– আনন্দ।
আমি এই লেখায় আমার দুই কাছের মুক্তমনা বন্ধুর কথা বলব। ধর্মবাদী পরিবারের কোপানলে পড়ে তাদের উপর চলছে হুমকি, ধামকি, গালিগালাজ আর নির্যাতন। আমার নির্যাতিত সেই বন্ধুর নাম শাফাউল ইবনে মাসুদ (নিকনেম – ব্রাত্য সাজ)। ব্রাত্য -সাজ মুসলিম পরিবারে জন্ম নেয়া একজন মুক্তমনা। তার পরিবারের চোখে ছেলেটির অপরাধ হলো, সে প্রচলিত চিন্তাধারার বাইরে চিন্তা করে। বিনা প্রশ্নে কিছু মেনে নেয় না। সে সমাজের আর দশটা ছেলের মত আল্লাহর নাম করে নাফরমানি করে না, নিয়মিত নামাজ পড়ে না, আল্লাহর উপর সব ছেড়ে দিয়ে হা করে বসে থাকে না, কোরানের মধ্য সব সমাধান খুঁজে না। সে প্রশ্ন করে। সে উত্তর চায়। যখন পায় না, তখন হতাশ হয়। অন্যদিকে তাকে জোর করে ধর্মবিশ্বাসী বানাতে চায় তার বাবা-মা।
আর আমার আরেক বন্ধু রঞ্জন, সে হিন্দু পরিবারে জন্ম নেয়া একজন মুক্তমনা। এ লেখায় তার কথাও আসবে। সাজের ঘটনার কারণে তার জীবনও প্রায় বিপর্যস্ত করে তুলেছে সেই ধার্মিক পরিবার। রঞ্জন ছিল ব্রাত-সাজ এর প্রাইভেট টিউটর, সেটা ৫ বছর আগে। তার ফ্যমিলির অভিযোগ রঞ্জন তাকে বাস্তববাদী, যুক্তিবাদী বানিয়েছে, ইন্ধন দিয়েছে ধর্ম না মানতে, ইন্ধন দিয়েছে প্রেম করতে ইত্যাদি।
সাজের এক প্রেমিকা আছে রাজশাহীতে। ভাল ছাত্রী। ঢাকায় থেকে পড়তে চায়। কিন্তু তার পরিবার সেটা দেবে না। এর মধ্যে একদিন মেয়ে রাজশাহী থেকে চলে এল ঢাকাতে । আর তারপরই মেয়ের বাবার সন্দেহ হয় সাজই বোধ হয় ফুসলিয়ে তার মেয়েকে নিয়ে এসেছে ঢাকায়। পুলিশের মাধ্যমে তারা সাজকে ফোন করে। মেয়ের বাবা পুলিশের মাধ্যমে জিজ্ঞাসা করে যে সে তার মেয়েকে নিয়ে এসেছে কি না। সাজ বলে ‘আমাকে ফোন না দিয়ে মেয়েকেই বরং ফোন দিন শুনুন তার কাছে’।
পুলিশ মেয়েকে ফোন দেয়। মেয়ে বলে ‘আমি নিজেই এসেছি আমার বাবা ঢাকায় পড়াবে না, তাই জোর করে আসা’।
মেয়ের এই অকপট স্বীকারোক্তিতে পুলিশের সেই মুহুর্তে আর কিছু করনীয় থাকে নি। এই দিকে মেয়েটিও এর পরদিন ঢাকায় আইন ও শালিস কেন্দ্রের কাছে গিয়ে এ ব্যাপারে সাহায্য প্রার্থনা করে। তারা মেয়ের বাবাকে ফোন করে। তাদের মাধ্যমে একটা ফয়সলা গোছের কিছু হয় – মেয়ের বাবা মেয়ের আকুতি শুনে ঢাকায় মেয়েকে রেখে পড়াতে রাজী হয় শেষ পর্যন্ত।
কিন্তু ওদিকে ব্রাত্য সাজের পরিবার কোনভাবে ব্যাপারটা জেনে ফেলে। এরপর শুরু হয় সাজের উপর অত্যাচার। শুধু সাজের উপরই অত্যাচার নয়, শুরু হয় সাজের প্রেমিকা এবং তার বাবাকে হুমকি দেয়া। ফোনে বলা হয় যে কোন দিন মেয়েকে উঠিয়ে নেয়া হবে। অগত্যা তাদেরকেও আইন এবং শালিস কেন্দ্রের ঠিকানা আর সবক দেয়া হয়। এতে তারা ভয় পায়। এইবার এই মেয়েকে ফোন করে আবারো হুমকি দেয়, দুদিন পর যে, ‘তোমাকে আমরা কিছু করবো না, তুমি শুধু ‘রঞ্জন’ ঠিকানা বল’ ।
মেয়ে বললো ‘রঞ্জনের ঠিকানা কেন বলবো, আর কি জন্যই বা বলবো?’ তখন ওই পাশ থেকে ওর ব্রাত্য সাজ এর মা বললো ‘রঞ্জন আমার ছেলেকে পড়িয়েছে এবং আমার ছেলে নষ্ট করেছে, তার ঠিকানা দাও এবং তার বউয়ের ঠিকানা দাও, তা না দিলে তোমাকে তো উঠিয়ে আনবোই সাথে তাদের কেও খুঁজে পাবো।‘ মেয়ে তারপরেও ঠিকানা দেয় নি, বরং বলে ‘আমাকে আর ফোনে বার বার ডিস্টার্ব করবেন না, করলে এই হুমকি আইন ও শালিস’ কেন্দ্রে বলে দিব’। তখন ব্রাত্য সাজ এর মা জবাবে বলে ‘আমাদের ছেলে যেহেতু নষ্ট হয়েছে, ইসলামের বিপথে গেছে তাই তাকে মেরে হলেও তোমাদের ঠিকানা সাজ কাছ থেকে আদায় করে নিবো, তখন দেখবো মেয়ে তুমি কত বড় বড় কথা বলতে পারিস’।
সাজের পরিবারের বড় আক্রোশ এখন রঞ্জনের উপরেই। ঘটনা মেয়ের দিক থেকে সরে এসে এইবার আসলো তাকে ‘কে’ ‘যুক্তিবাদী’ বানিয়েছে, নিশ্চই রঞ্জন, কারন সে তার গৃহ শিক্ষক ছিল এবং সেও যুক্তিবাদী, এবং ব্রাত্য সাজ তার সাথে চলাফেরা করা তার কথা শুনে। তার চেয়েও বড় কথা হল, রঞ্জন হিন্দু পরিবারে জন্মগ্রহণ করলেও বিয়ে করেছে একটি মুসলিম ঘরে জন্ম নেয়া মেয়েকে। যদিও তারা দুজনেই ধর্মহীন নাস্তিক, এবং বিয়ে করেছে ১৮৭২ সালের ব্রাহ্ম বিবাহ বিধি এক্ট অনুযায়ী ( এই এক্ট অনুযায়ী ভিন্ন ধর্মালম্বী এবং ধর্মে অবিশ্বাসীদের পরস্পরের মধ্যেকার সম্পর্কটি ‘দ্বৈত-বিবাহ’ আইনের মাধ্যমে রেজিষ্ট্রিকৃত হয় এবং তা বাঙলাদেশ ব্রাহ্ম সমাজে আইনগতভাবে নিয়োগকৃত হয়)। ব্রাত্যের অপরাধ সে তাদের বিয়েতে একজন সাক্ষী ছিল। এই হলো তাদের অভিযোগ। এখন লাগবে ‘রঞ্জন’কে। তাকে ধরে নিয়ে আসতে তার ঠিকানা জানতে যদি ব্রাত্য সাজ কে মারতেই হয় তাও করবে।
শুরু হলো রঞ্জনকে খোঁজা এবং ব্রাত্য-সাজ এর উপর শারীরিক নির্যাতন। নির্যাতন করছে সাজের পরিবার এবং সেই নির্যতনে অংশ নিয়েছে তার কাছের আত্মীয় স্বজন। অমানবিক শারীরিক নির্যাতন চলছে – এই খবর আসতে থাকে বিভিন্ন সূত্রে আমাদের কাছে । সাজের উপর তো নির্যাতন আছেই, সেই সাথে চলছে রঞ্জনের ফোনে অযস্র ভাষায় গালা-গালি, সেটার কিয়দ অংশ আমরা রেকর্ড করেছি । তার পরদিন ব্রাত্য-সাজ যে বাসায় তাকে আটকে রাখেছে সেই বাসার টিএন্ডটি নাম্বার থেকে ফোন যায় এক ফেসবুক ফ্রেন্ড এর কাছে যে তাকে অনেক অনেক শারীরিক অত্যাচার করা হচ্ছে এবং সেই ফ্রেন্ড বলল যে নির্যাতনের চোটে ব্রাত্য সাজ ঠিক মত কথাই বলতে পারছে না। তাকে মেরে নাকি হাত ভেঙ্গে দেয়া হয়েছে। ব্রাত্য সাজ এর মা সেই মেয়েকে ফোন করে আবারো বলেছিল রঞ্জন ও তার বউ এর ঠিকানা দিতে এবং দরকার হলে বিপথগামী ছেলেকে মেরে হলেও ঠিকানা বের করবে।
আমার আরেক বন্ধু নীল ধর্মকারী ব্লগে এ নিয়ে একটি পোস্ট দিয়েছে, সেটি আছে এখানে। নীল লিখেছে –
ইসলাম ধর্মমতে, ইসলাম ত্যাগকারীদের হত্যা করা উচিত। একজন প্রকৃত ইসলামপ্রেমিক হত্যাই করে। এখন প্রশ্ন জাগে, সাজ-এর পরিবার তাকে নিয়ন্ত্রণ করতে না পারলে হত্যা করবে? একজন মানুষের মৃত্যু হতে পারে দু’ভাবে: ১. শারীরিকভাবে, ২. মানসিকভাবে। সাজ-এর পরিবার সাজকে শারীরিকভাবে হত্যা না করলেও তাকে মানসিকভাবে ঠিকই হত্যা করে চলেছে। এভাবে চলতে থাকলে তার মানসিক মৃত্যু অনিবার্য।
মানুষ কি আসলেই স্বাধীন? ধর্ম আর কতোদিন মানুষকে পরাধীন করে রাখবে?
এব্যাপারে আমাদের করণীয় কী হতে পারে – এ ব্যাপারে মুক্তমনার কাছে থেকে সহৃদয় সাহায্য এবং সহযোগিতা কামনা করা হচ্ছে।
– আনন্দ।
পরিবার জেটা করে ভালোর জন্যই করে। বেশি বোঝা ভাল না
@anik,
অনার কিলিংএর কথা শুনেছেন আশা করি। তারাও কিন্তু পরিবারের ভালর জন্যই করে।
আমাদের আসলেই বেশি বোঝা উচিত নয়, তাই না??
এই ক্ষেত্রে যা করার সাজকেই করতে হবে। মুক্তমনা বা অন্যান্য বন্ধুরা সে ক্ষেত্রে সাহায্য কিংবা পরামর্শ দিতে পারে। সে যেহেতু ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র সেক্ষেত্রে সে হলে থেকে পড়াশুনা করতে পারে, টিউশনি করে নিজের খরচ বহন করতে পারে। কঠিন পথ সে বিষয়ে সন্দেহ নেই, কিন্তু সে কারণেই তো সে এই পথ বেছে নিয়েছে। না হলে তো সে বাবা/মার দেওয়া পথই বেছে নিতে পারতো। যদি তার আত্মীয় স্বজন কোন প্রকার বল প্রয়োগ করে সেক্ষেত্রে আইনের আশ্রয় নিতে হবে। হলে থেকে পড়ার জন্য প্রাথমিক তিন/ছয় মাসের খরচ বহনের জন্য মুক্তমনার পক্ষ থেকে একটি ফান্ড করা যেতে পারে। আমার ধারণা অনেকেই সাজের জন্যে এগিয়ে আসতে আগ্রহী। কিন্তু এর পরে সাজকেই তার নিজের জীবনের দায়িত্ব নিতে হবে। এই আমার প্রাথমিক চিন্তা।
@স্বাধীন, ফাণ্ডের চিন্তাটা খারাপ না। কিন্তু আর কেউ কিছু বলছেন না কেন!
@স্বাধীন,
ফান্ড করার ব্যাপারে একমত। এ জন্যে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা অবিলম্বে গ্রহন করা উচিত বলে মনে করি। এবং এ ফান্ডে আগ্রহীরা কিভাবে টাকা পৌঁছাতে পারবে সেটা একটু বলে দিলে ভাল হয়।
সাজ তাদের পরিবারে অবস্থা জানে বলেই সে HSC এর পর থেকে টিউশনি করতো এবং আজ যে সে এই অবস্থায় এসেছে, টিউশনি টাকা দিয়ে সে একাধারে ঢাকা কলেজে ম্যানেজমেন্টে ও ঢাকা ভার্সিটিতে চারু কলায় পড়তো। কিন্তু চারু কলার ব্যয় বহন তার পক্ষে সম্বভ না বলে পড়ে নাট্যকলায় যায়। আজকে তার যত বই কেনা সবই তার টিউশনির টাকা দিয়ে। রঞ্জন তার ছোট বেলার শিক্ষক, এবং এই বাস্তব জীবনে তাকে একজন সাহায্যকারীও বটে। এর সবকিছুর সমস্যা হচ্ছে তার মামা বাড়ির লোকেরা, কারন তারা সাজ এর পরিবারে আগে থেকেই সাপোর্ট দিত, সেই সুবাদে তারা সাজকে শাসন করেছে। কিন্তু সাজ তো অনেক আগে থেকেই সেই মামা বাড়ির পরিবারকে প্রত্যাখান করেছিল এই কারনে যে তাকে জোড় জবস্তি নামাজ-কালাম করানোর জন্য। সাজ আজকে বেড় হয়ে আসলে কি আর কোন দিন তার সেই তথাকথিত মামা বাড়ির মুখাপেক্ষি হবে?????
@আনন্দ,
কিছুটা বুঝা যাচ্ছে সমস্যার মূলটা কোথায়। আমার মতে সমস্যার মূলে হচ্ছে সাজের পরিবারের তার মামার বাড়ির উপর নির্ভরশীলতা। সাজ হয়তো নির্ভরশীল নয় কিন্তু যে কোন কারণেই হোক সাজের মা এবং তার পরিবার নির্ভরশীল। এখানে হয়তো আরো অনেক কিছু আছে যা আমরা জানতে পারছি না। এটা অবাক করাই যে সাজের মতো একজন বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ুয়া ছাত্রকে কেউ চাইলেই আটকে রাখতে পারে না। আজকাল দেশে মেয়েদেরকেও আটকে রাখা সম্ভব না, সেখানে একজন ছেলেকে জোর করে এক বছর আটকে রাখবে, এবং সেটা সাজ হতে দিবে, এই হিসেবটা মেলানো যাচ্ছে না। আমরা দূরে বসে ঘটনা বিশ্লেষণ করতে পারবো না। আপনার যারা কাছাকাছি আছেন তারা আমাদের থেকে বেশি জানবেন। যা হোক সব না জেনে আমার মন্তব্য করাও ঠিক হবে না। যদি কোন ভাবে সাহায্যে আসতে পারি অবশ্যই বলবেন। আর সাজ এই চরম সঙ্কট কাটিয়ে উঠুক এইটা কামনা করি।
আমার মনে হয় সাজের পক্ষ থেকে কাউকে তার সাহায্য ও বর্তমান বন্দী দশার মুক্তির জন্য আইনের আশ্রয় নেয়া উচিত। দেশের প্রচলিত আইন এ ব্যাপারে কী বলে?
@তামান্না ঝুমু,
বর্তমানে সাজকে যদি বন্দী করে রাখা হয়ে থাকে সে ক্ষেত্রে সবার শুরুর কাজ হবে পুলিশের সাহায্যে অথবা মানবাধিকার কর্মীদের সাহয্যে তাকে মুক্ত করে আনা। এই ব্যাপারে সাজের বন্ধুদেরকে অগ্রণী ভুমিকা পালনের জন্য অনুরোধ রাখছি। তারপর তার পুণর্বাসনের ব্যাপারে নীচের মন্তব্যে কিছু বলেছি।
কৌশলগত কারণে সাজের নামায পড়া, রোযা রাখা শুরু করার পরামর্শের একটু বিরোধিতা করছি। কপটতা কখনোই শুভ ফল বয়ে আনেনা।
ঘটনা পড়ে মনে হচ্ছে, অন্য ধর্মের সাথে প্রেম করাটা ( ভবিষ্যতে অন্য ধর্মের ছেলের বউ আসতে পারে—এর পূর্ব সংকেত) বাবা মা ভালো চোখে দেখছেন না। তাই তারা আগেই হুমকিধামকি দিয়ে ছেলের মত ফেরানোর চেষ্টা করছেন। এব্যাপারে সাজের ভূমিকাই সমস্যা সমাধান করতে পারে–তবে তা যেনো নীতিহীন পথে না হয়। অন্য কোনো কারণও থাকতে পারে বলে মনে হচ্ছে।
এমনিতেই নাস্তিকদের চরিত্র নিয়ে নানা কথা শুনতে হয়— ‘নাস্তিক মানেই উচ্ছৃংখল লাফাঙ্গা ‘ — এই ব্যাপারটা মিথ্যে প্রমাণ করতে অন্ততঃ বাংলাদেশে নীতিগতভাবে আমরা বাধ্য বলে মনে করি।
@মৌনতা,
আমারও তাই মনে হয়।
@মাহবুব সাঈদ মামুন,
সাজ যদি নিজেকে অবস্থা বুঝে ব্যবস্থার মাধ্যমে সেভ করতে পারে তাহলে, তাকে এত সমস্যায় পরতে হতো না। সে যেহেতু পূর্বে একটু জেদের মাধ্যমে সব কিছু হাসিল করতে পেরেছে, তাই মনে করেছে এবারো পারবে, কিন্তু বিধিবাম।
আমি এই ব্যাপারে যে মতামত দেব তা অনেকের ভাল লাগবে না। তবুও অন্যদিকটা দেখা উচিৎ।
[১] ভারত বা বাংলাদেশের উৎপাদন কাঠামোতে এখনো শিল্প বিপ্লব আসে নি-ফলে মানুষ এখনো অনেক সমাজ নির্ভর। সমাজ নির্ভর মানুষ থেকে নিউক্লিয়ার মানুষ আসতে এখনো বেশ কিছু সময় লাগবে
[২] ফলে বাবা-মায়েদের “সারভাইভাল স্ট্রাটেজি” বা নিরাপত্তা মধ্যে অনেকটা জায়গা জুরে আছে ” নিজেদের স্যোশাল ইউটিলিটি” ভ্যালু। তাদের ছেলে মেয়েরা পরিচিত ছকের মধ্যে না থাকলে-অসধর্ম বিবাহ, গে ইত্যাদি হলে-তাদের স্যোশাল ভ্যালু কমে যায়। স্যোশাল সাপোর্ট সিস্টেম তাদের মধ্যে যেহেতু গুরুত্বপূর্ন সারভাইভাল টুল-তাদের সিদ্ধান্তে স্যোশাল ইউটিলিটি কেন্দ্রিক সিদ্ধান্ত প্রতিভাত। যা আমাদের দৃষ্টিতে অমানবিক-কিন্ত সারভাইভালের দৃষ্টিতে না। সারভাইভালের জন্যে অনেক কিছু অমানবিক প্রথা চলে আসছে-এগুলো তাদেরই একটি।
[৩] এগুলি সমাজ বিবর্তনের সাথে সাথে চলে যাবে। আস্তে আস্তে শিল্প যত বাড়বে, মানুষ যত নিউক্লিয়ার ফ্যামিলি কেন্দ্রিক হবে বা বাধ্য হবে-তত সামাজিক ইউটিলিটির দরকার হবে না। সন্তানেরাও সেক্ষেত্রে অনেক বেশী অর্থনৈতিক স্বাধীনতা ভোগ করবে-যেহেতু তারাও পরাশোনা এবং চাকরী একই সাথে করবে বিদেশের মতন ।
সমাজ এবং ধর্মকে বিচ্ছিন্ন কোন ঘটনা হিসাবে দেখা উচিৎ না।
@বিপ্লব পাল,
একমত, তবে সাথে সাথে আবেগের ব্যাপারটাও মনে হয় আমাদের অঞ্চলে ভালই আছে।
ক্ষেত্র বিশেষে আবেগের ব্যাপারটা উভয়দিকেই ধাবিত হতে পারে। অধিক সন্তান স্নেহে পিতামাতা অনেক সময় সন্তানের নানান অন্যায় দাবী মেনে নেন, আবার কখনো বা পিতামাতা সন্তানের ব্যাক্তি স্বাধীনতায় এই আবেগের দাবীতে রূঢ়ভাবে হস্তক্ষেপ করাকে নিজের ন্যায্য অধিকার বলে মনে করেন।
@বিপ্লব পাল,
একমত, কিন্তু তারপরেও এইসব অমানবিক প্রথাগুলোর সাথে কম্প্রোমাইজ করে চলতে থাকলে সমাজের সারভাইভাল স্ট্রাটেজীগুলোর পরিবর্তন কোনদিনই সম্ভব নয় বা হলেও তা হবে সুদুর পরাহত। সিন্ধান্ত যখন এই হয় যে প্রথাগুলো অমানবিক তখন যতটুকু সম্ভব তা সমবেতভাবে প্রতিহত করাটা জরুরী।
সাজের উচিত হবে তাকিয়া এবং কিতমান ব্যবহার করা–অবশ্য বিপরীত ভাবে।
মানে;
সাজ পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ পড়া আরম্ভ করুক। নফল রোজা রাখুক, প্রত্যেক ভোরে কোরান তেলাওয়াত আরম্ভ করে দিক। মালউনদের গালিগালাজ দেওয়া শুরু করুক–তাদেরকে হত্যা অথবা বাংলাদেশ থেকে ঘাড় ধরে বের করে দেবার কথা বলুক।
দেখবেন তার পিতামাতার, মৌলভী মাওলানারা তার প্রতি কত খুশী হবেন। দেখবেন কত মিলাদ মাহফিল, শোকরানা নামাজ আর মিষ্টি বিতরন করা হবে—আহা, ছেলের মতিগতি ফিরে এসেছে–আল্লাহ্ পাক আমাদের মাফ করে দেন–ছেলে বিপথে গেছিল, এখন আল্লার রাহে চলে এসেছে।
তারপর বিশ্ববিদ্যালয় শেষ হলে–নিজের পায়ে দাঁড়াবার পর সাজের উচিত হবে আমাদের মত শানিত তরবারি দিয়ে ইসলামকে আঘাত করা।
এই ভাবেই সাজকে কৌশলের সাথে অগ্রসর হতে হবে। এই মূহূর্তে তার উচিত হবে নবীজির আদর্শ পালন করা।
@আবুল কাশেম,
আপাতত আপনার এই প্রেসক্রিপশনটা পছন্দ হচ্ছে। নিরাপত্তার খাতিরে ইমেইলের পক্ষপাতি আমি।
@কাজী রহমান,
আমার সাথে যোগাযোগ করুন:
[email protected]
অথবা
[email protected]
@আবুল কাশেম,
ঠিক আছে। ধন্যবাদ।
@আবুল কাশেম,
আপনার প্রস্তাবটি এক্ষেত্রে কার্যকর ভূমিকা পালন করবে। সাজকে এই প্রস্তাবটা পৌছে দেওয়া দরকার।
লেখক অথবা রঞ্জন দা, উভয়কেই যোগাযোগ করার জন্য অনুরোধ জানাচ্ছি। আমি নিজেও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে আছি। আমার ইমেইলে ইমেইলে মেইল করলে বাকী যোগাযোগ আমি নিজেই করতে পারবো। ইচ্ছে করেই এখানে মোবাইল নাম্বার দিচ্ছি না। আশা করি সরাসরি কথা হবে।
@নিঃসঙ্গ বায়স,
এই ঠিকনায় আমাকে মেইল করতে পারেন [email protected] এখানে আপনার ফোন নম্বর দিলে যোগাযোগ করা হবে আপনার সাথে।
বাংলাদেশে ব্রাহ্ম সমাজ আছে জানা ছিল না।
@নৃপেন্দ্র সরকার,
হ্যাঁ আছে নৃপেন্দ্র দা। তবে তাঁরা এখন হিন্দুদের মিশে গেছেন পুরোপুরি, স্বতন্ত্র পরিচয় আর নেই বলতে গেলে। আমাদের ওখানে একটা ব্রাহ্ম মন্দির আছে। আমি সেখানে কয়েকবার গিয়েছিলাম, একটু বোঝার জন্য। কিন্তু সেখানে কীর্তন ছাড়া আর কিছুই হয় না।
এটাকে স্পেশাল ম্যারেজ অ্যাক্ট-১৮৭২ বলে।
ব্রিটিশ পিরিয়ডে এই আইনটি কেন করা হয়েছিল তা বোঝাই যায়। ব্রাহ্মরা হয় হিন্দু থেকে অথবা অন্য ধর্ম থেকে কনভার্ট হয়েছিল। তাই তাদের জন্য বিবাহযোগ্য পাত্র-পাত্রীর সংকট ছিল। এই সংকট দূর করার জন্য এই আইনে ভিন্ন ধর্মাবলম্বীর সাথে বিয়ের বিধান রাখা হয়েছিল। যা হিন্দু প্রথাগত-আইনে নেই।
এ যুগে নিরীশ্বরবাদী/যুক্তিবাদী ছেলেমেয়েদের জন্য এই স্পেশাল ম্যারেজ অ্যাক্টই সম্বল। এই আইনে ঈশ্বর/আল্লাহ কাউকে অছিলা ধরে বিয়ে করতে হয় না। পাত্র-পাত্রী নিজেদের নিরীশ্বরবাদী ঘোষণা দিয়ে বিয়ে করতে পারে।
@নৃপেন্দ্র সরকার,
নৃপেনদা, আমি যতদূর জানি, ১৮৭২ সালে ব্রাহ্ম সমাজের মধ্যকার বিয়ের জন্য স্পেশাল ম্যারেজ অ্যাক্ট নামে একটা আইন হয়েছিল ব্রিটিশ ভারতে। বাংলাদেশে সেই আইন এখনও কার্যকর আছে। আমার পরিচিত একজন (জন্মসূত্রে মুসলিম) বিয়ে করেছে একজন জন্মসুত্রে হিন্দু মেয়েকে এখানেই।
ঢাকায় ব্রাহ্ম সমাজের একটা অফিস আছে বোধ হয় পাটুয়াটুলিতে। প্রাণেশ সোমাদ্দার নামে এক বয়োবৃদ্ধ ব্যক্তি এই বিয়ে পরিচালনা করেন। যতদূর জানি, এখানে বর-কনের ধর্ম উল্লেখই করতে হয় না। অর্থাৎ হিন্দু মুসলিম পরিচয়ে বিয়ে করতে হয় না,. কারো কোন ধর্ম নেই ধরে নেয়া হয়। স্পেশাল ম্যারেজ অ্যাক্ট-এর একটা লিঙ্ক ছিলো আমার কাছে (এখন দেখছি কাজ করেছে না লিঙ্কটা) :
http://bdlaws.gov.bd/print_sections_all.php?id=25
@অভিজিৎ,
স্পেশাল ম্যারেজ অ্যাক্ট ১৮৭২ আইন নির্ভর বিয়ে আর কোথায় কোথায় হতে পারে তা মুক্ত মনাদের জানা থাকলে মনে হয় ভালো হত। সোমাদ্দার বাবুর নিরাপত্তা নিয়ে এখন ভাবনা হচ্ছে। ম্যাজিশিয়ান জুয়েল আইচও ব্রাহ্ম সমাজের সাথে সম্পর্কিত বলে জানি। ওর সাহায্য নেওয়া যেতে পারে। এই আইন উল্লেখ করে যে কোন ম্যাজিস্ট্রেট চেম্বারে এফিডেভিটের মাধ্যমেও মনে হয় এটি হতে পারে। কেউ সঠিক করে জানলে বা জানালে ভালো লাগত।
ঘটনা খুবই অবিশ্বাস্য লাগল।
বাংগালী একজন মহিলার নিজের ছেলেকে ধর্মের খাতিরে মেরে ফেলার হুমকি মনে হয় এই প্রথম শুনলাম।
ধর্ম নিয়ে বাড়াবাড়ি অনেক শুনেছি, তবে কোন ধাড়ি ছেলেকে আটকে নিজ পরিবার টর্চার করছে এমন গল্প কোনদিন শুনিনি।
পেছনে অন্য কাহিনী থাকতে পারে বলেই সন্দেহ হয়।
@আদিল মাহমুদ, ধর্মোন্মাদদের আন্ডারএস্টিমেট কইরেন না। অন্য ধর্মের ছেলের সাথে পালিয়ে যাওয়ার জন্য বাপ-ভাইরা যদি কন্যা/বোনকে মেরে ফেলতে পারে, তাহলে মমতাময়ী মা কি দোষ করল?
@পৃথিবী,
সেজন্যই কাহিনী বিসদৃশ ঠেকেছে।
এসব কেসে মেয়ের ওপর নির্যাতন হয়। তার চরম রূপ হল অনার কিলিং। আরব দেশেও অনার কিলিং এর স্বীকার হয় মেয়ে, ছেলে নয়।
তবে ছেলের ওপর মা নির্যাতন চালাচ্ছে, বিশেষ করে বাংলাদেশে তা হজম করা খুবই শক্ত।
আমাদের দেশেও কেউ বিধর্মী বিয়ে করলে মেয়ে হলে এক রকম ট্রিটমেন্ট যা অনেক বেশী কঠোর, ছেলে হলে সেই ট্রিটমেন্ট অনেক হালকা হয়। এটাই সাধারন ট্রেন্ড।
@আদিল মাহমুদ,
একমত। কত ছেলেই তো নামাজ পড়ে না। এজন্য এত অত্যাচার করার কথা নয়। বিশেষ করে মায়ের। বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ুয়া একটা ছেলেকে আটকিয়ে রাখা কঠিন। এদিক থেকে সাজের প্রেমিকা অনেক বেশি দুঃসাহসী।
আর খুনুসটা বোধহয় তথাকথিত মালাউন রঞ্জনের প্রতি। কারণ সাজের প্রেমিকার কাছে হুমকি দিয়ে রঞ্জনের ঠিকানা চেয়েছে বার বার। রঞ্জন ইতোমধ্যে একটি মুসলিম (!) মেয়ের ধর্ম নষ্ট করেছে।
আর এসব ঘটনা সামাল দেয়ার জন্য প্রয়োজন সাংগঠনিক শক্তির।
@গীতা দাস,
একশভাগ একমত!
@গীতা দাস,
দিদি, এই মালাউন রা কি সব জায়গায় ভেজাল করে? সাজ যে গত কয়েক বছর ধরে হাত খরচের টাকা বাসা থেকে নেয় না, সে যে বই পড়া শিখেছে, তার জন্য এই রঞ্জন মালাউনের অবদান। এই মালাউন তাকে হেল্প করলেও যুক্তিবাদী হতে সহজে কেউ কাউকে শেখাতে পারে না, বুঝতে হয় নিজেকে।
সাজ এর যে সমস্যা ছিল সে তার ফ্যমিলিকে জানে ঠিকই, কিন্তু গুরুত্ব দিত না, মামাতো, খালাতো ভাইদের এভোয়েড করে চলতো যখন থেকে সে যুক্তিবাদী চিন্তা করতে শিখেছে। সেই এভোয়েডের ঝাল এইবার তারা ঝাড়তেছে, এই হলো কারন একটা। সাথে রঞ্জন মালাউনটার জন্য সাজ তাদেরকে এভোয়েড করেছে, তাই এই মালাউনটারেও ধর। এরেই আগে ব্যবস্থা করি। এই হচ্ছে আসল কথা।
আমার মনে হয় আশেপাশের সবার কথা চিন্তা করে সাজের উচিত পরিবারের সাথে আপোষ করা। অত্যাচারটা যদি শুধু সাজের উপরই হত, তাহলে তিনি রেডিক্যাল কোন পদক্ষেপ নিতে পারতেন, কিন্তু অন্যরা যেখানে হুমধামকি খাচ্ছেন(তাও আওয়ামী লীগের সাথে সম্পৃক্ত লোকজনের কাছ থেকে) সেখানে সাজের সামনে আপোষ করা ছাড়া আর কোন পথ নেই বলেই মনে করি। বিশ্ববিদ্যালয় জীবন খুব একটা দীর্ঘ না, কোনমতে পড়াশোনার পাট চুকিয়ে ঘর থেকে বেড়িয়ে যেতে পারলেই হল(বিশেষ করে যদি পরিবারকে কোনমতে বুঝিয়ে বিদেশ চলে যাওয়া যায়, তবে সেটা মনে হয় না সম্ভব হবে)।
আমার দৃঢ় বিশ্বাস, সাজ পুর্নোদ্যমে নামায-কালাম শুরু করে দিলে তাঁর পরিবার শান্ত হয়ে পড়বে, তখন তাঁর বান্ধবী আর রঞ্জনদার উপর হুমকি-ধামকীও কমে আবে। ধর্মকারীর পোষ্টে দেখলাম ব্রাত্য সাজ ঢাবির ৩য় বর্ষের ছাত্র, কোনমতে একটা বছর ধর্মকর্ম করে পরিবারকে খুশি রাখতে পারলেই হয়। নারী ও শিশুদের জন্য সিভিল লিবার্টিজ সংগঠন অনেক আছে, কিন্তু ধর্মত্যাগীদের সহায়তা করার মত সংগঠন আছে বলে তো জানা নেই।
সাজের পরিবার , লীগের সাথে খুব ভালোভাবেই সম্পৃক্ত… আর এই রাজনীতির দাপট ই তারা দেখাচ্ছে মূলত । সবচেয়ে বড় কথা আমাদের উপর দিয়ে এ ঝড় টার প্রয়োজন ছিল কেননা আমরা মানুষগুলো রে চিনলাম । অনেক কেই দেখি ফেসবুক , ব্লকে কথার তুবড়ি ছোটাতে আর এখন তাদের কেও তো দেখলাম । ও আর আনন্দ দার আর্টিকেলটাই আমাকে নিয়ে কথাগুলোর একটু বিকৃত আছে সেটা সমস্যা নই অবশ্য …
মূলত সাজের পরিবারে এখন শুধু নাস্তিকতা নিয়েই সমস্যাটা হচ্ছে । আমাকে নাকি দুটুকরো করা হবে, এবং বাংলার খাটি গালি গুলোও ইতিমধ্যে হজম করে যেহেতু ফেলেছি তাই এর শেষ দেখার প্রতিহ্মাতেও আছি . . . অবশেষে w8 n see. . .
@rawyan13,
ধর্মউন্মাদদের কাছ থেকে এর থেকে ভাল আর কিইবা আশা করা যায়? তবে আপনি ভেঙে পড়বেন না আশা করি।
সাজের এই মুহূর্তে সবচেয়ে বেশি যা প্রয়োজন, তা হচ্ছে মেন্টাল সার্পোট। আর সেটা আপনি এবং তার ফ্রেন্ডদের দিয়ে যেতে হবে গোপনে। যেকোনো ভাবে তার সাথে যোগাযোগ অক্ষুণ্ন রাখুন।
@rawyan13,
সাজ আমার অত্যন্ত ভাল বন্ধু। ওর খবর শোনার পর আমি মোবাইলে চেষ্টা করেছিলাম। পরে অন্যান্যদের থেকে খবর সংগ্রহের চেষ্টা করেছি। তোমাকে শুধু এখন এটাই বলব, নিজের উপর আস্থা হারায়ো না। তোমার মানসিক শক্তি অনেক বেশি, ধৈর্যের সাথে নিজের সাহস ধরে রাখো।
এটাই বাস্তবতা। আজ হোক কাল হোক একদিন এদের স্বরূপ সামনে আসতোই।
ওর সাথে ফেসবুকেই আমার পরিচয়, এবং আমাদের বিভিন্ন কর্মকান্ডে ছেলেটা সব সময়ই সমর্থন দিয়েছে।
ঘটনা যেইদিন ঘটছে সেইদিনই ব্রাত্য আমারে একটা টিএন্ডটি নম্বর থেকে ফোন করছিল, নম্বর চিনি নাই দেখে ফোনটা ধরি নাই। পরে শুনলাম এই কাহিনী।
এরপরে ওর মোবাইলে লাগাতার চেষ্টা করেছি, কিন্তু ফোন বন্ধ।
এরপরে ব্রাত্য ওরে যেখানে আটকিয়ে রেখেছে সেখান থেকে ফোন করেছিল, কথা হয়েছে। আমাদের পক্ষে যতদুর করা সম্ভব, সবই করবো। কিন্তু শান্তিপুর্নভাবে ব্যাপারটা সমাধান করা যায় কিনা সেটার চেষ্টা আগে করতে হবে। ব্রাত্যকে সেটাই বুঝালাম।
কিন্তু ব্রাত্য নীতি আদর্শের ক্ষেত্রে আপোষ করার ছেলে না।
তারপরেও ওকে আমি বলেছি পরিবার যা বলে আপাতত মেনে নাও। নিজের পায়ে দাড়ানোর আগে পর্যন্ত আমাদের সবারই পরিবারের বিভিন্ন অনৈতিক কর্মকান্ড মেনে নিতে হয়। আমাদের দেশের অর্থনৈতিক অবস্থাও এমন না যে একটা কিশোর/তরুন ছেলে বাসা থেকে বের হয়ে পড়ালেখা সহ সব কিছুর খরচ বহন করতে পারবে।
আমি মনে করি পড়ালেখাটা যেভাবেই হোক চালিয়ে নিতে হবে। নিজের পায়ে দাড়াতে পারলে তখন আর কেউ কিছু বলতে পারবে না।
আর অবস্থা আস্তে আস্তে পরিবর্তনের চেষ্টা করতে হবে। হুট করে কিছু করতে গেলে সেটার প্রতিক্রিয়া সামলানোর মত সামর্থ্যটুকু আমাদের থাকতে হবে অবশ্যই।
@আসিফ মহিউদ্দীন, একমত। (Y)
@আসিফ মহিউদ্দীন,
আসিফ ভাই। যোগাযোগ তাহলে আপনার সাথে হয়েছে? এই ধরনের কেসে সাধারণত পরিবার নিজ সদস্যের বিরুদ্ধেই ব্যবস্থা নেয়, কিন্তু পরিবারের বাইরের কারো বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহনে এতোটা উন্মুখ হয় না, যদি না পরিবারটির “পেশী শক্তি প্রদর্শন” করার মত যথেষ্ট উপকরণ থাকে। ব্রাত্য এর পরিবারের মনে হচ্ছে সে রকম কোনো প্রভাব রয়েছে এবং সেটার ব্যবহারেও তারা বেশ উৎসাহী। আর কি ধরনের ব্যবস্থা গ্রহনের চেষ্টা করছেন পারলে একটু জানাবেন। যতটুকু সম্ভব সহযোগিতা করতে পারলে ভালো লাগবে।
কি ভয়ানক! অদ্ভুত।
আনন্দ,
আপনি কী ব্রাত্য সাজ এর পরিবারের ঠিকানা, ফোন নাম্বার- এগুলো জোগার করে একটু পাঠাতে পারবেন আমাকে? আর তার পরিবারের কী কোনো পলিটিকাল ব্যাকগ্রাউন্ড আছে? আমার কেনো জানি মনে হচ্ছে- আছে। তবুও শিওর হতে চাচ্ছি। একটু ডিটেইলস ইনফর্মেশন দরকার। আমি নিজের মত একটু চেষ্টা করে দেখতে পারি কিছু করা সম্ভব কিনা!?
[email protected]
[email protected]
আর বিষয়টি সকলকে অবগত করার জন্য ধন্যবাদ।
@নিঃসঙ্গ বায়স,
যেহেতু আমরা কয়েকজন ফ্রেন্ড মিলে কেউ একজন সাজ এর কথা অনুযায়ী সেই বাসায় যাওয়ার মনস্ত করে আমাদের মধ্যে থেকে একজন গিয়েছে এবং আসল সিচুয়েশন দেখে এসেছে যে ওরা আসলেই রঞ্জন এর উপর প্রচন্ড খেপে আছে। তাই আপাতত আমরা সিন্ধান্ত নিয়েছি কিছু বলবো না, যাতে তাদের পরিবারের ব্যপার ওরাই মিটিয়ে ফেলে। যদি রঞ্জন কে আরো হুমকি দেয়, তাহলে আমরা কিছু করার স্টেপ নিবো।
@আনন্দ,
যদি রঞ্জন কে আরো হুমকি দেয়, তাহলে আমরা কিছু করার স্টেপ নিবো।
@আনন্দ,
আগের মন্তব্য ভুলভাবে চলে এসেছে।
রঞ্জনদা’র সঙ্গে ঐদিন রাতে বেশ কিছু কথা হয়েছে আমার। আশা করি আপনি তা জেনেছেন।
ব্রাত্যের ব্যাপারে আমার এই মুহূর্তের মত হচ্ছে, তাকে একটু কৌশলী হতে হবে শুধু।
যে ঝড় তার জীবনের উপর দিয়ে বয়ে গেছে, তা কখনোই ভুলবার নয়।
ভয়াবহ ঘটনা! তবে এমন ঘটনা যে শুধু এটাই না তা আমি জোর দিয়ে বলতে পারি। বাংলাদেশে প্রতিনিয়ত এ ধরনের ঘটনা ঘটেই যাচ্ছে।আমরা জানতে পারছি না শুধু। ব্রাত্য সাজ ও রঞ্জনের জন্য রইল সমবেদনা। তারা অতি শিগগির এ অত্যাচার থেকে মুক্তি পাবে-এ আশাই রাখি।
কোনো মানুষ চিন্তা-ভাবনায় কতোটা মেরুদন্ডহীন হলে এমন ভাবতে পারে! মানুষ কি নিজে থেকে যুক্তিবাদী হতে পারে না?
ব্রাত্য সাজের মতো না হলেও ছোট স্কেলে আরো অনেক এ ধরনের ঘটনা আমাদের চোখের সামনেই ঘটে চলছে। ধর্ম মানে না বলে ছেলেকে ঘর-ছাড়া করা, পুত্রবধু নাস্তিক হওয়ায় প্রতি পদে পদে তাকে কটাক্ষ করে তার জীবন বিষিয়ে তোলা- এসব তো এখন খুবই স্বাভাবিক ব্যাপার। আর সবচেয়ে ভয়ংকর দিক হলো- সমাজের মানুষ এসব হতে দেখলেও কিছু বলতে চায় না বা বলে না। কেউ ভাবে-ভালোই ত করছে পরিবার,এই বেয়াদব ছেলের এ শাস্তিই হওয়া উচিত।কিংবা কেউ ভাবে এটা তাদের ঘরের মামলা,আমাদের কিছু বলা উচিত না।
আমার নিজের কথা এখানে আনছি কিছুটা প্রাসঙ্গিক বলে। বর্তমানে লেখাপড়ার জন্য নিজের বাড়ি থেকে দূরে বিধায় কিছুটা রক্ষা নইলে আমাকেও এসব নিয়ে চিন্তিত থাকতে হতো। প্রতি শুক্রবার সকাল থেকে ভাবতে বসে যেতাম আজকে নামাজে না যাওয়ার জন্য কী অজুহাত দেয়া যায়। ধর্মকর্মে না থাকার ফলে আমাকে কতো হ্যাপা পোহাতে হয়েছে তা লিখতে গেলে পুরো একটা সিরিজ শুরু করতে হবে!
নির্যাতিতদের রক্ষার জন্য মুক্তমনার পক্ষ থেকে কোনো আইনি ব্যবস্থা কি নেয়া যায় না?
আইনের সাহায্য কি পাওয়া যাবে এ ব্যাপারে? আমার মনে হয়না। কারণ এদেশের পুলিস ব্যাপারটাকে মনে হয় গুরুত্বই দেবেনা, দিলেও পুলিসের সাহায্য নিতে গেলে যদি ওর পরিবার ওকে কিছু করে এটা ভয় হচ্ছে আমার। তবে সে কোনভাবে পালিয়ে আসতে পারলে এবং তারপর যদি আইনের সাহায্য নেয়া হয় তাহলে মনে হয় ভাল হবে, কারণ ব্রাত্য যতদিন আত্মীয় স্বজনদের হাতে আছে ততদিন রিস্কে আছে যদি আইনের সাহায্য নেয়া হয়, আইনের বিষয়ে আমার ভাল জানা নেই, অভিজ্ঞ কারো সাথে কথা বললে ভাল হয়। আমি এখনো বুঝতে পারছিনা কি করা যায়, তবে সাথে আছি।
ব্রাত্য আমার ফেসবুক বন্ধু। গ্রুপ মেইলে চোখ রাখছি ওর বিষয়ে। ব্রাত্যর বন্ধুরা বিষয়টি ভালোভাবেই হ্যান্ডেল করছেন দেখতে পাচ্ছি। তবে সমস্যার আসল সমাধান ব্রাত্যর হাতেই রয়েছে। এতো বড় ছেলেকে কেউ চাইলেই আটকিয়ে রাখতে পারেনা।
যেকোনো ধরনের প্রয়োজনে পাশে আছি। আমার ইমেল raihan1079এট জিমেইলডটকম।
@রায়হান আবীর,
সহমত। ব্যপারটা ছেলেটার জন্য এত সহজ নাও হতে পারে যদি সেই ছেলের অর্থনৈতিক স্বাধীনতা না থাকে।
ছেলেটার সমস্যাটা স্বল্প সময়ে সমাধান করার মত অপশন আমার হাতে আছে কিন্তু যদি দেখা যায় যে সে নিজেই ত্যাজ্য পুত্র হওয়ার ঝুকি নিতে রাজী নয় আমাকেই শেষে উল্টো আইজি সাহেবের কাছে বিব্রত হতে হবে । এরকম সমস্যা অনেক দেখার এবং সমাধান করার অভিজ্ঞতা আমার আছে।
@সংশপ্তক,
এটাই মূলকথা। আর কেবলমাত্র এই কারনেই এই ব্লগটিকে ভালোভাবে নিতে পারছিনা। আমার ধারনা ভেতরে ভেতরে সমস্যার সমাধান করাটাই সবচেয়ে ভালো স্ট্রাটেজি! এই ব্লগ জল ঘোলা ছাড়া আর কিছু করবেনা।
তাছাড়া ব্লগে বর্নিত কথাগুলোর সত্যতাও নিরূপনের কোনো উপায় নেই। ফেসবুক সূত্রে জানতে পারলাম ফিজিক্যাল এবিউজ করা হয়নি। আর নাস্তিক হওয়াটাও এই ঘটনার মূল কারন নয়।
ব্রাত্যর জন্য শুভকামনা করছি। দ্রুত যেন সে এই সমস্যা থেকে মুক্ত হতে পারে। তবে যারা বিষয়টি ডিল করছে তাদের কাছ থেকে বুদ্ধিবৃত্তিক একশন আশা করছি।
ব্রাত্য সাজ আর রঞ্জনের উপর যেটা হচ্ছে সেটা সরাসরি ক্রিমিনাল অফেন্স। আমেরিকা হলে সাজের পরিবার এতদিনে জেলের ভাত খেত। কিন্তু সাজের মত এডাল্ট একটা ছেলেকে এভাবে আটকে রেখে দিনের পর দিন নির্যাতন করা হচ্ছে, তার বন্ধুকে ফোনে হুমকি দেয়া হচ্ছে – এত জোর তারা পাচ্ছে কোথা থেকে?
আপনার এবং সাজের বন্ধুদের কাছ থেকে নিয়মিত আপডেট আশা করছি এ ব্যাপারে। আর আইন ও সালিশ কেন্দ্রের মত সিভিল লিবার্টি সংস্থাগুলোর সাথে নিয়মিত যোগাযোগ রেখে সাজকে মুক্ত করার সকল ব্যবস্থা নিন। মুক্তমনা পাশে আছে।