ডারউইনবাদ একটা তথাকথিত ভ্রান্ত মতবাদ

কিশোর
(



বিবর্তনবাদ মানুষের চিন্তা জগতে যত বেশী আলোড়ন তুলেছে গত দেড় শ’ বছরের বেশী ধরে মানব ইতিহাসে অন্য কোন মতবাদ এত আলোড়ন তুলতে পারেনি, একই সংগে মানুষের চিন্তা জগতে অন্য কোন মতবাদ এত বেশী প্রভাবও বিস্তার করতে পারেনি। এ মতবাদ বিশেষ করে খৃষ্টান ধর্মের বাইবেলীয় মানব সৃষ্টি তত্ত্বের ওপর কুঠারাঘাত করে যার ফলে তৎকালীন ইয়োরাপীয় সমাজে ধর্মের প্রতি মানুষের বিশ্বাস বা আস্থা ব্যপক ভাবে হ্রাস পায় বা তারা ধর্মীয় ব্যপারে অনেক বেশী উদার হয়ে পড়ে যা পরিশেষে তাদের সমাজকে খুব দ্রুত আর্থ সামাজিক উন্নতির দিকে নিয়ে যায়। মুলতঃ এটা ছিল এ মতবাদের একটা ত্বরিত পজিটিভ প্রভাব। যে যুগে এ মতবাদের উদ্ভব ঘটেছিল তখন এটা ঠিক না বেঠিক তার চুলচেরা বিশ্লেষণ সম্ভব ছিল না কারন মানুষ তখনও জীব বিজ্ঞানের অনেক কিছুই জানত না। কিন্তু মানুষ এখন জীব জগতের ভিতর বাহির অনেক কিছুই জানে সুতরাং এখন এ মতবাদকে নতুন করে বিশ্লেষণের দরকার হয়ে পড়েছে। প্রশ্ন হলো- আসলেই কি এ মতবাদ সত্য? এবার একটু বিশ্লেষণ করে দেখা যাক, মতবাদটি আসলেই সত্য কি না।(ক)এ তত্ত্ব অনুযায়ী জীব জগতে অনাদিকাল থেকে পরিবর্তন, পরিবর্ধন ও অভিযোজন ঘটে চলেছে ও অনির্দিষ্টকাল ধরে তা চলবে। তার অর্থ বর্তমানেও তা চলছে। তা যদি হয় তা হলে বর্তমানে বহু প্রজাতির প্রানী পাওয়া যাবে যারা অর্ধ বিকশিত বা কিছু কিছু অঙ্গ অর্ধবিকশিত বা বিকাশমান পর্যায়ে আছে । দুর্ভাগ্য বশত: প্রকৃতি জগতে এমন কোন অর্ধ বিকশিত জীব দেখা যায় না । যাদের দেখা যায় তারা প্রত্যেকেই স্বয়ং সম্পুর্ন এবং পূর্ন বিকশিত। কোন জীবেরই অর্ধবিকশিত বা ত্র“টি পূর্ন কোন অঙ্গ প্রত্যঙ্গ দেখা যায় না ।এমন কোন জীব দেখা যায় না যার পা বা মূখ বা লেজ বা অন্য যে কোন অঙ্গ বিকাশমান আছে,অপ্রয়োজনীয় বলে অথবা দরকার নেই বলে আস্তে আস্তে অপসৃয়মান হয়ে যাচ্ছে। যুক্তি হিসাবে বলা যেতে পারে যে, প্রকৃতি জগতে চার পাশে যে জীব জন্তু আমরা দেখি তাদের পরিপূর্ন বিকাশ হয়ে গেছে এবং সে কারনেই আমরা অর্ধ বিকশিত কোন জীবের সাক্ষাত পাই না। তার মানে জীব জগতের আর বিবর্তন হচ্ছে না। কিন্তু তত্ত্ব অনুযায়ী বিবর্তন একটি চলমান প্রক্রিয়া যা চলবে চিরকাল যতদিন প্রকৃতি জগতে জীব জগত থাকবে।এ পর্যন্ত খোড়া খুড়ি করে যে সব ফসিল পাওয়া গেছে. তাদের দেখেও মনে হয় না যে তারা কোন অসম্পুর্ন জীব ছিল। তবে বিবর্তনবাদ তত্ত্বের স্বার্থে অনেক সময়ই বিজ্ঞানীরা তাদের স্বকোল্পিত বর্ননা দিয়ে তাদেরকে নানা রকম অসম্পূর্ন জীব বলে আখ্যায়িত করার অপচেষ্টা করে করে থাকে। শূধু একটি হাড় বা কয়েকটি হাড় পরীক্ষা নিরীক্ষা করে কিভাবে তারা অসম্পুর্ন জীব ছিল এরকম সিদ্ধান্তে আসা যায় সেটাই কিন্তু বেশ হাস্যকর। কারন যেখানে বর্তমান কালে চলে ফিরে বেড়ানো লক্ষ লক্ষ কোটি কোটি জীবন্ত জীব জন্তু নিযে ব্যপক পরীক্ষা নিরীক্ষা করেও এরকম সিদ্ধান্তে আসা যাচ্ছে না যে তারা অসম্পূর্ন বা কোন অঙ্গ বা প্রত্যঙ্গ বিকাশমান, সেখানে দু একটি হাড়গোড় পরীক্ষা করেই তারা কেমনে উক্ত ধরনের উদ্ভট সিদ্ধান্তে চলে আসে? তবে অনেক খোজা খুজি করে বিজ্ঞানীরা মানব দেহের এপেন্ডিসাইটিস নামক একটা প্রত্যঙ্গকে অপ্রয়োজনীয় বা অপসৃয়মান এরকম সিদ্ধান্তে এসেছে। তাদের বক্তব্য- দৃশ্যমান কোন জৈবনিক কর্মকান্ডে এ প্রত্যঙ্গটি অংশ গ্রহন করে না বা প্রত্যঙ্গটি অপসারন করলেও মানুষের বেচে থাকায় কোন সমস্যা সৃষ্টি করে না। ঠিক একারনে বয়স বাড়ার সাথে সাথে এ উপাঙ্গটি ক্রমশঃ ছোট হয়ে ক্ষীন হয়ে যায়।কিন্তু আসলেই কি তা ঠিক? হয়তো অতি সূক্ষ্ম কোন জৈবনিক কর্মকান্ড তারা করে থাকে যা এখনও বিজ্ঞানীরা বের করতে পারে নি। ইদানিং জানা গেছে- শিশু যখন মায়ের গর্ভে থাকে তখন এ অঙ্গটি বেশ বড় থাকে, এটা লিম্ফয়েড নামক একধরনের টিস্যু দিয়ে গঠিত যা রোগ প্রতিরোধী বিভিন্ন এন্টিবডি তৈরী করে এবং তা রোগ প্রতিরোধে সহায়তা করে। তবে শিশু মায়ের পেট থেকে বের হয়ে আসার পর দিন দিন অঙ্গটি ছোট হতে থাকে।তাছাড়া মানুষের তো দুটি হাত বা পা কাটা গেলেও তো সে দিব্বি বেচে থাকে। তাহলে, কি বলতে হবে মানব দেহের জন্য কোন হাত পা এর দরকার নাই?

(খ)একটি প্রজাতি যখন বিবর্তন ধারায় অন্য প্রজাতিতে রূপান্তরিত হবে তখন নিশ্চয় দুই প্রজাতির মাঝা মাঝি এক মধ্য প্রজাতির জীব হিসাবে দীর্ঘদিন অতি বাহিত করবে কারন বিবর্তন ঘটে হাজার হাজার নয় বরং লক্ষ লক্ষ বছর ধরে । সুতরাং প্রকৃতিতে ভুরি ভুরি সেই সমস্ত অন্তর্বর্তীকালীন প্রজাতির দেখা মেলার কথা। কিন্তু বিজ্ঞানীদের যাবতীয় তত্ত্বের মুখে ছাই দিয়ে সারা পৃথিবীতে এ ধরনের একটাও মধ্যমর্তী জীব বা প্রানীকে খুজে পাওয়া যায় না। এছাড়া অতীতে কোটি কোটি বছর ধরে যে বিবর্তনের ঘটনা ঘটে গেছে সেখানেও বহু অন্তর্বর্তী কালীন জীব থাকবে, তার মানে অন্তর্বর্তী এ ধরনের জীব বা প্রানীর বহু ফসিল খুজে পাওয়ার কথা। যেমন- বহুদিন ধরে চেষ্টা চলছে মানুষ যে বানর জাতীয় প্রানী থেকে এসেছে তার ও মানুষের মধ্যবর্তী জীব যাকে মিসিং লিংক বলা হয় তাকে খুজে বের করার, কিন্তু র্দূর্ভাগ্য বশত: আজও তেমন কিছু খুজে পাওয়া যায় নি। মাঝে মাঝে এখানে সেখানে দুই একটা পুরাতন হাড় গোড় পাওয়া যায়, তা নিয়ে শুরু হয় কিছুদিন মাতামাতি, অবশেষে দেখা যায় সব ধোকাবাজি, সত্যিকার মিসিং লিংক এর দেখা মেলে না। দেখা মিলবে কি করে, সত্যি সত্যি মিসিং লিংক থাকলে তো তার দেখা মিলবে। মানুষ তো দুরের কথা পৃথিবীর কোথাও আজ পর্যন্ত কোন প্রানীরই তাদের তথাকথিত পূর্বতন প্রানীর সাথে সম্পর্কিত মিসিং লিংকের কোন কংকাল বা ফসিল পাওয়া যায় নি। তার মানে পৃথিবীর কোন প্রানীই অন্য কোন প্রজাতি থেকে বিবর্তনধারায় বিবর্তিত হয়ে আজকের চেহারা পায়নি। প্রকৃতিতে যে জীব জন্তু দেখা যায় তা সবই স্বয়ং সম্পুর্ন, কোন জীবই অর্ধ বিকশিত বা অসম্পুর্ন নয়। প্রকৃতিকে সৃষ্টিকর্তা যখন সৃষ্টি করেছিলেন তখন তিনি প্রতিটি জীবকেই সম্পুর্ন করেই সৃষ্টি করেছিলেন।এর কারন হলো অসম্পুর্ন জীব কখনই প্রকৃতিতে টিকে থাকতে পারতো না , বিকশিত হওয়া তো দুরের কথা। প্রকৃতি জগতে পশু, পাখী, কীট পতঙ্গ,এক কোষি জীব, গাছ পালা যা কিছু আমরা দেখি না কেন কোন টারই দৈহিক গড়নে ন্যুনতম ত্রƒটি দেখি না বরং দেখা যায় ১০০% সুষম দৈহিক গড়ন , যার যে অঙ্গ- প্রত্যঙ্গ দরকার তার ঠিক তেমনটিই অছে, কারও একটা বেশীও নেই একটা কমও নেই। আকার আকৃতির দিক দিয়েও সেই একই কথা খাটে। একটা উদাহরন দেয়া যেতে পারে।একজন যন্ত্রবিদ একটি যন্ত্র অসম্পুর্নভাবে তৈরী করে খোলা আকাশের নিচে ফেলে রাখলো।এর পর কি আশা করা যায় যে, বেশ কিছু বছর পর ঐ যন্ত্রটি নিজে নিজেই সম্পুর্ন হয়ে গড়ে উঠবে এবং কাজ করতে থাকবে ? কোটি কোটি বছর ধরেও যদি এরকম ভাবে অসম্পুর্ন যন্ত্র তৈরী করে ফেলে রাখা যায়, তাহলেও কি তার যে কোন একটি সম্পূর্ন কার্যক্ষম যন্ত্রে পরিনত হবে ? জীব বা একটা জীবকোষের চেয়ে আমাদের ব্যবহৃত যন্ত্র পাতি তো লক্ষ লক্ষ গুন বেশী সরল। তা যদি না হয় তাহলে আমাদের বর্তমানে ব্যবহৃত সর্বাধিক উন্নত যন্ত্রের চাইতেও লক্ষ লক্ষ গুন বেশী জটিল জীব বা জীবকোষ কিভাবে স্বয়ংক্রিয়ভাবে বা দুর্ঘটনার মাধ্যমে সৃষ্টি হতে পারে?

(গ) প্রাকৃতিক নির্বাচন তত্ত্ব অনুযায়ী, কোটি কোটি বছর আগেকার হরিণ জাতিয় প্রানীরা খাদ্যেও অভাবে পড়ে উচু ডাল থেকে পাতা খেতে গিয়ে গলা লম্বা হয়ে তারা জিরাফে পরিনত হয়েছে (যদিও অন্য হাজারো রকম প্রানী একই সমস্যায় পড়া সত্ত্বেও তাদের গলা যেমন ছিল তেমনই রয়ে গেছে), ভল্লুক জাতীয় প্রানীরা ঝর্নাধারার নীচে বয়ে চলা পানির স্রোত থেকে মাছ ধরে খেতে গিয়ে তিমি মাছে পরিনত হয়েছে, বানর জাতিয় প্রানীরা হঠাৎ করে খাবার সন্ধানে গাছ থেকে নেমে আসায় লেজ হারিয়ে মানুষে পরিনত হয়েছে ইত্যাদি। যুক্তির খাতিরে ধরে নেয়া গেল বিষয়টা ঠিক।কোটি বছর ব্যপি ক্রমাগত প্রচেষ্টার পর হরিনদের গলা লম্বা হতেই পারে, ভল্লুক সাতার কাটার চেষ্টা করতে করতে তিমি মাছে বা বানর মানুষে পরিনত হতেই পারে, কিন্তু তাহলে সৌন্দর্যের বিষয়টা কি হবে? জেব্রা কেন অমন সুন্দর হতে গেল ? বাঘের গায়ে অমন সুন্দর ডোরা কাটা দাগ কেন? বিশেষ করে পাখীরা, কীট পতঙ্গ বা মাছেরা অত রঙীন ও অপরূপ সুন্দর কেন? বিভিন্ন প্রজাতির গাছ পালা অত রঙীন কেন? বহু রকম পাতা বাহার গাছের পাতা শুধু সালোক সংশ্লেষনের জন্য সবুজ হলেই তো চলত, লাল সাদা হলুদ বর্ণ সমন্বিত অত দৃষ্টি নন্দন সুন্দর পাতা হতে গেল কেন? শূধু পাতা বাহার না, আরও অনেক উদ্ভিদ আছে যাদে পাতা বহু বিচিত্র বর্নের, দেখতে অত্যন্ত সুন্দর, মনোরম। অনেক ধরনের উদ্ভিদের বংশ বিস্তার তাদের ফল বা বীজ দিয়ে হয় না। বংশ বিস্তার হয় শাখা বা শিকড়ের মাধ্যমে।যেমন- বহু প্রজাতির গোলাপ, জবা, জুই এবং আরো কত কি। তাহলে কি কারনে গোলাপ তার অপরূপ বর্ণচ্ছটা আর মন মাতাল করা সুগন্ধ নিয়ে অত সুন্দর হতে গেল, ওদের তো পরাগায়নের জন্য কোন কীট পতঙ্গ আকৃষ্ট করার দরকার নেই, কারন পরাগায়নই ওদের নি¯প্রয়োজন। জবা ফুল কেন অমন রক্ত লাল হয়ে চারিদিকে সৌন্দর্য মন্ডিত করে তোলে? একই কথা হাজার রকম বিভিন্ন প্রজাতি ফুল গাছে ক্ষেত্রে খাটে। সাগর বা হ্রদের পানির নীচের মাছগুলো অত অপরূপ রঙীন হতে গেল কেন? একুইরিয়ামে যে সব মন পাগল করা রঙীন মাছ আমরা দেখি, ওসব মাছের মন মাতাল করা রঙের এত দরকার পড়ল কেন? কোন কাজে ওদের অত রঙ লাগে? বরং ওদের অত রঙীন বর্নচ্ছটাকে তো একটা মরন ফাদ হিসেবে বিবেচনা করা যেতে পারে। কারন ওদের রং দেখে অপেক্ষাকৃত বড় রাক্ষুসী মাছগুলো সহজেই ওদের সনাক্ত করে শিকার করতে পারে।অন্য রাক্ষুসী মাছের জন্য ছোট মাছগুলো কিভাবে বা কেনই রঙীন হবে যা নাকি তাদের জন্য আত্মঘাতী? নাকি ছোট রঙীন মাছগুলো বুঝতে পেরেছিল রাক্ষুসী মাছদের সুবিধার জন্যই তাদের প্রাকৃতিক নির্বাচন তত্ত্ব অনুযায়ী রঙীন হতে হবে? এটা তো বরং যোগ্যতমরাই টিকে থাকবে- বিবর্তনবাদের এ মূল তত্ত্বের বিরুদ্ধে চলে যায় কারন তত্ত্ব অনুযায়ী- যারা যোগ্য না তারা টিকে থাকতে পারবে না।তো মাছদের এরকম রঙীন হওয়ার মানে তো হলো নিজেদের অযোগ্য হিসাবে তুলে ধরা যার পরিনতি এ বিশ্ব চরাচর থেকে চিরতরে অবলুপ্তি। কিন্তু আমরা তো তাদের এখনও বহাল তবিয়তে বেচে থাকতে দেখি। কোটি কোটি বছর ধরে পৃথিবীর প্রকৃতি রাজ্যে নানা রকম পরিবর্তন ঘটেছে ও ঘটে চলেছে যার ফলে পরিবেশ পরিস্থিতির সাথে টিকতে না পেরে অনেক জীব প্রজাতি বিলুপ্ত হয়ে গেছে চির তরে কিন্তু বিরূপ পরিস্থিতির সাথে খাপ খাইয়ে নেয়ার জন্য তারা আস্তে অস্তে নিজেদের দৈহিক পরিবর্তন করে ফেলেছে এরকম নজীর নেই একটাও। ঠিক একারনেই দুনিয়া থেকে হঠাৎ করে প্রায় ছয় কোটি বছর আগে কোন এক বিরূপ পরিস্থিতিতে টিকতে না পেরে ডাইনোসর জাতীয় প্রানী সবাই সমূলে বিনাশ হয়ে গেছে, পরিবর্তিত পরিবেশের সাথে খাপ খাইয়ে নিয়ে নতুন কোন প্রজাতিতে রূপান্তরের কোন ফসিল প্রতœতত্ত্ববিদরা এখনও আবিষ্কার করতে পারেনি কিন্তু ডাইনোসরদের হাজার হাজার কঙ্কাল সারা পৃথিবীর প্রায় সর্বত্র পাওয়া গেছে। তাছাড়া আজকের জেনেটিক প্রযুক্তির কল্যানে আমরা জেনেছি, দৈহিক গঠনের যাবতীয় সংকেত বা নির্দেশ আসে জীবের কোষের নিউক্লিয়াস থেকে। নিউক্লিয়াসের মধ্যে ক্রোমোজোম আছে, ক্রোমোজোমের মধ্যে আছে জিন, জিন গুলো গঠিত ডি এন এ নামক একপ্রকার পদার্থ দিয়ে যা মূলত যুগল প্যাচানো মইয়ের আকারে সজ্জিত থাকে। ডি এন এ এর সজ্জার মধ্যে নিহিত থাকে জীবের যাবতীয় বংশগতির বৈশিষ্ট্য। অর্থাৎ কোন প্রানীর চারটা পা হবে বা কোন প্রানীর দুইটা পা হবে বা কোন প্রানীর লেজ হবে,কোন প্রানীর ডানা হবে, কোন প্রানীর গায়ের রং বা উদ্ভিদের পাতা বা ফুলের রং কি হবে তার নির্দেশ গুলো ঐ ডি এন এ চেইনের মধ্যে প্রোগ্রাম আকারে সংরক্ষিত থাকে।বাইরের কোন পরিস্থিতি তার উপর প্রভাব বিস্তার করতে পারে না। বিজ্ঞানের সাম্প্রতিক এ আবিষ্কার বিবর্তনবাদের মূলে কুঠারাঘাত করেছে। কারন বিবর্তনবাদ অনুযায়ী, দৈহিক পরিবর্তন ঘটে বাইরের পরিস্থিতির উপর নির্ভর করে। কিন্তু জেনেটিক বিদ্যা আমাদের জানাচ্ছে দৈহিক যে কোন গড়নের নির্দেশ আসে একেবারে জীব কোষের ভিতর থেকে। ঠিক সে কারনেই শীত প্রধান দেশে হাজার হাজার বছর বসবাসের পরেও মানুষের দেহে ভেড়ার মত ঘন লোম গজায় নি শীত নিবারনের জন্য, তেমনি আরব দেশের মরুভুমির প্রচন্ড তাপ ও রোদ্দুরময় পরিবেশে হাজার হাজার বছর বসবাস করেও চামড়া পুড়ে গিয়ে মানুষের চামড়া কালো হয়ে যায় নি আফ্রিকার নিগ্রোদের মত। আরব দেশে যে সব কালো মানুষ দেখতে পাওয়া যায় তা বলা বাহুল্য আফ্রিকা থেকে অনেক বছর আগে যাওয়া। বিজ্ঞানীরা কিছু কিছু প্রানীর গায়ের রং দেখে বলেন- ওটা ক্যামোফ্লেজ যা তাদেরকে শিকারী প্রানীর হাত থেকে বাচায় বা শিকারের সময় লুকিয়ে থাকতে সাহায্য করে। যেমন- গাছে চড়া সবুজ সাপ, কিছু ধরনের টিকটিকি, ফড়িং আরও নানারকম প্রানী। বিষয়টা কি সত্যিই তাই? আসলে প্রকৃতি জগতে বৈচিত্রের জন্য বহু বর্নের জীব জন্তু সৃষ্টি করা হয়েছে এর ফলে কোনটা লাল, কোনটা হলুদ, কোনটা সবুজ কোনটা কালো কোনটা ডোরাকাটা কোনটা রঙের ফোটা ইত্যাদি। ফলে কোন কোন জীব প্রয়োজনে বা অপ্রয়োজনে তাদের রঙকে নিজেদের অজ্ঞাতেই ব্যবহার করার সুযোগ পায়। কারন জীবজগতে দেখা যায় যারা তাদের গায়ের বর্নকে সুবিধামতো ব্যবহার করার সুবিধা পায় না তার সংখ্যা, যারা সুযোগ পায় তাদের চাইতে বহু গুনে বেশী। বিবর্তনবাদ সত্য হলে তো তা হওয়ার কথা না। সুযোগ পাওয়া জীবের সংখ্যাই বেশী হওয়ার কথা। বরং সুযোগ না পাওয়া জীব সমূলে ধ্বংস হয়ে যাওয়ার কথা। কিন্তু তা তো দেখা যায় না।

(ঘ) বিবর্তনবাদ তত্ত্ব যদি সঠিক হয় তাহলে প্রকৃতি রাজ্যে সর্বত্র চরম বিশৃংখলা বিরাজমান থাকবে। কারন প্রতিটি জীব জন্তু তাদের অস্তিত্বের জন্য পারষ্পরিক দ্বন্দ্ব সংঘাতে লিপ্ত থাকবে যার ফলে প্রকৃতি রাজ্যে সব সময় বিশৃংখল অবস্থা বিরাজ করবে। কিন্তু বাস্তব অবস্থা ভিন্ন। বাস্তবে বরং দেখি প্রকৃতিতে জীব জগতের প্রতিটি সদস্য পারস্পরিক সহযোগীতার ভিত্তিতেই বেচে থাকে, পরস্পরের সাথে লড়াই করে নয়। বনে জঙ্গলে বাঘ সিংহ বা অন্যান্য হিংস্র মাংসাশী জীব জন্তু হরিন বা অন্য নিরীহ প্রানী শিকার করে বেচে থাকে। সূক্ষ্ম দৃষ্টিতে বিচার করলে দেখা যায়, এটা কোন পারস্পরিক লড়াই না। এটা লড়াই হলে তো অনেক আগেই পৃথিবী থেকে সকল নিরীহ প্রানী অবলুপ্ত হয়ে যেত কারন লড়াইতে তারা নিতান্তই অপটু। এটা বরং পারস্পরিক সহযোগীতা একারনে যে, বাঘ বা সিংহ,হরিণের মত নিরীহ প্রানী শিকার করে খায় বলেই বন জঙ্গল হরিণের মত প্রানীতে ভরপুর হয়ে যায় না, তাদের সংখ্যা নিয়ন্ত্রিত থাকে। তাদের সংখ্যা নিয়ন্ত্রিত না থাকলে তাদের সংখ্যা এত বৃদ্ধি পেত যে এক পর্যায়ে তাদের খাবারে টান পড়ত ও খাদ্যের অভাবে একদিন তারা সবাই সবংশে বিনাশ হয়ে যেত, অর্থাৎ বাঘের অস্তিত্ব না থাকলে হরিণের অস্তিত্ব অসম্ভব হতো এবং হরিণ না থাকলে বাঘ বা সিংহ বেচারারাও না খেয়ে সব পটল তুলতো। যে সমস্যা বর্তমানে মানুষের মধ্যে শুরু হয়েছে। অতিরিক্ত জনসংখ্যা বৃদ্ধি পাওয়াতে দুনিয়ার কোটি কোটি মানুষ অনাহারে অর্ধাহারে দিন কাটায়। হরিন ও বাঘের সংখ্যার ভারসাম্য রক্ষার কি এক অদ্ভুত সমন্বয় আমরা দেখি তাদের বংশ বৃদ্ধির পদ্ধতিতে। মাদি হরিণ প্রতি বছর বাচ্চা দেয় ২/৩ টা করে যার প্রায় সবাই বেচে যায়, কিন্তু বাঘ বা সিংহ ৩/৪ বছর অন্তর বাচ্চা দেয় ২/৩ টা করে যার মধ্যে অধিকাংশ মরে গিয়ে মাত্র ১/২ টা বেচে থাকে।একারনে জঙ্গলে বাঘ সিংহের চেয়ে হরিনের সংখ্যা সব সময়ই অনেক বেশী থাকে কিন্তু হরিণের সংখ্যা মাত্রা ছাড়ায় না কখনো, কারন বাঘ বা সিংহের খাবার হিসাবে ব্যবহৃত হয়ে তার সংখ্যা সব সময় মাত্রার মধ্যে থাকে।এখন এটাকে কি পারস্পরিক লড়াই বলব নাকি সহযোগীতা বলব? নাকি বলব সৃষ্টির পূর্ব থেকেই নির্ধারিত একটা অপূর্ব সমন্বয়? এভাবে সূক্ষ্মভাবে বিচার করলে জল স্থল ও অন্তরীক্ষ সব যায়গাতে আমরা জীবজগতে পারস্পরিক লড়াই না দেখে বরং দেখব তারা বেচে আছে পারস্পরিক অপূর্ব সহযোগীতা বা সুষম সমন্বয়ের ভিত্তিতে সহাবস্থান আপাত স্থূল দৃষ্টিতে যা বেচে থাকার লড়াই হিসেবে মনে হতে পারে। একে অন্যকে শিকার করে খাচ্ছে দেখে মনে হতে পারে যে তারা জীবন মরন সংগ্রামে রত, কিন্তু আসলে প্রকৃতি রাজ্যে ওটাই তাদের সহযোগীতাপূর্ন সহাবস্থান, ওভাবেই ওদেরকে সৃষ্টি করা হয়েছে। বিষয়টা ডারউইন সাহেব বুঝতে পারেননি বলে তার কাছে ওটা একটা মহাসংগ্রাম হিসাবে মনে হয়েছে।

(ঙ) এই পৃথিবীর প্রকৃতি রাজ্যে যত ধরনের জীব জন্তু উদ্ভিদ এমনকি এক কোষি জীব আছে, দেখা গেছে প্রত্যেকেরই প্রাকৃতিক ভারসাম্য রক্ষায় কিছু না কিছু অবদান আছে। সবার অবদান সমম্বিত আকারে প্রকৃতিকে যথার্থভাবে ভারসাম্য অবস্থায় রাখে।উদ্ভিদ কুল বায়ূ মন্ডলের কার্বন ডাই অক্সইড গ্রহন করে, পরিবর্তে বায়ূমন্ডলে প্রানীজগতের অতি প্রয়োজনীয় অক্সিজেন ত্যাগ করে। বনে বাঘ আছে বলে হরিণের সংখ্যা মাত্রা ছাড়ায় না, আবার হরিণ আছে বলে বাঘ বেচে থাকে, কীট পতঙ্গ, পাখি আছে বলে পরাগায়ন ইত্যাদির মাধমে গাছ পালা দুর দুরান্তে বংশ বিস্তার করতে পারে, আবার গাছ পালা কীট পতঙ্গ আছে বলে পাখি ও অন্য অনেক ছোট ছোট জীবজন্তু বেচে থাকে ।এক কোষি নানা ধরনের জীব আছে বলে তাদের ক্রিয়া কলাপের জন্য উদ্ভিদ ও জীব দেহ মরার পর পচে গলে মাটির সাথে মিশে যায় যা পরে উদ্ভিদের খাদ্য হিসাবে ব্যবহৃত হয়-এভাবে বিচার করলে দেখা যায় প্রকৃতির প্রতিটি জীব নানা ভাবে প্রাকৃতিক ভারসাম্য রক্ষায় কোন না কোন ভাবে অবদান রাখে।শুধু মানুষই একমাত্র জীব বা প্রানী প্রাকৃতিক ভারসাম্য রক্ষায় যাদের সামান্যতম অবদান নাই। অবদান তো না-ই , বরং তারা এমন সব কর্মকান্ড দীর্ঘ দিন ধরে করে এসেছে এবং এখনও করে চলেছে যাতে প্রাকৃতিক ভারসাম্য পুরোপুরি ভেঙ্গে পড়তে বসেছে। পরিস্থিতি এতটাই নাজুক যে, অতি সত্ত্বর এ ব্যপারে কোন পদক্ষেপ গ্রহন না করলে হয়ত পৃথিবী পুরোপুরি ভাবে মনুষ্য বসবাসের অযোগ্য হয়ে পড়বে। সুতরাং বলা যায় পৃথিবীর জন্য মানুষই বর্তমানে ভীষন হুমকি হয়ে দাড়িয়েছে। মানুষ যদি পৃথিবীর কোন বানর বা ছাগল জাতীয় প্রানী থেকে সত্যি সত্যি বিবর্তনের মাধ্যমে উদ্ভুত হতো তাহলে প্রকৃতির ্একটা অংশ হিসাবে প্রাকৃতিক ভারসাম্য রক্ষায় তার সামান্য হলেও কিছু অবদান থাকতো।বরং বাস্তব অবস্থা তার উল্টো।বাস্তব অবস্থা দেখে মনে হয়, মানুষ যেন এ পৃথিবীতে অনেকটা উড়ে এসে জুড়ে বসেছে চর দখলের মত।এর সোজা অর্থ পৃথিবীকে কোন এক মহান স্রষ্টা যেন আগে থেকেই প্রাকৃতিক ভারসাম্য সহ সৃষ্টি করে রেখেছিল এর পর যখন তা মনুষ্য বসবাসের উপযোগী হয় তখন বিশ্বের অন্য কোথাও থেকে মানূষ এসে এখানে আস্তানা গাড়ে অথবা মহান সেই স্রষ্টা মানুষকে সৃষ্টি করে বসবাসের জন্য পৃথিবীতে পাঠিয়ে দেয়।
(চ) বিবর্তনবাদ সত্য হলে কোন জীব দেহে কোন টেকনোলজির অস্তিত্ব থাকবে না। কারন সময়ের ধারায় কোন রকম দৈহিক সামান্য পরিবর্তনকে স্বীকার করে নিলেও বিবর্তনের ধারায় কোন টেকনোলজির উদ্ভব হবে না কোন জীবদেহে। কারন টেকনোলজি সম্পুর্নতঃই বুদ্ধিমানদের একান্ত নিজস্ব উদ্ভাবন। মাইগ্রেটরী বার্ডস তারা হাজার হাজার মাইল দুরত্ব অতিক্রম করে একটুও দিক না হারিয়ে নির্দিষ্ট দুরত্বে যায় যাবতীয় প্রতিকুল আবহাওয়াকে মোকাবেলা করে শুধূমাত্র তাদের ম্যাগ্নেটিক সেন্সর ব্যবহার করে। এক ধরনের সামূদ্রিক ইল বা বান মাছ আছে যারা তাদের দেহে ৫০০ ভোল্ট পর্যন্ত বিদ্যুত তৈরী করতে পারে। এধরনের ম্যগ্নেটিক সেন্সর বা ব্যটারী চার্জার কিভাবে বিবর্তনের ধারায় তৈরী হতে পারে? ম্যগ্নেটিক সেন্সর বা বৈদ্যুতিক ব্যাটারী চার্জার এসব তো প্রাযুক্তিক আবিষ্কারের বিষয়। এছাড়া প্রতিটি জীবদেহের চোখ হলো আমাদের জানা সবচেয়ে সূক্ষ্ম ও উন্নত আলোক সংবেদী ক্যামেরা।
(ছ) প্রাকৃতিক নির্বাচন সত্য হলে অর্থাৎ যোগ্যতমের উর্ধ্বতন(ঝঁৎারাধষ ড়ভ ঃযব ভরঃঃবংঃ) সত্য হলে যারা বেশী যোগ্য বা উন্নত তাদের আয়ূ হবে সব চাইতে বেশী। কারন তারাই সব প্রতিকুল পরিস্থিতিকে মোকাবেলা করে সব চাইতে বেশীদিন বাচবে। কিন্তু বাস্তবে দেখা যায় ভিন্ন চিত্র।মানুষ যারা নাকি সবচাইতে যোগ্য প্রানী তারা বড়জোর বাচে ১০০ বছর কিন্তু তার চেয়ে শতগুনে নিম্ম প্রানী কচ্ছপ ২৫০ থেকে ৩০০ বছর বাচে, বটগাছ বাচে ৬০০ থেকে ২০০০ বছর, সিকোইয়া গাছ বাচে ৩০০০ বছরের বেশী।
(জ) আমরা যদি আমাদের পৃথিবীর জীব জগতের ইকোসিস্টেম বা বাস্তু-তন্ত্র লক্ষ্য করি তাহলে বিস্ময়ে হতবাক হয়ে যাব কি অদ্ভুত ভারসাম্য সেখানে বিরাজমান। জৈব পরিবেশে আমরা দেখি প্রতিটি জীব অন্য জীবের ওপর প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে নির্ভরশীল অর্থাৎ একটির অস্তিত্ব না থাকলে অন্যটির অস্তিত্ব হতো অসম্ভব। যেমন মৌমাছি বা অন্যান্য কীট পতঙ্গ না থাকলে উদ্ভিদের ফুলের পরাগায়ন সম্ভব হতো না। ফলে উদ্ভিদ বংশ বিস্তার করতে পারত না। অন্যভাবে উদ্ভিদের ফুল না থাকলে মৌমাছি বা মধুপায়ী কীট পতঙ্গ বাচতে পারত না। তার মানে দুনিয়াতে তাদের উদ্ভব একই সাথে, কারন তাদের অস্তিত্বের জন্য পরস্পর পরস্পরের ওপর নির্ভরশীল।আবার বনের নিরীহ ও হিংস্র প্রানীদের উদ্ভবও একই সাথে। কারন বনে হিংস্র প্রানী না থাকলে নিরীহ প্রানীর সংখ্যা এত বেশী বেড়ে যেত যে তাদের খাদ্যাভাব ঘটত ও একদিন দুর্ভিক্ষ লেগে সবাই একসাথে মারা যেত, হিংস্র প্রানীরা নিরীহ প্রানীদের শিকার করে তাদের সংখ্যা বিস্ফোরন থামায় ও তাদের সংখ্যাগত ভারসাম্য রক্ষা করে; পক্ষান্তরে নিরীহ প্রানী না থাকলে হিংস্র প্রানীরা খেতে না পেয়ে মারা যেত। আবার গাছপালা এবং এককোষী জীবানু ও বহু প্রকার ছোট ছোট কীট পতঙ্গ পরষ্পর নির্ভরশীল। কারন গাছপালা পচে গলে যায় বলে এককোষী যাবতীয় জীব ও বহু রকম ছোট ছোট জীব ও কীট পতঙ্গ তাদের খাবার পায়। আবার এ সকল এককোষী ও বহুকোষী কীট পতঙ্গ আছে বলে তারা মৃত গাছ পালা ও উদ্ভিদকে পচতে ও গলতে সাহায্য করে যা তারা নিজেরা খায় ও অন্য উদ্ভিদের খাদ্যের যোগান দেয়। সুতরায় এসব উদ্ভিদ না থাকলে এককোষী ও বহুকোষী নানা প্রকার জীব তাদের খাদ্য পেত না আবার এককোষী ও বহুকোষী জীব আছে বলে উদ্ভিদ নিজেরা পচে গলে অন্য উদ্ভিদের খাদ্যে পরিনত হতে পারত না। তার মানে একের অস্তিত্ব না থাকলে অন্যের অস্তিত্ব অসম্ভব হতো বা অন্য কথায় তাদের উদ্ভব একই সাথে। যা বিবর্তনবাদের সাথে খাপ খায় না।

বিবর্তনবাদী তত্ত্ব সম্পর্কে পৃথিবীর বিখ্যাত অনেক বিজ্ঞানী ও গবেষক দারুন সব মন্তব্য করেছেন যা নিম্মে বর্ননা করা হলো :
ডঃ কলিন প্যাটারসন, বিবর্তনবাদী, বৃটিশ মিউজিয়াম অব ন্যাচারাল হিস্ট্রির সিনিয়র প্যলেন্টোলজিষ্ট (জীবাশ্মবিদ)ঃ
 

 

I fully agree with your comments about the lack of direct illustration of evolutionary transitions in my book. If I knew of any fossil or living, I would certainly have inculded them…. I will lay in on the line …. There is not one such fossil for which one could make a wattight argument.


আমার বই সম্পর্কে আপনার মন্তব্যের সাথে আমি সম্পুর্ন একমত যে আমার বইযে বিবর্তনের ধারায় প্রজাতির রূপান্তরের প্রত্যক্ষ দৃষ্টান্তেও অভাব রয়েছে। যদি আমি এমন কোন প্রমানের কথা জানতাম—- ফসিল হোক বা জীবাশ্ম হোক, আমি নিশ্চিতভাবেই আমার বইয়ে তা অন্তর্ভুক্ত করতাম—-আমি একথা স্পষ্টভাবে বলব—এমনকি একটিমাত্রও এমন ফসিল নেই, যা অকাট্যভাবে প্রজাতির রূপান্তরকে প্রতিষ্ঠিত করতে পারে।
 

(Letter to Luthar Sunderland, 10th April,1979, published in Darwin’s Enigma, 4th Edition , 1988, P-89)

Charles Darwint

Why is not every geoligical formation and every stratum full of such intermediate links? Geology assuredly does not reveal any such finely graduated organic chain and this is the most obvious and serious aobjection which can be urged agains the theory.


কেন প্রত্যেক ভূস্তরীয় গঠন এবং প্রত্যেক ভূস্তর এই রকম অন্তর্বর্তী যোগ সূত্রে পূর্ণ নয়? ভূতত্ত্ববিদ্যা নিশ্চিতভাবেই এনরকম সুন্দরভাবে ক্রমপর্যায়ে বিন্যস্ত কোন জৈব শৃঙ্খলের অস্তিত্ব প্রকাশ করছে না; এবং এনটিই সবচেয়ে স্পষ্ট ও গুরুতর আপত্তি— এই তত্ত্বেও বিরুদ্ধে যা উত্থাপন করা যেতে পারে।
(
Charles Darwin, The Origin of Species, 6th Edition, P-413)জীব প্রজাতির দেহের ডিজাইনে মূখ্য রূপান্তরগুলির অন্তর্বর্তী ক্রমগুলির জীবাশ্ম প্রমানের অনুপস্থিতি, এবং বাস্তবিকই, এমনকি আমাদের কল্পনাতেও বহু ক্ষেত্রে কোন কার্যকর অন্তর্বর্তী যোগসূত্র গঠনের প্রচেষ্টার বিফলতা বিবর্তনের ক্রম-পর্যায়মূলক বিবরণ দানের ক্ষেত্রে এক চিরস্থায়ী ও বিরক্তিকর সমস্যা হয়ে দাড়িয়েছে।
(

S.J.Gould:Evolution Now:A century after Darwin,NewYork,Mcmillan,1982, P-93)
বিষয়টা আসলেই সত্য। যত সহজে বিবর্তনবাদ তত্ত্ব দাড় করানো গেছিল তত সহজে তার সপক্ষে প্রমান যোগাড় করা যায় নি বা যাচ্ছে না, বা অন্য কথায় প্রমান যোগাড় করা সম্ভব না কারন তত্ত্বটাই ভিত্তিহীন। কিন্তু তার পরেও যে কেন এ তত্ত্ব বিজ্ঞানে পড়ানো বা চর্চা করা হয় তা বোধগম্য নয়। বিজ্ঞানের নানা শাখায় বিশেষ করে পদার্থ বিজ্ঞানে বহু তত্ত্ব প্রথমে দাড় করানো হয়েছিল কিন্তু পরে প্রমানের অভাবে সেগুলি বাদ পড়ে গেছে বা কিছু কিছু তত্ত্ব সংস্কার সাধন হয়েছে। দেড়শ বছর হয়ে গেল বিবর্তন বাদ তত্ত্ব দুনিয়াতে প্রচারিত আছে, এ তত্ত্ব সঠিক প্রমানের জন্য একটা নমুনাও হাজির করা যায় নি যেকারনে প্রথিতযশা সব জীব বিজ্ঞানীরা নানা ভাবে তাদের হতাশাও প্রকাশ করছেন নানাভাবে, খোদ তত্ত্বের প্রনেতা ডারউইন সাহেবই তার হতাশা প্রকাশ করে গেছেন তত্ত্ব প্রমানের জন্য নমুনার দুষ্প্রাপ্যতায়, কিন্তু তত্ত্ব হিসাবে এখনও কেন এটা টিকে আছে সেটাই আশ্চর্য। কেন এটা বলছি তার কারন হলো – এ তত্ত্ব অধ্যয়ন করে স্কুল , কলেজ বা বিশ্ববিদ্যালয়ের কোমলমতি ছাত্র ছাত্রী যাদের মন বা স্মৃতি বহুধা মতবাদ বা তথ্য বা তত্ত্ব দিয়ে ঠাসা বা জর্জরিত না,যাদের মন সব সময় নতুন কিছুকে জানবার ও গ্রহন করবার মানসে উদগ্রীব থাকে, তারা যখন বিবর্তনবাদের মত চমকপ্রদ ও কল্প কাহিনী পড়ে তাদের মনে এর একটা স্থায়ী ছাপ পড়ে যায়। এর ফলে পরবর্তীতে তারা ইচ্ছে করলেও আর এর প্রভাব থেকে বের হতে পারে না এবং তাদের মনের মধ্যে সৃষ্টিকর্তা সম্পর্কে একটা সন্দিগ্ধ ভাব থেকেই যায়, যে কারনে তারা একুল ওকুল দুকুলই হারায়। অর্থাৎ তারা না পারে পুরোপুরি নাস্তিক্য বাদ থেকে বেরিয়ে আসতে, না পারে পুরোপুরি আস্তিক হয়ে সৃষ্টিকর্তার সন্তুষ্টি সাধনে কোন সাধন কার্যে লিপ্ত হতে। অন্য কথায় অমূল্য মানব জন্মটাই তার বৃথা যায়।

 

অভিজিতের প্রত্যুত্তর