(১)
প্রাণের সংজ্ঞার মূলেই প্রজনন।
জীবনের কোন পরম উদ্দেশ্য বৈজ্ঞানিক দৃষ্টিকোন থেকে নেই। কিন্ত জীবের আছে। সেটা হচ্ছে সন্তানের প্রতিপালনে সৃষ্টিকে বা নিজের স্পেসিসকে টিকিয়ে রাখা।

রুক্ষ নিরস বৈজ্ঞানিক তত্ত্ব থাক। বাস্তব হচ্ছে নরনারীর মেটিং সিলেকশন বা এই সঙ্গী বা সঙ্গিনী নির্বাচন নিয়ে অসংখ্য গবেষনা হয়েছে। বৈজ্ঞানিক গবেষনার খুব উর্বর ক্ষেত্র এটি। আমি এই ফিল্ডের এক্সপার্ট নই-কিছু রিভিঊ পেপার পড়েছি এই মাত্র।

এই প্রবন্ধ লেখার কাজটা বেশ জটিল। কারন বাঙালী বা ভারতীয়দের মধ্যে মেটিং সিলেকশন নিয়ে উল্লেখযোগ্য কাজ আগে ত কিছুই ছিল না । বর্তমানে কিছু চোখে আসে।

তবে বৈজ্ঞানিক কাজ দিয়ে বিরক্ত করবো না। আমার মূল বক্তব্য সময় এবং সমাজ বদলাচ্ছে। ফলে সঙ্গী এবং সঙ্গীনী নির্বাচনের কাজটা কিন্ত আরো কঠিন হচ্ছে। কেন কঠিন হচ্ছে এবং কিভাবে এগোলে “সাফল্য” আসবে-এটা বুঝতেও সঙ্গী সঙ্গিনী নির্বাচনের বিজ্ঞানটা জানা থাকলে সুবিধাই হবে।

সমস্যা হচ্ছে আমাদের সমাজে একজন ছেলে গাঁতিয়ে পড়াশোনা করে ইঞ্জিনিয়ার বা পেশাদার কিছু একটা হল। এরপরে বাবা মা এরেঞ্জড মেরেজ দিয়ে দিচ্ছে। ছেলেটিকে স্ত্রী নির্বাচনের জন্য প্রায় খাটতেই হল না। সে পনেরো থেকে কুড়িটা বছর ধরে গাঁতিয়ে কেরিয়ার তৈরী করছে কিন্ত মেট সিলেকশনে তার ইনভেস্টমেন্ট প্রায় শুন্য। বৌ খোঁজার জন্য বাবা-মা একটু খেটে পেপারে এড দিচ্ছে-তারাই খাটছে- ছেলেটি গলায় ঝোলাচ্ছে।

এটা খুব অবাস্তব অবৈজ্ঞানিক একটা সিস্টেম যা বেশীদিন চলার কথা না-এবং চলছেও না। আমার অধিকাংশ আই আই টির ব্যাচমেটরা আজ উচ্চপদে সমাজে উচ্চাসনে প্রতিষ্ঠিত। এদের মধ্যে বৈবাহিক অসন্তোষে অনেকের জীবনই আজ নরক। আমি সেইসব কাদা না ঘেঁটে এটাই বলতে চাইছি-জীবনে ভাল কলেজ, ইউনিভার্সিটি বা চাকরি যতটা গুরুত্বপূর্ণ -তার থেকেও অনেক বেশী গুরুত্বপূর্ন সঠিক সঙ্গী বা সঙ্গিনী নির্বাচন। আমার এইসব বন্ধুরা সেটা করে নি। ভেবেছে পেপারে বিজ্ঞাপন দিলেই আই আই টির ছাত্রদের কি আর পাত্রীর অভাব হবে? এই ধরনের সরলীকৃত ভুল ধারনার খেসারত দিচ্ছে আমার অনেক বন্ধু।

সঙ্গী বা সঙ্গীনী নির্বাচনে ভুল মানে ভাল কেরিয়ার সম্পূর্ন মুল্যহীন-ফালতু। এটা না বুঝলে ভবিষ্যতে আরো দুঃখ আছে কপালে।

(২)

পার্টনার সিলেকশনের বেসিক সায়েন্সটা এবার একটু শেখা যাক। আমি কিছু কিছু টার্ম ব্যবহার করব-যা একাডেমিক্সে স্বীকৃত।যারা আরো ডিটেলেস জানতে চান-তারা মিশিগান বিশ্ববিদ্যালয়ের ডেভিড গিয়ারীর এই রিভিউ পেপারটা পড়ে নিন -মানব সঙ্গী নির্বাচনের বিবর্তন (http://web.missouri.edu/~gearyd/MatechoicePDF.pdf)। এতে ভাল সার সংক্ষেপ পাবেন।

পেরেন্টাল ইনভেস্টমেন্ট বা ছেলেমেয়ে বড় করার বিনিয়োগ ঃ মেট সিলেকশনের মূল অধিকাংশ সিদ্ধান্তই হয় ছেলে মেয়েকে বড় করতে বাবা বা মা কি করছে। স্তন্যপায়ী প্রাণীদের জগতে মা যেহেতু বহুদিন শিশুকে গর্ভে রাখে, এক্ষেত্রে মেয়েদের ভূমিকা এবং ইনভেস্টমেন্ট অনেক বেশী। এছারাও বাকি ইনভেস্টমেন্ট হচ্ছ সন্তান মানুষ করতে তাদের খাদ্য, শিক্ষা এবং নিরাপত্তা দেওয়া। যেটা মানব জগতে কৃষিভিত্তিক সমাজে পিতার দ্বায়িত্ব। তবে আধুনিক শিল্পোন্নত সমাজে না।

সন্তানের ক্ষেত্রে মেয়েদের যেহেতু বিনিয়োগ বেশী-সেহেতু অধিকাংশ স্তন্যপায়ীদের মতন মানব সমাজেও মেয়েরাই নির্বাচন করে তাদের পুরুষ সঙ্গী। মূলত তারাই সিলেক্তটর -তবে এর দুটো ব্যাতিক্রম হয়-

(১) অপারেশনাল সেক্স রেশিও ( OSR) -অর্থাৎ মেটিং এর জন্য পাওয়া যাচ্ছে এমন যৌনক্ষম নারী ও পুরুষের সংখ্যা। অধিকাংশ সমাজেই এটি মেয়েদের পক্ষেই থাকে। অর্থাৎ মেয়ে কম থাকে। কারন মেয়েরা গর্ভধারনক্ষম থাকে চল্লিশ পর্যন্ত। সেখানে পুরুষের বীর্য্য সক্ষম প্রায় সত্তর পর্যন্ত। কিন্ত কিছু কিছু ক্ষেত্রে যুদ্ধ বা রোগের জন্য এর ব্যতিক্রম হয়েছে।

(২) আরেকটা হচ্ছে প্র্যাক্টিক্যাল ওপেরাশনাল সেক্স রেশিও। যেমন ধরুন পুরুষের সংখ্যা অনেক বেশী থাকলেও, কৃষিভিত্তিক সমাজে খুব কম সংখ্যক পুরুষের পর্যাপ্ত জমি থাকে। অর্থাৎ যারা এই পেরেন্টাল ইনভেস্টমেন্ট ঠিক ঠাক করার ক্ষমতা রাখে। সেই ক্ষেত্রে সমাজে এই উচ্চশ্রেণীর পুরুষরাই সিলেক্টর ।

আমাদের বাংলা এবং ভারতের মেটিং সিলেকশন, পণপ্রথা আগে যা ছিল-তা বুঝতে (২) নাম্বার পয়েন্টটা সাহায্য করবে।

কিন্ত আমাদের দেশের সমাজ এখন কৃষিভিত্তিক থেকে শিল্প সমাজের পথে। যখন একটা সমাজ কৃষিভিত্তিক থেকে শিল্প ভিত্তিক হচ্ছে-যেখানে জমি না, পুরুষের চাকরিটাই মুখ্য — তখন মেটিং সিলেকশনের ভিত্তি কি?

এক্ষেত্রে প্রাক্টিক্যাল রেশিও মেয়েদের ফেবারে চলে যাবে। অর্থাৎ তারাই হবে নির্বাচক। যেহেতু পেরেন্টাল ইনভেস্টমেন্ট করতে পারে এমন পুরুষের সংখ্যা অনেক বাড়ছে।

সুতরাং এই আধুনিক সমাজে কোন পুরুষ, সঙ্গীনী নির্বাচনে সফল হবে?

কালচারালি সাকসেস্ফুল মেল বা সাংস্কৃতিক দিক দিয়ে সফল পুরুষ। যারা এই ধণতান্ত্রিক সমাজে মই এর উচ্চধাপে উঠছেন। অর্থাৎ যারা উচ্চপদে ভাল চাকরি করছেন বা বানিজ্যিক দিয়ে সফল বা রাজনৈতিক ভাবে সফল, মেয়েদের কাছে তারাই পাত্তা পাবেন। তবে অধিকাংশ ক্ষেত্রে এটা সত্য হলেও কিছু ব্যতিক্রম থাকবে-সেটাও লিখছি।

শিল্পভিত্তিক সমাজেও দুটো ভাগ আছে। যে রাষ্ট্রগুলি প্রচুর সামাজিক নিরাপত্তা দেয়, যেমন ইউরোপের রাষ্ট্রগুলির ক্ষেত্রে -অর্থাৎ রাষ্ট্রই পেরেন্টাল ইনভেস্টমেন্ট করে অনেকটা— সেক্ষেত্রে পুরুষ সঙ্গী নির্বাচনের ক্ষেত্রে মেয়েরা এই কালচারালি সাকসেস্ফুল পুরুষ বলতে ঠিক কি নির্বাচন করবে?

ইনফ্যাক্ট এই একটি ক্ষেত্রেই প্রেম বা রোমান্সের ভূমিকা থাকছে। মেটিং সিলেকশনের ক্ষেত্রে রোম্যান্সের ভূমিকা নিয়ে যারা কাজ করেছেন, তাদের অনেকেই ( লি-২০০২) দেখিয়েছেন পার্টনার সিলেকশনের ক্ষেত্রে রোম্যান্স একটি লাক্সারী আইটেম-তবে যে সমাজে রাষ্ট্র সন্তানের অনেকটা দ্বায়িত্ব নিচ্ছে-সেই ক্ষেত্রে পার্টনার সিলেকশনের ক্ষেত্রে রোম্যান্টিক পুরুষরা কল্কে পায়। যেমন ইউরোপিয়ান সমাজে।

কিন্ত আমেরিকার ক্ষেত্রে এটা সম্ভব না-ভারতের ক্ষেত্রেত একদম ই না। কারন এসব দেশে ছেলে মেয়ে পড়ানোর খরচ বা চিকিৎসার খরচ খুব বেশী। ফলে এইসব দেশে রোম্যান্টিক পুরুষের থেকে যারা ফাইনান্সিয়াল নিরাপত্তা বেশী দিতে পারবে, তাদেরই নির্বাচন করবে মেয়েরা। সুতরাং ভারত বা বাংলাদেশের সমাজে রোম্যান্টিক পুরুষ প্রেম হয়ত পাবে-কিন্ত স্ত্রী পাবে না। যদ্দিন না এই দেশগুলি শিশুনিরাপত্তে দিতে না পারছে।

দেখতে কেমন পুরুষ মেয়েরা নির্বাচন করে-কেন করে? এটি খুব সুপ্রতিষ্ঠিত -যহেতু এই নিয়ে প্রচুর গবেষনা হয়েছে।

“Women prefer men who are somewhat taller than average, and have an athletic (but not too muscular) and symmetric body shape, including a 0.9 waist-to-hip ratio (WHR), and shoulders that are somewhat wider than their hips (Barber, 1995; Beck, Ward-Hull, & McClear, 1976; Cunningham, Barbee, & Pike, 1990; Gangestad et al., 1994; Hatfield & Sprecher, 1995; Oda, 2001; Pierce, 1996; Singh, 1995a). The facial features that women rate as attractive include somewhat larger than average eyes, a large smile area, and prominent cheek bones and chin (Barber, 1995; Cunningham et al., 1990; Scheib, Gangestad, & Thornhill, 1999). These physical traits appear to be good indicators of genetic variability (which is important for disease resistance), a lack of illness during development, and current physical health (Barber, 1995; Thornhill & Gangestad, 1993). For instance, the development of prominent cheek bones and a masculine chin is related to androgen levels and androgen/estrogen ratios during puberty (Fink & PentonVoak, 2002; Tanner, 1990). Chronic illness during this time can suppress androgen secretion, which would result in the development of less prominent cheekbones, a more feminine-looking chin, and, as a result, lower rated physical attractiveness (Thornhill & Gangestad, 1993).”

নতুন কিছু গবেষনাতে বলছে না। সেই টল ডার্ক হ্যান্ডসামের গল্প। চওড়া কাঁধ, চাবুকে চিবুক, লম্বা চোখ। কেননা এগুলো শক্তিশালী জিনের লক্ষণ। শক্তিশালী জিন মানে যে জিন রোগ প্রতিরোধে সক্ষম।

সুতরাং মেয়েরা যে সুন্দর পুরুষ খোঁজে সেটা এমনি এমনি না। সুন্দর পুরুষ সুস্বাস্থ্যের লক্ষন।

কিন্ত সব কিছু ত একসাথে পাওয়া যায় না-সুন্দর পুরুষ-আবার প্রচুর কামাচ্ছে বা সমাজ উচ্চপ্রতিষ্ঠিত। সেক্ষেত্রে মেয়েরা কি করে?

অধিকাংশ ক্ষেত্রেই মেয়েরা উচ্চপ্রতিষ্ঠিত পাত্রই বেচে নেবে সুন্দর দেখতে গরীব পাত্রর থেকে। একাধিক গবেষনা আছে এই নিয়ে

তবে ব্যতিক্রম আছে

(১) ইউরোপিয়ান ওয়েল ফেয়ার স্টেটে যেখানে রাষ্ট্র পেরেন্টাল ইনভেস্টমেন্ট করে
(২) যেক্ষেত্রে মেয়েটি ধনী পরিবারের বা মেয়েটি নিজেই উচ্চপ্রতিষ্ঠিত।

আরো একটা গুরুত্বপূর্ন ব্যাপার জেনে নেওয়া ভাল। বিয়ের সঠিক সময়। এটাও কঠিন প্রশ্ন । হাঙ্গেরীতে হওয়া একটা সামাজিক গবেষনাতে দেখা যাচ্ছে যেসব মেয়েরা উচ্চশিক্ষা নিয়েছে, এবং উচ্চশিক্ষিত ছেলেদের বিয়ে করেছে-এতে অবশ্য একটু বিয়ে করতে লেট হয়েছে-তাদের মধ্যে ডিভোর্স কম এবং তারা বিবাহিত জীবনে অনেক বেশী সফল। এটা আমেরিকাতেও প্রমানিত। একই ফান্ডা “স্ট্রেইট” ভারতে লাগাতে গেলে, উলটো বিপদের সম্ভবনা আছে। সুতরাং বুঝেসুঝে । মোটামুটি যেটা সত্য -সেটা হচ্ছে- বৈবাহিক জীবনে সফল হতে গেলে ছেলে মেয়ে দুজনেরই উচ্চশিক্ষিত হওয়া আবশ্যক। এটাই শিল্পোন্নত সমাজের বাস্তব। কিন্ত নারী বা পুরুষ যদি উচ্চশিক্ষা শেষ করে ধরুন ২৫ বা ২৭ বছর বয়সে বাজারে নামে-তখন ভাল মালত উঠে গেছে!! সুতরাং দুটোর মধ্যে কম্প্রোমাইজ দরকার। একটা অপশন পার্টনার সিলেকশন করে বহুদিন এনগেজড থেকে উচ্চশিক্ষার শেষে বিয়ে করা। যাতে শিক্ষা শেষে পাত্র পাত্রীর জন্য ভিক্ষা করতে না হয় !! আরেকটা অপশন বিয়ে করে উচ্চশিক্ষা চালানো। কোন অবস্থাতেই মেয়েদের উচ্চশিক্ষা থেকে বঞ্চিত করা উচিত না। উচ্চশিক্ষিত মা, একজন সন্তানের জন্য বেস্ট পেরেন্টাল ইনভেস্টমেন্ট।

(৩)
এবার বিজ্ঞানকে ব্যাকগ্রাউন্ডে রেখে কিছু বাস্তবিক কথা লিখি।

মোদ্দা কথা আগামী দিনে বাঙালী মধ্যবিত্ত এবং উচ্চমধ্যবিত্ত সমাজে মেয়েরাই ছেলেদের সিলেক্ট করবে। উল্টোটা হবে না-কারন প্রাক্টিক্যাল ওপারেশনাল সেক্স রেশিও এখন মেয়েদের ফেবারে। যেসব ছেলে ওইসব এরেঞ্জড মেরেজের আশাতে বসে থাকবে, তাদের কপালে ভাল কিছু জোটার চান্স কম। সুতরাং একজন ছেলে জয়েন্ট এন্ট্রান্সের জন্য বা ভাল ইঞ্জিনিয়ারিং ডিসিপ্লিন বা ভাল কোম্পানীতে চাকরির জন্য যেভাবে কষ্ট এবং পরিশ্রম করে, লাইফ পার্টনার তোলার জন্য সেই পরিশ্রম না করলে-তার সব কেরিয়ারই জলে যাবে। ভাল কেরিয়ারের জন্য, ভাল পার্টনার আবশ্যক।
মুশকিল হচ্ছে পরীক্ষার জন্য ত কোচিং সেন্টার আছে- পাত্রী তোলার শিক্ষাটা কে দেবে?

এটা আমাদের সমাজে বিরাট সমস্যা। আমি কিছু টিপস দিতে পারি মাত্র।

প্রথমত স্টার্ট আর্লি। উচ্চমাধ্যমিক বা কলেজ থেকেই শুরু করা উচিত। আমার বন্ধুদের মধ্যে যাদের বাল্যপ্রেম, তারা কেরিয়ারেও সফল। এর একটা বড় কারন ইমোশনাল স্টেবিলিটি। তবে প্রেমে পড়েই উচ্চশিক্ষা না সেরে বিয়ে করার জন্য লাফালে বিপদ বেশী। উচ্চশিক্ষার সাথে কম্প্রোমাইজ কখনোই না।

দ্বিতীয়ত স্যোশালাইজেশন স্কিল খুব জরুরী। এটার জন্য স্কুল কলেজের কালচারাল সব ফেস্টে অংশ নিতে হবে।
নাটকে অংশগ্রহণ করতে হবে। আবৃত্তি, সঙ্গীত, অঙ্কন এগুলো অবহেলা করে পরীক্ষার জন্য পড়লে কিছু হবে না। নিজেকে প্রকাশ করার সব কলা শিখতে হবে-এ ব্যপারে নাটক খুব সাহায্য করে।

তৃতীয়ত খেলাধুলাতে অংশ নিয়ে শরীর বানাতে হবে। মেয়েরা কি ধরনের পুরুষ শরীর কেন পছন্দ করে-তা আগেই লিখেছি। পেটে ভুঁড়ি থাকবে, আর মেয়েরা আকৃষ্ট হবে-এমন ভাবা মূর্খামি।

চতুর্থত ভাল সাহিত্য পড়া খুব জরুরী। সাহিত্য না পড়লে একজন মেয়ের মনের গঠন বুঝবে না-তার সমস্যা গুলো বুঝবে না। এটা শুধু ইম্প্রেস করার ব্যপার না। একজনকে গভীরে না বুঝতে পারলে-সেই বা তোমাকে পাত্তা দেবে কেন?

পঞ্চমত -কিভাবে এপ্রোচ করতে হয়। ধর একটা মেয়েকে ভাল লেগে গেল। তাকে কি ডিরেক্ট গিয়ে বলবে?
একদমই না। তাতে ১০০% ব্যর্থ হবে। মনে রাখবে কেউ ওই ভাবে সিদ্ধান্ত নেয় না। প্রথমেই বন্ধু হয়ে মিশতে হবে।
এরপরে আস্তে আস্তে তাকে বুঝতে হবে। এখানেই সাহিত্য এবং বাচিক ভঙ্গী খুব কাজের।

ষষ্টত রান্না, ঘর সংসারের কাজ। এগুলো মেয়েলি কাজ বলেই চলে আমাদের সমাজে। মেয়েরা যখন নির্বাচনে ভূমিকায়, তখন তারা অবশ্যই জানতে চাইবে ছেলেটি রান্না করে কি না। রান্না করা ভাল আর্ট। এগুলো ছেলেদের ও শেখা উচিত।

এবং শেষে সাহস ও অধ্যাবসায়। মেয়েরা “না” বললেও হাল ছাড়লে চলবে না। ব্যারাক ওবামাকেও মিশেল ওবামা প্রথমে না বলছিল। ফ্রেডরিক রুজভেল্টের স্ত্রীও তাই। তবে দেখতে হবে যেন মেয়েটি দ্বিধায় আছে। লেগে থাকার নামে বিরক্ত করাটাও উচিত না। তাতে হিতে বিপরীত হবে।

আবার অনেক ক্ষেত্রেই হতে পারে মেয়েটির হয়ত একটি বয়ফ্রেন্ড আছে । সেক্ষেত্রে কি এপ্রোচ করা উচিত? অবশ্যই। কারন হতেই পারে, অপশন নেই বলে মেয়েটি ওই ছেলেটির সাথে ঘোরে। হয়ত সে তাকে চায় না। বিবর্তনের নিয়মেই নারী চায় পুরুষ তার জন্য প্রতিদ্বন্দিতাতে নামুক। তুমি জয়েন্টের টপ র‍্যাঙ্কের জন্য কম্পিট করবে-আর একজন ভাল মেয়ের জন্য প্রতিযোগিতা থাকবে না? অবশ্যই থাকবে। সেই জন্যেই ১-৪টে পয়েন্ট গুরুত্বপূর্ন।

দিন বদলাচ্ছে। যেসব পুরুষ এই বদলানো দিনের সাথে নিজেকে বদলাতে পারবে, তারাই সফল হবে জীবনসঙ্গীনীর ক্ষেত্রে।

আমি যা লিখলাম, তা খুব সরলীকরন। বেদবাক্য একদম না। বুঝেসুঝে।