…
ভিন্নমাত্রার বিজয় দিবস ২০১৩
যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের মাধ্যমে দায়মোচনের শুরু দিয়ে আমাদের প্রথম বিজয় দিবস উদযাপন আজ। সবাইকে মহান বিজয় দিবসের প্রাণঢালা-শুভেচ্ছা ! এই মাটি আমার মা, এই মাটি আমার একান্ত ঠিকানা। এই মাটিতেই মিশে আছে আমাদের জন্ম-জন্মান্তরের স্বজনেরা। আমাদের জন্মের ঋণ সেইসব লাখো শহিদের আত্মত্যাগের কাছে দায়বদ্ধ। যদি নিজের জন্মকে আজ অস্বীকার না করি, আসুন, লাখো শহিদের রক্তধোয়া এই পবিত্র মাটি ছুঁয়ে পাকিস্তানি প্রেতাত্মা মুক্ত দেশ গড়ার রক্ত-শপথে দৃঢ় আঙ্গীকার করি আজ ! আমরা যে তাঁদেরই প্রজন্ম !
আজকের এই ভিন্নমাত্রিক বিজয় দিবস উদযাপনের মধ্য দিয়ে আমাদের অঙ্গীকারটা আরো স্পষ্ট করে বুঝে রাখা দরকার যে, এ মুহূর্তে একাত্তরের সেই পরাজিত শক্তির নৈরাজ্য যে মাত্রায় পৌঁছেছে তার পেছনে সবচাইতে বড় ইন্ধনটা কিন্তু অব্যাহত রেখেছে ইদানিংকালের বুদ্ধিবৃত্তিক নব্য রাজাকার শ্রেণীটা। এই মহলটা এতোকাল নিজেদেরকে এতোটাই নিশ্ছিদ্র মুখোশের আড়ালে ঢেকে রেখেছিলো যে, আমরা তাদের ব্যাপারে এতোটাই আপাদমস্তক বিভ্রান্ত ছিলাম যে, হাল আমলের টকশোখানা নামক বুদ্ধিবাক্সে তাদের নিয়মিত বিকৃত মিথ্যা বক্তব্য প্রচারণা দেখে রীতিমতো হকচকিয়ে যাচ্ছি। কারণ আমরা তাদেরকে নিজেদেরই লোক ভেবেছিলাম, মুক্তিযুদ্ধের অকৃপণ পক্ষশক্তির বলে বিবেচনা করেছিলাম। এবং তারা যত্রতত্র উপস্থিত হচ্ছেন সুশীল, নিরপেক্ষ, মানবাধিকারবাদী, বিশিষ্ট নাগরিক ইত্যাদি অভিধার বহু বহু মুখোশের আড়ালে। বর্তমান প্রেক্ষাপটে দেশজুড়ে সেই রাজাকার হায়েনাদের আদর্শপুষ্ট সন্ত্রাসীদের নৈরাজ্যকে আড়াল করে উদোর পিণ্ডি বুধোর ঘাঁড়ে চাপানোর মধ্য দিয়ে তাদের মুখনিঃসৃত সুমিষ্ট বাণীগুলো আসলে মুক্তিযুদ্ধের পরাজিত শক্তির নগ্ন পক্ষপাতদুষ্টতা। স্বাধীনতা, মুক্তিযুদ্ধ, যুদ্ধাপরাধীর বিচার, এসব ক্ষেত্রে নিরপেক্ষতা মানেই যে তার স্পষ্ট বিরোধিতা, এটা জেনেও এরা কৌশলে রাজনৈতিক সমঝোতা, গণতন্ত্র ইত্যাদির দোহাই টেনে বিভ্রান্তি ছড়িয়ে আমাদের প্রাণের চেতনাকে বিতর্কিত করার অপপ্রয়াস চালিয়ে যাচ্ছে। এবং তা করতে গিয়ে তারা তাদের সেই নিপুণ মুখোশগুলোকে ফালা ফালা করে তাদের স্বরূপটাকেই উন্মোচন করে দিয়েছে।
এভাবে তারা নব্য বুদ্ধিজীবী সেজে আমাদের শ্রদ্ধাপূর্ণ ‘বুদ্ধিজীবী’ শব্দটাকেও খুব চতুরতার সাথে কলঙ্কিত করার অপপ্রয়াস নিয়েছে। তারা ভুলে যান, ‘বুদ্ধিজীবী’ শব্দটা আমাদের প্রাণের আত্মীয়, আমাদের খুব গোপন তন্ত্রীতে কষ্টের টংকার। তাই তাদের এই ঘৃণ্য নব্যরূপকে চিহ্নিত করতে শ্রদ্ধাপূর্ণ বুদ্ধিজীবী শব্দটি তাদের জন্য ব্যবহার না করে আমরা ব্যবহার করি বুদ্ধিব্যাপারী, বুদ্ধিবেশ্যা ইত্যাদি বলে। নিজেদের হীন প্রচেষ্টায় এরা মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে বিনষ্ট করতে এরা মুক্তিযুদ্ধের স্বপক্ষের রাজনীতিটাকেও বিতর্কিত করতে উদ্যত হয়েছে, যাতে নতুন প্রজন্ম রাজনীতি বিমুখ হয়ে গেলে গোটা দেশটা তাদের পৈশাচিক ক্রিড়াক্ষেত্রে পরিণত হতে পারে। আমরা কি তা এমনি এমনি ছেড়ে দেবো ? আমাদের অঙ্গীকারগুলো রক্ত-শপথে বাধিয়ে নিতে আসুন ছোট্ট একটু পর্যালোচনা করে ফেলে ফেলি।
বুদ্ধিবৃত্তি বনাম বুদ্ধিবেশ্যামী
যারা বলে রাষ্ট্রের সমস্যার মূল হচ্ছে রাজনীতিকরা, ব্যক্তিগত পর্যালোচনায় মনে হয়, তারা হয় মূর্খ নয় মিথ্যুক ! কেননা রাষ্ট্রের রাজনীতিক কিংবা রাজনীতির চালিকাশক্তিটি নিয়ন্ত্রিত হয় মূলত রাষ্ট্রের বুদ্ধিবৃত্তিক উৎসস্থল থেকে। যাদেরকে আমরা চরিত্রভেদে বলে থাকি বুদ্ধিজীবী কিংবা এর বিপরীতে বুদ্ধিব্যাপারী বা বুদ্ধিবেশ্যা।
মেধাবী বুদ্ধিজীবীদের নিয়ন্ত্রণে থাকলে একটা যোগ্য গণমুখি রাজনৈতিক আন্দোলন যে একটা জাতির স্বপ্নকেই বাস্তবে রূপায়ন করে দিতে পারে, তার উৎকৃষ্ট উদাহরণ হলো আওয়ামীলীগের নেতৃত্বে সৃষ্ট বাঙালির একাত্তর। আর কোন রাজনীতি যদি চরিত্রহীন বুদ্ধিবেশ্যাদের কবলে পড়ে যায়, তখনই বিএনপি-জামায়াতের মতো প্রতিক্রিয়াশীল গোষ্ঠির মাধ্যমে তৈরি হয়ে যায় একটা গণবিচ্ছিন্ন নৈরাজ্যকর পরিস্থিতি, যার নিকৃষ্ট নমুনা হলো এই দু’হাজার তের !
অতএব আপনি মানুন কি না-মানুন, বলা যেতেই পারে, রাষ্ট্রের স্বস্তি ও সুস্থতা নিশ্চিত হয় কল্যাণকামী বুদ্ধিবৃত্তিক চিন্তাজগৎ তথা মেধাবী বুদ্ধিজীবীদের সমূর্ত যোগ্যতায়, যারা পথ দেখায়, কিন্তু নিয়ন্ত্রণ নিজের হাতে তুলে নেয় না। আর রাষ্ট্রের অকল্যাণ ও নৈরাজ্যকর নিরাপত্তাহীনতা চেপে বসে চতুর বুদ্ধিবেশ্যাদের ধূর্ত ভণ্ডামির সক্রিয়তায় ! মুখোশধারী এরা নিরপেক্ষতার আড়ালে বস্তুত নিজেরাই ক্ষমতা বিলাসী ! এবং একটা রাজনৈতিক দলের যোগ্যতাও নির্ধারিত হয় এই সক্রিয় বুদ্ধিবৃত্তিক চারিত্র্য-সাপেক্ষেই। ফলে, কল্যাণ আর অকল্যাণের মাঝখানে নিরপেক্ষ অবস্থান বলতে আদৌ কিছু থাকে কি ?
রাজনীতিক বনাম বুদ্ধিব্যাপারী
যে যাই বলুন না কেন, রাজনীতিকরা কিন্তু শেষপর্যন্ত একটা দায়বদ্ধ শ্রেণীই, যাঁদেরকে রেলের মতো একটা লাইন ধরেই এগুতে হয়। ভিন্নপথ কিংবা নতুন পথ ধরতে হলেও, যদি তা ভুল পথও হয়, তাঁদেরকে আগেভাগে আরেকটা নির্দিষ্ট লাইন তৈরি করেই সেদিকে যেতে হয় এই দায়বদ্ধতায় আটকে থাকার কারণেই। সে বিচারে বুদ্ধিব্যাপারীরা কিন্তু একেবারেই দায়বদ্ধহীন স্বাধীন। স্বাধীনতাও এক ধরনের দায়বদ্ধতা। কিন্তু রাজনীতিকদের মতো ধাপে ধাপে নিজের দায়বদ্ধতাকে স্বীকার ও প্রমাণের মধ্য দিয়ে প্রকাশিত হতে হয় না বলে এই হঠাৎ আবির্ভূত বুদ্ধিব্যাপারীরা কিন্তু প্রকারান্তরে স্বেচ্ছাচারীও হয়ে যেতে পারেন। কেননা তারা তো কারো কাছেই দায়বদ্ধ নন ! ফলে এই বুদ্ধিব্যাপারীদের স্বেচ্ছাচারী বালখিল্যতায় রাষ্ট্রে কোন একটা অঘটন ঘটে গেলেও দায়বদ্ধহীনতার কারণে এরা ধরাছোঁয়ার বাইরেই থেকে যান, আর সব দায় গিয়ে পড়ে সেই দায়বদ্ধ রাজনীতিকদের ঘাড়েই ! জবাবদিহি করতে হয় রাজনীতিকদেরকেই। কারণ তাঁরা রাষ্ট্র ও নাগরিকদের কাছে দায়বদ্ধ মেনেই রাজনীতিক হয়েছেন।
বস্তুত রাজনীতি একটা পেশা, যার জন্য দায়বদ্ধতামূলক জবাবদিহিতা আবশ্যক। কিন্তু বুদ্ধিব্যবসা চূড়ান্ত বিচারে একটা ব্যবসাই, যার সাথে অনিবার্যভাবেই মুনাফা জড়িত। আর যেখানে মুনাফা থাকে সেখানে এই মুনাফার স্বতঃস্ফূর্ত আগ্রাসিতাই তাদেরকে ক্ষমতালোভী করে তোলে। এটাই মুনাফার ধর্ম। ফলে নাগরিকদের কাছে প্রদত্ত অঙ্গীকার পূরণে বৈধ ক্ষমতাকেন্দ্রী দায়বদ্ধ রাজনীতিক না হওয়ায় ক্ষমতালাভের উদগ্র ইচ্ছায় এসব বুদ্ধিব্যাপারীদেরকে তখন কোন-না-কোন বিকল্প উপায় খুঁজতে হয়। রাজনীতিকদের দূর্বলতাগুলো খুঁজে খুঁজে একটা অস্থিরতার ঘোট পাকাতে হয়।
বুদ্ধিজীবীদের সাথে বুদ্ধিব্যাপারীদের গুরুত্বপূর্ণ পার্থক্যটাও এখানে যে, বুদ্ধিজীবীরা রাজনীতিক বা রাষ্ট্রনীতিকদের দূর্বলতাগুলো চিহ্নিত করে তা সংশোধনের উপায় বাৎলে দেন যেন রাজনীতিকরা নিজেরাই তা ঠিক করে নেয়। আর বুদ্ধিব্যাপারীরা এই দূর্বলতাকে যেনতেন প্রকারে নিজেদের ক্ষমতালাভের একটা উপায় হিসেবে গ্রহণ করতে আগ্রহী হন মুনাফাকামিতার কারণে। অথচ তারা কিন্তু নাগরিকদের কাছে দায়বদ্ধ নন। দৃশ্যমান পণ্য তৈরি ও ব্যবসায়ও একটা নীতি ও আইন মেনে চলতে হয়। কিন্তু এই বিমূর্ত বুদ্ধিপণ্য তার বিমূর্ততার কারণেই সমস্ত নিয়ম-নীতির উর্ধ্বে থেকে যেতে পারে। ফলে অন্যের অধিকার ও সম্পদে হামলে পড়তে পারে। তাঁরা মনে রাখতে চান না যে, রাষ্ট্রপরিচালনা বস্তুতই দায়বদ্ধ রাজনীতিকদেরই বৈধ অধিকার।
অতএব, আপনি একমত হোন বা না-হোন, তবু নিজে নিজে একটু ভেবে দেখুন তো, রাষ্ট্রপরিচালনায় তত্ত্বাবধায়ক মানে কী ? রাষ্ট্র কি আদৌ দায়বদ্ধহীন হতে পারে ?
জাতি এখন স্পষ্টতই দুটো ভাগে বিভক্ত। মুক্তিযুদ্ধের সপক্ষ ও মুক্তিযুদ্ধের বিপক্ষ। এখানে বিভ্রান্ত হবার কোনো সুযোগ নেই যে, জাতি হিসেবে আমাদের পরিচয়ের সূত্রটা ঐ মুক্তিযুদ্ধের চেতনার মধ্যেই নিহিত বলে এই চেতনা বিনষ্টের যে কোন চক্রান্ত ও হীন প্রচেষ্টা রূখতে হবে এখনই। ওরাই এই দেশ ও জাতির বিরুদ্ধে আবারো যুদ্ধ শুরু করেছে ঘোষণা দিয়েই। বাঙালি নৈতিক যুদ্ধে হার না-মানা জাতি। যুদ্ধকাল মানেই আপৎকাল। ফলে ব্যক্তিগত পছন্দ-অপছন্দকে পেছনে রেখে এ মুহূর্তে আমাদেরকেও স্বপক্ষের কোন যোগ্য নেতৃত্বকে শক্তি-সহায়তা জুগিয়ে যেতে হবে এখন। আর তাই এরকম আপৎকালীন সময়ের জন্য মহামতি এরিস্টটলের সেই অমর উক্তিটি স্মরণ করছি-
‘ঝঞ্ঝাবিক্ষুব্ধ মধ্যসমুদ্রে যাত্রীবোঝাই দিকশূন্য জাহাজকে কুলে নিতে যদি গণতান্ত্রিক উপায়ে দিক নির্ণয় করতে হয়, সে জাহাজের সলিল-সমাধি অনিবার্য।’
…
রণদা, অনেকদিন পরে মুক্তমনায় লেখা দিলেন।
ভাল লাগল সফিকের সাথে আপনার আলোচনাও। এ ধরণের আলোচনা চালিয়ে যাওয়া উচিৎ প্রগতির স্বার্থেই।
ভাল থাকুন।
আমাদের দেশের জাতীয় পাখি হওয়া উচিৎ ছিলো মোরগ। ছুতোনাতা পেলেই যেভাবে ঘাড়ের রোঁয়া ফুলিয়ে ঝগড়া করতে লেগে যাই।
যাই হোক, উপরের কটুভাষী, ১০ কোটি জনতার কন্ঠস্বর সাহেবকে বলছি, আজ আওয়ামী লিগ যদি তত্বাবধায়কের কাছে দায়িত্ব বুঝিয়ে দিত তাহলেই কি আপনারা চুপ থাকতেন? থাকতেন না। তখন এই জ্বালাও-পোড়াও ঠিকই চালাতেন। শুধু কারণটা হতো; এই নির্বাচন কমিশন মানিনা, এই প্রধাণ উপদেষ্টা মানিনা, এই উপদেষ্টা পরিষদ বাতিল কর ইত্যাদি।
ছুতো একটা চেয়েছেন, আওয়ামী লিগ দিয়েছে। আপনাদের আশা পুরণ করাই তো সরকারের কর্তব্য। এবার দয়া করে থামুন, যা করছেন তাই করুন।
@এনালিস্ট,
মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ। তবে আপনার ব্ক্তব্যের প্রেক্ষিতে সঙ্গত কারণেই আমি কোন মন্তব্য করছি না।
পোস্টটির কারণে এমনিতেই বাজে কথা শুনেছেন রণদা। আমিও আপনাকে আবার পাঁকে নামাতে চাই না।
সহমত। (Y)
@তারিক,
ধন্যবাদ।
একমত, এবং সব সময়ের জন্য, সব সরকারের জন্য, সব আমলের জন্য।
সমস্যাটা হয়ে দাঁড়ায়, অনেক বুদ্ধিমান এই সত্যটা প্রতিষ্ঠার জন্য যখন অবিচল থাকেন না, যখন তাদের সত্য কথন নির্ভরশীল চলকে পরিনত হয়।
যে বুদ্ধিমান বিশিষ্ট ব্যাক্তিরা দায়বদ্ধহীন রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে সব সময় একই সুরে কথা বলতে পারেননি, তাদের কোন শ্রেণীতে ফেলবেন, রণদা??
বিঃ দ্রঃ অনেকদিন বাদে আপনায় দেখতে পেয়ে ভাল লাগছে। বিজয় দিবসের শুভেচ্ছা!!! (FF) (FF) (FF)
@কাজি মামুন, ধন্যবাদ।
আপনার প্রশ্নের উত্তর তো মনে হয় আপনার প্রশ্নের মধ্যেই নিহিত !
@রণদীপম বসু, খামোকা নিজের দলের পক্ষে কথা বলার জন্যে তত্বাবধায়ক জিনিষটাকেই আপনি আজকে টার্গেট করছেন। আমি নিশ্চিৎ বলতে পারি একটি বিএনপি সরকারের সময়ে আপনার আবার তত্বাবধায়কের প্রতি তীব্র প্রেম উথলে উঠবে। সাময়িক তত্বাবধায়ক ব্যবস্থ বহুদিন ধরেই গনতন্ত্রের সহযোগী। গত কয়েক বছরে ইউরোপের বিভিন্ন দেশেই বিভিন্ন সময়ে তত্বাবধায়ক সরকার ছিলো। এই সব সরকারের মেয়াদ ছিলো কয়েক মাস থেকে বৎসরাধিক পর্যন্ত। অনেক তত্বাবধায়ক সরকার আবার নির্বাচিত প্রতিনিধির নেতৃত্বেও ছিলো না। উচ্চপদস্থ আমলার অধীনে তত্বাবধায়ক বহুদিন ছিলো ইটালীতে, বেরলুসকোনির পদত্যাগের পর।
@সফিক,
দেখেন, ভোটার হিসেবে প্রত্যেকেই কোন না কোন দলের সমর্থক হতেই হয়। সমর্থন না থাকলে কেউ ভোট দিতে যাবেন কেন ! অতএব ‘নিজের দল’ টার্মটা ব্যবহার না করে এসব ক্ষেত্রে সমর্থন শব্দটা ব্যবহারই যুক্তিযুক্ত মনে হয়।
আর অন্য যে বিষয়টা বলছেন, তাতে করে একবাক্যে এটাই বলা সঙ্গত যে, প্রয়োজনই কাজের প্রকৃতি নির্ধারণ করে। ঠা ঠা গরমের মধ্যে হঠাৎ করে কোনো কারণে যদি তীব্র ঠাণ্ডা পড়তে থাকে তাইলে উষ্ণতার খোঁজ করাটাই টিকে থাকার জন্য জরুরি। সিজন গরমের বলে নির্দ্বিধায় ঠাণ্ডায় জমে যাওয়ার মধ্যে কোন বীরত্ব বা বুদ্ধিমত্তার কিছু থাকে বলে আমার মনে হয় না।
যাক্, ধন্যবাদ সফিক ভাই। আপনার ভিন্নমতকে স্বাগত জানিয়েও সমকালীন প্রেক্ষাপটে আমার উপলব্ধিগত মতামতটাই এখনো নিজের পক্ষে ধারণ করছি আমি। ভালো থাকবেন।
@রণদীপম বসু,এটা বাংলাদেশের সবাই জানে ও বুঝে যে আওয়ামী লীগের নেতৃত্ব এবং সমর্থকদের বিশেষ অংশ তীব্র আতংকে রয়েছে। আতংকের কারনে দিনে দিনে পরিস্থিতির আরো অবনতি ঘটিয়ে, আতংককেই সেলফ ফুলফিলিং প্রফেসী বানিয়ে ফেলছে।
যেকোন সুস্থির মতের আওয়ামী সমর্থকের উচিৎ নেগোশিয়েশনের মাধ্যমে ভবিষৎ-এর আতংককে বাস্তবায়িত না হতে দেবার প্রচেষ্টা করা এবং এই পরিস্থিতিকে উৎসাহিত করা। চূড়ান্ত যুদ্ধে, পরিপূর্ণ বিজয়ের মতো স্বপ্ন এই সময়ে না দেখাই ভালো।
@সফিক,
ধন্যবাদ, অন্তত এটা বুঝতে পেরেছেন যে, কোন একটা গোষ্ঠি আতঙ্ক তৈরি করে ঘোলা পানিতে মাছ শিকার করতে চাইছে। এবং আপনার সাথে সহমত পোষণ করি যে, এই আতঙ্ক কাটানোর দায়িত্ব রাষ্ট্র তথা সরকারের। এখন আলোচনার প্রশ্ন আসার আগে এটা তো ভাবতে হবে কার সাথে আলোচনা ! ডাকাত বা সন্ত্রাসীর সাথে আলোচনা করে সন্ত্রাস বা ডাকাতি বন্ধ করা কি রাষ্ট্রের দায়িত্ব ? না কি তা উচিৎ ? কোন্ কোন্ ক্ষেত্রে নেগোসিয়েশন হয় সেটা কি আমাদের কাছে স্বচ্ছ নয় ?
বেহুদা সন্ত্রাসের মাধ্যমে আতঙ্ক সৃষ্টি করাকে কি রাজনীতি বলে ? আদর্শকে আদর্শ দিয়ে, রাজনীতিকে রাজনীতি দিয়ে এবং সন্ত্রাসকে দমনের মাধ্যমেই প্রতিহত করতে হয়। ব্যাপক আতঙ্কিত জনমতের প্রতি সম্মান জানিয়ে সরকার তো মনে হয় সন্ত্রাস দমনের উদ্যোগ নিয়েছে বা নিতে যাচ্ছে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্য থেকে সে রকম ইঙ্গিতই পাওয়া গেছে। এখন দেখা যাক আমাদের আতঙ্ক কাটাতে সরকার কী ব্যবস্থা নেয়।
@রণদীপম বসু,
দাদা, অত্যন্ত ধৈর্্যের সাথে মন্তব্যের উত্তর দেয়ার বিষয়টি খুবই ভাল লাগল। এমনটি যদি আমাদের রাজনীতিবিদদের মজ্জায় ঢুকত তবে জাতি লাভবান হত।
আর বুদ্ধিবেশ্যামী, বুদ্ধিব্যাপারীর মত শব্দ আমদানী মন্দ না।
@গীতা দাস,
আমরা তো দিদি এখানে ঝগড়া করতে আসিনি ! যার যার যুক্তি মতামত উপস্থাপন করছি নিজের নিজের মতো। আমাদের প্রত্যেকের ভাবনা-কাঠামো ভিন্ন, দৃষ্টিভঙ্গি ভিন্ন, কোনো কোনো ক্ষেত্রে অবস্থানও ভিন্ন। এবং যুক্তিশীল সমাজে এটা থাকাই স্বাস্থ্যকর অবশ্যই ! সমাজের সবার চিন্তা ও ভঙ্গি এক হয়ে যাওয়া মানে তো সেটা রোবট-সমাজ ! মানুষের স্বাধীন ও মুক্তচিন্তায় এটা কখনোই থাকে না বা কাম্য নয়। যেখানে ভিন্নমত নেই সে সমাজ কি স্থবিঢ় নয় ?
তবে রুদ্ধ ধর্মভিত্তিক অন্ধ সমাজ বা গোষ্ঠিতে তা হয়তো খুবই স্বাভাবিক। একটা গোষ্ঠি তো এদেশে সেটাই বাস্তবায়ন করতে চাচ্ছে, যার বিপক্ষে দাঁড়িয়ে আমরা আমাদের পারস্পরিক মতামতগুলো যুক্তি-বুদ্ধি দিয়ে পর্যালোচনা করছি।
জাতি এখন আরেকটি ভাগেও বিভক্ত। গনতন্ত্রের পক্ষে আর বিপক্ষে। আপনি ভাই যে কোন পক্ষে সেটাও পরিষ্কার।
@সফিক ভাই, আপনার মতামতকে সম্মান জানিয়েই এই উদাহরণের মাধ্যমে জবাবটা দিলে মনে হয় বোঝাতে সুবিধা হবে।
ধরুন আপনি মধ্যবর্তী কোন স্থান থেকে হঠাৎ খবর পেলেন যে আপনার ভাই গুরুতর এক্সিডেন্ট করেছেন যাকে দ্রুত হাসপাতালে নেয়া প্রয়োজন। অন্যদিকে একই সময়ে খবর পেলেন যে আপনার পরিবারের বাকি লোকজন সমেত আপনার বাড়িতে ভয়ঙ্কর আগুন লেগেছে। এখন আপনাকে যেকোন একটা সিদ্ধান্ত নিতেই হবে।
প্রথমত আমার লেখাই বলে দিচ্ছে যে, আমি নিরপেক্ষ নই। এখন আমি কোন্ পক্ষ নেবো সেটা নিয়েই আমার এ লেখা অবশ্যই। দেশটা অক্ষত থাকলে, তালিবানি অবস্থা থেকে বাঁচানো গেলে গণতন্ত্রের চিরন্তন লড়াইটা পরেও করা যাবে নিশ্চয়ই ! কিন্তু যদি তা-ই না থাকে তো গণতন্ত্র ফলাবো কোথায় ? এটা একান্তই আমার নিজস্ব যুক্তি ও দৃষ্টিভঙ্গি। কোনরূপ ভণ্ডামি না করে আমি যা বিশ্বাস করছি তা-ই প্রকাশ করছি। ভুল কি শুদ্ধ তা সময়ই হয়তো ঠিক করে দেবে।
মন্তব্যের জন্য অনেক ধন্যবাদ আপনাকে।
@রণদীপম বসু,আপনার যেমন নিজস্ব মতামত আছে যে দেশে এই মুহুর্তে কোনটা সবচেয়ে জরুরী, ঠিক তেমনি আরো নয় কোটি নিরানব্বই লক্ষ ভোটারেরও নিজস্ব মত রয়েছে যে দেশে এখন কোনটা জরুরী। সেকারনেই ভোটের কোনো বিকল্প নেই। আপনার নিজের মতামতকে, দেশের কোটি কোটি ম্লেছদের চেয়ে বেশী গুরুত্বপূর্ন ভাবছেন, এটাই আপনার অগনতান্ত্রিকতা।
@সফিক,
অবশ্যই আমার মতামতকে আমি নয় কোটি ভোটারের মতামত বলছি না। যেমনি আপনিও আপনার মতামতকে নয় কোটি ভোটারের মতামত বলতে পারেন না !
আমি আমার মতামত জানিয়েছি। আপনিও আপনার গণতান্ত্রিক অধিকারবলে তা করতেই পারেন ! আমি আমার বক্তব্যের পক্ষে আমার নিজস্ব দৃষ্টিভঙ্গি থেকে যুক্তি উপস্থাপন করার চেষ্টা করেছি, যা আপনিও আপনার পক্ষ থেকে করতে পারেন।
তবে আমি এটাও বিশ্বাস করি যে, কোন একটি নির্বাচনে কোন ব্যক্তির জয়লাভের অর্থ এই নয় যে ওখানকার শতভাগ ভোটারের নিজস্ব মতামত জয়ীর পক্ষে চলে গেছে কিংবা নির্বাচনে পরাজিত প্রার্থীর পক্ষে আর কোন সমর্থন বাকি নেই। কিন্তু আপৎকালীন অবস্থার প্রেক্ষিতে এরিস্টটলের উক্তিটাকে স্মরণযোগ্য মনে হয়েছে আমার কাছে। তাতেও যে কারো ভিন্নমত থাকতেই পারে !
@রণদীপম বসু, আমি বলছি জনগনের ভোট নিতে। এটা কিভাবে আমার মতামত বলে চালিয়ে দিচ্ছেন? আমি বলছি নয় কোটি, নিরানব্বই লক্ষ লোকের মত নিতে, আর এটাকে আপনি বলছেন আমার মতামত। ফালতু কথার একটা লিমিট থাকা উচিৎ।
@সফিক,
আলোচনা পর্যালোচনায় আমার কোন আপত্তি নেই। কোথাও কোন ত্রুটি পেলে তাও ধরিয়ে দেবেন অবশ্যই। কিন্তু আপনার উদ্দেশ্যমূলক ‘ফালতু’ শব্দটার অনৈতিক ব্যবহারের কারণেই আপনার সাথে আর কোনো ধরনের আলোচনা করাকে আমি সচেতনভাবেই প্রত্যাখ্যান করলাম।
আপনার মন্তব্যের প্রেক্ষিতে নিচের দিকের কমেন্টে যেসব প্রতিমন্তব্য করেছি সেগুলো এ মন্তব্যটা চোখে পড়ার আগেই করা। নইলে এর পর সেখানেও কোনো মন্তব্য করা আমার রুচিতে কুলোতো না। এ পর্যন্ত আলোচনায় অংশ নেয়ার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ। অজান্তে কোন কষ্ট দিয়ে থাকলে তার জন্যে দুঃখিত। ভালো থাকবেন।
@রণদীপম বসু,
@রণদীপম বসু,আপনার রুচিতে আঘাত করার জন্যে দু:খিত। প্রতিপক্ষকে বুদ্ধিবেশ্যা ও অন্যান্য শব্দ ব্যবহারে ভেবেছিলাম আপনার রুচিবোধ বেশ শক্তপোক্ত। ফালতু শব্দতেই এই রুচিবোধ টলমল করে উঠবে এটা ভাবতে পারি নি। আবারও রুচিবোধে আঘাত করায় দু:খ প্রকাশ করছ.
@রণদীপম বসু,
@রণদীপম বসু,
ধন্যবাদ, খুব সততার সাথে নিজের পক্ষ চিহ্নিত করেছেন। আপনি দেশকে ভালবাসেন আর দেশের মঙ্গলের জন্য চিন্তা করছেন এটাও আপনার লেখায় পরিষ্কারভাবে ফুটে উঠেছে। তবে আমি আপনার সাথে দ্বিমত প্রকাশ করছি। আমি মনে করি আমাদের দেশের জন্য এখন দরকার একটি নিরপেক্ষ নির্বাচন যাতে জনমতের প্রতিফলন ঘটবে।
@মনজুর মুরশেদ,
নিশ্চয়ই আপনি দ্বিমত পোষণ করতেই পারেন, এটা আপনার অধিকার। তবে নিরপেক্ষ নির্বাচনে আমিও আপনার সাথে সহমত পোষণ করছি। কিন্তু এই নিরপেক্ষতা নির্ধারণ ও কার্যকর হবে কিভাবে সেটাই তো সমস্যা ! তাছাড়া এই নিরপেক্ষতা চাওয়ার মাশুল যখন সাধারণ নিরপরাধ নাগরিককে আগুনে তাতানো পেট্রোল বোমায় অনেক অনেক প্রাণের বিনিময়ে পরিশোধ করতে হয়, তখন ঐ নিরপেক্ষতা চাওয়ার নিরপেক্ষতা নিয়ে কি আপনার মনে কোন প্রশ্নের উদয় হয় না ?
আমার মনে এই প্রশ্ন ক্রমাগত ক্ষত সৃষ্টি করছে বলেই এই ভাবনারাশি প্রকাশের চেষ্টা করলাম নিজস্ব দৃষ্টিভঙ্গিতে।
@রণদীপম বসু,
“এই নিরপেক্ষতা নির্ধারণ ও কার্যকর হবে কিভাবে সেটাই তো সমস্যা “……অবশ্যই; সেজন্যই তো আলোচনা হওয়া উচিত। রাজনীতিবিদরা এক্ষেত্রে ব্যর্থ, তাই আপনাদের মত সুশীলদের দলমতের উপরে উঠে সমাধানের পথ দেখাতে হবে । তবে শেখ হাসিনা/আওয়ামী লীগ যেভাবে গদি আঁকড়ে ধরে গোঁজামিলের নির্বাচন করতে যাচ্ছে তা নিশ্চিতভাবেই কোন সমাধান নয়। আর বিএনপি-জামাত গং বাংলাদেশের জনগনের জন্য যে বিশাল ভালবাসা জমা করে রেখেছে সে প্রসঙ্গে নাই বা গেলাম!
@মনজুর মুরশেদ,
আলোচনা কোন্ কোন্ ক্ষেত্রে প্রযোজ্য হতে পারে তা নিচের একটি মন্তব্যে বলার চেষ্টা করেছি। তাই এখানে তার পুনরুক্তি করছি না।
আমাদের দেশের তথাকথিত সুশীলদের কাছ থেকে ভালো কিছু আশা করা যাচ্ছে না বলেই মূলত এ লেখাটার সূত্রপাত। তবে কোন চিন্তাশীল ব্যক্তির পক্ষে দলের উর্ধ্বে ওঠা সম্ভব হলেও মতের উর্ধ্বে ওঠা আদৌ সম্ভব কিনা তথা এক অলীক নিরপেক্ষ অবস্থানে থাকাটা প্রকৃতপক্ষে কোন্ পক্ষে থাকা, এটাই তো বর্তমান পোস্টের প্রতিপাদ্য !
ভিন্নমত থাকলে আপনি নিশ্চয়ই তা নিয়ে পর্যালোচনা করতে পারেন। তা থেকে নতুন কোন দিকনির্দেশনা বেরিয়ে আসলে আমরাও তাকে নিজ নিজ চিন্তাস্রোতে যাচাই করে নিতে পারবো। অনেক ধন্যবাদ আপনাকে।
@রণদীপম বসু,
আপনি আমার সাথে একমত হবেন যে দেশ শাসনের জন্য গণতান্ত্রিক ব্যবস্থাই সবচেয়ে ভাল। আর গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় দেশের নেতৃত্ব কে দেবেন তা ঠিক করবে জনগন। স্বৈরাচারী এরশাদের পতনের পর তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচনগুলোতে মোটামুটিভাবে জনমতেরই প্রতিফলন ঘটেছে বলে আমি মনে করি। এই নির্বাচনগুলোর মাধ্যমে আমরা গণতন্ত্রের পথে কিছুটা হলেও এগিয়েছি। যদিও এই নির্বাচনগুলোর মাধ্যমে ক্ষমতার পালা বদল ঘটেছে বেশ কয়েকবার, কিন্তু তাতে সাধারণ জনগনের ভাগ্যের পরিবর্তন হয়েছে সামান্যই; দুর্নীতি, ক্ষমতার অপব্যবহার আর অপশাসন বন্ধ হয় নি। তবুও অর্জনের কথা বিবেচনা করলে পাল্লাটা আওয়ামী লীগের পক্ষেই ঝুঁকবে বলে আমার ব্যক্তিগত অভিমত, কিন্তু সেকথা আপাতত থাক। এখন যা জরুরী তা হল গণতন্ত্রের পথে আমাদের যা অগ্রগতি, তা যত সামান্যই হোক তার ধারাবাহিকতা ধরে রাখতে হলে, দেশ পরিচালনা কে করবে সেই সিদ্ধান্ত নেবার ভার দিতে হবে জনগনকেই।
বর্তমানের এই দুঃসহ অবস্থা দূর করতে হলে একটি ঐক্যমতের ভিত্তিতে গড়া তত্ত্বাবধায়ক সরকারের কোন বিকল্প দেখি না। দেশে এখনো অধ্যাপক আনিসুজ্জামান, ডঃ দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য, ডঃ জাফর ইকবালের মত গুণী মানুষেরা আছেন যারা এই সরকারের দায়িত্ব নিতে পারেন। এই সরকারের প্রথম কাজ হবে দেশে আইন-শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনা, সুস্থ নির্বাচনের পরিবেশ তৈরী করা এবং যথাসময়ে একটি গ্রহনযোগ্য নির্বাচনের আয়োজন করা। এসব ছাড়াও এই সরকারকে আরো একটি গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করতে হবে, তা হল ভবিষ্যতে যাতে আর কখনো বর্তমানের মত অচলাবস্থার সৃষ্টি না হয় তার একটি দিকনির্দেশনা তৈরী করা। দিকনির্দেশনাটি হতে হবে আমাদের স্বাধীনতার মূল সুরের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ।
আমি মনে করি আমাদের স্বাধীনতার চেতনা এখন অনেক গভীরে প্রোথিত। শাহবাগে নতুন প্রজন্মের আন্দোলন আমাকে বিশ্বাসী করেছে যে জনগনের রায়ে ক্ষমতার পটপরিবর্তন হলেও মানুষের মন থেকে এই চেতনা সহজে মুছে ফেলা যাবে না। বরং সরকার পরিবর্তনের পূর্ণ ক্ষমতা জনগণের হাতে থাকলে তা রাজনীতিবিদদের চরিত্রে গুনগত পরিবর্তন আনতে সাহায্য করবে। রাজনৈতিক দলগুলো তখন হাজারী, শামীম ওসমান আর তাহেরদের মত সন্ত্রাসীদের মনোনয়ন দিতে দ্বিধা করবে। হয়ত সেই পরিবর্তন একদিনে হবে না, কিন্তু হবেই একদিন।
রণদীপম বসু, চমৎকার লেখা। কিন্তু আসল কথা হলো আমরা পিছিয়ে পড়ছি কোথায় জানেন? আর সেখান থেকে পরিত্রাণের উপায়ই বা কি? উত্তর সম্ভবত: এখানে নিহিত।
আমার ভয়টা হলো এই চেতনা আর এর বিপরীত চেতনা স্রোতের অস্তিত্বটা কি সবাই টের পাচ্ছে? আমাদের তরুণ প্রজন্মের ইন্দ্রিয় গ্রাহ্য কি তা হচ্ছে? আজকের যে তরুণ নষ্ট নীড়ের ছোঁয়ায় তার চেতনাকেই ভোতা করে তুলেছে তার ঘুম ভাঙ্গাবার উপায় কি? এই রকম ভাবে মুক্তমনায় হাতুড়ির করাঘাতে ক’জনকে আমরা জাগাবো? মাঝে মাঝে খুব হতাশ হই। শাহবাগের গণজাগরণ ছিলো, অন্তত: আমি বিশ্বাস করতে পারি যে সে ছিলো এক ঘুমভাঙ্গানীয়া ভোরের গান। সেই গান আজ স্বার্থের হানাহানিতে স্তিমিত, সেই জাগরণ কে চির-জাগরূক করার প্রত্যয় আজ দরকার। যে আলোর ইঙ্গিত আপনি দিয়েছেন সে আমি বুঝি, কিন্তু ভরসা করতে হবে সেই চেতনাকে আমাদের ভবিষ্যতের দরজায় সফল ভাবে পৌঁছে দেবার নিষ্ঠার উপরে।
@কেশব কুমার অধিকারী,
আমারও আপনার মত একই ভয় কাজ করে। এই মুক্ত মনাতেই অন্য একটি লেখাতে দেখেছি যে কিছু লোক মুক্তি যুদ্ধের চেতনা নিয়ে নেতিবাচক কটাক্ষ করেছেন।খুবই পরিতাপের বিষয় সন্দেহ নেই। গনতন্ত্র মানতে হলে এইসব মানতে হবে, আর এইটাই মনে হয় গনতন্ত্রের নেতিবাচক দিক। আমার আসলেই জানা নেই যে আমাদের দেশ এখন আসলেই গনতন্ত্রের সুফল পেতে প্রস্তুত হয়েছে, নাকি গনতন্ত্রকে ব্যবহার করে অন্যকিছু যেমন ধর্মীয় একনায়ক তন্ত্রের স্বপ্ন দেখছে!!