প্রস্তাবিত শিক্ষানীতিতে ধর্মশিক্ষার বিষয়ে বলা হয়েছে যে ছাত্ররা যাতে তাদের ধর্মচিন্তা ধর্মীয় আচার-নিষ্ঠার মধ্যে সীমাবদ্ধ না রেখে ধর্মের মর্ম বুঝতে সচেষ্ট হয়, সেভাবেই ধর্মীয় পাঠদান পরিচালিত হবে। ভয়ের কথা বটে,-আমাদের মাদ্রাসাগুলোতে ধর্মের মর্মই শেখানো হয়, কিন্তু এখন পর্যন্ত্য মাদ্রাসা থেকে আমরা বোমাবাজ পেলেও কোন সমাজসেবক পাইনি। যাই হোক, বর্তমানে প্রচলিত ধর্ম বই দিয়েই আমাদের শিক্ষানীতি উপরে উল্লেখিত উদ্দেশ্যটি সাধন করবে। তাহলে দেখা যাক আমাদের ধর্ম(ইসলাম) বইতে কি লেখা আছে। আমি এখানে ২০০৯ শিক্ষাবর্ষের জন্য প্রযোজ্য ধর্ম বইটিই ব্যবহার করব।
ইসলাম একটি মতবাদ, যদিও মুসলমানরা দাবি করে ইসলাম একটি জীবন-ব্যবস্থা। স্রেফ বিশ্বাসের উপর ভিত্তি করে কিভাবে মানুষ একটি জীবন-ব্যবস্থা গড়ে তুলতে পারে সেটি আমার বোধগম্য নয়, তবুও সেই প্রসঙ্গে নাহয় নাই গেলাম। ইসলামের প্রতি অবিশ্বাস পোষণ করে যারা তারা হল কাফের। কাফেরদের বিরুদ্ধে বইটিতে যে কি পরিমান ঘৃণা ছড়ানো হয়েছে তা না পড়লে বিশ্বাস করা যায় না। একটা মতবাদের বিরোধীতা করা তো পাপ না। কোন বিশেষ জীবন-ব্যবস্থার বিরোধীতা করাও তো পাপ না। জাপানীদের জীবন-ব্যবস্থার সাথে আমাদের জীবন-ব্যবস্থার আকাশপাতাল পার্থক্য রয়েছে, তাই বলে কি আমরা জাপানীদের ঘৃণা করি? যদিও আমরা তাদের ঘৃণা করি না, ইসলাম শিক্ষার বই কিন্তু বলে তাদেরকে ঘৃণা করা আমাদের পবিত্র দায়িত্ব। বইটিতে কাফেরদেরকে “অকৃ্তজ্ঞ”, “অবাধ্য”, “জঘন্য” বিশেষণে বিশেষিত করা হয়েছে। বইটি পড়ে আমি শিখলাম যে আমার সাথে কারও মতবিরোধ থাকলে তাকে মনে-প্রাণে ঘৃণা করা উচিত(পৃঃ ৪)। এর পরের পৃষ্ঠায় বলা হয়েছে যে শিরক্ ক্ষমার অযোগ্য অপরাধ, তবে কোন মুশরিক নিবেদিত প্রাণে ক্ষমা প্রার্থনা করলে এবং আল্লাহর সুমতি হলে আল্লাহ এই পাপ ক্ষমা করে দিতে পারেন। এখানে আমি “ক্ষমার অযোগ্য অপরাধ” অংশটির উপর গুরুত্ব আরোপ করছি। এই অংশ থেকে আমরা খুব সহজেই বুঝতে পারি হিন্দু ও অন্য সব পৌত্তলিকদের ব্যাপারে একজন আদর্শ মুসলমানের দৃষ্টিভঙ্গী কিরকম হওয়া উচিত।
পৃঃ ৯ তে বলা আছে যে মুমিনদের জন্য আখিরাতে বিশ্বাস করা বাধ্যতামূলক, তাঁরা “শাস্তির ভয়ে” ও “পুরস্কারের আশায়” ভাল কাজে আগ্রহী হন। এখানে যেকোন চিন্তাশীল পাঠকেরই মনে হতে পারে- আমরা কি তবে পশুর চেয়েও নিকৃ্ষ্ট? প্রকৃ্তিবিজ্ঞান সম্পর্কে সামান্য পড়াশুনা করলে দেখা যায় প্রকৃ্তিতে হাজারো নিষ্ঠুরতার মাঝেও altruism বা পরহিতব্রতের অমর দৃষ্টান্ত রয়েছে। মৌমাছিরা তাদের মৌচাক রক্ষা করার জন্য শত্রুর উপর হামলে পড়ে এবং তাদের গায়ে হুল ফুটিয়ে নিজেরা আত্মাহুতি দেয়। ত্যাগস্বীকার করার এই অপূর্ব নিদর্শন থাকতে ইবরাহিমের পুত্রবলির কেচ্ছার কোন প্রয়োজন নেই। তাছাড়া স্বপ্ন দেখে নিজের পুত্রের গলায় ছুরি চালানো চরম বোকামির উদাহরণ বৈ কিছুই না। পশুপাখিরা যেখানে স্বর্গের প্রতিশ্রুতি ছাড়াই নৈতিকতার চর্চা করে সেখানে আশরাফুল মাখলুকাতের নীতিবান হওয়ার জন্য স্বর্গের রমনীদের প্রয়োজন পড়ে, ভাবতে বেশ কষ্ট লাগে। তাছাড়া ভাববাদীরা দাবি করে বস্তুবাদীদের দৃষ্টিতে নাকি মানুষ স্রেফ পশু ছাড়া আর কিছুই না। এই কথাটা তাদের মুখে একদমই মানায় না, কারা মানুষকে পশুর স্তরে নামিয়েছে তা তো দেখাই যাচ্ছে। আমার মত শিশু-কিশোরদেরকে ভয় দেখিয়ে ঈমানদার বানানোর জন্য বইটি জাহান্নামের খুব সুন্দর ব্যাখ্যা দিয়েছে, সরাসরি উদ্ধৃত করলাম, “পাপীরা জাহান্নামে ক্রমাগত অগ্নিদগ্ধ হবে। শরীরের চামড়া আর গোশত ঝলসে খসে পড়বে। আবার পরিবর্তন করে নতু৮ন চামড়া আর গোশ্ত দেওয়া হবে যাতে দাহনযন্ত্রণা শেষ না হয়। জাহান্নামবাসীরা উষ্ণ রক্ত ও পুঁজের সাগরে হাবুডুবু খাবে। যাক্কুম নামে জাহান্নামের এক কাঁটাময় দুর্গন্ধযুক্ত উদ্ভিদ হবে তাদের খাদ্য। তীব্র পিপাসায় তাদের পান করতে দেওয়া হবে উত্তপ্ত পানি। আরও দেওয়া হবে পুঁজরক্ত মিশ্রিত দুর্গন্ধময় পানি। পাপীরা জাহান্নামে অনন্তকাল ধরে অগ্নিদঘ হতে থাকবে।” এটা হল একবিংশ শতাব্দীর বাংলাদেশের স্কুলের পাঠ্যবই। ধর্মীয় এপোলজিস্টরা প্রায়ই দাবি করে জাহান্নামে বলে সব অবিশ্বাসীদেরকে পাইকারী দরে রপ্তানি করা হবে না, মাধ্যমিক স্তরের ছাত্রদেরকে অবশ্য ঠিক উলটোটাই শেখানো হয়- “Then, for such as had transgressed all bounds, and had preferred the life of this world, The Abode will be Hell-Fire;” (79:37-39)।
বইটিতে একটি মজার কথা বলা আছে, “আধুনিক জ্ঞান-বিজ্ঞানের গবেষণায় প্রমাণিত হয়েছে যে হিংস্র প্রাণীর দেহে এমন সব জীবাণূ আছে যা মানুষের দেহের জন্য ক্ষতিকর, কাজেই তা আমাদের জন্য হালাল হতে পারে না। এছাড়া হারাম খেলে মন্দ অভ্যাস ও অসচ্চরিত্রতা সৃষ্টি হয়, ইবাদাতে আগ্রহ থাকে না এবং দুয়া কবুল হয় না”(পৃঃ ৪৪)। কোন গবেষণায় এই যুগান্তকারী ফলাফল পাওয়া গিয়েছে, তার রেফারেন্স দেওয়ার প্রয়োজন অনুভব করেননি এই বইয়ের লেখকেরা। এখান থেকে আমি শিখেছি- গুজব ছড়ানোর প্রক্রিয়াটা বিজ্ঞান দ্বারা অনুমোদিত।
পৃঃ ৫৪তে বলা হয়েছে যে ইসলামের শত্রু কাফেরদের বিরুদ্ধে প্রকাশ্যে জিহাদ করতে হবে এবং এর স্বপক্ষে এই আয়াতটি দেওয়া হয়েছে, “O Prophet! strive hard against the unbelievers and the Hypocrites, and be firm against them. Their abode is Hell,- an evil refuge indeed.” (৯:৭৩)। এই কথাটা হিযবুত তাহরীর এবং সমমনা সংগঠনগুলো তাদের প্রকাশনাগুলোতে প্রচার করলে অপরাধ হয়, অথচ একই কথাটা স্কুলে পড়ানো একদম বৈধ! পৃঃ ৫৬তে বলা হয়েছে প্রতিবেশী হিসেবে মুসলমানদের দু’টো(১)মুসলমান হিসেবে ২) প্রতিবেশী হিসেবে) এবং অমুসলমানদের মাত্র একটি অধিকার আছে(প্রতিবেশী হিসেবে)। আমি এখান থেকে শিখলাম- অধিকারের দিক থেকে সব মানুষ সমান না।
নারীদের প্রসঙ্গে এই বইয়ের সিদ্ধান্তটা পুরো বইয়ের সবচেয়ে বড় নেতিবাচক দিক। আর দশটা ইসলামী বইয়ের মত এখানেও সেই প্রাক-ইসলামী আরবে নারীদের উপর অত্যাচারের বিবরণ এবং ইসলামউত্তর আরবে নারীর অবস্থার উন্নয়ন নিয়ে বকৃ্তা দেওয়া হয়েছে, আধুনিক যুগে নারীরা যেসব সুযোগ-সুবিধা ভোগ করে তা সযত্নে এড়িয়ে যাওয়া হয়েছে। অবশ্য ইসলামবিদরা সবাই একবাক্যে স্বীকার করেন যে পশ্চিমা বিশ্বে নারীদেরকে “পন্য” হিসেবে দেখা হয়(মজার বিষয়, পশ্চিমা বিশ্বের নারীদেরকে এই নিয়ে কখনও অভিযোগ করতে দেখা যায়নি। এমনকি, সবচেয়ে গোঁড়া পশ্চিমা নারীবাদিরাও কখনও ইসলামী সমাজ-ব্যবস্থাকে পিতৃ্তান্ত্রিক সমাজব্যবস্থার বিকল্প ঘোষণা করেননি), তাই তাদের কাছে এরচেয়ে বেশি কিছু আশা করা যায় না। পৃঃ৬৯ এ লেখা আছে,
“And stay quietly in your houses, and make not a dazzling display, like that of the former Times of Ignorance; and establish regular Prayer, and give regular Charity; and obey Allah and His Messenger. And Allah only wishes to remove all abomination from you, ye members of the Family, and to make you pure and spotless.”- (৩৩:৩৩)
এই সূরার আগের আয়াতগুলো লক্ষ করলে দেখা যাবে এই নির্দেশটি আসলে শুধুমাত্র মোহাম্মদের স্ত্রীদের জন্য প্রযোজ্য, তবে বইতে এই কথা লেখা নেই। বইতে আয়াতের উপরে লেখা আছে, “মেয়েদের বিনা প্রয়োজনে বাইরে ঘুরে বেড়ানো উচিত নয়”। সারা দেশের মাধ্যমিক শ্রেণীর ছাত্র-ছাত্রীদের মত আমিও এখান থেকে শিখলাম- “বন্যেরা বনে সুন্দর, মেয়েরা রান্নাঘরে”।
পৃঃ ৬৪তে তাকওয়া বা খোদাভীতি সম্পর্কে বলা হয়েছে, “পক্ষান্তরে যার মধ্যে তাকওয়া নেই, সে নিষ্ঠাবান ও সৎকর্মশীল হতে পারে না। তার সব কাজকর্মই হয় লোক দেখানোর উদ্দেশ্যে। অন্তরে তাকওয়া না থাকল মানুষ যে কোন দুর্বল মুহুর্তে পাপকর্মে লিপ্ত হতে পারে”। এখান থেকে আমি শিখলাম- মহাত্মা গান্ধীর সব কর্মই ছিল স্রেফ প্রবঞ্চনা।
পৃঃ ৭৩ এ স্বদেশপ্রেমের প্রয়োজনীয়তা ব্যাখ্যা করতে গিয়ে বলা হয়েছে, “দেশকে হিফাযত করতে না পারলে ধর্মকে হেফাযত করা যায় না, দেশের মানুষকে রক্ষা করা যায় না, তাদের স্বার্থ রক্ষা করা যায় না”। এখান থেকে আমি শিখলাম- দেশের মানুষকে নয়, দেশের রাষ্ট্রধর্মকে ভালবাসবে।
পৃঃ ৯২ তে বলা হয়েছে উমর এতই ন্যায়পরায়ন ছিলেন, তিনি মদ্যপানের অপরাধে তাঁর পুত্র আবু শাহমাকে কঠোর শাস্তি দিয়েছিলেন। বাংলা প্রথম পত্রে কাজি নজরুলের “ ওমর ফারুক” কবিতা থেকে আমরা জানতে পারি তিনি আবু শাহমাকে চাবুক মারতে মারতে মেরেই ফেলেছিলেন। কবি নজরুল এর মধ্যে ওমরের “ন্যায়পরায়নতা” দেখতে পেয়েছিলেন। আমার মনে হয় কাজে অবহেলা করার কারণে কাজের মেয়েকে ছাঁদ থেকে ধাক্কা মেরে ফেলে দিলে সেটাও হবে “ন্যায়পরায়নতা” এর এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত। এর পরের পৃষ্ঠাতে আলীর প্রসংশা করে বলা হয়েছে তিনি দশ বছর বয়সে বিনা দ্বিধায় ইসলাম গ্রহন করেন। বিনা দ্বিধায় মোহাম্মদের মিরাজের কাহিনী বিশ্বাস করায় আবু বকরেরও প্রসংশা করা হয়েছে। বিনা দ্বিধায় সবকিছু বিশ্বাস করা যে একটা গুণ, তা কেবল এই ধর্ম শিক্ষা বই পড়েই জানা সম্ভব। জ্ঞান বিজ্ঞানে মুসলমানদের অবদানের কথা বলতে গিয়ে বলা হয়েছে যে হাসান ইবনে হাইথাম সবার প্রথমে গতি বিজ্ঞান নিয়ে গবেষণা করলেও আধুনিক বিজ্ঞানীরা নাকি একে তাঁদের একচেটিয়া অধিকার দাবি করেন। বিজ্ঞানের মধ্যে মালিকানার মত বহিরাগত ধারণা ঢুকিয়ে এই ধর্ম শিক্ষা তো ছাত্র-ছাত্রীদেরকে বিজ্ঞানমনস্কতা থেকে দূরে সরিয়ে দিচ্ছে।
ধর্ম পরীক্ষার আগের দিনটা একারণে আমার কাছে খুবই যন্ত্রনাদায়ক। শত শত হেত্বাভাস চোখ বন্ধ করে এড়িয়ে গিয়ে অনেক কষ্ট করে এই বইটা আমাকে পড়তে হয়, পরীক্ষার খাতায় ভাল নম্বর পাওয়ার আশায় আমাকে একজন কাটমোল্লা সাজতে হয়। তবে এটা মুখ্য বিষয় না। যেসব জ্ঞানী-গুনী অধ্যাপকেরা এই শিক্ষানীতি প্রণয়ন করেছেন তাঁরা কি একবারও ভেবে দেখেছেন ধর্মের মর্ম আসলে কি জিনিস? তাঁরা কি একবারও ধর্ম বইটা খুলে দেখেছেন? ধর্মের এই মর্ম ছেলেপেলেদেরকে গলাধঃকরণ করালে ভবিষ্যতে বাংলাদেশ অগনিত ধর্মান্ধ বিষফোড়া ছাড়া আর কিছুই পাবে না। হিন্দু ধর্ম বইতে কি লেখা আছে জানা নেই, তবে একবার এক খ্রীষ্টান বন্ধুর কাছ থেকে খ্রীষ্ট ধর্মশিক্ষা বইটি নিয়ে কয়েক পাতা পড়ে দেখেছিলাম। একটি খ্রীষ্টীয় পরিবারের অবকাঠামো একটা উপমা দিয়ে বোঝানো হয়েছিল যার মর্মার্থ হল -স্বামীর প্রত্যেকটি আদেশ পালন করা স্ত্রীর পবিত্র দায়িত্ব। মর্মার্থটা যত না আপত্তিকর, তার চেয়েও বেশি আপত্তিকর ছিল উপমাটি, এই মুহুর্তে উপমাটি ঠিক মনে পড়ছে না। বাংলাদেশ থেকে ধর্ম শিক্ষাকে নির্বাসনে পাঠানোর উপযুক্ত সময় এটা না, আমি তা মানি। দেশ থেকে ধর্মভিত্তিক রাজনীতির মূলোৎপাটন না করা পর্যন্ত্য এরকম জোরালো পদক্ষেপ নেওয়া যাবে না। তবে ধর্ম বইটা পরিবর্তন করতে নিশ্চয়ই কোন বাধা নেই? কোরান-হাদিস থেকে বেছে বেছে ভাল ভাল আয়াতগুলো নিয়ে তা সেকুলার আলোকে ব্যাখ্যা করে কোনমতে একটি ধর্মীয় শিক্ষা বই দাঁড়া করানো গেলে ভাল হত। স্কুলে এসব উসকানিমূলক বই পড়িয়ে অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশের স্বপ্ন দেখাটা আসলে একদমই হাস্যকর।
বাংলাদেশে আবার ধরম শিক্ষা বলে একটা বিষয় পোরান হয় আগে জানতাম না।
ইন্দিয়ায় এখনও এইসব পোরান হয়না। এসব জেনে অবাক লাগছে। তাও আবার এই ভাবে পোরান হয় জেনে ব্যাথা পেলাম।
আমার তো মনে হয় এসব ছেড়ে মানবাধিকার পড়ানো উচিত, যেটা কিনা UNO থেকে তৈরী করা হয়েছে।
ভারতীয় সংবিধানের মৌলিক অধিকার ও মৌলিক কর্তব্যগুলো কি ধর্মের বদলে শেখানো যায় না? মানুষ হতে গেলে ঈশ্বর লাগবে কেন? কুকুরের কুকুর হয়ে উঠতে তো স্বর্গ বা ঈশ্বর লাগে না। (মানুষের সবচেয়ে কাছের প্রাণী হিসাবে নামটা করলাম।)
ইগলা কতা মোকে কয়া লাভ নাই। ১০ ক্লাসে পড়া ছাওয়ার লেখা এবা হয় কেবা করা? যুদিকেল সত্যি হয়া থাকে , তাই যিন ব্যেচা থাকে।
কথাটা ভাল লেগেছে। ধন্যবাদ।
অসাধারণ!!!
ধর্ম নির্বাসনে এমনিই যাবে।কারণ প্রকৃতি সম্পর্কে চূড়ান্ত কথা না বলা গেলেও শাস্ত্রের ভ্রান্ততা অবিঃসংবাদিতভাবে প্রমাণিত হয়েছে।
এখন একটা কথা বল তো ভাইয়া,তোমার কি ৪৮ ঘণ্টায় দিন ,নাকি খেলাধুলো ,আড্ডা ইত্যাদি রসে একেবারে বঞ্চিত?আমি বয়েসে তোমার থেকে বছর আষ্টেকের বড় হব,কিন্তু জ্ঞানে তোমার কাছে আমি একটা শিশু।এত বই -তাও আবার মূল বই পড়ার সময় করো কি করে?
@আগন্তুক,
সহমত!!!! 🙂
@আগন্তুক,
এই পৃথিবী মেট্রিক দিবে শুনে আমার মাইল্ড ষ্ট্রোকের মত হয়েছিল।
ধর্ম পরীক্ষা নিয়ে আমার সবসময় মজার অভিজ্ঞতা হত। ধর্ম পরীক্ষা আমাদের কাছে ছিল বাংলা রচনা লেখার মত। সূচনা দিলাম শৈল্পিক স্টাইলে, উপসংহার দিলাম ধার্মীক স্টাইলে, মাঝ খানে ইচ্ছামত গরু রচনা লিখে দিতাম।নাইলে একই কথা নানা ভাবে ঘুরায়ে ফিরায়ে লিখে দিতাম।সাথে মাঝে মাঝে দুচার টা বানানো হাদীস,দুচারটা আয়াত ইত্যাদি নীল কালি দিয়ে মেরে দিতাম।
স্যার ভাবত আহ! একদম খাসা লিখেছে! প্রচুর নম্বর পেতাম। এটা চট্টগ্রাম শহরের সবচেয়ে বিখ্যাত স্কুলের ঘটনা!
@তানভী,
🙂
আসলেই তাই হত।
আমি ক্লাস এইট পর্যন্ত যে কি বিপদে ছিলাম এই ধর্ম শিক্ষা নিয়ে। নিজে পারি না আরবী পড়তে, ওইদিকে পরীক্ষার একটা বড় পার্ট হল আরবী থেকে বাংলা উচ্চারন ও অর্থ লেখা।
তাই বাধ্য হয়ে শর্টকাট নিতে হত। গোপনে বলছি যে কোন নৈতিকতার বিচারে মনে হয় এই শর্টকাট সমর্থনীয় নয়। কারন এটা সোজা বাংলায় চোথা বাজি। আরেকজন বন্ধুর সাথে চুক্তি ছিল যে অংক বিজ্ঞান ভাল জানে না, বুঝতেই পারছেন।
আবশ্যিক। শিক্ষানীতিতে খুব সম্ভবত মাধ্যমিক স্তরে ধর্ম শিক্ষাকে ঐচ্ছিক করা হয়েছে, একারণেই জামায়াতের মত দলগুলো দাবি করছে এই শিক্ষানীতি থেকে ধর্মশিক্ষাকে বাদ দেওয়া হয়েছে।
@পৃথিবী,
ঈশশশস
ছেলেপিলের মূল্যবান সময়ের কি নিদারুন অপচয়। আমাদের সময়ও ঐচ্ছিক ছিল ক্লাস এইটের পর। তবে যারা সহজে নম্বর পেতে চাইত আরা ইসলামিয়াত নিত, কারন এতে পৃষ্ঠা গুনে নম্বর দেওয়া হয় বলে জোর গুজব ছিল। তবে আমি আরবী লিখতে পড়তে জানতাম না বলে ওই দূঃসাহস করিনি।
আপনাদের জন্য তো মায়াই হয়।
এই বই কি মাধ্যমিক ক্লাসের আবশ্যিক পাঠ্য নাকি ঐচ্ছিক?
আমার মনে হয় নুতন শিক্ষা নীতিতে এ ধরনের বই বদলে অনেকটা “কোরান-হাদিস থেকে বেছে বেছে ভাল ভাল আয়াতগুলো নিয়ে তা সেকুলার আলোকে ব্যাখ্যা করে কোনমতে একটি ধর্মীয় শিক্ষা বই” গোছের কিছু করার প্রস্তাবনা দেওয়া হয়েছে।
পৃথিবীর বিশ্লেষনী মেধা নিয়ে আমার কোনই দ্বিধা কোনদিন ছিল না, তবে বলতে বাধ্য হচ্ছি যে এই বই কেউ ঈমানের সাথে পড়লে (মানে পৃথিবীর মত শুধুই নম্বর পাওয়ার স্বার্থে না পড়লে) সে গোড়া সাম্প্রদায়িক হতে বাধ্য এটা বুঝতে কোন অসাধারন বিশ্লেষন লাগে না।
অসাধারন লিখেছ। এই কথা আমরা মুক্তমনাতে এবং সর্বত্র বার বার বলে আসছি। তোমার মতন আরো বিদ্রোহী তৈরী হৌক মুক্তমনা থেকে। ধর্মের বালুঘর জ্ঞান-বিজ্ঞানের উজান ঢেঊতে ভেসে যাক। আমিও বসে আছি সেই বালুতটের অপেক্ষায় যেখানে নিরুপদ্রবে জ্ঞান সমুদ্রের নুড়ি কুড়াতে কুড়াতে একাত্মবোধ করতে পারি প্রকৃতির সাথে।
আরো লিখে যাও। তোমার মতন সবাই যত লিখবে, ততই ধর্মের এই তাসের ঘর ভাংবে।
পৃথিবী,
অসাধারণ তোমার বিশ্লেষণ ক্ষমতা। তোমার মধ্যে ব্যতিক্রমী প্রতিভার উন্মেষ দেখতে পাচ্ছি। :star:
@সৈকত চৌধুরী,
আমিও