নারী স্বাধীনতা বলে একটা কথা প্রায়ই উচ্চারন করে “নারী বাদী “ সমাজ । মনে হয় নারীকে একটা আলাদা জাতি হিসাবে নারীরাই চিহ্নিত করে করে , যে তারা কেবল ই নারী তারা “ মানুষ “ নয় । এই ভাবে নিজের আত্মপরিচয়কে অবমাননা নারীরাই করে । বিকৃত ধর্মে যেমন মানুষে মানুষে বিভেদ সৃষ্টি করেছে । একই ভাবে পুরুষে নারীতে ভেদাভেদ তৈ্রি করতে নানা ছল চাতুরির আশ্রয় নিয়েছে । প্রাচীন যুগে দাসী বেচাকেনা হত । আজো কোনো কোনো জাগায় এই চল রয়েছে । স্বামী সেবা , পতি সেবা , জননী ,জায়া ,ভগ্নী , নানান রুপে কেবল নারীর উদ্যেশে যে ভাবে আদেশ উপদেশ । পরিশেষে , স্বর্গ অথবা বেহেশ্ত নামক যায়গার প্রলোভন দেখিয়েছে পুরুষের ক্ষেত্রে ততোটা না। এই বিভেদ বা বিভাযন তা পৌ্রানিক ধর্ম , কিবা হিন্দু , বা মুসলিম সবক্ষেত্রে প্রযোজ্য । নারীর স্থান থেকে স্থানাতরের নিক্ষেপ করার কারন ও বিকৃত ধর্মীয় অনুশাসনের জের । কতো হিন্দু নারী স্বামী মৃত্যুর পরে যে “কাশী” নির্বাসনে গিয়ে দুর্বিসহ জীবন কাটায় তার পরবর্তি খবর কেও জানে না । একই ভাবে মুসলিমদের অবস্থান আরো ভয়াবহ । নারী নির্যাতনের ছোট একটা উধারন দেই – “ তোমাদের পত্নীগন তোমাদের জন্য শষ্যক্ষত্র স্বরুপ , সুতরাং , স্বীয় শষ্যক্ষেত্রে আগমন করো যে দিক দিয়ে ইচ্ছা “ ( সুরা আল বাকারা ২৮৬-রুকু ৪) । বিভিন্ন ধর্ম গ্রন্থে আছে একটার বেশী স্বামী গ্রহন করতে পারবে না । স্বামীদের বহু স্ত্রী থাকলেও স্ত্রীদের জন্যে একটা শ্বামী। আর পুরুষের পতিতালয়ে যাবার অবাধ অধিকার । নারীরা কেবল চারন ক্ষেত্র । পুরুষ যে ভাবে খুশী নারী দেহ ভোগ করতে পারবে । স্ত্রীর ইচ্ছে অনিচ্ছার কোনো মুল্য নাই । সেই কথাই বার বার সুবিধা ভোগী ধুর্ম গ্রন্থ রচয়িতা ঠাকুর দেবতা ইশ্বর , আল্লাহর নাম দিয়ে বলা হয়েছে । পুরুষকে প্রলোভিত করা হয়েছে । এবং তাতে তারা সুবিধাভোগি দল ইস্পিত লক্ষ্যে পৌছাতে সক্ষম হয়েছে । আজ তাই বিভিন্য আকার দিয়ে মানুষ তাদের পুজো করে , নিরাকারে এবাদত । পরোকাল নামক অচেনা জগতের হাতছানিতে প্রলোভিত। কি নিদারুন প্রবঞ্চনার ইতিবৃত্ত তারা রচনা করে গেছেন । মানবের স্বীয় মানবিক চিন্তা ভাবনা করার সুযোগ থেকে তারা সু-চতুর ভাবে সরিয়ে দিয়েছে । কিছু সংখ্যক মহামানব ! আজ যখন কেউ সেই অন্ধকার কুয়াশাচ্ছন্ন যুগের চিন্তা ভাবনাকে সরিয়ে নিজ শিক্ষা , বিবেক ভাবনা দিয়ে চলতে চাইছে ।তখন ই তাদের কে শাস্তি দেবার ব্যাবস্থা হচ্ছে । মানুষের চিন্তা চেতনা কে এই ভাবেই লুন্ঠন করা হয়েছে ।
:line:
জনৈক টিচার যিনি বিদেশ থেকে উচ্চতর শিক্ষা নিয়ে বর্তমানে কর্মরত । ক্লাস রুমে এক দিন তিনি কথায় কথায় বলছিলেন –
কেবল নিজ দেশ নয় আমি নারী বিধায় বিদেশে থাকাকালীন নানা প্রতিবন্ধকতার মুখোমুখি হতে হয়েছিল
একজন তিরিশ উর্ধ নারীর অভিভাবক দেখা যায় বারো বছরের বালককে । দৈহিক সামাজিক এবং ধর্মীয় ভাবে অভিভাবকত্ব এনে দিয়েছে । শুধু মাত্র সে নারী বিধায় । পুত্র সন্তান জন্ম গ্রহন করলে যে ধরনের সমাদর পায় একজন নতুন মা , কন্যা সন্তান প্রসবের পরে ততোটাই ধিকৃ্ত হতে হয় । অথচ কন্যা হোক পুত্র হোক জন্ম দেবার জন্যে দায়ী পুরুষের ই , x-y ক্রমজম নারীর কিন্তু নেই, নারীর কেবল xx যখন নারী x পুরুষের x মিলিত হয় তখন জন্ম নেয় কন্যা সন্তান। নারীর কিন্তু নেই কোন y. আর পুরুষের y এবং নারীর x মিলিত হয় তখন জন্ম গ্রহন করে পুত্র সন্তান । সমগ্র পরীক্ষাটা তো মনুষ্য নিয়ান্ত্রিত নয় । এখানে কাউকেই দায়ী করা উচিত না। তবু মেয়ে সন্তান জন্মদানের অপরাধে ঐ মেয়ের স্বামীকে আর একটা বিয়ে করার জন্যে প্ররোচিত করতে থাকে তার মা , ভগ্নী ( তারাও কিন্তু নারী ) এক জন নারী হয়ে নারীর কষ্ট অনুধাবন করেনা তারা । বিভিন্ন ধর্মের বিধান ঘাটলে দেখা যায় , পুরুষের চাইতে নারীর স্থান কেবল নীচেই না , নারী সব ক্ষেত্রে নিষেধের বেড়াজাল । এক বার এক বৌ্দ্ধ মন্দীরে দেখেছিলাম একটা বিশেষ এলাকা জুড়ে লোহার গেইট লাগানো , ভেতরে মুর্তি দেখা যাচ্ছে । সামনে একটা ছোট সাইন বোর্ড । তাতে লেখা –
“ মহিলা এবং কুকুরের প্রবেশ নিষেধ “
অনেকের হয়ত মনে হবে – ভালো মন্দ যাই লিখি না কেনো নারী নিয়ে এতো সতো কথার দরকার কি । এতো বহুকাল ধরেই শুনে আসছি । আধুনীক নারী সংগঠন আরো গলা ফাটিয়ে মরছে এ আর নতুন কি । এতো কিছুর পরেও বৈষম্য দূর হয় না । বাহ্যিক চেহারা বদল হয়েছে মাত্র । আর কিছু ই বদলায়নি । কেননা সকল সমস্যার উতপত্তি স্থল তো বিকৃ্ত ধর্মগ্রন্থ গুলো । পৃথিবীর যতো দ্বন্ধ , অশান্তি , কলহ । এ সবের শেকড়কে চোখ বন্ধ করে কয়েক ভাগে ভাগ করা যায় – ধর্মবাদ , বর্ণবাদ, ব্যাক্তিগত মালিকানার কারনে ক্ষমতার দাপট এবং নারী ও পুরুষ । শুধু মাত্র ক্ষমতা পাবার লোভে দিনের পর দিন ধর্মকে বিকৃ্ত করে হাতিয়ার হিসাবে ব্যাবহার করে গেছে তারা । ব্যাক্তিগত মালিকানার কারনে নারী ও হচ্ছে বঞ্চিত । পিতৃ গৃহ হোক বা স্বামী গৃহ হোক । এমন কি রাজনীতিতেও রয়েছে ভেদাভেদ। আজো বন্ধ হয়নি ধর্ষন নামক পৈ্শাচিক নির্যাতন । স্কুল পড়ুয়া মেয়েটি বাড়ী ফিরে গলায় ফাঁসি দিয়ে আত্মহত্যা করছে । প্রতিনিয়ত তথাকথিত মামা , কাকা জ্যাঠা নামধারি কতো পুরুষের হাতে কিশোরী মেয়েরা কোণো না কোনো ভাবে নির্যাতিত হচ্চছে । আভ্যন্তরিন এ সব অত্যাচারের কয়টা খবর ই বা আসে । নাবালিকা মেয়েগুলো লজ্জায় ভয়ে মুখ ফুটে কাওকে কিছু বলতে পারে না , পাছে তাকে না আবার পাপী ,নষ্টা ,অ-সতী ,কুলটা শব্দে ভুষিত হতে হয় । এর পরে আমরা দাবী করি পৃ্থিবী এগিয়ে যাচ্ছে , নারী স্বাধীন হচ্ছে । নারী প্রথম আবাসস্থল নিজ পিতৃ গৃহ । নারীর প্রতি বৈষম্যের সুচনা করে । নারীর প্রতিভা কে বিস্বাস করতে হবে । এবং সভ্যতার ভারসাম্য রক্ষায় তাকে কাজেও লাগাতে হবে । নারী এখন ও যেনো শরীয়ার শিকার না হয় ।
মার্চ 11, 2010
*
ওরেব্বাস ! অনেক কিছু দেখি ঘটে গেছে ! কিছুই দেখিনি 🙂
লেখাটা পড়া হয়নি, পড়ে মন্তব্য করব আশা করি । তবে কয়েকটা মন্তব্য দেখলাম চ্রম ফালতু বিষয় নিয়ে ! গায়ের জোর কার বেশী কার কম, এটাও কি একটা বিতর্কের বিষয় !
@নন্দিনী,
গায়ের জোর কার বেশী কার কম এটা একটা বিতর্কের বিষয় হতে পারে বলে আমার মনে হয়। এই প্রসংগে অভিজিৎ বাবুর কমেন্ট প্রনিধানযোগ্য, যার শুরুটাই ছিলো..
তা ছাড়া অনন্ত বিজয় দাশ বাবুর আর্টিকেলটিতেও “নারী তুমি বিদ্রোহ করো” এই বিষয়ে আলোচনা আছে।
মুক্তমনায় সবসময়ইতো সিরিয়াস বিষয় নিয়ে বিতর্ক হচ্ছে, কেউ ফালতু বিষয় নিয়ে একটু বিতর্ক করতে চাইলে অত সিরিয়াস হবার কিছু আছে বলে মনে হয়না। আর তাছাড়া ফালতু বিষয় হলে বিতর্ক খুব বেশী দুর অগ্রসর হওয়ারও কথানা।
I strongly believe that economic freedom is one of the most important factors regarding women suffrage. It becomes even stronger when stemmed from educational background. People accept or are forced to accept oppression when the issue of insecurity becomes salient. For a long time, women are projected to be inferior, incompetent, sinners, and what not by the male dominated society where religion has the ultimate power. This situation is no different than a caged bird for a long time.
No matter what, both men and women need to realize women are also a part of the nature; nothing more or less. So, they deserve the same share, and are essential for our eco system. A lion does not think the lioness is inferior to him; the same way, an ant or a bee does not have any such complex. It’s us, human beings, who demand to be the best of all creatures have set up such norms and values in our society.
Women have been oppressed for a real long time now. Though we say, women suffrage has come, it’s not world wide. Until or unless each and every female is able to work or think independently, we can’t say women are free. Free of what? Can you imagine still today, women’s lives are endangered by men; they are threatened, scared, ashamed of someone else’s fault, considered as burdens to the society or family, deprived of many rights, and so on and on?
Thank you Avijit Roy for your explanation on the women dominated society where you’ve mentioned about their pregnancy, taking care of children as obstacles to lead a group, going for haunting etc. However, please let me know if that can be assured completely. We all have seen women who are able to do multi tasks; especially, poor women do physical labor while breast feeding more than one child and may be taking care of a few others. Not to forget, they have other duties such as maintaining household work, satisfy their god-like husbands, other family members.
If there was an issue of physical health regarding men vs. women, why then Africans were enslaved for more than 200 years? As far as I know, they are biologically stronger than ‘White’ people. I personally don’t know any male who will be able to defeat Laila Ali, the famous boxer. So, physical strength should be out of the topic. A. Roy already has stressed enough on this and proved his point.
Now, we need to focus on our individuality and empower ourselves through proper education. As soon as we have two Es–education and economic freedom, many other rights will just follow on. However, the most important thing is never to think yourself as a victim, or inferior; never to let others dominate us as Eleanor Roosevelt (1884-1962) has said: “No one can make you feel inferior without your consent.”
So, to all friends regardless of gender difference, let’s think of us as a whole instead of dividing the phrase “human being”. We have many greater and sensitive issues to work on now; i.e. creating a secular society, saving us and our future generations from global warming, different kind of chronic diseases, and many others. So, this superiority/inferiority complex should be sent to an exile forever.
Food for thought: “Sure God created man before women. But then you always make a rough draft before the final masterpiece.” ~Author Unknown (lol)
Note: Part of this writing has been taken from my facebook link posted on the International Women’s Day, 2010.
@Naznin Seamon,
আপনার মতামত আমাদের জন্য খুবই মূল্যবান। কিন্তু বাংলা ব্লগে বাংলায় মন্তব্য করলে খুশি হবো। বাংলায় মন্তব্য করা কিন্তু খুবই সহজ। অভ্র ব্যবহার করুন। ডাউনলোড করে নিন এখান থেকে। অভ্রতে লেখার সুবিধা হলো, ইংরেজীতে যেভাবে টাইপ করছেন সেভাবে টাইপ করলেই বাংলায় লেখা হয়ে যায়। ব্যাপারটা কঠিন কিছু নয়। আপনার মতো অনেকেই এভাবে ইংরেজীতে কমেন্ট করতেন, কিন্তু অভ্র ব্যবহারের পরে দেখেছেন, সেটা ইংরেজী টাইপের মতোই সহজ। আপনিও ব্যবহার করুন। আর মুক্তমনায় স্বাগতম।
@Naznin Seamon,
কালো লোকদের দৈহিক শক্তি বেশী হওয়ার পরেও সাদা লোকদের পরাজিত করতে না পারার কারন শিক্ষা। এটা শুধু প্রমান করে যে শিক্ষার জোর দেহের জোরের থেকে বেশি। কিন্তু এটা কখোনই প্রমান করেনা যে দৈহিক শক্তি যাদের বেশী তারা কোন কিছু অর্জন করার জন্য দেহের জোর খাটায়না বা খাটাবার চেষ্টা করেনা অথবা এই কারনে ক্ষেত্র বিশেষে সুবিধা ভোগ করেনা। আবারো বলতে হয় জোর যার মুল্লুক তার, সে গায়ের জোর হোক অথবা শিক্ষার জোর হউক অথবা দুটোর জোরই হউক।
@ গীতা দাস
প্রথমেই আপনাকে ধন্যবাদ জানাই আমার লেখাটা পড়েছেন তাই। বৌ্দ্ধ মন্দীরে যখন গিয়েছিলাম
সময়টা ছিল ১৯৯৯ বাংলাদেশের একটা জেলায় , সমস্ত মন্দীরে না মন্দীরের বিশেষ একটা স্থানে লেখা ছিলো ।
এখন এতো দিনে ওটা আছে কীনা তা এই মুহুর্তে বলতে পারছিনা , যেহেতু আমার আর ঐ মন্দীরে যাওয়া হয়ে ওঠেনি ।
আলোচনা সমালোচনা চলতেই পারে । ওটা নিয়ে বেশী আমি মাথা ঘামাতে চাইনা । ব্যতিগত ভাবে আমি
তা একদম ই পছন্দ করিনা। আলোচনা দিয়ে শুরু , আলোচনা দিয়েই শেষ । তর্কের খাতিরে তর্ক ।
আপনাকে শুভেচ্ছা ।
যে কোন স্বাধীনতা অর্থনৈতিক সক্ষমতার সংগে সমানুপাতিক । সেটা ব্যক্তি ও রাস্ট্র উভয়ের ক্ষেত্রেই প্রযোজ্য। বাংলাদেশে ব্যক্তি স্বাধীনতা সামাজিকভাবে স্বীকৃত নয় , যদিও এর সাংবিধানিক অস্তিত্ব রয়েছে । বাংলাদেশে পরিবারের যে বেকার ছেলে ৩৫ বছর বয়সেও বাবার আয়ের ওপর নির্ভরশীল , তার অবস্থান কিন্তু শাসকের পর্যায়ে নয় । তার অবস্থান একজন আর্থিকভাবে স্বচ্ছল নারীর চেয়ে নিচে ।
আমরা চাই যে , পুরুয এবং নারী উভয়ই ব্যক্তি স্বাধীনতা ভোগ করুক যেটা কিনা বাংলাদেশে এখন অনুপস্থিত । শুধু সাংবিধানিক স্বীকৃতি দিয়ে কিছু বদলানো সম্ভব নয় । ব্যক্তিকে আগে সমাজের চেয়ে শক্তিশালী হতে হবে ।
আমি অফিসের কাজে দেশের বাইরে ছিলাম এবং ইন্টারনেট ব্যবহার করার সীমিত সময় ছিল বলে শুধু ই মেইল ব্যবহার করেছি।
দেশে ফিরে আজকে দেখলাম যে ইতোমধ্যে নারী বিষয়ক বেশ কয়টা লেখা পোষ্ট করা হয়েছে এবং একার লেখাটির মন্তব্যে আকাশ মালিক মুক্ত- মনার নারী লেখকদের মুখ খুলতে বলেছেন। তাই নীরবতার কারণ বললাম।
অনর্থক কিছু বিষয় নিয়ে বিতর্ক হয়েছে। যাহোক, পাঠকই আবার বিতর্কের অবসানের জন্য লিখেছেন।
একাকে মুক্ত-মনায় স্বাগতম। তবে একটা কৌতুহল–
সেই মন্দিরটির নাম জানাবেন কী? আমি দেশে বিদেশে বেশ কয়টি বৌদ্ধ মন্দির দেখেছি যেখানে নারী পুরুষের অবাধ যাতায়াত। গত ১০ মার্চ শ্রীলংকার কেন্ডিতে এক বৌদ্ধ মন্দির দেখলাম যেখানে গৌতম বুদ্ধের আসল দাঁত রয়েছে বলে দাবি করা হয়। কিন্তু নারীদের তো অবাধ গতি।
মন্দিরের নাম জানলে কেউ না কেউ এর প্রতিকারের ব্যবস্থার জন্যে হয়তো কাজ করার চেষ্টা করবে।
বিপ্লব পালের মন্তব্য —
বড়ো বেশি হিংস্যাত্মক মন্তব্য।
একার কাছে একটি অনুরোধ আপনার প্রোফাইলের ছবিটি কিন্তু আমার ভাল লাগছে না। এক নারীর চোখের জলসহ চোখ।আরও দুয়েকজনের প্রোফাইলের ছবি ভাল লাগে না, তবে বলিনি।
@গীতা দাস,
আমার মনে হয় একটা বিষয় নিয়ে বিতর্ক অর্থবহ বা অনর্থক এটা আপেক্ষিক ব্যাপার। কারো কাছে বিতর্কটি অনর্থক হতে পারে, আবার কারো কাছে নাও হতে পারে। ধন্যবাদ।
@ অভিজিৎ ,
ধন্যবাদ জানাচ্ছি আপনাকে । তবে একটা বিষয়ে আপনি লক্ষ্য করেছেন কি ? যে আজো কিছু কিছু জাগায় মাতৃ্তান্ত্রিক সমাজ আছে ? বাংলাদেশের উপজাতি সম্প্রদায়ের কথাই ধরুন না । দেখেছি
“রাখাইন ‘ উপজাতিরা কি করে ঘর সংসার চালায় । পেশী শক্তির কথা বলতে চাইনা । আপনার কথায় টা উল্লেখ করছি —
এই কথাতেই আমি অত্যান্ত আনন্দিত হলাম । অন্তত ঃ নারীরা মানুষ বলে গন্য হোক ।
শুভেচ্ছা ।
@একা,
এই কথাতেই আমি অত্যান্ত আনন্দিত হলাম । অন্তত নারীরা মানুষ বলে গন্য হোক ।
আমি করুণা দাক্ষিণ্যে বিশ্বাস করিনা।
আর্থিকভাবে সচ্ছল ও ধর্মহীন সমাজে নারীর অবস্থান, আর্থিকভাবে অসচ্ছল ও ধর্মভীরু সমাজের চেয়ে ভিন্ন। নারীকে দৈহিক ও মানসিকভাবে অবদমনিত করে রাখার লক্ষ্যে পুরুষ আবিষ্কার করেছে ধর্ম, এই ধর্মই পুরুষের শক্তি ও প্রধান অস্ত্র। এই অস্ত্র দিয়ে পুরুষ নারীর মনকেও পঙ্গু করে দিয়েছে, তাই দৈহিকভাবে সবল দেহের স্ত্রীও দূর্বল স্বামীর নির্যাতনের প্রতিবাদ করার অধিকার হারায়। যদি কোনদিন নারীকুল পুরুষের চেয়ে দৈহিকভাবে শক্তিশালী হয়েই যায়, যতদিন সমাজে আর্থিক অসচ্ছলতা ও পুরুষ রচিত ধর্ম থাকবে, সমাজে নারীর অবস্থানের কোন পরিবর্তন হবেনা। তেল সমৃদ্ধ দেশসমুহ তার উত্তম প্রমাণ।
@আকাশ মালিক,
:yes:
নারীকুল পুরুষের চেয়ে দৈহিকভাবে শক্তিশালী হওয়ার সম্ভাবনা কতটুকু জানিনা, যদি হয়েই যায় তখনও সমাজে আর্থিক অসচ্ছলতা থাকবে, কিণ্তু একটাই শুধু পার্থক্য, তখন নারী রচিত ধর্ম তৈরী হবে এবং সমাজে এখন নারীর যা অবস্থান তখন পুরুষগন সেই অবস্থানে চলে যাবে বলে আমার বিশ্বাস।
@! অভিজিৎ
আপনার মতব্যকে শ্রদ্ধা জানিয়ে একটা বিশেষ দিক তুলে ধরলাম –
রাহুল সংকির্তাইয়নের বই থেকে –
এই টুকু বিষয়ে আমরা যদি আলোকপাত করি । দেখা যায় , সেই সময়ের ভিত্তিতে পুরুষ তান্ত্রিক সমাজ ছিল না । মাতৃতান্ত্রিক সমাজ ছিল । নারী যদি এমন ই শক্তিহীন হত তাহলে মনে হয় পুরুষ নারীর নেতৃ্ত্ব কোন দিন মেনে নিত না। আস্তে আস্তে সময়ের পরিবর্তনের সাথে এই অবস্থার অবসান ঘটে ।
@একা,
আলোচনা শুরু করার জন্য ধন্যবাদ। একটা সময় রাহুল সংকৃত্যায়নের বই খুব পড়তাম। এখনো আমার অন্যতম প্রিয় লেখক। এবারে দেশে গিয়ে আজিজ সুপার মার্কেটে রাহুল সংকৃত্যায়নের নতুন মানব সমাজ বইটা দেখে এতই উৎফুল্ল হয়ে গেলাম যে কিনে ফেললাম। 🙂
তবে কিছু ব্যাপার কিন্তু চিন্তা করতে হবে। রাহুল সংকৃত্যায়ন বই লিখেছেন অনেক আগে, এবং পুরোটাই মর্গানের এন্সেন্ট সোসাইটির উপর ভিত্তি করে। এখন কিন্তু বিজ্ঞানীরা মনে করেন – মাতৃতান্ত্রিক সমাজ আসলে সেরকমভাবে কখনোই ছিলো না। স্টিভেন গোল্ডবার্গের ‘ইনএভিলিবিলিটি অব পেট্রিয়ার্কি’ গ্রন্থে মাতৃতান্ত্রিক সমাজ নিয়ে অনেক মিথ ভাঙ্গা হয়েছে। আসলে প্রায়স্টোসিন যুগের শতকরা ৯৯ ভাগ অংশই যদি পুরুষেরা শিকার আর নারীরা ফলমূল সংগ্রহ করে থাকে, তবে “স্ত্রী লোকটি শিকার করত বাদ বাকী পুরুষ মহিলা সহ তাকে সাহায্য করতো” – এগুলো বক্তব্য অসাড়ই মনে হয়। আর চিন্তা করে দেখুন – সন্তানের জন্ম দেয়া এবং আণুসঙ্গিক দায়িত্বগুলো বায়লজিকালভাবেই মেয়েদের ছিলো। আর আগে তো জন্ম নিয়ন্ত্রণের কোন পদ্ধতি ছিলো না। ফলে সন্তানের জন্মও হত অনেক বেশি। আর অবধারিতভাবে প্রেগনেন্সি, সন্তান জন্ম দেয়া, লালন পালনের বেশিরভাগটুকুই মেয়েদের করতে হত। কাজেই ওগুলো বাদ দিয়ে কিংবা ওটার উপর আবার শিকারে নেতৃত্ব দেয়ার প্রশ্ন – মনে হয়না সেরকমভাবে ঠিক। অন্ততঃ এখনকার এন্থ্রোপলজিস্টরা আর সেরকমভাবে দেখেন না।
কিন্তু যেটা বলতে চাচ্ছি – সেটা হল শক্তি বেশি থাকলেই কেউ শ্রেষ্ঠ হয় না। আমি তো বলেইছি হাতী, গন্ডারের শক্তি মানুষের চেয়ে বেশি। কিন্তু তারা তো মানুষের চেয়ে শ্রেষ্ঠ নয়। কাজেই পুরুষের শক্তি বেশি হলেও সেটা নারীর স্বতন্ত্র্যকে ক্ষুন্ন করে না।
অনন্ত বিজয় দাশ:
ধন্যবাদ লিন্কটি দেওয়ার জন্য। আসলে লিন্কটির address হবে
নারী তুমি বিদ্রোহ করো
পড়ে ভালো লাগলো এবং আনেক কিছু জানা গেলো। ধন্যবাদ।
এই গোটা বিতর্কে কেমন যেন মুক্তমনার তূলনায় বেলাইনের মনে হচ্ছিল, তাই কোন কথা না বলে চুপচাপ দেখছিলাম।
নারীর পেশী শক্তি বেশী নাকি কম তা নিয়ে সন্দেহ কেমন যেন গুরুত্বপূর্ণ মনে হয়নি।
অভিজিতের
কথাটি আশা করি এর অবসান ঘটাবে।
জগতের শুধু পুরুষ নারী প্রত্যেকেরই কিছু না কিছি স্পেষালিটি থাকে, তার মানেই সে আবশ্যিকভাবে শ্রেষ্ঠ বা উন্নততর নয়। মহিলাদেরও কিছু অনন্য বৈশিষ্ট্য আছে যা তাদের পুরুষদের উপর বিশিষ্টতা দিয়েছে। যেমন, কোথায় যেন পড়েছিলাম যে তাদের যন্ত্রনা সহ্য করার শারিরিক মানসিক ক্ষমতা পুরুষের থেকে অনেক বেশী। প্রতিকুল পরিবেশে তাদের সার্ভািভাল রেটও পুরুষের থেকে ভাল।
এখানে আলোচনায় কয়েকটা গুরুত্বপূর্ণ বিষয় উঠে এসেছে। এই প্রানবন্ত আলোচনার মাঝে কিছু উপাদান যোগ করা যাক। অনেকেই দেখলাম সন্দেহ পোষণ করেছেন যে, পুরুষের শক্তিমত্তা নারীর চেয়ে বেশি – এটার সত্যতা নিয়ে। আকাশ মালিক সাহেব দেখলাম – ইংল্যান্ডের এক লিকলিকে লোকের উদাহরণ হাজির করেছেন যার ছিলো সুঠাম দেহী বউ। কিন্তু এই উদাহরণ “অন এভারেজ” পুরুষের যে শক্তি নারীর চেয়ে বেশি – তার সত্যতা ক্ষুন্ন করে না। “অন এভারেজ” ব্যাপারটার উপর আমি গুরুত্ব দিচ্ছি, কারণ জনপুঞ্জে শক্তিমত্তার পরিমাপক মাপকাঠি ধরতে হলে গড়পরতা বিষয়টিকেই বিবেচনা করতে হবে। এক্সট্রিম বা ব্যতিক্রমীগুলোকে নয়। একটা উদাহরণ দেই। ধরা যাক, আমি একটি বক্তব্য দিলাম – পুরুষেরা গড়পরতা নারীর চেয়ে লম্বা। এটা কিন্তু প্রমাণিত সত্য। বিভিন্ন দেশের পরিসঙ্খ্যান হাজির করেই সেটা দেখানো যেতে পারে। যেমন, আর্জেন্টিনায় পুরুষদের গড়পরতা উচ্চতা হচ্ছে 1.745 m ( (5 ft 8+1⁄2 in), সেখানে নারীদের 1.610 m (5 ft 3+1⁄2 in) । একই ভাবে অস্ট্রেলিয়ায় পুরুষদের গড়পরতা উচ্চতা 1.748 m (5 ft 9 in), সেখানে মেয়েদের 1.634 m (5 ft 4+1⁄2 in)। বাংলাদেশের পরিসংখ্যান জানি না, তবে ভারতে পুরুষদের উচ্চতা 1.645 m (5 ft 5 in), আর মেয়েদের 1.520 m (4 ft 12 in)। উইকির পেইজে এরকম পরিসংখ্যানের একটি লিস্ট আছে। সেটি দেখা যেতে পারে। এখন আমি যদি সিদ্ধান্তে আসি, পুরুষের উচ্চতা মেয়েদের চেয়ে বেশি – তখন ওই লিকলিকে লোকের উদাহরণের মতো কেউ হয়তো বলতে পারবেন, আরে ভাই – উচ্চতা নিয়া এত ফাল পারতাছেন ক্যান, আপনার উচ্চতার চেয়ে তো জার্মানী বা রাশিয়ার মেয়েদের উচ্চতা তো বেশি। হ্যা কথা হয়তো সত্য। আমি জার্মানী গেলে অনেক মেয়েরই উচ্চতায় নীচে পড়ে থাকবো, কিন্তু তাতে করে সার্বিকভাবে পুরুষদের উচ্চতা যে মেয়েদের উচ্চতার চেয়ে বেশি – এই সত্যতাকে ভুল প্রমাণ করে না। কারণ ওই যে বললাম, আমরা যখন বলি পুরুষদের উচ্চতা মেয়েদের চেয়ে বেশি – তখন গড়পরতার হিসেবের কথাই বলি। জার্মাণ মেয়েদের উচ্চতা বাঙ্গালী ছেলেদের চেয়ে বেশি হতে পারে, কিন্তু সেই জার্মান মেয়েরা উচ্চতায় জার্মান ছেলেদের চেয়ে কমই হবেন – গড় পরতা হিসেবে। এই গড়পরতার হিসেবের ব্যাপারটা শক্তিমত্তার ক্ষেত্রেও খাটে।
এখন কথা হচ্ছে কেন পুরুষদের শক্তি কিংবা উচ্চতা (প্রাকৃতিক ভাবে) মেয়েদের চেয়ে বেশি? ব্যাপারটা বুঝতে হলে বিবর্তনীয় মনোবিজ্ঞান এবং ডারউইনের যৌনতার নির্বাচন বিষয়টা বুঝতে হবে। আমি একটি ইবুক লিখেছিলাম এ নিয়ে। মানব প্রকৃতির জৈববিজ্ঞানীয় ভাবনা। সেটা পড়া যেতে পারে। আমি কিছু পয়েন্ট লেখাটি থেকে উদ্ধৃত করি, যা পাঠকদের ভাবনার খোরাক যোগাবে –
তবে একটি কথা বলি, পুরুষদের শক্তি মেয়েদের চেয়ে বেশী- সে হিসেবে যদি কেউ মনে করেন পুরুষেরা মেয়েদের চেয়ে শ্রেষ্ঠ, কিংবা পুরুষদের বুদ্ধিসুদ্ধি মেয়েদের চেয়ে বেশি, তবে কিন্তু ভুল উপসংহারে পৌঁছোন হবে। উচ্চতা কিংবা শক্তিমত্তার সাথে শ্রেষ্ঠত্ব বা বুদ্ধিমত্তার কোন সম্পর্ক নেই। বাঘ, সিংহ, হাতী, গন্ডার, গরিলা – সবার শক্তিই মানুষের চেয়ে বেশি, তা বলে কেউ যদি বলেন যে, তারা মানুষের চেয়ে শ্রেষ্ঠ – সেটা কিন্তু হাস্যকরই শোনাবে। 🙂
@অভিজিৎ,
ধন্যবাদ বিষয়টি সুন্দর করে ব্যাখ্যা দিবার জন্য। আপনার ব্যাখ্যা ও লেখার উদ্ধৃতি থেকে আমারও অনেক কিছু শেখা হলো। ধন্যবাদ।
মুক্তমনায় স্বাগতম আপনাকে।
:yes: :yes:
দুস। দেখেছেন মেয়েদের দুঃখে মেয়েরা কাঁদে না, কাঁদে ছেলেরা-সেটাও সত্য! আসলে মেয়েদের মধ্যে হিংসা ফ্যাক্টরটা এত বেশী-এরাই এদের শত্রু হয়ে ওঠে।
@বিপ্লব পাল,
আকাশ মালিকের মতো বলতে হয় যে এটা কি পরীক্ষিত সত্য? আসলে মেয়েরা বৈষম্যের শিকার বলে তাদের নিয়ে সমাজে আলোচনা হয়, আর কিছু মেয়েরা হয়তো এতে নেগেটিভ এটেচিউড দেখাচ্ছে, তার অর্থ এই নয় যে মেয়েদের মধ্যে হিংসা ফ্যাক্টরটা বেশী। হিংসা কি পুরুষ মানুষের মধ্যে কম কাজ করে? হিংসা ছেলে-মেয়ে নির্বিশেষে কম-বেশী সবার মধ্যে বিদ্যমান।
আমার মতে এটাও সত্যি নয়।
@ব্রাইট স্মাইল্,
আপনি যা বলছেন কথাটা হয়ত অত সত্য নয়!
মেয়ে হিসেবে দুঃখের কোন কারণ ঘটলে,প্রিয় বান্ধবীর কাছেই সান্তনা খুঁজি
ও তা পাইও।
প্রাকৃতিক কারণেই বোধ হয় ছেলেদের আর মেয়েদের বন্ধুত্ত একটা জায়গায় এসে থেমে
যায়।
আজকের বাংলাদেশের মেয়েদের যে অগ্রগতি তা সমগোত্রীয়দের কারণেই।
ছেলেরা যেমন মরামারি করে বা অন্যকিছু, মেয়েরা সেটা করে মুখ দিয়ে!
হয়ত শারীরতাত্তীয়! তা না হলে আপনারাও বাচ্চার জন্ম দিতেন।
আজকের পৃথিবীতে মেয়েদের ঘরেবাইরে সামাল দিতে হয়।
নারী সাধীনতার উল্টো পিঠ!
প্রত্যেক সফল পুরুষের পিছনে থাকে একজন নারী।
সফল নারীদের বেশিরভাগই একা একা যুদ্ধ করে!
@বিপ্লব পাল,
এই ফালতু কথাটা কি মেয়েদের একটু উসকে দিয়ে মজা দেখার জন্য করলা? এসব স্টেরিওটাইপ শুনলেও খারাপ লাগে, কি সব ফালতু কথাবার্তা…… এসব কথা নিয়ে তর্ক করতেও রুচিতে বাধে।
@আকাশ মালিক, আসলে যা সত্যি তা মেনে না নেওয়ার কোন কারণ দেখি না। আজকের যুগে বিশেষ করে শারীরিক শক্তিটা আগের মত আর প্রাসঙ্গিক নয় বেশীরভাগ ক্ষেত্রেই। আর তসলিমা যদি বলে থাকে যে ব্যায়াম করলেই মেয়েরা ছেলেদের সমান হবে শক্তিতে তাহলে সেটা তো ভুলই। আপনাকে তখন তুলনা করতে হবে একটা ব্যায়াম করা মেয়ের সাথে একটা ব্যায়াম করা ছেলের শক্তির। প্রাকৃতিক কারণেই মেয়েদের শক্তি কম, সেটা এবং গর্ভধারণ এক সময় মেয়েদের বিপক্ষে কাজ করলেও এখন তো আর সেগুলো ফ্যাক্টর হওয়ার কথা নয় ( যদিও সেটাকেই ফ্যাক্টর কবানানো হয়)। এটা নিয়েই কথা বলতে ইচ্ছে করছে না, সরি, এটাও আমার মতে ফালতু একটা বিতর্ক……
@ একা, মুক্তমনায় স্বাগতম। পৃথিবী শুধু এখন নয়, আমাদের জানা ইতিহাসের সবটা জুড়েই পৃথিবীতে কম বেশী হানাহানি, মারামারি, রক্তপাত, বৈষম্য চলেই এসেছে। আমরা যে সময়টাতে বাস করি সেটাকেই সবচেয়ে খারাপ মনে করে বিষন্ন হই, কিন্তু ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপটে দেখলে অনেক কিছু হয়তো চোখে পড়বে, অনেক অগ্রগতি দেখতে পাবেন, যেটা থেকে একটু হলেও শান্তি পেতে পারেন।
আপনার লেখা এবং প্রোফাইলের ছবি দেখে মন খারাপ হয়ে যাচ্ছিলো, তাই কথাগুলো বললাম, কোনভাবেই আজকের সমাজে নারীদের উপর অত্যাচার এবং বৈষম্যকে ন্যায্যতা দেওয়ার জন্য নয়, আশা করি বুঝবেন। নারীদের উপর অত্যাচারের পিছনে ধর্ম একটা বিশাল ভূমিকা পালন করলেও সমাজ, রাজনীতি, অর্থনৈতিক কাঠামো, ইত্যাদি অনেক কিছুই অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে। আমাদের সমাজে একজন রিক্সাওয়ালা কিন্তু ভীষণভাবে বৈষম্যের শিকার, কিন্তু সেও বাসায় গিয়ে আবার বৌ এর উপর নির্যাতন করতে দ্বিধা করেনা। মেয়েরা এই পুরো স্পেকট্রামের এক্কেবারে নীচে বাস করে। মেয়েদের পুরোপুরি স্বাধীন হতে যে আরও কত সময় লাগবে কে জানে ……
@বন্যা আহমেদ,
তসলিমা এমনভাবে কোথাও বলেছেন কি না জানিনা। তবে সম্ভবত একটা উদাহরণ দিয়েছিলেন তার একটা বইয়ে এভাবে যে, সমবয়সী দুটো শিশু (ছেলে এবং মেয়ে) একই সময়ে জলে ডুব দিলে মেয়ে শিশুটির আগে ছেলেটি ভেসে উঠবে। ক্ষেত্র ও পরিস্থিতি বিশেষে নারী যে শুধু পুরুষের সমানই নয় বরং বেশী শক্তিশালী তারও কিছু উদাহরণ বিভিন্ন লেখকের লেখায় পাওয়া যায়। বাস্তবেও তার প্রমাণ আছে। ব্রাইট স্মাইল্ হঠাৎ করেই যখন বললেন- নারীর চেয়ে পুরুষের দৈহিক শক্তি বেশী, ভাবলাম কথাটায় তর্কের উপাদান আছে তাই জৌক করে আরো জানার লক্ষ্যে প্রশ্ন করেছিলাম এটা কি পরীক্ষিত সত্য?
এ তর্ক বা প্রশ্নটি কিন্তু অনেক পুরাতন।
এবার একটা উদাহরণ দেই। যদিও এই রকম বিচ্ছিন্ন দু একটি ঘটনা দিয়ে সমস্ত সমাজ বিবেচনা করা যায়না, তবে ঘটনাটা বাস্তব। লিকলিকে নড়বড়ে শরীরের বিলেতী এক পয়সাওয়ালা নিরেট মূর্খ বাংলাদেশে গিয়ে বিয়ে করে নিয়ে এসেছে সুঠাম দেহের এক শিক্ষিত যুবতী। মহিলা যদি তার স্বামীর এক গালে শক্ত হাতে থাপ্পড় মারেন দ্বিতীয় গালে আরেকটি থাপ্পড় নেয়ার শক্তি যে স্বামীর নেই, সে রাতদিন তার স্ত্রীকে অমানুষিক নির্যাতন করে। শেষ পর্যন্ত বিষয়টা সোসিয়েল সার্ভিস পর্যন্ত গড়ালো। তাদের ডিভৌর্স হলো। লোকটিকে আমি চিনতাম। একদিন জিজ্ঞেস করলাম- সত্যি করে বলো তো, তোমার বউয়ের গায়ে কি এমন শক্তি ছিলনা, এক থাপ্পড়ে তোমেকে হুইল চেয়ারে বসিয়ে দেয়? সে গর্ব করে উত্তর দিল- নারীর সেই অধিকারই নেই।
তবে ব্যাপার এটা নয়, আসল কথা হলো আলোচ্য প্রবন্ধে নারীর পশ্চাৎপদতা বা সমাজে নারী বৈষম্যে দৈহিক শক্তি ফ্যাক্টর কি না?
@আকাশ মালিক,
কেননা লোকটি যেমন জানে “নারীর সেই অধিকারই নেই” তার স্ত্রীও জানে “নারীর সেই অধিকারই নেই”, তাই স্ত্রীর গায়ে শক্তি থাকলেও তা প্রয়োগ করার ক্ষমতা স্ত্রীটির নেই। স্ত্রীর এই জানাটা আসে কিন্তু সমাজ থেকে যেখানে মেয়েদের শক্তি কম থাকায় মেয়েরা বৈষম্যের শীকার হয়ে পুরুষের মত অনেক কিছু করার অধিকার হারিয়েছে। “নারীর সেই অধিকারই নেই” এটা সমাজে একটা প্রতিষ্ঠিত সত্য। গায়ের জোর দিয়ে সে সত্যের বিপক্ষে লড়াই করা যাবেনা, লড়াই করতে হবে অন্য কিছু দিয়ে।
@বিপ্লব পাল,
মানলাম মেয়েদের মধ্যে হিংসা ফ্যাক্টকটা বেশী, তবে তা অবশ্যই সমাজপ্রসূত একটা ব্যাপার। মেয়েদের অবরোধবাসীনি করে রাখার কারনে তাদের মধ্যে একপ্রকার হীনমন্যতার জন্ম নেয় যার থেকেই বোধ হয় তাদের মধ্যে এই হিংসা জিনিষটা বেশি কাজ করে। বলব, পুরুষের মধ্যেও হিংসা মেয়েদের তুলনায় কোন অংশে কম কাজ করে না, বাস্তব অভিজ্ঞতা আমার, যদিও গড় পুরুষের হিসেবে তা মেয়েদের তুলনায় কম। মানুষের এই প্রবৃত্তিগুলো আসলে মানুষের প্রতিপালনের উপর নির্ভর করে বর্তায়। যে যত মুক্ত পরিবেশে সুন্দর মানুষের সহচার্যে বেড়ে উঠেছে বা বসবাস করছে তার মধ্যে এই কুপ্রবৃত্তিগুলো স্বভাবতই কম হবে।
ধন্যবাদ।
@মুহাইমীন,
কিন্তু আমার বাস্তব অভিজ্ঞতা মেয়েদের থেকে পুরুষের মধ্যে বেশী হিংসা কাজ করে, যদিও আমি মনে করি হিংসা জিনিষটা পুরুষ ও নারী ভেদে কোন পার্থক্য নাই। বাস্তব অভিজ্ঞতা একেকজনের একেকরকম হতেই পারে।
একদম ঠিক কথা।
@ব্রাইট স্মাইল্,
আমিও তাই মনে করি । ধন্যবাদ।
মুক্তমনায় স্বাগতম একা। আশা করব মুক্তমনায় আপনার দিনগুলো আনন্দে কাটবে। মেয়েরা এমনিতেই খুব কম লেখালিখি করে, আর স্পর্শকাতর বিষয়গুলো নিয়ে তো আরো কম। আপনার অবদান আমাদের ব্লগকে সমৃদ্ধ করবে নিঃসন্দেহে।
লেখার ব্যাপারে কিছু কথা বলে নেই –
লেখার প্রতিটি প্যারার পরে স্পেস দেবেন। তাহলে এক অনুচ্ছেদের সাথে আরেক অনুচ্ছেদ জড়িয়ে যাবে না।
আর লেখা প্রকাশের সময় সঠিক বিষয় (ক্যাটাগরি) নির্বাচন করেন। যেমন উপরে নারীবাদ, সমাজ, সংস্কৃতি — এইগুলো যোগ করে দেয়া হয়েছে।
যেখানে যেখানে উদ্ধৃতি ব্যাবহার করা প্রয়োজন, সেই বাক্যটি সিলেক্ট করে b-quote বা উদ্ধৃতি বাটনটি ব্যবহার করতে পারেন (একই ভাবে বোল্ড।, ইটালিক প্রভৃতির জন্যও আলাদা আলাদা বাটন আছে। উপরে উদ্ধৃতিগুলো ঠিক করে দেয়া হয়েছে। আপনি এডিট (বা সম্পাদনা) লিঙ্কে গিয়ে দেখতে পারেন কিভাবে করা হল।
মুক্তমনায় আবারো স্বাগতম জানাচ্ছি।
আসলে নারীর প্রতি বৈষম্যের মুলে হলো পুরুষের দৈহিক ক্ষমতা নারীর থেকে বেশী হওয়ার কারনে, গায়ের জোর যার মুল্লুক তার। তা না হলে, শিক্ষা-দিক্ষায়, বুদ্বিমত্তা, মননশীলতা কোন অংশেই নারী কম যায়না। এর একমাত্র সমাধান হলো নারীকে শিক্ষা অর্জন করে আর্থিকভাবে স্বাবলম্বী ও স্বনির্ভর হতে হবে, তা হলে আপনাতেই সমাজে নারী তার জায়গা করে নিতে সক্ষম হবে। এটা প্রতিটা নারীকেই সম্যকভাবে উপলব্দি করতে হবে। এর জন্য নারী দিবস উদযাপনের কোন প্রয়োজন আছে বলে মনে হয়না।
@ব্রাইট স্মাইল্,
পরীক্ষা করে দেখেছেন কোনদিন? 😕 এটা কি পরীক্ষিত সত্য?
@আকাশ মালিক, জী, এটা পরীক্ষিত সত্য যদিও ১০০% গ্যারেন্টেড নাও হতে পারে, তবে ৯০% হলেও বলা যায় পরীক্ষিত সত্য। আপনি নিজেই আপনার কাছের লোকজনের সাথে পরীক্ষা করে সত্যটি উপলব্দি করার চেষ্টা করে দেখুন্ না।
@ব্রাইট স্মাইল্,
তাসলিমা নাসরিন কই গেলেন? দেখে যান মুক্তমনায় কী হচ্ছে। সাক্ষী থাকুন, একজন বলেছেন-
পুরুষের দৈহিক ক্ষমতা নারীর থেকে বেশী।
আরেকজন বলেছেন- মেয়েদের মধ্যে হিংসা ফ্যাক্টরটা বেশী।
আশ্চর্য, মুক্তমনার নারী লেখকগন দেখছি মুখ খোলছেন না, বিষয়টা কী? 😕 😕
@আকাশ মালিক, তাসলিমা নাসরিন কি কোথাও বলেছেন যে পুরুষের দৈহিক ক্ষমতা নারীর থেকে কম অথবা সমান? তাসলিমা নাসরিনের শরনাপন্ন হতে যাচ্ছেন কেন? আপনার মতামত কি? সত্যটা আপনি জানালে ভাল হয়।
শুধু মুক্তমনার নারী লেখকগন কেন, মুক্তমনার পুরুষ লেখকগন এই ব্যাপারে মুখ খোললে ক্ষতি কি?
@ব্রাইট স্মাইল্,
:yes:
কথা কে বলছে সেটা গুরুত্বপূর্ন হলেও কথা বলা মূল উদ্দেশ্য হওয়া উচিত।
@ব্রাইট স্মাইল্,
কোথায় যেন পড়েছিলাম তিনি বলেছেন মেয়েদের ছোটবেলা থেকে ছোটাছুটি, খেলাধুলা, ব্যায়াম ইত্যাদির সুযোগ দিয়ে তারপর শক্তি পরীক্ষা করতে
@রামগড়ুড়ের ছানা,
যদি তাসলিমা নাসরিন বলে থাকেন
এবং সেটা যদি সত্য বলে ধরেও নেয়া হয়, অর্থাত খেলাধুলা, ব্যায়াম ইত্যাদি করলে শক্তি বাড়ে, তা হলে সে সুযোগ বেশীরভাগ মেয়েদের ক্ষেত্রে বোধগম্য কারনেই ঘটেনা।
@রামগড়ুড়ের ছানা,
আমিও তাই মনে করি, মেয়েদের যদি ছোটবেলা থেকে ছেলেদের মত মুক্তভাবে চলতে দেওয়া হয় তবে মনে হয় কয়েক প্রজন্ম পরেই মেয়েদের শক্তি পুরুষদের সমান হয়ে যেতে পারে, জানি না এর কতটা বৈজ্ঞানিক ভিত্তি আছে।
@ব্রাইট স্মাইল্,
এই লেখাটি দেখুন : নারী তুমি বিদ্রোহ করো
@ব্রাইট স্মাইল্,
জোর যার মুল্লুক তার। কিন্তু গায়ের জোরের ব্যাপারটা এখন আর ততটা গুরুত্ত্বপূর্ন না। হলে আরনল্ড সোয়ার্জনিগার আমেরিকার প্রেসিডেনট হতো। 🙂
একজন পু্রুষের সাথে আরেক জন পুরুষের বা একজন নারীর সাথে আরেকজন নারীর বৈষম্য কিন্তু গায়ের জোরের অনুপাতে হয় না।
আবার ছেলেদের গায়ের জোর -মেয়েদের থেকে বেশী, এটা কিন্তু আমাদের আদিবাসী মাতৃতান্ত্রিক সম্প্রদায়ের দিকে খেয়াল করলে এতটা নিশ্চিৎভাবে বলা যাবেনা। সারাদিন মাঠে কাজ করা সুঠামদেহী নারীদের সামনে সৌ্খিন পাখি সিকারী পুরুষগুলোকে বেশ আসহায়ই মনে হয়। আসলে পুরুষতান্ত্রিক সমাজ ব্যাবস্থা, রূপচর্চায় ব্যাস্ত করে নারীর আজকের আকৃ্তিতে নিয়ে এসেছে। পুঁজিবাদ নারীকে ততটুকু মুক্তিদিয়েছে যাতটুকু তার প্রয়োজন। নারীর পূর্নাঙ্গ মুক্তির জন্য প্রথমত ধর্মীয় প্রভাবমুক্ত সমাজ ও পুঁজিবাদের পন্য হওয়া থেকে মুক্তি ছাড়া সম্ভব না।
@আতিক রাঢ়ী,
তা হলেতো পুরুষের সমকক্ষ হতে হলে প্রতিটা মেয়েকে আরনল্ড সোয়ার্জনিগারের মতো শোবিজের কোন লোক অথবা অন্য কোন প্রকারে কোন নামী লোক হতে হবে।
আসলে বন্যা আহমেদ যেটা বললেন, “প্রাকৃতিক কারণেই মেয়েদের শক্তি কম”, সেটাই যে সমস্ত সমস্যার মুল তা বলাই বাহুল্য। আদিবাসী মাতৃতান্ত্রিক সম্প্রদায়তো অনেক আগেই পুরুষতান্ত্রিক
সম্প্রদায়ে রুপান্তরিত হয়েছে, ঘুরিয়ে ফিরিয়ে বিশ্লেষন করলে দেখা যাবে কারন এই একটাই। যদিও আমার মতে সমাজ নারী-পুরুষ কোন তান্ত্রিকই হওয়া উচিত না, সম্পুর্ন মানুষতান্ত্রিক হওয়া উচিত।