এডমিন আমার একটি পোস্ট প্রথম পাতা থেকে সরিয়ে দিয়েছেন। আমাকে লিখেছেন–

বহু পাঠক আমাদের অভিযোগ করেছেন যে, আপনার এই লেখাটি আরেকটি ব্লগে প্রায় একই সময় প্রকাশিত হয়েছে। আমাদের নীতিমালাটি দেখুন –
২.১৬। অন্য ব্লগে ছাপানো পোস্ট মুক্তমনায় ছাপানো, অথবা মুক্তমনায় ছাপানো পোস্ট অন্যত্র ছাপানোকে আমরা নিরুৎসাহিত করি। সেক্ষেত্রে ব্লগ কর্তৃপক্ষ চাইলে পোস্টটি ব্লগ থেকে মুছে দিতে পারেন কিংবা প্রথম পাতা থেকে লেখকের নিজস্ব পাতায় সরিয়ে দিতে পারেন।

ভবিষ্যতে লেখা পোস্টের সময় নীতিমালাটি মাথায় রাখতে অনুরোধ করা হচ্ছে। লেখাটিকে প্রথম পাতা থেকে সরিয়ে লেখকের ব্যক্তিগত ব্লগের পাতায় স্থানান্তরিত করা হল।

এডমিনের এই সিদ্ধান্তে আমি আনন্দিত। প্রিয় এডমিন, আপনাকে ধন্যবাদ। বহুপাঠককে সম্মান জানানোর জন্য আপনার এই সিদ্ধান্তে আমি গর্বিত। পাঠককে মর্যাদা বৃদ্ধি পেল। পাঠককে কে কবে মনে রেখেছে এই পোড়া দেশে? এজন্য আরেকবার ধন্যবাদ আপনাকে এডমিন।
আমার কিছু বন্ধু আছেন–এই লেখাটি যখন প্রকাশিত হয় অন্যত্র, তখন আমাকে জানিয়েছিলেন–লেখাটি যেন মুক্তমনায় দেয়া হয়। আমি তাদের মতামতকে মূল্য দিয়েছিলাম। বুঝেছি–এডমিনের পাঠক আর আমার বন্ধু পাঠক এক শ্রেণীর নয়। মাঝখানে একটি নদী বয়ে গেছে। এটাও একটি অভিজ্ঞান বটে। এই অভিজ্ঞান প্রদানের জন্য আপনাদের কাছে কৃতজ্ঞতা জানাই।

লেখাটি ছিল জ্যোৎস্নামানুষ নামের একটি লেখা নিয়ে। আমার অগ্রজ বন্ধু এনামুলদাকে নিয়ে লেখা। তিনি সেই কৈশোরউত্তরকালে রাজনীতি করার জন্য জেলে গিয়েছিলেন। জেল থেকে ছাড়া পেয়ে মানুষের মুক্তির বিষয়টি তার মাথা ছেড়ে যায় নাই। কিন্তু যাদের উৎসাহে এই জেলে যাওয়া, তার জীবনের সিঁড়ি থেকে স্থায়ী পতন, তাদের মাথায় থেকে এইগুলো নাই। এইসব জ্যোৎস্নামানুষদের পথে বসানোর কোনো দায় বা অনুশোচনা তাদের মধ্যে জাগে নাই। লেখাটি এই রকম খুব সাদামাটা। একে সরিয়ে দেওয়াতে কোনো ক্ষতি বৃদ্ধি ঘটেনি। এত সাদামাটা যে আমার পাঠকমন্তব্য আসে নি। মনের খেদটি অবশেষে প্রথম মন্তব্য হিসাবে লিখেছিলাম। দুজন পাঠক জনালেন–তারা পড়েছেন। তারা কেউ নীতিমালাটি স্মরণ করিয়ে দেন নি। তারা অভিযোগ করেন নি যে, লেখাটি অন্যত্র প্রকাশিত বলে কেন সরিয়ে দেওয়া হয় নি।

এডমিনের কাছে অনেক পাঠক অভিযোগ করেছেন। অভিযোগ মান্য করা দরকার। আমার দুএকজন বন্ধুকে মান্য করার দরকার নেই।
এঁদের একজন আমাকে জানালেন, নীতিমালাটিতে অন্যব্লগের প্রকাশিত বা অন্য ব্লগে প্রকাশ করাটাকে কর্তৃপক্ষ নিরুৎসাহিত করেন। নিরুৎসাহিত শব্দের মধ্যে জোর কম আছে। নিছক বাঙালিসুলভ বিনয়ী-নিরীহ শব্দ বলে মনে হয়। শব্দটি ‘নিষিদ্ধ’ হলে ঠিক যথার্থ হত। আইনের কাছে বিনয় পরিত্যাজ্য।

কোনো রচনা যখন ক্ষতিকর বিবেচিত হয় তখন নিরুৎসাহিতের মত আপাত নিরীহ শব্দের আড়াল থেকে উৎখাতের মত ভয়ংকর শব্দও বেরিয়ে পড়ে। হয়তো আমার সাদা গল্পটি এরকম অপরাধে দোষী নিরুপিত হয়েছে। ভাল লাগছে এরকম নিরুপণ দেখে।
কিন্তু প্রিয় এডমিন, নিরুৎসাহিত শব্দটিকে ‘যুক্তিবোধ এবং সার্বজনীনভাবে’ অব্যবহৃত হতে দেখলে কিছু খেদ থেকে যায়। সে খেদ সবাইকে স্পর্শ করা ঠিক নয়।