অর্ধেন্দু বন্দ্যোপাধ্যায়

পৌষ মাসের উত্তুরে হাওয়া বাঙালির জীবনে বনভোজনের আমেজ নিয়ে এসেছে ইতিমধ্যেই। বাঙালি এখন সকালের কুয়াশা সরিয়ে চায়ের কাপ হাতে নিয়ে অপেক্ষা করছে কখন সাইকেলের বেল বাজিয়ে বারান্দায় ছুড়ে দেওয়া হবে খবরের কাগজখানি। তারপর সে মেতে উঠবে ঔপনিবেশিক সংস্কৃতির নস্টালজিয়ায়। কিন্তু ততক্ষণে ক্যালেন্ডার ২০২১ থেকে ২০২২-এ চলে গিয়েছে। একইসঙ্গে তখনই নব্য-ঔপনিবেশবাদ যাকে কিনা সাম্রাজ্যবাদের অন্তিম অধ্যায় হিসাবে ১৯৬৫ সালে কুয়ামি এনক্রুমাহ্‌ দেখিয়েছিলেন তার রঙও ক্রমশ ফিকে হয়ে গিয়েছে। সময় ও প্রযুক্তির চতুর্থ ডাইমেনশন হিসাবে তখন এক অপার্থিব উপনিবেশের সত্তা উদ্ভাসিত হতে শুরু করেছে। কিন্তু বাঙালি কি সে-দিকে একবারও তাকাচ্ছে নাকি তাকিয়েও মাটিতে মুখ গুঁজে অস্বীকার্যের আশ্রয়ে নিরাপত্তার অনুসন্ধান করছে – সেটাই ভাবিকালের মূল জিজ্ঞাসা! 

অথচ এমনটা তো নয় যে চোখের সামনে স্পষ্টত কিছুই নেই। মাত্র কয়েক বছর আগেই কেমব্রিজ অ্যানালিটিকার কুখ্যাত তথ্য কেলেঙ্কারির ঘটনা উন্মোচিত হয়েছিল যেখানে ব্রিটিশ কোম্পানিটি (যা হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপকের সাহায্যে ডিজাইন করেছিল একটি অ্যাপ যার নাম ‘দিস ইজ ইওর ডিজিটাল লাইফ’) ফেসবুকের মতো সামাজিক মাধ্যমের সঙ্গে যোগসাজশ করে আশি মিলিয়ন মানুষের রোজনামচার ও রুচির তথ্য বিনা অনুমতিতে সংগ্রহ করেছিল এবং আটষট্টিটির মতো দেশের গণতান্ত্রিক নির্বাচনকে প্রভাবিত করেছিল (যার অন্তর্গত ছিল ব্রেক্সিট ও আমেরিকার প্রেসিডেন্সিয়াল নির্বাচনও)। এই ঘটনার তাৎপর্য শুধুমাত্র নব্য-অপরাধতত্ত্বের সীমানায় আবদ্ধ নয়, বরং এর অভীপ্সা এক বিশেষ সাম্রাজ্যবাদী শক্তির জন্ম দিতে পারঙ্গম ও বদ্ধপরিকর। আর সে-কথাই মানুষকে ফিরে-ফিরে ভাবতে হবে।

সম্প্রতি কয়েকটি শব্দ বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ হয়ে দেখা দিয়েছে – ডিজিটাল, ডেটা ও সাইবার ঔপনিবেশবাদ। আপাতভাবে দেখলে শব্দ তিনটিকে ঘুরিয়ে-ফিরিয়ে সমার্থক হিসাবেই ব্যবহার করা হয়। কিন্তু প্রকৃতার্থে এই ত্রয়ীয় মধ্যে সূক্ষ্ম তফাৎ লুক্কায়িত আছে। ডিজিটাল স্পেস কথাটির সঙ্গে যুক্ত আছে এমন একটি অস্তিত্ব যা শুধুমাত্র স্থানিক স্তরে সীমাবদ্ধ না থেকে প্রযুক্তি ও সংস্থার দ্বারা তৈরি করা এমন এক মাধ্যমের অভিব্যক্তির অবস্থানে নিজেকে দাঁড় করায় যে তা আর মুখোমুখি কথোপথনের জালে আবদ্ধ থাকে না। ইন্টারনেট হল সেই স্তরে পৌঁছে যাওয়ার প্রধানতম রাস্তা। সেই স্পেস গণতান্ত্রিকতার এক নতুনতম অভিধাকেও যেমন সূচীত করে, তেমনই আবার একইসঙ্গে এর সেই ক্ষমতাও বিদ্যমান যা সময়ে-সময়ে কিংবা প্রয়োজনে-প্রয়োজনে গণতান্ত্রিকতাকে নিজের সুরে বেঁধে দিতে অথবা স্তব্ধ করে দিতে সক্ষম। এই স্পেসে জ্ঞান হিসাবে শুধুমাত্র তথ্য (Information) প্রধানতম পণ্য যাকে একইসঙ্গে উৎপাদন ও বিক্রি দুই-ই করা যায়। ফলে এইখানে যার দখলদারি কায়েম হবে সে আগামীর নিয়ন্তা হিসাবে বিশেষ মর্যাদা অবশ্যই পাবে। একুশ শতকে এখনও অব্দি এই ক্ষেত্রে সাদা চামড়ার পশ্চিমি প্রযুক্তিবিদ পুঁজিপতিরাই নিজেদের আসন বজায় রেখেছে। তারা নিজেদের দেশের তথ্যকে (data) আইনের নৈতিক বৈধতার অজুহাতে সুরক্ষিত রেখেছে কিন্তু আফ্রিকার মতো অনুন্নত ও ভারতের মতো উন্নয়নশীল দেশগুলির তথ্যভাণ্ডারকে (data) দখল করছে ও নিজেদের বিচারের দ্বারা তাকে স্বার্থানুযায়ী বিশ্লেষণ করে অনুপ্রবেশ ঘটাচ্ছে বিকৃত তথ্যভাণ্ডারের (Information)। এইভাবে তারা একেকটি স্থানিক অঞ্চলের ওপরে অধিকার স্থাপন করছে ডিজিটাল উপনিবেশ স্থাপনের মাধ্যমে। পক্ষান্তরে ডেটা উপনিবেশবাদ হল একটি, 

emerging order for appropriating and extracting social resources for profit through data, practiced via data relations

ডেটাই হল বর্তমানের মূল পুঁজি। এই পুঁজিকে ব্যবহার করে উৎপাদিত হয় প্রয়োজনীয় ইনফরমেশন। যার কাছে যত বেশি ডেটা সে তত বড় পুঁজিপতি। এমনকি সেই-ই হল সম্রাট যে যথাসময়ে নিজের খুশিমতো ইনফরমেশন সৃষ্টি করে নিজের সাম্রাজ্যের এক্তিয়ার বৃদ্ধি করতে পারে। বৈশ্বিক উত্তর বৈশ্বিক দক্ষিণের ওপরে এইভাবেই যে-শাসন কায়েম করেছে তাকে ডেটা কলোনাইজেশন বলা যায়। এবার আসা যাক সাইবার ঔপনিবেশবাদের কথায়। এটি হল একটি পদ্ধতিগত অনুপ্রাস যা কোনো স্থানিক অঞ্চলের সামাজিক, রাজনৈতিক, আর্থনীতিক দুর্বলতা ও ক্ষমতাগুলির তথ্য (data) সংগ্রহের প্রক্রিয়াকে অবিচল রাখে এবং ক্রমাগত প্রযুক্তির উন্নয়নশীল বিন্যাসের তাৎপর্যে তথ্যভিত্তিক(Information) জ্ঞানের অপার্থিব দুনিয়াকে নিজেদের নিয়ন্ত্রণাধীন দাসে পরিণত করতে থাকে। এই অর্থে,  

the term cybercolonialism, in its conceptualization, foregrounds the spatial process, the space, within which this techno-discursive power emerges. It points to the new geopolitical orders that emerge with cyberspace, through which the new dynamics of financial, social, political and ecological exploitations are realized” 

অর্থাৎ, ডিজিটাল স্পেস হল একটি সাম্রাজ্য, সেই সাম্রাজ্যের নিয়ন্ত্রক হল ডেটাভিত্তিক ইনফরমেশন এবং ইনফরমেশন আরোপিত নতুন ডেটা। আর ডেটা ও ইনফরমেশনের সংগ্রহ, বিশ্লেষণ, উৎপাদন ও বন্টনের পদ্ধতিতন্ত্র হল সাইবার দুনিয়া। প্রত্যেকটি স্তরে ধাপে-ধাপে যে সাম্রাজ্যবাদ যেখানে প্রতিষ্ঠিত হচ্ছে সেখানেই সৃষ্টি হচ্ছে উপনিবেশ। 

এইসব উপনিবেশে আবার সৃষ্টি হয় সাব-অলটার্ন ও সাইবার স্পেসের যৌথতায় সাইব-অলটার্নের ধারণাটি। নিম্নবর্গের যে-ধারণার কথা এতকাল সকলে জেনে এসেছিল তা হল ক্ষমতার বিন্যাসে উচ্চবর্গে থাকা মানুষের দ্বারা যাদের আওয়াজকে স্তব্ধ করে রাখা হয়েছে তারা হল নিম্নবর্গ। কিন্তু ডিজিটাল যুগের ডিজিটাল স্থানাঙ্কে এই ধারণার স্পেস কিছুটা বদলে যায় বলেই সাইব-অলটার্ন তত্ত্বের উদ্গাতা পাইনার তুজকু জানিয়েছেন। গবেষকরা প্রথমে বলেছিলেন যে, এই নতুন সময়ে যাদের অনলাইন থাকার ক্ষমতা নেই তারাই হল সাইব-অলটার্ন। কিন্তু যদি কোনো শ্রেণি অনলাইনই থাকতে না পারে তবে তাদের সম্বন্ধে তথ্য সংগ্রহ করা একপ্রকার অসম্ভব হয়ে যাবে। আর যদি সেটা হয় তবে তা কখনোই ডিজিটাল সাম্রাজ্যবাদের পক্ষে ভালো খবর হবে না। কেননা সেক্ষেত্রে তো জ্ঞানের অধিকারের মধ্যকার ফাঁক বলেই কিছু টিকিয়ে রাখা বেশিদিন সম্ভব হবে না। এমনকি সমাজের এক বৃহদংশের তথ্য (Data) তখন নাগালের বাইরে চলে যাবে যা আরেক বিরাট গহ্বর তৈরি করবে যথোপযুক্ত তথ্য (Information) সৃষ্টির দুনিয়াদারিতে। ফলে গবেষকদের এই ধারণা মোটেই স্বচ্ছ ও সঠিক ছিল না। তাই পাইনার তুজকু জানিয়েছেন, 

I suggest the term cybaltern as a neologism. Cybaltern differentiates between groups of individuals with and without material and practical access to the digital sphere. The term cybaltern does not designate necessarily those who do not enter the digital sphere, even as data, but those who appear in the digital interface and are still dismissed from the system. Moreover, cybaltern denotes the combination of the terms cyber and subaltern and thus indicates the subjectivities of cybercolonialism. Therefore, cybaltern represents groups of individuals whose voices are muted and rendered unheard, paradoxically despite and because of the digital tools available to them

অর্থাৎ বলা যায় যে, এটা প্রযুক্তিগত কোনো আয়ুধ নয় যা একটি শ্রেণিকে নিশ্চুপ করিয়ে রাখছে, এটা হল একটি পেশাদারিত্বের ভাষা যা দুটি শ্রেণির জ্ঞানের অধিকারের মধ্যকার অন্তরালকে বিস্তৃত করছে ও তথ্যের (Data) অধিকারকে সুনিশ্চিত করে তথ্যের (Information) অধিকার থেকে বঞ্চিত করছে। সুতরাং এইখানে উচ্চবর্গ শ্রেণি হিসাবে যে মুষ্টিমেয় ক্ষমতাবানদের চিহ্নিত করা যায় সেখানে বলাই যায় যে সমগ্র দুনিয়ার বেশিরভাগ জনসংখ্যাই সেখানে সাইবার নিম্নবর্গ কিংবা সাইব-অলটার্ন। এমনকি সেই সব পুঁজিপতিরাও সাইব-অলটার্ন যারা প্রযুক্তির নতুন দুনিয়াদারিকে এখনও গ্রহণ করতে অক্ষম। তারাও বিলীন হয়ে যাবে যদি না তারা এই নতুন ব্যবস্থাকে আত্মস্থ করতে পারে। এখানে তারাই সম্রাট যাদের কাছে প্রযুক্তি ও অর্থ দুইয়ের পুঁজিই বর্তমান।

এখন ভারতের কথা বিচার করলে তারা এইক্ষেত্রে অগ্রণী ভূমিকা পালনের ব্যাপারে যে কোন্‌ অজ্ঞানতার দুনিয়ায় পড়ে আছে তা কষ্টকল্পিত নয়। এখানকার বেশিরভাগ বুদ্ধিজীবী ও ক্ষমতাসীন নেতৃবর্গ এই ব্যাপারে উদাসীন। তারা অনুধাবন করছে পারছে না যে, সপ্তদশ শতকে ভারতের সম্পদের প্রতি লোভাতুর হয়ে যেমন ব্রিটিশ সাম্রাজ্যবাদী শক্তি ছুটে এসেছিল ও দুই শতকের বেশি সময় ধরে শোষণ ও লুঠতরাজ চালিয়ে নিজেদের দেশকে উন্নত করেছিল, তেমনই এখনও মার্কিনসহ অন্যান্য পশ্চিমি দুনিয়া ভারতের দিকে লোলুপ দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে। কেননা এই দেশের ব্যাপক বিস্তৃত জেনেটিক্স, সংস্কৃতি, প্রাকৃতিক সম্পদ, রুচি ও ভিন্নধর্মী চিন্তার যে সুবিশাল অসংগঠিত তথ্যভাণ্ডার (Data) তৈরির ক্ষমতা আছে তা এককথায় অদ্বিতীয়। রাশিয়া কিংবা চীন এই ব্যাপারে অনেকখানি সতর্ক। ফলে সেখানকার চেয়ে ভারতের মাটি পশ্চিমি দুনিয়ার কাছে অনেক বেশি আকর্ষণীয় জায়গা। এই তথ্যভাণ্ডারকে (Data) ব্যবহার করে পশ্চিমি দুনিয়া তাদের কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তাকে আরও জোরদার রকমের শিক্ষিত করে গড়ে তুলছে ও নিজেদের বাজারগত কৌশলের ভিত্তিতে নানান সময়ে নানান তথ্য (Information) ছড়িয়ে দিয়ে প্রচার করে এই দেশের ভিন্ন শ্রেণির মানুষের পছন্দ-অপছন্দ, সক্ষমতা-অক্ষমতা, জরুরি সম্পর্ক, বিকিকিনির বাজার ও রুচি, আদর্শের স্তরগুলির ওঠানামা থেকে অভ্যাস ও অন্তর্ভুক্তির মতো নানান জায়গাগুলিকেও নিয়ন্ত্রণ করছে। এখন এমন এক অবস্থা তৈরি হয়েছে যার সম্বন্ধে রাজীব মলহোত্রা লিখেছেন, 

Facebook, Twitter, and Google know more about Indians than social scientists, government, gurus, or even the people themselves. This gives them the power to influence the public

 বিদেশি এই সব সংস্থাগুলি যখন-তখন নির্বাচন করে এমন কিছু মানুষকে যার দ্বারা তাদের গোপন উদ্দেশ্য সাধিত হবে এবং তার কার্যকলাপকে ভাইরাল করে দেয়। তারপর নিয়ন্ত্রণ করে কোনো কোনো শ্রেণির মানুষের চরিত্র, ভবিতব্য ও সামাজিক অবস্থানটিকেও। তখন অনেকগুলি মানুষ চলে আসে একই ছাতার তলায়, ফলো করতে থাকে ভাইরাল হওয়া অস্তিত্বটিকে। কিন্তু তারা সাধারণত আর ভাইরাল হয় না। অথচ সমাজের একটা বৃহৎ অংশ একটা নির্দিষ্ট কাজে যুক্ত হয়ে পড়ে। এর প্রয়োজন ফুরিয়ে গেলে আবার আসে অন্য ও নতুনতর আরেকটি ধারা যার মাধ্যমে পশ্চিমি দুনিয়া নিজেদের আদর্শবাদকে অন্যের সমাজে প্রোথিত করে ও তৈরি করে নানান ক্যাটেগোরি – কিছুক্ষেত্রে বিরোধাত্মক কিছুক্ষেত্রে ভিন্নার্থক। ব্রিটিশ শক্তির মতো করে ‘ডিভাইড অ্যান্ড রুল’ পলিশি তারা অপার্থিব জগতেও চালাতে থাকে আর নিয়ন্ত্রণ করে পার্থিব অস্তিত্বগুলিকে। এককথায় একটি দেশকে। আসলে এরা স্বাধীন চিন্তার বিস্তারের কথা বলে ঠিকই কিন্তু আদতে মনস্তাত্ত্বিক স্তরে এরা মানুষের চিন্তাকে নিজেদের চাহিদা মতো প্রভাবিত করে নিজেদের স্বার্থের দিকে পরিচালিত করে থাকে। ব্রিটিশরা যেমন ইন্ডোলজির মতো বিষয়ের জন্ম দিয়েছিল ভারত সম্বন্ধে গ্যূঢ় তত্ত্ব ও তথ্য সংগ্রহের জন্য, তেমনই বর্তমানের আর্থনীতিক দৈত্য আমেরিকা সাউথ এশিয়ান স্টাডির জন্ম দিয়েছিল বৈশ্বিক দক্ষিণ সম্পর্কে সবকিছু জেনে নেওয়ার উদ্দেশ্যে। একুশ শতকের প্রযুক্তি এই ধারারই বিবর্তিত রূপ মাত্র। যাদের কাছে এই আদলের ওপর অধিকার যত বেশি তারাই এই যুগের শাসক।

আগের যুগের মোটা গদিতে বসা মহাজন কিংবা কারখানা চালানো পুঁজিপতির কথা সকলকে ভুলে যেতে হবে। এখনকার পুঁজি হল মূলত তথ্য (Data) ও তথ্যের বিশ্লেষণে নতুনতর তথ্যের (Information) সক্ষমতার স্তর। তাই-ই বিল গেটস, এলন মাস্ক, মার্ক জুকারবার্গ ও জেফ বেজোস প্রমুখের হাতে দুনিয়ার রথ প্রায় চালিত হচ্ছে বলেই দেখা যাচ্ছে। নয়তো আপনিই ভাবুন কোন উদ্দেশ্যে বিল গেটসের মতো একজন প্রযুক্তিকেন্দ্রিক পুঁজিপতি আমেরিকাতে ইতিমধ্যে ২৪২,০০০ একর চাষযোগ্য জমি কিনে রাখছে? আসলে তিনি জানেন যে আগামী দুনিয়াতে জিও-ইঞ্জিনিয়ারিং ও কৃত্রিম খাদ্যের যে-চাহিদা তিনি তৈরি করবেন তার জোগানের ক্ষমতাও যেন তাঁর হাতে থাকে। আজকে যদি সাধারণ মানুষ থেকে নেতৃবর্গ এই অবস্থাকে না অনুধাবন করতে পারে তবে নব্যতর ঔপনিবেশবাদের লোহার শেকল তাদের নিশ্চিত বিধিলিপি। পার্থিব স্তরে শ্রেণিহীন সমাজ তৈরি হবে ঠিকই, কেননা উপভোক্তা ও ক্রেতার দুনিয়ায় এসবের মূল্য মামুলি, আর তাই-ই অপার্থিব স্তরে ভয়ংকর হবে শ্রেণিবিভক্তিকরণ। আর সেখানে অপার্থিব বিপ্লবগুলির মার্গদর্শকও হবেন নব্য-পুঁজিপতিরাই। হয় মানুষ এখনই যুঝে নিতে, বুঝে নিতে শিখুক নয়তো অপেক্ষা করুক এক অতলান্ত অন্ধকারের দাসত্বের। সেখানে অফলাইন থাকার অর্থই হল স্বাধীনতা, কিন্তু এবং কিন্তু, আপনার অস্তিত্বরক্ষার সংগ্রাম তো আপনাকে অফলাইন থাকতে দেবে না। সুতরাং, … 

তথ্যসূত্র :

  1. Pinar Tuzcu, Decoding the cybaltern: cybercolonialism and postcolonial intellectuals in the digital age, Postcolonial Studies, 2021
  2. https://www.orfonline.org/expert-speak/the-quest-for-cyber-sovereignty-is-dark-and-full-of-terrors-66676/
  3. https://www.inss.org.il/publication/cyber-colonization-the-dangerous-fusion-of-artificial-intelligence-and-authoritarian-regimes/
  4. https://en.wikipedia.org/wiki/Electronic_colonialism
  5. https://theprint.in/tech/digital-colonialism-why-countries-like-india-want-to-take-control-of-data-from-big-tech/298217/
  6. https://www.outlookindia.com/website/story/opinion-digital-colonization-its-all-about-market-access/367198
  7. https://newsable.asianetnews.com/technology/digital-colonization-india-is-for-sale-excerpt-vpn-qqgrc9
  8. https://www.nytimes.com/2015/06/07/magazine/welcome-to-the-age-of-digital-imperialism.html
  9. অন্যান্য