আমদের এবং আমাদের পূর্বপুরুষদের বলা হয় এইপ বা হোমিনয়েড যারা গাছে গাছে ঘুরে বেড়াতো। হোমিনয়েডরা উদ্ভুত হয় পুরাতন পৃথিবীর বানর বা ক্যাটারিনদের থেকে। হোমিনয়েডদের থেকে উদ্ভুত হয় হোমিনিডদের যাদের মধ্যে আছে আধুনিক মানুষ, অস্ট্রালোপিথেসিন, শিম্পাঞ্জী এবং গরিলা। আমরা সবাই একটি বর্গ প্রাইমেটের অন্তর্গত। আস্ট্রালোপিথেসিনরা আমাদের সরাসরি পূর্বপুরুষ যাদের সাথে আমাদের লাইন অফ ডিসেন্ট বিভক্ত হয়েই জন্ম হয় হোমো জেনাসের এবং অস্ট্রালোপিথেসিনরা বিবর্তনের ধারায় বিলুপ্ত হয়ে যায়।। ফসিল রেকর্ড পরীক্ষণের মাধ্যমে তিনটি অনুমিত তত্ত্বের (হাইপোথিসিস) মাধ্যমে বিবর্তন এই ধাপ ব্যাখ্যা করেছেন বিজ্ঞানীরা। যেগুলো হলো, ক) সাভানা হাইপোথিসিস, খ) দ্য উডল্যান্ড হাইপোথিসিস, গ) ভ্যারিয়াবিলিটি হাইপোথিসিস। এর মধ্যে সাভানা হাইপোথিসিসটি সবচেয়ে গ্রহণযোগ্য ব্যাখ্যা হিসেবে বৈজ্ঞানিক মহলে সমাদৃত।
সাভানা হাইপোথিসিসঃ
পাঁচ থেকে আট মিলিয়ন বছর আগে পৃথিবীর আবহাওয়া হঠাৎ করেই ঠান্ডা ও শুষ্ক হতে শুরু করে। আবহাওয়ার এই পরিবর্তনে কারণে আফ্রিকার ঘন জঙ্গলের পরিধি কমে আসে। পূর্বদিকে সৃষ্টি হয় গাছবিহীন শুষ্ক তৃনভূমির, পশ্চিমে ঘন জঙ্গল। প্রাকৃতিক এই পরিবর্তনে পূর্বের এইপরা বিপদে পড়ে যায়। কারণ এতোদিন তারা গাছে গাছে থাকতো, তাদের খাবার দাবারের সংস্থান হতো গাছে গাছেই। এখন সেই গাছই নেই। প্রচুর সংখ্যক এইপরা প্রকৃতির এই পরিবর্তনে বিলুপ্ত হয়ে যেতে থাকে। আর কিছু বৈশিষ্ট্যপূর্ণ এইপ পরিবর্তিত প্রকৃতির সাথে খাপ খাওয়াতে সমর্থ হয়, তারা তৃনভুমিতে জীবন যাপন শুরু করে। এই বৈশিষ্ট্যপূর্ণ এইপ দের খটমটে বৈজ্ঞানিক নাম, Australopith।
শুষ্ক তৃনভুমিতে খাবারের অভাব, পানির অভাব। জীবন সংগ্রামে টিকে থাকার জন্য এখন তাহলে কী কী বৈশিষ্ট্য প্রয়োজন। ১) দলবদ্ধ হওয়া ২) খাবার সংগ্রহে দূর-দূরান্তে ভ্রমণ শুরু করা ৩) যোগাযোগ ব্যাবস্থার উন্নতি। ৪) শিকারের জন্য অস্ত্র সস্ত্র তৈরী করা ও প্রয়োগ জানা। এ কাজগুলো মস্তিষ্কের সহায়তা ছাড়া হবে না, অর্থাৎ বুদ্ধিমান প্রানীরাই একমাত্র উপযুক্ত। কিন্তু তখনও মস্তিষ্কের বিকাশ শুরু হয়নি ফলে বেশিরভাগ Australopith রাই জীবন সংগ্রামে পরাজিত হয়ে হারিয়ে গেল। বৈশিষ্ট্যপূর্ণ কিছু কিছু প্রজাতি টিকে যেতে সমর্থ হলো। সেখান থেকেই ধীরে ধীরে মস্তিষ্কের বিবর্তনের সূচনা। সময়ের সাথে সাথে মস্তিষ্ক বড় হতে থাকলো। এখানে একটা জিনিস উল্লেখ্য “মস্তিষ্ক বড়” বলতে কার মস্তিষ্ক কত বড় সেটা নয়, বরঞ্চ প্রানীর দেহের সাথে মস্তিষ্কের অনুপাত বোঝায়। Australopith দের মস্তিষ্ক ছিল প্রায় (৩০০- ৪০০) সিসি। অন্যদিকে আধুনিক মানুষের মস্তিষ্ক ১৩০০ সিসি। লক্ষ বছর ধরে প্রকৃতিক সাথে টিকে থাকার যুদ্ধের কারণেই মস্তিষ্কের এই বিবর্তন হয়েছে।
“বিবর্তনের মাধ্যমে আমরা এসেছি” প্রমান কী?
বিবর্তনের প্রমান হিসেবে দীর্ঘদিন ধরে ফসিল রেকর্ডকেই ব্যবহার করা হয়েছে। কিন্তু আনবিক জীববিদ্যা এবং কোষবংশগতিবিদ্যা উদ্ভাবনের পর এখন আর ফসিল রেকর্ডের কোন দরকার নেই। জীনতত্ত্ব দিয়েই চমৎকারভাবে বলে দেওয়া যায় আমাদের বংশগতিধারা। জীববিজ্ঞানের এই শাখাগুলোর মাধ্যমে, আমাদের পূর্বপুরুষ কারা ছিল, তাদের বৈশিষ্ট্য কেমন ছিল, দেখতে কেমন ছিল তারা সব নির্ণয় করা হয়েছে। দেখা গেছে ফসিল রেকর্ডের সাথে অক্ষরে অক্ষরে মিলে গিয়েছে সেটা।
জীববিজ্ঞানীরা আমাদের পূর্বপুরুষের যেই ধারাটা দিয়েছেন সেটা হলোঃ
মানুষ –> নরবানর –>পুরোন পৃথিবীর বানর –> লেমুর
প্রমান ১:
রক্তকে জমাট বাঁধতে দিলে একধরণের তরল পদার্থ পৃথক হয়ে আসে, যার নাম সিরাম। এতে থাকে এন্টিজেন। এই সিরাম যখন অন্য প্রাণীর শরীরে প্রবেশ করানো হয় তখন উৎপন্ন হয় এন্টিবডি। উদাহরণ হিসেবে বলা যায়, মানুষের সিরাম যদি আমরা খরগোশের শরীরে প্রবেশ করাই তাহলে উৎপন্ন হবে এন্টি হিউমান সিরাম। যাতে থাকবে এন্টিবডি। এই এন্টি হিউমান সিরাম অন্য মানুষের শরীরে প্রবেশ করালে এন্টিজেন এবং এন্টিবডি বিক্রিয়া করে অধঃক্ষেপ বা তলানি উৎপন্ন হবে। যদি একটি এন্টি হিউমান সিরাম আমরা যথাক্রমে নরবানর, পুরোন পৃথিবীর বানর, লেমুর প্রভৃতির সিরামের সাথে মেশাই তাহলেও অধঃক্ষেপ তৈরী হবে। মানুষের সাথে যে প্রানীগুলোর সম্পর্কের নৈকট্য সবচেয়ে বেশি বিদ্যমান সেই প্রানীগুলোর ক্ষেত্রে তলানির পরিমান বেশি হবে, যত দূরের তত তলানীর পরিমান কম হবে। তলানীর পরিমান হিসেব করে আমরা দেখি, মানুষের ক্ষেত্রে সবচেয়ে বেশি তলানী পাওয়া যাচ্ছে, নরবানরের ক্ষেত্রে আরেকটু কম, পুরানো পৃথিবীর বানরের ক্ষেত্রে আরেকটু। অর্থাৎ অনুক্রমটা হয়-
মানুষ- নরবানর- পুরোন পৃথিবীর বানর- লেমুর।
অঙ্গসংস্থানবিদদের মতে উল্লিখিত প্রাণীদের মধ্যে সর্বাধিক আদিম হচ্ছে লেমুর, আর সবচেয়ে নতুন প্রজাতি হচ্ছে মানুষ। তাই মানুষের ক্ষেত্রে তলানির পরিমাণ পাওয়া যায় সবচেয়ে বেশি আর লেমুরের ক্ষেত্রে সবচেয়ে কম। দেখা যাচ্ছে বিবর্তন যে অনুক্রমে ঘটেছে বলে ধারণা করা হয়েছে রক্তরস বিজ্ঞানের ‘অ্যান্টিজেন এন্টিবডি’ বিক্রিয়াও সে ধারাবাহিকতাকেই সমর্থন করে।
প্রমান দুইঃ
চোখ মেলে তাকিয়ে দেখুনঃ
১। প্রকৃতিতে মাঝে মাঝেই লেজ বিশিষ্ট মানব শিশু জন্ম নিতে দেখা যায়। এছাড়াও পেছনে পা বিশিষ্ট তিমি মাছ, ঘোড়ার পায়ে অতিরিক্ত আঙ্গুল কিংবা পেছনের ফিন যুক্ত ডলফিন সহ শরীরে অসংগতি নিয়ে প্রাণীর জন্মের প্রচুর উদাহরণ পাওয়া যায়। [[লেজ বিশিষ্ট মানব শিশুর কিছু সচিত্র বাস্তব উদাহরণ পাওয়া যাবে এখান]]। এমনটা কেন হয়। এর উত্তর দিতে পারে কেবল বিবর্তন তত্ত্বই।
বিবর্তনের কোন এক ধাপে অংগ লুপ্ত হয়ে গেলেও জনপুঞ্জের জীনে ফেনোটাইপ বৈশিষ্ট্য হিসেবে ডিএনএ সেই তথ্য রেখে দেয়। যার ফলে বিরল কিছু ক্ষেত্রে তার পূনঃপ্রকাশ ঘটে।
২। বিবর্তন তত্ত্ব অনুযায়ী পুর্ব বিকশিত অংগ-প্রত্যঙ্গ থেকেই নতুন অঙ্গের কাঠামো তৈরির হয়। বিভিন্ন মেরুদন্ডী প্রাণীর সামনের হাত বা অগ্রপদের মধ্যে তাই লক্ষ্যনীয় মিল দেখা যায়! ব্যাঙ, কুমীর, পাখি, বাদুর, ঘোড়া, গরু, তিমি মাছ এবং মানুষের অগ্রপদের গঠন প্রায় একই রকম।
৩। পৃথিবীতে অগুনিত প্রজাতি থাকলেও সবচে মজার ব্যাপার হলো, ভেতরে আমরা সবাই প্রায় একই। আমরা সবাই “কমন জিন” শেয়ার করে থাকি। পূর্বপুরুষের সাথে যত বেশি নৈকট্য বিদ্যমান, শেয়ারের পরিমানও তত বেশি। যেমন, শিল্পাঞ্জি আর আধুনিক মানুষের ডিএনএ** শতকরা ৯৬% একই, কুকুর আর মানুষের ক্ষেত্রে সেটা ৭৫% আর ড্যাফোডিল ফুলের সাথে ৩৩%।
ডিএনএ
মানুষের দেহ অসংখ্য কোষ দিয়ে গঠিত। প্রতিটি কোষের একটি কেন্দ্র থাকে যার নাম নিউক্লিয়াস। নিউক্লিয়াস এর ভেতরে থাকে ক্রোমোজোম, জোড়ায় জোড়ায়। একেক প্রজাতির নিউক্লিয়াসে ক্রোমোজোম সংখ্যা একেক রকম। যেমন মানব কোষের নিউক্লিয়াসে ২৩ জোড়া ক্রোমোজোম থাকে। প্রতিটি ক্রোমোজোম এর ভেতরে থাকে ডিএনএ এবং প্রোটিন। ডিএনএ এক ধরণের এসিড যা দেহের সকল কাজকর্ম নিয়ন্ত্রণ করে। প্রকৃতপক্ষে ক্রোমোজোম এর ভেতরে কি ধরণের প্রোটিন তৈরি হবে তা ডিএনএ নির্ধারণ করে। এসব প্রোটিনের মাধ্যমেই সকল শারীরবৃত্তীয় কাজ সংঘটিত হয়। ডিএন-র আরেকটি কাজ হচ্ছে রেপ্লিকেশন তথা সংখ্যাবৃদ্ধি। ডিএনএ নিজের হুবহু প্রতিলিপি তৈরি করতে পারে, ডিএনএ ই যেহেতু জীবনের মূল তাই আরেকটি প্রতিলিপি তৈরি হওয়ার অর্থই আরেকটি জীবন তৈরি হওয়া, এভাবেই জীবের বংশবৃদ্ধি ঘটে। মোটকথা ডিএনএ জীবনের মৌলিক একক এবং কার্যকরি শক্তি, সেই জীবের সকল কাজকর্ম পরিচালনা করে এবং তার থেকে আরেকটি জীবের উৎপত্তি ঘটায়। ডিএনএ-র মধ্যে তাই জীবের সকল বৈশিষ্ট্য ও বংশবৃদ্ধির তথ্য জমা করা থাকে। ডিএনএ-র মধ্যে থাকে জিন, জিনের সিকোয়েন্সই জীবদেহের সকল তথ্যের ভাণ্ডার।
৪। চারপাশ দেখা হলো। এবার আসুন একবার নিজেদের দিকে তাকাই।
ক) ত্রয়োদশ হাড়ঃ বাংলাদেশ মিলিটারি একাডেমিতে ভর্তি হবার সুযোগ পেলো আমার এক বন্ধু। বাক্স পেটরা বন্দী করে সে চলে গেল ট্রেনিং এ চট্রগ্রামের ভাটিয়ারিতে। ছয় সপ্তাহ ডলা খাবার পর মিলিটারি একাডেমির নিয়ম অনুযায়ী একটি ফাইনাল মেডিক্যাল পরীক্ষা হয়। সেই পরীক্ষায় আমার বন্ধুর দেহ পরীক্ষা করে দেখা গেলো, তার পাঁজরে এক সেট হাড় বেশি। আধুনিক মানুষের যেখানে বারো সেট হাড় থাকার কথা আমার বন্ধুর আছে তেরোটি। ফলস্বরূপ তাকে মিলিটারি একাডেমির প্রশিক্ষণ থেকে অব্যাহতি দেওয়া হলো।
পরিসংখ্যান থেকে পাওয়া যায়, পৃথিবীর আটভাগ মানুষের শরীরে এই ত্রয়োদশ হাড়ের অস্তিত্ব পাওয়া যায়। যেটি কিনা গরিলা ও শিল্পাঞ্জির শারিরিক বৈশিষ্ট্য। মানুষ যে, এক সময় প্রাইমেট থেকে বিবর্তিত হয়েছে এই আলামতের মাধ্যমে সেটিই বোঝা যায়।
খ) লেজের হাড়ঃ মানুষের আদি পূর্বপুরুষ প্রাইমেটরা গাছে ভারসাম্য রক্ষা করার জন্য লেজ ব্যবহার করতো। গাছ থেকে নীচে নেমে আসার পর এই লেজের প্রয়োজনীয়তা ফুরিয়েছে। কিন্তু আমাদের শরীরে মেরুদন্ডের একদম নীচে সেই লেজের হাড়ের অস্তিত্ব পাওয়া যায়।
মানুষের লেজের হাড়
গ) আক্কেল দাঁতঃ পাথুরে অস্ত্রপাতি আর আগুনের ব্যবহার জানার আগে মানুষ মূলতঃ নিরামিশাষী ছিলো। তখন তাদের আক্কেল দাঁতের প্রয়োজনীয়তা থাকলেও আমাদের তা নেই, যদিও আক্কেল দাঁতের অস্তিত্ব এখনও রয়ে গেছে।
ঘ) অ্যাপেন্ডিক্সঃ আমাদের পূর্বপুরুষ প্রাইমেটরা ছিল তৃনভোজি। তৃণজাতীয় খাবারে সেলুলোজ থাকে। এই সেলুলোজ হজম করার জন্য তাদের দেহে এপেনডিক্সে বেশ বড় ছিল। ফলে সিকামে প্রচুর পরিমান ব্যাকটেরিয়ার থাকতে পারতো যাদের মূল কাজ ছিল সেলুলোজ হজমে সহায়তা করা। সময়ের সাথে আমাদের পূর্বপুরুষদের তৃনজাতীয় খাবারের উপর নির্ভরশীলতা কমতে থাকে, তারা মাংসাশী হতে শুরু হলে। আর মাংসাশী প্রাণীদের অ্যাপেন্ডিক্সের কোন প্রয়োজন নেই, প্রয়োজন বৃহৎ পাকস্থলীর। ফলে অপেক্ষাকৃত ছোট অ্যাপেন্ডিক্স এবং বড় পাকস্থলীর প্রাণীরা সংগ্রামে টিকে থাকার সামর্থ লাভ করে, হারিয়ে যেতে থাকে বাকিরা। পূর্বপুরুষের স্মৃতিচিহ্ন হিসেবে সেই অ্যাপেন্ডিক্স আমরা এখনও বহন করে চলছি।
ঙ) গায়ের লোম: মানুষকে অনেক সময় ‘নগ্ন বাঁদর’ বা ‘নেকেড এপ’ নামে সম্বোধন করা হয়। আমাদের অনেক বন্ধুবান্ধবদের মধ্যেই লোমশ শরীরের অস্তিত্ব দেখা যায় এখনো। আমরা লোমশ প্রাইমেটদের থেকে বিবর্তিত হয়েছি বলেই এই আলামত এখনো রয়ে গেছে।
এই তো গেলো মানুষের পূর্বপুরুষদের কথা। আচ্ছা এমন কী হতে পারে না, আফ্রিকা বাদে অন্য কোথাও অন্য কোনভাবে মানুষের ভিন্ন একটি প্রজাতির উদ্ভব হয়েছে?
মানুষেরও কী আরও প্রজাতি আছেঃ
প্রকৃতির দিকে তাকিয়ে থাকলে দেখা যায়, হরেক রকমের ফিঙ্গে পাখি, বিভিন্ন রকমের বাঘ, ভালুক। প্রায় সব প্রাণীরই বিভিন্ন প্রজাতি আমাদের চোখে পড়ে। “ট্রি অফ লাইফ” এর শাখা প্রশাখায় তারা একে অপরের থেকে আলাদা হয়েছে।
এ আলোচনার আগে জেনে নেই প্রজাতি বলতে আসলে কী বোঝানো হয়। প্রজাতি হলো এমন কিছু জীবের সমষ্টি যারা শুধু নিজেদের মধ্যে প্রজননে সক্ষম। যেমন ধরুন আমরা অর্থাৎ আধুনিক মানুষ বা homo sapiens একটি প্রজাতি যারা আর কোন প্রজাতির জীবের সাথে প্রজননে অক্ষম।
পৃথিবীজুড়ে এখন শুধু আধুনিক মানুষ চোখে পড়লেই ভেবে নিবেন না, মানুষের একটিই প্রজাতি। ২০০৩ সালের অক্টোবরে বিজ্ঞানীরা ইন্দোনেশিয়ার ফ্লোরস দ্বীপে মাটি খুঁড়ে পান এক মিটার লম্বা এক মানুষের ফসিল- কঙ্কাল। কার্বন ডেটিং এর মাধ্যমে বিজ্ঞানীরা গণনা করে দেখেন, নব্য আবিষ্কৃত এই মানুষটি মাত্র ১২,০০০- ১৪,০০০ হাজার বছর আগেই এই দ্বীপটিতে বাস করতো। বিভিন্ন পরীক্ষার মাধ্যমে দেখা গেছে, তারা আমাদের হোমিনিড (মানুষ এবং বনমানুষ বা ape দেরকে hominid গ্রুপের অন্তর্ভুক্ত ধরা হয়) গ্রুপের অন্তর্গত হলেও তাদের চোয়াল এবং মস্তিষ্কের মাপ আধুনিক মানুষের মতো নয়। উচ্চতায় মাত্র ১ মিটার। অপেক্ষাকৃত লম্বাটে হাত। আধুনিক মানুষের মস্তিষ্ক যেখানে প্রায় ১৩৩০ সিসি সেখানে তাদের মস্তিষ্ক মাত্র ৩৮০ সিসি। তাহলে কী তারা আধুনিক মানুষের মতো অস্ত্র বানিয়ে শিকার করার মতো বুদ্ধিহীন, গাছে গাছেই যাদের সময় কাটানো বানর কিংবা শিল্পাঞ্জি ছিল? এই প্রশ্নের জবাব পাওয়া যায়, তাদের ফসিলের পাশে রাখা ১২,০০০- ৯৫,০০০ হাজার পুরানো পাথুরে অস্ত্র দেখে- যা কিনা শুধুমাত্র বুদ্ধিহীন প্রাণীদের পক্ষেই তৈরি করা সম্ভব। বিজ্ঞানীদের ধারণা, অনেক আগেই বিলুপ্ত হয়ে যাওয়া homo erectus এর একটি দল এই দ্বীপে এসে বসবাস শুরু করে। হাজার হাজার বছর ধরে এই দ্বীপে বিচ্ছিন্নভাবে বাস করার ফলে তারা বিবর্তিত হতে হতে এক সময় ভিন্ন একটি প্রজাতিতে রূপান্তরিত হয়। আধুনিক মানুষের আরেকটি প্রজাতি! কিন্তু ১২,০০০ বছর আগে দ্বীপটিতে একটি ভয়াবহ অগ্ন্যুতপাতের ফলে অনান্য প্রাণীর সাথে তারাও বিলুপ্ত হয়ে যায়। পরবর্তীতে আরও অনেক গবেষণার মাধ্যমে দেখা যায়, এই বামন মানুষদের মতো আরও অনেক প্রজাতির সাথে একসময় আমরা এই পৃথিবী ভাগ করে নিয়েছি- যারা পরবর্তীরে বিভিন্ন কারণে বিলুপ্ত হয়ে গিয়েছে। টিকে রয়েছে শুধু আধুনিক মানুষ বা homo sapiens।
মানুষের বিবর্তনের আলচনার শেষ পর্যায়ে এসে আরেকটা জিনিস পাঠকের মনে হতে পারে, আচ্ছা বিবর্তনের মাধ্যমে আমরা (আধুনিক মানুষরা) এক উন্নত প্রজাতি হিসেবে আবির্ভূত হয়েছি। আমাদের পরবর্তী গন্তব্য কোথায়? উন্নতির পরবর্তী ধাপ কী?
এমন প্রশ্ন আসাটাই স্বাভাবিক। তাই বিবর্তন তত্ত্বের একটা ব্যাপার এখানে পরিষ্কার করে বলে দেওয়া দরকার। বিবর্তন কিন্তু মই বেয়ে বেয়ে উন্নতির শিখরে আরোহন করা নয়। এটা অনেকটা ট্রেডমিলে দৌড়ানোর মতো, যেখানে মূল ব্যাপার হচ্ছে টিকে থাকা। প্রকৃতিতে তেলাপোকার মতো প্রানী দীর্ঘদিন উন্নতি না করেই টিকে আছে, আর ডায়নোসার এর মতো অতিকায় প্রানী বিলুপ্ত হয়ে গেছে। সুতরাং উন্নতি হতেই হবে এমন কিছু বিবর্তন দিব্যি দিয়ে বলে না।
তথ্যসূত্রঃ
১। মাইক্রোসফট এনকার্টা> হিউম্যান এভোলিউশন
২। বিবর্তনের পথ ধরে- বন্যা আহমেদ
লেখা টা না পড়ে বের হতে পারলাম না। ভাল হয়েছে। কিন্তু আরো তথ্য আশা করেছিলাম। সামনে আরো তথ্য সমৃধ্য লেখার অপক্ষায় রইলাম
আপনার লেখা না পড়েই ধন্যবাদ। অনেক দিন ধরে এ ধরনের লেখা খুজছিলাম। রাতে সময় করে পড়বো। তার পর আশা করি এক বিঘা ধন্যবাদ দিতে পারবো।
মানুষের বিবর্তনের পুরো প্রক্রিয়া বোঝার জন্য এখন মনে হয় অস্ট্রালোপিথ গবেষণার বিকল্প নেই। তবে মানব জীবাশ্মের সবগুলো ধাপ হয়তো পাওয়া যাবে না। এটাই স্বাভাবিক। কারণ জীবাশ্ম সংরক্ষণ তো খুব বিরল একটা প্রক্রিয়া, সচরাচর ঘটতে দেখা যায় না। ভবিষ্যতের বিবর্তন গবেষণা তাই মনে হয় অনেকাংশেই জিন নির্ভর হবে।
কিন্তু ইতিহাস দেখতে হলে জীবাশ্মের কোন বিকল্প নাই।
লেখার জন্য অনেক ধন্যবাদ রায়হান। এভাবেই নেটে বিবর্তন নিয়ে একটি ভাল সংগ্রহশালা তৈরি হচ্ছে। এখন বাংলা লেখাগুলোকে একত্রিত করলেও অনেক বড় বিবর্তন কোষ হয়ে যায়। তবে অনেক দিক এখনও এক্সপ্লোর করা হয়নি। এভাবে লিখতে থাকতে হবে।
অভিজিত,
ধণ্যবাদ খুব সুন্দর একটা উদাহরন দিয়ে ব্যাখা করার জন্য। এখন ব্যাপারটা কিছুটা পরিষ্কার হতে শুরু করেছে। যা বুঝছি ব্যাপারটা ২ এ ২ এ ৪ হয় বলেই ৪ এ ৪ এ ৮ হবে তা নয়।
বন্যা আহমেদ এর পুরো বই প্রিন্ট করেছি, শুরু করে দেব পড়াশুনা।
ফাঁকিবাজি পোস্ট! মিউটেশন, ভ্যারিয়েশনের মত ব্যাপারগুলো লেখায় আনা হয় নি। এছাড়া ন্যাচারাল সিলেকশন নিয়ে একটু বিস্তারিতভাবে লিখলে ভাল হত। এই ব্যাপারটা পাঠকেরা অনেকেই বুঝতে পারেন না। অনেকেই মনে করেন বিবর্তন ব্যক্তিপর্যায়ে হয়। অথচ বিবর্তন প্রকৃতপক্ষে হয় পপুলেশনে। এই ব্যাপারটা নিয়ে লেখায় বাড়তি কিছু সংযোজন করলে বোধহয় ভাল হত। যাইহোক, লেখায় পাঁচ তারা। :rotfl:
@অবিশ্বাসী,
মজা পেলাম আপনার মন্তব্য পড়ে … ধন্যবাদ …
আসলে আমার আশে পাশে এতো এতো ছাগু থাকে, তারা এতো এতো ছাগলামি করে বলে বোঝাতে পারবোনা। তাদের হেদায়েতের জন্য এই ধরণের লেখা শুরু করছি। শুরুতেই মিউটেশন ভ্যারিয়েশন নিয়ে ফালাফালি কর্লে তারা নামাজে চলে যাবে, আমার কথা শুনবে না।
@রায়হান আবীর, হুম্ম্
ঈদ ও পুজোর ছুটির প্রথম দিন।কয়েকদিনের লাগাতার ধকল ও একটা কিটোটিফেনের প্রভাবে ঝাড়া দশটি ঘণ্টা ঘুমিয়ে উঠে লেখাটা পড়লাম।সাবলীল ও বস্তুনিষ্ঠ লেখা।বিশেষ করে ধন্যবাদ জানাই ‘প্রজাতি’র সঠিক সংজ্ঞাটি তুলে ধরবার জন্য।কারণ অনেকেই এ ব্যাপারটি গুলিয়ে ফেলেন।মানুষের bestiality থেকে যে কখনোই কোন অপত্য জন্মায় না এটা অনেকেই বুঝতে চায় না।আর তাই ‘আদি বানর ও প্রথম মানবের মিলনের ফলে উদ্ভুত সন্তান’- মার্কা প্রশ্ন করে।বিবর্তনের যে পর্যায়ে প্রজাতি আলাদা হয়ে যাবে সে পর্যায়ে আর পুর্ববর্তী পর্যায়ের সাথে যৌন প্রজনন সম্ভব নয়।কাজেই জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং ছাড়া মানুষ ও গোরিলার সংমিশ্রনে কোন ‘মানুলা’-র উৎপত্তি সম্ভব নয়।
@আগন্তুক,
আসলেই এই জিনিসটাই বোধহয় বিবর্তনের সবচেয়ে বড় এবং জনপ্রিয় মিসকন্সেপশন। অথচ ব্যাপারটা এমন নয়- কে বোঝাবে বলেন। তবে আমি হতাশ নই, পপুলেশন লেভেলে বিবর্তন হয় এই জিনিসটাও একদিন দুনিয়ার সকল মানুষ বুঝে ফেলবে এই আশা রাখি।
@রায়হান আবীর,
বাদ দেন বোঝানোর চেষ্টা।চলুন নিজেরাই ভালো করে বুঝি… :-))
কৌতুহলটা বহু পুরাতন। যেদিন মানুষ প্রশ্ন করতে পেরেছে আমরা এলাম কোথা হতে সেদিন থেকেই কৌতুহল জেগেছে আমরা যাচ্ছি কোথায়। আমরা বলিনা আমাদের সৃস্টিকর্তা কে বরং বলছি আমরা এলাম কোথা হতে। আমরা মেনে নিয়েছি আমাদের জন্ম হয় নাই সুতরাং কোন সৃস্টিকর্তার কাছে আমরা ফিরে যাচ্ছিনা। অর্থাৎ আমাদের বর্তমান অবস্থা যদি বিবর্তনের একটি ধাপ হয় তাহলে পরের ধাপ কি?
লেখক বলেছেন-
সে অপেক্ষায় রইলাম, তবে ছোট্ট একটি ধাঁধাঁয় পড়ে ইচ্ছে জাগে, ডারউইন মশাইয়ের সারভাইবাল অফ দ্য ফিটেস্ট ফিটেস্টরা বাঁচবে বাকিরা ঝরে যাবে। তুমি টিকতে পারছোনা, সো গেট লস্ট!এর সাথে দ্বীমত পোষন করে বলি, সারভাইবাল অফ দ্য ফিটেস্ট – বিবর্তন প্রক্রীয়ায় ইতিমধ্যে Survival of the Community হয়ে গেছে। প্রমানটা বোধ করি মানুষের ভেতরেই আছে। আমার ধারণা মানুষ শুধু মানুষেরই নয়, সমস্ত জীব জগত উদ্ভিদ জগতের বিবর্তন প্রক্রীয়া অনেকটা শ্লথ করে বা বদলে দিয়েছে। প্রজাতির উতপত্তি ও বিলুপ্তিতে মানুষ বিরাট ভুমিকা রাখছে ভবিষ্যতেও রাখবে। দেখা যাক লেখক কি নিয়ে আসেন।
@Akash Malik,
আপনাকে বলার দরকার নেই, তারপরও বলি শুধু সাধারণ্যে বোঝাবার জন্যি সারভাইবাল অফ দ্য ফিটেস্ট শব্দটি ব্যবহার করা হয়। বৈজ্ঞানিক দৃষ্টিকোণ থেকে ব্যাপারটা এতো সাধারণ নয়। যেমন, ময়ূরের মতো প্রাণী যার গঠন এমন যে সে সব সময় চিৎকার করে প্রিডেটরকে বলছে ‘আমাকে খাও, আমাকে খাও’ সে কিন্তু প্রাকৃতিক নির্বাচনে টিকে যাচ্ছে। সুতরাং আরও ব্যাপার স্যাপার আছে। আমি পুরা বই লেখার ধান্ধায় আছি। এইরকম এডভান্স কিছু ব্যাপার নিয়ে আলোচনা করবো, যেটা ব্লগে সম্ভব হচ্ছেনা। কারণ সেক্ষেত্রে মূল বক্তব্যের ফোকাস নষ্ট হয়ে যেতে পারে।
ব্লগে আপনার নিয়মিত মন্তব্য আমার জন্য বিরাট প্রেরণা। কেন আশা করি বুঝতে পেরেছেন …
“মানুষের শিশু কাল এত দীর্ঘ যে রিভ্যালুশান এর ফলে মানুষের আসা সম্ভব নয়।” পৃথিবীতে মানুষ অনেক পরে এসেছে একথা প্রমানীত সত্য। কিন্তু এখানে যত ব্যাখ্যা দেওয়া হয়েছে তা কেবল উপরের একটা বাক্য দিয়েই উড়িয়ে দেওয়া সম্ভব। রিভ্যালুশান এর জন্য সময়ের প্রয়োজন কিন্তু যদি রিভ্যালুশান এ হয় তাহলে মানুষের বুদ্ধির যে অগ্রগতির দরকার ছিল বেঁচে থাকবার জন্য সেটা হতে হতে মানুষের অস্তিত্ব শেষ হয়ে যাওয়ার কথা, মানুষের পুর্ব পুরুষ যদি গাছেই থাকবে তো গাছের উপর পরলো কথা থেকে। একদিন এক মানুষ বক্তব্য করছেন এই ভাবে”পৃথিবী একটা বিশাল গরুর শিং এর উপর দাড়াঁনো, পাশে থেকে একজন জিজ্ঞেস করলেন তো গরুটা কার উপর দাঁড়ানো?”, বিজ্ঞান আমাদের অনেক কিছু দিয়েছে, কিন্ত ফিলসফির জ্ঞান ও আমাদের প্রয়োজন এই সব বুঝতে। অযথায় সব বিজ্ঞান গিলে খেলে বদ হজম হবে না কারন বিজ্ঞানী বললেই সব ঠিক নয়।
@মোস্তফা
দারুণ যুক্তি, এই যুক্তির পাল্লায় একটা প্রশ্ন ফেলে ওজন করতে চাই- মানুষের পুর্ব পুরুষ যদি আল্লায় সৃস্টি করে থাকেন তো আল্লাহকে সৃস্টি করলো কে?
কিভাবে বুঝবো যদি কিছু ভুল দেখিয়ে না দেন? বিজ্ঞানীদের ভুলগুলোর প্রতি একটু অঙ্গুলিনির্দেশ করুণ প্লীজ।
@Akash Malik,
আসলে এই ধরণের যুক্তি শুনলে হতাশ হই … এমন যুক্তি দেওয়া মানুষের সংখ্যা যেন কমে আসে, এইটাই আসলে কামনা করি।
এ জগতে আমি নতুন ।রায়হান এর লেখাগুলো খুব ভাল লাগলো।আমার একটা বিষয় জানা দরকার।সেটা হল, মানুষের পুরুষ প্রজাতির বুকে স্তন্য কেন?এসম্পর্কে সুনির্দিষ্ট কিছু জানাবেন দয়া করে।ধন্যবাদ।
@খালেদ,
আপনার প্রশ্নের উত্তর রায়হানের এ বিষয়ে গতলেখায় অবিশ্বাসী খুব সুন্দর করে ব্যাখ্যা করেছেন। এখানে দেখতে পারেন,
http://blog.mukto-mona.com/?p=2289
“* পুরুষের স্তনবৃন্ত: স্তন এবং স্তনবৃন্ত মূলতঃ দরকার মেয়েদের। পুরুষদের এটা কোন কাজে আসে না। অথচ সকল পুরুষদের দেহে বিবর্তনের সাক্ষ্য হিসবে রয়ে গেছে স্তনবৃন্তের চিহ্ন। ”
আমাদের দেহে এ জাতীয় আরো বেশ কিছু অপ্রয়োযনীয় অংগ রয়ে গেছে বিবর্তনের চিহ্ন স্বরুপ। মানবদেহে লেজের ছবির লিংক তো এ লেখাতেই আছে।
লেখাটা সিসিবিতে দিলে না?
আমার একটি বিষয় জানার ছিল। উদ্ভিদের বা গাছের শুরু কোন সময়ে এবং এদের বিবর্তনের প্রক্রিয়াটি কি? বন্যা আপার বইটি পড়া হয়নি। সেখানে কি এই প্রশ্নের জবাব আছে, তাহলে আমি সেখান হতে পড়ে নিব।
আমার মতে এই লেখাটি বেশ সাবলীল ও ধারাবাহিক হয়েছে আগের পর্বের তুলনায়। এর একটি কারণ হতে পারে লেখায় ফোকাস মূলত একটি ছিল। আগের পর্বে যদিও ফোকাস ছিল একটিই কিন্তু সেখানে অনেক বিষয় নিয়ে ব্যাখ্যা করতে হয়েছিল যা লেখার মূল ফোকাসকে কিছুটা দূরে সরিয়ে নিয়ে গিয়েছে বলে মনে হয়েছে। সে পর্বের প্রতিটি বিষয় নিয়ে আজকের মত লেখা হতে পারতো। এবং সব শেষে ওয়াজ ডারউইন রং নিয়ে আলোচনা হতে পারে। মূল থিমটিকে সামনে রেখে তুমি একটি ই-বুক করতে পারো। চিন্তা করে দেখতে পারো।
লেখার সময় অন্যদের যুক্তিগুলো খন্ডানোর চিন্তা মাথায় না রেখে বরং যেটা জানো সেটা পরিষ্কার করে পাঠকের কাছে পৌছানো যাচ্ছে কিনা সেটা মাথায় রখতে পারো। নিজের জানার মাঝে কোন ধরণের ঘাটতি আছে কিনা সেটা দেখতে পারো। আর মনে রাখতে পারো যে যারা লেখাটি পড়বে তাদের হয়তো বিবর্তন সম্পর্কে কোন ধারণাই নেই। অনেকটা শ্রেনী কক্ষে বা পাবলিক হলে লেকচার দেওয়ার মত। তাহলে মনে করি মেসেজটি আরো পরিষ্কার ভাবে পৌছবে পাঠকের কাছে।
@স্বাধীন ভাইয়া,
সিসিবিতে দিয়েছি।
উদ্ভিদের উৎপত্তি সম্পর্কে জটিল ধারণা পাবেন, কার্ল সাগানের কসমস সিরিজের দ্বিতীয় পর্বটা দেখলে। নেটে ভিডিওটি সহজ লভ্য, কসমস নামে বইও আছে।
যুক্তি খন্ডন করতে চাচ্ছি। তবে অন্যভাবে। লেখার সময় বলি, আপনার মনে হয়তো এখন এই প্রশ্ন আসবে। তারপর প্রশ্নের উত্তর দেই। সৃষ্টিতত্ত্বে বিশ্বাসীদের খোড়া যুক্তিগুলো না খন্ডালে মুশকিল।
ই- বুক করার ইচ্ছে আছে। কিশোর এবং সাধারণ পাঠকদের জন্য। দেখি কতদূর যেতে পারি।
ধন্যবাদ সময় নিয়ে মন্তব্য করার জন্য ভাইয়া।
আমিও একমত। বিবর্তনের মত জটিল বিষয় যেভাবে রায়হান সহজ ভাষায় বর্ণনা করে যাচ্ছেন তা সত্যই খুব উপভোগ্য। আশা করি তিনি চালিয়ে যাবেন।
ওয়াজ ডারউইন রং লেখাটিতেও আমি একটা প্রশ্ন করেছিলাম, রায়হান ও এই লেখার শেষে প্রশ্ন করেছেন কিন্তু সরাসরি জবাব মনে হয় দেননি। মানূষের পরবর্তী ধাপ কি? বিবর্তনের ধারায় তো পরিবর্তন হবারই কথা, নাকি বিবর্তন যে হবেই তেমন কোন কথা নেই? যা বুঝলাম বিবর্তন বলে যে উন্নতি যে হবেই তেমন কোন কথা নেই। তবে বিবর্তন যে হবেই তেমন কোন নিশ্চয়তাও কি নেই?
আর, প্রকৃতির সাথে খাপ খাওয়াতে বিবর্তন হয় বুঝলাম। তাহলে তুন্দ্রা অঞ্ছলের মানুষের শরীরে কি বড় বড় লোম গজাতে পারে? গতবার কেউ এটার উত্তর দিয়েছিলেন, ঠিক পরিষ্কার হয়নি। নাকি সে পরিবর্তনের জন্য তাদের সম্পূর্ণ উলংগ অবস্থায় খোলা আকাশের নীচে বহু পুরুষ টিকে থাকতে হবে?
বিবর্তনের ধারায় সব প্রাণীই যে সার্ভাইভ করতে পারছে তাতো নয়, বেশ কিছু বিলুপ্ত ও হয়ে যাচ্ছে। তাদের ক্ষেত্রে কি বিবর্তন ব্যার্থ হচ্ছে? নাকি এতা প্রাকৃতিক প্রক্রিয়া ব্যাহত করার ফল?
শেষে, লেজয়ালা মোসলাম বাচ্চাকে দিয়ে তার বাবা যেভাবে মন্দিরে মন্দিরে ঘুরে বাচ্চাকে হনুমান দেবতার অবতার বলে টাকা কামাচ্ছেন তা সত্যই চটকদার। আমার তো এখন মনে হচ্ছে আহা রে আমার যদি তেমন একটা সাইজমতন লেজ থাকত তাহলে আর অত কষ্ট করে চাকরি বাকরি করত কে!
@আদিল মাহমুদ,
ভাইয়া মুক্তমনায় আপনার বিচরণ সত্যিকার অর্থেই আমাকে মুগ্ধ করেছে … এখন ধীরে ধীরে প্রশ্নের জবাবে আসি। মুক্তমনায় জবাব দিতে একটু দেরি করি- এক্সপার্টরা দিয়ে দিলে আমি বেঁচে যাই, এই ধান্ধায়। আসলে আমার জানার পরিধি মাত্রাতিরিক্ত কম।
মানূষের পরবর্তী ধাপ কি?
এর জন্য আসুন আমরা ডায়নোসারদে কী হয়েছিল সেটা উদাহরণ হিসেবে আলোচনা করি। গল্প উপন্যাস ও সিনেমায় আমরা দেখি ডায়নোসাররা ছিল বিশাল আকৃতির। তবে সত্যিকারে এই বিশাল বিশাল ডায়নোসারদের সাথে পিচ্চি পিচ্চি প্রজাতির ডায়নাসোরও ছিল।
হঠাৎ একদিন পৃথিবীতে উল্কাপাত হলো। সম্পূর্ণ পৃথিবীর মাথা উঁচু করে ঘুরে বেড়ানো সকল ডায়নোসার মাটির সাথে মিশে গেলো। বেঁচে রইলো, একদম পিচ্চি প্রজাতির ডায়নোসররা। কীভাবে, হয়তো পাথরের আড়ালে থেকে। প্রকৃতির এই পরীক্ষায় কারা তাহলে টিকে গেল? পিচ্চিগুলো। এদের থেকেই পরবর্তীতে পাখির উদ্ভব হয়েছে। সুতরাং কে ফিটেস্ট আর কে ফিটেস্ট না এটা আগে থেকে বলা যাবে না, তখনই বলা যাবে যখন তাদের উপর একটা পরীক্ষা আসবে।
মানুষের সাথে এই ঘটনার যোগসূত্র কীভাবে টানা যায়। ধরুন, আজকে হঠাৎ করে প্রকৃতিতে অজানা এক ভয়ংকর ব্যাপার ঘটলো, যা আধুনিক মানুষের টিকে থাকার পথে বিরাট প্রতিবন্ধকতা। তখন হয়তো পরিস্থিতির সাথে খাপ খাওয়ানোর জন্য মানুষেরও বিবর্তন হবে।
এখন আপনার মনে একটা প্রশ্ন আসবে। সেটা হলো, প্রকৃতির সেই পরিবর্তন যদি এমন হয়- যেই মানুষরা উড়তে পারে তারাই টিকে থাকার সামর্থ্য লাভ করবে- তাহলে কি পরিবর্তনের সাথে সাথেই একদল উড়া শুরু করবে?
না। বিবর্তনের মজাই এখানে। এটা অচিন্তনীয় দীর্ঘসময়ের প্রক্রিয়া। আপনি আমি কেউই একজীবনে কী হয়েছে সেটা দেখে যেতে পারবো না। কিন্তু বিবর্তন হবে, হয়েছে। প্রমান দেখবে, লক্ষ বছর পর আমাদের পরবর্তী কোন পুরুষ যারা আকাশে বাসা বাঁধবে। নীচে নেমে তারা আমাদের ফসিল রেকর্ড পরীক্ষা করে দেখবে তাদের পূর্বপুরুষদের পাখা ছিলনা, তারা ভোদাইয়ের মতো মাটিতে বসবাস করতো। 😀
মনোযোগী পাঠক আপনি। এই প্রশ্নের উত্তর কিন্তু এতোদিনে পেয়ে যাবার কথা। প্রকৃতির পরিবর্তনে সবার সারভাইব করতে পারছেনা বলেই তো বিবর্তন হচ্ছে। সারভাইবাল অফ দ্য ফিটেস্ট। ফিটেস্টরা বাঁচবে বাকিরা ঝরে যাবে। যারা ঝরে যাচ্ছে তাদের ক্ষেত্রে বিবর্তন ব্যহত হবে কেন। বিবর্তন তো বলছেই- তুমি টিকতে পারছোনা, সো গেট লস্ট!
আশা করি ভুল কিছু বলি নাই। বললে তো ধরায় দেবার মানুষ আছেই। ধন্যবাদ।
@রায়হান আবীর,
অনেক ধন্যবাদ আপনাকে সময় নিয়ে সুন্দর ব্যাখ্যা দেওয়ার জন্য।
মানুষের ভবিষ্যত বিবর্তনের ব্যাপারে যা বললেন তাতে মনে হচ্ছে যে বিবর্তনের হার নির্ভর করে অনেকটা পরিবর্তিত অবস্থার উপর, তাই না? মানে বড় ধরনের কোন প্রাকৃতিক বিপর্যয় বা পরিবর্তন হঠাত করে হলে মনে হয় বিবর্তনের হার বেড়ে যাবে। ২৫ মিলিয়ন বছর (?) আগের সেই উল্কাপাত নাহলে বড় ডাইনোসররা আরো কতদিন বিচরন করত কে বলতে পারে? পাখীর আবির্ভাবই বা কবে হত কে জানে।
তবে তেলাপোকার ব্যাপারটা ঠিক বুঝি না। তারা কিভাবে এটোমিক ওয়ার সার্ভাইভ করতে পারে। এত নিম্ন শ্রেনীর প্রানীর কেন কোন বিবর্তন হল না তার নিশ্চয়ই যুক্তিসংগত ব্যাখ্যা আছে।
আরো বহু প্রশ্ন মনে আসছে, কিন্তু মনে হয় বেকুবের মত শোনাবে। আরো কিছু পড়াশুনা দরকার তার আগে।
মনে হচ্ছে এখন বন্যা/অভিজিতদের বিবর্তন সম্বন্ধীয় লেখাগুলি গিলে খেতে পারি, এতদিন কেন যেন সাহসে কূলায়নি। আপনাকে আবারো অশেষ ধন্যবাদ এই অতি প্রয়োযনীয় বিষয়ে আমার উতসাহ এনে দেওয়ার জন্য।
@আদিল মাহমুদ,
আপনি আমাকে সাতদিন সময় দেন। আমি মানুষের ভবিষ্যত নিয়ে পূর্ণ দৈর্ঘ্য লেখা নামাচ্ছি। দেখা যাচ্ছে- এই বিষয়ে পাঠকের ভালো কৌতুহল আছে।
@আদিল মাহমুদ,
রায়হান আগেই কিছু উত্তর দিয়ে দিয়েছেন, আমিও কিছুটা বলি। বিবর্তন সম্বন্ধে প্রশ্ন করার আগে একটা জিনিস মাথায় রাখতে হবে যে, বিবর্তন কোন ‘লক্ষ্য’ বা ‘উদ্দেশ্য’ নিয়ে কাজ করে না। কাজ করে অনেকটা ‘ব্লাইন্ড ওয়াচমেকারের’ মত। কার কিরকম উন্নতি হবে, কার ভবিষ্যতে কোন কোন বৈশিষ্ট্য সংযোজিত হবে – এ নিয়ে বিবর্তনের কোন মাথা ব্যাথা নেই। সাধারণভাবে তার মাথায় থাকে কেবল টিকে থাকার সংগ্রাম। টিকে থাকতে গিয়ে যে বৈশিষ্ট্য গুলো তার অভিযোজনের জন্য সহায়ক, সেগুলোকেই সে রক্ষা করে চলে। চলতে গিয়ে তার যাত্রাপথে অনেক অপ্রয়োজনীয় উপকরণও সংযোজিত করে ফেলে (যেগুলো আগে হয়ত প্রকরণে সুপ্ত অবস্থায় ছিলো ), অস্তিত্ব রক্ষার প্রয়োজনেই। একটি মজার উদাহরণ হচ্ছে ‘সিকেল সেল এনিমিয়া’র ব্যাপারটি। ব্যাপারটি বন্যা তার বইয়ে উল্লেখ করেছে। আমি সেটাই আবার উগরে দেই। ‘সিকেল সেল এনিমিয়া’ আসলে একটি রোগ। একধরণের ত্রুটিপূর্ণ হিমগ্লোবিনের কারণে এই রোগের উৎপত্তি ঘটে এবং তারপর প্রজন্মের পর প্রজন্ম ধরে মানুষের মধ্যে ছড়িয়ে পড়ে। এই রোগের ফলে হিমোগ্লোবিনগুলো রক্তের ভিতরের লোহিতকনিকাকে বিকৃত করে ফেলে। এই বিকৃত আকারের লোহিতকনিকাগুলো ছোট ছোট রক্তনালীগুলোর মুখ আটকে দেয়। আর আমাদের শরীর তখন প্রতিক্রিয়া হিসেবে অত্যন্ত দ্রুত গতিতে এই অস্বাভাবিক কোষগুলোকে ধ্বংস করে দিতে শুরু করে এবং তার ফলশ্রুতিতেই রোগীর শরীরে রক্তাল্পতা দেখা দেয়। সিকেল সেল এনেমিয়ায় আক্রান্ত কোষগুলো মাত্র ৩০ দিন বেঁচে থাকে, যেখানে রক্তের সুস্হ লোহিতকনিকাগুলো বেঁচে থাকে ১২০ দিন। আ্যনেমিয়ার কারণে এই রোগে আক্রান্ত শিশুরা খুব সহজেই বিভিন্ন ধরণের সংক্রামক রোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুবরণ করে।
স্বাভাবিকভাবেই মনে হবে প্রাকৃতিক নির্বাচনের প্রভাবে এই ধরনের ‘ক্ষতিকর’ বৈশিষ্ট্য টিকে থাকার কথা নয়। কারণ এনেমিয়ায় আক্রান্ত কোষগুলো মাত্র ৩০ দিন বেঁচে থাকতে পারে, সেগুলো কেন সুস্থ কোষের সাথে পাল্লা দিয়ে টিকে থাকবে? এখানেই বিবর্তন বাবাজী এক মজার রহস্যের দুয়ার উন্মোচন করল বিজ্ঞানীদের সামনে। বিজ্ঞানীরা দেখলেন, সিকেল সেল এনিমিয়ার রোগীরা সুস্থ কোষের চেয়ে একটু বেশি ম্যালেরিয়া প্রতিরোধে সক্ষম। আফ্রিকার যে অঞ্চলগুলোতে ম্যালেরিয়ার প্রকোপ বেশি, সেগুলো যায়গাতেই সিকেল সেল এনিমিয়ার রোগি অনেক বেশি পাওয়া যাচ্ছে। বিজ্ঞানীরা বুঝলেন, কোন একসময় কোন এক মিউটেশনের ফলশ্রুতিতে হয়তো আফ্রিকাবাসীদের মধ্যে এই বিকৃত রোগের উৎসের জিনটা ছড়িয়ে পড়েছিলো। প্রাকৃতিক নির্বাচনের নিয়ম মেনে দেখা গেলো, যে অঞ্চলে ম্যালেরিয়ার প্রকোপ বেশী সেখানে সিকেল সেল এনেমিয়ার একটা জিন ধারণকারী লোকের টিকে থাকার ক্ষমতাও বেড়ে যাচ্ছে, কারণ হিমোগ্লোবিনের এই রোগ বহনকারী জিনটা ম্যালেরিয়া রোগ প্রতিরোধে বেশী কার্যকরী ভুমিকা রাখতে পারছে। অন্যদিকে যাদের মধ্যে দুটিই সুস্থ জিন রয়েছে তারা ম্যালেরিয়া রোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যাচ্ছে অনেক বেশী হারে। তাহলে এখন প্রাকৃতিক নির্বাচনের নিয়মে এখানে কি ঘটার কথা? হ্যা, এই ত্রুটিপূর্ণ জিনবহনকারী মানুষগুলোই শেষ পর্যন্ত ম্যালেরিয়া রোগের চোখ রাঙানীকে উপেক্ষা করে বেশীদিন টিকে থাকতে পারছে এবং বংশবৃদ্ধি করতে সক্ষম হচ্ছে। তার ফলে যা হবার তাই হল, টিকে থাকার দায়েই শত শত প্রজন্ম পরে দেখা গেলো আফ্রিকাবাসীদের একটা বিশাল আংশের মধ্যেই ছড়িয়ে পড়েছে বিকৃত সিকেল সেল এনেমিয়ার জিন। কাজেই দেখুন – বিবর্তনের মাথায় কিন্তু সিকেল সেল এনিমিয়াকে রক্ষা করার কোন পরিকল্পনা আগে থেকে ছিলো না। এটা স্রেফ টিকে গেছে আফ্রিকায় ম্যালেরিয়ার উপদ্রপের কারণেই। অনেকেই মনে করেন ক্যান্সারের ব্যাপারটাও অনেকটা তাই।
মানুষের আধুনিক চিকিৎসাবিজ্ঞানের উন্নতির ব্যাপারগুলোও মানব বিবর্তনে প্রভাব ফেলছে ঢের। যেমন, কিছু জেনেটিক কারণে অনেক শিশু ‘ডায়াবেটিস’ রোগ নিয় জন্মায়। আদিম যুগে এই ধরণের মিউটেশন বিলুপ্ত হয়ে যেত, কারণ – তারা বংশবৃদ্ধি করে সন্তান উৎপাদনের আগেই নিশ্চিহ্ন হয়ে যেত। কিন্তু আজ চিকিৎসাবিজ্ঞানের উন্নতির ফলে আমরা ইনসুলিন দিয়ে শিশু টিকে বাঁচিয়ে রাখতে পারি। আধুনিক চিকিৎসার কল্যাণে এ ধরণের শিশুরা প্রকৃতির নিষ্ঠুরতা উপেক্ষা করে টিকে থাকতে পারে সন্তান ধারণ করতে পারে পরিণত বয়সে। এর প্রভাব কি বিবর্তনে পড়ছে না? কাজেই মানব বিবর্তনের ভবিষ্যত নিয়ে ভাবলে অনেক কিছু গোনায় ধরতে হবে। এত সহজভাবে কখনোই বলে দেয়া যাবে না কি হবে ভবিষ্যতে। তারপরও বিজ্ঞানীরা ভেবেছেন কি হতে পারে মানবজাতির ভবিষ্যত – বিবর্তনের পটভূমিকায়। এরকম একটি লেখা আছে আমাদের ডারুইন দিবস পেইজে –
ফিউচার অব হিউম্যান ইভলুশন
পড়ে দেখতে পারেন।
রায়হান যেভাবে প্রকৃতির সবচাইতে জটিল বিষয় এত সহজভাবে আমাদেরকে চোখে আংগুল দিয়ে যে শিক্ষা-মুলক জ্ঞান বিতরন করছেন তা যেন লক্ষ লক্ষ জীবনের চোখে ও চিন্তায় জাগানিয়া ঠেলা বা ধাক্কা লেগে বিবর্তিত হয়ে সামনে এগোয় এ আশা করছি।
এর আগের পর্বের ” ওয়াজ ডারউইন রং ” লেখাটিও আমাদের জীবনকে জানার জন্য এক মাইলফলক লেখা।
রায়হান কে অনেক ধন্যবাদ এবং আমাদেরকে এরকম আরো নতুন নতুন জ্ঞানমুলক লেখা দিয়ে মনের ও চিন্তার বদ্ধদুয়ার খুলে দিয়ে নতুন আলোতে নিয়ে আসবেন এ কামনা করছি।
ভালো ও সুস্হ থাকুন।
মামুন।
১০।০৯।২০০৯
@মামুন,
আপনাকে ধন্যবাদ।
আমাকে ক্রেডিট দেবার কিছু নেই। সম্পূর্ণ ক্রেডিট আসলে মুক্তমনা, আরও ঠিকভাবে বলবে অভিজিৎ দার লেখা। আবার বিবর্তনের সূচনা জ্ঞান সবই উনার ব্লগ পড়ে। বেশ কিছু জিনিস তখন অনুধাবন করতে অসুবিধা হচ্ছিল, মনে প্রশ্ন আসছিল, আমি নিজের মতো মিলিয়ে বোঝার চেষ্টা করেছি। এখন চাচ্ছি সেভাবেই বক্তব্যগুলো উপস্থাপন করতে। আপনারা হয়তো খেয়াল করে থাকবেন, আমার বিবর্তন সম্পর্কিত লেখাগুলোর বেশ ভালো একটা অংশ অভিজিৎ রায় এবং বন্যা আপার লেখাতেই পাওয়া যাবে। আমার মোটিভ একটাই। সব একত্র করে কিভাবে ধাপে ধাপে বিবর্তনের সাধারণ জ্ঞানটা পাওয়া যায়। সেটা করতে গিয়েই ধর্ম সংক্রান্ত সকল আলোচনা টেকনিকালি বর্ণনা করতে হচ্ছে।
@রায়হান আবীর,
লেখার উপকরণ যেখান থেকেই নিন না কেন, পরিবেশনটা হচ্ছে আপনার মত করেই। এটাই আসলে এ লেখার অনন্য বৈশিষ্ট্য।