(১) আধুনিক বিশ্বে প্রতিটা মানুষই জন্মের সাথে সাথে কিছু লেবেল নিয়ে আসে, আমিও জন্মের সাথে সাথে বিনামূল্যে কতগুলো লেবেল পেয়ে গিয়েছিলাম- বাঙালি, বাঙলাদেশি, আস্তিক, হিন্দু, ব্রাহ্মণ, ইত্যাদি। বেশির ভাগ মানুষই জন্মসূত্রে পাওয়া লেবেলগুলো থেকে মুক্ত হতে পারে না, বিনা প্রশ্নে এগুলোকে মেনে বড় হতে থাকে। তবে কিছু মানুষের সন্দেহপ্রবণতা জন্ম দিতে থাকে অসংখ্য প্রশ্নের, ফলশ্রুতিতে এক বা একাধিক লেবেলকে তারা ছিন্ন করতে বাধ্য হয়।
একটা শিশুর কোন ধর্ম থাকতে পারে না, কারণ একটা শিশুর পক্ষে ধর্ম কি তা উপলব্দ্ধি করা সম্ভব নয়। কিন্তু শিশুরাও ধর্ম পালন করে, কারণ তাদেরকে ধর্ম পালন করতে বাধ্য করা হয়।আমি কোন মুসলিম শিশুকে দেখিনি খুশিমনে, স্বইচ্ছায় নামাজ পড়তে; বরং ধর্মীয় আচারাদি পালনে শিশুদের মধ্যে তীব্র বিরক্তিবোধই বেশি দেখা যায়। তবে শৈশবে শিশুদের মধ্যে যে শিক্ষার সঞ্জার করা হয়, তা থেকে পরিণত বয়সেও তারা মুক্ত হতে পারে না। তাই শৈশবে যে শিশু বাধ্য হয়ে ধর্মীয় কর্ম পালন করে, বড়কালে সে স্বইচ্ছায় সেই কর্ম পালন করে যেতে থাকে। নাস্তিক হওয়ার প্রথম ধাপ হচ্ছে শৈশবের শেখানো শিক্ষাগুলো থেকে মুক্ত হতে পারা, বলা বাহুল্য এটাই সবচেয়ে কঠিন ধাপ।
(২) আমার জন্ম হয়েছে না রক্ষণশীল না উদারপন্থী এরকম একটা পরিবারে।
আমার মা-বাবা দু’জনেই ধার্মিক, তবে গোঁড়া নন। আমার বড় ভাইকে কখনোই ধর্মকর্ম তেমন একটা পালন করতে দেখিনি। তাই পারিবারিক আবহটা খুব একটা গোঁড়া ছিল না, যা আমাকে নাস্তিক হতে ব্যাপকভাবে সাহায্য করেছে। অবশ্য আমার ছোটবেলার বন্ধুদের প্রায় সবাই ছিল মুসলিম। তারা বেশ কঠিন রকমের ধার্মিক ছিল! তারা নিয়মিত রোজা রাখত, নামাজ পড়ত, হুজুরের কাছে কোরান ও আরবি পড়তে যেত। এরকম কোন ধর্মীয় কর্মের মধ্য দিয়ে আমাকে যেতে হয়নি, শুধু বিশেষ পুজোগুলোতে মন্দিরে প্রার্থনা করতে যেতে হত।
আমার উপনয়ন (যে অনুষ্ঠানে ব্রাহ্মণ সন্তানরা আনুষ্ঠানিকভাবে ব্রাহ্মণত্ব লাভ করে; পৈতাধারণ) হয় নয় বছর বয়সে। এরপর থেকে আমাকে নিয়মিত পুজো দিতে হত। সত্যি কথা বলতে কি, পুজো দেওয়াটা তখন আমি বেশ উপভোগই করতাম! পুজো কেন দিচ্ছি বা কাকে দিচ্ছি এরকম প্রশ্ন নিয়ে ভাবার বয়স তখনও হয় নি, সংস্কৃত মন্ত্রগুলো সজোরে পাঠ করার যে মজা সে মজা নেওয়াটাই ছিল আমার পুজো দেওয়ার মূল উদ্দেশ্য!
এভাবেই কেটে গিয়েছিল অনেকগুলো বছর। মনের মধ্যে ন্যূনতম সন্দেহ না রেখে ধর্ম পালন করে যাওয়া- এটাই হয়ত চলতে থাকত যদি না আমার হাতে আসত রাহুল সাংকৃত্যায়নের ‘ভোলগা থেকে গঙ্গা’ বইটি। সম্ভবতঃ উচ্চ মাধ্যমিক প্রথম বর্ষে পড়ছি তখন, বই পড়ার নেশাটা হয়ে উঠেছিল দুর্দমনীয়। মধ্যবিত্ত পরিবারে জন্ম নেওয়ায় বই কেনার জন্য হাতে তেমন টাকা থাকত না। কলেজে বাসের পরিবর্তে হেঁটে গিয়ে যে কয়টা টাকা বাঁচাতাম তার সবকটাই ব্যয় হত পুরোনো বই কিনতে। রাহুলের পাইরেটেড বইটাও এভাবেই কেনা।
যে মুনি-ঋষিদেরকে (ব্যাসদেব, বশিষ্ঠ) ছোটবেলা থেকেই অসীম শ্রদ্ধা করে আসছিলাম, রাহুলের বইতে তাদের স্বরূপটা দেখে রাতারাতি হিন্দু ধর্মের প্রতি আমার বিশ্বাস চলে গেল। আমার ধার্মিক থেকে অধার্মিক হওয়ার প্রক্রিয়াটা হয়েছে খুব দ্রুত। রাহুলের ‘ভোলগা থেকে গঙ্গা’ সচেতনভাবে পড়ার পরও যদি কোন হিন্দু অধার্মিক না হয়ে ওঠে সে জন্মান্ধ ছাড়া আর কিছুই না।
যে গোহত্যাকে বর্তমানকালে হিন্দু ধর্মে মহাপাপ বলে গণ্য করা হয়, তা ছিল প্রাচীনকালে মুনি-ঋষিদের প্রধান আহার্য; নতুন ধর্মমতের (প্রধানতঃ বৌদ্ধ) আগ্রাসন থেকে হিন্দুধর্মকে রক্ষা করার জন্যই মূলতঃ গোহত্যাকে নিষিদ্ধ করা হয়- এই তথ্যটা আমার কাছে একটা ধাক্কার মত এসেছিল! হিন্দুধর্মের অপরাপর অসঙ্গতিগুলোও ক্রমশঃ চোখে ধরা পড়তে লাগল। অন্যান্য ধর্মের মত হিন্দুধর্মের নেই কোন নির্দিষ্ট গ্রন্থ, এমনকি এক গ্রন্থের সাথে অন্য গ্রন্থের রয়েছে চরম বৈপরীত্য- এই ব্যাপারটাও আমার মনে প্রশ্নের উদ্রেক ঘটাল। একই ধর্মের দু’টো গ্রন্থে দু’রকম বক্তব্য থাকবে কিভাবে?- এই প্রশ্নের উত্তর একটাই হতে পারে, ধর্মটাতেই সমস্যা আছে! হিন্দুধর্মকে তাই পুরোপুরি বাতিল করে দিলাম।
অতঃপর পড়া শুরু করলাম প্রবীর ঘোষের ‘অলৌকিক নয়, লৌকিক’। অলৌকিকত্ব বলে সত্যিই কিছু আছে- আর সবার মত আমিও তা বিশ্বাস করতাম, কিন্তু প্রবীরের বইটা পড়ে এই বিশ্বাসটাও কেমন যেন টলে গেল।
প্রতিটা ধর্মের পবিত্র ধর্মগ্রন্থগুলোই অলৌকিকত্বের কাহিনীতে ভরপুর। দুর্গা দেবী কতৃক মহিষাসুর বধ, নূহের নৌকা দ্বারা সমগ্র জীবকূলকে বাঁচানো, কুমারী মেরীর গর্ভে যীশুর জন্ম- এগুলো ধর্মপ্রাণ মানুষ বিনাপ্রশ্নই মেনে নেয়, কিন্তু সন্দেহপ্রবণ মানুষকে এসব কাহিনী বিশ্বাস করাতে গেলে প্রমাণ দিতে হয়। রাহুল আর প্রবীরের বই পড়ে আমে হয়ে পড়েছিলাম পুরোদস্তুর সন্দেহবাদী, তাই এহেন অলৌকিকত্বকে আমার কাছে ঘটনার বদলে রটনা বলেই মনে হল।
অতএব আমি হয়ে উঠলাম পুরোপুরি অ-ধার্মিক। আমি বুঝতে পারলাম, ধর্ম বলে আসলে কিছুই নেই, সবগুলো ধর্মই মানুষের হাতে তৈরী। তবে অ-ধার্মিক হওয়ার পরও ঈশ্বর যে আছেন তা নিয়ে তখনও আমার মনে কোন সন্দেহ দেখা দেয়নি।
প্রবীরেরই আরেকটা বই ‘আমি কেন ঈশ্বরে বিশ্বাস করি না’ যখন আমার হাতে আসল, তখন আমার মধ্যে একরকম ভয় কাজ করছিল! আমার মনে হচ্ছিল, যদি এই বই পড়ার পর আমি ঈশ্বরে অবিশ্বাসী হয়ে যাই! আমি চাচ্ছিলাম না ঈশ্বরে অবিশ্বাসী হতে, কিন্তু বইটা পড়ার ইচ্ছা ঈশ্বরে অবিশ্বাসী না হতে চাওয়ার ইচ্ছা থেকে বড় হয়ে উঠল।
বইটা শেষ করার পর তাই আমি হয়ে গেলাম নাস্তিক।
আমার ঈশ্বর হয়ে ওঠার কারণটা খুবই সোজাসাপ্টা। যেহেতু ধর্মগুলো সব মানুষের তৈরী, ধর্মীয় ঈশ্বরও মানুষের তৈরী- তাই প্রচলিত ঈশ্বরগুলো (আল্লাহ্, গড, ভগবান ইত্যাদি) এমনিতেই বাতিল হয়ে যায়। ধর্মনিরপেক্ষ একজন সৃষ্টিকর্তা তারপরও থাকতে পারেন, তবে এখন পর্যন্ত তিনি বৈজ্ঞানিকভাবে অনাব্ষিৃকতই রয়ে গেছেন। আর যৌক্তিকভাবে তাকে ছাড়াও মহাবিশ্বের অস্তিত্ব বর্ণণা করা যায়, তাই তাকে যৌক্তিকভাবে বিশ্বাস করাটা এখন পর্যন্ত অপ্রয়োজনীয়।
তখন আমার যৌক্তিক মনের পক্ষে তাই ঈশ্বরে অবিশ্বাসী না হয়ে আর কোন উপায় ছিল না।
(৩) ব্যক্তিগতভাবে আমি এমন কোন মানুষের সংস্পর্শে আসিনি যে আমাকে নাস্তিকতার পথে যেতে উৎসাহ যুগিয়েছে; আস্তিক থেকে নাস্তিক হওয়ার পথে কিছু বইয়ের দ্বারাই বরং আমি অনুপ্রাণিত হয়েছি।
আমার নাস্তিকতার গুরু মূলতঃ তিনজন: রাহুল সাংকৃত্যায়ন, প্রবীর ঘোষ, এবং হুমায়ুন আজাদ। এদের মধ্যে হুমায়ুন আজাদ দ্বারা আমি সবচেয়ে বেশি অনুপ্রাণিত হয়েছি, তার কারণ বোধহয় তাঁর মত আমিও প্রথাবিরোধিতাকে বেশ পছন্দ করি। হুমায়ুন আজাদের ‘আমার অবিশ্বাস’ আমার কাছে বাইবেলের মত, যদিও তাঁর অনেক বক্তব্যের সাথেই আমি একমত হতে পারি না।
(৪) উচ্চ মাধ্যমিক শেষ করতে করতে আমি ঈশ্বরে অবিশ্বাস করা শুরু করা দিয়েছি, তবে তখনও কতগুলো ব্যাপারে আমি নিশ্চিত হতে পারছিলাম না। ছোটবেলা থেকেই বিজ্ঞানের সাথে ধর্মগ্রন্থগুলোর মিলের কথা শুনে আসছিলাম। প্রতিটা ধর্মগ্রন্থেরই নাকি এমন কিছু বক্তব্য আছে যা বিজ্ঞানের আবিষ্কারের সাথে মিলে যায়! বইয়ের দোকানগুলোতে প্রায়ই দেখতাম ‘কোরআন ও বিজ্ঞান’, ‘বাইবেল ও বিজ্ঞান’, ‘বেদ ও বিজ্ঞান’ জাতীয় বইগুলো। এর মধ্যে এক বিশিষ্ট পন্তিতের নাম ঘন ঘন শোনা যেতে লাগল। ভদ্রলোকের নাম ডঃ জাকির নায়েক! লোকমুখে শোনা যেতে লাগল, ইনি অসাধারণ এক পন্ডিত, সবগুলো ধর্মগ্রন্থই যার পড়া রয়েছে; বিজ্ঞানের সাথে কোরআনের একটার পর একটা সম্পর্ক নাকি তিনি আবিষ্কার করে চলেছেন!
আমি ধর্মগ্রন্থগুলোকে আগেই বাতিল করে দিয়েছিলাম, তাই আমি প্রায় নিশ্চত ছিলাম এগুলো বুজরুকিই হবে। কিন্তু বুজরুকিটা যে কোথায় তাই ধরতে পারছিলাম না।
তাছাড়া লোকমুখে আরও যেটা শুনতাম সেটা হচ্ছে বিবর্তনবাদ (যেটা এক চপেটাঘাতে সমস্ত ধর্মগ্রন্থগুলোকে বাতিল করে দিয়েছে) নাকি এখনও অপ্রমাণিত, এটা একটা অনুকল্প (hypothesis) মাত্র।
এইসব ব্যাপারে নিঃসন্দেহ হওয়ার জন্য কোন মাধ্যম তখন আমার কাছে ছিল না, তাই আমাকে একরকম নিরূপায় হয়েই বসে থাকতে হয়েছিল।
অবশেষে আলোকবর্তিকা নিয়ে হাজির হল আধুনিক বিশ্বের সর্বশ্রেষ্ঠ আবিষ্কার আর্ন্তজাল (Internet)। আমি আর্ন্তজাল নিয়মিত ব্যবহার করছি মাত্র এক বছর ধরে, কিন্তু এই এক বছরের মধ্যেই একে পাগলের মত ভালোবেসে ফেলেছি। নাস্তিক হওয়ার পরও আমার মধ্যে যে গুটিকয়েক সন্দেহের বীজ ছিল তা নিমেষে দূর হয়ে গেল মুক্তমনার হাত ধরে। মুক্তমনার হাত ধরেই আমি ডঃ জাকির নায়েকেসহ অন্যান্য ছদ্মবিজ্ঞানী ও ধর্মব্যবসায়ীদের বিজ্ঞানের সাথে ধর্মকে মেলানোর দাবির অসারতা সম্পর্কে জানতে পারলাম, জানতে পারলাম বিবর্তন বিজ্ঞানে এখন মাধ্যাকর্ষণের মতই প্রমাণিত সত্য। যতই জানতে থাকলাম, ততই নিঃসন্দেহ হতে থাকলাম ধর্মগুলোর অসারতা সম্পর্কে।
এ প্রসঙ্গে ফেইসবুকের কথাও বলতে হয়। ফেইসবুকের ‘Atheist Bangladesh’ গ্রুপটা প্রথম যখন আমার নজরে আসল, আমি তখন বিশ্বাসই করতে পারছিলাম না যে বাংলাদেশেও এরকম ‘Hardcore’ নাস্তিক রয়েছে। এদের অনেকের সাথেই পরবর্তীতে আমার ‘Virtual’ বন্ধুত্ব গড়ে উঠল। মুক্তমনা আমাকে দিয়েছে একটি ‘Clarified concept’, আর ফেইসবুক দিয়েছে কিছু ‘Conceptual friend’ (যার অভাব বোধ করছিলাম অনেক দিন ধরে)। আমরা ফেইসবুক এর বন্ধুরা মিলে সম্ভবতঃ বাঙলাদেশী নাস্তিকদের প্রথম সঙ্ঘ (Atheist Association of Bangladesh) গড়ে তুলেছি (যার কার্যক্রম এখনও পর্যন্ত শুধুমাত্র ফেইসবুকেই সীমাবদ্ধ রয়েছে)। আমার নাস্তিকতার ধারণাটা পোক্ত করতে এদের অবদানও কম নয়।
(৫) মাঝখানে আমি কয়েকদিন অজ্ঞেয়বাদী (Agnostic) ছিলাম, আমার মনে হয়েছিল সৃষ্টিকর্তা সম্পর্কে মানুষ হয়তো কোনদিনই কিছু জানতে পারবে না। কিন্তু আমি এখন আগের চেয়ে কিছুটা আশাবাদী। মানুষ হয়তো কোনও একদিন মহাবিশ্বের আদিম রহস্য উন্মোচিত করতে পারবে- এই আশাবাদই আমাকে আবার নাস্তিকতায় ফিরিয়ে এনেছে।
আমি ‘Weak atheism’ এ বিশ্বাসী। Weak atheist রা ঈশ্বরকে পুরোপুরি বাতিল করে দেয়নি, তাদের মধ্যে শুধু ঈশ্বরে বিশ্বাসের ব্যাপারটা অনুপস্থিত (Absence of the belief in the existence of God) । ‘Strong atheist’ রা ঈশ্বরকে পুরোপুরি বাতিল করে দিয়েছে (Denial in the existence of God)।
আমি সর্বদাই প্রস্তুত নতুন চিন্তাধারা গ্রহণ করতে, যদি সে চিন্তাধারার পেছনে পর্যাপ্ত প্রমাণ অথবা যুক্তি থাকে। একজন যুক্তিবাদীর সর্বশেষ গন্তব্য বলে কিছু আছে বলে আমার মনে হয় না, বরং চিরন্তন সন্দেহবাদিতাই হওয়া উচিত তার চিরকালের পথ।
আমি নিজেকে সেই অনন্তপথের এক যাত্রী বলেই মনে করি।
(জানুয়ারি ৪ থেকে জানুয়ারি ৬, ২০১০)
সামু ব্লগে এই সংকলনের উদ্যোগ নেয়ার পরে- সামু ব্লগের কয়েকজন নাস্তিক বন্ধু মিলে সেগুলোকে একত্রিত করা শুরু করেছিলাম- ঐ সময় যতগুলো লেখা জমা পরেছিল- সেগুলো নিয়ে একটা ওয়েবসাইটও খাড়া করা হয় (লিংক: http://spostakkhor.gofreeserve.com/wp) – মূলত ব্লগার ক-খ-গ একক প্রচেষ্টায় ঐটা তৈরি করে। পরে অবশ্য- নিয়মিত আপডেট করা হয়নি। ভাবছি- আমার আপডেট করতে হবে (সামু ব্লগে আরো বেশ কয়েকজন লিখেছে- যেগুলোকে আপডেট করে নেয়া হয়নি)। মুক্তমনার গল্পগুলোও এই ওয়েব সাইটে যুক্ত করলে আশা করি, কারো কোন দ্বিমত থাকবে না ….
ভালো লাগলো। আমারও ইচ্ছা করছে নিজের গল্পটা লিখতে, কিন্তু মুক্তমনায় রেজিস্ট্রেশন কীভাবে করব কেউ বলতে পারেন?
@অভিষেক খান,
আপনি মুক্তমনায় মন্তব্য করতে থাকুন। একসময় দেখবেন রেজিস্টার্ড সদস্য হয়ে গেছেন। আলাদা ভাবে রেজিস্ট্রেশনের অপশন এখনো রাখা হয় নি। কাজেই মন্তব্য করে যাওয়াই সদস্য হবার পূর্বশর্ত। মন্তব্য করার সময় অবশ্যই একটি ভ্যালিড ইমেইল ব্যবহার করবেন।
আর সদস্য হবার আগ পর্যন্ত লেখা পাঠাতে চাইলে [email protected] এই ঠিকানায় লেখা পাঠান।
আমার কাহিনী খুব বড় না। প্রাইমারী স্কুল ভালো ভাবেই পার হয়েছে, বইটই পড়তাম ভালই।আর ক্লাস ফাইভে বেশ কয়েকদিন টানা নামাজও পড়েছি। সেই সুবাদেই প্রাইমারীর শেষের দিকে বেশ কিছু ধর্মীয় ঘটনা ভিত্তিক বই(আদমের সৃস্টিতত্ত্ব, নবীদের মজেজা, বেহেশ্ত-দোজখ ইত্যাদি)। তখনও সংশয় আসেনি।
হাইস্কুলে ভর্তির পর খেলাধুলা ইক্টু কমে গেল। তখন চিন্তা করার কিছু সময় পেলাম। তখনই চিন্তার ভেতরে হঠাৎ চিন্তা এল যে, আমাদের সৃস্টিকর্তা একজন আছে,কিন্তু তার সৃস্টিকর্তা কে?( অর্থাৎ সৃস্টি কর্তার পেছনে কে?) কিন্তু এই চিন্তা বেশি দূর যায়নি। কারন তখন কাউকে প্রশ্ন করতে পারিনি। এরপর ব্যাপারটা ভূলে গেলাম। মাঝে মধ্যে ইসলাম শিক্ষা স্যারদের সাম্প্রদায়িক কথা শুনে মনে হত, “হারামজাদা!! মাদার তেরেসা বেহেশতে যাবেনা আর তুই যাবি!!“? এটা দ্বিতীয় ধাপ। তারপর বেশ কিছু সময় পড়ালেখা নিয়ে স্যারদের প্রেসারের কারনে বই পড়া ছেড়ে দিয়েছিলাম। কিন্তু এসবের মধ্যেই বিবর্তন, বিজ্ঞান, মহাকাশ এসব বিষয়ে কিছু কিছু ধারনা পেতে থাকি। বিবর্তনটা আমাকে অনেক ভাবিয়েছিল, তবে সেটা ছিল স্পেন্সারীয় ও ল্যমার্কিয় ভূল চিন্তা ভাবনা। তবে সেটাও কম না। এটা তৃতীয় ধাপ। এর সাথে সমাজের মানুষদের দূর্দশা, গরীবদের নিরন্তর সংগ্রাম, পাপ পূন্য এসব বিষয় মাথায় অল্প বিস্তর কাজ করত। তবে সেগুলো খুব একটা কার্যকর ছিলনা।
এরপর এইচএসসি বা ইন্টার লেভেলে আসলাম। কলেজ ছিল বিরক্তিকর। ক্লাসে যেতাম না। ম্যাট্রিকের পরের তিন মাসের ছুটি আবার আমার মাথায় বইয়ের পোকা ঢুকিয়েছিল। সেই সুবাদে ইন্টার লাইফে ক্লাসে বসে লুকিয়ে মাসুদ রানা পড়তাম, নয়তো ক্লাস ফাঁকি দিয়ে বইয়ের দোকানে গিয়ে বই ঘাটতাম, নইলে ক্লাসেই যেতামনা। ঘরে বসে কম্পিউটার ঘাটাতাম।
এরই মাঝে মেঝ ভাই তার ভার্সিটি থেকে এসে একবার একগাদা কম্পিউটার বই ও ই-বুক ঘরের পিসিতে দিয়ে যায়। ওগুলোই ঘাটতে ঘাটতে প্রথমে চোখ পড়ল প্রবির ঘোষের “যুক্তিবাদীদের চ্যালেঞ্জাররা” এর ২টি বই। পড়লাম,ভালো লাগলো। তারপর পেলাম অভিজিৎ ভাইয়ের ই-বুক “আলো হাতে চলিয়াছে আঁধারের যাত্রী”। এটা পুরোটা পরলাম। এরকমই একদিন ঘাটতে ঘাটতে পেয়ে গেলাম “আরজ আলি মাতুব্বর”। এক পাতা, দুপাতা করে বেশ কয়েক পাতা পড়লাম। আমার মাথা ধরে গেল। প্রায় পরদিনই আমি বইটার হার্ডকপি কিনে নিয়ে আসলাম। পড়ে সব শেষ!! তবে এত সহজে শেষ হতো না। শেষ হয়েছে তার পিছনের একমাত্র কারন হল যে, আমি আগেই ধর্ম বিষয়ক অনেক বই পড়েছিলাম, তাই আরজ আলি যা ই মার্ক করেছিলেন আমি তার সবটুকুই সোজাসুজি ধরতে পারছিলাম, নাইলে এই বইকেও আমি বাতিলের খাতায় ফেলে দিতাম। আগে পিছের ছোটখাট জানা অজানা আমাকে অনেকটুকু এগিয়ে দিয়েছে। আর শেষমেষ আরজ আলি এক লাথি দিয়ে আমার বালির বাধ ভেঙে দিয়েছে।
এইতো, প্রায় সবটুকুই বলে দিলাম। তবে মজার ব্যপার হচ্ছে যে আমি নাস্তিক হবার সাথে সাথেই ঘরের মোটামুটি সবাইকেই ধারনা দিয়ে দিয়েছি, এবং খোলাখুলিই সবাইকে বলে দিয়েছি। আর তখনই টের পেয়েছি যে আমার বড় দুভাই আগে থেকেই সংশয়বাদী ছিল!!! কিন্তু তারা এত দিন কাউকেই বলেনি!!! যেন আমার জন্য বসে ছিল!!!
তবে ব্যাপারটা ভালই হয়েছে, নাইলে আমি আর নিজে থেকে এত কিছু জানতে পারতাম না, আর আমার অবিশ্বাসের ভিত এত পোক্তও হত না।
@তানভী,
মন্তব্যে নয়, পরে এক সময় পোস্ট হিসেবে দিন ” অবিশ্বাসের জবানবন্দী” ক্যাটাগরি সিলেক্ট করে। তাহলে আমাদের আর্কাইভে লেখাগুলো থেকে যায়।
@তানভী,
ধন্যবাদ। তবে মনে হলো- বেশ শর্টকাট মেরেছেন। অভিজিতের মত বলি লেখাটা স্বতন্ত্র পোস্ট আকারেই দিয়ে দেন, আর সম্ভব হলে- আরেকটু কষ্ট করে লেখাটাকে বড় করেন। মানসিক দ্বন্দ্বগুলো আনার চেষ্টা করেন। কোন প্রশ্ন আপনাকে আপনাকে স্ট্রাইক করে, টানাপোড়েনটা কেমন ছিল, ফাইনালি কিভাবে সব কিছু মাথা থেকে ঝেড়ে ফেললেন- এগুলোও যদি আলোচনা করেন- বেশ ভালো হয়। অর্থাৎ- কেবল বই এর নাম আসলে- কিছু বই এর নাম হয়তো একজন জানতে পারবে, কিন্তু ঠিক কোন প্রশ্ন- কোন যুক্তি আপনার বিশ্বাসের মূলে আঘাত করলো- সেগুলো অজানাই থেকে যাবে। সম্ভব হলে- মূল যুক্তি/প্রশ্নগুলো উল্লেখ করে আরেকটু কলেবরে বাড়িয়ে আপনার লেখাটা দিয়েন ….
“অবিশ্বাসের জবানবন্দী” বিভাগে গিয়ে তিন নাস্তিকের গল্পই পাইলাম (তার একটা অনুবাদ)। আশা করবো- অচিরেই সবার লেখাই সেখানে পাবো ….
বিশেষ করে মুক্তমনার মূল আকর্ষণ যারা- তাদের উপর ডিক্রি জারি করে দেয়া উচিৎ বলে মনে করছি। আমি একটা তালিকা দিচ্ছি- যাদের এই সংক্রান্ত লেখা দেয়ার জন্য একটা টাইম লাইন বেঁধে দেয়া উচিৎ:
১। বন্যা
২। অভিজিৎ
৩। ফরিদ আহমেদ
৪। শিক্ষানবিশ
৫। আকাশ মালিক
৬। রায়হান
৭। কেশব অধিকারী
৮। পৃথিবী
৯। দিগন্ত
১০। বিপ্লব পাল
১১। অনন্ত
১২। সৈকত
১৩। ……………
(নাম তো দেখি শেষ হওয়ার নয় …)
এই বিষয়ে আমার লেখাটার শিরোনাম: আমার অবিশ্বাসের সূত্রপাত। মুক্তমনায় পাঁচ পর্বে দিয়েছিলাম, লিংকগুলো দিচ্ছি:
১ম পর্ব: http://blog.mukto-mona.com/?p=867
২য় পর্ব: http://blog.mukto-mona.com/?p=1210
৩য় পর্ব: http://blog.mukto-mona.com/?p=1567
৪র্থ পর্ব: http://blog.mukto-mona.com/?p=1576
৫ম পর্ব: http://blog.mukto-mona.com/?p=1602
@সূর্য, আপনাকে অসংখ্য অসংখ্য ধন্যবাদ। দেখা যাক, অন্যরা যারা কথা দিয়েছেন- তারা আপনার এই লেখায় কতটুকু উৎসাহিত হচ্ছেন।
@অভিজিৎ, মুক্তমনা এমন একটা সংকলন বের করবে জেনে খুব ভালো লাগলো। সামু ব্লগে আমরা প্রায় ২০ টার বেশী লেখা যোগাড় করেছিলাম। ফেসবুকের বিভিন্ন মুখচোরা নাস্তিকদেরও লেখার জন্য উৎসাহিত করছি। অনেকেই আছেন- যারা পড়তেই পছন্দ করেন এবং লেখালেখির ঝামেলা থেকে নিরাপদ দূরত্বে থাকতে চান। এরকম কয়েকজনকে নিজের অভিজ্ঞতা নিয়ে লিখতে উৎসাহিত করতে পেরেছিলাম এবং পরে দেখা গিয়েছে- তারা দারুন দারুন সব লেখা লিখে যাচ্ছে ..
আপনাদের পক্ষ থেকে এরকম একটা সংকলন বের করার উদ্যোগ নেয়া হলে- সেটা হবে বিশাল একটা এচিভমেন্ট। ফেসবুকের Atheist Association Of Bangladesh গ্রুপ (http://www.facebook.com/group.php?gid=166865632873) এর ডিসকাশন বোর্ডে আলোচ্য পোস্টের লেখক Sujan Chakraborty Surjo একটা টপিক দিয়েছেন- How I became Atheist (http://www.facebook.com/group.php?v=app_2373072738&gid=166865632873#/topic.php?uid=166865632873&topic=12077)। সেখানে সকলকে নাস্তিক হওয়ার ইতিহাসটা/অভিজ্ঞতাটা শেয়ার করার জন্য আহবান করা হয়েছে। অনেকে কথাও দিয়েছেন – লিখবেন। এছাড়া ফেসবুক মেসেজ/চ্যাটে আরো বেশ কয়েকজন কথা দিয়েছেন- তারা এই বিষয়ে লিখবেন। সামুব্লগেও আরো কয়েকজন বলেছিলেন যে তারা লিখবেন- আরেকবার নক করতে হবে। একইভাবে অন্যান্য ব্লগে যারা সময় কাটায়- তারাও উদ্যোগ নিতে পারেন।
পরিশেষে- ফেসবুকের Atheist Association Of Bangladesh গ্রুপে যেটা বলেছিলাম- সেটা এখানে কপি – পেস্ট করছি:
আপনার বিবর্তন বেশ লিনিয়ার। সবকিছু পরিষ্কার বোঝা যায়। আপনার নাস্তিক হয়ে ওঠার কাহিনীটাও খুব যৌক্তিক, বৌদ্ধিক নিয়ম কানুন মেনেই আপনি সব করেছেন। ভাল লাগল পড়ে।
মুক্তমনা এ ধরণের অভিজ্ঞতামূলক লেখা নিয়ে একটি কালেকশন করবে বলেছে। আমিও তাই অচিরেই শুরু করছি লেখাটা। মাথার মধ্যে অবশ্য অনেকটা তৈরি হয়ে আছে। লেখা শুরু করলে বেশি সময় লাগবে না। তবে আমারটা একেবারেই লিনিয়ার না, অনেক অনেক চড়াই-উৎরাই, কখনও এতো বেশি যে আমার ট্রান্সফরমেশনটাকে যৌক্তিক উপায়ে ব্যাখ্যা করাটাও কষ্টকর হয়ে ওঠে।
সবার উৎসাহ দেখে আমিও ভাবলাম যে এরকম একটা লেখা লিখব। কিন্তু আমি কিছুতেই মনে করতে পারছিনা আমি কেন নাস্তিক হলাম। আমার কাছে প্রকৃয়াটা খুবই সহজ এবং স্বাভাবিক ভাবে ঘটেছে। কোন চমৎকারিত্বই নেই আমার নাস্তিক হবার ঘটনায়। কোন হুজুরের পিটানি, কিংবা পারিবারিক সংকট, কিংবা কারো দ্বারা ভয়ানক উদ্বুদ্ধ হওয়া এসব। আরে, একটা রোমাঞ্চকর কাহিনী না থাকলে মানুষ সেটা পড়বেই বা কেন? কি যে মুশকিল। তবু ডাল ভাত খাওয়ার গল্পের মত কারো যদি ভালো লাগবে বলে মনে হয় তাহলে হয়ত লিখব।
@বকলম,
আমারো একই অবস্থা
@বকলম,
লিখা ফেলেন। পাঠকের দাবী। আমার মনে হয় আপনার কমেন্টেই যেই টক-ঝাল-মিষ্টির স্বাদ পাই, পূর্ণাঙ্গ লেখা আরো মজাদার কিছু হবে…
@বকলম,
দূর মিয়া, অত বোরিং হলে হবে নাকি!
তার চেয়ে আবার আস্তিক হয়ে নাস্তিক টু আস্তিক অভিজ্ঞতা লিখেন। দুদিকের কথাই শুনি।
@আদিল মাহমুদ,
তাহলে বোধ হয় আপনার বকলম না, বরং হয়রান সাহেবের কাছে ধর্ণা দিতে হবে। 🙂
Atheist Bangladesh কে অনেকে facebook গ্রুপ বলে অবহেলা করে। কিন্তু আমার এবং আরো অনেকের মতে এটা একটি সাধারণ গ্রুপের থেকে অনেক বেশী কিছু। এ গ্রুপে এসে আমার মত অনেক নিঃসঙ্গ নাস্তিক অসাধারণ কিছু বন্ধুর সন্ধান পেয়েছে যার গুরুত্ত্ব কোনো কিছু দিয়ে পরিমাপ করা যাবে না। এ গ্রুপে এসে আমরা আমরা বুঝতে পেরেছি যে আমরা একা নই, অন্ধ বিশ্বাস ছেড়ে বের হতে পেরেছে এমন মানুষের সংখ্যা কম নয়। গ্রুপটি গোড়া ধার্মিক বিশেষ করে মুসলিমদে বেশ বড় ধাক্কা দিতে সক্ষম হয়েছে, আমাদের থামাতে তারা সরাসরি হুমকি, গালিগালাজ, অ্যাডমিনদের নামে ফেক-আইডি খুলে অশ্লিল পোস্ট দেয়া, ফেসবুকের কাছে রিপোর্ট করা সহ সব রকমের চেষ্টা তারা করেছে।
(admin-atheist bangladesh)
@শাফায়েত,
//Atheist Bangladesh কে অনেকে facebook গ্রুপ বলে অবহেলা করে। //
বাঙলাদেশে আর্ন্তজাল ব্যবহারকারীদের প্রায় সবারই facebook এ account রয়েছে, এবং বাঙলাদেশের নাস্তিকদের সবচেয়ে বড় facebook গ্রুপ ‘Atheist Bangladesh’। এ কারণে AB গ্রপের প্রয়োজনীয়তাকে কিছুতেই খাটো করে দেখার যো নেই। Facebook হচ্ছে এমন একটা মাধ্যম যার মাধ্যমে আমরা অনেক বেশি সংখ্যক মানুষের কাছে পৌছতে পারি, এবং AB এই কাজটাই করে যাচ্ছে।
কোন আন্দোলনই পরিপূর্ণতা পায় না যদি না তা সাধারণ মানুষের কাছে পৌছতে পারে। আমি ব্যক্তিগতভাবে বিশ্বাস করি আমরা facebook এর মাধ্যমে দেশে ও বিদেশে বসবাসরতঃ বাঙলাদেশী মুক্তমনাদের ‘যুক্তি’-র আন্দোলনে কিছুটা হলেও সাধারণ মানুষদেরকে শরিক করতে পারব।
এবং আমি এটাও বিশ্বাস করি, খুব শীঘ্রই পুরো বিশ্বে একটা বিপ্লব আসছে। বিপলবটা হঠাৎ করে হবে না, এটা হবে ধীরে ধীরে। পুরো বিপ্লবটা হবে আর্ন্তজাল কেন্দ্রিক, আর বিপ্লব শেষে জয় হবে ‘যুক্তিবাদ’-র।
:yes:
ধন্যবাদ সূর্যকে তার অভিজ্ঞতা শেয়ার করার জন্য
একমত। সবার নিজের অভিজ্ঞতা লেখা উচিত। এতে অন্যেরা যার দোটানাতে আছে, তাদের সুবিধা হবে।
এরকম একটা সংকলন অচিরেই করা দরকার। নাস্কিকতার প্রথম ধাপ সন্দেহবাদিতা। অনেক ধার্মিক ব্যক্তির মধ্যেই সন্দেহবাদিতা দেখা দেয়, কিন্তু তারা সন্দেহবাদিতাকে এগিয়ে নিয়ে যেতে ভয় পায়।
নাস্তিকদের নাস্তিক হয়ে ওঠার কাহিনী শুনে হয়ত তারা এই ভয়কে জয় করার প্রেরণা পেতে পারে।
@র্সূয,
নাস্তিকের ধর্মকথা একটা সংকলনের কাজ করেছেন কিছুদিন আগে। এখানে পাওয়া যাবে।
@আরিফ,
মূলতঃ না.ধ. ভাইয়ের অনুপ্রেরণাতেই এই লেখাটা লিখতে পেরেছি। উনি facebook এ আমাদেরকে এই ধরণের লেখা লিখতে উদ্বুব্ধ করে যাচ্ছেন।
আপনার বর্ননাভঙ্গি চমৎকার! আমি সবসময়ই লিখে ফেলতে চেয়েছি, কি করে আমি নাস্তিক হলাম… আপনার লেখা পড়ে উদ্বুদ্ধ হলাম।
@আরিফ,
আপনি মুক্তমনায় নিয়মিত হবেন আশা করি।
@আরিফ,
আপনাকে কিছুটা হলেও উদ্বুব্ধ করতে পেরেছি জেনে ভাল লাগল।
খুব শীঘ্রই আপনার লেখাটা পাব আশা করছি।
প্রবীর ঘোষের বইগুলো আমাদের অনেকেরই বিশ্বাসের জগত পরিবর্তনে সহায়ক ভূমিকা পালন করেছে, তা বলাই বাহুল্য। আমারও মনে আছে – অলৌকিক নয় লৌকিক পড়ার পরই বিশ্বাসের একটা বড় অংশ টলে গিয়েছিলো। যদিও তার অনেক আগেই রাহুল সংকৃত্যায়নের ‘নতুন মানব সমাজ’ পড়ে আমার অবিশ্বাসের যাত্রা শুরু। পরে একই ধারাবাহিকতায় পড়েছি আরজ আলী মাতুব্বরের সত্যের সন্ধান, শফিকুর রহমানের ‘পার্থিব সমাজ’ কিংবা বার্ট্রান্ড রাসেলের ‘হোয়াই আই এম নট এ খ্রিষ্টান’ ইত্যাদি। এখন আমি অবশ্য বিজ্ঞান নির্ভর বই পত্রেই আগ্রহী। ডকিন্সের গড ডিলুশন কিংবা ভিক্টর স্টেঙ্গরের নিউ এথিজম – যেগুলো আধুনিক পদার্থবিজ্ঞান বা জীববিজ্ঞানের দৃষ্টিকোন থেকে ঈশ্বর নামক দার্শনিক অভিব্যক্তিটিকে বিশ্লেষণ করা। সত্যই অবিশ্বাসের বন্ধুর পথ যেন আমাদের বিবর্তনেরই ধারাবাহিক ইতিহাস।
আসলে আমাদের সবারই এ ধরণের গল্পের ইতিহাস আছে। এবার বাংলাদেশে গিয়ে রায়হানের সাথে আলাপ করে জানলাম – একদিন হঠাৎ রাত তিনটায় আমার ‘বিজ্ঞানময় কিতাব’ পড়ে নাকি তার মনে হল – এনাফ ইজ এনাফ! সেই দিন থেকে তার ধানাই পানাই বাদ। আরেক ভদ্রলোকের কথা জানলাম – তিনি ছিলেন মাদ্রাসার একজন ছাত্র পরে মসজিদের ইমাম। তিনি মুক্তমনার সংস্পর্শে এসে পুরোপুরি নাস্তিক। মুশকিল হল – এই আকর্ষনীয় কাহিনীগুলো সংকলিত করা হয়ে উঠে না। অথচ এ জবানবন্দী গুলো গুরুত্বপূর্ণ। নবীন মুক্তমনা এবং সংশয়ীদের জন্য তো বটেই। আমি একটা সংকলনের কথা ভেবেছিলাম এখানে। সবাই রাজী থাকলে আমরা এই সংকলের ব্যাপারে চিন্তা করতে পারি। আপাততঃ ইসংকলনের কথাই ভাবি। পরে সময় সুযোগ মত ছাপার অক্ষরের দিকে যাব।
আমি জীবনভিত্তিক এই লেখাগুলোকে আপাতত একটা ক্যাটাগরিতে রাখছি – অবিশ্বাসের জবানবন্দী। আরো অনেক লেখা সাইটে ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে। সেগুলোকে একসাথে করা প্রয়োজন। সময় সুযোগমত সদস্যদের কাছ থেকে এ ধরনের বিষয়বস্তুর উপর লেখার আহবান জানাবো। আলসেমির কারণে হয়ে উঠছে না। কিন্তু শুরু করবো শিগগীরই। দেখা যাক কি হয়।
@অভিজিৎ দা,
আমি আমার লেখার কাজ শুরু করেছি। তবে একটা ফরম্যাল এপ্রোচ নেওয়া যেতে পারে মুক্তমনার উদ্যোগে। সম্পাদকমণ্ডলী ঠিক করে একটা পোস্ট। শুধু মুক্তমনায় নয়, সচলায়তনেও জানানো যেতে পারে। এই কাজটি করতে পারেন আপনি, আমি কিংবা মুহাম্মদ।
খুব দারুন একটা সংকলন হবে এটা। আশায় রইলাম।
@অভিজিৎ,
‘পার্থিব সমাজ’ না বোধহয় ‘পার্থিব জগত’। আচ্ছা, শফিকুর রহমান মানুষটি এখন কোথায় আছে বা কি করছে জানেন কি? উনি আর লেখালেখি করলেন না কেনো জানি না। তাঁর লেখাগুলো বেশ চমৎকার।