সংখ্যালঘুদের ভোট ব্যাংক না হয়ে ভোটে বিরত থাকাই ভালো
অঞ্জন রায়
নির্বাচন মানেই ভোটের হিসাব। জোটের হিসাব। ক্ষমতার হিসাব। কিছুটা লুটপাটেরও হিসাব। আর সেই কারনেই ভোটের হাওয়া উঠলেই ব্যাস্ত হয়ে পরেন আমাদের প্রধান দুই দল, সঙ্গী সাথী গুছিয়ে জোটের আকার বৃদ্ধি করেন। কখনো এর জন্য নিছক সাইবোর্ডওয়ালা দলগুলোর বাজারদরও বেড়ে যায়। তারাও দেখা করেন শেখ হাসিনা অথবা বেগম জিয়ার সাথে। টেলিভিশনের পর্দায় তাদের হাসিমুখ চেহারা দেখা যায়। প্রতিবারেই ভোটের আগে দেখামেলে বাংলাদেশের ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের নামে প্রতিষ্ঠিত বেশ কিছু দল ও ব্যাক্তির। চুড়ান্ত সুবিধাভোগী গুটিকতক লোকের এই সংগঠগুলো নিছক নিজেদের স্বার্থে বিক্রি করে দেশের সংখ্যালঘুদের সকল স্বার্থ। যেন তারাই হয়ে বসে আছেন দেশের একটি বেশ বড়সর ভোট ব্যাংকের মালিক। যে সব মানুষদের কখনো দেখা মেলে না বিপদের সময়- ভোট এলেই তারা বেশ করে কর্মে খাচ্ছেন, এমনটি গত কয়েক নির্বাচনে দেখে আমাদেরও চোখে সয়ে গেছে। অথচ এদেশের সংখ্যালঘুদের ওপরে যে পাপটি দেশ বিভাগের পরে থেকেই চেপে আছে, সেই পাপের বিষয়ে কখনোই মুখ খোলেন না এরা।
অথচ বাংলাদেশের অভ্যূদয় থেকে আজ অবধি এদেশের ধর্মীয় সংখ্যালঘুরা বেশ কয়েকটি মৌলিক বিষয়ে তাদের অধিকার থেকে বঞ্চনার শিকার হয়ে আছে। এর অন্যতম হচ্ছে অর্পিত সম্পত্তির নামে দেশের বিরাট একটি জনগোষ্ঠিকে তাদের জমির অধিকার থেকে দুরে সরিয়ে রাখা হয়েছে। মুক্তিযুদ্ধ পরবর্তীতে প্রতিষ্ঠিত কোন সরকারই তাদের সাম্প্রদায়িক চরিত্র থেকে বেরিয়ে এসে সংখ্যালঘুদের স্বার্থ রক্ষা করেনি। কিন্তু এই দলগুলোর কোনটা মনে করছে বাংলাদেশের ধর্মীয় সংখ্যালঘুরা তাদের নিজস্ব ভোট ব্যাংক। আবার অপর একটি দল মনে করছে এদেশের ধর্মীয় সংখ্যালঘুরা তাদের কখনোই ভোট দেবে না, সুতরাং এই বিষয়ে তাদের কিছুই করার নাই। আর এই দোটানার মধ্যেই কেটে গেছে ৩৭ বছর। আজো কাঁধে চেপে আছে অর্পিত সম্পত্তি আইন। তাই আমি স্পষ্টই মনে করি বাংলাদেশের সাধারন সংখ্যালঘুদের এখনি সময় এসেছে সিদ্ধান্ত নেয়ার- যে রাজনীতি আর নির্বাচন কোন স্বার্থ রক্ষা করে না সেই নির্বাচনের জন্য হাঁড়িকাছে মাথা দিয়ে কোন লাভ নাই, বরং অনুপকারী এই খাতচি থেকে যতোটা তফাতে থাকা যায়- ততোটাই ভালো।
আমাদের এই রাষ্ট্রের একটি নিজস্ব বৈশিষ্ট্য আছে, ৭৫ পরবর্তীতে ক্ষমতায় যে দলই থাকুক তাদের বাহ্যিক কিছু পার্থক্য থাকলেও জিয়াউর রহমানের ছেড়াজুতো পায়ে দিয়ে যেভাবে জেনারেল এরশাদ পথ চলেছেন- সেই ভাবেই আমরা পরবর্তী গনতান্ত্রিক সরকারের পথ চলা দেখেছি। দেখেছি নিজেদের নৈতিকতা বিকিয়ে দিয়ে মুক্তিযুদ্ধের নেতৃত্ব দেয়া দলটিরও শিখন্ডীতে পরিনত হতে। দেখেছি একই দেশে কি ভাবে দুই ধরনের আইনে চলতে পারে ভূমি ব্যাবস্থাপনা। শুধুমাত্র সাম্প্রদায়িক কারনে এবং দখলদারিত্ব বজায়ে রাখতে আজো দেশে বলবত রাখা হয়েছে অর্পিত সম্পত্তি আইন। আমাদের দেশের একটি বিরাট জনগোষ্ঠি এই আইনে সরাসরি ভূমির অধিকার থেকে বঞ্চিত থাকলেও এই নিয়ে মাথা ব্যাথা নাই রাষ্ট্রের মালিকদের। কেননা তাদের স্বার্থের হাড়িও ঝোলানো আছে একই খেজুর গাছে।
এই রাজধানীতে থেকে অনেক ধরনের নাগরিক সুবিধা পেয়ে আমরা কি বুঝতে বুঝতে পারি দূর গ্রামের একজন সাধারন সংখ্যালঘুকে কি ধরনের অনিরাপদ জীবনযাপন করতে হচ্ছে। এই পাকা দালানে থেকে আমরা কি একবার ভেবে দেখতে পারি সুদূর গ্রামের একজন মানুষ- যার জমিজমাগুলো ৪৭ এর পাপের ফসল হিসেবে বেহাত হয়ে আছে, তাকে কি ভাবে দিন যাপন করতে হচ্ছে? এক দিকে অর্থনৈতিক দৈন্যতা অন্যদিকে দখলদারদের অত্যাচারে কিভাবে তাদের দিন কাটছে?
আমাদের দেশে যারা মানবাধিকার, আইনের শাসন, গনতন্ত্রের কথা বলে মাইক গরম করছেন- যারা বিদেশী সাহায্যে সংগঠন গড়ে পন্য করেছেন এদেশের দারিদ্রকে তারাও কি একবার ভেবে দেখেছেন, শুধুমাত্র সাম্প্রদায়িক কারনে এই দেশের বিরাট এক জনগোষ্ঠিকে কেন সব অধিকার থাকার পরেও আধিকারহীন হয়ে থাকতে হচ্ছে? আমাদের সর্বোচ্চ ডক্টরেট সমৃদ্ধ সরকারের উপদেষ্টারাও নিশ্চয় এতোটাই ব্যস্ত যে তাদের সময় নেই এইসব মামুলী বিষয়ে ভাবার মতো। আজ যখন নির্বাচন দুয়ারে কড়া নাড়ছে- তখনই শীতঘুম ভেঙ্গেছে আমাদের মাননীয় আইন উপদেষ্টার। তিনি অর্পিত সম্পত্তি হস্তান্তর বিষয়ে ট্রাইবুনাল গঠনের বিষয়ে উদ্যোগী হয়েছেন। অথচ গত প্রায় দুবছরে এই বিষয়ে অনেক কথা উঠলেও আমরা সরকারের তেমন কিছু উদ্যোগ দেখিনি। দেখিনি রাষ্ট্রের গায়ে লেগে থাকা এই পুরোনো পাপ মোচনে উদ্যোগী হতে।
এই দেশে এমন সবই সম্ভব, রাষ্ট্র যখন নিজেই একটি কালো আইনের পক্ষে দাঁড়ায় তখন এমন ঘটনাগুলো স্বাভাবিক। আর সম্ভব বলেই প্রতিনিয়ত কমছে দেশের সংখ্যালঘুর সংখ্যা। প্রতিনিয়ত রাষ্ট্র তার সবগুলো নখর দিয়ে আক্রমন করতে থাকলে কিভাবে হরিপদ নাপিত অথবা কমল বহুরুপী তার কয়েক পুরুষের ব্যাবসা চালিয়ে যেতে পারবে? কিভাবে বিমলা হাত বাড়াবে সন্ধ্যা পুজোর ফুলের জন্য? না। বর্তমান এই রাষ্ট্রই চায় না এই দেশে সংখ্যালঘুরা নিরাপদে থাকুক। রাষ্ট্রই চায়নি সন্ধ্যেবেলা আজান আর শাঁখের সুরের ঐক্যতান। চায়নি বলেই এখানে আজো বলবত থাকে অর্পিত সম্পত্তির মতো অশ্লীল আইন, আর এই না চাওয়ার পেছনের প্রধান কারন- এই জমিগুলোর অধিকাংশ তাদেরই ভোগে লাগছে- যারা নামে অথবা বেনামে মালিক বনে আছেন বাংলাদেশ নামক দেশটির।
মানুষের মতোই রাষ্ট্রেরও একটি নিজস্ব চরিত্র থাকে, সেই চরিত্র যেমন একদিনে তৈরি হয় না, তেমনই এক দিনে বদলেও যায় না। আর বদলে যায় না বলেই আমাদের দেশের শাসক গোষ্ঠি মুখে নানা কথা বললেও তাদের অন্তচরিত্রের এক অসাধারন মিল রয়েছে। রয়েছে তাদের ফ্যাসিস্ট চরিত্রেরও মিল। যে কারনেই দেশের এক বিপুল জনগোষ্ঠিকে তাদের ধর্মীয় অসাহয়তার কারনে পুঁজি বানিয়ে রাখতে ক্ষমতাসীন অথবা ক্ষমতামুখীদের কোন সমস্যা হয় না। আর হবেই বা কেন? বিবেক নামক বিষয়টি মর্গের হিমঘরে পাঠিয়ে তবেই তো তারা রাজনীতির মাঠে নামেন। এখন যেহেতু বড়দলের কাছে রাজনীতি আর বিবেকহীনতা সমার্থক শব্দ হয়ে উঠেছে, তখন তাদের কাছে কিছু প্রত্যাশা করার চাইতে নিজেদের ভোটাধিকার প্রয়োগে বিরত থাকাটাই সবচেয়ে ভালো প্রতিবাদ বলে আমি মনে করি।
মহান মুক্তিযুদ্ধের মধ্যেদিয়ে অর্জিত বাংলাদেশের ১৯৭২ সালে যে সংবিধানটি রচনা করা হয়েছিলো সেই সংবিধানের মৌলিক চরিত্র ছিলো অসাম্প্রদায়িক। কিন্তু রচনার পরে থেকেই বার বার রক্তাক্ত হয়েছে আমাদের সংবিধান। একের পরে এক সংশোধনী আর অধ্যাদেশে প্রায় চরিত্রই পাল্টে গেছে এই গ্রন্থটির। আর সবচেয়ে মজার ব্যাপার যারা নির্বাচিত বা অনির্বাচিত পন্থায় দেশটির চালকের গদিতে বসছেন- তারা বসা মাত্রই বেমালুম ভুলে যান সংবিধান নামক গ্রন্থটির কথা- আর সেটাই স্বাভাবিক, কেননা এই শাসক গোষ্ঠি যে ভাবেই ক্ষমতায় আসুক না কেন- তাদের দলগুলোর নাম আলাদা হলেও- শ্রেনী ও সাম্প্রদায়িক চরিত্রে তাদের রয়েছে এক অনাবিল সখ্যতা।
একমাত্র বাংলাদেশেই বোধহয় এমন রাষ্ট্রীয় দ্বিমুখী নীতি একটানা এতো বছন বলবত আছে। এবং সরাসরি রাষ্ট্রের তত্বাবধানেই চলছে এই শোষন প্রক্রিয়া। অবশ্য বাংলাদেশ আমলেই এই প্রক্রিয়াটি শুরু হয়নি। যখন ধর্মের নামে আমাদের এই উপমহাদেশ বিভক্ত হয়েছিলো- তখনি এই বিষাক্ত বীজটি রোপিত হয়েছিলো আমাদের মানসিকতার গভীরে। অক্সফোর্ডে শিক্ষিত জিন্না আর পন্ডিত নেহেরু যখন প্রধান মন্ত্রীত্বের জন্য র্যাডক্লিফের ছুরির নীচে গলা দিয়েছিলেন তখনি আসলে এই ভূমিখন্ডের অসাম্প্রদায়িক চেতনাকে কফিনে পুরে পেরেক ঠোকার সূচনা হয়ে গেছে। এরই পরম্পরায় এখনো যারা ক্ষমতায় আছেন তারা তাদের পবিত্র দায়িত্ব হিসাবেই ক্রমাগত রাষ্ট্রকে ঠেলে নিয়ে চলেছেন সাম্প্রদায়িকতা এবং অন্ধকারের দিকে।
আমরা যদি একবার আমাদের অতীতের দিকে তাকাই, দেখি তাহলে ৪৭ এর সাম্প্রদায়িক বিভাজনের যে অপরাষ্ট্র পাকিস্তানের জন্ম দিয়েছিলো, তার পরিনতিই আমাদের উপহার দিয়েছিলো ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের নির্যাতনের মানসিকতা। রাম আর রহিমের বিভাজনের বিষ আমাদের মনোজগতে গেঁথে গিয়েছে। অজান্তেই প্রত্যেকের গায়ে চেপে বসেছে সাম্প্রদায়িক আলখাল্লা। সংখ্যালঘুদের সম্পদ সাইদী সাহেবদের কারনে হয়ে গেছে গনিমতেন মাল। অন্যদিকে ভূমি অফিসের বাস্তঘুঘুদের অবাধ লুটপাটে শুধুমাত্র নামের কারনে প্রতি বছরে অগনিত মানুষকে হারাতে হচ্ছে তাদের জমির অধিকার।
পাঠক, আমরা যদি বাংলাদেশের অর্পিত সম্পত্তির দখলদারদের দিকে তাকাই- তাহলেই অনেক প্রশ্নের সমাধান মিলে যায়। মুক্তিযুদ্ধ পরবর্তিকাল থেকে বিগত সময়ের যে বরাদ্দ তার বেশিরভাগই পেয়েছেন বিভিন্ন সময়ে সরকারে থাকা রাজনৈতিক দলের সুবিধাবাদি শ্রেনী। যারা সরাসরি সুবিধাভোগী তারাই যখন দেশকে পরিচালনা করেন তখন অর্পিত সম্পত্তির মতো কালো আইন বাতিলের বিষয়টি প্রত্যাশা করে কি কোন লাভ হবে? এটি যেমন রাজনৈতিক সরকারের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য তেমনই বর্তমান সুশীল ডক্টরেট সরকারের কাছেও এটি মোটেই গুরুত্বপূর্ন বিষয় নয়, বরং দেশের তেল গ্যাস খনিজ সম্পদ সহ এমন অনেক বিষয় আছে, যাতে তাদের এখন অগ্রাধিকার দেবার দরকার আছে।
সামনেই নির্বাচন, এবারো নির্বাচনের আগে আমরা শুনবো অনেক গালভরা বুলি। নির্বাচনী ইশতেহারে এবারেও থাকবে স্বপ্নের দেশ গড়ে তোলার বিবিধ প্রতিশ্র“তি। আমরাও ভোট কেন্দ্রে যাবো- হাতের বুড়ো আঙ্গুলে কালো কালির দাগ নিয়ে ঘরে ফিরবো। দুপুরে ভরপেট খেয়ে ঘুম থেকে উঠে রাতভর টেলিভিশনে ভোটের ফল দেখবো। দেখবো গনতান্ত্রির সরকারের শপথ নেয়া। কিন্তু দেশের সংখ্যালঘুদের যন্ত্রনা তার কি কোন সমাধান হবে? হয়তো সংখ্যালঘুদের কিছু নেতার আবারো কপাল খুলবে- কিন্তু দূর গ্রামের হেঁটো ধুতিপড়া মানুষগুলো ক্রমেই পরিনত হতে থাকবে বিলুপ্তপ্রায় প্রজাতিতে। নির্বাচনী ভোট ব্যাংক হয়ে থাকা সংখ্যালঘুদের জন্য রাষ্ট্র কখনো মানবিক হবে এমন প্রত্যাশা করাটাও এখন হয়ে উঠেছে অবাস্তব একটি বিষয়। কেননা, বাংলাদেশ নামক রাষ্ট্রটির সাম্প্রদায়িক শাসনের বাইরে আর কোন কিছু এখন আর আমাদের প্রাপ্য নয়। প্রত্যাশা করাটাও উচিত নয়। তাই এবারের জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সংখ্যালঘুদের ভোট ব্যাংক না হয়ে ভোটে বিরত থাকাই ভালো, এতে আর যাই না হোক অন্তত প্রতিবাদটুকু তো করা হবে।
——————————————————
অঞ্জন রায় : গণমাধ্যমকর্মী। [email protected]
তাই নাকি? জানতাম নাতো। সারা দুনিয়ার বিভিন্ন দেশে দেশে জঙ্গী মুসলমানরা জঙ্গী হামলা বা সন্ত্রাসবাদী আন্দোলন করেছে এটা সত্যি কথা। কিন্তু সেই সন্ত্রাসবাদী কর্মকাণ্ডে সব মুসলমানরা সরব বা নীরব সমর্থন দিয়ে কীভাবে তাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করেছে বুঝতে পারলাম না । নিরাপত্ততো আরও বিঘ্নিত হওয়ার কথা। আর সব মুসলমানরাই যে সন্ত্রাসবাদী কর্মকাণ্ডে জঙ্গী মুসলমানদের সমর্থন করে এর স্বপক্ষে আপনার কাছে কি কোন তথ্য প্রমাণ আছে? নাকি নিজে নিজে উপসংহারে পৌঁছে গেছেন?
আহা! একেবারে গান্ধীর অনুগত অহিংস শিষ্য দেখছি হিন্দুরা! শিবসেনা বা হিন্দু জাগরণ মঞ্চ কি হিন্দুদের সংগঠন নাকি মুসলমানদের? গুজরাটে যে হাজার খানেক মুসলমানকে কঁচুকাটা করা হলো সেটা কারা করেছিল? অহিংস হিন্দুরা নিশ্চয় নয়। নিজেদের দেশেই যারা মুসলমানদের ভয়ে রিফিউজি হয়ে সিঁটিয়ে থাকে তার নিশ্চয়ই খুন খারাবির মত সহিংস কায়কারবার করতে পারে না।
এইতো মাত্র সেদিনই মহারাষ্ট্র পুলিশ মেলগাও নামের এক মুসলমান প্রধান ছোট্ট শহরে বোমা হামলায় ছয়জন মুসলমান হত্যার অপরাধে হিন্দু টেররিষ্ট সেলের সদস্য নয়জন সন্ত্রাসীকে গ্রেপ্তার করেছে। জঙ্গী বা সন্ত্রাসী আন্দোলন করা হিন্দুদের ধাতে না থাকার পরেও কেন যে তারা নিরীহ মানুষ মারার সন্ত্রাসী কাজ করতে গেলো সে বিষয়ে আপনার মতামত পেলে ভাল লাগতো। নাকি গভীর কোন ষড়যন্ত্র। মুসলমান জঙ্গীরাই হয়তো নির্বিবাদী পুলিশকে হুমকি ধামকি দিয়ে তাদেরকে সন্ত্রাসবাদী সাজিয়ে গ্রেফতার করিয়েছে।
সংখ্যালঘু সব দেশেই আছে। সংখ্যালঘুরা সবদেশেই কিছু মাত্রায় ভোট ব্যাংক হিসেবে ব্যবহৃত হয়। সুতরাং ভোট না দেওয়াটা সমস্যার সমাধান হতে পারেনা। সংখ্যালঘুরা কিভাবে তাদের ভোটকে তাদের স্বারথে ব্যবহার করবেন সেটা বিস্তৃত আলোচনার বিষয়, এবং সবাই একমত হবেন তাও নয়।
সারা দুনিয়ায় মুসলমানরা বিভিন্ন দেশে সংখ্যালঘু হয়েও তাদের স্বকীয়তা ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করেছেন জংগী আন্দোলন করে বা সন্ত্রাসবাদী আন্দোলনে (নীরব বা সরব) সমরথন জুগিয়ে, শুধু ভোটের অপেক্ষায় তারা বসে থাকেন নি। অবশ্যই কিছু জায়গায় তারা সফন হননি (যেমন, চীন)।
বামগ্লাদেশে হিন্দু সংখ্যালঘুরা সেদিনই তাদের স্বকীয়তা ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পারবেন যেদিন বাংলাদেশের সংখ্যাগুরুদের সংখ্যাগুরু অংশ হিন্দুদের স্রেফ কাফের হিসেবে দেখবেন না। আশা রাখব বাংলাদেশের সংখ্যাগুরুরা সেই পরযায়ে শিগ্গিরি উন্নত হবেন। কারন জংগী বা সন্ত্রাসবাদী আন্দোলন করা হিন্দুদের ধাতে নেই, থাকলে নিজের দেশের (ভারত) কাশ্মীর রাজ্যে তারা রিফিউজি হয়ে থাকতেন না বা কিছু সাদা টুপি পরা লোক একদিন হাঙ্গামা করে তসলিমাকে কোলকাতা থেকে তাড়িয়ে দিতে পারতো না।
I don’t think, this is correct thinking. What is lacking here is the understanding that like a society, democracy also evolves. Only democracy corrects a democray and makes it better.
Problem with all of us-we all dream of revolutionary change. Society does not change that way in one day. The politics of social identity and how that is fermented by political power groups, need to be exposed more and more. At the end of the day, nobody is a Hindu or Muslim but a human being and Bengalis know it better than other South Asian race. Personally I hate and despise minority politics in any country.
There is no alternative to steady and positive democratic evolution. All of us should take part in this process as a human being first and last, and not as a Hindu or Muslim. Even if 99% do so, it is the duty of a few, who are enlightened , to enlighten others.
রাষ্ট্র যখন শুধুমাত্র ধর্মীয় বিশ্বাসের পার্থক্যের কারণে তার নিজেদের নাগরিককেই শত্রু বলে বিবেচিত করে তার সমস্ত ধারালো দাঁত আর নখ নিয়ে শকুনের মত ঝাঁপিয়ে পড়ে, তখন বুঝতে হবে যে সেই রাষ্ট্রের রন্ধ্রে রন্ধ্রে পঁচন ধরেছে। বাংলাদেশ নামক রাষ্ট্রটি এখন পঁচা মাছের মত দুর্গন্ধ ছড়াচ্ছে।
অথচ কী অমিত সম্ভাবনা নিয়েই না শুরু হয়েছিল এর জন্ম প্রক্রিয়া। কী বিপুল আশা আকাঙ্খাই না ছিল একে কেন্দ্র করে। মাত্র কয়েক বছরের মধ্যেই সব আশা, আকাঙ্খা আর সম্ভাবনাকে বিসর্জন দিয়ে একে গলিত শবে পরিণত করে ফেলেছি আমরা। যে রাষ্ট্রের হওয়ার কথা ছিল মমতাময়ী মায়ের মত স্নেহময়ী, নির্ভরতার প্রতীক, সেই জননী জন্মভূমি কোন এক দুষ্টু যাদুকরের পাল্লায় পড়ে এখন রূপকথার ডাইনীতে পরিণত হয়ে গেছে। ব্যর্থ আমরা, সকলেই ব্যর্থ। এ লজ্জা আমাদের সকলের।
ব্যর্থ এক সংখ্যাগুরু হিসাবে নির্যাতিত সংখ্যালঘুদের কাছে করজোড়ে নিঃশর্ত ক্ষমা প্রার্থনা করা ছাড়া কীই বা করার আছে আমার?
আমিও তাই মনে করি। সঙ্খ্যালঘুদের ভোট ব্যাঙ্ক না হওয়াই ভাল। এমনিতেই ত তাদের গায়ে ছাপ্পর মারা আছে। ভোট দিলেই কি, না দিলেই কি!