখন সময় এলো, চেয়ে দেখি তিনি কোথাও নেই।
তবে এসব পরের ঘটনা। সন্দেহে বিশ্বাসে দুদুল্যমান আমি নিজেকে বাহ্যত বিশ্বাসীদের দলেরই ভাবতাম, যেন কখনো সমাজ বিচ্যুত বা নিঃসঙ্গ একা হয়ে না যাই। কোন কিছু প্রশ্নাতীত ভাবে বিশ্বাস বা গ্রহণ না করা শুরু হয়েছিল সেই হেমন্তের এক প্রভাতের ঘটনা থেকে, যখন আমি ১১/১২ বৎসরের সদ্য কিশোরী।
মা-বাবা বহুমূখী শিক্ষার্জনের লক্ষ্যে আমার ভাই ও আমাকে নিকটতম একটি মক্তবে ভর্তি করালেন। অসহ্য প্রত্যুষে ঘুম থেকে জেগে উঠে কায়দা হাতে ছুটতে হতো মক্তবের দিকে। ফ্রক পরা কিশোর বয়সেও মক্তবের ছাত্রী হিসেবে আমাকে পরতে হতো শেলয়ার-কামিজ আর মাথায় জড়াতে হতো ওড়না। একদিন সকালে দেরী হয়ে যাচ্ছিল দেখে, মা আমার মাথায় ওড়না চাপিয়ে লম্বা গাউন পরিয়ে মক্তবে পাঠিয়ে দিলেন। মা ভেবেছিলেন, শেলয়ারের পরিবর্তে আপাদমস্তক শরীর ঢাকা গাউন নিশ্চয়ই মক্তবে গ্রহনযোগ্য হবে। আর হবারই তো কথা, কারণ শরীর ঢেকে রাখাটাই যদি শর্ত হয়, সেই অর্থে আমার শরীর তো অনাবৃত ছিলনা। যখন মক্তবে পৌছুলাম, হুজুর (ওস্তাদ) আমাকে ডেকে নিয়ে সকলের সামনে জিজ্ঞেস করলেন- ‘তোমার জামার নিচে কী’? তারপর উচ্চস্বরে, চিৎকার করে বলতে থাকেন, ইউনিভার্সিটির ছাত্র শিক্ষক ও তাদের ছেলে-মেয়েদের অশ্লীল পোশাক পরিচ্ছদের কথা। তিনি তাতক্ষণিক ভাবে আমাকে মক্তব থেকে বেরিয়ে যাওয়ার হুকুম দেন, আর বলে দেন ভাল কাপড় না পরে আমি যেন কোনদিন মক্তবে না আসি। সেদিন আমার দেহে অনুভব করেছিলাম লজ্জা আর অপমানের আগুন, আমি শুনতে পাচ্ছিলাম সহপাঠিদের গুঞ্জন, আর স্পষ্ঠই মনে আছে উর্ধশ্বাসে এক দৌড়ে সে দিনের বাড়ি ফেরার কথা।
বাস্তবে আমি মনে করি এ অপমানের দুটো রূপ আছে। প্রথমত, হুজুর আমার সহপাঠি সকল বন্ধু-বান্ধবীর সম্মুখে আমাকে অপমান করেছেন। দ্বিতীয়ত, আমার জামা নয়, হুজুরের ঐ ‘তোমার জামার নিচে কী’ ধরণের কুৎসিৎ প্রশ্নের মাঝেই সত্যিকার অশ্লীলতা লুকিয়ে আছে। সেদিন অনেক কেঁদেছিলাম, তবে একজন জেদী মেয়ে হিসেবে মাকে বলে দিয়েছিলাম যে, আমি আর মক্তবে যাবো না। মাকে আমি কৃতজ্ঞতা জানাই যে তিনি আমার মনের বেদনা বুঝতে পেরেছিলেন, এরপর কোনদিন মক্তবে যেতে আমাকে বাধ্য করেন নি।
ঐ ঘটনা আমার জীবনে গভীরভাবে রেখাপাত করে। দুটো কারণে ঐ ঘটনা আমার কাছে স্বরণীয় হয়ে রয়েছে। একটি হলো, আমি যতদূর বুঝতাম, অনাবৃত দেহে মক্তবে যেতে নেই। মায়ের দেয়া কাপড় পরে এই শর্ত পুরণ করেই আমি মক্তবে গিয়েছিলাম। তাহলে হুজুর আমাকে এভাবে অপমান করলেন কেন? এ প্রশ্নের কোন যৌক্তিক উত্তর কেউ আমাকে দিতে পারেন নি। অপমানের দুঃসহ যাতনা থেকে পরিত্রাণ পেতে আমার বাবাকে এ ব্যাপারে প্রশ্ন করেছিলাম। পেশায় একজন শিক্ষক হিসেবে বাবার একটা অভ্যেস ছিলো, কোন ব্যাপারে প্রশ্ন করলে দীর্ঘ একটা বক্তৃতা দেয়া। তিনি বললেন যে, ‘দুরদর্শিতার অভাবে মানুষ এমন করে থাকে, সকল মানুষ ঘটনার সুদুর প্রসারী প্রতিক্রীয়া অনুমান করতে পারেনা। হুজুরের দৃষ্টিতে যেহেতু আমি একটি বালিকা তাই আমার উচিৎ ছিল শেলোয়ার পরা। হুজুর সম্ভবত ইচ্ছাকৃত ভাবে অশালীন কটুক্তি করেন নি, এ শুধু হুজুরের সীমিত জ্ঞানের কারণ, আর দুর্ভাগ্য তার, যে তিনি বিকল্প সঠিক ভাষা ব্যবহার করতে পারেন নি। হুজুরের ধারণায় মেয়েদের শেলোয়ার না পরা অন্যায়, তিনি শুধু এটাই বুঝাতে চেয়েছিলেন’। আমি বাবাকে বললাম- কিন্তু আমার মাথা থেকে পায়ের গোড়ালী পর্যন্ত তো কাপড়েই ঢাকা ছিল। বাবা বললেন- হাঁ, তাত্বিক অর্থে তোমার কথাই ঠিক, কিন্তু হুজুর সেই বিচারে, সেই দৃষ্টিতে বিষয়টি দেখেন নি, অনেকেই তা দেখতে পারেনা। হুজুরের চোখে মেয়েদের গুটি কয় নির্দিষ্ট পোশাকই একমাত্র গ্রহনযোগ্য পরিধেয় বস্ত্র।
যে সকল বিচ্ছিন্ন প্রশ্ন সমুহ আমাকে সর্বদা ভাবাতো, এই ঘটনার মাধ্যমে সেই সব ভাবনাগুলো দানা বাঁধতে শুরু করে। শুরু হয় ঘটনার ভিন্নভাবে বিশ্লেষণ। সম্পূর্ণ শরীর-ঢাকা লম্বা কাপড় যদি পর্দার শর্ত পুরণ করতে ব্যর্থ হয়, তাহলে আমার ফ্রক সেই শর্ত পূরণ করে কীভাবে? আমার বয়সের সকল মেয়েরাই ফ্রক (যা পা ঢেকে রাখেনা) পরে, কিন্তু এ নিয়ে কারো মাথা ব্যথা নেই। অথচ আমার প্যান্ট (যা আমার পায়ের গোড়ালী পর্যন্ত ঢেকে রেখেছিল) হলো সকলের মাথা ব্যথার কারণ। এ সবের কোন যৌক্তিক কারণ আছে, কোন অর্থ হয়? আমার চোখে ভেসে উঠে প্রথাগত আনুষ্ঠানিক ধর্ম পালনের যুক্তিহীন দিকগুলো, তথাপি তখনও আমার মন থেকে ধর্ম-বিশ্বাস সম্পূর্ণ উধাও হয়ে যায়নি।
দ্বিতীয় কারণ হলো, মক্তবের ঐ দিনের ঘ্টনার মাধ্যমে আমি জানতে পেরেছি এই ধর্মগুরুদের মন কতো সংকীর্ণ, যাদের একজন হচ্ছেন আমার মক্তবের হুজুর। এ ছাড়াও অনেকেই আছেন যাদের মধ্যে কেউ প্রহার করবেন নারীকে কেউ দেবেন শিশুকে শাস্তি। আমি মনে করি নারীকে অনেকে অন্যান্য উপায়েও শাস্তি দিয়ে থাকেন, (যেমন বাংলায় একটি কথা আছে- হাতে না মেরে ভাতে মারা) যারা মনে করেন প্রহারকারী স্বামীর চেয়ে তারা ভাল স্বামী। আর সমাজে সবল কর্তৃক দুর্বলের প্রতি প্রাধান্য বিস্তার বা ভয় দেখানোর প্রবণতা ধর্মগুরুদের দৃষ্টিগোচর হয়না, হলেও এ যেন ধর্তব্য কোন অন্যায়ই নয়। আমি নিজেকে প্রশ্ন করি, এই শিক্ষা গুরুদের কেন আমরা সম্মান করবো? কারণ তারা আমাদেরকে ঈশ্বরের বাণী শুনান? নিম্নমনের এই স্বল্প জ্ঞাণী, স্বল্পবুদ্ধির মানুষগুলো ঈশ্বর প্রদত্ত জীবনের গৌরব সৌন্দর্য মলিন করে দিয়েছে, তাদের মনগড়া কুৎসিত ও কিছু দূর্বোধ্য অন্ধ আইনের মাধ্যমে।
আমার বোধ হয় মক্তবের ঐ হুজুরের প্রতি কৃতজ্ঞ থাকাই উচিৎ, কারণ তারই অদূরদর্শীতা, এবং শালীন ও অশালীনতার মধ্যকার পার্থক্য নির্ণয়ে ব্যর্থতার সুত্র ধরে আমি নিজেকে প্রশ্ন করতে শিখেছি, যার ফলশ্রুতিতে ১৪ বৎসর বয়সেই আমি হয়েছি একজন অজ্ঞেয়বাদী কিশোরী। তখনও কিন্তু শান্তির ধর্মে আমার বিশ্বাস অটুট ছিল।
ঈশ্বরের অস্তিত্বে সন্দেহ বা যে সন্দেহের পথ ধরে ঈশ্বরে বিশ্বাসহীনতা আসে, সময়ের প্রেক্ষিতে আমার জন্যে সে পথটা খুবই স্বল্প ছিল, তবে সহজ বা মসৃন ছিলনা। আমি দেখেছি তথাকথিত বুদ্ধিমান বা যুক্তিবাদী লোকেরাও ইসলামের মৌলিক বিষয়াদী নিয়ে প্রশ্ন করাকে প্রসন্নচিত্তে মেনে নিতে পারেন না। তারপর এমন লোকও আছেন যারা তাদের পছন্দসই প্রশ্ন সহ্য করতে পারেন কিন্তু উত্তরটা দেবেন তাদের মনের মাধুরী দিয়ে সাজিয়ে মনগড়া পদ্ধতিতে। আবার একদল লোক আছেন যারা নিজেকে শিক্ষিত আধুনিক মুসলিম বলে দাবী করেন, তারা সকল প্রকার প্রশ্নের উত্তর দিতে রাজী তবে একটি নির্দিষ্ট সীমা পর্যন্ত। সব সময়ই প্রশ্নের একটি পর্যায়ে এসে অবধারিতভাবে উত্তরটা হবে, ‘ঈমান বা ধর্মে যুক্তির কোন স্থান নেই, এ শুধু বিশ্বাসের ব্যাপার’।
এ পর্যন্ত এসে আমার বিশ্বাসের ঘরের ভীত বড় নড়বড়ে হয়ে যায়। আমি একটি সিদ্ধান্তে উপণীত হই, যে সিদ্ধান্তের বেশীরভাগ উপাদান পেয়েছি তৃতীয় দলের লোকদের কাছ থেকে, অর্থাৎ ইসলাম দেড় হাজার বৎসরের পুরনো ধর্ম বলেই আজ তাতে অনেক অসঙ্গতি পরিলক্ষিত হয় ও ইসলামের অনেক কিছু অমানবিক মনে হয়। নবী মুহাম্মদের আচার-আচরণ, কথা-বক্তব্য, (বহু বিবাহ, বাল্য বিবাহ, নারীকে গণীমতের মাল ঘোষণা) আরবের ততকালীন সমাজ বাস্তবতা দিয়ে বিচার করা উচিৎ। তাদের ভাষায়, মুহাম্মদ অন্যান্য মানুষের মত সেই সময়েরই একজন মানুষ ছিলেন।
এবারে ইসলামে স্পষ্ঠ দৃশ্যমান ত্রুটি-অসঙ্গতি দেখে আমি বিশ্বাস করতে বাধ্য হই যে, আজকের দিনের প্রেক্ষাপটে ইসলামের কিছু বিধি-বিধান একেবারেই সেকেলে এবং অমানবিক। ইসলাম ধর্ম প্রাচীন আরবীয় ধর্ম বই কিছু নয়, আর ইসলামের নবী মুহাম্মদও সেই সময়ের মানুষেরই প্রতিনিধিত্ব করেছিলেন। তবুও কেন ইসলামকে ‘কালোত্তীর্ণ’ বলে দাবী করা হয়; আর বলা হয় – কোরাণ নাকি সকল সময়ের, সকল মানুষের জন্যে প্রযোজ্য, আরও বলে দেয়া হয় এই বিংশ শতাব্দীতে এসেও মুহাম্মদ কথিত প্রাচীন নিয়ম নীতিগুলো চোখ বুজে অনুসরণ বা তার সন্তুস্টি অর্জন সকল ভাল মুসলমানের কর্তব্য!! আমার কাছে সম্পূর্ণ ব্যাপারটা বড় অদ্ভুত লাগে।
যা কিছু মহৎ, যা কিছু ভাল বলে জেনেছি, (যার অনেক কিছু ধর্ম থেকেই শিখেছি) আর যা কিছু মিথ্যা ও মন্দ ধর্মের মধ্যে পেয়েছি, এই উভয়ের সাথে আমি হৃদ্যতা স্থাপন করি বা উভয়কে মেনে নেই কি ভাবে?
নারীসমাজকে দ্বিতীয় শ্রেণীর নাগরিক হিসেবে গন্য করে ধর্মগ্রন্থে বর্ণীত শ্লোক পড়ে আমি কী ভাবে আমার মর্যাদা, গর্ব, আমার নারীসত্বা বজায় রাখতে পারি। আমি প্রথমে ধর্ম ত্যাগ করেছি এ জন্যেই যে, ধর্মগ্রন্থে বিশ্বাস রাখলে আমার ভাবনা, আমার কল্পনার এ বিশাল জগৎটা স্থবির হয়ে যায়। ধর্ম, আমার সীমাহীন কল্পনার, অসীম সম্ভাবনার জগৎটাকে সীমাবদ্ধ করে দেয়। এই ধর্মগ্রন্থ (কোরাণ) বলে দিয়েছে, আমার শিক্ষা, আমার জ্ঞান, বুদ্ধি, প্রতিভা, আমার সদাহাস্য চেহারা, মানুষের প্রতি আমার ভালবাসা, শ্রদ্ধা, আমার সমুহ মানবিক গুণাবলী থাকা সত্বেও, আমি একজন নিম্নমানের পুরুষের চেয়ে নিকৃষ্ট। একটিই কারণ – আমি একজন নারী। আমি পুরুষের শষ্যক্ষেত্র, আমি রণাঙ্গনে বিজয়ী সৈনিকের যুদ্ধলব্ধ সম্পদ, ঋতুস্রাবকালে আমি অচ্ছুত অপবিত্র, আমি অবিশ্বস্ত, আমার সাক্ষ্য অগ্রহণযোগ্য, আমি নরকের সম্মুখ পথ, আমি জাহান্নামের ফটকদ্বার, আমার দিকে তাকালে পুরুষের নরকবাস হয়।
এই যদি হয় আমার পরিচয়, তাহলে আমার জীবনের স্বার্থকতাটা কোথায়? আমি নাস্তিকতা বরণ করে নিই, এ ছাড়া বিকল্প পন্থাটাই বা কী ছিল? জানতে চান, বিশ্বাসহীনতা আমাকে কী দিতে পারে? অবিশ্বাস কী দিয়েছে, যা বিশ্বাস দিতে পারেনি? আমি বলবো – নাস্তিক্যবাদ মানুষকে পূর্ণ মানুষ হিসেবে স্বিকৃতি দেয়, ধর্ম দেয় না। নাস্তিক্যবাদ বিশ্বাস করে মানুষ সুখী সুন্দুর জীবন গড়তে সক্ষম, আর মানুষ সৎকর্ম বা ভাল কাজ করার ক্ষমতা রাখে, কারণ ভাল কাজ করা মানুষের স্বভাব-ধর্ম। ভাল মানুষ হওয়ার জন্যে, এই মানব প্রজাতিকে অনন্তকাল নরকে শাস্তির ভয়, অথবা চিরকাল স্বর্গীয় সুখ-সম্ভোগে বিশ্বাসের প্রয়োজন নেই। ধর্ম মানুষকে ভাল মানুষ হওয়ার পথে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করে। ধর্ম বিশ্বাস করে একজন পুরুষ তার স্ত্রী, সন্তান, পরিবার বা আত্মীয় স্বজনকে সেই দৃষ্টিতে দেখবেনা, যে ভাবে দেখা উচিৎ, কিংবা একজন নারী সে নিজেকে অসম্মান বা অবমাননা করবে এবং তার পরিবারের সাথে প্রতারণা করবে যদি না তাদের মনে নরকের ভয় থাকে। নাস্তিক্যবাদ বা ধর্মহীনতা আমাকে যে আত্মমর্যাদা বা সম্মানবোধ শিখিয়েছে, কোন বিশ্বাস-পদ্ধতি বা ধর্মীয় বিধি-বিধান তা করতে পারবে? আমি ধার্মিক হলে একজন দ্বিতীয় শ্রেণীর নাগরিক বলে গণ্য হই। আমি সৃস্ট জীব হলে কেবলমাত্র এক স্বর্গীয় স্বত্বার সৃষ্টি হই, শুধুমাত্র উর্ধাকাশের তারার পানে চেয়ে তারই গুণ-কীর্তন করতে।
আমি মনঃস্থির করে নিলাম যে নাহ্- আমি একজন মানুষ, উচ্চ আমার শীর, অসীম আমার প্রাপ্তি আমার সম্ভাবনা, আমি সীমাহীন আকাশ, আমি সূর্য্যের অট্টহাসি। আমার জীবনতরীর আমিই হবো সুযোগ্য কান্ডারী। সৎকর্মে নিজেকে করবো উৎসর্গ, কারো অনিষ্ট করবোনা। তবে স্বর্গসুখের লোভে মহৎ কাজ করা নয় বরং একজন মানুষ হিসেবে সত্য ও মিথ্যে, ভাল ও মন্দের পার্থক্য নির্ণয় করে সঠীক সিদ্ধান্ত নেয়ার বিশেষ ক্ষমতা আমার আছে এবং সৎকর্মেই আছে মহত্ত তাই।
জীবনের এই স্বল্প সময়ে, বিশ্বাসের রিতিনীতি, ধরণ-প্রকৃতি নিয়ে আমি অনেক বিশ্বাসীদের সাথে আলোচনা করেছি। মনে হয় যেন একটি পর্যায়ে এসে তারা আমার বিশ্বাসহীনতায় লজ্জাবোধ করেন। বেশীরভাগ সময়েই তাদেরকে বলতে শুনা যায়, ইহজাগতিক এই জীবন কতই না মূল্যহীন ও ক্ষণস্থায়ী। তারা কেউ বুঝতেই চান না, কতকাল তীব্র আগ্রহ নিয়ে আমি চেষ্টা করেছি একজন বিশ্বাসী হয়ে বেঁচে থাকতে।
বিশ্বাস মানে’ই আমার উপর সর্বজ্ঞ, সর্বশক্তিমান, স্নেহকারী পিতাসদৃশ এক অদৃশ্য সত্তার নজরদারী। আমার সকল অমঙ্গলে, সকল দুঃখে-কষ্টে তিনিই আমার উদ্ধারকারী, যদি ইহজগতে কিছু না পাই, পরকালে আমি হবো পুরষ্কৃত। এর চেয়ে মহা শান্তনার আর কী বা আছে? জগতে নির্দোষের নিদারুণ ক্লেশে মন্দের বিজয় উল্লাস হয়, তারপরও স্বর্গের ঈশ্বরের নিরীক্ষণে মর্ত্যের সব ঠিকই আছে। সবকিছু ঈশ্বরের হাতে শপে দেয়ার কী বিশাল প্রলোভন।
আমি বিশ্বাসী হতে অনেক কিছু ত্যাগ করতে পারতাম, কিন্তু শেষ পর্যন্ত আমাকে নাস্তিক্যবাদের দূর্গম, কণ্টকাকীর্ণ পথটাই বরণ করে নিতে হয়েছে। আমি স্বর্গের ছায়াতলে আশ্রয়ের আশা ত্যাগ করেছি, কিন্তু পেয়েছি এমন এক জীবন, যেখান থেকে আমি প্রশ্ন করতে পারি, আবিষ্কার করতে পারি বিশ্বজগতের সকল রহস্য। আমি ধর্ম প্রত্যাখ্যান করে নাস্তিক হয়েছি, কারণ ধর্মে বিদ্যমান অসঙ্গতিগুলো আমার কৌতুহল নিবৃত্ত করতে পারেনি; ধর্ম আসলে আমার জীবনকে সংকীর্ণ বা নির্দিষ্ট সীমারেখায় আবদ্ধ করে দিতে চেয়েছিলো। আমি নাস্তিক হয়েই থাকার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম এ জন্যে যে, আমি জানি – আমি আমাকে চেনার জন্যে, ‘আমি কে’ তা জানার জন্যে ধর্মের আদৌ কোন প্রয়োজন নেই।
মূল লেখা ইংরেজীতে, এখানে
আমি আদিল মাহমুদের কথার বিরোধিতা করে বলতে চাই, উনি বলেছেন মানুষ আস্তিক থেকে ধীরে ধীরে যুক্তি দ্বারা ঈশ্বরের অস্তিত্ব না পেয়ে নাস্তিক হয়ে যায়। আসল ঘটনা কিন্তু তা নয়। একজন মুসলমানের ঘরে জন্ম নিলেই মুসলিম বা ইসলাম ধরমালম্বি বলা যায় না। তাকে মুসলিম হতে হলে সম্পূর্ণ ভাবে আল্লাহর কাছে আত্ম সমর্পণ করতে হবে। আপনারা বিজ্ঞানের গুটি কয়েক আবিস্কারে কিভাবে ঈশ্বর যে নেই তা বুঝে গেলেন কিভাবে।
“বিশ্বাসহীনতার বিস্তারিত”,”একদল বিশ্বাসীর মৃত্যু অথবা পুনঃজাগরণ” এই দুইটা অ্যাড করলাম।”আমাদের অবিশ্বাস”টা আপনার সাথে কমন পড়ে গেল।এটার প্রতিই সমর্থন রইল।আরেকটা অনুরোধ এই প্রজেক্টটা কি আমরা হুমায়ূন আজাদ স্যারের স্মৃতির প্রতি উৎসর্গ করতে পারি?সবার মতামত চাই।
অফটপিকঃ অভিজিৎ ভাই আপনি এবার মেলার বেস্ট সেলার লেখকে পরিণত হতে যাচ্ছেন।আপনাকে আগাম অভিনন্দন।বইটা নিষিদ্ধ হওয়ার আগেই সংগ্রহ করতে চেষ্টা করব। 🙂
সর্বপ্রথম বলবো ইসলাম শান্তির ধর্ম। তারপর বলবো ইসলাম কারো উপর জোর করে না। এখানে লেখিকার সাথে আমিও একমত যে কোন শিশুর সাথে হুজুর এর এইরকম আচরণ অগ্রহনযোগ্য এবং অন্যায়। ইসলাম হুজুরদের ধর্ম না, ইসলাম সকল মুসলমানের ধর্ম। কোন একজন হুজুরের ভুলের কারণে ইসলামকে দোষারোপ করাকি বুদ্ধিমানের কাজ। আরও একটা কথা আমি এখানে বলবো যে, ইসলাম নারীকে যতটুকু স্বাধিনতা এবং মর্যাদা দিয়েছে অন্য কোন ধর্ম ব্যবস্থায় ততটুকু মর্যাদা এবং স্বাধিনতা আছে কিনা আমরা অনেকে না জেনেই অযথাচিত ইসলামের বিরুদ্ধে কথা বলি। ঐ হুজুর কতটুকু মুক্তমনা বা কতটুকুইবা সে ইসলামিক জ্ঞানসম্পন্ন ছিল তাতে সন্দেহ আছে কিন্তু আমরা যারা একটুকু আশপাশ নিয়ে ভাবি আমাদের কি করা উচিত ঐরকম লোককে ঘৃনা করা নাকি ইসলামকে ঘৃনা করা ?
. … ….. ……. …….. …………..
ব্লগ জগতে দেরী করে আসার কারণে মূল ইংরেজি লেখাটির সন্ধান জানতাম না। আজ বাংলা, ইংরেজি দুইটিই পড়া হলো। লেখিকা এবং একই সাথে অনুবাদকে (কী দেওয়া যায়?)
অনেকেই যখন এ ধরণের লেখা নিয়ে কালেকশন বের করার ধারণাটিকে সমর্থন করছেন, তখন অচীরেই সংকলনের কাজে হাত দেয়া হবে। এ সংক্রান্ত একটি আহবান শীঘ্রই পোস্ট করা হবে।
কি দেয়া যায় সংকলনটির নাম ? কয়েকটা আইডিয়া মাথায় এলো –
কি ভাবে অবিশ্বাসী হলাম
কেন আমি নিধার্মিক?
অবিশ্বাসের অতলান্তে
বিশ্বাসের সীমানা পেরিয়ে
আমাদের অবিশ্বাস
কেন আমরা ধর্মবিশ্বাসী নই
অবিশ্বাসের সাক্ষ্যরনামা
অবিশ্বাসীদের জবানবন্দী
মুক্তমনের মুক্তপথিকেরা
……
কিংবা অন্য কিছু?
সবার থেকেই সহযোগিতা চাইছি সংকলনটির নামের ব্যাপারে
আগে লেখা যোগাড় হোক, তারপর নাম। নূন্যতম ৫০টা মতো লেখা দরকার সংকলন করার জন্য। “মুক্তমনের মুক্তপথিকেরা ” নামটি আমার পছন্দ হয়েছে।
নাস্তিকের ধর্মকথা যে সংকলনটি তৈরি করেছেন তার লিংকটা দিয়ে দিলাম, সময় করে দেখবেন
@অভিজিৎ,
আপনি আসলেই নাম ভালো দেন। অবিশ্বাসের অতলান্তে ভোট দিলাম। কারণ ছাগুরা বইয়ের নাম দেখেই জ্বালাও পোড়াও শুরু করে, ভেতরে পড়ে দেখেনা। তাই বই হলেও এই নাম থাকলে ব্যান খাওয়ার সম্ভাবনা কম থাকবে 😀
লেখাই শুরু করি নাই, নাম প্রস্তাব করবো কোন সাহসে। আর আজকাল মন্তব্য করতে গেলেও দ্বিতীয়বার চিন্তা করি, পাছে না কারো মনে দুঃখ দিয়ে দেই। তবুও শেষে না পস্তাতে হয় তাই দুটো কথা বলে রাখা ভাল মনে করি।
অভিজিৎ দা’র দেয়া প্রথম চারটি নাম ভাল লেগেছে।
কি ভাবে অবিশ্বাসী হলাম
কেন আমি নিধার্মিক?
অবিশ্বাসের অতলান্তে
বিশ্বাসের সীমানা পেরিয়ে
ভোট দিতে হলে বলবো বিশ্বাসের সীমানা পেরিয়ে আমার পছন্দ।
আর আমরা/ আমাদের যায়গায় আমি/ আমার শব্দগুলো ভাল লাগে, কারণ কেউই দলবদ্ধ বা পরামর্শ করে নাস্তিক হইনি।।
@অভিজিৎ,
এটাই হওয়া উচিত। বা আমি আরো কিছু সাজেস্ট করছি
“নাস্তিক্যকথন” বা “নাস্তিক কথন”
“নাস্তিক্যনামা”
“নাধার্মিক পদাবলী”
তবে কেন আমরা ধর্ম বিশ্বাসী নই -এই ধরনের টাইটেলই ভাল।
মূল ইংরেজিটাও আগে পড়া ছিল না। মাত্র পড়লাম।
অসাধারণ একটা লেখা। প্রত্যেকের যৌক্তিকতায় উত্তরণের অভিজ্ঞতাই এভাবে লিখে রাখা প্রয়োজন। অন্তত নিজের সাথে বোঝাপড়াটা সেড়ে নেয়ার জন্য। এ ধরণের লেখা নিয়ে একটি কালেকশন বের করার ধারণাটাও চমৎকার।
নিজের অবিজ্ঞতা নিয়ে একটা লেখা দেয়ার ইচ্ছা থাকল…
“আমি যে কারনে বিশ্বাসী আছি”
এই ধরনের লেখা কিংবা “কেন আমি নাস্তিক থেকে আস্তিক হলাম”
কিংবা “আমি কেন নিশ্চিত ভাবে নাস্তিক/আস্তিক নই বা কেন আমি সংশয়বাদী”
এই ধরনের লেখাও আহবান করা যেতে পারে। পৃথীবিতে বহুমানুষ নাস্তিক থেকেউ আস্তিকে (এমনকি এই দুই আদর্শ নিয়েই সন্দেহবাদী) পরিনত হচ্ছ । আস্তিক->নাস্তিক এটাতো আসলে এমন ওয়ান ওয়ে রোড নয় বরংচ টু-ওয়ে, ফ্রি রোড। সুতরাং পালটা যুক্তিও শুনা উচিত।
বাই ডেফিনিশন ‘মুক্ত-মনা’-তো শুধু নাস্তিকদের আড্ডা নয়।
@শামীম,
খুব ঠিক কথা বলেছেন। আমার মনে হয়, বিষয়টা আস্তিক, নাস্তিক না হয়ে হওয়া উচিৎ- রাসেলের মত, “কেন আমি খৃষ্টান নই।” বা কেন আমি খৃষ্টান/মুসল্মান/ হিন্দু/বৌ্দ্ধ। কেউ যদি বলে, আমি কোন ধর্মে বিশ্বাস করি না কিন্তু এক বা একাধিক আদি কারনের অস্তিত্ত্ব অস্বীকারও করতে পারি না, এই ধরনের চিন্তা কখনই ক্ষতিকর হতে পারে না।
কিন্তু একজনের স্রষ্টা ভিন্ন ধর্মাবলম্বিদের ঘৃনা করতে বললে, সেটা অবশ্যই খারাপ। এই ধরনের চিন্তার বিস্তারে বাঁধা দেয়া উচিৎ। আমি একটা পক্ষের।
আমার পক্ষে বলা সম্ভব না, এই দুনিয়ার সকল ভাল, —–সাদা ভাল, কাল ভাল———-কাচা ভাল, পাকাও ভাল,———–আর, সবচাইতে ভাল—— পাওয়া রুটি আর ঝোলা গুড়।।( ছোট বেলায় পড়া, একটা ছড়ার কথা মনে পড়ে গেল। 😀 )
@আতিক রাঢ়ী,
:yes:
:lotpot: :lotpot:
তবে যে কথা আগে সাহস করে বলতে পারিনি সেটা একটু সংশোধন করছিঃ
বাই ডেফিনিশন ‘মুক্ত-মনা’-তো নাস্তিকদের আড্ডা নয়।
@শামীম,
‘বাই ডেফিনিশন ‘মুক্ত-মনা’-তো নাস্তিকদের আড্ডা নয়।’
:yes:
মুক্তমনা আস্তিক নাস্তিক সকল মানুষের আড্ডাখানা।
ফুয়াদ,
‘মনে করুন এক শিক্ষক তার ছাত্রকে সারা বছর পরিয়েছে , সে শিক্ষক জানে পরিক্ষায় সে ফেল করবে নিশ্চিত তা লিখেও রেখেছে , এখন ছাত্র বিদ্যালয়ের নিয়মনুষারেই পরিক্ষা দিল , এবং ফেল করল । এই পরিক্ষা কেন যুক্তির দৃষ্টিতে খাপ খাবে না । যদি খাপ না খায় , তাহলে যুক্তিবিদ্যাতেই সমস্যা আছে ।’
বরাবরের মতই আপনার কথার কোন আগা মাথা পেলাম না। যুক্তির দৃষ্টিতে খাপ না খেলে যুক্তিবিদ্যায় কেন সমস্যা থাকবে? আমার ধারনা আপনি নিজেই ভাল করে বুঝেন না যে আপনি কি লিখতে চাচ্ছেন। দয়া করে যা লিখবেন তা আগে নিজে ভাল করে বুঝে তারপর লিখবেন। আর তা যদি না পারেন তবে বলে দিলেই পারেন আমি যুক্তির ধার ধারি না ।
‘যাইহোক, আল্লাহ পাক ই ভাল জানেন’
আপনার এই কথাই প্রমান করে আপনার আল্লাহ আপনার অজ্ঞতার মধ্যেই বিরাজমান। শুধু আপনি নন, যেখানেই অজ্ঞতা সেখানেই ঈশ্বরের বাস। তাই আপনার মত যুক্তি বিবর্জিত আস্তিক হয়ে গন্ডমুর্খ থাকতে আমি রাজি নই।
ধন্যবাদ।
ফুয়াদ,
“মনে করুন এক শিক্ষক তার ছাত্রকে সারা বছর পরিয়েছে , সে শিক্ষক জানে পরিক্ষায় সে ফেল করবে নিশ্চিত তা লিখেও রেখেছে , এখন ছাত্র বিদ্যালয়ের নিয়মনুষারেই পরিক্ষা দিল , এবং ফেল করল । এই পরিক্ষা কেন যুক্তির দৃষ্টিতে খাপ খাবে না । যদি খাপ না খায় , তাহলে যুক্তিবিদ্যাতেই সমস্যা আছে ”
এ ধরনের যক্তির ভীত খুবই দুর্বল। যে শিক্ষক আগে থেকেই জানেন যে তার ছাত্র ফেল করবে তিনি আদর্শ শিক্ষক হলে যথাসাধ্য চেষ্টা করবেন যাতে ফেল না করে। আর এই উদাহরন কি আল্লাহ আর তার বান্দার সাথে তুলনীয়? শিক্ষক কি নিজে ঐ ছাত্রদের সৃষ্টি করেছেন যা আল্লাহর মত তার সবচেয়ে বড় দায়ভার থাকে? ছাত্র স্বভাবত ভাবে দূর্বল হলে তার দায়ভার শিক্ষকের নাক আল্লাহর? ফেল করবে তো করবেই, পড়িয়ে আর কি হবে এমন অদৃশ্যবাদী মনোভাব নিয়ে বসে থাকবেন না। বাংলাদেশের শিক্ষকেরা তেমন করলেও পশ্চীমের শিক্ষকেরা এমন হাত পা গুটিয়ে ফেল করা দেখে না। আর এ যুক্তি দিয়ে কিন্তু আপনি আবারো স্বীকার করে নিলেন যে আলাহ জেনে শুনেই কাউকে ফেল করালেন আর কাউকে পাশ করালেন।
“অগ্রিম বলে দেওয়া হবে চরম অন্যায় । আপনি খাছ ১০০% ঐ কন্ডিশনে পরিক্ষা না করে তা বলতে পারেন না । যদি করেন তাহলে আল্লাহ পাকের প্রতি অন্যায় করা হবে । যাইহোক, ১৮ বছর হলে তাদের কে ধর্ম দিবেন, ধর্মকে ধর্মের মত বুঝাতে হবে । উলটা পালটা বুঝালে হবে না ।”
এমন পরীক্ষা বাস্তবে কখনো করা না গেলেও তেমন পরীক্ষার ফল কি হতে পারে না নেহায়েত অন্ধ না হলে যে কেউই বুঝতেন।
সম্ভাবনার বিচারে কেন হিন্দু পরিবারের ছেলে হিন্দু হয়, মূসলিমের ছেলে মূসলিম হয়, আর খ্রীষ্টানের ছেলে খ্রীষ্ঠানই হবার সম্ভাবনা বেশী থাকে তার কোন ব্যাখ্যা আপনি দেননি। কেন সন্তানের ধর্মবিশ্বাস পরিবারের উপর চরমভাবে নির্ভর করে তার কি ব্যাখ্যা? কেন ব্যাপারটা র্যান্ডম হয় না?
একজন হিন্দু পরিবারের ছেলের মুসলিমে রুপান্তরিত হবার সম্ভাবনা কত? কথা না পেচিয়ে সোজা কথায় জবাব দেবেন প্লীজ। এবার আরেকটু গভীরে আসুন।
আমেরিকায় জন্মগ্রহনকারী একজন খ্রীষ্টানের মুসলিমে পরিনত হবার সম্ভাবনা কিন্তু সে হিসেবে অনেক বেশী। কারন? কারন আমেরিকানরা যে পরিবেশে বড় হয় তাতে ধর্মের প্রভাব থাকে অনেক কম, কিন্তু ভারতীয়দের উপর ধর্মের প্রভাব থাকে সে তূলনায় অনেক বেশী। তাই একজন ভারতে জন্মগ্রহঙ্কারী একজন হিন্দুর ইসলাম ধর্ম গ্রহন করার সম্ভাবনা অনেক অনেক কম। আজকাল অনেকে মুসলিম হচ্ছেন, তার মধ্যে কতজন ভারতীয় হিন্দু পাবেন? এরপরেও যদি পরিবারের প্রভাব অস্বীকার করেন তো আর কি বলব।
আর আমি তো আপনার পরের কথাই প্রস্তাব দিয়েছি। ছোটবেলায় যখন বাচ্চাদের মাথায় কোনরকম যুক্তবোধ জন্মাতে পারে না সেই সময় বাদ দিয়ে প্রাপ্রবয়ষ্ক হলে (১৮ ধরে নিলাম) তাদের একই সাথে ধর্মের পুস্তক ধরিয়ে দিন, আলেম মোল্লাদের কথাবার্তা শুনতে দিন। তবে যেটা আপনার ভাল লাগবে না বলে অগ্রীম সাবধানবানী দিয়েছেন যে ধর্মের নামে উলটা পালটা বোঝালে হবে না সেটাও সাথে সাথে করতে হবে। ধর্মের বিপরীতের কথাবার্তা নাস্তিক্যবাদীদের লেখাও পড়তে দিন, তাদের কথাও শুনতে দিন। এরপর দেখতে পারেন কতভাগ লোকে কোন পথে যায়। এটা জানেন বলেই মনে হয় সাবধানবানী দিয়েছেন যে “ঊল্টা পালটা বুঝালে হবে না”। আমি তো চ্যালেনজ় করেছি তাকে প্রাপ্তবয়ষ্ক হবার পর সব কিছুই পড়তে বা জানতে দেয়া হোক। তারপর দেখা যাক সে কি করে।
বিবর্তনবাদ পড়ানো হয় আর ধর্মের যুক্তি পড়ানো হয় না বলে কি খেদ প্রকাশ করছেন তাতো পরিষ্কার নয়। বিবর্তনবাদ হল বিজ্ঞানের বিষয়, তাই বিজ্ঞানের সাথে যেখানে প্রাসংগিক সেখানেই বিববর্তনবাদ পড়ানো হয়। ধর্মের সাথে বিজ্ঞানের কোন যোগ নেই, ধর্ম পড়ানো হয় ধর্ম শিক্ষার পাঠ হিসেবে। ধর্ম পড়ানো হয় না বলেন কিভাবে? আমাদের দেশে তো রীতিমত আবশ্যিক হিসেবে ধর্ম পড়ানো হয়। বিবর্ৎবাদই সে হিসেবে পড়ানো হয় না, এড়িয়ে যাওয়া হয়। আর আপনার ভাল লাগুক আর না লাগুক, যতদিন না বৈজ্ঞানিকভাবে বিবর্তনবাদ ভুল প্রমান করা না যাবে ততদিন বিজ্ঞানের ক্লাসে বিবর্তন পড়ানো হবেই। অবশ্য অনেকের নিষ্ঠার সাথে বিবর্তন বিরোধী গবেষনা দেখে আমার মনে আশা জাগে যে কোন বাংলাদেশী বৈজ্ঞানিক হয়তবা সহসাই বিবর্তনবাদ ভুল প্রমান করে নোবেল প্রাইজ পেয়ে যাবেন। কেউ কেউ ঘোষনা দিয়েও ফেলেছেন, এখন শুধু পুরষ্কার পাওয়ার অপেক্ষা আর কি। যাক, সে প্রসংগ ভিন্ন।
সব মানুষ কাদলে কোন ঈশ্বরের কাছে ফরিয়াদ জানায় এমন অদ্ভুত তথ্য আপনি কোথায় পেলেন? নাস্তিকরা তো তাহলে সব বেটা মিথ্যাবাদী ভন্ড বলতে হয়।
আপনার মতে মানুষ বিশ্বাস কিভাবে পায়? আপনিই বা কিভাবে পেয়েছিলেন? কেউ আপনাকে কিছু বোঝায়নি? জীবনের সবচেয়ে পরম সত্য আপনি নিজে নিজেই অলৌকিক উপায়ে পেয়ে গেছিলেন? বা আপনাকে সম্পূর্ণ নিরপেক্ষ পরিবেশে সব ধর্ম নিয়ে পড়াশুনা করতে দেওয়া হয়েছিল, ছোটবেলা থেকেই ইসলামের মতই অন্য সব ধর্মের পাঠ সমান ভাবে পেয়েছেন, নাস্তিকদের যুক্তি ও শুনেছেন, এরপর আল্লাহর সাহায্যে পরম সত্য যে ইসলাম তা নিজেই বুঝে গেছেন, তাই না? এতে পক্ষপাতের কোনই ব্যাপার ছিল না।
আপনার একজন অত্যন্ত প্রিয় লেখকের লেখা পড়তে পারেন, কারন আমার কথায় তো আপনার হাসি পেতে পারে। মানুষের ধর্ম বিশ্বাসের উপর পরিবারের কি প্রভাব তা নিজের প্রিয় লেখকের থেকেই জানুন। প্রথম ৩ টি প্যারা পড়লেই পরিষ্কার হবে, যদিও আমার ধারনা আপনি সব জেনে বুঝেও খামোখাই পেচাচ্ছেন।
@আদিল ভাই,
যে জেগে থেকেও ঘুমানোর ভান ধরে থাকে তাকে আপনি কিভাবে জাগাবেন?
যতই যুক্তির অবতারনা করেন এই ফুয়াদের আবোল তাবোল বকবকানি কখনও কমবেনা। কারন সে যুক্তির ধার ধারে না। যখন সে বুঝতে পারে যে সে আটকে যাচ্ছে তখন সে পিছলানো শুরু করে। এমন নির্লজ্জ সে, যে নিজের বিশ্বাসের পরাজয় কখনও মেনে নেয়না। আবার আবোল তাবোল বকা শুরু করে। নিজের বিষ্ঠার গন্ধ তার কাছে এতই মধুর যে গোলাপ ফুলের গন্ধে তার ঘুম আসেনা। তো থাকুক না সে নিজের গুয়ে নাক ডুবিয়ে পরম আনন্দে ঘুমাতে। কি দরকার তাকে জগানোর চেষ্টা করার?
@মিঠুন,
কথা সত্য। ফুয়াদ ভাই নিজে যা মানেন না তা তাকে আমরা কেউ বোঝাতে পারব এমন সম্ভাবনা যে একেবারেই নেই তা বহু আগেই টের পেয়েছি। তবে ধর্মবিশ্বাসের উপর পরিবারে প্রভাব নিয়ে আমি যে ভ্যাজর ভ্যাজর করেছি একই কথা ওনার অতি প্রিয় রায়হান সাহেবও বলেছেন। দেখা যাক তাতে কি কাজ হয়।
মানুষের বিশ্বাস যাই হোক সেটা তো সমস্যা না। কিন্তু মানুষে যখন গোয়াড়ের মতন ছেলেমানুষী গো ধরে ইচ্ছাকৃতভাবে অন্ধ সাজে তখন আসলেই খুব বিরক্তি লাগে। এজন্যই সময় নষ্ট করা। বিশ্বাসকে আমি শ্রদ্ধা করি, আমি নিজেও বিশ্বাসী। তাই বলে কেউ যদি দাবী করেন যে নিজের বিশ্বাসের উপর তার পরিবার পরিবশের প্রভাব নেই, সে বিশ্বাস তিনি অলৌকিকভাবে পেয়েছেন, ভিন্ন বিশ্বাসের পরিবারে জন্ম নিলেও তিনি নিশ্চিত বর্তমান বিশ্বাসেই থাকতেন তবে আমি বলব হয় তিনি বদ্ধ উন্মাদ আর নয়ত ভন্ড। নিজে হয়ত জানেন না তা হতে পারে।
আদিল ভাই,
আপনাকে অসংখ্য স্যালুট। এরকম ধৈর্যশক্তির মানুষ আমি কমই দেখেছি। কিভাবে পারেন?
@বকলম,
সবই আল্লাহরই ইচ্ছা রে ভাই। না হলে আর ঘরের খেয়ে বনের মোষের গুতা খেতে যাই।
খুবই ভালো একটা লেখা । লেখককে ধন্যবাদ ।
শবনম নাদিয়া’র এই লেখাটির অনুবাদ অগ্নিসেতু ব্লগে আগেই প্রকাশিত হয়েছে। লিংক:http://agnisetu.blogspot.com/2009/04/blog-post.html
অনুবাদের মান কোনটির ভালো হয়েছে সে বিতর্কে যাওয়াটা অনুচিত হবে।
আয়ান হারশি আলি’র লেখাটির অনুবাদ ‘অগ্নিসেতু’ ব্লগে আগেই প্রকাশিত হয়েছে। লিংক: http://agnisetu.blogspot.com/2008/08/blog-post_11.html
অভিজিত এর আইডিয়া চমৎকার। এই ধরণের লেখা নিয়ে একটি সংকলন বের হওয়া উচিত।
চমৎকার লেখা।
যুক্তিযুক্তভাবে প্রশ্ন করতে শিখলে, একটু মুক্তচিন্তা করার “দুঃসাহস” করতে পারলে যে-কোনও ধর্মবিশ্বাসই ধ্বসে পড়তে বাধ্য। কিন্তু আমাদের ভয় তো প্রশ্নকে, মুক্তচিন্তাকে!
“আমি যে কারণে বিশ্বাসী থেকে গেলাম” নামের রচনায় কোনও ধার্মিক, বোধ হয়, দুই-তিন বাক্যে প্রকাশ করতে পারবে তার অবস্থানের “ভিত্তি”:
ধর্ম ও ঈশ্বর বিষয়ে সংশয়মূলক কোনও প্রশ্ন আমার মাথায় আসে না বা এলেও পাপভীতির কারণে সেটিকে গুরুত্ব দিই না এবং উত্তর খুঁজি না। কারণ ধর্মগ্রন্থে যা লেখা আছে, তা আক্ষরিকভাবে সত্য বলে বিশ্বাস করি ও প্রশ্নাতীতভাবে মেনে নিই।
এর ওপরে কোনও কথা আছে? 🙁
আস্তিক থেকে নাস্তিক মানুষ কেন হয় তা নিয়ে আমার চিরদিনই বেশ কৌতূহল আছে। যদিও প্রত্যেকের ব্যাক্তিগত অভিজ্ঞতা ভিন্ন। তবে দেখেছি কিছু কমন ফ্যাক্টর থাকে।
ধর্ম যেহেতু যুক্তির জিনিস নয়, বিশেষ করে ধর্মীয় দর্শ, অনেক কালাকানুন যৌক্তিক দৃষ্টিতে কখনো সন্তোষজনকভাবে ব্যাখ্যা করা সম্ভব না তাই সবার মধ্যেই বেশ কিছু সংশয়মূলক প্রশ্ন থাকে। এই প্রশ্নগুলির পরিমান নির্ভর করে তার পরিবেশ ও ব্যাক্তিগত পর্যায়ের লেখাপড়ার উপর। প্রথাগত ধার্মিকরা যথাসাধ্য চেষ্টা করেন এই সব প্রশ্নেরও সন্তোষজনক উত্তর তারা আছে এমন কিছু বলে নিজের সংশয়বাদী মনকে ধামা চাপা দিতে। নিজে না জানলেও অন্তত অন্য কেউ জানেন এই বিশ্বাস পোষন করে মনকে প্রবোধ দেন। কতটা চেপে রাখতে পারেন বা অভিনয় করতে পারেন না নির্ভর করে অনেকটা তিনি এই পরিবেশে মানুষ তার উপর। এই কাজে সবচেয়ে ভাল সহায়তা দেয় নিজ ধর্মের বিরোধী যা কিছু বক্তব্য হতে পারে সেগুলির প্রতি উদাসীন থাকা, বা না পড়েই মিথ্যা/ভুল উড়িয়ে দেওয়া।
এভাবেই মনে হয় চলতে থাকে বেশীরভাগ ধার্মিকের জীবন। কোন বড় ধরনের আঘাত না পেলে মনে হয় জীবন এবাহবেই কেটে যায়। এই আঘাতগুলি বেশীরভাগই মনে হয় আসে আশে পাশের অতি ধার্মিক ব্যাক্তিদের ভন্ডামী, ধর্মের নামে অমানবিক কার্যকলাপ এসব দেখে। কাজেই নাস্তিক হবার পেছনে এসব অতি ধার্মিক লোকদের বেশ ভাল অবদান থাকে। এই প্রবন্ধের লেখিকা নিজের স্বীকার করেছেন সেই মক্তব্যের মোল্লার প্রতি তার কৃতজ্ঞতা কথা।
আর কিছু ক্ষেত্রে মনে হয় মানুষ ঈশ্বরে বিশ্বাস হারায় ব্যাক্তিগত জীবনে বড় ধরনের কোন সংকটে পড়ে ইশ্বরকে ডাকাডাকি করে তার সাড়া না পাওয়ায়।
আমার ওখুব কৌতুহল আছে সবার কাহিনী জানার। মালিক ভাইকে আগেই অনুরোধ করেছিলাম ওনার কাহিনী লিখতে। বিশেষ করে উনি জীবনের একটা বড় অংশ মাদ্রাসা লাইনে কাটিয়েছেন শুনে কৌতূহল বেড়েছে।
ধার্মিকদের ও উচিত বিরক্ত না হয়ে এদের সবার কাহিনী ধৈর্য্য ধরে শোনা, তাতে নিজেদের অনেক ভুল ত্রুটি পরিষ্কার হবে। তারা নিশ্চয়ই চাইবেন না কেউ ঈশ্বরে বিশ্বাস হারান।
@আদিল মাহমুদ,
আমি ঠিক নাস্তিক কি না জানিনা, তবে প্রচলিত ধর্মবিশ্বাস কে আমি ঘৃনা করি। খুব ছোট বেলা থেকেই প্রচলিত ধর্মের গোজামিল আমাকে ভাবাত।অনেক আচার আচরন আছে, যেগুলোর কোন মানেই আমি খুজে পেতাম না। তবে এখন যে ঘৃনা আমি মনের মধ্যে বয়ে নিয়ে বেড়াচ্ছি তা ছোট বেলায় ছিলনা। এই ঘৃনা আমার মধ্যে জন্মেছে খুব বেশী দিন হয়নি এবং অবশ্যই এর পিছনে কারন আছে। সে বিশাল ইতিহাস। প্রতিমুহুর্তেই ভাবি ইতিহাসটি গল্পের ছলে মুক্তমনায় পোস্ট করতে হবে। কিন্তু সময়াভাবে তা আর হয়ে উঠছে না।
তবে আশা রাখি সামনে GRE পরীক্ষাটা দিয়েই এ ব্যপারে লিখতে বসব।
ভালো থাকবেন।
@মিঠুন,
আপনি তেমন কিছুই আগে বলেছিলেন মনে আছে।
তবে এর উল্টাটাও কিন্তু হতে পারে। জীবনের ঘোর দূর্দিনে কোন কোন নাস্তিক আস্তিকে রুপান্তরিত হয়ে যান সেটাও ঘটে। কখনো বা সংকট থেকে রক্ষা পেতে ঐশী সাআয্য কামনা করেন, আবার কখনো বা সংকট থেকে অপ্রত্যাশিতভাবে উদ্ধ্বার পাবার পর মনে করে নেন যে এটা ঈশ্বরের সাহায্য ছাড়া হত না।
একজন বিমানবাহিনীর পাইলটের কথা জানি, উনি নাস্তিক টাইপের ছিলেন। একবার প্রায় অলৌকিকভাবে একটি বিমান দূর্ঘটনা থেকে প্রানে রক্ষা পেয়ে যান। তারপর থেকে ঘোর ধার্মিকে পরিনত হন, এখনো তিনি কঠিন তবলিগী। সে দূর্ঘটনার পর তিনি এমনকি তার শার্ট প্যান্ট ও সব বিলিয়ে দেন কারন তিনি তবলিগী পোষাক ছাড়া আর কিছু পরেন না।
@আদিল মাহমুদ,
ঐ পাইলটের নাস্তিকতার ভিত্তি কী ছিলো? যদি সেই ভিত যুক্তিবাদে নির্মিত হ’ত তাহলে এতো ঠুন্কো হতোনা। অবশ্য আমার নিজের জীবনেই এমন অনেক লোককে দেখেছি যাঁরা নাস্তিক থেকে আস্তিক ( ঘোরতর আস্তিক) হয়েছেন। তাদের এই বদলের কারণ অনুসরণ করে দেখেছি তাঁরা আসলে নাস্তিক ছিলেন না , একটা Transitional পর্যায়ে ছিলেন, কাজেই পরবর্তী জীবনে তাঁদের আস্তিকতা/নাস্তিকতার সম্ভাবনা ৫০-৫০।
@আদিল মাহমুদ,
পৃথিবীর প্রতিটি মানুষ ভিন্ন, ভিন্ন । আপনার এই পর্যবেক্ষন, এই কথা বলতেছে । আরেক জনের পর্যবেক্ষন ভিন্ন উত্তর ও নিয়ে আসতে পারে । বেদুয়িন অথবা বাংলার অন্ধ বিশ্বাসি দের মধ্যে সংশয়বাদী প্রশ্নগুলি খুব কমই আছে (নাই বললেও চলে)। কিন্তু যারা একটু ফিলসফিক্যাল ভাবাপন্ন তাদের মধ্যে এ আচরন বেশী দেখা যায় । বিশেষ করে ইসলাম পন্থি আধা-সুফিদের মধ্যেও এই প্রবনতা দেখা যায় (তবে তাদের কে সুফিরা, সুফি বলতে নারাজ) । যেমনঃ
তবে,মোটা দাগের সুফিদের মধ্যে কখন তা দেখা যায় না । যাইহোক, আমার ক্ষেত্রে আপনার এই প্রিডিকশন সম্পূর্ণ ভুল । কারন , নাস্তিক বা সংশয়বাদী দের যুক্তি গুলি আমি পড়তে এবং জানতে ভালবাসী, এসব আমার কাছা প্রায় খেলার মত । মাঝে মাঝে কিছু কিছু প্রশ্ন আমাকে বেশ হাসায় । যাইহোক, আল কুরানের প্রতিটি বিষয় এমন সুন্দর যা বলার বাহিরে । হাদিস ও এ রকম ই । যেমন ঃ উপরের হাদিস নিয়ে মিঠুন সাহেব যে প্রশ্ন করলেন , বিচার হবার আগে আল্লাহ পাক কিভাবে জাহান্নামে নিক্ষেপ করার কিভাবে নির্দেশ দিচ্ছেন । প্রশ্ন অত্যান্ত যুক্তিক কিন্তু বিষয় অতীব সহজ । কারন এগুলো অগ্রিম বর্ননা, সহজে বুঝানোর জন্য । কি ঘটবে আল্লাহ পাক ভালই জানেন , তার রাসূল কে তা অগ্রিম জানিয়ে দিলে কোন সমস্যা থাকার কথা না । তবে উনার প্রশ্নের চেয়েও কঠিন প্রশ্ন আমার রুমেইট করেছেন, যে এক ব্যক্তি এত বছর নামাজ রোজা কইরাও জাহান্নামে যাইবো ? এটাও আগের চেয়ে কঠিন , কিন্তু বিষয় সহজ ই । সে জাহান্নামে গেল মানেই সারা জীবনের জন্য গেল না , হয়ত মাত্র এক মুহূর্থের জন্য যাবে , কারন , তার অপরাদ ছোট নয় । কারন , তার উক্ত কথায় মানুষ দুঃখ পেয়ে ইমান হারিয়েও ফেলতে পারে । আর দুই নম্বর হল মহাজগতের মালিকের নামে ভুল তত্য দেওয়া , বা এমন অহ্নগকারী আচরন করা । অনেকটা মিথ্যাচারের মত । আল্লাহ যেহেতু ন্যায় বিচারক সেহেতু কোন অন্যায় করা হবে না , নিশ্চিত থাকুন ।
আসল বিষয় হল প্রশ্নের উপর প্রশ্ন আসবেই , উত্তর ও দু ধরনের পাবেন । এক ধর্মের পক্ষে, দুই বিপক্ষে । এখানেও সিদ্ধান্ত আপনার । কোনটি আপনি নিবেন । যখন আপনি একটি বিপক্ষের যুক্তি নিবেন (হয়ত কোন লোভের কারন বা কোন ভয়ে বা এমনিতেই) , তখন আরো বিপক্ষের যুক্তি গুলি ক্রমানয়ে আসতে থাকবে । এভাবেই একটা ভিত্তি শুরু হবে এবং ধর্ম বোঝার ক্ষমতা শেষ হতে থাকবে যদি না আপনি আপনার ফ্লেট ফ্রম চেইঞ্জ না করেন । যখন আল্লাহ নাই বিশ্বাস এসে যাবে তখন এর পিছনে প্রমান ও পেতে থাকবেন । আসলে যে আল্লাহ পাক কে খুজে সে সাধারনত আল্লাহ পাক কে পায় ই । কারন , যে আল্লাহর দিকে এক পা আগায় , আল্লাহ তার দিকে দু পা আগান । আপনি যদি মনে করেন যুক্তি আর বিজ্ঞান দিয়ে আল্লাহ কে পাবেন তাহলে অন্ধকারেই আছেন । প্রকৃতপক্ষে আল্লাহর সাহায্য ছাড়া আল্লাহকে পাওয়া অসম্ভব । তাই , আল কুরানের শুরু এভাবেই (সূরা ফাতিহা) । আমি এই ব্লগেই সূরা ফাতিহা দিয়ে একটি জিনিস বুঝাইতে চাই ছিলাম, কিন্তু সবাই বিরূপ পতিক্রয়া দেখাইতেছিল । আল্লাহ পাক ই সব থেকে ভাল জানেন।
@ফুয়াদ,
” যাইহোক, আমার ক্ষেত্রে আপনার এই প্রিডিকশন সম্পূর্ণ ভুল । কারন , নাস্তিক বা সংশয়বাদী দের যুক্তি গুলি আমি পড়তে এবং জানতে ভালবাসী, এসব আমার কাছা প্রায় খেলার মত”
আমি আপনাকে উদ্দেশ্য করে কোনরকম প্রেডিকশন এখানে করিনি। আপনি নাস্তিক বা সংশয়বাদীদের কথাবার্তা যেকোন কারনেই হোক শুনতে চান বলেই তো এখানে নিয়মিত আসেন। কাজেই আপনাকে উদ্দেশ্য করে কেন বলতে যাব? বেশীরভাগ আস্তিক সেটাও কোনদিন করবেন না এ কথা তো মানেন। না মানলে, বা ধর্মের ব্যাপারে ১০০% কনফিডেন্ট থাকলে আমাদের দেশে ইসলাম ধর্ম শিক্ষার পাশাপাশি অন্য ধর্ম (বিশেষ করে বৌদ্ধ), নাস্তিকতার মুক্তমনা জাতীয় লেখাগুলিও পড়াবার চেষ্টা করেন তারপর দেখেন কি হয়। আপনার কাছে হাসি পেতে পারে, তবে আমার ধারনা ফল হবে ভিন্ন। আপনার মত সবাই যদি এসবে হাসির উপাদান খুজে পেত তবে নাস্তিকতাবাদ বা অন্য ধর্মের প্রচার সম্পর্কে এত এলার্জ়িক হত না। যা হাস্যকর তাকে ভয় পাবার কি আছে?
“বিচার হবার আগে আল্লাহ পাক কিভাবে জাহান্নামে নিক্ষেপ করার কিভাবে নির্দেশ দিচ্ছেন । প্রশ্ন অত্যান্ত যুক্তিক কিন্তু বিষয় অতীব সহজ । কারন এগুলো অগ্রিম বর্ননা, সহজে বুঝানোর জন্য । কি ঘটবে আল্লাহ পাক ভালই জানেন”
মিঠুন সাহেব প্রশ্ন করেছিলেন, উত্তর তাকেই দিলে পারতেন। যদিও এ জাতীয় ভাবের কথায় শুধুই কথা বাড়ে। আল্লাহ আগেই অগ্রীম যদি জানেন কে বেহেশতে যাবে আর কে জান্নাতে যাবে তবে আর পরীক্ষা হল কই? মানূষের আর কি ভূমিকা? আল্লাহ পরীক্ষা নিচ্ছেন যার রেজাল্ট তিনি আগে থেকেই জানেন (ঠিক করে রেখেছেন আর বললাম না কারন তাহলে ঐ নিয়ে পেচাবেন, জানেন আর ঠিক করে দিয়েছেন এক না) যুক্তির দৃষ্টিতে খাপ খায় না। পরীক্ষা করাই হয় অজানা রেজাল্ট জানার জন্য। জানা ফল পরীক্ষা করা হয় ডেমোনষ্ট্রেষনের জন্য।
“আপনি যদি মনে করেন যুক্তি আর বিজ্ঞান দিয়ে আল্লাহ কে পাবেন তাহলে অন্ধকারেই আছেন”
সেটা আমিও জানি, তাই যারা ধর্মগ্রন্থে বিজ্ঞানের সন্ধান পায় তাদের কার্যকলাপে আমার আপনার মতই হাসি পায়। তবে বিশ্বাসের ভিত কি যুক্তির থেকে শক্ত? যারা কঠিন ধার্মিক তাদের বেশীরভাগেরই ধর্ম বিশ্বাসের ভিত আসে পারিবারিক সুত্রে। নিজে নিজে ধর্ম বিশ্বাস পেয়ে গেছেন এমন নজির অতি সামান্য। তা হলে আর ধার্মিকদের মাঝেও এত ধর্মীয় বিভেদ থাকত না। সবাই এক ধর্মেই বিশ্বাসী হতেন। একটা হাওপোথিটিকাল পরীক্ষা করা যেতে পারে। ১০০০ নবজাতক শিশুকে এমন পরিবারে মানুষ করা যেতে পারে যেসব পরিবার আস্তিক বা নাস্তিক কোনটাই নয়। ধর্ম জাতীয় কিছু যে পৃথিবীতে আছে এমন কথাই ১৮ বছরের আগে এই শিশুদের জানতে দেওয়া হবে না। আপনার কি মনে হয় ফলাফল কি হবে?
এই শিশুরা সবাই অলৌকিক উপায়ে বিশ্বাসপ্রাপ্ত হয়ে যাবে?
এই একই শিশুদের ইসলামী পরিবারে লালন পালন করলে ৯৯% সম্ভাবনা থাকবে যে এরা মোসলমান হবে। খ্রীষ্টান পরিবারে খ্রীষ্টান হবে। এটাই স্বাভাবিক। কাজেই যেই বিশ্বাসের জোরে অত আত্মবিশ্বাসী হচ্ছেন তার জন্য আমার আপনার কৃতিত্ত্ব তো আমি খুব বেশী দেখি না।
@আদিল মাহমুদ,
এটা আপনার ধারনা হইতে পারে, কিন্তু তা ধারনা বৈকি অন্য কিছু নয় । কারন, এতে মানুষ যোক্তিক দিক থেকে আরো শক্ত হয়ে উঠবে । ছোট বেলা থেকে যদি এসবের সাথে পরিচয় থাকে, তাহলে হঠাত করে বিশাল পানির মধ্যে পরে গেলে যে সমস্যা হয় । ঐ সমস্যা আর হবে না । ঐ সমস্যায় পরেও অনেকে নাস্তিক হয় । যাইহোক, ছোট বেলা থেকে পরিচয় থাকলে তারা মানসিক দিক থেকে অনেক শক্তিশালী থাকবে ।
যোক্তিক দিক থেকেও আপনার প্রিডিকশন ভুল , কারন মসুলমান রা সয়ং নাস্তিকদের দেশেও আছে , লুকিয়ে হোক আর সামনা সামনি । আর সেকুলার দেশ গুলিতে অহরহ মানুষ আপনাদের লেখা পাচ্ছে আর পড়ছেও । কই কোন সমস্যা তো হইতেছে না । ফলাফল যে উলটো হবে বলতেছেন , তা তো হইতেছে না । বিষয়টি আরো ক্লিয়ার করা যায় ইভুলোশন কে সামনে নিয়া আসলে , ইভুলোশন ক্লাসে পড়ানো হয়, বরং ধর্মের যুক্তি গুলি পড়ানো হয় না , কিন্তু পরিসংখ্যানে উলটা রিপোর্ট দেখা যায় । এটা কিভাবে সম্ভব হল ? এটা যদি সম্ভব হয় ঐটাও সম্ভব হবে ।
গুটি কয়েক ব্যক্তি ছাড়া, জোর জবর দস্তি ব্যতীত মসুলমানদের আপনি যুক্তিদিয়ে সরাতে পারবেন না (যদি না সবাই আগেই একসাথে পাপ কাজে লিপ্ত হয়, এবং আল্লাহর সাহায্যের অনুপোযুক্ত হয়ে যায়) । ঐ গুটি কয়েক ব্যক্তি এমনিতেই সরে যেত । বা ঐ গুটি কয়েক ব্যক্তির ভিতরে ভিতরে বিশ্বাস নেই । আল্লাহ পাক কে পাওয়া না পাওয়ার ঘটনা ভাল ভাবে ব্যক্ষা করে হযরত উমর রাঃ এবং আবু জাহেলের ঘটনায় । হযরত উমর রাঃ আর আবু জাহেলের জন্য রাসূল সঃ আল্লাহ পাকের কাছে দুয়া করলে, হযরত উমরের জন্য দোয়া কবুল হয় । আবু জাহেলের জন্য হয় না । কারন হযরত উমর রাঃ যা বিলিভ করতেন , তার ভিত্তিতেই গডকে পাওয়ার সত্যিকার ভাল বাসা নিয়ে সে রাসূল সঃ কে বিরুদ্ধীতা করে মারতে গিয়ে ছিল । আবু জাহেল নিজের ক্ষমতা অথবা অহংকারের জন্য তা করত । তাই তার দুয়া কবুল হয় নি ।
একটা হাওপোথিটিকাল পরীক্ষা করা যেতে পারে। ১০০০ নবজাতক শিশুকে এমন পরিবারে মানুষ করা যেতে পারে যেসব পরিবার আস্তিক বা নাস্তিক কোনটাই নয়। ধর্ম জাতীয় কিছু যে পৃথিবীতে আছে এমন কথাই ১৮ বছরের আগে এই শিশুদের জানতে দেওয়া হবে না। আপনার কি মনে হয় ফলাফল কি হবে?
ফলাফল, অগ্রিম বলে দেওয়া হবে চরম অন্যায় । আপনি খাছ ১০০% ঐ কন্ডিশনে পরিক্ষা না করে তা বলতে পারেন না । যদি করেন তাহলে আল্লাহ পাকের প্রতি অন্যায় করা হবে । যাইহোক, ১৮ বছর হলে তাদের কে ধর্ম দিবেন, ধর্মকে ধর্মের মত বুঝাতে হবে । উলটা পালটা বুঝালে হবে না । তাহলেই বুঝতে পারবেন ফলাফল কি আসে । ধর্ম না দিলেও ১৮ বছর বয়স পর্যন্ত কিছু একটা বুঝবে , তার প্রমান পাওয়া যায় মানুষের কান্না থেকে । মানুষ যখন কাদে তখন সে অভিযোগ জানায় এক মহা শক্তি ধরের কাছে । হয়ত ভাষায় জানায় না , সাংকেতিক ভাষায় জানায় । এটাই আল্লাহ পাকের অস্তিত্ত মেনে নেওয়া । আর যেহেতু তার কাছে ইসলামের বানী পোছায় নি, সেহেতু ঐ পর্যন্তই তার রিলিজিয়ন । (আবারো বলতেছি কোন [আমারটি সহ] প্রিডিকশন গ্রহন যোগ্য নয় , যেহেতু আমরা কেউ ঐ কন্ডিশন জানি না ){{ ইসলাম অনুষারে বাচ্চারা মসুলমান হয়েই জন্মায় তারপর পরিবেশ বা পিতা মাতা তাকে চেইঞ্জ করে (বিশ্বাস না করলে, এই লাইন রেখে দিন) আর তাই
। তারপর ও মানুষ আস্তিক নাস্তিক মুস্লিম খ্রিস্টান হইতেছে, যা আপনার গণায় নিতে হবে }}
এবার আসি মিঠুন সাহেবের ব্যাপারটা,
মনে করুন এক শিক্ষক তার ছাত্রকে সারা বছর পরিয়েছে , সে শিক্ষক জানে পরিক্ষায় সে ফেল করবে নিশ্চিত তা লিখেও রেখেছে , এখন ছাত্র বিদ্যালয়ের নিয়মনুষারেই পরিক্ষা দিল , এবং ফেল করল । এই পরিক্ষা কেন যুক্তির দৃষ্টিতে খাপ খাবে না । যদি খাপ না খায় , তাহলে যুক্তিবিদ্যাতেই সমস্যা আছে ।
যাইহোক, আল্লাহ পাক ই ভাল জানেন ।
@ফুয়াদ,
মনে করুন এক শিক্ষক তার ছাত্রকে সারা বছর পরিয়েছে , সে শিক্ষক জানে পরিক্ষায় সে ফেল করবে নিশ্চিত তা লিখেও রেখেছে , এখন ছাত্র বিদ্যালয়ের নিয়মনুষারেই পরিক্ষা দিল , এবং ফেল করল । এই পরিক্ষা কেন যুক্তির দৃষ্টিতে খাপ খাবে না । যদি খাপ না খায় , তাহলে যুক্তিবিদ্যাতেই সমস্যা আছে ।
দাদা, প্রথমত ওটা নির্ভর করে সেদেশে সেই শ্রেণীতে পাশ-ফেল প্রথা আছে কিনা।আপনাদের আলোচনা শুনে মনে হচ্ছে ওখানে এখন্ও সকল শ্রেণীতে পাশ-ফেল প্রথা আছে।এই শর্তটা অন্তত মাথায় রাখুন।
আমি একজন ভারতীয় বাঙালি হিন্দু। পূর্বপুরুষ অবশ্য বাংলাদেশের, সব ছেড়ে ছুড়ে চলে আসতে হয়েছিল ।সে আলাদা গল্প । আমি একটা জিনিস কিছুতেই বুঝতে পারছি না যে আপনাদের চোখে নাস্তিক কারা। আমাদের কাছে যেমন যে ব্যক্তি শুধু ভগবান নয়, আল্লা বা গড অর্থাৎ কোন সৃষ্টি কর্তার অস্তিত্বেই বিশ্বাসী নন, তারাই নাস্তিক। অর্থাৎ একজন ধার্মিক মুসলমান বা খৃষ্টান নাস্তিক নন ।কিন্তু যতটুকু বুঝতে পারলাম আপনাদের ওখানে মুসলমান ছাড়া অন্য ধর্মের সবাই, এমনকি মুসলমানদের মধ্যেও যারা ধর্মনিরপেক্ষতা বা অন্য ধর্মের অস্তিত্বে বিশ্বাসী, তারাও নাস্তিক । এটা ঠিক বুঝতে পারলাম না। এটা কি এজন্য যে ইসলামে অন্য ধর্মের প্রতি ন্যূনতম শ্রদ্ধা দুরের কথা, অন্য ধর্মের অস্তিত্বই নেই? অন্যের মাকে শ্রদ্ধা করতে না পারলে কি নিজের মার শিক্ষা যথাযথ হয়? ঈদের দিন রামকৃষ্ণ মিশনে গেলে দেখবেন সন্ন্যাসীরা কোরান পাঠ করছে, বড়দিনে গেলে দেখবেন বাইবেল পাঠ হচ্ছে ।বিশ্বাস না হলে গিয়ে দেখুন । ওরা কি তাহলে নাস্তিক? ।আমাদের উত্তর পূর্ব ভারতের, বিশেষত ত্রিপুরার ৯০% বাংগালী বর্তমান বাংলাদেশের উদ্বাস্তু ।পূর্বপুরুষদের মুখে শুনেছি দেশভাগের সময় কিরকম নৃশংস ইসলামিক সন্ত্রাসের বলি হয়ে চৌদ্দ পুরুষের ভিটেমাটি ছেড়ে মা বোনের ইজ্জত বিসর্জন দিয়ে এপারে চলে আসতে হয়েছিল শূন্য হাতে । এরপরও এলাকার ফকির বাবার মাজারের সামনে দিয়ে যাবার সময় নিজে থেকেই হাত উপরে উঠে আসে নমস্কারের উদ্দেশ্যে । শনি মঙ্গলবার মাজারটাতে যে মোমবাতি গুলি জ্বলে, সব হিন্দুদের জ্বালানো। আমরা কি তাহলে নাস্তিক? ধর্ম তো যার যার ব্যক্তিগত ব্যাপার । যার যে ধর্ম ভালো লাগবে সে সে ধর্ম পালন করবে । আমি মনে করি নাস্তিক হওয়ার চেয়েও বেশি জরুরি পর ধর্ম সহিষ্ণু হওয়া । এ বিশ্বে শুধু ইসলামই থাকবে, হয় ইসলাম গ্রহন কর, নইলে মর- এরকম ভাবনা কি ঠিক? আমাদের মতের বাইরে কি অন্য মত থাকতে পারে না? সবার উপরে তো মানুষ । মানব ধর্মই আসল ধর্ম । কেউ ভুল বুঝবেন না, আমি যেমন ভেবেছি সেটাই ঠিক হবে তাও না।
এটা কেমন কথা হলো? কান্নার হলো কষ্টের বহিপ্রকাশ। যে আস্তিক সে মহাক্ষমতাধরের কাছে অভিযোগ জানাতে পারে, কিন্তু সবসময় সেটা সেটা ঘটবে সেটা কিভাবে বলবেন? আমি নাস্তিক, আমি কাদলেও কি মহা শক্তির কাছে অভিযোগ করি?
এই হাদিসটি আপনার লিখার সাথে প্রায় প্রাসংগিক মনে হল । তাই দিলাম ।
@ফুয়াদ,
আচ্ছা ফুয়াদ ভাই, জান্নাতে পুন্যবানদের পাঠানো আর জাহান্নামের আগুনে পাপিষ্ঠদের নিক্ষেপ, যাই বলেন না কেন, সবই তো নির্ধারন হবে কেয়ামতের পরে রোজ হাসরের ময়দানে। কিন্তু সমস্যা হল কেয়ামত তো এখনও হয়নি, আর রোজ হাসরের বিচার ও তো শুরু হয়নি এখনও (যেহেতু আমরা সব এখনও দিব্যি পাপ কাজ করে যাচ্ছি), তা আল্লাহ পাক কিভাবে কেয়ামত এর আগেই, হাসরের ময়দানে বিচার না করেই কাউকে জাহান্নামে নিক্ষেপের নির্দেশ দিচ্ছেন, আর কাউকে জান্নাতে প্রবেশের অনুমতি দিচ্ছেন??
@মিঠুন,
সবই রূপক।
তবে এ হাদীসের সাথে এই নিবন্ধের সম্পর্ক কোথায় বুঝতে পারলাম না।
লেখিকা পূন্যের পথ ফেলে পাপের পথে চলে গেছেন তেমন কোন শক্ত নজির তো দেখছি না, যদি না শুধুমাত্র নাস্তিক হওয়াকেই পাপের পথে যাওয়া হিসেবে ধরা হয়।
@আদিল মাহমুদ,
ঐ ইমাম একটু বারাবারি করেছেন বলে আমার মনে হয় (আল্লাহ পাক তাকে ক্ষমা করুন, আমাকেও ) তাই ঐ হাদিস ঐ বিষয়ের সাথে সম্পর্কিত ।
ঐ ইমাম যে কাজটি করেছেন তা অত্যান্ত আপত্তিজনক এবং ভুল (আল্লাহ পাক তাকে ক্ষমা করুন, আমাকেও) । এটা সীমালংগনের কাছাকছি চলে যায় ।
@ফুয়াদ,
হায়রে ভাই!! আমারই তো হাসতে হাসতে জান চলে যাবার দশা!! আপনার আল্লাহ যে খাম খেয়ালি, একনায়ক এবং তার কাছ থেকে ন্যায় বিচার পাওয়ার আশা নেই তা ঐ হাদিস থেকেই প্রমানিত।
আপনার আল্লাহ হচ্ছেন এমন সত্তা যিনি তার নিজ ইচ্ছার উপর চলেন, তার কাছে মানুষের ভালো মন্দের কোন দাম নেই, কে তাকে কত বেশি তোষামোদ করতে পারে তার উপর তার বেহেশত নির্ভর করে। এমন কি ভয়ানক পাপীরাও তোষামোদ করে তার কাছ থেকে জান্নাত আদায় করতে পারে। আপনি বলবেন এটা তার দয়া। তাইলে আমি বলি তার ন্যায় বিচার কই?
এবার আমি একটা হাদিস দেই। আর দেখেন আপনার আল্লার বিবেচনা বোধ!!
(এই হাদিসটি আমার অনেক আগে পড়া। তাই ঠিক কোনখান থেকে পেয়েছি বলতে পারবোনা। কেউ জানলে লিখে দিন।)
এই যদি হয় আপনার ন্যায় পরায়ন আল্লার ন্যায়ের অবস্থা!! তাইলে তার থেকে আর ভালো কিই বা আশা করতে পারি!!! দুনিয়াতেও তোষামদকারীদের প্রাধান্য, তারাই সব সুযোগ সুবিধা পায়। আখিরাতেও একই অবস্থা!!! আমাদের মত সোজাসাপ্টা বোকা মানুষদের জন্য কোথাও কেউ নাই।
(অবশ্য আরেক হাদীসে পেয়েছিলাম, আল্লা তোষামদকারীদের পছন্দ করেন না। কে জানে!! এক মুখ দিয়ে এত রকমের কথা বের হয় ক্যমনে!!! একেক সময় একেক কথা!!!)
@তানভী, :lotpot: :lotpot: :lotpot:
একটি অপ্রাসঙ্গিক কমেন্ট করি। প্রচন্ড শীতে দেশের বিভিন্ন স্থানে মানুষের মৃত্যু ঘটছে। শীতার্তদের সাহায্যে এগিয়ে আসার জন্য মুক্তমনার প্রতি একটি আহবান করেছি আমি এই পোস্টের শেষ অংশে, এ ব্যাপারে সবার দৃষ্টি আকর্ষন করছি।
কাল অনেকদিন পরে নাদিয়ার সাথে দেখা হল। সাথে ছিলো আরো জনা দুই মুক্তমনা সদস্য। জম্পেশ আড্ডাও হল। বারে বারেই উঠে এসেছিলো নাদিয়ার এই Why I Remain an Atheist প্রবন্ধটির কথা।
আজকে মুক্তমনায় আকাশ মালিকের অনুবাদটি দেখে সত্যই ভাল লাগলো। এ ধরণের লেখা আরো বেশি করে প্রকাশ করা জরুরী।
আরেকটা লেখা পড়েছিলাম – আয়ান হারসি আলীর কিভাবে (এবং কেন) আমি অবিশ্বাসী হলাম
এ ধরনের লেখা নিয়ে একটা সংকলন করলে কেমন হয়? আমি নিশ্চিত মুক্তমনাদের অনেকেরই এ ধরনের অভিজ্ঞতার মধ্য দিয়ে যেতে হয়েছে। এ দিকগুলো প্রকাশিত হওয়া প্রয়োজন।
@অভিজিৎ,
খুব ভাল আইডিয়া। এটা একটা খুব জরুরী ও ভাল কাজ হবে। সরাসরি লেখা আহভান করেন। আমি অধম
আছি আপনাদের সাথে, যদি কোন কাজে লাগতে পারি।
@অভিজিৎ,
ব্লগার নাস্তিকের ধর্মকথা somewherein এ এধরনের একটা উদ্যোগ হাতে নিয়েছেন। Atheist Bangladesh এ সম্প্রতি আমরা এধরনের লেখা আহবান করেছি। মুক্তমনাতেও তাই করা হোক।
@অভিজিৎ,
ভাল হবে। জাহেদের একটা লেখাছিল বেশ ভাল। সেটা দেখে
আমি প্রায় এক বছর ধরে একটা বড় লেখা লিখেছিলাম ইংরেজিতে। দুর্ভাগ্যজনক ভাবে সেটা প্রকাশ করা হয় নি-আর কম্পুটার ক্রাশের জন্যে হারিয়ে গেছে। সব সময় যে আত্মজীবনী লিখতে হবে তা না। গল্পের আকারেও লেখা যায়-
@অভিজিৎদা, আমিও ভাবছিলাম পরীক্ষার পর আমার কাহিনী নিয়ে লিখব। আমার কাহিনীটা অবশ্য মোটেই নাটকীয় না, একটা উদার পরিবার ও অনুসন্ধিৎসার সংমিশ্রণে যা হতে পারে……
আকাশ মালিক,
আপনি সেই হুজুরের কি ব্যবস্হা করলেন?
দু’ঘা দিয়ে আসতে পারলেন না তখনি!! :-X
ঘটনাটি আমার ছোটবেলার কথা মনে করিয়ে দিলো।
@আইভি,
জানতে ইচ্ছে করে আপনার ছোটবেলার কথা। লিখুন, প্রচুর লিখুন, সত্যকে লুকিয়ে রাখা বোকামী, এতে কোন মহত্ব নেই। ধর্মীয় নির্যাতন থেকে মুক্তি পেতে সকল শিশু দেশ ত্যাগী হতে পারেনা, কারো কাছ থেকে সমর্থনও পায়না। লিখুন আগামী দিনের শিশুদের জন্যে, বাঁচান শবনম, তাহমিনাদেরকে শরিয়তের নোংরা কুৎসিত হাতের ছোঁয়া থেকে, জাগিয়ে তোলুন অবচেতন ঘুমন্ত মা বাবাদেরকে।