ন্যাযকা লাইন হলো পেরুর দক্ষিণাঞ্চলের প্যাম্পা কলোরাডো বা লাল সমতলভূমি নামে পরিচিত এলাকার মাটিতে আঁকা কিছু জীব-জন্তু এবং জ্যামিতিক রেখার সমাহার যাদের ইংরেজীতে geoglyph বলা হয়ে থাকে। ১৯২০ এর দশকের শেষভাগে পেরুর রাজধানী লিমা এবং এর দক্ষিণাঞ্চলীয় শহর আরেকিপার মধ্যে বানিজ্যিক ভাবে বিমান চলাচল শুরু হলে ন্যাসকা লাইনগুলি প্রথম ব্যাপকহারে মানুষের দৃষ্টি আকর্ষন করতে সক্ষম হয়। সেই সাথে আর্কিওলজিস্ট, এন্হ্রোপোলজিস্ট সহ প্রাচীণ সভ্যতা সম্পর্কে আগ্রহী সকল মানুষকে এক বিশাল ধাঁধার মধ্যে ফেলে দেয়। ছবিগুলো আন্দিজ পর্বত এবং প্রশান্ত মহাসাগর থেকে ৩৭ মাইল দূরে সমান্তারালভাবে প্রায় ১৫ মাইল দীর্ঘ ব্যাপী বিস্তৃত। এই লাইনগুলোকে কখনও ইনকাদের রাস্তা, কখনও চাষাবাদের পরিকল্পনা, আবার কখনও পুরনোদিনের ‘হট এয়ার’ বেলুন থেকে উপভোগ করার জন্য আঁকা ছবি হিসাবে ব্যাখ্যা করার চেষ্টা করা হয়েছে। কেউ কেউ বলেছেন এগুলি হচ্ছে ন্যাযকাদের মহাকাশীয় ক্যালেন্ডার। এদের মধ্যে সবচাইতে উল্লেখযোগ্য ব্যাখ্যাটি হচ্ছে এরিক ভন দানিকেনের ভিনগ্রহবাসীদের বিমান অবতারনার জন্য বানানো এয়ারস্ট্রীপের ব্যাখ্যাটি।
১৯৯৭ সালে পেরু এবং জার্মান গবেষকদলের সমন্ময়ে প্যালপা শহরের কাছে ন্যাযকা-প্যালপা নামে একটি গবেষণা প্রকল্প শুরু করা হয়। এই গবেষকদল নিয়মতান্ত্রিকভাবে একাধিক বিষয়ভিত্তিক গবেষনা শুরু করেন, যেমন ঐ অঞ্চলের মানুষের জীবন-যাপন পদ্ধতি, কেনইবা তারা হারিয়ে গেল, এই লাইনগুলোর উদ্দেশ্যই বা কি ছিলো। এই গবেষকদলের মতে ন্যাযকা সভ্যতার শুরু এবং শেষ হয়েছে “পানির” সাথে সাথে। পেরুর উপকূলীয় দক্ষিনাঞ্চল এবং চিলির উত্তরাঞ্চল হলো পৃথিবীর অন্যতম শুষ্ক অঞ্চল। আন্দিজ পর্বত থেকে পূর্ব দিকে দশটি নদী নেমে এসেছে যেগুলো বছরের একটা নির্দিষ্ট সময় শুকনো থাকে। এই নদীগুলো দ্বারা গঠিত একটি সুরক্ষিত অববাহিকাতেই ন্যাসকা সভ্যতা বিকশিত হয়েছিলো। বসতির স্হাপনার জন্য এখানকার পরিবেশ ছিলো খুবই উপযুক্ত এবং সেই সাথে ছিলো ঝুঁকিপূর্ন। ন্যাযকার আঞ্চলিক আবহাওয়া খুবই নাটকীয় ভাবে ওঠানামা করে। যখন দক্ষিণ আমেরিকার মধ্যাঞ্চল থেকে “বলিভিয়ান হাই” নামে পরিচিত উচ্চচাপের বায়ুমন্ডল উত্তর দিকে সরে আসে তখন আন্দিজের পশ্চিম ঢালে প্রচুর বৃষ্টিপাত হয়। আর যখন সেটা দক্ষিণদিকে দিকে সরে যায় তখন বৃষ্টিপাত কমে যায় ফলে ন্যাযকা অঞ্চলের নদীগুলো শুকিয়ে যায়। ঝুঁকিপূর্ন এই পরিবেশ সত্বেও ন্যাযকা সভ্যতা প্রায় ৮০০ বছর ধরে বিকশিত হয়েছিলো।
খৃষ্টপূর্ব ২০০ সালের দিকে আরও পুরোনো সভ্যতা প্যারাকাস থেকে ন্যাযকাদের আবির্ভাব হয়। এরা নদী অববাহিকায় বসতি স্হাপন করে কৃষিকাজ করতে শুরু করে। ঐ সময় ন্যাযকাদের ধর্মীয় কান্ড-কারখানার কেন্দ্র ছিলো কাহুয়াচি বলে একটি যায়গা। ১৯৫০ সালে কলম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের উইলিয়াম ডানকান স্ট্রং প্রায় ৩৭০ একর এলাকা জুড়ে এই এলাকাটির খনন কার্য চালিয়ে মাটির তৈরী পিরামিড, বেশ কয়েকটি বড়বড় মন্দির, প্রশস্ত বাজার (প্লাজা), প্লাটফরম, পরস্পর সংযুক্ত সিড়ি, এবং করিডোরের একটি নেটওয়ার্ক খুঁজে পান। কাহুয়াকির ৯ মাইল পূর্বে ন্যাসকা নদী মাটির অভ্যন্তরে ঢুকে গিয়ে হঠাৎ করেই আবার কাহুয়াচির পাদদেশে ঝর্নার মত মাটির নীচ থেকে আবির্ভূত হয়েছে। এই স্হানে পানির এই হঠাৎ মাটির নীচ থেকে আবির্ভূত হওয়াটাকে নিঃসন্দেহেই সেই প্রাচীন আমলে ঐশ্বরিক ভাবা হত বলে ভাবা হত।
ন্যাযকার অন্যান্য জায়গার মানুষেরা নদীর পূর্ব এবং পশ্চিম তীর ধরে বৃষ্টিপাতের ধরণের উপর নির্ভর করে বসতি স্হানান্তর করত। প্রশান্ত মহাসাগরের তীর থেকে শুরু করে আন্দিজ পর্বতমালার ১৫০০০ ফুট উচ্চতা পর্যন্ত গবেষকরা যেখানেই খুড়েছেন সেখানেই ন্যাযকা বসতির প্রমাণ খুঁজে পেয়েছেন। আর প্রতিটা বসতির পাশেই পাওয়া গেছে বিভিন্ন ধরেণের ভূ-চিত্র। উঁচু মরুভুমি এবং পাহাড়ের ঢাল ছিলো ছবি আঁকার জন্য উৎকৃষ্ট ক্যানভাস। ন্যাযকা অঞ্চলের মরুভূমিতে কোন বালি নাই, উপরের সারফেস মূলত পাথর দ্বারা গঠিত। ছবিগুলো তৈরী করার জন্য উপরের গাঢ় লাল রঙের পাথর এবং মাটি সরিয়ে ফেলা হয়েছে। নিচের হালকা রঙের মাটিই এই লাইনগুলোকে আসলে আকৃতি দিয়েছে। জলবায়ূ আদ্র হওয়ায় কারণে পাথরগুলি মরচে পরার মত গাঢ় রঙ ধারণ করেছে যা আবার পাথরগুলোকে তাপ ধরে রাখতে সাহায্য করে। শুষ্ক, বৃস্টিপাতহীন মরু আবহাওয়ায় এই লাইনগুলির তেমন একটা ক্ষয় হয় না বল্লেই চলে। আর সে কারণেই বহু শতাব্দী পরেও এই ভূ-চিত্রগুলি আজও মোটামুটি অক্ষত অবস্হায় আছে। প্রত্নতত্ববিদরা মনে করেন এই রেখাগুলির সৃষ্টি এবং রক্ষনাবেক্ষন উভয়ই ছিলো একটি গোষ্ঠিগত প্রচেষ্টা। অনেকটা আগের দিনে খৃস্টানদের ‘ক্যাথিড্রাল’ বানানোর মত।
বেশিরাভগ মানুষের কাছেই ন্যাযকা মানেই হলো এর লাইনগুলি। কিন্তু নিশ্চিত করেই বলা যায় যে ন্যাযকারা ভূ-চিত্র অংকনে খুবই প্রসিদ্ধ হলেও তারাই প্রথম এ ধরণের ছবি আঁকেনি। প্যালপা এলাকার ন্যাযকাদের পূর্ববর্তী প্যারাকাস সভ্যতার লোকেরাও মোট ৭৫টি ভিন্ন ধরণের/গ্রুপের ভূ-চিত্র এঁকে গেছে। এই প্যারাকাস ভূ-চিত্রগুলোর মধ্যে মানুষের দৈহিক ছবির আধিক্য দেখা যায়। যেগুলো কিনা আবার আরও প্রাচীণ কালের পাথরে খোদাই করা পেট্রোগ্লিফ নামে পরিচিত চিত্রের বৈশিষ্ট্যের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ন। এই পেট্রোগ্লিফগুলো থেকে ন্যাযকা লাইন সম্পর্কে একটা গুরুত্বপূর্ন তথ্য পাওয়া যায়, আর সেটা হলো এগুলো নির্দিষ্ট কোন এক সময়ে বা এক স্হানে বা একই উদ্দেশ্য নিয়ে আঁকা হয়নি। এদের বেশির ভাগই পুরনো কোন ছবির উপর নতুন করে আঁকা। এভাবে বারবার মুছে আবার তার উপর আঁকার কারণে ছবিগুলোর মানে খুঁজে বের করাটাও হয়ে পরেছে অনেক কঠিন।
শুধু আকাশ থেকে দেখতে পাওয়ার জনপ্রিয় ধারণাটাও আসলে আধুনিককালের অতিকথন। ন্যাযকাদের আগের প্যারাকাস যুগের পাহাড়ের গায়ে আঁকা ভূ-চিত্রগুলো প্যাম্পা থেকে দেখতে পাওয়া যায়। ন্যাসকা সভ্যতার শুরু দিকে মানুষের ছবির বদলে প্রাকৃতিক ছবির আধিক্য বেড়ে যেতে থাকে এবং সেগুলো পাহাড়ের ঢাল থেকে সমতলভূমিতে স্হানান্তরিত হতে থাকে। এই খোদাইকৃত স্পাইডার, হামিংবার্ড সহ বেশীরভাগ প্রানীর ছবিগুলোই একলাইনে আঁকা। কেউ একজন এই ছবিগুলোর যে কোন এক স্হান থেকে শুরু করে অন্য কোন লাইনকে অতিক্রম না করেই অন্য আরেক স্হানে বের হয়ে যেতে পারবে। প্রত্নতত্ববিদরা মনে করেন ন্যাযকা সভ্যতার প্রথমদিকেই এগুলো শুধুমাত্র ছবি থেকে উৎসবীয় শোভাযাত্রার পায়ে হাটা পথে রুপান্তরিত হয়। পরবর্তীকালে জনসংখ্যা বেড়ে গেলে আরও বেশিসংখ্যক লোক এই ধর্মীয় আচারে অংশ নিতে শুরু করলে এই ভূচিত্রগুলো আরও অনেক উন্মুক্ত এবং জ্যামিতিক আকার ধারণ করতে শুরু করে। গবেষকদের মতে তখন এগুলোকে আর শুধু ছবি হিসাবে তৈরী করা হতো না বরং এগুলো ছিলো ধর্মীয় উৎসব পালনের জন্য ব্যবহৃত হাঁটার মঞ্চ। গবেষকরা ঐ সমস্ত ভূ-চিত্রের আশে পাশে, বিশেষ করে মূল মঞ্চের আশে পাশে, চৌম্বকীয় ক্ষেত্রের সুক্ষ পরিবর্তন থেকে বুঝতে পেরেছেন যে ওখানকার মাটি মানুষের হাঁটা-চলা বা অন্যান্য কর্মকান্ডের ফলেই সৃষ্টি হয়েছে। গবেষকদের তথ্য অনুযায়ী ট্টাপিযয়েড এবং অন্যান্য জ্যামিতিক আকার গুলো এমন যায়গায় তৈরী করা হয়েছে যাতে করে সেগুলো ভিন্ন ভিন্ন সুবিধাজনক স্হান হতে দেখা যায়। এসব তথ্য থেকে গবেষকরা এই সিদ্ধান্তে উপনীত হয়েছেন যে এই স্হানে বিভিন্ন দল বিভিন্ন ধরণের কর্মকান্ড করত আর যা দূরে উপত্যাকা থেকে বা অন্যান্য ভূ-চিত্রের উপর থাকা মানুষজন সেগুলো অবলোকন করতে পারত।
বহু শতাব্দী ধরে আন্দিজের অধিবাসীরা পাহারের গায়ে আঁকা বিভিন্ন দেবতাদের কাছে প্রার্থনা করত, যেমন সেরো ব্ল্যাঙ্কো । আর ঐতিহ্যগত ভাবেই পাহাড়কে পৌরাণিক কাহিনীর মত সাধারণতঃ পানির উৎসের সাথে সম্পর্কযুক্ত মনে করা হয়। ন্যাসকা লাইনগুলোর মূল উদ্দেশ্যই ছিলো সেরো ব্ল্যাঙ্কো সহ অন্যান্য পাহারের গায়ে খোদাইকৃত দেবতাদের কাছে প্রার্থনা করা। বৃষ্টপাত শুরু হওয়া এবং কৃষিকাজ ও উর্বরতার সাথে সম্পর্কিত বহু ধর্মীয় আচার পালনের চিহ্ন গবেষকরা এই স্হানগুলোতে, বিশেষ করে বেদীর আশেপাশে পেয়েছেন। এ চিহ্নগুলো ছিলো ধর্মীয়ভাবে খুবই গুরুত্বপূর্ন এবং পানি এবং উর্বরতার প্রতীক এবং পানির জন্য প্রার্থনার সাথে সম্পর্কযুক্ত। গবেষকদলের মতে পানি ছিলো ন্যাযকা অঞ্চলের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ন একটা বিষয়।
ভূ-গর্ভস্হ পানি সংরক্ষনের জন্য ন্যাযকাদের তৈরী বিশেষ ধরনের আকিফার’স।
কিন্তু এতসব প্রার্থনা এবং নৈবেদ্যর সবই বিফলে গেছে। ৫০০ থেকে ৬০০ খৃষ্টাব্দের মধ্যে পানির স্বল্পতা কিংবা অনুপস্হিতিই যে ন্যাযকা সভ্যতার বিলুপ্তির অন্যতম প্রধান কারণ ছিলো সে ব্যাপারে কোন সন্দেহ নাই। ন্যাযকাদের বসতি স্হাপনার ক্রম ইতিহাস পর্যালোচনা করলে এ ব্যাপারে নিশ্চিত হওয়া যায় যে তারা যেন শুষ্ক জলবায়ুকে দৌড়ে পরাজিত করতে চেয়েছিলো। ৬ষ্ঠ শতাব্দীর শেষের দিকে শূষ্ক জলবায়ুর জয় হয় এবং ন্যাযকা সভ্যতার পতন ঘটে। কাহুয়াচির আশেপাশের ন্যাযকা সংস্কৃতির পতনের কারণ যে শুধুমাত্র আবহাওয়া ছিলো তা নয়। কিছু কিছু উপত্যাকায় পানির পরিমাণ বেশী থাকায় আশে পাশের গোত্রগুলির মধ্যে সংঘাতের পরিমাণও অনেক বেশী বেড়ে যায়। ৬৫০ খৃষ্টাব্দের দিকে মধ্যাঞ্চলের উচ্চভূমি থেকে ছড়িয়ে পরা যুদ্ধবাজ গোত্র Wari / Huari রা দক্ষিণের মরুভূমি অঞ্চলের ন্যাযকাদের বিলীন হওয়ারও কারণ হয়ে দাড়ায়।
আজকের দিনে ন্যাযকাদের ঐতিহ্য যদিও তাদের লাইনগুলির মাধ্যমেই আজও বেঁচে আছে এবং বেশিরভাগ মানুষ তা আকাশ থেকেই অবলোকন করে থাকে তথাপি মাটিতে লাইনগুলির উপর দিয়ে না হাটলে সেগুলোর আসল গুরুত্ব অনুধাবন করা যায় না বলেই গবেষকদের মতামত। মূল লেখকের মতে প্রার্থনার জন্য এই লাইনগুলির উপর দিয়ে হাটার ফলে ন্যাসকা মানুষদের নিজেদের মধ্যকার আত্মিক এবং সামাজিক বন্ধন আরও দৃড় হত। এই ভূচিত্র গুলো ন্যাযকাদের বহমান জীবন এবং ধর্মীয় আচারের মাধ্যমেই স্মরণ করিয়ে দিত যে তাদের ভাগ্য তাদের পরিবেশের সাথেই বাঁধা। এই ভূ-চিত্র গুলো থেকেই ভালো এবং খারাপ উভয় সময়েই প্রকৃতির প্রতি তাদের অকৃত্রিম ভালবাসার প্রমাণ পাওয়া যায়।
সহায়ক সূত্রঃ
১) Spirits in the Sand:The ancient Nasca lines of Peru shed their secrets. – By Stephen S. Hall [National Geographic, March 2010]
2) Nazca lines – The Skeptic’s Dictionary, Robert T. Carroll
3) Google Image & National Geographic
আরও জানতে চাই।
ন্যাযকা লাইনের কথা পড়েছিলাম “তিন গোয়েন্দায়” আজ আবার বিস্তারিত পড়ে ভাল লাগল। নস্টালজিক হয়ে গেলাম তিন গোয়েন্দা পড়ার দিনগুলো মনে করে। আমাদের মত বাবা-মার অমতে বাইরের বই পড়ে সময় “নষ্ট” করা ছেলেমেয়েদের জন্য সেবা প্রকাশনী আর বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্র দেবদূতের মত ছিল, মনে পড়ে গেল টিফিনের টাকা জমিয়ে বই কেনার, বাথরুমে বসে বা পড়ার টেবিলে পাঠ্যবইয়ের নিচে রেখে গল্পের বই পড়ার দিনগুলি…
পেরুর মাচু পিচুর কথা, দক্ষিণ সাগরের কথা, আমাজনের কথা, ইন্ডিয়ানদের বা জলদস্যুদের কথা, কাউবয়দের কথা, আরো কত কি জেনেছিলাম তিন গোয়েন্দা আর ওয়েস্টার্ন পড়ে, সাথে সেবার অনুবাদগুলো তো ছিলই।
সত্যি ভাল লাগল পড়তে, আরো ভাল লাগল স্মৃতিটুকু মনে পড়ল বলে…এজন্য (F) আর (D) নেন 🙂
@লীনা রহমান, আসলেই, আমাদের দেশের কিশোর-তরুণদের পাঠাভ্যাস গড়ে উঠার জন্য সেবা প্রকাশনীর বইগুলির গুরুত্ব এবং অবদান অপরিসীম। একবার ইমিডিয়েট বড় ভাইয়ের অর্ধেক পড়া লুকিয়ে রাখা একটি বই মধ্য রাতে চুরি করে পড়তে গিয়ে কি বিপদেই না পরেছিলাম! মা চোর ভেবে আমাকে লাঠি দিয়া বাড়ি দিতে গিয়েও দেননি। বাচ্চা চোর ভেবে হাতে নাতে ধরার আশায়। ভাগ্যিস দেননি .. তাহলে যে কি হত!!! 🙂
অনেক আগে কোন এক গল্পের বইয়ে যেন এগুলোর কথা কিছুটা পড়েছিলাম। আপনার লেখা পড়ে বিস্তারিত অনেক কিছু জানতে পারলাম। প্রাচীন সভ্যতার অজানা রহস্যের কথা পড়তে সবসময়ই ভালো লাগে। ধন্যবাদ লেখাটির জন্য।
@রামগড়ুড়ের ছানা, আপনাকেও ধন্যবাদ। (F) (F)
দারুণ লিখেছেন! যদিও বিষয়টি আগে থকেই জানা ছিলো তারপরও আপনার লেখা পড়ে মজা পেয়েছি। চলুক। (Y)
@নিটোল, ধন্যবাদ। (F) (F)
চমতকার লেখা। দঃ আমেরিকারই আরো কোথায় কোথায় মনে হয় এই জাতীয় রহস্যময় আর্ট আছে বলে পড়েছিলাম।
এত বিশাল আর্ট সে যুগের মানুষে কেমন করে করেছিল?
@আদিল মাহমুদ, ব্যাপারটা আমাদের কাছে অবাক লাগে কারণ আমরা ভাবি ওরা খুবই প্রিমিটিভ ছিলো। আমাদের এই এজাম্পশনটার কারনেই আসলে সমস্যাটা হয়। কিন্তু ঐ আমলেও যে কিছু লোক যে খুবই প্রতিভাবান হইতে পারে সেটা ভুলে যাই।
@হোরাস,
আসলে প্রাচীণ কাল আমরা সব সময় যত পেছানো ছিল মনে করি সব যায়গা ততটা পেছানো ছিল না। প্রাচীন কালের অনেক টেকনোলজিই চিরতরে হারিয়ে গেছে এমন সম্ভাবনা বেশ ভালই আছে।
দানিকেনের ৮/১০ টা বই পড়েছিলাম ছেলেবেলাই। রুপকথা ধরে নিয়ে পড়লে দারুণ মজা আছে।
@আদনান, সেবা থেকে বের হওয়া দানিকেনের বই পড়ে ছোটবেলায় আমিও ভাবতাম ওসব বোধহয় সত্যি। কিন্তু এখন ভাবলে মজা পাই।
@হোরাস,
ঝরঝরে আর ব্যতিক্রমী লেখাটি ভাল লাগলো। বলিভিয়ার পুমা পাঙ্কু নিয়ে লিখবেন নাকি?
@কাজী রহমান, ধন্যবাদ। এ মূহুর্তে ইচ্ছা নাই। ভবিষ্যতে লিখতেও পারি। তবে আপনিই যেহেতু বিষয়টা নিয়ে আগে থেকেই জানেন, আপনিই লিখে ফেলুন না।
@হোরাস,
একটু আধটু জানলেই কি আর লিখে ফেলা যায়। ব্যাপারটা হেভিওয়েটদের জন্যই তোলা থাক। অপেক্ষায় থাকব। :))
বাংলা ভাষায় নাযকাদের সভ্যতা অথবা নাযকা লাইন নিয়ে তেমন কোন প্রবন্ধ নাই বললেই চলে। তাই আপনার এই প্রবন্ধটি খুবই প্রশংসনীয়।
হাঁ, আমি এরিক ভন ডানিকেনের বইটা পড়েছি। উনি মনে করেন এই লাইনগুলি অন্যগ্রহবাশীদের অবতরনের ভুমি বা বিমানপোত–এই ধরণের কিছু।
বলাবাহুল্য বর্তমান বৈজ্ঞানিক সমাজ এরিক ভন ডানিকেনের এই তত্ত্বকে নাক সিটকে দেন, তাচ্ছিল্য করেন বা হাস্যকর বলে অভিহিত করেন। কিন্তু আমি ভন ডানিকেনের মতকে সম্পূর্ণভাবে উড়িয়ে দিতে চাইনা–কারণ মানুষ এখন মঙ্গলগ্রহে অবতরেণের প্রচেষ্টা চালাচ্ছে। এই প্রচেষ্টা সফল করতে এই ধরণের কিছ তৈরি করতে হবে মঙ্গল গ্রহে।
@আবুল কাশেম,
:-X
@আবুল কাশেম, ভিনগ্রহবাসী যদি এসেও থাকে তবে নিঃসন্দেহে তাদের টেকনোলোজী এতটাই উন্নত হবে যে এই বিশাল এরিয়া নিয়ে রানওয়ের দরকার ওদের হওয়ার কথা না। আর নিউজে কিংবা টিভি-সিনেমায় ভিনগ্রহের যেরকম আকাশযান আমরা দেখে থাকি যদি ওদের যানগুলো আসলেই সেরকম কিছু হয় তবেতো আরও নিঃসন্দেহে থাকা যায়।
জ্ঞানের একটা নতুন অধ্যায় পড়লাম আজ।খুব সুন্দর। (Y) :clap (Y)
@নীল, ধন্যবাদ। (F)
ব্যাপারটা খুব মজার তো। জানতোমই না এমন কিছু আছে।
(Y) (F)
@আসরাফ, আমাদের জানার বাইরেও পৃথিবীতে কত অবাক করার মত জিনিষ আছে সেটা ভাবলেই অবাক হতে হয়।
আরেকটি দুর্দান্ত লেখা হোরাস ভাই। দারুন লাগলো।
@আলিম আল রাজি, ধন্যবাদ রাজি। তুমি মনে হয় আমার লেখার প্রতি বায়াসড। ঠিক না? 🙂
আপনার লেখার পাশাপাশি ছবিগুলোর জন্য বেশি করে অনুধবন করতে পেরেছি ন্যাযকারা করেছেটা কি।
আমারো তাই মনে হয়েছে। (Y)
@বাদল চৌধুরী, ছবিগুলো দেবার সময় আমি সচেতন থাকার চেষ্টা করেছি যাতে বর্ননার সাথে সামঞ্জস্যপূর্ন থাকে। আর ছবিগুলো ছাড়া আসলেই বুঝতে সমস্যা হওয়ার কথা, আসল কাহিনী কি।
(Y) :guru:
@হেলাল, ধন্যবাদ। (F)
ধন্যবাদ, এ বিষয়টি নিয়ে লেখার জন্যে। পেরুর মাচুপিচু এবং এসব কিছুই জেনেছিলাম প্রেসিডেন্ট টলেডো’র “Presidential Tour” to promote tourism in Peru থেকে। আমার এক পেরুভিয়ান কলিগ DVD টা দিয়েছিলো। বাংলাতে ইতিহাসটা পড়তে পেরে ভালো লাগলো।
@আজম, ভাবতেই অবাক লাগে মধ্য এবং দক্ষিণ আমেরিকাতে বেশ অনেকগুলো সভ্যতার বিকাশ ঘটেছিলো যাদের আজ আর কোন চিহ্নই নেই।
🙁
@হোরাস, জ্যারেড ডায়মন্ডের “গান্স, জার্মস এন্ড স্টীল” বইটা পড়ে দেখতে পারেন। স্রেফ ভৌগলিক কারণেই বেচারা আদিবাসী আমেরিকানরা ইউরোপীয়দের অস্ত্র আর জীবাণুর(ডায়মন্ডের ভাষায় guns, germs and steel) সাথে টিকতে পারল না। ইউরোপীয় সভ্যতার উৎপত্তি যদি আমেরিকায় হত আর আমেরিকান সভ্যতার উৎপত্তি যদি ইউরোপ-এশিয়াতে হত, তবে আজ হয়ত আমরা ইংরেজি না শিখে মায়া বা এজটেক ভাষা শিখতাম। এজটেকরা তো সমরশক্তি ও রাজনীতির দিক দিয়ে স্পেনীয় সভ্যতার প্রায় সমকক্ষ ছিল।
@পৃথিবী, জ্যারেড ডায়মন্ডের Collapse: How
Societies Choose to Fail or Survive বইটা পড়েছি। সেখানেও এরকম বেশ কিছু ঘটনা লেখা আছে। যেমন হিসপ্যানিওলা দ্বীপ (বর্তমান হাইতি এবং ডমিনিকান রিপাবলিক) এর প্রায় ১ মিলিয়ন আদীবাসী ইন্ডিয়ান স্প্যানিসদের কারনে ঝাড়ে বংশে নির্বংশ হয়ে গিয়েছিলো। এখন ওখানে যারা থাকে তার হয় আফ্রিকান দাস, ইউরোপীয়ান মাইগ্রান্ট এবং তাদের শংকরদের বংশধর। এজটেকরাও তো স্প্যানিশদের কারণেই মূলত ধ্বংস হয়েছে।