রাজনীতি বাংলাদেশী জনজীবনে একটি ব্যাপক বিস্তৃত অধ্যায়।মোটামুটি সবার জীবনে এর সূ বা কু-প্রভাব আছে।আমাদের আশেপাশের মানুষকে প্রশ্ন করলেই বোঝা যায় এটি।অনেকেই হয়তো প্রধান রাজনৈতিক দলগুলোর সমর্থক আর বাকি সবাই পুরো রাজনৈতিক ব্যাবস্থার উপরেই বিরক্ত।এমন কাউকে খুজে পাওয়া মুশকিল যে কিনা রাজনৈতিক ব্যাপারগুলোতে একেবারেই উদাসিন। তো যেই দেশের জনগন এতটা রাজনীতি “সচেতন” সেই দেশে রাজনীতির এই দুরাবস্থা কেন? স্বাভাবিক নিয়ম অনুযায়ি “সচেতন” জনগনের ভোটে নির্বাচিত সরকার তো জনমতের চাহিদার বাস্তবায়ন করে আর সচেতন জনগন তো আর যাই চাহিদা করুক বাংলাদেশের বর্তমান পরিস্থিতি চায় না!
প্রধান দুটি দলের মাঝেই সীমিত আমাদের রাজনৈতিক অঙ্গন কিন্তু এই দুটি দলের ভিত্তি কোথায়? সমাজে কাদের প্রতিনিধি এরা? নাকি পুরো দেশের প্রতিনিধিত্বকারী এই দুটি দল?
দুটি দলের ভিত্তি দেখতে গেলে প্রথমে পাই আওয়ামী লীগ কে,স্বাধীনতা পূর্ব মধ্যবিত্ত শ্রেণীর মুখপাত্র এই দলটি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমানের নেতৃত্বে স্বাধীনতা আন্দোলনের সূচনাকারী। বাংলাদেশের ইতিহাসে তাদের ভুমিকা ব্যাপক।চরম বাস্তবতা বর্জিত বাম দলগুলোর বাস্তবতা অনুধাবনের ব্যার্থতায় ও ডান দলগুলোর স্বাধীনতা বিরোধি অবস্থানের ফলে পুরো জাতিকে স্বাধীনতার নেতৃত্ব দেবার দায়িত্ব আসে এই দলটির ওপর আরো নিদৃষ্ট করে বললে শেখ মুজিবর রহমানের ওপর। এবং বাংলার হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ সন্তান শেখ মুজিবর রহমানের নেতৃত্বে আমরা পাই পৃথিবীর মানচিত্রে প্রথম বারের মত একটি বাংলাদেশ।
দেখুন,লক্ষ্যনীয় বিষয় যে,মধ্যবিত্তের মুখপাত্র আওয়ামী লীগ কালক্রমে হয়ে গেল দেশের সর্বস্তরের মানুষের প্রতিনিধি।কিন্তু সফল বিদ্রোহি শেখ মুজিবর রহমানে যেখানে স্বাধীনতার প্রশ্নে পুরো জাতিকে এক করতে এবং দেশকে স্বাধীন করায় সফল ছিলেন রাষ্ট্রপ্রধান হিসেবে তিনি পুরো জাতিকে দেশের ভালর জন্য এক করতে পারেনি। এমনকি দেশের সরকার গঠনেও দলীয় রাজনীতিই প্রধান থেকেছে,দেশের উন্নয়নে সেরা মেধাগুলো কাজে না লাগিয়ে সংকীর্ন দলীয় রাজনৈতিক পরিচয়ে সরকার গঠন করা হয়েছে।এমনকি আমলা নিয়োগের ক্ষেত্রেও দলীয় পরিচয় ভুমিকা রেখেছে। ফলে আওয়ামী লীগের বাইরে থেকে যারা দেশের জন্য যুদ্ধ এবং সংগ্রাম করেছিল তারা নিজেদের বন্চিত বোধ করলো আর কিছু নেতা ক্ষমতার লোভে নিজেদের নৈতিক চরিত্রের পতন উৎসাহিত করলো।ফলাফল স্বাধীন বাংলাদেশের প্রথম বিভক্তি। আওয়ামী লীগ তাদের “এ” টিম তৈরী করে এবং দেশে শত্রুতার ভিত্তিতে “বি” টিমের জন্ম উৎসাহিত করে এবং পরবর্তীতে “বি” টিমের জন্ম হয় বি,এন,পি নামে।
বি,এন,পি দলটি আসলে কি?
এক কথায় বলা যায় যারা আওয়ামী লীগের অধীনে ক্ষমতার কোন ভাগ পায়নি তারাই বি,এন,পি।একধরনের সুবিধা বন্চিত আমলা নির্ভর দল,অথবা বলা যায়, সারা দেশের যেসকল মানুষ আওয়ামী লীগের বিরোধিতা করতো তারাই বি,এন,পি কেন্দ্র করে একত্রিত হল।
তাহলে কি বলা যায় যে, বাম-ডানের ব্যার্থতায় দেশের একক নেতৃত্ব পেয়ে যায় আওয়ামী লীগ এবং আওয়ামী লীগের ব্যার্থতায় গড়ে ওঠে বি,এন,পি?
তার মানে আমাদের প্রধান রাজনৈতিক দুটি দলই রাজনৈতিক “স্টান্ট”?? দুটো দলই আসলে “প্রতিদল”?
আরো খেয়াল করা যায় যে, দুটো দলই একক নেতৃত্ব নির্ভর। শেখ মুজিবর রহমানের দেশের স্বাধীনতায় নেতৃত্ব গুন এবং অবদান নিয়ে প্রশ্ন করা আমার মনে হয় নিজের ইতিহাস নিয়ে প্রশ্ন তোলার মত। কিন্তু অবশেষে তিনিও মানুষ এবং ওনার বিদ্রোহি নেতৃত্ব যতটা নিখুত ছিল ততটাই খুত ছিল দেশকে স্বাধীনতা উত্তর কঠিন সময়টিতে দেয়া তার নেতৃত্বে।
বি,এন,পি’র নেতা জিয়াউর রহমান তার ব্যাক্তিত্ব এবং সমসাময়ীক প্রশাসনে গতি এনে দেয়ায় জন্য দেশবাসির প্রিয় হয়েছিলেন কিন্তু রাষ্ট্রপ্রধান হিসেবে তিনি যতটুকু নন্দিত, ঠিক ততটুকুই তিনি নিন্দিত রাষ্ট্রপ্রধান হবার পেছনের পদক্ষেপের জন্য।
তাহলে দেখা যায় যে, আওয়ামী লীগ বিরোধি প্লাটফর্ম বি,এন,পি’র জন্ম সুবিধাবন্চিত জনগন ও ক্ষমতাবন্চিত আমলাদের নিয়ে যাদের মুল ভিত্তি আওয়ামী লীগের ভুল।
তাহলে বি,এন,পি হল ক্ষমতালোভী,সুযোগসন্ধানী ও সুবিধাবন্চিতদের দল,আর আওয়ামী লীগ হল, অপ্রস্তুত, নিজ কেন্দ্রীক,ও সুবিধাভোগির দল।
দুটি দলেরই মুল পুঁজি মাত্র দুজন জননন্দিত মৃত নেতা।
আমাদের একটি দেশ বাংলাদেশ,তার রাজনৈতিক দল মুলত দুটি এবং দুটি দলই ঘটনার প্রবাহে জন্ম নেয়া। ভিশন নিয়ে কারো জন্মই হয়নি।দুটি দলই মিশন নির্ভর।একটি দলের ভুল আরেকটি দলকে এগিয়ে দেয় কিন্তু কোন দলই নিজ ভিশন বা কাজের মাধ্যমে জনগনকে আকৃষ্ট করছে না।দল দুটির নেতা দুজন বাংলাদেশের রাজনৈতিক ইতিহাসের সবচেয়ে উজ্জল দু-জন। একজনের জন্য আজ আমরা নিজেদের পরিচয় দিতে পারছি আর আরেকজনের কিছু কাজ আমাদের সফল হবার সপ্ন দেখিয়েছিল।কিন্তু দূর্ভাগ্য আমাদের যে ব্যাক্তিজীবনের মায়া আমাদের রাজনৈতিক জীবন কেও তাড়িয়ে ফেরে। ঘটনাক্রমে দুটি দলের দুজন নেতাই ঘাতকের হাতে প্রান দিয়েছেন এবং আবেগের দাস বাংলাদেশি জনগন আমৃত্যু তাদের সৃতির প্রতি সন্মান জানাতে ঐ নেতাদের পরিবারের কউকে না কাউকে সমর্থন দিয়ে যাচ্ছে। আওয়ামী লীগ সরকারের প্রতি ক্ষুদ্ধ জনগন নিজেদের বি,এন,পি সমর্থক করে তুলছে এবং পারিবারিক ঐতিহ্য বা বি,এন,পি’র প্রতি ঘৃণা থেকে আওয়ামী লীগের সমর্থক হয়ে যাচ্ছে। বলবো না বলেও শেষ লাইনে এসে বলতে হয় যে,জনগনের অবিবেচনাও আজকের পরিস্থিতির জন্য দায়ী।
বাংলাদেশের মানুষ আওয়ামীলীগ(নৌকা) তথা শেখ হাসিনা আর বিএনপি (ধানেরশীষ) তথা খালেদা জিয়া ছাড়া আর কিছু চেনে না। অনেক বাঘা বাঘা নেতা এই দুই দলের ছায়া বঞ্চিত হয়ে শুকিয়ে কাঠ হয়ে গেছে।
@Atiqur Rahman Sumon,
:yes: :clap2: :clap2:
আমার মনে হয় ৭১ এর পরে মুজিব এর দরকার ছিল ক্ষমতা ছেড়ে দিয়ে যোগ্য একজনকে ধরিয়ে দেয়া।
ক্ষমতার লোভ তাকেও বেধে ফেলেছিল। আর বর্তমান রাজনীতি দল গুলোওকে তখনকার রাজাকারের মতই লাগে। এরা কেউই দেশেরনা। এরা আসলেই লেখকের মতে কেউ কোন ভিশন নেই, শুধু মিশন আছে। এরাও আর এক রাজাকার। এরাও পিচাশ। বর্বর। “দেশ মা”কে এরাও — করতে বাকি রাখছেনা। কোনই পার্থক্য আমি এখন খুজে পাচ্ছিনা। যারা রাজাকার ছিল তারাও যা করেছে এখনের এরাও একই কাজ করছে। আর আমরা সাধারন জনগন রঙ বেরঙ্গের বেশ ভূষা না বুঝেই শুধু এই পক্ষ, আর ঐ পক্ষ করে যাচ্ছি। স্বাধীনতাও ছিল একটা রাজনীতি, ক্ষমতা দখলের।
তখনকার সময়ে বাংলাদেশ ছিল পূর্ব পাকিস্তান। সেই হিসাবে তখন রাজাকাররা কিন্তু অন্য দেশের কারও কাছে নিজের দেশ বিক্রি করেনি। কারন তখনও সেইটা পূর্ব পাকিস্তান ছিল। নিজের দেশের মা বোনরে ভাইরে মেরেছে, হত্যা করেছে, ধর্ষন করেছে…আর এখন ঠিক একই ঘটনা। নিজের দেশের ভিতরেই দলীয় সরকার একই কাজই করে যাচ্ছে। শুধু সময়, নাম, বেশ ভূষা আলাদা। মজার বিষয় হল তখনও আমরা সাধারন জনতা গাধা ছিলাম আজও তাই আছি। তখন এই নেতা, হাবাজাবারা একটা কিছু বুঝিয়ে নাকের উপরে মূলা ঝুলিয়ে দিত, আজও আমরা সাধারন জনতা নাকের উপরে মূলা দেখি। খাওয়া আর আমাদের হলনা…
“বাংলা মা” কবের থেকে ধর্ষিত হয়েই যাচ্ছে ঠিক—-
যাইহোক আপনার লেখা ভাল লেগেছে, ধন্যবাদ
@Russell,আপনাকে ধন্যবাদ মন্তব্যের জন্য আসলে দেশের প্রতি ভালবাসা মাঝে মাঝে ব্যার্থ প্রেমের রূপ ধারন করায় মনক্ষুন্ন হই সকলেই কিন্তু আবার আশায় বুক বাঁধি। এরকমই তো চলছে তবে মনে আশা যে কোন কিছুই এক গতি তে চলে না,পতন হতে হতে একসময় তা মাটি স্পর্ষ করে আবার উপরে উঠে যায়।আমাদের দেশেও একদিন সুবাতাস বইবে।ডাক এলে আমরা নিশ্চয়ই উপেক্ষা করবো না!
@আকাশ মালিক
আমি, মুজিবকে ভালোবাসে এমন সব লোকের মধ্যেই বড়ো হয়েছি, এমপি থেকে শুরু করে মন্ত্রী পর্যন্ত আমার নিকটজনদের মধ্যেই আছে। আমার বাড়ির অনেকেই আশা করছে একজন রাষ্ট্রপতী আমরা আগামীবার পাবো। কাজেই আমি আওয়ামী লীগের অনেক কিছু ঘুম থেকে উঠে আবার ঘুমাতে যাওয়া পর্যন্ত দেখেছি।
আপনার জন্য তো বনে যাওয়া ছাড়া আর কোনো রাস্তা দেখছিনা। আপনি “আমরা কি এই বাঙলাদেশ চেয়েছিলাম” গ্রন্থটি নিয়ে তিন মাসের জন্য কোনো এক বনে চলে যান। তারপর তাড়াহুড়ো না করে গ্রন্থটি পড়ুন, দেখবেন আপনার সব প্রশ্নের উত্তর পেয়ে যাচ্ছেন। আপনার মতো একজন ভালো মানুষের জন্য আমি এর থেকে সহজ আর কোনো রাস্তা দেখছিনা। গ্রন্থটি পড়ুন আপনার অনেক উপকার হবে!
তবে আমার সন্দেহ হয় আপনাকে নিয়ে। এক জীবনে হয়তো আপনি গ্রন্থটি বুঝে উঠবেননা। দ্বীতিয় জন্মের প্রয়োজন হতে পারে। যদি তাই হয় তবে তা খুব দুঃখজনক হবে।
কঠিন সত্যতা আছে।
বংগবন্ধু যত বড় নেতাই হোন, স্বাধীনতায় তার যত বড় অবদানই থাক সেসব অনেকটাই ম্লান হয়ে গেছিল স্বাধীনতা উত্তর বাংলায়। এটা মানতেই হবে যে তার ঘাড়েই দেশের সবচেয়ে কঠিন সময়ে দেশ শাসনের ভার পড়েছিল। সেই অবস্তায় রাতারাতি ২/৪ বছরে কোন যাদুকরের পক্ষেই তেমন কিছু করা সম্ভব হত না। শুধু এতেই থেমে থাকলে তেমন সমস্যা হত না। মুশকিল হল বংগবন্ধুর ব্যাক্তিগত দূর্বলতার কারনে তার আশে পাশের লোক, আত্মীয় স্বজন, দলীয় কর্মীরা ফ্র্যাংকেনষ্টাইনে পরিনত হয়েছিল। তাঁর ভূমিকা ছিল অনেকটা দর্শকের। জনগন এটাকে ভাল চোখে দেখেনি। ফলে দূঃখজনক হলেও ৭৫ এর মর্মান্তিক ট্র্যাজেডীতেও জনগন তেমন বড় ধরনের শোক পেয়েছে বলে সে সময়কার অবস্থা চিন্তা করলে মনে হয় না। ৭৫ এর ঘটনা ৭০ সালেও ঘটলে মনে হয় পুরো দেশই আক্ষরিক অর্থেই উলটে যেত।
তবে জিয়ার বিএনপিকে শুধু সুবিধা বঞ্চিত ও সুযোগ সন্ধানীদের ভীড় বলাটা মনে হয় অতি সরকীকরন। আর জিয়ার ক্ষমতারোহন প্রক্রিয়া নিয়ে দেশের সুশীল সমাজ বলে যারা পরিচিত তারা ছাড়া আর কেউ তেমন ভাবিত বলে কোনদিন মনে হয়নি। আমাদের সাধারন জনগন কে কাকে জেলের ভেতর মারল, কতজনকে গোপনে ফাঁসীতে ঝোলালো এসব নিয়ে মোটেও তেমন চিন্তা করে না। জিয়ার আমলে দেশ মোটামুটি একটি স্থিতিশীল অবস্থায় পৌছেছিল, জিয়ার ব্যাক্তি সততার কারনে দেশে দূর্নীতির প্রভাব অনেক কম ছিল এসব কথা না বললে জিয়ার আমলের প্রতি অবিচার করা হয়। ধর্মীয় রাজনীতির উত্থান ও স্বাধীনতা বিরোধীদের কোলে টেনে জিয়া যে দেশের যে স্থায়ী ক্ষতি করে গেছেন তা তার আমলে তো বটেই, আজকেও অনেকেই বোঝে না।
তবে দেশের মানুষের সাইকোলজি অবশ্যই গবেষনার বিষয়। ধর্মের মতই আমাদের দেশের লোকেও রাজনীতিকে কেবল আবেগ দিয়েই দেখে। যুক্তির তেমন ধার ধারে না।
@আদিল মাহমুদ,ধন্যবাদ আপনার মন্তব্যের জন্য।আসলে লেখাটাই সরল।ব্যাপক গভীরে না যেয়ে শুধু এটুকুই বলতে চেয়েছি যে,ভুল নেতৃত্বের হাতে ভুল পথে আমাদের দেশ।বঙ্গবন্ধুই আমাদের স্বাধীন একটি দেশ দিয়েছেন,সেই সময় ওনার ভুমিকার কল্যানেই আজ বাংলাদেশ পেয়েছি এটি যেমন সত্য তেমন ওনার ভুল গুলোও সত্য। জিয়াউর রহমানের আমলে দেশের সার্বিক উন্নয়নের একটি আশাবাদ ও ছোঁয়া সত্যিই এসেছিল এবং সেই সুনামই আজ পর্যন্ত বি,এন,পি’র ব্যানারে মানুষ জড় করে। তবে এটিও নিশ্চয়ই বলবেন যে ওনার দলে শুরুতে তারাই ছিল যারা স্বাধিনতা উত্তর আওয়ামী লীগে জায়গা করে নিতে পারেনি।
আমাকে যেটা সবচেয়ে বেশি যন্ত্রনা দেয় তা হল,দেশের মানুষের “পার্টিজান” আচরন এবং আমাদের সংখ্যাধিক বুদ্ধিজীবি মহল পর্যন্ত সত্য প্রকাশে আগ্রহী নয়।ব্যাক্তিগত মতামতে সচ্ছতা স্বত্বেও তারা জনগনের সামনে এসব তুলে ধরতে আগ্রহী না।বরং , আরো বেশি বেশি ধোয়া তুলে সবাইকে আচ্ছন্ন করতে চায়। আর,সল্পশিক্ষিত,গরীব ও সর্বময় কুসংস্কারাচ্ছন্ন জনগন সেই সব “ধোয়া”র ভেতরই আচ্ছন্ন।
আসলে আমাদের দেশের মানুষ ধর্ম এবং রাজনীতি এই দুই ক্ষেত্রেই “মুরুব্বি” মেনে চলে আমার মনে হয়,কারন দুটি ক্ষেত্রেই আছে ভুল হলে সাজার ভয় তাই ভুল করার ভয়ে ভীত জনগন আগে থেকেই নিশ্চিত হতে চায় যেন “মুরুব্বি” সাজা কমাতে এগিয়ে আসে।আর এই চিন্তাই মুক্তি দেয়না নিজস্ব মেধা ও যুক্তি।
মন্তব্যের জন্য অনেক ধন্যবাদ আপনাকে।
@অসামাজিক,
‘সত্য প্রকাশে আগ্রহী নয়’ না বলে বলা উচিৎ সুবিধা ভোগ করার জন্য সত্য প্রকাশে তাঁরা ইচ্ছুক নন। দেশের জনগনের রাজনীতি বুঝার দরকার নাই, রাজনীতির আবেগ দিয়ে তারা চলেনা, জনগনের খালি দরকার জীবনের বেসিক চাহিদাগুলোর নিশ্চয়তা। দেশের জনগন নয়, বরং আমাদের বুদ্ধিজীবি মহলের, তথাকথিত সুশীল সমাজের আচরনই বড় বেশী কস্টদায়ক।
@ব্রাইট স্মাইল্,
১০০% সহমত। :yes:
আমার বন্ধু মহলে এ নিয়ে প্রায়ই তর্ক হয়। জনগনের কাছ থেকে শেখ মুজিব আর জিয়া নামের মূলা দেখিয়ে যদি ভোট আদায় করা যেত, তাহলে বাংলাদেশ অনেক আগেই ইসলামি রাস্ট্র হয়ে যেত। আল্লাহ, আল্লাহর সংবিধান কোরান, সর্বকালের সর্বযুগের আদর্শ নেতা মুহাম্মদ নামের মূলা দেখিয়ে, ইহকাল পরকালের সুখ-শান্তি দেখিয়েও ইসলামি দলগুলো কোন পাত্তাই পায়না। কারণটা কী? জনগন বোকা, মাথায় ঘিলু নেই, অজ্ঞ, নির্বোধ?
না, এরা খুবই সচেতন। তারা জানে তাদের সামনে এই দুই দলের চেয়ে উন্নত কোন দল, পন্থা, চয়েস নেই।
আমি সিলেটের একজন নামকরা রাজনীতিবিদকে (নাম বলবোনা) ব্যক্তিগতভাবে চিনি। আমার এক শিক্ষিত বন্ধু, মনেমনে কবি, কিছুটা সাহিত্যিকও। একদিন ঐ রাজনীতিবিদকে উদ্দেশ্য করে আমাকে বললেন-
বাংলাদেশের যে সকল মানুষ এর মত একজন বেশ্যাগামী, জুয়াড়ী, মদখুরকে বারবার বিপুল ভোটে জয়ী করায় তাদের কোন ভবিষ্যত নেই, এদের নিয়ে চিন্তা করা বোকামি। আমি বললাম- সেই মানুষটাকে এত মানুষ বারবার যখন সমর্থন দেয়, নিশ্চয়ই সে জনগনের জন্যে কিছু না কিছু ভাল কাজ করে।
তিনি বললেন- অবশ্যই করে।
আমি বললাম- তুমি কি সেই কিছুটাও কোন দিন করেছো?
দেখলাম বন্ধুর চেহারাটা মলিন হয়ে গেল।
@আকাশ মালিক,
কেন সে মুমিন বান্দাকে বেহেস্তের হুর পরীর লোভ দেখিয়েছে। সেটাই তো একজন মুমিন বান্দার জন্য শ্রেষ্ট চাওয়া।
@ভবঘুরে,
আগেই তো বললাম- আল্লাহ, আল্লাহর সংবিধান কোরান, সর্বকালের সর্বযুগের আদর্শ নেতা মুহাম্মদ নামের মূলা দেখিয়ে, ইহকাল পরকালের সুখ-শান্তি দেখিয়েও ইসলামি দলগুলো কোন পাত্তাই পায়না।
এই অশিক্ষিত জনগন রাতের বেলা ওয়াজ মাহফিলে, শষ্যক্ষেতে কোরানের কোন সুরা, কোন আয়াত, কতবার পড়ে ফুঁক দিলে এক গোছা ইড়ি ধানে সত্তর গোছা ধান হবে শুনে, আর বারবার সুবহানাল্লাহ সুবহানাল্লাহ বলে। সকালে উঠে ধানের গোড়ায় সার ছিটায়।
এই কৃষাণ-কৃষাণী, খামার-কুমার, জেলে-বাইদানী, মজুর-মেথর, এরা খুবই সচেতন, এরা স্বশিক্ষিত। এরা দেশের চালিকাশক্তি প্রোডাকশনে দেহের রক্ত দিয়ে দেশকে টিকিয়ে রাখে। তারপর যদি তাদের নৈতিকতা, মানসিকতা, সচেতনতা নিয়ে প্রশ্ন তোলা হয়, তাহলে আমি বলবো এ দায়ভার, এ ব্যর্থতা তথাকথিত শিক্ষিত সুশীল সমাজের যারা সাধারন মানুষের কাছে শিক্ষার আলো পৌছাতে পারেন নি।
ঘরের বউয়ের সাথে ঝগড়া থেকে ৯/১১ এর সু-উচ্চ টুইনটাওয়ার পর্যন্ত, বেশ্যালয় থেকে ধর্মের সুতিকালয় পর্যন্ত অর্থনীতি জড়িত। সকল সমস্যার সুত্রপাত অর্থকে কেন্দ্র করে। ধর্ম একটি বায়োপ্রোডাক্ট মাত্র।
@ব্রাইট স্মাইল্,
একমত
@অসামাজিক,
– আমারো মনে হয় শুধু মুজিব-জিয়া বা খালেদা-হাসিনার পেছু না লেগে এভাবে সমস্যার গভীরে চিন্তা করা উচিত। শিক্ষিত সমাজের দায়িত্ব থাকা উচিত বেশী, অথচ সেখানে আমরাই চরমভাবে লাল-নীল হলুদে বিভক্ত হয়ে এই দায়িত্ববোধকে কলা দেখাচ্ছি।
এই প্রশ্ন সিরিয়াসলি ভাবা উচিত কেন আমাদের দেশে যেইই লংকায় যাচ্ছে সেইই অবধারিতভাবেই রাবনে পরিনত হচ্ছে?
কি জানেন, আমাদের দেশের লোকের সামগ্রীক নৈতিকতার মান আমার কখনোই খুব উন্নত মনে হয়নি। কথাটা বেশ আপত্তিজনক, তবে যা সত্য মনে হয় বললাম। যে লোককে দেখি খালেদা-হাসিনা রাজনীতিবিদদের চৌদ্দ পুরুষ ধরে গাল দিচ্ছে সেইই আবার নিজের সামান্য স্বার্থে পাড়ার তৃতীয় শ্রেনীর নেতার পদধূলি নিচ্ছে। সাম্রাজ্যবাদ নিপাত যাবার দাবী তোলা বাম নেতা আমেরিকান ভিসার জন্য ভোর রাতে বারিধারা হাজির হচ্ছে, কাফের নাসারার ধ্বংসের জন্য গলা ফাটিয়ে ওয়াজ করা লোকে আবার তাদেরই দেশে থাকার জন্য কত দুই নম্বর ফিকির করছে…এই জাতীয় উদাহরন বড় বেশী চোখে লাগে।
@আদিল মাহমুদ,
ব্যাপারটা বুঝেন না? এবার আসুন কার্ল মার্ক্স হুজুরের কাছে। ক্যাপিটাল, অর্থ, তথা পেট। এই দুনিয়া আবর্তিত হয় ‘ক্যাপিটাল’ কে ঘিরে। মানুষের জীবনে আগে এসেছে পেট, তার বহু বহু পরে এসেছে নৈতিকতা। নৈতিকতা দিয়ে পেট চলেনা আর পেট না চললে জীবন ফুটুস, মানুষের অস্তিত্বই থাকবেনা। তাই মোল্লা বেটা পেটের জন্যে আল্লাহকে বিক্রী দেয়। বিলেত আসার জন্যে আপন ভগ্নিপতিকে বাবা ডাকতে দেখেছি, বৃটিশ পাসপোর্টের জন্যে ইমাম সাহেবকে পরিচিত ব্যভিচারিণীকে বিয়ে করতেও দেখেছি। পেটের কাছে আল্লাহ, নৈতিকতা এসব নাথিং। পেটের ব্যবস্থা করে দিন, জ্ঞান, বুদ্ধি, নৈতিকতা আপনা আপনি মানুষের দুয়ারে এসে ভীড় জমাবে।
@আকাশ মালিক,
একমত। অভাবে স্বভাব নষ্ট বলে তো এজন্যই বলে।
এটা আমেরিকাতেও বড় বড় মন্দার সময় কিছুটা হলেও দেখা যায়। তবে এর একটা মাত্রা তো থাকা দরকার। মাত্রা বেশী হয়ে গেলে কোণ অর্জনই আর ধরে রাখা যায় না। তখন অভাব থেকে নৈতিকতার অবক্ষয় নয়, নৈতিকতার অবক্ষয় থেকেও অভাব হয়। আমার মনে হয় আমরা বহু আগেই এই পর্যায়ে চলে এসেছি।
@আদিল মাহমুদ,
সহমত। না হলে যে গোলাম আজম , নিজামী, সাইদি গংরা স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় অকাতরে মানুষ খুন করল, মা বোনের ইজ্জত লুঠ করল, মানুষের বাড়ীঘর জ্বালিয়ে দিল, সেই মানুষগুলোকে আবার ভোট দিয়ে এদেশের মানুষ সাংসদ বানায়, মন্ত্রী বানায় কিভাবে ?
@আদিল মাহমুদ,
ধর্মীয় রাজনীতির উত্থান দেশের জন্য ক্ষতিকর সে ব্যাপারে সন্দেহ নয়। কিন্তু রাজনীতির উত্থানের মূল কারণ ধর্মভিত্তিক দল নিষিদ্ধ না করা নয়। আমেরিকা বা ভারতেও ধর্মভিত্তিক দল নিষিদ্ধ নয়। জিয়া তো বাম ডান, আপ্যামী লীগ সকল দলকেই পুর্বাসন করেন। তেক তো কেউ বাম রাজনীতি পুনর্বাসন বা হাসিনাকে পুনর্বাসন করেছিলেন বলে অভিযোগ করে না। ধর্মভিত্তিক দলের রাজনৈতিক উত্থানের কারণ দুট প্রধান দলের ক্ষমতায় আসার জন্য জামাতকে কিং মেকার হিসেবে ব্যবহার করা, যার দরুন জামাত তার ক্ষমতায় আত্মবিশ্বাসী হয়ে উঠে। এটা হয়েছে ১৯৯৪ সালের পর থেকে। তার আগে বিএনপি-জামাত আতাঁত তো দূরে থাক, একরকম বইরী সম্পর্কই ছিল। শিবির যুবদলের সঙ্ঘর্ষ, জামাতের খালেদাকে কাফের বলা এধরনের বহূ খবর বেরোত ১৯৯২-৯৬ এর মধ্যে। এগুলোর রেফারেন্স ও আছে। পরে এ নিয়ে লেখার ইচ্ছা রইল। আর একটা কথা বাংলাদেশে ইসলামীকরণের কথা যদি বলেন তার সিংহ ভাগই এরশাদের কীর্তি (১৯৮১-৯০)।
@কালযাত্রী,
থিয়োরিটিক্যালি আপনার কথা ঠিক। তবে এটা কোনমতেই ভুললে চলবে না যে ধর্মভিত্তিক রাজনৈতিক দল পাশ্চাত্যের খোলা পরিবেশে তেমন বিষদাঁত দেখাতে পারে না। কিন্তু ভারত/পাকিস্তান/বাংলাদেশের মত দেশগুলিতে পারে।
পাশ্চাত্যে কোন ধর্মভিত্তিক দল বাইবেলীয় সমাজ প্রতিষ্ঠার দাবী তোলে না, তুললেও কেউ পাত্তা দেবে তো নাইই, উলটো গাল দেবে। আমাদের দেশে তো পরিস্থিতি তেমন নয়। অধিকাংশ মানুষ সরাসরি সমর্থন না দিলেও প্রতিবাদও করবে না।
তবে বিএনপি জামাত প্রকাশ্য আঁতাত কিন্তু ৯৪ নয়, ৯১ সালের নির্বাচনের ঠিক আগে আগেই হয়েছিল। এটা ওপেন সিক্রেট। তাদের নির্বাচনী জোট না হলেও তখন নির্বাচনী বোঝাপড়া হয়েছিল। তারই ফলশ্রুতিতে জামাতকে পরে ২ টি মহিলা আসনও উপহার দেওয়া হয়।
তবে জামাত ধীরে ধীরে তার শক্রি সঞ্চয় করেছে এরশাদ আমলে। তখন আন্দোলনের খাতিরে কেউ এই ইস্যু গুরুত্ব দেয়নি।
দেশে ইসলামীকরন জিয়া এরশাদ কার অবদান বেশী তা নিয়ে বিতর্ক হতে পারে। তবে শুরু করে গেছেন জিয়া তাতে কোন সন্দেহ নেই। জিয়া অনুসরন করেছেন আয়ুব ইস্কান্দার মীর্জা এদের। ওনার মানসিকতাও অনেকটা তেমনই ছিল। এদেশের জনগনকে ধর্মের আফিম খাইয়ে সহজেই বুদ করা যায় এই শি্ক্ষা জিয়া-এরশাদ সেখান থেকেই পেয়েছেন। এরশাদের ক্ষমতারোহন প্রক্রিয়া দেখলেই বোঝা যায় যে তিনি অন্ধভাবেই জিয়াকে অনুসরন করে করে গেছেন। হা/না ভোট, গায়ে উর্দি চাপিয়ে দল গঠন, সংবিধান কেটে ধর্মের লেবেল মারা সবই মিলে যায়।
বিএনপি জামাত সাময়িক সমস্যা হয়েছিল ৯৫/৯৬ সালে, যখন জামাত বিএনপি বিরোধী আন্দোলনে যোগ দেয়। তবে পরে তার জন্য তারা অনুশোচনাতেও ভোগে। দুদলই সেই শিক্ষা থেকে বুঝেছে যে তাদের একে অপরের সাহায্য ছাড়া কোন উপায় নেই।
@আদিল মাহমুদ,
আপনি যেটার কথা বলছেন সেটা হল ৩০ টি মহিলা আসনের উপনির্বাচন। এখানে জামাত ২টা সীট নিয়ে বাকী গুলিতে বিএনপির সঙ্গে সমঝোতা করে বিএনপিকে সরকার গঠনে সাহায্য করে। এটা জামাতেরই অফার, ইতিহাস তাই বলে। নির্বাচনের আগে একটা গোপন সমঝোতার (জোট নয়) কথা অনেকে বলে যাতে জামাত ৮০ টি আসন থেকে প্রার্থী প্রত্যাহার করে বিএনপির সুবিধার জন্য। এর বিনিময়ে জামাত গোলাম আযমের নাগরিকত্ব হয়ত দাবী করেছিলে, যেটা নিয়ে পরে জামাত প্রকাশ্যে অভিযোগ করেছিল প্রতিশ্রুতি ভঙ্গের। কিন্তু এই ৮০ টি সীট বিএনপিকে ছেড়ে দেয়াটার কোন প্রকাশ্য খবর নেই। এর আগে আওয়ামী লীগই জামাতের সাথে সমঝোতার চেষ্টা করে। আর ৮০ টি সীট বিএনপিকে ছেড়ে দিলেও মূল কথা তো বদলাচ্ছে না। সেটা হলে আওয়ামী লীগের জামাতের ব্যাপারে মোরাল হাইগ্রাউন্ডএর প্রশ্ন তোলা নিয়ে, যেটা অনেকে তোলেন না। কোন দলেরই সেটা নেই। এটাতো আগে স্বীকার করা হোক।
ইসলামীকরণ যদি বলেন, তাহলে তো আরো আগে যেতে হয়, মুজিবের সময়েই। স্বপন মাঝির মন্তব্যেই তার উল্লেখ আছে কিছুটা। আরো ডিটেইল দেয়া যেতে পারে প্রয়োজনে। জিয়া সব পার্টিকে রাজনীতিতে অংশগ্রহনে উন্মুক্ত করে দিয়েছিলেন। এটাকে ইসলামীকরণ কি ভাবে বলা যায়। আপনই ব্যাখ্যা করুন। সংবিধানে বিসমিল্লাহ যোগ করা হয়েছিল ঠিকই, যেটা সংবিধানের মূল অংশ ও নয়। সেটা করাটা একটা প্রতিকী ইসলামিক কাজ ঠিকই এবং সেটা ভুলই বটে, কিন্তু তার জন্য দেশে কোন ইসলামীকরণের কোন প্রভাব বা ছাপ পড়েনি তার আমলে। আমি এর আগের কোন একটি পোস্টে ইসলামীকরণের উপর কার কি/কতটা অবদান তার একটা লিস্ট দিয়েছিলাম। দেখেছিলেন কিনা জানিনা।
@কালযাত্রী,
৯১ সালের জামাতের সংগে বিএনপির নির্বাচনী সমঝোতা কোন গোপন বিষয় নয় বা নুতন থিয়োরী নয়। ওটা সবাই জানে। আওয়ামী লীগের সাথে জামাতের নির্বাচনী কোন আঁতাতের প্রচেষ্টা সেই সময় হয়েছে বলে তেমন কিছু আমার জানা নেই। আপনার দেওয়া লিংক এ ইয়াহু গ্রুপের যে খবর আছে তা ৯১ সালের সংসদ নির্বাচনের নয়, সংসদ নির্বাচনের পর সংসদে রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের সময় বদরুল হায়দার গোলাম আজমের দোয়া নিতে গেছিলেন সে সংক্রান্ত। সেটা সত্য, সেটাও সবাই জানে। এর মাঝে কোন গোপনীয়তা ছিল না।
এর মানেই ৯১ সালের সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ জামাতের সাহায্য চেয়েছিল? দুটো বিষয় সম্পূর্ন ভিন্ন।
তবে বলতে পারেন যে আওয়ামী লীগেরও আদর্শ ভংগ করে জামাতের কাছে ধর্না দেবার রেকর্ড আছে তা প্রমানিত। তবে তার মানেই কোনভাবেই ৯১ সালের নির্বাচনে জামাতের সাথে জোট করতে চেয়েছিল নয়। আশা করি আর ভুল করবেন না।
বংগবন্ধু মধ্যপ্রাচ্যীয় যেসব মুসলমান দেশ আমাদের স্বাধীণতার বিপক্ষে ছিল তাদের সাথে নানান কারনে কূটনৈতিক সম্পর্ক গড়ে তুলেছিলেন। ঠিক। এ নিয়ে সমালোচনা হতেই পারে নৈতিকতার ভিত্তিতে। তবে সে প্রশ্ন ধর্মের ভিত্তিতে হওয়া উচিত নয়। তাহলে আমাদের সবচেয়ে আগে আপত্তি তোলা উচিত চীনের সাথে সম্পর্কের তথা তুলে। চীন যেভাবে প্রকাশ্যে শত্রুতা করেছে সৌদী বা মুসলমান দেশগুলি অতটা করেনি। চীনের ব্যাপারে তাহলে আপত্তি ওঠে না কেন?
কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপন দেশকে ইসলামীকরন কিভাবে করা হল তা আমি জানি না। সে হিসেবে তো ভারতেও “ইসলামীকরন” হয়েছে অনেক আগে কারন তাদের সাথেও আলোচ্য মধ্যপ্রাচ্যীয় দেশগুলির বহু আগে থেকেই কূটনৈতিক সম্পর্ক আছে। এবার জানি ওয়াইসির সদস্যপদের কথা তুলবেন। তাতেও ইসলামী করন করা হয়েছে বলা যায় না। তুরষ্কের মত লিবারেল দেশও দীর্ঘদিন ধরেই ওয়াইসির সদস্য। তুরষ্কের উদার সেক্যুলার নীতির কারনে যদিও অনেক মুসলমান দেশই তাদের সমালোচনা করে।
কাজেই শুধু মধ্যপ্রাচ্যীয় দেশগুলির সাথে কূটনৈতিক সম্পর্ক বা ওয়াইসির সদস্যপদ দিয়ে ইসলামীকরন হয় না।
নীতির প্রশ্নে আপত্তিকর হলেও ৭২ সালের পর দেশের অর্থনৈতিক দূর্বলতার জন্যই ততকালীন সরকারকে মধ্যপ্রাচ্যের ব্যাপারে নীতি বদল করতে হয়েছিল। একই কারনে স্বাধীণতার চরম শত্রু চীনের সাথেও আমাদের সম্পর্ক গড়ে তুলতে হয়েছে। তাই বলে আমরা কম্যুনিষ্ট হয়ে যাবার পথে পা বাড়িয়েছি এমন কথা কেবল পাগলেই বলবে।
সেটাও বড় কথা নয়, সবচেয়ে বড় তথা, ৭২ সালের সংবিধানের ধর্মনিরপেক্ষতা কেটে ইসলামীকরন শুরু করেছিলেন জিয়া। এই সত্য অনেক ভাবেই এড়ানোর চেষ্টা করে কূটতর্ক বাধানোই যায়। হয়ত বলতে পারেন যে মুজিব নিজেই তো নামাজ রোজা ধর্ম কর্ম করতেন, নাকি?
৭৫ সালের আগে সংবিধানে ধর্মের অবস্থান কি ছিল? ধর্মভিত্তিক দলগুলি কোথায় ছিল? দেশে ধর্মভিত্তিক দল্গুলির রাজনীতি করার অধিকার দিলেন কে? নাকি মুজিব ৭২ সালে জামাতীদের সবাইকে গণহত্যা না করেই তাদের রাজনীতি করার পথ “প্রথম” খুলে দিয়ে যান?
@আদিল মাহমুদ,
আমিও জানিনা। OIC র সদস্যপদ কূটনৈতিক সম্পর্ক নয়। এটা জেনেও কূটতর্কের জন্য অবান্তরভাবে কূটনৈতিক সম্পর্কএর কথা বলছেন। OIC র সদস্যপদ শুধু মুসলীম দেশের জন্য । ভারত যদি কোন হিন্দু ধর্মভিত্তিক গোষ্ঠীতে যোগ দিত তাহলে ভারতের যুক্তিবাদীরা ধর্মনিরপেক্ষতার প্রশ্ন তুলতেন। বা আমেরিকার সেরকম কোন খ্রীষ্ট ধর্মভিত্তিকে গোষ্ঠীতে। স্বপন মাঝি ইসলামী ফাউন্ডেশনের কথা বলেছেন। এ দুটোই উদাহরণ নয়। আর ও আছেঃ (সবই রাষ্ট্রের টাকায়)
১। মুজিবের সময় প্রথমবারের মত মাদ্রাসাহ বোর্ড গঠন করা হয় মাদ্রাসাহ শিক্ষা প্রচারের সুবিধার্থে (ধর্মনিরপেক্ষ বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার উপযুক্ত পদক্ষেপই বটে)।
২। টঙ্গীতে তবলীগ জামাতের জন্য জমি বরাদ্দ যার জন্য আজ বিশ্ব ইজতেমার বোঝা বহন করতে হচ্ছে আমাদের। আর এই ইজতেমার সময় বাইরের জিহাদী প্রচারকদের আগমনও ঘটে বাংলাদেশে। বায়তুল মোকাররম মসজিদের জন্য তিন একর জমি বরাদ্দ। এই বায়তুল মোকাররম মসজিদই পরে জিহাদী প্রচারণার হটবেড বনে গেল।
৩। জুয়া ও মদ নিষিদ্ধ করা। ব্যক্তিস্বাধীনতার উপর হস্তক্ষেপ। এটা ইসলামী দেশেই মানায়। পাকিস্তানেও এটা করা হয়নি ১৯৭১ এর আগে।
আরে একটা তোলা যায় যদি যদি কাউকে সত্যিকার অর্থে ধর্মনিরপএক্ষ নেতা বলা যায় (যেমনটি জাস্টিস হাবিবুর রহমানের কথাত বোঝা যায়)। সেটা হল সব বক্তৃতায় মুজিব কথায় কথায় ইনশাহাল্লাহ বলতেন আর বলতেন আমি মুসলীম এক আল্লাহ ছাড়া আর কাউকে ভয় পাইনা। এটা হিন্দু খ্রীষ্ঠান বৌদ্ধ দর্শকদের প্রতি সম্মানবোধ প্রদর্শন করে না। যাহোক এটাকে উপেক্ষা করলেও উপরের ১-৩ কে উপেক্ষা করা যায় না।
একনায়কতন্ত্রে সংবিধান অপাংতেও। ধর্মনিরপক্কেহতা আওয়ামী লীগের বা মুজিবের স্বপ্নের ফসল নয়। ডঃ কামাল হোসেন সংবিধান রচনা করেছিলেন। আর ধর্মনিরপক্ষতা বামপন্থী ছাত্র নেতাদের চাপে আওয়ামী লীগে সস্থান পায়। আওয়ামী লীগের স্বাধীনতা পূর্ব কোন ম্যানিফেস্টতে (ছয় দফা) এটা ছিল না। আর বাক্সাল ধর্মনিরপক্ষতা কায়েম করার জন্য হয় নি। স্বপন মাঝি যেমনটি বললেন তখনকার বাস্তবতায় এটা সম্ভব ছিলা না।
অতয়েব খোলা পরিবেশ কামনীয় নয়? পাশ্চাত্যের খোলা পরিবেশ তো গণতন্ত্রের (১০০% নয় যদিও) কারণে। তাহলে আপনার কথায় যেহেতু বাংলাদেশে গণতন্ত্রের পরিবেশে ধর্মভিত্তিক রাজনৈতিক দল বিষদাঁত দেখাতে পারে সেহেতু গণতন্ত্রেরই দরকার নেই? অনেকে তা বলেনও। আপনি কি তাই বলছেন? আপনি গনতন্ত্রের বদলে কি বাক্সাল সমর্থন করছেন কারণ কেবল তাহলেই ধর্মভিত্তিক রাজনৈতিক দলকে নিয়ন্ত্রণে রাখা যেত? ঐ কারণেই বাক্সাল হলে আমারও তেমন আপত্তি হত না। কিন্তু বাক্সাল হয়েছিল আওয়ামী লীগকে চিরস্থায়ীভাবে বাংলাদেশের একমাত্র দল করে তাদের দুর্নীতি/কুকীর্তিকে ডিফেন্ড করার জন্য এবং তা চালিয়ে যাওয়ার জন্য। আর একটা কারণ ছিল চীনপন্থী বামদের প্রতিহত করার জন্য (এতে ভারতের স্বার্থও ছিল, সঙ্গত কারণেই, নক্সাল সমস্যার জন্য)। কিন্তু প্রথমটাই মুখ্য কারণ ছিল।
@কালযাত্রী,
দুঃখিত অনিচ্ছাকৃত ভুলের জন্য। বলতে চেয়েছিলম যে খোলা পরিবেশে বিষ দাঁত দেখাতে না পারলে তো খোলা পরিবেশই কাম্য হওয়া উচিত। বাক্সাল তো খোলা পরিবেশের পরিপন্থী।
@কালযাত্রী,
জগতে কোন সিষ্টেম ১০০% খাঁটি আছে? সব কিছুই বিচার হয় আপেক্ষিকতার বিচারে। আজ আমেরিকা উইকিকিলিসের ব্যাপারে যে নীতি দেখাচ্ছে তাতে বাকস্বাধীনতা যাদের মূলনীতি সেই আমেরিকার গনতন্ত্রের মান নিয়ে প্রশ্ন ওঠা খুবই স্বাভাবিক, তাই বলে কোন পাগলেও সমীকরন কষে দেখাতে যাবে যে আমেরিকা ও ইরান/ বাংলাদেশের গনতন্ত্রের মান একই?
আমি কি দাবী করেছি যে বংবন্ধুর সময় বাংলাদেশ ১০০% খাঁটি ধর্মনিরপেক্ষ কোন দেশ ছিল? বা তিনি ধর্মীয় পক্ষপাতমুলক কিছুই করেননি? আপনি যদি মনে করেন যে আমি তেমন কিছু দাবী করেছি তবে তর্কের কোন মানে দেখি না। আমার মনে হয়েছিল যে তর্কের বিষয় ছিল দেশে ধর্মীয় রাজনীতির উদ্ভব কিভাবে ঘটল সেটা।
ধর্মীয় শিক্ষালয়ে বা ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানে সরকারী অর্থায়ন যদি ধর্মনিরপক্ষতা বিচ্যুতির বড় লক্ষন হয়ে থাকে (বড় ধরনের না হলেও ধর্মনিরপক্ষতা লংঘন অবশ্যই বলা যায় তাতে সন্দেহ নেই) তবে আমেরিকা, ইংল্যান্ডসহ পশ্চীমা বিশ্বের সবাই যাদের ধর্মনিরপেক্ষ হিসেবে ধরা হয় তারা কেউই ধর্মনিরপেক্ষ না (থিয়োরিটিক্যালী আসলে তাই সেটা মানি)। সেসব দেশ রাষ্ট্রীয় অর্থে ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান চালায়, ধর্মভিত্তিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানেও অর্থায়ন করে থাকে। ধর্মভিত্তিক রাজনৈতিক দল সেসব দেশে দেখা যায় (যদিও তাদের কোন প্রভাব সেসব দেশে ভার্চুয়ালি নেই), কাজেই আর যায় কোথায়? জগতের সবাই আসলে ধর্মবাদী রাষ্ট্র, কি বলেন যাদের সাথে পাকিস্তান বা ইরান সৌদী আরবের কোনই তফাত নেই? আদর্শ অর্থে ধর্মনিরপেক্ষ দেশ বলতে কম্যনিজমের দেশগুলি বাদে আর কেউই আধুনিককালে ছিল বা আছে বলে আমার জানা নেই।
ইস্যুটা ছিল এখানে দেশে ধর্মবাদী রাজনৈতিক দলগুলির উত্থানের পেছনে কার কি ভূমিকা সেটা। সেখান থেকে চমতকারভাবে সরিয়ে নিয়ে গেছেন ভিন্ন দিকে। মাদ্রাসা বোর্ড বা ইসলামী ফাউন্ডেশন গঠন নিঃসন্দেহে দেশের ধর্মনিরপেক্ষ ভুমিকাকে ক্ষুন্ন করেছে, তবে তার সাথে ধর্মভিত্তিক রাজনৈতিক দলগুলির পূণঃজাগরন কতটা জড়িত তা আমি বুঝতে অক্ষম।
বংগবন্ধু দেশে নুতন করে মাদ্রাসা ব্যাবস্থা চালু করে থাকলে বুঝতাম যে সমস্যা আসলেই বেশ প্রগাঢ়, উনিই প্রথম ধর্মভিত্তিক শিক্ষা ব্যাবস্থা চালু করে মহা অন্যায় করে গেছেন। ঘটনা কি আসলেই তা? মাদ্রাসা এ দেশে বহু আগে থেকেই ছিল। এই ব্যাবস্থা বৈষ্যম্যমুলক ও বোঝার মত চেপে বসলেও এটা বন্ধ করা সোজা ব্যাপার নয়। এর সংস্কারের জন্য সেই পাকিস্তান আমল থেকেই বহু কমিটি হয়েছে। তবে কাজের কাজ কোন কমিটিই করতে পারেনি মুক্তিযুদ্ধের আগ পর্যন্ত। সেই গতবাঁধা প্রাচীনপন্থী শিক্ষা এসব প্রতিষ্ঠানে দেওয়া হত। একে আধুনিকায়নের প্রথম পদক্ষেপ নেয় বংগবন্ধু সরকার, কাজ কতটা হয়েছে আসলেই তা ভিন্ন ব্যাপার। আপনার অনেক ধারনার মতই এখানেও একটি বড় তথ্যগত ভুল আছে। বংগবন্ধু সরকার মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ড নামক কিছু করেননি। বংগবন্ধু সরকার এ দেশে প্রথম বারের মত মাদ্রাসা শিক্ষার আধুনিকায়নে বাধ্যতামূলক ভাবে বাংলা, ইংরেজী, গনিত, সাধারন বিজ্ঞান, ও সামাজিক বিজ্ঞান অন্তর্ভুক্ত করে। এর মানে কি বংগবন্ধু সরকার মাদ্রাসা বোর্ড গঠন করেছিল? তাদের এ পদক্ষেপকে আমি খারাপ বলি কেমন করে? আর এই আধুনিকায়নের ফলে ধর্মভিত্তিক উগ্র রাজনৈতিক দলের উত্থানকে উতসাহিত করা হয় নাকি নিরুতসাহিত করা হয় তা আপনার এবং সবার বিবেচনার জন্য ছেড়ে দিলাম। মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ডের অফিশিয়াল সাইট থেকে আপনার জন্য কিছু তথ্য দিলাম। In 1971 after having the independence of Bangladesh, step has been taken for the active modernization of Madrasah Education. Bengali, Mathematics, English, Social science, General Science are made compulsory. In 1978 Madrasah Education Board was formed under Ordinance for the Modernization of Madrasah Education. The Madrasah Education Board started its activity independently in 1979। ষ্পষ্টতই দেখা যায় যে মাদ্রাসা বোর্ড গঠন করা হয় জিয়ার আমলে। যদিও আমি বলব না যে মাদ্রাসা বোর্ড গঠন করার কারনে দেশে ধর্মভিত্তিক রাজনীতি প্রতিষ্ঠা হয়।
প্রায় একই কথা খাটে ইসলামী ফাউন্ডেশনের বেলাতেও। ইসলামী ফাউন্ডেশন নুতন করে বংবন্ধু সরকার গঠন করেননি। ১৯৫৯ সাল থেকেই দেশে দারুল উলুম নামে এই সংগঠন ছিল, কালক্রমে যার নাম হয় ইসলামী একাডেমী। ৭১ সালে পাক বাহিনীর তান্ডবে সহায়তা ও ধর্মের নামে রাজনীতি করার অভিযোগে ৭২ সালে এই সংগঠন নিষিদ্ধ করা হয়। আবার ৭৫ সালে এই ফাউন্ডেশন নুতন করে গড়ে তোলা হয়। এটা একটা ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান হলেও এর সাথে রাজনীতির কোন যোগ অন্তত সেই আমলে ছিল না। সন্দেহ থাকলে এই ফাউন্ডেশন কেন গঠন করা হয়েছিল তা একটু কষ্ট করে দেখে নিন। তাতে রাজনীতির কোনই নামগন্ধ নেই। বংগবন্ধুর আমলে নুতন মসজিদও নিশ্চয়ই হয়েছিল, মসজিদের পেছনে সরকারী অর্থও দেওয়া হত। এখন তাই বলে বলব যে মসজিদের পেছনে টাকা খরচ করে বংগবন্ধুই দেশে প্রথম ধর্মীয় রাজনীতি আনয়ন করেন? আবারো বলতে হয় যে পৃথিবীতে তাহলে কোন দেশেই ধর্মনিরপেক্ষতা নেই, বেহুদাই সৌদী বা ইরানকে গাল দেওয়া।
তবলীগ জামাত/বিশ্ব ইজতেমার মাঠ, বায়তুল মোকারম, বহু কথা বলে গেছেন যেগুলি সম্পর্কেও একই কথাই বলা যায়। এসবের সাথে ধর্মীয় রাজনীতির কোন যোগ নেই। এ দেশে ধর্মের প্রভাব অতি ব্যাপক। মানুষের কাছে প্রার্থনামূলক ধর্ম চর্চার খুবই গুরুত্বপূর্ন, সে কথা বিবেচনা করেই এসব করা হয়েছিল। এসবের সাথে এখন জেহাদী সম্পর্ক খুজে পেয়েছেন। দয়া করে দেখান ৭৫ পর্যন্ত দেশে মোট কয়টি জেহাদী বোমা ফেটেছিল। কয়টি মাদ্রাসায় সন্ত্রাসী আলামত পাওয়া গেছিল একটু দেখান। স্বীকার করতে হয়ত চাইবেন না, তবে সত্য হল যে ৭৫ এর পর থেকেই ধর্মভিত্তিক উগ্র রাজনৈতিক দলগুলির উত্থান ঘটার পর তাদের হাতে এসব প্রতিষ্ঠান চলে যাবার পরই উগ্রবাদের দ্রুত প্রসার ঘটে, ফলে এসব জেহাদী সমস্যার উদ্ভব ঘটে।
জুয়া ও মদ নিষিদ্ধ শুধু ইসলামী দেশেই মানায় এমন যুক্তি খুব ভাল শোনায় না। পতিতাবৃত্তি সম্পর্কে কি বলেন? আমেরিকা কানাডায় পতিতাবৃত্তি এখনো আইনত নিষিদ্ধ, ইউরোপের অনেক দেশে সম্পূর্ন আইনী। সেসব দেশের বহু প্রদেশে জুয়া খেলাও নিষিদ্ধ। এখন ইউরোপের কোন দেশ বলবে যে আমেরিকা/কানাডা আসলে বাইবেল বা কোরান ভিত্তিক কোন ধর্ম রাষ্ট্র? ভারতেও গুজরাটের মত গুরুত্বপূর্ন প্রদেশে মদ্যপান নিষিদ্ধ, মিজোরামেও নিষিদ্ধ। আরো কিছু প্রদেশেও মদ্যপান সময়ে সময়ে নিষিদ্ধ করা হয়। একটি দেশের মূল যা কালচার সরকারগুলি সেই কালচারকেই সমর্থন করে। এ দেশে মদ্যপান বা জুয়া আইনী করা হোক এই প্রশ্নে গনভোট নেওয়া হলে কি ফল আসবে বলে আপনি মনে করেন? ধর্ম বিশ্বাস নির্বিশেষে, উদার কট্টর নির্বিশেষে কি ফল আসবে তা আন্দাজ করা এমন কিছু শক্ত না।
ওআইসির কথা তোলায় এত রাগ করলেন কেন? অবান্তরই বা হতে যাবে কেন? আপনিইই তো বলেছিলেন স্বপন মাঝির কথা পড়তে। সেটা পরেই তো ওআইসির কথা তুললাম। ওআইসির কথা বলে কি বলে গেলেন কিছুই বুঝলাম না। ওআইসিতে যোগ দিয়ে নিশ্চয়ই বাংলাদেশ ধর্মনিরপেক্ষতার পরিচয় দেয়নি। তবে তার সাথে ধর্মভিত্তিক রাজনীতির কি সম্পর্ক বুঝলাম না। তুরুষ্কের উদাহরনের ব্যাপারে কি বলেন? ওয়াইসির সক্রিয় সদস্য হ্বার পরও কিভাবে তারা সেক্যুলার দেশ হিসেবে সব মুসলমান দেশের গাল খায়? বিশ্বে ওআইসির মত খৃষ্টান বা হিন্দু রাষ্ট্রগুলির কোন সংগঠন নেই। তাই সেসব সংগঠনে কে যোগ দিল না দিল এমনতর কথাবার্তার কোন মানে নেই। আর সেক্যুলার ভারতে ধর্মভিত্তিক উগ্রবাদী রাজনৈতিক দলগুলি বহাল তবিয়তেই আছে। সেসব দলের পূণরুত্থান ঘটেছিল জিয়া সাহেবের সক্রিয় সহায়তায়। বংগবন্ধুর ধর্মনিরপেক্ষ বাংলাদেশে অন্তত তেমন কিছু ছিল না।
এই সত্য এড়াতে এক গাদা অপ্রাসংগিক কথা টেনে গেলেন। আগেই যা ভবিষ্যতবানী করেছিলাম তাও সত্য প্রমান করেছেন। বংগবন্ধু ব্যাক্তি জীবনে ধার্মিক ছিলেন তা ধরেও টান দেবার লোভ সামলাতে পারেননি। পারবেন কি করে? নইলে জিয়া সাহেবের দায় কিভাবে ঢাকা যাবে? তার দায় ঢাকার উপায় হল মুজিবও একই দোষে দুষ্ট সেটা প্রমান করা।
আর নাহলে যেই সংশোধনীর মাধ্যমে দেশ থেকে ধর্মনিরপেক্ষতা আইন করে মুছে ফেলে ৭১ সালের গলাকাটা দলগুলিকে দাওয়াত দিয়ে এনে প্রতিষ্ঠা করা হল সেই ৫ম সংশোধনীর ধারে কাছে না গিয়ে সেই গতবাধা বাকশাল ধরে টান দেবেন কেন? আমি জিজ্ঞাসা করেছিলাম যে ৭৫ এর আগে ধর্মীয় রাজনীতি বা ধর্মভিত্তিক দলগুলির অবস্থান কোথায় ছিল? সরাসরি জবাব দেননি। কারন জবাব দিলেই যে ফেঁসে যাবেন। অমনি আনতে হল বাকশাল, ভাবখানা যে বাকশাল করার পরেই কেবল ধর্মভিত্তিক দলগুলির উত্থান বা পতন ঘটেছিল। বাকশালের সাথে ধর্মভিত্তিক রাজনীতির কি সম্পর্ক? বাকশাল ভাল না খারাপ সেই আলোচনা এখানে গৌণ। বাকশালের সাথে ধর্মভিত্তিক রাজনীতির কোনই যোগ নেই। আমি বংগবন্ধু বা তার সরকারের অনেক কিছুর মতই বাকশালের সবসময়ই নিন্দা করে এসেছি। শুধু মুক্তমনায় নয়, আমি কবে কোথায় বাকশাল সমর্থন করলাম দেখান। বাকশাল টেনেছেন ইচ্ছাকৃতভাবে যাতে তর্ক ঘোরানো যায়, ভাল করেই জানেন যে বাকশাল আওয়ামী বা মুজিব সমালোচনার সবচেয়ে ভাল উপায়।
আপনার যুক্তিবোধও বেশ উপভোগ করার মত।
– মানে দাঁড়ালো যে ৭২ সালের ধর্মনিরপক্ষ সংবিধানের কৃতিত্ব আসলে মুজিবের বা আওয়ামী লীগেরই নয়। ডঃ কামাল হোসেনের ও বামপন্থী ছাত্রনেতাদের। বড়ই মজার যুক্তি। একটি দল সংসদে বিল এনে তা পাশ করালো আর সে কৃতিত্ব সে দলের নয়। কৃতিত্ব হতে পারে ডঃ কামাল বা কিছু ছাত্রনেতাদের? আমি মুগ্ধ।
মুক্তিযুদ্ধ্বের মূল চেতনাই ছিল ধর্মীয় ইসলামী জাতীয়তাবাদের বিপরীতে বাঙালি জাতীয়তাবাদ, যার চরিত্র হল ধর্মনিরপেক্ষ ব্যাবস্থা। এর মধ্যে এক ডঃ কামাল বা কিছু ছাত্রনেতার কোন ভূমিকা নেই। সেই চেতনারই প্রতিফলন ঘটেছিল ৭২ সালের সংবিধানে। ডঃ কামাল ছিলেন সেই সংবিধানের একজন মূল রচয়িতা। তবে তিনিই একাই দলের বিরুদ্ধে গিয়ে ধর্মনিরপেক্ষতা ঢুকিয়েছিলেন তা দয়া করে একটু দেখান। অন্তত দেখান যে মুজিব সে সময় ধর্মনিরপেক্ষতার বিরোধীতা করেছিলেন। দেশকে জিয়া/এরশাদের কায়দায় ইসলামী প্রজাতন্ত্র বানাতে চেয়েছিলেন। দয়া করে রেফারেন্সসহ দেখাবেন।
আর যদি আপনার কাছে জামাত শিবিরের আইনী উত্থানের চেয়ে দেশে ইসলামী ফাউন্ডেশন গঠন, মদ জুয়া নিষিদ্ধকরন এ জাতীয় কার্যকলাপ বেশী ক্ষতিকর মনে হয় তবে আল্লাহ হাফেজ। ভাল থাকেন।
এবার তত্ত্ব কথা রেখে একটি মাঠের কথা বলি। বিএনপি আওয়ামী লীগ দুদলেরই বিশাল ভোট ব্যাংক আছে। কম বেশী হলেও এন্টি-ভোট ব্যাংকও আছে। বিএনপির এই ভোট ব্যাংকের একটি উল্লেখযোগ্য অংশের কাছে বিনপি বেশী গ্রহনযোগ্য তাদের ধর্মীয় পক্ষপাতিত্বের কারনে। আওয়ামী লীগ ঘৃন্য তাদের তূলনামূলক ভাবে ধর্মীয় নিরপেক্ষতার কারনে। এটাও হয়ত স্বীকার করবেন না। আওয়ামী লীগ মানেই হিন্দু কাফেরের দল, ইসলাম বিদ্বেষী দল এই ধারনা অনেকে প্রকাশ্যে , অনেকে মনে প্রানে পোষন করেন। এই ধারনা তো তারা এমনি এমনি পোষন করেন না।
তবে অন্তত একটি কথা বলি দয়া করে একটু গুরুত্ব দেবেন। বিতর্ক হয় তথ্যগত বা বিশ্লেষনগত এই দুই এর ভিত্তিতে। কোন ঘটনা সত্য হলে তা কে কিভাবে বিশ্লেষন করেন তা এক কথা। এখানে মতের অমিল হতেই পারে, খুব বড় ব্যাপার না। আপনার কাছে সব মিলিয়ে এ দেশে ধর্মভিত্তিক রাজনৈতিক দলের উত্থানের পেছনে জিয়া-মুজিবের ভূমিকা সমান বা মুজিবের ভূমিকা বেশী মনে হলে আমার আর তেমন কিছুই বলার নেই। যার যা মত। কেস খতম।
তবে তথ্যগত ভুল কেউ দিলে তা হয় স্বীকার করতে হয় আর নয়ত সূত্র দিয়ে ডিফেন্ড করতে হয়। আপনি এই দিক দিয়ে বেশ দূর্বল আগে থেকেই লক্ষ্য করেছি। ক’মাস আগে দাবী করেছিলেন ডালিমের স্ত্রীকে রেপ না হলেও অন্তত “অপমান” করেছিল গাজী গোলাম মোস্তফার ভাই ও আওয়ামী লীগের লোকজন। খোদ ডালিমের ওয়েব সাইট থেকে তারই ভাষ্যে সেই আলোচিত ঘটনার পুরো বর্ননা দিয়েছিলাম যাতে তেমন কিছুই নেই। আপনার কোন ভাষ্য তারপর পাওয়া যায়নি। তবে আপনার কথা ঘোরানোর ক্ষমতা খুবই ভাল। এই লেখাতেও সম্পূর্ন আন্দাজের ওপর ভিত্তি করে বিএনপি নাকি ৯১ সালে জামাতের সংগে কোন নির্বাচনী সমঝোতা করেনি, আওয়ামী লীগই নাকি ৯১ সালের সংসদ নির্বাচনে জামাতের সাথে জোট করতে চেয়েছিল এমন অদ্ভুত তথ্য দিলেন। সূত্র হিসেবে কি এক গুগল গ্রুপের লিংক দিলেন যাতে আবার সেই খবরের কোন কথাই নেই। আছে যা সবাই জানে সেই বদরুল হায়দারের গোঃ আজমের দোয়া প্রার্থনার ঘটনা। এই ব্যাপারে শুধু আমি না, আরো কয়েকজন আপত্তি করেছিলেন, আপনি যথারীতি নীরব। হয়ত যথারীতি কথা ঘোরানোর কায়দায় বলে বসবেন যে বদরুল হায়দারের প্রেসিডেন্ট পদে দোয়া চাওয়া মানেই আওয়ামী-জামাতের নির্বাচনী জোট! আজকে আবার বংগবন্ধু মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ড গঠন করে মহা অন্যায় করেছেন এমন পিলে চমকানো সংবাদ দিলেন যা ভুল দেখিয়েছি। আমি কে কিসের বিদ্বেষী পন্থী এসব কথাবার্তা বলা খুবই অপছন্দ করি। তবে দয়া করে তথ্যভিত্তিক আলোচনায় একটু সতর্ক থাকবেন। আমার এত ফালতু সময় নেই যে সব ধরে ধরে লেগে থাকি।
মুজিব জিয়া এদের সবাইকেই সমালোচনা করতে অসংখ্য সত্য ঘটনাই যথেষ্ট। গালগল্পের কোন প্রয়োযন নেই। তাতে ফল হয় উলটো। সামগ্রিকভাবে দুজনের কে বেশী ভাল বা মন্দ এর কোন সমাধান কোনদিন হবে না। তবে কোন নির্দিষ্ট ইস্যুতে ১০ ও ১০০ উভয়েই শুন্য থেকে বড় তাই ১০=১০০ এমন যুক্তি চলে না।
@আদিল মাহমুদ,
ওপরে একটু কারেকশন আছে।
“আর সেক্যুলার ভারতে ধর্মভিত্তিক উগ্রবাদী রাজনৈতিক দলগুলি বহাল তবিয়তেই আছে।
বংগবন্ধুর ধর্মনিরপেক্ষ বাংলাদেশে অন্তত তেমন কিছু ছিল না।”
– এখানে ”
সেসব দলের পূণরুত্থান ঘটেছিল জিয়া সাহেবের সক্রিয় সহায়তায়।” পড়তে হবে।
@আদিল মাহমুদ,
ধনতন্ত্রের চূড়ান্ত বিকাশ আর ভারতীয় উপমহাদেশে আধা-সামন্তবাদ বা সামন্তবাদের অবশেষগুলো রয়ে গেছে বলে সম্ভব।
@আদিল মাহমুদ,
তার কারন দেশের অধিকাংশ মানুষ নিরক্ষর ও অসচেতন। একই সাথে প্রোপাগান্ডার শিকার।
@ভবঘুরে,
সেটা একটা বড় কারন। আগেই বলেছি যে দেশের মানুষ কে কত বড় অন্যায় করে ক্ষমতায় আসল তা নিয়ে তেমন ভাবিত হয় না। দেশের লোকের চাওয়া বড় বেসিক, কারন পেটের চিন্তাতেই অধিকাংশ লোকের সময় ব্যায় করতে হয়।
তবে শিক্ষিত সমাজও তেমন চিন্তা করে বলে মনে হয় না। শিক্ষিত সমাজের মধ্যেই বরং পার্টিজান প্রবনতা কাজ করে বেশী। তার একটি উদাহরন হতে পারে স্বাধীনতার ঘোষনা কুতর্ক। এই কুতর্ক জিইয়ে রেখেছে বা রাখতে চাচ্ছে অশিক্ষিত জনসাধারন নয়, শিক্ষিত সমাজেরই অংশ বিশেষ।
স্বাধীনতা পরবর্তী সময়ে দেশের যুদ্ধকালীন সময়ের ক্ষতি পুষিয়ে নিতে ধর্মনিরপেক্ষ বা সমাজতান্ত্রীক রাষ্ট্রসমূহ তেমন জোরালোভাবে এগিয়ে আসতে বা সমর্থন যোগাতে দেখা যায়নি। যুদ্ধ-বিধ্বস্থ দেশের অর্থনৈতিক দূর্বলতাকে কাটিয়ে উঠতে বঙ্গবন্ধুকে ইসলামী এবং পশ্চিমাদের নিকট হাত পাততে বাধ্য করেছে বলেই আমার মনে হয়। এত কিছুর পরও শেষ রক্ষা হয়নি। নির্মমভাবে তাঁকে সপরিবারে প্রাণ দিতে হয়েছে। অথচ লক্ষ্য করুন,তাঁর মৃত্যুর পরপরই মুসলিম বিশ্ব এবং পশ্চিমারা কীভাবে এগিয়ে এসেছে। তাছাড়া কিছু বাম নামধারী দল এই যুদ্ধ-বিধ্বস্থ দেশে কী অরাজগতাই না সৃষ্টি করেছিল। কিছু ভুল তাঁর হতেই পারে। কিন্তু তাঁর সাথে জিয়ার তুলনা করবেন না। আব্দুল গাফফার চৌধুরীর মতে “জিয়া ছিলেন মীরজাফরের চেয়েও বড় বিশ্বাষঘাতক।” ধন্যবাদ সবাইকে।
@বোকা বলাকা,বঙ্গবন্ধুর সাথে জিয়াউর রহমান কে তুলনা করা হয়নি এই লেখায়। যেহেতু ওনারা দুজনের নামে দেশের বর্তমান বড় দল দুটি চলছে তাই ওনাদের নাম একসাথে চলে আসে। স্বাধীনতা পরবর্তি বাংলাদেশের সামনেও সুযোগ ছিল কিন্তু আজকের মত তখনো দেশের ভুল নেতৃত্ব সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে পারেনি। একটি রাজনোতিক দলের ভুল বা অপরাধ কে অন্যদল উদাহরন হিসেবে নেয় তবে তা থেকে শুধরাবার জন্য না বরং নিজেদের অপরাধ “জাস্টিফাই” করার জন্য আর দেশের ৮০% মানুষ ও ঐ পথ অনুসরন করে একে অপরকে দোষারপ করে।
জিয়ার সাথে বঙ্গবন্ধুর তুলনা আমিও পছন্দ করি না কারন দুজনের ঐতিহাসিক মুল্যায়নের স্থান দুটি সম্পূর্ন আলাদা।
আর গীতিকার গাফফার চৌধুরীর মতামতটা একটু চরমপন্থী।
আপনাকেও ধন্যবাদ।
এ রায়টুকু দে’য়ার আগে, আমরা নিজেরাই আয়নায় নিজেদেরকে একটুখানি দেখে নেই।
সমাজে নানা রকম দ্বন্দ্ব রয়েছে, এ দ্বন্দ্বগুলোকে কেন্দ্র করে, সমাজ আন্দোলিত হয়। সেই আন্দোলনকে কোন শ্রেণী কতটা দক্ষতার সাথে, এর গতি-প্রকৃতি নিয়ন্ত্রণ-নির্ধারণ করতে পারে তার ওপর নির্ভর করে ফলাফল কার পক্ষে যাবে।
তো জনগণকে দোষ দে’য়ার আগে আমরা যারা অগ্রসর চিন্তক, তারাই কি বিভিন্ন আন্দোলনের বা পরিবর্তনের বা অর্জনের চরিত্রগুলোকে যথার্থ মূল্যায়্ণ করতে পেরেছি?
প্রশ্ন করতে করতেই মানুষ এগোয়। আপনার কৌতূহল এবং একটি যৌক্তিক সমাজ প্রতিষ্ঠার স্বপ্নকে স্বাগত।
@স্বপন মাঝি, ধন্যবাদ আপনার গঠনমুলক মন্তব্যের জন্য।আয়নায় নিজেকে দেখে মনে হয় সামাজের চতুর্মুখী চাপে বিক্ষিপ্ত এবং উজ্জল কোমল ভবিষ্যতের সপ্নদেখা অলস একজন।এই চেহারায় নিজেকে আর সহ্য করা যাচ্ছে না তাই আপনি যেমনটা বললেন,বিভিন্ন আন্দোলন বা পরিবর্তন বা অর্জনের চরিত্রগুলোকে নিজের দৃষ্টিতে মুল্যায়ণ করে যাচ্ছি যদি মুল্যায়ন যথার্থ হয়।
আমার কৌতুহল ও সপ্নকে স্বাগত জানিয়েছেন আপনাকে ধন্যবাদ।ভাল থাকবেন।
বাংলাদেশের রাজনীতিকে বিশ্লেষণ করতে গিয়ে যদি সেই ষাট সত্তর দশকের দুই পরাশক্তির আন্তর্জাতিক প্রভাব বিস্তারের প্রয়াসকে বাদ দেয়া হয় তাহলে তা হবে অতি সরলীকরন। দ্বিতীয় বিশ্ব যুদ্ধোত্তর পুজিবাদী ও সমাজতান্ত্রিক প্রভাবের মধ্যে পুজিবাদী বিশ্বের প্রবল বিরোধের মুখে একটা যুদ্ধ বিদ্ধস্ত দেশকে পূনর্গঠন করা বিশ্বের সবচাইতে দক্ষ ও যোগ্য নেতার পক্ষেও সোজা নয় বলেই আমার বিশ্বাস। জিয়াউর রহমানের যে কাজটিকে আমার সবচাইতে নেতিবাচক মনে হয় তা হলো একজন মুক্তিযোদ্ধা হওয়ার পরেও স্বাধীনতা যুদ্ধের মাত্র ৫ বছর পরে তিনি মুক্তিযুদ্ধ বিরোধী শক্তিকে একত্রিত করে তাদের রাজনৈতিক পূনর্বাসন। এর ফলে তিনি যে রাজনৈতিক অসহনশীলতার পত্তন ঘটিয়ে যান যার ফলশ্রুতি হিসাবে আজকে আমরা রাজনৈতিক মঞ্চের এত অধ:পতন লক্ষ্য করছি। যতই গনতন্ত্রের কথা বলি , মুক্তিযুদ্ধের চেতনার শক্তি আর এর বিরোধী শক্তির মধ্যে কোন সহাবস্থান বা সহমত হতে পারে না। এটা অনেকটা তেল ও পানিকে একত্রে মিশানোর মত যা সম্ভব নয়। আমি আশ্চর্য হয়ে লক্ষ্য করি অনেক বিদগ্ধ পন্ডিত ব্যাক্তিই এ সহজ সরল বিষয়টাকে বুঝতেই চান না।
@ভবঘুরে,
আর সে জন্য ধর্মনিরপেক্ষ রাষ্ট্র এর কর্ণধার প্রতিষ্ঠা করলেন ইসলামিক ফাউন্ডেশন, হাজির হলেন ওআইসি-র (Organization of the Islamic Conference ) সম্মেলনে। যুদ্ধের নয় মাস যার নেতৃত্বে সব কিছু পরিচালিত হলো, তাকে অর্থমন্ত্রী-র পদ থেকেও সরিয়ে দে’য়া হলো। মানবেন্দ্র লারমাকে বলা হলো বাংগালী হয়ে যেতে। আমার কেন জানি মনে হয়, যুদ্ধ-পূর্ব সময়ে তিনি যদি প্রধান মন্ত্রি হতেন, তা’হলে হয়তো হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী-র মত বলে বসতেন, আমরা ৯৮% স্বায়ত্বশাসন পেয়ে গেছি।
শুধু কি এখানেই শেষ? কর্নেল তাহেরকে ফাঁসিতে ঝুলালেন। সে কত বড় মুক্তিযুদ্ধা বুঝলাম নিজের অভিজ্ঞতায়। খুব সম্ভব সময়টা ‘৮০ হবে। আমি তখন নৌ-স্কাউট। রিয়ার এডমিরাল এম, এইচ খান আসবেন, তার বিদায় উপলক্ষে নৌ-বাহিনীর আস্তানা হাজি মোহসিন – এ আয়োজন করা হলো এক অনুষ্ঠানের। আমাদের শেখানো হলো, এহেলান শেহেলান, মার হাবা মার হাবা ( যার অর্থ তখনো বুঝিনি, এখনো জানি না, জানতাম এটা বাংলা নয় আরবি অথবা উর্দু হবে)। আমরা প্যারেট করছি আর তোতা পাখির মত আওড়ে যাচ্ছি, এহেলান শেহেলান মার হাবা হাবা। আর বিদায় বেলায় “আল বিদা।” ধন্য জিয়া। কে জানে, আসলে সে কি ছিল?
@ভবঘুরে,
জ্বী,খুবই যথাযথ বলেছেন।আমার বিশ্বাস সোভিয়েত পতনের আগ পর্যন্ত বাংলাদেশের ভাগ্য নির্ধারনে দেশের নেতৃত্ব বা জনগনের তুলনায় পরাশক্তির প্রভাব বেশি কার্যকরী ছিল।এবং আগামীতে এই বিষয়ে একটি লেখা দেয়ার ইচ্ছা রয়েছে। তবে,এখানে আমি শুধু লোকাল প্রেক্ষপটে আমাদের মুল দুই দলের দুই নেতার ভুমিকার কথা বলেছি কারন তাদের নিয়ে প্রতিযোগীতামুলক অসুস্থ রাজনীতি হয় এবং খুবই অবাক হবার মত বিষয় যে দেশের উল্লেখযোগ্য জনসংখ্যা এসবেই মেতে ওঠে।আমার লেখার উদ্দেশ্য ছিল সবাই কে বলা যে,আমাদের মূল রাজনীতি দুটি ভুল দলের হাতে।
আপনাকে অনেক ধন্যবাদ।
@অসামাজিক,
ধন্যবাদ আপনার মন্তব্যের জন্য। এ প্রভাবের মধ্যে আমেরিকার প্রভাব বেশী ছিল যারা আবার আমাদের দেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের বিরোধিতা করেছিল। আর এর ফলেই প্রতিক্রিয়াশীল স্বাধীনতা বিরোধীরাই নানা নামে ছলা কলায় দীর্ঘদিন ক্ষমতায় থাকতে সক্ষম হয়। তখন আওয়ামী লীগকে তার অস্তিত্ব রক্ষার জন্যই কিছু কিছু আপোষ করতে হয় যা ঠিক তাদের সংবিধানের সাথে মেলে না। সেই সব প্রতিক্রিয়াশীলরাই এখন আওয়ামী লীগের এ কাজকে সমালোচনা করে নিজেদের প্রতিক্রিয়াশীল চরিত্রকে একটু লেপ দেয়ার চেষ্টা করে।
@ভবঘুরে,
এই হল সুন্দর গঠনমূলক আলোচনা। তবে শেখ মুজিব আর জিয়াকে পাশাপাশি একসাথে রেখে তুলনামূলক সমালোচনা আমি উচিৎ বলে মনে করিনা। জিয়া ছিলেন ব্যক্তিস্বার্থপর, বাঙ্গালির দুঃসময়ের সুযোগ সন্ধানী আর শেখ মুজিব দুঃসময়ের বন্ধু। জিয়ার মত হাজার মুক্তিযোদ্ধা তখন বাংলাদেশে ছিলেন, শেখ মুজিবের মত সুপ্রিম কমান্ডার আর কেউ ছিলেন না। জিয়া ব্যক্তি স্বার্থে দেশকে ধ্বংস করেছেন, নিরপরাধ মানুষ খুন করেছেন জ্ঞাতসারে, আর বঙ্গবন্ধু দেশ পরিচালনায় ভুল করেছেন অজ্ঞাতসারে। এটাও স্মরণ রাখতে হবে, বঙ্গবন্ধুর সময়ের ধ্বংস বিধ্বস্ত, আর ঘরের বাহিরের শত্রুবেষ্টিত দেশের অবস্থা তখন কেমন ছিল।
কেন এই দুই দলকে জনগন ভোট দেয়? কারণ এদের চেয়ে ভাল রাজনীতিবিদ বাংলাদেশে নাই। দেশে বিদেশে বড় টাকার ওকালতি করে, সুদের ব্যবসা করে রাজনীতি করা, জনগনের সেবা করা, আর রাজপথে টিয়ার গ্যাসের সামনে বুক ফুলিয়ে হাটা সমান নয়। জনগন সব সময় উপস্থিত সময়ের সঠিক যোগ্য নেতাকেই সমর্থন দেয়। জনগন সময় চিনতে কখনও ভুল করেনা।
@আকাশ মালিক,
বাংলাদেশের জনগনের জন্য কথাটা বোধ হয় পুরোপুরি ঠিক নয়। জনগনের ভোটে আমরা বহু ক্রিমিনাল ও মুক্তিযুদ্ধ বিরোধী লোককে নির্বাচিত হতে দেখেছি। তারা প্রকৃতই সুষ্ঠু ভোটে নির্বাচিত হয়েছিল। এমনকি জিয়ার মত একজন ভন্ড লোক এদেশে জনপ্রিয় নেতাতে পরিনত হতে পেরেছিল। তাই আমি এ দেশের জনগনের ওপর তেমন আস্থা রাখতে পারি না। এরা খুব দ্রুত সবকিছু ভুলে যায়। বড়ই ভুলোমনা জাতি, সেই সাথে দারুন রকম অকৃতজ্ঞও।
@ভবঘুরে,
সব রাজনৈতিক দল তুলে দিয়ে বাক্সাল নামে একদলীয় শাসন কায়েম বা সব কাগজ নিষিদ্ধ করে কেবল ধামা ধরা চারটা কাগজ প্রকাশ করতে দেয়াটা কি ধরনের সহনশীলতা। আর মুক্তিযুদ্ধবিরোধীদের পুনর্বাসন করাকে রাজনইতিক অসহনশীলতা নয়, বরং অতিসহনশীলতা বলা যায়। তখন তিনি শেখ হাসিনাকেও আওয়ামী লীগ পুনর্গঠিত করার জন্য বিদেশ থেকে দেশে ফিরে আসতে অনুরোধ করেন। রাজনীতিতে কারও রাস্তা তখন বন্ধ ছিল না।
মুক্তিযুদ্ধের চেতনার বিরুদ্ধের চেয়ে বরং ধর্মীয় শক্তি বেশী বিপজ্জনক । প্রথমটা একটা ভাববাদী কথা। ভারতে এরকম ভাববাদের কথা ১৯৪৭ সালে স্বাধীনতার পর কেউ বলত না। বৃটিশ শাসনেরপক্ষে অনেক ভারতীয়রা ছিল কিন্তু তাদেরকএ দেশ স্বাধীন হবার পর উইচ হান্ট করেন নি নেহরু। রাজনীতিতে বাস্তববাদী যুক্তিবাদই চলে, ভাববাদী নয়,আমেরিকাতেও। বিপ্লব পাল ঠিকই বলেন বাঙ্গালীরা ভাববাদীক (নেতিবাচক অর্থে)। পরিহাসের বিষয় আওয়ামী লীগের তৎকালীন সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের খেলাফতে মজলিসের সঙ্গে আতাঁত করার সমর্থনে সাংবাদিকদের বলেছিলেন রাজনীতিতে শেষ কথা বলে কিছু নেই। তেল জল খুব ভাল ভাবেই মিশতে পারে আওয়ানী লীগ চাইলেই। ক্ষমতা লাভের ব্যাপারে আওয়ামী লীগ খুবই বাস্তববাদী। এর আগে ১৯৯২-৯৪ তে আওয়ামী লীগের প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থী গোলাম আযমের সাথে সম্ভাব্য নির্বাচনী সমঝোতার জন্য বৈঠকও করেন। তার আগে বিএনপি কখনো গোলাম আযম বা জামাতের সাথে কোন আপোষের চেষ্টা করে নি। এটা আওয়ামীদেরই একটি রাজনৈতিক প্রথম। ১৯৯২-৯৬ এর বিএনপি জামাতের প্রতি বৈরীই ছিল। ১৯৯৬ সালের নির্বাচনের সময় শেখ হাসিনা জামাতকে নিষিদ্ধ করার বিপক্ষেও ছিলেন ! আওয়ামী লীগই পরবর্তীতে বিএনপিকে জামাতের দিকে ঠেলে দেয়, যার ফলশ্রুতিতে ২০০১ সালের নির্বাচনে বিএনপি-জামাতের আতাঁত, যা এখন পাকা পোক্ত হয়ে গেছে। বিএনপির জামাত বিরোধী অংশরা এখন অপাংতেও, খন্দকার দেলোয়ারের মত কদাকার চরিত্রই এখন বিএনপির নেতৃত্বে। খুবই দুর্ভাগ্য আমাদের।
@কালযাত্রী,
এটাই তো জিয়া আরম্ভ করে গেছিলেন। আর সেটা করেই দেশের বারটা বাজার রাস্তা পরিস্কার করে গেছিলেন।
একটা রাজনৈতিক দল যখন দীর্ঘ মেয়াদে ক্ষমতার বাইরে থাকে তখন তাদের পক্ষে জনগনের সমর্থন ধরে রাখাটা কঠিন হয়ে পড়ে। বঙ্গবন্ধুর মৃত্যুর পর যে কোন ভাবেই হোক, দেশীয় বা আন্তর্জাতিক ষড়যন্ত্রে দেশে একের পর এক প্রতিক্রিয়াশীলরা ক্ষমতায় আসছিল আর দেশের সর্বনাশ করছিল। এরা যে ক্ষমতায় আসছিল তার পিছনে জনগনের কোন সমর্থন ছিল না। ১৯৯১ সালে বি এন পি জামায়াতের সমর্থন নিয়েই ক্ষমতায় আসে। এরাও সেই প্রতিক্রিয়াশীল দল।সেবার যে নির্বাচন হয় তা আদতেই সুষ্ঠু ছিল না। সুষ্ঠূ হলে বি এন পি জামায়াতের সমর্থন নিয়েও ক্ষমতায় যেতে পারত না। কিভাবে সুষ্ঠূ ছিল না সেটা আবার বিতর্কের বিষয়। আমি সেদিকে যাচ্ছি না। এমতাবস্থায় আওয়ামী লীগ তখন তার অস্তিত্ব রক্ষার্থেই কিছু কিছু আপোষ করছিল, এ ছাড়া উপায় ছিল না। আপোষ না করলে আওয়ামী লীগ এতদিনে মুসলিম লীগে পরিনত হয়ে যেত। বিষয়ের গভীরে না গিয়ে মন্তব্য করলে তার গ্রহনযোগ্যতা থাকে না।
@ভবঘুরে,
ইতিহাসের সঠিক মূল্যায়ন হল না। ১৯৯১ সালের নির্বাচনে বিএনপি জামাতের সঙ্গে নির্বাচনপূর্ব কোন সমঝোতা বা আঁতাত করে নি। বরং আওয়ামী লীগই নির্বাচনের আগে জামাতের সঙ্গে সমঝোতার চেষ্টা করে, যা সংবাদ মাধ্যমে সুপরিচিত, ১৯৯১ সালের অক্টোবরে এটা একটা গরম খবর ছিল। এখানে
এরকম একটা খবর আছে তখনকার scb গ্রুপে। আরো অনেক জায়গায় খবরটি বেরিয়েছিল। যাহোক নির্বাচনে বিজয়ী হবার পর নিরংকুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা না পাওয়ায় সরকার গঠনে বিএনপি সংকটে পড়ে। ঐ সময় আওয়ামী লীগ বা জেপি বিনপিকে সরকার গঠনে সহায়তা করলে জামাত ছাড়াই বিএনপি সরকার গঠন করতে পারত। একটা সুবর্ণ সুযোগ ছিলে আওয়ামী লীগ আর বিএনপির এক হয়ে জামাতকে বাংলাদেশের ইতিহাসে চিরতরে কোনঠাসা করার। জেপি তো ১৯৯০ এর এরশদের পতনের পর আওয়ামী লীগ আর বিএনপি উপভয়ের উপরি ক্ষিপ্ত, তাই তাদের সয়াহয়তা করার প্রশ্নই উঠতে পারত না। কিন্তু আওয়ামী লীগ আর বিএনপি একযোগে এরশাদ সরকারের পতনে যেখানে কাজ করেছিল সেখানে আওয়ামী লীগ চাইলেই বিএনপিকে সরকার গঠনে সহায়তা করে জামাতকে কোনঠাসা করতে পারত। কিন্তু হিংসুটে আওয়ামী লীগ তা করল না। ওদিকে জামাত সুযোগ বুঝে বিএনপিকে মহিলা সীট ছেড়ে দিয়ে সরকার গঠনে সহায়তা করলে। এটাকেই আওয়ামী লীগের বিএনপিকে জামাতের দিকে ঠেলে দেয়া বলা হয়। কিন্তু তারপরও জামাত বিএনপিকে বিশ্বাসঘাতক বল্ল কারণ তাদের মতে বিএনপি নাকি তাদের সমর্থনের বিনিময়ে আশ্বাস দিয়েছিল যে বিএনপি গোলাম আযমের নাগরিকত্ব ফিরিয়ে দেবে। কিন্তু সেই প্রতিজ্ঞা বিএনপি রাখেনি। অথচ আওয়ামী লীগের প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থী বদরুল হায়দার ১৯৯১ এর জামাতের সঙ্গে বৈঠকে গোলাম আযমের নাগরিকত্ব না দেয়ায় উদবেগ প্রকাশ করেছিলেন। (উপরের লিঙ্ক এ এটা আছে)। আর “এমতাবস্থায় আওয়ামী লীগ তখন তার অস্তিত্ব রক্ষার্থেই কিছু কিছু আপোষ করছিল, এ ছাড়া উপায় ছিল না।” এটা বলার মানে যদি আওয়ামী লীগের জামাতের সঙ্গে সমঝোতার চেষ্টাকে বোঝায় তাহলে সেটা বিএনপি ক্লেন সবার বেলায়ই তো জায়েজ হয়ে যায়। যদিও এটা দেখা যাচ্ছে যে আঅয়ামী লীগই জামাতের সাথে প্রথম এবং নিজ উদ্যোগে সমঝোতার চেষ্টা করে, যেখানে বিএনপি নির্বাচনের পর আর কোন বিকল্প না থাকায় জামাতের সাহায্যের উদ্যোগ গ্রহণ করে।
@কালযাত্রী,
আমি ফরহাদের মন্তব্যটা একটু এডিট করে দিলাম সুবিধার্থে।
৯৯১ এর নির্বাচনে জামাত ও বি এন পি জোটগত ভাবে নির্বাচন করে। জামাত প্রথমে ৩০০ আসনে প্রার্থী ঘোষনা করে পরে ১০০ আসনে বি এন পি-এর সংগে জোট করে প্রার্থী প্রত্যাহার করে নেয়। ঐ ১০০ আসনের ৮০ আসনেই বি এন পি নির্বাচিত হয়।
সবাইকে আপনার মত বুদ্ধিমান ঠাউরানো বোধহয় ঠিক নয়।
@কালযাত্রী,
মুজিব ও জিয়া আসলে কি মাল ছিলো, তা হুমায়ুন আজাদের “আমরা কি এই বাঙলাদেশ চেয়েছিলাম” গ্রন্থে কিছুটা পাওয়া যাবে। বাঙলাদেশের মুক্তির পথযাত্রা শুরু হবে সেই দিন, যেদিন থেকে জনগণ বুঝতে শুরু করবে, তারা কতটা নষ্ট ছিলো।
@আদনান,
‘কি মাল ছিলো’ কথাটা ঈর্ষা না হতাশার বহিঃপ্রকাশ?
বাঙলাদেশের মুক্তির পথযাত্রা শুরু হবে সেই দিন, যেদিন থেকে জনগণ বুঝতে শুরু করবে, তারা কতটা নষ্ট ছিলো।
শেখ মুজিব ‘ নষ্ট’ ছিলেন কথাটা আপনার উক্তি, না হুমায়ুন আজাদের?
@আদনান,
স্বাধীনতার এত বৎসর পরেও মানুষকে যখন আপনারা বুঝাতে পারেন নি, যে মুজিব কতটা নষ্ট ছিল, আমি না হয় সেই না-বুঝার দলেই রইলাম। আপনারা যারা জানেন মুজিবের নষ্টতা স্বীকার করার মাঝেই বাঙলাদেশের মুক্তি, তা আপনারাই যাত্রাটা শুরু করেন না।
@আদনান,
যে জাতি কীর্তিমান মানুষকে সম্মান করে না গুণীজনের কদর করে না তাদের পথযাত্রা শুরু হবে না কোনদিন। দেশের মহানায়ককে যারা নষ্ট মানুষ মনে করে তাদের দেশের যা হওয়া উচিত তাই হচ্ছে।