বেশ কিছুদিন ধরে বাংলাদেশের পত্রপত্রিকা পড়া বন্ধ করে দিয়েছি আমি মোটামুটি। অথচ একটা সময় ছিল যখন দুপুরের পর থেকেই অস্থির হয়ে যেতাম অনলাইনে পত্রিকাগুলো পড়ার জন্য। বাংলাদেশের অধিকাংশ মানুষ কোনো খবর জানার আগেই সে খবর জানা হয়ে যেতো আমার। দেশ ছেড়ে আসার পর থেকে দীর্ঘদিন দেশের নাড়ির খবর রাখতে রাখতে এই উপলব্ধি হয়েছে যে, এই দেশটার কোনো ভালো খবর নেই, নেই কোনো আশার খবর। চারিদিক থেকে ধেয়ে আসতে থাকে শুধু নিরাশার আর নিরানন্দের খবর। মৃত্যু আর আহাজারির খবর। অতল তলে তলিয়ে যাবার দীর্ঘশ্বাসই শুধু শুনতে পাই। আমি নৈরাশ্যবাদী নই, কিন্তু তারপরেও কোনো আশা দেখি না দেশটাকে ঘিরে। একটা দেশ কীভাবে চোরাবালিতে আটকে পড়ে দ্রুত তলিয়ে যেতে পারে পাতালের দিকে তার জ্বলন্ত উদাহরণ হচ্ছে বাংলাদেশ।
এই দেশটা আমার জন্মভূমি। বুকের ভিতরে মাকে ভালবাসার সমপরিমাণ ভালবাসা নিয়ে সারাক্ষণ ঘুরি আমি এই দেশটার প্রতি। ফলে, এই সব হতাশা, নিরাশা, মৃত্যুর বিভীষিকা বুকের ভিতরে শুধু রক্তক্ষরণই বাড়ায়। প্রতিটা দিন আহত হই আমি এই সব রক্তাক্ত খবরে।
ছোট্ট একটা জীবন। এই জীবনে এতো রক্তক্ষরণ মেনে নেওয়া যায় না। সে কারণেই নিজের চারিদিকে শক্ত দেয়াল তুলে দিচ্ছি আমি। কানের ভিতরে তুলো গুঁজে দিয়ে সমস্ত কিছু থেকে আড়াল করার চেষ্টা নিয়েছি। সদর দরজায় খিল তুলে দিয়ে পাষাণপুরীতে একা বসবাস এখন আমার। তারপরেও ঠিকই কোনো না কোনো অসতর্ক বাতায়নের ফাঁকফোকর দিয়ে ঢুকে পড়ে কোনো না কোনো দীর্ঘশ্বাসের শব্দ, কোনো না কোনো আহাজারির করুণ আর্তনাদ।
আজকেও ঠিক সেরকমই ঘটনা ঘটেছে। দুপুরের খাবার খাচ্ছিলাম। টেবিলের উপরেই ল্যাপটপটা রাখা। নিত্যকার অভ্যাস বশে বা হাত দিয়ে ব্রাউজ করে চলেছি। কী খেয়ালে জানি না, হুট করেই খুলে ফেলেছি প্রথম আলো। প্রথম আলোর প্রথম পাতার প্রথম সংবাদটা দেখেই গা হিম হয়ে গেছে আমার। তারেক মাসুদ নেই। বাংলাদেশের সবচেয়ে মেধাবী চলচ্চিত্র নির্মাতাটি মর্মান্তিক এক সড়ক দুর্ঘটনায় অকালে প্রাণ হারিয়েছেন। খবরটা পড়ার পরে আর খাবার মুখে রোচে নি। নিজেকে নিজে অভিশাপ দিয়েছি প্রথম আলো খোলার জন্য। পত্রিকা না পড়লে এরকম একটা খবর জানতে হতো না আমার। ক্ষতবিক্ষত হৃদয়ে সারাটা দিন কাটাতে হতো না আমার।
তারেক মাসুদকে ব্যক্তিগতভাবে আমি চিনি না। তাকে সামনাসামনি বা টেলিভিশনে, কিংবা পত্রিকার পাতায় তাঁর ছবি, কোনো কিছুই আমি দেখি নি। অথচ তারপরেও কেন যেন অসম্ভব আপন একজন বলে মনে হতো তাঁকে। এর কারণ বোধহয় এই যে ভদ্রলোকের বুকের ভিতরে বাংলাদেশের প্রতি অসম্ভব মমতা এবং ভালবাসা বসানো ছিল। বাংলাদেশের প্রতি মমতা আছে এমন যে কোনো লোকই আমার পছন্দের তালিকায় শীর্ষে থাকে। তারেক মাসুদও সেরকমই ছিলেন।
তাঁর কথা প্রথম আমি জানতে পারি হাসনাত আব্দুল হাইয়ের ট্রাভেলগ থেকে। নব্বই দশকের শুরুর দিকে। হাসনাত আব্দুল হাই তাঁর এই ভ্রমণকাহিনি ধারাবাহিকভাবে প্রকাশ করতেন ভোরের কাগজে। ট্রাভেলগেরই কোনো এক পর্বে আমেরিকা ভ্রমণের কথা ছিল। তাঁরেক মাসুদ তখন আমেরিকায়। হাসনাত আব্দুল হাই কাকে যেন বলেছিলেন তারেক মাসুদের সাথে তাঁর সাক্ষাতের ইচ্ছা। (অনেকদিন আগের ঘটনা। স্মৃতি থেকে লিখছি। তথ্য বিভ্রাট হওয়াটা অমূলক নয়। ট্রাভেলগের চারটা খণ্ডই আমার কাছে আছে। একটু খুঁজলেই সঠিক তথ্যটা জানা সম্ভব। কিন্তু এই মুহুর্তে ইচ্ছা করছে না। বিষয়টা জরুরীও নয়।)
নব্বই এর গণ আন্দোলনের এরশাদের পতনের পর এক বা দেড় মিনিটের একটা চলচ্চিত্র বানিয়েছিলেন তিনি আমেরিকাতে বসেই। ওতেই তুলে এনেছিলেন আমাদের পুরো ইতিহাসকে। এ সমস্ত খবর ভাসা ভাসাভাবে বিভিন্ন মিডিয়াতে আসতো। এটুকুই বলতে গেলে তারেক মাসুদ সম্পর্কে আমার জ্ঞান। আমাদের চলচ্চিত্রের প্রধান পুরুষ একদিন তিনি হবেন, সেরকম কোনো ভাবনাই কাজ করে নি তখন আমার মনে।
সড়ক দুর্ঘটনায় আলমগীর কবিরের দুঃখজনক মৃত্যুর পর যে শূন্যতা তৈরি হয়েছিল বাংলাদেশের চলচ্চিত্রে, সেই শূন্যতা ঢাকতে এগিয়ে এসেছিলেন মোর্শেদুল ইসলাম এবং তানভীর মোকাম্মেল। এদের দুজনকে নিয়ে আমরা আশাবাদী ছিলাম প্রচুর। দুজনই মেধাবী ছিলেন। ভাল কিছু চলচ্চিত্রও তৈরি করেছেন তাঁরা। এখনও করছেন। কিন্তু একটা সময়ের পরেই আমরা বুঝে গিয়েছিলাম যে, এদের মেধার মানটা দেশজ পর্যায়ের। বাংলাদেশের সীমানা ডিঙিয়ে আন্তর্জাতিক অঙ্গন কাঁপানোর মত ক্ষমতা তাঁদের নেই। সেই ক্ষমতাটা জহির রায়হান এবং আলমগীর কবিরের পরে বাংলাদেশে মাত্র একজনেরই ছিল। তিনি তারেক মাসুদ। এই মুহুর্তে যেখানে কোলকাতায় অন্তত আধ ডজন চলচ্চিত্র নির্মাতা আছেন যারা আন্তর্জাতিক মানের চলচ্চিত্র বানাতে সক্ষম, সেখানে আমাদের সবেধন নীলমণি ছিলেন ওই এক তারেক মাসুদই। সে কারণে তারেক মাসুদকে নিয়েই স্বপ্ন দেখতাম। স্বপ্ন দেখতাম যে তিনি একদিন পথের পাঁচালীর মত অসাধারণ কোনো চলচ্চিত্র বানিয়ে ফেলবেন আমাদের জন্য। তাঁর মেধার উপর এরকমই অটল অটুট বিশ্বাস ছিল আমার।
১৯৭১ সালে লিয়ার লেভিন নামের একজন আমেরিকান মুক্তিযুদ্ধের সাংস্কৃতিক কর্মীদের উপর একটা চলচ্চিত্র নির্মাণ করার জন্য প্রায় বিশ ঘন্টার ফুটেজ নিয়েছিলেন। পরবর্তীতে সেই চলচ্চিত্র আর করা হয় নি। তারেক মাসুদ বহু কষ্টে লিয়ার লেভিনের কাছ থেকে অমূল্য সেই ফুটেজগুলো উদ্ধার করেন। তারপর তিনি এবং তাঁর আমেরিকান স্ত্রী ক্যাথেরীন মিলে সেখান থেকে কেটেছেঁটে তৈরি করেন মুক্তির গান নামের অসাধারণ একটি চলচ্চিত্র। একদল সাংস্কৃতিক কর্মী একটি ট্রাকে করে এক রণাঙ্গন থেকে অন্য রণাঙ্গনে ছুটে চলেছে, গান গেয়ে গেয়ে মুক্তিযোদ্ধাসহ দেশের মানুষদের উদ্দীপ্ত করে চলেছে। এই চলচ্চিত্রের জন্য ক্যামেরা ধরতে হয় নি তারেক মাসুদকে, শুটিং করতে হয় নি, তারপরেও অবিস্মরণীয় এই কাজে তাঁর অবদান নিয়ে কোনো প্রশ্ন নেই। ১৯৯৫ সালে বাংলাদেশে মুক্তি পায় মুক্তির গান। মুক্তির গান শুধু একটা চলচ্চিত্র ছিল না, ছিল অন্য ধরনের অনুভূতির নাম, একটা আন্দোলন। সেই সময়ে বাংলাদেশে এক অদ্ভুত পরিস্থিতি বিরাজ করছিল। বিএনপি এবং জামাতের ক্ষমতার দাপটে মুক্তিযুদ্ধের চেতনার প্রায় মরণাপন্ন দশা। প্রগতিশীল যে কোনো সংগঠন রাস্তায় মিছিল নিয়ে বের হলেই যুবকমান্ডের (ফারুক-রশীদের কুখ্যাত ফ্রিডম পার্টির অঙ্গসংগঠন) নামে অস্ত্র হাতে ঝাঁপিয়ে পড়তো ছাত্রদল এবং শিবিরের গুণ্ডাপাণ্ডারা। ওই রকম বৈরী পরিবেশে দুটো চলচ্চিত্র মানুষকে সাহস দিয়েছে। একটি এই মুক্তির গান, অন্যটি ছিল নাসিরউদ্দীন ইউসুফ বাচ্চুর একাত্তরের যীশু। এই দুটো চলচ্চিত্র শুধু চলচ্চিত্র ছিল না, ছিল প্রেরণারও উৎস।
মুক্তির গানের পরপরই বোধহয় তারেক এবং ক্যাথেরীন মাসুদ সিদ্ধান্ত নেন স্থায়ীভাবে বাংলাদেশে বসবাসের। আর আমার অবস্থা হয় উল্টো। দেশ ছেড়ে পরবাসী হবার আয়োজন সম্পন্ন হতে থাকে আমার।
২০০২ সালের দিকে মুক্তি পায় তারেক মাসুদের করা সেরা ছবি মাটির ময়না। ছবিটা শুধু আমি নিজেই দেখি নি, আরো অনেকেকেই দেখিয়ে ছেড়েছিলাম। আমার সহপাঠী বন্ধু ছিল কোলকাতার একটা মেয়ে, নাম পরাগ। পরাগকেও ছবিটার অনেক গুণগান করে দেখার জন্য ক্যাসেটটা গছিয়ে দিয়েছিলাম তার হাতে।
তারেক মাসুদ আর নেই। ভারতীয় আর কোনো বাঙালিকে গছিয়ে দিতে পারবো না কারো ছবি। বলতে পারবো না, দেখো আমাদের সত্যজিৎ রায় হয়তো নেই, নেই কোনো অপর্ণা সেন বা ঋতুপর্ণ ঘোষ, কিন্তু আমাদের তারেক মাসুদ আছে। দেশ এবং দেশের মানুষের প্রতি গভীর ভালবাসা নিয়ে অসাধারণ সব ছবি বানায় সে।
এই গর্ব আর করা যাবে না। তিনি নেই। অকালে চলে গেছেন। তিনি শুধু একা নন, আমাদের চলচ্চিত্র ইতিহাসের সবচেয়ে মেধাবী তিনজন চলচ্চিত্র নির্মাতাই চলে গেছেন অকালে, তাঁদের সৃষ্টিশীলতার সেরা সময়ে, অপঘাতে মৃত্যুর কঠিন শাস্তি মাথায় নিয়ে।
হতদরিদ্র আমরা। শুধু অর্থনৈতিক দিক দিয়ে নয়। বাকি বিশ্বের সাথে তুলনায় পিছিয়ে আছি আমরা সব দিক থেকে। আমাদের আকাশে কোনো চাঁদ নেই, নেই কোনো নক্ষত্রও। হুটহাট করে কোনো এক সময় দেখা দেয় কোনো এক সূর্য, তারপর পরিণতি পাবার আগেই অকালে গোধূলির শোক রাঙিয়ে ডুব দেয় অস্ত আকাশে।
সূর্য বিরলতাময় আমাদের আকাশ থেকে যে কোনো সূর্যের অকস্মাৎ অস্তগামিতায় আমরা হতবিহবল হই। গভীর শোকে বুকের ভিতরে নির্বাক অশ্রুধারা জমাট বেঁধে থাকে, মন কাঁদে আমাদের।
মন কাঁদে সূর্যের বিদায়ে।
লিয়ার লেভিনের ফুটেজকে ব্যবহার করে তারেক এবং ক্যাথেরিন মাসুদ কী অমানুষিক পরিশ্রম, অপরিসীম আন্তরিকতা এবং ভালবাসা দিয়ে মুক্তির গান তৈরি করেছিলেন তাঁর প্রামান্য চিত্রের (মেকিং অব মুক্তির গান) চারটি পর্বে ছড়িয়ে আছে ইউটিউবে। লিংকগুলো এখানে তুলে দিলাম।
httpv://www.youtube.com/watch?v=afd0tOsWLIs&feature=related
httpv://www.youtube.com/watch?v=tstHk4_FL6U&feature=related
httpv://www.youtube.com/watch?v=KI5EvmN_psU&feature=related
httpv://www.youtube.com/watch?v=QjHV5h9uzo8&feature=related
তারেক মাসুদ আর মিশুক মুনীরের অকাল প্রয়ানেঃ
মানুষ হারিয়ে যাচ্ছে, দ্রুত হারিয়ে যাচ্ছে
কিছু তাকে নিচ্ছে সময়,
কিছু পথ-ঘাট,কিছু দুর্ঘটনা,
কিছু ঘটনার অতল।।
আমরা যারা বেঁচে আছি,
আমাদের প্রস্তু্তি যেনো
সেই হারিয়ে যাওয়ার পথেই
নিরবধি নিশ্চল।।
হারিয়ে যাবার কোনো দিন-ক্ষন নেই,
যে কেউ যেতে পারে যে কোন সময়।
আমরা যারা এখনো বেঁচে আছি,
তারাই কেবল বলছি -বড় অসময়ে এই চলে যাওয়া।
আগস্ট ১৩,২০১১
তারেক মাসুদ আর মিশুক মুনীরের অকাল প্রয়ানেঃ
মানুষ হারিয়ে যাচ্ছে, দ্রুত হারিয়ে যাচ্ছে
কিছু তাকে নিচ্ছে সময়,
কিছু পথ-ঘাট,কিছু দুর্ঘটনা,
কিছু ঘটনার অতল।।
আমরা যারা বেঁচে আছি,
আমাদের প্রস্তু্তি যেনো
সেই হারিয়ে যাওয়ার পথেই
নিরবধি নিশ্চল।।
হারিয়ে যাবার কোনো দিন-ক্ষন নেই,
যে কেউ যেতে পারে যে কোন সময়।
আমরা যারা এখনো বেঁচে আছি,
তারাই কেবল বলছি -বড় অসময়ে এই চলে যাওয়া।
আগস্ট ১৩,২০১১
.
amar pisite hothat korei ovro kaj korchena.tai engraji likhe amar shok janalam. bolbar kichu nei, ei karone baire (bideshe ) jara achen tader ontoto emon bhabe(asha kori) jibon harate hobe na.
amader prottohoi mrittyur sathe boshobas.
@ moderator – bangla horofe na lekhar karone lekhata muche dile dukho pabo. ami amar oporogotar kotha janiyechi. khub shigho install kore nebo notun kore.
:candle:
তারেক এবং ক্যাথেরিন মাসুদের একটি সাক্ষাৎকার আছে এখানে।
httpv://www.youtube.com/watch?v=Ma477SJ6VOw
@ফরিদ আহমেদ,
আপনার দে’য়া লিঙ্কের সুবাদের আরো একটুখানি চোখের জল। খুব খুব কষ্ট হচ্ছে।
শুধু শোক নয়, এখন নীতিহীন মানুষদের বিচার করার সময় !!
এ মৃত্যু মেনে নেয়া যায়না। তাদের অকাল চলে যাওয়া নষ্টদের সাহস আরো বাড়িয়ে দেবে, প্রগতিশীলতার চাকা শ্লত হয়ে যাবে।
এই অপুরনীয় ক্ষতির পরও কি আমরা এ দাবিটি জোড়ালো করতে পারিনা- মহাসড়ক গুলোতে ডিভাইডার দেওয়া হোক? বড় সড়কগুলোর দুর্ঘটনায় বাংলাদেশে বেশি মানুষ মারা যায়, যা বেশীর ভাগই মুখোমুখি সংঘর্ষে হয় এবং ডিভাইডারের মাধ্যমে এ মৃত্যু গুলো প্রতিহত করা যায়। ব্লগ, ফেইস বুকের মাধ্যমে নিরাপদ সড়কের দাবিগুলোকে সরকারের সামনে নিয়ে আসা যায়।
তারেক মাসুদ- মিশুক মনিরের মৃত্যুর শোক আমাদের নতুন তারেক-মিশুক জন্ম দেবে এই আশায়।[img]http://images.pictureshunt.com/pics/b/burning_candles-2931.jpg[/img]
আর কত দুঃসংবাদ শুনতে হবে আমাদেরকে, আর কত সূর্য অকালে ডুবে গিয়ে অন্ধকার করে দেবে চারিদিক? শ্রদ্ধাঞ্জলি তাঁর প্রতি। :candle:
বাংলাদেশে যে কজন ভাল প্রতিভাবান লোক ছিল তারেক মাসুদ তাদের মধ্যে অন্যতম । তার ছবিগুলোর মাধ্যমে তিনি যে ভাবে প্রতিক্রিয়াশীলদের আক্রমণ করেছেন তা সত্যিই প্রশংসার যোগ্য । তার অকাল অন্তর্ধানে(বলা চলে হত্যা ..) আমাদের অনেক ক্ষতি হয়ে গেল ………….. :-Y
মুক্তির গান আর একটি মাটির ময়না তারেক মাসুদের পক্ষেই সম্ভব। তার প্রতি শ্রদ্ধাঞ্জলী-
httpv://www.youtube.com/watch?v=mGAdpfufzpg&feature=related
httpv://www.youtube.com/watch?v=W4BEvsOOA5Q&feature=related
httpv://www.youtube.com/watch?v=jU-ADpp_M7E
বাংলাদেশ পুরোপুরি সড়কপ্রধান দেশ। এরকম একটা দেশে, ব্যস্ততম একটা ন্যশনাল হাইওয়েতে ডিভাইডার নেই, মাল্টিপল লেন নেই। হাইওয়ের বেশীরভাগ দূর্ঘটনাই ঘটে মুখোমুখী সংঘর্ষে। রাস্তায় দূর্ঘটনা ঘটবেই, কিন্তু এরকম অনুন্নতির ফলাফল মেনে নেয়া কষ্টকর, বিশেষ করে যখন এক মুহুর্তে দেশের সেরা কিছু সন্তান হারিয়ে যায়। তারেক, মিশুক এর পরিনতিতে, আরো কজন প্রবাসী দেশে ফিরে কিছু করার আগে দুবার ভাববেন?
ঢাকায় যখন থাকতাম তখন, ঢাকা থেকে বাইরে কখনো বেরুতে যেতে ভয় করতো। এখন বাবা-মা যখন মাঝে মাঝে দেশের বাড়ী যায়, সারাক্ষন চিন্তায় থাকি এতোদূরে থেকেও।
বাংলাদেশে শুধু আশা ই করা যায়, ভরসা করা যায় এমন কেউ নাই।
যার উপর ই ভরসা করুন না কেন, নিরাশ সে করবেই, করবেই করবে।
কেউ আমাদের কে তলা বিহীন ঝুড়ি বললে আমাদের দেশ প্রেম উতলে উঠে, মাইরালামু খাইয়ালামু_” করেই শেষ। একটু পরেই কুচ মালুম নেহি। যেন সবারই “Short Time memory lose” রোগে ভুগছেন।
এতই যখন দেশ প্রেম তো তলা বিহীন ঝুড়িটা কেন মেরামত করার বাবস্থা করছেন না??
কার কাছে যে কি বলব আর নিজেই বা কি করব, ঠিক বুঝে উঠতে পারছিনা।
একটা কবিতা মনে পরে গেল_
এই বাঙলার রক্তিম সূর্য ডুবেছিল সেই কবে
বহু শতাব্দী আগে কোন এক পলাশীর প্রান্তরে,
আজও তা ওঠেনি -পারেনি সকাল হতে
ডুবেছিল যা মীর জাফরের হাত ধরে।
কত শত যুগ পেরিয়েছে হায় জানি নাক
তবু এই বাঙলা খুজে পেলনা তার স্বাধীনতা
মীর জাফর, মীর কাশিমেরা কি আজও
-আজও আছে বসে এই বাঙলার মসনদে??
আমাদের শিক্ষা ব্যবস্থা অনেক ব্যয়বহুল। প্রায় সবকিছুই অনেক চড়া মূল্যের বিনিময়ে কিনতে হয়। এই ঘটনার পর থেকে হয়ত আমরা আরও অনেক বেশি সচেতন হবো। আইন কানুনে আরো নতুন নতুন সংযজন বিয়োজন ঘটাবো, কিন্তু যে ধন হারালাম তার মুল্য কি কেউ দিতে পারবো?
আজ সত্যিই মনটা খুব ভারাক্রান্ত।
ফরিদ ভাইকে ধন্যবাদ দিতে ভুলে গিয়েছিলাম। মুক্তমনায় কোন লেখা না দেখে হতাশ হয়েছিলাম যা আপনার এই লেখা অনেকটাই দূর করলো।
খবরটা পড়ার পর থেকে অসহ্য চিৎকার করে উঠতে চাইছে মন। কিছু করতে না পেরে যা বের হচ্ছে রাজনীতিবদ থেকে শুরু করে আমজনতা ও নিজের জন্যে অসংখ্য গালি। আর সহ্য হচ্ছে না ;-(
তারেক মাসুদ দেশভাগ নিয়ে চলচিত্র করার কথা চিন্তা করছিলেন, সেটা বোধ হয় এখন অনেকেই জানেন। ছবির নামও ঠিক করেছিলেন, কাগজের ফুল।
বিডি নিউজে সোহেল রহমানের চমৎকার এ লেখাটি পড়ে মন বিষন্ন হয়ে গেল –
কাগজের ফুল ও তারেক মাসুদের সঙ্গে সখ্য সোহেল রহমান
@অভিজিৎ,
ধন্যবাদ লিঙ্কটা দে’য়ার জন্য। সোহেল রহমানের লেখা পড়ে খুব কান্না পাচ্ছিল। এভাবে সবকিছু নষ্টদের অধিকারে, আর ইতিহাস থেকে যাবে অন্ধকারে।
@অভিজিৎ,
তারেক মাসুদকে আমরা হারিয়েছি। ‘কাগজের ফুল’ যাতে হারিয়ে না যায় সে রকম কোন উদ্যোগ মুক্তমনার পক্ষে সম্ভব কি-না, আমি জানি না। এ ক্ষেত্রে কোন সম্মিলিত উদ্যোগকে স্বাগত জানানো যেতে পারে। গৌতম ঘোষের নামটা মাথায়।
@স্বপন মাঝি,
শনিবার বিকেলটা বিস্ময়ে বিমূঢ় হয়ে ছিলাম।
সরকার প্রতিদিন কিছু লোককে মানুষ মারার জন্য ড্রাইভিং লাইসেন্স দিচ্ছে। রাস্তায় উল্টাপাল্টা গাড়ি চালিয়ে তারা অহরহ পার পেয়ে যাচ্ছে শুধু পুলিশের হাতে টাকা গুঁজে দিয়ে। এ চিত্র নিত্য নৈমিত্তিক ।কী যে হবে আমাদের!!!!!!!
ক্যাথরিনা মাসুদ সুস্থ হয়ে উঠলে উনিই ‘ কাগজের ফুল’ শেষ করতে পারবেন বলে প্রত্যাশা করছি। সাথে ক্যামেরায় মিশুক মুনীরের মত একজনকে খুঁজতে হবে।
@গীতা দাস,
শোক, সভা-সেমিনার-বাদ-প্রতিবাদ,তারপর ইতিহাস। ঠিক এভাবেই আমি আমার দেশটাকে জানি। যে মানুষটা নেই, আমরা যতই,যা কিছু করি বা বলি না কেন (সেটা কি তার আত্মাকে? ) তাকে পুরস্কৃত করার জন্য? নাকি তার কর্মকে মানুষের সামনে, মানুষের প্রয়োজনে, মানুষের কল্যানে, সামনে নিয়ে আসার জন্য?
আপনি যথার্থ বলেছেন,
তখন আমরা সবাই যেন এগিয়ে আসি।
@গীতা দাস,
যে বছর বাংলাদেশে প্রথম লাইসেন্সিং অথরিটি বা বি আর টি এ গঠিত হয়,সে বছর ৯ জন সহকারী পরিচালক পদে ইঞ্জিনিয়ার নিয়োগ করা হয়|কাকতালীয়ভাবে সেখানকার প্রায় সবাই আমার বন্ধু এবং ৬ জন তো আমার খুবই কাছের বন্ধু; কয়েকজন আবার সাহিত্য আড্ডার সাথী,রাজপথে প্রগতিশীল মিছিলের সহযোদ্ধা| অনিয়ম,দুর্নীতি আর ঘুষবানিজ্যের প্রানকেন্দ্র রুপে প্রথমদিন থেকেই বি আর টি এ চ্যাম্পিয়ান|আমার বন্ধুদের ৩ জন বছর চারেক সমঝোতা করে চাকুরী করে বিদেশে চলে এসেছেন|বাকিরা ঘুষের টাকায় কোটিপতি হয়ে বসে আছেন,প্রোমোশন নিয়েছেন;মানুষ মারার সনদ পত্রে স্বাক্ষর করছেন প্রতিদিন ভূয়া পারমিট,ভূয়া লাইসেন্স-এ|রাজনীতিবিদ,আমলা-কামলা সবাই গাড়ি কিনছেন,ভূয়া ড্রাইভিং লাইসেন্স, ভূয়া পারমিট নিয়ে গাড়ি চালাচ্ছেন| বাস-ট্রাকের মালিক তো মন্ত্রী-রাজনীতিবিদেরাই, কে তাদের কেশাগ্র স্পর্শ করে?আর সড়ক ও জনপথ ;সেটার কিচ্ছে তো আরও ভয়ঙ্কর!সড়ক মেরামতের টাকা তো হরিলুটের বাতাসা ,গরু কেতাবে আছে গোয়ালে নেই|
এই সব মৃত্যু আমাকে প্রতিনিয়ত ব্যথিত করে|যখন কোন দুর্ঘটনার খবর শুনি,সে সময়েই মনে হ্য় আমার সেই দুর্নীতিবাজ বন্ধুদের মুখ,হয়তো এদের স্বাক্ষরে প্রাপ্ত ভূয়া লাইসেন্সধারী কোন চালক কিংবা বাস কেড়ে নিচ্ছে কারো প্রান? এ মৃত্যু ঠেকাবে কে?
গতকাল বিকেলে ঘুম থেকে উঠে এক বন্ধুর মেসেজ পেয়ে লাফ দিয়ে উঠলাম “তারেক মাসুদ মারা গেছে???” সাথে সাথে নেটে বসে, আর টিভি খুলে দেখি সত্যি। চোখ ফেটে কান্না আসছিল, বিশ্বাস করতে পারছিলামনা। পরীক্ষার জন্য বই খুলে বসে ছিলাম, কিছু মাথায় ঢুকছিলনা, একবার ফেসবুকে বসি, একবার নিউজ দেখতে বসি। দিশেহারা অবস্থায় আছি। আজ যখন শহীদ মিনারে গেছিলাম তখন কফিন দুটো দেখে আর সেখানে তারেক মাসুদ আর মিশুক মুনীর শুয়ে আছেন ভেবে এতই বিহবল হয়ে গেছিলাম যে হাতে ফুলের মালা থাকা সত্ত্বেও দিতে ভুলে গেছি।
অসম্ভব কষ্ট লাগছে। আজ মাটির ময়নার ডিভিডি এনে আবারো দেখলাম ছবিটা। কি আর বলব। অস্থির লাগছে। যদি এই হত্যাকান্ডের পেছনে দায়ী মানুষদের খুঁজি তাহলে লক্ষাধিক মানুষ জড়িত পাওয়া যাবে মনে হচ্ছে। এতেও সরকার বা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের টনক নড়বেনা, আমরা কি করলে পরিবর্তন আসবে বুঝতে পারছিনা, তবে এটা বুঝেছি আমাদেরকে এবার গা ঝাড়া দিয়ে উঠতে হবে।
চ্যানেল আইয়ের সংবাদ এখানে।
httpv://www.youtube.com/watch?v=rifV7Frv1hw&feature=related
গতকাল নিকেলে ঘুম থেকে উঠে এক বন্
[img]http://kewlkidd22.byethost32.com/wp-content/uploads/2009/11/black-ribbon.gif[/img]
কিছু বিষাদ হোক পাখি, নগরীর নোনা ধরা দেয়ালে,
কাঁচপোকা সারি সারি, নির্বাণ, নির্বাণ ডেকে যায় …
আলো নেই, রোদ নেই, কিছু বিপন্ন বিস্ময়,
ক্ষমাহীন প্রান্তর জুড়ে আমাদের বেঁচে থাকা !!
http://kewlkidd22.byethost32.com/wp-content/uploads/2009/11/black-ribbon.gif
কিছু বিষাদ হোক পাখি, নগরীর নোনা ধরা দেয়ালে,
কাঁচপোকা সারি সারি, নির্বাণ, নির্বাণ ডেকে …
আলো নেই, রোদ নেই, কিছু বিপন্ন বিস্ময়,
ক্ষমাহীন প্রান্তর জুড়ে আমাদের বেঁচে থাকা !!
ভিডিও টা দেখে চোখ ফেটে অশ্রু ঝরল!
এই অভাগা দেশটার কপালে এত দুঃখ কেন?
মাটির ময়না দেখার পর, আমার খুব ইচ্ছা ছিল উনার একটা সাক্ষাতকার নেওয়ার। সে ইচ্ছা পূরন হলো না।
তারক মাসুদ নিয়ে আরো তথ্য সমৃদ্ধ লেখা চাই মুক্তমনাতে। আমি ত মোটে উনার একটা সিনেমা দেখেছি-তাই উনার কাজ নিয়ে আমার অত ভাল ধারনা নেই।
রোড এক্সিডেন্ট নিয়ে ফেসবুকে অনেক পোষ্ট দেখলাম। একমত না। এমন জনবহুল দেশে এই ধরনের সমস্যা থাকবেই। ভারতে এলে আমি গাড়িতে হাজার হাজার মাইল এদিক ওদিক যায় এবং এমন অবস্থা পথ ঘাটের, যেকোন দিনই মৃত্যুর জন্যে প্রস্তুত হয়েই পথ চলতে হয়। এটা না মেনে উপায় কি। সরকার ধার করে মাইনে দেয়-বাকি ইনফ্রাস্টাকচারের জন্যে কোন টাকা নেই-যেটুকু থাকে, সবটাই কোরাপ্ট হাতে যায়।
আমাদের অনেকেরই বোধ করি একই অবাস্থা! পত্রিকার পাতায় একের পর এক দুঃসংবাদ। বাংলা টেলিভিশন চ্যানেল গুলোতে বাদ-প্রতিবাদ আর হতাশার চিত্র, খুন-খারাবী আর মর্মান্তিক দূর্ঘটনার খবর। চারিদিকে শুধু হতাশা। টেলিফোনে যখন আব্বা-আম্মার সাথে যখন কথা হয় বলেন, “আমরা ভাল আছি।” ভাল না থেকে উপায় কি!
তারেক মাসুদের অকাল মৃত্যুতে আমরা শোকাহত। “মাটির ময়না” বেশ কয়েকবার দেখেছি, প্রবাসে বন্ধু-বান্ধবদের ও দেখিয়েছি।আজকে আবার দেখবো। “মুক্তির গান” দেখা হয় নাই, কপিটা যোগার করতে হবে।
ফরি্দ ভাই,আপনাকে অনেক ধন্যবাদ তারেক মাসুদের কর্মজীবনের উপর আলোকপাত করার জন্য।
@গোলাপ,
এখানে সম্পূর্ণ মুভিটা আছে। দেখে নিতে পারেন।
অনেক ধন্যবাদ, ফরিদ ভাই।
আমার মনে হয় সড়ক দুর্ঘটনা প্রতিরোধে আমাদের কোন সরকারই আন্তরিক নন।
এ ব্যাপারে আমার দুই টি পরামর্শ।
১।শোনা যায় ঘুষের বিনিময়ে নাকি ড্রাইভিং লাইসেন্স মিলে যায়।এটা প্রতিরোধ করে ঘুষ ব্যতিরেকেই একমাত্র যোগ্য প্রার্থির হাতেই ড্রাইভিং লাইসেন্স টা তুলে দেওয়ার ব্যবস্থা করতে হবে।
২।যত মূল্যের বিনিময়েই হউক,আমাদের দুরপাল্লার রাস্তাগুলিকে ডিভাইডার সহ ৪ লেন বিশিষট করতে হবে।
খুব বেশী কিছু জল্পনা কল্পনার প্রয়োজন নাই।মাত্র এই দুইটা পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করলেই সড়ক দুর্ঘটনার একটা বিরাট সংখ্যা কমে যাবে।
হ্যা, মাত্র এই দুইটা পরিকল্পনাই। অন্যথায় সড়ক দুর্ঘটনা কমিবার আমি কোনই পথ দেখিনা।
ধন্যবাদান্তে,
আঃ হাকিম চাকলাদার
নিউ ইয়র্ক
কেন জানি ভালো, কুসংস্কার মুক্ত ও মুক্ত বোধ বুদ্ধি সম্পন্ন অলোর পথে এগিয়ে চলা মানুষ গুলোর জীবন বেশী দিন স্থায়ি হয় না! সেই তুলনায় খারাপ, মিথ্যাবাদি, ছল চাতুরির আশ্রয় নেয়া মানুষগুলি লাভ করে দীর্ঘ জীবন। :-Y
তারেক মাসুদ বাঙলাদেশের একমাত্র আন্তর্জাতিক মানের চলচ্চিত্রকার ছিল, এতে মনে হয় কেউই দ্বিমত করবে না। জানি না এই ক্ষতি পূরন করাটা কতদিনে সম্ভব হবে। কিংবা আদৌ সম্ভব হবে কিনা। মাটির ময়না, অন্তর্যাত্রার মতন সিনেমা বাঙলাদেশে আবার তৈরী হতে কত্ দিন লাগে তা আমাদের জানা নেই।
শোক জানানোর ভাষা নেই আসলে।
মৃত্যু কামনা মোটেই সভ্য নয়, কিন্তু আমি বুঝি না আমাদের দেশের রাজনীতি ব্যাবসীগুলো না মরে কেন তারেক মাসুদ, মিশুক মুনীরের মতন মেধাবীদের প্রান দিতে হচ্ছে?
শ্রদ্ধা তাদের প্রতি অন্তর থেকে।
:candle:
“”দক্ষতা পরীক্ষা ছাড়াই প্রায় সাড়ে ২৪ হাজার লোককে যানবাহন চালানোর পেশাদার লাইসেন্স দেওয়ার প্রক্রিয়া চলছে। মোটরযান আইনে ভারী মোটরযান চালানোর জন্য সরাসরি পেশাদার লাইসেন্স দেওয়া নিষিদ্ধ। কিন্তু নৌপরিবহনমন্ত্রী শাজাহান খানের চাপে আবার এমন ঘটনা ঘটতে যাচ্ছে। নৌমন্ত্রী শাজাহান খান বলেন, ‘দেশে প্রতিবছর গড়ে ৪০ হাজার যানবাহন নামছে। কিন্তু বিআরটিএর লাইসেন্স দেওয়ার ক্ষমতা আছে ১১ হাজার।””
http://www.prothom-alo.com/detail/date/2011-08-07/news/176229
:-Y :-Y :-Y
আর কতজন????????????
:candle:
আমিও দেশের পত্রিকা পড়া ছেড়ে দিয়েছি বহুদিন হল। পড়ে কি হবে – পত্রিকা খুললেই কেবল হত্যাকান্ড, খুন, যখম আর সরক দুর্ঘটনায় মৃত্যু। তারেক মাসুদ মারা গেছেন – তারপরেও এই দুঃখজনক খবরটি জানা বাকি থাকে নি। জেনেছিলাম ফেসবুক থেকে। তারপর থেকেই অসহ্য এক যন্ত্রণা বুকে নিয়ে বেড়াচ্ছি। মুক্তমনায় এসে আপনার লেখাটা খুলেই যন্ত্রণাটা আরো বেড়ে গেল। সড়ক এবং যোগাযোগের অব্যবস্থায় আমরা কেবল সূর্যসন্তানদের হারিয়েই চলেছি। আমার মতে এগুলো দুর্ঘটনা নয়, স্রেফ গাফিলতি। সরকারী গাফিলতির কারণে রাস্তাঘাটগুলোকে নর্দমা বানিয়ে রেখেছে যোগাযোগ মন্ত্রণালয়। সেদিক থেকে এটি হত্যাকাণ্ড। হত্যাকাণ্ডের জন্য যোগাযোগমন্ত্রীর বিচার হওয়া উচিৎ।
@অভিজিৎ,
“হত্যাকাণ্ডের জন্য যোগাযোগমন্ত্রীর বিচার হওয়া উচিৎ।”
আমারও একই দাবী……. :guli: :guli: :guli:
আরেকটা ব্যাপার বলা হয়নি। তারেক মাসুদের পাশাপাশি আরেকজন প্রতিভা ঝরে গেছে এ দুর্ঘটনায়, হয়তো তারকে মাসুদের নামের আড়ালে ঢাকা পড়ে গেছে তার নাম। তিনি হচ্ছেন শহীদ মুনীর হোসেন তনয় মিশুক মুনীর। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে বড় হবার সুবাদে উনাকে কাছ থেকে দেখার সৌভাগ্য আমার হয়েছিলো ছোটবেলায়। তিনি এটিএন নিউজের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ও প্রধান সম্পাদক ছিলেন। মৃত্যুর খবরটি শোনার পরেও আমি ঠিক রিলেট করতে পারিনি – তিনিই ছিলেন আমার ছোটবেলায় দেখা মিশুক ভাই।
শ্রদ্ধা জানাচ্ছি তারেক মাসুদ এবং মিশুক মুনীর সহ যারা দুর্ঘটনায় নিহত হয়েছেন।
:candle:
@অভিজিৎ, ভাবতেও পারবেননা সব দিক থেকে সমস্যায় জর্জরিত হয়ে আমরা কি অবস্থায় দিন কাটাচ্ছি। আমরা খেতে, পরতে, পড়তে তো পারছিইনা, সেই সাথে রয়েছে এ ধরণের মৃত্যুগুলো। আমার মা কাল একটা কথা বলছিলেন, “দেশের জনসংখ্যা যে ১৬ কোটি এইটা হাসিনা মানেনা, সে বলে জনসংখ্যা নাকি ১৪ কোটি। নিজের কথা সত্য প্রমাণ করতেই মনে হয় সরকার মানুষ মারার অবস্থা তৈরি করতেছে”… কথাটা উদ্ভট তবু কতটা হতাশাজনক এই কথাটা, ভাবতে পারেন?
@অভিজিৎ,
বিচারবিহীন এইসব কথিত দুর্ঘটনা আসলেই তো দুর্ঘটনা নয়। হত্যা কিংবা হত্যা প্রচেষ্টা।
নাগরিক যে আদালতে বিচার চাইতে পারে তা তারা করে না, বেশীরভাগ ক্ষেত্রে অজ্ঞতার কারনে।
গণদাবীর পাশাপাশি আদালতে যাওয়াটা খুবই জরুরী বলে মনে করি।
(Y)
কাল থেকেই মুক্তমনায় কয়েক বার এসেছি। তারেক মাসুদ নিয়ে এখানে কোন লেখা নেই।
মাটির ময়না নিয়ে আমি খুব গর্বিত। এটা আমার অনেক বার দেখা সিনেমা।
দেশটাকে বোধ হয় আমরাই তলিয়ে যেতে দিচ্ছি; চুপচাপ থেকে থেকে,সবকিছু ভুলে গিয়ে।
আর সহ্য হচ্ছে না।
@ ফরিদ আহমেদ, এভাবে সব সূর্যরা চলে গেলে দেশ তো অন্ধকারে তলিয়ে যাবে। কে আমাদের আলোর পথ দেখাবে?
তারেক মাসুদ ও মিশুক মুনীরের মতো লোক বাংলাদেশের খুব প্রয়োজন ছিল। আমরা যারা এ দেশে বসবাস করি, যারা ধর্মকে, কুংস্কারকে এরিয়ে মুক্ত মন নিয়ে চলতে চাই তারেক মাসুদ তাদের উৎসাহ জোগাতেন, একটা সপ্নো দেখাতেন।
ভীষণ কষ্ট হচ্ছে। তীব্র যন্ত্রণা।
ভোরবেলার প্রথম সংবাদ। বুক ফেটে যাওয়া দুঃসংবাদ। আশা করে যাদের দিকে তাকিয়ে থাকি তারেক মাসুদ তাদের একজন। ছিলো। যেটুকু করে গেল, নতুনরা যেন তার সবটা নেয়। উজ্জিবীত হয়। অনেকগুলো তারেক মাসুদ হয়।
আরো অনেকগুলো জ্বলজ্বলে নতুন তারা বাংলাদেশের আকাশে এখন দ্যুতি ছড়াচ্ছে। ওদের যত্ন নেওয়া দরকার।
তারেকের জন্য শোকশিখা নয়, ফুল দিয়ে ভালোবাসা জানাচ্ছি (F)
প্রতিদিন কাজ করতে হয়, কর্মস্থলে খবরটা পেলাম, তখন দুপুর। আমার বাস্তবতা হলো, কান্না পেলেও আমি কাঁদতে পারিনা। খদ্দেরদের সাথে হেসে কথা বলতে হয়।
তারিক মাসুদের মৃত্যু, মনে করিয়ে দিল আলমগীর কবিরের মৃত্যুকে।
তারিক মাসুদ এবং ক্যাথেরিন সম্পর্কে প্রথম ধারণা পাই ৯৮ এ, নিঊ ইয়র্কে, বন্ধু মিথুনের কাছে। ক্যাথেরিনের বাংলা কবিতা পাঠ তাদের মুগ্ধ করেছিল। আমি মুক্তির গান দেখে মুগ্ধ, আলমগীর কবিরের জায়গাটা এবার পূর্ণ হবে। হলো না। হবে না। জহির রায়হান খুন, আর আলমগীর কবির এবং তারিক মাসুদকে কেড়ে নিল রাক্ষুসে আধুনিক যান-ব্যবস্থা।
আমরা কাঁদবো, কাঁদতেই থাকবো
আমরা হারাবো, হারাতেই থাকবো
এভাবেই বৃত্ত-বদ্ধ
আমরা একদিন অতীত হয়ে যাবো
অসাধারন বলেছেন! (Y)
খুবই সাধারন বলেছেন। (N)
@আতিকুর রাহমান সুমন,
এখানে এই আলোচনায় বিতর্ক অনাকাঙ্খিত। কিন্তু বলেন তো আপনার কাছে বাঙলাদেশের কোন দিকটা আশা জাগানিয়া মনে হয়েছে?
@সাইফুল ইসলাম, আমার মতে নৈরাশ্যবাদ আর আশাবাদ দুটোই Self-fulfilling prophecy. 🙂