এই লেখাটির বড় অংশ অভিজিৎ’দার। সুতরাং কৃতজ্ঞতায় গুরুজি
২১শে ফেব্রুয়ারি। আমাদের আবেগের দিন, আমাদের গর্বের দিন। এদিন আমরা শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করি সালাম, রফিক, বরকত সহ সকল শহীদের আত্মত্যাগকে। কৃতজ্ঞচিত্তে স্মরণ করি আবদুল মতিন, গাজীউল হক, কাজী গোলাম মাহবুব, কামাল লোহানী প্রমুখ ভাষা সৈনিকদের অবদানকে। আমাদের হৃদয়ের অর্ঘ্য দিয়ে বরণ করি, পুষ্পমন্ডিত করে তুলি আমাদের প্রাণপ্রিয় শহীদ মিনারকে। কিন্তু এমন দিন এলেই আপনি যদি শোনেন এক কুখ্যাত রাজাকার, যার একাত্তরে কৃতকর্মের জন্য, তার মানবতাবিরোধী অপরাধের জন্য নব্বই বছরের সাজা দিয়েছে মাননীয় আদালত, এমন একজন লোক ‘ভাষা সৈনিক’ সাজতে চাইছে, কেমন লাগবে শুনতে?
সেটাই কিন্তু করা হচ্ছে। এ প্রচারণা শুরু হয়েছিল সম্ভবত নব্বইয়ের দশকে। হঠাৎ করেই দেখা গেলো কিছু নামগোত্রহীন পত্রিকায় আসতে শুরু করল ‘ভাষা সৈনিক’ হিসেবে গোলাম আযমের নাম। ঢাকার দেওয়াল টেওয়ালেও জামাত শিবিরের কিছু শ্লোগান দেখা যেতে শুরু করল–‘ভাষাসৈনিক গোলাম আযম’। প্রথম দিকে কেউ তেমন গা করেনি। কিন্তু পরে যত দিন গেছে ততই গোয়েবলসীয় কায়দায় জাঁকিয়ে বসেছে এই প্রচারণা। একটা উদাহরণ দেয়া যাক :
“…ভাষা আন্দোলননিয়ে আজ যারা বড় বড় কথা বলছেন, তাঁদের মনে রাখা উচিত ভাষা আন্দোলনের সূচনা করেছিলেন আবুল কাশেম ও অধ্যাপক গোলাম আযম।। প্রতাপশালী প্রধানমন্ত্রী লিয়াকত আলীর সামনে সাহস করে বাংলাকে রাষ্ট্র করার দাবিতে স্মারকলিপি পেশ করেছিলেন গোলাম আযম । অথচ, ইতিহাস থেকে পরবর্তীতে তার নামটি মুছে ফেলাহয়েছে। দেশের বুদ্ধিজীবীরা তো অন্তত বলতে পারেন“লোকটা খারাপ, তবে এ ভাল কাজটা ভালো করেছে (ভাষা আন্দোলন)।গোলাম আযমকে গালি দিয়ে হলেও তো তারা কথাটি বলতে পারেন। অথচ, আজ ইতিহাস বিকৃত করে নতুন নতুন ভাষা সৈনিক সৃষ্টি করা হচ্ছে…”(জনকণ্ঠ ২২ ফেব্রুয়ারি ২০১১)
কথা গুলো বলছিলেন জামায়াতের আমীর মকবুল আহমাদ, জামায়াত আয়োজিত আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের এক আলোচনা ও দোয়া মাহফিলে। জামাতের আমীরের এই বক্তব্য ছাড়াও প্রতি বছর ফেব্রুয়ারি মাসে সারা শহর ছেয়ে যায় নিচের পোস্টারের মত ভয়ঙ্কর পোষ্টারে।
এছাড়াও দৈনিক সংগ্রাম পত্রিকার বিভিন্ন লেখায় অহরহ গোলাম আযম কে ভাষা সৈনিক দাবী করা হয়। তারই একটি উদাহরণ,
গোলাম আজমের নিজস্ব ওয়েবসাইটেও তাকে ভাষা সৈনিক দাবী করা হয়েছে বলিষ্ঠ কণ্ঠে,
এছাড়াও জামাআতের ছাত্র সংগঠন ইসলামী ছাত্র শিবিরের ওয়েবেও পাওয়া গেলো একই উচ্চারণ,
১৯৭১ সালে জামাআতে ইসলামী’র আমীর এবং আমাদের স্বাধীনতা সংগ্রামে গণহত্যার মাস্টারমাইন্ড গোলাম আযমকে নিয়ে বরাবরই বিভিন্ন প্রোপ্যাগান্ডা শোনা যায় তার সমর্থকগোষ্ঠীর মুখে। এর মধ্যে সবচেয়ে রসালো প্রচারণাটি হচ্ছে গোলামআযমকে ভাষা সৈনিক প্রমাণ করার প্রাণান্তকর প্রচেষ্টা। ফেব্রুয়ারি এলেই এই ইস্যু নিয়ে শুরু হয় নানা রকম রকমারি বাণিজ্য। আমাদের এই লেখার উদ্দেশ্য থাকবে সমস্ত তথ্য প্রমাণের ভিত্তিতে খতিয়ে দেখা দাবীটির সত্যতা কতটুকু, এবং এই বিষয় নিয়ে সমস্ত বিভ্রান্তি দূর করার বস্তুনিষ্ঠ প্রয়াস।
প্রথমে উপরে দেয়া ছবিগুলোর দিকে তাকানো যাক। উপরের ছবি গুলো থেকে একটা কথা তো পরিষ্কার যে জামাত-শিবির এবং তাদের ঘরনার মিডিয়া গুলো প্রকাশ্যে প্রচার করে আসছে গোলাম আযম ভাষা সৈনিক। এখন দেখা যাক ভাষা আন্দোলনে গোলাম আযম কি কি অবদান রেখেছেন বলে দাবী করা হচ্ছে।
প্রথমেই আমরা দেখি গোলাম আযমের নিজের জবানী। তার আত্মজীবনী “জীবনে যা দেখলাম” বইটি ঘেঁটে পাওয়া গেলো ভাষা আন্দোলনে তার অবদান নিয়ে বিশাল এক ফিরিস্তি। তিন খণ্ডের বইটির প্রথম খন্ডের একাধিক অধ্যায়ে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে ভাষা আন্দোলন সম্বন্ধে।
বিস্তারিত পড়ে জানা গেলো ১৯৪৮ সালের ২৭ নভেম্বর পাকিস্তানের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী লিয়াকত আলী খান ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রদের এক সমাবেশে ভাষণ দেন। সেখানে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্ররা একটি মানপত্র পাঠ করে। ঐ মানপত্রে বাংলা ভাষা নিয়েও কিছু দাবী জানানো হয়। এ মানপত্রটি পাঠ করেন ইউনিয়নের তৎকালীন সেক্রেটারি গোলাম আযম। যদিও এটি পাঠ করার কথা ছিল ছাত্র ইউনিয়নের ভাইস প্রেসিডেন্ট অরবিন্দ বোসের। কিন্তু প্রধানমন্ত্রীকে ভাষা আন্দোলনের দাবি সংবলিত মানপত্র পাঠ একজন হিন্দু ছাত্রকে দিয়ে করালে তার মনে বিরূপ প্রতিক্রিয়া হবে এবং মুসলিম লীগ সরকার এ নিয়ে নানা প্রকার বিরূপ প্রচার শুরু করবে¬ এ আশংকা থেকেই একজন মুসলমান ছাত্র হিসেবে সেক্রেটারি গোলাম আযমকে সেটা পাঠ করতে দেয়া হয়েছিল।
এ প্রসঙ্গে অগ্রগণ্য ভাষা সৈনিক কামাল লোহানী বলেন,
‘গোলাম আযম ভাষা সৈনিক ছিলেন না। কখনই ছিলেন না। স্বাধীনতা বিরোধীরা তাকে ওটা বানাতে চেয়েছে। এই অপপ্রচারের একটি লাগসই জবাব ভাষা মতীন ভাই দিয়েছেন এভাবে। গোলাম আজমের পিঠে চড়ে আমার তখন ভাষার দাবির পোষ্টার দেয়ালে লাগিয়েছি।
আসল ঘটনা হলো গোলাম আজম তখন ডাকসুর জিএস ছিলেন। অরবিন্দ নামে একজন ভিপি। ঢাকায় আসবেন প্রধানমন্ত্রী লিয়াকত আলী খান। ডাকসু থেকে বাংলা ভাষার দাবিতে তাকে একটা স্মারকলিপি দেওয়া হবে। কৌশলগত কারণে অরবিন্দকে বাদ দিয়ে গোলাম আজমকে দিয়ে স্মারকলিপিটি লিয়াকত আলী খানকে দেওয়া হয়েছিলো। এটুকুই তার ইতিহাস। তারপর আর গোলাম আজম ভাষার লড়াইয়ের ইতিহাসে নেই’।
অথচ, গোলাম আযম তার বইয়ে লিখেছেন,
(পাঠক লাল কালিতে আন্ডারলাইন করা জায়গা গুলোর কথা খেয়াল রাখবেন, আমরা পরবর্তীতে এ নিয়ে আলোচনা করবো।)
এর পর বইটিতে গোলাম আযমের মেমোরেন্ডাম পড়ে শোনানোর রগরগে বিবরণ…
এবার আপনাদের কাছে তুলে ধরছি সেই ঐতিহাসিক (!) মানপত্রের মূল কপিটির ভাষা সংক্রান্ত অংশ,
…… We are happy to note that out Central Government, under your wise guidance, has given Bengali an honoured place. This is a step in the right direction which shall go a long way to further strengthen our cultural ties, with our brethren in West Pakistan. Interchange of thoughts and ideas and mutual understanding are essential if we have to develop a homogeneous and healthy national outlook. We have accepted Urdu as our Lingua Franca but we also feel very strongly that, Bengali by virtue of its being the official language of the premier province and also the language of the 62% of the population of the state should be given its rightful place as one of the state languages together with Urdu….
পাঠক লক্ষ্য করবেন এখানে কোন বলিষ্ঠ দাবী রাখা হয়নি বাংলাভাষাকে রাষ্ট্রভাষা করার জন্য। কোন রকমে দায়সারা ভাবে বাংলার কথা এসেছে। উর্দুকে আন্তর্জাতিক ভাষার মাধ্যম হিসেবে (Lingua Franca) মেনে নেয়ার কথা এসেছে, আবার একথাও বলা হয়েছে ‘প্রধানমন্ত্রী’ নাকি বাংলাকে সম্মানজনক অবস্থান দিয়েছেন অথচ বাংলাকে ওই মানপত্রে অন্যতম রাষ্ট্রভাষা করার দাবিই জানানো হয়নি। কেবল করা হয়েছিল প্রাদেশিক সরকারি কাজকর্মের ভাষা করার। আর তাই প্রধানমন্ত্রী নিজের বক্তব্যে বিষয়টি নিয়ে কিছুই বলেননি (তার স্ত্রীর অনুরোধ সত্ত্বেও)। গোলাম আযমের ভাষায়,
পাঠক লক্ষ্য করবেন, গোলাম আযম এমনি বক্তব্য দিয়েছিলেন যে প্রধানমন্ত্রী তার সব দাবিদাওয়া সম্পর্কে ইতিবাচক মন্তব্য করলেন। তার বক্তব্য শুনে খুশীতে টেবিল চাপড়ে দিলেন আর ভাষার ব্যাপারে কিছুই বললেন না !!!
এবার আসুন একটু বিশ্লেষণী দৃষ্টি নিয়ে দেখি কয়েকটি পয়েন্ট, গোলাম আযম তার একই আত্ম জীবনীতে অনেকবার বাংলা ভাষা নিয়ে আক্রমণাত্মক, বিদ্রুপাত্মক এবং প্রচণ্ড বিদ্বেষ মূলক মন্তব্য করেছে। নিচে তার থেকে অল্প কয়েকটি উল্লেখ করাহলো,
বাংলা ভাষায় আপনি, তুই, তুমি এসবের জন্য আলাদা আলাদা শব্দ ব্যাপারটা গোলাম আযমের পছন্দ হয়নি;তিনি এটাকে চিহ্নিত করেছেন ‘বিরাট সমস্যা’ হিসেবে –
মজার ব্যাপার হচ্ছে, নিজেকে ভাষা সৈনিক দাবী করলেও আপন নাতী-নাতনীদের কিন্তু তিনি বাংলা শিক্ষা দেননি; অবশ্য এ নিয়ে কিছুটা ‘মেকি আপসোস’ও আছে তার –
বিভিন্ন খ্যাতিমান বাংলাভাষী সাহিত্যিকদের প্রতি তিনি ছড়িয়েছেন চরম বিদ্বেষ; বঙ্কিমচন্দ্রকে নিজের বইয়ে‘ইসলাম বিদ্বেষী’হিসেবে চিহ্নিত করেছেন। রবীন্দ্রনাথকে নিয়েও তার অনেক জ্বালা। রবীন্দ্রনাথ নাকি ‘মুসলিম স্বার্থের বিরুদ্ধে’ ছিলেন, রবীন্দ্রনাথ নাকি ছিলেন স্রেফ ‘পৌত্তলিক হিন্দু’ইত্যাদি; তাই ‘বাঙালি জাতীয়তায়’ বিশ্বাসীদের কাছে রবীন্দ্রনাথ গ্রহণযোগ্য হলেও বাংলাদেশী জাতীয়তাবাদীদের কাছে তিনি হবেন সর্বদাই পরিত্যাজ্য:
বাংলা এবং বাঙালি জাতি নিয়ে বিদ্বেষ তার পরবর্তীকালের অনেক উক্তিতেই পাওয়া যাবে। যেমন ১৯৭০ সালের এপ্রিল মাসে তিনি বলেছিলেন, ‘জয় বাংলা শ্লোগান ইসলাম ও পাকিস্তানবিরোধী’। তিনি সেসময় আরো বলেছিলেন, ‘বাঙালিরা কখনো জাতি ছিল না’ (দৈনিক পাকিস্তান, ১৩ই এপ্রিল, ১৯৭০)। স্বভাবতই প্রশ্ন জাগে, এই যার বাংলা ভাষা আর বাঙালি জাতির প্রতি এতো প্রেমের নমুনা,তিনি কেনইবা প্রধানমন্ত্রীর সামনে বাংলাকে রাষ্ট্রভাষা দাবী করলেন।
আমাদের বুঝতে হবে সেদিনের ঘটনাপ্রবাহ। তিনি নিজেই বলেছেন তিনি সে সময়ের অনির্বাচিত জি এস ছিলেন, এবং মানপত্রটা পড়ার বিষয়টি ছিলো একটা আকস্মিকঘটনা মাত্র। এমনকি, তিনি সেই মানপত্র নিজে লিখেননি, লিখেছিলেন তৎকালীন সলিমুল্লাহ মুসলিম হলের ভিপি আবদুর রহমান চৌধুরী তারপর একটি কমিটি স্মারকলিপিটি চূড়ান্ত করে। সেদিন সেইদিন স্মারকলিপি পাঠ করা ছাড়া তার কাছে আর কোন রাস্তা ছিলো না। যদি সেদিন তিনিস্মারকলিপি পাঠ করা থেকে বিরত থাকতেন, কিংবা অনাগ্রহী হতেন তাহলে সাধারণ ছাত্রদের হাত থেকে তাকে কেউ রক্ষা করতে পারতো না। কারণ ছাত্ররা তৎকালীন শাসক গোষ্ঠীর ওপর মারাত্মক বিরক্ত ছিলো। প্রসঙ্গক্রমে বলা দরকার, সেই বছরের মার্চেই কায়েদে আজম কার্জনে যখন বলে ওঠেন “উর্দুই হবে পাকিস্তানের একমাত্র রাষ্ট্রভাষা” তখনই সেখানকার ছাত্ররা “না না” বলে প্রতিবাদ করে ওঠে। ধীরে ধীরে এটা হয়ে ওঠে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণের দাবী। কাজেই ছাত্রদের জনপ্রিয় দাবী অস্বীকার করা কিংবা এড়িয়ে যাবার মতো সাহস বা সুযোগ কোনটাই গোলাম আযমের সেদিন ছিল না।
আর তাই ছাত্র প্রতিনিধি হয়ে গোলাম আযম যতটা সম্ভব বাধ্য হয়েই ‘যথেষ্ট নম্র ভাষায়’এই দাবী প্রকাশ করেছিলেন, যদিও উর্দুকেই মনে প্রাণেরাষ্ট্র ভাষা মনে করতেন গোলাম আযম। তিনি ভাষা সৈনিক মোটেই নন। সে সময়কার ঘটনা বিশ্লেষণ করতে গিয়ে আব্দুল গাফফার চৌধুরী তার একটি সাম্প্রতিক কলামে বলেছেন –
‘১৯৫২ সালের ২১ ফেব্রুয়ারির ঘটনার আগে পর্যন্ত ১৫ মার্চ ছিল ভাষা আন্দোলন দিবস। এই আন্দোলনে কাজী গোলাম মাহবুব, শেখ মুজিবুর রহমান, অলি আহাদ সকলকেই গ্রেফতার বরণ করতে হয়েছে। আবদুল মতিনকে হুলিয়া মাথায় করে আন্ডারগ্রাউন্ডেও পালিয়ে থাকতে হয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী খাজা নাজিমুদ্দীনের কাছে বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদের ভাষার দাবির স্মারকলিপি নিয়ে গিয়েছিলেন সলিমুল্লাহ হলের ছাত্র ইউনিয়নের তৎকালীন ভিপি আবদুর রহমান চৌধুরী (পরে বিচারপতি হয়েছিলেন)। তাকেও গ্রেফতার করা হয়েছিল। ভাষা আন্দোলনের এই প্রথম পর্যায়েও গোলাম আযমকে কোথাও দেখা যায়নি। তাকে গ্রেফতার হতে হয়নি। ভাষা আন্দোলনকারীদের সচিবালয় ঘেরাও বা রাজপথের মিছিলেও গোলাম আযমকে দেখা যায়নি। ১৫ মার্চের ভাষা দিবস উদযাপনের কোনো বছরের সভায় তাকে দেখা যায়নি। ভাষাসংগ্রাম কমিটিতেও (কেন্দ্রীয় অথবা ছাত্র কমিটি) তার নাম দেখা যায় না। একুশে ফেব্রুয়ারিতে আরোপিত ১৪৪ ধারা ভাঙার জন্য ভাষা আন্দোলন -সংযুক্ত প্রবীণ ও নবীন নেতাদের কোনো গোপন ও প্রকাশ্য সভাতেই তাকে অংশ নিতে দেখা যায়নি। তাহলে তিনি ভাষাসৈনিক হলেন কীভাবে? কেবল ১৯৪৮ সালে লিয়াকত আলীর ঢাকা সফরের সময় এক্সিডেন্টলি একটি মানপত্র পাঠ দ্বারা ভাষাসংগ্রামী, ভাষাসৈনিক হয়ে গেলেন? ইতিহাস বিকৃতি এবং মিথ্যা দাবি করারও একটা সীমা থাকা দরকার’।
এখন উপরের আলোচনা থেকে তাহলে আমরা কিছু সিদ্ধান্তে আসার মতো জায়গায় পৌঁছুতে পারছি এখন –
১) প্রধানমন্ত্রীর সামনে পাঠ করা মনপত্রটি গোলাম আযম নিজের হাতে লেখেন নি।
২) তার ভাষায়, এই মানপত্র পাঠ করা ছিলো একটা আকস্মিক ব্যাপার এবং স্বাভাবিক অবস্থায় এই মানপত্র তার নিজের পড়ার কথা না, এটা তিনি একটা বিশেষ “সিচুয়েশনে” পড়েছিলেন মাত্র।
৩) মানপত্রটি পাঠ করার কথা ছিলো ছাত্র ইউনিয়নের ভাইস প্রেসিডেন্ট অরবিন্দ বোসের।
৪) তার আগেই (মার্চেই) জিন্নার সামনে ছাত্ররা ভাষার দাবীতে বলিষ্ঠ প্রতিবাদ জানায়।
৫) গোলাম আযম ভাষার প্রশ্নে যথেষ্ট গুরুত্ব দেননি, ফলে প্রধানমন্ত্রী বিষয়টি এড়িয়ে যাওয়ার সুযোগ পান।
৬)বাংলাকে ওই মানপত্রে অন্যতম রাষ্ট্রভাষা করার দাবি জানানো হয়নি। দাবী করা হয়েছিল প্রাদেশিক সরকারি কাজকর্মের ভাষা করার।
সব শেষে আমরা দেখবো ভাষা আন্দোলনের পরবর্তী সময়গুলোতে গোলাম আযমের ভূমিকা।
১৯৭০ সালের ২০ জুন একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়‘দৈনিকআজাদ’পত্রিকার পঞ্চম পৃষ্ঠায়।
“বাংলা ভাষার আন্দোলন করা ভুল হইয়াছে”শিরোনামের সেই লেখায়গোলাম আযমের বক্তব্য প্রকাশিতহয়। সেই প্রতিবেদনে আরও বলা হয়,
“বাংলা ভাষা আন্দোলন পাকিস্তান প্রতিষ্ঠার দৃষ্টিকোণ থেকে মোটেই সঠিক কাজ হয়নি।”
(দৈনিক আজাদ, ২০ জুন, ১৯৭০)
এখানেই শেষ নয়। মুক্তিযুদ্ধ শুরু হবার পর প্রথম দিকেই আমাদের শহীদ মিনারটি গুঁড়িয়ে দেয় পাকিস্তানি সেনাবাহিনী। সেটিকে স্বাগত জানিয়েছিলেন আমাদের ‘ভাষা সৈনিক’ গোলাম আযম। তার বরাত দিয়ে মুখপাত্র দৈনিক সংগ্রাম খবর প্রকাশ করে ১৬ জুলাই,
“ইতিহাস কথা বলে”সম্পাদকীয়তে লেখা হয়েছিল : আইয়ুব খানের গভর্নর আজম খান ছাত্রদের খুশী করার জন্য যে শহীদ মিনার তৈরি করলেন তাকে পূজামণ্ডপ বলা যেতে পারে কিন্তু মিনার কিছুতেই না। যাহোক সেনাবাহিনী সেই কুখ্যাত মিনারটি ধ্বংস করে সেখানে মসজিদ গড়ে শহীদদের প্রতি যথার্থ সম্মান প্রদর্শনের চেষ্টা করেছেন জেনে দেশবাসী খুশী হয়েছে।
(দৈনিক সংগ্রাম ১৬ জুলাই, ১৯৭১)
কাজেই গোলাম আযম কোনক্রমেই ভাষা সৈনিক নন। এটা যুদ্ধাপরাধী গোলাম আজমকে মহিমান্বিত করার জামাতি অপকৌশলমাত্র।
সুত্রঃ
১) http://ghulamazam.info/
২) http://www.amarblog.com/eskimo/posts/10365
৩) http://www.shodalap.org/zia1307/8854/
৪) http://blog.priyo.com/abdul-gaffar-chowdhury/2012/03/10/13094.html
৫) http://www.somewhereinblog.net/blog/heslaseba/29778227
৬) http://www.mediafire.com/download/9xk9on4csi53095/jibone+ja+dekhlam.zip
সবাই ক্ষমা করবেন পরীক্ষার জন্য উত্তর দিতে দেরি হলো।
এই লেখার বিপক্ষে মোটামুটি বড় যুক্তি এসেছে তিনটি আর বাদবাকি ত্যানা। তিনটি যুক্তিই খানিক আলোচনার দাবী রাখে
উত্তরঃ
খুবই যৌক্তিক পয়েন্ট। কিন্তু এখানে লক্ষ্য করতে হবে ঘটনা প্রবাহ, অনেক জায়গা লাগবে এবং পাঠক বিরক্ত হতে পারে ভেবে আমি ভাষা আন্দোলনের ইতিহাস এখানে পুনরাবৃত্তি করিনি। আপনারা জানেন ৪৮ সালের মার্চে জিন্নাহ যখন সগৌরবে উচ্চারন করে
সেদিনই ছাত্ররা জোরালো প্রতিবাদ জানায়। এবং এরপর থেকে সমস্ত মিটিং মিছিলে এই ভাষা আন্দোলনের ইস্যু আনা অনিবার্য ছিলো। ২৭ নভেম্বর গোলামের যে মানপত্রটি পাঠকরা হয়েছিলো প্রধানমন্ত্রীর সামনে ঘটনাপ্রবাহ বিশ্লেষণ করলে আমরা বুঝতে পারি ভাষা সংগ্রামীরা আর পাকিস্তানপন্থীদের দরকষাকষির মুখে কোন রকমে ভাষা নিয়ে দুয়েক লাইন ঢুকিয়ে দেয়া হয় মানপত্রটিতে।
এরপরেও যদি আমরা ধরেও নেই গোলাম আসলেই মন থেকে বাংলাভাষার পক্ষের লোক তাহলেও এই মানপত্রে যেহেতু “রাষ্ট্রভাষা বাংলা চাই” জাতীয় কোন লাইন নেই বরং আপসকামী ভাষায় “We have accepted Urdu as our Lingua Franca” বলে উর্দুর প্রশংসা করা হয়েছে তখন গোলাম যে কোন ভাবেই ভাষা সৈনিক বলা যায় না।
গোলাম তৎকালীন জি এস ছিলেন, মানপত্র লেখার সময় সে সেখানে ঘসামাজা করেনি, কিংবা একবারও না পড়ে মঞ্চে উঠে তোতাপাখির মত আউড়ে গ্যাছে এই ব্যাপারটা মনে হয় একটু বাড়াবাড়ি হয়ে যায় বই কি।
২)
উত্তরঃ
এর সবচেয়ে দারুন উত্তরটা দিচ্ছি। লেখাটা শুরু করার সময় আমার কাছে একটাই মূল উপাদান ছিলো। শুক্কুরের ঐ সমাবেশের পর বের হওয়া দৈনিক আজাদের কপি গোলাম যেখানে বলে,
এই একটা ডকুমেন্টই যথেষ্ট গোলাম যে ভাষা সৈনিক না সেটা প্রমাণ করার জন্য। একবার ভাবুন তো কোন মুক্তিযোদ্ধা যিনি সদম্বে যুদ্ধ করেছেন এরপর আবার সদম্ভে বলে বেড়াচ্ছে
কোন মুক্তিযোদ্ধা যদি নিজেই স্বীকার করে যে সে মুক্তিযূদ্ধে যোগ দিয়ে ভুল করেছিল তবে তাকে অস্বীকৃতির পর আর মুক্তিযোদ্ধা বলা যায় না। সে সৎ হয়ে থাকলে এরপর নিশ্চয়ই মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে কোন প্রিভিলেজ নেবে না, মুক্তিযোদ্ধা তালিকা থেকেও নাম কাটিয়ে নেবে।
শুক্কুরের ঐ ঘটনা যদি সত্য হয় (শুধু তাই না এর পরেও সম্প্রতিকালে ইন্ডিপেন্ডেন্ট কে দেয়া এক সাক্ষাতকারেও গোলাম বলেছে “ভাষা আন্দোলন করা ছিলো ভুল সিদ্ধান্ত” ) তাহলে সেই দিনের পর থেকেই ভাষা সৈনিকদের নাম থেকে তার নাম কাটা পড়ে গ্যাছে।
৩)
উত্তরঃ
অবশ্যই নানার অপরাধ না। কিন্তু আপনারা যে ভুলটা করছেন সেটা হচ্ছে রেফারেন্সের গুরুত্ব না বোঝা। গোলাম আযমের জীবনীটি এই লেখার আগে আমি খুবই মনোযোগ দিয়ে পরেছি। এই বইটার উদ্দেশ্যই হচ্ছে গোলামকে ভাষা সৈনিক প্রমাণ করা। আর তাই খুব সু-কৌশলে বাংলার প্রসংসায় ভরা বইটি। বাংলার বিরুদ্ধে যায় এমন একটি বাক্যও এই বইতে পাওয়া অস্বাভাবিক, যখন এই বইয়ের একটা লক্ষই গোলাম কে ভাষা সৈনিক প্রমাণ করা। তারপরেও এই বইতেই যখন পাওয়া যায়
“বাংলাতে আপনি তুমি তুই একটা বিরাট সমস্যা”
তখন এটা কি একটা স্ব-বিরোধী উক্তি হিসেবে বাঙলা নিয়ে তার মনোভাবেরই বহিঃপ্রকাশ নয় ?
তারপর একই ভাবে গোলাম যখন বলে সে ভাষা সৈনিক, শরতচন্দ্র ছাড়া ঘুম আসে না আবার এই একই মুখে বলে তার ছেলের বউরা হিজাব করে নাতি-নাতনিরা নামাজ পড়ে, এবং এসব অভ্যাস এসেছে তার কারণেই তখন স্বাভাবিক ভাবেই কি প্রশ্ন আসে না, বাংলা যখন তার এতই পেয়ারের… বাংলা কোরআনের তরজমা ছাড়া তিনি যখন কোরআন বুঝেন না, তখন নাতি নাতনীদের নামাজ শিক্ষা দানের সাথে সাথে বাংলা শেখালেন না কেনো ??
পাঠক আপনারা রেফারেন্সের গুরুত্ব বুঝতে পারেননি। এসব ছিলো গোলামের নিজের জবানী। কোন গোলাম বিরোধী মানুষের না। তার নিজের স্ব বিরোধী কথাবার্তা অনেক সমালোচনা থেকেও অনেক গুরুত্বপূর্ণ
ব্যাপারটা অনেকটা
“ল্যাঞ্জা ইজ এ ডিফিকাল্ট থিং টু হাইডে”র মত।
শত চেষ্টা করেও গোলাম ল্যাঞ্জা লুকিয়ে রাখতে পারেনি। নিজের কথার জালে নিজেই ফেঁসে গ্যাছে।
নোটটিতে আরও তথ্য-উপাত্ত কাম্য ছিল। এরপরেও মিথ্যা প্রচারণার স্বরূপটি বেশ খানিকটা খোলাসা করার জন্য আরিফ রহমানকে ধন্যবাদ।
চলুক… (Y)
মুক্তিযুদ্ধ ইস্যুতে মুক্তমনা থেকে এমন অনেক ভাল পোস্ট পাই যা অনেকের থেকে পাই না। এর জন্যই কি রাজাকারদের নাস্তিকদের প্রতি ঘৃনা বেশী?
গোলাম আজমের ভূমিকা ‘৫২ সালে ভাষা আন্দোলনের পক্ষেই ছিল, এতে কোন ভুল নেই, অস্বীকারের উপায় নেই। প্রয়োযনও নেই। অবদান যাইই থাক, যার প্রক্সিই দিক, মানপত্রে যাইই লেখা থাক সেসব খুব গুরুত্বপূর্ন মূল আর্গুমেন্টে নয়।
মূল টার্নিং পয়েন্ট ‘৭০ সালের তার নিজের এবাউট টার্ন ঘোরা। আমার মতে সেটা সে না করলে তাকে ভাষা সৈনিক ষ্ট্যাটাস দিতে কার্পন্য করাটা বাড়াবাড়ি হত, ‘৭১ এর ভূমিকা যাইই হোক না কেন।
সে নিজে যেখানে কৃতিত্ব অস্বীকার করেছে, ‘৫২ সালের ভাষা আন্দোলনের পজিটিভ ভূমিকা ভুল বলে দাবী করেছিল সেখানে আমরা কোথাকার কে তাকে বলপূর্বক কৃতিত্ব চাপিয়ে দেওয়ার? তার নিজের অস্বীকৃতির পরও তাকে ভাষা সৈনিক দাবী করে যাওয়া তাকেই অপমান করা।
কেউ আজকে কোন বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সব পরীক্ষা পাশ করে ডিগ্রী অর্জন করল, চাকরিতে ঢুকল…… সে হয়ত ২০ বছর পর কোন কারনে বিশ্ববিদ্যালয় ডিগ্রী বাতিল করল (এমন ঘটনা বহু ঘটে)। তার মানে কি এই যে সে ২০ বছর আগে বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষা পাশ করার কারনে ডিগ্রী চলে যেতে পারে না?
গোলাম আজমের ঘটনা আরো সরল। এখানে কৃতিত্ব অস্বীকারের পক্ষ আমরা বা তার বিরোধী কেউ নয়, খোদ সে নিজে। সোজা বাংলায় ৭০ সাল পর্যন্ত তাকে ভাষা সৈনিক বলাটা ভুল নয়, এরপরও দাবী করাটা ভুল, সে নিজে দাবী করে গেলে বলতে হয় ভন্ড দ্যা গ্রেট।
ওপরে আরেকজন দেখি যথারীতি চমতকার সব শানিত যুক্তির অবতারনা করেছেন। বংগবন্ধুকে হত্যা করলে মুক্তিযোদ্ধা ষ্ট্যাটাস যায় না, সরকারী টাকা মেরে খেলেও মুক্তিযোদ্ধা ষ্ট্যাটাস যায় না। কিন্তু মুক্তিযোদ্ধা যদি নিজেই স্বীকার করে যে সে মুক্তিযূদ্ধে যোগ দিয়ে ভুল করেছিল তবে তাকে অস্বীকৃতির পর আর মুক্তিযোদ্ধা বলা যায় না। সে সত হয়ে থাকলে এরপর নিশ্চয়ই মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে কোন প্রিভিলেজ নেবে না, মুক্তিযোদ্ধা তালিকা থেকেও নাম কাটিয়ে নেবে।
কোন সত লোক দাবী করবে যে আমি মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহন করে ভুল করেছিলাম, কিন্তু হ্যা, আমি কিন্তু মুক্তিযোদ্ধা? আমার নাম মুক্তিযোদ্ধা তালিকা থেকে বাদ দিলে কিন্তু আমি বেজায় গোস্যা করব? তারা হয়ত ততটা গোস্যা করবে না যতটা না গোস্যা করবে তাদের ছূপা সমর্থকরা।
গোলামের পেছনে লেগে অত এফর্ট দেবার তেমন কারন আমি দেখি না। গোলাম আসলে অনেকটাই সফল, লাইক ইট অর নট।
– গোলাম কি ভুল বলেছিল? মাত্র ৪ বছরের মাথায় যেই জয় বাংলা দিয়ে দেশ স্বাধীন হল সেই জয় বাংলা বাংলাদেশে এক রকমের নিষিদ্ধ হয়ে গেল। এরপর পূনঃস্থাপিত করা গেল সরকারের কে তার ওপর নির্ভর করে অনেকটা সিজনাল ধাঁচে। থ্যাংকস টু দ্যা আইডেন্টিটি ক্রাইসিস, গোলাম আজমই দীর্ঘ মেয়াদে বিজয়ী। আমাদের দৌড় বড়জোর ব্লগে ব্লগে কিছু গালাগাল করে গায়ের ঝাল মেটানো।
@আদিল মাহমুদ,
আপনার একটাই লাভ, জানলেন যে হার্মাপ্রোডাইটারা ব্লগ লিখে না।
ভাষা আন্দোলনের সময় তমাদ্দুন মজলিশ – এর সাথে গোলাম আজমের কি ধরনের সম্পর্ক ছিল ? তার অফিসিয়াল বায়োগ্রাফী পাতায় নিম্নোক্ত তথ্য পেলাম :
এ বিষয়ের সত্যতা সম্পর্কে আপনাদের কাছে জানতে চাই। ধন্যবাদ।
অপ্টিমিস্টিক্যালি দেখলে বলা যায়, জামাতও ২১শে অস্বীকার করতে পারছে না। :lotpot:
ধন্যবাদ পোস্টটি দেয়ার জন্যে। গোলাম আযমের ভাষা আন্দোলনের ভূমিকা নিয়ে অনেকেরই সংশয় দেখা যায় যেটি আমারও অনেক দিন যাবত ছিলো।
তবে পোস্টটি কয়েকটি জায়গায় বেশ স্ববিরোধী ছিলো; গোলাম আযমের আপোসী স্মারকলিপি পাঠ এবং পরবর্তিতে বলা যে, এটি গোলাম আযমের লিখা ছিলো না। সামগ্রিকভাবে পুরো পোস্টটা তেমন কোন অর্থবহন করে নি। শুধু এতটুকু জানা গিয়েছে যে, গোলাম আযমের স্মারকলিপি পাঠ ছিলো একটা দূর্ঘটনাপ্রসূত।
দ্বিতীয়ত ব্যাপার এই যে,
এটা দেয়ার খুব একটা প্রয়োজন ছিলো না। আমার নিজেরও বাংলা ভাষার একটা সমস্যা মনে হয়। তাছাড়া, আপনি ঠিক ওনার মেকি আফসোস প্রমাণ করার জন্যে যেই উদ্ধৃতি টেনেছেন সেটি ওনাকে মেকি প্রমাণ করার জন্যে যথেষ্ট না। এই অংশটুকু না দিলেও পোস্টের মূল বক্তব্যের কোন সমস্যা হতো না; এটি পোস্টকে যুক্তিগত দিক দিয়ে দূর্বল করেছে বলে আমার মনে হলো।
আর বঙ্কিম তো সাম্প্রদায়িক ছিলেনই। ‘শত বর্ষের ফেরারী’ এই নামে তো আহমেদ ছফার একটা বিশাল প্রবন্ধও ছিলো বঙ্কিমকে বিশ্লেষন করে। তবে রবীন্দ্রনাথ নিয়ে ওনার মূল্যায়ন সৎ না এটা খুব স্পষ্টই বুঝা যায়। সেক্ষেত্রে পোস্টে এটা উল্লেখ করে ভাষা আন্দোলনে ওনার অবদানকে কিভাবে মূল্যায়ন করা যায় তা আমার কাছে স্পষ্ট না। তাছাড়া এভাবে সমালোচনা পদ্ধতি আমার কাছে সৎ মনে হয় না; মনে হয় লেখক আগে থেকেই একটা উদ্দেশ্যমূলক কাঠামো দাঁড় করিয়ে লিখা লিখছেন। আর ব্যাক্তিগতভাবে আমি মনে করি না শত্রুর লিখাকে ডিসকন্ট্রাকশনের সুযোগ নিয়ে প্রয়োজন মোতাবেক তুলে ধরা।
আপনাকে আমি আহত করার জন্যে কথাগুলো বলি নি; আমি আমার জায়গা থেকে আমার দৃষ্টিভঙ্গি প্রকাশ করলাম মাত্র। তবুও যাই হোক, পোস্টটি খুব গুরুত্বপূর্ণ।
তথ্য বহুল ও সময়োপযোগী লেখার জন্য আরিফ রহমান ও অভিজিৎ দাকে ধন্যবাদ.
ধন্যবাদ লেখকদ্বয়কে, এমন সুন্দর একটা তথ্যবহুল লেখার জন্য। সম্ভবত গোলাম আজম ঝোঁকের বশে না বুঝে শুনে কিছুটা এডভেন্সারিস্টের ন্যায় মানপত্রটি পড়েছিলেন। পরে যখন তিনি বুঝতে পারলেন যে- এটা শুধুমাত্র একটা ভাষার ব্যাপার নয়, এটা একটা জাতীয়তার দাবী, শোষন-বঞ্ছনার বিরুদ্ধে ন্যয্যতার দাবী, একটা সংস্কৃতির দাবী- তখন তিনি ভাষা-আন্দোলন থেকে নিজেকে গুটিয়ে নিরাপদ দুরুত্বে অবস্থান নেন। নতুবা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের জি.এস. হিসেবে (অনির্বাচিত হলেও) এতবড় একটা আন্দোলনে তার সরব উপস্থিতি ইতিহাসের কোথাও নেই কেন? তাকে ‘ভাষা সৈনিক’ বলা যেত, যদি তিনি উক্ত আন্দোলনের ধারাবাহিকতায় নিজেকে শেষ পর্যন্ত জড়িয়ে রাখতেন।
বাংলা ভাষাকে অবলম্বন করে যে ‘বাঙ্গালী‘ জাতিসত্ত্বার উন্মেষ ঘটেছে, সমগ্র জীবনের গুরুত্বপূর্ন সময়টি যিনি সেই বাঙ্গালী জাতিসত্ত্বার বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছেন। তাকে কিভাবে ভাষাসৈনিক বলা যেতে পারে এটা আমার বোধগম্য নয়। স্বাধীনতার ঘোষক বিতর্কের ন্যায় ভাষা আন্দোলনের ঘোষক বিতর্ক শুরু না হয়, সেই আশঙ্কা করছি।
সংবাদিকা এর যুক্তিপূর্ন উপস্থাপনা বেশ হৃদয় আকর্ষী। তবে তাঁর একটা বক্তব্য – “সত্য হলো – বঙ্কিমের চরম স্তাবকরাও স্বীকার করেন রাজনৈতিক চিন্তা ভাবনায় তিনি একজন চরম সাম্প্রদায়িক চেতনার অধিকারী ছিলেন। আর রবীন্দ্রনাথের রাজনৈতিক চেতনা সম্পর্কে বললে বলতে হয় – বাঙ্গালীদের নেতৃত্বে নেশন-স্টেট গঠনের চিন্তা তিনি দুঃস্বপ্নেও ভাবেননি ”
এর জবাবে শুধু এটুকু বলতে চাই- বাংলা সাহিত্যের দিকপাল বঙ্কিম এর লেখার মধ্যেই প্রথম বিজ্ঞান মনোস্কতার প্রকাশ ঘটতে থাকে। তিনি মোগলদের জীবনযাত্রার কদর্য দিকগুলিকে সুন্দরভাবে উপস্থাপন করেছেন বলে মোগলপ্রেমিকরা তাকে সাম্প্রদায়িক চেতনাধারী বলে মনে করতে পারে। আর রবীন্দ্রনাথের মতো এতবড় একজন দার্শনিককে এতটা হালকাভাবে বিচার করা আমার নিকট কেন যেন বেমানান মনে হয়েছে।
মার্শাল জোসেফ প্যাঁতা – ফ্রান্স।
প্রথম বিশ্বযুদ্ধে ফ্রান্সের সবচাইতে বড় বীর – জার্মান আক্রমণ প্রতিহত করার মূল সামরিক কৌশল প্রনেতা। চার্চিলের “আমরা আত্মসমর্পণ (জার্মানদের কাছে) করবনা খ্যাত ” বক্তৃতার মত তার দেওয়া “তারা (জার্মানরা) অতিক্রম (সীমানা) করতে পারবেনা” পুরো দেশ তথা ফ্রান্সকে উজ্জীবিত করেছিল। প্রথম বিশ্বযুদ্ধ শেষে ফ্রান্সের সবচাইতে বড় নায়ক।
প্রায় কম-বেশি বিশ বছর পর তিনিই সবাচাইতে বড় ভিলেনে পরিণত হন। ফ্রান্স জার্মান আক্রমণ পরিকল্পনা মত প্ররতিহত করতে না পারলে পরে ফ্রান্স আত্মসমর্পণ করে। জার্মানরা ফ্রান্স দখল করার পর এর পুতুল সরকার এবং রাষ্ট্র প্রধান করা হয় মার্শাল প্যাঁতাকে।
যে মানুষ ২০ বছর আগে জার্মানদের আক্রমণ প্রতিহতের সবচাইতে বড় নায়ক হয়েছে – ২০ বছর পরেই সবচাইতে বড় ভিলেন। এখন তার জীবন এবং কর্ম নিয়ে সমস্ত স্টাডিতেই তি যা যখন করেছেন সেটার উপরি সমালোচনা করা হয় – খিচুরি বানানো হয়না!!
এমন শত শত উদাহরণ আছে – আরেকটা হতে পারে – ব্রিগেডিয়ার জেনারেল বেনেডিক্ট আর্নল্ড। যে আমেরিকায় মীর জাফরের সমার্থক।
এখন বাংলাদেশে ফিরে আসা যাক –
একজন মুক্তিযুদ্ধের সাব সেক্টর কমান্ডার জেনারেল হারুনুর রশীদ টাকার লোভে বলী হয়ে দেশের সর্ববৃহৎ অবৈধ অর্থ কেলেঙ্কারি ডেস্টিনি স্কিমে জড়িত হয়েছেন।
লোকাল মিলিশিয়াদের মধ্য সবচাইতে বৃহৎ দল – যাদের অপারেশন এর ব্যাপ্তি সরকারি ব্রিগেড কে, এস কিংবা জেড ফোর্সের থেকে কোন অংশে কম নয় – তার কমান্ডার কাদের সিদ্দিকী মাঝে মাঝে যেসব কথা বলেন – মুক্তিযোদ্ধার ছেলে হিসেবে মাঝে মাঝে খারাপই লাগে।
এরা ছাড়াও বিএনপি কিংবা আওয়ামীলীগের অনেক মুক্তিযোদ্ধাই স্বাধীনতার পর বিভিন্ন অনুচিত কর্ম কান্ডে জড়িত হয়েছেন অর্থনৈতিক কারণে। আবার অনেকেই রাজনৈতিক কারণে বিভিন্ন রাজাকারের ঊথা-বসা করেছিল এবং করেছে। আওয়ামীলীগ বিএনপি দুই দলেই।
বঙ্গবন্ধুর খুনিদের বেশিরভাগই তো মুক্তিযোদ্ধা।
আবার বর্তমানে গণতন্ত্রকে আঘাত করে যারা মন্ত্রী হয়েছেন তাদের অনেকেও মুক্তিযোদ্ধা ছিলেন – যারা পাকিস্তানি স্বৈরশাসনের বিরুদ্ধে যুদ্ধে ঝাপিয়ে পরেছিলেন।
তাই বলে আমরা তাদের পরবর্তী কর্মকান্ডের জন্য মুক্তিযুদ্ধকালীন কর্মকান্ড অস্বীকার করব ???
অন্যদিকে, কুখ্যাত রাজাকার এবং গণ হত্যায় অংশ নেয়া মুসা বিন শমসের কিংবা মোশারফ হোসেন আজকে মুক্তিযুদ্ধের নেতৃত্ব দানকারী দল আওয়ামীলীগ করে এবং আওয়ামীলীগের শীর্ষ নেতৃত্বের সাথে পারিবারিক সম্পর্ক স্থাপন করেছে বলে তাদেরতো আমরা ৭১ এর মুক্তিযোদ্ধা বলতে পারিনা!!!
আমার আর্গুমেন্ট – গোলাম আযম স্বেচ্ছায় ভাষার দাবী তুলেছিল নাকি পরিস্থিতির জন্য তুলেছিল কিংবা পরবর্তীতে এই দাবী তোলার জন্য অনুশোচনায় ভুগেছিল না ভুগেনি যেটাই হোক – আমি এই পর্যন্ত যতটুকু জেনেছি এবং বুঝেছি সেই অনুযায়ী আমার এটা স্বীকার করেনিতে কোন অসুবিধা নেই যে ১৯৫২ সালের ভাষার প্রশ্নে যে আন্দোলন হয়েছিল সেখানে তার অবদান পজেটিভ ছিল। ৫২ সালে পজেটিভ ছিল বলে এর জন্য ৭১ এর তার ভূমিকা নিয়ে সমালোচনা করতে নিশ্চয়ই কোন বাধা থাকার কোন কথা নেই। ৭১ সালে বাংলাদেশ স্বাধীন হোক এটা সে চায়নি – উপরন্তু গণহত্যায় পাকিস্তানীদের মদদ এবং সহায়তা করেছিল।
আসলে আমাদের “সমালোচনা” কাকে বলে এবং কিভাবে করতে হয় তা আগে শেখা উচিত!!!
আর বাচ্চাকাচ্চাদের কথা বললে বলতে হয় – এই মূহুর্তে একটি ঘটনা মনে পরে গেল – কিছুদিন আগে- হয়ত আট-নয় মাস – এক মুক্তিযোদ্ধা যিনি সিনেমা বানান, চলচিত্রের জন্য সরকারী অনুদান এবং সহায়তার অনেক কিছুই অগ্রাধিকার পান, গণ জাগরণ মঞ্চের উৎসাহদাতা – তার মেয়ের (আনুমানিক ২৮-৩৮ বছর বয়স্কা) সাক্ষাৎকার প্রকাশ করছিল – তার মেয়ে শুদ্ধ উচ্চারণে বাংলাতো বলতেই পারেনা উপরন্তু, বাংলা-ইংরেজী মিশিয়ে কথা বলছে!!!
এখানে যা বলা হল এটা আসলে একটা সর্ব সমস্যা… শুদ্ধ ভাবে বাংলা লেখা এবং শুদ্ধ উচ্চারণে কথা বলতে পারাটা…
আমাদের সমস্যা হল – আমরা কোন কিছুর সঠিক মূল্যয়ন করতে পারিনা। যে যে কর্ম করেছে তার কর্মে সমালোচনাই ঠিক মত করতে পারিনা – হয় দেবতা বানাই নয়ত শয়তান বানাই!!!
বঙ্কিম চন্দ্র বিখ্যাত লেখক ছিলেন – বাংলা উপন্যাসের জনক বলে অনেকে মনে করেন। বাংলা সাহিত্য তৎকালীন ম্যাভেরিক চিন্তা ভাবনার জন্য প্রতিষ্ঠিত সাহিত্য জগতে অনেক সংগ্রাম করতে হয়েছে। এটা সত্য… তিনি বাংলা সাহিত্য জগতের এক দিকপাল। এখন ঐ যে বললাম – “সমালোচনা” বিষয়টি এখনও ভালোভাবে বিস্তার লাভ করেনি – এজন্য কারো অবদানের সবকিছু এক লাইনে খিছুরি বানিয়ে ফেলা। সত্য হলো – বঙ্কিমের চরম স্তাবকরাও স্বীকার করেন রাজনৈতিক চিন্তা ভাবনায় তিনি একজন চরম সাম্প্রদায়িক চেতনার অধিকারী ছিলেন।
আর রবীন্দ্রনাথের রাজনৈতিক চেতনা সম্পর্কে বললে বলতে হয় – বাঙ্গালীদের নেতৃত্বে নেশন-স্টেট গঠনের চিন্তা তিনি দুঃস্বপ্নেও ভাবেননি।
@সংবাদিকা,
আপনার এই অংশটি নিয়ে ভিন্নমত আছে আমার-
“গোলাম আযম স্বেচ্ছায় ভাষার দাবী তুলেছিল নাকি পরিস্থিতির জন্য তুলেছিল কিংবা পরবর্তীতে এই দাবী তোলার জন্য অনুশোচনায় ভুগেছিল না ভুগেনি যেটাই হোক – আমি এই পর্যন্ত যতটুকু জেনেছি এবং বুঝেছি সেই অনুযায়ী আমার এটা স্বীকার করেনিতে কোন অসুবিধা নেই যে ১৯৫২ সালের ভাষার প্রশ্নে যে আন্দোলন হয়েছিল সেখানে তার অবদান পজেটিভ ছিল।”
লিয়াকত আলী’র সামনে মানপত্র পাঠ করেই একজনের ভূমিকা পজেটিভ কি নেগেটিভ সেটি সিদ্ধান্ত নেয়া বোধকরি বাতুলতা হবে। টিভি সংবাদের পাঠকের কিংবা পাঠিকার সংবাদ উপস্থাপন নিয়ে যেমন ঘটনার সঙ্গে তাঁর পজেটিভ নেগেটিভ সম্পৃক্ততা বিচার করা যায়না ঠিক তেমনি একটি মানপত্র পাঠ নিয়ে বিশাল একটি আন্দোলনে কারো ভূমিকা মূল্যায়ন সঠিক হবেনা। লক্ষ্য করবেন আন্দোলন নিয়ে কোনো ইতিহাসেই গোলাম আযমের আর একটি ভূমিকাও আমরা পাইনা। সেটি ড. হান্নানের ছাত্র আন্দোলনের ইতিহাস হোক আর সরদার ফজলুল করিম কিংবা অন্য ভাষা সৈনিকদের স্মৃতিচারণে হোক। ইতিহাসকে গতির মধ্যে দেখাই বোধকরি সমীচীন হবে। সেটাই ইতিহাসে তাঁর অংশগ্রহণকে মূল্যায়ন করতে সহায়তা করবে। সরদার ফজলুল করিম মুক্তিযুদ্ধে অংশ না নিয়ে পাকিস্তানের পক্ষে বিবৃতিতে স্বাক্ষর করেছিলেন, কবীর চৌধুরী যেটি করেননি। তাহলে কি আমরা ধরে নিবো সরদার করিমের ভূমিকা নেগেটিভ ছিলো?
আরিফ রহমান এবং অভিজিতের আলোচনাটির স্ববিরোধীতার যায়গা অন্যখানে। আলোচনায় বলা হয়েছে মানপত্রটি গোলাম আযম তৈরি করেননি বা লেখননি, আবার বলা হয়েছে এতে রাষ্ট্রভাষা বাংলা করার পক্ষে জোরালো দাবি ছিলোনা। মানপত্র কে লিখেছে সেটি প্রসংগিক নয়, তাছাড়া যে লিখেনি সেটা নিয়ে তাঁর দায় কোথায়? আলোচনাটির লক্ষ্য ছিলো ভাষাআন্দোলনে গোলাম আযমের ভূমিকা নিয়ে, মানপত্রের কন্টেন্ট নিয়ে নয়।
@দেব প্রসাদ দেবু,
আমি কিন্তু ৪৮ এর কথা বলিনি, ৫২র কথাই বলেছি। আর আমি “ভাষা সৈনিক ছিলেন” কথাটাও উল্লেখ করিনি, আমার শব্দ ছিল “পজেটিভ”।
আর আমার লক্ষ্য গোলাম আযম নয় – ব্যাপারটি সামগ্রিক। এবং এখনও এমন আমরা দেখতে পাই – রাজনৈতিক ক্ষেত্রে – সামাজিক ক্ষেত্রে…
এর প্রমাণ লেখক নিজেই দিয়েছেন বাংলা সাহিত্যর দুই দিকপালের উদাহরণ দিয়ে – এবং তাদের সাহিত্যিক এবং রাজনৈতিক চেতনা মিশিয়ে ফেলে।
এসব মেশানো কিংবা খিচুড়ি করা থেকে আমাদের বের হয়ে আসতে হবে…
@সংবাদিকা,
কেউ বলেছে অস্বীকার করতে? এমন যুক্তি কেউ দেখিয়েছে এখানে?? আরিফ রহমান বা অভিজিৎদা এখানে এমন কোন যুক্তি দেখিয়েছেন যে, গোলাম আযম মুক্তিযুদ্ধের বিরোধীতা করেছিলেন বলেই ভাষা সংগ্রামে তার অংশগ্রহন (যদি থেকে থাকে) একেবারে অসম্ভব হয়ে দাঁড়ায় গাণিতিক ইক্যুয়েশনে?? লেখকদ্বয় তো যুক্তি সহকারে বলতে চেয়েছেন, যেভাবে গোলাম আজমকে ফুলিয়ে ফাপিয়ে মহান ভাষাসৈনিক বানানো হচ্ছে, তিনি আসলে তেমনটা ছিলেন না। লেখকদ্বয়ের যুক্তির বিরুদ্ধে কোন পাল্টা যুক্তি থাকলে আপনি তা পেশ করতেই পারতেন।
কিন্তু আপনি তা করছেন না। বরং ইনিয়ে বিনিয়ে একের পর এক দলীয় আবর্জনা দিয়ে দুর্গন্ধ করছেন এখানকার পরিবেশ। অথচ এই আবর্জনাগুলি ছাগুপেইজগুলির ফুলদানিতে শোভা পেতে পারত।
আপনার কিসে খারাপ লাগে, তা আর বুঝতে বাকী নাই কারো। লেখাটা হয়েছে গোলাম আযমের ভাষা আন্দোলনে অংশগ্রহনের প্রেক্ষিত ও তাকে মহান ভাষা সৈনিক বানানোর অপপ্রচারের জবাব দিতে; অথচ আপনি নিয়ে এলেন মুক্তিযোদ্ধারা কবে কি অপকীর্তি করেছে, তার পরিসংখ্যান নিয়ে। গোলাম আজমের ভাষা আন্দোলনজনিত মহিমা অবিচল রাখতে ব্যগ্র হয়ে আপনি মুক্তিযোদ্ধাদের যেভাবে ডাউন করলেন, তাতে আর কাউকে বুঝিয়ে বলার দরকার আছে, আপনি কিসে খুশী হন, আর কিসে বেজার হন??
একবার ফরিদ ভাই বলেছিলেন, ভারতীয়রা ফুল নিয়ে এলেও তিনি বিশ্বাস করেন না। একইভাবে, খাঁটি বাংলাদেশী বিএনপিওয়ালারা ‘মুক্তিযুদ্ধ’, ‘মুক্তিযুদ্ধ’ করতে মুখে ফেনা তুললেও বিশ্বাস করতে কেন জানি কষ্ট হয়। কারণ এই লোকগুলোই একমুখে মুক্তিযুদ্ধের সমর্থক হিসেবে নিজেদের দাবী করবে, আবার অন্যমুখে মুক্তিযুদ্ধে নিহত ‘তিরিশ লাখ’ সংখ্যাটিকে ‘তিন লাখে’ নামিয়ে আনবে ‘বস্তুনিষ্ঠতার’ স্বার্থে। এই লোকগুলোই একমুখে মুক্তিযুদ্ধের সমর্থক সাজবে, আবার অন্যমুখে মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসকে বিকৃত করে বলবে যে, পাকিস্তান তো বাংলাদেশের কাছে হারেনি, তারা তো ভারতের কাছে আত্মসমর্পণ করেছে। এরাই বল্বে, এখন এগিয়ে যাওয়ার সময়, চল্লিশ বছর পেছনের ইতিহাস নিয়ে জাতিকে বিভক্ত করার কি প্রয়োজন!
কারো যেন দুর্ভাগ্য না হয় আপনার কাছ থেকে “সমালোচনা” শেখার। দেখুন, মুক্তমনা ভিন্নমতকে প্রচন্ড শ্রদ্ধা করে বলেই এখন পর্যন্ত ছাগু পেইজের সাথে মিল পাওয়া যায়, এমন মতাদর্শ একের পর এক উগরে দিতে পারছেন। অন্য কোন প্রগতিশীল ব্লগ হলে এতক্ষনে চোখের জলে-নাকের জলে একাকার করতেন! গোলাম আজমের পক্ষে কলম ধরার আর সময়ই পেতেন না।
@কাজি মামুন,
আপনার কথায় আবেগ ঝড়ে পরছে… আপনার আবেগ কে আমি সম্মান করি। তবে আবেগ কে বুদ্ধিমত্তা, কূটনীতি এবং বিচক্ষনতার পরে স্থান দিতে হয়।
আবেগ কে তিনটির আগে স্থান দিলে – গুরুত্বপূর্ন সময় লাভের চেয়ে ক্ষতি হয় – দেশ বিদেশে বিব্রতকর অবস্থায় কিংবা ক্ষতির সম্মুখীন নিজেকে এবং পুরো জাতিকে পরতে হয়!! এমন প্রায়ই হয়…
আর আপনি যেসব “প্রগতিশীল” ব্লগের কথা বললেন না – ওখানে নিজেরা কথা বলে আর নিজেরাই হাসাহাসি করে এভাবে “:-D 😀 😀 :-D” আর গত কাল কিংবা পরশু তারা একটা বই (কিংবা কিছু একটার “প্রিন্টিং” এর বাইন্ডিং) উন্মোচন করছে… এবং ওটারও স্তাবক গাইছে এভাবে ” :clap :clap :clap :clap :clap :clap :clap ” 😀
আমি মুক্তমনাতে এজন্য লেখি – এখানে, জাতীয় পতাকা পোড়ানো কি নাগরিক অধিকার কিংবা অধিকার না ওটা নিয়েও বিতর্ক হয়…… সো আপনার বিভিন্ন বাক্যর লাইন বাই লাইন উত্তর বোধয় এই একটি লাইনেই বুঝতে পারা যাবে 🙂
@সংবাদিকা,
আগেও বলেছি, আপনি আসিফ-পিয়াসি কৌশলকেও টপকে এক নতুন কৌশল, নতুন ধারার জন্ম দিয়েছেন। অভিনব এই ধারাটি উদ্ভবের জন্য কাঠালপাতা ভর্তি পেইজটির পক্ষ হতে আপনার জন্য নিশ্চয়ই অপেক্ষা করছে ট্রফি!
যথারীতি আবারও এড়িয়ে যাচ্ছেন, এবং এ নিয়ে বেশ কজন পাঠক আপনাকে ধরতে গেলে আপনি ফাঁক গলে বেরিয়ে যান। এ থেকে আপনার উদ্দেশ্যটি খুব পরিষ্কার হয়ে যায়ঃ নতুন প্রজন্মকে/মুক্তমনার পাঠকদেরকে অথবা এখানে প্রগতিশীলতার দীক্ষা নিতে আসেন যেসব শিক্ষার্থী, তাদের সবাইকে কনফিউজ করা এবং এর মাধ্যমে কাঠালপাতা ভর্তি পেইজটির পরিপূরক হিসেবে কাজ করা। যেমনঃ দশ ট্রাক অস্ত্রের রায় নিয়ে আপনি এমন একটি লেখা লিখলেন, যা পড়ে একজন তরুণ পাঠক নিশ্চিতভাবে কনফিউজড হবে, আর আপনার উদ্দেশ্য তাতে পূরণ হবে। না হলে, বারংবার রিকোয়েস্ট করার পরও আপনি কেন দশ ট্রাক অস্ত্র ভাল দেশের জন্য, সে যুক্তিগুলো পেশ করেননি; অথচ আপনার যুক্তিগুলো পেলে অন্য পাঠকরা তা অন্তত খন্ডানোর সুযোগ পেত।
এই লেখাটিতে লেখকদ্বয় যুক্তি সহকারে বলতে চেয়েছেন, যেভাবে গোলাম আজমকে ফুলিয়ে ফাপিয়ে মহান ভাষাসৈনিক বানানো হচ্ছে, তিনি আসলে তেমনটা ছিলেন না। লেখকদ্বয়ের যুক্তির বিরুদ্ধে কোন পাল্টা যুক্তি থাকলে আপনি তা পেশ করতেই পারতেন, নীচে গাজী নূর যেমনটা করেছেন। কিন্তু আপনি তা না করে ‘মুক্তিযোদ্ধারা খুন করলে তাদের মুক্তিযোদ্ধা পরিচয় মুছে যেমন যায় না, তেমনি ‘মহান ভাষাসৈনিক গোলাম আজম’ রাজাকারগিরি করলে তার ভাষাসৈনিকত্ব খারিজ হয় না’ তেমনটা প্রমান করতে চাইলেন এবং এভাবেই কাঠালপাতা ভর্তি পেইজটির সম্পুরক কাজ করে এখানকার তরুণ পাঠকদের বিভ্রান্তির পথে ঠেলে দিলেন।
আপনি যতখুশী যুক্তি দিন, এমনকি প্রচলিত মতকে ঝড়ের বেগে আঘাত করুন, কেউ আপত্তি করবে না, হয়ত আপনার যুক্তি খন্ডনে আরও প্রবল ঝড় হয়ে অবতীর্ণ হবে। কিন্তু দয়া করে আর কনফিউজ কইরেন না। যা বলতে চান, পরিষ্কার করে বলেন। ‘সাংবাদিকা’ কৌশল পরিহার করেন! কাঠাল পাতার সওদা করার জন্য বাংলা ব্লগের অভাব নাই। এইখানে কেন রে ভাই?
@কাজি মামুন,
সংবাদিকার এই এপ্রোচ অবশ্য নতুন নয়। উনি নিজে বৌদ্ধ ধর্মে কত ধরনের সহিংসতা আছে তা নিয়ে নিজেই পোস্ট দেন। কিন্তু ইসলামী সন্ত্রাসবাদ নিয়ে লিখলে তার গায়ে ফোস্কা পড়ে। নানা রকম ভাবে ত্যানা পেঁচিয়ে খণ্ডন করার চেষ্টা করেন। মুক্তিযুদ্ধ ইস্যুতেও তাকে মাঝে সাঝেই রঙ বেড়ঙ-এর নানা পদের খেলা খেলতে দেখা যায়। সত্য হচ্ছে গোলাম আজমের ঘোষণাপত্র পাঠ ছাড়া ভাষা আন্দোলনে কোন ভূমিকাই ছিল না। সেটাও যে কৌশলগত কারণে মূলতঃ হিন্দু অরবিন্দকে বাদ দেয়ার জন্য করা হয়েছিল সেটা ঐতিহাসিক সত্য। এটা যদি বিরাট কোন ব্যাপার হয় তাহলে ১৯৯০ সালের ৬ ডিসেম্বর এরশাদ সরকারের পতনের দিন, বিটিভিতে যে কোঁকড়া চুলের ঘোষক (ব্যাটার নামও ভুলে গেছি) ‘ঘটনাক্রমে’ সেটি প্রথম পাঠ করেছিলেন, তাকে ‘স্বৈরাচার পতন দিবসের’ সৈনিক হিসেবে ডাকা লাগে। কি বিরাট ভূমিকা, তাই না! কি ‘পজেটিভ’ অবদান!
এমনকি ভাষা আন্দোলনে গোলাম আজমের তথাকথিত ‘পজেটিভ’ অবদান এর কথা যদি ধরেও নেই, গোলাম আজম নিজেই সেটা বাতিল করেছিলেন ‘বাংলা ভাষার আন্দোলন ভুল হইয়াছিল’ বলে। এমনকি তিনি এও বলেছিলেন, বলেছিলেন, ‘জয় বাংলা শ্লোগান ইসলাম ও পাকিস্তানবিরোধী’। তিনি সেসময় আরো বলেছিলেন, ‘বাঙালিরা কখনো জাতি ছিল না’ (দৈনিক পাকিস্তান, ১৩ই এপ্রিল, ১৯৭০)। প্রথম শহীদ মিনারকে পুজামণ্ডপ বলেছিলেন, ওটাকে গুড়িয়ে দেয়াকেও স্বাগত জানিয়েছিলেন এই ‘ভাষা সৈনিক’। ত্যানা যতই প্যাচানো হোক না কেন, এই সত্যগুলো সবই ডকুমেন্টেড!
@অভিদা,
ইসলাম কি সন্ত্রাসবাদ হতে পারে? এইটা শান্তির ধর্ম ( religion of Piece) না ?
শান্তির ধর্মের মেলা নমুনা আমরা জানি, আজ শান্তির ভয়েই মনে হয় আমেরিকার আদালত পর্যন্ত ভীত।খবরটা আপনি পড়েছেন নিশ্চয়ই তবু যদি বাই এনি চান্স মিস করেন তাই লিঙ্ক টা দিলাম। ‘ইনোসেন্স অফ মুসলিমস’ মুছে ফেলার নির্দেশ । ইসলাম সন্ত্রাসবাদ সমর্থন করতেই পারে না, যারা বলে যে ইসলাম শান্তির ধর্ম না তাদের কল্লা কেটে piece করা হবে
@অভিজিৎ,
এটা হবে “বৌদ্ধ ধর্মের নামে সহিংসতা……”, “বৌদ্ধ ধর্মে কত ধরনের নয়…”
রংবেরঙ এর বলতে কি – ব্যাপারটা আমি ধরতে পারলামনা।
এই বাক্যর কোন ভিত্তি আছে কিনা আমার জানা নেই!!! আমি অনেক জায়গায়ই বলেছি আমি সকল ধরনের সন্ত্রাসবাদের বিপক্ষে!!!
এই লাইনেই বলতে হয় – এজন্যই আমি বাস্তব সম্মত সমালোচনার ব্যাপারটা সামনে নিয়ে এসেছি! বাংলা “সমালোচনা” বিষয়টিই আসলে ঠিক উন্নয়ন লাভ করেনি – সমালোচনায় নেগেটিভ এভং পজেটিভ দুইটিই আস্তে হয়।
যেমন, আপনি যদি কোন অ্যাভারেজ হাইস্কুল পাশ আমেরিকান কে জিজ্ঞেস করেন যে বেনেডিক্ট আর্নল্ড কে?? উত্তরে সে শুধু একটি শব্দই বলবে “ট্রেইটর”। তবে শিক্ষিত এবং রাজনীতি এবং ইতিহাস সচেতন ব্যাক্তি বিশেষত ইউনি ফ্যাকাল্টি, মিলিটারি অফিসার কিংবা উচ্চশিক্ষিত পলিটিশিয়ানকে জিজ্ঞেস করেন তাহলে উত্তরটি অন্তত একটি বাক্য হবে।
আর এই লেখার শুধু কনস্ট্রাকটিভ কত গুলো দিক যদি দেখি – তাহলে বলতে হয় কতগুলো ব্যাপার এখানে আলোচনাই করা হয়নি। যেমন – ঐ সময় ভাষা আন্দোলন ঢাকা ছাড়া আর কোথায় কোথায় হয়েছিল, এই আন্দোলনে বিভিন্ন সংঘটন গুলো – সবচাইতে বড় কথা জামায়াত-শিবিরের দাবী গুলো একটি একটি খণ্ডানও হয়নি!!!
একমাত্র কামাল লোহানীর “ব্যাক্তিগত” বরাত ছাড়া আসলে আর কিছুই নেই…… লেখার শিরোনামকে প্রকৃত ভাবে ডিফেন্ড করার জন্য আসলে কোন উপাদানই নেই। আর সবচাইতে হাস্যকর – শেষদিকে লেখক এমন সব ব্যাপারের অবতারণা করলেন পরে মনে হল কিটি পার্টিতে ভদ্র মহিলারা যে ধাঁচে আড্ডা দেন “অ্যাই ভাবী, শোন, মিসেস…… না…… “ তেমন… । লেখক এক জায়গায় বলেছেন – “আপন নাতী-নাতনীদের কিন্তু তিনি বাংলা শিক্ষা দেননি” – এটা একটা কথা হল??? নাতি -নাতনিদের গার্ডিয়ান কে??? কর্মক্ষম বাপ-মা বেঁচে থাকলে তাদের সন্তানদের এসব দায়িত্ব কি নানা-দাদা নেয় ???
এজন্যই বলছি – লেখার শিরোনামের প্রতি এর ভেতরের উপাদান বড়ই অন্যায় আচরন করেছে! আবারও বলছি “আবেগ দরকার” তবে আবেগের কারণে ভুল করে যদি প্রতিপক্ষকে সুযোগ দেওয়া হয় তাহলে ঐ ধরনের আবেগ অবশ্যই বর্জনীয় – নাহলে ক্ষতি বৈ লাভ হবেনা!!
@সংবাদিকা,
সেটাই সই। মুল বিষয় হল, বৌদ্ধ ধর্মের নামে সহিংসতা নিয়ে আপনার অপার আগ্রহ দেখি, কিন্তু ইসলামের নামে সন্ত্রাস নিয়ে কেউ লিখলেই শুরু হয় আপনার ত্যানাপ্যাচানি। রাজীব হত্যার সময় জংগিদের নিয়ে লেখার সময়েও দেখেছি। পাবলিকে তো আর ঘাষ খায় না ভাইজান!
ওহ তাই নাকি? আপনার দৃষ্টিতে সবই ‘ব্যালেন্স’ করে লিখতে হবে তাই না? দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে হিটলারের বর্বরতা নিয়ে কেউ লিখলে, আপনি নিশ্চয় তাকেও বলবেন, সমালোচনায় নেগেটিভ এভং পজেটিভ দুইটিই ‘আস্তে’ হয়, রাইট? হিটলারের ভাল গুণ কি ছিল? এই ধরেণ – তিনি ক্যারিশম্যাটিক, কনভিন্সিং, ভেজিটেরিয়ান ছিলেন, ভাল ছবি আঁকতেন — আপনার মত পুটু চালান দিয়ে খুঁজলে নিশ্চয় অনেক গুণ পাওয়া যাবে। আসেন দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে তার বর্বরতা গৌন রেখে ওই সব অবান্তর গুণগান নিয়েই লিখি, কেমন? নাৎসী বাহিনীর অত্যাচারের কথা বললেও আগে তাদের কিছুটা গুণগান করে নিতে হবে আমাদের, নাইলে ব্যালেন্সড এপ্রোচ হবে না যে! মুক্তিযুদ্ধে ত্রিশ লাখ বাঙালির আত্মত্যাগ, ২ লাখ নারীর ধর্ষণের কথা লিখতে গেলেও বোধ হয় আগে রাজাকারদের কিছু প্রশংসা আর মুক্তিযোদ্ধাদের কয়েকদফা বদনাম না করলে চলবে না বোধ হয়। আপনি করুন যত ইচ্ছা। আমার দরকার নাই। কিছু ক্ষেত্রে ব্যালেন্সড এপ্রোচ বলে কিছু নেই। ওয়ান সাইড ক্যান বি রং, ডেড রং। এটা বুঝতে শিখুন।
না, কামাল লোহানীর বরাত ছাড়াও আরো অনেক উপাদানই আছে। আপনার অন্ধ চোখে কিছু পড়ছে না। সে সময় যারা ভাষা আন্দলনের সাথে জড়িত ছিলেন, তাদের অনেকের কথাই উঠে এসেছে লেখাটায়। বহু পত্রিকার কাটিং দেয়া হয়েছে, গোলাম আজমের নিজ উদ্ধৃতিই হাজির করা হয়েছে। আছে একই ইস্যুতে আব্দুল গাফফার চৌধুরীর স্মৃতিচারণও। আমিই বরং আপনি যে তথাকথিত ‘পজেটিভ’ অবদানের দায়সারা উল্লেখ করেছিলেন, সেটার স্বপক্ষে আপনাকে কোন প্রমাণ হাজির করতে দেখিনি, দেখছিনা। আশে পাশে ঝোপঝাড় পিটিয়ে তো লাভ হবে না ভাই। এক্ষেত্রে বার্ডেন অব প্রুফটা সরাসরি আপনার কাঁধেই।
তবে সেগুলো বাদ দিয়ে চুপা-চাগামি করলে আমার কিছু করার নেই।
@অভিজিৎ,
কি দেখেছেন!!
ব্যাপারটা যদি অ্যাকাডেমিক অ্যাপ্রোচে হয় – অবশ্যই বলব; আসলে বলতেও হবেনা – তার সম্পর্কে বেশিরভাগ বিখ্যাত লেখাই ওভাবেই লেখা হয় – শুধু হিটলার নয়, স্টালিন এবং মাও সহ আরও অনেকেই…
অত দূরে যেতে হবে কেন – সাবেক রাষ্ট্রপতি এরশাদ এর ব্যাপারেও একই কথা… সে যেমন ৭১ সালে একজন রাজাকার ছিল – অবৈধ ক্ষমতা দখলদার স্বৈরাচার ছিল – একই সাথে সে প্রেসিডেন্ট থাকার সময় এমন কতগুলো প্রশাসনিক কাজ করেছিল যার ফল সুদূর প্রসারী।
এটা আমি তখনই করব যখন এটা একটা সামগ্রিক আলোচনায় বলা হবে – তবে আমি প্রকাশ্য এসব অবশ্যই বলবনা – যেখানে সে এবং তার চামচারা ওসব ম্যাটেরিইয়ালাইজড করার সুযোগ পাবে!
আর যা আছে ওসব যথেষ্ট নয় । আর বাকি কয়েকজনের (আসলে একজনের) টা ততটা বিশ্বাস করা যায়না (ঐতিহাসিক এবং অন্যান্য / বিভিন্ন ব্যাপারে তার স্ববিরোধি বিভিন্ন বক্তব্যর/ কথাবার্তার জন্য উনি অনেক আগেই গ্রহন যোগ্যতা হারিয়েছেন) আর কয়েকটি হাস্যকর!! আর গোলাম আজমের উদ্ধৃতি লেখার উদ্দেশ্যকে মোটেই খন্ডায়না।
আপনি যেহেতু এই লেখার অন্যতম একজন কন্ট্রিবিউটার এবং স্পষ্টত আপনি বলেছেন এই ক্ষেত্রে আপনার অবস্থান “নিরপেক্ষ” / “সামগ্রিক” আলোচনা নয় – তাহলে আমার আর আগ বাড়ানো উচিত নয়।
আপনাকে ধন্যবাদ।
@সংবাদিকা,
জায়গা বিশেষে ত্যানা প্যাচানো। আপনি নিজেই ইসলামের সন্ত্রাস নিয়ে নিজের মন্তব্য দেখুন, আর বৌদ্ধদের সহিংসতা নিয়ে নিজের পোস্টের সাথে তুলনা করুন। বুঝে যাবেন।
সেটা আপনার ভাবনা। সব যদি বাদও দেই, গোলাম আজম যেখানে নিজেই পরবর্তীতে নিজেকে ভাষা আন্দোলনের থেকে সরিয়ে নিয়েছেন, বলেছেন ওটা ভুল ছিল, যিনি জাতি হিসবেই আমাদের সত্ত্বা অস্বীকার করেছেন, স্বাগত জানিয়েছে একুশের শহীদ মিনার গুড়িয়ে দেয়াকে, তাকে কিভাবে ‘ভাষা সৈনিক’ হিসেবে আখ্যা দেয়া যায় তা আমার বোধগম্য নয়। যারা গোলাম আজমের মূল ইনভলভমেন্ট বাদ দিয়ে বাটি চালান দিয়ে জায়গাবিশেষে ‘পজিটিভ’ অবদান খোঁজেন তা আমার কাছে হিটলারের বর্বরতা বাদ দিয়ে ‘তিনি কত বড় আর্টিস্ট ছিলেন’ – সেরকম তানা প্যাচানোর মতোই লাগে।
আর কথা হল ‘পজেটিভ অবদানের’ কথা আপনিই বড় গলায় বলেছিলেন, কাজেই আশা করেছিলাম সেটার রেফারেন্স আপনার কাছে থেকেই আসবে। আসেনি। আমাদের দেয়া দৈনিক পত্রিকার রেফারেন্স, কালাম লোহানী, আব্দুল গাফফার চৌধুরী কারো স্মৃতিচারণই দেখছি আপনার পছন্দ হচ্ছে না। আপনি ড. হান্নানের বাংলাদেশের ছাত্র আন্দোলনের ইতিহাস : ১৮৩০-১৯৭১ পড়তে পারেন। সেখানেও একই বক্তব্য পাবেন। কিন্তু বলে লাভ কি? এ লেখায় তো তাও সমসাময়িক দৈনিক পত্রিকা, গবেষক আর ভাষা সৈনিকদের রেফারেন্স দেয়া হয়েছে, আর আপনি আপ্নার মন্তব্য ডিফেন্ড করতে গিয়ে কেবল ‘রাজনৈতিক সচেতন কোন মুরুব্বী যদি আপনার আত্মীয় স্বজন কিংবা পরিচিত থাকে’ তার রেফারেন্স দিচ্ছেন। এই যদি হয় একাডেমিক এপ্রোচের নমুনা, তাইলে আমার আসলেই বলার কিছু নেই।
ঠিক বলেছেন, আমার অবস্থান এ ক্ষেত্রে শর্মিলা বসুর মত ‘নিরপেক্ষ’ কিছু নয়, আমি মেহেরজানের মত ‘ব্যালেন্সড’ সিনেমাও বানাতে বসিনি। কাজেই এ নিয়ে কথা আর না বাড়ানোই ভাল হবে।
@অভিজিৎ,
গোলাম আজমকে ডিফেন্ড করা আমার উদ্দেশ্য নয় – আমি বলেছি এই লেখা নিয়ে এবং তার শিরোনাম নিয়ে – এই লেখা তার শিরোনামের সৎ ব্যবহার করতে পারেনি কোন ভাবেই।
আবারও বলছি – আমরা যেন আবেগ কে অন্যান্য ফ্যাক্টররের আগে আশ্রয় দিয়ে প্রতিপক্ষকে যেন সুযোগ করে না দেই!!
ধন্যবাদ।
@সংবাদিকা, আমি অভিদার একটা কথা quote করে আপনাকে একটা কথা বলতে চাচ্ছি
এই কথাটা কিন্তু অভিদা খুব বাস্তব সম্মত কথাই বলেছেন, আপনি কি ব্যাপারটা বুঝেন না? আচ্ছা আমি একটা ছোট উদাহরন দেই ভাই।আপনি তো ধর্মপ্রান, নিদেন পক্ষে আস্তিক। এখন যদি আল্লাহ আর শয়তান এই দুটিকে বিচার করতে দেয়া হয়, আপনি নিশ্চয়ই শয়তানের কোন ভাল গুন দেখবেন না। তার মানে আপনার নিজের ভাষায় আপনি নিজেরই এখনো সমালোচনা শেখার বাকি আছে।
গনগত্যাকারীর, গনধর্ষনকারীর কোন ভাল দিক খুজতে গেলে শয়তানের ভাল দিক খুজা লাগবে আপনাকে। আপনি যদি এক বাক্যেই ইবলিশ কে বাতিল করে দেন, তবে মনে রাখতে হবে যে হিটলার ছিল দুনিয়াতে এক ইবলিশ শয়তান। ইয়াহিয়া আর তার চ্যালা গো হুজুর শয়তানের আরেক দল। এখন আপনার কথামত যদি গো হুজুরের নেগেটিভ দিন আস্তে দেখতে হয়, সেক্ষেত্রে শয়তানের টাও আস্তে দেখতে হবে। সেটা না দেখলে গো আযমের টা আস্তে দেখার কারন নেই।সত্যিই কিছু ক্ষেত্রে ব্যালেন্সড এপ্রোচ বলে আসলেই কিছু নেই কিছু নেই।
অফটপিকঃ শয়তান যে গন্ধম খাইতে বলেছিল, এইটা নাকি আসলে যৌন সঙ্গম। এইটা অবশ্য আমি নিশ্চিত না তাই জোর দিয়ে বলছি না। তবে যদি এই কথাটা সত্যি হয়, তাহলে বলব যে আল্লাহপাকের চেয়ে বরং শয়তানই মানুষের জন্য অপেক্ষাকৃত কল্যানকামী; জিউস বনাম প্রমিথিউসের মত। 😀
@অর্ফিউস,
হা হা…… ভালোই বলেছেন… অবশ্যই… ডেড রং বলেই দেশের স্বার্থে কোন অবৈধ কাজ করারও আমি পক্ষপাতি… আর যার যার পরিবারের কথা বলাই বাহুল্য! হতেই হবে নাহলে কেউই টিকে থাকতে পারবেনা।
কিন্তু বিষয়টি কি জানেন??
যুদ্ধ ময়দানে যখন সৈনিকরা মনে করে তারাই পৃথিবীর সেরা তখন তাঁবু কিংবা বাঙ্কারের কমান্ড পোস্টে বসে জেনারেলরা আলোচনা করে নিজেদের কি কি দুর্বলতা এবং শক্তিশালী দিক আছে সাথে সাথে প্রতিপক্ষের দুর্বলতা এবং শক্তিশালী দিক কোনগুলো!!
ভারতের প্রাচীন এবং মধ্যযুগের ইতিহাস পড়েছেন – টারশিয়ারী পাঠ্য বই ??? দক্ষিণ এশিয়ার ৯টি দেশের (আফগানিস্তান এবং মিয়ানমার সহ) ৯ জন স্থানীয় লেখকের লেখা পড়ে দেখেন। আমি অবশ্য শুধু বাংলাদেশ এবং ইন্ডিয়ারটা পড়েছি – নবম শ্রেণীতে থাকতে বাংলাদেশের এবং একাদশ শ্রেণীতে ভারতের রাইটারের লেখা- লাইব্রেরী থেকে নিয়ে – পুরাই তাজ্জব হয়ে গেছিলাম – ১৫-১৬ বছর বয়সে!! কোনটা “শতভাগ” সত্য এটা ভেবে 🙂
@সংবাদিকা,
সেতো অবশ্যই। এইসব দিনের স্মৃতি কি আর ভোলা যায়, যখন ইসলাম শিক্ষা বই পড়ে পরম তৃপ্তি লাভ করতাম। আরো বেশি জানার আশায় গোলাম মোস্তফার বিশ্ব নবী বইটা আমার বাবার কাছ থেকে নিয়ে পড়লাম। খানিকটা রাগ আর গোস্যা নিয়ে ভাবতাম যে কেন যে অমুসলিমরা( পড়ুন কাফের), জেনেবুঝেও আল্লাহকে বাদ দিয়ে শতানের পথ ধরে!! শতভাগ বিশ্বাস করতাম যে ইয়াহুদী আর নাসারাগন জেনে বুঝেই হুজুরকে অস্বীকার করছে, যদিও মাথায় খেলত না যে জানার পরেও কেন এই আল্লাহদ্রোহ :hahahee:
@অর্ফিউস,
কেন ক্লাশে অন্যান্য ধর্মাবলম্বী কেউ ছিলনা ??? আমি কিন্তু নবম শ্রেণীর প্রথম মাসেই বৌদ্ধ, খৃসচিয়ান এবং হিন্দু ধর্মালম্বী বন্ধুদের থেকে তাদের বই গুলো নিয়ে খুব আগ্রহ সহকারে পড়ে শেষ করেছিলাম।
আচ্ছা একটা প্রস্তাব দেননা সরকারকে কিংবা আন্দোলন গড়ে তোলেন… যারা কোন ধর্মে বিশ্বাসী নয় তাদের যেন কোন ধর্মের বই পড়তে বাধ্য না হয় এবং তার বদলে পল হেনরি, খ্রিস্টোফার হিচ কিংবা রিচার্ড ডকিন্সের কিশোর উপযোগী রচনা থাকবে।
@সংবাদিকা,
তা থাকবে না কেন? অবশ্যই ছিল। হিন্দু ছিল শুধু।
সে সুযোগ কেউ কেউ নাও নিতে পারে যদি শুরু থেকেই নেতিবাচক ধারনা দেয়া হয়ে থাকে। যাক সেই দিন আর নাই ব্যখ্যা করতে গেলে অনেক সময়ে লেগে যাবে বা আমার সংশয় টাইপ কিছু লেখালেখি শুরু করতে হবে, যার ইচ্ছা আমার একেবারেই নেই :)) ।
শুধু এটুকুই বলতে পারি যে বেশ পরে আমি অন্য ধর্মগ্রথগুলো পড়ে তুলনা করার সুযোগ পাই। 🙂
@সংবাদিকা,
ঘাড়ে আমার তো আর রাবণের মত দশমাথা নেই, আর একটা কেটে গেলে আরেকটা গজায় না। এই ব্যবস্থা না থাকলে রামের সাথে লাগতে যাবার চিন্তাও কেউ করবে না রক্ষণশীল মধ্যবিত্ত পরিবারে বাস করে :-X
@কাজি মামুন,
মতের সাথে মিল না হলে মেজাজ একেবারে খারাপ হয়ে যায় – তাই না ?
@সংবাদিকা,
দুইয়ে দুইয়ে পাঁচ হয়ে গেলো না ব্যাপারটা? কিসের ভিত্তিতে বললেন কথাটা বুঝিয়ে বলুন, এবং সাথে কিছু নির্ভরযোগ্য সুত্র দিন।গো আজমকে যেকোন বিষয়ে পজিটিভ বানাবার আগে নির্ভরযোগ্য সুত্র দরকার আছে। :-Y
@অর্ফিউস,
বিভিন্ন জায়গায় ঘাঁটাঘাঁটি করেন আর সবচেয়ে ভালো হয় যদি ঐ সময়কার রাজনৈতিক সচেতন কোন মুরুব্বী যদি আপনার আত্মীয় স্বজন কিংবা পরিচিত থাকে।
@সংবাদিকা,
ঘাঁটাঘাটিই করতে হবে,মুরুব্বি ধরে লাভ নেই, যদি তথাকথিত রাজনৈতিক সচেতন মুরুব্বী আজ অন্যদিকে ডাইভার্ট হন তাহলে? বরবাদ মজহারের দশা তো দেখতেই পাচ্ছি; মুরুব্বিরদেরও যে একই দশা হয়নি মনে মনে তা কেমনে বুঝব? আজকাল দেশের মানুষদের বিশ্বাস করতে ভয় হয় খুবই।
মুক্ত মনা চিরকাল আমার জন্য একটা বড় সোর্স ছিল। লেখাটার সহ লেখক অভিদা, আর উনাদের লেখা পড়েই অনেক কিছু জেনেছি আগে, এখনও সঠিক জিনিসটা জানতে পারব আশা রাখি। তবে গোলাম আজম ভাষা সৈনিক এমন দাবী যখন করা হয় প্রথমে মাথা ঘামাইনি, আজকাল যখন মুক্তি যোদ্ধাদের সন্তানরাও তাকে অন্তত পজিটিভ বলা শুরু করেছে, এতেই বুঝে গছি যে কাম হইসে। ওই ইতর টাকে পজিটিভ আপনি বলেছেন, কাজেই আপনার কি একটা নৈতিক দায়িত্ব বর্তায় না এটার স্বপক্ষে কিছু মালমশলা সাপ্লাই করা?
@অর্ফিউস,
আমি এখানে আলোচনাটা “অ্যাকাডেমিক” অ্যাপ্রোচে করি।
‘ভাষা সৈনিক’ গোলাম আযম’কে নিয়ে ইতিহাস নির্ভর এই অনবদ্য আলোচনাটির জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ। বিশ্ববিদ্যালয় জীবনে ছাত্র আন্দোলনের একজন কর্মী হিসেবে বেশ ক’বারই সংগঠনে আসা নুতন কর্মীদের এই একই প্রশ্নের সম্মুখীন হয়েছি। তারা জানতে চাইতো- এই ‘প্রখ্যাত ভাষা সৈনিকের’ ইতিবৃত্ত কী? যেহেতু আমার পাঠশালাটিতে শিবিরের আধিপত্য ছিলো তাই ফেব্রুয়রি আসলেই এই মৌসুমী ভাষা সৈনিকের প্রপাগান্ডা বেড়ে যেতো। সেই সুবাধে ইতিহাস কিছুটা ঘাটার অভিজ্ঞতা হয়েছিলো সেইসময়।
রেফারেন্স বই সাথে নেই, তাই স্মৃতির উপর ভরসা করেই মন্তব্যটি করছি। মুলত কেনো আরবিন্দ বোসকে বাদ দিয়ে গোলাম আযম সেই দিন মানপ্ত্রটি পাঠ করেছিলেন সেটির ব্যাখ্যায় এই মন্তব্য। দ্বিজাতি তত্ত্বের ভিত্তিতে ১৯৪৭ এর ১৫ আগস্ট দেশভাগ হবার পর পুরো পাকিস্থান অংশে সাম্প্রদায়িক অস্থিতিশীল পরিবেশ বিরাজ করছিলো, ভারত অংশেও ছিলো তবে কিছুটা কম। শাসকশ্রেণী সব কিছুতেই সাম্প্রদায়িকতার ওজুহাত খুঁজে বেড়াতো। যেমন ১৯৪৮ সালের ২৩ ফেব্রুয়ারি (স্মৃতি যদি তারিখটি নিয়ে প্রতারণা না করে) পাকিস্থান গণ পরিষদের প্রথম অধিবেশন শুরু হলে পূর্ব বাংলার অন্যতম প্রতিনিধি ধীরেন্দ্রনাথ দত্ত প্রথমেই প্রস্তাব আনেন যে গণ পরিষদে উর্দু এবং ইংরেজির পাশাপাশি বাংলাকেও স্বীকৃতি দেয়া হোক। তুমুল হট্টগোল লেগে যায় প্রস্তাবটি নিয়ে। আলোচনায় প্রধানমন্ত্রী লিয়াকত আলী বলেছিলেন পাকিস্তানের আধিবাসীদের মধ্যে বিরোধ এবং সাধারণ একটি ভাষাকে নিয়ে মুসলিমদের মধ্যে বিরোধ সৃষ্টির লক্ষ্যে এই জঘন্য প্রস্তাব আনা হয়েছে। প্রস্তাব নিয়ে আলোচনা এমন পর্যায়ে পৌছুয় যে সকল মুসলিম সদস্যই প্রস্তাবের বিপক্ষে ভোট দেয় এবং শুধুমাত্র হিন্দু সদস্যরা পক্ষে ভোট দেয়। অর্থাৎ পুরো বিষয়টাকে সাম্প্রদায়িকতার দিকে নিয়ে যাওয়া হয়। এবং রাষ্ট্রভাষা আন্দোলন যেটি শুরু হচ্ছিলো তখন সেটিকে হিন্দু এবং কমিউনিস্টদের চক্রান্ত বলে প্রপাগান্ডা চালানো হয় রাষ্ট্রীয় ভাবে। সেই বাস্তবতায় আরবিন্দ বোসকে দিয়ে লিয়াকত আলী’র বরাবর মানপত্র বা স্মারকলিপি পাঠ করালে মূল বিষয়টা আবারো সাম্প্রদায়িকতার দিকে মোড় ঘুরিয়ে দিতে পারে শাসক শ্রেণি সেই প্রেক্ষাপট বিবেচনায় নিয়েই তৎকালীন অনির্বাচিত জিএস গোলাম আযম দৃশ্যপটে আসে। এতে গোলাম আযমের কোনো ব্যক্তিগত আগ্রহ বা involvement ছিলোনা, যেটি পরবর্তী আন্দোলন সংগ্রামে তার অনুপস্থিতি এবং উর্দুপ্রীতি সুস্পষ্ট ভাবে প্রমাণ করে। পরবর্তীতে সামান্য ঘটনাকে কেন্দ্রকরে খুলনা, বরিশাল সহ বিভিন্ন জেলায় যে প্রচন্ড সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা ছড়িয়ে পড়েছিলো ১৯৪৮ সালে সেটি প্রমাণ করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র সংসদ সেদিন অরবিন্দ বোসকে সামনে না এনে সঠিক কাজটি করেছিলো। কিন্তু দুর্ভাগ্যক্রমে এই কুলাঙ্গারটা (গোলাম আযম) মানপত্র পাঠক হয়ে যায়। আবারো সময়োপযোগী এই আলোচনার জন্য আরিফ রহমান এবং অভিজিৎ’দাকে ধন্যবাদ।
এ লেখাটি বিভিন্ন সময়ে কথা বলবে।
এটা একটা অসাধারণ লেখা। এই লেখার মাধ্যমে সবার মাঝে গোলাম আজমের একটি পূর্ণ ছবি উপস্থাপন করা গেছে। আমাদের মাঝে যদি কারও কাছে গোলাম আজমকে চেনা এবং তার কাছ না জানা থাকে তাহলে বলব তাকে চেনার জন্য এই লেখাটি যথেষ্ট। সুন্দর এই লেখার জন্য আরিফ রহমান এবং অভিজিৎ দা কে ধন্যবাদ।
গুরু আর চ্যালা মিলে ভালো কাজ করছেন
এটা একটা খুব বড় কাজ হয়েছে আরিফ।
আমার কথা এত বড় করে বলার দরকার নাই। এটা তোমারই কাজ।
এ ধরণের লেখা আরো বেশি করে আসা দরকার।
গোলাম আযম ভাষা সৈনিক!!!
মন মেজাজ খারপ হয়ে গেল। এদের ঝুলাইয়া দেয়না ক্যান???
বাংলা ভাষা আর বাংলার ইতিহাসের ধর্ষণ আর দেখতে ইচ্ছে করেনা।
কবে মুক্তি পাবো ???