(বিশ্বাসীরা নিজ দায়িত্বে কর্ণগুহরে সীসা ঢালুন)
তারপরও অনেকে বলবে, সরকারই নাকি পারবে শ্রমিকদের বাঁচাতে। প্রতিটা কেইসে চোখ বুলিয়ে দেখুন, সরকারই মালিকদের সাহায্য করে শ্রমিকদের মরতে দিতে। কোন রাজনৈতিক দল সরকারে, তাতে কিছু ম্যাটার করে না। একদম না। কোনো দেবতার দল পৃথিবীতে নেই, কখনো ছিলো না, যে সাধু বনে যাবে। আপনাকে যে মারে, মারের হাত থেকে বাঁচতে তার কাছেই হাত পাততে যাবেন? কাজ হবে না।
সরকারবিহীন একটি মুক্ত সমাজে শ্রমিকদের সকল সুযোগ আছে তার নিজেকে রক্ষার জন্যে নিজস্ব নিরাপত্তা রক্ষী বাহিনী গঠনের। কুরোসাওয়ার ‘সেভেন সামুরাই’তে যেমন দরিদ্র গ্রামবাসীরা সামুরাই ভাড়া করেছিলো দস্যু ঠেকাতে। আমাদের জন্যে ব্যাপারটা আরও সহজ। আমাদের আছে লাখ লাখ শ্রমিক। প্রত্যেকে সামান্য অর্থ দিয়ে একটা শক্তিশালী নিরাপত্তা বাহিনী তারা নিজেরাই গঠন করতে পারে কোনো প্রকার সরকারের সাহায্য ছাড়াই। খরচ মেস ভাড়ার চেয়েও অনেক কম হবে। সেই বাহিনী শ্রমিকের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার চেষ্টা চালাবে। দুর্ঘটনা ঘটলে মালিকদের ধরে ঠ্যাঙানি দিবে। জরিমানা আদায় করবে পাই পাই। মালিকেরা সত্বরই বুঝে যাবে, এই শ্রমিকেরা অসহায় নয়। তারা এও বুঝবে যে শ্রমিকের রক্ষকেরা মালিকদের কোনো দোসর নয়, সরকারি পুলিশেরা যেমন।
শ্রমিকদের রক্ষাকারী পুলিশ বাহিনী থাকতে পারে একাধিক। তাদের নিজেদের প্রতিযোগিতায় শ্রমিকদের খরচ আরো অনেকখানিই কমে আসবে। শ্রমিকদেরও সুযোগ থাকবে এক বাহিনীর সেবা পছন্দ না হলে আরেক বাহিনীর দ্বারস্থ হবার। এমন কি সমাজের মধ্যবিত্ত বা অবস্থাপন্ন অনেকেই সেই বাহিনীগুলোতে ডোনেশান দিবে তাদের শ্রমিক ভাইদের রক্ষা করার জন্যে। এখনের কথাই চিন্তা করুন। বাংলাদেশের মধ্যবিত্ত সমাজ এই অন্যায়গুলোর কারণে এখন যে পরিমাণ ফুঁসে আছে, এই মুহূর্তে এরকম একটি বাহিনী গঠন করা সম্ভব হলে তাতে ডোনোশান দেওয়ার লোকের কোনো অভাব পড়তো কি?
এখন কেনো সেটা সম্ভব হয় না? কারণ সরকার ব্যবস্থা অন্য কাউকে নিরাপত্তা বাহিনী গঠন করতে বাঁধা দেয়। সরকার নিজে নিরাপত্তা ব্যবস্থার একচেটিয়া ব্যবসা করে। একটা মাত্র বাহিনী থাকলে সে বাহিনী কেবল মালিকপক্ষ আর তার রাজনৈতিক দোসরদের রক্ষা করতে বাধ্য।
বানরের কাছে হাত পাততে গেলে সে বরাবরের মতোই ইঁদুরের পিঠাখানি আরেকটু খেয়ে দিবে। এটাই আমাদের সংগ্রামের ইতিহাস।
পুঁজিবাদী সংসদীয় গণতন্ত্রে শ্রমিক সুরক্ষার কথা চিন্তা করা দুরাশা।আর বাংলাদেশের মত দেশে সেটা আরও অসম্ভব।কেননা এ দেশে সমস্ত প্রজাতন্ত্রিক ক্ষমতা একটা নির্দিষ্ট গোষ্ঠীর মধ্যেই ন্যস্ত থাকে।আর শ্রমিকদের নিজস্ব নিরাপত্তা বাহিনী মূলত শ্রমিক সংগঠন দ্বারাই পূরণ করা সম্ভব।কিন্তু এ দেশে এ সংগঠনগুলোও কম দূর্নীতিপরায়ন নয়।তবুও শ্রমিকরা একত্রিত মনোভাব বজায় রাখলে এমন কিছু অসম্ভব নয়।সবশেষে আরেকটা জিনিস উল্লেখ্য,শ্রমিকদের মজুরি এখনো ভয়াবহ রকমের স্বল্প।তাই শ্রমিকরা এরকম বাহিনী গঠনের সামর্থ্য রাখে কিনা সেটাও দেখার বিষয়।
আসলে ইন্ডাস্ট্রিয়াল ইউরোপের সভ্যতা, সংস্কৃতি, সমাজ ও অবকাঠামো ঘুনে ধরে ধরে প্রায় শেষ, আরেকটা ছোট টোকা মারলেই এর গোটাটা তাসের ঘরের মতো ভেঙ্গে পড়বে এই ফ্যান্টাজম কিন্তু নতুন কিছু নয়। সেই কলোনিয়ালিজমের সময় হতেই এই স্বপ্ন দেখে এসেছে কমিউনিস্ট, এনার্কিস্ট, ইস্লামিস্ট, লুডাইটস এবং কে নয়? কিন্তু ইউরোপ কি পতিত হয়েছে? উত্তর বলাই বাহুল্য না! ফলশ্রুতিতে আমি মনে করি- একাধিক বার করা একই ভবিষ্যদ্বাণী যখন মিথ্যা প্রতিপন্ন হয়েছে বারংবার, তখন সেই একই ভবিষ্যদ্বাণী পুনরায় করে চলা একপ্রকারের বাতুলতাই বটে! ইউরোপ দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ সার্ভাইব করেছে এবং ওভারকাম করেছে বিশ দশকের অর্থনৈতিক মন্দা। এই মুহুর্তে যদি গ্রীস ইউরোপ ছেড়েও যায় তাতে কি এমন গুরুতর ক্ষতি হবে জার্মানীর? হ্যা সমস্যা কিছু হবে হয়তো, তবে সেটাকে গুরুতর ক্ষতি না বলে কাবজাব বলাটাই বেশী সমিচীন। জার্মানী ইউরো ছেড়ে ডাচ মার্কে ফেরত গেলে তার কিচ্ছু হবে না শুধুমাত্র নিজের রাজনৈতিক এম্বিশনে ভাটা পড়া ছাড়া।
যাই হোক, এই শ্রমিক সমস্যার একটা ভালো সমাধান হতে পারতো পশ্চীম ইউরোপীয় ওয়েলফেয়ার অর্থনীতি, যে- কর্পোরেশনকে ঋণ ও অন্যান্য ইন্সেন্টিভ দেওয়ার বিনিময়ে সমাজ তাদের কাছ থেকে আদায় করবে উচ্চহারে কর্পোরেট কর, যেই কর কিনা ব্যাবহৃত হবে তাদের পিছনে যাদেরকে কিনা সরকার উদ্যোগগত ইন্সেটিভ তেমন একটা দিতে পারেনি, যেমন- গৃহহীন মানুষ এবং সিঙ্গল মাম। এই ব্যাবস্থাটা এতোদিন খুব ভালোই চলছিলো, সমস্যা হয়েছে খুবই সাম্প্রতীককালে যখন কিনা সমাজ ব্যার্থ হয় ফিনান্সিয়াল ইন্ডাস্ট্রিকে ভালোভাবে রেগুলেট করতে (এবং পারিপার্শ্বিক কিছু কারণেও)।
অপরপক্ষে নাগরিক নিরাপত্তাকে কমার্শিয়ালাইস করলে সমস্যা যেটা হবে সেটা হচ্ছে একাধিক কর্পোরেশন মার্জ হয়ে মনোপ্লি গঠন করবে। উড়োজাহাজ ইন্ডাস্ট্রিতে এর একটা উদাহারণ রয়েছে- ম্যাকডোনেল এবং ডগলাস একদা মার্জ করে আরও ক্ষমতাশালী কর্পোরেশন ম্যাকডোনেল ডগলাস গঠন করে, পরবর্তীতে আবার এই ম্যাকডোনেল ডগলাসও মার্জ করে বোয়িঙ্গ এর সাথে। এয়ারবাস ছাড়া বর্তমানে বেসামরিক উড়োজাহাজ ইন্ডাস্ট্রিতে তাদের আর কোন কম্পিটিটর নেই। এবং আমি মনে করি ইউরোপ যদি মাটি কামড়ে না ধরে নিজের বেসামরিক বিমান ইন্ডাস্ট্রি রক্ষা না করতো তাহলে সম্ভবত ইতিমধ্যেই মার্জ হয়ে যেতো বোয়িং এবং এয়ারবাস। আপনার প্রস্তাবিত নিরাপত্তা সেবা প্রদানকারী প্রতিষ্ঠানগুলোও যে একইভাবে মার্জ করে একটা মনোপলি প্রতিষ্ঠিত করে অর্জন করে নিবে না নিজের সার্বভৌম বার্গেইন পাওয়ার তার নিশ্চয়তা কি?
এছাড়াও মনোপলি প্রতিষ্ঠিত হবার একাধিক উপায় রয়েছে। যেমন- বড়ো কর্পোরেশনের থাকে বড়ো ক্যাপিটাল এবং এক্সেস টু ক্যাপিটাল। ফলশ্রুতিতে তারা কি করে? তারা স্টার্টআপকে বাধাগ্রস্থ করে। হয়তো ইন্ডাস্ট্রিতেই ঢুকতে দেয় না কিংবা ইন্ডাস্ট্রিতে ঢুকে নিজেকে ব্যাবসাসফল প্রমান করলে পরে বিশাল মূল্য হেকে কিনে নেয় সেই স্টার্টআপ। গুগোল মাইক্রোসফট এরা প্রতিনিয়ত কিনে নিচ্ছে ডজনে ডজনে স্টার্টআপ ব্যাবসা। গুগোল ফেইসবুককেও কিনে নিতো যেটা কিনা পারেনি জুকারবার্গের উচ্চাভিলাসের কারণে। এই উদাহারণ বিদ্যমান বায়োসায়েন্স ইন্ডাস্ট্রিতেও। জেনেনটেক যখন মনোক্লোনাল এন্টিবডি বাজার মাতিয়ে রেখেছিলো তখন জেনেনটেককে বিশাল মূল্য হেকে কিনে নেয় হফম্যান লা রোশ। রোশ না কিনলে হয়তো কিনতো ফাইসন্স কিংবা এসিআই কিংবা সানোফি (এইখানে উল্লেখ্য সানোফি নিজেও কিন্তু কেনাবেচারই ফসল, যেই কারণে এখন এটিকে ডাকা হয় সানোফি আভেন্টিস)। যাই হোক, আমি বলতে চাচ্ছি আপনি যেই কম্পিটিশন কার্ড খেলতে চাচ্ছেন সেটি কখনই আপনাকে খেলতে দিবে না ক্যাপিটাল নিয়ত বাজার, এটি মনোপলির দিকেই যাবে!
তাহলে প্রশ্ন হচ্ছে মনোপলি কিভাবে রোধ করছে আধুনিক পুঁজিবাদী বিশ্ব? বেশ, উত্তর হচ্ছে একটাই- পাবলিক রেগুলেশনের মাধ্যমে। কিছুদিন আগে বোয়িং কে বিশাল ফাইন করেছিলো ইউরোপ কেননা তারা প্রমান করতে পেরেছে যে বোয়িং আমেরিকান সরকার হতে নিয়েছে একটি বিশাল অঙ্কের টাকা টেবিলের তল দিয়ে গোপনে। ফলশ্রুতিতে একচেটিয়া বিরোধী আইনে তাদের বিচার হয়েছে, একইভাবে বিচার হয়েছিলো হফম্যান লা রোশেরও ভিটামিনের প্রাইস ফিক্সিঙ্গের অপরাধে, বিচার হয়েছে বার্কলেইস ব্যাঙ্কের প্রাইস ফিক্সিঙ্গের অপরাধে অতিসাম্প্রতীক কালে। প্রত্যেকটি বড়ো কর্পোরেশন, হোক সেটা আইটি কিংবা বায়োটেক কিংবা এভিয়েশন, দশকে দশকে দেয় বিশাল অঙ্কের জরিমানা নিছকই বড়ো কর্পোরেশন হবার অপরাধে (মানে বড়ো কর্পোরেশন হলে টেবিলের তলে যাই চালাচালি তাদের স্বভাব বশত করতে হয় সেই অপরাধে আর কি)। তাহলে মনোপলি রোধে কোনটি অপেক্ষাকৃতি বেশী কার্যকর? রেগুলেশনের উপস্থিতি না অনুপস্থিতি? রেগুলেটিভ বডি ছাড়া কিভাবে জানা যেতো যে রোশ ভিটামিনের প্রাইস ফিক্স করছে অন্যান্য কোম্পানীর সাথে অন্ধকার ঘরে বসে?
যাই হোক, যদিও আপনার প্রচারিত মতবাদকে আমি সমাজবিরোধী অপততপরতা হিসেবেই ব্র্যান্ড করবো, তথাপিও ব্যক্তি মানুষ হিসেবে আপনার লেখা আমার ভালোই লাগে কেননা এইখানে কমেন্ট করা যায়। আপনার লেখাগুলো মোর অর লেস মন্তব্যযোগ্য।।
@আল্লাচালাইনা,
ভালো আলোচনা করলেন।
আমাকে পশ্চিমের ইন্ডাস্ট্রিয়াল রেভলুশান ও পশ্চিমা এনলাইটেনমেন্টের অতন্দ্র প্রহরী বলতে পারেন। এনলাইটেনমেন্টের মূল দর্শনগুলোতে চোখ বুলালে হয়তো উপলব্ধি করবেন যে ইউরোপের ওয়েলফেয়ার অর্থনীতি তার থেকে অনেকটা পিছুটান নিয়েছে। অন্তত তেমনটাই আমার উপলব্ধি। সে ইন্ডাস্ট্রিয়াল রেভলুশানের ইফেক্টকে যেন অনেকটা ব্যালেন্স করতে চায়।
আমি মনে করি ইন্ডাস্ট্রিয়াল রেভলুশান যে দুয়ার খুলে দিয়েছে, তা নিজেকেই রক্ষা করবে আরও সামনে এগিয়ে, প্রতিষ্ঠানের কাঠামোবদ্ধতার মধ্যে পিছিয়ে গিয়ে নয়। ইউরোপের ধ্বংসের প্রশ্নই আসে না। ধ্বংস যদি কেউ হয় সেটা হবে তাদের সমাজের জড়াগ্রস্ত কাঠামোগুলো। এতে ইউরোপ ধ্বংস হবে না, আরও আগাবে বরং।
এমনকি আমাদের পরিবেশ-বিপর্যয়সংক্রান্ত যেসব সমস্যাকে পুঁজিবাদের ফল হিসাবে ভাবা হয়, তারও সমাধান সম্ভব পুঁজিবাদ ও বিজ্ঞানের সমন্বয়েই। মানুষের অগ্রযাত্রা স্তিমিত করে নয়।
@আল্লাচালাইনা,
দুর্দান্ত বিশ্লেষণ।
নিঃসন্দেহে।
রাষ্ট্র ব্যবস্থা আদৌ প্রয়োজন কিনা, এবিষয়ে ধ্রুব দার সাথে কিঞ্চিৎ আলোচনা হয়েছে অন্যত্র। এইখানে কেবল বলি- ক্ষমতার মনোপলিকামী অবস্থার বাইরে কেউ নাই। কেবল কিঞ্চিৎ লাভ করে কর্মীদের ও মানবকুলের সকল সুখ সুবিধা নিশ্চিত করার মহান ব্রত কোম্পানিগুলো নিজে থেকেই বেছে নিলে মহাজন ইউনুসের সামাজিক ব্যবসাই হয়ত হতে পারত তাবৎ রাষ্ট্র ব্যবস্থার উত্তম বিকল্প। শ্রমিকদের এমনকি মালিকপক্ষর সাথে ফাইট করার জন্য কোন লাঠিয়াল বাহিনীও লাগত না।
শ্রমের মালিক আর শ্রমিকের মালিকের বাইরেও সমাজে কিছু মানুষ থেকে যায়। এই মানুষগুলো নিজেদের জন্য লাঠিয়াল বাহিনী নিয়োগে সমর্থ নাও হতে পারে।
একটা উদাহরণ দিই।
কেবল যুক্তরাষ্ট্রে ৩৬ মিলিয়ন প্রতিবন্ধী আছেন, যা ঐ দেশের জনসংখ্যার প্রায় ১২ ভাগ। এদের অন্তত ৭২ ভাগের কোন কাজ নেই(অথবা- বলা যায় কাজ দেয়া হয়নি বা এদের উপযুক্ত কাজ পাওয়া যায় নি)। যুক্তরাষ্ট্রে ১৯৯১ সালে Americans with Disabilities Act হয়। এই আইনে প্রতিবন্ধীদের ক্ষেত্রে যাতে কর্মক্ষেত্রে কোন বৈষম্য করা না হয়, তার জন্য বিধান রাখা হয়। আইন পাশ করার সময় আশা করা হয়েছিল যে এর ফলে কর্মক্ষেত্রে প্রতিবন্ধীদের কর্ম সংস্থান বাড়বে। কিন্তু বাস্তবে উলটোটি হয়েছে। কর্মস্থলকে প্রতিবন্ধীদের উপযুক্ত করতে যে বাড়তি বিনিয়োগ লাগবে, অধিকাংশ প্রতিষ্ঠান তা ব্যয় করতে অনীহা প্রকাশ করে। ফলে ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলো প্রতিবন্ধীদের চাকরি দেয়া কমিয়ে দেয়। আইন করেও প্রতিবন্ধীদের জন্য কর্মসংস্থান নিশ্চিত করা যায়নি। ফলে প্রতিবন্ধীদের কথা সরকারকেই ভাবতে হয়েছে।
কেবল ২০০৯ সালেই মার্কিন সরকার প্রতিবন্ধীদের জন্য প্রায় ৩৫.৩ বিলিয়ন ডলার ব্যয় করেছে। এই অর্থ সরকারের কামাই নয় একথা ঠিক। তবে কর্পোরেট রেসপন্সিবিলিটি দোহাই দিয়ে কোম্পানির থেকে আদায় বলুন, আর পাবলিক ট্যাক্সই বলুন- বিভিন্ন কায়দা করেই সরকারকে এই অর্থ যোগাড় করতে হয়েছে। রাষ্ট্র বা সরকারহীন একটা অবস্থায় প্রতিবন্ধীদের এর থেকে ভাল অবস্থা আমি কল্পনা করতে পারছিনা।
@পথিক পরাণ,
মুক্তমনায় স্বাগতম!
এই যুক্তিটি ঠিক বোঝা গেলো না। মালিকদের (বা ইন জেনারেল মানুষের) দীর্ঘকালীন মহান ব্রতী নেই দেখেই তো একাধিক বাহিনী অ্যালাও করা উচিত। মালিক যেখানে স্বাভাবিক শয়তান, সেখানে ‘লাঠিয়াল বাহিনীর’ মনোপলি কীভাবে সহায়ক হয়? হয়তো প্রশাসনকে ঢেলে সাজানো …
যুক্তরাষ্ট্রে প্রতিবন্ধী আইন কিন্তু কোনো একজন মহান মানুষের ইচ্ছায় হয় নি। জনগোষ্ঠির ইচ্ছায় হয়েছে। জনগোষ্ঠির মধ্যে সচেতনতা থাকলে সেটা মার্কেটে খুব দ্রুতই রিফ্লেক্ট করে। যেমন ওয়ালমার্ট প্রতিবন্ধীদের জন্যে আইনের চাহিদার চেয়েও বেশি সুবিধা দেয়, যেটা না দিলেও চলে। এর কারণ তার উপর বিভিন্ন ভোক্তাগোষ্ঠির নিরন্তর ডিমান্ড।
অন্যদিকে রাষ্ট্রীয় এই আইন অনেক স্থানীয় মাম অ্যান্ড পপ স্টোরের বারোটা বাজিয়েছে। একটা অতি সামান্য দোকান চালিয়ে যে খেয়ে পড়ে বাঁচে, প্রতিবন্ধীদের জন্যে সুবিধা করতে গেলে অনেক ক্ষেত্রে তার খরচ অস্বাভাবিক বেড়ে যায়। এটা তাদের পোষায় না। অনেক ক্ষেত্রে ফলে দেখা গেছে সরকারি চিঠি খেয়ে ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীকে ব্যবসা গুটাতে হচ্ছে। লাভটা হচ্ছে ওয়ালমার্টের, যার জন্যে এটার ব্যবস্থা করা কোনো ব্যাপারই যে নয় শুধু তা নয়, সে নিজে থেকেই বাড়তি সুবিধা দিয়ে বসে আছে, কারণ তার পোষায়। অর্থাৎ আইনের অবর্তমানে এখানে একটা প্যারেটোঅপটিমাল অবস্থা অর্জিত হতে পারতো।
সরকারের এই যে আইন করার সুবিধা, রেগুলেশান, এর জন্যে কিন্তু অনেক সময় এভাবে কর্পোরেটরাই লাভ তুলে নেয় নানা ভাবে। অনেকক্ষেত্রে দেখা যায় তারাই লবি করে এগুলো এনফোর্স করতে, কারণ তারা এস্টিমেট করে দেখে যে ছোট ব্যবসার ভাত মারতে এগুলো মোক্ষম। যেমন আরো একটা হলো বিলুপ্ত প্রাণী রক্ষা আইন। শুনতে ভালো এসব আইনের প্যাঁচঘোচগুলো কর্পোরেটগুলোর বিস্তর লাভে পৌঁছায়, আর সাধারণ মানুষ ধরা খায় এইসব আইনের প্যাঁচে পড়ে। দুইএকবার যখন কর্পোরেটরা ধরা খায়, তেলবাজ মিডিয়া তখন সেগুলো ফলাও করে দেখায় আইনগুলোর কতো গুণ।
প্রতিবন্ধী আইনের নমুনা দেখুন। কারা প্রতিবন্ধী।
কোনো সাদা মেয়ে যদি কোনো কালো লোক দ্বারা আক্রান্ত হয়ে কৃষ্ণাঙ্গদের ভয়ে ভীত হয়, সে এক ধরনের প্রতিবন্ধী। তার কাজের জায়গার মালিককে তার জন্যে কালো লোক বিহীন কাজের পরিবেশের ব্যবস্থা করতে হবে। না করলে পেনাল্টি। মজার ব্যাপার হচ্ছে করলেও পেনাল্টি। সেটা হবে তখন সিভিল রাইট লতে।
কেউ হয়তো বলবে, ওয়েল গভর্মেন্ট অ্যাট লিস্ট ট্রাইড। আরেকটু ঢেলে সাজালেই এর ভুলগুলো শুধরানো যাবে। এবং সেই ঢেলে সাজানো চলতে থাকে। পয়েন্টটা হলো সরকার ব্যবস্থার আপাত শ্রেষ্ঠ এই অবদানের যথেষ্ট দুর্বলতা যা উন্মুক্ত সমাজে থাকতো না। কিন্তু এমন নয় যে উন্মুক্ত সমাজে এই সমস্যার কাছাকাছি সমাধান সম্ভব নয়।
যুক্তরাষ্ট্রে এই আইন এনফোর্স করা গেছে তার জনগোষ্ঠির কারণে। ঠিক জনগোষ্ঠির কারণেই বাংলাদেশের সরকার এই মুহূর্তে পারবে না এটা এনফোর্স করতে। ফলে সরকার এখানে যতোটা না ক্রেডিটের অধিকারী, তার চেয়ে বেশি বিদ্যমান সমাজ সংস্কৃতি। আর সেটা বাজারে ভালোই রিফ্লেক্ট হয়। এবং অনেক ডাইনামিকালি হয়। আইন স্ট্যাটিক ও ধীর। বাজার ডাইনামিক। আমি বলছি না যে এখানে সরকার ও বাজার নৈরাজ্যের মধ্যে একটা ক্লিয়ার উইনার আছে। বরং এই কেইসে ক্লিয়ার উইনার যে নেই, সেটাই আমার পয়েন্ট।
@আল্লাচালাইনা,
আমি মার্জারকে সমস্যা মনে করি না, যতোক্ষণ না স্টার্টাপের উপর ফিজিক্যাল অ্যাগ্রেশান বা ফোর্স অ্যাপ্লাই করা হচ্ছে। মূল্যও পণ্য যে উৎপাদন করে, সেই নির্ধারণ করতে পারে বলে মনে করি।
ভিন্ন বিষয়ে আসি। এখানে সরকারের রেগুলেশানকে যদিও অ্যাগ্রেশান মনে করি, তবু ইভেন যদি কথার কথা মেনে নেই যে সরকার সেটা ভালো নিয়তে করবে, তাহলে আমি ভেবে পাচ্ছি না যে কীভাবে নিশ্চিত করা যাবে যে সরকার তার রেগুলেশানগুলো ন্যায়সঙ্গতভাবে অ্যাপ্লাই করছে। সরকার নিজেই তো একটা মনোপলি সংগঠন। ট্যাক্স আদায়, আইন, পুলিশ ও আদালত মিনিমাম এই কয়টা জিনিসের সে একচেটিয়া মনোপলি ভোগ করে। এখন বিজনেসের মনোপলি ঠেকানো সম্ভব প্রশাসনিক মনোপলি দিয়ে, ব্যাপারটা থিওরিটিকালি আপনার কাছে oxymoron ঠেকে না? সরকার যে বিষয়গুলোতে মনোপলি ভোগ করছে, সেগুলোকে কেন প্রিমাইসেই ন্যায়সঙ্গত ধরে নেয়া হচ্ছে? যেহেতু মনোপলি রোধে আপনি আগ্রহ দেখালেন, ফলে সরকারি মনোপলি রোধে কী ফিডব্যাক ব্যবস্থা বিদ্যমান বলে মনে করেন সেটা জানতে চাচ্ছি।
@আল্লাচালাইনা,
আপনার কী মনে হয়, যাতে ক্ষমতা বিপদে পড়ে এমন কাজকে ক্ষমতা এনকারেজ করবে? বিপরীত প্রতিবাদী একটা ক্ষমতা সবসময়ই আছে…সে দলে হয়তো আপনি, আমিও পড়ি যদিও কায়দা নিয়ে আমাদের তর্ক আছে…
সে যা’হোক কিন্তু রাষ্ট্র কি তার সমস্ত প্রশাসনিক ও রাজনৈতিক প্রতিপত্তি খাটিয়ে আপনাকে চেতনার জাগরণ ঘটানোর সুযোগ থেকে বঞ্চিত করার চেষ্টা করবে না? আর সেই লক্ষ্য অর্জনে তার সকল যন্ত্রগুলো ব্যবহৃত হইতে সবসময় প্রস্তুত তো– শিক্ষাবোর্ড থেকে গণমাধ্যম…কাজী অফিস থেকে জাতীয় চাঁদ দেখা কমিটি; সবই।
কোন হতাশা থেকে লেখা ?
একটা স্বাধীন দেশে , যেখানে একদিকে মালিক পক্ষের শক্তিশালী রক্ষাকবচ সরকার , তাঁর মিলিটারি , পুলিশ , তাঁর শক্তিশালী আইন বিভাগ এটা কি কখন মেনে নেবে ? শ্রমিকদের প্রয়োজন সমাজ ব্যবস্থা সম্পর্কে সচেতন করা , রাষ্ট্রের শ্রেণী চরিত্র সম্পর্কে সজাগ করে ঐক্যবদ্ধ করা যেখানে তারা তাঁদের দাবীদাওয়া নিয়ে আন্দোলন করতে পারবে । আর আন্দোলনের মধ্যেই খুঁজে পাবে নিজেদের সঠিক নেতা ।
@সামসুদ্দিন,
মেনে যে নিবে না তা তো লেখাতেই বললাম।
আমরা বন্দুকের ক্ষমতাটা একতরফা রেখে দিবো মালিক আর তার রাজনৈতিক দোসরদের হাতে, আর শ্রমিকদেরকে নিরস্ত্র ছেড়ে দিবো ‘সচেতন’ আর ‘সজাগ’ হয়ে ‘আন্দোলন’ করতে, এই মহান তত্ত্বও মালিকপক্ষেরই তৈরি।
পুলিশ, প্রশাসন, সংবিধান, গণতন্ত্র, আইন-আদালত, উচ্চতর আদালত, উচ্চতম আদালত, সংবাদমাধ্যম, গণসংগঠন, সেনাবাহিনী ইত্যাদি, ইত্যাদি, প্রতিষ্ঠানের সুদীর্ঘ , লম্বা তালিকা করে দেওয়া যায়, খাতায় কলমে যাদের সৃষ্টি হয়েছে সাধারণ মানুষের অধিকার সুনিশ্চিত করতে।
এর থেকে লেখক প্রস্তাবিত নিজস্ব শ্রমিক বাহিনী ঠিক কি ভাবে আলাদা হয়ে যাবে তা বোঝা গেলনা।
যে দুর্নীতি এই প্রতিষ্ঠানগুলির রন্ধ্রে রন্ধ্রে ঢুকে গেছে, তা প্লেগ রোগের মতন শ্রমিক বাহিনীকে আক্রমন করবে না কেন?
ভারত বা বাংলাদেশের মতন দেশে তো, শ্রমিক সংগঠনের নেতৃস্থানীয়রা শ্রমিকের স্বার্থ জলাঞ্জলি দিয়ে, মালিকপক্ষের স্বার্থ রক্ষা করেছে বা যে রাজনৈতিক দলের ঝান্ডা তারা বহন করছে, সেই দলের স্বার্থ রক্ষা করেছে এমন বহুবার দেখা গেছে।
তারপর কি হবে? শ্রমিক বাহিনীর ব্যাদরামো আটকাতে একটা শ্রমিক বাহিনী প্রতিরোধ কমিটি তৈরী করতে হবে।
অর্থাৎ তিমিকে খাবে তিমিঙ্গিল, তাকে খাবে তিমিঙ্গিলগিল, তারওপর আসবে তিমিঙ্গিলগিলগিল……
এই অনন্ত বিষাক্ত চক্র ভাঙ্গার জন্যে মূল থেকে ঢেলে সাজাতে হবে।
নতুন প্রতিষ্ঠান সৃষ্টি করার থেকে জরুরি উপস্থিত যে সকল প্রতিষ্ঠানগুলি আছে, সেইগুলোকে ঢেলে সাজিয়ে দুর্নীতিমুক্ত করা।
@অনামী,
পার্থক্য এই যে বর্তমানের যে পুলিশ প্রশাসন আদালত সেনাবাহিনী, এই সবই একক প্রতিষ্ঠান। টেলিফোন সার্ভিস লাগলে আপনার দ্বারস্থ হবার একাধিক প্রতিষ্ঠান আছে। কিন্তু পুলিশী প্রশাসনিক বা আদালত সংক্রান্ত সেবা নেওয়ার প্রতিষ্ঠান কেবল একটা। সেখানে সেবাদানকারী তার নিজের খেয়ালখুশীর তাণ্ডব চালায় এবং মূলত সবচেয়ে ক্ষমতাশালীদের উদ্দেশ্যটাই সাধন করে। এটা স্বাভাবিক ও অবধারিত। আপনার প্রশাসনিক কাজ একটা প্রতিষ্ঠান না দেখলে যদি আরেক জনের কাছে যাওয়ার সুযোগ থাকতো, তাহলে সকলের কাজই দ্রুত ও সন্তুষ্টির সাথে সাধিত হতো। আর এটা হতো স্রেফ একাধিক প্রতিষ্ঠান ও তাদের নিজেদের প্রতিযোগিতার অস্তিত্বের কারণে।
সরকারি টেলিফোন সার্ভিসের কথাই ধরুন। যখন সে একচেটিয়া ব্যবসা চালিয়েছে, তখন উচ্চবিত্ত, উচ্চমধ্যবিত্ত আর সরকারি চাকুরে ছাড়া আর কার টেলিফোন ছিলো? গরিবের হাতে যাওয়ার কোনো দুঃস্বপ্নও কেউ দেখেছে? বা যখন কেবল একটা প্রাইভেট টেলিফোন সেবা সিটিসেল ছিলো তখনও? যখন চার পাঁচটা কোম্পানি হয়ে গেলো, গরিবের হাতে টেলিফোন যাওয়া কেউ চাইলেও তো ঠেকাতে পারবে না।
গরিব মারার শ্রেষ্ঠ উপায় একচেটিয়া ব্যবসা। আর গরিবকে যেহেতু বন্দুক আর লাঠির বাড়ির মুখে মৃত্যুকূপে ঠেলে দেয়া হয়েছে, ফলে সবচেয়ে বেশি জরুরি এই মুহূর্তে এই বন্দুকের ক্ষমতার একচেটিয়া ব্যবসাটা ভাঙা।
ঢেলে সাজানো অবশ্যই জরুরি। কিন্তু সেটার চেষ্টা তো কম করা হয় নি। ঢেলে সাজানো সাস্টেনেবলও না। ধরুন ঢেলে সাজিয়ে আজকে একটা দারুণ সিস্টেম দাঁড় করালেন। কীভাবে নিশ্চিত করবেন যে কারল পরশুও এটা নিজ উদ্যোগে চমৎকার ভাবে চলবে, আজকে যেভাবে চলছে? প্রতিষ্ঠান মাত্র একটা থাকলে তার তাগিদ কোথায় উন্নত হবার বা মান ধরে রাখার? ফলে একাধিক প্রতিষ্ঠানের উপস্থিতি ঢেলে সাজানোর সাথে সাংঘর্ষিক নয়, কিন্তু এর সুফল অনেক গুণ বেশি।
তবে বন্দুকের ক্ষমতার একাধিকীকরণ সরকার ব্যবস্থা থাকা অবস্থায় সম্ভব নয়। কারণ সরকারের সংজ্ঞাই হলো সে বন্দুকের ব্যবসার একচেটিয়া ক্ষমতাধারী। আশার বিষয় হচ্ছে, মানুষের স্বতস্ফূর্ত শৃঙ্খলা সরকারের আরোপিত শৃঙ্খলার থেকে অনেক বেশি কার্যকর প্রমাণ হয়ে চলেছে। সরকার যেখানে স্তম্ভ নিয়ে নাড়াচাড়া করছে, সেখানে মানুষ নিজ উদ্যোগে সেবায় এগিয়ে আসছে। এটা সরকার ব্যবস্থাকে অকার্যকরেই পরিণত করছে। এরকম চলতে থাকলে একটা অবস্থা তৈরি হতে পারে, যখন মানুষ উপলব্ধি করবে যে সরকারের উপস্থিতি বা সাহায্য সহায়তা ছাড়াই মানুষ সকল কাজই স্বতঃস্ফূর্তভাবে সমাধা করতে পারে। বরং সরকার ব্যবস্থা মানুষের জন্যে একটি বাধা। তখন সরকার ব্যবস্থা ভেঙে যাবে।
কিন্তু সেটা হওয়া কঠিন, কারণ বন্দুকের এই যে একচেটিয়া ব্যবসা, এটা মধ্যবিত্তের স্বার্থই রক্ষা করে। মধ্যবিত্ত জানে যে সে চাইলেই এভাবে হোক বা সেভাবে, পুলিশের সহায়তা সে পেতে পারবে। কিন্তু কোটি কোটি যে গরিব মানুষ, তারা কোনোদিন পুলিশের সহায়তা পেতে পারবে না। এমন কোনোদিন পৃথিবীতে ঘটে নি যে পুলিশ কোনো ন্যায্য কারণেই গরিবের হয়ে মধ্যবিত্ত বা বড়লোক মালিকের বিরুদ্ধে কাজ করেছে। এটা মধ্যবিত্তের জন্যে একধরনের স্বস্তি। ফলে এটা সে টিকিয়ে রাখতে চাইবে। গরিব মার খেলে সে মলম লাগিয়ে দিবে, কিন্তু তার নিজের বন্দুকের ক্ষমতার যে মনোপলি, সেখানে গরিবকে কখনো ভাগ বসাতে দিবে না।
@রূপম (ধ্রুব),
আপনি যে যুক্তি খাড়া করেছেন তার বিসমিল্লায় গলদ আছে।
কারণ টেলিফোন পরিসেবা আর পুলিশ পরিসেবার মধ্যে তফাত হলো, তত্ত্বগতভাবে টেলিফোন পরিসেবা একটি লাভজনক ব্যবসা, আর পুলিশ পরিসেবা কখনো আদর্শ পরিস্থিতিতে লাভজনক ব্যবসা হতে পারেনা।একটি প্রকৃত গণতান্ত্রিক ব্যবস্থার কিছু স্তম্ভ আছে, যথা আইনসভা, লোকসভা-বিধানসভা-রাজ্যসভা,নিরাপত্তা রক্ষীবাহিনী, সংবাদমাধ্যম, মানবধিকার সংগঠন ইত্যাদি।
একটি আদর্শ ব্যবস্থায় এদের সকলকে একে অপরের সাথে,একে অপরের পরিপূরক হয়ে সমাজের দরিদ্রতম মানুষের অধিকার সুনিশ্চিত করার কথা।এইবার মনে করুন পুলিশ বা নিরাপত্তা রক্ষীবাহিনী ধনিক শ্রেনীর স্বার্থ রক্ষা করতে গিয়ে গরিবের ঘাড় মটকে দিল।
তখন সংবাদমাধ্যম বা মানবধিকার সংগঠনগুলির কাজ হল এই নিয়ে আন্দোলন করে, জনমানসে সচেতনতা তৈরী আইনের সামনে অপরাধীদের উন্মোচন করা ও সুবিচার সুনিশ্চিত করা।
এইবার যদি এই সংগঠনগুলি রোগগ্রস্ত হয়, তাহলে সমস্যাটা একচেটিয়া অধিকার নিয়ে নয়, সমস্যাটা আরো গভীর।
আপনি যে প্রেসক্রিপশন দিয়েছেন, তাতে সমস্যার সমাধান না হয়ে গৃহযুদ্ধ লাগা অবশ্যম্ভাবী।
ধরুন দুইটি শ্রমিক বাহিনী আছে, ক বাহিনী আর খ বাহিনী।
আমরা একই কারখানার শ্রমিক, কিন্তু আপনি ক বাহিনীকে মাসে দশ টাকা দেন, আমি খ বাহিনীকে।
যেমন ভাবে একই কারখানার শ্রমিক হিসেবে আমি বামপন্থী সংগঠন করতে পারি আর আপনি জাতীয়তাবাদী।এইবার শ্রমিকের স্বার্থরক্ষার নামে, রাজনৈতিক রঙ্গে রাঙিয়ে, যখন আমি আর আপনি মারামারি করব, তখন এই সশস্ত্র বাহিনী গুলি কি নিরপেক্ষ হয়ে বুড়ো আঙ্গুল চুষবে?
আরো আছে, মালিকদের সম্মিলিত ধন শ্রমিকদের থেকে অনেক বেশি।
হাতের সামনে সশস্ত্র বাহিনী দেখে তারা পুলিশকে যেরকম কিনে নিয়েছে, তেমন শ্রমিক বাহিনীকে কিনে নেবে না কেন?পুলিশ কারা হয়? আমি আপনি চার পাশে, রাস্তা ঘটে, বাসে ট্রামে, ইউনিভার্সিটিতে যাদের দেখছি তারাই তো পুলিশ হয়।মঙ্গল গ্রহ থেকে তো পুলিশ আসে না রে বাবা।
তারা যেরকম ভাবে দুর্নীতির জালে জড়িয়ে পরে, আপনার কল্পনার শ্রমিক বাহিনীর-ও একই পরিনতি হবে
কারণ শ্রমিক বাহিনীর সৈনিকরাও একই জায়গা থেকে উঠে আসবে।ধরুন আমি হলাম শ্রমিক বাহিনীর সিইও।টেলিফোন ব্যবসার উদাহরণ নিলে, একটি লাভজনক ব্যবসার প্রসার করতে গেলে আমাকে আরো বেশি বেশি গ্রাহকের কাছে পৌছতে হবে।সেইটা কি করে হবে?
তৃতীয় বিশ্বে ব্যবসা কি ভাবে ছড়িয়ে দেওয়া হয় জানেন? কিছু উদাহরণ দি–
ভারতে গডফ্রে-ফিলিপস যখন ফোর স্কয়ারে সিগারেট বাজারে ছাড়ে তখন ITC নিজের গোল্ড ফ্লেকের বাজার রক্ষা করতে ফোর স্কয়ারের স্টক কিনে কিনে জালিয়ে দিয়েছিল।
আপনি কি জানেন কোকা-কোলা আর পেপসি-র বাজার দখলের লড়াইতে সেলস-মার্কেটিং টিম distributer -দের আর বিপনিদের রীতিমত ভয় দেখিয়ে, ধমকে দাবড়ে রাখে।
এইবার ভাবুন ক বাহিনীর সিইও হয়ে খ বা গ বাহিনীর বাজার খেতে আমি এইসব কর্মকান্ড করছি
বা উন্নত পরিসেবার নামে বলছি যে হে শ্রমজীবি, মাসিক চুক্তিতে মাত্র এক টাকা বেশি দিলেই, আমি শুধু মালিকের থেকেই আপনাকে বাঁচাবো না, আপনার প্রতিবেশীর ছেলে আপনার মেয়েকে প্রেমপত্র দিলে তাকেও ধোলাই দিয়ে আসব।
অন্যদিকে মূল সমস্যাটা কি? মূল সমস্যা আমার মতে হলো ভারত আর পাকিস্তান আর পাকিস্তান থেকে বাংলাদেশ সৃষ্টি হয়েছে ব্রিটিশ ঔপনিবেশিক শাসন ব্যবস্থা থেকে।এই শাসন ব্যবস্থার এক এবং একমাত্র উদ্দেশ্য ছিল আমলাতন্ত্র, সেনা-পুলিশ আইন দিয়ে জনগনকে শুষে টাকা পয়সা বিলেতে পাঠানো।
আইনের শাসন তখন ছিল একটি সৌখিনতা যাকে প্রয়োজনে কবরে পাঠাতে ইংরেজরা একটুও দ্বিধা করত না।দুখের বিষয় স্বাধীনতার নামে যে ক্ষমতা হস্তান্তরে ভারত আর পাকিস্তানের জন্ম হলো সেইখানে শ্বেতাঙ্গদের জায়গায় এলো তাদেরই ধামাধারী কিছু কৃষ্ণাঙ্গ পরিবার।সঙ্গত কারণেই তারা আমলাতন্ত্র বা সেনা-পুলিশের চরিত্রে কোনো পরিবর্তন করলনা।শোষণ একই রকম চলতে থাকলো এবং টাকা ব্যাঙ্ক অফ ইংলান্ডের বদলে সুইস ব্যাঙ্কে যেতে থাকলো।এই কারণে আমি ঢেলে সাজানোর কথা বলেছি।
এইটা sustainable নয় কেন বলছেন তা বুঝতে পারছিনা।
আমার ক্ষুদ্র জ্ঞান থেকে জানি যে আজকের ইউরোপে যে উন্নত দেশগুলির মানব অধিকার রক্ষার আর আইন শৃঙ্খলা রক্ষার ঈর্ষনীয় রেকর্ড আছে, তারাও কিন্তু ছয়-সাত দশক আগে দুর্নীতির দিকে ভারত বাংলাদেশের থেকে কিছু পিছিয়ে ছিল না।
আজকে তাদের মানবধিকার নিশ্চিত করতে নানান ব্র্যান্ডের পুলিশ বা রক্ষীবাহিনীর দরকার পড়েনা।
একা সরকারী আদালত পুলিশ-ই যথেষ্ট।কারণ তারা তাদের ব্যবস্থা ঢেলে সাজিয়েছে।
@অনামী,
টেলিফোন পরিসেবা একটা লাভজনক ব্যবসা এটা আশির দশকে বললে লোকে হাসতো।
@রূপম (ধ্রুব),
লোক হাসলো কি কাঁদলো সেইটা বিষয় নয় |
বিষয় হলো ব্যবসার মূলনীতি নিয়ে |
টেলিফোন ব্যবসায় গ্রাহকের থেকে উপযুক্ত মূল্যের বিনিময়ে পরিষেবা দেওয়ার কথা |
জনগনের ট্যাক্সের টাকায় সেইটা চলার কথা নয় |
অন্যদিকে পুলিশ পরিষেবা জনগনের ট্যাক্সের টাকায় চলার কথা |
থানায় ডায়রি লেখাতে গেলে বা FIR করতে গেলে, নালিশ প্রতি পয়সা নেবার কথা নয় বা অপরাধের তদন্তের বিনিময়ে পয়সা নেবার কথা নয় |
আর সরকারী মনোপলি থাকলেই যে পরিষেবা খারাপ হবে এমন কোনো মাথার দিব্যি কেউ দেয়নি |
উদাহরণ স্বরূপ বলতে পারি সুইজারল্যান্ডে পরিবহন ব্যবস্থা সরকারী |
ট্রাম-বাস-ট্রেন প্রভৃতি উচিত মূল্যে যে পরিষেবা দেয়, তার থেকে প্রমানিত যে সরকার এমন পরিষেবা দিতে পারে |
অন্যদিকে ইংল্যান্ড তাদের পরিবহনকে বেসরকারীকরণ করেছে |
তাদের পরিষেবা অত্যন্ত ভালো হলেও, সুইজারল্যান্ডের মতন নয় |
বরং অনেকের মত সরকারী ব্যবস্থা বেসরকারী ট্রেনের থেকে সস্তা ছিল এবং পরিষেবার মানও উন্নত ছিল | লাভজনক ট্রেন চলাচলকে খামোখাই বেসরকারীকরণ করা হয়েছে |
ব্রিটেনে NHS সরকারী পরিষেবা এবং দুর্দান্ত |
আর একচেটিয়া কারবার না থাকলেই যে কোনো প্রকার দুর্নীতি হবেনা, তার অঙ্গীকার কেউ করতে পারেনা |ভারতে টেলিফোন পরিষেবা একচেটিয়া নয় |
কিন্তু ২-জি স্পেকট্রাম নিলাম সংক্রান্ত দুর্নীতি নিয়ে একটু খোঁজ নিয়েই দেখুন না!
@অনামী,
এই চলার কথা কোথায় লেখা? ক্যাস্ট্রোকে জিজ্ঞেস করলে উনি বলবেন টেলিফোনও ব্যবসার বিষয় নয়।
আপনার প্রিমাইস আমি মেনে নিবো, এই ভেবে নিয়ে আপনিই গা জোয়ারি তর্ক করছেন।
@অনামী,
ইউরোপের আইন শৃঙ্খলা গ্রীস থেকে শুরু করুন। কিংবা সাইপ্রাস। এই কাঠামোগত পঁচন সবে শুরু।
এই দোহাই দিয়েই মধ্যবিত্তরা গরিবগোষ্ঠিকে তাদের একতরফা বাহিনীর হাতে জিম্মি করে রেখেছে। অ্যাজ ইফ গরিব মরাটা শান্তিঅবস্থা।
@রূপম (ধ্রুব),
গা জোয়ারি তক্ক করলে তো মুশকিল!
যাকগে এই তথ্য কোথায় পেলেন একটু বলবেন? আপনি অর্থনৈতিক পরিস্থিতির কথা বলছেন বোধয় |
এছাড়াও আমি কোথাও বলিনি যে ইউরোপের সকল দেশেই একই রকম অবস্থা |
কিন্তু অনেক দেশ যেমন সুইটজারল্যান্ড, নরওয়ে, ডেন্মার্ক্ প্রভৃতি দেশগুলিতে মানব অধিকার/শ্রমিকের অধিকার রক্ষার ব্যাপারে সরকারী প্রতিষ্ঠানগুলি যথেষ্ট সক্রিয় |
এখানে সরকারী আপিসে সামান্য কোনো কাজে গেলেই ঘুষ চাওয়া হয়না, রাস্তা থেকে মেয়ে তুলে নিয়ে গিয়ে ধর্ষণ করলে(!), পুলিশ ধর্ষকের বাপের নাম দেখে তাকে ছেড়ে দেবেনা, সংখ্যালঘুদের গণহত্যা করার কথা অকল্পনীয়!
গ্রীসের যতই অর্থনৈতিক দুর্দশা হোকনা কেন, সেইখানে কি একটা আলোবাতাসহীন ১০ ফুট বাই ১০ ফুট ঘরে ৩০-৪০ জনকে পুরে, নামমাত্র পারিশ্রমিকে দিনে ১৬-১৮ ঘন্টা খাটিয়ে মোটা টাকা কমানো সম্ভব? বোধয় না!
গ্রীস যাওয়ার সৌভাগ্য হয়নি কখনো, তবে পূর্ব ইউরোপের তথাকথিত অনুন্নত দেশ যেমন চেক রিপাবলিক বা রোমানিয়াতে গিয়েও দেখেছি সেইখানে যাঁরা বাড়ি সারাচ্ছেন বা রাস্তা মেরামত করছেন, তাঁদের সকলের পুরোদস্তুর নিরাপত্তা রক্ষার জন্যে ইকুইপমেন্ট,সেফটি হার্নেস প্রভৃতি ব্যবহৃত হচ্ছে|
আমাদের মতন ঠিকাদাররা লুঙ্গি পরিয়ে দশতলা বাঁশের ভারাতে তুলে দেয়না |
তুললে, তাকে কিছুক্ষণের মধ্যেই এসে পুলিশ ধরে নিয়ে যাবে, পয়সা খেয়ে ছেড়ে দেবেনা |
এইতা আবার কখন বললাম যে গরিব মরাটা শান্তি অবস্থা!
কোনো শোষিত-নিপীড়িত গোষ্টির স্বার্থ রক্ষা করতে মিলিশিয়া গঠনের উদাহরণ তো আমাদের সামনে ভুরি ভুরি আছে |
আফগানিস্থান, বালোচিস্তান, মধ্য আফ্রিকা- সব জায়গাতেই তো এক গোষ্টি নিজেকে বাঁচাতে অস্ত্র তুলে নিয়ে অন্য গোষ্টিকে কচু কাটা করে |
এইসব জায়গায় করা মরছে বলুনতো? গরিবেরা নয় নিশ্চয়ই!
ভারতে শোষিত-নিপীড়িত আদিবাসী-দলিতদের অধিকার রক্ষার নামে অস্ত্র তুলেছে মাওবাদীরা |
মাওবাদীদের অত্যাচার থেকে নিজেদের বাঁচাতে আবার কিছু আদিবাসী সরকারী ছত্রছায়ায় ও আনুকূল্যে খুলেছে সালোয়া জুড়ুম |
বিহারে দলিত ঠ্যাঙাতে উচ্চবর্ণের আছে রণবীর সেনা |
দলিতদের হয়ে লড়াই দিচ্ছে মাওবাদীরা |
এর মাঝে পুলিশ প্রশাসন এবং আইনের শাসন আরো প্রান্তিক হতে থাকছে |
বরং মাওবাদীরা নিজেদের সশস্ত্র অস্তিত্ব বজায় রাখতে অতি দক্ষিনপন্থীদের সাথে হাত মিলিয়ে গণতান্ত্রিক বামপন্থী গণসংগঠনগুলোকে আক্রমন করে |
স্কুলে ঢুকে ছাত্রদের সামনে শিক্ষককে গুলি মারে, পুলিশের চর সন্দেহে গরিব আদিবাসীর গায়ে বোমা বেঁধে উড়িয়ে দেয় |
গোটা পরিবারকে গুলি করে মারে অন্য ধারার রাজনীতি করার জন্যে |
ক্রিয়া থাকলে প্রতিক্রিয়াও থাকে- মাওবাদীদের এইসব কর্মকান্ডের জেরে পুলিশ-প্রশাসন, সালোয়া জুড়ুম সেই আদিবাসীদের উপরেই খড়গহস্ত হয় |
তো এই সব জায়গায় গরিব-ই তো মরছে নাকি? এতগুলো বাহিনী থেকে লাভটা কি হচ্ছে? চমত্কার শ্মশানের শান্তি!
@অনামী,
আপনার উদাহরণের মিলিশিয়াগুলোর সমস্যা হচ্ছে সবগুলোই আল্টিমেটলি নিজেরা একটা একচেটিয়া শাসন কায়েমের জন্যে লড়ছে। ফলে ওখানে সকল পক্ষই ক্ষমতার মনোপলিকামী। ক্ষমতার মনোপলিকামীরা তো গরিবই মারবে।
আমার উদাহরণে একাধিক নিরাপত্তা বাহিনীগুলো আগেই মেনে নিয়েছে যে কেউ একচেটিয়া ক্ষমতা জবরদখল করবে না, কারণ তারা ব্যবসা করতে নেমেছে। যুদ্ধ তাদের জন্যে লোকসান।
এটা অনেকটা প্রাইভেট নিরাপত্তা বাহিনীর মতো ভাবতে পারেন। পার্থক্য এই যে কোনো কেন্দ্রীয় পরিকল্পক নেই।
এটা কোনো অদ্ভুত চিন্তা নয়। খোদ যুক্তরাষ্ট্রে এমনকি প্রাইভেট কোর্টও আছে। লোকে পয়সা দিয়ে সেখানে ঝামেলা মীমাংসা করে কারণ প্রাইভেট কোর্টগুলোর খরচ পাবলিক কোর্টের চেয়ে কম, আবার কাজও হয় দ্রুত। রায়ের ব্যাপারে বাদী বিবাদী উভয়ের সন্তুষ্টিও দেখা গেছে পাবলিক কোর্টের চেয়ে বেশি।
কিন্তু ওদের রাষ্ট্র এটাকে সবার জন্যে উন্মুক্ত করে দিচ্ছে না, বিভিন্নভাবে সীমিত করে রেখেছে, কারণ না হলে রাষ্ট্রব্যবস্থা ভেঙে যাবে।
@অনামী,
চেক রিপাব্লিকে গিয়ে কেনো সেটিকে অনুন্নত মনে হলো আপনার জানিনা। হয়তোবা সোভিয়েত ইউনিয়নের পতনের পুর্বে গিয়ে থাকবেন। ইয়েট, সেই সোভিয়েত আমলেও সোভিয়েত স্যাটেলাইট স্টেইটগুলোর মধ্যে দ্বিতীয় সর্বশক্তিশালী অর্থনীতি ছিলো চেকস্লোভাকিয়া পুর্ব জার্মানীর পরে। এমনি একটা অফটপিক কথা বলাম, এছাড়া আপনার মতামতের পক্ষেই আমার অবস্থান।
@আল্লাচালাইনা,
সোভিয়েত পতনের সময় দুগ্ধপোষ্য শিশু ছিলাম! :))
চেক রিপাবলিক এই সেইদিন গিয়েছি, প্রাগ খুবই সুন্দর জায়গা |
তথাকথিত অনুন্নত বলতে আমি অর্থনৈতিক ভাবে সুইজারল্যান্ড বা অন্য স্কান্দেনেভিয়ান দেশের থেকে অর্থনৈতিকভাবে কম উন্নত বলতে চেয়েছি মাত্র|
মোটেই চেক রিপাবলিককে হতদরিদ্র বলতে চাইনি|
@অনামী,
প্রাইভেট নিরাপত্তা বাহিনী কিন্তু আমাদের দেশেই গার্মেন্টস মালিকরাই ব্যবহার করছে। আমার উদাহরণটা শুনে মাওবাদী আর তালেবানদের কথা মনে না করে বরং ওদের কথা মনে করা দরকার ছিলো। মালিকদের বাহিনীগুলো তো আর গৃহযুদ্ধ করছে না। মালিকপক্ষ যদি প্রাইভেট নিরাপত্তা বাহিনী ভাড়া করতে পারে, শ্রমিকরাও একত্রিত হয়ে তাদের নিজেদের নিরাপত্তার জন্যে তেমন বাহিনী গঠন কিংবা ভাড়া করতে পারে। মালিকদের প্রাইভেট বাহিনী যেমন কথায় কথায় গুলি চালায় না, কেবল তার খদ্দেরের শরীর ও সম্পদ রক্ষা করার জন্যে তৎপর থাকে, শ্রমিকদের বাহিনীকে তার চেয়ে বেশি উগ্র ভেবে নেওয়ার তো প্রয়োজন নেই। একটা মুক্ত সমাজে যে কোনো মানুষ তার নিজের নিরাপত্তার জন্যে এমন বাহিনী ভাড়া করতে পারবে, মালিকও পারবে, শ্রমিকও পারবে, আপনি আমিও পারবো। রাষ্ট্রব্যবস্থা এটাকে এমনভাবে আইনীভাবে সীমিত করে যাতে কেবল মালিকপক্ষ পারে।
গার্মেন্ট মালিকদের সংগঠনগুলো অভিযোগ করে বাংলাদেশের পোশাকখাতকে ধ্বংস করতে নাকি দেশী-বিদেশী ষড়যন্ত্র চলছে। [ব্লগে জুতো মারার অপশন নাই কেন?] ষড়যন্ত্র তোরা কি কম করছিস? কর্মক্ষেত্রে কাজ করার নূন্যতম নিরাপত্তাও তো দিতে পারিস না। বেতন-ভাতার কথা বাদই দিলাম। শ্রমিকদের সকল চাহিদা ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করার পরও যদি অঘটন ঘটতো তাহলে মানুষও তোদের কথা বিবেচনায় নিতো। আর সরকার…ধনীদের সরকারের কথা না বলাই ভালো। প্রধানমন্ত্রী ও নেতাকর্মীদের কথা শুনলে মনে হয় তারাই গার্মেন্টের মালিক।
আবার শত শত দরিদ্র মানুষ প্রাণ হারালো। কারো কোনো দায় নেই। সকল অঘটনের ভুক্তভোগী এরাই। কিছুদিন কথাবার্তা হবে। মিছিল হবে, সমাবেশ হবে। সরকার প্রতিশ্রুতির ফুলঝুরি ছড়াবে। তারপর আবার নীরবতা। আবার নতুন করে অঘটন না ঘটা পর্যন্ত এই নীরবতা বিরাজ করবে।
আসলেই, এটাই আমাদের সংগ্রামের ইতিহাস।
আগে বলেন এতোদিন কোথায় ছিলেন? দুনিয়া উলট পালট হয়ে গেলো আপনার কোনো খবর নাই। থিসিস জমা অথবা এরকম কিছি ছিলো নাকি?
@সফিক,
বাংলাদেশের যুক্তির পা মাটিতে ছিলো না যে।
@রূপম (ধ্রুব), কোন কাজ হবেনা। পুজিবাদ আর গণতন্র গোটা পৃথিবী গিলে খাবে। আর পুজিবাদের অসুখের কোন সমাধান নেই। আপনাকে গনতন্র আর পুজিবাদ দুটোই বাদ দিতে হবে। পুজিবাদ তার গনতান্ত্রিক পরিবেশে একপাল উন্মাদ লোভী মানুষ তৈরি করে আর তারাই ক্ষমতায় বসে। এটা বাংলাদেশে ও যেমন,আমেরিকাতেও তেমন। এত গুলো শিশু মারা যায়,তাও আমেরিকার কংগ্রেস অস্ত্র নিয়ন্ত্রনের একটা আইন পাশ করতে পারেন না ,পুজিবাদী মুনাফাখোর উন্মাদ লোভী অস্ত্র ব্যবসায়ীদের লবিং এর ঠ্যালায়। তাই সামনের দিনগুলিতে আর ও অনেক ট্রাজেদি নিয়ে লিখবার জন্য তৈরি থাকুন।
@মরুঝড়,
গিলে খাচ্ছে রাষ্ট্রবাদ। পুঁজিবাদ নয়।