হুমায়ূন আজাদ ও তার বিশ্বাস
[অভিজিৎ রায়ের “স্মৃতিতে হুমায়ুন আজাদ” পড়েছিলাম বেশ কিছুদিন আগে। আজকেও আবার পড়লাম। ভীষণ ভাবেই হুমায়ুন আজাদকে মনে পড়ছে। তাই পোষ্টটি দিলাম]
——————————————————————————-
প্রশ্নঃ আপনি আপনার অজস্র লেখায় ও সাক্ষাৎকারে বলেছেন, বেঁচে থাকার জন্য আপনার কোন ব্যাকুলতা নেই। আমি জানতে চাই, যখন মৃত্যুর সাথে লড়াই করছিলেন তখন কি বেঁচে থাকার কাতরতায় কোন শক্তির কাছে প্রার্থনা করেননি?
উত্তরঃ না, না। কোন শক্তির কাছে আমি প্রার্থণা করিনি। এমনকি হসপিটালের চিকিৎসকরা আমার জ্ঞান ফেরার পর আমাকে জড়িয়ে ধরে বলেছেন, স্যার – আল্লাহর রহমতে আবার আপনি ফিরে এসেছেন। আল্লাহ আপনাকে বাচিঁয়েছেন। আমি চুপ করে তাদের মুখের দিকে তাকিয়ে থেকেছি। আমি তাদেরকে আহত করতে চাইনি। তারা শান্তি পাচ্ছে; তাদের বিশ্বাস থেকে তারা বলছে। আমি কিন্তু তাদের সাথে একমত হইনি। আমি চুপ করে থেকেছি। আমি একবারও কোন শক্তির কাছে বলিনি – আমাকে বাঁচাও বা তুমি বাঁচিয়ে তুলেছ। বরং আমার ছোট বোন যখন ডাক্তারদের মতই বলছিল, তখন আমি বলেছি – সে যদি আমাকে বাঁচিয়েই থাকে তাহলে আক্রমণের দরকার ছিল কেন? আমি তাকে বলেছি, এসব বাজে কথা বলো না। ওসব অলৌকিক শক্তিতে আমার কোন বিশ্বাস নেই। অত্যন্ত দক্ষ কয়েকজন খুনী মানুষ আমাকে আক্রমণ করেছে এবং আমাকে বাঁচিয়ে তুলেছে আমার দৈহিক শক্তি, মনোবল বা সাহসিকতা ও বৈজ্ঞানিক যন্ত্রপাতি। এছাড়াও সিএমএইচ হসপিটালের চিকিৎসকদের অসামান্য দক্ষতা। আমি শুনেছি, পঞ্চাশজন চিকিৎসক আমাকে বাঁচানোর জন্য কাজ করেছেন। অতি আধুনিক যন্ত্রপাতি সেখানে যা রয়েছে, সেগুলো আমাকে বাঁচিয়েছে। কোন ঐশ্বরিক শক্তি আমাকে বাঁচায়নি।
তথ্যসূত্র: Open: All content is public
ড. হুমায়ুন আজাদের ‘আমার অবিশ্বাস’ বই থেকে একটি অংশ:
মৃত্যু হচ্ছে জীবনপ্রক্রিয়ার উল্টোনো অসম্ভব পরিসমাপ্তি। আর ফেরা নেই, আর অগ্রগতি নেই; চিরকালের জন্য থেমে যাওয়া। যে ছিলো সে আর সেই; আর সে নিশ্বাস নেয় না, তার শিরা আর কাঁপে না, আলো তাকে আর চকিত করে না, আঘাত তাকে আর ব্যথা দেয় না। আমি জানি, ভালো করেই জানি, কিছু অপেক্ষা করে নেই আমার জন্যে; কোনো বিস্মৃতির বিষণ্ন জলধারা, কোনো প্রেতলোক, কোনো পুনরুত্থান, কোনো বিচারক, কোনো স্বর্গ, কোনো নরক; আমি আছি, একদিন থাকবো না, মিশে যাবো, অপরিচিত হয়ে যাবো, জানবো না আমি ছিলাম। নিরর্থক সব পুণ্যশ্লোক, তাৎপর্যহীন প্রার্থনা, হাস্যকর উদ্ধত সমাধি; মৃত্যুর পর যে-কোনো জায়গাই আমি পড়ে থাকতে পারি,- জঙ্গলে, জলাভূমিতে, পথের পাশে, পাহাড়ের চূড়োয়, নদীতে।
তসলিমা-আজাদ নিয়ে বিতর্ক দেখে আগ্রহ জাগল আসার। এ বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা করব। কিন্তু এই মুহুর্তে সম্ভব নয়। কিছুদিন ব্যাস্ত আছি। আগামী মাসের ২১-২২ তারিখে এ নিয়ে বিতর্ক করব।
একটা জিনিস দেখে ভাল লাগল, এখানে সবাই নাস্তিক এবং কেউই আজাদকে উঁচু দরের সাহিত্যিক আখ্যা দিয়ে তসলিমাকে গালিগালাজ করতে নামছে না।
@তমসো দীপ,
আশা করি অবশ্যই করবেন। আলোচনা জমবে ভালো। 🙂
আজ এগারই আগস্ট।
ড. হুমায়ুন আজাদের ষষ্ঠ মৃত্যুবার্ষিকী।
মাহবুব সাঈদ মামুনের কণ্ঠের সাথে কণ্ঠ মিলিয়ে বলি- হুমায়ন আজাদ আমাদের সবার মাঝে চিরকাল বেঁচে থাকুক এ আশা ওনার মৃত্যু দিবসে কামনা করছি।
তসলিমা নিয়ে দেখি মৃদু বিতর্ক চলছে।
তসলিমা মনে হয় পাবলিকের চিন্তা চেতনে হুমায়ুন আজাদের থেকেও বেশী নাড়া দিয়েছিলেন। তবুও আমার মনে হয় সাহিত্যিক হিসেবে এবং সুদুরপ্রসারী ফল চিন্তা করলে হুমায়ুন আজাদ এগিয়ে থাকবেন।
কারো ব্যাক্তি জীবন মূল আলোচ্য হতে পারে না। কিন্তু সবসময় উপেক্ষাও করা যায় না। বিশেষ করে যারা সমাজ ব্যাবস্থার কড়া সমালোচন করেন তাদের ব্যাক্তি জীবন নিয়ে গনমানুষের আগ্রহ থাকাটাই স্বাভাবিক। সমাজ খারাপ বুঝলাম, তুমি কোন ধরনের আদর্শ জীবন যাপন কর সেটাই দেখাও না? যেমন, একজন মানুষ মেহনতী জনতার মুক্তি, সাম্যের গান গেয়ে মাঠে ময়দানে লেকচার দিয়ে বেড়ান। কিন্তু বাড়িতে তার জন কাজের লোক এবং শাহী খানা ছাড়া তার মুখে কিছু রোচে না। এই লোকের উপর সমাজ সংস্কারক হিসেবে আস্থা রাখা যায় না নিশ্চয়ই।
এ ব্যাপারে তসলিমার অবস্থান খুবই করুন। তাঁর ব্যাক্তিগত জীবন যাপন একান্তই ব্যাক্তিগত হলেও নিশ্চয়ই কেউ আদর্শ হিসেবে তেমন জীবন সূস্থ মাথায় বেছে নেবেন না। উনি বহুগামী বা কি সেসব নিয়ে আমার কোন আপত্তি বা মাথা ব্যাথা নেই, সমাজে আশে পাশে হাজারটা পুরুষ মানুষ আছে বহুগামী। তাদের সাথে যদি আমার চলাফেরায় সমস্যা না হয় তবে তসলিমার সাথে হবে কেন?
তবে যার জীবন পদ্ধুতি আমি কোনদিন বেছে নেব না তাকে প্রকৃতসমাজ সংস্কারক বলতে আমার আপত্তি আছে। আধুনিকতা এবং বোহেমিয়ান জীবন ধারনের মাঝে মাঝে মাঝে শক্ত কো-রিলেশন দেখা যায়। হুমায়ুন আজাদ এই ধারার বাইরে বলেই আমি তাকে এগিয়ে রাখব।
@আদিল মাহমুদ,
আপনি যে সাম্যবাদীর উদাহরণ দিলেন সেটা তো ওই সাম্যবাদীর কপটতার পরিচয় দেয় — তসলিমা নাসরিনের সাথে তুলনাটা পুরোপুরি গ্রহণ করতে পারলাম না।
তসলিমা নাসরিন ভোটে দাঁড়ালে, কিংবা তাঁকে কেউ আদর্শ মানবী হিসেবে প্রচার করলে তার ব্যক্তিজীবনের চুলচেরা বিশ্লেষণও বৈধ হত, এমনকি প্রয়োজনীয় হত। একজন লেখকের ক্ষেত্রে সেটা প্রযোজ্য কি? তসলিমা কে “সংস্কারক” বলা যায় কিনা সে ব্যাপারেও আমরা সন্দেহ আছে, তিনি জীবন এবং মননে একজন বিদ্রোহী।
@রৌরব,
আমাদের বোধ শক্তি কম অথবা তসমাজকে নিয়ে নড়াচড়া করতে চাই না। সেজন্য অনেক কিছুকেই চিরাচরিত প্রথা হিসেবে মেনে নেই। পুতুল খেলার বয়সে লাঞ্ছিত হওয়া থেকেই বোধ হয় তিনি প্রখর দৃষ্টিশক্তি সম্পন্যা হয়েছেন। চোখে আংগুল দিয়ে অনাচার, অত্যচার দেখিয়েছেন। এবং এর প্রতিকার চেয়েছেন তাড়াতাড়ি।
তিনি যা বুঝেছেন তা মানুষকে বুঝানোর জন্য যে পরিমান সময় বা যে সম্মিলিত শক্তি সৃষ্টি দরকার তা তিনি দিতে পারেননি। বেশী তড়িঘড়ি হয়েছে। ফলে সমাজ সংস্কারক হতে পারেন নি।
কিন্তু তাঁর প্রচেষ্টা ব্যর্থ হয়ে যায়নি। তাঁর নির্বাচিত কলাম মায়েরা, বড়রা মেয়েদেরকে জন্মদিনের উপহার দিতেন। এটা একধরণের স্বাভাবিক ব্যাপার হয়ে দাঁড়িয়েছিল। তারপর এক সময় তিনি তেঁতো হয়ে গেলেন। এখন সম্ভবতঃ কোন মা মেয়েদের জন্মদিনে এই বইটি উপহার দেন না। স্বল্প সময়ের জন্য হলেও তিনি একটি ক্ষুদ্র বিপ্লব এনেছিলেন। কেউ স্বীকার করুক না করুক সেই চিন্তা চেতনার অনেক কিছুই নতুন প্রজন্মের মধ্যে মিশে আছে।
এই নীরব বিপ্লবের মধ্য দিয়েই সমাজে সংস্কার আসবে। অনেকেই তাঁর মাল-মশলা নিয়ে সংস্কারক হবেন।
@নৃপেন্দ্র সরকার,
ধন্যবাদ, আপনার কথার সাথে একমত। আমি কিন্তু “সংস্কারক নন” কথাটি নিন্দার্থে বলিনি মোটেই 🙂
নজরুল যেরকম রাজনীতিবিদ নন, তসলিমাও তেমনি সংস্কারক নন — কিন্তু দুজনেই যথাক্রমে রাজনীতি ও সমাজ সংস্কারে গভীর প্রভাব রেখেছেন, এবং রাখবেন।
@রৌরব, সেটা আমি মনে করিনি। আপনার মতই আমি তাঁকে
মনে করি। ধন্যবাদ।
@নৃপেন্দ্র সরকার, :rose:
@রৌরব,
এটা ঠিক যে তাকে সংস্কারক হিসেবে মনে না করলে আমার বক্তব্য খাটে না। আমার কথা সেখানেই। তিনি সমাজের নানান ভন্ডামী ধর্মের নামে প্রচলিত অমানবিক বিধিবিধানের উপর কষাঘাত করেছেন ঠিকই, তা প্রসংশনীয়। তবে একজন সংস্কারক বললে এগুলিই যথেষ্ট নয়, সংস্কারক হতে হলে নিজেরও উন্নত ব্যাবস্থার উদাহরন দেখিয়ে দিতে হয়।
আপনার এক কথাটির সাথে আমি একমত।
হুমায়ুন আজাদের “ছাপ্পান্নো হাজার বর্গমাইল”, “পাক সার জমিন সাদবাদ”, “নারী” এবং বর্তমানে “আমার অবিশ্বাস” পড়ছি, তসলিমাবিদ্বেষের পেছনে যে মানসিকতা থাকে তা এই বইগুলোতে পাইনি। তসলিমাকে মানুষ তাঁর নাস্তিকতা এবং বহুগামীতার জন্য ঘৃণা করে। হুমায়ুন আজাদ কেন তাঁকে ঘৃণা করেন এই প্রসঙ্গে কেউ কিছু বলতে পারলে ভাল হত।
@পৃথিবী,
২০০৮ সালে জুলাই মাসে তসলিমার সাথে আমার ২ বার খুব ঘরোয়াভাবে দেখা ও কথা হয়েছিল।অসংখ কথার ফাঁকে হুমায়ন আজাদ সহ বাংলাদেশের প্রগতিশীল লেখক ও সাহিত্যিকদের কথা আলোচনায় এসেছিল।যাদেরকে নিয়ে বেশী আলোচনা হয়েছিল তারা হলেন রুদ্র,মিনার মাহমুদ,নইমুল ইসলাম এবং সৈয়দ শামছুল হক ও ইমদাদুল হক মিলন।
এর মধ্যে শামছুল হক ও তসলিমা কে নিয়ে যে সব কথা ও রটনা রটেছিল তা সত্যি ছিল।তসলিমা বলেছিল বাংলাদেশের প্রগতিশীল লেখক ও সাহিত্যিকরা বেশীর ভাগই সৎ নন।লেখায় প্রগতিশীলতার কথা বর্ননা করলেও নিজের জীবনের ক্ষেত্রে এখনো ওনারা পুরাপুরি পুরুষতান্ত্রিক মানসিকতা নিয়ে বসবাস করেন।
প্রশ্ন করেছিলাম হুমায়ন আজাদের ব্যাপারে শুনা যায় ওনি নাকি আপনার স্বমন্ধে কোনো এক সাক্ষাৎকারে কটু মন্তব্য করেছিলেন ? তসলিমা কটু মন্তব্যের সরাসরি উত্তর না দিয়ে বলেছিল ওনি (হুমায়ন আজাদ) না-কি খুবই অহংকারী লোক ছিলেন।তসলিমা কে নিয়ে যখন বাংলাদেশে টানাহেচড়া চলছিল তখন যদি আহমেদ শরীফ ও নির্মেলেন্দু গুনের সাহায্য না পেতেন তা হলে মৌলবাদীরা তাকে নির্ঘাত খুন করত।
@পৃথিবী,
১। নাস্তিকদের অনেকেই অপছন্দ (ঘৃনা) করে
২। বহুগামীতা – ক) তাকে প্রথম আক্রমন করে তাঁর (৮ বছর বয়সে) মামা।
খ) তাঁর খালাত বোন আত্মহত্যা করে একই মামার আক্রমনের আঘাত সহ্য করতে না পেরে।
খ) দ্বিতীয়বার আক্রমন করে (এক দুই বছর পর) তাঁর কাকা
এগুলোকে নিশ্চয় বহুগামীতার অংশ বলা যাবে না। তাঁর মধ্যে পুরুষ বিদ্ধেষী মনোভাব গড়ে উঠার পিছনে তাঁর আপন মানুষদের হিংস্রতাই দায়ী মনে হয়। পরবর্তী কালে যে কিছু ঘটনা ঘটেছে, তার সাথে পুরুষরাও সম দোষে দোষী। তিনি নিজে থেকে না বললে হয়ত কেউ কোনদিন জানত না। যেমন অহরহ ঘটে যাওয়া অনেক কিছুই আমরা জানিনা।
আমরা পুরুষদের বহুগামীতার কাঠগড়ায় দাঁড় করাই না।
@নৃপেন্দ্র সরকার,
আমরা জন্মের পর থেকেই যেমন আস্তিক হওযার শিক্ষা লাভ করি, ঠিক তেমনি জন্মের পর থেকেই আমরা দেখি পুরুষরা নারীদের ওপর কর্তৃত্ব করে। তাই একটা পুরুষ যদি বিবাহিত হয়েও অনেকগুলো মেয়ের সাথে ফুর্তি বা লোচ্চামী করে তাকে আমরা বাহাদুরি দেই, কিন্তু একটা নারী অনেকগুলো পুরুষ বন্ধু নিয়ে ঘুরলে তাকে আমরা বহুগামী বলে গাল দেই।
কথাটা এভাবে প্রচারের পক্ষে সায় দিতে পারলাম না।
তসলিমার এ অধিকার আছে। মানুষ যা করছে তা অন্যায়, এ অন্যায়ের প্রতিবাদ না করাও অন্যায়।
@আকাশ মালিক,
পুরোপুরি সহমত :yes: :yes: :yes: :yes: :yes:
@আকাশ মালিক,
একথা তো সত্য যে আমাদের দেশের মোল্লারা তসলিমার উপর খ্যাপা। তারাই তাকে দেশ ছাড়া করেছে।
এমনকি বর্তমানেও তিনি দেশে আসতে পারছেন না। বেশ কয়েকবার চেষ্টা করেও ব্যর্থ হয়েছেন। ইন্ডিয়াতে তিনি তোপের মুখে পড়েন।
এগুলো আমাদের সবারই জানা।
ঐ সময় বুদ্ধিজীবি মহল খুব একটা এগিয়ে আসেননি। কিন্তু হুমায়ুন আজাদের সময় ব্যাপক সাড়া পড়েছিল বুদ্ধিজীবি মহলে।
সাধারণ মানুষ নয়, মোল্লারা এই দুইজনের উপর খ্যাপা ছিল। শুধুমাত্র এই দুইজনের উপরই তা নয়, যারাই একটু কোরানের সমালোচনা করেছে তাদেরই বিরুদ্ধে এরা খেপে গেছে।
তসলিমা পক্ষে যে সমস্ত বুদ্ধিজীবি ছিলেন না, তারাও অন্যায়ের প্রতিবাদ না করে অন্যায় করেছে- এটা আমাদের সবাইকে মানতে হবে।
হুমায়ুন আজাদ শুধু বলেছিলেন- কোনো ধরনের বই নিষিদ্ধ হওয়ার পক্ষে তিনি নন।
ব্যক্তি তসলিমার নিরাপত্তা সম্পর্কে কি কিছু বলেছিলেন ঐ সময়? কেন তিনি তসলিমার পক্ষে আন্দোলনে নামলেন না?
@নৃপেন্দ্র সরকার,
আমার মনে হয় তসলিমা পুরুষ-বিদ্ধেষী নয়,পুরুষতান্ত্রিকতা ও পুরুষদের ভনিতা ও ভন্ডামির সে চরম বিরোধীতাকারী।তাঁর মূল কথাই হলো আমরা সবাই মানুষ,সেখানে কে পুরুষ বা নারী সে ভেদাভেদ করা চলবে না।
জয়তু তসলিমা।
@মাহবুব সাঈদ মামুন,
ধন্যবাদ, মামুন। আমার শব্দচয়নে মনোযোগের অভাব ছিল। আপনার বক্তব্যের সাথে আমি একমত।
@নৃপেন্দ্র সরকার,
@নৃপেন্দ্র সরকার,
আপনাকেও ধন্যবাদ।
অ,ট ঃ দাদা, আমাদের মাহফুজ কই গেল,আপনি কি কিছু জানেন ? আর আমাকে তুমি বলে ডাকলেই ভালো লাগবে।
@মাহবুব সাঈদ মামুন, মাহফুজ দিন সাতেকের ছুটি নিয়ে গ্রামের বাড়ী গেছে।
@নৃপেন্দ্র সরকার,
:yes:
@পৃথিবী,
এ পর্যন্ত হুমায়ুন আজাদের যে সমস্ত বই পড়েছি- সেগুলোর মধ্যে তসলিমার বিরুদ্ধে কোনো বিদ্বেষ পাওয়া যায় নি।
দুইজনেই নারীবাদী লেখক। যখন হুমায়ুন আজাদের নারী বই নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়, এর কিছুদিন পরেই তসলিমার লজ্জা নিষিদ্ধ হয়।
নির্বাচিত কলাম সম্পর্কে হুমায়ুন আজাদ বলেন- তসলিমা কিন্তু তার ঐ নারীবাদী কলাম লেখা শুরু করেছিলো আমার লেখাকেই নকল করে। আমি যখন নারীবাদী লেখা শুরু করি আমার লেখাকে নকল করে বা অনুকরণ করে সে লেখা শুরু করেছে। এবং তার যে বিষয় সেগুলো অত্যন্ত লঘু। বলা যায়, সাড়া জাগানোর জন্য হিসেব করে লেখা।
এ বিষয়ে হুমায়ুন আজাদ বিভিন্ন সময়ে সাক্ষাতকারে লজ্জা সম্পর্কে বলেছেন- মনে রাখতে হবে তার যে-বইটি নিষিদ্ধ হয়েছে সেটাও সুপরিকল্পিতভাবে সাড়া জাগানোর জন্য লেখা এবং দেশকে একটা সাম্প্রদায়িক সংকটের মধ্যে ফেলে দেয়।
আমাদের আলোচন্য বিষয় কিন্তু তসলিমাকে নিয়ে নয়। হুমায়ুন আজাদের দর্শন চিন্তা, নাস্তিকতাই অটল থাকা, বৈজ্ঞানিক যন্ত্রপাতির উপর নির্ভর করা ইত্যাদি বিষয়।
আমরা মনে হয়, মূল আলোচনা ছেড়ে ক্রমশ: অন্যদিকে চলে যাচ্ছি।
বিনীতভাবে বলছি, এই লেখাটি মুক্তমনার নীতিমালার সঙ্গে কতটুকু সামঞ্জস্যপূর্ণ — সংশ্লিষ্টদের তা ভেবে দেখার আহ্বান জানাই। 😕
লেখকস্বত্ত্ব বিষয়টির বাইরেও হুমায়ুন আজাদের লেখার সঙ্গে আপনার নিজস্ব বিশ্লেষণ ও বক্তব্য থাকলে আরো ভালো হতো। এটি আমার নিজস্ব পাঠ-রুচিও বলতে পারেন। ধন্যবাদ।
@বিপ্লব রহমান,
আপনার সাথে একমত।
আমার মনে হচ্ছে হুমায়ুন আজাদ স্যারের মত মানুষকে নিয়ে খুবই ছেলে মানুষী আলোচনা হচ্ছে। যাই হোক আলোচনা হতেই পারে। চলুক।
আর একটা কথা, হুমায়ুন আজাদ তসলিমা নাসরিনকে কোথায় বেশ্যা বলেছে এটার কোন রেফারেন্স কি দেয়া যায়? প্রশ্নটা মাহফুজ কে করা।
@সাইফুল ইসলাম, বেশ্যা সম্পর্কে কিছু জানি না তবে ইংরেজি উইকিতে তাঁর একটি উক্তি দেখলাম,
“Don’t mention Taslima Nasrin to me – I may contract syphilis.”
@পৃথিবী,
একজন গুণী ব্যক্তির কাছ থেকে এজাতীয় উক্তি হতাশ করে। এই উক্তিটি আমি আর শুনতে চাই না। উনার অন্য দশটা ভাল জিনিষ নিয়েই বেঁচে থাকতে চাই।
গুণী ব্যক্তিরা এই ধরণের উক্তি থেকে নিজেকে মুক্ত রাখুক।
@পৃথিবী,
কোথায় যেন পড়েছিলাম তসলিমা স্বামী রুদ্রর কাছ থেকে
এই রোগটি পেয়েছিলেন।
রুদ্রর ওসব জায়গায় যাওয়ার অভ্যেস ছিল!
সেজন্যই হয়ত একথাটা উঠেছে।
ধন্যবাদ!
@লাইজু নাহার,
আমি তসলিমা নাসরিনের সব বইগুলোই মোটামুটি পড়েছি। যদ্দুর মনে হয় তসলিমার কোন বইতে এই ধরনের কথা লেখা আছে।
“আমার অবিশ্বাস” বইটি আমি পড়েছি। এ ধরণের বই আস্তিক-নাস্তিক সবার পড়া উচিৎ। এ বইটি রাসেলের ”আমি কেন নাস্তিক”, রাহুল সংকীতর্য়াণের “কেন আমি ঈশ্বরে বিশ্বাস করি না”, কিম্বা শেলীর “নাস্তিকতার প্রয়োজন” এই বইগুলো থেকে আলাদা কিছু দর্শন ধারন করেছে। আপনার উদ্যোগকে সাধুবাদ জানাই।
@মোজাফফর হোসেন,
রাসেলের ”আমি কেন নাস্তিক”,
রাহুল সংকীতর্য়াণের “কেন আমি ঈশ্বরে বিশ্বাস করি না”
শেলীর “নাস্তিকতার প্রয়োজন”
এগুলো সফট কপি কি আপনার কাছে আছে?
@মাহফুজ, na vai, amar kache hard copy ache, tobe apni net a duitar english version paben
he was very brave person, sometimes I think I can’t be like him, he was so straightforward. He was so certain that there is nothing waiting for him after death. I also think same but can’t show that determination.
‘আমার অবিশ্বাস’ হুমায়ুন আজাদের লেখা সবচেয়ে প্রিয় বই আমার। আমার মধ্যকৈশরের খানিকটা লড়বড়ে নাস্তিকতাকে দৃঢ়তা দিয়ছিলো। ‘আমার অবিশ্বাস’ ই সম্ভবত তার প্রথম বই যেটা পড়ে আমার মনে হয়েছিলো- হুমায়ুন আজাদ সবগুলো পড়ে ফেলতে হবে।
@আল্লাচালাইনা,
মধ্য বয়সের নাস্তিকতা দৃঢ়তা এনে দিয়েছে ‘আমার অবিশ্বাস’ বইটি। আপনার এ স্বীকারোক্তির কারণে আমার একটি সহজ সরল প্রশ্ন জাগে আপনার প্রতি- “কেন ইসলামকে না বলবো” প্রবন্ধটি লিখতে আপনাকে শক্তি যুগিয়েছিল কে বা কোন্ বই?
– কথা কটা খুব ভাল লাগল।
@আদিল মাহমুদ,
আপনি যে অংশটুকু তুলে ধরেছেন, সেই অংশটুকু নিয়ে আমি আগেও ভেবেছি। ভেবেছি একটু অন্যভাবে।
এ অবস্থাটা ছিল বলা যায়- মৃত্যু থেকে বেঁচে ওঠার পর। তিনি আহত করতে চান নাই, কারণ তারা তাদের বিশ্বাস থেকে বলেছে।
কিন্তু তিনি এর আগে (প্রথম মৃত্যুর আগে) কাউকে কি আহত করেন নি? ঐ সময়গুলোতে কাউকে ছেড়ে কথা বলেন নি। তসলিমা নাসরিনকে পর্যন্ত বেশ্যা বলে আখ্যায়িত করেছেন। মোল্লাদেরও তুলোধুনা করেছেন। তখন কি তিনি আহত করেন নি?
এগুলো আমাকে একটু ভাবায় বৈকি।
@মাহফুজ, আসলে আবেগের একটা ব্যাপার তো রয়েছেই বটে। এইমাত্র কোন প্রিয়জনকে হারিয়ে কোন ব্যক্তি যদি এই ভেবে শান্তি পেতে থাকে যে তার ঐ প্রিয়জন বেহেস্তে আছে, তার মুখের উপর আমি বলতে পারিনা যে বেহেস্ত বলে কিছু নেই। হুমায়ুন আজাদ তার চিকিৎসকদের সাথেও এই ব্যবহারটিই করেছেন। এখানে উল্লখ্য ওই চকিতসকেরাও দেখা যাচ্ছে তার প্রতি ছিলো প্রচন্ড শ্রদ্ধাশীল এবং হুমায়ুন আজাদও তাদের প্রতি কৃতজ্ঞ। ওই সময়টা বোধহয় হুমায়ুন আজাদের চিরাচরিত মন-মেজাজ প্রকাশ করার যথার্থ সময় ছিলো না। তবে অন্যান্য সময় ভক্তকুলকে খুব একটা পাত্তা না দেওয়ার জন্য তার দুর্নাম রয়েছে। আমার এক আত্নীয়ার সাথে কক্সবাজারের তার দেখা হয়েছিলো এক ঈদের দিন। হাতে ছুড়ি চালানোর ভান করে (ঐটা ছিলো কোরবানির ঈদ) আত্নীয়াকে উদ্দেশ্য করে তার সম্বোধন ছিলো- কেটে এসেছো না গিয়ে কাটবে?
@আল্লাচালাইনা,
ওই সময়টাকে মৃত্যু থেকে বেঁচে ওঠার পর হয়। তাহলে বুঝা যাচ্ছে ঘটনার প্রেক্ষিতে মানুষের মন মেজাজেরও পরিবর্তন আসে। এমনকি বিশ্বাসেরও পরিবর্তন আসতে পারে। শুনেছি কঠিন ধরনের নাস্তিকও কঠিন অসুখে আস্তিকে পরিণত হয়।
এক্ষেত্রে হুমায়ুন আজাদ ছিলেন ব্যতিক্রম- তিনি অটল ছিলেন নাস্তিকতায়। আর এটাই তুলে ধরা হয়েছে এই সাক্ষাতকারে।
@মাহফুজ,
কথাটি বলতে উনার একটুও বাঁধলো না? ছি! ছি! ছি!
এটাকে কী বলব? হাতীরও পিছলে পা বলে ignore করব?
@নৃপেন্দ্র সরকার,
দাদা কারেন্ট চলে গেছে, আমার ইউ পি এস কুক কুক করছে। আর মাত্র পাচ মিনিট, বন্ধ হয়ে যাবে।
কারেন্ট এলে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করা যাবে।
বাই, বাই।
@নৃপেন্দ্র সরকার,
হুমায়ুন আজাদের লেখায় একটা ‘art’ আছে যে কারণে তার লেখা ভাল লাগে।
কিন্তু আরেকজন লেখিকাকে বেশ্যা বলাটা কতটা যুক্তিযুক্ত? এ ব্যাপারে আপনারা কি জানেন? জানালে খুশি হব।
@নিশাচর,
আমার ভাল লাগেনি। আমি কী বলেছি তা পেস্ট করলাম নীচে
@মাহফুজ,
সব ব্যাপার এক করে দেখলে হবে না।
কেউ যদি শুধু আল্লাহয় বিশ্বাসী হয় এবং সে বিশ্বাস নিজের মাঝে রাখে ও বড়জোর এই জাতীয় দোহা করাকরির মাঝে সীমাব্দধ রাখে তবে মনে হয় না তার বিরুদ্ধে জগতের কোন যুক্তিবাদী খুব বেশী সময় দেবেন। কারন, তার এই ব্যাক্তি বিশ্বাসে জগতের কারোই কিছু যায় আসে না।
মোল্লাতন্ত্রের বিরুদ্ধে কলম ধরাটা ভিন্ন। কেউ ধর্মের নামে ভন্ডামী বা অন্ধবিশ্বাসের বশবর্তি হয়ে অযৌক্তিক অমানবিক কালাকানুন চালাতে চাইলে তার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করাটা একজন শিক্ষিত মানুষের নৈতিক দায়িত্বের মাঝে পড়ে। এর মধ্যে কার মন খারাপ হল সেই প্রশ্ন গৌণ।
জানি না বোঝাতে পেরেছি কি না। তবে একজন প্রকৃত মুক্তমনের মানুষের কারো সত মানবীয় অনুভূতির প্রতি সহানুভুতিশীল না হয়ে তাকে মানসিক আঘাত করা উচিত না।
ধর্ম সম্পর্কে আমার নুতন উপলব্ধি হবার পর আমাকে কেউ দোয়া করলে তাতে তেমন আশান্বিত হই না, তবে কোনদিন তাকে বলতে যাই না যে ভাই আমার এসব দোয়া দেওয়া দেওয়িতে তেমন ভরসা নেই, নিজের দোয়া করতে হলে নিজেরই করা লাগে। আল্লাহ অফিসের বড় সাহেব নন যে তাকে তৃতীয় কেউ আমার হয়ে তেলাবে।
@আদিল মাহমুদ,
একজন প্রকৃত মুক্তমনের মানুষের কারো সত মানবীয় অনুভূতির প্রতি সহানুভুতিশীল না হয়ে তাকে মানসিক আঘাত করা উচিত না।
আপনার একথা সাথে একমত হচ্ছি। তারপরও একটা প্রশ্ন আমার মধ্যে জেগেছে- সৎ মানবীয় অনুভূতি বলতে কী বুঝায়? এটার কি নির্দিষ্ট কোনো সংজ্ঞা আছে?
@মাহফুজ,
ধরাবাধা নেই।
তবে সত অসত উদ্দেশ্য বোঝা এমন কিছু কঠিন নয়,যেমন ভাল মন্দ বুঝতে সহজাত প্রবৃত্তিই যথেষ্ট।
পশ্চীমের লোকেরা এ কারনেই মনে হয় যেকোন ধর্মবিশ্বাসই যতই হাস্যকর হোক না কেন সেটা কারো ক্ষতির কারন না হলে সেটা নিয়ে হাসিঠাট্টা করে না,করলেও প্রকাশ্যে করে না।
@আদিল মাহমুদ,
সহজাত প্রবৃত্তিটার ব্যাখ্যা কি দেয়া সম্ভব? সকলের মাঝেই কি এই সহজাত প্রবৃত্তি সমান হারে বিদ্যমান থাকে, নাকি এরও হেরফের হয়?
তার মানে কি পশ্চিমারা কারো ধর্মানুভূতিতে আঘাত দেয় না?
@মাহফুজ,
পশ্চীমারা দেয় না বলাটা পুরো ঠিক হবে না।
তবে সরকারীভাবে বা সাধারনভাবে দেয় না।
এর সাথে নানান রকমের ব্যাংগাত্মক কার্টুন এ জাতীয় কার্যক্রম মেলানো ঠিক হবে না। এগুলি করে সাধারনত বাক স্বাধীনতার সুযোগে কিছু লোকে, বেহুদাই খোচাখুচি করা। ধর্মের সমালোচনার সাথে আমি এদের সম্পর্ক দেখি না। এ ধরনের কাজকর্মে আসলে ফল হয় উলটা। কট্টর ধার্মিকেরা আরো একাট্টা হয়, সাধারন ধার্মিকদের বোঝাতে পারে যে দেখো, আমরা যা বলি তাইই ঠিক।
আপনি পিপড়াকে দেবতা জ্ঞানে পূজা করেন শুনলেও এখানকার কোন মানুষ ভ্রু কুঁচকে আপনার দিকে তাকাবে না বা মুখের উপর বলে বসবে না যে তোমার মাথায় তো কিছুই নাই। তবে আপনি এখন পিপড়া দেবতার দোহাই দিয়ে যদি দাবী করেন যে মাথায় দুই শুড় লাগানো কোন পোষাক পরা আপনার ধর্মীয় অধিকার এবং আপনি তাদের ড্রেস কোড ভংগ করে সেই পোষাকে অফিস করার জন্য প্রচারনা চালাবেন তখন তারা সমালোচনা করবেই। আশা করি বুঝতে পারছেন কি বলতে চাইছি।
ব্রাইট স্মাইল্,
ধর্মের যৌক্তিক সমালোচনা এবং কারো মনে বেহুদা আঘাত করা সবসময় এক নয়। মানুষ হিসেবে আমরা সবাই মানবীয় অনুভুতির দাস, সেই অনুভূতির অযথা অসম্মান মানবতারই অপমান।
যুক্তিপূর্ন কথা মানবীয় অনুভুতির ব্যাপারে সবসময় খাটে না। এসব যায়গায় যুক্তিবাদ টেনে আনলে মানুষ আর মানুষ থাকে না। একটু অন্যদিকে চিন্তা করেন। প্রেমের জগতে যেসব কথাবার্তা হয় তার সাথে কি যুক্তির কোন সম্পর্ক থাকে? আপনি কি সেসবের প্রতিবাদ করতে যাবেন কোনদিন? যাবেন না কারন সেসব অতিরঞ্জিত কথাবার্তার মাঝে থাকে শ্বাসত ভালবাসার প্রকাশ।
ধর্মের নামে অচল বা অযৌক্তিক কালাকানুন চালানো – এর প্রতিবাদ করতেই হয়।
ধর্মের নামে কিছু বিশ্বাস যা কারোই কোন ক্ষতির কারন হয় না – এর প্রতিবাদ করতেই হবে এমন কথা নেই। বিশেষ করে প্রতিবাদেসেই ব্যাক্তি যদি মানসিক আঘাত পায় তবে তা করা হবে অমানবিক। আমি দেবদেবীতে একেবারেই বিশ্বাস করি না। কিন্তু কেউ যদি আমাকে ভাল মনে কোন দেবীর নামে আশীর্বাদ করে তবে তাকে কেন আমি বলতে যাব যে এইসব আজগুবি রুপকথা আমার কাছে করবেন না?
@আদিল মাহমুদ,
অপশক্তির কড়া সমালোচনা করলে, বুঝেই হউক আর না বুঝেই হউক, কারো না কারো মানসিক আঘাত লাগবেই, তাই বলে সমালোচনা বন্ধ রাখলে, আঘাত না করলে সেই অপশক্তিকে রোধ করা যাবে কি করে? সবাই ভাল মানুষ সেজে বসে থাকলে সমাজে কাঙ্খিত পরিবর্তন আনা কি সম্ভব? সমাজে কিছু কিছু লোক সেই কাজটি করেন বলেইতো সমাজ টিকে আছে। তাঁরা হতে পারেন বিতর্কিত, কিন্তু সমাজে তাঁদের অবদান অস্বীকার করার উপায় নাই।
আরেকটু আস্তে-সুস্থে পোস্ট করেন। প্রথম পেজে একাধিক লেখা কাম্য নয়,আপনি পরপর দুটো লেখা পোস্ট করেছেন।
@রামগড়ুড়ের ছানা,
আমি তো সেটা জানি, হুমায়ুন আজাদের জন্য আমার মন এমনই ব্যকুল হয়ে উঠেছিল যে, অভিজিৎ রায়ের লেখা পড়ে, আর থাকতে পারলাম না। আর সেটা থার্ড ব্রাকের মধ্যে উল্লেখও করেছি।
নীতিমালা যতক্ষণ পর্যন্ত পরিবর্তন না হচ্ছে, ততক্ষণ পর্যন্ত এধরনের বিরক্তিপূর্ণ কথা আসতেই থাকবে। সেজন্য খুব তাড়াতাড়ি নীতিমালা সংশোধনী আনা দরকার। আমি জানি অনেকে আমার উপর বিরক্ত এই কারণে। কিন্তু অন্যদের বিরক্ত করার সাহস পাই নীতিমালার কারণেই। নীতিমালা পরিবর্তন হলে এই মাহফুজও পরিবর্তন হবে। তখন এত সাহস পাবে না পোষ্ট করতে।
তাছাড়া এডমিনের হাতে তো ক্ষমতা রয়েছেই, ইচ্ছে করলেই তো মুছে দিতে পারে। আমি ভাই একটু ছ্যাচড়া ধরনের হোমো স্যাপিয়েন্স। কেউ আমার উপর বিরক্ত হলে, সেটাই আমি বেশি করে করি। যে সব কারণে মোল্লারা আমার উপর খ্যাপে, সেসব কাজই আমি বেশি করে করি।
আমার আসলে পরিবর্তন হওয়া দরকার। আমার ঢিলা স্ক্রুটটা একটু টাইট দিয়ে দেন। শিক্ষা হোক মাহফুজের।
ধন্যবাদ রামগড়ুড়ের ছানা ভাই।
@রামগড়ুড়ের ছানা,
আর একটু কথা বলি: আমি তো দুটো পোষ্ট করলেও এদুটোর কোনটিই আমার নিজস্ব লেখা নয়। একটা মোকছেদ আলীর, আরেকটি সংগ্রহ করা।
নিজের পক্ষে যুক্তি প্রদর্শন করে বাঁচানোর চেষ্টা করছি মাত্র। আপনার যুক্তি থাকলে পেশ করুন।
@মাহফুজ,
আপনি বড়ই অদ্ভূত। যাই হোক সামনে এই কাজ আর না করাই ভালো, মডারেটর সাহেব রাগ করবেন।
@রামগড়ুড়ের ছানা,
এই দুনিয়াই জন্ম লইয়াই ঝাড়ি খাইয়া আসিতেছি। রাগ না করিয়া মডু ব্যাডারে একটু ঝাড়ি দিতে কন না। তয়, ঝাড়ি দেওনের আগে নীতিমালাটা বদলাইতে ভুল যেন না করে।
কি অভাগা জাতি আমরা এতো বড় দার্শনিক ও সাহিত্যিককে আমরা বাঁচিয়ে রাখতে পারলাম না।জাতি এক বিরল সম্পদ কে হারিয়েছে।।মধ্যযুগীয় বর্বর রা ক্ষমতার মসনদে উঠে আবারো ৭১ এ যে স্বাদ পূর্ন করতে পারে নি তা-ই এখন ১৬ আনা কড়ায় কড়ায় উসুল করে নিচ্ছে।
হুমায়ন আজাদ চির নমস্য যিনি আমাদের বাংগালি জীবনের ভবিষ্যৎ পথ-পাথেয়।আরজ আলী মাতুব্বর, হুমায়ন আজাদ,আহমেদ শরীফ ও তসলিমা নাসরিনরাই একটি জাতির ও সভ্যতার চালিকা শক্তি।এরা যুগ যুগ , শত শত বছর ধরে মানুষের জীবনে ও মনে কোটি কোটি ফুলের সুবাস ছড়িয়ে দিয়ে যায়।
মাহফুজ তোমাকে ধন্যবাদ দিয়ে ছোট করতে চাই না ,শুধু বলব আরো যত বেশী করে ঐসব মনীষিদের চোখের সামনে নিয়ে আসবা তত বেশী আমাদের চোখ কান খুলে আমরা সজাগ হবো।
:yes: :yes: :yes: :yes: :yes:
@মাহবুব সাঈদ মামুন,
সুন্দর কথা বলেছেন।
স্মরণ করছি অনেক আগে আপনার মন্তব্য করা একটি কথা, আপনি বলেছিলেন-
ধর্মের ও ক্ষমতার নির্লজ্জ ধবজাধারীরা শাররিক ও মানসিকভাবে আঘাত করে করে হত্যা করেছে একথা আমরা সবাই জানি। নির্লজ্জরা বেঁচে থাকে সাময়িক, কিন্তু হুমায়ুন আজাদরা মরে গিয়েও মরে না একথা তারা বেমালুম ভুলে যায়। হুমায়ুন আজাদ আমাদের সবার মাঝে চিরকাল বেচেঁ থাকুক।
ধন্যবাদ উৎসাহমূলক মন্তব্যের জন্য।
একসাথে একটা বড় বই দেখলে, সময়ের হিসেব করি। কাল পড়ব করে করে এক সময় ভুলে যাই। ক্ষুদ্রাকারে প্রকাশ করলে ভালই হয়। অবশ্য গ্রন্থস্বত্বের ব্যাপার-স্যাপার আছে।
মাহফুজের সময় নিয়ে প্রকাশ করার আগ্রহের জন্য সাধুবাদ জানাই।
@নৃপেন্দ্র সরকার,
দাদা,
এই বিষয়টাই তো জানতে চাচ্ছি।
আপনি কি “আমার অবিশ্বাস” বইটি পড়েছেন? অনেকেই এই বই পড়ে তাদের নিজেদেরকে বদলিয়ে ফেলেছে। বই মানুষকে কিভাবে যে প্রভাবিত করে তা বুঝা যায় এই বইটি পড়লে।
@মাহফুজ, না। কোথায় পাওয়া যাবে?
@নৃপেন্দ্র সরকার,
দাদা,
হুমায়ুন আজাদের সব বই তো আগামী প্রকাশনী থেকে বের হয়। যদি আপনি বাংলাদেশের স্থায়ী পাবলিক, বিশেষ করে ঢাকার বসবাসকারী হয়ে থাকেন, তাহলে নিচের ঠিকানায় যোগাযোগ করতে পারেন। (কিন্তু আপনি তো এখন বাংলাদেশের পাবলিক না, আমেরিকার পাবলিক হয়ে গেছেন, যদিও মন-প্রাণ-আত্মাটা পরে আছে জন্মভূমির দিকে)
শুধু আপনার জন্য হলেও বইটি ছাড়বো মুক্তমনায়, আগে দেখি পাবলিকের রিয়াকশনটা।
ঠিকানাটা:
আগামী প্রকাশনী
ওসমান গণি
৩৬ বাংলা বাজার, ঢাকা।
ফোন: ৭১১০০২১
৭১১১৩৩২
অবশ্য আজিজ সুপার মার্কেটের লাইব্রেরীগুলোতেও খোঁজ নিতে পারেন।
আমি নিজে তিন কপি কিনেছিলাম। দুটো উপহার দিয়েছি, আর একটি আমার কাছে আছে। তাও কাছে নাই, অন্যজন পড়তে নিয়েছে। ফেরত না দিলে আরেকটা কিনবো।
@মাহফুজ, কী রকম লোকেরা উপহার পায়,জানালে খুশী হব।
তপনকে বলব একখানা কিনতে।
মুক্তমনায় ছোট ছোট খন্ডে দেখতে চাই।
@নৃপেন্দ্র সরকার,
দাদা,
আপনার মতলব বুঝতে পেরেছি। উত্তর হচ্ছে- আপনার মত দাদারা, যারা মুক্তমনার ঝগড়াটে পরিবেশটাকে শান্ত করে। যাহোক, আপনি যদি বাংলাদেশে থাকতেন, তাহলে এককপি আপনাকে দিতে কোনো প্রকার কৃপণতা করতাম না।
অসুবিধা নাই, কিছু দিনের মধ্যেই তো অল্প অল্প করে পোষ্ট করা শুরু করবো। তখন পড়তে পারবেন এখান থেকেই। তার আগে পারমিশনটা জায়েজের ব্যবস্থা করতে হবে।
@মাহফুজ,
মতলব বুঝতে পারলে ভাল।
তাড়াতাড়ি ফিরে এসো। মামুন তোমাকে খুঁজছে।
মুক্তমনাতে হুমায়ুন আজাদের ‘ধর্মানুভূতির উপকথা’ এবং ‘প্রবচন গুচ্ছ’ ছাড়া আর কোনো লেখা পোষ্ট হয়েছে কিনা জানি না। আমার ইচ্ছা রয়েছে হুমায়ুন আজাদের ‘আমার অবিশ্বাস’ বইটি অল্প অল্প করে পোষ্ট করা। এর জন্য কোনো ধরনের পারমিশন লাগবে কিনা জানি না। এ ব্যাপারে পরামর্শ বা সাহায্য কামনা করছি।
@মাহফুজ,
আপনার ইচ্ছাকে সাধুবাদ জানাচ্ছি।
@ব্রাইট স্মাইল্,
প্রশংসাসূচক ধ্বনি ‘সাধুবাদ’ শব্দ উচ্চারণের জন্য আপনাকেও ধন্যবাদ জানাচ্ছি।
@মাহফুজ,
আগেই পড়েছিলাম। মুক্তমনায় পড়ে আবার ভাল লাগল। আপনি যেটা করতে সেটা করলে ভালই হয়।