ধরা যাক শিশুশ্রমের কথা। ইউরোপের মানবতাবাদীগণ শিশুশ্রমের বিষয়কে ভয়ংকর অপরাধ বলেই গণ্য করেন। আমি নিজেও তাদের সাথে একমত, একজন শিশুর জন্য প্রয়োজন খেলাধুলা, খেলাধুলার মাধ্যমে শিক্ষা এবং তার মানসিক বৃদ্ধির জন্য উপযুক্ত পরিবেশ। এতে আমার বিন্দুমাত্র আপত্তি নেই, বরঞ্চ সমর্থন রয়েছে। শিশু বয়সেই একজনকে কাজ করতে হলে তার শৈশবের সুন্দর দিনগুলো, ঠিকভাবে বেড়ে ওঠার সম্ভাবনাগুলো অনেকাংশেই নষ্ট হয়ে যায়। যেই শিশুটি ছোটবেলা থেকেই টাকা পয়সা উপার্জনের জন্য পরিশ্রম করতে বাধ্য হয়, সে শর্টকাট পদ্ধতিতে ধনী হওয়ার স্বপ্ন দেখতে পারে, সেই স্বপ্ন থেকে অপরাধীতে পরিণত হতে পারে। শিশুর মানসিক বিকাশ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, একে খাটো করে দেখার বিন্দুমাত্র অবকাশ নেই।
কিন্তু ইউরোপ আর দক্ষিণ এশিয়ার বাস্তবতা ভিন্ন, একেবারেই আলাদা চেহারা। ইউরোপে রাষ্ট্র একটি শিশুর প্রতি কতটা যত্নশীল তা কল্পনা করা যায় না। গর্ভবতী মা থেকে শুরু করে শিশুটির বেড়ে ওঠা, স্কুলে আনন্দের সাথে পড়ালেখা, খেলার মাঠ, রাস্তা পার হওয়া থেকে শুরু করে এমন কিছু নেই রাষ্ট্র যা নিয়ে মাথা ঘামায় না। সে কী খাচ্ছে, কী পান করছে সবকিছুই কঠোরভাবে পরীক্ষা করা হয়। আর আমাদের দেশে সেই সময়গুলো শিশুদের ইট ভাঙতে হয়, মাথায় এত বড় বোঝা নিয়ে কাজ করতে হয়। স্কুল কী তারা জানে না, খেলার মাঠ তারা হয়তো কোনদিন চোখেও দেখেনি। আর খাবার দাবার, তা তারা যা পায় সেটাই খেয়ে নেয়। খাদ্যবস্তুর মান বিচার তো বহু দুরের ব্যাপার, ডাস্টবিনে একবেলা খাবার পাওয়া গেলেই অনেক বড় ব্যাপার।
আমাদের শিশুদের এই অবস্থার কারণ অনুসন্ধান না করে শুধুমাত্র “শিশুশ্রম বন্ধ করো” টাইপের স্লোগান ইউরোপের অধিকাংশ মানবাধিকার সংগঠনের অন্যতম দাবী। কিন্তু এই শিশুগুলো কাজ না করলে তাদের কী অবস্থা হবে? ইউরোপের মানবাধিকার সংগঠন গুলো কী তাদের ভরণ পোষণের দায় নেবে? আমি শিশুশ্রমের পক্ষে কোনভাবেই নই, কিন্তু বাস্তবতা একেবারেই ভিন্ন। মানবাধিকার রক্ষা করতে হয়ে শিশুদের খেয়ে পরে বেঁচে থাকার অধিকার ক্ষুণ্ণ হলে সে মানবাধিকার দিয়ে কী হবে?
দীর্ঘ সময় ধরে অ্যামনেস্টির কর্তাব্যক্তিদের সাথে যুদ্ধাপরাধীদের মৃত্যুদণ্ড দেয়ার ব্যাপারে প্রচুর তর্ক বিতর্ক হয়ে যাচ্ছিল। আমি নিজেও মৃত্যুদণ্ড প্রথার বিরুদ্ধে। কিন্তু বাঙলাদেশের পরিস্থিতি এবং ইউরোপের মানবাধিকার পরিস্থিতি এক রকম নয়। যেই দেশে ধর্ষিতাকেই বিচার চাইতে গেলে দোররা মেরে হত্যা করা হয়, যেই দেশে অসংখ্য মানুষ একজন উকিল যোগার করতে না পারায় আদালতে শাস্তি পেয়ে যায়, যেই দেশে ৩ বছর ধরে একজন জেল খাটে অথচ কেউ জানে না সে কী অপরাধে জেলে আছে, যেই দেশে লক্ষ লক্ষ্য মানুষ হত্যার পরেও রাজাকাররা গাড়িতে বাঙলাদেশের পতাকা লাগিয়ে ঘোরে, আমাদের নেতা বনে যায়, এরকম পরিস্থিতিতে শুধুমাত্র যুদ্ধাপরাধীদের মৃত্যুদণ্ড নিয়ে অ্যামনেস্টি এত বেশি সোচ্চার কেন? যেখানে হাজার হাজার মানুষ টাকার অভাবে বা রাজনৈতিক কারণে মৃত্যুদণ্ড পাচ্ছে, সেখানে অ্যামনেস্টি কোথায়? তারা কেন শুধু গণহত্যাকারী ইসলামী মৌলবাদী রাজাকারদের মৃত্যুদণ্ডের সময়ই বিশাল বিশাল বিবৃতি দেয়? আর এই রাজাকাররা ক্ষমতা হাতে পেলে, শরীয়া আইন কায়েম করে প্রকাশ্যে কল্লা কেটে মৃত্যুদণ্ড চালু করলে তখন তারা কী করবে? তাদের দেশ পাকিস্তান আর সৌদি আরবে মানবাধিকার পরিস্থিতি কেমন?
এসব খুব কড়া সুরে অ্যামনেস্টির অফিসে গিয়ে বলছিলাম। তারা আমাকে বারবার বলছিল, তারা সকল মৃত্যুদণ্ডের বিরুদ্ধেই সোচ্চার। আমি জিজ্ঞেস করলাম, কোথায় তারা সোচ্চার? ১৫২ জন বিডিআর সদস্যকে যখন মৃত্যুদণ্ড দেয়া হলো, যাকে আমি বলেছিলাম রাষ্ট্রীয় গণহত্যা, তার চাইতে অনেক বেশি সোচ্চার তারা ছিল শুধুমাত্র কাদের মোল্লা ইস্যুতে। মৃত্যুদণ্ড প্রথা অবশ্যই অমানবিক, অবশ্যই আধুনিক মানবিক রাষ্ট্রের ধারণা থেকে বহু দূরে। রাষ্ট্র কখনই প্রতিহিংসা পরায়ণ হতে পারে না। মানুষ হত্যার কিংবা রাষ্ট্রীয় খুনের কোন মানবিক পদ্ধতি থাকতে পারে না। সকল হত্যাকাণ্ডই বর্বর এবং অমানবিক, তা একজন খুনির দ্বারা হোক কিংবা রাষ্ট্রের দ্বারা। আধুনিক বিচার পদ্ধতি এবং শাস্তি প্রদান করার মূল উদ্দেশ্যই হচ্ছে অপরাধীকে অপরাধ সংশোধনের সুযোগ দেয়া, কিন্তু এই মৃত্যুদণ্ড কোন অপরাধীকে অপরাধ সংশোধনের সুযোগও দেয় না। এই ১৫২ জন মানুষের বিচার হয়েছে মানুষেরই আদালতে, এবং পৃথিবীর কোন বিচার ব্যবস্থা কিংবা আদালতই ত্রুটিমুক্ত নয়, এবং এদের বিচারের পুরো প্রক্রিয়াই হয়েছে সেনাবাহিনীর অদৃশ্য নির্দেশে। পরবর্তীতে যদি জানা যায় এদের মধ্যে একজনও নির্দোষ ছিল, তাদের জীবন কী এই রাষ্ট্র ফিরিয়ে দিতে পারবে? বিডিআর বিদ্রোহে আসামীদের মধ্যে ১৫২ জনকে ফাঁসি, ১৫৯ জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড সহ ২৩৫ জনের বিভিন্ন মেয়াদের কারাদণ্ড দেয়া হয়েছে। এরকম রায় শুধু যুদ্ধপরবর্তী দেশে যুদ্ধাপরাধীদের বিরুদ্ধে দেয়ারই নজির রয়েছে, কোন স্বাধীন দেশে এরকম নজির খুব একটা নেই। ১৫২ জনের মৃত্যুদণ্ড দেয়া হলে বাঙলাদেশ মৃত্যুদণ্ড দেয়ার ব্যাপারে এমনকি সৌদি আরবকেও টেক্কা দিয়ে পৃথিবীর তৃতীয় বর্বর রাষ্ট্র হিসেবে গণ্য হবে।
কিছুদিন আগেও আমি জেলে ছিলাম, সেখানে শুধুমাত্র ৫৪ ধারায় আটক হওয়া অসংখ্য মানুষ বিনাবিচারে বছরের পর বছর বন্দী। এরা কেউ গ্রাম থেকে শহরে আসছিল, সেদিন হরতাল হওয়ায় তারা পুলিশের গণগ্রেফতারের মুখে পরেছে। র্যাব ডিবি সহ আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী প্রতিদিন ক্রসফায়ারের নামে বিচার বহির্ভূত হত্যাকাণ্ড চালায়, গোয়েন্দা অফিসে যারা ঢোকে তাদের অনেকেরই আর কোন খোঁজ পাওয়া যায় না; কিন্তু যখন সবাইকে বাদ দিয়ে শুধুমাত্র চিহ্নিত কিছু প্রমাণিত যুদ্ধাপরাধী, নারী ধর্ষক, খুনি, সংখ্যালঘু নির্যাতনকারী, সাম্প্রদায়িক রাজনীতি করা, ধর্মকে রাজনীতিতে ব্যবহার করা কুলাঙারের মানবাধিকার রক্ষা মুখ্য হয়ে ওঠে, তখন তাদের সততা নিয়ে প্রশ্ন জাগতেই পারে।
এই নিয়ে বেশ কিছুক্ষণ তাদের সাথে তর্ক বিতর্কের পরে এখানকার অ্যামনেস্টি প্রধান বিডিআর বিদ্রোহে মৃত্যুদণ্ড পাওয়া ১৫২ জনার মৃত্যুদণ্ড রোধের ব্যাপারে আবারো অফিশিয়াল চিঠি দেয়ার অঙ্গীকার করেছেন। এবং সেই সাথে একটি অফিশিয়াল চিঠি বাঙলাদেশের বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ে প্রেরণের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। সেই সাথে এই নিয়ে তারা আরো কিছু কাজ করবেন বলেও জানিয়েছেন। বিডিআর বিদ্রোহে আসামী কয়েকজনার সাথে জেলে থাকতে কথা হয়েছিল। ৬ হাজার বিডিআর সদস্যকে সেনা আদালতে শাস্তি প্রদানের পরে ৮২৩ জনকে আবারো বিচার করা হয় সিভিলিয়ান কোর্টে। একই অপরাধের জন্য দুটি পৃথক আদালতে দু বার শাস্তি দেয়া কীভাবে সম্ভব আমার জানা নেই। বিদ্রোহের পরবর্তী এক দেড় বছর সেনাক্যাম্পে তাদের পায়ের মধ্যে রড ঢুকিয়ে ঝুলিয়ে বছরের পর বছর নির্যাতন করা হয়েছে, অসংখ্য বিডিআরকে তখন প্রতিশোধ নেয়ার নামে হত্যা করা হয়েছে। সেনা আদালতে বিচারের সময় বন্দী ৫০ জনারও অধিক বিডিআর সদস্যের মৃত্যুর রিপোর্ট পাওয়া গেছে। বিদ্রোহের পরে কয়েকদিন অনেক নদীতে ভেসে উঠেছিল বিডিআর সদস্যদের লাশ। অনেক বিডিআর সদস্যকে আর্মী তুলে নিয়ে গেছে, যাদের পরে আর কোন হদিসই পাওয়া যায় না। সরকারও যেন প্রকাশ্য হত্যার লাইসেন্স দিয়ে দিয়েছে, ভাবখানা এমন যে, আর্মী কিছু বিডিআর হত্যা করে, তাদের প্রতিশোধ নিয়ে অন্তত ঠাণ্ডা থাকুক! আর তাদের বিচারের নামে যা হচ্ছে তা নিতান্তই কোন কোন পক্ষের মন জোগানো ছাড়া আর কিছুই নয়। যারা সত্যিকারের দায়ী ছিল, তারা অনেকেই এখন নাকি অনেক ক্ষমতাবান! বিডিআর সদস্য অধিকাংশ তরুণই পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তি, এতগুলো বছর ধরে জেলে থাকায় তাদের পরিবারগুলো আর ধ্বংসে মুখে। তাদের পিতামাতা আর দারুণ অভাবে মৃতপ্রায়, তাদের স্ত্রী আজ পেটের টানে দেহব্যবসা করতে বাধ্য, তাদের সন্তানরা আজ নানা অপরাধে জড়িয়ে গেছে। তাদের অনেকেরই একমাত্র দোষ ছিল তারা সেই বিদ্রোহের দিন ঘটনাস্থলে শুধুমাত্র উপস্থিত ছিল। তারা অনেকেই জানিয়েছে, আদালতে এমনকি তাদের বক্তব্য ঠিকমত রেকর্ডও করা হতো না। ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে ৮২৩ জন বিডিআর জওয়ান কারাবন্দী রয়েছে। প্রতিবার পুরো ৮২৩ জন বন্দীকে আদালতে উপস্থিত করা হয়, মুরগীর খোয়ারের মত ছোট কয়েকটা গাড়িতে করে তাদের নিয়ে আসা হয়। সেখানে ঘণ্টার পর ঘণ্টা দাঁড় করিয়ে রেখে তাদের সামান্য পানি পানের সুযোগটুকু দেয়া হয় না। আর ডান্ডাবেড়ির কথা আর কী বলবো? অসংখ্য মানুষকে চিড়িয়াখানায় বন্দী পশুর মত ডান্ডাবেড়ি পরিয়ে আদালতে নেয়া হচ্ছে, এই দৃশ্য কোন সভ্য দৃশ্য হতে পারে না।
জেলে থাকবার সময় কয়েকজনার সাথে পরিচয় হয়েছিল, একজন বিডিআর সদস্য মাত্র ১৫ দিন হয় বিডিআরে যোগ দিয়ে সেদিনের অনুষ্ঠানে গিয়েছিল। সেখানে গিয়ে সে ঘটনার মধ্যে ফেঁসে গিয়েছে। সেনাবাহিনীর ক্যাম্পে থাকবার সময় তাদের উপরে যেই অকথ্য নির্যাতন হয়, তারা বলেছিল সাধারণ মানুষ হলে সেই নির্যাতন তারা কেউই সহ্য করতে পারতো না। বিডিআর ট্রেনিং এর কারণেই অনেকেই এখনো মেরুদণ্ড সোজা করে দাঁড়াতে পারে। জেলের সেই মানুষগুলোর জন্য আমি কিছুই করতে পারি নি। আমার সাধ্য নেই। সান্ত্বনা এইটুকুই যে অন্তত একটা চিঠি পাঠাবার ব্যবস্থা করতে পারলাম, তারা হয়তো এই নিয়ে কিছু করবেন। এতে হয়তো কাজ হবে না, কিন্তু আমার ব্যক্তিগত দুঃস্বপ্নের, কষ্টের কিছুটা লাঘব হতে পারে।
আমাদের দেশের সংবিধানে সকল নাগরিকের সমান অধিকারের কথা লেখা থাকলেও কার্যত আমাদের রাষ্ট্র, আমাদের আইন এবং বিচার বিভাগ সর্বদাই সাধারণ মানুষকে নাগরিক হিসেবে বিবেচনাই করে না। আমাদের আদালতে আসামী পক্ষ থেকে আসামীর শিক্ষাগত যোগ্যতা, তার আর্থিক অবস্থা, তার রাজনৈতিক অবস্থার কাগজপত্র আদালতে পেশ করে থাকেন। এগুলো দেখার পরে আদালত সিদ্ধান্ত নেন আসামীকে জামিন দেয়া হবে কিনা। বিচারের রায়ও অনেকাংশে সেসবের উপরেই নির্ভর করে। কিন্তু যার শিক্ষাগত যোগ্যতা নেই, যার রাজনৈতিক দলের সাথে সম্পৃক্ততা নেই, তাদের কী জামিন পাওয়ার অধিকার নেই? তারা কী রাষ্ট্রের নাগরিক নয়? রাষ্ট্রের নাগরিকদের প্রতি এই বৈষম্যমূলক নীতি সেই ব্রিটিশ আমল থেকেই চালু রয়েছে, যা আজো বলবত রয়েছে। অথচ কারো কোন বিকার নেই এতে। একজনার অর্থনৈতিক কিংবা রাজনৈতিক ক্ষমতা কেন আদালতের ধর্তব্য বিষয় হবে? একজন সাধারণ শ্রমিক যে ঢাকা শহরে গভীর রাতে শুধুমাত্র রাস্তায় ঘোরাঘুরির জন্য ৫৪ ধারায় গ্রেফতার হয়েছে, একজন দেহব্যবসায়ী নারী যে শুধুমাত্র পেটের টানে রাস্তায় নেমে পুলিশের হাতে ধরা পরেছে, তাদের জামিন পাওয়ার যেন কোন অধিকার নেই। অন্যদিকে খুন ধর্ষণের আসামীও নানান অজুহাতে জামিন পায়। তবে তারা কী নিজেরাই সংবিধান লঙ্ঘন করছেন না? বিশেষ করে নিম্ন আদালতের প্রতিটি বিচারই হয় এভাবেই, নিম্ন আদালত যেন ক্ষমতাসীন রাজনৈতিক দলেরই একটা শাখা অফিস। উচ্চ আদালতে যেটুকু সুবিচার আশা করা যায়, সেটাও যদি ধ্বংস হয় তাহলে মানুষের দাঁড়াবার আর কোন পথ থাকবে না।
আমি আর্মীর পক্ষে ছিলাম না, বিডিআরের পক্ষেও নই। তাদের উভয়কেই আমি দুর্নীতির আখড়া মনে করি। যাদের অস্ত্র হাতে মানুষ হত্যার ট্রেনিং দেয়া হয় আমি তাদের পক্ষে থাকতে পারি না। কিন্তু আমি মানুষের পক্ষে। সেই সব নিহত সেনাসদস্যের পক্ষেও, এখন নির্যাতিত এবং নিহত বিডিআর সদস্যদের পক্ষেও। লক্ষ লক্ষ বাঙালি নিধনের জন্য দায়ী গোলাম আজম এদেশে ৯০ বছরের জন্য রাষ্ট্রীয় অতিথি হয়, প্রিজন সেলে বিলাস বহুল জীবন যাপন করে, আর কয়েকজন সেনাসদস্য হত্যার জন্য অসংখ্য বিডিআর মেরে নদীতে ভাসিয়ে দেয়া হয়, বছরের পর বছর তাদের নির্যাতন করে ১৫২ জনকে মৃত্যুদণ্ড দেয়া হয়। নিহত সেনাসদস্যদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করেই বলছি, আমাদের রাষ্ট্রের চোখে এক একজন সেনাসদস্য সম্ভবত লক্ষ লক্ষ “ব্লাডি সিভিলিয়ান” -এর চাইতে অনেক গুরুত্বপূর্ণ, অনেক মূল্যবান! দুর্ঘটনায় নিহত একজন গার্মেন্টস শ্রমিক যেখানে অভাবের কারণে আত্মহত্যা করে, সেই দেশে একজন সেনাসদস্য যাদের লেফট রাইট আর ঝোপ বুঝে কোপ মারা ছাড়া আর কিছু করতে দেখা যায় না, তারা কীভাবে এত মূল্যবান হয়ে ওঠে? কেন সানগ্লাস নেতা আর লম্পট স্বৈরাচাররা আমাদের এত বেশি পছন্দের? তারা কী উন্নত প্রজাতির মানুষ? তাদের হাতে রাখা ক্ষমতা বলবতের জন্য জরুরী? সবকিছুর চাইতে তারা দামী? এই বিচারের মাধ্যমে আসলে কী জানান দেয়া হলো?
১৫২ জনার এই রাষ্ট্রীয় গণহত্যা বন্ধ হোক। আমরা প্রতিহিংসা পরায়ণ রাষ্ট্র চাই না। বিডিআর বিদ্রোহে এতগুলো বছর ধরে জেলে থাকা আসামীদের প্রতি প্রতিহিংসা বা প্রতিশোধ মনোবৃত্তি বাদ দিয়ে সুষ্ঠু বিচার করা হোক। এই ধরণের ঘটনা কেন ঘটেছিল তা অনুসন্ধান না করে, তার মূলসূত্র অনুসন্ধান না করে শুধুমাত্র আসামীদের হত্যা করে এধরণের ঘটনা বন্ধ করা সম্ভব হবে না, বিষবৃক্ষের গোঁড়া না কেটে দিলে এরকম বিদ্রোহ আরো অসংখ্যবার হতেই থাকবে। আমরা যদি আসলেই চাই যে এরকম ঘটনা আর না ঘটুক, তাহলে আমাদের জানা প্রয়োজন কেন এই ঘটনা ঘটেছিল। জনগণের জানবার অধিকার রয়েছে সেদিন সেখানে আসলে কী হয়েছিল, কাদের উস্কানিতে এমন ঘটনা ঘটেছিল? মূল পরিকল্পনা কাদের ছিল? এরকম বিদ্রোহের কারণই বা কি ছিল। এসবই এখন ধামাচাপা পরে গেল। কেউ এখন আর বিডিআরের পক্ষে টুঁশব্দটিও করে না। তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে আর্মীর বর্বর আক্রমণ এবং ছাত্রদের উপরে নির্মম নির্যাতনের পরে বিশ্ববিদ্যালয়ের অনেক শিক্ষক, অনেক ছাত্রকেই সেনাক্যাম্পে নিয়ে নির্মমভাবে নির্যাতন করে বোঝানো হয়েছিল, এই দেশে আর্মীই সবচাইতে ক্ষমতাশালী। মেধায় মননে সংস্কৃতিতে শিক্ষিত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সম্ভাবনাময় ছাত্রদের চাইতে অস্ত্রধারী লেফট রাইট বিশেষজ্ঞ আর্মী ক্ষমতাসীনদের কাছে অনেক বেশী প্রিয়। এবারে কয়েকদফায় বিডিআরের উপরে সব দিক থেকে নির্যাতন চালিয়ে আবারো যেন বোঝানো হল, এদেশে ক্ষমতায় থাকতে হলে আর্মীকে ঠাণ্ডা করেই থাকতে হবে, তাদের হাতে রাখতে হবে। নিহত আর্মী সদস্যদের প্রতি প্রতিটি মানুষেরই সহানুভূতি ছিল এবং আছে, তা থাকবেও সবসময়। কিন্তু সেই সহানুভূতি যদি বিচার প্রক্রিয়ায় প্রতিহিংসায় রূপ নেয়, তা আর বিচার থাকে না। প্রতিশোধ হয়ে যায়। আর আধুনিক বিচার প্রক্রিয়া কোনভাবে প্রতিশোধমূলক হতে পারে না, তা হলে সেটা সেই বিচার বিভাগের এবং রাষ্ট্রের ভিত্তি দুর্বল করে দেয়। চোখের বদলা চোখ, রক্তের বদলা রক্ত, এই চেতনা, এই মধ্যযুগীয় বর্বরতার চর্চা আধুনিক সমাজের উপযোগী নয়। প্রতিশোধ স্পৃহায় উম্মত্ত হয়ে আর যাই হোক, ন্যায় বিচার কখনই সম্ভব নয়।
আপনার লেখার থেকেও আপনার উদেশ্যের প্রতি আনুগত্য ঢের বেশী রকম। এর মানে এই নয় আপনি খারাপ লেখেন, বরং অন্য আরো ভালো লেখকদের প্রতি শ্রদ্ধা প্রজ্ঞাপন। আপনার এই লড়াই করার সরাসরি কোনো সহযোগিতা না করতে পারলেও মানসিক বল বা পাশে আছি এটা লেখনীর মাধ্যমে বলার রসদ জোগাতে পারি বৈকি। এই টুকু সমর্থন আজীবন থাকবে নিশ্চিত করে বলতে পারি। শুধু বলবো লেখাটা জনসমক্ষে দেয়ার আগে আরো ভালো করে প্রুফটা দেখে নেবেন। কিছু বানান ভুল সমালোচকদের জন্য হাতিয়ার না হয়ে যায়। ভালো থাকুন আর জয়ী হন। শুভ কামনা রইল।
আমি আরিফ রহমানের সাথে একমত। মুল স্রোতের বিপরীতে একটি ভাল লেখা। কিন্তু আমার কাছে এই লেখার মাঝে কিছু বিষয়ে দ্বিমত রয়েছে। আসিফ মহিউদ্দিন যেহেতু একজন ভাল মাপের ব্লগার তাই তাকে যে কোন বিষয়ে লিখতে গেলে অনেকটা দায়িত্ব নিয়ে লিখতে হয়। শুধুমাত্র আসিফ মহিউদ্দিন নয় অনেক ব্লগার আছেন যাদের লেখা আমাদের মত কিছু মানুষ বেশ উৎসাহের সাথে পড়ে। তাই তাদের দায়িত্ব অনেক বেশি আছে বলে মনে করি।
আমার সত্যি অনেকটা ব্যাথিত লেখার শেষে মন্তব্য দেখে। আমি দেখেছি যে বিষয়টা নিয়ে আসিফ মহিউদ্দিন লিখেছেন সেই বিষয়ে থেকে বাইরে এসে লিপ্ত হয়ছে ব্যক্তিগত কাঁদা ছোড়াছুড়িতে। যেটা তাদের কাছে কাম্য নয়।
@আসিফ ভাই আপনার লেখানিয়ে একজন মন্তব্য করেতেই পারেন ,আপনার লেখা সবার ভাল নাও লাগতে পারে। আসলে সবার সবকিছু ভাল লাগে না।
দুঃখিত, কারো মন্তব্য পড়ার এবং উত্তর দেয়ার সময় করতে পারলাম না। কয়েক জায়গাতে ক’দিন ধরে ঘুরতে হচ্ছে, বক্তব্য বাজি করে বেড়াচ্ছি আর কী। সপ্তাহ খানেক পরে সময় পেলে মন্তব্যগুলো পড়বো। মন্তব্য করার জন্য সবাইকে ধন্যবাদ। 🙂
@আসিফ মহিউদ্দীন,
যেন আপনিই শুধু ব্যস্ত আর অন্যদের খেয়েদেয়ে কাজ নেই খালি নেট ব্রাউজ করা ছাড়া? সপ্তাহ খানেক পরে তাহলে আপনি মন্তব্য গুলো পড়ার কৃপা করবেন যদি সময় পান তবেই তাই না? আর সময় আপনি নাও পেতে পারেন তাই মন্তব্যগুলো নাও পড়তে পারেন, সেক্ষেত্রে বাকিরা যারা ( যদি কেউ অপেক্ষা করে আর কি) দেবদর্শনের আশায় বসে থেকে শেষে পেতে পারেন মুলা তাই না? 🙂 সপ্তাহ খানেক সময় নিলেন যেন তখন লেখাটি নিয়ে যে উত্তপ্ত বিতর্ক তৈরি হয়েছে সেটা একেবারেই থিতিয়ে পড়বে, আর তখন আসবেন নিজের গালভরা বুলি নিয়ে আপনার রেজিস্টার্ড সমর্থকদের কাছে? আচ্ছা ব্লগ লেখেন আর এতে যখন আলোচনা শুরু হয়, তখনই যদি আপনি ব্যস্ত হয়ে সটকে পড়েন তবে আপনার লেখার উদ্যেশ্য নিয়ে কি অনেকেই সন্দেহ করেতে পারে না?
তারচেয়ে হাতে কিছু সময় নিয়ে লেখেন না কেন যেন চ্যালেঞ্জ গুলোর জবাব দেবার মত সময় করে উঠতে পারেন? অথবা লেখার সাথে একটা কথা জুড়ে দিন আর তা হল ” আমার লেখায় কোন বিরুদ্ধ মতের স্থান নেই” । 🙂 সেক্ষেত্রে আপনি যদি অনন্তকালেও একবার সময় বের করতে না পারেন তবু দেখবেন স্তুতি বাক্যে এতটাই ভারী হয়ে গেছে আপনার লেখা, যে স্তুতিবাক্য আপনি গুনে শেষ করতে পারবেন না।
@অর্ফিউস ভাই আপনারা এই পোষ্টের লেখক এর পিছনে শুধুশুধু সময় নষ্ট করতেছেন | উনি পোস্ট লেখেন উনার ভক্তদের জন্য, যারা শুধু উনার গুনগান করবে | :clap
এই মনের মাধুরী মেশানো উচ্চমার্গীয়(=”বালছাল”?!) পোষ্টের হিট আর শেয়ার এর পরিমান দেখে আমি অবাক !! :-O 😕
@তারিক ভাই,
জি ঠিক। আমি হাল ছেড়ে দিসি 🙂 আর এই পোষ্টে নেই 😉
অবাক হবেন না ভাইয়া, চক চক করলেই সোনা হয় না, আর খাটি সোনা চমকায় কম 🙂 যেসব পোষ্ট এই ব্লগে অসাধারন, বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই সেসব কিন্তু খুব কম হিট।
এই লেখাটি খুবই গুরুত্বপূর্ন বিষয় নিয়ে। বাংলাদেশে বলতে গেলে কেউই নেই যারা বিডিআর এর সাধারন সৈনিকদের নিয়ে লিখে বা কথা বলে। এই সব ‘বিদ্রোহী’ রা কারাগারে যে কি পরিমান টর্চারের শিকার হয়েছে তা কল্পনা করতেও ভয় করে। এইসব সেনারা যদি লিখতে পারতো তবে এসব ভয়ংকর গথিক হরর সম্পর্কে আমরা আরো অনেক কিছুই হলেও জানতাম।
কিন্তু এতো গুরুত্বপূর্ন একটি বিষয়ের উপরে লেখাটিকে আসিফ খামোকাই অনেকটা খেলো করে ফেলেছে সামরিক বাহিনী’র উপরে সস্তা ও অবিবেচক কিছু কথা বলে। এসবের কোনো দরকার ছিলো না পাঠকদের কাছে বিচারের নামে গনপ্রতিশোধ যজ্ঞের ভয়ংকরতা তুলে ধরতে।
কোন সামরিক বা আধাসামরিক বাহিনীর বিদ্রোহের তথ্য বের করার জন্য কখনো অর্ধশতাধিক মানুষ হত্যা করার দরকার হয় না। হ্যাঁ, দরকার হতে পারে কোন তথ্য গোপন করার জন্য।
খুবই হালকা চালে, অনেকটা বিনোদন দেবার উদ্দ্যেশ্যেই লেখক কোনরকম রেফারেন্স ছাড়া লেখাটি লিখে গেছেন, এবং অনেক বিপরীত মত কে এড়িয়ে গেছেন পাঁকাল মাছের মত পিছলে যাবার মাধ্যমে;অবশ্য এই বিষয়ে লেখকের সুখ্যাতি বেশ পুরানো।
বাস্তব জীবনে অনেক ঝামেলার সম্মুখীন হলেও ব্লগ জগতে লেখকের জুড়ি সত্যি মেলা ভার, সমমনারা তার বেশিরভাগ কথায় তালি বাজিয়ে নৃত্য করেন আর এতে লেখক যে আত্মপ্রসাদ লাভ করে থাকেন সেটা বলাই বাহুল্য। এখানে এই চপলতাপুর্ন লেখাটির সুখ্যাতি করতে গিয়ে অনেকে একেবারে তালজ্ঞান হারিয়ে ফেলছেন, আর লেখককে দিচ্ছেন ডেমি গডের মর্যাদা, লেখক কি ভাবছেন জানি না, তবে নিজেও হয়ত মনে মনে নিজেকে ডেমিগড জাতীয় কিছু ভেবে থাকেন,স্বঘোষিত নব্য নাস্তিক ব্লগারের জন্য যেটি বেশ দৃষ্টি কটু। প্রমান স্বরূপ তিনি বেশিরভাগ বিরুদ্ধ মতকেই এড়িয়ে যান, বা পিছলে যান ,(সেগুলোকে অনেকটা বালকসুলভ চপলতা বা অপ্রয়োজনীয় ভেবে?) তবে কি তিনি লেখেন শুধুই সমমনাদের স্তুতির আশায়?
লেখার মধ্যে সবচেয়ে আপত্তিকর বাক্য হচ্ছে এইটা।
লেখক কেন জানি চিরকালই পতিতাবৃত্তিকে এক মহান পেশার স্বীকৃতি দেবার জন্য উঠেপড়ে লেগেছেন সেটা আমার বোধগম্য নয়। উনার এক লেখাতে তিনি সরাসরি পতিতাদের সহানুভুতি দেবার ছদ্মাবরনে প্রাকারান্তরে পতিতাবৃত্তি কে মহিমান্বিত করতে এবং উৎসাহিত করতে চেয়েছেন, যার ফলে নিজের অজান্তেই ( নাকি সচেতন ভাবেই?) তিনি লাখ লাখ মহিলা গার্মেন্টস শ্রমিক যারা মাথার ঘাম পায়ে ফেলে কষ্ট করে উপার্জন করে নিজেদের পেটের ভাত জোটাচ্ছেন তাদেরকে অসম্মান করেছেন।
আচ্ছা বি ডি আর দের সেই স্ত্রীরা পেটের দায়ে যে দেহ ব্যবসা করতেই বাধ্য এই তথ্য লেখক পেলেন কোথায়, সেই রেফারেন্সও কিন্তু তিনি দেননি, নাকি এটি নিজস্ব অভিজ্ঞতা ( পতিতা গমন?) থেকেই বলছেন?সে ক্ষেত্রে বলার কিছু নেই, কারন নিজস্ব অভিজ্ঞতা যাই হোক না কেন সেটার প্রমান দেয়া প্রায় অসম্ভব।
তবু এখানে তিনি সেই বিডিআর সদস্যদের স্ত্রীদের জন্য অন্য বিকল্প পেশা কেন চিন্তা করতে পারছেন না?
উনার কেন এমন ধারনা হল যে একটা মেয়ের স্বামী মারা গেলে, তাকে পেটের দায়ে বাধ্য হয়েই দেহ ব্যবসায় নামতেই হবে, যেখানে দুনিয়াতে আরো অনেক পেশা আছে, এবং মেয়েটি সেই সব পেশার একটি কে অনায়াসে আকড়ে ধরে বাচতে পারেন?
নাকি জাকির নায়েক যেমন পশ্চিমের দেশগুলিতে মেয়েদের হয় বিয়ে নয় পাবলিক প্রপার্টি এই দুটা ছাড়া আর কোন অপশন খুঁজে পান না, লেখকও কি সেইভাবেই একটা মেয়ের ভাগ্যে হয় স্বামীদেবতার উপর নির্ভরশীলতা, নতুবা তার অবর্তমানে দেহপসারিণী হতে বাধ্য হওয়া ছাড়া বিকল্প কোন রাস্তা দেখতে পান না? এটাকে কি তাহলে নাস্তিককুলের জাকির নায়েকিয় আচার বলা যায় না? এরই নাম কি নারীবাদ, যে নারীবাদ নারীবাদ করে চিল্লিয়ে লেখক তাঁর ঘুমের মধ্যেও হয়ত দুঃস্বপ্ন দেখে জেগে উঠেন?
আসলে পাখীর আকাশে ওড়া দেখে হিংসায় পিপিলিকা যদি আকাশে উড়বে বলে গোঁ ধরে, তবেই এই সংকট তৈরি হয়। বাঘের ছাল গায়ে দিলেই যেমন বাঘডাঁশা বাঘ হয়ে যায় না, তেমনি নারীবাদ নারীবাদ করে চিল্লিয়ে তলে তলে আসলে সুবিধাবাদকে লালন করলেই কেউ প্রকৃত নারীবাদী হয়ে যায় না।
এই ব্লগে আমি বেশ কিছু প্রকৃত নারীবাদী লেখকের লেখা পড়েছি, তাঁদের মধ্যে অন্যতম হলেন গীতা দি, যিনি সত্যিকারের নারীবাদী এবং দ্বিচারিতা বিবর্জিত লেখা তিনি লিখে থাকেন।
কিন্তু জনাব আসিফের লেখা দেখে চিরকালই মনে হয়েছে যে উনি নারীবাদকে আসলে ভোগবাদের রূপ দিয়ে নারীকে দেখেছেন এমন একটা অবজেক্ট হিসাবে যেন নিজেরা বিয়ে প্রথায় একেবারে অবিশ্বাসী হয়েও অনেক নারীর সরলতার সুযোগে তাঁদের গেলার একটা চান্স পেতে পারেন। অথবা নারীবাদ জিনিসটি কে তিনি ফ্যাশন হিসাবে নিয়ে ফেমডম ফেটিশ কে ফেমিনিজমের সাথে গুলিয়ে ফেলেন।
নারী পুরুষের বৈষম্য আছে অনেক বেশি এটা স্বীকার করতেই হবে, তবে তিনি যে বিকল্প ধারায় এটার সমাধান করতে চান সেটা সত্যি প্যাথেটিক।
আচ্ছা বি ডি আর সদস্যের স্ত্রীর জন্য সত্যি কি লেখক কোন বিকল্প রাস্তা খুজে পেলেন না? হয় একজনের স্ত্রী থাক অথবা দেহ ব্যবসা করতে বাধ্য হও, যেমন জাকির নায়েক বলে থাকে যে হয় একজনের স্ত্রী নয়ত, জনগনের সম্পত্তি?
আচ্ছা নারীরা কি এতই দুর্বল এবং অছ্যুত যে তাঁদেরকে হয় স্ত্রী নয়ত পাবলিক প্রপার্টি বা দেহপসারিণী হতেই হবে???
বিবেকবান নরনারী নির্বিশেষে এই জাকির নায়েকীয় এবং নব্য জাকির নায়েক তথা আসিফীয় ধারার বিরুদ্ধে চ্যালেঞ্জ করে এই প্রশ্নটি রেখে গেলাম।
আসিফ ভাই,
মুল স্রোতের বিপরীতে এমন অসাধারণ লেখা আপনার পক্ষেই সম্ভব।
আমি পুরপুরি একমত
বস, এই তথ্য গুলা পাইলেন কই?
@সামিয়া,
উনি সবজান্তা, নির্ভুল নরদেবতা, এই তথ্য জানেন না বুঝি? না জানলে জেনে রাখুন, এটাই হয়ত জেনে রাখার আসল সময়। 😉
@সামিয়া,
আপাতত উনি অ্যামি-নেস্টিবাজি করে বেড়াচ্ছেন দেখে ‘অসংখ্য’ বিডিয়ায়ের লাশের হিসেব দেওয়া তার পক্ষে সম্ভব হচ্ছে না। আর দ্বিতীয় ব্যাপারটার তথ্যসূত্র তিনি নিজেই নাকি সেটা ভাবছি 😉
আসিফ মহিউদ্দীন আহত হবার পর এমনকি কারারুদ্ধ হবার পর অনেকের মতো আমিও আগ্রহী হয়ে তাঁর বেশ কিছু লেখা পড়েছি। তাঁর অনুভুতির সাথে শুধু আমি নই, আমার ধারনা সুষ্ঠু বিবেক সম্পন্ন অধিকাংশ যুক্তিশীল মানুষ একমত হবেন। সকল জীবের মধ্যে মানব শ্রেষ্ঠ তার বুদ্ধিবৃত্তিক কারনে। বুদ্ধিমত্তার মধ্যে যদি মানবিকতার স্থান না থাকে, তবে সে আর যাই হোক শ্রেষ্ঠত্বের দাবীদার হতে পারে না। যেখানে বুদ্ধি আছে, যু্ক্তি আছে কিন্তু মানবিকতা নেই- তা তো ধ্বংসাত্মক। আসিফকে তার মানবিকতাপূর্ণ আবেগময় লেখাটির জন্য নিরন্তর ধন্যবাদ। এক্ষেত্রে তিনি বাংলাদেশের তিনটা স্পর্শকাতর বিষয়ের (ইসলাম,আদালত,প্রতিরক্ষা) মধ্যে অন্তত দুইটাকে সাহসিকতার সাথে সমালোচনা করেছেন। এদেশের প্রতিটি মানুষকে ন্যুনতম টিকে থাকার জন্য হলেও আচরণে বা ভাষায় এগুলোকে সমীহ করে চলতে হয়।
সামান্য একটু উদাহরন দেয়া যাক-
১. ইসলামের ক্ষেত্রে – রমজান মাস এর নামের আগে ’পবিত্র’ শব্দটি যোগ করতে হবে এবং এই পবিত্রতা রক্ষার জন্য এদেশে সকল ধর্মের বা ধর্মহীন মানুষকে দিনের বেলা প্রকাশ্যে আহার বা ধুমপান বর্জন করতে হবে (ইত্যাদি….. ইত্যাদি…)।
২. আদালতের নামের পূর্বে ‘বিজ্ঞ বা মাননীয়’ শব্দ যোগ করতে হবে, মন্তব্যে সতর্কত থাকতে হবে- নতুবা আদালত অবমানন।
৩. প্রতিরক্ষা বাহিনীর ক্ষেত্রে অন্তত সেনাবাহিনীর নামের আগে ’দেশপ্রেমিক’ শব্দটি যোগ করতে হবে।
অনেক কথা বলার থাকলেও ঝুকি নিয়ে অযথা বিপদে পড়তে চাই না। ফেক আইডি.তে হলে চেষ্টা করতাম।
লেখার মূল বক্তব্যে তেমন দ্বি-মত না থাকলেও আবেগের ছড়াছড়ি মাঝে মাঝে বেশীই মনে হয়েছে। আমাদের দেশে আইন আদালত কোনদিন বিতর্কের ঊর্ধ্বে, সর্বসাধারনের জন্য সমাধিকার নিশ্চিত করার গ্যারান্টি দিতে পারেনি। দিনে দিনে আরো বিতর্কিত হচ্ছে। বিডিআর ম্যাসাকার খুবই সংবেদনশীল ইস্যু, তাই অভিযুক্তদের হয়ে কথা বলার সতসাহস প্রদর্শন খুব সহজ নয়। লেখক সে কারনে অবশ্যই ধন্যবাদ পেতে পারে। ফেসবুকে দেখেছি নিহত সেনা অফিসারদের বিকৃত লাশের ছবি, স্বজনহারাদের কান্নাকাটির ছবি দেখিয়ে বিডিআর সদস্যদের জন্য যাদের মানবাধিকার বোধ জাগ্রত হয় তাদের গালাগাল করা হচ্ছে। জাতিগত ভাবেই আমরা চরমপন্থী। তবে এমন স্পর্শকাতর সংবেদনশীল বিষয়ে(যাতে আবার সেনাবাহিনী জড়িত) স্রোতের বিপরীতে লিখলে গেলে শুধু ব্যাক্তিগত অভিজ্ঞতা যথেষ্ট নয়, কিছু রেফারেন্স দরকার। অবশ্য নিরপেক্ষভাবে মূল্যায়নই আদৌ করার মনোভাব না থাকলে রেফারেন্স পাবারও উপায় নেই। এ দেশ মনে হয় চিরকালই ষড়যন্ত্র, গোপন হত্যা, বিচারের নামে গনহত্যা এসবের আখড়া হয়ে থাকবে।
আবেগময় কিছু কথা যা অতি দূর্বল মনে হয়েছেঃ
– জগত বড়ই কঠিন। নিরীহ মানুষকে রক্ষার জন্যও অস্ত্র হাতে নিতে হয়, এমনকি মানুষ হত্যার ট্রেনিংও নিতে হয়। শুধুমাত্র অস্ত্র হাতে মানুষ হত্যার ট্রেনিং নেওয়াকে অপরাধ ঠাউরে সেনা পুলিশের প্রতি বিদ্বেষ পোষন বিচক্ষনতার লক্ষন নয়। এক সময় সেনাবাহিনীতে আসলেই মোটামুটি ব্যাক বেঞ্চার বলে পরিচিতদের ভিড়ই ছিল বেশী। এখন সে ট্রেন্ড নিঃসন্দেহে বদলেছে, বিশেষ করে ক্যাডেট কলেজের ষ্ট্যান্ড করা বহু ছেলে এরশাদ আমলে থেকেই সেনাবাহিনীতে যোগ দেওয়া শুরু করেছে। এমনকি পুলিশ বাহিনীতেও আমার ডাক্তার ইঞ্জিনিয়র বহু বন্ধু বান্ধব আছে। এটা মানা যায় যে সেনাবাহিনীতে শিক্ষাগত যোগ্যতা মূখ্য নয়, জ্ঞানচর্চার আখড়াও সেনাবাহিনী নয়। বিশ্বের কোন সেনাবাহিনীই জ্ঞানচর্চার প্রতিষ্ঠান হিসেবে গড়ে ওঠে না। আমেরিকান সেনাবাহিনীর গড় শিক্ষাগত যোগ্যতা সম্ভবত আমাদের থেকেও নীচু হতে পারে। সেখানে এক রকম হাতে পারে ধরে কান্নাকাটি করে সেনাবাহিনীতে লোক ধরানো হয়, মাঝে মাঝে মুদি দোকানে সেনাবাহিনীতে লোক নেওয়া অভিযান পরিচালনা করা হয়।
শুধু মাত্র এই কারনে সেনাবাহিনীর প্রতি বিদ্বেষ পোষন করা খুবই অনুচিত। যার যা কাজ সে সেটাই করবে। দেশে বহিঃশত্রুর আক্রমন হলে ভূঁড়িওয়ালা বিশ্ববিদ্যালয় ডক্টরেট করা লোকে নয়, মানুষ হত্যার ট্রেনিং নেওয়া এই অর্ধশিক্ষিতরাই বাঁচাতে সবার আগে এগিয়ে আসবে।
সেনা প্রভাব এ দেশে পাকি আমল থেকেই আছে। সেটা কিভাবে দূর করা যায় সে নিয়ে সূস্থ আলোচনা ফোকাস দরকার। সেনা বাজেট নিয়েও গরীব দেশ হিসেবে জাষ্টিফিকেশনের গুরুতর প্রশ্ন আছে। সেসব বাদ দিয়ে আবেগময় বক্তব্য পরিস্থিতি আরো খারাপ ছাড়া ভাল করবে না। সেনাবাহিনী দেশের শত্রু নয়, তারা আমাদেরই লোক। বেহুদা তাদের শত্রু বানানো ক্ষতি ছাড়া ভাল কিছু করবে না।
এমনেষ্টি জাতীয় সংগঠনগুলির বিরুদ্ধে শুধু যুদ্ধপরাধীদের জন্য কান্নাকাটির অভিযোগও কিছুটা একপেশে। যুদ্ধপরাধীদের লবিং ক্ষমতা এখানে মূল কারন। সারা পৃথিবীর মত বাংলাদেশে হাজার হাজার অন্যায় অবিচার ঘটে, সব তাদের নজরে সব সময় আসে না। এই নজরে আনার কাজটি নিষ্ঠার সাথে করে যাচ্ছে জামাতি টাকা।
@আদিল ভাই,
অতি সত্য কথা বলেছেন। এই কথাটা অনেকেই বুঝে না, আবার বুঝলে না বুঝার ভান করে থাকে। খুবই আজব এই মনুষ্য সম্প্রদায় :-s
এত সুন্দর, সাবলীল প্রকাশ!! যতই পরেছি ততই মুগ্ধ হয়েছি।
বিডিআরদের শুধু নয়, এটা সমগ্র জাতির জন্যই চিন্তার বিষয়। রাজনীতি যেখানে ধর্ম, ব্যাভিচার, মারামারি, কাটাকাটি দুর্নীতি দিয়ে শুরু হয় সেখানে আসিফ ভাইয়ের সপ্নের দেশ সম্ভব না। আমারা শুধু অপপ্রয়োগ করতেই জানি, কারণ আমাদের উপরের লেভেলের অধিকাংশ লোকেরই মানসিক বিকাশ সুষ্ঠুভাবে হইনি, তাদের মস্তিস্ক অনেকটাই বিকৃত। যেখানে চাঁদাবাজি, খুন খারাবি করাটা একটা বিশববিদ্যালয়ের ছাত্ররা গর্ব হিসেবে নিতে পারে, সেখানে শুধুমাত্র স্কুলের গণ্ডি পার হওয়া, সারাদিন অক্লান্ত পরিশ্রমে বড় হওয়া বিডিআর ছেলেটির ক্ষোভের কারনে হোক, আর কারোর প্ররোচনাতেই হোক ৮-১০টা খুন করতে পারাটা খুবই স্বাভাবিক। শুধু বিডিআর কেন, রাস্তায় বড় হওয়া এক ছেলের পক্ষে আরও বেশি স্বাভাবিক। দু-একটা লোক এমন থাকতেই পারে, এটা হয়ত তেমন বিষয় না, তবে হতাশার কথা হচ্ছে এসব লোকের দ্বারা যখন রাষ্ট্র বা রাষ্ট্রের কোন অংশ পরিচালিত হয় তখন। তখন তার মাধ্যমে দেশের ক্ষতি তো হচ্ছেই+দেশে এরকম লোকের বিকাশ লাভের সম্ভাবনাও খুব বেড়ে যাচ্ছে। এ অবস্থা চলতে থাকলে ভবিষ্যতেও আরও বড় কিছু হওয়া যথেষ্ট সম্ভব।
@চয়ন,
আপনারা কি কোন জরীপ চালিয়েছেন এবং তার পরে এই তথ্য দিচ্ছেন?
আপনি কি এই ব্যাপারে পুরোপুরি নিশ্চিত? সেক্ষেত্রে প্রমান সহকারে এই নিয়ে একটা লেখা আপনার কাছ থেকে পাব এই আশায় রইলাম 🙂
ঠিক , মানুষ যেন তেলাপোকা, যেন ৮-১০ টা খুনের মত স্বাভাবিক ঘটনা আর হতেই পারে না, আসলে হবার কারন নেই যদি এই ব্যাপারটা আদর্শিকভাবে দেখা হয়।
ভাল কথা, স্কুলের গণ্ডি পার হওয়া, সারাদিন অক্লান্ত পরিশ্রমে বড় হওয়া বিডিআর ছেলেটির ক্ষোভের কারনে হোক, আর কারোর প্ররোচনাতেই হোক কতজন মানুষ খুন করলে সেটাকে অস্বাভাবিক বলা যেতে পারে বলে মনে করেন আপনি? নাকি এইসব কারনে খুন, সেটা যে কয়জনকেই করা হোক না কেন সবই খুবই স্বাভাবিক ঘটনা?
সেক্ষেত্রে বাইবেল বা কোরানে খুনের বদলে খুন, চোখের বদলে চোখ আর দাতের বদলে দাঁত যে এই সব কারনের চেয়ে ঢের মানবিক সেটা নিশ্চয়ই স্বীকার করে নিয়েই বলছেন? আপনার এই প্রশ্নের উত্তর যদি নেতিবাচক হয় আপনার পক্ষ থেকে, তবে কেন সেটা নেতিবাচক, আশা করি কারন সহ সবিস্তারে ব্যাখ্যা করবেন, ধন্যবাদ।
লেখা পড়ে মনে হল… আসলেইতো লেখতে চাইলে যা খুশি লেখা যায়… মনের মাধুরী মিশিয়ে। কোন জরিমানা নাই… বাস্তব জীবনে কোন কিছুর অভিজ্ঞতা না থাকলেও কিছু একটা লিখে ফেলা যায়!!!
লেখা যে কত হালকা চালে হতে পারে তা লেখকের
এই মন্তব্য তার প্রমাণ!!! ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের জ্ঞান-বুদ্ধি নিয়ে কোন প্রশ্ন নেই তবে “অস্ত্রধারী লেফট রাইট বিশেষজ্ঞ” বলে লেখক আর্মি অফিসারদের জ্ঞান নিয়ে যে প্রশ্ন তুলতে চেয়েছেন তাতে লেখকের বুদ্ধিমত্তা নিয়ে প্রশ্ন তুলতে আমি বাধ্য হচ্ছি!!! বহু আর্মি অফিসার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র- শুধু ডিইউ নয় – বুয়েট, আইইউটি এবং আইবিএ থেকে পাশ করা – আবার অনেকে এসব থেকে ড্রপ দিয়েও সামরিক বাহিনীতে যায় – আফিসার হতে হলে শুধু শারীরিক যোগ্যতা লাগে না – লেখা পড়ায়ও ভালো হতে হয়। জানিনা, লেখকের শিক্ষাগত অবস্থা কেমন – তবে বেশীরভাগ আর্মী অফিসার কিন্তু অলথ্রু ফার্স্ট ক্লাশ শিক্ষা জীবনে 🙂
আর, বিডিয়ার এর হত্যা নিয়ে আরও একটু গবেষণা করেন – জুরিসপ্রুডেন্স এর নিরিখে একটু ব্যাখ্যা বিশ্লেষণ করেন… ওটা আরও ভালো হয়।
@সংবাদিকা, আপনার উত্তেজনা এবং না বুঝে মন্তব্য বোধগম্য। প্রচুর সংখ্যক বাঙালি নারী এখনো আর্মী এবং পাকি জওয়ানদের স্বপ্নে কেন দিশেহারা হয়ে যায়, এবং তাদের সম্পর্কে কিছু শুনলেই উত্তেজিত হয়ে যায়, তা এখন আর অবাক হবার মত ব্যাপার না। আমার পরিচিত কিছু নারীই নিজ নিজ আর্মী স্বামীর প্রশংসায় সদা পঞ্চমুখ থাকেন। কিন্তু জনগণের ট্যাক্সের টাকায় তেল জমিয়ে সকাল বিকাল লেফট রাইট করে তেল ঝড়ানোর মহিমা আমি আজও বুঝতে পারি নি।
আপনার জ্ঞান বুদ্ধির তারিফ করছি। আপনার বুদ্ধিমত্তার অপূর্ব প্রকাশ এই প্রচুর গবেষণা সমৃদ্ধ মন্তব্যটি বাধিয়ে রাখতে ইচ্ছে হচ্ছে। :clap
@আসিফ মহিউদ্দীন,
হা হা… একটা আঞ্চলিক প্রবাদ মনে পরে গেল – কাউয়ার বাসায় কুলিরচাও.জাত বিদ্যায় করে রাও…… ঢাকা হোক কিংবা বার্লিন হোক !!
@সংবাদিকা, অত্যাধিক উত্তেজনার একটা কারণ হিসেবে মনোবিজ্ঞানীগণ অবদমনকে নির্দেশ করেন। অবদমন! :-Y
@আসিফ মহিউদ্দীন,
আপনি ভুল করলেন মশাই, ইনি নারী নন, পুরুষ দাবি করে থাকেন তবে আমার ধারনা ইনি লিংগহীন (লিট্যার্যা লি এবং ফিগারেটিভলি) অনেকটা আল্লা বা ঈশ্বরের মত। :hahahee:
@অজয় রাউত,
একজন মানুষ যদি এমনকি লিঙ্গহীনও হয় তবে সমস্যা কোথায়?
ব্যক্তিগত আক্রমণের দিকে না গিয়ে আমরা সবাই সুস্থভাবে আলোচনা করি।
@সৈকত চৌধুরী,
সমস্যা কোথায় আমিতোও বুঝতে পারলামনা, আপনি কি বুঝতে পেরেছেন? পারলে একটু জানাবেন, দয়াকরে হলেও।
যাবাব্বা এখানে ব্যাক্তিগত আক্রমণ কোথায় পেলেন? আমিতো শুধু একটা ভুল ধরিয়ে দিলাম।
@মুক্তমনার পাঠক,
হা হা… কথায় আছে মানিকে মানিক চেনে… সর্বজন স্বীকৃত এক অশ্লীল ভাষাভাষী নাস্তিক দাবীদার এর সমর্থনে আরেক অশ্লীল (অজয় রাউত) এসে জুটেছে!!! যার প্রমাণ আগেও (এখানে এবং এখানে) দেওয়া হয়েছে…
আরেকটা দেওয়া যাক – এই মুক্তমনা দাবীদার সহসাই সমাজের উভলিঙ্গ / বৃহন্নলা জনগোষ্ঠী, যারা বঞ্চনার শিকার তাদের এবং তাদের পরিচয়কে সামগ্রিক ভাবে তুচ্ছ তাচ্ছিল্য করে গালা-গাল হিসেবে ব্যবহার করছে (যেমন এখানে এবং এখানে) !! যেখানে বাংলাদেশ সহ পৃথিবীর সব দেশেই তাদের অধিকার নিয়ে এবং তাদের সামাজিক অবস্থার উন্নয়নের জন্য প্রগতিশীল জনগোষ্ঠী সহ বৃহৎ অংশ সচেষ্ট ।
আসলে ঐচ্ছিক কিংবা অনৈচ্ছিক কারণে বুদ্ধিমত্তার সংকট হলে এভাবেই এসব ভন্ড নিজের প্যান্টে নিজে আগুন ধরিয়ে দেয়!!!
ভণ্ডদের চেহারা এভাবেই উম্মুক্ত হয়ে যায়… 😀
@সংবাদিকা,
আমাকে নাস্তিক না বলায় দুঃখ পেলাম, আশাকরি পরের গালিগালাজে ভুল সংশোধন করে নেবেন।
@অজয় রাউত,
খেয়াল করে – বলা হয়েছে “নাস্তিক দাবীদার” – আমি বলিনি নাস্তিক – সত্যিকারে যারা নাস্তিক আমি তাদের অপমান করতে চাইনা, যাকে তাকে নাস্তিক বলে। আর উপরোক্ত মন্তব্য এমন কোন শব্দ প্রয়োগ করা হয়নি যা দ্বারা অযাচিত তাচ্ছিল্য প্রকাশ পায় – যা করা হয়েছে তাই বলা হয়েছে ।
আমি সংবাদিকা, আসিফ, অজয় রাউত সবার থেকেই সংযত মন্তব্য আশা করছি। এখানে কারো লিংগ নিয়ে কিংবা সংখ্যালঘু যৌনসম্প্রদায়কে নিয়ে হাসি ঠাট্টার কোন দরকার দেখি না। ঠিক তেমনি, ‘মুক্তমনা সমাজ’ নাস্তিক সমাজ’ প্রভৃতি উল্লেখ করে এ নিয়ে ঢালাও বক্তব্যেরও দরকার নেই। আসিফ বা অজয় রাউত কেউঅই নাস্তিক সমাজের স্পোকপার্সন না বলেই মনে করি। কাজেই ব্যক্তিকে বিশেষায়িত বা ট্যাগ না করে কেবল বক্তব্যের খণ্ডন কাম্য।
ধন্যবাদ জানবেন।
@সংবাদিকা, @আসিফ মহিউদ্দীন,
আসিফ মহিউদ্দীন যখন কিছু লিখেন বা মন্তব্য করেন তখন আরও চিন্তা করে লেখা উচিত। ( যদিও উনার ঔচিত্যবোধ নিয়ে কথা বলা আমার উচিত নয়।) কারণ উনি এখন অনেকের কাছেই অনুস্মরণীয়। কিন্তু উনি সংবাদিকার উত্তরে যা বলেছেন তা আমাকে একটু আহত করেছে বৈকি। অবশ্য কোন এক পাঠকের আহত হওয়ায় আসিফ মহিউদ্দীনের হয়ত কোন কিছু যায় আসে না।
@গীতা দাস,
আমি কিন্তু তার (আসিফ মহিউদ্দিন) এর কথায় কিছুই মনে করিনি এবং আশ্চর্যান্বিত হইনি – সবাই জানে কেমন চিজ… ব্যাপার হল কতগুলো মাথামোটা গর্দভ এবং ধর্মীয় ভাবে উন্মুক্ত সন্ত্রাসী কর্তৃক নির্যাতনের স্বীকার হয়ে সে আলোচনার সামনে চলে আসে। কঙ্কারেন্ট ইমোশনকে ম্যাটেরিয়ালাইজ করে একটা নন এন্টিটি অবস্থা থেকে আলোচনার সামনে চলে আসে এবং ঐ অবস্থা ব্যবহার করে সাথে আছে “নাস্তিকতা” পরিচয়কে নিজ স্বার্থে ব্যবহার করা… এখনও করে যাচ্ছে! দ্যাটস ইট।
যে, কোন ব্যাক্তি কিংবা লেখার উপর (তাদের উপর না গবেষণা করে কিংবা লেখা না পড়েই) মনের মাধুরী মিশিয়ে সমালোচনা করতে পারে – তার দৌড় যে কতটুকু হবে এটা বলাই বাহুল্য – তার উপর আছে অশ্রাব্য ভাষা – গালাগালি। আর্গূমেন্ট এর দরকার নেই – আগের লেখা গুলোও পড়ার দরকার নেই – এই লেখা পড়লেই বোঝা যায় চিন্তা ভাবনার দৌড় কতটুকু। অপছন্দনীয় ব্যাপারের বিরুদ্ধে কি ভাষায় কিভাবে লেখা উচিত… এটাও জানেনা। চেষ্টা করে রেটোরিক তৈরী করতে হয়ে যায় স্ট্র ম্যান – ব্যাপার হল ভেতরে কিছু না থাকলে এমনই হয়!!! এর পর তার লেখার ভেতরের “উল্টাপাল্টা” গুলো কেউ দেখিয়ে দিলে পুরাতান অভ্যাস মত অশ্রাব্য ভাষায় গালাগাল শুরু হয়ে যায়।
যারা নীতি টিতির ধার ধারেনা, তাদের কথা এবং কাজের কোন মিল থাকেনা।
আর অনুসরণের কথা – আসিফ মহিউদ্দীনের অনুসারীদের কথা?? অনেক ভণ্ড সাধুরই তো অনেক অনুসারী থাকে… সেসব অনুসারীদের আবার কেউ কেউ আবার তাদের গুরুর ভণ্ডামি ধরা পরলেও তাদের গুরুকে অবিশ্বাস করতে চায়না – মানসিক ভাবে।
@সংবাদিকা,
(Y)
এটা ইংরেজিতেও প্রকাশ করা হোক, এই লেখা দেশের মানুষের থেকে ভিনদেশিদের পড়া বেশি জরুরি।
“দুর্ঘটনায় নিহত একজন গার্মেন্টস শ্রমিক যেখানে অভাবের কারণে আত্মহত্যা করে”
–বোধহয় টাইপের ভুল।
“বিদ্রোহের পরবর্তী এক দেড় বছর সেনাক্যাম্পে তাদের পায়ের মধ্যে রড ঢুকিয়ে ঝুলিয়ে বছরের পর বছর নির্যাতন করা হয়েছে, অসংখ্য বিডিআরকে তখন প্রতিশোধ নেয়ার নামে হত্যা করা হয়েছে। সেনা আদালতে বিচারের সময় বন্দী ৫০ জনারও অধিক বিডিআর সদস্যের মৃত্যুর রিপোর্ট পাওয়া গেছে। বিদ্রোহের পরে কয়েকদিন অনেক নদীতে ভেসে উঠেছিল বিডিআর সদস্যদের লাশ। অনেক বিডিআর সদস্যকে আর্মী তুলে নিয়ে গেছে, যাদের পরে আর কোন হদিসই পাওয়া যায় না। সরকারও যেন প্রকাশ্য হত্যার লাইসেন্স দিয়ে দিয়েছে, ভাবখানা এমন যে, আর্মী কিছু বিডিআর হত্যা করে, তাদের প্রতিশোধ নিয়ে অন্তত ঠাণ্ডা থাকুক!”
–এর পক্ষে কোন তথ্য-উপাত্ত আছে কি? নিদেন পক্ষে কোন সংবাদপত্রের লিঙ্ক?
@ডা সফদার, অনেক ধন্যবাদ। ভুল ছিল, ঠিক করে দিচ্ছি।
আর বিষয়গুলো সরাসরি তাদের কাছ থেকেই জানা। জেলে যারা আছেন তাদের সাথে সাংবাদিকদের আলাপ হয় না, এবং এই সম্পর্কিত তথ্য সংবাদপত্রে প্রকাশের ব্যাপারে নানান নির্দেশও দেয়া রয়েছে উপর থেকে।