মেয়েদের আপন অঙ্গসমূহ ঠিকঠাক মত আবৃত না করা, ছেলেদের মত খোলামেলা পোশাক পরা, আপন উপস্থিতি সরবে জাহির করা; মোট কথা পুরুষরা প্ররোচিত হয় এমন কোন কাজ করা ইসলামে নিষিদ্ধ, গুনাহের কাজ। চলনে-বলনে, পোশাকে-আশাকে, ইশারা-ইঙ্গিতে এমন কোন কাজ করা যাবে না যা কিনা আল্লার পথচলা একজন মুমিনকে পথচ্যূত করতে পারে। কারণ কামের জয় হয় বেপর্দা নারীর কারণে। অন্যদিকে দ্বীনের হয়ে যেতে পারে পরাজয়, ওই নারীরই কারণে। নারীদের কারণে বেহেস্তের পথ বেঁকে গিয়ে দোজখের পথে রূপান্তরিত যাতে না হয় সেই কারণেই ইসলামে নারীর এই আচরণবিধি। একারণেই কোরানের সূরায় সূরায় পুরুষদেরকে নারীদের চেয়ে উত্তম আর হাদিসে নারীদেরকে শয়তানের সাথে তুলনা করা হয়েছে এবং স্ত্রীকে প্রহারের অনুমতি দেয়া হয়েছে। ইসলামে বাধ্য নারীর সদাচরণই সোনার থালায় বেহেস্তি সুখের বীমা!
আল্লার রসূলের কথা অনুযায়ী ছলনাকারী নারীরা আল্লার পথচলা একজন মুমিনকে পথচ্যূত করতে পারে। বুখারী শরীফের খাঁটি বা সেই সহি হাদিসখানি দেখুন এবার, বুখারী ভলিউম ২, বুক ২৪, নম্বর ৫৪১ (বাংলায় দ্বিতীয় খণ্ড, জাকাত অধ্যায়, ঘনিষ্ঠ আত্মীয়দের জাকাত প্রদান করা, হজরত আবুসাঈদ খুদরীর বর্ণিত হাদিসখানি)
হজরত আবু সাঈদ খুদরীর বর্ণনাঃ একবার ঈদুল আযহা অথবা ঈদুল ফিতরের দিন আল্লার রসূল ঈদগাহে গেলেন। নামাজ শেষে তিনি উপস্থিত মানুষদের নসিহত করলেন এবং দান করবার নির্দেশ দিলেন। তিনি বললেন, হে নারী সমাজ! তোমরা দান কর। কারন আমি জেনেছি যে, জাহান্নামের অধিকাংশই হল নারী। নারীরা জানতে চাইলো, হে আল্লাহ্র রসূল; এমন কেন হবে? তিনি বললেন তোমরা অন্যদেরকে খুব বেশী অভিশাপ দাও এবং স্বামীদের প্রতি অকৃতজ্ঞ। হে নারীগন; তোমরা তোমাদের বুদ্ধির অপূর্ণতা ও দীনতা সত্ত্বেও বিচক্ষন ও সচেতন পুরুষের বুদ্ধি হরণকারিণী। তোমাদের মত এমন কাউকে আর দেখিনি।
মেয়েরা হয়ত এখন রেগে গিয়ে বলবেন সহি হাদিস, হাল্কা হাদিস, ভারী হাদিস, অনুবাদে ভুল হাদিস, এটা সেটা নানান কথা। কিন্তু লাভ নেই, এটা এক্কেবারে সহি হাদিস। মেয়েরা হয়ত প্রস্তাব করবেন আগে কোরান মানো তারপর হাদিস, ইত্যাদি ইত্যাদি। তাই কি? আচ্ছা, অল্প একটুখানি না’হয় ভাঁজ খুলে দেখা যাক ইসলামে নারীদের স্থান।
পুরুষরা যে নারীদের চেয়ে উত্তম আর স্ত্রী পেটানো যে স্বামীদের কোরানী অধিকার, এইবার সেটা দেখুন কোরানের ৪ নম্বর সূরা আন নিসার ৩৪ তম আয়াতেঃ
পুরুষেরা নারীদের উপর কৃর্তত্বশীল এ জন্য যে, আল্লাহ একের উপর অন্যের শ্রেষ্ঠত্ব দান করেছেন এবং এ জন্য যে, তারা তাদের অর্থ ব্যয় করে। সে মতে নেককার স্ত্রীলোকগণ হয় অনুগতা এবং আল্লাহ যা হেফাযতযোগ্য করে দিয়েছেন লোক চক্ষুর অন্তরালেও তার হেফাযত করে। আর যাদের মধ্যে অবাধ্যতার আশঙ্কা কর তাদের সদুপদেশ দাও, তাদের শয্যা ত্যাগ কর এবং প্রহার কর। যদি তাতে তারা বাধ্য হয়ে যায়, তবে আর তাদের জন্য অন্য কোন পথ অনুসন্ধান করো না। নিশ্চয় আল্লাহ সবার উপর শ্রেষ্ঠ।
দেখতেই পাচ্ছেন, কি কারণে পুরুষরা নারীদের ওপরে। তবে এখন নারী যদি স্বামীর অর্থব্যায় না করে নিজেই কামাই করে, ব্যায় করে তা’হলে? তা’হলে যে আবার কোরানকে একটু পাশ কাটানো হয়ে গেল, তাই না? পুরুষের উপর নারী নিজের শ্রেষ্ঠত্ব জাহির করতে গিয়ে আল্লার দেওয়া কোরানের পুরুষ শ্রেষ্ঠত্বকে বেকায়দায় ফেলে দিলো না? এইটা কি গুনাহ? যাই হোক, এখন হয়ত বলবেন এতো গোড়ামীর দরকার কি? বেছে বেছে কোরানের ভালো দিকগুলি মানলেই তো হয়। হাদিস এত কড়াকড়ি ভাবে না মানলে কি হয়? কি হয়? কোরান খুলুন; দেখুন, কোরানের ২ নম্বর সূরা আল বাকারার ৮৫ তম আয়াতেঃ
অতঃপর তোমরাই পরস্পর খুনাখুনি করছ এবং তোমাদেরই একদলকে তাদের দেশ থেকে বহিস্কার করছ। তাদের বিরুদ্ধে পাপ ও অন্যায়ের মাধ্যমে আক্রমণ করছ। আর যদি তারাই কারও বন্দী হয়ে তোমাদের কাছে আসে, তবে বিনিময় নিয়ে তাদের মুক্ত করছ। অথচ তাদের বহিস্কার করাও তোমাদের জন্য অবৈধ। তবে কি তোমরা গ্রন্থের কিয়দংশ বিশ্বাস কর এবং কিয়দংশ অবিশ্বাস কর? যারা এরূপ করে পার্থিব জীবনে দূগর্তি ছাড়া তাদের আর কোনই পথ নেই। কিয়ামতের দিন তাদের কঠোরতম শাস্তির দিকে পৌঁছে দেয়া হবে। আল্লাহ তোমাদের কাজ-কর্ম সম্পর্কে বে-খবর নন।
এখনও বলবেন কোরান হাদিস নিজের মত করে মানবেন? আচ্ছা, তা’হলে আবার দেখেন, কোরানের ৪ নম্বর সূরা আন নিসার ৮০ তম আয়াতঃ
যে লোক রসূলের হুকুম মান্য করবে সে আল্লাহরই হুকুম মান্য করল। আর যে লোক বিমুখতা অবলম্বন করল, আমি আপনাকে (হে মুহাম্মদ), তাদের জন্য রক্ষণাবেক্ষণকারী নিযুক্ত করে পাঠাইনি।
এখন ব্যাপারটা কি এই রকম লাগছে যে রসূলের হুকুম = হাদিস = আল্লার হুকূম = কোরান?
আসল বা সহি হাদিসের সবচেয়ে গ্রহণীয় বইখানির নাম বোখারী শরীফ। ওটা তো বাংলাতেই লেখা আছে। একটু কষ্ট করে পড়ে ফেলুন। মেয়েদের কি অবস্থা ওখানে একটু দেখে আসুন নিজ চোখে। তারপর বলুন, কোনটা ছেড়ে কোনটা মানবেন? আংশিক মেনে অ-মুসলমান হবেন? না’কি আপনার তৈরি ইসলাম মেনে আধুনিক মুসলমান হবেন, না’কি বুদ্ধি করে ধর্মকর্ম ব্যক্তিগত মেনে নিজের মধ্যেই সীমাবদ্ধ রাখবেন?
আমাদের দেশে যেই ধরনের নারী নির্যাতন হয় তার বেশীরভাগটাই কোরান হাদিস দিয়ে সমর্থিত (এইসব নানান কথা নিয়ে মুক্তমনা লেখকদের প্রচুর লেখা আছে। নীচে লিঙ্ক দিয়ে দিলাম, ওখানে ক্লিক করে দেখে নিতে পারেন)। একাধিক বিবাহ, তালাক, প্রহার, জনসমক্ষে বিচার করে নারীকে জনসমক্ষে শাস্তি ইত্যাদি পাক কিতাব নির্দেশিত। কোনটা মানবেন? ইসলামী আইন নাকি দেশের আইন?
কোরানে লেখা আছে খারাপ কাজের জন্য শাস্তি হবে, দোজখবাস হবে। ভালো কাজের জন্য পাওয়া যাবে পুরষ্কার। ছেলেদের জন্য হুর, কচি কিশোর গেলমান, মদ, যথেচ্ছ যৌনক্রিয়া; গেলমান ও চিরকূমারী মেয়েদের সাথে; যাদেরকে মানুষ কিংবা জীন কেউ আগে হাত লাগায়নি ইত্যাদি ইত্যাদি। একই পুরষ্কার কি মেয়েদের জন্যও? নাহ; এসব পুরষ্কার ছেলেদের জন্যই তো দেখা যাচ্ছে। তা’হলে মেয়েরা? দুনিয়ায় থাকতে মেয়েরা হিজাব নেকাব পরে স্বামীর মার খাবে, চাহিবা মাত্র স্বামীর যৌনক্ষুধা মেটাবে, নামাজ রোযা করবে, অনুমতি ছাড়া ঘরের বাইরে যাবে না ইত্যাদি ইত্যাদি এইসব মানতে মানতে একদিন আল্লা আল্লা করতে করতে মরে যাবে, কিসের আশায়? বেহেস্ত। বেহেস্তে তারা কি পাবে? সোনার থালায় মনমত খাবার আঙ্গুর বেদানা, হবে হুরীদের সর্দারনী ইত্যাদি। হয়তো মুমিন স্বামীর হাত ধরে ঢুকবে জান্নাতে। স্বামীরা যৌনফুর্তি করবে; সেকেন্ডহ্যান্ড পুরানো স্ত্রী তাকিয়ে তাকিয়ে সর্দারনী-গিরি করবে? ঠিক তাই, কোরানে হাদিসে তো এই রকমই লেখা আছে। অবশ্য এসব তারা পাবে শুধুমাত্র দুনিয়ায় হিজাব নেকাব আদব লেহাজ ঠিক রাখলে। তা না’হলে ফক্কা, দোজখ। হজরত মুহম্মদ তো বলেইছেন যে জাহান্নামের অধিকাংশই হল নারী। ইসলামে নারীদের টাইটের উপর রাখতে হুকুম দেওয়া আছে। আফগানী বস্তা আর বেত্রাঘাতের মত। একটু আগে যা কিছু পড়লেন তা সবই কোরান হাদিসে লেখা আছে। নীচে ওগুলোর সমর্থনে কোরান হাদিস থেকে অল্প কিছু উল্লেখযোগ্য অংশ তুলে দেওয়া হোল। ওখানে দেখবেন নারীদের কিভাবে সম্মানিত করতে হবে তা বলা হয়েছে। নিজে পড়ুন, বুঝুন, বিচার বিবেচনা করে নিজে নিজেই সিদ্ধান্ত নিন দুনিয়ার হিজাবী সূখ অ-সূখ আর হিজাবী মেয়ের বেহেস্তী সূখ সম্বন্ধে।
2:223= কোরানের ২নম্বর সূরা আল বাকারা, আয়াত ২২৩: তোমাদের স্ত্রীরা হলো তোমাদের জন্য শস্য ক্ষেত্র। তোমরা যেভাবে ইচ্ছা তাদেরকে ব্যবহার কর। আর নিজেদের জন্য আগামী দিনের ব্যবস্থা কর এবং আল্লাহকে ভয় করতে থাক। আর নিশ্চিতভাবে জেনে রাখ যে, আল্লাহর সাথে তোমাদেরকে সাক্ষাত করতেই হবে। আর যারা ঈমান এনেছে তাদেরকে সুসংবাদ জানিয়ে দাও।
2:228= কোরানের ২নম্বর সূরা আল বাকারা, আয়াত ২২৮: আর পুরুষদের যেমন স্ত্রীদের উপর অধিকার রয়েছে, তেমনি ভাবে স্ত্রীদেরও অধিকার রয়েছে পুরুষদের উপর নিয়ম অনুযায়ী। কিন্তু নারীরদের ওপর পুরুষদের শ্রেষ্ঠত্ব রয়েছে। আর আল্লাহ হচ্ছে পরাক্রমশালী, বিজ্ঞ।
3:14= কোরানের ৩নম্বর সূরা আল ইমরান, আয়াত ১৪: মানবকূলকে মোহগ্রস্ত করেছে নারী, সন্তান-সন্ততি, রাশিকৃত স্বর্ণ-রৌপ্য, চিহ্নিত অশ্ব, গবাদি পশুরাজি এবং ক্ষেত-খামারের মত আকর্ষণীয় বস্তুসামগ্রী। এসবই হচ্ছে পার্থিব জীবনের ভোগ্য বস্তু। আল্লাহর নৈকট্যই হলো উত্তম আশ্রয়।
23:5, 6, 7= কোরানের ২৩ নম্বর সূরা আল মূমিনুন, আয়াত ৫ থেকে ৭: এবং যারা নিজেদের যৌনাঙ্গকে সংযত রাখে; ৬ তবে তাদের স্ত্রী ও মালিকানাভুক্ত দাসীদের ক্ষেত্রে সংযত না রাখলে তারা তিরস্কৃত হবে না; ৭ অতঃপর কেউ এদেরকে ছাড়া অন্যকে কামনা করলে তারা সীমালংঘনকারী হবে।
24:31= কোরানের ২৪ নম্বর সূরা আন-নূর, আয়াত ৩১: ঈমানদার নারীদেরকে বলুন, তারা যেন তাদের দৃষ্টিকে নত রাখে এবং তাদের যৌন অঙ্গের হেফাযত করে। তারা যেন যা সাধারণতঃ প্রকাশমান, তা ছাড়া তাদের সৌন্দর্য প্রদর্শন না করে এবং তারা যেন তাদের মাথার ওড়না বক্ষ দেশে ফেলে রাখে এবং তারা যেন তাদের স্বামী, পিতা, শ্বশুর, পুত্র, স্বামীর পুত্র, ভ্রাতা, ভ্রাতুস্পুত্র, ভগ্নিপুত্র, স্ত্রীলোক অধিকারভুক্ত বাঁদী, যৌনকামনামুক্ত পুরুষ, ও বালক, যারা নারীদের গোপন অঙ্গ সম্পর্কে অজ্ঞ, তাদের ব্যতীত কারো আছে তাদের সৌন্দর্য প্রকাশ না করে, তারা যেন তাদের গোপন সাজ-সজ্জা প্রকাশ করার জন্য জোরে পদচারণা না করে। মুমিনগণ, তোমরা সবাই আল্লাহর সামনে তওবা কর, যাতে তোমরা সফলকাম হও।
বুখারী ভলিউম ৪, বুক ৫৪ , নম্বর ৪৬০ (বুখারী, সৃষ্টির সূচনা অধ্যায়, অভিশপ্ত স্ত্রী) হজরত আবু হুরাইরা বলেন, আল্লার রসূল বলেছেন, যখন কোন লোক তার স্ত্রীকে সঙ্গম করতে বিছানায় ডাকে এবং স্ত্রী আসতে অস্বীকার করে এবং এরপর সেই লোক ক্ষোভ নিয়ে রাত কাটায়, তখন ভোর পর্যন্ত ফেরেস্তাবৃন্দ এমন স্ত্রীর প্রতি লানৎ ও অভিশাপ বর্ষণ করতে থাকে।
বুখারী ভলিউম ৭, বুক ৬২, নম্বর ৩০ (বুখারী) হজরত আবদুল্লা বিন ওমর উল্লেখিত; আল্লার রসূল বলেন, খারাপ সকলই নারী বাড়ী ও ঘোড়াতে।
4:15= কোরানের ৪ নম্বর সূরা আন নিসা, আয়াত ১৫: আর তোমাদের নারীদের মধ্যে যারা ব্যভিচারিণী তাদের বিরুদ্ধে তোমাদের মধ্য থেকে চার জন পুরুষকে সাক্ষী হিসেবে তলব কর। অতঃপর যদি তারা সাক্ষ্য প্রদান করে তবে সংশ্লিষ্টদেরকে গৃহে আবদ্ধ রাখ, যে পর্যন্ত মৃত্যু তাদেরকে তুলে না নেয় অথবা আল্লাহ তাদের জন্য অন্য কোন পথ নির্দেশ না করেন।
64:14= কোরানের ৬৪ নম্বর সূরা আত তাগাবুন, আয়াত ১৪: হে মুমিনগণ, তোমাদের কোন কোন স্ত্রী ও সন্তান-সন্ততি তোমাদের দুশমন। অতএব তাদের ব্যাপারে সতর্ক থাক। যদি মার্জনা কর, উপেক্ষা কর, এবং ক্ষমা কর, তবে আল্লাহ ক্ষমাশীল, করুনাময়।
24:2= কোরানের ২৪ নম্বর সূরা আন নূর, আয়াত ২: ব্যভিচারিণী নারী ব্যভিচারী পুরুষ; তাদের প্রত্যেককে একশ’ করে বেত্রাঘাত কর। আল্লাহর বিধান কার্যকর কারণে তাদের প্রতি যেন তোমাদের মনে দয়ার উদ্রেক না হয়, যদি তোমরা আল্লাহর প্রতি ও পরকালের প্রতি বিশ্বাসী হয়ে থাক। মুসলমানদের একটি দল যেন তাদের শাস্তি প্রত্যক্ষ করে।
2:230= কোরানের ২ নম্বর সূরা, আল বাকারা, আয়াত ২৩০: তারপর যদি সে স্ত্রীকে (তৃতীয়বার) তালাক দেয়া হয়, তবে সে স্ত্রী যে পর্যন্ত তাকে ছাড়া অপর কোন স্বামীর সাথে বিয়ে করে না নেবে, তার জন্য হালাল নয়। অতঃপর যদি দ্বিতীয় স্বামী তালাক দিয়ে দেয়, তাহলে তাদের উভয়ের জন্যই পরস্পরকে পুনরায় বিয়ে করাতে কোন পাপ নেই। যদি আল্লাহর হুকুম বজায় রাখার ইচ্ছা থাকে। আর এই হলো আল্লাহ কতৃক নির্ধারিত সীমা; যারা উপলব্ধি করে তাদের জন্য এসব বর্ণনা করা হয়।
65:4= কোরানের ৬৫ নম্বর সূরা আত ত্বালাক, আয়াত ৪: তোমাদের স্ত্রীদের মধ্যে যাদের ঋতুবর্তী হওয়ার আশা নেই, তাদের ব্যাপারে সন্দেহ হলে তাদের ইদ্দত হবে তিন মাস। আর যারা এখনও ঋতুর বয়সে পৌঁছেনি, তাদেরও অনুরূপ ইদ্দতকাল হবে। গর্ভবর্তী নারীদের ইদ্দতকাল সন্তানপ্রসব পর্যন্ত। যে আল্লাহকে ভয় করে, আল্লাহ তার কাজ সহজ করে দেন।
বুখারী ভলিউম 5, বুক নং 58, হাদিস নম্বর 236 (সহি বুখারিঃ নবী ও সাহাবীদের মর্যাদা অধ্যায়ঃ নয় বছর বয়সে বধূ) : হিশামের পিতা হতে বর্ণিতঃ নবী মদীনা চলে যাওয়ার তিন বছর পুর্বে খাদিজা ইন্তেকাল করেন। সেখানে বছর দুই কাটানোর পর তিনি আয়েশাকে বিয়ে করেন, আয়েশা তখন ছয় বছরের বালিকা মাত্র, এবং আয়েশার বয়স যখন নয় বছর তখন তিনি বিয়েকে পুর্ণাঙ্গ করেন।
ইসলামে নারীদের কিভাবে সম্মানিত করতে হবে তা’র কিছু নমুনা দেখলেন। বোঝা গেল ইসলামে বাধ্য নারীর সদাচরণই বেহেস্তি সুখের বীমা! নারী আচরণ কি হওয়া উচিৎ তা নারীরাই ঠিক করে নিন। ঠিক করে নিন কতটা ছেড়ে কতটুকু মানবেন? বেহিজাবী সেজেগুজে বৈশাখী মেলায় যাবেন নাকি আংশিক ইসলাম মেনে অমুসলমান হবেন? আপনার তৈরি ইসলাম মেনে আধুনিক মুসলমান হবেন? নাকি হবেন মুক্তমনের মানুষ? আপনার ইচ্ছা।
================================
আরো লেখা লিঙ্কঃ সূরা মোখতাসার ১, সূরা মোখতাসার ২, সূরা মোখতাসার ৩, সূরা মোখতাসার ৪, সূরা আল মূত্ত্যাজিয়া, কোথা থেকে এলো আজকের কোরান, হিজাবী মেয়ে বেহেস্তি সুখ, নামাজ, ধনসম্পদ ও ধর্ম নিয়ে বাড়াবাড়ি না করা “লাকুম দ্বীনুকুম ওয়ালিয়া দ্বীন”
=======================
মুক্তমনে আরো বেশী বেশী জানতে চান? মুক্তমনাদের লেখা পড়ুন, বিশেষ করে এদেরঃ
আবুল কাশেম, ভবঘুরে, সৈকত চৌধুরী, আকাশ মালিক, সাইফুল ইসলাম, নাস্তিকের ধর্মকথা, কৌস্তভ, আল্লাচালাইনা, সংশপ্তক, সাদাচোখ, টেকি সাফি, রূপম(ধ্রুব), অভীক, গীতা দাস, রাজেশ তালুকদার, তামান্না ঝুমু, বিপ্লব পাল, শিক্ষানবিস, ফরিদ আহমেদ, অভিজিৎ, বন্যা আহমেদ, কাজী রহমান এবং বাকিদের
তারপরও মুসলমান মেয়েরাই বেশি ধর্মভীরু হয়…ছোটোবেলার মগজ ধোলাইতেই জীবন শেষ… :-[
@মহা পুরুষ,
মগজধোলাইটা কে বা কারা দেয় সেটা বলুন, আচ্ছা এইটা পড়ুনঃ
…………………
ছোট্ট বেলায় বন্ধু ছিল, টিনের একটা ব্যাঙও ছিল,
কাঠের একটা ঘোড়া ছিল, ঘুড্ডি এবং নাটাই ছিল,
বিশ্বাস মূল ব্যাপার ছিল, হাওয়াই মিঠাই সেটাও ছিল,
ভ্যাজাল তবে কিসে ছিল? সর্ষে দানায় বাপমা ছিল!
অসাধারণ লাগলো লেখাটা। মাঝখানে সার্ভার সমস্যার কারনে পড়া হয়ে ওঠেনি।
শুভেচ্ছা নেবেন কাজী মামুন ভাইয়া।
@অচেনা,
শুভেচ্ছা আপনাকেও। আমার নাম পাল্টে দিলেন যে (C)
@কাজী রহমান,
ওহ সরি ভাইয়া ভুল হয়ে গেছে 🙂 । আবার শুভেচ্ছা নিন আসল নামে :=D (F)
@ কাজী রহমান,
অল্প ভাঁজ খুলেই অনেক কিছু দেখিয়ে দিয়েছেন। (Y) (F)
@গোলাপ,
ধন্যবাদ গোলাপ। আপনিও দু চার ভাঁজ খুলে দিন। আপনার ভান্ডারে তো রেফারেন্সের অভাব নাই :))
আপনি মন্তব্য করেছেন আমার জন্য এটাই যথেষ্ট। অনেক অনেক ধন্যবাদ। ভালো থাকুন (C)
অতি সংক্ষিপ্তেই আপনি ইসলামকে উলঙ করে দিলেন।
খুব ভালো লাগলো।
কম্পুটারের (অফিসের) অসুবিধার জন্য সময়মত মন্তব করতে পারছি না। মাফ করে দিবেন।
@আবুল কাশেম,
আপনার দশ পর্বের লেখা ইসলামে বর্বরতা নারী অধ্যায় যারা পড়েনি সেইসব নারীদের অবশ্য পঠনীয়। অতি কষ্টকর ও বিস্তারিত গবেষণাখানি সবার সংগ্রহে রাখবার মত। পথ প্রদর্শনের জন্য কৃতজ্ঞতা জানাই।
আপনার শিরোনামটাই দুর্দান্ত কাব্যিক হয়েছে।
এমন অনেকগুলো সূত্র ধর্মকারীর ইসলামি শস্যক্ষেত্রে বইটায় পড়েছিলাম। আপনার প্রবন্ধে আরো নতুন কয়েকটা পেলাম, সাথে আপনার বিশ্লেষণ।
@কৌস্তুভ,
বাংলা বোখারী গুলোর ক্রমানুসার যদি ঠিকঠাক থাকতো তা’হলে আরো অনেকের কাছ থেকে হয়ত আরো অনেক রেফারেন্স সহজে পাওয়া যেত। যাই হোক সবাই মিলে লিখতে লিখতে দেখা যাক কদ্দুর যাওয়া যায়।
আপনার আর রূপম ধ্রুবের মন্তব্য বেশ উপভোগ করছি।
মন্তব্যের জন্য অনেক ধন্যবাদ কৌস্তভ (D)
কথা কম কিন্তু কাজ বেশী- আপনার এই প্রচেষ্টাকে সাধুবাদ।
@রাজেশ তালুকদার,
একটু ভিন্ন পথে চেষ্টা, এই আর কি (I)
আছা পুরুষেরা যে পর্দা করেনা, মাথায় ঘোমটা পড়েনা এই বেপর্দানশীন পুরুষদেরকে দেখে যদি কোন মোমিন নারী পথভ্রষ্ট হয়! এজন্যে পুরুষদেরও বোরকা নেকাপ পড়া উচিত নয় কি?
@তামান্না ঝুমু,
এইটা ভালো বলেছেন। সোচ্চার দাবী উঠুক, এই তো চাই।
বিজ্ঞাপনটিও ভাল লাগল।
@গীতা দাস,
একটা ‘ও’ এর এমন ব্যাবহার, দারুণ। ও-টা-ও ঠিক করে দিয়েছি, ভুলে গিয়েছিলাম। মন্তব্যের জন্য অনেক ধন্যবাদ :))
আমার কিছু কথা আছে। :-s
এই যে অর্ধেক মানা অর্ধেক না মানার সঙ্কট আপনি উপস্থাপন করলেন, এটা গাণিতিক সঙ্কট। এটা বের করা গুরুত্বপূর্ণ বটেই। কিন্তু এটা একদিকদর্শী। তবে এর সমাধান যে খুব সহজ তাও না। অনেকদিন ধরে ভাবনা চিন্তা করছি। আপনিও করছেন, জানি। আগে দুর্বলতাটা বলি।
নারী পুরুষ নির্বিশেষে মানুষকে একটা বিশেষ ডাইমেনশানে ভাগ করা চলে। এর একপাশে থাকে যুক্তিবাদী মানুষ, অন্যপাশে থাকে যুক্তিকে প্রাধান্য দেন না এমন মানুষ। এর মাঝামাঝি বিভিন্ন গ্রেডেও মানুষ বিন্যস্ত থাকে।
আপনার লেখাটা যুক্তিবাদী। এটা যুক্তিকে প্রাধান্য দেন না এমন মানুষকে কিন্তু অ্যাড্রেস করতে পারবে না। বহু মানুষ বিশ্বাসটাকে যুক্তি দিয়ে দেখেন না। তারা ঠিকই বৈশাখী মেলায় সেজেগুজে যাবেন ও নিজের ইসলামও পালন করে যাবেন। তাদের মননে সেটা একটা সঙ্কট তৈরি করবে না। সঙ্কটটা তৈরি হবে যুক্তিবাদীর মনে। সে ভাববে, এটা করে কী? কীভাবে এমন দুই নৌকায় পা দিয়ে চলছে যেখানে স্পষ্ট বলে দেয়া আছে যে তেমনটা করা যাবে না? যদি বলেন, আরে ভাই, যে কোরান মানেন, সে নিজেই কিন্তু ডিডাক্টিভ। তাতেও লাভ নেই। ওই মনগুলোতে যে ইসলাম বাস করে, সেটার স্রষ্টা তারা নিজে। সেখানে কোরান হাদিসের রাজত্ব চলে না। নিজের বানানো অস্পষ্ট নিয়মের রাজত্ব চলে। সেখানে কোরান হাদিসকে নামকাওয়াস্তে স্থান দেয়া হয়েছে, পরিবার সমাজ আর মোল্লাদের হুজ্জত থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য। ফলে এরা মোটামুটি একটা সেকুলার জীবন যাপনই করে। ধর্মীয় আচার অনাচারের প্রশ্নে এরা নীরব। খারাপ লাগতে পারে অনেকের। তবে ধর্মীয় সঙ্কট অনাচার ও এ সংক্রান্ত তর্ক এড়িয়ে চলার অধিকার সবার আছে।
বাকি রইল যৌক্তিক মানুষ। তাদের সাথে এই বাদানুবাদ চলতে পারে। অনেক সময় কাজেও দেয়। তবে মনে রাখবেন, এই পথে আপনি একা নন। মোল্লারাও আছেন। ওনারাও কিন্তু, অন্তত ওনাদের একটা অংশ, যুক্তিবাদী। উপরের সকল কোরানের বাণী আপনি যদি আক্ষরিক অর্থে মেনে নেন, তাহলে কিন্তু যৌক্তিকভাবে কনসিস্টেন্টই থাকবেন। মানবতাকে বাড়তি একটা কনসেপ্ট হিসেবে আনয়ন না করে সেক্ষেত্রে এই বাণীগুলোর ভিত্তিতে আপনাকে মানবতার সংজ্ঞা দাঁড়া করাতে হবে। তা, সেই সিস্টেমটা তো কনসিস্টেন্ট বটেই। একেবারে বুলেট প্রুফ হবে কিনা সন্দেহ আছে, তবে সাধারণ একজন যুক্তিবাদী ইসলামমনা মানুষের আগ্রহকে আকর্ষণ তো করবেই। এভাবে পরস্পর বিরোধী অজস্র যৌক্তিকভাবে কনসিস্টেন্ট সিস্টেম কিন্তু তৈরি করা সম্ভব। এখানে দেখেন, আমার এক সহপাঠী কীভাবে গোডেলের ঈশ্বরের অস্তিত্বের প্রমাণের উপর ভর করে বিশ্বাসকে একটি সম্পূর্ণ সুসংহত যৌক্তিক সিস্টেম হিসেবে দাঁড় করিয়েছিলো। সেই সিস্টেমের অধীনে আমার মতো অবিশ্বাসীকে গায়েব করে দেয়া হান্ড্রেড পার্সেন্ট যৌক্তিক ছিলো। একেবারে গণিত কষে দেখতে পারেন, ঠিকঠাক যৌক্তিক ছিলো আমাকে তার সিস্টেম অনুযায়ী নৈতিকভাবে খতম করা। যৌক্তিক ইসলামের গন্তব্যও কিন্তু ওই জায়গায়। অর্থাৎ এই যে অর্ধেক ইসলাম মানার যৌক্তিক অসঙ্গতি দেখিয়ে দেয়া, আমার সহপাঠী কিন্তু সেটার শিকার। এটা খারাপ অর্থে বলছি না। এটা একটা বৈধ আলোচনা। কিন্তু এই অসঙ্গতি দেখিয়ে দেয়া বিশ্বব্যাপী চালু আছে একদিকদর্শী উপায়ে। যারা করছেন, তারা হয়তো ভাবছেন, এতে যুক্তিবাদী মানুষের একমাত্র উপায় থাকবে ইসলামকে সম্পূর্ণ না মানা। কিন্তু আমার সহপাঠী একটা জলজ্যান্ত উদাহরণ, কীভাবে বিশ্বাসকে একটা সম্পূর্ণ কনসিস্টেন্ট গাণিতিক সিস্টেম হিসেবে খাঁড়া করা যায়। ফলে যৌক্তিক অসঙ্গতিই তো তাহলে শেষ কথা নয়। জিহাদীরা কিন্তু ইসলামের ব্যাপারে সাধারণ মুসলমানের চেয়ে অধিক কনসিস্টেন্ট। ফলে এই একদিকদর্শী চর্চার সঙ্কটটা আশা করি বুঝতে পারছেন।
আমি এর সমাধান জানি না। সমস্যা হলো ইসলামকে আক্ষরিকভাবে নেওয়া। একসময় খ্রিস্টান ধর্মও আক্ষরিকভাবে নেওয়া হতো। তা তাদের পুস্তকের শুদ্ধতা লঙ্ঘিত হয়েছে। বিজ্ঞানের সাথে সরাসরি যুদ্ধ করতে যাওয়ায় তার নিজেরই ঠ্যাঙ ভেঙে গেছে। সে হিসেবে ইসলামের ক্ষেত্রে কোনোটাই খুব উল্লেখযোগ্যভাবে ঘটে নি। এখানে ইসলামের গঠনটাকে বুঝতে হবে। এটা কেনো কাজ করে বুঝতে হবে। যারা আক্ষরিকভাবে নেন, তাদের মনস্তত্বটা বুঝতে হবে। এগুলো বাদ দিয়ে কেবল শস্যক্ষেত্রের কথা বলে লজ্জা দেওয়াটা একটা দায়সাড়া কাজ হয়ে যাবে।
আর যুক্তিকে প্রাধান্য দেন না, এমন মুসলমানের সাথে যে এইসব লেখা কমিউনিকেট করে না এবং তারা দিব্যি নাকে ইসলাম িদয়ে ঘুরে বেড়ান, সেটা তেমন সমস্যাও না। আমার প্রস্তাব তাদের ইস্তফা দেওয়া হোক। কিংবা মডারেট ইসলামকে প্রমোট করা হোক। মডারেট মুসলমানরা কিন্তু অনেক অনেক এগিয়ে গেছে। তারা অ্যাবসর্ব করতে পারে না, হেন বস্তু নেই। তাদেরকে সঙ্কটে ফেলা অফলপ্রসূ। তারা সেই সঙ্কটবোধ করবেন না। তবে আপনি যে তাদের পছন্দ করছেন না, গ্রহণ করছেন না, সেটা তারা বোধ করবেন। আমার ভাবনা হচ্ছে, মডারেট মুসলমানকে গ্রহণ করার। ইসলামের বদ্ধ সিস্টেমের মধ্যে মুক্তি কিন্তু ওনারা নিজেরাই এনেছেন। আমরা এনে দেই নি। এর জন্যে ওনাদের বাহ্বা প্রাপ্য। সেই সাথে ওনাদের এই গ্রহণযোগ্যতাকে একটা পরীক্ষার মধ্যে ফেলা যেতে পারে। যা যা মানবতার জন্যে, সমাজের জন্যে, বিজ্ঞানের জন্যে জরুরি, সেগুলো তাদের কাছে উপস্থাপন করতে পারেন। এই যেমন আমি নাস্তিক মুসলমান ধারণাটাকে গ্রহণ করার প্রস্তাব করেছি। সেগুলোও সব যদি তারা মানেন, সমর্থন করেন, প্রচারে সাহায্য করেন, তাহলে তো আর জোর করে তাদের কলেমা না পড়ানোর বস্তুগত কোনো কারণ থাকতে পারে না, নাকি?
@রূপম (ধ্রুব),
১. আপনার ধারণামত ‘মডারেট ইসলাম’ বা ‘মডারেট মুসলমান’ কাকে বলে একটা সংজ্ঞা দিন তো।
২. আপনার লেখাটা পড়েছি, কিন্তু তাতে ‘নাস্তিক মুসলমান’ কথাটার সংজ্ঞা স্পষ্ট হয় নি। সেটাও ব্যাখ্যা করুন প্লিজ। আমি নিজে ওইরকম কিছু শব্দ একটা বিশেষ আইডিয়া ব্যাখ্যা করতে ব্যবহার করি, আপনার ব্যাখ্যা পেলে সেটা নিয়ে আলাপ করা যাবে।
৩. কোরানের সব বাণী মেনে নিতে গেলে কিন্তু যৌক্তিক ইনকনসিস্টেন্সি আসবেই। ধর্মকারীর ‘কোরান কুইজ’ সিরিজটা দেখেছেন কি? একটা নমুনা দিই –
http://www.dhormockery.com/2012/01/blog-post_2902.html
প্রশ্ন ১৯. কোরান কি সবার জন্য সহজ ও সর্বজনবোধ্য?
ক) হ্যাঁ
খ) না
উত্তর ১৯. সব উত্তরই সঠিক!
(সুরা ১১.১, ৩.৭)
৪.
মডারেট মুসলমানের সংজ্ঞা না পাওয়া অবধি অপেক্ষা করি নাহয়। কিন্তু তারা যে ধর্মেও আছি জিরাফেও আছি করতে গিয়ে দুই দিক থেকেই হিপোক্রিট, সেটা তাদের বিশ্বাসভিত্তিক হিপোক্রেসি হলেও, কথাটা তো মিছা নয়।
@কৌস্তুভ,
একটা বিষয় সম্পর্কে ধারণা পেতে যখন অসুবিধা হয়, তখন সংজ্ঞা ঘাটতে হয়। ধারণা তৈরির জন্যে বিষয়টার বিস্তারিত বিবরণ কিন্তু মন্তব্যেই আছে। আছে না? “যুক্তিকে প্রাধান্য দেন না, এমন মুসলমানের সাথে যে এইসব লেখা কমিউনিকেট করে না এবং তারা দিব্যি নাকে ইসলাম িদয়ে ঘুরে বেড়ান”
“তারা ঠিকই বৈশাখী মেলায় সেজেগুজে যাবেন ও নিজের ইসলামও পালন করে যাবেন। তাদের মননে সেটা একটা সঙ্কট তৈরি করবে না। সঙ্কটটা তৈরি হবে যুক্তিবাদীর মনে। সে ভাববে, এটা করে কী? কীভাবে এমন দুই নৌকায় পা দিয়ে চলছে যেখানে স্পষ্ট বলে দেয়া আছে যে তেমনটা করা যাবে না? যদি বলেন, আরে ভাই, যে কোরান মানেন, সে নিজেই কিন্তু ডিডাক্টিভ। তাতেও লাভ নেই। ওই মনগুলোতে যে ইসলাম বাস করে, সেটার স্রষ্টা তারা নিজে। সেখানে কোরান হাদিসের রাজত্ব চলে না। নিজের বানানো অস্পষ্ট নিয়মের রাজত্ব চলে। সেখানে কোরান হাদিসকে নামকাওয়াস্তে স্থান দেয়া হয়েছে, পরিবার সমাজ আর মোল্লাদের হুজ্জত থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য। ফলে এরা মোটামুটি একটা সেকুলার জীবন যাপনই করে। ধর্মীয় আচার অনাচারের প্রশ্নে এরা নীরব।”
এসব বিবরণ থেকেও যদি আপনার চোখে সেই বিষয়ের একটা ছায়া না ভাসে, সংজ্ঞা দিয়ে আপনার খুব উপকার হবে বলে মনে হয় না।
২. একই কথা এ ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য। আবার লেখার মধ্যেই আছি, সাংস্কৃতিক বিষয়ে সংজ্ঞা ধরে মানুষ চেনার বিপত্তি। কারা সংজ্ঞা খোঁজে, সংজ্ঞা দিয়ে মানুষ চেনে। আছে না? সেটা দেখেছেন? সব পড়ে টড়ে তাহলে আবার সংজ্ঞা চাওয়া কেনো?
নাস্তিক মুসলমান বিষয়টা আনয়নের আগে লেখায় সাংস্কৃতিক মুসলমান নামক বিষয়টা এনেছি। সাংস্কৃতিক মুসলমান মুসলমানদের সাংস্কৃতিক আচার আচরণকে পরিত্যাগ করে নি। ঈদ, কোরবানি, যাকাত, ইফতারি, এইসব সাংস্কৃতিক ও সামাজিক বিষয় সে ত্যাগ করে নি। আর নাস্তিক মুসলমান হলো বিশ্বাসে নাস্তিক এমন সাংস্কৃতিক মুসলমান। এমন প্রচুর মানুষ সমাজে বাস করে। এদের আমি আবিষ্কারও করি নি। তবে সাংস্কৃতিক মুসলমান কথাটার এখনো সমাজে চল নই। তাই প্রস্তাব করা।
৩. যৌক্তিক ইনকন্সিস্টেন্সি কোরানের সব আয়াত মানলে আসবে এটা অবাক হবার বিষয় না। আমিও বলেছি যে সেই কন্সিস্টেন্সি বুলেট প্রুফ ব্যাপার না, কিন্তু ইসলামমনা সাধারণ যুক্তিঅনুরাগীদের খুশি করে রাখার জন্যে যথেষ্ট। আর যেটুকু ইনকন্সিস্টেন্সি আছে, সেটা দুয়েকটা বাড়তি এক্সিওম দিয়ে ঝালাই করা তেমন কঠিন মনে হয় না। একটা কন্সিস্টেন্ট সিস্টেমের থেকে ওই সিস্টেমের ডিস্ট্যান্স কম।
৪. সাধারণ মুসলমান যৌক্তিকভাবে বিশ্বাসকে দেখেন না। বিশ্বাস তার কাছে যুক্তির বিষয় না যে এর যৌক্তিক অসঙ্গতি তাকে বিব্রত করবে। সেটাকে ট্যাকল করতে মানসিকভাবে সে জানে। এ কারণে যতোই ধর্মকান, তাদের কানে লাগে না।
@রূপম (ধ্রুব),
১. যারা যুক্তি ফেলে বিশ্বাস নিয়ে থাকে তারা থাকুক, কিন্তু আমি-আপনি দুজন যৌক্তিক মানুষ যখন আলোচনা করছি তখন সংজ্ঞা ইত্যাদিতে অসুবিধা কী? স্থির সংজ্ঞা দিয়ে অবশ্যই সমাজবিজ্ঞানের আলোচনার সুবিধা হয়। কালচারের মত অত্যন্ত জটিল এবং vague ধারণারও সংজ্ঞা নেওয়ার প্রয়োজনবোধ করেছেন সমাজবিজ্ঞানীরা, এমনকি primatologistরাও। তাই তাঁরা কষ্ট করে সংজ্ঞাটা এতটাই বিস্তারিত করার চেষ্টা করেছেন যে তাতে কালচারের বিভিন্ন দিক যথাযথভাবে প্রতিফলিত হয়, ফ্লেক্সিবিলিটি বজায় থাকে। বিষয়টা ছড়ানো এবং জটিল বলেই সংজ্ঞা দেওয়ার চেষ্টা করা উচিত না, এমন তো নয়।
এই আলোচনার পরিপ্রেক্ষিতে সংজ্ঞা দেওয়া গুরুত্বপূর্ণ কেন? কারণ, আপনার ওই পরিচ্ছেদটা পড়ে আমার যে ‘ধারণা’ হবে, সেটা আপনি যে ‘ধারণা’ থেকে ব্যাপারটা দেখছেন তার কাছাকাছি নাও হতে পারে, অন্য একজন যেমন ‘ধারণা’ পেল সেটা থেকেও খানিকটা ভিন্ন হতে পারে। অতএব আলোচনায় কিছুদূর গেলেই কনফিউশন-কনফ্লিক্ট আসতে পারে।
২. সংজ্ঞা ধরে মানুষ চেনার বিপত্তি নিয়ে আপনার ওই লেখার মতামতের সঙ্গে সহমত নই, যেমন নই “নাস্তিকের খোদা হইল সে নিজে” ইত্যাদি কথায়, তবে সে আলোচনার স্থান ওটা, এখানে ঠিক হবে না। এই প্রসঙ্গে বলি, ওই লেখা পড়ে ‘নাস্তিক মুসলমান’ ঠিক কাকে বলে সে বিষয়ে স্পষ্ট ‘ধারণা’ পাই নি।
“নাস্তিক মুসলমান হলো বিশ্বাসে নাস্তিক এমন সাংস্কৃতিক মুসলমান” এই সংজ্ঞাটা দেওয়ার জন্য ধন্যবাদ। আমি এক্ষেত্রে “সাংস্কৃতিক মুসলমান” শব্দটাই ব্যবহার করি। (নাস্তিক মুসলমান শব্দটা শুনতে প্যারাডক্সিকাল লাগে, আর ওটারও চল তো নেই-ই।) এই ধারণাটার বিষয়ে আপনার সঙ্গে সহমত। আশা করব এমন সহজভাবেই ‘মডারেট মুসলমান’ সম্পর্কেও একটা সংজ্ঞা দেবেন।
৩. আপনি এই যে ‘সিস্টেম’ এর কথা বলছেন, আপনার সহপাঠী যে সিস্টেম ভেবে বের করেছিল, বা উলেমারা আপনার ওই লেখার মতে যে আপাত-যৌক্তিক সিস্টেম নিয়ে জ্ঞানচর্চা করে, সেগুলো কিছু অ্যাসাম্পশনের উপর নির্ভরশীল, যেগুলো আসলে অযৌক্তিক। যেমন উলেমারা মুহাম্মদ যে আসলে নবী, ঈশ্বর বলে যে কেউ আসলে আছেন, মুহম্মদ যে সত্যিই ঈশ্বরের বাণী পেয়েছিলেন, এগুলোকে সত্যি ধরে নিয়ে, এগুলোর উপর কন্ডিশন করে তাদের সিস্টেম বানায়। তাই কন্ডিশনালি কনসিস্টেন্ট হতে পারে, কিন্তু সামগ্রিকভাবে সেগুলো আসলে ইনকনসিস্টেন্টই। একমাত্র কনসিটেন্ট সমাধান হচ্ছে সব রিলিজিয়নকে না মানা।
৪. আপনার কথায় মনে হচ্ছে যেন ‘সাধারণ মুসলমান’রা লস্ট কেস। কিন্তু তা কেন? তাদের মনেও তো মাঝেসাঝেই দ্বিধা-দ্বন্দ্ব লাগে। তাদের সাহায্য করে, তাদের দ্বিধা যে আসলেই সত্যি সেটা দেখিয়ে দিয়ে, তাদেরকে ঠিক পথে আনার সাহায্য করার আশা কেন ছেড়ে দেব?
@কৌস্তুভ,
১. ২. মডারেট মুসলমানের সংজ্ঞা না দিয়ে এ নিয়ে আপনি আলাপ করতে পারছেন না ভাবতে অবাক লাগছে। সংজ্ঞা দিয়ে দেওয়ার পর তো মানুষ তখন তাতেই আটকে থাকবে। বলবে, সফিক তো তাহলে মডারেট মুসলমান না, ওর কী হবে? কিন্তু বৈশাখী মেলায় সেজেগুজে যায়, মদটদও হয়তো খায়, জেনাও হয়তো করে, দোর্রা মারার বিরুদ্ধে সক্রিয় থাকে, কিন্তু নিজেকে কোরান খোদা মানা মুসলমান মনে করে, এমন মানুষ সম্পর্কে কল্পনা করাটা নিশ্চয়ই কঠিন না। এখন দেখুন, যদি বলে বসেন, তাহলে যে এই সংজ্ঞায় যায় না, সে মডারেট মুসলমান না, তাহলে তো বিপত্তি। কিন্তু কাদের কথা বলছি, বুঝতে নিশ্চয়ই সমস্যা হচ্ছে না। কথা চালিয়েই দেখুন না। কথাবার্তায় সমস্যা দেখা গেলেই না তখন সংজ্ঞার প্রয়োজন অনুভূত হবে। সংজ্ঞা অবশ্যই সুবিধা করে আমাদের। কিন্তু এখন পর্যন্ত কোনো অসুবিধার দেখা পাওয়া যাওয়ার আগেই সংজ্ঞা চাওয়া তো অতিরিক্ত।
৩. এখানে আবার ভুল করছেন। ভাবছেন অ্যাসাম্পশান নির্ভর আর্গুমেন্ট অযৌক্তিক। কথাটা ঠিক নয়। গণিত ও যুক্তি সম্পর্কে এই সাধারণ ভুলটা সব্বাই প্রথমে করে। জানুন, যুক্তি তথা গণিত অ্যাক্সিওম্যাটিক। কোনো যুক্তি বা গণিত নেই, যেটার মূলে কোনো অ্যাসাম্পশান বা অ্যাক্সিওম নেই। এমন কোনো গাণিতিক প্রমাণ বা যৌক্তিক আর্গুমেন্ট নেই, যার মূলে অ্যাসাম্পশান নেই। মাহবুব মোর্শেদও তো এ নিয়ে লিখেছিলেন। ত্রিভুজের তিন কোণের সমষ্টি ১৮০ ডিগ্রি এর প্রমাণও কতগুলো অ্যাসাম্পশানের উপর দাঁড়িয়ে। অ্যাসাম্পশান পরিবর্তন করুন, ভিন্ন একটা সিদ্ধান্তে এসে পৌঁছাবেন। গোডেলের ঈশ্বরের অস্তিত্বের প্রমাণটা পড়ুন। শুরুই হয়েছে অ্যাক্সিওম দিয়ে। ব্যাপারটা খুব চাঞ্চল্যকর না। গণিত কমিউনিটিতে সবাই সেটা জানে। র্যাডিক্যাল গণিতবিদরা ( 😀 ) যেমন পল এর্দোস মনে করতেন গাণিতিক এন্টিটিগুলো মহাবিশ্বের কোনো চিপাচাপায় নিশ্চয়ই বিরাজ করে। কিন্তু একজন র্যাশনাল গণিতবিদ মাত্রই জানেন, গণিতের শুরুটা অ্যাসাম্পশান বা অ্যাক্সিওম নির্ভর, যেটা কোনো ধূমকেতুর গায়ে খোদাই করা নেই। যেটা সত্য এমনও নয়। সেগুলো অলোচ্য প্রমাণের জন্যে স্বতঃসিদ্ধ হিসেবে স্বীকার্য। কেউ যখন সেই স্বতঃসিদ্ধকে স্বীকার করবে না, সে তখন ওর উপর ভিত্তি করে ডিডিউস করা অন্যান্য বক্তব্যগুলোও অস্বীকার করবে। অ্যাক্সিওমের কোনো প্রমাণ অপ্রমাণ, যৌক্তিক অযৌক্তিক ব্যাপার নেই।
ফলে সব রিলিজান না মানা একমাত্র যৌক্তিকভাবে কন্সিস্টেন্ট সিস্টেম না বাহে। গোডেলের ঈশ্বরের অস্তিত্বও একটা কন্সিস্টেন্ট সিস্টেম। সেটা লেখায় বিস্তরই বলেছি। সেটাও গণিতটা কষলে আপনিও জানবেন, বড় গণিতবিদ হওয়া লাগবে না। যদি এতোদিন ভেবে থাকেন যে একমাত্র আপনার সিস্টেমটাই যৌক্তিকভাবে কন্সিস্টেন্ট, তাহলে আফসোস আপনার জন্যে। আপনি যেসব যেসব বলেন, ধর্মেও থাকা জিরাফেও থাকা একটা হিপোক্রিসি, আমার সহপাঠী মোহাম্মদেরও কিন্তু সেই একই কনসার্ন ছিলো। তেলে জলে মেশামেশি দেখে তার গা পুড়ে যেতো। মোহাম্মদও যৌক্তিক কন্সিস্টেন্সির সন্ধান করছে। মোহাম্মদ গোডেলকে ধরে পার হয়ে গেছে যৌক্তিক কন্সিস্টেন্সির পুল সিরাত। আপনি ঠেকাবেন কোন যুক্তি দিয়ে তারে?
বিজ্ঞান এখানে কিঞ্চিৎ সহায় কারণ পর্যবেক্ষণের সাথে সাংঘর্ষিক এমন অ্যাক্সিওম সরাসরি বিজ্ঞান দ্বারা যাচাইয়ের আওতায় পড়ে। আবার আমার বিজ্ঞানের সংজ্ঞা চেয়ে বসবেন। এর জন্যে এই লেখা বা এই লেখা পড়তে পারেন। কিন্তু তখন আর সেই ফলসিফাইড অ্যাক্সিওমকে অযৌক্তিক বলবেন না আপনি। বরং বলবেন অবৈজ্ঞানিক। পর্যবেক্ষণ দ্বারা মিথ্যায়িত। তবে ধর্মীয় বা গোডেলীয় অ্যাক্সিওমগুলো সাধারণত মিথ্যায়িত করা যায় না, কারণ সেগুলো মেটাফিজিক্যাল, এবং বিধায় বিজ্ঞানের মূল দার্শনিক ধারা লজিক্যাল পজিভিজমের ভাষায় অর্থহীন। এখন সমস্যা হচ্ছে মেটাফিজিক্স অর্থহীন এই স্টেটমেন্টটাও খাঁটি অ্যাক্সিওমেটিক। এটাকে আবার ফলসিফাই করা যায় না। ফলে স্টেটমেন্টটা নিজেই তার সিস্টেমে অর্থহীন।
আপনার এই সকল প্রশ্নের সম্মুখীন আমি পূর্বে হয়েছি, প্রথমে নিজের কাছে। তারপর খুব যত্নের সাথে পড়াশোনা করে বিজ্ঞান আর গণিতে এসব ক্যাচালের মীমাংসা কতোদূর কী করা আছে এই পর্যন্ত সেটা বের করেছি। আপনি চ্যালেন্জ ছুঁড়ে দেয়ায় ভালো হলো, সেই উদ্ধার করা জ্ঞানগুলো ঠিক ঠিক কাজে দিচ্ছে। আপনাকে খুঁচিয়ে লাভ হয়েছে তাহলে। আপনার এই সরাসরি কনফ্রন্টেশানে যাওয়া ভালো পাই। 🙂 আশা ছিলো কিন্তু নতুন কিছু শিখবো।
৪. না আমি লস্ট কেস বোঝাতে চাই নি। আমি বোঝাতে চেয়েছি, তারা বা তাদের অনেকে ‘ঠিক’ পথেই আছেন। যেগুলো মানুষের অধিকারে সমস্যা করে, সেগুলোতে যে জড়িত না, সে কলেমা পড়লো কি পড়লো না, সেটায় ঠিক বেঠিকের কী আছে বলুন? এমন মানুষকেও নিজের মতবিশ্বাসটা চাপানোর চেষ্টা একটা রাজনৈতিক অভিলাষে ( অন্যের উপর নিজের মত ছড়ানো, প্রয়োজন ব্যতিরেকে) পরিণত হয়, ঠিকবেঠিকের প্রশ্ন আর থাকে না, সেটাই বোঝাচ্ছিলাম। অর্থাৎ যতক্ষণ মুসলমানকে বোমা না ফোটাতে বলবেন, অন্যের উপর জোরাজুরি না করার জন্যে কোরান হাদিস ঘষামাজা করবেন, তাকে ‘ঠিকের’ জন্যে করা কাজ বলে মানা যায়। কিন্তু যে সেগুলোতে শামিল না, তাকেও যখন নিজের বিশ্বাসটা গছানোর চেষ্টা চালানো হয়, তখন ঠিকবেঠিকের যুদ্ধ আর রাজনৈতিক অভিলাষের মধ্যে পার্থক্যটা নির্দেশ করে দেয়াটার দরকার পড়ে।
@রূপম (ধ্রুব),
আপনার লেখার লিঙ্ক ধরে পড়ছি। পড়ে মন্তব্য করবো। ইত্যবসরে, ধন্যবাদ। কৌস্তভ আর আপনার, এবং বাকিদের আলোচনা চলতে থাকুক। সবাই মিলে ভাবি। (C)
@রূপম (ধ্রুব),
আপনার লিঙ্কের অসাধারন লেখাটা পড়লাম। ধর্ম ইস্যুটাকে ভিন্ন ভিন্ন দৃষ্টিকোণে দেখতে তো হবেই। একেক জনের গ্রহণ ক্ষমতা একেক রকম। এটা মেনে নেওয়া দরকার বলে মনে করি।
আমার মনে হয় আমাদের ভাবা উচিৎ কিভাবে সহজে ধর্মের অসারতার কথা সাধারন মানুষের কাছে পৌঁছানো যায়। কতটা কার্যকর ভাবে; আর কত সহজে। এটা যতক্ষন না সহজ বা গ্রহণযোগ্য ভাবে করা যাবে, আমাদের বৌদ্ধিক আলোচনার বৃত্ত ততক্ষণ ছোটই রয়ে যাবে। তবু যা হচ্ছে, মাত্র কদিন তা’ও তো হত না। এই বা কম কিসে।
@কাজী রহমান,
অবশ্যই কম না। এই বাকস্বাধীনতা চিরজীবী হোক। ভুলে যাওয়ার নয় যে কটা দিন আগেও, আমাদের জীবদ্দশাতেই আমরা দেখেছি কীভাবে এইসব নিয়ে বলার স্বাধীনতা রুদ্ধ ছিলো।
তবে এই যে তবু যা হচ্ছে, এটার গুণ বাড়াতে হলে পিয়ার রিভিউ দরকার। আমাদের পিয়ার তো সদালাপীরা নন। ওনারা ভিন্ন মহাজগতের বাসিন্দা। ওনাদের সাথে যোগাযোগ করা দুরূহ। আমাদের পিয়ার আমরাই। আর গুণ বাড়াতে বলা মানে আমরা বেগুণ, সেটা বলা নয়। বিজ্ঞানের জার্নালের ক্ষেত্রেই তো দেখুন একটা সুলিখিত পেপারেরও গুণ বাড়াতে বলা হয় পিয়ার রিভিউয়ের দ্বারা। সে জায়গায় ধর্মের ক্রিটিকের কিন্তু আবার পিয়ার রিভিউ একেবারে নাই বললেই চলে। আছে খালি পিঠ চাপড়ানি। এটা কিন্তু আখেরে ক্ষতি করবে। আমার মনে হয় না, ভুল ক্রটি ধরলে চক্ষু লজ্জার কোনো ব্যাপার আছে। আপনি যেমন সাদরে সমালোচনা গ্রহণ করলেন, করেন, আমার ধারণা মুক্তমনার অধিকাংশ লেখকই তা করবেন। কিন্তু সমালোচনাটা, ডিটেইলে তর্কটা তেমন আসেই না ধর্মের ক্রিটিকগুলোতে। আর তর্কের ডিটেইলে যাওয়ার চেষ্টাটাও জারি রাখা দরকার। কৌস্তুভ যেমন করলেন, ওনার যে ব্যাপারটা আমি খুবই পছন্দ করি। সরাসরি কনফ্রন্ট না করলে নতুন জ্ঞান কীভাবে তৈয়ার হবে বলেন। সেই একই বয়ানই তো খালি রিসাইকেল হতে থাকবে। আলোচনা সমালোচনা জারি থাক।
@রূপম (ধ্রুব),
কথাগুলো খুব পছন্দ হয়েছে। বিশেষ করে পিয়ের রিভিউয়ের ব্যাপারটা। কাউকে ব্যাক্তিগত আক্রমণ না করেও মন খুলে কিন্তু সমালোচনা অনেক করে করা যায়। আবার সমালোচনা ব্যাক্তিগত মনে না করাটাও জরুরী। অনেকে সময়ের অভাবে মন্তব্য পাল্টা মন্তব্যে ফাঁকি মারা গোছের মন্তব্য করেন। জলে নামবো চুল ভেজাবো না এমন করলে আর যাই হোক সামনে এগুনোর গতি খুব একটা ভালো হবে না।
মন খুলে মন্তব্য করুন। এ ব্লগের গুনগত মান, প্রমানের ভিত্তিতেই সবাইকে ধরে রাখতে হবে, থাম্বস-আপে নয়।
@রূপম (ধ্রুব),
(Y)
:-s
@আফরোজা আলম,
আরো চেনা জানা মেয়েরাও যেন একটু দাঁড়ি, মানে মাথা চুল্কাচুল্কি করে সেই রকমটা মনে রেখেন কিন্তু (C)
এখানেই আপনার সমস্যাটা হয়ে গেল। নারীকে বাইরে কাজ করে উপার্জন করতেই তো নিষেধ করা হয়েছে। সেক্ষেত্রে উপরোক্ত আয়াত তো ঠিকই আছে, অর্থাৎ নারীকে চিরকাল পুরুষদের উপার্জনের উপর নির্ভর করেই থাকতে হবে। আমি অনেক শিক্ষিতা মুমিনাদের সাথে আলাপ করে দেখেছি- তারা কিন্তু বলে স্বামী উপার্জন করে যদি খাওয়ায় তাহলে তারা আর উপার্জন করবে না, তখন স্বামী যদি ২/৩ টা বিয়েও করে তাতে তাদের কোন আপত্তি নেই।
এটার শানে নুযুল হলো- সাহাবীরা মোহাম্মদকে জিজ্ঞেস করেছিল- তারা দাসী বা স্ত্রীদের সাথে কিভাবে সঙ্গম করবে, সামনে দিয়ে নাকি পিছন দিয়ে? দ্বীনের নবী তাদেরকে তখন উক্ত নিদান দিয়েছিলেন, বলেছিলেন যেমন ইচ্ছা খুশী, হে হে , আসলেই তিনি দয়াল নবী, সাবাহীদের যৌন বৈচিত্রের চাহিদা তার বুঝতে দেরী হয় নি।
ইদানিং ইসলামী পন্ডিতরা বহু কসরত করে আয়শার বয়স ১৪ বানানোর নানা কায়দা আবিস্কার করেছে। তা করতে গিয়ে অনেকে ইসলাম ওনলি হয়ে সহি বুখারী ইহুদীদের লেখা বলে ফতোয়া দিচ্ছে।
তার মানে নাবালিকা বিয়েতে ইসলাম অনুমোদন দিয়েছে। তা না হলে – বিয়ে না করলে তো তাদেরকে তালাক দেয়ার বিষয় আসতো না। খোদ নবী নিজেও সেটা করে দেখিয়ে গেছেন। কিন্তু নব্য ইসলামী পন্ডিতরা বলছে অন্য কথা- নাবালিকা বিয়ে করা যাবে না। আমার তো মনে হয় আমরাই সহি মুসলিম যারা ইসলামকে সহি ভাবেই ব্যখ্যা করি। তথাকথিত ইসলামী পন্ডিতরা হলো ভন্ড। আপনার কি মত ?
@ভবঘুরে,
আপনার লেখা ইসলামে নারীর মর্যাদা একটা দারুণ রচনা। ওটাতে অনেক কিছুই ভাববার আছে।
আমার তো মনে হয় কোরান পড়ার আগে অজু পাকসাফ ইত্যাদির যে বিরাট অনুষ্ঠান করতে হয় সেই আলসেমিতে অনেকে কোরান ছুঁতেই ভয় পায়। পড়বে কখন?
হাদিস, নেয়ামুল কোরান, মোকসেদুল মোমেনিন ইত্যাদি টাইপ বইগুলো খুবই উত্তেজক আর অজু ছাড়াও অনেকে পড়ে।
যাই হোক, গোপনে, প্রকাশ্যে, দেখিয়ে, না দেখিয়ে, বিনা অজুতে, অজুতে একভাবে পড়লেই হোল। জানাটাই আসল কথা। শুনে শুনে আর কতকাল?
আপনার মন্তব্য দেখে বুঝলাম আপনার কম্পুর বাগকে বাঘে খেয়েছে। ভালো লাগলো (D)
কম কথায় তথ্য বহুল লেখা। (Y)
তার পরেও ইসলাম নারীকে মুক্তি দিয়েছে। স্বাধীনতা দিয়েছে। কি হাস্যকর কথা।
@আসরাফ,
হেহ হে সেইটাই তো কথা। রেফারেন্সের তো অভাব নাই, লেখাটা আবার তালগাছ টাইপ লম্বা যাতে না হয় সেই ভয়ে লিখিনি।