সৌদি আরবের সম্রাট তার দেশে “নাস্তিকদের” সন্ত্রাসবাদি বলে আইনজারি করছেন। সৌদি আরবের আইনে যে ঈশ্বরে বিশ্বাস করে না, এখন থেকে তাকে সোজা সন্ত্রাসবাদের অভিযোগে ২০ বছর কয়েদ করা যাবে। গত দুদিন আগে চট্টগ্রামে দুটি কিশোরকে ফেসবুকে নাস্তিকতা প্রচারের অভিযোগে পরীক্ষাগার থেকে তুলে পিটিয়ে থানায় ভরা হয়েছে। তারাও বাংলাদেশের ধর্মবিরোধি আইনে এখন জেলে।
ইসলামিক দেশগুলি নাস্তিকতার বিরুদ্ধে সরাসরি যুদ্ধ ঘোষনা করেছে। নাস্তিকরাও নিশ্চয় বসে থাকবে না। পাল্টা দাবি হিসাবে, আমরা কি তাহলে আমেরিকাযতে সব মুসলিমদের সন্ত্রাসবাদি বানানোর আইন আনতে আন্দোলন করব?
অবশ্যই না। কারন কোন মানবাধিকার ভঙ্গের আইনের বিরুদ্ধে আরেকটা মানবাধিকার ভঙ্গ করে, মানবাধিকারের বিরুদ্ধেই যুদ্ধ করা হয়-মানবাধিকারের উন্নতি হয় না। তবে ইসলামের বিরুদ্ধে নাস্তিকদের লেখা এবং আন্দোলন এতে আরো তীব্র হবে।
আমি নিজে কোনদিন ঈশ্বরে বিশ্বাসী ছিলাম না-কারন আমার পরিবার আমাকে ধর্মাচারনে বাধ্য করে নি। রামকৃষ্ণ মিশনে পড়াশোনা করে, ধর্মের ব্যপারে আমার জ্ঞানের উন্নতি হয়েছে, ধর্মকে আমি পজিটিভ দিক দিয়ে দেখা শুরু করি-কিন্ত ঈশ্বরে বিশ্বাস ফেরে নি। ঈশ্বরে বিশ্বাসের জন্ম নেয় পরিবার থেকে।কোন পরিবারে যদি আল্লার বদলে স্পাইডারম্যান বা এলিয়েনদের পুজো পার্থনা চালু থাকে, সেই পরিবারের ছেলে মেয়েরা তাতেই বিশ্বাস করবে। ছোটবেলাতে ভয় দেখিয়ে মাথায় ঢোকালে তবে লোকে ঈশ্বরে বিশ্বাসী হয়। আমার ছেলে পাঁচ বছর বয়স থেকে নিজেই বুঝতে শিখেছে ঈশ্বর মেক বিলিফ স্টোরি। এর জন্যে বেশী বুদ্ধি লাগে না।
ধর্ম যখন আইন এবং সমাজকে নিয়ন্ত্রন করার চেষ্টা করে-যেটা ইসলামের সব থেকে খারাপ দিক-তখন সেই ধর্ম পচতে বাধ্য। কারন আইন, রাজনীতি ও সমাজকে নিয়ন্ত্রন করে কিছু স্বার্থান্বেশী গোষ্টি-যারা এই নিয়ন্ত্রন থেকে নিজেদের ক্ষমতা ও অর্থ অর্জন করতে চায়। এক্ষেত্রেও সৌদিতে গণতান্ত্রিক আন্দোলনের বিরুদ্ধে রাজা এইসব আইন তৈরী করছেন, নিজের গদি টেকাতে। ফলে এদের হাতে যখন ধর্ম চলে- সেই ধর্ম পচতে বাধ্য। হিন্দু ধর্ম, যা প্রাচীন ভারতের নানান দর্শন দিয়ে তৈরী-সেটাও রাজা এবং সমাজচালিকাদের হাতে ঐতিহাসিক ভাবে পচেছে।
অন্যান্য সব ধর্মের মতন ইসলামের শিক্ষাতেও ভাল খারাপ দিক আছে। কেও ইসলাম পালন করলে খারাপ হবে, সেটা ঠিক না। সমস্যা হচ্ছে তাদের নিয়ে যারা ইসলামিক আইন চাইছে-ইসলামিক সমাজ চাইছে। এই চাওয়াটা খুব সাংঘাতিক জিনিস। কারন ইসলাম এতটাই মনোলিথিক, তাতে বহুত্ববাদ নেই। এটা কমিনিউজমের মতন একটা টোটাল্টারিয়ান ককটেল। ফলে যেখানেই ইসলাম, সেখানেই গন্ডোগল। যদি অমুসলিম থেকে থাকে, তাহলে এরা তাদের ওপর অত্যাচার করবে-আর যদি না থেকে থাকে, নিজেদের মধ্যে মারামারি করবে। এবসলিউটিজমের এটাই সমস্যা-সঠিক ইসলাম বা সঠিক কমিনিউজম বলে কি হয় সেটা কোনদিনই বার করতে পারবে না। সম্ভব না। ভেজাল বা মিথের সঠিক ভার্সন বলে কিছু হতে পারে না। সব ধর্মের জন্যই তা সত্য। কিন্ত যখন একটা গোষ্ঠি সঠিক ইসলাম বা সঠিক কমিনিউজম বলে একটা ইলুসিভ হ্যালুসিনেশনে ভোগে, সেখান থেকে কোটি কোটি লোকের মানবাধিকারহরন আর দুর্দশা ছারা কিছু পাওয়ার নেই।
অনেকেই হয়ত এই ফোরামে লিখবে, নরেন্দ্র মোদি আসলে ভারতের নাস্তিকদের কি হবে? আমি এটাই জানাতে চাই, হিন্দু ধর্ম মনোলিথিক না। হিন্দু ধর্মে ছয় ধরনের নাস্তিক আছে। হিন্দু ধর্মের সব থেকে এলিট ব্রাঞ্ছ , যেটাকে সৎনামী বলে-যা আদি শঙ্করাচার্য্যের তৈরী এবং রামকৃষ্ণ মিশনও যে মতের অধিকারি-
সেই শঙ্করাচার্যের অদ্বৈতবাদ ঈশ্বরে বিশ্বাস করে না। তারা নাস্তিক।
সুতরাং নাস্তিকতার প্রশ্নে হিন্দু ধর্মের সাথে ইসলামের তুলনা হয় না-এবং করাটাও মূর্খামি।
তবে বস্তুবাদি দৃষ্টিতে এসব প্রশ্ন ফালতু। সমস্যাটা সেই রাষ্ট্রর ক্ষমতার স্ট্রাকচারে এবং গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার প্রশ্নে।
সমস্ত মানবাধিকার লঙ্ঘনের সাথে স্বৈরাচারি শাসকদের গণতান্ত্রিক শাসনের বিরুদ্ধে যুদ্ধটাই চোখে পরে। সেটাই বোধ হয় একমাত্র বাস্তব। গণতন্ত্রের বিরুদ্ধে যুদ্ধটা কেও বন্দুক দিয়ে, কেও টাকা দিয়ে, কেও ইসলাম দিয়ে করে। ভারতে বিজেপি ক্ষমতায় এলে, তারা হিন্দু ধর্ম দিয়েই গণতন্ত্রকে দাবানোর চেষ্টা করবে। যদিও বহুত্ববাদি হিন্দু ধর্মদিয়ে সে কাজ করা কঠিন।
এই কথাটা কোন নাস্তিক বলেছেন একটু বলবেন?
নাস্তিকতা পৃথিবীকে গঠনমূল কিছুই দিতে পারেনি। ধর্মের কারনে যতই মারামারি হানাহানী হোক না কেন, ধর্ম মানুষকে একটি সুন্দর পারবারিক জীবন গঠনে উতসাহিত করে। অন্যদিকে নাস্তিকতা মানুষকে এমন একটি জীবনের দিকে আহবান করে যাকে বলে – বাই চয়েস। আজকে একজনকে ভাল লাগল, ব্যাস শুরু কর সহবাস, কালকে আরেকজনকে ভাল লাগল, এবার তার সাথে সহবাস। সমকামিতা ভাল লাগে, হয়ে যাও সমকামী। পশুকাম ভাল লাগে, হয়ে যাও পশুকাম। :-[ :-[
ফলাফল সরুপ শেষ বয়সে একাকী নি:সংগ জীবন, অথবা কুকুর বিড়ালের সাথে বসবাস।
ধর্ম যখন আইন এবং সমাজকে নিয়ন্ত্রন করার চেষ্টা করে-
তখন সেই ধর্ম পচতে বাধ্য।কারন ইসলাম এতটাই মনোলিথিক, তাতে বহুত্ববাদ নেই।
যদি অমুসলিম থেকে থাকে, তাহলে এরা তাদের ওপর অত্যাচার করবে-আর যদি না থেকে থাকে, নিজেদের মধ্যে মারামারি করবে।
আমি আপনার প্রত্যেক টা লেখাই খুব আগ্রহ সহকারে পড়ি। মুলত আপনার লেখা পড়তেই এই ব্লগে আসি। আজকের পোস্ট পড়ে আমার কিছু প্রশ্ন আছে-
*পুলিশের পোশাক পড়ে একজন মানুষ নিজেকে পুলিশ দাবি করলেই কি সে পুলিশ হয়ে যায়? একজন মানুষ ধর্মীয় পোশাক পড়ে নাস্তিকের বিরুদ্ধে বা অন্য ধর্মের বিরুদ্ধে কথা বললেই কি সে ধার্মিক বনে যায়?
*যারা ধর্মের নামে হানাহানি করছে তারা ব্যাক্তি জীবনে কি কর্ম করছে তা বিবেচনা করে বলা উচিত যে কাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতে হবে? কর্মই বলে দেবে একজন মানুষের পরিচয় কখনই মৌখিক দাবি নয়!
*সৌদি আরব কি আসলেই ইসলাম ধারন করে? সৌদি বাদশাহ দের বিলাস বহুল রঙ্গিন জীবন কি কোন প্রকৃত মুসলিম এর জীবনের প্রতিচ্ছবি?
পোস্ট ভাল লেগেছে। প্লাস!
@আম্মানসুরা,
আপনি আধ্যাত্মিকতার সাথে ধর্মকে গুলিয়ে ফেলছেন। আধ্যাত্মিকতা-অর্থাৎ আমি কে, আমার জীবনের উদ্দেশ্য বিধেয় কি-এটা মানুষের মৌলিক চাহিদা। ধর্ম হচ্ছে সেই চাহিদা মেটানোর একটা প্রোডাক্ট। কেও ধর্ম দিয়ে সেই চাহিদা মেটাতে পারে-আবার আমার মতন বিজ্ঞানের দৃষ্টিতেও মেটাতে পারে। আমি এই নিয়ে আগে বহু লেখালেখি করেছি-এই মুক্তমনাতেই এই নিয়ে বিতর্ক হয়েছে।
বিজ্ঞান এবং যুক্তি দিয়ে জীবনের উদ্দেশ্য নির্নয় করা সম্ভব না। এই ছিদ্র দিয়েই ধর্ম ঢোকে। ঈশ্বর বা পরের জন্ম ঢোকে।
ধন্যবাদ বিপ্লব দা লিংকটি দেবার জন্য। পড়ে মন্তব্য দেবো। ধর্ম যে বিলুপ্তির দিকে এগোচ্ছে তা বুঝতে তো বেশী বুদ্ধি লাগে না। আজকে আমরা যে ধর্মের বড়াই দেখছি তার পিছনে যেটি কাজ করছে সেটি বিভিন্ন ধরনের ব্যবসা স্বার্থ জড়িত আছে। এর পিছনে তো বিশ্বাস জড়িত নেই, তাহলে ধর্ম কেন টিকে থাকবে। এটি প্রশ্ন আসবেই। যাই হোক আরো কিছু পাবো।
আগে এমন যুদ্ধ ঘোষণা করেছিল খ্রীষ্টানরা (ইউরোপে), ধোপে টেকেনি। এরাও টিকবে না। দিন যতই যাবে, মানুষের অন্তঃচক্ষু ততই খুলতে থাকবে। মানুষ যতই বিশ্বাস বিশ্বাস বলে চিৎকার করুক, একটা সময় তাদের বিজ্ঞান এবং যুক্তির কাছে পরাজয় স্বীকার করতেই হবে।
ঈশ্বর বিশ্বাস জন্ম নেয় পরিবার থেকে এই ষ্টেটমেন্ট কতটা সঠিক? কোন নির্দিষ্ট প্রচলিত ধর্মে বিশ্বাসের মূল ভিত্তি পরিবার এতে তেমন কোন সন্দেহ নেই। কিন্তু ঈশ্বর বা তেমন কোন সত্ত্বার বিশ্বাসের জন্য সেটা কতটা জোর দিয়ে বলা যায়?
কিছু গবেষক কিন্তু দাবী করছেন যে ঈশ্বর বিশ্বাস জন্ম থেকেই মস্তিষ্কে থাকে।
Why we are born to believe in God: It’s wired into the brain, says psychologist
@আদিল মাহমুদ,
“কিছু গবেষক কিন্তু দাবী করছেন যে ঈশ্বর বিশ্বাস জন্ম থেকেই মস্তিষ্কে থাকে।”
যেমন থাকে কুসংস্কারও. আপনার এই বাক্যটা কিন্তু ট্যাবলয়েড ডেইলি মেইলের শিরোনামের মতই চমক লাগান আর অতিরঞ্জিত. তারপর পুরোটা পড়ার পর বোঝা গেল আসল বেপার কি!
@কেউ,
আমি নেহায়েতই ছাপোষা মানুষ, ঈশ্বর বিশ্বাস অবিশ্বাস নিয়ে আমার নিজের তেমন মাথা ব্যাথা নাই, তাই আমি হয়ত অতিরঞ্জনের ব্যাপারটা ধরতে পারিনি। বুঝিয়ে বললে ভাল হত।
আমি স্বল্প বিদ্যায় যা দেখি তাতে আরো লেখা আছে,
“They suggest people are programmed to receive a feeling of spirituality from electrical activity in these areas.
The findings challenge atheists such as Richard Dawkins, the author of The God Delusion, who has long argued that religious beliefs result from poor education and childhood ‘indoctrination’
কথাগুলি ষ্পষ্টতই ঈশ্বর বিশ্বাস পরিবার থেকে আসে এমন ধারনার বিপরীত। আপনার কি মনে হয়?
অভিজিত বিপ্লব ওনারা এসব নিয়ে দীর্ঘদিন ঘাঁটাঘাটি করে আসছেন, ওনারা হয়ত ব্যাখ্যা করতে পারবেন মনে করেই সূত্রটা দিয়েছি।
সহমত।
একমাত্র বৌদ্ধ দর্শন ছাড়া ভারতের অন্য কোন প্রধান ধর্মীয় দর্শন জন্ম সূত্রে ভারতের নয়। সব গুলোই বাহিরের…
তাড়াহুড়োর কারণে মনে হয় একটু বেশি জেনারেলাইজেশন হয়ে গেল!! সনাতন তথা হিন্দু ধর্ম কি প্রকৃত প্রস্তাবে ঐতিহাসিক ভাবে ধর্ম… বিতর্ক আছে। তবে বর্তমানে অবশ্যই একটি ধর্ম… আর ঐ হিন্দু ধর্মের সমসাময়িক বৈশিষ্ট্যর কারনেই উগ্র হিন্দুরা ভারতে ক্ষমতায় আসলে খবরই আছে!!! কিছুদিন আগ পর্যন্তও পৃথিবীতে একটি রাষ্ট্রীয় ভাবে হিন্দু রাষ্ট্র ছিল…
এলিট……!!! বটে!!!…… ধর্মের মত জাত-পাত ও মনে হয় ঐ পরিবার থেকেই তৈরি হয়!!!।
হাহা…… হিন্দু “ধর্মে” অনেকে অন্য সেক্ট কে হিন্দুই মনে করেনা – মুসলিমদেরও মধ্যো এমন অনেক সেক্ট আছে যাদের অন্য সেক্টের লোকেরা মুসলিমও মনে করেনা। এমন আরও অনেক ধর্মেই আছে!! এক ধর্মের লোক আরেক ধর্ম নিয়ে কথা বলবে ওটাতো অনেক পরের ব্যাপার ।
সবচাইতে মহা হাস্যকর একটি কথা… যেমন অনেকে বলেন “মানুষের আর আবিষ্কার করার কিছু নেই” – ঐ টাইপের কথা হয়েছে!!! গত শতাব্দীর প্রথম ৫০-৬০ বছরে অনেক মানুষ এমনই মনে করত… ভবিষ্যতে কি হয় ??
@সংবাদিকা,
এটা আমার কাছে খবর। জৈন বা চার্বাক কোত্থেকে এসেছে? উপনিশদে কিছুটা বিদেশী ইনফ্লুয়েন্স আছে। ঋকবেদের প্রথম দিকের কিছুটা অন্যদেশের হলেও হতে পারে। ৯০% এর ও বেশী ভারতের মাটিতেই জম্মেছে ভারতীয় দর্শন। এই ধরনের হাস্যকর মন্তব্যের আগে, সূত্র, এবং উপস্থাপনা দিলে ভাল হয়।
রামকৃষ্ণ মিশনে জাতপাত মানে বলে জানতাম না। বিবেকানন্দ জাতপাতের বিপক্ষেই ছিলেন-যদিও বিদেশে গিয়ে জাতপাতকে ডিফেন্ড করার চেষ্টাও করেছেন। তবে মিশনে জাতিভেদ বা ধর্মভেদও আলাউড না। মিশনে আমার রুমমেট ছিল এক মুসলিম। সেও আমাদের মতন ধুতি পড়েই পার্থনাগৃহে যেত।
ভারতে বিজেপি বা হিন্দুত্ববাদি পার্টিগুলিও জাতফাতের পক্ষে না। তারা রাজনৈতিক ভাবে এর বিরোধিতা করে এবং মুসলমানদের মহমোদ্দি হিন্দু হিসাবে বৃহত্তর হিন্দু সমাজের অংশ বানাতে চায়। কারন ইসলামের একেশ্বরবাদ ভারতে নতুন কিছু না। তাই মুসলমানদের বৃহত্ত্বর অর্থে হিন্দুসমাজে আত্মসাৎ করতে চায় আর এস এস। এগুলো আর এস এসের লিটারেচারেই পাবেন।
হিন্দুত্ববাদ অনেক বেশী ন্যাশানিলিজম-ধর্ম অতটা না
তাদের মধ্যে কটা নাস্তিক সেক্ট আছে?
ভারতে সাংখ্য, অদ্বৈতবাদ এবং ন্যায় দর্শন ঈশ্বরের অস্তিত্ব মানে নি-এক্ষেত্রে ঈশ্বর বলতে সৃষ্টিকর্তা বুঝুন।
@বিপ্লব পাল,
ভারতের দর্শন গুলকে ২ ভাগে ভাগ করা হয়,
১। আস্তিক
২। নাস্তিক (নাস্তিকতার সাথে এখানে ঈশ্বরে বিশ্বাস বা অবিশ্বাস কোন সমন্ধ নেই)
আস্তিকতা মানে বেদকে মেনে নেয়া আর নাস্তিকতা হল বেদের অথরিটি কে না মানা। বৌদ্ধ, জৈন, চারবাক এরা নাস্তিক কারন এরা বেদ কে প্রামানিক গ্রন্থ হিসাবে মানে না। এখন যারা আস্তিক পরে রইলেন এদের বলা যেতে পারে বৈদিক, কিন্তু এদের বলা হয়, “হিন্দু”। এই আস্তিকরা সবাই ঈশ্বরে বিশ্বাসী নন। আস্তিকদের মুলত ৬ টা সম্প্রদায় আছে।
১। (পূর্ব)মীমাংসা – ঈশ্বরে বিশ্বাসী নয়।ঈশ্বরে বিশ্বাসী না হলে কি হবে এরা সর্গ মানেন। গল্পটা অনেকটা এমন। মর্তে ঠিক ঠিক (ধর্ম approved) কাজ –> পুন্য credited –> সর্গে তা debit করা যাবে। কিন্তু পুন্য account খালি হয়ে গেলেই মর্তে ফিরে আসতে হবে। আবার পুন্য জমাও আবার সর্গে যাও। এটা continuous process সর্গে কারও permanent residency নেই।
২। বেদান্ত
২ক। অদ্বৈত – ঈশ্বরে বিশ্বাসী নয়।
২খ। বিশিষ্টাদ্বৈত – ঈশ্বরে বিশ্বাসী। তবে এখানে ঈশ্বরের সাথে জীবের সম্পর্ক whole & part সম্প্রকের মত। যেমন গাছ এবং তার ডালপালা। অর্থাৎ জীব ঈশ্বরের অংশ।
২গ। দ্বৈত – ঈশ্বরে বিশ্বাসী। দ্বৈত বেদান্ত দার্শনিক দিক থেকে ইসলাম ও ক্রিশ্চিয়ন ধর্মের মত। একই ছাঁচের। ভগবান এখানে সৃষ্টিকর্তা, বিধাতা, রক্ষাকর্তা, etc, etc.
৩। শাংখ – ঈশ্বরে বিশ্বাসী নয়।
৪। (রাজ) যোগ – ঈশ্বরে বিশ্বাসী নয়। যোগ এর স্ট্যান্ডপয়েন্টা বেশ ইন্টারেস্টিং। এখানে ভগবানে বিশ্বাস করা বা না করাটা সাধকের উপর ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। এখানে ভগবান একটা means লক্ষ হল জ্ঞান/মুক্তি। সাধনার প্রয়জনে কেউ ভগবানকে মানতে পারেন আবার দরকার মনে না হলে মানতে নাও পারেন।
৫। বৈশেষিক – ঈশ্বরে বিশ্বাসী।
৬। ন্যায় – ঈশ্বরে বিশ্বাসী। কিন্তু এদের কোন থিওলজি নেই, ঈথিক্স নেই। ঈশ্বর এখানে একটা লজিকাল পোজ়িশন। ন্যায় ও বৌদ্ধদের মধ্যে ২০০০ বছরের তর্কের ইতিহাস আছে! ধর্ম নিয়ে এদের খুব একটা মাথা বেথা ছিল বলে মনে হয় না। এদের আসল ভগবান মনে হয় লজিক!
এখন হিন্দু ধর্ম বলতে মাথায় আসে দেব দেবী, বিভিন্ন ধরণের সংস্কার/কুসংস্কার ও জাত-পাত। এই জাত পাতের উপদ্রব কিছু কমলেও এখন ভাল ভাবেই বর্তমান। আমার বেক্তিগত মত হল (২খ/২গ বা দুটোই + ১ এর আচার ব্যবহার + জাত-পাত)* এই সবকিছুর একটা অপভ্রংশ = সাধারণ মানুষের হিন্দু ধর্ম!
কিন্তু হিন্দু ধর্মের মধ্যে থেকে কেও ঈশ্বরে বিশ্বাস করতেও পারেন, নাও পারেন। যুক্তি-তর্ক করা বা প্রশ্ন করার জায়গা আছে। এক অর্থে অদ্বৈত বেদান্তবাদীরা বিশ্বাসী থেকে অবিশ্বাসী হওয়া কে আধ্যাত্মিক উন্নতি হিসাবেই দেখবেন বলে মনে হয়। আমার মনে হয় হিন্দু ধর্মকে বেক্তিগত এবং সামাজিক স্থরে চেঞ্জ করা যেতে পারে, বা কালটিভেট করা যেতে পারে। এর জন্য দরকার বেক্তিগত বা সামাজিক বৌদ্ধিক উন্নতি। কিন্তু তার ক্ষেত্রটা বর্তমান।
দেখতে গেলে, বৌদ্ধ, জৈন, অদ্বৈত, যোগ এই সকল ধর্মের কাছে ঈশ্বরটা বড় ফেক্টর নয়। ধর্মীয় রীতিনীতি তাদের কাছে একটা matter of recommendation and not compulsion। কারণ মৌলিক ভাবে এদের লক্ষ আত্মবোধ/ জ্ঞান এবং সেটা ঈশ্বরের জন্য নয়, নিজের জন্যে। কিন্তু আসলে সব ধর্মের মধ্যেই কম বেশি কুসংস্কার xenophobia ও ethnocentrism দেখা যায়।
বানান ভুলের জন্য দুক্ষিত।
ইসলামী ‘দেশগুলি’ কেন ব্যাবহার করলেন বুঝলাম না। আলোচিত ঘোষনা দিয়েছে এক সৌদী আরব বলেই জানি, অন্যান্য দেশগুলি এমন প্রকাশ্য সরাসরি ঘোষনা দেয়নি। তবে ইন জেনারেল নাস্তিকতার বিরুদ্ধে ঘৃনা প্রচার চলেই। আমাদের মডারেট লিবারেল বাংলাদেশেও চলে, এমনকি শিক্ষাক্রমে পাঠসূচী হিসেবে সে শিক্ষা দেওয়া হয়।
@আদিল মাহমুদ,
আরেকটু খোলসা করে লিখলে ভাল হত। হেন মুসলিম দেশ নেই যারা ইসলামে অবিশ্বাসীদের জেলে ভোরার চেষ্টা করে নি। তুর্কীতে একমাত্র সুপ্রীম কোর্ট রায় দিয়েছে, ধর্মের সমালোচনা অবশ্যই ভদ্র ভাবে করার স্কোপ থাকা উচিত। আর কোন মুসলিম দেশ আমার জানা নেই-যারা ধর্মের সমালোচনা সহ্য করার মতন সভ্য এবং ভদ্র। এই সব দেশগুলো অসভ্য আরবদের হনুকরন করতেই ভালবাসে বেশী।
আমার মনে হয় অসভ্যদের সরাসরি অসভ্য বলায় ভাল।
বিপ্লব দা, লেখাটি বেশ ভাল লেগেছে। আমার মনে হয় ইসলাম ধর্ম দ্রুত বিলুপ্তির দিকেই ধাবিত হচ্ছে। কোন কিছু শেষ হবার আগে লাফা লাফি খুব বেশী হয়। সেটি হচ্ছে।
@রওশন আরা,
সহমত, তবে এটা বিলুপ্ত হতে কয়েক লাখ বছর দেরি আছে ( ততদিন যদি মানব সভ্যতা টিকে থাকে )।
বিপ্লব দার লেখা আমার খুব ভাল লাগে, তবে এমন বাস্তবতা বিবর্জিত কথা লেখার আবেদন কমিয়ে দেয় আর কি।
শুনুন এইসব একেশ্বরবাদী ধর্ম বিলোপের সম্ভাবনা প্রায় শুন্যের কোঠায় যেমন দেখুন অতি প্রাচীন কাল থেকে জরত্রুস্থবাদ বা ইহুদী ধর্ম কিন্তু এখনো টিকে আছে।
ধর্মের উগ্রবাদ কমে আসবে এটা সঠিক, কিন্তু ধর্ম বিলোপ? নাহ এত সোজা না; আসলে অসম্ভব।
@অর্ফিউস, মিসরীয় দেবতারা; মায়ান দেবতারা; ইনকা দেবতারা; আরবিও দেবতারা (ইভেন আল্লার তিন মেয়েও বিলুপ্ত); গ্রিস দেবতারা কিন্তু এখন শুধু বইতেই আছেন; কিন্তু তাদের বেইল দেয়ার কেউ নেই। কিন্তু তাদের কিসসা কাহিনী অথবা কাল্পনিক শক্তির কাহিনী কিন্তু বর্তমান অনেক ঈশ্বরের বা অনেক ধর্মের কাহিনীর থেকে শক্তিশালী ছিল।
কোরআন-বাইবেলের-মহাভারত-রামায়নের কাহিনী থেকে তাদের কাহিনী বেশী যুক্তিযুক্ত হওয়া সত্তেও তারা যখন বিলুপ্ত হতে পেরেছেন তখন নতুনদের বিলুপ্তি এখন কেবল সময়ের ব্যাপার।
বর্তমান ঈশ্বরেরা টিকে আছেন শক্তিশালী ফলোয়ারদের কারনে। তাদের দমন এবং শোষণ নীতি বিলুপ্ত করতে পারলেই এরাও বিলুপ্ত হয়ে যেত।
বর্তমান পৃথিবীতেই এখনো হাজার হাজার ঈশ্বরের মিথ আছে। প্রতিদিন নতুন নতুন ঈশ্বর নতুন নতুন ধর্ম যেমন সৃষ্টি হচ্ছে তেমন বিলুপ্তও হচ্ছে।
একদম আধুনিক এক ঈশ্বরের কথা আমি আমার নতুন লেখাটায় বলেছি এখানে। এই ঈশ্বরের ফলোয়ার কিন্তু কম নয়। ঈশ্বরের পয়দা হতে যেমন সময় লাগেনা বিলুপ্ত হতেও তেমন লাগেনা।
লেটস সি 🙂
@এম এস নিলয়,
বহু ঈশ্বরবাদীদের জন্য কথাটা সত্য। আপনি নিশ্চয়ই জানেন যে প্রাচীন প্যাগান ধর্মগুলিতে বিভিন্ন অঞ্চলের বিভিন্ন প্যাট্রন গড বা গডেস ছিল। এক দেবতার অনুসারীদের সাথে আরেক দেবতার অনুসারীদের হানাহানিও হতে পারত। কিভাবে সেমিটিক দেবতা ইয়া’র হাত থেকে মার্ডুক শ্রেষ্ঠত্ব নিয়ে নিল জানেন তো? ইয়া’র আদেশ
যখন ব্যর্থ হল, তিয়ামত ড্রাগন প্রচন্ড হয়ে উঠল তখন কিন্তু মার্ডুক রাজা হবার শর্তে তিয়ামতকে বধ করতে রাজী হল।
আবার আর্যদের দুটো শাখাও কিন্তু দুই ধরনের ছিল। দেব পুজারী আর অসুর পুজারী। এর পরই কিন্তু ভারতীয় আর্যরা অসুরদের দানব বানিয়ে ফেলে আর ইরানীয় রা দেব দের কে।
নর্সপুরানে Aesir-vanir যুদ্ধ;পরবর্তীতে রাগনারকের যুদ্ধ যেটা নাকি হবে দেবতাদের গোধুলী লগ্ন।
যাই হোক এইসব বহুদেবতা বিশ্বাসী ধর্মগুলি মোটেও শক্ত রাষ্ট্র গঠনে সহায়ক ছিল না, এর থেকেই কিন্তু আস্তে আস্তে একেশ্বর বাদের ধারনাটা আসল অনেকটা রাজনৈতিক কারনেও। বিপ্লব দাও এই নিয়ে একটা সিরিজ লিখেছেন, পড়ে নিবেন সময় করে।
কাজেই এইসব একেশ্বরবাদী ধর্মের বিশ্বাসের ভিত খুব গভীরে, এই ঈশ্বরকে এত আন্ডারএস্টিমেট করা সঠিক বলে মনে করি না।
@অর্ফিউস,
ইসলাম বহু আগেই বিলুপ্ত হয়ে গেছে, এখন যা আছে তা হল ইসলামের পচা গলিত লাশ। আর তার দুর্গন্ধে আমরা অত্যাচারিত প্রতিনিয়ত।
@শিমূল,
যদি সেটাই হয় তবে আর ইসলাম নিয়ে তর্কাতর্কি করে বেহুদা সময় নষ্ট করা কেন ভাইজান?
এইবার ইসলামের শবদেহ ছিঁড়ে খান এতে যদি মন ভরে তবে সেটাই ভাল। গন্ধে সমস্যা থাকলে নাকে রুমাল বেধে নিন বা শবদেহে সুগন্ধ।
@রওশন আরা, আমার এক বন্ধুভাবতো বিংশ শতাব্দীর শেষে পৃথিবী থেকে ধর্ম বিলুপ্ত হয়ে যাবে। বিলুপ্ত হবার তো দুরের কথা আরও বেড়ে যাচ্ছে। ইসলাম ধর্ম বিলুপ্ত হবে না। তবে পরিবর্তন হবে।
@রওশন আরা,
ধর্ম আর খুব বেশী হলে ৭০-৮০ বছর। এদের শেষের সেদিন আগত।
ধর্মের মৃত্যু ঘন্টা নিয়ে আগেই লিখেছিলাম -এটা দেখে নিলে ভাল হয়।
@বিপ্লব দা,
আপনিও এমন কথা বলছেন? নাহ এটা আশা করিনি; আপনাকে বাস্তববাদী বলেই মনে করি আমি।
খ্রিষ্ট ধর্মের উগ্রতা কিন্তু কয়েকশ বছর ধরেই কমেছে আর ধর্মগুরুদের পায়ের নিচে মাটিও সরে যাচ্ছে, কিন্তু দেখেন টিকে ঠিকই আছে কিন্তু।
সেখানে ইসলামেরও হয়ত দেরিতে হলেও এই পরিবর্তন আসবে, কিন্তু বিলুপ্ত হয়ে যাবে? না সেটা মনে হচ্ছে না।
তবে সুখের বিষয় হল আমি বা আপনি কেউই ধর্মের বিলুপ্তি দেখার জন্য বেঁচে থাকব না আরো ৭০-৮০ বছর।
কাজেই কোন কিছু ধরে নিতেও সমস্যা নেই অবশ্য, যেহেতু কবর বা চিতা থেকে আমাদের ধরে এনে বলা যাবে না যে ধর্ম টিকে আছে কেন অথবা বিলুপ্তই বা হল কেন ( ৭০-৮০ বছর পরে)।
খবরটি গতকাল পড়েছিলাম। শিরোনাম ছিল Saudi Arabia declares all atheists are terrorists :O
কেউ বিস্তারিত পড়তে চাইলে এখানে চলে যান।
খবরটি পড়ে তেমন অবাক হলাম না।
মশারী যদি সুঁইকে তার পেছনে একটা ফুঁটা থাকার অপরাধে দোষী বলে ভৎসনা করে তবে মূর্খের সাথে কথা বলে লাভ কি ??? যে কিনা নিজেও কোনদিন গুনে শেষ করতে পারবে না তার নিজের গায়ে কতগুল ফুঁটা তার কি শোভা পায় সুঁইয়ের পিছে একটি ফুঁটা বলে তাকে দোষী বলার???
প্রসঙ্গিক একটি কার্টুন মনে এলঃ
সকল ক্ষারক ক্ষার নহে, তবে তবে সকল ক্ষারই ক্ষারক।
সকল নবী রসুল নহে, তবে সকল রসুলই নবী।
একইভাবে…
[img]http://2.bp.blogspot.com/-ZSSA-3F7QHs/UzjxjyGbWYI/AAAAAAAAT-4/buoMp8hlsfI/s1600/liXxn0Uaj_I.jpg[/img]