বাংলাদেশে ভিন্ন সম্প্রদায়ের উপর বড় হামলা শুরু হয় ৯০ দশক থেকে। বাবরি মসজিদ ঘটনায় বাংলাদেশ থেকে কয়েক লক্ষ মানুষকে দেশ থেকে উচ্ছেদ হয়। এর পর বড় হামলা আসে ২০০১ সালে বিএনপি-জামাত ক্ষমতা আসার পর। সেই সময় পূর্ণিমা শীল নামের একটি বাচ্চা মেয়েকে কয়েকজন মিলে ধর্ষণ করে। মেয়ের জীবন বাঁচাতে অসহায় মা ধর্ষকদের পা’চেয়ে ধরে বলেছিল; আমার মেয়েটা ছোট তোমরা একজন একজন করে যাও! ২০০১-এর পর ভিন্ন সম্প্রদায়ের উপর হামলার বিচার একমাত্র পূর্ণিমা পেয়েছে তাও ১০ বছর পর ৪ মে ২০১১ তে! এরকম হাজারো পূর্ণিমা নির্যাতিত হয়েছেন, নির্যাতনের ক্ষত শরীর ও মনে নিয়ে নীরবে দেশ ত্যাগ করেছেন।
শত শত নারী নির্যাতিত হলেও বিএনপি জোট সরকারের আমলে পূর্ণিমা’র ঘটনাটি আলোচিত হয়। পূর্ণিমা’র ঘটনা শোনার পর আমেরিকার এক গীতিকার, কবি পূর্ণিমা’কে নিয়ে একটি কবিতা লেখেন। নাম তাঁর-লোরকান ওথওয়ে। ডাক নাম- লেরি। লেরি’র জন্ম আমেরিকায়। অতীতে বাবা-মা আয়ারল্যান্ড থেকে আমেরিকায় চলে যায়। লেরি কবিতা, গান লিখতে ভালোবাসে। নিজে একটি থিয়েটারের ইউথ বারের (বিয়া, মদের দোকান) মালিক। জন্ম ও বর্তমান অবস্থান আমেরিকার নিউ ইয়র্কে। পূর্ণিমা’র উপর নির্যাতনের ঘটনা শোনার পর লেরি পূর্ণিমা’কে নিয়ে একটি কবিতা লেখেন। কবির ভাষায়; পৃথিবীর সকল পূর্ণিমার জন্য কবিতাটি তিনি রচনা করেন। কবিতাটির নাম-‘হু ইউল ম্যারি মী’। এই অন্ধকার জনপদে পূর্ণিমাদের জীবন অমাবস্যার মতন অন্ধকার।
Who Will Marry Me
================================
Lorcan Otway all rights reserved…
I’m a Bangladeshi Hindu girl, I cannot say my name
I cannot show my face to you, I’m forced to flee in shame
I cannot find the words to tell, what they did to me
When the gangs came to my village and robbed my dignity
I cannot speak the words my fear, and horror to relate
When the women of my village became, the target of your hate
With nothing but my tattered clothes, I have been forced to flee
For after my public shame, who would ever marry me
In the decade before I was born, my land was wracked with pain
Democracy and Freedom, religious rights to gain
All the people of our land, shared the terror of that night
to cast off religious hatred and, emerge into the light
I can’t understand why the world, allows hate to divide my land
Is our pain so foreign to your world, that you can’t understand
The tears of my nation, a waterwheel could turn
Can they not touch your heart enough, our history to learn
How my story ends I cannot say, what’s ahead I cannot see
Fundamentalism’s fertile fields, are starved lands of poverty
But in the ruins of my land and life, I can only cry in vain
why must I bear the shame alone, who would ever share my pain
One question more I’ll ask of you, before I flee my land
One question more I’ll put to you, I’m too young to understand
One question more I must demand, before I turn to go,
for the answer to this question, no young girl may ever know
My sister’s bodies have become, the target’s of your war
And our mother’s and our grandmothers, for countless years before
How can it be our dishonor, why is it our disgrace
Why is it not the rapist, who is forced to hide his face
এ এক অভাবনীয় ব্যপার।বহুদুরের একজন কবি পুর্নিমার কথা জেনেছ, তাকে নিয়ে কবিতা লিখেছে।
জীবনঢুলী ছবিতে মোরশেদুল ইসলাম সাহেব পুর্নিমার ঘটনা তুলে ধরেছিলেন।
চারুকলার ছাত্ররা বহু আংগিকে তাদের চিত্রকলা/শিল্পকর্মে তুলে ধরতে পারে।
সুব্রত শুভর লেখা ‘পূর্ণিমার প্রতি ভালবাসা’ পড়ে মনের গভীরে একটা তির্যক রেখা এমনভাবে দাগ কাটলো যে মনের ভিতর থেকে একটা চাপা কান্না হু হু করে বের হয়ে আসছে, যাকে বাঁধা দেওয়া যায়না। মেয়েটির ছবিটা দেখে আরও বেশী মন খারাপ হয়। খালি মনে হয় এই পৃথিবীতে মেয়েদের কেন ভোগ্যা রূপে দেখা হবে? কেন তারা অত্যাচারিত হবে? দাঙ্গা বা যেকোন অসামাজিক ঘটনাগুলিতে মেয়েদের উপর কেন অত্যাচার করা হবে? মেয়েদের নিরাপত্তা সরকার ও সমাজ দেবেনা কেন? নারীপুরুষের মিলনে সৃষ্টি হয়, সে তো স্বর্গীয় মিলন। কিন্তু যখন নারীকে তার ইচ্ছার বিরুদ্ধে যারা ধর্ষণ করে, তারা পশুর থেকেও অধম, এদের পশু বললে; পশুদের অপমান করা হয়। কেননা পশুরা ও নিয়ম মেনে চলে। এই সমস্ত অমানুষদের কঠোর শস্তি দেওয়া উচিত, যেন একটা দৃষ্ঠান্ত হয়ে থাকে, যাতে এই ঘটনা যেন দবিতীয়বার ঘটাতে ভয় পায়। এরজন্য সরকার ও সমাজের দায়িত্ব অনেক। কিছুলোকের স্বার্থের জন্য রাজনৈতিক দাঙ্গাহাঙ্গামা করানো হয়। অতীত ও মধ্যযুগের ব্রব্রতা যদি বর্তমান সভ্য জগতে চলে, তাহলে আমরা শিক্ষিত হলাম কেন? বর্বরতার যুগে বাস করলেই হতো। নারীকে রক্ষা করবার দায় সমাজের উপর অধিক পরিমাণে বার্তায়, সাথে সরকারের কঠোর আইন ও শাসন থাকা উচিত। সরকারকে চোখ বুজে থাকলে হবেনা। এই সমস্ত ঘটনার জন্য রাজনৈতিক নেতারা বহুলাংশে দায়ী। যারা এদের ইন্দন দেয় বাঃ যাদের ইন্দনে এই সমস্ত ঘটনাগুলি ঘটে, তাদের কঠোর শাস্তি দেওয়া উচিত। আজ অন্যের মেয়ে অত্যাচারিত হয়েছে, কাল আপনার মেয়ে হবেনা, কে বলতে পারে। সুতরাং আমাদের উচিত প্রতিবাদ করা ও সরকারের উপর চাপ বাড়ানো যেন ভবিষতে এই রকম ঘটনা না ঘটতে পারে। আমেরিকায় বসে লেরি পূর্ণিমার অত্যাচারের উপর কবিতা লিখে প্রতিবাদ করেছে, তারজন্য তাকে ধন্যবাদ জানাই। সাথে সাথে সুব্রত শুভকেও ধন্যবাদ জানাই তার লেখার জন্য।
লেখাটা পড়ে ৭০ দশকের কথা মনে পড়ে গেল। ১৯৬২-৬৩ সালে হিন্দুদের উপর যে অত্যাচার হয়েছিল, তখন এই রকম কত পূর্ণিমাকে ধর্ষিত হতে হয়েছে, তার ইয়ত্তা নেই। তারা লজ্জবায় কখনো মুখ ফুটে বলতে পারেনি তাদের ধর্ষণের কথা। তাদের মধ্যে বহু আত্মহত্যা করেছিল , আর কেউ কেউ দেশ ছেড়ে ভারতে আশ্রয় নিয়েছিল। তারা কোন বিচার পায়নি। তখন এত মিডিয়ার কারয্যক্রম ছিলনা। ৯৯.৯৯% ঘটনা লোপাট হয়ে যেত। মৌলবাদীর দলগুলি এই সমস্ত কাজের হোতা। এদের শায়েস্তা করলে দেশে শান্তি আসবে।
পূর্ণিমা বিচার পাওয়ায় খুব ভালো লাগছে। এদের প্রতি গভীর ভালবাসা রইল। আশাকরি জাতিধর্ম নির্বিশেষে সকল পূরণিমাদের পাশে সবাই থাকবেন।
সব পূর্ণিমাদের পাশে থাকুন।
মর্ম পীড়াদায়ক ঘটনাটির কথা প্রতিনিয়তই ব্যাথা দেয়। প্রায়শই অজ্ঞাত কারণে মনটাকে হু হু করে কাাঁদায়। তবে সত্য কথা বলতে কি? এমন হৃদয় ছোঁয়ে যাওয়া কবিতাটির কথা জানতাম না। কয়েকবার পড়লাম। লজ্জায় মাথা নত হয়ে গেল। আমরা অত্যাচারিতার কাছের মানুষ হয়েও যা পারিনি, সাত সমুদ্র তের নদী‘র ওপারের অন্য সংস্কৃতির মানুষ হয়েও উনি কত গভীর ভাবে আমাদের পূর্ণিমাদের মনের কথাগুলো কত নিখুঁত ভাবে তুলে ধরলেন। বোন পূর্ণি মা, আমরা তোমায় রক্ষা করতে পারিনি, পারিনি তোমার মনের কথাগুলো সঠিকভাবে তুলে ধরে তোমার প্রতি হয়ে যাওয়া নিষ্ঠূর অন্যায়ের বিচার চাইতে। তুমি ক্ষমো মোদের।
এ যাবৎ অত্যাচারের স্বীকার হওয়া কোটি পূর্ণিমাদের ত্যাগের বিনিময়ে আমাদের জননী জন্মভূমি থেকে অত্যাচার চিরতরে দূরীভূত হোক।
সুখে থাকুক পৃথিবীর সব পূর্ণিমারা !!!!!!
:scratch: :scratch: :scratch:
ভালোবাসা রইলো পৃথিবীর সব পূর্ণিমার প্রতি।