মাননীয় প্রধানমন্ত্রী,
অভিজিৎ রায় হত্যার পাঁচদিন পর ঘর থেকে বের হয়ে দেখি, সূর্য পূর্ব দিকেই উঠেছে; উত্তরে, দক্ষিণে কিংবা পশ্চিমে ওঠেনি। ধরে নিয়েছিলাম, অভিজিৎ রায়ের হত্যার পরের দিন থেকে সূর্য ভিন্ন দিকেই উঠবে। কিন্তু তা হলো না। অভিজিৎ রায়ের পর চলে গেল ওয়াশিকুর। আশা করেছিলাম, অন্তত এখন থেকে হলেও সূর্য উল্টো দিকে উঠবে; পৃথিবী সমতল হয়ে যাবে, সূর্য ডোবার মাঝে অস্ত যাবে, পৃথিবী স্থির হয়ে থাকবে, সূর্য ঘুরবে, প্রস্ফুটিত হবে চাঁদের দ্বিখণ্ডণ, মহাকাশে দেখা যাবে ছেদন, ভেসে উঠবে সপ্ত আসমান, শয়তান তাড়াতে উল্কা নিক্ষেপ করবে আকারবিহীন ভগবান।
কিন্তু না। এসবের কিছুই হল না। অবশ্য পিথাগোরাস, এনাকু সিমন্ড, গ্যালিলিও, গ্যামো, সক্রেটিস, কোপার্নিকাস, ডারউইনের শত বিরোধিতার পরেও পৃথিবী গোলাকার, সূর্য স্থির, আবর্তনী পৃথিবী, নিজস্ব আলোবিহীন চাঁদ এবং সত্য ছিল বিবর্তন। আমাদের বাংলার সক্রেটিস – আরজ আলী মাতুব্বর এবং আমাদের রিচার্ড ডকিন্সের নাম অভিজিৎ রায়। সবাই জানে, অভিজিৎ রায় কখনো ধর্ম নিয়ে বিদ্বেষ ছড়াতেন না; ধর্মকে সমালোচনা করতেন। যুক্তি দিয়ে প্রমাণ করার চেষ্টা করতেন, আল্লাহ-ভগবান-খোদা কেন আমাদের সৃষ্টিকর্তা নয়।
আমি অভিজিৎ রায়ের পদাঙ্ক অনুসারী ক্ষুদ্র এক ব্লগার। ফেসবুক থেকে হাতে ধরে তিনি আমাকে ব্লগার বানিয়েছেন। বিশ্বাস করুন, প্রধানমন্ত্রী, অভিজিৎদা’র হত্যার পর থেকে আমি অনেকদিন ঘর থেকে বের হতে পারিনি। এতে দাদার প্রতি না যতটুকু আবেগ ছিল, তার থেকে বেশি ছিল নিজের জীবনের প্রতি মায়া। মনে ভয় দেখা দিল, আমাকেও কি একদিন দাদার মতো রাস্তায় লাশ হতে হবে? নিজেকে গুছিয়ে নিলাম।
অথচ দাদার শোক কেটে না উঠতেই নিহত হল ওয়াশিকুর। ওয়াশিকুর বাবু আমার বন্ধু। আমি এমন এক বন্ধুপ্রেমী অদ্ভুত মানবতাবাদী নিজের বন্ধুর লাশ দেখে আঁতকে উঠেছি, ভয় পেয়েছি। পরবর্তী জনের কথা ভেবে শিউরে উঠেছি। এভাবেই কি হত্যাকারীরা পরবর্তী লক্ষ্যের দিকেই এগুচ্ছে? অভিজিৎদা’র হত্যার পর থেকে মোল্লা থেকে দূরে থাকতাম। কিন্তু ওয়াশিকুর হত্যার পর থেকে মানুষ দেখা মাত্রই ভয় লাগে। এখন খুব কাছের বন্ধুটিকে সন্দেহ হয়, নিজের ভাই-পিতাকেও সন্দেহ হয়, এমনকি নিজেকে নিজের সন্দেহ হয়। সন্ধ্যার পরে ঘর থেকে বের হতে পারি না, রাস্তায় দুই মিনিট দাঁড়াতে পারি না, কোথাও দাঁড়িয়ে গাড়ির জন্য অপেক্ষা করতে পারি না, চার ধাপ চলতে ছয় বার পেছনে তাকাতে হয়, নিয়ম মেনে একই পথে চলাফেরা করতে পারি না, নিজের ঘরের ছাদে জ্যোৎস্না দেখতে পারি না, একলা রাস্তায় চলতে পারি না, কেউ ঘরের দরজায় টোকা দিলে ভয় হয়, কেউ চিৎকার দিলেও ভয়।
টিভিতে ব্রেকিং নিউজ দেখলে ভয় – এই বুঝি আরেকজন মারা গেল; মসজিদের খুতবা শুনতে ভয় হয় – এখুনি হয়তো নাস্তিক হত্যার ফতোয়া দেওয়া হবে। আজরাইল থেকে আজকাল আল্লামা শফি নামটা অনেকে ভয়ানক। টিভিতে আল্লামা শফির চেহেরা দেখলে ভয়, তার নাম শুনলেও ভয় হয়। ভয়ে রাতে ঘুম ভেঙে যায়। সারাক্ষণ মনে হয় হত্যাকারীরা এখানে-ওখানে লুকিয়ে আছে। তারা নাস্তিক ধরবে, হত্যা করবে। গলির সামনে, দরজার পেছনে, অন্ধকারে, সিঁড়ির নিচে, বাজারে, অফিসে, ইউনিভার্সিটিতে, চায়ের দোকানে, সবখানে সব জায়গায় লুকিয়ে আছে, লুকিয়ে থাকতে পারে। ভয়, প্রচণ্ড ভয় হয়।
তীব্র ভয়ের মাঝে পরিচিত ব্লগারদের সাথে কথা বলি। ভয়টা আমার নয়, সবার মাঝেই আছে। বুঝতে পারি, প্রগতিশীলদের কাছে এখন বাংলাদেশের আরেক নাম আতঙ্ক। সারাক্ষণ আতঙ্কের মাঝেই থাকি। ওয়াশিকুর হত্যার পরের দিন ঘর থেকে বের হয়ে দেখি, গলির সামনে দেখি কিছু ছেলে আড্ডা দিচ্ছে। আমি তাদের চিনি না। অনেকক্ষণ স্থির থেকে আমাকে চিন্তা করতে হল, আমি কি তাদের সামনে দিয়ে পথ পারি দেবো; নাকি বাসায় ফিরে যাবো। সাহস করে তাদের সামনে দিয়ে চলে গেলাম। দ্রুত রিক্সা নিয়ে ব্যস্ত রাস্তার পাশে এসে চায়ের দোকানে সিগারেট ফুঁকে মোবাইলের দিকে তাকিয়ে আছি। দেখি, একটি মোটর সাইকেল এসে থামলো। পাঞ্জাবী পরা দু’জন যুবক, মুখে উস্কোখুস্কো দাড়ি, হাতে একটি থলে, তাদের চোখে-মুখে চঞ্চলতা; তারা কি যেন খুঁজছে! আমার খুব সন্দেহ হল। দোকানের ভেতরে গিয়ে বসলাম। তারা চলে না যাওয়া পর্যন্ত দোকান থেকে বের হতে পারিনি। তারা চলে যাওয়ার পর নিজেকে ধিক্কার দিয়ে বললাম, ছিঃ! নিজের বাঙালি ভাইদের সন্দেহ হচ্ছে, ছিঃ!
প্রিয় প্রধানমন্ত্রী, বিশ্বাস করুন, আমি কখনোই এত ভীতু ছিলাম না। পরিস্থিতি আমাকে ভীতু হতে বাধ্য করছে। শুধু আমি নয়, আমার প্রতিটি সহযোদ্ধা ভয়ের মাঝে আছে। আমাদের ধরে নিতে বাধ্য হতে হচ্ছে, আমাদের মৃত্যু হবে মৌলবাদীর চাপাতিতে, নয়তো হুমায়ুন আজাদের মত হাইপার টেনশন রোগে। সন্ধ্যায় কাজ শেষে বাসায় ফিরছিলাম। সিএনজি ঘরের সামনে এসে দাঁড়ালো। চারপাশ তাকিয়ে দেখি কারেন্ট নেই। অন্ধকার। সিঁড়ি বেয়ে ওপরে উঠবো, এমন সময় মনে হল সিঁড়ির সামনে কেউ দাঁড়িয়ে আছে। চিৎকার দিলাম। নিচের বাসা থেকে মানুষ জড় হয়ে গেল। পাশের দোকান থেকে আলো নিয়ে দৌড়ে এলো দোকানদার চাচা। আলোর মাঝে দেখতে পেলাম অন্ধকারের দাঁড়িয়ে থাকা মানুষটি আমার বাবা। আমার জন্য দাঁড়িয়ে অপেক্ষা করছিল।
কষ্ট লাগে যখন পিতাকেও জঙ্গি মনে হয়। সব কিছুতেই ভয়। রাস্তায় কেউ নাম ধরে ডাকলেও ভয় হয়, কেউ একটু পিছু পিছু হাঁটলেও ভয় হয়, কারো চোখে চোখ পড়লেও ভয় হয়। ওয়াশিকুর হত্যার পরের দিন রাতে ঘুম হয় নি। মাঝ রাতে হঠাৎ ঘুম ভেঙে গেলো। টয়লেট থেকে পেছন ফিরতেই মনে হল অন্ধকারে সত্যিই কেউ দাঁড়িয়ে আছে। একটু হালকা চিৎকার দিয়ে পেছনে দৌড় দিতেই মাথায় এলো, নিজের ছায়া দেখে নিজেই ভয় পেয়েছি।
অভিজিৎদা’র হত্যার রাতে সারা রাত চোখে জল নিয়ে নিজেকে জিজ্ঞেস করেছি, “কেন ছাগু হলাম না? মডারেট ছাগু হলে তো রাষ্ট্রই আমাদের নিরাপত্তা দিতো।” এখনও চোখ বন্ধ করলে মনে পড়ে ওয়াশিকুরের চঞ্চলতা, নম্রভাষার যুক্তিতর্ক, অপ্রিয় কথার দাঁতভাঙা জবাব। আমার বন্ধু ওয়াশিকুর, যার মুখমণ্ডল চাপাতির আঘাতে চার টুকরো হয়ে পড়েছিল চৌরাস্তায়। ঘর থেকে বের হলেই মাথায় আসছে বন্যাদি’র কথা। চোখের সামনে ভেসে ওঠে অভিজিৎদা’র ছিটকে পড়া মগজের খুলি, রক্তের দাগ, লাল পাঞ্জাবি। একটু নস্টালজিক হলেই মনে পড়ে থাবা বাবা’র নিথর দেহ।
বিশ্বাস করুন প্রধানমন্ত্রী, আমরা সর্বোচ্চ ভয় পেয়েছি। এতই ভয় পেয়েছি, ‘বাংলাদেশ আমার দেশ’, এই কথাটি বলতেও ভয় হয়। তবে সত্যি বলতে, প্রিয় প্রধানমন্ত্রী, আমাদের শত ভয়ের মাঝেও সত্য সত্যই থাকবে। কোনো মিথ্যেবাদী নিজেকে সত্যবাদী বললে সত্যবাদী হয়ে যায় না, জন্ম থেকে অশান্তি সৃষ্টিকারী কোনো ধর্ম নিজেকে শান্তির দাবি করলে, শান্তি নাম রাখলেই শান্তির হয়ে যায় না। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, আমাদের দয়া করুন, আমাদের জীবনের নিরাপত্তা দিন, জঙ্গিবাদ থামান, বিন্দুমাত্র মৌলবাদ তোষণও বন্ধ করুন। আমরা শুনেছিলাম, এই দেশ স্বাধীন হয়েছে অসাম্প্রদায়িকতার কথা বলে, ধর্মনিরপেক্ষতার হাত ধরে। তবে আমরা জানি, এই দেশে দেশপ্রেমের চেতনার থেকে ধর্মীয় চেতনার মূল্য বেশি। কে কতটুকু দেশপ্রেমিক, তার থেকে বড় প্রশ্ন – কে কত বড় ধার্মিক।
মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, বিবর্তন এবং মহাকাশ নিয়ে যাদের সামান্যতম জ্ঞান আছে, তারা আর কখনো নাস্তিক থেকে আস্তিক হতে পারবে না। পারবে না কুঁজো হতে, সেজদা দিতে, সকাল বিকাল ভাবমূর্তিপূজা করতে। তবে পারবে ভণ্ড হতে, চুপ থাকতে।
মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, আমাদের নিরাপত্তা দিন, আমরাও ভণ্ড হয়ে যাবো। আমরা আর কোনোদিন কাউকে বলবো না এমন একজন ধর্মপ্রচারকের কথা, যিনি পুত্রবধুসহ এগারটি বিয়ে করেছিলেন, যাঁর যৌনদাসী ছিল, নয় বছরের বাচ্চা মেয়েকে যিনি বিয়ে করেছিলেন। প্রিয় প্রধানমন্ত্রী, আমরা আর কোনোদিন বলবো না এক যুদ্ধাবাজের কথা, যিনি ৪৩ জনকে শিরচ্ছেদ করেছিলেন, যিনি বেঁচে থাকতে ছোট বড় ১০০ টি যুদ্ধের কারণ ছিলেন, যাঁর মাঝে ২৭ টি যুদ্ধের নেতৃত্বে ছিলেন, এবং তাঁর প্রিয় ৩ টি তরবারি ছিল, যা দিয়ে অবিশ্বাসীদের হত্যা করা হতো। আমরা বলবো না এমন এক মহাপুরুষের কথা যার মাধ্যমে প্রেরিত একটি বিশেষ বইতে ১০০ এর বেশি মানুষ হত্যা’র আদেশ আছে। আমরা এইসব কথা কাউকে কোনোদিন বলবো না। ওই মহাপুরুষের নাম কাউকে বলবো না। আপনাকেও না। বলার মত সেই সাহস আর আমাদের নেই।
প্রিয় কবি হুমায়ুন আজাদ কবিতায় লিখেছিলেন, “এখন, বিশ শতকের দ্বিতীয়াংশে, সব কিছুই সাহসের পরিচায়ক। কথা বলা সাহস, চুপ করে থাকাও সাহস। দলে থাকা সাহস, দলে না থাকাও সাহস। আমি কিছু চাই বলাটা সাহস, আবার আমি কিছুই চাই না বলাও সাহস। এখন, এ-দুর্দশাগ্রস্ত গ্রহে বেঁচে থাকাটাই এক প্রকাণ্ড দুঃসাহস।” জানি না, আমার সহযোদ্ধারা কেমন করে বেঁচে আছে, তবে, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, বিশ্বাস করুন, আমি বেঁচে নেই। আমার মনের ভেতরে আর একটুও সাহস জীবিত নেই। অভিজিৎদা’কে হারানোর পরের দিন থেকে আমাদের ভেতরের অর্ধেকটা মৃত; অনেকটাই অনুভূতিই শূন্য। বাংলাতে জন্ম নিয়ে আমার আজন্ম একটাই দুঃখ থাকবে, কেন মডারেট ছাগু হলাম না। আতঙ্কের মাঝে বেঁচে থাকাকে কি আসলেই বেঁচে থাকা বলে?
মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, আপনি আমাদের মায়ের মত। মা হয়ে আপনি যদি আমাদের নিরাপত্তা দিতে না পারলে পয়েন্ট ব্ল্যাংক রেইঞ্জে গুলি করে আপনার সন্তানদের মেরে ফেলুন। আমরা আর কখনোই বাকস্বাধীনতার নামে চিৎকার করবো না, সমালোচনা করবো না, প্রগতিশীলতার কথা বলবো না, সত্য বলবো না, মিথ্যেও বলবো না এবং আপোষও করবো না। আমাদের মেরে ফেলুন। পৃথিবীতে মিশে যাক আমাদের শরীরের ভিতরে প্রাণ নামক রাসায়নিক বিক্রিয়া। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, খুনটা আপনার হাতেই হতে চাই। মায়ের যদি সন্ত্রাস দমনের ইচ্ছে না থাকে, তবে কী আর করা, তাই খুন যখন হবো, একজন শিক্ষিত প্রগতিশীল মায়ের হাতেই। তবুও কতগুলো জঙ্গি, অপদার্থ, আমাদের নিম্নাঙ্গের কেশ পরিমাণ জ্ঞান যাদের নেই, তাদের হাতে মরতে চাই না। বেঁচে থাকার শেষ নিঃশ্বাস পর্যন্ত আমরা তাদের মাথায় থুঃথুঃ দিয়ে যাবো। মরতে মরতেও বলে যাবো, আমাদের অবিশ্বাস দীর্ঘজীবী হোক।
ভালো থাকুক বাংলাদেশ। ভালো থাকুক সবাই।
ইতি
সাংকৃত্যায়ন
সাহসটুকু জিইয়ে রাখা খুব জরুরি। বিশেষ করে কিছু বলার সাহস। ভয় পেলে মৌলবাদেরই জয় হবে। চাপাতির নীচেও তাই কলম চলবে।
কলমের প্রতিবাদ চলবেই…
কলম চলুক
অরণ্যে রোদন করে আর কী লাভ। তিনি তো মদিনা সনদ দিয়ে দেশ চালাতে চান।
লেখাটা খুব ভাল লাগলো।
বাংলাদেশে যে যখন গদিতে আসীন হন গদির সাথে সুপারগ্লু ইউজ করে পেছনটা ঠিক করে আটকে ফেলেন। যাতে যাই হোক মানে যাইইই হোক অভিজিৎ মারা যাক, বাবু খুন হোক, বিশ জন নারী এক সন্ধ্যায় অপমানিত হোক, কিচ্ছু আসে যায় না, মোর গদি খানি যেনো রহে “হেফাজতে”
আমি একজন “মুক্তমনার” মুগ্ধ পাঠক। “মুক্তমনার” লেখাগুলো আমায় জ্ঞানের-তথ্যের আলাকে মুগ্ধ করে। সেই কারন বশত “মুক্তমনার” প্রত্যেক লেখককে আমি অশেষ ধন্যবাদ জানাই। আমি মণে করি “মুক্তমনা” দুইপাড়ের বাংলার মুক্তচিন্তদের কাছে সবচাইতে প্রিয় বাংলা ব্লগ।
“অতিথী লেখকের” এই লেখা চমৎকার ধারালো মণে হল। লেখককে এই রকম লেখা দেওয়ার জন্য ধণ্যবাদ জানাই। আবার এই লেখা পড়ে লেখকদের প্রানের নিরাপত্তা সংক্রান্ত বিষয় নিয়ে উদ্বিগ্ন, শঙ্কিত হলাম।
অভিজিৎদার মত লেজেন্ট মুক্তচিন্তকের হত্যা; রাজীব, ওয়াশিকুর এর মত স্পষ্টভাষী মুক্তচিন্তকদের হত্যাও আমার মত একজন ভারতীয় ছাপোষা বাংঙ্গালীকেও মর্মাহত, শোকাহত, হতাশ, ক্রোধিত করে।
শেষে অন্য একটি কথা বলতে চাই যে, অভিজিৎদার “শূণ্য থেকে মহাবিশ্ব” বইটি কোলকাতা থেকে অনলাইন কিমবা অফলাইনে কেনা যাবে কিনা এই ব্যাপারে আমায় কেউ সাহাজ্য করতে পারবেন?
অভিজিৎ দা’র বই অনলাইন থেকে নিতে চাইলে থেকে নিতে চাইলে কারিগর ডটকম থেকে নিতে পারেন।
http://books.karigor.com/?product=%E0%A6%8F%E0%A6%95-%E0%A6%AC%E0%A7%8D%E0%A6%AF%E0%A6%BE%E0%A6%97-%E0%A6%85%E0%A6%AD%E0%A6%BF%E0%A6%9C%E0%A6%BF%E0%A7%8E-%E0%A6%B0%E0%A6%BE%E0%A7%9F
সবকিছুই এখন নষ্টদের অধিকারে। বেঁচে থাকাই এখন আজন্ম পাপ। তবে যতক্ষন বেঁচে থাকা ততক্ষন অন্তত ছদ্মনামে হলেও কলম চালিয়ে যেতেই হবে।
ছদ্মনাম সব সময় ছদ্মরাখা যায় না। কারন আমরা যতটুকু না বিপ্লবী তার থেকে ফেইম সিকার। -_- মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ।
মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, আপনি আমাদের মায়ের মত। মা হয়ে আপনি যদি আমাদের নিরাপত্তা দিতে না পারলে পয়েন্ট ব্ল্যাংক রেইঞ্জে গুলি করে আপনার সন্তানদের মেরে ফেলুন।
” চোর না শোনে ধর্মের কাহিনী ” লেখক আপনাকে ধন্যবাদ ।
আপনাকেও মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ। 🙂
চমৎকার একটা লেখা পড়লাম! এভাবেই আঘাত হানুন…এভাবেই হানতে হবে…..
ধন্যবাদ, পাশে থাকুন। 🙂
না, আমি প্রধানমন্ত্রীর দোষ সব সময় দি না, উনি অনেক কিছুই চেষ্টা করেন। তবে মনে হয় আরও কঠোর হতে পারতেন।
অদ্ভুত একটা আধারঘেরা সময় পার করেছি সেই সময়। এখনও অপরিচিত মানুষ দেখলে সন্দেহ মাথাচাড়া দেয়,অথচ কবিগুরু বলে গেছেন মানুষে বিশ্বাস হারনো নাকি পাপ। সবকিছুর পর যে উপলদ্ধিটা রয়ে গেছে তা হল-
লিখে যেতে হবে। লিখে যেতে হবে আমার অবিশ্বাস, মুক্তির মন্দিরের সোপানতলে উৎসর্গকৃত প্রানের গল্প, হায়েনা আর কুকুরের বিভৎস নৃসংশতার কাহিনী। লিখে যেতে হবে আমার অস্তিতের সবটুকু দিয়ে।
“লিখে যেতে হবে। লিখে যেতে হবে আমার অবিশ্বাস, মুক্তির মন্দিরের সোপানতলে উৎসর্গকৃত প্রানের গল্প, হায়েনা আর কুকুরের বিভৎস নৃসংশতার কাহিনী। লিখে যেতে হবে আমার অস্তিতের সবটুকু দিয়ে।”
কথাটি দারুণ লেগেছে। অভিজিৎ দা, হুমায়ূন আজাদ স্যার নিজেদের রক্ত দিয়ে মুক্তচিন্তার আন্দোলনকে সার্থক করে গেছেন। তাদের রক্তকে বৃথা হতে দেওয়া যায় না।
মদিনা সনদের হালাল নারী প্রধানমন্ত্রীকে এসব কথা বলে লাভ নেই।
আমরা থামবো না কখনো, পিছপা হবো না কখনো। আমাদের কলমের যুদ্ধ আমারা চালিয়ে যাবোই।
“আমরা থামবো না কখনো, পিছপা হবো না কখনো। আমাদের কলমের যুদ্ধ আমারা চালিয়ে যাবোই।” এই ধরণের কিছু কথা অন্ধকারে প্রেরণা যোগায়। ধন্যবাদ মন্তব্যের জন্য।
না ভাই, এই ভাবে বল্লে হবে না। বুদ্ধিমান হতে হবে। ঐ যে টিভি বিজ্ঞাপনের একটা কথা আছে না- “আব্বাজান, একটু বুদ্ধিমান না হলে আজকের দুনিয়ায় চলা মুসকিল।”
অভিজিৎ দা হত্যাকান্ডের পর টেলিভিশন টক শো গুলোতে দেখলাম টাইস্যুট পরা ঝানু ভদ্রলোকের বেজায় পরামর্শ দিচ্ছেন। ওদেরই একজন বলছেন(বিশ্বাস করুন, একটুকুও মিথ্যা বলছি না)- “অভিজিৎ হত্যাকান্ডে তিনি ক্ষুব্ধ, মর্মাহত। ইসলাম এ ধরনের হত্যা সমর্থন করে না। ইসলাম শান্তির ধর্ম। কিছু কুলঙ্গার নাস্তিক আমাদের প্রানের চেয়ে প্রিয় নবীজী’কে অশ্লিল ভাষায় গালি গালাজ করে এ ধরনের হত্যা কান্ড উস্কে দিচ্ছে”। ভাবখানা এমন অভিজিৎ হত্যার বেচারা ঘাতক নেহাৎ নিরুপায় হয়েই এই হত্যাকান্ড ঘটিয়েছেন।
ভাবতে অবাক লাগে টক শো’র এই লোকগুলো কওমী মাদ্রাসার মুরগির রান খাওয়া হুজুর না, আইসিস/বোকোহারাম/তালেবান সদস্যও না। এরা এদেশের ডক্টোরেট, বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক, সাংবাদিক, আইনজীবী, এমপি, আমলা, শিল্পপতি…………………………. । কি করার!! আমাদের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী দেশ চালাচ্ছেন মদিনা সনদের আলোকে। তাই।
অত্যন্ত বড় মাপের লেখা, আপনাকে ধন্যবাদ।
আমাদের দুঃখটা ওখানেই সুশীল শ্রেণী নামের কোন প্রতিনিধি না থাকলে আমাদের মুক্তিচিন্তার আন্দোলনটা অনেক সহজ হয়ে যেত। ধন্যবাদ মন্তব্যের জন্য।
ভয়ের আবরণে সাহসী উচ্চারণ। এ উচ্চারণ অব্যাহত থাকুক।
ধন্যবাদ গীতা দিদি মন্তব্যের জন্য এবং পাশে থাকার জন্য। 🙂