আজকেই ইজরায়েল অস্ত্র ত্যাগ করুক, আগামীকালই পৃথিবীর মানচিত্রে ইজরায়েল বলে কোন দেশ খুঁজে পাওয়া যাবে না, কিন্তু ইজরায়েলেরও আত্মরক্ষার অধিকার আছে। ইজরায়েলের জন্মলগ্ন থেকেই লেগে আছে অস্তিত্ব-রক্ষার যুদ্ধ, এপর্যন্ত ছয়বার আক্রান্ত হয়েছে দেশটি। ইহুদি এবং আরব মিলিশিয়াদের মধ্যকার খণ্ডযুদ্ধ পূর্ণাঙ্গ যুদ্ধে রূপ নেয় ১৯৪৮ সালে ব্রিটিশ ‘ম্যানডেট অফ প্যালেস্টাইন’ ঘোষণার সাথে সাথে। ইহুদিরা ইজরায়েলের স্বাধীনতার দেয়ার পরক্ষনেই মিশর, জর্ডান, লেবানন, সিরিয়া একযোগে ইজরায়েলের উপর আক্রমণ করে। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের ক্ষত নিয়ে ইহুদিরা এই যুদ্ধে জিতে প্রমাণ করে ইহুদিরা হলো ফিনিক্স পাখি, কনসেন্ট্রেশন ক্যাম্পের পটাশিয়াম সায়ানাইড জিকলন গ্যাসে পুড়ে যাওয়া ছাই থেকে জন্ম নেয়া পৌরাণিক পাখির দল। ১৯৪৮ সালে আরব-ইজরায়েলি যুদ্ধে হেরে যাওয়া দেশগুলোর সাথে ১৯৮৯ সালে ইজরায়েলের অস্ত্র বিরতি চুক্তি হয় এবং সীমানা নির্ধারণ হয় যার নাম গ্রিন লাইন বলে আমরা জানি।
কিন্তু যেদেশগুলোর সাথে যুদ্ধ বিরতি (নামগুলো খেয়াল করুন) সেই দেশের মানুষ এবং তাদের কালচারের আলসারে এত ক্ষত যে তারা সিরিয়া, মিশর, জর্ডানের সীমান্তে সুড়ঙ্গ খুঁড়ে অবৈধভাবে ইজরায়েল প্রবেশ করে সেখানে রকেট ছুড়ে মারে, পাথর ছুড়ে মারে, বেসামরিক নিরীহ মানুষ মারে, স্কুলের বাচ্চাদের বোমা মারে, জিম্মি করে, অতর্কিত হামলা করে ফিরে আসে। আরব দেশগুলো সবাই মিলে ফেদাইন জঙ্গি-দলে অর্থায়ন করে। তারা চোরাগোপ্তা হামলা করে। প্রতিরোধে ইজরায়েলের রেগুলার আর্মির সাথে ১৯৫০ থেকে ১৯৬০ সাল পর্যন্ত ইজরায়েলের নিরাপত্তাবাহিনী, গোয়েন্দা, বিজ্ঞানী, ব্যবসায়ী, গবেষক সবাই একযোগে সর্বাত্মক যুদ্ধে নেমে পড়েছিল। এরপরেই ১৯৬৭ সালের ঐতিহাসিক এবং হাস্যকর ছয়দিনের যুদ্ধ। প্রতিবেশী মিশর, জর্ডান, সিরিয়া, ইরাক, কুয়েত, সৌদি আরব, আলজেরিয়া, আরব আমিরাত সম্মিলিতভাবে ইজরায়েলকে আক্রমণ করে এবং শোচনীয়ভাবে পরাজিত হয়। যুদ্ধ বিরতির ফলস্বরূপ ইজরায়েল নতুন সীমান্ত রেখা টেনে জর্ডানের কাছে থেকে পশ্চিম তীরবর্তী অঞ্চলসহ পশ্চিম জেরুজালেমের একাংশ, সিরিয়ার কাছ থেকে গোলান মালভূমি আর মিশর থেকে সিনাই এবং গাজা উপত্যকা দখল করে নেয়।
১৯৬৭ থেকে ১৯৭০ সাল পর্যন্ত ইজরায়েল স্বল্প মাত্রার যুদ্ধাবস্থার মধ্যে ছিল। ছয়দিনের যুদ্ধে ছিনিয়ে নেয়া সিনাই ভূখণ্ড পুনর্দখল করতে ইজরায়েলের বিরুদ্ধে যুদ্ধ শুরু করে দিলো মিশর। মিশরকে সবকিছু দিয়ে সাহায্য করে তৎকালীন সোভিয়েত ইউনিয়ন, জর্ডান, সিরিয়া এবং ইয়াসির আরাফাতের প্যালেস্টাইন লিবারেশন অর্গানাইজেশন (পিএলও)। কিন্তু লাভের গুড়ে বালি, মিশর সূচ্যগ্র জমিও উদ্ধার করতে পারে না। মিশর সিরিয়াকে সাথে নিয়ে হারানো ভূখণ্ড পুনর্দখল করতে মরিয়া হয়ে ১৯৭৩ সালে ২৬ অক্টোবর ইহুদিদের ‘ইয়োম কিপ্পুর’ ধর্মীয় গুরুত্বপূর্ণ দিনে আক্রমণ করে। দেশ দুটি সিনাই এবং গোলান মালভূমির দখল নিলেও কিছুক্ষণের মধ্যে ইজরায়েল সেনাবাহিনীর কাছে শোচনীয়ভাবে পরাজিত হয়। ইজরায়েলি বিমান বিমানবাহিনী প্রায় কোনোরকম ক্ষয়ক্ষতি ছাড়াই মিশরের সবকটা বিমানঘাঁটি তছনছ করে দেয়। মিশরের বিমান উড়ার সুযোগও পায়নি সেদিন।
ইজরায়েল ১৯৮২ সালে লেবাননের সাথে যুদ্ধে জড়াতে বাধ্য হয়। ১৯৭১ সাল থেকে প্যালেস্টাইন লিবারেশন অর্গানাইজেশন তাদের যুদ্ধের কৌশল বদল করে তারা জর্ডান থেকে সরে পশ্চিম লেবাননের দিকে ঘাঁটি গাড়ে এবং এখান থেকেই ইজরায়েলের সামরিক স্থাপনায় হামলা করে। জবাবে ইজরায়েল ‘অপারেশন লিটানি’ চালিয়ে পিএলও’কে এলাকা ছাড়া করে। ক্রমাগত রকেট হামলার উত্তরে ইজরায়েল ১৯৮২ সালে সর্বাত্মক যুগপৎ যুদ্ধ শুরু করে। ইংল্যান্ডে নিয়োজিত ইজরায়েলি রাষ্ট্রদূত শ্লোমো আরগোভ নিহত হন আবু নিদাল নামের একটি জঙ্গি সংগঠনের হামলায়। ফলে যুদ্ধ অনিবার্য হয়ে ওঠে। লেবাননের সাথে এই যুদ্ধে ইজরায়েল লেবানন থেকে প্যালেস্টাইন লিবারেশন অর্গানাইজেশন নির্মূল করে এবং লেবানন সীমান্তে নিরাপত্তা জোরদার করে। ইজরায়েলের কিন্তু যুদ্ধ থেকে বিশ্রাম নাই। ১৯৮৫ সালে ইজরায়েলকে আক্রমণ করে বসে লেবাননের ইরান সমর্থিত লেবাননের হিজবুল্লাহ জঙ্গিদল। ১৯৮৫ থেকে ২০০০ পর্যন্ত দেশটিকে যুদ্ধ চালিয়ে যেতে হয়েছে বিভিন্ন দেশের অর্থায়নে মদদ-পুষ্ট সন্ত্রাসী দলের সাথে। এরই মাঝে ১৯৮৭ থেকে ১৯৯৩ সালের মধ্যে পশ্চিম তীর এবং গাজা ভূখণ্ডে ফিলিস্তিনদের মাঝে ইজরায়েলি বিক্ষোভ উত্তাল রূপ নেয়।
কিছুদিন বিরতির পর ২০০৬ সালে হিজবুল্লাহ দুইজন ইজরায়েলি সৈন্যকে অপহরণ করে ইজরায়েলকে যুদ্ধের ময়দানে টেনে আনে। ইজরায়েলি মিলিটারি অপহৃত সৈন্য উদ্ধারে নেমেই হিজবুল্লাহকে বাঁশ ডলা দিয়ে দেয় আর লেবাননের উপর আরোপ করে নৌ অবরোধ। ফিলিস্তিনি [খবরদার ইংরেজি ডিকশনারিতে এই শব্দের মানে খুঁজবেন না] শান্তিবাহিনী মাঝে মাঝেই ইজরায়েল সীমান্তে, স্কুলে, উৎসবে রকেট ফকেট মারে। খুন হয় নিরীহ মানুষ। পাল্টা ব্যবস্থা হিসেবে যখনই ইজরায়েলি রেগুলার আর্মি এগিয়ে আসে, ধ্বস নামিয়ে দেয় তখনই শান্তিবাহিনী বিশ্ব দরবারে “মরলাম রে, গিলাম রে, ইহুদিরা মাসলম্যানগের মাইরে ফেইল্লো রে” বলে শীৎকার চ্যাচামেচি শুরু করে দেয়।
তখন বিশ্বের বিবেক সমাজ ফেসবুকে সেইভ গাঁজা হ্যাশ ট্যাগের মাধ্যমে আন্তর্জাতিক ভ্রাতৃত্ব-বাদ জাগিয়ে তুলেছিল। তখন সেইভ গাজা হ্যাশ ট্যাগ জনপ্রিয়তার তুঙ্গে। সেইভ গাঁজা হ্যাশ ট্যাগ ভাইরালটা আমার খুব ভালো লাগছিল। সেইভ গাঁজা! কেন নয়? আর হ্যাশ ট্যাগ? গাঁজা সংক্রান্ত যেকোনো হ্যাশ ইভেন্টে আমারে ট্যাগ করবেন।
বি ব্রেভ লাইক ইজরায়েল। বি ফিনিক্স ফ্রম দ্য অ্যাশেজ। গাজা নিয়ে যুদ্ধের শেষ নাই! প্যালেস্টাইনের সুন্নি ইসলামের মৌলবাদী হামাসের সাথে যুদ্ধ লেগে যায় ২০০৮ সালের এক শীতের সুন্দর সকালে। তিন সপ্তাহের যুদ্ধে হামাসের রকেট, মর্টার, আবুল কাশেম ৪৭ আর পাথরের জবাবে ইজরায়েল তার অত্যাধুনিক এয়ার স্ট্রাইকে রকেটের উৎস, জঙ্গিদের আস্তানা লক্ষ্য করে হামলা করে যুদ্ধের সমাপ্তি টানে। হামাস কিন্তু তবু থেমে থাকেনি। তারা কিছুদিন পরেই তিন ইজরায়েলি কিশোরকে অপহরণ করে হত্যা করে ফলে আবার উর্ধমুখী উঠতে থাকে দুপক্ষের উত্তেজনার পারদ।
যতক্ষণ বেঁচে থাকবে ইহুদি আত্মা আমার হৃদয়ের গভীরে,
চোখের দৃষ্টি থাকবে পূর্ব দিকে একজন ইহুদিকে খুঁজতে।
তখনো আশা থাকবে, দুই হাজার বছরের পুরনো আশা,
আমাদের ভূখণ্ডে ঘুরবে মুক্ত মানুষ যথাতথা,
কখনো বিনাশ হবে না ইহুদি-প্রেম,
ইহুদিভূমি, আমার জেরুজালেম।
[ উপরের কবিতাটার হিব্রু নাম Hatikvah যার ইংরেজি শব্দার্থ Hope. পোলিশ বংশোদ্ভূত ইউক্রেনের কবি নাফতালি হার্জ ইমবার ১৮৮৬ সালে Hatkivah কবিতাটা লেখেন এবং স্যামুয়েল কোহেন ১৮৮৮ কবিতাটার উপর সুরারোপ করেন। ১৯৪৪ সালে আটককৃত ইহুদিদের যখন নাৎসি বাহিনী অসউৎজ এবং বারকিনাও কনসেন্ট্রেশন ক্যাম্পের গ্যাস চেম্বারে ঢোকাচ্ছিল তখন চেকোশ্লোভাকিয়ার ইহুদিরা Hatikvah কবিতাটিকে গানের মত গাইতে থাকে। ১৯৪৮ সালে ইহুদি রাষ্ট্র গঠিত হলে ইজরায়েল এই কবিতাটিকে ইজরায়েলের জাতীয় সঙ্গীত হিসেবে গ্রহণ করে ]
ঘৃণা গ্রন্থে পৃথিবীর শেষ দিন পর্যন্ত ইহুদি জাতির কোন স্থায়ী আবাসন হবে না এমন ভবিষ্যৎ বাণী দেয়া থাকলেও ১৪মে ইজরায়েলে পালিত হয়ে গেল দেশটির ৭২তম স্বাধীনতা দিবস। ইয়োচি ডেভিস নামের এক ইহুদি কবির ‘ইজরায়েলের প্রতি’ কবিতার ভাষান্তর দিয়ে লেখাটা শেষ করছি।
এমনকি ইজরায়েল যদি জ্বলে পুড়ে নিঃশেষ হয়ে যায়,
তবুও আমার অন্য কোন দেশ নাই।
হিব্রু ভাষায় একটা শব্দ শোনার জন্য আমার কী তীব্র ব্যাকুলতা,
শরীরের প্রতিটি শিরা এবং আমার আত্মা,
যন্ত্রণায় কাতর আমার শরীর, আমার ক্ষুধার্ত হৃদয় জানে ইজরায়েল আমার দেশ।
আমি চুপ থাকব না,
আমার দেশ পাল্টে যাচ্ছে, দেশের মুখে আজ বিশ্ব রাজনীতির বিকৃতি,
কিন্তু হাল ছেড়ে দেব না তাকে বারবার মনে করিয়ে দিতে,
তার কানের কাছে মুখ নিয়ে গাইব অসঙ্গতির গান,
যতক্ষণ তার চোখ না খোলে।
“তখন সেইভ গাজা হ্যাশ ট্যাগ জনপ্রিয়তার তুঙ্গে। সেইভ গাঁজা হ্যাশ ট্যাগ ভাইরালটা আমার খুব ভালো লাগছিল। সেইভ গাঁজা! কেন নয়? আর হ্যাশ ট্যাগ? গাঁজা সংক্রান্ত যেকোনো হ্যাশ ইভেন্টে আমারে ট্যাগ করবেন।” 😃 ভাই গলায় একটা চুলকানি বোধ করছি এ অংশটা পড়ে। ভাল লেগেছে তবে একটা কথা বলতেই হচ্ছে লেখার বিষয়বস্তু অনুপাতে লেখাটা ছোট। আর আমার জানামতে আব্রাহামিক ধর্মগুলোর মধ্যে ইহুদী ধর্ম প্রতিষ্ঠিত ধর্মগুলোর মধ্যে প্রথম। ইহুদীরা বহু আগে থেকে নির্যাতনের শিকার জানি। ইজরায়েলের না হোক ইহুদীদের আত্মরক্ষার ইতিহাস আরো পুরোনো। ভবিষ্যৎ এ ইহুদীদের ইতিহাস নিয়ে লেখা আশা করছি।
ইহুদিদের ইতিহাস নিয়ে বিস্তারিত জানার আগ্রহ তৈরী হলো।আশা করি লেখক সেই আশা মেটাবেন
আপনার লেখাটা একপাক্ষিক মনে হচ্ছে৷ “বি ব্রেইভ লাইক ইসরায়েল, বি দ্য ফিনিক্স ফ্রম এশেজ”। কথাগুলোর দ্বারা আমার বারবারই মনে হচ্ছে আপনি ইসরায়েল কর্তৃক যুদ্ধ ও যুদ্ধে নিজেকে প্রভাবিত করাকে সমর্থন করছেন। এই সমর্থনটা কতটা যৌক্তিক তা সঠিক বলা যায়না, কিন্তু এই সমর্থনটা, বা এই যুদ্ধবাদীতা অবশ্যই আক্রমণকারী ও আক্রমণ-আক্রান্ত উভয়ের জন্যই নেতিবাচক প্রভাবক হিসেবে কাজ করে৷
ইসরায়েলে Aleeya গুলো হবার আগে-পরে (আধুনিক যুগ আসার আগে) আমরা দেখেছি যে ইসরায়েলি জাতীয়তাবাদীরা কতটা অযৌক্তিকভাবে যুদ্ধলিপ্ত হতো৷
ধন্যবাদ৷
হ্যা বলতে দ্বিধা নেই যে, বেশ কয়েকটা মুসলিম দেশ সহ অনেকগুলো দেশ ইজরায়েলকে স্বীকৃতি দেয়ার পর এখন একে কিছুটা হলেও স্বাধীন দেশ বলা চলে। সে হিসাবে ‘আত্মরক্ষার্থে’ অথবা কূটনৈতিক কারণে যুদ্ধ হতে পারে। কিন্তু আপনি যেখান থেকে শুরু করেছেন- ১৯৪৮; তার আগের ঘটনা কিন্তু পুরোপুরি উটকো। ধর্মীয় ও জাতীয়তাবাদের দোহাই দিয়ে অনেকটা হাস্যকর ও জোরপূর্বক ‘ইশ্বরের প্রতিশ্রুত ভূমি’ উদ্ধারের লক্ষ্যে যখন ইজরায়েল গঠিত হয়, সমস্যা তো সেখান থেকে শুরু। শুধু তাই না, এই ‘ইশ্বরের প্রতিশ্রুত ভূমি’রও যে আদিপুরুষ প্যাগান প্যালেস্টাইনিরা, সেটার দিকেও তো তাকাতে হবে। সুতরাং, ঐতিহাসিক ভিত্তিতে মূসার সময়ের ইহুদি বলেন, আর ১৯৪৮ এর ইহুদি, তারা as usual ভূমি দখল করে এসেছে। এ হিসাবে তো বলাই যায় যারা ইশ্বরের দোহাই দিয়ে অবৈধভাবে ভূমি দখল করেছে, তাদের বিরুদ্ধে ভূমির আদিবাসীরা যদি অস্ত্র ধরেও থাকে সে কতটুকু অযৌক্তি?
লেখা পুরোপুরি একপাক্ষিক। সম্ভবত, অন্তত এটা ক্লিয়ার করে নেয়া উচিৎ ছিল যে কোন পারস্পেক্টিভে এবং কোন সময়ে ইজরায়েলের আত্মরক্ষার কথা কিসের ভিত্তিতে বলা হচ্ছে।
বিকাশ মজুমদার, আপনার লেখা পছন্দ করি, তাই জবাব দিতে এলাম। আপনার এই লেখাটি পুরো একপাক্ষিক হয়ে গেছে।
অস্ত্র ত্যাগ করলে শুধু ইসরাইল না, যেকোনো রাষ্ট্রের অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখা প্রায় অসম্ভব। ধর্মীয় ও জাতীয়বাদি চেতনা থেকে ইসরাইল রাষ্ট্রের সৃষ্টি – দুটাই বিপদজনক। তাদেরকে কেন ইসরাইল রাষ্ট্র সৃষ্টি করতে হয়েছিল? হুট করে এভাবে ধর্ম ও জাতীয়তার দোহাই দিয়ে যেখানেই একটি উটকো রাষ্ট্র তৈরী করতে যাবেন সেখানেই বাধা পাবেন। তাদের শুরুতেই বিশাল সমস্যা, তাই এর ভাল ও মানবিক কোনো সমাধান ও ব্যাখ্যা পাওয়ার আশা করা যায় না।
মুসলমানদের সমস্যা কী সেটা নিয়ে কিশোর বয়স থেকে লেখছি, ঘাড়ে মাথাটা কিভাবে যেন রয়ে গেছে শুধু। ওখানে ইহুদিদের জায়গায় যদি মুসলমানরা একটা রাষ্ট্র তৈরী করত আর তারা যদি ভিন দলের মুসলমানদের ইসরাইলের চেয়ে কয়েকগুণ বেশি খুন করত তবুও সেটা নিয়ে কোনো ঝামেলা হত না, এমনকি এসব খুনের কথা জানাও যেত না হয়ত। সাদ্দাম হোসেন বিশাল সংখ্যক মুসলমানদের খুন করার পরও সে হিরো ছিল মুসলমানদের কাছে।
বাংলাদেশে কোটি কোটি হিন্দু ভিটামাটি ছেড়ে ভিখারি হালে দেশ ছেড়েছে, একাত্তরে নিহত হয়েছে, এখনও ভীতির মধ্যে আছে সেগুলো নিয়ে কোনো অনুভূতিই নাই এদেশের মুসলমানদের মধ্যে অথচ তারা ‘সেভ গাজা’ নিয়ে মেতে উঠে।
যাই হোক, ইতোমধ্যে ইসরাইলকে স্বীকৃতি দিয়েছে কিছু মুসলিম দেশ সহ বেশিরভাগ দেশ। তাই ইসরাইল একটি বৈধ রাষ্ট্র। ইসরাইলকে সংযত ও মানবিক আচরণ করতে হবে, সীমান্ত প্রসারিত করা বন্ধ করতে হবে, তাদের ফালতু ধর্মীয় চেতনা ভিত্তিক জাতীয়তাবাদের অবসান ঘতাতে হবে। অপরদিকে মুসলিম দেশগুলো যদি ইসরাইলের সাথে সম্পর্ক তৈরী করত তবে তারা কিছুটা হলেও চাপ দিতে পারত ইসরাইলকে।
ইহুদী ধর্ম ও তার সার দর্শন সম্পর্কে কিছু লিখতে অনুরোধ রইল।