রাতের আকাশটা যেদিন খুব পরিস্কার থাকে এবং চাঁদের আলোও থাকে কিছুটা ম্রিয়মাণ, সদা হাস্যোজ্বল এবং শান্ত স্বভাবের মানুষ পাদ্রী রবার্ট ইভান্স অস্ট্রেলিয়ার সিডনী শহর থেকে ৫০ মাইল পশ্চিমে ব্লু মাউন্টেইন এলাকায় অবস্হিত বাড়ীর পিছনের ডেকে তারঁ ঢাম্বুশ আকারের টেলিস্কোপটি টেনে নিয়ে একটি অভূতপূর্ব কাজ করতে বসে যান। তিনি সুদূর অতীতের দিকে তাকিয়ে থাকেন আর মৃত্যুপথযাত্রী নক্ষত্র গুলোকে খুঁজে খুঁজে বের করেন।
অতীতের দিকে ফিরে দেখাটা আসলে খুবই সহজ। রাতের আকাশের দিকে চোখ তুলে তাকান, যা কিছু দেখা যাচ্ছে তার সবটুকুই ইতিহাস – সারা আকাশটা জুড়েই। যে নক্ষত্রগুলো দেখা যাচ্ছে সেগুলো বর্তমান সময়ের না বরং চোখের মণিতে পড়া আলো যখন তাদের উৎস ছেড়ে চলে এসেছিলো সেই সময়ের। আমরা শুধু নিশ্চিত করে এটুকুই বলতে পারি আমাদের অতি বিশ্বস্ত ধ্রুবতারার জীবন প্রদীপ হয়ত গতমাসেই বা ১৮৫৪ সালে অথবা চতুর্দশ শতাব্দীর প্রথম দিকের কোন এক সময়ই জ্বলতে জ্বলতে নিভে গেছে। কিন্তু সেই সংবাদটি এখনও আমদের কাছে এসে পৌছেনি। আমরা খুব বেশি হলে এটুকু বলতে পারি যে, ৬৮০ বছর আগে আজকের দিনটিতেও ধ্রুবতারা স্বমহিমায় তার আলো বিকিরণ করে যাচ্ছিলো।
নক্ষত্ররা মারা যাচ্ছে প্রতিনিয়তই। আজ পর্যন্ত বহু মানুষ এই মহাকাশীয় বিদায় মূহুর্তগুলিকে চিহ্নিত করেছেন, কিন্তু বব ইভান্স তাদের যে কারও চাইতে আরও অনেক বেশি দক্ষতার সাথে এই কাজটি করতে পারেন। দিনের বেলায় পাদ্রী ইভান্স অস্ট্রেলিয়ার ” ইউনাইটিং চার্চের” হয়ে আধা-অবসরপ্রাপ্ত সহৃদয় এক যাজক হিসাবে কাজ করেন। পাশাপাশি তিনি উনিশ শতকের ধর্মীয় আন্দোলনের ইতিহাস নিয়েও ফ্রিল্যান্স গবেষনার কাজ করেন। কিন্তু রাতের বেলায় তিনি অচিন্তনীয় ভাবে বদলে যান। হয়ে যান রাতের আকাশের অতিমানবীয় মেধার অধিকারী এক টাইটান। শিকার করে বেড়ান সুপারনোভা।
আমাদের অতি আপন সূর্য্যের চেয়েও অনেক অনেক গুন বড় একটা বিশালাকার নক্ষত্রের জীবন সায়াহ্নে যখন তার কাঠামোটি হটাৎ করেই ভেঙে পরে এবং অভূতপূর্ব এক দৃশ্যের অবতারনা করে বিস্ফোরিত হয়ে মুহূর্তের মধ্যেই প্রায় ১০০ টা সূর্য্যের সমান শক্তি নিঃসৃত করে এবং তার আপন গ্যালাক্সিতে সবচাইতে উজ্ঝ্বল নক্ষত্র হিসাবে কিছু সময়ের জন্য জ্বলতে থাকে তখন সেই নক্ষত্র টিকে বলে সুপারনোভা। ইভান্স বলেন, “যদি এক ট্রিলিয়ন হাইড্রোজেন বোমা এক সাথে বিস্ফোরিত হয় তবে তার সাথে সুপারনোভার তুলনা করা যায়।” যদি আমাদের ৫০০ আলোকবর্ষের মধ্যেও কোনো সুপার নোভা ঘটে তবে বলা যায় আমাদের দিন শেষ। ইভান্স অনেকটা ঠাট্টা করেই বলেন, “সে দিন আমাদের খেলা সাঙ্গ হবে।” কিন্তু মহাবিশ্বটা আসলে এত বিশাল বড় আর সুপারনোভা গুলিও ঘটে এত দূরে দূরে যে আমাদের ক্ষতির কোন সম্ভাবনাই নেই। বস্তুতঃ পক্ষে বেশির ভাগ সুপারনোভাই ঘটে এতটাই অকল্পনীয় দূরে যে সেগুলোর আলো আমাদের চোখে খুবই দূর্বল ঝিলিক হিসাবে ধরা পরে। গড়ে প্রায় একমাসের মত সময় ধরে যখন সুপারনোভা গুলি দৃশ্যমান থাকে, সে সময়টাতে আকাশের অন্যান্য নক্ষত্র থেকে তাদের আলাদা করে চেনার উপায় হচ্ছে যে সেগুলো আকাশের এমন এক জায়গায় অবস্হান করে যে জায়গাটি আগে শূণ্য ছিলো। আর পাদ্রী ইভান্স রাতের আকাশের গম্বুজে নক্ষত্রদের ভীড়ের মাঝ থেকে এই ব্যতিক্রমী এবং অনিয়মিত ভাবে উদয় হওয়া সুপারনোভা গুলিকে খড়ের গাদা থেকে সূঁচ খোজার মত করে খুজে বের করেন।
এটা যে কত বড় একটা কৃতিত্বের কাজ সেটা বুঝতে হলে কল্পনা করুন একটি সাধারণ মাপের খাবার টেবিল কালো কাপড় দিয়ে ঢাকা আছে। এখন কেউ যদি একমুঠো লবণ টেবিলটা জুড়ে ছড়িয়ে দেয় তাহলে এই ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা লবণ দানা গুলোকে একটি নক্ষত্রপুন্জ্ঞ বা গ্যালাক্সি হিসাবে ভাবা যেতে পারে। এখন কল্পনা করুন আরও ১৫০০ টি টেবিল যেগুলোকে এক সারিতে সাজিয়ে রাখলে প্রায় দুই মাইল লম্বা হবে। প্রত্যেকটি টেবিল জুড়েই এলোমেলো ভাবে লবণের দানা ছড়ানো ছিটানো আছে। এখন একটা অতিরিক্ত লবণ দানা যদি কোন একটি টেবিলে রাখেন তবে বব ইভান্স টেবিল গুলির দিকে এক পলক তাকিয়েই বলে দিতে পারবেন কোন দানাটা নতুন যোগ করা হয়েছে। এই নতুন লবণ দানাটাই হচ্ছে সুপারনোভা।
আকাশের কোন নক্ষত্রটি কোথায় আছে এটা মনে রাখবার ক্ষেত্রে ইভান্সের মেধাশক্তি এতটাই ব্যতিক্রমী যে নিউরোলজিস্ট অলিভার স্যাক্স মস্তিস্কের ইন্দ্রিয় সমস্যায় আক্রান্ত কিন্তু অসাধারন কৃতিত্বের অধিকারী কিছু মানুষকে নিয়ে লেখা তাঁর “An Anthropologist on Mars” বইয়ের একটি অধ্যায়ে মনোবৈক্যলের অধিকারী কিন্তু অসাধারন গুনীদের (Autistic-Savant) নিয়ে আলোচনায় পুরো একটি প্যাসেজে ইভান্সকে নিয়ে লিখেছেন। সাথে সাথে তিনি এও বলতে ভুলেননি যে তিনি মনে করেন না যে ইভান্স মনোবৈক্যলে ভুগছেন (Autistic)। ইভান্স কখনও স্যাক্সকে সামনা সামনি দেখেননি। তিনি Autistic কিংবা Savant হতে পারেন এই সম্ভাবনার কথা শুনে মৃদু হাসেন। কিন্তু তিনি নিজেও তাঁর এই অসাধারন গুনের ব্যাখ্যা দিতে অক্ষম । তিনি বলেন, “আমি সহজাত প্রবৃত্তি বশেই আকাশের কোন তারাটা কোথায় আছে খুব সহজেই মনে রাখতে পারি। কিন্তু এমন আরও অনেক জিনিষ আছে যে গুলোতে আমি খুবই দুর্বল। যেমন আমি মানুষের নাম একদমই মনে রাখতে পারিনা।” ইভান্সের স্ত্রী এলেইন-ও স্বামীর সাথে একমত। তিনি কৌতুক করে বলেন, “ইভান্স কোন জিনিষটা কোথায় রেখেছে এটা মনে রাখতে পারে না।”
আকাশের দিকে মাথা তুলে তাকালে মহাবিশ্বের খুবই ক্ষুদ্র একটা অংশ আমরা দেখতে পাই। খোলা চোখে মাত্র ৬ হাজারের মত নক্ষত্র দেখা যায়। আর কোন একটা নির্দিস্ট স্হান থেকে সংখ্যাটা মাত্র দুই হাজারের মত। দূরবীণ দিয়ে দেখলে সংখ্যাটা একলাফে ৫০ হাজারে গিয়ে দাড়ায়।তবে খুবই ছোট একটা ২ ইন্ঞ্চি টেলিস্কোপের সাহায্যে প্রায় ৩ লক্ষ নক্ষত্র দেখা সম্ভব। আর দূরবীনটা যদি হয় ১৬ ইন্ঞ্চির তাহলে নক্ষত্রের বদলে আপনাকে গ্যালাক্সি গুনতে হবে। ইভান্স বাসার পিছনের ডেকে বসে তার ১৬ ইন্ঞ্চি দূরবীণের সাহায্যে ৫০ হাজার থেকে ১ লক্ষ গ্যালাক্সি পর্যবেক্ষণ করতে পারেন। প্রতিটা গ্যালাক্সিতেই রয়েছে বিলিয়ন বিলিয়ন নক্ষত্র। সংখ্যাটা খুবই সমীহ জাগানো কিন্তু তার পরেও সুপারনোভারা খুবই বিরল।
লক্ষ কোটি বছর ধরে একটা নক্ষত্র জ্বলতে পারে কিন্তু সেটা একবারই মৃত্যু বরণ করে এবং সে মৃত্যু হয় খুবই তড়িৎ। সে তুলনায় আবার খুবই কম সংখ্যক নক্ষত্র বিস্ফোরিত হয়। বেশিরভাগেরই জীবন প্রদীপ নিভে যায় নিরবে, ভোর বেলা ক্যাম্প ফায়ারের আগুনের মত। শত শত বিলিয়ন নক্ষত্র সমৃদ্ধ একটা সাধারণ গ্যালাক্সিতে ২ থেকে ৩ শ বৎসরে ১ টা সুপারনোভা সংঘটিত হয়। যার ফলে সুপার নোভার দেখা পাওয়া অনেকটা এ্যাম্পায়ার স্টেট বিল্ডিংয়ের অবজারভেশন ডেকে দাড়িয়ে টেলিস্কোপের সাহায্যে ম্যানহাটনের অগনিত জানালার ফাক দিয়ে কোনও একজনের ২১তম জন্মদিনের কেক কাটার দৃশ্য খুজে পাওয়ার মত।
ইভান্স যখন ১৯৮০ সালে সুপার নোভা খোজা শুরু করেন তখন পর্যন্ত পুরো এ্যাস্ট্রনমিকাল সোসাইটি ৬০টিরও কম সুপার নোভার সন্ধান পেয়েছিলো। আরো ২০০১ সালের আগস্ট মাস পর্যন্ত ইভান্স একাই ৩৪ টি সুপার নোভার সন্ধান পান। ৩ মাস পরেই খুজে পান তার ৩৫তম সুপার নোভার এবং ২০০৩ সালের প্রথম দিকে ৩৬তমটি।
সুপার নোভাগুলি কয়েক ধরনের হতে পারে। যেমন Ia, Ib, Ic, এবং II. এই বিভাজন গুলি করা হয় সাধারনতঃ তাদের থেকে নির্গত বর্নচ্ছটার বিশেষ বৈশিষ্ট্যের উপর এবং সময়ের সাথে সাথে আলোর উজ্জ্বলতার যে পরিবর্তন হয় (লাইট কার্ভ) তার উপর ভিত্তি করে। এদের মধ্যে Ia ধরনের সুপারনোভা মহাকাশ বিজ্ঞানীদের কাছে বিশেষ ভাবে গুরুত্বপূর্ন। কারণ এ ধরনের সুপার নোভা গুলি সাধারণত একই ভরের হয়ে থাকে এবং এদের বিস্ফোরণের ধরনটাও সবসময় একই রকম হয়। আর এদের উজ্জ্বলতাও সবসময় এক রকম হয়। এ কারনেই এই ধরনের সুপারনোভাগুলিকে একটি স্ট্যান্ডার্ড হিসাবে ধরে বিজ্ঞানীরা মহাবিশ্বের সম্প্রসারনের হার নির্নয় করে থাকেন।
খুব স্বাভাবিক ভাবেই আমাদের মনে যে প্রশ্নটা আসে সেটা হলো, এ রকম একটা নক্ষত্র আমাদের খুব কাছেই কোথাও যদি বিস্ফোরিত হয় তাহলে কি হবে? আমাদের সবচাইতে কাছের নক্ষত্রটা হচ্ছে ৪.৩ আলোকবর্ষ দূরে অবস্হিত আলফা সেঞ্চুরি। তাই এরকম মনে হওয়াটা স্বাভাবিক যে ওটা যদি বিস্ফোরিত হয় তবে আমাদের হাতে ৪.৩ বছর সময় আছে ঘটনাটা পর্যবেক্ষণ করার। পৃথিবীর বুকে মানুষের জীবন যাত্রা তখন কেমন হবে? যদি মানুষ জানতে পারে যে আর মাত্র ৪ বছর ৪ মাস সময় আছে মহাপ্রলয় হতে, মানুষকি তখনও তার দৈনন্দিন কাজে যাবে? কৃষকেরা কি যাবে ক্ষেতে ফসল বুনতে? কেউ কি যাবে দোকানে প্রয়োজনীয় জিনিষ কিনতে?
আসলে, সেরকম কিছুই ঘটবে না। এর রকম একটা ঘটনার সংবাদ আলোর গতিতে ছুটে চলে, আর সেই সাথে সাথে তার ধ্বংসযজ্ঞ চালানোর ক্ষমতাও। ফলশ্রুতিতে আমরা যে মূহূর্তে জানব এই ঘটনার কথা, সেই একই মূহুর্তে আমাদের মৃত্যুও ঘটবে। কিন্তু এটা নিয়ে আমাদের দুঃচিন্তার কোন কারন নেই। সুপারনোভার বিস্ফোরনের ফলে পৃথিবী ধ্বংস হতে হলে নক্ষত্রটাকে রিডিকুলাসলি আমাদের সন্নিকটে থাকতে হবে।
এধরনের বিস্ফোরনে অনেক ধরনের বিপদ হতে পারে….বিভিন্ন কসমিক রে’র তেজস্ক্রিয়তা সহ আরও অনেক কিছু। বিস্ফোরনের ফলে আধিভৌতিক আলোর তৈরি তিরতির করে কাপতে থাকা একটা চাদরের মত চমৎকার সব আলোর বর্ণচ্ছটা তৈরি হবে। তবে সেটা আমাদের জন্য মোটেও সুখকর কোন সংবাদ হবে না। এই রকম শক্তিশালী প্রদর্শনির ক্ষমতা থাকলে সেটা ম্যাগনেটস্ফিয়ার স্তরকে ছিন্নবিছিন্ন করে দেবে। আর ম্যাগনেটস্ফিয়ার হলো আমাদের বায়ুমন্ডলে অনেক উঁচুতে অবস্হিত একটা স্তর যেটা আমাদেরকে সুর্য্যের ক্ষতিকর অতি বেগুনি রশ্মি সহ বিভিন্ন ধরনের মহাজাগতিক রশ্মির আক্রমণ থেকে রক্ষা করে। ম্যাগনেটস্ফিয়ার স্তর ছাড়া কেউ যদি সূর্য্যের আলোর নীচে দাড়ায় তবে মূহুর্তেই সে পুড়ে যাওয়া পিৎজার চেহারা ধারন করবে।
কিন্তু যে কারণে আমরা মোটামুটি নিশ্চিত যে আমাদের গ্যালাক্সিতে এ ধরণের কিছ ঘটবে না সেটা হলো প্রথমতঃ একটা বিশেষ ধরণের নক্ষত্র হলেই শুধুমাত্র বিস্ফোরিত হওয়া সম্ভব। এরকম একটা নক্ষত্রকে হতে হবে সূর্য্যের চেয়ে কমপক্ষে ১০ অথবা ২০ গুন বড় এবং সেটাকে কমপক্ষে আমাদের থেকে ৫০০ আলোকবর্ষের চেয়ে কম দুরত্ব্বের মধ্যে তাকতে হবে। খুশির খবর হলো অতবড় নক্ষত্র আমাদের কাছে ধারে কোথাও নেই। সৌভাগ্যক্রমে মহাবিশ্বটা বিশাল বড়। আমাদের সবচাইতে কাছের সম্ভাব্য প্রার্থী নক্ষত্র হলো বিটেলগিজ, যার বিভিন্ন ধরণের অনিয়মিত কার্যকলাপ থেকে বোঝা যায় যে কিছু একটা ঘটতে পারে সেখানে। কিন্তু বিটেলগিজ আমাদের থেকে ৫০ হাজার আলোকবর্ষ দুরে অবস্হিত।
লিপিবদ্ধ সময়ের ইতিহাস থেকে দেখা যায় মাত্র অর্ধ-ডজনবার এমন সুপার নোভা ঘটেছিলো যেটা খালি চোখে দৃশ্যমান ছিলো। ১০৫৪ সালে ঘটেছিলো এরকম একটা বিস্ফোরণ যেটা থেকে সৃষ্টি হয়েছিলো ক্রাব নেবুলার। সবশেষ সুপার নোভা, যেটা শুধুমাত্র দক্ষিণ গোলার্ধ থেকে দেখা গিয়েছিলো, ঘটেছিলো ১৯৮৭ সালে। কিন্তু সেটাও ছিলো ১৬৯০০০ আলোকবর্ষ দূরে।
সুপারনোভা বিজ্ঞানীদের কাছে খুবই গুরুত্ত্বপূর্ণ। কারণ, একটি বিশেষ ধরনের সুপারনোভাকে (Ia) স্ট্যান্ডার্ড ক্যান্ডল হিসাবে ধরে বিজ্ঞানীরা মহাবিশ্বের সম্প্রসারনের হার নির্নয় করে থাকেন। আরও একটি বিশেষ কারনে সুপারনোভাগুলি আমাদের কাছে খুবই গুরুত্বপূর্ণ। মহাবিশ্বের শুরুতে বিগ ব্যাং প্রচুর পরিমানে হালকা গ্যাস তৈরী করলেও কোন ভারী উপাদান বা এলিমেন্ট তৈরী করেনি। সেগুলোর উৎপত্তি হয়েছিলো বিগ ব্যাংয়ের আরও অনেক অনেক পরে। অনেকদিন ধরেই বিজ্ঞানীরা কোনভাবেই বুঝতে পারছিলেন না পরে সেগুলো কিভাবে তৈরী হলো। সমস্যা হলো কার্বন এবং আয়রন সহ অন্যান্য ভারী এলিমেন্ট বা উপাদান তৈরীর জন্য দরকার ভয়ানক উত্তপ্ত কিছু, এমনকি সবচেয়ে উত্তপ্ত নক্ষত্রের কেন্দ্রের চেয়েও উত্তপ্ত কিছু। আর এই উপাদানগুলি না তৈরী হলে দুঃখজনক হলেও সত্যি আমারাও হতাম তাৎপর্যহীন।
যখন একটা নক্ষত্র বিস্ফোরিত হয় তখন সেটা প্রচুর পরিমাণে তাপ উৎপন্ন করে – প্রায় ১০০ মিলিয়ন ডিগ্রি বা তারও বেশি। আর এই অতি উচ্চ তাপমাত্রায় নিউক্লিও সিনথেসিস পদ্ধতিতে ভারী এলিমেন্ট বা উপাদান গুলো তৈরী হয়ে থাকে এবং মহাশুন্যে ছড়িয়ে যায়। ১৯৫৭ সালে বিজ্ঞানী ফ্রেড হয়েল দেখান কিভাবে সুপারনোভা বিস্ফোরনের সময় এই ভারী এলিমেন্টগুলি তৈরী হয়। আর তার পরেই বিজ্ঞানীদের পক্ষে সম্ভব হয় আমরা কিভাবে এলাম তার সম্ভাব্য দৃশ্যপট গুলি নির্মান করা। বিস্ফোরিত নক্ষত্রগুলি যখন মহাশূণ্যে এই ভারী এলিমেন্ট গুলি ছড়িয়ে দেয় তখন এরা নতুন এক গ্যাসীয় মেঘ বা আন্তর্নক্ষত্রিক মাধ্যম সৃস্টি করে এবং পরবর্তিতে এই গ্যাসীয় মেঘগুলি একত্রিত হয়ে সৃস্টি করে নতুন একটি সৌর জগতের ।
প্রায় ৪.৬ বিলিয়ন বছর আগে এক বিশাল গ্যাসের ঘূর্ণি এবং ধূলিকণা, আমরা এখন যেখানে আছি সেখানে, প্রায় ১৫ বিলিয়ন মাইল জুড়ে বিস্তৃত মহাশূণ্যে জড়ো হয় এবং বাড়তে থাকে। মোটামুটি পুরোটাই, আমাদের সৌরজগতের ৯৯.৯% ভরই, এক জায়গায় সংগঠিত হয় এবং সৃস্টি করে সূর্য্যের। আর ভেসে বেড়ানো অন্যান্য রয়ে যাওয়া গ্যাস এবং ধূলিকণা থেকে দুটি মাইক্রোস্কপিক কণা ভাসতে ভাসতে কাছাকাছি চলে আসে এবং ইলেক্ট্রোস্ট্যাটিক বলের কারণে পরস্পরের সাথে সংযুক্ত হয়। আর সেটাই ছিলো আমাদের গ্রহের সৃস্টির সবচাইতে আদি মূহুর্ত। পুরো বিশৃঙ্খল সৌরজগৎ জুড়েই তখন প্রতিনিয়তই ঘটে চলেছে এরকম অসংখ্য ঘটনা।
এই সমস্ত ধূলিকণার সংঘর্ষের ফলে একটু একটু করে তৈরী হচ্ছিলো আরেকটু বড় বড় পিন্ডের। আর একটা সময় এই পিন্ডগুলি আরও বড় হতে হতে তৈরী হলো ছোট ছোট মহাকাশীয় পাথরখন্ডের। এই অন্তহীন ধাক্কা এবং সংঘর্ষ কখনও কখনও এগুলোতে ফাটল ধরাত বা ভেঙ্গে ফেলত অথবা পুণরায় জোড়া লাগাত। আর এভাবেই এলোমেলো ভাবে চলতে থাকে অন্তহীন বিন্যাস এবং পুনর্বিন্যাসের। প্রতিটা সংঘর্ষেরই একটি বিজেতা ছিলো আর কোন কোন বিজয়ী আকারে আরও বড় হতে থাকলো এবং একটা পর্যায়ে যেয়ে এমন আকার ধারণ করলো যে, যে কক্ষপথে সেটি ভ্রমন করছিলো সেটিতে আধিপত্য বিস্তার করা শুরু করলো।
এই সবই ঘটেছে অত্যন্ত দ্রুত। ছোট একটা ক্লাস্টার থেকে শত শত মাইল বিস্তৃত একটা শিশু গ্রহে পরিণত হতে সময় লেগেছে মাত্র হাজার বছর। এরপর আরও ২০০ মিলিয়ন বছর বা তারও কম সময়ে পৃথিবী সৃস্টির কাজ মোটামুটি ভাবে শেষ হয়ে গিয়েছিলো। যদিও সেই সময় পৃথিবী ছিলো উত্তপ্ত এবং গলিত অবস্হায়। আর তখনও মহাশূণ্যে ভেসে বেড়ানো ধ্বংসাবশেষ নিয়মিতই পৃথিবীর বুকে আছড়ে পরত। ঠিক এই সময়ে ৪.৫ বিলিয়ন বছর আগে মঙ্গল গ্রহের আকারের একটা বস্তু পৃথিবীর বুকে আছড়ে পরে এবং পৃথিবীর একটা উল্লেখযোগ্য অংশকে পৃথিবী থেকে আলাদা করে ফেলে। কয়েক সপ্তাহের মধ্যেই ছুটে যাওয়া পদার্থগুলো পুনরায় জোড়া লাগলো এবং বছর না ঘুরতেই একটা গোলাকার পাথরের আকার নিলো যেটা আজও আমদের সঙ্গ দিয়ে যাচ্ছে। সৃস্টি হলো চাঁদ।
চাঁদের বেশিরভাগ পদার্থই এসেছে পৃথিবীর উপরিভাগের আস্তর থেকে, মধ্যভাগ থেকে নয়। আর সে কারণেই চাঁদে লোহার পরিমাণ খুবই কম, যেখানে পৃথিবীতে লোহা আছে প্রচুর পরিমাণে। পৃথিবী যখন এখনকার চেয়ে এক তৃতিয়াংশ আকারের সমান ছিলো তখনই এর বায়ূমন্ডল গঠনের কাজ শুরু হয়। সে সময় বায়ু মন্ডলে প্রধানতঃ ছিলো কার্বন-ডাই-অক্সাইড, নাইট্রোজেন, মিথেন, এবং সালফার। যেগুলো কিনা কোনভাবেই প্রাণ ধারনের উপযোগীতার সাথে সংশ্লিষ্ট করা যায় না। কার্বণ-ডাই-অক্সাইড একটা শক্তিশালী গ্রীণ হাউস গ্যাস। এটার একটা ভালো দিকও ছিলো। সূর্য্যটা তখন আরও অনেক কম উত্তপ্ত ছিলো। কার্বন-ডাই-অক্সাইডের গ্রীণ হাউস ইফেক্টের সুবিধাটা না থাকলে পৃথিবীটা চিরস্হায়ীভাবে বরফ হয়ে থাকত আর জীবন সৃস্টির প্রথম পদক্ষেপটা হয়ত কখনই সম্ভব হতনা। কিন্তু, জীবন শুরু হয়েছে।
পরবর্তি ৫০০ মিলিয়ন বছর তরুণ পৃথিবী ক্রমাগতভাবে ধুমকেতু, উল্কাপিন্ড, এবং অন্যান্য মহাকাশীয় ধ্বংসাবশেষ দ্বারা আক্রান্ত হতে থাকলো । যার ফলশ্রুতিতে সাগরগুলো ভরে গেলো পানি এবং অন্যান্য জীবন গঠনের সহায়ক উপাদানে। আরও চার বিলিয়ন বছর পরে মানুষ ভাবতে লাগলো কিভাবে সবকিছুর শুরু হয়েছিলো। আর তার পরের গল্পটা সবারই জানা।
সূত্রঃ এ শর্ট হিস্ট্রী অব নিয়ারলী এভরিথিং – বিল ব্রাইসন এবং ইন্টারনেট।
হে সূর্যদেব, আপনার ভাই বেরাদারদের জীবন সম্বন্ধে জানতে পেরে ভালো লাগলো। পাদ্রী ইভান্সের কথা জানতে পেরেও ভালো লাগলো…
দুর্দান্ত!
অনেক কিছু জানলাম। আগ্রহী ছিলাম, কিন্তু সহজ করে কেউ না বললে কষ্ট লাগে এই যা।
আপনার বর্ননা অসাধারন। পরের লেখাগুলোর জন্য আগ্রহ ভরে অপেক্ষা করবো।
একটা অনুরোধঃ মাঝে মাঝে লেখার সাথে সামঞ্জস্যপূর্ন ছবি কী যোগ করে দেয়া যায়? বুঝতে সুবিধা হয়।
মুক্তমনায় প্রথম লেখার জন্য আপনাকে অভিনন্দন। :rose2:
আমার ব্যাক্তিগত ধারনা বিজ্ঞানের অন্য শাখার চেয়ে বিশ্ব সৃষ্টির বিজ্ঞান সেভাবে অগ্রসর হয়নি বা আমি এব্যাপারে খুব কম জানি। একটি মহা বিস্ফোরন থেকে সৃষ্টির শুরু ব্যাপারটা আমার কাছে পরিস্কার না। কার্য থাকলে অবশ্যই কারন থাকতে হবে। কেন মহা বিস্ফোরণটি ঘটেছিল সেটা নিয়ে আসলে কোন আলোচনা দেখিনা। একারনেই আমার মনে হয় আমরা এ পুরো ব্যাপারটাই জানি খুব কম। ধর্মবাদীরা ঈশ্বরে এসে থেকে যেতে চায়। আমরা বলি, ঈশ্বরকে কে সৃষ্ট করল। বি ব্যাং এ এসে থেমে যাওয়াটাও আমার কাছে পীড়াদায়ক। তবে ইদানিং নাকি একক কোন বিস্ফোরনের তত্ত্বের পাশাপাশি অনেক পকেট বিস্ফোরনের তত্ত্ব গড়ে উঠছে। মুক্তমনাতেই মনে হয় পড়েছিলাম এই বিষয়ে। পকেট বিস্ফোরনের তত্ত্ব মেনে নিলে আবার আমাদেরকে ফিরে যেতে হবে অনাদি মহাবিশ্বের ধারনায়। আমার কিন্তু আদি-অন্তবিহীন মহাবিশ্ব ভাবতে বেশ ভাল লাগে। তাহলে আর কষ্ট করে আরেকটা অবিনশ্বর কিছু খুঁজতে হয় না। যখন আমরা কোন কিছুর শুরু আছে বলে স্বীকার করি তখন কিন্তু এর একটা শেষ আছে বলে ধরে নেই। কোন কিছু শুরু হতে গেলে এমন কিছুকে মেনে নিতে হবে যার সাপেক্ষে শুরুটা হলো। অর্থাৎ এমন কিছু যার শুরু হয়েছে আরো আগে, এভাবে ক্রমাগত পিছাতে থাকলে আমাদের এমন কিছুর প্রয়োজন হবে যার কোন শুরু ছিলোনা। সেটা যদি মহাবিশ্ব হয়ে থাকে তবে আমি একটু শান্তি পাই। 😀
নীচের উপসংহারে পানি এবং অন্যান্ন জীবন গঠনের সহায়ক উপাদানের উদ্ভবের ইংগিত করা হয়েছে। যদি এর উদ্ভবের প্রক্রিয়া নিয়ে কখনো লেখেন তবে আমাদের মত সরল গড়নের মস্তিস্কোওয়াদের খুব উপকার হয়।
@আতিক রাঢ়ী, কেন মহা বিস্ফোরণটি ঘটেছিল সেটা নিয়ে আসলে তেমন কোন আলোচনা হয়না তার কারণ হয়ত বিজ্ঞানীরা সেটা এখনও জানতে পারেননি তাই। সময় এবং সুযোগ পেলে চেস্টা করব আপনার টপিকটা নিয়ে লেখার। ধন্যবাদ।
:rose: :yes:
@খারাপ মানুষ, ভালো হয়ে যান। ভালো হইতে পয়সা লাগে না.. হা .. হা
:rose2:
লেখাটা চরম পছন্দ হইলো। শেয়ার করলাম। :rotfl:
স্বল্প জ্ঞানরে আবার ঘুরে ফিরে ঝালাই করে দিলাম । :yes:
পাদ্রী ইভান্স টাইপের লোকগুলো মস্তিষ্কের নিউরনের বিন্যাস আমার কাছে মহাকাশের গ্যালাক্সীদের বিন্যাসের চে কম রহস্যময় মনে হয় না।
প্রকৃতি কি সুন্দর!! 🙂 :guru:
@Aronnok, শুণ্য ছাড়া যে আরেকজন আরণ্যক আছে তাতো জানা ছিলো না!! ফেসবুকে শেয়ারের জন্য ধন্যবাদ। :rose2:
সত্য কথা বলতে মহাবিশ্ব বিষয়ক লেখা সবসময় ভাল লাগে না, কেন যেন মনোযোগ ধরে রাখতে পারি না। নিজের বিজ্ঞান জগতের লোক হয়েও এ হাল কেন তা অনেক ভেবেও কুল পাই না।
তাই মনে হয় হোরাস ভাই এর এই লেখা পড়ে অভিভূত হলাম। সুপারনোভার ব্যাপার, সাথে পৃথিবী চাঁদ সৃষ্টি রহস্য অনেকটা পরিষ্কার হল। পাদ্রী ঈভান্সের ক্ষমতায় মুগ্ধ হওয়া যায় নাকি চরম বিস্মিত হতে হয় বুঝতে পারছি না।
আশা করি হোরাস ভাই নিয়মিত লেখা দেবেন। এটাই মনে হয় মুক্তমনায় ওনার প্রথম লেখা, ক্রীজে এসে প্রথম বলেই সপাটে ছক্কা!
@আদিল মাহমুদ, আপনি এই লাইনের লোক নাকি? তাইলে কিছু লেখা ছাড়েন তাড়াতাড়ি। :rose2:
@হোরাস,
আরে না, আমি ইট বালু লোহা লক্কড় লাইনের লোক, পিওর সায়েন্সের আসলে তেমন কিছুই জানি না। এইসব লেখা তো দুরের কথা, পড়লেও বেশীরভাগই মাথার উপর দিয়ে যায়।
তবে আপনার লেখায় কিছু জিনিস আসলেই পরিষ্কার হয়েছে। বিশেষ করে মাথার উপর সুপার নোভা আচমকা ফাটার সম্ভাবনা খুব কম জেনে ডবল শান্তি পেয়েছি 🙂 । আশা করি মিথ্যা আশ্বাস দেন নাই, আমি আপনি কিন্তু এক শহরে থাকি মনে রাখবেন।
@আদিল মাহমুদ, নারে ভাই মিথ্যা আশ্বাস দিয়ে বেঘোরে জীবনটা খোয়াতে চাই না। আদিল নামটা শুনলেই আমার বাংলা সিনেমার আদিলের কথা মনে হয়। দেখলেই কেমন জানি ডর লাগে। হা হা …… ।
এক শহরেই যখন থাকি তখন চলে আসেন একদিন চা খাইতে…
চমৎকার লাগল ভাইয়া।
মহাবিশ্বের অজানা রহস্যের রস আস্বাদন করতে আমি সবসময়ই খুব পছন্দ করি। এসব নিয়ে লেখালিখি মুক্তমনায় একটু কমই হয়। আমি মনে করি সাধারন জনগনের মধ্যে বিজ্ঞান সচেতনতা বাড়ানোর জন্য এইসব লেখা লিখি একটু বেশী হওয়া দরকার।
সূর্যের থেকে দশগুন বড় নক্ষত্রের ক্ষেত্রে সুপারনোভা হয়। কেন এই সুপারনোভা বিস্ফোরন হয়? আমি বলতে চাচ্ছি যে নক্ষত্রের ভিতরে তার জ্বালানী গ্যাসের দহন হয় ক্রমাগত। যখন জ্বালানী শেষ হয়ে যায় তখন তা তার আপন ভরের কারনে কল্যাপ্স করে। কিন্তু আমার কথা হল নক্ষত্র্রের ভর তো আসলে আসে তার জ্বালানী গ্যাস থেকেই। তাহলে জ্বলানী গ্যাস শেষ হয়ে আসলে তার ভর তো আর থাকার কথা নয়। আবার NOVA-PBS এর একটা ডকু তে দেখলাম যে সুপারনোভা তখনই হয়, যখন একটা শ্বেত বামন একটা লাল দৈত্যের কাছে আসে তখন লাল বামন থেকে শ্বেত বামন তার গ্র্যাভিটিশনাল ফোর্সের সাহায্যে Hot গ্যাস টেনে নিতে থাকে। যথেষ্ট saturate হয়ে যাবার পর যখন এটি আর গ্যাস টেনে নিতে পারেনা তখন এটি(শ্বেত বামনটি) বিস্ফোরিত হয় আর একেই নাকি বলে supernova। তাহলে কি supernova বিস্ফোরনের জন্য লাল বামন আর শ্বেত বামনের দরকার হয়?
নক্ষত্রের এই শ্বেত বামন বা লাল দৈত্যে পরিনত হওয়াটাই বা কিভাবে ঘটে? আবার দেখলাম সুপারনোভা বিস্ফোরনের মাধ্যমে ব্ল্যাক হোলের ও সৃষ্টি হতে পারে। আবার ব্ল্যাক হোলেরও নাকি আয়ু আছে। তাহলে তাদের মৃত্যুই বা ঘটে কিভাবে? আর মরার পরই বা তাদের থেকে কি সৃষ্টি হয়?
মহাবিশ্ব সম্পর্কে আমার মনে অনেক প্রশ্ন। এ নিয়ে মুক্তমনায় লেখাও তেমন নেই। আপনি কি আমাকে একটু বিস্তারিত ব্যাখ্যা করে সাহায্য করবেন?
ভাল থাকবেন।
@মিঠুন, নিচে দুটি ভিডিওর লিঙ্ক দিলাম। প্রথমটা কার্ল সেগানের “দি লাইফ সাইকেল অব এ স্টার।” ভিডিওটা মূলতঃ সূর্য্যকে নিয়ে হলেও এটাতে হোয়াইট ডোয়ার্ফ, নিউট্রন স্টার এবং ব্লাক হোল কিভাবে গঠিত হয় সেটা বেশ ভালোভাবে ব্যাখ্যা করা হয়েছে।
httpv://www.youtube.com/watch?v=XRMINy-tUp8
আর দ্বিতীয় ভিডিওটিতে (দি সাইন্স অব সুপারনোভাস) ব্যাখ্যা করা হয়েছে যে তিন ভাবে সুপারনোভা বিস্ফোরণ ঘটতে পারে সেগুলি।
httpv://www.youtube.com/watch?v=x38KDH81Nlo
আশা করি ভিডিও দুটি আপনার কৌতুহল মেটাতে সক্ষম হবে।
ধন্যবাদ। :rose2:
@হোরাস,
ঠিক আছে, আমি ডাউনলোড করে নিচ্ছি। এরপরেও যদি কোন প্রশ্ন থাকে তাহলে প্রস্তুত থাকেন জ্বালাতনের জন্য।
অনেক ধন্যবাদ আপনাকে।
@মিঠুন, লিঙ্কদুটি ঠিক মত আসল না কেন বুঝলাম না। তবে তবে হাইলাইট করা লাইন দুটিই ভিডিও দুটির লিঙ্ক।
@হোরাস,
মুক্তমনায় ভিডিও দেয়ার লিঙ্ক একটু ভিন্ন। দেখুন কমেন্ট করার জায়গার নীচে ইন্সট্রাকশন দেয়া আছে –
ইউটিউব থেকে ভিডিও সংযোগের জন্য ভিডিওর URL কপি করুন এবং লিঙ্কটি পোস্ট করার সময় http:// র বদলে httpv:// লিখুন ( ‘v’ characterটি লক্ষ্য করুন।)
অর্থাৎ, ইউটিউবের লিঙ্কটায় p এর পরে একটা অতিরিক্ত v বসাতে হয়। তাহলেই ভিডিও পোস্ট হয়ে যায়। আপনার ভিডিও ক্লিপ ঠিক করে দেয়া হয়েছে। আপনি উক্ত কমেন্টের এডিট লিঙ্ক এ ক্লিক করে ব্যাপারটি দেখে নিন।
@মুক্তমনা এডমিন, ধন্যবাদ। তাড়াহুড়ায় তখন চোখে পরেনি। :rose2:
অসাধারণ লেখা। নিজস্বতা আছে, আছে প্রসাদগুণ। সাথে দীপেন ভট্টাচার্যের মন্তব্যটাও বাঁধিয়ে রাখার মতো।
সত্যিই হোরাস, বলি আপনাকে, ব্লগীয় ক্যাচালে যান, জানি। কিন্তু, ভাবীকালের জন্যে এরকম দুচার গন্ডা লেখা না রেখে গেলে আগামী প্রজন্ম এবং নিজের প্রতিভা, দুটোর প্রতিই নিতান্ত অবিচার করবেন।
স্বাগতম এবং শ্রদ্ধা।
@ব্লাডি সিভিলিয়ান, হা হা …. আপনার কমেন্টটা পড়ে ভালো লাগলো। মাঝে মাঝে কবিগুরুর কথামত আধমরাদের ঘা মেরে বাঁচানোর দরকার আছে। তাই একটু আধটু ক্যাচালে জড়িয়ে পরি। এবং সেটা করি ভদ্রতা এবং লিমিট বজায় রেখেই।
একবার যখন এখানে লেখা শুরু করেছি তখন আশা করছি সেটা কন্টিনিউ করে যাব।
:rose2:
হোরাস,
সুপারনোভার আপনার পরিষ্কার গদ্য পড়ে খুবই ভাল লাগল। নৃপেনদার মতই আমি বলব, এই সব লেখা নিজের নামে লিখতে পারেন, যদিও আমার স্বীকার করতেই হবে হোরাস নামের মধ্যে একটা প্রাচীন মোহ লুকিয়ে আছে।
আমি এখানে দু-একটা মন্তব্য করছি, আপনি যদি ভবিষ্যতে এই লেখাগুলিকে নিয়ে বই বার করেন, এই তথ্যগুলোকে দেখে নেবেন। ব্রাইসনের বইটিতে জ্যোতির্বিদ্যার ওপর কিছু তথ্যগত ভুল ছিল, ঠিক কি ভুল ছিল এখন মনে পড়ছে না।
একটা সুপারনোভা এক বছরের মধ্যে সূর্যের সারা জীবনের (১০ বিলিয়ন বা ১০০০ হাজার কোটি বছরের) শক্তি বিকিরণ করে, বিস্ফোরণের আদি মুহূর্তে একটা সুপারনোভা একটা গ্যালাক্সীর সমান উজ্জ্বল হতে পারে, মানে তার থেকে মুহূর্তের জন্য হলেও এক কোটি থেকে কয়েকশো কোটি সূর্যের আলো বের হবে।
এক ট্রিলিয়ন হচ্ছে ১০^১২। আমরা যদি সেই বোমার মেগাটন মাত্রা নির্ধারণ না করে দিই, তবে এক ট্রিলিয়ন সংখ্যাটার কোন অর্থ হবে না। এখন পর্যন্ত সবচেয়ে বড় হাইড্রোজেন বোমার শক্তি হল ৫০ মেগাটন (হিরসিমা/নাগাসাকি ছিল ২০ কিলোটনের নিচে), ধরে নিই সেটা ১০০ মেগাটন। এক বছর ধরে একটা সুপারনোভা প্রায় ১০^২৮ মেগাটন টিএনটি, অর্থাৎ সেরকম ১০^২৬ টি বোমার সমান শক্তি বিকিরণ করে, প্রথম মুহূর্তগুলোয় সেই শক্তির পরিমাণ প্রায় ১০^১৯ টি বোমার মতন, অর্থাৎ এক ট্রিলিয়ন থেকে অনেক বেশী।
এটা নির্ভর করবে সেই সুপারনোভাতে গামা-রশ্মি বিস্ফোরণ ঘটছে কিনা তার ওপর। কারণ গামা-রশ্মি আলোর গতিবেগে ভ্রমণ করে। আলফা সেন্টাউরির দূরত্বে যদি সুপারনোভা হয় এবং তার সাথে গামা-রশ্মি বিকিরণ হয় তাহলে কথাটা ঠিক। কিন্তু গামা-রশ্মি বিস্ফোরণ খুব কম সুপারনোভাতেই হয়। কাছাকাছি সুপারনোভার আলো নয়, বরং বস্তুকণার ব্লাস্ট ওয়েভ (যা কিনা আলোর এক দশমাংশ গতিতে ভ্রমণ করবে) ও মহাজাগতিক রশ্মি (কসমিক রে) পৃথিবীর উপরিভাগের জলবায়ু ও প্রাণিকূল ধ্বংস করে দিতে পারে, সেটা সুপারনোভাকে আকাশে দেখার সাথে সাথেই হবে না।
Betelguese এর ইংরেজী উচ্চারণ হবে বেটেলজুস। এর একটা ভাল বাংলা নাম আছে – আর্দ্রা। আর্দ্রার দূরত্ব ৫০,০০০ আলোকবর্ষ নয়, ৬০০ আলোকবর্ষের মত। উইকিপিডিয়ায় এর দূরত্ব নির্ধারনের ওপর সংক্ষিপ্ত আলোচনা আছে।
পৃথিবীর ৪.৫ বিলিয়ন বছরের ইতিহাসে অনেক সুপারনোভা খুব কাছাকাছি ঘটেছে (১০ আলোকবর্ষের মধ্যে), এটা হতে বাধ্য, কারণ গ্যালাক্সী কেন্দ্র পরিক্রমার সাথে সাথে সূর্য অনেক সময় ঘন গ্যাস ও ঘন তারা সমষ্টির মধ্যে দিয়ে গেছে যেখানে অনেক সুপারনোভা বিস্ফোরণ হয়েছে। এই মুহূর্তে আমরা মোটামুটি তারা-হীন একটা অঞ্চলের মধ্য দিয়ে যাচ্ছি। আগামী ১০-২০ মিলিয়ন বছরের মধ্যে সেই অবস্থার পরিবর্তন হবে।
জ্যোতির্বিদ্যায় ইন্টারেস্টেড বলে মন্তব্যগুলো করলাম, আপনার ভবিষ্যৎ লেখার আশায় থাকলাম।
@দীপেন ভট্টাচার্য,
দীপেনদা, আপনার আলোচনা সত্যই দুর্দান্ত। :yes:
আপনি আরো বেশি করে মুক্তমনায় আলোচনায় অংশ নেন না কেন কে যানে!
@অভিজিৎ,
কেমন করে করব? এই ধরুন আমি অনেক কষ্টে, কোন রকমে, হোরাসের প্রবন্ধের ওপর একটা লেখা তৈরি করলাম। ওঃ মা, মুহূর্তে ড. রায়ের উত্তর চলে আসল :-D। আপনার ও মুক্তমনার অনেকের মত বিস্তৃতি ও উতপাদিকা শক্তি থাকলে তো নিসন্দেহে লিখতাম। হোরাসের লেখাটা কাকতালীয় ভাবে আমার লাইনের হয়ে গেছে, না হলে তো পেটে বোমা মারলেও ডিএনএ উচ্চারণ করতে পারব না :cry:!
@দীপেন ভট্টাচার্য, ধন্যবাদ আপনার অত্যন্ত সুন্দর গঠনমূলক মন্তব্যের জন্য। আমি নিজে শখের বশে এবং বিজ্ঞানের প্রতি ভালোভাসার কারণে বিজ্ঞান নিয়ে একটু আধটু পড়াশোনা করি এবং যা পড়ি সেগুলো নিয়ে টুকটাক লেখার চেষ্টা করি। আমি প্রফেশনাল জীবনে অন্য লাইনের লোক। বই বের করার দুঃস্বপ্নও দেখি না। আর মূল বইয়ের লেখক বিল ব্রাইসনও একজন সাংবাদিক এবং বিজ্ঞানের ইতিহাস লেখক। তাই তাকেও ঠিক বিজ্ঞানী বলা যাবে না। তথ্যের ভুলগুলো ধরিয়ে দেয়ার জন্য আপনার কাছে কৃতজ্ঞতা।
আপনার কমেন্টটি নিঃসন্দেহে আমার পোস্টের জন্য একটি বড় সংযোজন।
আবারও ধন্যবাদ। :rose2:
হোরাস,
মুক্তমনাতে আগে অনেকেই আপনার লেখার কথা উল্লেখ করেছেন। আপনার লেখা পরে বুঝলাম কেন। অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে এরকম একটা চমৎকার লেখা দিয়ে এখানে ব্লগিং শুরু করার জন্য। আশা করি এরকম আরও অনেক লেখা উপহার দেবেন ভবিষ্যতে। মানুষের মস্তিষ্ক অদ্ভুতরকম অপূর্ব একটা জিনিস। সাইন্টিফিক আমেরিকান মাইন্ডে মাঝে মাঝে কিছু গবেষণার কথা পড়ে রীতিমত হা হয়ে থাকি। বিজ্ঞান যেভাবে আগাচ্ছে খুব তাড়াতাড়িই হয়তো আমরা অনেক কিছুই বুঝতে এবং জানতে পারবো।
একটা বোকার মত প্রশ্ন করি, চাঁদ এর উৎপত্তি নিয়ে এই তত্ত্বটাই কি ফাইনাল বা প্রমাণিত? কারণ কিছু দিন আগেও দেখেছি আমেরিকার এলিমেন্টারি স্কুলে পড়ানো হয় চাঁদ তৈরির পিছনে কয়েকটা অনুকল্প আছে।
@বন্যা আহমেদ, পৃথিবীর একটা বিশাল বড় আয়রণ কোর আছে যেটা চাঁদের নেই। কারণটা হলো ইমপ্যাক্ট ঘটার আগেই সব লোহা পৃথিবীর কেন্দ্রে গিয়ে জমা হয়েছিলো। তাই যখন ইমপ্যাক্ট ঘটে তখন উপরিভাগের লোহা বিহীণ পাথুরে উপরিভাগ থেকেই চাঁদের উপাদানগুলো এসেছিলো। আর কম্পিউটার মডেল থেকে দেখা যায় যে বস্তুটা আঘাত হেনেছিলো তার লোহার কোর বা মূল কেন্দ্রটা সংঘর্ষের সময় গলে গিয়ে পৃথিবীর কেন্দ্রে গিয়ে জমা হয়।
পৃথিবীর গড় ঘনত্ব ৫.৫ গ্রাম/কিউবিক সেন্টিমিটার। আর চাঁদের ক্ষেত্রে সেটা হচ্ছে ৩.৩ গ্রাম/কি.সে। কারণটা হলো চাঁদে লোহার পরিমাণ খুবই কম। আবার চাঁদে এবং পৃথিবীতে একই অক্সিজেন আইসোটোপ পাওয়া যায়। যেটা কিনা মঙ্গলগ্রহ কিংবা সৌরজগতের অন্যান্য স্হানে পাওয়া উল্কাপিন্ডের অক্সিজেন আইসোটোপ থেকে আলাদা। এ থেকে বোঝা যায় যে চাঁদ যে সমস্ত উপাদান দ্বারা গঠিত হয়েছে সেগুলো এসেছে পৃথিবী এবং তার আশেপাশের এলাকা থেকে।
এখন দেখা যাক চাঁদের গঠন বিষয়ক প্রচলিত কয়েকটি তত্ব কি বলে। একটি তত্ব অনুযায়ী চাঁদ এবং পৃথিবী একই সময়ে গঠিত হয় এবং চাঁদ পৃথিবীর কক্ষপথে ঘুরতে শুরু করে। কিন্তু এই তত্ব চাঁদে লোহার পরিমাণ এত কম কেন সেটা ব্যাখা করতে ব্যর্থ ফলে বিজ্ঞানীরা সেটা নাকচ করে দেন। আরেকটি তত্ব হচ্ছে সৌর জগতের অন্য কোথাও, যেখানে লোহার পরিমাণ খুব কম, চাঁদ গঠিত হয় এবং পরে কোন একসময় পৃথিবীর কক্ষপথে আটকা পরে যায়। কিন্তু এ তত্বও দেখাতে ব্যর্থ হয় চাঁদ এবং পৃথিবীর অক্সজেনের আইসোটোপ একই হলো কিভাবে। তৃতীয় আরেকটা তত্ব আছে যেটাতে মনে করা হতো পৃথিবী একসময় এত জোরে ঘুরত যে চাঁদ একসময় পৃথিবী থেকে ছিটকে বের হয়ে যায়। কিন্তু এ তত্ব অনুযায়ী যে সামগ্রিক কৌনিক ভরবেগ এবং শক্তির দরকার সেটা বর্তমানের পৃথিবী এবং চাঁদের এভাবে সৃষ্টি হওয়ার পক্ষে যথেষ্ঠ ছিলো না।
হোরাস,
অসম্ভব সুন্দর লেখা! মন্তব্য যাঁরা করেছেন তাঁদেরও আন্তরিক ধন্যবাদ না দিয়ে উপায় নেই এই জন্যে যে, এটি মূল প্রবন্ধের সৌন্দর্য্য আরো বাড়িয়ে দিয়েছে।
হোরাস, আমি সত্যিই অভিভূত বব ইভান্স এর দক্ষতায়। মস্তিষ্কের এমন খেয়ালী আজব কার্যকলাপের উদাহরণের তো কমতি নেই! তবে বিকাশের সুযোগ থাকতে হবে! আমার মনে আছে সপ্তম/অষ্টম শ্রেণীর ছাত্র থাকা কালীন আমাদের স্কুলের শিক্ষক রঞ্জিত স্যার আমাদের নিয়ে এসেছিলেন ঢাকার বিজ্ঞান যাদুঘরে। টেলেস্কোপ দেখাতে! টেলেস্কোপ চোখে লাগিয়ে আকাশের দিকে তাকাতে সেদিন না পারলেও দৃষ্টিটা ছড়িয়ে গিয়েছিলো দিগন্ত ছাড়িয়ে স্যারের অবিশ্যাস্য রকমের আকর্ষনীয় বর্ণনায়! সে পুলক আজও অনুভব করি। আপনার লেখা পড়তে পড়তে সেই দিন গুলোতে হাড়িয়ে গিয়েছিলাম কিছু সময়ের জন্যে!
অসম্ভব প্রাঞ্জল লেখা, আরো লিখুন! অভিনন্দন!
@কেশব অধিকারী, আপনি খুব সৌভাগ্যবান রঞ্জিত স্যারের মত একজন শিক্ষক পেয়েছিলেন। আমি আমার সারাজীবনে আমার কল্পনাশক্তিকে এভাবে উস্কে দেয়ার মত কোন শিক্ষক পাইনি। পেলে খুব ভালো হত।
ধন্যবাদ। :rose2:
অসাধারণ লেখা। মুক্তমনায় স্বাগতম। :rose2:
আপনাকে এখানে নিয়মিত দেখার আশাকরছি। একে প্রিয় বিষয় তারপরে আপনার কবিতার মত লেখা, এক নিঃশ্বাসে পড়ে ফেললাম।
এতসুন্দর কীভাবে লেখে মানুষ?
@নিদ্রালু, ধন্যবাদ। আপনার নামটা দেখেই আমার চোখ ভরে ঘুম এসে যাচ্ছে। 😀
@হোরাস,
আমার কিন্তু সকালে অফিসে যাবার সময়ই ঘুমটা আসে আর মাঝে মাঝে অফিসে ঘুমপায়।
তবে একটা সময়ে কখনোই ঘুমপায়না সেটা হল আমি যখন রাতে ঘুমোতে যাই।ব্যাপক ফ্যাসাদে আছি ভাই।
এক কথায় দুর্দান্ত, যেমন তথ্যে তেমনি লেখনী শৈলিতে।
চমৎকার লাগলো ইভান্সের স্মরণ শক্তির বর্ণনাটা।
শুধু অটিস্টিক ব্রেন নয়, সার্বিকভাবে মানুষের মস্তিষ্কের কার্যকলাপই খুব মজার এবং রহস্যময়। কলেজ লাইফে এক চায়ের দোকানে দল বেঁধে আড্ডা দিতাম। স্বাভাবিক ভাবেই চায়ের পরে চা চলতো। আমাদের শুধু নয় প্রতিটি টেবিলের কাস্টমারেরই চা এবং খাওয়া দাওয়ার হিসেব রেখে চলতো ছোট একটি ছেলে। অনেক সময়ই হোটেলে ভীর উপচে পড়তো। কিন্তু তার হিসেবের গড়মিল পেতাম না। একদিন জিজ্ঞাসা করলাম – তুই তো হিসাব কিতাবে অনেক ভাল, স্মৃতিশক্তিও প্রখর, পড়া লেখা করলি না কেন? উত্তর আসলো – পড়া মনে রাখতে পারি না, খালি ভ্যারা চ্যারা লেগে যায়!
@অভিজিৎ, আপনাদের মত লেখকদের সাথে যে এক প্লাটফর্মে লিখছি সেটাই আমার জন্য অনেক বড় একটা ব্যাপার।
আর মানুষের মস্তিষ্কের কার্যকলাপের ব্যাপারে যেটা বলেছেন তার সাথে আমি একমত। আসলেই কত আজব ধরণের ক্ষমতা সম্পন্ন মানুষ যে এ পৃথিবীতে আছে সেটা ভাবলেই অবাক হতে হয়। আপনার সেই চায়ের দোকানের ছোট্ট
ছেলেটাও সুযোগ পেলে এবং চর্চা করলে হয়ত অনেক বড় কিছু করে দেখাতে পারত।
চমৎকার!! আপনাকে মুক্ত-মনায়ই মানায়। :rose2:
আমাদের জন্য নিয়মিত লেখবেন।
@সৈকত চৌধুরী, লেখালেখি করা যে কত ঝামেলার আর সময় সাপেক্ষ একটা কাজ সেটা আগে বুঝতে পারিনি। তবে আপনাদের সাহচর্য আর উৎসাহ পেলে আশা করি সেটা চালিয়ে যেতে পারব। ধন্যবাদ। :rose2:
নিবন্ধটি আমার জন্য উপলব্ধি করা অসম্ভব। কিন্তু লেখাটির অসাধারণ স্টাইল আমাকে পুরোটা পড়তে সাহায্য করেছে। বিশ্ব সৃষ্টির ভালো একটা ধারণা আমি পেয়েছি। এই ইতিহাস গবেষণাগারে প্রমাণযোগ্য নয়, তবে গ্রহনযোগ্য। আমার এ ধরণের লেখাগুলো ভাল লাগে কেন না – আমার স্বাভাবিক প্রশ্নাবলীর উত্তর এখানেই মিলে। আমি কে? কোথা থেকে এসেছি? কোথায় চলেছি, ইত্যাদি। এ বিরাট বিশ্বটি কত বড়? কিভাবে এর সৃষ্টি?
আমি বুঝিনা “হোরাস”রা কেন লুকিয়ে লুকিয়ে থাকে? এত সুন্দর একটি নিবন্ধের সাথে লেখকটিকেও জানতে ইচ্ছে করে।
@নৃপেন্দ্র সরকার, আপনার সুন্দর মন্তব্যটির জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ। আর নিকের ব্যাপারে বলব – ব্লগিংয়ের শুরুতে মনে হয়েছিলো নিক নিয়ে লেখাটা বেশ মজার। তবে নিক নিয়ে লিখলেও আমি যা বিশ্বাস করি বা মেনে চলার চেষ্টা করি তার বাইরে কখনও কিছু লিখিনি বা লেখার চেষ্টাও করিনি। তারপর আস্তে আস্তে নিকটাই পরিচিতি পেয়ে গেলো। এখন আসলে এটাই আমি।