স্বপ্ন ছিল একটা নদী কেনার
আব্দুল্লাহ-আল-মামুন
স্বপ্ন ছিল একটা নদী কেনার, শান্ত,শুভ্র বহমান একটা নদী,
যে নদীর কোল ঘেষে সাদা সাদা নিস্পাপ কাশফুল ফুটে থাকে,
বাতাসের দোলায় আর স্রোতের কুল কুল শব্দে
আন্তরে উঠে রোমাঞ্চের মাতম,
সাদা বক উড়ে যায় দল বেধে বহুদুর,
এমন একটা নদী।
স্বপ্ন দেখতাম, একান্তই আমার একটা নদী থাকবে,
নদীর তীরে বসে বসে তোমার চুল ওড়া দেখব,
দেখব দুষ্টু বাতাস তোমার সৌন্দর্যে কেমন হিংসায় জ্বলে পুড়ে
এলোমেলো করে দিয়ে যায় তোমাকে।
তোমার চুড়ির শব্দের কাছে কিভাবে ম্লান হয়
শত বছর ধরে বয়ে যাওয়া ঐ স্রোতের শব্দ।
তোমার কপালের টিপ দেখে কেমন করে
লজ্জায় মেঘের আড়ালে যায় প্রকিতির ঐ আপুর্ব স্রিষ্টি, মায়াবী চাদ।
সারাদিন ধরে তোমার সৌন্দর্যের সাথে পাল্লা দিয়ে
প্রকিতি যখন ব্যার্থ হয়ে ঘুমুতে যায়,
তখন না, নিলা জানো, আমার বুক গর্বে ভরে যায়,
নিজেকে খুব খুব আহংকারী মনে হয়,
বাচতে ইচ্ছা করে আনন্তকাল।
কিন্তু হঠাত মনে ভয় জাগে,
আমি কী পারব তোমাকে তোমার চেয়েও বেশি ভালবাসতে।
সারাদিন নদীর ধারে কাশফুলের ছায়ায় বসে
কাশফূল আর সাদা বকদের সাথে
তোমাকে ভালোবাসার পাল্লা দেয়।
ভালোবাসা শিখি তোমার চোখে আমার জন্য জমানো ভালোবাসার
গভীরতার কাছ থেকে, আর মুগ্ধ হয়,
এত সৌন্দর্য, এত গুন নিয়েও একটা মানুষ কতটা উদার
হতে পারে ! কতটা নিস্পাপ হতে পারে!
নিলা তোমার মনে আছে, একবার আমার সে কি মাথা ব্যাথা !
তারপর, তোমার কোলে মাথা রেখে তুমি আমার চুলে বিলি কাটতেই,
কোথায় পালাল মাথা ব্যাথা।
কি আছে তোমার ঐ নিস্পাপ স্পর্শে, তোমার ঐ শুভ্র ভালবাসায়!
স্বপ্ন ছিল, নদীটা কেনার পর, তোমায় নিয়ে হারিয়ে যাব নৌকা নিয়ে,
আমার ভালবাসার তরী ভেড়াব
কোন এক নির্জন চরে, যেখানে শুধু তুমি আর আমি,
সারাদিন শুধু ভালবাসাবাসি, আর স্বপ্ন দেখা।
কিন্তু স্বপ্ন শুধু স্বপ্নই থেকে গেল আমার, সময় আর পেলাম কই বল।
যখন নদী পেয়েছিলাম, টাকার আভাবে কিনতে পারি না,
এখন আমার আনেক টাকা, কিন্তু নদী কেনার সময় পায় না।
আমার প্রয়োজনে আমি স্বপ্ন দেখেছিলাম, তোমাকে ভালবেসেছিলাম,
জীবনের প্রয়োজনে এখন আমি আনেক ব্যাস্ত, ক্লান্ত, বিদ্ধস্ত।
তারপর ও বেচে আছি,
কারণ এখনও, এত আত্রিপ্ততার মাঝেও
তুমি আমাকে আগের মতই ভালবাস।
ভাইরে নদী কিনতে(পড়ুন নদী ভরাট করা জমি) যায়াই তো বিপদ হইসে! যদি কেউ নদী না কিনতো তবে আজ এত বেহাল দশা হতো কিনা কে জানে!
তবে কবিতাটা দারূন হয়েছে।
@তানভী,
আপনার মামার কাণ্ডটি দেখেন। শেষ পর্যন্ত আমার আকাশটিও……
@সৈকত চৌধুরী,
আপনারাই তো দিলেন সব শেষ করে, আমি তো খালি হাতের ভিকিরি।
আমি না হয় আসিমভের মত আরেকটা ফাউন্ডেশনই গড়ে নেব! 😛
আমার ইচ্ছে হচ্ছে হাতছানি দেয়া নীলাকাশকে চিরদিনের জন্য আপন করে নিতে।
ধন্যবাদ।
@সৈকত চৌধুরী,
ওইটা অনেক আগেই কিনে ফেলেছি আমি। আপনার কোন আশা নাই আর। আমার প্রোফাইল পিকচার দেখেন। প্রমাণ পাবেন।
@ফরিদ আহমেদ,
আপনি ভুলে আমার আকাশটি কিনে নিয়েছেন বলেই তো আমার এ আকুতি!
আপনার প্রোফাইল আমার ঐ একছত্র কবিতার জন্ম দিয়েছিল ।
আমিতো স্বপ্নে নীলের ছোঁয়া লাগানো পৃথিবীর সব ঝরনা, নদী, হ্রদ, সাগর, উপসাগর, মহাসাগর কিনে ফেলি।
কবিতটা বড্ড আধুনিক!নিলার প্রেমিকবর নিলার জন্য ফুল নয়,পাখী নয়,বাড়ি নয়,গাড়ি নয়, আস্ত একটা নদী কেনা,কি আসাধারণ স্বপন কবির! ভালোবাসার জন্য নদীও কেনা যায়।কিন্তু কবি গরীব মানুষ।টাকা নাই।কি বেদনাদায়ক! যাহোক,পশ্বিমের প্রেমিকেরা প্রেমিকারে নিয়ে যায় বিচানয়;পুবের কবিকে উহারে নিয়ে যেতে হয় নদীতে।পাপ-নিস্পাপ দ্বন্দ্বে শুধুই ভেসে যাওয়া।পেয়েও না পাওয়া।
কবিতাটি পুরুষতন্ত্রের এক নির্মম প্রতীক।সকল সাধ,আল্লাদ সুখ স্বপ্ন সকল মালিকানা শুধু পুরুষের।নারী শুধুই স্বপ্ন আর কল্পনা।ঐসব সব স্বাপনিক আরাম আয়েশ পাওয়া না পাওয়ার মর্ম যাতনায় কবিতার নায়ক ভুক্তভুগী।কারণ,কবি জীবনের প্রয়োজনে নিলাকে ভালোবাসেন নি।তার প্রয়োজনে শুধু নিলারে স্বপ্নে দেখা,তারপর ভালোবাসা! নিলার কোন জীবন নেই তাহলে! যেকিনা নদীর মতই আরামদায়ক বস্তু,দেখলে কবির চোখ জুরায়,স্পর্শে মাথা ব্যাথা দূর হয়।হায় নারী, তুমি শুধুই নরম তুলতুলে সেবিকা হয়ে এসেছিলে,এখনো আসো।।জীবনের প্রয়োজনে তাহলে পুরুষ নারীকে আর ভলোবাসে কই! কারণ,বাঙলায় মেয়ে এখনও মানুষ হয়ে উঠে নি, উঠতে দেয়া হয়নি, হয়তোবা গৃহপালিত পশু হিসেবে নারীরাও তা চায়নি।কাজেই বাঙলার নিলারা কোথ্থেকে কবির মত বলবে আজ আমার অনেক টাকা! এতো দেখি মার্কিনীদের স্বপ্ন,যারা সর্বদা টাকার বরাই করে! এমন সুন্দর কবিতার কবি আব্দুল্লাহ আল মামুনকে অশেষ ধন্যবাদ!