হে পাক পারওয়ার দিগার, হে বিশ্বপালক,
আপনি আমাকে লহমায়
একজন তুখোড় রাজাকার ক’রে দিন। তাহ’লেই আমি
দ্বীনের নামে দিরের পর দিন তেলা মাথায়
তেল ঢালতে পারবো অবিরল,
গরিবের গরিবী কায়েম রাখবো চিরদিন আর
মুক্তিযোদ্ধাদের গায়ের চামড়া দিয়ে
ডুগডুগি বানিয়ে নেচে বেড়াবো দিগ্বিদিক আর সবার নাকের তলায়
একনিষ্ঠ ঘুণ পোকার মতো অহর্নিশ
কুরে কুরে খাবো রাষ্ট্রের ক্যঠামো, অবকাঠামো।
রোগ, শোক, ক্ষুধা, দুর্ভিক্ষ, মহামারী, অনিরাপদ সড়ক, রেলের লাইনচ্যুত হওয়া, জলপথে লঞ্চ, জাহাজের পাতালমুখি অভিযান, রাহাজানি, খুন-জখম, ধর্ষণ, ভবনধ্বস, অগ্নিকাণ্ড, ঘুষ, চাঁদাবাজিতে বিপর্যস্ত বাংলাদেশের মানুষের দীর্ঘদিনের আহাজারি ছিল স্বাভাবিক মৃত্যুর গ্যারান্টি চাই। গত পরশুদিন মহামান্য আদালত বাংলাদেশের মানুষের সেই চাহিদা পূরণে ঐতিহাসিক রায় দিয়েছে। গোলাম আযমের মত একজন নব্বই বছর বয়েসী সম্মানীয় বুজুর্গ রাজনীতিবিদের অপঘাতে মৃত্যু হবে, এটা কোনোভাবেই মেনে নিতে পারেনি আদালত। তাইতো মহামান্য বিচারক দয়াপরবশ হয়ে তাঁকে আরো নব্বই বছর নিরাপদে বেঁচে থাকার সুযোগ করে দিয়েছেন। স্বাভাবিক মৃত্যুর এই নিশ্চিতকরণে আসুন আমরা সবাই আনন্দে উদবেলিত হয়, শোকরানা নামাজ পড়ি। নিশ্চয় পৃথিবীটা অনেক সুন্দর, তার চেয়েও সুন্দর আমার জন্মভূমি!
চুতিয়া এক দেশে জন্মেছিলাম আমি। সারাজীবন অপমানে, লজ্জ্বাতেই কাটলো এই দেশে জন্ম নিয়ে। যে দেশে দেশের জন্য জীবনবাজি রেখে যুদ্ধ করা মুক্তিযোদ্ধারা ভিক্ষা করে, না হয় কায়িক পরিশ্রম করে জীবনযাপন করে, আর দেশের জন্মের বিরোধিতা করা রাজাকারেরা সম্মানীয় হয়, সমাদৃত হয়, জাতীয় পতাকা গাড়িতে লাগিয়ে হাওয়া খেয়ে বেড়ায়, সেই দেশে জন্মানোটাই একটা বড় পাপ। আর বড় সমস্যা হচ্ছে যে, এই পাপের কোনো প্রায়শ্চিত্তও নেই। অনেকদিন আগে একবার দেশে গিয়েছিলাম। অর্কবুড়ার কচি মনে বেশ কিছু তিক্ত অভিজ্ঞতা সৃষ্টি হয়েছিল তখন। তারপর থেকে ছেলে আমার আর বাংলাদেশে যেতে চায় না। আমার দশাও এখন তাই। মনের কোণে সুপ্ত বাসনা ছিল কোনো একদিন ঠিকই ওই মাটিতে ফিরে যাবো। এখন পরিষ্কার সিদ্ধান্ত নিয়েছি, আর না। ওই বাংলাস্তানে ফিরে যাবার আর কোনো মানে নেই আমার।
খামোখাই আমরা বিজয় দিবস, স্বাধীনতা দিবস, এগুলোকে বর্ণিলভাবে পালন করি। রাজাকারি মানসিকতা যেখানে সমাজের রন্ধ্রে রন্ধ্রে সুস্পষ্ট, পঁচে যাওয়া পাকিস্তানি গন্ধ যেখানে তীব্র, সেখানে এইসব বর্ণালী সমাবেশের কোনো মূল্য নেই। যে দেশের স্বাধীনতা সংগ্রামে নের্তৃত্ব দেওয়া রাজনৈতিক দলটি সামান্য কিছু ভোটের আশায় রাজাকারদের সাথে গোপনে খানা খায়, যে দেশের প্রধান বিরোধি দল রাজাকার দলের লেজুড়বৃত্তি করে, সেই দেশের এইসব স্বাধীনতা ফাধিনতা নিয়ে গর্ব করার কিছু নেই। বরং পাকিস্তানের সাথে অতিসত্বর কনফেডারেশ গঠন করে ফেলাটাই সমুচিত এখন। পাক সার জমিন সাদবাদ আর গোপনে গাইতে হবে না, গলা ছেড়ে মনের সুখেই তখন গাওয়া যাবে সেই পাকপবিত্র গান।
কবি শামসুর রহমান অনেক বুদ্ধিমান একজন মানুষ ছিলেন। তিনি টের পেয়েছিলেন, কী অপরিসীম শ্রদ্ধা আর মর্যাদা আমরা আলাদা করে রেখেছি রাজাকারদের জন্য। কী অপরিসীম ক্ষমতা এই বীর যোদ্ধাদের। একাত্তরে শুধু একবারই পরাজিত হয়েছিলেন তাঁরা ভাগ্যের ফেরে। তারপর বাউন্সব্যাক করেছেন, রাজকীয় প্রত্যাবর্তন একেবারে। যাঁদের কাছে হেরেছিলেন, তাঁদেরকে গত বিয়াল্লিশ বছর ধরে হারের তিক্ত স্বাদ দিয়ে চলেছেন তাঁরা প্রতিনিয়ত। তাইতো তিনি মহান আল্লাহতালার কাছে তাঁকে একজন তুখোড় রাজাকার বানিয়ে দেবার জন্য মোনাজাত করেছিলেন। আসুন আমরা সবাই কবি শামসুর রাহমানের পথ ধরি। আমাদেরকে সম্মানীয় রাজাকার বানিয়ে দেবার জন্য সৃষ্টিকর্তার কাছে প্রার্থনা করি।
একটি মোনাজাতের খসড়া
– শামসুর রাহমান
হে রাব্বুল আলামীন,
হে লৌকিক, পারলৌকিক আর অলৌকিকের রাজাধিরাজ,
আমার একটি সামান্য ইচ্ছাপূরণের আশায়
আজ আমি আপনার জ্বলজ্বলে পুণ্য আরশ লক্ষ্য ক’রে
সেজদা দিয়েছি। আশৈশব শুনে আসছি,
এই জগত সংসারে, সৌরলোকে, আমাদের অজ্ঞাতলোকে
এমন কিছুই ঘটে না, হে রাহমানুর রাহিম,
যাতে আপনার সায় নেই। কুল মখলুকাতে
হাওয়া বয় না, নদীতে ঢেউ জাগে না, মাটি ফুঁড়ে
উদ্ভাসিত হয় না শস্যরাশি,
বাঁশিতে সুর মঞ্জরিত হয় না,
গান গায় না পাখি,
মায় একটি গাছের পাতাও নড়ে না
আপনার হুকুম ছাড়া।
হে দ্বীন ও দুনিয়ার মালিক, চোখের পলকে,
হে সর্বশক্তিমান, আপনি আমাকে
এমন তৌফিক দিন যাতে আমি
আপাদমস্তক মনেপ্রাণে একজন খাস রাজাকার
হয়ে যেতে পারি রাতারাতি। তাহলেই আমি সাত তাড়াতাড়ি
মঞ্জিলে মকসুদে পৌঁছে যাবো, এই চর্মচক্ষে
দেখে নেবো হাতিশালে হাতি আর
ঘোড়াশালে ঘোড়া আর আমার হাতে আমলকির মতো
এসে যাবে সব পেয়েছির দেশের সওগাত।
তবে সেজন্যে দাঁত কেলিয়ে হাসতে হবে, হাত
কচলাতে হবে অষ্টপ্রহর আর জহরতের মতো
পায়ের চকচকে জুতোয় চুমো খেতে হবে নানা ছুতোয় সকাল সন্ধ্যা
এবং মাঝে মাঝে শিন্নি দিতে হবে পীরের দরগায়।
না, না, এতে জিল্লতি নেই একরত্তি, বরং চোখ-ঝলসানো
জেল্লা আছে এই জীবনে। হে আলেমুল গায়েক, হে গাফফার,
আপনি আমাকে এক্ষুণি
একজন চৌকশ রাজাকার ক’রে দিন। তাহ’লেই আমি
চটজলদি গুছিয়ে নেবো আখের।
আপনার চেয়ে বেশি আর কে জানে যে, আমি
জেনাসের মতোই যুগল মুখ নিয়ে
বেঁচে বর্তে আছি। আমার একটি মুখ তেজারতির দিকে
এবং অন্যটি ওজারতির দিকে ফেরানো।
যদি ওজারতির তাজ আমার মাথায় আজ
শোভা না পায়, ক্ষতি নেই। সবুরে মেওয়া ফলে,
এই সুবচন জানা আছে আমারও। একদিন না একদিন
আপনার রহমতে আমার ভাগ্যে শিকে ছিঁড়বেই।
আপাতত ব্যাংক থেকে লক্ষ লক্ষ টাকার ওভারড্রাফট পেয়ে যাবো
তদ্বিরবিহীন, আমার বানিজ্যতরী ভাসবে
সপ্ত সিন্ধুতে আর দশ দিগন্তে দেখা যাবে
আমার সাফল্যের মাস্তুল।
হে পাক পারওয়ার দিগার, হে বিশ্বপালক,
আপনি আমাকে লহমায়
একজন তুখোড় রাজাকার ক’রে দিন। তাহ’লেই আমি
দ্বীনের নামে দিরের পর দিন তেলা মাথায়
তেল ঢালতে পারবো অবিরল,
গরিবের গরিবী কায়েম রাখবো চিরদিন আর
মুক্তিযোদ্ধাদের গায়ের চামড়া দিয়ে
ডুগডুগি বানিয়ে নেচে বেড়াবো দিগ্বিদিক আর সবার নাকের তলায়
একনিষ্ঠ ঘুণ পোকার মতো অহর্নিশ
কুরে কুরে খাবো রাষ্ট্রের ক্যঠামো, অবকাঠামো।
শ্রদ্ধেয় কবি শামসুর রাহমানের একটি মোনাজাতের খসড়া নামক কবিতার প্রত্যুত্তরে প্রবাসী সাংবাদিক আবদুল গফ্ফার চৌধুরী লেখেন ‘একটি মোনাজাতের জবাবের খসড়া’। কারো সংগ্রহে থাকা সাংবাদিক আবদুল গফ্ফার চৌধুরী লেখা ‘একটি মোনাজাতের জবাবের খসড়া’ কবিতাটি আমাকে মেইল করলে কৃতজ্ঞ থাকব। [email protected]
@সুষুপ্ত পাঠক , আপনার মন্তব্যের ঘরে আর জবাব দেবার অপশন দেখাচ্ছে না। তাই এখানেই দিলাম।
এইভাবে আবেগ প্রবণ হয়ে পড়লে আপনি তো ভাই কোথাও টিকতে পারবেন না।একটা ব্লগে, যে কেউ তার মতামত দিতেই পারেন, আপনি যদি নিজেকে আক্রান্ত মনে করেন তবে ডিফেন্ড করেন নিজেকে!এটাই কি বুদ্ধিমানের কাজ নয়? তা না করে আপনি গ্রাউন্ড ছেড়ে দিচ্ছেন কেন? আমি কিন্তু খুব বিস্মিত। আপনার সুচিন্তিত আর যুক্তিপুর্ন মন্তব্যগুলো পড়ে কিন্তু আমার মনে হয়নি যে আপনি আবেগতাড়িত মানুষদের মাঝে পড়েন!
আমি নিজে কিন্তু যেকোন বৈরী পরিবেশে খাপ খাওয়াতে পারি। “বিনা যুদ্ধে নাহি দিব সুচাগ্র মেদিনী” এটাই আমার নীতি।
আমি আপনার মতই অতিথি, এবং সেই হিসাবে আশা রাখব যে আপনি নিয়মিত লিখেই যাবেন।প্লিজ আবেগ দ্বারা তাড়িত হবেন না, এটাকে আমি বুদ্ধিমানের মত কাজ বলে মনে করি না।
ধন্যবাদ ভাল থাকবেন আর নিয়মিত আসবেন এটাই কামনা রইল।
@দারুচিনি দ্বীপ, অশেষ কৃতজ্ঞতা আপনার জন্য। আমার জন্য দু’কলম লেখার জন্য আমার আন্তরিক ধন্যবাদ নিন।
@সুষুপ্ত পাঠক, আপনাকেও ধন্যবাদ ভাই, চলে যাবার সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করার জন্য। ভাল থাকবেন আর লিখে যাবেন নিয়মিত। 🙂
প্রিয় সুষুপ্ত পাঠক,
আপনার শেষ মন্তব্যে একটি সিরিয়াস অভিযোগ আপনি তুলেছেন মুক্তমনার বিরুদ্ধে। আপনি বলছেনঃ
কবে থেকে আপনার মন্তব্য মুছে ফেলা শুরু হয়েছে? কটি মোছা হয়েছে? কোন্ কোন্ মন্তব্য মোছা হয়েছে তার কোন ব্যাক আপ আছে কি? যদি থাকে তাহলে আবার পোস্ট করতে পারেন। যেহেতু মন্তব্যের ব্যাক আপ কেউ রাখে না ধরে নিচ্ছি আপনিও রাখেন নি। সবার জ্ঞ্যাতার্থে জানাই, সুষুপ্ত পাঠকের একটি মন্তব্য ছাপানোর যোগ্য মনে না করার কারনে সেটা মডারেশন প্যানেলের চৌকাঠ পেরোতে পারে নি। শুধু সুষুপ্ত পাঠক নয় এমন অজস্র মন্তব্য প্রতিদিনই স্প্যাম, ট্র্যাশে ফেলে দেয়া হচ্ছে। কিছু যেমন আছে বাস্তবিকই স্প্যাম, আবার কিছু আছে প্রকাশ অযোগ্য।
সুষুপ্ত পাঠকের মন্তব্যটি আগা গোড়া মুসলমানদের প্রতি অযৌক্তিক ঘৃনা, ইতিহাস অস্বীকার করা, অগভীর চিন্তায় পরিপূর্ন একটি মন্তব্য ছিল। অত্যন্ত স্বাভাবিক ভাবেই মুক্তমনার নীতিমালা অনুযায়ী সেটি ছাপানো হয় নি। আর সেই মন্তব্যটি ছিল “আমি কোন অভ্যাগত নই” এর সর্বশেষ পোস্টে করা। সুতরাং সেটার অভিযোগ তুলে এখানে আরেকজনের করা প্রশ্নের উত্তর না দেয়াটা খুব একটা যৌক্তিক দেখায় না।
তারপরেও আমরা চাই না আমাদের কোন পাঠক লেখক তুচ্ছ কারনে আমাদের ত্যাগ করুক। আপনার লেখার কদর এখানে আছে। প্রচুর পাঠক আপনার গল্প পড়ে। তাদের কথা যে কোন কঠোর সিদ্ধান্ত নেয়ার আগে বিবেচনা করবেন আশা করছি।
ধন্যবাদ
মুক্তমনা মডারেটর
@মুক্তমনা মডারেটর,
আমার তো মনে হয় এইসব মন্তব্য রিজেক্ট না করে ছাপানো দরকার।অন্তত যদি কেউ ঘৃণা করেই থাকে তবে ঘৃণার মাত্রাটা কতটা বেশি, সেটাও অনেকের কাছেই একটা কৌতূহলের বিষয় হলেও হতে পারে। 🙂
@মুক্তমনা মডারেটর, প্রথমেই কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি আমাকে উদ্দেশ্য করে কমেন্ট করার জন্য। নিঃসন্দেহে এটা আমার জন্য সম্মানের। একই সঙ্গে মডারেটরদের পক্ষ থেকে এই মন্তব্যটি আমার চোখ এড়িয়ে গেলে মুক্তমনা ও আমার মাঝে চির অস্বস্তিকর এক বাধা থেকে যেতো যা লঙ্ঘন করা হয়ত আমার জন্য কখনই সম্ভব হতো না। আমি ভেবেছিলাম মডারেটরদের একজন (আমার ধারনা ছিল ফরিদ আহমেদ) আমাকে যেভাবে এড়িয়েছে, যে ভাষায়,( যদিও ব্লগে এসব নতুন কিছু নয়, আমার জন্যও নয়, অতীতে অনেকে আমার সঙ্গে বিতর্কে জড়িয়ে তাদের আইডি হারিয়েছে অর্থাৎ কেমন তাদের আচরণ ও ভাষা ছিল অনুমান করুন) পবর্তীতে যখন অন্য একটা পোষ্টে আমার লেখা একটি মন্তব্য মুছে দেয়া হয় আমি ধরে নেই মডারেটরদের একজনের সঙ্গে তর্কে জড়িয়ে তাদের বিরাগভাজন হয়েছি। এভাবে অন্যকে ছোট ভাবা আসলে নিজেকেই ছোট করা। আমি নিজেকে তাই করেছি। এটা স্বীকার করতে আমার লজ্জ্বা নেই।
মন্তব্যটির কোন ব্যাকআপ আমার কাছে নেই। তবে এটুকু মনে আছে আমি লিখেছিলাম: যেহেতু ইসলাম বলে শুধুমাত্র মুসলিম হওয়ার জন্যই একজন মানুষ বেহেস্তে যাবে, তার সব পাপ খন্ডনের পর। কিন্তু অমুসলিমরা যত ভাল কাজই করুক না কেন সোজা নরকে যাবে। একজন মুসলিম ছেলেমেয়েকে ধর্মের এই আস্কারা তাদেরকে এক ধরণের লাইসেন্স দেয় ধর্মের ন্যায়-নীতিকে বৃদ্ধাআঙ্গুল দেখাতে। “আমি কোন অভ্যাগত নই”-এর লেখায় ছিল রমজান মাসে ফেইসবুকে মুসলিম ছেলেমেয়েদের রোজা নিয়ে আদিখ্যাতা আর একই সঙ্গে চরম অনৈসলামিক কর্মকান্ড। সেই প্রেক্ষিতে ছিল আমার উক্ত মন্তব্যটি। ঐ লেখাটিতে বিএনপির জনসমর্থন বিষয়ে যে বিস্ময় প্রকাশ করা হয়েছিল এবং কারণ দর্শানো হয়েছিল তার ভিন্নমত প্রসন করে আমি লিখেছিলাম: বিএনপি মূলত সাবেক মুসলীম লীগ ভোটারদের একটা প্লাটফর্ম। এরা মুজিবকে কোনদিন মেনে নিতে পারেনি। যুদ্ধের জন্য এরা মুজিবকে দায়ী করে। ইত্যাদি এইরকম আরো কিছু। এটা ইতিহাসকে অস্বীকার করে কিনা জানি না। “বাংলাদেশের” প্রতি এই দেশের আপারময় জনগণের সমর্থন ছিল তাতে সন্দেহ নেই। কিন্তু বিপক্ষ মতালম্বী যে ছিল না তা কি সত্য নয়? মুসলিম লীগ কি বাংলাদেশে ভোট পায়নি? তারা সবাই দেশ স্বাধীন হবার পর আওয়ামী লীগ করতে শুরু করে? আমার চিন্তাধারা বা বিশ্লেষণ ভুল হতে পারে, কিন্তু সেটা ইতিহাস বিকৃত করা হচ্ছে এইরকম অভিযোগ করা যাবে না। তাই আমার মন্তব্যের এই অংশটুকু মুছে না ফেললেও চলতো। হুবহু আমার মন্তব্যগুলো দেয়া আমার পক্ষে সম্ভব নয় কারণ তা সংগ্রহে নেই। স্মৃতি থেকে লিখছি। মুক্তমনার কাছে এসব রক্ষিত থাকে কিনা জানি না।… তবে অগভীর চিন্তার যে অভিযোগ তা যে কেউ-ই আমাকে করতে পারে। এ নিয়ে আমার বলার কিছু নেই। আর মুক্তমনার নীতিমালা আমি পড়লেও ভুলে গেছি। কোন নীতিমালাই আমি জীবনে মনে রাখতে পারি না। সে ক্ষেত্রে যদি সত্যি আমি নীতিমালা ভেঙ্গে থাকি আন্তরিকভাবে মুক্তমনার কাছে ক্ষমাপ্রার্থী এবং দুঃখিত।
এই লাইনগুলো আমাকে বিব্রত আর অস্বস্তিতে ফেলে দিয়েছে। বিশেষত আমার মত অখ্যাত একজন লেখককে মুক্তমনা যেভাবে গুরুত্ব দেখিয়ে সম্মান দেখালো তা সম্ভবত আমার পাওনাও ছিল না। যেখানে আমি মুক্তমনার সদস্যই নই। … এই সাইটির সঙ্গে আমার আবেগ জড়িত। একদমই ব্যক্তিগত বিধায় সেটা বলতে চাচ্ছি না। কাজেই মুক্তমনার সঙ্গে সমস্ত সম্পর্ক শেষ বলে যে সিদ্ধান্ত নিয়ে ছিলাম তা আবেগতাড়িত ছিল সন্দেহ নেই…।
মুক্তমনায় আর লিখবো কিনা জানি না। তবে একজন সাধারণ পাঠক হিসেবে মুক্তমনার সঙ্গে ছিলাম, আছি, থাকবো…।
মুক্তমনা মডারেটরদের প্রতি আমার অশেষ কৃতজ্ঞতা জানাই। ধন্যবাদ।
আমার খুব প্রিয় কবিতা এটি। এই পোস্টের জন্য ধন্যবাদ।
এই শামসুর রাহমানকে জীবদ্দশায় কতরকমভাবে যে মৌলবাদীদের আক্রমণের শিকার হতে হয়েছিল তা বলে শেষ করা যাবে না।
কাজী রহমান,আমি অত্যান্ত লজ্জিত এবং ক্ষমাপ্রার্থী।সুষুপ্ত পাঠকের হয়েও আপনার কাছে ক্ষমা চাইছি,কারণ উনিও ভূলটি করেছেন মূলত আমার কারণে।আসলে মুক্তমনায় আপনার কবিতা প্রায়ই পড়ে এমন অভ্যস্ত হয়ে গেছি যে,মুক্তমনায় কাজী নামটা দেখলেই মনে হয় এটা বুঝি কাজী রহমান।মূলত কাজী মামুনের লেখা নিয়ে মন্তব্য করেছিলাম।অনিচ্ছাকৃত এই ভূলের জন্য আবারও দুঃখিত,কিন্তু ভূলটি হয়েছে বার বার আপনার নাম এবং কবিতা পড়ার ফলে।একবার বাইরে থেকে বাড়িতে এসে আমার মায়ের শাড়ি পরিহিত আবস্থায় এক আত্মীয়াকে পেছন থেকে দেখে, ‘মা’ বলে ডেকে ফেলেছিলাম।আশা করি বুঝতে পেরেছেন কী কারণে ভূল করেছি।
ফরিদ ভাই এর থিয়োরী মানে যুদ্ধপরাধের বিচার আওয়ামী সরকারের সাজানো মেনে নিলে বিস্ময়করভাবে জামাত শিবিরের দাবীর সাথেই শেষমেষ একমত হতে হয়। তারা এবং সমমনা তো প্রথম থেকেই সেটা বলে আসছে। দেখা যায় তারাই আসলে সঠিক ছিল, আমরাই ভুল করে এসেছি।
বিচার কতটা সাজানো কে জানে……শুধু জানি যে টাকার কাছে নত হবার ব্যাপারে মুক্তিযুদ্ধের স্বপক্ষ/বিপক্ষ কারা এগিয়ে তা বলা কঠিন। যাদের হাতে শয়ে শয়ে কোটি টাকা আছে তাদের কেশাগ্র আইনী পথে ছোঁয়ার মত আর্থ-সামাজিক অবস্থা আমাদের নেই, সেটা হয়ত বা সম্ভব হতে পারত, কিন্তু তার জন্য বিচার নিশ্চিত করার জন্য সর্বসাধারনের যে কঠিন আন্তরিকতা দৃঢ়তার প্রয়োযন তা একেবারেই নেই। আমি মুক্তিযুদ্ধের স্বপক্ষের দাবী করা লোকেরও এক বড় অংশ ‘কিন্তু’ ‘বাট’ মানসিকতার। এ অবস্থায় যা হবার তাই হচ্ছে। আগে অন্তত এদের রাজাকার গাল দিয়ে কিছুটা হলেও খেদ মেটানো যেত, ভবিষ্যতে সে উপায়ও আর থাকছে না। এদের গাল দিলে উলটা এরাই মানহানি মামলা দেবে।
সরকারের মতিগতি দেখে আমার কখনোই মনে হয়নি যে খুব আন্তরিকতা এ ব্যাপারে আছে বলে। এমন সময় মামলা শুরু করা হয়েছে যাতে চুড়ান্ত নিষ্পত্তির জন্য সামনের সরকার লাগে। এ মূলো দেখিয়ে আরেকবার ভোট দেওয়া যাবে, আর অন্যরা নির্বাচিত হলে বলা যাবে যে আমরা তো শুরু করেছিলামই, অন্যরা ছেড়ে দিয়েছে, আমরা আবার আসলে ঠিকই ঝুলিয়ে ছাড়তাম। আশা করি কথাগুলি নিতান্তই ভুল অনুমান।
এখানে দেখি ধর্ম মৌলবাদ নিয়ে ক্যাঁচাল হয়েছে। ধর্ম দায়ী নাকি দায়ী নয় এসব প্রশ্ন অবান্তর। এটা এখন পরিষ্কার যে এদের বিচার নিয়ে জাতি আসলেই দ্বিধাবিভক্ত। এর কারণ আসলে কি? ব্যাক্তি রাজাকার বদরদের গুনমুগ্ধতা? এরা ব্যাক্তি জীবনে সেলিব্রিটি গোছের কিছু ছিল? সাঈদীর জন্য শুধু বাংলাদেশই নয়, বিশ্বের বহু দেশে বহু জাতের লোকে রাস্তায় নেমেছিল। এদের মোটিভ কি ছিল? এরা সকলে জামাতি টাকার কাছে বিক্রিত? হাইপোথিটিক্যাল প্রশ্ন করা যেতে পারে যে সাঈদী, নিজামী, গোয়া এদের বদলে যদি চক্রবর্তি, দাস, রায় এমন ধরনের নাম বিশিষ্ট লোকেরা বদর বাহিনীর সাথে জড়িত থাকত তবে এদের বিচারের বিরুদ্ধে কয়জন কয়টি কলম লিখত? ৪০ বছর পর জাতি এভাবে দ্বিধাবিভক্ত হত?
@আদিল মাহমুদ,
এর সবগুলোর উত্তর: না। না..।
পাক সার জমিন সাদবাদ
রাজাকার জিন্দাবাদ
পূর্ব পাকিস্তান জিন্দাবাদ।
তার চেয়েও বড় চুতিয়া এদেশের বেশিরভাগ মানুষ।বি এন পির সমর্থকদের জিজ্ঞেস করেন,দেখবেন প্রায় সবাই রাজাকারদের প্রতি দরদী।এইবার মনে হয় আওয়ামী লীগের সমর্থকরাও দরদী হবে।
আপনার লেখা পড়ে মনে হয় যে আপনি প্রবাসী, সো বেঁচে গেছেন অপমানের হাত থেকে।
এটাই বাংলাদেশ।আচ্ছা এই দেশের মানুষের কি জিনগত ত্রুটি আছে নাকি?
একমত।যেহেতু বঙ্গবন্ধুর পালক সন্তান( হাসিনা আসলেই শেখ সাহেবের ঔরসজাত কিনা সন্দেহ হচ্ছে)শেখ হাসিনা এইবার গো হুজুরের পাদুকা মাথায় নিয়েছেন, অতএব আমরা আম জাম কাঁঠাল জনতা আসেন হুজুরের( গো আজম) পাদুকার তলা চেটে দিয়ে অশেষ নেকি হাসিল করি।
@দারুচিনি দ্বীপ,
প্রবাসী হয়েও অপমানের হাত থেকে বাঁচা যায় না, নাড়িটা যে পোতা রয়েছে ওই মাটিতে।
গোলাম আজমের রায়ের পর অনেকেই বলছে এটা প্রহশনের রায় আর ICT থেকে সাজানো রায় দেওয়া হচ্ছে। আওয়ামী লীগের লাভ কি জামায়াতের সাথে আতাঁত করে ? জামাতের (ছুপা/প্রকাশ্য) অনুসারীরা কোন সময়েই আওয়ামী লীগে ভোট দিবে না, এটা কি আওয়ামী লীগ জানে না? তাঁরা যদি আতাঁত করতেই চাইত তাহলে ৪২ বছর পর ৭১’এর মানবতা বিরুদ্ধে অপরাধীদের বিচার শুরু করল কেন? অন্য দল তো ৭১’এর মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধীদের বিচার দুরে থাক, তাদের মন্ত্রী বানাই ছিল । আওয়ামী লীগই বিচার শুরু করছে এবং ঐসব ৭১’এর মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধীদের নৃশংস অপরাধগুলোর সত্যতা দলিল আকারে বিশ্বের কাছে তুলে ধরেছে। এখন আর কেউ বলতে পারবে না যে,
মৌলবাদীদের থেকে বাংলাদেশের মুক্তির প্রথম পদক্ষেপ জামাত নিষিদ্ধ করা। আশাকরি, যুদ্ধাপরাধী দল হিসেবে আওয়ামী লীগের আমলেই জামাত নিষিদ্ধ হবে।
@তারিক,
আপনার মতো আশাবাদী হতে পারলে ভালো লাগতো। তবে, বাস্তবতা বলে ভিন্ন কথা। গতকালের ইত্তেফাকে এই খবরটা এসেছে। জামাতকে মূল ধারার রাজনীততে ফিরিয়ে আনতে চায় সরকার।
জামায়াতকে রাজনীতিতে রাখতে চায় আওয়ামী লীগ
জামায়াতে ইসলামীকে মূল ধারার রাজনীতিতে ফিরিয়ে আনতে চায় সরকার। এ লক্ষ্যে ইতিমধ্যে সরকারের পক্ষ থেকে উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে। সম্প্রতি একটি দেশের কূটনীতিকের বাসভবনে আওয়ামী লীগের পক্ষে কয়েকজন দায়িত্বশীল নেতার সঙ্গে জামায়াতের নেতৃবৃন্দের বৈঠক হয়েছে। এ বৈঠকে জামায়াতকে মূল ধারার রাজনীতিতে ফিরে আসার এবং স্বাভাবিক রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড পরিচালনার আহবান জানান হয়। এ সময় জামায়াতের পক্ষ থেকে যুদ্ধাপরাধ মামলা ছাড়া অন্যান্য মামলায় গ্রেফতারকৃত জামায়াতের নেতা-কর্মীদের তালিকা দিয়ে তাদের মুক্তি দাবি করা হয়। তবে এ বিষয়ে সরকারের কোন সিদ্ধান্ত এখন পর্যন্ত জানা যায়নি। জামায়াতের প্রায় চার হাজার নেতা-কর্মী গ্রেফতার হয়েছে বলে দলীয় সূত্রে দাবি করা হয়। বৈঠকে প্রধানমন্ত্রীর আন্তর্জাতিক বিষয়ক উপদেষ্টা ড. গওহর রিজভী উপস্থিত ছিলেন। তবে সংশ্লিষ্ট দেশের কূটনীতিক বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন না।
রাজধানীসহ সারাদেশে জামায়াতে ইসলামীর এখন স্বাভাবিক ও প্রকাশ্য কোন রাজনীতি নেই। জামায়াতের কোন নেতা-কর্মীকেই এখন প্রকাশ্যে দেখা যায় না। জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় কার্যালয় এবং ঢাকা মহানগর কার্যালয় পুলিশ তালাবদ্ধ করে দিয়েছে। জেলা পর্যায়ের এবং অন্যান্য মহানগরীর জামায়াত কার্যালয়ও বন্ধ। এ অবস্থায় জামায়াত নিজস্ব ওয়েব সাইটে এবং গণমাধ্যমসমূহের ই-মেইলে দলের কর্মসূচি ঘোষণা করে এবং বিবৃতি দেয়। কিন্তু প্রকাশ্যে কর্মসূচি ঘোষণা করতে না পারলেও হরতালসহ বিভিন্ন কর্মসূচি ঘোষণার পর জামায়াতের নেতা-কর্মীরা রাজপথে নেমে পড়ে।
প্রায় ২ বছর আগে জামায়াতে ইসলামীর নেতা-কর্মীদের গ্রেফতার শুরু হলে দলটির স্বাভাবিক রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড বন্ধ হয়ে যায়। ২০১০ সালের ২৯ জুন ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত হানার মামলায় জামায়াতে ইসলামীর আমীর মওলানা মতিউর রহমান নিজামী, সেক্রেটারি জেনারেল আলী আহসান মোহাম্মদ মুজাহিদ ও নায়েবে আমীর দেলোয়ার হোসেন সাঈদীকে গ্রেফতার করা হয়। পরে তাদের মানবতা বিরোধী অপরাধের মামলায় গ্রেফতার দেখানো হয়। এরপর একে একে যুদ্ধাপরাধ মামলায় গ্রেফতার হন জামায়াতের সাবেক আমীর অধ্যাপক গোলাম আযম, নায়েবে আমীর মওলানা আবুল কালাম মুহাম্মদ ইউসুফ, নায়েবে আমীর মওলানা আবদুস সোবহান, সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মো. কামারুজ্জামান, আব্দুল কাদের মোল্লা ও এটিএম আযাহারুল ইসলাম এবং কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য মীর কাসেম আলী।
এদিকে দলের শীর্ষ নেতৃবৃন্দের গ্রেফতার ও শাস্তি এবং দলীয় কার্যালয় বন্ধ করে দেয়ার পাশাপাশি দলের অন্যান্য নেতা-কর্মীর মধ্যে গ্রেফতার আতংক বিরাজ করছে। ফলে দলটি প্রায় নিষিদ্ধ দল বা আন্ডারগ্রাউন্ড দলে পরিণত হয়। কিন্তু সরকারই এখন দলটিকে মূলধারার রাজনীতিতে ফিরিয়ে আনতে চাইছে।
@ফরিদ আহমেদ,
ভাই, আজকের ইত্তেফাকের খবর : ভোটার তালিকা থেকে বাদ পড়ছে যুদ্ধাপরাধীরা এবং জামায়াত নিয়ে সিদ্ধান্ত রায়ের কপি দেখে: ইসি।
@তারিক,
দেখলাম, কিন্তু আওয়ামী লীগকে খুঁজে পেলাম না কোথাও। যুদ্ধাপরাধিদের বিষয়ে নির্বাচন কমিশন বিচার বিবেচনা করছে আদালতের রায়ের কপির আলোকে। নির্বাচন কমিশন একটা স্বায়ত্বশাসিত প্রতিষ্ঠান, এর কার্যকলাপের কৃতিত্ব আওয়ামী লীগের পাতে যায় না।
@ফরিদ আহমেদ, আসলে ভাই আমি বলতে চাচ্ছিলাম যে, আওয়ামী লীগের আমলেই ৭১’এর মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধীদের বিচারকাজ চলছে, বিচারের রায় হচ্ছে এবং যুদ্ধাপরাধী দল হিসেবে জামাতেরও বিচার হবে। আর সেই বিচারের রায়ের আলোকে নির্বাচন কমিশন জামাতের রাজনীতির ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নিবে বলে জানা গেছে । আমি জানি এটা সম্পূৰ্নরূপে আওয়ামী লীগের কৃতিত্ব না। তারপরও অন্ততঃ আমি আওয়ামী লীগকে ধন্যবাদ জানাব ৭১’এর মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধীদের বিচারকাজ শুরু করার জন্য।
@তারিক,
১৯৯১ সালে যদি জামাত আওয়ামী লীগ কে সমর্থন করত,তবে এর উল্টোটাই হওয়া স্বাভাবিক ছিল তাই না?
@দারুচিনি দ্বীপ,
১৯৯১ সালে যদি জামাত আওয়ামী লীগ কে সমর্থন করত,তবে এর উল্টোটাই হওয়া স্বাভাবিক ছিল তাই না?
উত্তর: না ।
একটি ভাল খবর : ঈদের পর ফাঁসির রায় কার্যকর করা হবে বলে জানা গেছে ।
@তারিক,
এতটা নিশ্চিত হচ্ছেন কি করে? হাসিনাই কি ‘৯১ সালে জামাতের কাছে যান নাই সমর্থনের আশায়?আশা করি ভুলে যান নি ব্যাপারটা 🙂 ।
@তারিক,
বাংলাদেশে ক্ষমতায় যাওয়ার মত রাজনৈতিক দল মাত্র দুটো, আওয়ামী লীগ আর বিএনপি। বিএনপি যদিও দাবি করে যে, তাদের প্রতিষ্ঠাতা একজন মুক্তিযোদ্ধা, কিন্তু জন্মের পর থেকে, বা সঠিক করে বললে জন্মের আগে থেকেই এরা রাজাকার, যুদ্ধাপরাধীদের তোষণ এবং পোষণ করে এসেছে। এই রাজনৈতিক দলটিকে আমি বর্জ্যের চেয়ে বেশি মর্যাদা দেই না, বর্জ্য বলেই বিএনপি বর্জনীয় আমার মত অনেকের কাছে। এরাতো যুদ্ধাপরাধীদের বিচার করবে না। বাকি থাকলো এক আওয়ামী লীগ। এই দলটি যেহেতু স্বাধীনতা যুদ্ধে নেতৃত্ব দিয়েছে, স্বাধীনতাবিরোধীদের বিচার করার দায়দায়িত্বও তাদেরই। বিচার করছে বলেই এদেরকে ধন্যবাদ দেবার কিছু নেই, বরং বিচারের নামে প্রহসন করা, প্রতারণা করার জন্য তীব্র সমালোচনা করার অধিকার আমাদের রয়েছে। বিএনপি ক্ষমতায় এসে গোলামকে মুক্ত করে রাষ্ট্রপতি করলেও আমি বিএনপির কোনো সমালোচনা করবো না, কারণ বিএনপির কাছে আমার আসলে কোনো প্রত্যাশাই নেই।
আশা করি আমার অবস্থানটা আপনাকে বোঝাতে পেরেছি।
@ফরিদ আহমেদ ভাই, মুক্তমনাতে আপনারদের মত চিন্তাশীল লেখকদের লেখা পড়া যায় বলেই আমি এই ব্লগে আসি । আর আপনার অবস্থান আমার কাছে পরিস্কার করার কোন দরকার নাই, কারন আমি অনেক আগের থেকে আপনার লেখা পড়ি এবং অনুসরন করি। আপনার কাছ থেকে নিয়মিত লেখা চাই … :guru:
@তারিক,
হাহাহা! সমস্যাটা আমার নিজের ভাই। মুক্তমনায় আমি এখন অনিয়মিত। মাঝে মাঝে এত দীর্ঘবিরতিতে এখানে ফিরি যে, নিজেকেই নতুন কেউ বলে মনে হয় তখন। 🙂
@তারিক,
কয়েকদিন আগের মন্তব্য কিন্তু আমি দেখি নাই, তাই আজ কিছু কথা বলি।
সত্যি কি আপনি আশাবাদী নাকি ঘোরের মধ্যে আছেন? আপনার মত আশা আমি তো ১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পরেই করেছিলাম। তারপর জল অনেকদূর গড়িয়েছে।
গু খেকো আজম নামক সাক্ষাৎ ইবলিশটাকে যে সরকারের আমলে ফাঁসী থেকে নিষ্কৃতি দেয়া হয় এবং এই রায়ে সরকার সন্তোষ প্রকাশ করে, এরপরেও কি আপনি আশাবাদী যে এই আওয়ামী (মুসলিম) লীগের আমলে জামাত নিষিদ্ধ হবে?
ভাইরে জেগে উঠেন ঘুম থেকে আর সামনে জামাত লীগ কে ভোট দেবেন কি দেবেন না সেটা নিয়ে ভাবেন।
ফরিদ আহমেদ ভাইয়ের এই প্রচন্ড হতাশা ভরা লেখাটিই কি সব কিছু চোখে আঙ্গুল দিয়ে দেখিয়ে দিচ্ছে না যে আসলে কি হবে এই চুতিয়া দেশে ভবিষ্যতে?
@দারুচিনি দ্বীপ,
আওয়ামী লীগ ২০০৮ সালে যুদ্ধাপরাধীদের বিচার করা হবে এই নিৰ্বাচনী প্রতিশ্রুতি দিয়ে ক্ষমতায় এসেছিল তখন অনেকে বলেছিল যে আওয়ামী লীগ শুধু মূলাই ঝুলাবে, বিচার করতে পারবে না । কিন্তু, কি অবাক কান্ড !!! আওয়ামী লীগ যুদ্ধাপরাধীদের বিচার কাজ শুরু করছে এবং অলরেডী ICT থেকে ৬ জন যুদ্ধাপরাধীর বিচারের রায় হয়েছে। বাকী যুদ্ধাপরাধীদেরও বিচার কাজ চলছে এবং জামাত-ই-ইসলামী সংগঠনটিকেও যুদ্ধাপরাধী সংগঠন হিসেবে বিচার করা হবে। আপনি একটু খিয়াল করলে দেখবেন যে , ICT থেকে প্রত্যেকটি রায়ের জামাত-ই-ইসলামী সংগঠনটিকে যুদ্ধাপরাধী সংগঠন হিসেবে চিন্হিত করা হচ্ছে। ঐসব রায়ের ভিত্তিতে এখন জামাত-ই-ইসলামী সংগঠনটিকে নিষিদ্ধ করা শুধু সময়ের ব্যাপার । কয়েকটা দিন অপেক্ষা করেন, তারপর নাহয় আপনার সাথে আমিও সুর মেলাব আর আওয়ামী লীগকে পানি ছাড়া ধোয়া শুরু করব।
গোলাম আজমের রায়ে আপনি যতটুকু অসন্তুষ্ট আমিও ঠিক ততটুকুই অসন্তুষ্ট। কিন্তু, আমি খুশি যে ৪২ বছর পর হলেও তার মানবতা বিরুদ্ধে অপরাধে বিচার হয়েছে । আমরা দাবী জানাই ও আশাকরি যে, গোলাম আজমের সৰ্বোচ্চ শাস্তির জন্য রাষ্ট্রপক্ষ উচ্চ আদালতে আপিল করবে।
@তারিক,
আপিল করলে তো আলহামদুলিল্লাহ্। এখন দেখি কোথাকার জল কোথায় গিয়ে দাঁড়ায়।
কাজী রহমান,সুষুপ্ত পাঠক ধর্মের সাথে মুক্তিযুদ্ধের যে যোগসূত্র স্থাপন করেছেন তা আপনার কাছে হাস্যকর মনে হলেও আমার কাছে যুক্তিসঙ্গত বলে মনে হয়েছে।প্রগতি নিয়ে অনেক কিছুই লেখা বা বলা যায়, কিন্তু বাস্তাবতা হল এদেশের সাধরণ তরুনেরা(যাদেরকে রাস্তা ঘাটে,বাসে দেখা যায়) সব কিছুতেই ইসলামের জয়জয়কার দেখতে চায়,তা সে মুক্তিযুদ্ধ হোক কিংবা প্রগতি।
@অতীত,কাজী রহমানদের সমস্যা এইখানেই। বাস্তব আর বুদ্ধিজীবী সুলভ লেকচার এক জিনিস না। কি বলছে এই জেনারেশন? মুক্তিযুদ্ধকে কিভাবে মূল্যায়ন করছে তা কাজী রহমানরা জানে না বা জেনেও এড়িয়ে যেতে চায়। নিজেদের এক মডারেট চরিত্র বলে তুলে ধরতে চায়। ভেতরে যে সব ফাক হয়ে যাচ্ছে সেই খবর নেই।
@সুষুপ্ত পাঠক,
আপনিও কি আমাকেই বলছেন? কোন মন্তব্যটি? কি বলেছি? রেফারেন্স বা কোট করুন, কি বলতে চান পরিস্কার করে বলুন?
@ রহমান ভাই,
না, আপনাকে সম্ভবত বলেননি। মনে হয়, আপনার নামের সাথে অন্য কোন নাম গুলিয়ে ফেলেছেন। 🙂
দেখুন, দেখি, এই ছোট্র জায়গাটিতেই কেমন গুলিয়ে যাচ্ছে সবকিছু, তাহলে, ইতিহাসের বিরাট খাতায় আরও বেশি গুলাবে, এটাই কি স্বাভাবিক না? মৌলবাদ বলতেই একটি বিশেষ ধর্ম, বা মুক্তিযুদ্ধের চেতনার বিকাশের সাথে একটি বিশেষ ধর্ম- এমন সব গোলমেলে যোগসূত্র এজন্যই হয়ত দেখছি আমরা!
@কাজী রহমান, মুক্তমনায় দুই কাজীতে আমার প্রায়ই সমস্যা হয়। কাজী মামুন/ কাজী রহমান… :-X
@অতীত,
আপনি কি আমাকেই বলছেন? কোন মন্তব্যটি? কি বলেছি? পরিস্কার করুন।
ফরিদ ভাই,
অনেকদিন পর আপনার লেখা পড়ার সুযোগ পেলাম। গোলাম আযমের ফাঁসি না হওয়াতে আমরা অনেকেই হতাশ। কিন্তু আপনার এ লেখাটাতে যত হতাশা ফুটে উঠেছে আপনার আর কোন লেখায় আপনাকে এতটা হতাশ হতে দেখিনি। হতাশায় ক্ষোভে অভিমানে সবাই হাল ছেড়ে দিলে গোলামরাই কি জিতে যাবে না? বিয়াল্লিশ বছর ধরে জাতির একটা অংশ দাঁতে দাঁত চেপে অপেক্ষা করেছে কখন এদের বিচার হবে। যারা এদেরকে দেশের মন্ত্রী বানিয়েছে তারা তো দেশের মানুষের ভোটেই ক্ষমতায় এসেছিল। খালেদা জিয়া গোলাম আযমকে বাংলাদেশের নাগরিকত্ব দিয়েছেন। তারপরও তো তাঁর ভোট পেতে সমস্যা হয় না। সমাজ গঠনের দীর্ঘ সংগ্রামে গোলাম গং-রা যতটা আগ্রাসী রকমের সক্রিয় – আমরা কিন্তু ততটাই অভিমানী। শহীদুল্লাহ কায়সারের একটা কথা আমরা জেনেও ভুলে যাই – নিশ্চিত পরাজয় জেনেও যারা যুদ্ধক্ষেত্র থেকে পালিয়ে যায় না তারাই তো সংশপ্তক। আমাদের কি সংশপ্তক হওয়া উচিত নয়?
@প্রদীপ দেব,
আমি কিন্তু গোলামের ফাঁসি না হওয়াতে হতাশ হই নি দাদা, হতাশ হয়েছি পুরো বিচার প্রক্রিয়ার সাজানো রূপরেখা দেখে। স্বচ্ছ এবং নিরপেক্ষ বিচার হয়ে গোলাম যদি খালাস হয়েও যেতো আমার কোনো আপত্তি থাকতো না। কিন্তু এখানে তা হয় নি। এই বিচারের রায়ে আওয়ামী লীগের হাত ছিল। যেখানে কেউ-ই এই রায়ে সন্তুষ্ট হতে পারে নি, সেখানে আওয়ামী নের্তৃবৃন্দ তড়িঘড়ি করে জানিয়ে দিয়েছে যে তাঁরা এই রায়ে সন্তুষ্ট। কী কারণে তাঁরা সন্তুষ্ট, তার সদুত্তর কিন্তু নেই।
আওয়ামী লীগের এই হঠকারিতা, আপোষকামিতা এবং বিচারের রায়কে পূর্বনির্ধারিত করার কদর্য কার্যকলাপে আমি তীব্র অপমানবোধ করেছি, গভীরভাবে প্রতারিত অনুভব করেছি। গোলাম তার শেষ যুদ্ধেও জিতে গেলো স্বাধীন বাংলাদেশের মাটিতে। আমাদের কিছু মানুষের লোভ, আত্মমর্যাদাহীনতা এবং বিশ্বাসঘাতকতার কারণে।
ট্রাইবুনাল যে স্বাধীনভাবে কাজ করছে না, এটা এখন দিনের আলোর মতই পরিষ্কার। কার ফাঁসি হবে, আর কে ফাঁসমুক্ত হবে, তা নির্ধারণ করে দিচ্ছে আওয়ামী লীগ। এখানে গতকাল আমি কেশব দাকে বলেছিলাম যে, আগামীকাল মুজাহিদের কপাল পুড়বে গোলামের কারণে। আমার অনুমানই সত্যি হয়েছে। মুজাহিদের ফাঁসির রায় হয়েছে। অনেকে বলবেন যে, তার কৃতকর্ম ফাঁসির যোগ্য তাই ফাঁসি হয়েছে, এতে ষড়যন্ত্রের কী আছে? তাঁদের স্মরণ করিয়ে দিতে চাই যে, কাদের মোল্লার অপকর্মগুলোও ফাঁসিরই যোগ্য ছিল, কিন্তু তাকে ফাঁসির রায় দেওয়া হয় নি।
মুজাহিদের ফাঁসির কারণে আজকে অনেকেই উল্লসিত। গোলামের কথা ভুলে যাচ্ছে খুব দ্রুতই মানুষজন। আওয়ামী লীগ ঠিক এই জিনিসটাই চেয়েছিল। অথচ একজন লোকের যদি ফাঁসি হয়, সেটা হওয়া উচিত ছিল এই গোলামের। অন্য যাদের ফাঁসির আদেশ হচ্ছে, তাদের সবার আব্বাহুজুর ছিল গোলাম একাত্তর সালে। মুজাহিদের ফাঁসির রায় হবার পরে অনেকেই দেখলাম ফেসবুকে খুশি, অনেকেই দেখলাম বেজার। আমি নিজেই একটা স্ট্যাটাস দিয়েছি, সেটা এখানে সহভাগিতা করার লোভ সামলাতে পারলাম না।
@ফরিদ আহমেদ,
একমত ক্ষোভের সাথে ।
@প্রদীপ দেব,
নিশ্চিত পরাজয় জেনেও যুদ্ধক্ষেত্রে থাকা যায়, সংশপ্তক হওয়া যায়, যদি সহযোদ্ধাও দাঁতে দাঁত চেপে, কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে যুদ্ধ করে। কিন্তু, সহযোদ্ধা যখন ছুরি নিয়ে তৈরি থাকে পিছন থেকে আঘাত করার জন্য, তখন সিরাজুদ্দোলার মত পালিয়ে যাওয়া ছাড়া আর কোনো উপায় থাকে না।
@ফরিদ আহমেদ,
ঠিক বলেছেন, আর যেখানে এখানে গোলাম আজম কে ২য় মীর জাফর বললে অত্যুক্তি করা হবে না বরং সেটাই সঠিক।তবে মীর জাফরও কি এই গোলাম আজমের থেকে বেশি খারাপ ছিল? আমার মনে হয় না। :-s
@দারুচিনি দ্বীপ,
মীর জাফরের কারণে একজনও সাধারণ মানুষের মৃত্যু হয় নি, পুরো বিষয়টাই ছিল রাজায় রাজায় যুদ্ধ। আর গোলামের কারণে লক্ষ লক্ষ সাধারণ মানুষ নিহত হয়েছে।
@ফরিদ আহমেদ,
ধন্যবাদ আপনার জবাবের জন্য। হ্যাঁ সেটা আপনি খুব ভাল বলেছেন। কিন্তু আজ এই দেশের মানুষ মীর জাফর নামটাকেই গালি বানিয়ে ফেলেছে, আর গোলাম আজমের জন্য কি দরদ।
এর কারন আমার কাছে সুস্পষ্ট নয়!!!!! আচ্ছা বাংলাদেশ কি আসলেই আবার মানসিক ভাবে পাকিস্তানের উপনিবেশ হয়ে গেল রে নাকি ভাই?দেখেন ক্রিকেটে এখনও যে পরিমান পাকি ভক্ত।১৯৯৯ সালে সম্ভবত( সঠিক মনে আসছে না এই মুহুর্তে) , অস্ট্রালিয়া আর পাকিস্তানের ফাইনাল খেলা হয়ে ছিল তাই না?সেইসময়ে পাকিস্তানের বিজয় উজ্জাপন করতে বাংলাদেশে গরু খাসি জবাই করে ভোজের প্রস্তুতি চলছিল।শেসে বেচারা পশুগুলি প্রানে বেঁচে যায় পাকিস্তান হেরে যাওয়াতে।
সেইসময় এই বাড়াবাড়ির জন্য বিরক্তি লাগলেও,ভেবেছিলাম যে এইটা বাঙ্গালীর স্বভাব। যেমন ব্রাজিল আর আরজেন্টিনা নিয়েও মারাত্বক মাতামাতি।
কিন্তু আজ এই পাকি প্রীতিকে আর নেহায়েত ব্রাজিল আর্জেন্তিনার মত সাধারন পর্যায়ের বাড়াবাড়ি বলে মনে হয় না!
@প্রদীপ দেব,
হাল ছেড়ে দেয়া ছাড়া উপায় কি বলেন?এই অসভ্য দেশে আপনি কি আজো হাল ধরার স্বপ্ন দেখেন? তবে আমি আপনাকে স্বপ্নবাজ বলব রে ভাই।
:-X
আমিন
ফরিদ আহমেদ, কেন দেশের মানুষ রাজাকারদের প্রতি ঘৃণাবোধ করছে না। কেন হেফাজতের প্রতি এত সহনশীল। কেন পুরো দেশটা জুড়ে নব্য রাজাকারে ভরে গেছে, কেন কাদের সিদ্দিকের মত মুক্তিযোদ্ধারা রাজাকারের মত কথা বলে এসব নিয়ে বিস্তর ব্যাখ্যা বিশ্লেষণ হয়েছে ব্লগে। কম-বেশি আমরা এখন সবাই এসব জানি। আমি একটা কথা প্রায়ই উল্লেখ করি, যদি আমরা এই দেশে ৯০ ভাগ হিন্দু হতাম কি খ্রিস্টান তাহলে মুক্তিযোদ্ধের চেতনাকে আমাদের পাহারা দিয়ে রাখতে হতো না। আর শেষমেশ এইরকম হাই হাপিত্যেশ করতে হতো না। আমরা যারা কষ্ট পাচ্ছি তাদের কষ্ট পেতেই হবে। এই রাজাকারদের ফাঁসি হয়ে গেলেও কি বাংলাদেশ বেঁচে গেলো? জামায়াত নিষিদ্ধ হয়ে গেলেও বাংলাদেশ প্রগতির পথে চলল? এই দেশের মানুষ মুসলিম উম্মার যে দায়িত্ব ইসলামী খেলাফত, রসূলের শরীয়ত আর আল্লার আইন বাস্তবায়ন তার পথেই চলবে। যারা প্রবাসে আছেন তারা হয়ত এটা ভেবে এক প্রকার সান্ত্বনা পাচ্ছেন, যাক এসব থেকে আপনারা নিরাপদ। বা চোখে তো দেখতে হচ্ছে না। কিন্তু যারা দেশে আছে, আর এইসবের প্রতিবাদে ব্লগে কলম ধরছে, তারা কতটা অনিরাপদ সেটা ভাবলে বোধহয় নিজেকে স্বার্থপর না ভেবে পারবেন না।
@সুষুপ্ত পাঠক,
হিন্দু বা খ্রিস্টানরা মুসলমানদের চেয়ে উন্নততর কিছু, আপনার এই ধারণার সাথে একমত নই আমি।
@ফরিদ আহমেদ, উন্নততর তারাও নয়। আমি বলতে চেয়েছি মুসলিমদের চেতনার দিকটির কথা। ইসলাম ভাষা, সংস্কৃতির উপনিবেশ চালায়। একজন চাইনিজ মুসলিমের নাম শুনলেও মনে হয় আরবের লোক বুঝি। ভারতের মুসলমানরাও গণজারণ মঞ্চের বিরুদ্ধে সেদেশে প্রতিবাদী মিছিল করে। কেন? মুসলিমরা যেখানেই সংখ্যাগরিষ্ট হয় সেখানেই শরীয়া আইনের দাবী তুলে। ইসলামী শাসনের কথা বলে। শুনেছি অনেক ইউরোপের দেশে মুসলিম অধিবাসীরা এক সময় সংখ্যাগরিষ্ঠ হয়ে যাবে। তারা তখন সেখানে আল্লার আইনের দাবী তুলবে। যে কোন সংখ্যাগরিষ্ঠ মুসলিম কমিউনিটি ধর্মনিরপেক্ষতাকে মেনে নিতে পারে না। এটা তার ধর্ম বিরুদ্ধ। বাংলাদেশে এখন ইয়াং জেনারেশনকে জিজ্ঞস করে দেখুন তারা কি উত্তর দেয়। কিন্তু হিন্দু বা খ্রিস্টান উগ্রবাদী ব্যক্তি রাষ্ট্রর ধর্মনিরপেক্ষতা নিয়ে মাথাব্যথা নেই। ভারতে আমি শুনিনি তাদের সংবিধানের ধর্মনিরপেক্ষতা কখনো হুমকির সম্মুখিন হয়েছে। কোন ধর্ম সম্প্রদায়ের হয়ে ওকালতি করতে আমি আসিনি। কে কার চাইতে উন্নততর সে প্রচারণা করতে ব্লগে আসিনি। রাজনৈতিক ইসলামে সারা পৃথিবী আজ অস্থির। সেই ঢেউ এসে বাংলাদেশেও লেগেছে। মুক্তিযুদ্ধের চেতনা তাই এখন ছিন্নভিন্ন। এজন্যই বলেছি যদি এদেশে ৯০ ভাগ মুসলিম না হতো…
@সুষুপ্ত পাঠক,
আপনার কাছে এই বিশেষ চেতনাটি সম্পর্কে জানতে চাচ্ছি। এই চেতনাটা মানে কী? এর দ্বারা কী বোঝায়? তারপরে আপনার মুসলমানদের সম্পর্কিত যে কিছু রেসিস্ট কথা বললেন সেই ব্যাপারে আপনি চাইলে কথা বলা যাবে।
@সাইফুল ইসলাম,
আপনার সমস্যাটি বুঝলাম না। একটু বুঝিয়ে বললে কৃতার্থ থাকব।
@সাইফুল ইসলাম,মুক্তিযুদ্ধের চেতনা নিয়ে আপনার ভিন্নমত এবং সাংঘাতিক এ্যালার্জি আছে এটা আগেও আপনার বিভিন্ন মন্তব্যে দেখেছি। আমি একদম অল্প কথায় বলতে চাই (আমি নিজে আমার অল্প জ্ঞানে যা বুঝি) ৪৭ সালে যে চেতনায় পাকিস্তান গঠন করেছিল তার থেকে বিপরীত চেতনার নামই মুক্তিযুদ্ধের চেতনা। যদিও স্বয়ং বঙ্গবন্ধু দেশ স্বাধীন হওয়ার পর এই চেতনা বাস্তবায়ন করেননি। তাঁর এআইসিতে যোগ দেয়ার জন্য পাগল হয়ে যাওয়া তার একটি উদাহরণ। এটা ছিল আরব ভাইদের খুশি করা। বুঝানো বাংলাদেশ ভারত ও সোভিয়েত ঘেষা হলেও বা তাদের সাহায্যে স্বাধীন হলেও আর তাদের মিত্র হলেও মুসলমানই আছে। মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বলতে আমি বুঝি, ধর্মের ভিত্তিতে যে রাষ্ট্র আমরা গঠন করেছিলাম সেই ভুল আর সাম্প্রদায়িকতা থেকে বেরিয়ে এসে রাষ্ট্রকে ধর্মনিরপেক্ষায় নিয়ে যাওয়া। রাষ্ট্রু পরিচালনায় ধর্মকে প্রাধান্য না দেয়া।… এখন কেউ যদি বলে মুক্তিযুদ্ধের কি চেতনা-ফেতনা বলে আমি তার কিছুই মানি না… কিংবা এইসব বালছাল… এভাবে কেউ কেউ বলে ক্ষোভ প্রকাশ করে। বলতেই পারে, কিন্তু আমাদের মুক্তিযুদ্ধ কোন আদর্শ চেতনা ছাড়া ‘উঠ ছেরি তোর বিয়া বলে’ শুরু হয়ে গিয়েছিল না। স্বাধীনতার যে স্বপ্ন ২৩ বছরের পাকিস্তানে নিভৃতে, প্রকাশ্যে এদেশের বুদ্ধিজীবী, ছাত্রসমাজ লালন করে আসছিল সেটা শুধুই পাকিস্তানী বঞ্চনা, চাকরীর বৈষম্য, অর্থনীতিন বৈষম্যই ছিল না। এগুলো অবশ্যই কাজ করছে সর্বসাধারনের কাছে। কিন্তু একটা নতুন স্বাধীন রাষ্ট্রর চেহারা কেমন হবে, কি তার পরিচয়, কেমন সে আদর্শ আর চেতনা ধরবে সেটা স্বাধীনতা আন্দোলনের নেতৃত্রকারীদের ছিল। পাকিস্তান সৃষ্টি হযেছিল যেই চেতনা আর আদর্শ থেকে বাংলাদেশ সৃষ্টি হয়েছিল তার বিপরীত আদর্শ আর চেতনা থেকে। এখন সেটা বাস্তবে ছিল কিনা, নেতারা কতটা ভন্ড কিংবা কথিত মুক্তিযুদ্ধের চেতনা আমি মানি না এসব অন্য আলোচনা। আমি মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বলতে এভাবেই বুঝে আসছি। সেই চেতনা একদিন বাংলাদেশ ধারন করুক এই আশা আর স্বপ্ন দেখি।
আর ইসলাম সম্বন্ধে আমার পরিস্কার বক্তব্য, এই ধর্মটা পৃথিবীর যে প্রান্তে গিয়েছে সেখানেই তার আরব ভাষা সংস্কৃতির উপনিবেশন চালিয়েছে। অন্যের সংস্কৃতিকে সে পাপ গুনার কাজ বলে সেই জাতিকে সেসব থেকে দূরে সরিয়ে রেখেছে। বাংলাদেশে আমরা দেখি বাঙালী মুসলমান তার নিজের ঐতিহ্য আর সংস্কৃতিকে বলছে হিন্দুয়ানী!…
@সুষুপ্ত পাঠক,
এ দুনিয়ায় আর কোন ধর্মকে তাহলে দেখেননি, যে নিজস্ব সংস্কৃতির উপনিবেশ গড়ে তুলতে চেয়েছে? এমন আর কোন ধর্মও তাহলে আপনার চোখে পড়েনি, যারা অন্যের সংস্কৃতিকে পাপ-গুনার কাজ বলে দূর দূর করে তাড়িয়ে দেয়? সাংস্কৃতিক উপনিবেশ গড়ার কাজটিতে তাহলে ইসলাম ধর্মেরই মনোপলি??
দেখুন ইতিহাস বড় বিচিত্র বিষয়। হয়ত আপনার অভিজ্ঞতায় আজকের দুনিয়ার ইসলামি মৌলবাদই সবচেয়ে বিষ-বাষ্প নির্গত করছে, কিন্তু শুনলে আশ্চর্য হবেন, অন্য ধর্মের সংস্কৃতিকে ইসলাম ধর্মই সবচেয়ে বেশী আত্তীকরণ করেছে। অন্য যেকোনো ধর্মের তুলনায়। ইতিহাস ঘাঁটলেই তা পাবেন।
@সুষুপ্ত পাঠক,
“মুক্তিযুদ্ধের চেতনা” নিয়ে আমার ভিন্নমত আছে। কিন্তু আইরনি হল যারা “মুক্তিযুদ্ধের চেতনা”র কথা দিনে দু-দশবার না বললে রাতে ঘুমাতে পারে না, পারে না ঢেকুর তুলতে তুলতে দেশপ্রেমের চর্চা করতে, তাদের মধ্যে প্রায় ১০০ ভাগই তথাকথিত “মুক্তিযুদ্ধের চেতনা” নামক জিনিসটাতে বিশ্বাস করে না। মানে না। মানতে পারে না। বরঞ্চ আমি যা দেখি, আমার আদর্শগত দিক থেকে দেখলে আমারই “মুক্তিযুদ্ধের চেতনা” মানা কিছুটা হলেও সম্ভব। কিন্তু এই চেতনা চেতনা বলে মুখে ফেনা তুলে ফেলা দেশপ্রেমিকরা তা পারে না।
আপনার ভাষায় “মুক্তিযুদ্ধের চেতনা” মানে ধর্ম ভিত্তিক যে পাকিস্তান গড়ে উঠেছিল(যদিও এটা মোটেই প্রকৃত সত্য নয়) তার বিরোধীতা(??) করে যে চেতনা বোধ থেকে বাঙলাদেশের জন্ম হল সেটাই নাকি “মুক্তিযুদ্ধের চেতনা”। এবং এটা আপনার ব্যাক্তিগত ধারনা বা ইন্টারপ্রিটেশন। তাহলে কি এটা ধরে নেব যে আপনার ব্যাক্তিগত ধারনা নিয়ে আপনি একটা জাতির মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসের তাফসির করে যাচ্ছেন?
৭১ এর মুক্তিযুদ্ধের যে ধারনা, যে প্রেক্ষাপট(আপনার ভাষায় “চেতনা”) সেটা আপনার ভাষায় কী? ধর্ম!! দুঃখিত ধর্ম নয়, ধর্মের বিরোধীতা। তাহলে ৬ দফা, ১১ দফা এগুলো কী? এগুলো কারা দিয়েছিল? মাওলানা ভাসানী যে মুজিবের বুর্জোয়া রাজনীতির বৈশিষ্টানুযায়ী শেষ পর্যন্ত ক্ষমতার জন্য আলোচনায় না যেয়ে ভোটের আগে ভাত চাই কথাগুলো বলেছিল(যদিও আমি মনে করি এটা ছিল ভয়ংকরতম ভুল, কিন্তু আপনার ব্যাক্তিগত মতের মতন সেটা ধর্মীয় কারনে নয়, কৌশলগত কারনে।) সেগুলো কী ছিল? ধর্ম বিরোধীতা করে আন্দোলন? তাহলে এটাকে মুক্তিযুদ্ধ বলা হচ্ছে কেন? আজকে কি বাঙলাদেশ নাস্তিকদের দেশ হয়ে গ্যাছে? সেই হিসেবে বড় জোর মুক্তিযুদ্ধকে একটা ধর্মীয় আন্দোলন বলা যায়। তৎকালীন পশ্চিম পাকিস্তানিরা কি পূর্ব পাকিস্তানকে ধর্ম দিয়ে চেপে ধরেছিল? না সবাইকে মোল্লা বানানোর কারখানা তৈরী করছিল? মুক্তিযুদ্ধের সাথে ধর্মের সম্পর্কটা ঠিক কোথায়? এইরকম কোন রেফারেন্স বা আপনার “মুক্তিযুদ্ধের চেতনা”টা যে বস্তুত পাকিস্তানের ধর্মভিত্তিক রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার বিরোধীতা সেই রকম কোন ঐতিহাসিক রেফারেন্স কি দেখানো যায়? আমি জানতে আগ্রহী। কারন একজন সুষুপ্ত পাঠকের গুপ্ত জ্ঞ্যানের ব্যাক্তিগত ধারনা আসলেই কোন আলোচনার যোগ্যতা রাখে না।
“মুক্তিযুদ্ধের চেতনা” নিয়ে যে ব্যাখ্যা দিলেন, চিন্তার সেই লেভেল থেকে মুজিবের বিরুদ্ধের এর চাইতে ভালো, ক্রেডিবল ধারনা বা অভিযোগ বা ব্যখ্যা যে করতে পারবেন সেই আশা আমি করি না। যার জন্য অবাক হলাম না। ১৯৭১ এ আমাদের স্বাধীনতা আসল। ১৯৭৩ এ আরব বিশ্বের তেল অবরোধের কারনে যে গ্লোবাল অর্থনৈতিক সঙ্কটের সৃষ্টি হয় সেখান থেকে বের হওয়ার জন্য প্রয়োজন ছিল আমাদের মতন সদ্য জন্মপ্রাপ্ত দেশের জন্য, আরব রাষ্ট্রগুলোর অর্থনৈতিক সাহায্য। কিন্তু সেটা পাওয়া যাচ্ছিল না কারন আমরা ওআইসি’র সদস্য ছিলাম না এই কারনে। এখানেই ওআইসি’র সদস্যপদের প্রশ্নটা আসে। এবং আরো আসে ১৯৫ জন যুদ্ধাপরাধী মাফ করে দেয়ার ইতিহাস। মুসলমানি তত্ত্ব আপনার কাছে বেশি কনভিন্সিং লাগছে বোধ করি এই কারনেই যে আসল সত্য জানতে গেলে ইসলামের বিরুদ্ধে ব্যাক্তিগত যে আক্রোশ সেটা মেটানো যাচ্ছে না।
দেশের তৎকালীন ঐ সময়ে মুজিবের কাছে অর্থনৈতিক দিকটিই মূখ্য ছিল। শুধু মুজিব না, আপনি থাকলে আপনারও চিন্তা ভাবনা একই রকম হত। এই প্রেক্ষাপট মাথায় না রেখে আপনি যদি আপনার “মুসলমানিত্ব” তত্ত্বের সাহায্যে ব্যাখ্যা করতে যান তাহলে শুধু অসত্য বাক্য গঠনই নয়, গদগদ ভাষায় যেই মুজিবকে “বঙ্গবন্ধু” বলছেন তার দিকেও ইতিহাস অস্বীকার করে মিথ্যা অভিযোগের আঙুল তোলা হয়। ইসলামের বিরুদ্ধে ব্যাক্তিগত ক্ষোভ ঝাড়তে গিয়ে আপনার “মুক্তিযুদ্ধের চেতনা” নামক ন্যারেটিভের যে নবী সেই নবীর দিকেই ভুল অভিযোগ তুলতে হচ্ছে।
আপনার এই “মুক্তিযুদ্ধের চেতনা”র সাথে ধর্ম বিরোধীতার আরেকটা সমস্যা আছে যেটা আমি বুঝতে চাই, আপনার চিন্তার ধারাটা কেমন এই জায়গাতে বা আপনি কীভাবে এই প্যারাডক্স মোকাবেলা করেন। আপনার মতে “মুক্তিযুদ্ধের চেতনা” যদি ধর্মবিরোধীতাই হয় তাহলে সেই ধর্মবিরোধীতা তো মুসলমানরাই করেছিল? যে মুসলমানরা ধর্মের বিরোধীতা করে, সাম্প্রদায়িকতার বিরোধীতা করে একটা নতুন দেশ বানিয়ে ফেলল এবং সেই দেশ বানানোর প্রক্রিয়া নিয়ে আপনি আবেগের জলকেলিও খেলছেন কিন্তু যারা বানালো তাদেরকেই আপনি বলছেন সাম্প্রদায়িক, তাদেরকেই বলছেন অসহিষ্ণু(কারন আপনার বক্তব্য অনুযায়ী মুসলমান=সাম্প্রদায়িকতা, বিচ্ছিন্নতাবাদী)। ব্যাপারটা আমার কাছে পরিষ্কার না। আপনি পরিষ্কার করবেন আশা করছি। কিছু মুসলমান একসাথে হলেই নাকি নিজেদের আইনের কথা বলে, নিজেদের দেশের কথা বলে, তাহলে ৭১-এ যে মুসলমানরা এই দেশ বানানোর কথা বলেছিল, এই দেশের জন্য জীবন দিয়েছিল তাদের বিষয়ে আপনার কী মতামত? তারা মুসলমান ছিলেন না? তারা সাম্প্রদায়িক ছিলেন? তাহলে সেই “মুসলমান”দের করা একটা যুদ্ধ নিয়ে আপনার এই অতি আবেগের কারন কী? আবেগের পরিমাণ এতই যে একটু এদিক সেদিক কথা বললেই কতলের প্রশ্ন আসে। হয়ে যায় জামাত, জঙ্গী। জানাবেন আশা করছি।
প্রথম কথা হচ্ছে আপনি ইসলাম সম্পর্কে যাই বলেন তা নিয়ে আমার কোন মাথা ব্যাথা নেই। আপনার উপরে বলা রেসিস্ট বক্তব্যগুলো ইসলাম সম্পর্কে ছিল না। ছিল মুসলমানদের সম্পর্কে। সো, এই ক্ষেত্রে একজন সুস্থ এবং নাপাগল মাথার মানুষ হিসেবে প্রতিবাদ এবং আপনাকে শুধরে দেয়ার চেষ্টা করা আমার দায়িত্বের মধ্যে পড়ে।
উপরে করা আপনার পরিষ্কার অভিযোগগুলোই হল পরিষ্কার প্রমান যে আপনি ইসলামের প্রতি, মুসলমানদের প্রতি বিদ্বেষ পোষন করেন। এবং এটা রোগে পরিণত হয়েছে। যাই হউক, আপনি নিজেকে একজন সংস্কৃতিবান মানুষ হিসেবে প্রমান করতে চাচ্ছেন। আপনি বাঙালি সংস্কৃতির ধারক ও বাহক। এবং আমি সেটা বিশ্বাসও করি। আপনি সংস্কৃতির গতিশীলতায় বিশ্বাসী।
আপনার কাছে প্রশ্নঃ
অফিসে বা কোথায় বেড়াতে গেলে কী পড়ে যান? সাধারনত কী পড়েন? ধুতি পাঞ্জাবী নাকি জামা প্যান্ট? আমি বিশ্বাস করছি আপনি ধুতি পাঞ্জাবীই পড়েন। কারন আপনি বাঙালি সংস্কৃতির মানুষ। আপনি নিজ সংস্কৃতির বাহক এবং ধারক।
যদি আমার নিষ্পাপ বিশ্বাসকে ধুলোয় লুটিয়ে দিয়ে জামা প্যান্ট পড়ে যান তাহলে কেন যান? এই জামা প্যান্ট ভারতীয় উপমহাদেশে কীভাবে আসল? এর সাথে বাঙালি সংস্কৃতির সম্পর্ক কী?
যদি জামা প্যান্ট পড়তে কোন আপত্তি না থাকে এবং সেটা যদি পশ্চিমা উপনিবেশিকতা না হয় এবং তাতে যদি আপনার কোন আপত্তি না থাকে তাহলে মুসলমানরা পাঞ্জাবী পাজামা টুপি পড়ে হাটলে আপনার কাছে সেটাকে ইসলামের উপনিবেশিক দিক এবং তাতে আপনি আপত্তি করছেন কেন? এমন দ্বীচারিতার ব্যাখ্যা কী?
আরেকটি গুরুত্বপূর্ন কথা বলতে ভুলে গেছি যদিও সেটাই আগে বলা উচিত ছিল। আপনি মুসলমান বলতে কাদের বোঝান? এই দেশের বেশির ভাগ মানুষ এমনই দরিদ্র যে ভাতের টাকা জোগাড় করতেই হিমশিম খেতে হয়। ধর্মের বিলাসিতা তাদের নাই। আপনি যদি বলেন বাঙলাদেশের কৃষকরা জঙ্গী, আপনি যদি বলেন বাঙলাদেশের শ্রমিকরা জঙ্গী, আপনি যদি বলেন বাঙলাদেশের নারীরা জঙ্গী তাহলে অনুরোধ করব এই সমস্ত পাগলামী বাদ দিয়ে দেশ ঘুড়তে বেড়িয়ে যান, অন্তত দেশের খবর রাখতে চেষ্টা করুন। আরেকজনের দেখানো চোখে না। নিজের চোখে। দেখুন, মানুষের দূরাবস্থা। তাহলে বুঝবেন বেহেস্তের স্বপ্নের চাইতে পরের দিন কীভাবে চাল জোগার করবে সেই দুঃস্বপ্নই এই মুসলমানরা বেশি দেখে।
তাহলে আপনার এই মুসলমানরা কারা? এমনকি মধ্যবিত্ত জনগন তার সুবিধাবাদী চরিত্রের জন্যই এই আপনার অঙ্কিত “মুসলমান” হবে না। উচ্চবিত্তরা শোষন বজায় রাখার মেশিন চালু রাখতেই দিন পার করছে। তাহলে আপনার এই মুসলমানরা কারা? এরা সমাজের অতি মুষ্টিমেয় কিছু মানুষ। আপনি যখন এই মুষ্টিমেয়দেরকেই বোঝাতে চাচ্ছেন এরাই বেশিরভাগের প্রতিনিধিত্ব করে তখন আপনার অসৎ উদ্দেশ্য অত্যন্ত পরিষ্কারভাবেই ধরা পরে যায়। এখন আপনিই বলুন আপনি কি আসলেই কোন উদ্দেশ্য নিয়ে এই বয়ান করতে এসেছেন নাকি না বুঝেই এসব কথা বলে যাচ্ছেন?
একটা কথা মনে করিয়ে দিচ্ছি, আমি এখানে মুসলমানদের কোন কৃত কর্মের পক্ষে কিংবা মুসলমানদের পক্ষে সাফাই গাইতে আসি নি। তবু বলে দিচ্ছি এই কারনেই যে, আপনি বা আপনাদের মতন যে কারো সাথে কথা বলতে গেলেই প্রথম যে কথাটা শুনতে হয় সেটা হল ইসলামের এপোলজিস্ট, বা মুসলমানদের কৃতকর্মের সিমপ্যাথাইজার। উপরে একই কথা ফরিদ ভাই বলেছেন। সুতরাং আশা করব এই কথাটা মনে রেখে আমার মন্তব্যের জবাব দেবার জন্য।
আপাতত এইটুকুই।
@সাইফুল ইসলাম, প্রায় একটা পোষ্টই লিখে ফেলেছেন আমার জন্য! আমি গর্ববোধ করছি। আমার মত এলেবেলে সুষুপ্ত পাঠকের জন্য মুক্তমনার তরকা ব্লগাররা সময় নষ্ট করছেন। একই সঙ্গে শঙ্কিত বোধও করছি এই ভেবে যে, মুক্তমনার ব্লগারদের বুদ্ধি ও প্রতিভার যে লেভেল তাতে আমার মত চুনোপুটি তাল হারিয়ে খেই না ফেলে! বিশেষত এতবড় মন্তব্যের উত্তর দেয়া, যে উত্তর যুতসইভাবে দিতে না পারলে হাসির ফোয়ারা বয়ে যাবে মুক্তমনায় বড় বড় বুদ্ধিজীবীদের মধ্যে। এই মুক্তমনা আমার প্রিয় একটা সাইট। এখানে পড়ে ও লিখে আনন্দ পাই। বেশি ভাল লাগে এখানকার নিয়মিত সব লেখকদের জ্ঞান আর পড়াশোনার লেভেল দেখে। আর তাদেরই একজনের সঙ্গে তর্কে জড়িয়েছি আমি! যাই হোক সব মিলিয়ে মন্দ নয়।
সাইফুল ভাই,
এই পোষ্টে আমি একদম শুরুতে যে মন্তব্য শুরু করেছিলাম যার জন্য আমাকে ইসলাম ও মুসলমান সম্পর্কে বিদ্বেষি বলা হচ্ছে, আমি বলেছিলাম, যদি আমরা এই দেশে ৯০ ভাগ মুসলমান না হয়ে অন্য কোন ধর্মের হতাম তাহলে মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে পাহাড়া দিয়ে রাখতে হতো না। সেখান থেকে আপনি যোগ দিলেন। আপনার মূল সমস্যাই হচ্ছে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা নিয়ে। ওআইসির সদস্য হয় অবশ্যই (আমার ভুল না হলে) ‘মুসলিম দেশ’গুলো, বাংলাদেশ ‘মুসলিম দেশ’ হয়েই ওআইসি’র সদস্য হয়েছিল। ১৯৫ জন যুদ্ধাপরাধীদের ক্ষমা করতে হয়েছিল আরব ভাইদের জন্য কারণ তারা মুসলমান। মুক্তিযুদ্ধের আগে পরে ধর্ম ছিল তবু কেন আমি মুক্তিযুদ্ধের মধ্যে ধর্ম নিয়ে এলাম! গোলাম আযমকে নিয়ে লেখা পোষ্টে পোষ্টের লেখক যে খেদ দেখালেন, বৃথা এই স্বাধীনতা, বৃথা এই ১৬ ডিসেম্বর! খেদটা কাদের উপর? বিএনপি যারা করে তাদের জন্য? জামায়াত যারা করে তাদের প্রতি? যারা এই দুটি দল করে মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে তাদের মূল্যয়নটা কি? মুসলমানদের কমজোরি করার জন্যই ভারত পাকিস্তান ভেঙ্গেছিল। এখন তো দেখছি সেটাই সত্য তাহলে! পাকিস্তান ভাঙ্গার কোন প্রয়োজনই ছিল না। কারণ যে সব অথনৈতিক বঞ্চনা ছিল পাকিস্তানে সেসব তো এখনও আছে। পৃথিবীতে চিরকালই তা থাকবে।
এই পোষ্টের একদম প্রথম মন্তব্যটা আমার ছিল এইরকম:
অর্থাৎ বর্তমান অবস্থার কথাই আমি বলছিলাম। যারা এই বিতর্কটা পড়ছেন তারাও খেয়াল করছে ব্যাপারটা। ১৯৭১ সালের বাংলাদেশ আর আজকের বাংলাদেশ এক না। পুরো বিশ্বের পরিস্থিতির অন্য রকম হয়ে গেছে। অথচ আপনি বলছেন:
আজ যদি আমরা পাকিস্তানের সঙ্গে থাকতাম আর এইরকম স্বাধীনতার ডাক আসতো, সেই ৭১ সালেই একদল বলতে শুরু করেছিল ইসলামের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র। ধর্মযুদ্ধ বলে আখ্যা দিয়েছিল স্বাধীনতাকামীদের বিরুদ্ধে। কিন্তু ৭১-এ রাজনৈতিক ইসলাম বাংলাদেশ তো বটেই বিশ্বব্যাপী জনপ্রিয় হয়ে উঠেনি। আগে যুব সমাজ মানেই বাম ঘেঁষা হতো, এখন যুব সমাজ মানেই ডান ঘেঁষা। আজকের দিনে মুক্তিযুদ্ধের ডাক শেষ পর্যন্ত শাহবাগ আন্দোলনের মতই হেফাজতের তোড়ে ভেসে যেতো!
আর প্রকৃত ইসলাম কি বলে সেসব তো আমরা মুক্তমনা পড়েই জানতে পেরেছি। 🙁 ইসলাম বুকে কি ধারন করে রাখে, একজন মুসলিমকে কি করতে বলে, সমস্ত বিশ্বের জন্য ইসলাম শান্তির না অশান্তির সেসব মুক্তমনার আর্কাইভে রাখা আছে। ইসলাম সম্বন্ধে আমার ধারনা এরকই। আর সেই রাজনৈতিক ইসলামের প্রচার-প্রচারণায় বাংলাদেশে হেফাজতের উত্থান। এখন কেউ যদি বলে এইসব মালমশলা ইসলামের মধ্যেই আছে তাহলে তাকে কি বলা হবে? আমি যেমন এই পোষ্টে গো. আযমের বিচারের প্রসঙ্গে বলেছিলাম মুসলিমরা ধর্মের কারণেই তাদের প্রতি সহানুভূতিশীল তাহলে আমি অসুস্থ! আমি ইসলামের রাক্ষস ছাড়া আর কিছু দেখতে পাই না। এসব পড়ে আমরা ইসলাম সম্বন্ধে বিদ্বষী হয়ে পড়ছি! 🙁 আমাদের উচিত আসলে এসব পড়ে ইসলাম সম্বন্ধে ভালবাসা আরো বেশী করে বাড়ানো। ফিলিস্তিনে ইহুদীরা মসলমান হত্যার উৎসব শুরু করলে আমরা এরপর থেকে বলবো… কি বলবো? ইহুদী ধর্ম আর ইহুদীদের তো দোষ দেয়া যাবে না।
প্রথম কথা ধুতি-পাঞ্জাবী কিন্তু বাঙালী পোষাক না! এমনকি যারা বাঙালী নারীর পোষাক বলে শাড়িকে নিয়ে আদিখ্যেতা করেন তারাও জানেন না এটাও বাঙালী নারীর পোষাক না। ঠাকুর পরিবারের বিশেষ অবদান আছে এই পোষাকটির বাঙালী নারীর আব্রু রক্ষার জন্য। যাই হোক সেটা অন্য প্রসঙ্গ। সাইফুল ভাই, আমি প্যান্ট-শার্ট পরেই অফিসে যাই। :)) পশ্চিমের এই পোষাক সারা পৃথিবী গ্রহণ করেছে অবশ্যই উপনিবেশিক কারণ তো বটেই, এছাড়াও এই পোষাক সাচ্ছন্দ- ফ্যাশানেবল। আর আমার পাশেই যে টুপি, পাঞ্জাবী-পায়জামা পরে অফিসে যান তাতে আমার আপত্তি কোথায় দেখলেন? ওহো্, আপনার মাইন্ডে লেগেছে ইসলামকে সংস্কৃতির উপনিবেশন চালায় বলাতে? আপনাকে ছোট্ট প্রশ্ন: আমাদের আদিবাসী যেমন গারো, চাকমা বা এই জাতীয় আরো যারা আছে তাদের মেয়েদের যে পোষাক তা ইসলাম মেনে নিবে কি? তাদের মধ্যে কেউ মুসলিম হলে তার পোষাক পাল্টে যাবে না? সে নিজেই প্রচার চালাবে এতকাল সে যা পরে এসেছে তার লজ্জাজনক, পাপের। এর জন্য তাকে দোযগে যেতে হবে। তার নামটাই ইসলাম খেয়ে নিবে। সে পাবে একটা আরবী নাম। তার সংন্কৃতির অবাদ নারী-পুরুষের মেলামেশা, একসঙ্গে নাচগান ইসলাম সমর্থন করবে কি? এসব তো জাহেল লোকদের কাজ! আমার যুক্তিতে ভুল থাকলে ধরিয়ে দিবেন। বাঙালীর (তা যেখান থেকেই ধার করা হোক,) নিজস্ব সংস্কৃতি সেটা সে পালন করুক বা না করুক, আমি নিজেই সেসবের ধার ধারি না, আজ থেকে ৫০ বছর পরে আমাদের পোষাকে, খাদ্যে প্রচুর চেঞ্জ আসবে। এসব স্বাভাবিকভাবেই আসবে। সময় যাকে স্থান দিবে সে থাকবে, যাকে চলে যেতে হবে সে চলে যাবে। কিন্তু কেউ পাপ-পূণ্য বলে কাউকে খাটো করবে তাকে আমি কি বলতে পারি?
মুসলমান বলতে আমি মুসলমানকেই বুঝাই। হেফাজতে ঢাকা অবরোধের দিনে নিজের চোখের দেখেছি গরিব শসা বিক্রেতা, পানি বিক্রেতা বিনা মূল্যে বালাচ্ছে হুজুরদের খাওয়ার জন্য! আমি তাদের চিনি-জানি। দোষরা তাহলে শফি হুজুরদের? মুসলমান বলতে আমি তাদেরই বুঝাবো? কিন্তু আমি তো তাদেরও দোষ দেখি না! তারা আর যাই হোক, কোরআন-হাদিসের বাইরে যায় না…। দেদ
দেশে আছি, দেশের মানুষের পাশে আছি বলেই দুঃখ আর কষ্টটা বেশি লাগে। ঐ আপনার কৃষক আর শ্রমিকদের জন্য কষ্ট লাগে কারণ বাংলাদেশে রাজনৈতিক ইসলামের সবচেয়ে বড় পাওয়ার হাউস এই মুহূর্তে তারাই।
না, না এতবড় অপবাদ আমি আপনাকে দিবো না! তাহলে সবাই যে আপনাকে মুসলমান বলে ফেলবে!
সাইফুল ভাই, শুধুমাত্র এইদেশে মুসলমান ধর্মের মানুষ সংখ্যাগরিষ্ঠ বলেই আগামীতে বাংলাদেশ বাংলাস্থানে পরিণত হবে! আগেও বলেছি আবারো বললাম। ব্যক্তিগতভাবে কারা বেশি ধর্ম নিয়ে গোঁড়ামী করে, কারা বেশি ধর্ম ধর্ম করে, কাদের দেশে ধর্ম নিয়ে উম্মাদনা বেশি হয়, সেসব উদাহরণের আমার প্রয়োজন নেই। এতে মুসলমানরা এক নম্বরে থাকলেও আমার বলার কিছু নেই। সমস্যাও দেখি না। কিন্তু ইসলাম শুধু ব্যক্তির ধর্ম নয়। ইসলাম রাজনীতির কথা বলে। সে বলে রাষ্ট্র গঠন করো। আল্লার আইন চালু করো। আজকে বাংলাদেশে সেই প্রচার-প্রচারণা জোর কদমে চলছে। আপনার ঐ কৃষক-শ্রমিক দুবেলা সেসব শুধু গিলছেই না সেরকম একটা সময়ের জন্য পাওয়ার হাউজের শক্তিও বৃদ্ধি করছে। বাংলাদেশে কোনদিন ইসলামীক শাসন আসলে তা ভোটের মাধ্যমেই আসবে। কোন বিপ্লব প্রয়োজন হবে না।
আর আপনি যখন মুক্তমনার একজন পুরোনো লেখক, তাই বলছি, এডমিনদের অনুরোধ করবেন, মুক্তমনায় যে সব লেখায় মুহাম্মদে একজন শোষক-খুনি, ইসলামকে সমস্ত পৃথিবীর জন্য চির অশান্তির বলে চিহ্নিত করেছে, বর্তমান পৃথিবীর জঙ্গিবাদের জন্য ইসলাম ও মুসলমাদের লালন করা আদর্শকে দায়ী করা হয়েছে, সেসব পোষ্ট ব্লক করে দেয়। কারণ এসব পড়েই ভবিষ্যতে উগ্র অসুস্থ নাস্তিক উৎপাদীত হবে। সেটা ভদ্র-সুশীল নাস্তিকদের ভাল লাগার কথা নয়! :-Y
@সুষুপ্ত পাঠক,
আমার মূল সমস্যাটা “মুক্তিযুদ্ধের চেতনা” নয়। আপনি বুঝতে ভুল করছেন। আমার মূল সমস্যা “মুক্তিযুদ্ধের চেতনা”কে ধর্মবিরোধীতা বলাকে। আপনি কোথায় পেলেন এই জিনিস আপনার কাছে আমি তার রেফারেন্স চেয়েছিলাম আপনি দেখাতে পারেন নি। কিন্তু একই গান গেয়ে চলেছেন। অনেক সময়ই এমন হয় রেফারেন্সের চাইতে উপলব্ধি বা বিশ্লেষনটাই মূখ্য হিসেবে দেখা দিতে পারে। কিন্তু সেটার জন্য ইতিহাসের ধারাবাহিকতা, বস্তুগত উপযোগীতা ইত্যাদি বিভিন্ন জিনিস ব্যাখ্যার প্রয়োজন রয়েছে। যা দেয়া তো দূরের কথা আপনি জানেন বলেও আমার মনে হচ্ছে না। ঠিক এই জায়গাতে দাঁড়িয়েই আমি আপনার বলা “মুক্তিযুদ্ধের চেতনা” নিয়ে সংশয় প্রকাশ করছি। আসল “মুক্তিযুদ্ধের চেতনা” নিয়ে নয়। সেটা নিয়েও আমার ক্রিটিক আছে, বাড়তি বলার আছে। কিন্তু আপনার “মুক্তিযুদ্ধের চেতনা” মতন সেটাকে আমি ফেলে দেবো না। ক্রিটিকের মাধ্যমে আলোচনা করতে রাজি।
আপনার সমস্যা হচ্ছে বাঙলাদেশের ইতিহাস, এর জন্মের কথা, এর গড়ে ওঠার ইতিহাস সম্পর্কে বিন্দুমাত্র কোন ধারনা না রেখে দিন দুয়েক ইসলামের সমালোচনা পড়ে, নাস্তিক হতে পারলেই একটু জ্ঞ্যানী হওয়া যায়, অবচেতন মনের এই ধারনা দিয়ে চালিত হয়ে নাস্তিকতা দিয়েই জগতের সমস্ত কিছু বিচার করতে বসেছেন। আর ইসলাম যেহেতু বর্তমান দুনিয়াতে একটা ফ্যাক্টর সেই হিসাবে আপনার দুই যোগ দুই সমান চার বের করতে সময় লাগছে এক মাইক্রো সেকেন্ড। ক্যালকুলেটরে চাপ দিয়েই যখন হিসাব মিলিয়ে ফেলতে পারছেন তখন আর হাতে যোগ করার দরকার কী? এই ধারনা থেকেই আপনি বাঙলাদেশের ইতিহাসের কোন কিছু না জেনেই এর সমস্ত ইতিহাস ব্যাখ্যা করতে বসে গেছেন।
তারপরেও আপনার কথা মেনেই নিলাম যে, মুজিব মুসলমানিত্বের প্রাবল্যে, ইসলামের জোশে ওআইসি’র সদস্যপদ নিয়েছিলেন। কিন্তু আম্রিকার সাথে মুজিবের সম্পর্কের কারন কী? যে আম্রিকা মুক্তিযুদ্ধে বিরোধীতা করেছে, সপ্তম নৌবহর পাঠিয়েছে, তাদের সাথে যুদ্ধের কিছু দিন পরেই মুজিব সম্পর্ক ভালো করে ফেলল। এমন কি তাজউদ্দিন কিছু কড়া ভাষায় কথা বলার পরে তাকে মন্ত্রী সভা থেকেই পশ্চাদ দেশে লাথি মেরে বের করে দেয়া হল। একটা ক্রিশ্চিয়ানের জন্য!!!!! আর সবচাইতে বড় কথা যেটা, ভারতের সাথে মুজিব এবং তত পরবর্তী আম্লিগের লদকালদকির মূল প্রেরনা কী? এই দুই মালাউন, ক্রিশ্চিয়ানের সাথে তো মুসলমানদের ঠিক যায় না। এই ব্যাপারে আপনার মতামত শুনতে আগ্রহী আমি।
আপনিই আমাকে বলেন কাদের উপরে। এই ক্ষোভটা আপনার উপরে, আমার উপরে? উনার ক্ষোভটা কার উপরে সেটা তো অত্যন্ত পরিষ্কার। যেই দেশের সরকার, দেশটা জন্মের বিরোধীতা করেছে কিছু মানুষ তাদের বিচারের রায় নিয়ে সমঝোতা, রাজনৈতিক হিসাব নিকাশ করছে সেই দেশের উপরে তাঁর ক্ষোভ। কিন্তু এখানে এই দেশটা কি জনগনের প্রতিনীধিত্ব করে? না তো! যদি জনগনের প্রতিনীধিত্বই করত তাহলে বিচার হয়ে যেত আরো বহু বছর আগেই। আপনি দেশ বলতে জনগনকে বুঝবেন(এই বিশেষ ক্ষেত্রে) সেটা সহজেই বোঝা যায়। যেভাবে বাঙলার মুটে মজুর, শ্রমিক, কৃষক, কর্মজীবি নারীদের জঙ্গী বানিয়ে দিচ্ছেন আপনার একেকটা ঐশী বানীর মাধ্যমে, তাতে এখানে দেশ বলতে দেশের জনগনকে বোঝাবেন সেটাই স্বাভাবিক। এবং আপনার এই তত্ত্ব মতে, সরকার যে সমস্ত দূর্নীতি করেছে সেটা আসলে করছে জনগন।
পাকিস্তান এবং ইন্ডিয়ার যে ভৌগলিক অবস্থান আমাদের মুক্তিযুদ্ধ পূর্ববর্তী সময়ে ছিল সেটা ভারতের জন্য আতঙ্কজনক ছিল এটা সত্য। এটা হল একদিক। আরেকদিন হল, পশ্চিম পাকিস্তানিদের শোষন বঞ্চনা এই দেশের মানুষ আর মেনে নিচ্ছিল না(আপনার ভাষায় ধর্মীয় আন্দোলন) যার জন্য বিক্ষোভ, আন্দোলন আমাদের বাঙলাদেশ তথা পূর্ব পাকিস্তানে হচ্ছিল। আমাদের যেমন প্রয়োজন ছিল, তেমনি ভারতেরও ছিল। আমরা আমাদের হক নিয়ে আন্দোলন করেছি আর ভারত সেই আন্দোলনের ভেতর দিয়ে তার স্বার্থ আদায় করেছে। প্লেইন এন্ড সিম্পল। এই হল হাজার হাজার পৃষ্ঠা ইতিহাসের এক্কেবারে দুই লাইনের অসম্পূর্ন(বর্তমান আলোচনায় দায় মেটানোর জন্য) সামারি। আপনি এখানেযা বলছেন এই সমস্ত বক্তব্য জামাতের, যাদের পাকিস্তান বাঁচিয়ে রাখার মধ্যে নিজস্ব বস্তুগত, আদর্শগত, চেতনাগত স্বার্থ জড়িত ছিল। তারা তো ইসলামের কথা বলবেই। কিন্তু আপনার দূর্ধর্ষ চোখ গলে যে জিনিসটা বেরিয়ে গ্যাছে সেটা হল, জামাতের এই ইসলামি, মুসলমানি বক্তব্যের মুখে এই দেশের মুক্তিকামী কৃষক, শ্রমিক, নারীরা যাদেরকে আপনার এখন ফ্যানাটিক মুসলমান বলতেও বাধছে না, তারা মুতে দিয়ে দেশটা স্বাধীন করেছে। তাহলে এই ইসলামি মুসলমানিত্ত্ব তত্ত্বের ফেরিওয়ালা কারা? তাদের বক্তব্য কেন আপনি গোনায় ধরছেন? সেটা তো ওদের রণকৌশল ছিল। সেই কৌশলের বলি সাধারন জনগন হয় নাই। আপনি কেন হবেন? তাও আবার স্বাধীনতার ৪ দশকেরও বেশি সময় পরে?
আর আমাদের মুক্তিযুদ্ধের যে মূল আদর্শগত জায়গা, একটা শোষনহীন অর্থনৈতিক ব্যাবস্থা, যেটা তো আমরা আসলেই অর্জন করতে পারি নি। এই অবস্থায় আপনি বলতেই পারেন যে আমাদের আসল স্বাধীনতা আসে নাই। আমি আপনাকে স্বাগতম জানাবো। কিন্তু এই কথা বলে যখন বলবেন তাহলে তো পাকিস্তানই ভালো ছিল(আপনি বলছেন না কিন্তু হতাশ হয়ে জামাতের কথা উদ্ধৃত করছেন) তখন বোঝা যায় আপনার এই দেশের ইতিহাস সম্পর্কে জানাশোনার পরিধি অত্যন্ত ক্ষুদ্র। একটা উদ্দেশ্য নিয়ে আমরা আন্দোলন করেছি। সেই দাবীর জন্য আমরা দেশ ভেঙে নিজেদের দেশ গড়েছি। এখন দেশের গুটি কয়েক শুয়োরের বাচ্চা রাজনীতি কর্মীদের জন্য(গ্লোবাল ফ্যাক্টর অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ন এখানে, আপাতত বাইরে রাখলাম) যদি দেশ গড়ার আসল উদ্দেশ্য সফল না হয় তাহলে আমাদের আগের অবস্তায় ফেরত যেতে হবে এমন কথা কয়েক শ্রেনীর লোকেরা বলবে, পাগল, বিশেষ স্বার্থান্বেষীরা, নইলে নিজে কিছু চিন্তা করতে না পেরে অন্যের কথা তাল দেয়া পাবলিকেরা। আমি ভাবতে ভালোবাসব আপনি এর কোনটিই নন।
জানতাম এই কথাই বলবেন, কারন এছাড়া আর কোন উত্তর আপনার ঝুলিতে থাকার কথাও নয়। যাই হউক, আপনার কথামতই যদি এগিয়ে যাই, তাহলে এটা তো মানবেন যে ইসলাম, মুসলমানিত্ব, পরিস্থিতি, বস্তুগত শর্ত ইত্যাদি মেনে চলে? কারন না হলে ৭১এর মুসলমান আর ২০১৩র মুসলমানরা আলদা কেন? আপনার কথা থেকে তো এটাই মনে করা স্বাভাবিক যে মুসলমান মানেই জঙ্গী, মুসলমান মানেই অযৌক্তিকভাবে নিজেদের দেশ, নিজেদের শরিয়া আইনের কথা বলবে তাই না?
এখানে “মুক্তমনা” বলে আপনি একটি নির্দিষ্ট সত্বা বোঝাচ্ছেন। যেটা মুক্তমনা নয়। মুক্তমনায় বিভিন্ন জনের বিভিন্ন মতামত রয়েছে। মুসলমানরা যখন বলে আমি কোরানে জেনেছি সো রাইট। তখন আপনারা জ্ঞ্যানী নাস্তিকরা, ক্রিটিক্যাল রিডিং, সমালোচনা না করেই মেনে নেওয়া কেন, সঠিক নয়, এটা অন্ধ বিশ্বাস ইত্যাদি হেন তেন জ্ঞ্যান যে দেন সেটা কেন দেন? আপনার সাথে তো আমি অন্ধ বিশ্বাসী ধার্মিকদের সাথে কোন পার্থক্য দেখছি না। ধার্মিকরা ধর্মগ্রন্থের দোহাই দিচ্ছে আপনি দিচ্ছেন মুক্তমনার। মুক্তমনা যখন শুরু হয় তখন এর প্রতিষ্ঠাতারা মনে হয় দুঃস্বপ্নেও ভাবেন নি যে আজকে আপনাদের মতন ফ্যানাটিক নাস্তিকরা মুক্তমনাকে কোরানের মর্যাদা দিবে। ভাবলে হয়ত আজকে এর চেহারা ভিন্ন হত। মুক্তমনা কী বলেছে সেটা ঝেড়ে ফেলুন, আপনি কী জানেন সেটা নিয়ে চিন্তা করুন, তারপরে কারো সম্পর্কে, কোন জাতি সম্পর্কে আপনি যেমন মুসলমানদের জঙ্গী বলছেন তেমন ভয়াবহ অভিযোগ করবেন।
এমন সহজ সরল বাচ্চাদের মতন চিন্তা করেন বলেই মুসলমান সবাই জঙ্গী নইলে পোটেনশিয়াল জঙ্গী এমন অগভীর, হাস্যকর চিন্তা ভাবনা করতে পারেন। ইজরাইল, ফিলিস্তিন সমস্যাকে যে ধর্মের সমস্যা হিসেবে দেখে তার উচিত এই সমস্যা সম্পর্কে আরো জানা। ফিলিস্তিনে ইজরাইলের হামলা হলে সেটা কেন ইহুদী ধর্মের বা ইহুদীদের দোষ হবে? আমি নিশ্চিত আপনি রেসিজম এর সংজ্ঞা জানেন না। জানলে এমন কথা বলতেন না।
কত হাজার হাজার ইজরাইলি আছে যারা ফিলিস্তিনিদের পক্ষে স্লোগান দিচ্ছে সে খবর রাখেন? আবার কত ফিলিস্তিনি ইজরাইলি আম্রিকার পক্ষ হয়ে দালালী করছে সে খবর রাখেন? সমস্ত জায়গায় খালি ধর্মের লেজটা দেখতে পান। কী আজিব এই চিন্তাধারা!! আপনার কাছে অনুরোধ থাকবে ধর্মের উৎপত্তি, এর রাজনৈতিক ব্যাবহার এই সমস্ত বিষয় সম্পর্কে একটু পড়াশোনা করতে। দরকার হলে মুক্তমনায় আসা কমিয়ে দিন। কারন মুক্তমনায় এসে একেকজন অন্ধবিশ্বাসী নাস্তিক হবেন এটা মুক্তমনার কেউ চাইবে বলে আমার মনে হয় না।
প্
আপনি আপনার যুক্তিতে ভুল থাকলে ধরিয়ে দিতে বলেছেন। কিন্তু এখানেতো কোন যুক্তিই আমি দেখতে পাচ্ছি না। আপনি বলছেন ধুতি পাঞ্জাবি বাঙালিদের নয়, কথাতার ভুল সঠিকত্ত্ব নিয়ে তর্ক না করে মেনে নিচ্ছি। আপনি বলুন বাঙালি সংস্কৃতির পোষাক কী? ল্যাংটা তো থাকত না? আপনি কি সেটা পড়েন? না পড়লে কেন না?
আপনি বলছেন জামা প্যান্ট পড়েন এই কারনে যে এটা উপনিবেশিক কারন ছাড়াও ফ্যাশনেবল, পড়ছে সচ্ছন্দবোধ করেন। ইসলামের উপনিবেশিক চিন্তায় আপনার গাত্রদাহ হলেও পশ্চিমা উপনিবেশের ধারনা দেখলাম আপনি শুধু সচ্ছন্দবোধই করছেন না একে ফ্যাশনেবলও বলে দিচ্ছেন। কি চমৎকার আপনার ভন্ডামো। একেই বোধহয় ফ্যাশনেবল ভন্ডামো বলে। কিন্তু “ফ্যাশনেবল” ধারনাটা কোথা থেকে এসেছে সে বিষয়ে কোন জানাশোনা আছে? নাকি ইসলামের উপনিবেশিক ধারনানিয়েই আপাতত সময় নষ্ট করছেন?
আপনার এই অভিযোগ যে কী পরিমানে অজ্ঞতা, কী পরিমান ইসলাম বিদ্বষে ভুগছে সেটা পরিমাপ করাটাও কষ্টকর। আপনি যে অফিসে থাকেন, যে বাসায় থাকেন, যে এলাকায় থাকেন সেখানকার কত জন মুসলমান? তর্কের খাতিরে বলা যায় বেশিরভাগই। কতজনকে আপনি এই টুপি পাঞ্জাবী পড়তে দেখেন? কতজনকে আইয়ামে জাহেলিয়াতের কথা বলে পাপ পাপ করতে করতে ইসলামের বায়ান শুরু করে? যেটা না সেটা শুধুমাত্র আপনার বক্তব্যের সুবিধার জন্য বলে যাচ্ছেন।
আর যদি সেটা তারা করেও তাহলে সমস্যার জায়গাটা কোথায়? আপনি পশ্চিনা উপনিবেশিকতাতে সচ্ছন্দবোধ করছেন, ফ্যাশনেবল বলে সাফাই গাইছেন, আর কেউ ইসলামের কথা বলে পোশাক পরিবর্তন করে তাহলে সেটাকে আপনি মানতে পারছেন না। বাহ!
এটাতো খুবই স্বাভাবিক একটা ব্যাপার। বড়রা ছোটদের সবসময়েই বেয়াদপ হিসেবে দেখে। ততক্ষন পর্যন্তই ঠিক আছে যতক্ষন না জোড় করে আদব কায়দা শেখাতে আসছে। আপনাকে কেউ কি জোড় করে পোষাক পরিবর্তনের কথা বলেছে? না বলে থাকলে এই ব্যাপারে প্যাচালের আমি কোন যৌক্তিকতা দেখি না।
কেউ জোড় করে কোন কিছু করতে আসলে সেটা যাই হউক, পরিত্যাজ্য। সমর্থন অযোগ্য। শুধু ইসলামের জন্যই সেটা আলোচনা করার প্রয়োজনীয়তা দেখি না।
শেষের দুই প্যারাতে যা বলেছেন তা বলতে গেলে আরো বড় হয়ে যাবে মন্তব্য। এমনিতেই মহাভারত হয়ে গ্যাছে। সামনে হয়ত আলোচনা হবে।
@সাইফুল ইসলাম, আমার বয়স ও জানার পরিধি খুবই কম।তাই শুধুমাত্র জানার জন্যই প্রশ্ন করছিঃসম্ববত ১৯৬৮ সালে পূর্ব পাকিস্তান সরকার ‘এনিমি প্রোপারটি'(বর্তমানে অর্পিত সম্পত্তি)নামে একটি আইন চালু করে,যাতে এদেশের অধিকাংশ হিন্দুদের সম্পত্তি শত্রু সম্পত্তি হিসেবে তালিকা ভুক্ত করা হয়।যার দুর্বিষহ পরিনাম এখনও প্রতিনিয়ত ভোগ করছে এদেশের হিন্দুরা।পাকিস্তান সরকার যেহেতু বৈষম্যকারী ছিল,সেহেতু এরকম অন্যায় আচরণ তাদের কাছে অপ্রত্যাশিত ছিল না।কিন্তু দেশ স্বাধীন হওয়ার পর শেখ মুজিব কেন এই অনৈতিক আইন বাতিল করেনি?দেশ স্বাধীন হওয়ার পর তিনি ৪ বছর ক্ষমতায় ছিলেন,কেন করেননি?জাতিকে আর্থিক দুরঅবস্থা থেকে মুক্ত করতে নাকি কেউ বা কাহাদেরকে খুশি করতে,নাকি অন্য কোন কারণে।আমি কিছু ইঙ্গিত করতে চাইছি না শুধুমাত্র জানতে চাইছি?
@অতীত,
শত্রু সম্পত্তি বা অর্পিত সম্পত্তি সম্পর্কে আমার একটি পুরনো লেখা পড়ে দেখতে পারেন।
@সাইফুল ইসলাম, বিতর্কটা শেষ পর্যন্ত কোথায় যাচ্ছে খুব বুঝতে পারছি। এখন পর্যন্ত আমি ভন্ড, জ্ঞানহীন এবং প্রকান্তরে অশিক্ষিত। আপনার কৌশলটা ভাল। মুক্তিযুদ্ধের চেতনা আপনার মধ্যেই কিছুটা আছে (বলেছিলেন মনে আছে তো?) কিন্তু এখন পর্যন্ত (আমার চোখ এড়িয়ে না গেলে) সেই চেতনাটা কি ব্যাখ্যা করলেন না। আমার যা বলার বলে দিয়েছি। আমার ব্যাখ্যায় ভুল থাকতে পারে কিন্তু আপনারটা জানতেই পারলাম না। মুক্তিযুদ্ধের চেতনার মধ্যে ধর্ম বিরোধীতার অভিযোগ আপনার। আমার বক্তব্য পরিস্কার, আমি বলেছি ৯০ ভাগ মুসলিমের যেখানে বসবাস সেখানে মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে পাহাড়া দিয়ে রাখতে হয়। এটা আপনার কাছে ধর্ম বিরোধী হয়েছে। বেশ মেনে নিলাম। এবার বলেন, যুদ্ধাপরাধীদের বিচারে পুরো দেশ এরকম দ্বিধাবিভক্ত হয়ে গেলো কেন? হেফাজতের ঢাকা অবরোধের পর মুক্তমনায় আপনি পোষ্ট লেখেন ‘বিসমিল্লাহির রাহমানি’ বলে, কেন? মানে বলতে চাচ্ছিলেন, যা চলছে এরপর ইসলামী কায়দা-কানুনে না চললে খবর আছে! শেষ করেন আবার ‘বাংলাস্থান জিন্দাবাদ!” বলে। বাংলাস্থানটা কি ভাই? পাকিস্তানের আদলে কোন দেশ? তো সেটা মন্দ কি? পাকিস্তান কি আমাদের ধর্ম দিয়ে ঠেসে ধরেছিল? আপনার আতংকির হওয়ার কাণটা কি? পাকিস্তানফোবিয়ায় ভুগছেন? আপনার ঐ কৃষক-শ্রমিকরা আর মধ্যবিত্তরা থাকতে গোটা কয় মৌলবাদী বাংলাস্থান বানিয়ে ফেলবে? এই বাংলাস্থান আতংকে থাকি আমাদের মত কিছু ইসলাম বিদ্বেষীর কষ্ট কল্পনা। তাছাড়া আমাদের মত ইসলাম বিদ্বেষীরা যদি ইসলামহীনতা চাই তো ইসলামিস্টরা ইসলামীকরণ চাইতেই পারে। তাতে আপনার আতংকিত হবার কি আছে?
এবার আপনি শুরু করছেন কূটতর্ক। মুজিবকে কখনই মুসলমানিত্ব প্রাবল্য, ইসলামী জোশে আক্রান্ত বলিনি। বলেছি আরবদের খুশি করার জন্য তাকে এটা করতে হয়েছে। বাংলাদেশ ভারত আর সোভিয়েত ঘেষা হয়ে অনৈসলামীক হয়ে যায়নি এটা তিনি আরব ভাইদের (!) বুঝাতে চেয়েছিলেন। আপনি যতই বড় বড় গ্লোবাল- তেলফেল তত্ত্ব আউরান সোজা ব্যাপার এটাই ছিল। আর পরবর্তীতে আমেরিকা ভারতের সঙ্গে লটকালটকি কারণ সেই একই। আরবদের কাছে মুজিব কিছুতেই গ্রহণ যোগ্য হতে পারবেন না সেটা তিনি না বুঝার মত নেতা ছিলেন না। চেষ্টা করে দেখেছিলেন মাত্র। মুজিব আপনার ঐ আরবদের কাছে মুসলমানের ঐক্য ভাঙ্গার জন্য দায়ি ছিলেন। মুসলমান এক জাতি, এই থিউরী মুজিব ভুল প্রমাণ করেছিলেন। কাজেই মুজিবকে ফের ভারত এবং পরাশক্তি আমেরিকার কাছে ফিরে যাওয়াই ভাল বা বিকল্প ছিল না।
আপনার কথা অনুযায়ী বাংলাদেশের সমস্ত মানুষ যুদ্ধাপরাধীদের বিচার চায়? আপনি দেশে থাকেন না বিদেশে? আমাকে জনগণের সঙ্গে থাকার পরামর্শ দিয়ে এখন দেখছি আপনার সঙ্গে আমজনতার কোন যোগই নেই! আপনার এ সম্বন্ধে কোন ধারনাই নাই। আশ্চর্য লাগছে যে শাহবাগের আন্দোলনকে দমন করার জন্য হেফাজতের উত্থান, শাহবাগীদের তুলনায় বাংলাদেশে হেফাজতী কতজন তখনই প্রমাণ হয়ে গেছে। এই যে বিশাল একটা জনগণের অংশ যুদ্ধাপরাধীদের বিচার চায় না, কেন চায় না তারা? অবশ্যই তারা ইসলামপন্থি বলেই। এখানেই যদি আমি বলি, যদি আমরা ৯০ ভাগ মুসলমান না হতাম… তাতে আপনাদের গায়ে ফোস্কা পড়ে যায় কেন?
আপনার নিজেরই পড়া উচিত এই বিষয়ে। পাকিস্তানেও বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে কিছু মানবধীকার কর্মী মিছিল করেছিল বাংলাদেশের পক্ষে- তাতে এখন কি বলতে হবে? পাকিস্তানীরাও বাংলাদেশের স্বাধীনতার পক্ষে ছিল? ইহুদী রাষ্ট্র সম্প্রসারণ করে চলেছে ইসরাইল, ফিলিস্তিনীরাও আল্লাহো আকবর বলে মিছিলে শ্লোগান দিচ্ছে তবু এর মধ্যে ধর্মে লেজ দখতে পাবো না। ইহূদীদের ধর্মরাষ্ট্র তাদের কিতাবী ওয়াদা সেখান থেকে তারা পিছিয়ে আসবে কেন? একদিন তারা এখান থেকে বিতারিত হয়েছিল অন্যধর্ম সম্প্রদায়ের হাতে। না এখানে তবু ধর্মকে দেখা চলবে না।
আরো একটা কূটতর্ক। ইসলাম অন্য সংস্কৃতিকে পাপাচার বলে, অগ্রহণেযগ্য বলে নিজেরটা অবশ্যই ব্যবহার যোগ্য বলে, আর এরজন্য যদি আমি ইসলামকে সংস্কৃতির উপনিবেশন চালায় বলে অভিযোগ করি তার উত্তরে আপনি বললেন আমাকে কেউ পোশাক পরতে জোর করে কিনা! আমি বলেছি ইসলাম আমাদের লালন করা সংস্কৃতিকেও বলছে পাপাচার। উদাহরণ দিলাম না। এসব গোটা কয় মৌলবাদী প্রচার চালায় কিন্তু গেলে সব মুসলিমই। কারণ কোরআন হাদিস তাই বলছে। ইসলামকে সংস্কতি আর ভাষার উপনিবেশকারী বলাতে আপনি গোস্বা হয়েছেন, হতেই পারেন। আমার কিছু যায় আসে না।
গোঁড়াতে না গিয়ে শুধু পাতায় পাতায় ঘুরেফিরে গেলে সমস্যায় কখনো যেতে পারবেন না। সময় স্বল্পতায় আপনার মন্তব্যের লাইন বাই লাইন ধরে উত্তর দেয়ার ইচ্ছা ছিল কিন্তু সম্ভব হলো না। ধন্যবাদ।
@সুষুপ্ত পাঠক,
মুক্তিযুদ্ধের চেতনার বিষয়েঃ মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় হাবুডুবু খাচ্ছেন আপনি, আমিতো না। আপনার আবেগ দেখেই জিজ্ঞেস করেছিলাম এটা আসলে কী বস্তু। আমার তো এই ব্যাপারে কোন কিছু বলার কথা না। যার জন্যই বলি নাই। আপনাকে আপনার দাবী করা “মুক্তিযুদ্ধের চেতনা”র ব্যাপারে জিজ্ঞেস করার পরে কনভিন্সিং তো দূরের কথা কাজ চালানোর মত একটা উত্তরও দিতে পারেন নাই। আগে নিজে জানেন নিজের দাবী করা জিনিস সম্পর্কে। যে জিনিস শুধুশুধুই দাবী করা যায়, সে জিনিস শুধুশুধুই আবর্জনা বলে ফেলে দেয়া যায়।
মুক্তিযুদ্ধের চেতনার মধ্যে ধর্ম নিয়ে আসার অভিযোগ যদি ভুল হয় তাহলে আপনার সাথে আমি এতক্ষন কী নিয়ে কথা বললাম? আমাকে শুধু এই কথাটার জবাব দিন। আপনার কাছে আমি আপনার এই দাবী করার জন্য রেফারেন্স পর্যন্ত চেয়েছি। আপনি না দিয়ে এড়িয়ে গ্যাছেন। যাওয়াটি স্বাভাবিক কারন আপনার দাবী অসত্য।
তারপরেও আমার অভিযোগ যদি আসলেই ভুল হয় তাহলে তো নিশ্চই আপনি স্বীকার করছেন মুক্তিযুদ্ধের চেতনার সাথে ধর্ম বা ধর্মবিরোধীতা কোন সম্পর্ক নেই? এইটুকু স্বীকার করলেই “মুক্তিযুদ্ধের চেতনা”র উপরে আলোচনায় আমার আর কিছু বলার নেই।
ঠিকাছে দেখি আপনার দাবীকৃত কথার (আমি কূটতর্ক করছি) সত্যতা কতটুকু। আপনি বলছেন যে, আপনি বলেছেন মুজিব কখনই মুসলমানিত্বের প্রাবল্যে, ইসলামী জোশে আক্রান্ত নয়। বলেছেন আরবদের খুশি করার জন্যই সে ওআইসি’তে যোগ দিয়েছে।
প্রশ্ন, ওআইসি তে যোগ দেওয়া যদি আরব ভাইদের খুশী করার জন্য হয় তাহলে আমার বলা তেল-ফেল তত্ত্বের ভুল কোথায়? কারন আপনি তো দাবী করছেন সে মুসলমানিত্ত্বের জোশে আক্রান্ত নয়। তারমানে সে নিজের ইসলামপ্রীতি, সকল মুসলমান ভাই ভাই, মুসলিম ভ্রাতৃত্ববোধ ইত্যাদি দ্বারা প্রভাবিত ছিল না। তাই না? ব্যাপার যদি তাই হয় তাহলে আমার কথার সাথে আপনি দ্বীমত করছেন কেন? মুজিবের পদক্ষেপ ছিল পরিষ্কার রাজনীতি। আর আমার বক্তব্যতো তাই! নাকি তর্ক করতে হব করছি, একমত হব না এমন প্রতিজ্ঞা করেছেন? সেক্ষেত্রে আপনার অগ্নিশপথকে আমি শ্রদ্ধা জানাই।
কতজন এই বিচার চায়, কতজন চায় না, হেফাজতের উত্থানের কারন কী এই সমস্ত বিষয়ে আলোচনার না করি কারন আপনি উত্তর আগেই ধরে নিয়েছেন। আমার প্রশ্ন একটি, যারা বিচার চায় না তারা মুসলমান বলেই চায় না, খুব বুঝলাম। আমাকে বলুন যারা চায় তা কোন ধর্মের? তারা কি মুসলমান নয়? যদি মুসলমান হয় তাহলে তারা এই বিচার চাচ্ছে কেন? যে সমস্ত মুসলমান নিজেদের মুসলমানিত্ব বিসর্জন দিয়ে বিচার চাচ্ছে তাদের সম্পর্কে আপনার বিজ্ঞ বিশ্লেষনী মতামত জানতে চাচ্ছি।
আপনি পড়তে বলেছেন আমি পড়ব। এতো আমার কোন আপত্তি নেই যা আপনার দেখতে পাচ্ছি। যাই হোক, পাকিস্তানের ব্যাপারে। আপনি যেভাবে সরলীকরন করছেন সেটা আমিও করেছি একসময়, যার জন্য আপনার আবেগের জায়গাটা আমি বুঝতে পারি প্রবলভাবেই। যার জন্য শুধু অনুরোধ করব একটু ঠান্ডা মাথায় বুঝতে। যেমন আমরা পার্বত্য চট্টগ্রামের সরকারের করা অন্যায় অত্যাচারের কারনে কোনভাবেই দায়ী না। আপনি কি নিজেকে পার্বত্য চট্টগ্রামে বাঙলাদেশ সরকারের করা অন্যায় কাজের জন্য দায়ী মনে করেন? যদি দায়ী হন সেই বিচারে পশ্চিম পাকিস্তানী জনগনও আমাদের উপরে হামলার জন্য দায়ী। কিন্তু আমি ঠিক ঐভাবেই বিচার করছি না। আমি দেখছি, বাঙলাদেশ সরকার চট্টগ্রামে যেমন অন্যায় চালাচ্ছে, ঠিক তেমনি আমাদের উপরেও অন্যায় চালিয়ে যাচ্ছে। কিন্তু সরকারের করা কাজের বিরুদ্ধে বা পক্ষে কোন প্রভাব রাখার ক্ষমতা কি জনগনের আছে? নাই তো। তাহলে সরকারের করা অন্যায়ের দায়িত্ব কেন জনগন নিবে? একই ঘটনা পশ্চিম পাকিস্তানের জনগনের ক্ষেত্রেও। জনগন যদি সরকারের উপরে এতই প্রভাব রাখত যে সরকারকে একটা জনপদের নাগরিকদের উপরে গনহত্যা চালোর পর্যায় পর্যন্ত ঠেলে নিয়ে গ্যাছে তাহলে আজকে পাকিস্তানে মানুষ না খেয়ে থাকে কেন? কেন একটা সুস্থ রাজনৈতিক পরিস্থিতি পর্যন্ত নাই সেখানে? সেখানকার জনগন সরকারকে দিয়ে মানুষ মারতে পারে কিন্তু নিজেদের ভাত জোগাড় করতে পারে না? ব্যাপারটা হাস্যকর না? ঠান্ডা মাথায় ভাবেন, যদি একমত না হন তাহলে কিছু করার নাই কারন তাহলে আপনি এখনও এই ব্যাপারে আলোচনা করার মতন নিরপেক্ষ হন নাই। আবেগ রয়ে গ্যাছে প্রচুর। আবেগ দিয়ে ইতিহাস ব্যাখ্যা হয় না, রাজনীতি তো না ই।
ইজরাইল ফিলিস্তিনি সম্পর্কে যা বললেন তাতে বোঝা যায় এই ব্যাপারে আপনার সাথে আলোচনায় যাওয়া আর দ্বিতীয় শ্রেনীর ছেলেকে আপেক্ষিকতাবাদ বোঝাতে যাওয়া একই কথা। যার জন্য এই ব্যাপারে আলোচনা বন্ধ রাখলাম। শুধু একটা প্রশ্ন করি, ফিলিস্তিনিরা তো মুসলমান। তাহলে জগতের সমস্ত মুসলমান দেশ কেন তাদের সাহায্য করতে এগিয়ে যাচ্ছে না? ফিলিস্তিনির জনগনকে কেন মুসলিম ভ্রাতৃত্ববোধে জাগ্রত হয়ে সমস্ত মুসলমানরা ইজরায়েলের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতে এগিয়ে যাচ্ছে না? আবার উলটো দিকে, কেন দুনিয়ার বেশিরভাগ দেশের জনগন ফিলিস্তিনের সমর্থনে রাস্তায় মিছিল করেছে, করে? কেন জাতিসঙ্ঘের বেশিরভাগ সদস্য দেশ ফিলিস্তিনকে আলাদা রাষ্ট্র হিসাবে প্রতিষ্ঠা করার পক্ষপাতি, যদিও তারা কেউই মুসলমান, যদিও তারা কেউই মুসলিম দেশ নয়? এর কারন কী? ধর্মের আলোকে আপনার গভীর বিশ্লেষন প্রার্থনা করছি জনাব।
এই যে উপনিবেশ উপনিবেশ বলে যাচ্ছেন জিজ্ঞেস করি এই উপনিবেশের ইতিহাস, গ্লোবালাইজেশন পূর্ববর্তী এবং পরবর্তী পোস্ট-কলোনাইজেশন সম্পর্কে, এর চারিত্র, এর প্রকাশভঙ্গী, এর কৌশল এগুলো সম্পর্কে কোন ধারনা আছে? আপনি আজকে পশ্চিমা পোষাক নাকি ইচ্ছা করে “ফ্যাশনেবল/পড়তে আরাম” ইত্যাদি কারনে পড়ছেন। কিন্তু আপনাকে যখন জিজ্ঞেস করলাম এই যে ফ্যাশনেবলের যে ধারনা সেটা কোথা থেকে এসেছে? এই ব্যাপারে আপনার ধর্মভিত্তিক জ্ঞ্যানভান্ডার শুকনো দেখা যাচ্ছে। কিচ্ছুটি জানেন না। ভদ্র ছেলের মতন চুপ করে গেলেন।
আজকের পোস্ট কলোনিয়াল যুগে উপনিবেশের সংজ্ঞা, এর চারিত্র পরিবর্তন হয়ে গ্যাছে। আজকে ঐ যে “ফ্যাশনেবল” বলছেন ওটা আপনাকে কেউ হতে বলবে না, কিন্তু আপনি হবেন। আজকে কেউ আপনাকে মোবাইল থাকতেও নতুন মোবাই কিনতে বলবে না। কিন্তু আপনি কিনবেন। আগের মন্তব্যগুলো থেকে যা বুঝেছি আপনি সুক্ষ্ম বিশ্লেষন করার মানুষ নন। যার জন্য আপনাকে স্থুল উদাহরন দিচ্ছি। যদি চাকরী করে থাকেন, তাহলে কী পড়ে যান সেখানে। আপনি বলেছেন জামা প্যান্টই নাকি পড়ে যান। একটা কাজ করতে বলি, করে দেখাতে পারলেই আপনার সমস্ত কথা মেনে নেব। কালকে থেকে অফিসে একটা লুঙ্গী আর শ্যান্ডো গেঞ্জি পড়ে যাবেন। দেখেন কেউ কিছু বলে কী না। যদি ক্রমাগত পড়ে গেলেও কেউ কিছু না বলে তাহলে উপরে বলা সমস্ত কথা আমি ফিরিয়ে নেব। আর যদি কিছু বলে এবং “ড্রেসকোড” শিখিয়ে দেয় তাহলে আপনি যা ইচ্ছা হয় করবেন। রাজি?
আর আপনি ধরে নিচ্ছে ইসলামকে উপনিবেশিক শক্তি বলাতে আমার গায়ে ফোস্কা পড়েছে। ভুল ধরেছেন। ইসলাম কি উপনিবেশিক শক্তি কি না সেই আলোচনাতেই আমি ঢুকি নি। আমার বক্তব্য ছিল, আপনি নিজে উপনিবেশিকতাকে অত্যন্ত আনন্দের সাথে প্রতিপালন করে আরেকজনকে কীভাবে উপনিবেশিক বলেন ? এইটাতো পরিষ্কার ভন্ডামী। কিন্তু আমার দাবী করা আপনি যে ফ্যাশনেবল ভন্ড সেটা ভুল প্রমানিত না করে আপনি প্রকারন্তরে মেনে নিয়েছেন আমার দাবী ভুল নয়। এখনও বলছি আপনি ভন্ড। প্রমান করুন, আমি ভুল বলেছি।
@সাইফুল ইসলাম, সকালবেলা মেইল চেক করতে গিয়ে দেখি আপনার একটা প্রতিমন্তব্য আছে। মেইলেই পড়লাম আপনার মন্তব্য। মুক্তমনায় ফের প্রবেশ করে কিছু লেখার কথা আমার নয়। যখন থেকে আমার লেখা মন্তব্য মুছে ফেলা শুরু হয়েছে তখনই আমি বুঝেছি এখানে আমি অচ্ছুৎ। আমার মত মতবাদীকে এখন আর মুক্তমনায় চায় না। আমি এখানে সদস্য ছিলাম না। অতিথি লেখক হিসেবে মাঝে মাঝে লেখালেখি করতাম। আপনার সঙ্গে বিতর্কে জড়িয়ে সম্ভবত মডারেটরদের কোপানলে পড়েছি। ফরিদ সাহেব যেভাবে আক্রমন করেছেন, যেভাবে বিতর্ক এড়ানোর ভাষা প্রয়োগ করেছেন তাতে তখনই আমি বুঝেছি মুক্তমনায় এই আমার শেষ লেখা। কাজেই সাইফুল ইসলাম, এখানে আপনার সঙ্গে আমার আলাপ চলে না। অন্যত্র হতে পারে। অন্য কোন ব্লগে। মুক্তমনায় এটাই আমার শেষ কোন লেখা। সবাইকে ধন্যবাদ।
@ প্রিয় সুষুক্ত পাঠক,
আপনার এই অদ্ভুত ধারণা কী করে হলো জানি না। আমি মুক্তমনার কেউ না। এর সাথে আমার দূরত্ব এখন দুটো নক্ষত্রের দূরত্বের চেয়ে কম কিছু নয়। মুক্তমনার কেউ হলেও, এ ধরণের কাজ আমাকে দিয়ে হতো না। আপনার লেখালেখি বন্ধ করার মত অন্তরালের ষড়যন্ত্র করার মানসিকতা আমার নেই। আমি যা কিছু করি সামনাসামনি করি, পিছন থেকে ছুরি মারা আমার কর্ম নয়।
আপনাকে আমি আক্রমণ করি নাই। আপনি আমার পোস্টে অপ্রাসঙ্গিক এবং অবান্তর বিষয় নিয়ে এসেছিলেন, অহেতুক আমাকে আমার অপছন্দনীয় বিষয়ে কুতর্কে জড়িয়ে ফেলতে চেয়েছিলেন, এবং শুরুর আক্রমণটাও করেছিলেন। আমি আন্তরিকভাবেই আপনার সঙ্গে কুতর্কে জড়িত হতে চাই নি। আমি সাধারণত কাউকে আগ বাড়িয়ে আক্রমণ করি না। কিন্তু আক্রান্ত হলে, পালটা আক্রমণে আমি ভয়াবহ, দয়ামায়াহীন, নির্মম, নিষ্ঠুর। আপনাকে আমার যেন পালটা আক্রমণ করতে না হয়, সে কারণেই শক্ত ভাষায় সতর্ক করা। আপনার মত একজন নবীন লেখককে প্রতি আক্রমণ করার বিন্দুমাত্র ইচ্ছা আমার ছিল না। অসম লড়াই আমি উপভোগ করি না।
@সাইফুল ইসলাম,
পাজামা পানজাবি কি মোসলমানদের পোষাক?
@সাইফুল ইসলাম,
সেই প্রশ্নের উত্তর বা আমি কি বুঝি মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বলতে অনেক আগেই বলে দিয়েছি। আপনার মনপূত হয়নি সেটা। তারপর আমি পাল্টা জিজ্ঞেস করেছিলাম মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বলতে আপনি কি বুঝেন, (যেহেতু আপনি দাবী করেন এই চেতনা আপনার মধ্যেই খানিকটা বিরাজমান!) আফসোস, এখন অব্দি জবাব পেলাম না। পাবোও না জানি। কারণ এই চেতনায় আপনার এ্যালার্জে আছে। আপনি আসলে নিজের মধ্যে কি আদর্শ লালন করেন মুক্তমনায় যারা নিয়মিত তারাও বলতে পারবে না। কেউ যদি বলে বাম আপনি ওমনি তাকে বাম বলতে কি বুঝেন, বাম কত প্রকার ইত্যাদি প্রশ্ন করতে থাকবেন। এক পর্যায় গলার জোরে প্রমাণ করতে চাইবেন এই লোক বাম বলতে কিছু বুঝে না। সে সহি বাম নয়! একইভাবে ডান, মধ্য, উত্তর, দক্ষিণ সব ব্যাপারেই আপনার নিজস্ব ব্যাখ্যা নেই। আপনি কি বুঝেন তার কোন খবর নেই। আছে শুধু পায়ে পা দিয়ে ঝগড়া করার। এটা আপনার অসুখে পরিণত হয়েছে। চায়ের দোকানের চেয়ে সস্তা পোষ্টে গিয়ে অন্যকে হেয় করেন কারণ অভিজাত ড্রয়িংরুমে আপনার জায়গা নেই। যিনি জানেন চায়ের দোকানে কি মানের আলাপ চলে, তিনি কোন মুখে গিয়ে সেখানে অংশগ্রহণ করেন? সম্ভবত মুক্তমনায়ও এখন আর আপনার উপযুক্ত নয়!
আপনার সঙ্গে আমার কথা শুরু হয় মুক্তিযুদ্ধের চেতনা নিয়ে। যে চেতনায় অসাম্প্রদায়িক রাষ্ট্রের কথা বলা হয়েছে। বাঙালির “বাঙালি জাতীয়তাবাদ” গ্রহণ এই চেতনার অংশ। বাংলার হিন্দু, বাংলার মুসলিম, বাংলার খ্রিস্টান, বাংলার বৌদ্ধ- আমরা সবাই বাঙালি। এটাই মুক্তিযুদ্ধের চেতনা। আপনি না বললেও আমি কিন্তু বুঝে গেছি আপনার চেতনা কোন বস্তু। যিনি পাকিস্তান আমাদের ধর্ম দিয়ে চেপে ধরেছি কিনা বলতে পারেন তিনি মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বলতে নিজের ভেতর কি লালন করেন বুঝতে কষ্ট হয় না। পাকিস্তান ধর্ম দিয়ে চেপে ধরে না আবার হেফাজতের ভয়ে বাংলাস্থান জুজুর ভয় দেখান। কেন পাকিস্তান খারাপ কিসে? বিসমিল্লাহ খারাপ কিসে? এই প্রশ্ন করেছিলাম, উত্তর পাই নি আপনার কাছে।
সাইফুল ইসলাম 😀 😀 😀
না নেই। আপনার কাছে জ্ঞান ধার করতে চাই। মুক্তমনায় আপনি যে হারে পাইকারী জ্ঞানহীন বলে সবাইকে ট্যাগ মারতে শুরু করছেন তাতে খুব অল্প সময়ের মধ্যে মুক্তমনায় সদস্য অতিথি সবাই জ্ঞানহীন বলে স্বীকৃত হয়ে যাবে। একটা প্রশ্ন সাইফুল সাহেব, আপনি বাঙালি ধরে নিচ্ছি, আপনার নাম সাইফুল ইসলাম হলো কেন? আর আপনার কথিত পায়জামা-পাঞ্জাবী ইসলামী পোষাক হলো কেন? আমরা নাদান আমজনতা। আপনার মত অতো মোটা মোটা কিতাব পড়িনি, তবু বুঝি যার নাম হরিদাস সে মুসলিম হওয়ার পর আবদুল্লাহ হওয়ার কোন প্রয়োজন ছিল না। যে হরির দাস সে আল্লাহর দাস (আবদুল্লাহ) একই কথা। তবু তাকে একটা আরবী নাম গ্রহণ করতে হয়েছে। এটা ইসলামী নাম এই ফতোয়া দিয়ে। আজো তাই চলছে সমান তালে।
আর উপনিবেশনকালের অনেক কিছু আজো আমরা ব্যবহার করছি, করবো, কালের করাল গ্রাসে কিছু হারিয়ে যাবে। নতুন কিছু আসবে। পুরাতন বিদায় নিবে। আমি এই মত ও পথের মানুষ। কিন্তু কেউ বা কারা যখন কোন সংস্কৃতিকে পাপাচার, জাহেলি বলে ঘোষণা করবে আর বলবে তাদেরটা শ্রেষ্ঠ, এটা গ্রহণ করো নইলে নিশ্চিত নরকবাস তাতে আমার ঘোরতোর আপত্তি। কোন পোষাক নিয়ে আমার এ্যালার্জি নেই। তবে কোন রকম ভয় বা পরকালের লোভ দেখিয়ে কোন পোষাক বা সংস্কৃতি চাপানোর আমি বিরোধী। এটা আগেও বলেছি পরিস্কার করে তবু ত্যানা প্যাঁচিয়েই যাচ্ছেন।
এখন সময় নেই। আপাতত এই পর্যন্ত।
@সাইফুল ইসলাম,
আমার একটা কথার জবাব দিবেন কি দয়া করে?পশ্চিমা পোশাক তো আমিও পড়ি, আপনিও তাই না?কিন্তু আপনাকে কি কেউ কোন দিন এটা পড়তে বাধ্য করেছে?বলেছে যে এইটা না পড়লে আপনি অপবিত্র?উগ্রবাদী মুসলিম রা তো বলে থাকে যে পশ্চিমা পোশাক হল শয়তানের প্রতিক( যেমন ধরেন যে মেয়েদের জন্য টাইট ড্রেস এইসব আর কি!) , এবং আগে এইসব পরেছে বলে মুসলিম হবার পরে বা সত্যিকার ইসলাম কে আঁকড়ে ধরার পর সেই কাপড়চোপড় পরার জন্য আপনাকে লজ্জিত হতে হবে?আপনি কি দুটি জিনিসের মুল পার্থক্য ধরতে পারছেন না, নাকি ইচ্ছে করেই এড়িয়ে যাচ্ছেন? আশা করি জবাব টা দেবেন।
@দারুচিনি দ্বীপ, সাইফুল ইসলাম, আমি আপনাকে একটা প্রশ্ন করেছি,আপনি কি দেখতে পান নাই নাকি উত্তর দিচ্ছেন না আবর্জনা ভেবে?মুক্ত মনা তে নতুন এসেই আমি আপনার মধ্যে অন্যদের হেয় করার এক অদ্ভুত বাতিক দেখেছি।এগুলো কোন সুফল বয়ে আনেনা, শুধু মাত্র নিজের গ্রহণযোগ্যতা কমানো ছাড়া।
@দারুচিনি দ্বীপ,
ভাইরে, আপনার প্রশ্নের উত্তর তো আমি সুষুপ্ত পাঠককে করা মন্ত্যবেই দিয়েছি যার জন্য আলাদা করে আপনাকে কিছু বলি নাই। এই জন্য আপনার মন খারাপ লাগলে আমি দুঃখিত। সুষুপ্ত পাঠককে করা আমার শেষ মন্তব্যটা খেয়াল করেন, উত্তর পেয়ে যাবেন আশা করি। আর না পেলে আপনাকে নতুন করে কিছু আমার বলার নাই।
@সাইফুল ইসলাম,
এন্টি রেসিজমের আওতায় মুসলমানরাও যে পড়ে, এই ধারণাটা অনেক লোকেরই নেই।
@ফরিদ আহমেদ, আপনার কাছে দুঃখ প্রকাশ করছি। অন্যকে ছোট ভাবা আসলে নিজেকেই ছোট করা। আমি সেই কাজটিই করেছি। আমি আপনার কাছে বিব্রত লজ্জ্বিত।…
কিন্তু প্রথম আক্রমন বা আমার দ্বারা আক্রমন বলতে আপনি কি বুঝাচ্ছেন? ব্যক্তিগতভাবে আপনাকে আক্রমন করেছিলাম কি?
@সুষুপ্ত পাঠক,
হ্যাঁ সেটাই, যেমন আমি নিজে উদারপন্থী এবং ধর্ম পালন না করা মুসলিম হয়েও, অনেক কটুকথা আর হেদায়েত বানীর সম্মুখীন হই।আমরা আসলে ধর্মনিরপেক্ষতা আর ধর্মহীনতা ব্যাপারটিকে এক করে ফেলি।
@দারুচিনি দ্বীপ, মুসলমানের পক্ষে কেন অন্য যে কোন ধর্মের অনুসারির পক্ষেও ধর্মনিরপেক্ষাতা একটা অসম্ভব ব্যাপার। কারণ কোন দোকানদার বলবে না, আমারটাও ভাল তাদেরটাও ভাল। যেটা খুশি সেটা বেছে নাও। তফাত এটুকু রাজনৈতিক ইসলামের জন্য মুসলিমরা এসবে বেশি সচেতন হয়ে পড়ছে। অন্য ধর্মের অনুসারীরা আপত ধর্ম চেতনায় শিথিল।
@সুষুপ্ত পাঠক,
তা হতে যাবে কেন? আমি তো নিজে মুসলিম বলেই মনে করি নিজেকে, এবং একই সাথে সংবিধানে বিসমিল্লাহ্ দেখতে চাই না।তার মানে তো এই না যে আমি মুসলিম থেকে খারিজ হয়ে গেছি।
আমি ধর্ম নিরপেক্ষতা বলতে বুঝি, সবার ধর্ম পালন করার অথবা পালন না করার স্বাধীনতা ।
@দারুচিনি দ্বীপ, বিশ বছর আগে আপনার মত ধার্মীকদের সংখ্যাই বেশি ছিল। এখন আপনারা সংখ্যালঘু! আপনার মত সবাই হলে ইসলাম তথা ধর্ম নিয়ে কথা বলে সময় নষ্ট করতাম না।
@সুষুপ্ত পাঠক,
আপনি খুব সম্ভবত ইসলামোফোবিয়াতে আক্রান্ত। এই ধরণের লোকের সাথে ইদানিং আমি কোনো তর্ক-বিতর্কে যাই না, বোঝাতেও যাই না কিছু। তর্ক-বিতর্কে যাই না এই কারণে যে, এদের টানেল ভিশনে ইসলামি রাক্ষস ছাড়া আর কিছুই চোখে পড়ে না, মাঝখান থেকে আমি ইসলামের ভক্ত, এই ধরণের একটা খামোখা ট্যাগ গায়ে জড়িয়ে দেবার চেষ্টা করা হয়। বোঝাতে না যাওয়ার পিছনের কারণটাও অনেকটা একই রকমের। এরা আসলে সব বোঝাবুঝির উর্ধ্বে। পৃথিবীর যে কোনো সমস্যার পিছনেই ইসলাম দায়ী, এই অকাট্য যুক্তি এদের ঝোলার মধ্যে অফুরন্তভাবে মজুদ করে রাখে এরা।
@ফরিদ আহমেদ, ইসলামের ট্যাগ গায়ে জড়িয়ে যাওয়ার ভয়ে লাফিয়ে সরে পরলেন! যেন কেউ ইসলামিস্ট এই অপবাদ দিতে না পারে! আর আমি কি অসুখে ভুগছি তার ডাক্তারিটা করে ফেললেন।
পৃথিবীর যে কোন সমস্যার পিছনে ইসলাম দায়ি এই অকাট্য যুক্তি কারা দেয় জানি না। তবে বাংলাদেশ যে বারবার বাংলাস্থানের দিকে ঝুঁকে পড়ে, তার প্রধান কারণ এখানকার মানুষের ধর্ম ইসলাম আর তারা মুসলিম। আপনি বোধহয় দীর্ঘদিন দেশের বাইরে। আর দেশে আসলেও সাধারন আমজনতার সঙ্গে মেশার সুযোগ পান না। আজকের বাংলাদেশ প্রতিদিন পত্রিকায় একটা অনলাই জরিপের প্রশ্ন দিয়েছে: আওয়ামী লীগকে কি আপনি আস্তিক দল মনে করেন না নাস্তিক দল মনে করেন? উত্তর আস্তিক হলে হ্যাঁ আর নাস্তিক হলে না ভোট দিন। ৪ সিটি নির্বাচনে আওয়ামী লীগ হেরেছে স্রেফ এই সরকার ইসলাম বিরোধী বলে। যে চারজন মেয়র প্রার্থী হেরেছে আওয়ামী লীগের তারা যে উন্নয়ন করেছে তাদের এলাকায় সেরকম উন্নয়ন ওখানকার জনগণ চর্ম চোক্ষে কোনদিন দেখেনি। যারা আওয়ামী লীগকে ভোট দেয়নি এটা তাদের স্বীকারক্তি। আগামী নির্বাচনে আওয়ামী লীগের জন্য ইসলাম ফ্যাক্ট হয়ে দেখা দিবে। বিএনপি-জামায়াতের প্রয়োজন নেই, হাজার হাজার কওমী মাদ্রাসা এই ইসলাম বিরোধী দলের জন্য নিস্বার্থে খাটবে।
ফরিদ আহমেদ, আমার সাধারন মানুষের সঙ্গে উঠাবসা কারণ আমি নিজেই অতি সাধারণ মানুষ। আমার লেখা গল্পগুলোর (অনেকগুলো এই মক্তমনায় প্রকাশিত) চরিত্রগুলোর সঙ্গে রোজ আমার দেখা হয় অতি কাছ থেকে। আর এরাই এই দেশের সংখ্যাগরিষ্ট। ইসলাম এদের গায়ে কাপড় দেয়নি, পেটে ভাতও দেয় না। তবু তারা মনে করে রোজ ইসলাম এসে তাদের এইসব যুগিয়ে দেয়। তারা এরচেয়ে খারাপ থাকবে তবু ইসলাম চায়! মধ্যবিত্ত শ্রেণীর কথা বলাও আমার পক্ষে আরো সহজ। কারণ ওখান থেকে তো আমি এসেছি। আমি যদি সব জায়গায় ইসলামের রাক্ষস দেখে থাকি তাহলে মধ্যবিত্ত মুসলাম সব জায়গায় ইসলামের রহমত দেখতে পায়। হেফাজতের সঙ্গে সরকারের রুষ্ট আচরণে রানা প্লাজায় ধস নামে। নির্বাচনের আগে হাসিনা ভারতের কোন মন্দিরে পূজা দিয়ে এসেছে সেই গুজব দ্রুত ডালপালা মেলতে থাকে। ২০০১ সালের নির্বাচনের আগে বি চৌধুরীর পূত্রের সাবাস বাংলাদেশ কথিত কোরআনের শাসন চান না গীতার শাসন- থুব বাজার পেয়েছিল। দেশনেত্রীর মসজিদে উলু ধ্বনি দেবার আশংকা আমজনতা ভালভাবেই গ্রহণ করেছিল। এই সমস্ত প্রচারণ আপনি বা আপনার মতো প্রগতিশীল ব্যক্তির কাছে হাস্যকর কিন্তু একজন ঈমানদার মুসলমানের কাছে আদৌ তা নয়। দূর থেকে বাংলাদেশকে দেখলে এক সময় ভ্রম হতেই হবে। কতজন মানুষ রাজাকারদের বিচার চায় আর যারা চায় না তাদের মধ্যে ব্যবধান কতটুকু? বহু আওয়ামী লীগার সাঈদীর ফাঁসিতে নাখোশ এই খবর আপনি রাখেন না।
আপনাকে বিনয়ের সঙ্গে প্রশ্ন করতে চাই: বাংলাদেশের মানুষ এত পাকিস্তানের প্রতি প্রেম-ভালবাসা অনুভব করে কেন? পাকিস্তান ক্রিকেট এই দেশে এত জনপ্রিয় কেন? ৭২-৭৩ সালে ভূ্ট্টকে দেখার জন্য বাঙালী মুসলমান এমন পাগল হয়ে গিয়েছিল কেন ঢাকার রাজপথে? বাংলাদেশের মানুষ কেন আমার মত ইসলামের রাক্ষস দেখার মত সব বিষয়ে ভারতের রাক্ষস দেখতে পায়? তারাও তাহলে ভারতফোবিয়ায় আক্রান্ত?
যাক আর কিছু বলার নেই আপাতত। তবে বাংলাদেশের অগ্রপথের বাধার নাম যে ইসলাম সেটা আগেও বলেছি আবারও বলছি। আজ না হোক পাঁচ-দশ বছর পর স্বীকার করবেন নিশ্চয়।
@সুষুপ্ত পাঠক,
হয়তো খেয়াল করেন নি যে, অসীম ধৈর্য্য নিয়ে আপনি যাতে আমার গায়ের উপরে এসে না পড়েন, পায়ে পাড়া না দিতে পারেন, আমি সেই চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। যতবারই কাছে আসছেন আলগোছে ঠেলে ঠেলে সরিয়ে দিচ্ছি আপনাকে। বুদ্ধিমান হলে এখানেই থেমে যাবেন বলে আশা করছি।
পনস পাতায় পেট বোঝাই কোনো যমুনাপাড়িকে ধরে যন্তর-মন্তর ঘরে নিয়ে ধোলাই দেবার মেজাজে আমি এই মুহুর্তে নেই।
@ফরিদ আহমেদ,
এতে সমস্যা কি ফরিদ সাহেব? ইসলাম ভক্ত হওয়াটা দোষের কিছুই না, যতক্ষন না আপনি ধর্মের নামে সন্ত্রাস করছেন অথবা কারো স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপ করছেন।
অবশ্য আপনাদের বিতর্কে আমার বোধহয় নাক না গলানোই ভাল, কারন আমি কেন জানি একটা গোলমেলে ব্যাপারের আভাস পাচ্ছি।হয়ত অভ্যন্তরীণ কোন দ্বন্দের ব্যাপার স্যাপার থাকতে পারে, কাজেই না জেনে আর বেশিদুর কথা বার্তা চালিয়ে যাওয়াটা বুদ্ধিমানের কাজ বলে মনে করছি না।:-) তবে আপনার লেখাটা খুব ভাল লেগেছে। ধন্যবাদ সে জন্যে।
@দারুচিনি দ্বীপ,
কেউ ইসলাম ভক্ত হলে আমিও কোনো সমস্যা দেখি না। কিন্তু, আমি নিজে ইসলাম ভক্ত নই। এই ধর্ম আমি ত্যাগ করেছি সেই কৈশোরেই। কাজেই, কেউ যখন এই ট্যাগ দেবার চেষ্টা করে তখন প্রচণ্ড বিরক্তি লাগে।
@সুষুপ্ত পাঠক,
তাও তো আমাদের দেশে বিপুল সংখ্যক মানুষ এই দাবীতে গগনবিদারী শ্লোগান দেয়, আন্দোলনে রাজপথ হয় উত্তাল। কিন্তু দেখুন আমাদের পাশের দেশ ভারতের অবস্থা। ওখানে জামাত কিন্তু বেশ আদরণীয়। বিপ্লব-দার (বিপ্লব পাল) সাম্প্রতিক একটা লেখায় আমরা জানতে পাই, কি করে এমনকি বামপন্থীরা মৌলবাদী গোষ্ঠীর পিঠ চাপড়াচ্ছে। আর হিন্দু জাতীয়তাবাদের একজন সার্থক রূপকার নরেন্দ্র মোদী প্রধানমন্ত্রীর সিটে বসলেন বলে!
সুতরাং, প্রগতি এত সহজ জিনিস নয়, ভাইয়া। অনেক সময় এমন হয়, আপনার দেশে প্রগতির যে শিখা বিপুল বেগে জ্বলজ্বল করতে থাকবে, তাকে দপ করে নিভিয়ে দিতে হাজির হয় কাছের ও দূরের প্রগতির ঝান্ডাধারি দেশেরা! সাম্রাজ্যবাদের স্বার্থকে সুনিশ্চিত করার জন্য।
আপনি ধর্মের সাথে মুক্তিযুদ্ধের যে হাস্যকর যোগসূত্র তৈরি করলেন, তা নিয়ে আসলে বলার কিছু নেই, এতই বালখিল্য তত্ত্ব-প্রচেষ্টা এটি।
এর চেয়ে বরং হতাশা ঝেরে ফেলুন। প্রগতির উপর ভরসা রাখুন। একদিন পৃথিবীতে থাকবে না মৌলবাদ, সাম্প্রদায়িকতা, অন্ধকার! এগুলো অপসারিত হবেই, হতেই হবে, নইলে পৃথিবী যে আর এগুবে না। শ্বাসযন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ হয়ে মাঝপথেই যাবে যে সে মরে!
@কাজি মামুন,
ধর্মকে রেখে?! যারা জামায়েতের বিরুদ্ধে শ্লোগান দেয়, ধর্মীয় রাজনীতির বিরুদ্ধে কথা বলে, সাম্প্রদায়িকতার বিরুদ্ধে কথা বলে অথচ ঈমানদার সাচ্চা মুসলমান তারা হয় ইসলামকে জানে না বা ইচ্ছা করেই ভন্ডামী করছে জেনেবুঝে। আপনার স্বপ্নের পৃথিবীকে মারার জন্য গোকুলে জন্মাচ্ছে ইমাম মেহেদী। ইসলামের লাষ্ট প্রফেট এখনো আসেনি। তিনি আসবেন। পৃথিবীর সবাইকে মুসলমান বানাবেন এবং ইসলামের পতাকা উড়াবেন। আর যারা তাকে মানবে না তাদের ইসলামের তরোয়ালের নিচে গরদান দিতে হবে। তালেবান, একজন লাদেন বাংলাভাই এবং প্রতি মুহূর্তে জন্ম নেয়া হাজারো মৌলবাদীর (যা জন্মাতেই থাকবে যদি না ধর্মর প্রসার চলতেই থাকে) আপনার স্বপ্নের পৃথিবীকে একটু একটু করে খেয়ে ফেলছে।
আর ধর্মের সঙ্গে মুক্তিযুদ্ধের যে যোগসুত্র? এরপর ৪৭-এর দেশভাগ নিয়েও শুনতে হবে বাঙালী ফাকিস্তান করেছিল অসাম্প্রদায়িকতার মাধ্যমে। মুক্তিযুদ্ধ হয়েছিল ধর্মরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে নয়। আসলেই হয়ত তাই। আমাদেরই ভুল। মুসলিম মানস চিনতে পারিনি।
@সুষুপ্ত পাঠক,
আপনি ভাই মনে হয় আসলেই ইসলাম ফোবিয়ায় ভুগছেন। নইলে দেখতে পেতেন দুনিয়াতে শুধু মুসলিম রাজ্য প্রতিষ্ঠার খোয়াবই লোকে দেখে না। হিন্দু রাজ্য, খ্রিস্টান রাজ্য বা একটি ইহুদি রাজ্য বানানোর জন্য হা-পিত্যেশ করে মরা লোকের অভাব নেই। আপনার অভিধানে শুধু মুসলিম মৌলবাদীদের সংজ্ঞাই রয়েছে। হিন্দু বা ইহুদি মৌলবাদীদের সম্পর্কে আপনি ডুবে আছেন অজ্ঞানতার অন্ধকারে! এই অজ্ঞানতার (ধরে নিচ্ছি, ঐচ্ছিক বা সুবিধাজনক অজ্ঞানতা নয়) মধ্যে সাঙ্ঘাতিক বিপদ রয়েছে কিন্তু। দেখা যাবে, আপনি মুসলিম মৌলবাদীদের ঝেঁটিয়ে বিদেয় করলেন, বিনিময়ে পেলেন ঘোর ইহুদি বা হিন্দু মৌলবাদে ভরপুর একটি সুনসান পৃথিবী!
আপনাকে আন্তর্জাতিক মৌলবাদের কারণ ও প্রেক্ষাপট খানিক অধ্যয়ন করতে হবে, ভাইয়া। করলে জানতে পারবেন, এক মৌলবাদ জন্ম দেয় আরেক মৌলবাদ। আর তাই আপনার যুদ্ধটি যদি মৌলবাদের বিরুদ্ধেই না হয়, শুধু ইসলামী মৌলবাদীদের শুলে চড়াতে থাকেন শশব্যস্ত, তাহলে জানবেন, আপনি মৌলবাদের হয়েই লড়ছেন, নিজের অজান্তেই জয়ী করছেন বীভৎস ও অতিকায় সব দানো-মৌলবাদকে।
সুতরাং, ভাই, একটু খেয়াল কইরা……..চোখ-কান আরেকটু খুইলা…………
@কাজি মামুন,
ভাল লাগলো যে আপনি স্বীকার করেছেন ধর্মবাদী আর তাদের স্বপ্নগুলোকে। বাংলাদেশে আপাতত ইহুদী বা হিন্দু মৌলবাদীর কোন সম্ভবনা নেই ভবিষ্যতেও হবে না তাই তাদের নিয়ে আমি ভাবতে চাই না। আর বিশ্বে এদের মৌলবাদকে একসময় এই ধর্ম দিয়েই মোকাবিলা করা যাবে। ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর যেমন বিধবা বিবাহ প্রচলন করেছিলেন শাস্ত্র দিয়ে শাস্ত্রকে মেরে, তেমনি ঐ ধর্মবাদীদের চাইলে ধর্ম দিয়েই ধর্মকে মারা যাবে। কিন্তু ইসলামে স্বয়ং প্রফেট রাজনীতি করেন। এক আরব উপনিবেশন চালান। কেয়ামত পর্যন্ত তার বাস্তবায়ন করতে নির্দেশ করেন। এটাকে কিন্তু শাস্ত্র দিয়ে শাস্ত্রকে মারা যাবে না। একদম কোরআন আর হাদিসী প্রমাণ আছে। তাই ইসলামী মৌলবাদীকে ভয় পাবার কারণ অনেক বেশি। এইরকম মনে করার কোন কারণ নেই যে, আমি অন্য ধর্মগুলোকে খুব ভাল বলছি। কিন্তু ইউরোপে বা অন্য কোথাও খ্রিস্টান বা ইহুদী ধর্ম পাকিস্তান বা আফগানিস্থান টাইপ কিছু বানানোর খোয়াব কোনদিনই তাদের পক্ষে সম্ভব হবে না। কারণ সেই ধর্মের অনুসারীরা প্রতি নয়ত মসজিদে গেলে (তাদের প্রার্থনা গৃহে) জিহাদী প্রচারণা শুনতে হয় না। কিছু মনে করবেন না, এখানে যাদের সঙ্গে আমার বিতর্ক হচ্ছে, তারা সবাই কি প্রবাসী? কেন যেন আমার মনে হচ্ছে, বর্তমান বাংলাদেশ সম্বন্ধে আপনাদের পরিস্কার ধারনা নেই। ইসলাম বা এই সমস্ত বিষয় নিয়ে কথা বলার কোন প্রয়োজনই আমার পড়তো না যদি না মসজিদে মসজিদে জিহাদী দাওয়াত শুরু না হতো। কে মানা করেছে ধর্ম নিয়ে পাগলামী না করতে? যত খুশি করুক না! আমার কি? ৯০ সালের আগেও বাংলাদেশে মৌলবীদের নিয়ে কেউ সারিয়াসলী ভাবতো না। কিন্তু সেই দিন নেইরে আর… এখন বাচ্চা বাচ্চা ছেলেরা শিখছে ইসলামই একমাত্র জীবন বিধান। সব সমস্যার সমাধান নিহিত আছে ইসলামী শাসন ব্যবস্থায়। যদি বলেন এতে আমার আপত্তি আছে? আমি বলবো হ্যাঁ, আমার ইসলামী শাসনে ঘোরতোর আপত্তি আছে।
@কাজি মামুন,
এরা কতটা সক্রিয় মামুন সাহেব?আপনি কি কোন মুসলিম দেশে মুসলিমদের মাঝে অন্য ধর্ম প্রচারের সাহস করবেন?একবার করেই দেখেন না, কপালে কি জোটে, সর্ব নিম্ন গনধোলাই থেকে শুরু করে এমনকি আপনাকে সেই দেশের আইনানুসারে জেলে যেতে হবে,অথবা আরো বেশি কিছু।
সেখানে মানুষ কোন ফোবিয়াতে আক্রান্ত হবে? ইসলাম ফোবিয়া নাকি অন্য ধর্ম মতের ফোবিয়া?
@সুষুপ্ত পাঠক,
ধর্মের প্রসার তো আর লেখালেখি করে থামান যায় না, আর থামানোর দরকারো হয় না।আপনি নিশ্চয়ই ইনকুইজিশনের যুগের খ্রিষ্টান ধর্ম আর বর্তমান খৃস্টান ধর্মকে এক করে দেখবেন না তাই না?ধরেই নিন না যে ইসলাম তার ক্রান্তিকাল অতিক্রম করছে, সময়ে এটিও নির্বিষ হয়ে পড়বে।
আজো কিন্তু আয়ারল্যান্ডের মত দেশে গর্ভপাত নিষিদ্ধ, তা বলে কিন্তু আইরিশদের গর্ভপাত থেমে থাকছে না।যুক্তরাজ্যে গিয়ে তারা ঠিকই কাজটা সেরে ফেলছে, আর ফতোয়া ছাড়া চার্চ কিছুই করতে পারছে না।কাজেই আপনার এত ভয়ের কারন কি?দুনিয়া তো আর শেষ হয়ে যায় নি।
@দারুচিনি দ্বীপ,
ভাই আপনি ঈমানদার মুসলমান তো? 🙁
@সুষুপ্ত পাঠক,
তাতো জানি না ভাই।মাঝে মাঝে নামাজ রোজা করে থাকি।এতে ইমানদার হলেও হতে পারি।তবে ধর্ম গ্রন্থে কিছু অসঙ্গতি দেখতে পাই। দেখতে পাই আর এড়িয়ে যাই। এ নিয়ে তর্কে আপনার সাথে পারব না আমি। তবে আমি ধর্মকে যুগোপযোগী করে তোলার পক্ষপাতী। এতে আমাকে হয়ত বর্তমানে কিছু ভণ্ড ( যেমন শাফী হুজুর) মুরতাদ ঘোষণা করবে; তবে তাতে তেমন কোন সমস্যা নেই।ক্যাথলিক চার্চও আগে এইসব করতো, এখন দেখেন মেলা ডগমা বদলে দিয়েছে আর হেরেটিক রা হয়ে গেছে ধার্মিক।কাজেই ইসলামেও এমন কিছু সংস্কার হলে আমি তো সমস্যা দেখি না।
@দারুচিনি দ্বীপ,
তারপরও আপনি ধার্মীক থাকেন কিভাবে আমি বুঝি না। তবে আপনার মত ধার্মীক সারা পৃথিবী জুড়ে থাকলে এইসব ধর্ম নিয়া কচকচানি করার কোনই প্রয়োজন পড়ত না। আপনার কথা আমার ভাল লাগছে। তবে ভুলেও কোন ঈমানদার লোকের কাছে এই সমস্ত বলতে যাবেন না যেন! বিপদে পরতে পারেন। আপনি ইসলাম বিদ্বেষী হয়ে যাবেন। মনে রাখবেন, আপনি ইসলামকে নিয়ে যা ইচ্ছা তাই বলতে পারেন, মুহাম্মদকে খুনি, সন্ত্রাসী, ইসলামকে চির অশান্তি এইসব বলতে পারবেন কিন্তু কিছুতে ইসলাম বিদ্বষী হতে পারবেন না! 😀
@সুষুপ্ত পাঠক,
বলেছি, যখন সংস্কারের কথা তুলেছি তখন আমার আব্বুর সাথেই আমার এক চোট লেগে গেছিল।
অনেক হেদায়েত বানী আর সাবধান বানীও শুনেছি।
নবীজির ১৩ বিয়ে নিয়ে আপত্তি করাতে তিনি বলেছেন যে এইসব নাকি রাজনৈতিক কারনে। পরে আল্লাহ নাকি বিয়ে করতে মানা করেছেন।
যাক এইসব কথা থাক।এতে এই লেখাটির প্রাসঙ্গিকতা নষ্ট হবে।
ছদ্মবেশী জনপ্রতিনিধি, ভন্ড, রাজ ঠিকাদার, ঘৃনাবাদ।
ঘৃণাবাদ তোমাদের, অন্তর থেকে, শ্বাশত ঘৃনাবাদ।
সুপ্রভাতের বদলে তোমাদের জানাই অসীম ঘৃনাবাদ।
স্বাধীনতার চেতনার অপমানের চতুর ঠিকাদার, দুগ্ধাপরাধী।
@কাজী রহমান,
আপনার উপমাতে বিরাট গলদ আছে কাজী সাব। যুদ্ধাপরাধীরা কেউই দুগ্ধাপরাধী না। এরা সব তাদের পাকিস্তান আম্মিজানের দুদু খাওয়া লোকজন। বাংলাদেশের হাড় মাংস মজ্জা রক্ত খাওয়া শুরু করেছে দুধ দাঁত ঝরে শ্বাদন্ত দেখা দেওয়া মাত্রই।
@ফরিদ আহমেদ,
ফাকিস্তানি আম্মিহুজুরের শুয়োর ছানাসব পাচার করে দেওয়া হয়েছে অনেক আগেই। যেগুলোর কথা বলছি, সেগুলোর জন্ম এই বাংলাতেই, এই বাংলা মায়ের দুধ খেয়ে খেয়ে বড় হয়েও এই বাংলা মাকেই লাত মেরে চলেছে প্রতিদিন। ওরাই সেই সব দুগ্ধাপরাধী। যারা ওদের যারা আশ্রয় কিংবা প্রশ্রয় দেয়, তারাও দুগ্ধাপরাধী। এদের কোন ক্ষমা নেই। ঘৃনা, চরম ঘৃনা সকল দুগ্ধাপরাধীর প্রতি।
তামাশাতো বটেই। তবে, দুঃখ হচ্ছে যে, এই তামাশার জন্মদা্তা বিএনপি নয়, আওয়ামী লীগ। আজ যদি বিএনপি এই কাজ করতো মনে কোনো খেদ থাকতো না। কারণ, রাজাকার তোষণ আর পূনর্বাসন প্রকল্প নিয়েই এর জন্ম। কিন্তু আজকে দেশে যে তামাশা তৈরি হচ্ছে, যার জন্য কোটি কোটি বাঙালি অপমানিত বোধ করছে, প্রতারিত ভাবছে নিজেদের, অসহায় অক্ষম ক্রোধের আগুনে পুড়ছে সবাই, তার পিছনে রয়েছে আওয়ামী লীগ। গোলাম আযমের বিচারের রায় পাবার পরপরই এতো দ্রুত আওয়ামী লীগ ঢাকঢোল পিটিয়ে তারা সন্তুষ্ট বলে যে জিকির তুলছে, তা দেখেই বোঝা যায় যে, এই রায় পুরোপুরি সাজানো রায়। আজ পর্যন্ত যতগুলো রায় হয়েছে, খেয়াল করলেই বুঝতে পারবেন যে, এর সবগুলোই ছিল পূর্বনির্ধারিত। প্রথমেই আসুন কাদের মোল্লারটা দেখি। রায় পাবার পরে হাসিমুখে ভি চিহ্ন দেখিয়ে বের হয়ে এসেছিল সে। এর পরে যখন শাহবাগে এর প্রতিক্রিয়ায় তীব্র গণজাগরণ তৈরি হলো, তখন সাঈদীর ফাঁসির রায় হলো। এখন গোলাম আযমের রায় নিয়ে প্রতিক্রিয়া চলছে। এর জের কাল দেখতে পাবো আমরা মুজাহিদের রায়ে। গোলাম আযমের বেঁচে যাবার মাশুল কাল তাকে দিতে হবে হয়তো।
এইসব চিহ্নিত রাজাকারদের বিচার করার তামাশা আওয়ামী লীগ না করলেও পারতো। তাতে অন্তত আমাদের এইভাবে অপমানিত হতে হতো না, রিক্ত-নিঃস্ব, রক্তাক্ত হতে হতো না। নিজের দেশকে পরদেশ বলে মনে হতো না।
@ফরিদ আহমেদ,
গু আজম রাজাকার আলবদর আলশামস যুদ্ধাপরাধীর বিচার স্বাধীনতার চেতনা এইসব ইস্যু নিয়ে জনতাকে বোকা বানাবার আওয়ামী ছলাকলা এবার উলঙ্গ হয়ে গেছে। পাবলিককে আহাম্মক ভাবে আহাম্মকরাই। জনতা এদের ক্ষমা করবে না। জনগণ এই অপমানের শোধ নেবেই নেবে।
@ফরিদ ভাই,
আপনার কথাই সত্য হল। এতই প্রেডিক্টিবল একটা গেম খেলছে আ’লীগ!
এমন নয় যে, মুজাহিদের ফাঁসির রায়ে বিন্দুমাত্র অখুশি হয়েছি, কিন্তু কেমন যেন একটা গন্ধ, তাই না? কেমন যেন সাজানো-গোছানো সবকিছু।
একজন মুজাহিদের মৃত্যুদণ্ড মুক্তিযুদ্ধকে ধারণ করা প্রতিটি মানুষের জন্যই একটা বিজয়, ৪০ বছর সংগ্রামের ফসল। কিন্তু এ অনুভূতিটি কেমন? মনমত সাজিয়ে-গুছিয়ে একটা বিজয় আপনার হাতে তুলে দেয়া হল! আপনি সারাটি খেলায় প্রচণ্ড পরিশ্রম করলেন, কিন্তু বিজয়-ট্রফিটি হাতে নেয়ার পর জানলেন, গোলটিতে ছিল কারসাজি!
আমরা এমন বিজয় চাই না। আমরা চাই না এমন বিচার। আমরা চাই না গোলাম আযমের হৃদয় বিদীর্ণ করা রায়ের ক্ষতে মুজাহিদের ফাঁসির মলম। ৩০ লাখ প্রাণের বিনিময়ে স্বাধীন যে দেশের মানুষ, তাদের এমন অপমানসূচক বিজয় প্রাপ্য নয়। একদম না।
@কাজি মামুন, যদি গোলাম আজমের ফাঁসী না হয়, তবে আর সব রাজাকারের মুক্তি পাওয়া উচিত,কারন সেই নাটের গুরু।
ভাল রাজা নাকি আরেক রাজাকে( বিজিত) মারে না, তাই রাজাকার দের রাজাকে বাংলাদেশের রানী শেখ হাসিনা জীবনের শেষ কটা দিনে জামাই আদরে রাখার জন্যেই মনে হয় ৯০ বছরের জেল দিলেন?ওই ব্যাটা তো যেকোনো সময়ে মারা যাবে,তাই এই ভনিতা না করে বরং তাকে রাষ্ট্রপতির দায়িত্ব দিয়ে ভবিষ্যতের জামাত আওয়ামী জোটের শুভ সুচনা করা হোক।আমীন।
@কাজি মামুন,
মুজাহিদের ফাঁসির খুশিতে লোকে গোলামের বেঁচে যাওয়াটা ভুলে গেছে। চারিদিকে মিষ্টিমুখ হচ্ছে দেখলাম। চালবাজরা তাদের চাল ঠিকই দিয়েছে। গজ বিসর্জন দিয়ে মন্ত্রীর নিরাপত্তা অর্জন করে নিয়েছে।
প্রত্যাঘাত চাই
একাত্তরের হিংস্র দাঁতাল
লাশ খেকো নোংরা শুয়োর…
নোংরা বীর্যে জন্মানো
হাজারো নগ্ন শুয়োরছানার
ঘোঁতকার শীৎকারে
ভেবেছিস, বেঁচে গেলি?
রাজনীতির কুকুর ছানারা শুধু
মিথ্যের বেসাতি করে যায়।
হয়তবা উচ্ছিষ্ট ভোগে
সারমেয় সুখ কারও…
কুকুর আর শুয়োরের সংগমে
ভেবেছিস, বেঁচে গেলি?
প্রস্তুত হ জানোয়ার
প্রতিদিন শতবার মৃত্যুর জন্য।
বেজন্মা শুয়োরগুলোকে
পাঠিয়ে দেব সমন সদনে
কোটি প্রানে হুঙ্কার অহর্নিশ
বঙ্গোপসাগরে ডোবাব পাকি প্রেতাত্মা।
@অন্ময়,
(Y)
বিচারকেরা এই রায় দেবার আগে কি একবার-ও এস আই সিরুমিয়ার জীবিত পরিবার বর্গের কথা ভেবেছিলেন? আমার ধারনা, তারা ভেবেছিলেন। কিন্তু বাংলাদেশের জীর্ন-দীর্ন কোন মুক্তিযোদ্ধার সামনে চোখ তুলে দাঁড়িয়ে কথা বলার মতো ব্যক্তিত্ত্বের পর্যায়ে তারা ছিলেন না, যখন রায়ের সিদ্ধান্ত নিলেন।
যে দেশে একজন মুক্তি যোদ্ধা আজও ভিক্ষে করে বেড়ায় সে দেশে এই নরপশুটাকে বঙ্গবন্ধু হাসপাতালে (!)ফরমায়েশ মতো খাবার আর আতিথেয়তা দেওয়া হচ্ছে! তামাশা নয় কি?
তবে তামাশা দেখেই জীবনটা কাটাবেন না ফরিদভাই, এমন কিছু করুন যেনো আগামীতে আমাদের উত্তরসূরীদের আর তামাশা দেখতে না হয়।
কবিতাটা শামসুর রহমানের বুড়াকালের লেখা।আমি তরুণ, তাই সুকান্তের ‘অনুভব’ দিয়েই আমার অনুভূতি জানাই…
অবাক পৃথিবী! অবাক করলে তুমি
জন্মেই দেখি ক্ষুব্ধ স্বদেশভূমি।
অবাক পৃথিবী! আমরা যে পরাধীন
অবাক, কী দ্রুত জমে ক্রোধ দিন দিন;
অবাক পৃথিবী! অবাক করলে আরো—
দেখি এই দেশে অন্ন নেইকো কারো।
অবাক পৃথিবী! অবাক যে বারবার
দেখি এই দেশে মৃত্যুরই কারবার।
হিসাবের খাতা যখনি নিয়েছি হাতে
দেখেছি লিখিত— `রক্ত খরচ’ তাতে;
এদেশে জন্মে পদাঘাতই শুধু পেলাম,
অবাক পৃথিবী! সেলাম, তোমাকে সেলাম!
আসলেই গো আজম বস!! সে আমাদের তরুণ প্রজন্মের মডেল পুরুষ। কিভাবে জীবনে জয়ী হতে হয় তার থেকে শেখা যায়। ৭১ এ পাকি দের সঙ্গ দিয়ে বাহাদুরি করেছে, পরে দেশের রাজনীতিতে ঢুকে নেতা বনে গেছে, যখন বুড়া হল তখন তার হাগু আমরা রাষ্ট্রীয় খরচে পরিষ্কার করার দায়িত্ব নিলাম। ক্ষমাই মহত্ত এই বানী তে আমরা সন্তুষ্ট নই, অপরাধীকে ক্ষমা করে নিজ খরচে সেবা করে চরম মহত হতে চাই। আমাদের মত এমন জাতি সাড়া বিশ্বে দ্বিতীয়টি পাবেন না তা আমি হলফ করে বলতে পারি।
যে বিচারক এই রায় দিল এবং এই রায়ের পক্ষে যারা আমি তাদের কন্যা কে এক বৃদ্ধ কে দিয়ে রেপ করাতে চাই তারপর বলব এই বৃদ্ধের কি বিচার করবি কর।
আমি অবশ্য বিচারক হলে তাকে ফাঁসি দিতাম না, তাকে মাগুর মাছের পুকুরে ফেলে দিতাম। যতক্ষণ পারে বাঁচুক।
@আম্মানসুরা,
বুড়ো ভামটা ঠিকই বেঁচে থাকতো, মাগুর মাছগুলোই বরং তার উদরে আশ্রয় নিতো। পিরানহা ভর্তি পুকুরে ফেলে দেখতে পারেন কী ঘটে। 🙂
@ফরিদ আহমেদ,
আমার তো মনে হয় যে পিরানহাও ঐ বজ্জাত গু আজম কে হজম করতে পারবে না। আমাজানে নাকি এক ধরনের পিঁপড়া আছে, যারা সর্বভুক।ঐ পিঁপড়ের ঢিবিতে ফেলে দিলে কেমন হয়? 😀