কথা দিয়েছিলাম আমার অবিশ্বাসের কথা বলব। এই মার্চ মাস স্বাধীনতার মাস, যেহেতু আমার অবিশ্বাসের সূত্রপাত, এটাই সূবর্ন সময় সবার সংগে শেযার করার।
আইযুব খানের কঠিন শাসনে আমাদের মফস্বল জীবন কেটে যাচ্ছিল নিঃস্তরংগ। ৬৫ এর ভারত পাকিস্হান যুদ্বের পর এক ধরনের প্রবল পাকিস্হান প্রেমে মুগ্ধ আমরা।এই প্রেম আরও গাঢ় হয় যখন স্কুলে স্কুলে মহা ধূমধাম করে পালিত হলো “উন্নযন দশক”।আইযুব তখন আমাদের চোখে হিরো। অবস্হা পাল্টালো ৬৮ এর পর।”পাকিস্হান দেশ ও কৃস্টি” নামক বই যখন পাঠ্য করা হলো, ফেটে পড়লো পুরো পূর্ব পাকিস্হান। জীবনে প্রথম মিছিলে শামিল হলাম। সরকার বাধ্য হলো ব্ইটি তুলে নিতে। তারপরের ইতিহাস সবার জানা।শুরু হলো মুক্তিযুদ্ব।আমাদের এমন একটা বযস, পারলাম না যুদ্বে যেতে।২৬ মার্চ থেকে ১৪ই এপ্রিল মুক্ত ছিলো।পাকিস্হান সেনা বাহিনী আমাদের এলাকায় প্রবেশ করার পর আমরা পুরো পরিবার পালিয়ে গেলাম আমাদের গ্রামের বাড়ী।ইতিমধ্যে পাকিসহান সরকার ঘোষনা করলো সমস্ত স্কুল কলেজ খোলার।আমি আমার বাবা চলে এলাম আমাদের বাসায়। স্কুলের দপ্তরি হালিম ডাই রান্না করে, আমরা বাপ বেটা সেই অখাদ্য খেয়ে বেচে রইলাম। স্কুলে যাওয়া আসা করি, ক্লাস হয় কি হয় না। অল্প কয়েক জন ছাত্র আসা যাওয়া করি। তারপর এলো সেই দিন…..১৫ই জুন’৭১…সোনাপুর,নোয়াখালি… স্কুল ছুটি হয়ে গেলো একটু আগে আগে, ছাত্রের অভাবে।দুপুরে খেয়ে বাসার সামনে দাড়িয়ে আছি। হটাৎ দেখলাম কয়েকটি আর্মি ট্রাক এসে দাড়ালো আমাদের স্কুল মাঠে, ধড়াস করে উঠল বুকটা। এই প্রথম দেখলাম পাকিস্হান আর্মি। সবাই লাফিয়ে নামলো ট্রাক থেকে। দাড়িয়ে দাড়িয়ে দেখছি.. তখনো বুঝতে পারিনি কি ভয়াভহ পরিনতি হতে যাচ্ছে আমাদের।ভাবলাম স্কুলে ক্যাম্প করবে।কিন্তু স্কুলে কেউ ঢুকলো না।দেখলাম সব সৈন্য কে চার ভাগে ভাগ করে সবাই চার দিকে রওয়ানা হলো। হটাৎ গুলির শব্দ.. বৃষ্টির মত। ভয়ে তাড়াতাড়ি ঘরে ঢুকে দরজা বন্ধ করে বসে রইলাম। গুলির শব্দে কানে তালা লাগার উপক্রম, এরমধ্যে শুরু হলো ধোয়া। বিভিন্ন বাড়িতে আগুন লাগিয়ে দেওয়ায় নিঃম্বাশ বনধ হওয়ার উপক্রম।বিপন্ন মানুষের চীৎকার। দরজায় দমাদম রাইফেল এর বাড়ি …ঘরে একা ভয়ে ঠকঠক করে কাপছি। “দরওয়াজা খোলো” চিৎকারে দরজা খলে দিলাম।রক্তজবার মত চোখ নিয়ে উদ্যত চায়নিজ রাইফেল হাতে ঢুকে পড়ল বাসায়। পুরো ঘর তন্ন তন্ন করে খুজে আমার দিকে তাকিয়ে বললো “ইধার আও” । এগিয়ে গেলাম, ” প্যান্ট উতারো” … ভাবলাম ভূল শুনছি…এবার রাইফেল এর বাট দিয়ে বাড়ি দিয়ে চীৎকার করে আবার বললো..”প্যান্ট উতারো” । “ভাইয়া ভাইয়া” বলে পা ধরলাম। লাথি খেয়ে দুরে গিয়ে পড়লাম….তারপর ওরা পরপর দুজন আমাকে “…………….”। ঠিক তখন পাশের বাসায় মহিলা কন্ঠে চীৎকার, বুঝলাম আমার মতই অবস্হা। ওরা চলে যাওয়ার পর কতক্ষন কেটেছে বুঝতে পারিনি।হুইসেল এর শব্দ শুনে বের হলাম।দেখলাম সব সৈন্য আবার স্কুলের মাঠে জড়ো হলো। তারপর সবাই লরীতে চড়ে ফিরে গেলো। ওরা চলে যাওয়ার পর বেরোলাম এলাকায়। স্তম্ভিত হয়ে গেলাম….চারি দিকে লাশ আর লাশ। স্কুলের মাঠে পাচ জন, পুকুরের ঘাটে চার জন, ওই বাড়িতে আট জন… মোট দুশ জনের মত, মাত্র দু ঘন্টায়। পাকিস্তানি সৈন্যদের বর্বরতা সম্পর্কে এতদিন শুনেছি, এবার দেখলাম।
পাকিস্হানিরা নাকি আমাদের “আসলি মুসলমান” মনে করত না।তারা নাকি “আসল মুসলমান”। এই তবে ইসলাম? এতদিন ইসলাম মানে আমার কাছে ছিল, কোরান তেলোয়াত, নামাজ পড়া, রোজা রাখা, সব কিছুই না বুঝে। কোরানের অনূবাদ পড়া শুরু করলাম। থমকে গেলাম সুরা মুমেনুন পড়ে.. “যুদ্বে ধর্ষণ সিদ্ধ”। ভাবলাম এ হতেই পারে না। নিঃম্চয় কেউ কোথাও না কোথাও ভূল করছে।বিশ্বাস হারাইনি।
কলেজে ভর্তি হওযার পর আমাদের এক আড্ডা চক্র গড়ে উঠে। “কাসেম স্যার” এক আশ্চার্য্য প্রতিভা । নাটক লিখেন, অভিনয় করেন, গান করেন। উনার সানিধ্যে আমার পুরনো সব প্রশ্নের উত্তর খুজে পেতে লাগলাম। নামাজ রোজা বাদ পড়তে লাগলো। এরমধ্যে এক রোজার দিনে দুপুরে এক রেস্টুরেন্ট এ খাওয়ার অপরাধে ব্যাপক মার খেলাম হুজুরদের কাছে। এত লোকের সামনে মার খেয়ে লজ্জায় মাটিতে মিশে যেতে ইচ্ছে হলো।ইসলাম সম্পর্কে সমস্ত মোহ কেটে গেলো।ব্যাপক পড়া শুনা শুরু করলাম।পড়ি আর ভাবি এসব কি? কোরানের পাতায় পাতায় শুধু ঘৃনা,ভয়, লোভ, অন্য ধর্মের মানুষকে কি ভয়ন্বর ভাবে ঘৃনা করা যায়, তার বর্ননা পাতায় পাতায়, আর হাদিস গুলো “উদ্ভট,ঘৃন্য,বমন উদ্রেককারী”। সবার সংগে ধর্ম নিয়ে তর্ক শুরু করলাম।বাবা অভিশাপ দেওয়া শুরূ করলো। মা চুপি চুপি কাদত।
একটা কথা এখনও বুঝে উঠতে পারিনি, কোরান বুঝে পড়ার পর একজন শিক্ষিত
মানুষের পক্ষে কি ভাবে এত অসম্ভব কথা হজম করতে পারে। উত্তর আজো খুজে পাইনি।বুঝতে পারিনা, যুক্তির চেয়ে বিশ্বাস কি ভাবে শক্তিশালী হয়।
ধর্মই পারে মানুষকে বর্বর বানাতে।
আমি ১৮ বছর বয়সে ধর্মবিশ্বাস হারানোর পর নিজেকে দীর্ঘদিন বোকা মনে হয়েছে যে কিভাবে এতদিন ধর্ম বিশ্বাস করতে পারলাম! মজার ব্যাপার হল আমি ইসলাম বিরোধী কোন বই পড়ে নয় বরং কোরান, হাদিস আর ইসলামি বইগুলো পড়েই ধর্মে বিশ্বাস হারাই।
সত্যিই, মূর্খ না হয়ে ধর্ম বিশ্বাস করা বড়ই দুরহ কাজ।
দুটি প্যারার মধ্যে একটা স্পেস দিলে সুন্দর দেখায়। আশা করি নিয়মিত লেখবেন এবং আপনাকে সবসময় সাথে পাব।
আমার ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা আপনারই মতো। একেবারে শিশু বয়সে মুসলমান ব্যতীত আর কেউ যেমন- মাদার টেরিজা, গান্ধী, আইনস্টাইন বেহেস্তে যাবে না শুনে আমি সচেতনভাবেই বলে উঠেছিলাম thats bullshit. একেবারে শিশুকাল থেকেই আমি বারে বারে ইসলাম অস্বীকার করে এসেছি। জীবনে এক সেকেন্ডের জন্যও মুসলমান ছিলাম না। আল্লা, মুহাম্মদ অ তার ফেরেস্তার গ্যাংকে আমার সবসময় বমনউদ্রেককারীভাবে আসুচি মনে হয়েছে। ইসলামকে সবসময়ই সর্বকালের সবচেয়ে কুতসিত ধর্ম মনে করে এসেছি।তবে, বারবার ফিরে গেছি বিশষ করে বিপদে পড়লে বা দুঃসময়ের ভেতর দিয়ে গেলে। কিন্তু, দেখলাম এটা আমার বিপদ দুর করতে কোন ভুমিকাই পালন করছে না। হয়তো আমি এই বারংবার কনভার্সন-ডিকনভার্সন চক্রের ভেতর দিয়েই যেতাম। কিন্তু, ১৭ বছর বয়সে আমি একটা ভুল করে ফেলি। সিদ্ধান্ত নেই কোরান একবার পড়ে দেখার। এর পর থেকে আর কখনও ডিকনভার্ট হবার দরকার পড়েনি।
ফরহাদ ভাইকে সমবেদনা জানাতে সাহস পাচ্ছি না। কারন সেটা ঠিক হবে কিনা বুঝে উঠতে পারছিনা। তবে ধর্ম মানুষকে কোন পর্যায়ে নিয়ে যেতে পারে সেটা ভেবে আতংক বোধ করছি।
এখানে ঐ পাকিস্থানী সৈ্নিক দুজন যদি সাচ্চা মুসল্মান হয়ে থাকে তবে এটা বলা যায় কিনা যে, একজন সাচ্চা মুসল্মান – কখনই একজন সাচ্চা মানুষ হতে পারেনা। আবার অন্যভাবে বলা যায়, যে সাচ্চা মানূষ, সে সাচ্চা মুসল্মান না।
সুতরাং যখন বলা হয়, মুসলামানদের মধ্যেও অনেক ভাল মানূষ আছে – তার মানে হচ্ছে, মুসলমানদের মধ্যে যারা ভাল মানূষ তারা প্রকৃত মুসলমান না।মুহাম্মদের চাইতে বড় মুসলামান নিশ্চই হওয়া সম্ভব না। তার মানে, ভাল মুসলমান হতে গেলে আপনাকে অনেকগুলো বিয়ে করতে হবে। এই অনেক বিবির মধ্যে একটিকে হতে হবে শিশু। দাসিদেরকে ভোগ করতে হবে। যাদ্ধবন্ধীদেরকে হত্যা বা ধর্ষন করতে হবে। বিবিরা দৈহিক মিলনে রাজী না হলে পিট্টি দিতে হবে। পালক পুত্রের বউকে বিয়ে করতে হবে। আর বলতে হবে এক আর করতে হবে আরেক। যেমন- একের অধিক বিয়ে তারাই করতে পারবে, যারা বউদের প্রতি সমান আচরন করতে পারবে। কিন্তু চামে, বাল্যবধুটিকে বেশী আদর করতে হবে। এই লিস্ট অনেক লম্বা করা যাবে।
কিন্তু লিস্ট যতই লম্বা হোক, যারা সংস্কারের মধ্যে বয়ে চলা দোযখের ভয় থেকে মুক্ত হতে না পারছে, তার এই ভন্ডামী ধরতে পারবে না। সমবেদনা তাদের জন্য।
এই প্রশ্নটা আমি নিজেকে অনেক বার করেছি। আমার উত্তর হচ্ছে
(১) ৯০-৯৭% লোকের ডিগ্রি আছে-বুদ্ধি নাই। বিবেচনা নাই। চিন্তা করার ক্ষমতাটাই নেই।
(২) আর কিছুলোক আছে যারা বুদ্ধিমান এবং ধর্মে বিশ্বাস করেন। তাদের অনেকেই
এটা সামাজিক প্রতিপত্তি রাখার জন্যে করেন-যা ব্যাবসার কাজে আসে।
(৩) কিছু্লোক মানসিক শান্তির কারনে করেন-তবে তারা প্রথাগত ধর্মকে পাত্তা দেন না। তারা মানুষ ধর্মেই বিশ্বাস করেন-আস্তিক হওয়া সত্ত্বেও। তবে এরা সংখ্যালঘু।
@বিপ্লব পাল, আপনার উত্তরটার সাথে একমত না হয়ে পারছি না। :yes:
@বিপ্লব পাল,
বিপ্লব’দা অনেক দিন পর আপনার কোন কমেন্ট দেখলাম। এত দিন কোথায় ছিলেন? আমি প্রায়ই ভাবি কি হল আপনার। মুক্তমনায় আর আসেন না কেন? আশা করি ভাল আছেন।
@স্বাধীন,
আমি মুক্তমনায় রোজ একবার করে আসি-সময় না থাকলে লিখি না। নানা কারনে সময় এর অভাব আর কি। তাছাড়া এখন অনেকেই যুক্তিবাদি লেখা লিখছে। দেখতেই ভাল লাগে। আমরা যখন লেখা শুরু করি তখন এত লেখক ত ছিল না। তাই আমাদের লিখতে হত। এখন এদের দেখে ভরসা পাচ্ছি আমার আর যুক্তিবাদি লেখার দরকার নেই-বরং সময় পেলে সাহিত্যের দিকেই এবার একটু সময় দিতে চাই।
@বিপ্লব পাল,
চিন্তাটি খারাপ না। তবে এর মাঝে যুক্তিবাদি লেখাগুলো কম্পাইল করে পরবর্তী বইমেলায় প্রকাশের চিন্তাও করতে পারেন। ভেবে দেখবেন কথাটি। ভাল থাকুন।
আপনাকে সমবেদনা জানানোর ভাষা আমাদের কারোরই নেই। লেখাটির জন্য অনেক ধন্যবাদ। আমিও আপনার লেখা থেকেই আবারো কোট করছি ঃ
কথা সত্য। আকাশ মালিকের দু’ই শ্রেনীর বাহিরে তৃতীয় একটি শ্রেনী আছে যারা “বুঝে পড়ে” এবং সব বুঝার পড়েও না বুঝার ভান করে থাকে এবং এরাই ধর্মকে ব্যবহার করে নিজের ব্যক্তিগত স্বার্থে। এই শ্রেনীর সংখ্যাও কম নয়। তবে “বুঝে না পড়ার” শ্রেনীর সংখ্যাই বেশি।
@স্বাধীন,
মোটেই একমত হতে পারলাম না। এই তৃতীয় শ্রেণীর লোকদের কাছে কোরানের একটি সুরা তোলে ধরে জিজ্ঞেস করুন না তারা কী বুঝেছে, কিভাবে বুঝেছে, আরবী কোথায় শিখেছে?
সব বুঝার পড়েও না বুঝার ভান করে থাকে এবং এরাই ধর্মকে ব্যবহার করে নিজের ব্যক্তিগত স্বার্থে।
এর অর্থ দাঁড়ায় ধর্মগ্রন্থ ঠিকই আছে, ধর্মগ্রন্থের কোন দোষ নেই, সব দোষ ধর্ম ব্যবহারকারীর।
আমি জিজ্ঞেস করি-
– এরা যে কোরান বুঝে পড়েছেন তা বুঝলেন কিভাবে?
– মাদ্রাসার ছাত্র ওস্তাদরা আরবী বা কোরান ভাল বুঝেন, না স্কুল কলেজের শিক্ষক ছাত্ররা ভাল বুঝেন?
– ইসলামী জঙ্গী, জিহাদী মাদ্রাসা থেকে বেরিয়ে আসে না স্কুল থেকে?
– হাসিনা, খালেদা কোরান বুঝেন ভাল, না শায়েখ আব্দুর রহমান, মুফতি হান্নান ভাল বুঝেন?
তৃতীয় যে দলের কথা বলছেন, তারা আসলেই না বুঝে কোরান পড়ুয়ার দল। তাই এরা সাধারণত শান্তিকামী কিন্তু পরিবেশ ও পরিস্থিতি পরিবর্তনের সাথে তারাও জঙ্গী সন্ত্রাসী হতে মোটেই সময় লাগেনা।
@আকাশ মালিক,
আমার মন্তব্যটির এমন একটি অর্থ আপনি কিভাবে বের করলেন আমি ভেবে পাচ্ছি না। আমারই ভুল হবে কারণ আমি তাহলে আমার বক্তব্য পরিষ্কার করে তুলে ধরতে পারিনি। এবার পরিষ্কার করার চেষ্টা করি। আপনার জঙ্গী বা সন্ত্রাসী কয়জন? কিন্তু কোরআনে পন্ডিত কত জন আছে? এই সব কোরানে পন্ডিত এর মাঝে সবাই কি না বুঝে পড়ে কোরান? আমার মতে না। খেয়াল করবেন আমি আমাদের গ্রামের মোল্লা যিনি মুখস্থ করে হাফেজ তাঁদের কথা বলছি না। বলছি তাঁদের কথা যারা কোরানে আসলেই জ্ঞান রাখেন। যার মাতৃভাষাই আরবী তিনি তো আরো বেশি ভাল জানবেন। আমার বক্তব্যটি ছিল যে এই কোরান বোদ্ধাদের মাঝে বেশিরভাগই কোরানে আমি বা আপনি যা বুঝি তারাও সেটা বুঝে, কিন্তু জনগণের সামনে স্বীকার করে না। যদি তারা স্বীকার করে যে ইসলামে সন্ত্রাস আছে তাহলে তাঁদের আশে পাশে কেউ থাকবে না। অতএব সেই সব আয়াতের ভুল ব্যাখ্যা বা অন্তত সেগুলোতে ইসলাম আক্রমনকারী নয় বরং আক্রান্ত ছিল সেটা প্রমান করা অনেক ভাল, (তাদের দিক দিয়ে)। আমি এদেরকেই বুঝিয়েছিলাম। আমাদের জামাতের লোকদের আমি এই শ্রেনীতে ফেলতে চাই।
@স্বাধীন,
আচ্ছা যদি আপনার কথে বুঝতে ভুল করে থাকি তাহলে স্যরি। আতিক রাঢ়ী বিষয়টা খুব সুন্দর করে ব্যাখ্যা করেছেন।
বলেছেন-
আর এই সুত্র ধরে আমি বলি- যখন বলা হয়, মুসলমানদের মধ্যেও অনেক ভাল মানূষ আছে অথবা যারা সন্ত্রাস সমর্থন করেন না, নারীর উপর পুরুষের প্রাধান্য মানেন না, সারা পৃথিবীতে আল্লাহর আইন প্রতিষ্ঠিত করতে চান না, হিলা বিবাহ বিশ্বাস করেন না, ইহুদী খৃষ্টানদেরকে শত্রু মনে করেন না – তার মানে হচ্ছে, তারা বুঝে কোরান পড়েন নাই।
ফরহাদ ভাই,
আমাদের অনুরোধে লেখাটা লেখার জন্য অশেষ ধন্যবাদ। লেখাটা পড়ার পর কি বলবো বুঝতে পারছি না। ১৫ই জুনের দুঃসহ স্মৃতি আপনাকে সারা জীবন তাড়িয়ে বেড়াবে, বেড়াচ্ছেও- তা জানি। কেবল একটি ভাল দিকের কথাই আমি ভাবতে পারি – এই ঘটনাটার জন্যই আপনি বিশ্বাসের করাল গ্রাস থেকে বের হতে পারেছেন, ভাঙ্গতে পেরছেন কূপমুন্ডুকতার অচলায়তন। তবে মূল্য দিতে হয়েছে নিঃসন্দেহে অনেক বেশি। আপনার সুস্বাস্থ্য কামনা করছি।
এর পর থেকে লেখা শুরু করলে আস্তে আস্তে লিখে ওয়ার্ড ফাইলে জমিয়ে রাখবেন। তারপরে নিজের কাছেই যখন পূর্ণাঙ্গ মনে হবে – তখন ছাড়বেন। তাহলে আর পাঠকদের কাছ থেকে “হঠাৎ লেখাটা শেষ হয়ে” যাওয়ার অভিযোগ শুনতে হবে না। তবে নিজের জীবনের দুঃসহ ঘটনা নিয়ে রসিয়ে রসিয়ে বৃত্তান্ত লেখা আর পাঠকদের মনোরঞ্জন করা যে সম্ভব নয়, তা বোধ হয় কেবল ভুক্তভোগীই বুঝবেন। বিশেষতঃ এ ধরনের ঘটনা পুরোটুকুই ওলট পালট করে দেয়।
লেখার জন্য আবারো ধন্যবাদ।
@অভিজিৎ,ধন্যবাদ পরামর্শের জন্য।
কোনদিন ভাবিনি আমার জীবনের এ দুর্ঘটনার কথা এভাবে প্রকাশ করতে পারব।দুঃখ হয়,যখন দেখি অনেক পাকিস্হান প্রেমী সন্দেহ করে ৭১এ নির্যাতিত নারীর সংখ্যা নিয়ে।আমি পুরুষ হয়েও লজ্জায় একথা খুব ঘনিস্ঠ দু একজন ছাড়া কাউকে বলিনি,কিভাবে আশা করি নির্যাতিত সব মহিলারা তাদের সমভ্রম হানির কথা প্রকাশ করবে? আজও আমি আমার এ লেখার কথা আমার খুব ঘনিস্ঠ ছাড়া কাউকে বলিনি।
আমি একটা কোরান মানব simulator তৈরির কথা ভাবছি , যেটা কিনা আমাদের বুঝতে সাহায্য করবে যে ১০০% কোরানের ধারণায় তৈরি মানুষ এবং এর পরিপার্শ্ব কিরকম হয় । তবে আমার প্রাথমিক হিসেব বলছে যে , ৭১ এ পাকিস্তানিদের কর্মকান্ড তার তুলনায় শিশু সুলভ চপলতা মাত্র বলে মনে হবে । যারা দাবি করেন যে , তারা এখনও পুরোপুরি কোরান মেনে চলছেন না , তারা আসলে আমাদের বড় ধরনের বিপদ থেকে বাচাচ্ছেন । তাই নয় কি ?
কোরান বুঝে পড়ার পর একজন মানুষের জন্যে দুটো পথই খোলা থাকে, মধ্যবর্তি স্থান বা তৃতীয় কোন পথ নেই। (১) জঙ্গীবাদী জিহাদী বা সন্ত্রাসী (২) পুরোপুরি নাস্তিক বা অবিশ্বাসী।
@আকাশ মালিক,
কথাটা পুরো ঠিক হল না। কোরান পড়া ও বিশ্বাস করা কোটি কোটি মানুষ কিন্তু আছে যারা কোনরকম জেহাদের নামে সন্ত্রাস কোনমতেই সমর্থন করে না।
তবে এটা ঠিক যে কোরান যে কোনভাবেই কোনরকম সমস্যার কারন হতে পারে তা মনে হয় এই দলেরও (যারাই কোরান বিশ্বাস করেন) কেউই স্বীকার করবেন না।
@আদিল মাহমুদ, ‘কোরান বুঝে পড়া’ এবং ‘কোরান পড়া ও বিশ্বাস করা’ -র মধ্যে নিশ্চয়ই পার্থক্য আছে।
@ব্রাইট স্মাইল্,
“কোরান বুঝে পড়া’ এবং ‘কোরান পড়া ও বিশ্বাস করা” – এগুলির আসলে কোন ধরাবাধা সংজ্ঞা বা মাত্রা নেই। সম্পূর্ন আপেক্ষিক ব্যাপার। মূল বিশ্বাস আল্লাহ এক এ ছাড়া একই কোরানে বিশ্বাসীদের মাঝে দেখা যায় নানান রকমের মত পার্থক্য। প্রত্যেকেরই দাবী তারটাই সঠিক।
@আদিল মাহমুদ,
যে কোন লেখা বুঝে ও না বুঝে পড়াটা আপেক্ষিক ব্যাপার নাকি শুধুই কোরান বুঝে ও না বুঝে পড়াটা আপেক্ষিক ব্যাপার, ঠিক বুঝা গেলোনা।
যদি প্রথমটা সত্যি হয় তাহলে বুঝে ও না বুঝে পড়াটা আপেক্ষিক ব্যাপার হয় কি করে, আর যদি শেষেরটা সত্যি হয়, তাহলে কোরান একটি ধর্মগ্রন্থ বলেই কি তার বেলায় এটা প্রযোজ্য?
কিন্তু তারপরেও কথা থেকে যায়, কোরান যারা বুঝে পড়ছেন, তারা নিশ্চয়ই নিজের যুক্তির সাথে কোরানের গ্রহনযোগ্যতা মিলিয়ে নিচ্ছেন। সে যুক্তি নিশ্চয়ই তাকে জিহাদী বা সন্ত্রাসী হতে সাহায্য করবেনা। কিন্তু যারা কোরান পড়ে কোন যুক্তির ধার না ধরে শুধুই অন্ধভাবে বিশ্বাস করে যাচ্ছেন, তাদের বেলায় বলা যায়, যে কোন প্রকারেই হোক তাকে কোরানে বিশ্বাসী হতেই হবে, সেটার জন্য যদি সন্ত্রাসী হতে হয় তাও সই, তো সেক্ষেত্রে কোরানই তাকে সন্ত্রাসী হতে সাহায্য করছে। দুটো নিশ্চয়ই এক হতে পারেনা। দু্র্ভাগ্যক্রমে এইসব অন্ধবিশ্বাসী লোকের সংখ্যাই অধিক।
@ব্রাইট স্মাইল্,
– ব্যাপারটা খুবই সহজ, আবার একই সাথে খুবই জটিল। বুঝে পড়া বলতে কি বোঝাচ্ছেন? এটা হল প্রশ্ন। বলতে পারেন অনুবাদ দেখে পড়া মানেই বুঝে পড়া। কোরানের ক্ষেত্রে তা না। শুধু অনুবাদ, এমনকি ব্যাখ্যাসহ পড়লেও (যা প্রচলিত ভাবে বুঝে পড়া বলা যায়) হতে পারলে আপনি কিছুই বুঝেন নি, বা ভুল বুঝেছেন। অবাক হচ্ছেন? কারন খুবই সোজা, আরেক বুঝদার প্রমান করে দেবেন যে আপনার বোঝা ভুল, ওনার বোঝাই সঠিক। তাহলে এ বুঝে পড়ার মানে থাকল কি? কার বোঝা ঠিক কার বোঝা বেঠিক এর কোন ধরাবাধা নিয়ম আছে? নেই। কেউই আসলে বলতে পারেন না।
– ভাল পয়েন্ট। অনেকেই, বিশেষ করে শিক্ষিত মানুষেরা যারা কোরান নিয়ে নানান গবেষনা করেন তারা এমন দাবী করেন, কখনো জ্ঞানত বা অজ্ঞানত নিজের যুক্তির সাথে কোরানের গ্রহনযোগ্যতা মেলান। যেটা তারা বেশীরভাগই স্বীকার করেন না তাহল যে তারা তাদের সিদ্ধান্ত আগেই টেনে ফেলেছেন। এখন শুধু গবেষনা করছেন সে ফলাফল মাথায় রেখে। কাজেই যিনি প্রমান করতে চান যে কোরানে স্ত্রী পেটানোর কোন আয়াত নেই তিনি খুজে খুজে আরবী ভাষার বংশ উদ্ধার করে প্রচলিত আরবীতে দ্বারাবা শব্দের (যেটা প্রহার অর্থে বেশীরভাগ অনুবাদক ব্যাবহার করেন) অর্থ “চলে যেতে দেওয়া” বের করবেন। এই বুঝে পড়ারও মূল্য আসলে কতটা?
এই অষ্পষ্ট বোঝা না বোঝার খেলা থেকে আসলে নিজেদের মাঝেই জন্ম নেয় কনফিউশনের যা তারা নিজেরাও বোঝেন না। যেমন, এই জেহাদী ইস্যুতে দেখবেন একই লোকে দাবী করছে যে লাদেন বা বাংলা ভাই এর কায়দায় জেহাদ করতে কোরানের কোথাও লেখেনি। আবার দেখবেন তিনিই অন্য প্রসংগে বলে বসেছেন যে আমেরিকার বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষনা করায় অন্যায় কিছু নেই।
@আদিল মাহমুদ,
বড়ই জটিল হয়ে গেল বিষয়টা, মনে হচ্ছে কোন অন্যায়ই আর অন্যায় না, সবই আপেক্ষিক…
@ব্রাইট স্মাইল্,
অনেকটা তাই। ন্যায় অন্যায়, নীতিবোধ, সামাজিক মূল্যবোধ এগুলি সবসময় না হলেও দেশ কালের ভেদে বেশ অনেকটাই আপেক্ষিক হতে পারে।
এমনকি একই সময়ে একদেশে যা অমানবিক রীতিনীতি; যেমন নার কিলিং এর কথাই ধরেন, আরেক দেশে তাইই হয়ত সমাজ রক্ষার অবশ্য প্রয়োযনীয় হাতিয়ার।
@আদিল মাহমুদ, ন্যায়-অন্যায় যদি আপেক্ষিকভাবে defined হয়, তা হলে বিপদ, কোরান নিয়ে আমরা খামোখাই এতো আলোচনা সমালোচনা করছি।
@আকাশ মালিক, আমি দ্বিতীয়টি বেছে নিয়েছি।
আমারো মনে খেদ থাকল; লেখাটা হঠাত করেই মনে হয় শেষ হয়ে গেল।
পাক আর্মিদের বিরুদ্ধে এই অভিযোগ (পুরুষ/বালক ধর্ষন) মনে হয় এই প্রথম শুনলাম।
@আদিল মাহমুদ, সত্যিই হঠাৎ করে লেখাটি শেষ করেছি।বাংলা টাইপ করার অভ্যেস না থাকায় ক্লান্ত হয়ে হঠাৎই শেষ করেছি।ক্ষমা চাইছি।
বেশ আগ্রহ নিয়ে লেখাটি পড়া শুরু করেছিলাম। কিন্তু হঠাৎ লেখাটা শেষ হয়ে গেল। বিস্তারিত লিখলে আরো ভাল হত