আসিফ মহিউদ্দীনের উপর সাম্প্রতিক হামলা, ভবঘুরের পোস্ট নিয়ে ক্যাচাল কিংবা বাচ্চু রাজাকারের বিচারের রায় নিয়ে বিভিন্ন ডামাডোলের মধ্যে অনেকরই হয়তো একটি সংবাদ চোখ এড়িয়ে গেছে। এইডসের সম্ভাব্য প্রতিষেধক খুঁজে পেয়েছেন অস্ট্রেলিয়ার একদল বিজ্ঞানী (দেখুন এখানে, কিংবা এখানে)।
গবেষক ডেভিড হ্যারিচের নেতৃত্বে একদল গবেষক জিন থেরাপির মাধ্যমে এইচআইভি ভাইরাসের প্রোটিনকে পরিবর্তন করে দেখেছেন সেটি ভাইরাসের ভবিষ্যৎ-রেপ্লিকেশন বা পুনরুৎপাদনে বাঁধা দেয়। এর ফলে এইচআইভি ভাইরাস আক্রান্ত রোগী শেষ পর্যন্ত এইডসে আক্রান্ত হবে না, সুপ্ত ভাইরাস দেহে ধারণ করেই সুস্থভাবে জীবন কাটাতে পারবে।
ড. হ্যারিচ ১৯৮৯ সাল থেকেই এই ভাইরাস নিয়ে গবেষণা করছিলেন। তখন তিনি ছিলেন আমেরিকার ইউনিভার্সিটি অব ক্যালিফোর্নিয়ায় পিএইচডি রত। তাঁর এইচ আইভি ভাইরাসের জেনেটিক এক্সপ্রেশন সংক্রান্ত গবেষণা অটুট ছিল তিনি ১৯৯৭ সালে অস্ট্রেলিয়াতে পারি জমিয়ে কুইন্সল্যাণ্ড ইন্সটিটিউট অব মেডিক্যাল রিসার্চ-এ যোগদানের পরেও। অন্তিম সফলতা ধরা দেয় ২০০৭ সালে, যখন তিনি তার কিছু ছাত্রকে কথিত ‘নালবেসিক’ প্রোটিন এইচআইভি ভাইরাসকে প্রশমিত করে অসংক্রামক জীবাণুতে পরিণত দিতে পারে কিনা পরীক্ষা করে দেখতে বলেন। তার ছাত্র পরীক্ষা করে ফিরে এসে জানালো, সত্যই পারছে! তিনি তাকে পরীক্ষাটি আবারো করতে বললেন। তারপরে আবারো। প্রতিবারই দেখা গেল প্রোটিনের এই পরিবর্তন এইচআইভির মত বিষধর গোখরা সাপকে একদম নির্বিষ ঢোরা সাপে পরিণত করে দিয়েছে। তার গবেষণার ফলাফল প্রকাশিত হয়েছে হিউম্যান জিন থেরাপি জার্নালের সাম্প্রতিক সংখ্যায় ( Hum Gene Ther. 2013 Jan 8 )[1]।
ডেভিড হ্যারিচ – যিনি সম্প্রতি এইডস-এর প্রতিষেধক পাওয়ার দাবী করেছেন।
ডক্টর হ্যারিচের গবেষণা আমাদের আশাবাদী করে তুললেও স্বভাব-দোষে আজন্ম সংশয়ী মানুষ আমি, আমার কিছুটা সংশয় থেকেই যাচ্ছে। অস্ট্রেলিয়ার নিউজ-মিডিয়ায় খবরটি ফলাও করে প্রকাশিত হলেও আমি দেখলাম সিএনএন সহ বড় বড় মিডিয়া কিন্তু এ ব্যাপারে এখনো টু শব্দ করেনি। এটার একটা কারণ সম্ভবত: ল্যাবে গবেষণাটি প্রত্যাশিত ফলাফল দিলেও যতক্ষণ না বিভিন্ন প্রাণী এবং মানুষের উপর পরীক্ষা না করা হচ্ছে, ততক্ষণ এ ব্যাপারে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত না দেওয়াই হবে অভিপ্রেত। যদিও ডক্টর হ্যারিচ তার অস্ট্রেলিয়ান টিভি সাক্ষাৎকারে খুব আস্থার সাথেই বলেছেন যে জিন থেরাপির এ প্রক্রিয়াটি মানুষের উপরেও একইভাবেই কাজ করবে, কিন্তু যতক্ষণ না ব্যাপারটি হচ্ছে লাল ঝাণ্ডা তুলে রাখতেই হচ্ছে।
আমরা বরং এই ফাঁকে এইডস সংক্রান্ত আরো কিছু খোঁজ খবর এবং সাম্প্রতিক অগ্রগতির খবর শুনি। গতবছর সায়েন্টিফিক আমেরিকান ম্যাগাজিনে এইডস নিরাময়ের অন্ততঃ দু দুটো সফল গবেষণার খবর প্রকাশিত হয়েছে। তবে সেখানে যাবার আগে একটু বেসিক জিনিসপত্র ঝালিয়ে নেয়া যাক।
এইডসের অ আ ক খ :
প্রথমেই জেনে নেয়া যাক এইডস সম্বন্ধে প্রাথমিক কিছু তথ্য। এইডস কোন আলাদা রোগ নয়, এটি হচ্ছে কতিপয় উপসর্গের সমষ্টি যা টি-৪ লিম্ফোসাইট (লসিকা কোষ) ধ্বংস, দৈহিক প্রতিরোধ প্রক্রিয়া হ্রাস (যা স্বাভাবিক রোগ প্রতিক্রিয়ার কারণে কখনোই ঘটবে না) – যেমন নিউমোসিসটিস কারিনি নিউমোনিয়া (PCP) এবং ক্যাপোসিস সারকোমা (KS) ইত্যাদির মাধ্যমে ঘটে। এইডসের পেছনে দায়ী হচ্ছে একটি ভাইরাস, নাম – হিউম্যান ইমিউনোডেফিসিয়েন্সি ভাইরাস সংক্ষেপে এইচআইভি । ১৯৮৩ সালের দিকে রবার্ট গ্যালো এবং লাক মন্টাগনিয়ার পৃথকভাবে এই ভাইরাসটি আবিষ্কার করেন, যদিও নোবেল কমিটির নির্বাচনে রবার্ট গ্যালো বিবেচিত হননি।
দুই ধরণের এইচ আই ভি ভাইরাসের কথা আমরা জানি। এইচআইভি-১ এবং এইচআইভি-২। প্রথমটি দৃশ্যমান পশ্চিম ইউরোপ, আমেরিকা এবং মধ্য ইউরোপে। দ্বিতীয়টি পশ্চিম আফ্রিকায়। প্রকোপ এবং মাত্রায় কিছুটা পার্থক্য থাকলেও দুটো ভাইরাস একই রকমভাবেই ক্রিয়া করে। এইচআইভি মূলত মূলত লিপিড বাইলেয়ারের চর্বি দিতে আবৃত এক ধরণের ছোট্ট ভাইরাস – আকারে এক মিলিমিটারের দশ হাজার ভাগের একভাগ। বাইরের আবরণটাকে বলে ‘ভাইরাল লেফাফা’ (viral envelope or membrane), যেটা থেকে আবার জায়গায় জায়গায় শুঁড়ের মত কতকগুলো ‘স্পাইক’ বেরিয়ে আসে। এই স্পাইকগুলো তৈরি হয় গ্লাইকোপ্রোটিন – জিপি১২০ আর জিপি৪১ নামের প্রোটিন দিয়ে। আর ভাইরাল লেফাফার ঠিক নীচেই পি১৭ নামের প্রোটিন দিয়ে তৈরি ম্যাট্রিক্স নামের একটা স্তর থাকে। আর অভ্যন্তরে থাকে ক্যাপসিড বা ভাইরাল কোর নামে পরিচিত কোনাকার আকৃতির দ্রব্য; তৈরি হয় পি২৪ প্রোটিন দিয়ে। এর ভিতরেই থাকে পুনরুৎপাদনের জন্য জেনেটিক পদার্থ (আরএনএ) এবং তিন ধরনের এনজাইম – রিভার্স ট্রান্সক্রিপটেজ, ইন্টেগ্রেজ এবং প্রোটিজ (ছবি দ্রষ্টব্য) [2]।
চিত্র: এইচআইভি ভাইরাস – ইলেকট্রন মাইক্রোস্কোপের সাহায্যে পাওয়া গঠন থেকে অঙ্কিত চিত্র।
এই ভাইরাস সিডি৪ (CD4) সহায়ক লসিকা কোষ (Th সেল বা টিএইচ কোষ হিসেবে পরিচিত)কে আক্রমণ করে। এই টিএইচ কোষ হচ্ছে শ্বেত কণিকা – দেহের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বজায় রাখতে মুখ্য ভূমিকা পালন করে থাকে। এরা কার্যকর থাকে বহিস্থ রোগ জীবাণুর বিরুদ্ধে লড়াই করতে। টিএইচ কোষের মারফত কোষভিত্তিক অর্জিত প্রতিরোধ ব্যবস্থা ভেঙে দেয়ার মাধ্যমেই এইচআইভি ভাইরাস কাজ করে থাকে। এইচআইভি সংক্রমণের ফলে টিএইচ সেলের আবরণীতে থাকা সিডি-৪ গ্লাইকোপ্রোটিন আক্রান্ত হয়, ফলে কোষভিত্তিক প্রতিরোধ ব্যবস্থা সম্পূর্ণ ভেঙে পড়ে[3]। আর এদের মিউটেশন এতই দ্রুত হয় যে, এদের বিরুদ্ধে আমাদের দেহের প্রতিরোধ কিংবা বাজারে প্রচলিত ঔষধ খুব একটা কার্যকরী নয় এখনো।
চিত্র: এইচআইভি ভাইরাসের মাধ্যমে কোষে যেভাবে সংক্রমণ ঘটে
এইচ আইভি মানেই এইডস নয়:
এখানে একটি কথা মনে রাখতে হবে যে, দেহে এইচআইভি ভাইরাস থাকা মানেই এইডস হওয়া নয়। অনেকের মধ্যে এই ভাইরাস দীর্ঘদিন সুপ্ত অবস্থায় থাকতে পারে। যদিও সাধারণভাবে ধরে নেয়া হয় যে, এইচআইভি সংক্রমিত ব্যক্তিদের শতকরা পঞ্চাশ ভাগের এইডস হবে অনধিক দশ বছরের মধ্যে, অনেকের জন্যই সেটা সত্য নয়। আমরা তো বিখ্যাত বাস্কেটবল খেলোয়াড় ম্যাজিক জনসনের কথা তো জানিই। উনি ১৯৯১ সালে এইচ আইভি পজিটিভ হিসেবে চিহ্নিত হলেও তার দেহে এখন পর্যন্ত এইডসের সংক্রমণ ঘটেনি। ২২ বছর পরেও উনি দিব্যি সুস্থ সবল আছেন। গত বছর সায়েন্টিফিক আমেরিকান ম্যাগাজিনে প্রকাশিত একটি প্রবন্ধে বেশ কিছু ব্যক্তির উদাহরণ লিপিবদ্ধ করা হয়েছে যাদের এইচআইভি সংক্রমণের ত্রিশ চল্লিশ বছর পার হয়ে গেলেও এইডসের উপসর্গ দেখা দেয়নি[4]। এই যেমন ধরুন নীচের এই ভদ্রলোকের কাহিনি। স্টিভেন মুয়েনচ নামের এই লোককে ৩৫ বছর আগে এইচ আইভি পজিটিভ হিসেবে সনাক্ত করা হয়েছিল। এর পর থেকে তিনি এর জন্য কোন চিকিৎসাও নেন না, গ্রহণ করেন না কোন ঔষধ। তারপরেও তার মধ্যে এইডসের কোন উপসর্গ বাসা বাঁধেনি। সায়েন্টিফিক আমেরিকানের প্রবন্ধে এ ধরণের অন্তত: গণ্ডা-খানেক এ ধরনের সৌভাগ্যবান লোকের উদাহরণ হাজির করা হয়েছে।
চিত্র – স্টিভেন মুয়েনচ – এইচ আইভি সংক্রমণের ৩৫ বছর পরেও সুস্থ আছেন দিব্যি।
বিবর্তনগত প্রকরণ এবং এইচ আইভি
কেন এদের এইডস হয়নি? ব্যাপারটি বোঝা জটিল নয়। বিবর্তনের মূল বিষয়টা যারা জানেন, তারা বোঝেন এটা না হবার কোন কারণ নেই। অতীত ইতিহাসের দিকে তাকাই। অতীতে সাড়া পৃথিবীতে প্লেগের মহামারী দেখা গিয়েছিল অনেকবারই। এর মধ্যে চোদ্দ’শ শতকে সংগঠিত ‘ব্ল্যাক ডেথ’ হিসেবে চিহ্নিত প্লেগের মহামারীতে সাড়ে সাত কোটি থেকে বিশ কোটি মানুষ মৃত্যুবরণ করেছিল। তারপরেও প্লেগের দানব সবাইকে কাবু করতে পারেনি, দেখা গেছে কিছু কিছু লোকের এই রোগের প্রতি জন্মগত প্রতিরোধ ক্ষমতা আছে। তারা প্লেগে মারা যায়নি। বাংলাদেশে অতীতে বসন্ত কিংবা টাইফয়েডে গ্রামকে গ্রাম উজাড় হয়ে যেত, এর মধ্যেও মানুষ পাওয়া যেত যারা এই দুর্বিপাক অতিক্রম করে টিকে গেছে। বিবর্তন-গত প্রকরণের কথা যে আমরা হরহামেশা বলি – সেটার কারণেই এটা হয়। এইডসের ক্ষেত্রেও ব্যাপারটা একইরকমের হবার কথা। যেহেতু এইডসের পূর্ণাঙ্গ চিকিৎসা ব্যবস্থা এখনো অজানা, বেশ কিছু বিজ্ঞানী চেষ্টা করছেন এই দুর্লভ কেস-স্টাডি গুলো অনুসন্ধান করে এইডসের বিরুদ্ধে দেহের প্রতিরোধ ব্যবস্থা উদ্ভাবন করতে। অন্তত: একটি ক্ষেত্রে তারা সম্প্রতি সফল হয়েছেন[5]। বিজ্ঞানীরা দেখেছেন যাদের দেহে সিসিআর৫ রিসেপ্টর জিনটি অনুপস্থিত, তারা জন্মগত-ভাবেই এইচআইভি প্রতিরোধে সক্ষম। ডেলটা ৩২ নামে এক বিরল মিউটেশনের কারণে (CCR5-Delta32 mutation) এই ব্যাপারটি ঘটে বলে বিজ্ঞানীরা জেনেছেন। এমনিতে এই মিউটেশন দুর্লভ হলেও উত্তর ইউরোপের অভিবাসীদের বিশেষতঃ জার্মানিতে বহু মানুষের মধ্যেই এটি দৃশ্যমান। এই ধরণের একজন মানুষের দান করা স্টেমসেল থেকে হাড়ের মজ্জা তৈরি করে টিমুথি ব্রাউন নামে এক রোগীকে (যিনি দশ বছর ধরে এইচআইভি এবং লিউকেমিয়াতে আক্রান্ত ছিলেন) সম্পূর্ণ সুস্থ করে ফেলা হয়েছে বলে পত্রিকায় প্রকাশিত হয়েছে[6]। যে ডাক্তার এই সফল পরীক্ষার মাধ্যমে রোগীকে সুস্থ করেছেন তার নাম গেরো হুটার (Gero Hütter) । তার সাম্প্রতিক সফল ফলাফল সম্বলিত গবেষণাপত্রটি প্রকাশিত হয়েছে ইংল্যণ্ডের একটি বৈজ্ঞানিক জার্নালে[7]।
ঐ দিকে আবার পলা ক্যাননের নেতৃত্বে আরেকদল গবেষক-দল একইভাবে সমস্যার সমাধান করেছেন অর্থাৎ সিসিআর৫ রিসেপ্টর জিনটি ছেঁটে ফেলেছেন ‘জিঙ্ক ফিঙ্গার নিউক্লিয়েস’ নামে ভিন্ন একটি পদ্ধতি অনুসরণ করে। তবে তারা মানুষের উপর না করে সেটা করেছেন ইঁদুরের উপর। তারা দেখেছেন যে ইঁদুরের দলটিতে তারা ‘জিঙ্ক ফিঙ্গার নিউক্লিয়েস’ পদ্ধতি অনুসরণ করে সিসিআর৫ রিসেপ্টর বাদ দিতে পেরেছেন, তারা এইডসে আক্রান্ত হচ্ছে না। তাদের ফলাফল প্রকাশিত হয়েছে নেচার বায়োটেকনোলজি জার্নালে ২০১০ সালে[8]।
চিত্র – ‘জিঙ্ক ফিঙ্গার নিউক্লিয়েস’ পদ্ধতির মাধ্যমে সিসিআর৫ রিসেপ্টর ছেঁটে ফেলে এইচ আই ভির বিস্তার রোধ।
কাজেই এটুকু বলা যায় যে, কেউ যদি এই প্রবন্ধের একদম উপরে বর্ণিত গবেষক ডেভিড হ্যারিচের ফলাফলকে এখনই ‘সফল’ হিসেবে দেখতে না চান, তাতে কুছ নেহি; অন্যান্য গবেষকেরা যেভাবে ব্যাপারটি নিয়ে কাজ করেছেন, তাতে ভবিষ্যতের এইডসের চিকিৎসা কিন্তু একেবারে তমসাচ্ছন্ন নয়।
তবে এটা ঠিক সবাই তো আর এইচ আইভি প্রতিরোধের অনুপম সৌভাগ্য নিয়ে পৃথিবীতে জন্মায়নি। আর স্টেমসেল থেকে হাড়ের মজ্জা তৈরি করে টিমুথি ব্রাউনকে যেভাবে সুস্থ করা হয়েছে তা কেবল সৌভাগ্যপ্রসূতই নয়, ব্যায়বহুলও। এ ধরণের একটি অপারেশনে খরচ পড়ে ২৫০, ০০০ আমেরিকান ডলার। আর তারচেয়েও বড় কথা কাউকে সুস্থ করার জন্য সব কিছু খাপে খাপ মিলে যাওয়া ‘ডোনার’ পাওয়া দুষ্করও। সাধারণ মানুষ নিঃসন্দেহে এ চিকিৎসা নিতে পারবেন না। তাদের জন্য এখন পর্যন্ত এন্টিরেট্রোভাইরাল থেরাপি (antiretroviral therapy, সংক্ষেপে ART)ই ভরসা। এন্টিরেট্রোভাইরাল ড্রাগ আসলে বিভিন্ন ঔষধের সম্মিলিত ককটেল, যা এইচআইভি আক্রান্ত রোগীদের সম্পূর্ণ নিরাময় করতে না পারলেও তাৎক্ষণিক মৃত্যুর ফতোয়াকে অনেকটাই ‘নিয়ন্ত্রণ-সাধ্য দীর্ঘস্থায়ী রোগাবস্থায়’ (manageable chronic disease) রূপান্তরিত করা সম্ভব হয়েছে[9], বাঁচিয়ে রাখা সম্ভব হচ্ছে প্রত্যাশার চেয়ে দীর্ঘদিন বেশী। এখন কথা হচ্ছে, ডকটর ডেভিড হ্যারিচের পদ্ধতি কাজ করলে আরো পোয়াবারো! এন্টিরেট্রোভাইরাল ড্রাগ ব্যবহার বাদ দিয়ে ‘জিন থেরাপি’র মাধ্যমে মানে এইচআইভি ভাইরাসের প্রোটিনকে পরিবর্তন করে ভবিষ্যতে রোগীদের পুরোপুরি নিরোগ জীবন দেয়া সম্ভব হবে।
দেখা যাক …
তথ্যসূত্র:
[1] Apolloni A, Sivakumaran H, Lin MH, Li D, Kershaw MH, Harrich D., A mutant Tat protein provides strong protection from HIV-1 infection in human CD4+ T cells., Hum Gene Ther. 2013 Jan 8.
[2] Warner C. Greene, AIDS and the Immune System; Scientific American Magazine, September 1993.
[3] Robin A. Weiss, How Does HIV Cause Aids? Science, Vol. 260, Pages 1273 -1279, May 28, 1993.
[4] Bruce D. Walker, Secrets of the HIV Controllers, Scientific American, July, 2012.
[5] Carl June and Bruce Levin, Blocking HIV’s Attack, Scientific American, March 2012
[6] Tina Rosenberg, The Man Who Had HIV and Now Does Not, New York Magazine, May 29, 2012
[7] Gero Hütter et al., Long-Term Control of HIV by CCR5 Delta32/Delta32 Stem-Cell Transplantation. in New England Journal of Medicine, Vol. 360, No. 7, pages 692–698; February 12, 2009.
[8] Elena E. Perez et al., Establishment of HIV-1 Resistance in CD4+ T Cells by Genome Editing Using Zinc-Finger Nucleases, Nature Biotechnology, Vol. 26, pages 808–816; 2008.
[9] Paul A Volberding, Steven G Deeks, Antiretroviral therapy and management of HIV infection, Lancet, Jul 3;376(9734):49-62, 2010.
সবকিছুই যদি ধনীদের জন্য হয় তবে যারা মধ্যবিত্ত অথবা গরিব তাদের জন্য আপাতত এই প্রতিষেধক কাজে দিচ্ছে না। আশা করি কয়েকবছর পরে এইডসের চিকিৎসা সহজলভ্য হবে।
HIV প্রতিরোধে ১ টাকা মূল্যের প্যারাসিটামলের মত সহজলভ্য ঔষধ কবে পাব?!
@মহন,
🙂 সম্ভবত কখনোই না..
গত দুদশক ধরে ঔষধ কোম্পানীগুলো যারা এই ঔষধগুলো বানিয়েছে তারা একচেটিয়া বাণিজ্য করেছে, এখনও করছে, ভারত আর ব্রাজিল যখন জেনেরিক ঔষধ বানিয়েছে, যার দাম অনেক কম, তখনও তারা ব্যাপারটা নানাভাবে ঠেকানোর চেষ্টা করেছে, এর মধ্যে WTO র কিছু কপিরাইট আইনও আছে; যেহেতু চীন স্বীকার করতে চায় না HIV তাদের জন্য সমস্যা, তারা এই ক্ষেত্রে নাকও গলাচ্ছে না তেমন; দাতা সংস্থাগুলো কম দামী ঔষধও কিনতে পারেনা তাদের বাধ্যবাধকতার জন্য; আমাদের দেশে আমি যতদিন কাজ করেছি ঔষধ এসেছে ডোনেশন হিসাবে এই সব কোম্পানীগুলো থেকে; ভ্যাক্সিন যদি সম্ভব হতো ভালো হতো, কিন্তু ভাইরাসটার অদ্ভুত প্রকৃতির জন্য সেটা সম্ভব হচ্ছে খুব শীঘ্রই… তাই এই মহুর্তে জেনেরিক ড্রাগটা জরুরী,
এইচ আইভি মানেই এইডস নয়- এই জায়গা থেকে লেখাটি দারুণ আকর্ষণীয় হয়ে উঠে। বিশেষ করে, টিমুথি ব্রাউনের কাহিনী। কিন্তু হোঁচট খাই ‘জিঙ্ক ফিঙ্গার নিউক্লিয়াস’সংক্রান্ত প্যারায় এসে। পদ্ধতিটি জানতে নেচার জার্নাল ঘাটার কোনই বিকল্প নেই, অভিজিৎদা?
পরিশেষে একটা প্রার্থনা: ডেভিড হ্যারিচের দাবী অক্ষরে অক্ষরে ফলুক। তার গবেষনা হোক ফলবান।
@কাজি মামুন,
এটাকে অনেকটা ‘জেনেটিক কাঁচি’ হিসেবে ধরে নিতে পারেন, যা দিয়ে ডিএনএ রিবনকে কেটে ফেলা হয় ফলে এটি আর CCR5 প্রোটিন উৎপন্ন করতে পারে না। নেচার জার্নালের লেখাটা একটু সহজ ভাবে সায়েন্টিফিক আমেরিকানে প্রকাশিত হয়েছিল যার একটা অন লাইন লিঙ্ক উপরে আকাশ মালিক দিয়েছেন (এখানে)।
পাশপাশি জনবোধ্য ভাষায় বোঝার জন্য নিউইয়র্ক টাইমসে প্রকাশিত এ লেখাও দেখতে পারেন।
ধন্যবাদ মন্তব্যের জন্য।
এইডস সংক্রান্ত আরেকটি লেখা মুক্তমনায় রয়েছে এখানে- প্রাকৃতিক রোগ এইডস, একটি স্বাভাবিক সত্য। পড়ে দেখতে পারেন।
যে জার্নালটির রেফারেন্স দিয়েছেন তা প্রকাশিত হয়েছে ২০০৮ এ, পলা ক্যানন নামে কোন authorও নেই সেখানে। আপনি কি জার্নালগুলো নিজে পড়েছেন, নাকি এগুলো একধরণের pseudo-reference? শুধু প্রবন্ধকে গালভারি করার জন্য আপনি নিজে যা পড়েন নি তার রেফারেন্স টানা ঠিক নয়, যেখান থেকে তথ্য নিয়েছেন তার রেফারেন্স দেওয়াটাই উচিত।
@আকাশ চৌধুরী,
প্রশ্নটি অন্যভাবেও করতে পারতেন। ব্লগে লিখলে অজ্ঞাতসারে বা অনিচ্ছাকৃতভাবে রেফারেন্স বিভ্রান্তি অস্বাভাবিক কিছু নয়। পলা ক্যাননের নেতৃত্বের গবেষক-দল বলতে কাদের বুঝিয়াছেন লেখক হয়তো ভাল বলতে পারবেন। আমার মনে হয় লেখাটির সাথে সম্পর্কিত অনেক তথ্যই নিচের দুটো লিংক থেকে নেয়া। যারা (আমি ছাড়া) এ ব্যাপারে সম্যক জ্ঞান রাখেন বা বুঝেন লেখাটির অন্যান্য রেফারেন্সের সুত্র ধরেও এখানে আসতে পারার কথা। আলোচনা হউক জানার জন্যে, বুঝার জন্যে। একটি লেখার দোষ-ত্রুটি খোঁজা যত সহজ,
একটি লেখা সাজানো তত সহজ নয়।
১ নং লিংক-
Blocking HIV’s Attack
Carl June and Bruce Levine
২ নং লিংক-
Establishment of HIV-1 resistance in CD4+ T cells by genome editing using zinc-finger nucleases
Elena E Perez
@আকাশ মালিক,
২য় লিংক আসেনি এখানে আবার দিলাম-
@আকাশ চৌধুরী,
মাফ করবেন,কিছু শব্দের ব্যবহারে (pseudo-reference, গালভারী) আপনার মন্তব্যটি একটু রুঢ় ধরনের লাগছে। যেখান থেকে তথ্য নেয়া হয়েছে তার রেফারেন্স দেওয়াটাই উচিত মানছি, তবে আমার মনে হয়েছে এক্ষেত্রে লেখক সাধারণভাবে একটি সহায়ক তথ্যসূত্র দিতে চেয়েছেন যাতে করে যাদের আরো বেশী জানার আগ্রহ তারা নিজেরাই তথ্য সংগ্রহ করে নিতে পারেন। শুভেচ্ছা।
@আকাশ চৌধুরী,
সরি আমার এই রেফারেন্সটিও দেয়া উচিৎ ছিল লেখায় –
Chemokine Receptor 5 Knockout Strategies. Paula Cannon and Carl June in Current Opinions in HIV and AIDS, Vol. 6, No. 1, pages 74–79; January 2011.
পলা ক্যাননের (এবং তার ল্যাবের) কাজের উল্লেখ সায়েন্টিফিক আমেরিকান ম্যাগাজিনে প্রকাশিত যে দুটি গবেষণা নিয়ে আলোচনা করেছি সেগুলোতে পাবেন। আকাশ মালিক যে প্রথম লিঙ্কটা দিয়েছেন সেটার নীচের দিকে রেফারেন্সে গেলেও পাবেন। এ ছাড়া আমি যে ‘The Man Who Had HIV and Now Does Not’ বলে যে Tina Rosenberg এর লেখাটির উল্লেখ করেছি সেখানেও আছে –
আপনি যদি একটু খেয়াল করতেন, পলা ক্যাননের উল্লেখ তথ্যসূত্রে না থাকলেও ৮ নং রেফারেন্সে Nature Biotechnology এ প্রকাশিত যে পেপারটি দেয়া হয়েছে তার অনন্যম সহলেখক Carl H June, এবং তিনি পলা ক্যাননের সাথেই কাজ করেছেন এবং আমার এই মন্তব্য উল্লেখিত রেফারেন্স থেকেই আপনি বুঝবেন।
আপনার বাকি উক্তিগুলোর উত্তর দেয়ার প্রয়োজনবোধ করছি না।
@অভিজিৎ, ধন্যবাদ।
বেশ তো, সেক্ষেত্রে আমাকে অনুমান করেই সন্তুষ্ট থাকতে হবে। reference বলতে সাধারণত আমরা লেখক কোন উৎস থেকে তার তথ্য নিয়েছেন তা বুঝে থাকি। pseudo-referencing একাডেমিয়ায় একধরণের মহামারী বিশেষ, অনেক রথীমহারথীও এ কাজ করে পরবর্তীতে অভিযুক্ত হয়েছেন, তাই মুক্তমনায়ও তার ছোঁয়া লাগলো কি না এ প্রশ্ন জাগা অমূলক নয়।
যাই হোক, আমার মন্তব্য কিছুটা রূঢ় ছিলো, এর জন্যে আন্তরিকভাবে দু:খ প্রকাশ করছি।
@আকাশ চৌধুরী, (Y)
@অভিজিৎ, দাদা মোক্ষম জবাব হলো। কাল বিকেলে দেখে বুঝলাম, লিংক দিতে গিয়ে কোথাও একটা ভুল হয়ে গেছে। উত্তম ঝাঝা । :guli:
@আকাশ চৌধুরী, এইবার কিন্তু অভিজিৎ দা রেফারেন্স দিয়ে দিলেন।আমার মনে হয় যে এইবার আপনার এই মন্তব্যের রুড অংশের জন্যে অনুতপ্ত হওয়া দরকার। কারন এইসব রুড মন্তব্য করা ঠিক নয়।তাতে ধরা খেতে হয় পরে কিছু জায়গাতে। 🙂
এ লাইনটা আমাদের অনেক আশাবাদী করে তুলছে। এইডস আক্রান্তদের সম্পর্কে আমদের মনোভাব পাল্টাতে সাহায্য করবে। এইডস সম্পর্কে অনেক কিছুই জানলাম। ধন্যবাদ।
এইডসের প্রতিষেধক বের হলে ত সেটা খুবই ভাল খবর। এই সপ্তাহেই এরকম আরও দুটি ভাল খবর পড়লাম।
Altering Eye Cells May One Day Restore Vision
Artificial Pancreas: The Way of the Future for Treating Type 1 Diabetes
ভালো খবর। এইডস এর প্রতিষেধক আবিষ্কারের চেষ্টায় মানুষের ভাইরাস গবেষনা গত তিরিশ বছরে অনেক এগিয়ে গেছে।
এইডস এর এফেক্টিভ চিকিৎসা রেট্রোভাইরাল ট্রিটমেন্ট এর বয়স ১৫ বছর এর বেশী হয়ে গেলেও এখনো বাংলাদেশে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মিডিয়া বিজ্ঞাপন, বিলবোর্ডে স্পষ্ট মেসেজ দেয়া হয় যে ‘এইডস একটি প্রানঘাতী রোগ। এইডস এর কোনো চিকিৎসা নেই’।
এই মেসেজটি কি মানুষকে কেবল ভয় দেখানোর জন্যে দেয়া হয় নাকি মানুষকে ইনফর্ম করার জন্যে প্রচার করা হয় সেটা বুঝে উঠতে পারি নি।
@সফিক, এটা আমাদের দুর্ভাগ্য, এখনও ফিয়ার ট্যাকটিকস ব্যবহার করা হচ্ছে; এটা নিয়ে কথা বলা হয়েছে, এটা যে আরো স্টিগমা বাড়িয়ে দেয় তা সারা পৃথিবীতে স্বীকৃত;
এশিয়াতে কোন ভাইরাসটি দৃশ্যমান?
@মাহফুজ,
এশিয়ায় এইচ আই ভি ১ ; আমাদের দেশেও তাই, সাবটাইপ নিয়ে বাংলাদেশে যে স্টাডিগুলো হয়েছে তারা মুলত সবাই মেজর বা এম গ্রুপের বিভিন্ন সাবটাইপ ( সাবটাইপ সি সবচেয়ে সি র প্রাধান্য আছে);
১। অনেক দিন আগে একটি ম্যাগাজিনে পড়েছিলাম কোন কোন মানুষের এইডস রোগের বিরুদ্ধে ন্যাচারাল ইমিউনিটি আছে যেমন অন্যান্য রোগের বেলাতেও অনেকের আছে ।
২।আমি জানতাম একটি জিনের বেশি উপস্থিতির কারণে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা আজ জানতে পারলাম একটি জিনের অনুপুস্থিতির কারণে।
৩। রোগের ভ্যাকসিন কিংবা রোগ প্রতিরোধক অন্যান্য কার্যকরী ঔষধ যত তাড়াতাড়ি আবিষ্কার হবে এবং সহজলভ্য হবে তত মানব জাতির জন্য মঙ্গল জনক।
সার্চ দিয়ে নামটি পেলাম……
মানব শরীরে CCR5 জিনের অনুপস্থিতির কারণে ন্যাচারাল ইমিউনিটি থাকতে পারে তেমনি HLA B57 নামক জিনের অধিক উপস্থিতির কারণেও ন্যাচারাল ইমিউনিটি থাকতে পারে !
@সংবাদিকা,
আমার লেখাটি যে আপনাকে সার্চ দিয়ে তথ্য উদ্ঘাটনে সাহায্য করেছে, তাতেই বর্তে গেছি আমি। 🙂
আর আপনার মূল্যবান তথ্যগুলোর জন্য ধন্যবাদ।
@সংবাদিকা,
CCR5 or CD195, মুলত একটি chemokine এর রিসেপটর যা শ্বেত রক্ত কনিকায় কোষ ঝিল্লীতে থাকে, যা রোগ প্রতিরোধ তন্ত্রে গুরুত্বপুর্ণ ভুমিকা পালন করে; এটি HIV ভাইরাসও ব্যবহার করে তাদের টার্গেট কোষগুলোর ভিতরে ঢোকার জন্য একটি কো-রিসেপ্টর হিসাবে; এটির অনুপস্থিতি না, এর এতটি অ্যালীল বা ভ্যারিয়েশনের উপস্থিতি CCR5-D32 or CCR5 delta 32 ( ৩২ টা বেস পেয়ার ডিলিশন) আসলে HIV কে তার টার্গেট কোষে ঢুকতে দেয় না; তবে পুরোপুরি HIV R5 ধরনের ভাইরাস ( যারা CCR5 ব্যবহার করে) ঠেকাতে এই অ্যালীলের দুটো কপি থাকতে হবে; তবে একটি থাকলেও এটি অবশ্য রক্ষা করে এছাড়া AIDS দিকে অসুখটার প্রগ্রেশন বিলম্বিত করে; HIV X4 টাইপরা অন্য কো রিসেপ্টর ব্যবহার করে; HLA A আর B এর বেশ কিছু অ্যালীল HIV ট্রানসমিশণ আর প্রগেশনে দুই দিকেই ভুমিকা রাখতে পারে..বেশ বড় একটি ক্ষেত্র, কারন এটি ইমিউন সিস্টেম এর একটি গুরুত্বপুর্ন মলিকউল কে কোড করে;;
@কাজী মাহবুব হাসান,
অন্যান্য অনেক ভাইরাসের মত HIV ভাইরাসেরও কয়েকটি প্রকার; আছে যাদের বৈশিষ্ট্যর কিছুটা ভিন্নতা থাকে যার জন্য ভিন্ন ভিন্ন জিনের প্রভাবও বিভিন্ন সাবটাইপ ভাইরাসের ক্ষেত্রে ভিন্ন। এখন বিষয়টি পরিষ্কার হল।
আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ বিষয়টি সুন্দরভাবে ব্যাখ্যা করার জন্য 🙂
@সংবাদিকা,
এক্ষেত্রে ‘নালবেসিক’ মিউটেশনটি প্রোটিনটিকে নতুন ক্ষমতা দিয়েছে। বলা যেতে পারে ভাইরাসের জীবনচক্রে মিউট্যান্ট প্রোটিনটির একটি ডমিনেন্ট নেগেটিভ (dominant negative) প্রভাব রয়েছে।
@মনজুর মুরশেদ,
আপনাকে ধন্যবাদ 🙂
@সংবাদিকা,
🙂
@অভিজিৎ ,
সহজভাবে বললে , এইচ আই ভি আসলে রিভার্স এবং ফরওয়ার্ড ট্রান্সক্রিপ্টের মাধ্যমে তাদের আর এন এ জিনোমকে কে ডি এন এ -তে পরিনত করে আমাদের টি – সেলগুলোর ডি এন এ সিকোয়েন্সের এমন অবস্হা করে যে তাদেরকে মীর জাফর , রাজাকার আর আল বদর বানিয়ে দেয়। বিদেশী অনুপ্রবেশকারীদের প্রতিরোধ করার বদলে টি- সেলগুলো অধিক হারে এইচ আই ভি উৎপন্ন করা শুরু করে । যেহেতু এরা আমাদের নিজেদের ডি এন এ সিকোয়েন্সে অবস্হান করে , এদের মারতে হলে আমাদেরই প্রথমে মরতে হবে।
ডঃ হারিশ চেষ্টা করছেন এইচ আই ভি -১ এর একটা মিউট্যান্ট – নালবেইসিক ব্যবহার করে এই সংক্রামক এইচ আই ভি -১ -এর প্রতিলিপি বন্ধ করার । এটা অবশ্য তিনি ২০০৯ সাল থেকে চেষ্টা করে যাচ্ছেন । কিন্তু এখানে কিছু গুরুতর প্রশ্ন আছে। একটা জীবন্ত প্রানীর দেহের টি -সেলে লেন্টিভাইরাল এবং রেট্রোভাইরাল ভেক্টর ব্যবহার করে নালবেইসিক প্রবেশ করানোর পর পুরো শরীরে কি প্রতিক্রিয়া হবে ? এইচ আই ভি -১ এর বহু প্রকারভেদ আছে এবং একেকটার আচরণ একেক রকম। নালবেইসিক ঐ সকল সাব টাইপের ক্ষেত্রে কি আচরণ করে সেটাও দেখার বিষয়। সবচেয়ে বড় কথা , জীন থেরাপী অনুজীবদের প্রাকৃতিক অভিযোজন এবং নির্বাচনকে কিভাবে মোকাবেলা করবে সেটাও দেখার মত বিষয় । এমনও হতে পারে যে একটা সময় পরে , নালবেসিককেও এইচ আই ভি -১ রিক্রুট করে রাজাকার বানিয়ে ফেলেছে যা খুবই সম্ভব।
অতএব, হারিশ সাহেবের গবেষণা নিয়ে সাইন্স ম্যাগ কিংবা নেইচার কেন হৈ চৈ করছে না সেটা বুঝতে সমস্যা হওয়ার কথা নয়। আমি খুশী হয়েছি যে , আপনি আপনার সংশয়ের কথা জানিয়েছেন যা অত্যন্ত দায়িত্বশীলতার পরিচায়ক।
@সংশপ্তক,
হাঃ হাঃ, আরেকটা জিনিস আপনি খেয়াল করেছেন কিনা জানি না, আবিস্কারটি হয়েছে তখনই যখন উনার ফাণ্ডিং একেবারে শেষ পর্যায়ে ছিল।
পাপী মন আমার, খালি বেলাইনে চিন্তা চলে যায়। আপনার মত দুদে গোয়েন্দার এ ব্যাপারে মত কি জানার অপেক্ষায় আছি। :))
@অভিজিৎ,
এবং এই সংশয় যথেষ্ট যুক্তিসঙ্গত। ডক্টর হ্যারিচ মূলত কাজ করেছেন এইচআইভি-১ এর টিএটি (TAT) প্রোটিন নিয়ে। এই প্রোটিনটি এম্নিতে ভাইরাসের আরএনএ তৈরীতে কাজে লাগে। তবে ডক্টর হ্যারিচ টিএটি প্রোটিনটির জীনে পরিবর্তন (মিউটেশন) এনে এর একটি ভিন্ন ধরন তৈরী করেছেন যাকে তিনি বলছেন ‘নালবেসিক’; তিনি দেখিয়েছেন এই পরিবর্তিত টিএটি প্রোটিনটি ‘রেভ’ (Rev) নামের আরেকটি প্রোটিনের নিউক্লিওলাসে অবস্থানে বাঁধা দেয়। রেভের মূল কাজ সাইটোপ্লাজম থেকে নিউক্লিয়াসে গিয়ে সাথে করে ভাইরাসের আরএনএ গুলোকে নিউক্লিয়াস থেকে সাইটোপ্লাজমে নিয়ে আসা। এরপর রেভ আরএনএ গুলোকে সাইটোপ্লাজমে রেখে আবার নতুন আরএনএ আনার জন্য নিউক্লিয়াসে ফিরে যায়, আর সাইটোপ্লাজমে রেখে যাওয়া আরএনএ গুলো থেকে তাদের কোড অনুযায়ী বিভিন্ন ভাইরাস প্রোটিন তৈরী হয়। নালবেসিক মিউটেশনধারী টিএটি প্রোটিনটি মোটামুটিভাবে রেভকে সাইটোপ্লাজমে ধরে রেখে নিউক্লিয়াস থেকে ভাইরাসের আরএনএ পরিবহণে বাঁধা দেয়। ফলে দরকারী প্রোটিনগুলো তৈরী করতে না পেরে ভাইরাসের একেবারে দফারফা। এর আগেও অন্য গবেষকরা টিএটি-র অনেক রকম মিউটেশন ঘটিয়েছেন, তবে ডক্টর হ্যারিচ দাবী করছেন তার করা মিউটেশনটিই এইচআইভি-১ ধ্বংসে সবচে’ মোক্ষম।
ভাইরাসের বিভিন্ন প্রোটিনের মিউটেশন তৈরীর একটা উদ্দেশ্য এগুলোকে জীনথেরাপীর কাজে ব্যবহার করা। ধরুন নালবেসিক মিউটেশনের যে টিএটি জীনটি ডক্টর হ্যারিচ বানিয়েছেন, সেটিকে পরীক্ষাগারে সাধারণ টি সেলে বা টি সেলে পরিণত হবে এমন স্টেম সেলের জীনে প্রতিস্থাপন করা হল। এর ফলে এই নতুন সেলগুলোকে এইচআইভি-১ আর সংক্রমন করলেও তেমন সুবিধা করতে পারবে না। এবার এই সেলগুলোকে এইডস রোগীর দেহে ঢুকিয়ে দিলেই তো এইচআইভি-১-র জন্য তা একেবারে দূর্গম দূর্গ। তবে কাগজে কলমে সোজা হিসাব মনে হলেও ব্যাপারটা এত সহজ না। প্রায়ই দেখা যায় জীন-প্রতিস্থাপিত সেলগুলো বেশীদিন টিকে থাকতে বা দরকার মত ভাগ হয়ে সংখাবৃদ্ধি করতে পারছে না।
যাইহোক আমার মতে, ডক্টর হ্যারিচের আবিস্কার এইচআইভি-র বিরুদ্ধে মানুষের যুদ্ধে আরো একটি সম্ভাব্য নতুন অস্ত্র মাত্র। সময়ের সাথে জীন-প্রতিস্থাপিত সেলগুলোকে শক্ত সমর্থভাবে টিকিয়ে রাখার নতুন কৌশল বের হলে এসম্পর্কিত আরো অনেক আবিস্কারের মত তার আবিস্কারেরও সুফল পাওয়া যেতে পারে।
@মনজুর মুরশেদ,
আপনার চমৎকার মন্তব্যগুলো দেখে বুঝলাম এ বিষয়ে আপনার খুব ভাল ধারণা আছে। আমার যতদূর মনে পড়ছে, আপনাকে মডারেটরের পক্ষ থেকে লগইন তথ্য পাঠানো হয়েছিল। লগ ইন করে মন্তব্য করলে মন্তব্য সরাসরি প্রকাশিত হয়ে যায়।
কন কারণে কাজ না করলে, বা লগইন তথ্য না পেলে আমাদের জানাবেন।
আপনার মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ জানাচ্ছি আবারো।
@অভিজিৎ,
অনেক ধন্যবাদ। মলিকিউলার বায়োলজী আমার সবচে’ প্রিয় বিষয়গুলোর মধ্যে একটি; তবে এইচআইভি সম্পর্কে আমার ধারণা প্রাথমিক পর্যায়ে। আমি মূলত টিস্যুতে খনিজ জমার জেনেটিক মেকানিজম নিয়ে কাজ করি।
আপনার বিজ্ঞান বিষয়ক লেখাগুলো আমার বেশ ভাল লাগে। খুবই সহজ ভাষায় জটিল বিষয়গুলো লেখেন। এই লেখাগুলো থেকে অনেক কিছু জেনেছি।
লগ ইন না করে মন্তব্য করার জন্য দুঃখিত। পাসওয়ার্ড পেয়েছি, কিছুদিন ব্যবহারও করেছি; তারপর ভুলে গেছি। নতুন পাসওয়ার্ড তৈরীর লিঙ্ক চেয়ে অনুরোধ পাঠিয়েছি, কিন্তু তা মুক্তমনায় পৌঁছেছে কিনা বুঝতে পারছি না।
@মনজুর মুরশেদ,
যাক ব্লগে আরেকজন মলিকিউলার বায়োলজির লোক পাওয়া গেল। আপনারা থাকতে আসলে আমার এগুলো লেখাই উচিৎ নয়। আপনাদের থেকে লেখা প্রত্যাশা করি। আপনারা লেখা শুরু করলে আমি আমার প্রিয় বিষয় – মানে পদার্থবিজ্ঞানে ফেরত যেতে পারি। 🙂
আপনাকে আরেকবার পাসোয়ার্ড পাঠানোর ব্যবস্থা করছি মডারেটরদের বলে। আপনার ইমেইল চেক করুন।
তারপর লগিন করে আপনার প্রোফাইলে গিয়ে আপনার পছন্দমত পাসওয়ার্ড সেট করে নিতে পারেন, মনে রাখার সুবিধার জন্য।
মুক্তমনায় আপনাকে পেয়ে আনন্দিতবোধ করছি।
@অভিজিৎ,
আবারও অনেক ধন্যবাদ। পদার্থবিজ্ঞানের পাশাপাশি আপনার হাত জীববিজ্ঞানেও চালু থাকুক এই কামনাই করি। বাংলা টাইপে আরেকটু দক্ষতা এসে গেলেই লেখা শুরু করে দেব।
শুভেচ্ছা।
@অভিজিৎ,
দুদে গোয়েন্দা নয় , এখানে আমি মলিকিউলার বায়োলজীর দৃষ্টিভঙ্গী থেকেই বরং বিষয়টার উপর দৃষ্টিপাত করতে আগ্রহী। মলিকিউলার বায়োলজীর ছাকুনী বড়ই কঠোর যেখানে কিনা প্রতিটি বক্তব্যকেই হাতে নাতে পর্যবেক্ষনগত ভাবে সমর্থনযোগ্য হতে হয়। সোজা কথায় , বেনেফিট অব ডাউট এখানে অচল , অক্কামের ক্ষুরও যেখানে সব সময় কাজ করে না ( ফ্রান্সিস ক্রীকের মতে) । এক রসায়ণ (জৈব রসায়ন তো একটা অঙ্গ !) ছাড়া বিজ্ঞানের অন্যান্য শাখাগুলোর সাথে মলিকিউলার বায়োলজীর এজন্য বড় পার্থক্য আছে।
যাহোক, A mutant Tat protein provides strong protection from HIV-1 infection in human CD4+ T cells গবেষণাপত্র . যা নিয়ে আপনার এই লেখা সেই হারিশ সাহেবের রিসার্চ পেপারটা আমি পড়েছি। যারা ডাউনলোড করতে চান উপরে দেয়া নীল লিংকটা থকে ডাইনলোড করে পড়তে পারেন। এটা পড়ার পরে বলুন , হারিশ সাহেব আসলে কি দাবী করেছেন আর কোন দাবীটি করেননি। মিডিয়ার লোকজন কি বলে তাতে আমার কোন আগ্রহ নেই কেননা বিজ্ঞান মিডিয়ার কথায় চলে না। এবস্ট্রাকটা সকলের সুবিধার্থে নিচে হবুহু তুলে দিলাম :
@অভিজিৎ,
শব্দটি জিঙ্ক ফিঙ্গার নিউক্লিয়েজ, জিঙ্ক ফিঙ্গার নিউক্লিয়াস নয়। শুধরে নিলে খুশী হব ।
@পলাশ,
ধন্যবাদ। তবে উচ্চারণটা ঠিক ‘ক্লিয়েজ‘ নয়, ক্লিয়েস। দেখতে পারেন এখানে কিংবা এখানে।
ঠিক করে দিচ্ছি।
সেটাই ঠিক বলেছেন, বিষয়টা বেশ সংশয়ের, তবে আশাব্যন্জক, কারন প্রচলিত ভাবে যে এর প্রতিষেধক তৈরী করা যাবেনা এমন একটা মতামত এখন বেশ দৃঢ়, যা শুরুর সেই আশাবাদকে হোচট খাইয়েছে বহুবার;
HIV র বিরুদ্ধে প্রতিষেধকের মত প্রয়োজনীয় কাজটি করা দরুহ; কারন রেট্রোভাইরাস হবার সুবাদে এটি CD4 পজিটিভ কোষ, যেমন টি হেলপার সেল এর জীনোমের সাথে তার নিজের জীনোমটাকে ইন্টেগ্রেট করে ফেলে (((আমাদের জীনোমে অসংখ্য এমন প্রাচীন রেট্রোভাইরাসের জীনোমের ধ্বংসাবশেষ রয়ে গেছে যা আমাদের বিবর্তীয় অতীতের চিহ্ন, এন্ডোজেনাস এসব রেট্রোভাইরাল প্রোটিন আমাদের বিবর্তনেও বেশ ভুমিকা রেখেছে, যেমন গবেষনা বলছে এমন একটি রেট্রোভাইরাল প্রোটিনকে কো অপ্ট করেছে বিবর্তন প্লাসেন্টা বা জরায়ুর ফুলের প্রয়োজনীয় প্রোটিন তৈরীতে, যা মায়ের শরীরের ভিতরে ভ্রুনের বেড়ে ওঠা বা ভিভাপ্যারি বিবর্তনে সহায়ক ভুমিকা পালন করেছিল))), আর সেখান থেকে এটিকে সরানো যায় না, আর যেহেতু টি হেলপার কোষগুলো আমাদের রোগ প্রতিরোধ তন্ত্রের ( যেটা অ্যাকোয়ার্ড ) নানা বাহুর কাজগুলো নিয়ন্ত্রন করে, তাই যখনই কোন নতুন ইনফেকশন শরীরে আসে এটিও সেই সক্রিয় হয়ে ওঠা টি হেলপার কোষের মেশিনারী ব্যবহার করে নিজেদের রেপ্লিকেশন এবং আরো নতুন কোষের আক্রমনের কাজটি সেরে নেয়; ধীরে ধীরে পুরো রোগ প্রতিরোধ তন্ত্রটি ভেঙ্গে পড়ে;
এছাড়া যেহেতু RNA ভাইরাস, এর রেপ্লিকেশনের সময় ডিএনএ রেপ্লিকেশনের সাথে যেমন সংশ্লিষ্ট প্রুফ রিডিং একটি মেকানিজম থাকে তেমন কিছু থাকে না, সুতরাং মিউটেশনের হার অনেক বেশী; আর এই হার এর নানা সাব টাইপে নানা রকম, আরেকটি সমস্যা কোন অ্যানিমল মডেল নেই, যেখানে এর এর প্রতিষেধক গবেষনার কাজটি করা যেতে পারে; এখন যে দুই ডজন অ্যান্টি রেট্রোভাইরাল আছে, তারা এর রেপ্লিকেশনকে চেপে রাখে, আর কম্বিনেশন থেরাপী দিয়ে এর দ্রুত মিউটেশনের মাধ্যমে প্রতিরোধ গড়ে তোলাকে চাপিয়ে রাখা হয়;
স্লো প্রগ্রেসররা আসলেই বিস্ময়, আমাদের দেশে অনেকেই আছেন যারা ১৯৯০ এ পজিটিভ হয়েছিলেন, তারা এখনও সুস্থ্য এবং কর্মক্ষম জীবন কাটাচ্ছেন, যদিও খুব নজরে থাকতে হয় তাদের, যেকোন ইনফেকশনই ভয়াবহ হতে পারে; আবারে মাত্র ১ বছরেই মৃত্যু হতে দেখেছি, আমাদের দেশের জন্য যক্ষা আর ডায়রিয়া যার অন্যতম কারন; টিমোথী ব্রাউনের বিষয়টাও খু্ব বিস্ময়কর, তার সমস্ত মজ্জার প্রিকারসর কোষগুলো যখন রেডিয়েশনের মাধ্যমে নষ্ট করে ফেলা হয়, তখনই ভাইরাস জীন বাহী কোষগুলো সব মরে যায়, পরে সেই জায়গায় স্টেম সেলগুলো পুর্ণ করে;
যতদিন প্রতিষেধক না আসছে, প্রতিরোধই ভরসা। আর জেনেরিক অ্যান্টি রেট্রোভাইরাল ঔষধ তৈরীর সুযোগ করে দেয়া যায় আরো বেশী তাহলে দরিদ্র দেশগুলোয় চিকিৎসা ব্যায়ও কমে যেত… কোন কোন প্রতিরোধে চিকিৎসা ছাড়া কোন উপায় নেই, যেমন আক্রান্ত গর্ভবতী মা থেকে তার শিশু…
@কাজী মাহবুব হাসান,
আমি লেখাটা লিখতে গিয়েই ভাবছিলাম আপনার একটা চমৎকার মন্তব্য পেয়ে যাব এবারে। প্রত্যাশা পূর্ণ হওয়ায় সত্যই আনন্দিত।
একদম ঠিক কথা বলেছেন। টিমুথি ব্রাউনের ব্যাপারটা সত্যই বিস্ময়কর। একে তো এইডসের থেকে রোগমুক্তির উদাহরণ হিসেবেই এইটাই সবেধন নীলমণি, একটি মাত্র কুমীরের ছানা। এ ধরনের ব্যাপার আরো রেপ্লিকেট করা না গেলে ব্যাপারটাকে সৌভাগ্য-প্রসূতই ধরে নিতে হবে। একে তো ডাক্তারের দক্ষতায় HLA মার্কার ওয়ালা আর সেই সাথে CCR5-Delta32 মিউটেশন ওয়ালা বিরল ডোনার খুঁজে পাওয়া গেছে, তার মধ্যে ব্যাপারটা ঠিক কিভাবে কাজ করে দেহের সমস্ত HIV ভাইরাসকে সরিয়ে ফেলতে সমর্থ হয়েছিল, সেটা পরিপূর্ণভাবে না বুঝলে ভবিষ্যতে এটা কেবল ‘একটিমাত্র’ উদাহরণ হয়েই থাকবে মনে হয়। সবার দেহেই তো আর লিউকেমিয়া আর এইচআইভি একসাথে বাসা বাঁধবে না। তারপরেও বিজ্ঞানীরা কাজ করে যাচ্ছেন, এইটাই আশাবাদী করতে যথেষ্ট।
আর অফ টপিক হিসেবে বলছি, আপনার সাথে গতবারের আলোচনা থেকে সাজেশন অনুযায়ী ‘কামিং প্লেগ’ আর ‘অরিজিন্স অব এইডস’ দুটোই যোগাড় করেছি। ‘কামিং প্লেগ’ বইটা তো রীতিমত অসাধারণ। কি পরিমাণ কষ্ট করতে হয় এই ধরনের বই লিখতে ভেবে অবাক হই। এখনো পড়তেই আছি … :)) । আপনাকে ধন্যবাদ এগুলোর হদিস দেয়ার জন্য।
আপনার কাছ থেকে এর আগেও মুক্তমনায় লেখা দাবী করেছিলেম, এখনো করছি কিন্তু। একদমই লেখা ছেড়ে দিয়েছেন এখানে।
@অভিজিৎ,
ধন্যবাদ, বইটা আপনার ভালো লেগেছে জেনে ভালো লাগছে, আমারও খুব প্রিয় একটা বই, উনার পরের বইগুলো এখনও পড়া হয়নি, তবে এখন মুলত গ্লোবাল হেলথ নিয়ে লিখছেন; খুবই পরিশ্রমসাধ্য একটি কাজ আসলেই বিস্ময়কর, আর যে সব তথ্য আর ডকুমেন্ট যোগাড় করতে হয়, আর উন্নত বিশ্বে সব কিছু সযত্নে সংগ্রহ করে রাখার মানসিকতাটাও অসাধারন; আর ধারাবাহিক ভাবে এধরনের বই কিন্তু আসছেই, থেমে নেই;
একটা বেশ আগের বই The Virus Hunters: Dispatches from the Frontline ( Joseph McCormic) এর কথা মনে পড়ছে, এটিও চমৎকার একটি বই, মাঠপর্যায়ে তাদের অভিজ্ঞতা নিয়ে; এটি বেশ আগে পড়া, ভালো লাগতে পারে আপনার; আমার লেখা আসলে কেমন যেন, সবার হয়তো ভালো লাগবে না, মুক্তমনায় প্রতিভাবান তরুনরা যেভাবে লেখেন তার সাথেও মেলে না, এছাড়া সময়ের অভাবে কয়েকবার ড্রাফট করাও হয় না সব সময়, শুধু যা লিখি নিজের ব্লগে দিয়ে দেই, যদি কারো মন চায় পড়বেন হঠাৎ করে এসে বা সার্চ ইন্জিন দিয়ে খুজে, সাধারণত আমি যে লেখাগুলো আমার কৈশোর আর প্রথম তারুণ্যে হাতে পাইনি; ফোরামে সবার উপর কোন লেখা চাপিয়ে দিতে বিব্রতবোধ হয় 🙂 ;
আপনার প্রতিটি উদ্যোগের জন্য শুভকামনা;
খবরটা তো ভাল নি:সন্দেহে যদি না প্রতিষেধক কার্যকরী হয়। তবে ভাইরাসগুলিও যদি খাপ খাওয়াতে গিয়ে কয়েক প্রজন্ম পরে তারও শক্তিশালী হয়ে উঠে তাহলে সমস্যা।
(F)
অভিজিৎ দা আপনাকে অনেক ধন্যবাদ। বিষয়টি সবাইকে জানানোর জন্য। (Y)
বিজ্ঞানের উপর মানুষের আস্থা অনেক বেড়েছে। আমি সহ অনেকেই বিশ্বাস করতাম আজ হোক কাল হোক HIV এর প্রতিষেধক আসবেই।
অবশ্যই আশাবাদী খবর। ধন্যবাদ খুঁটিনাটি বুঝিয়ে দেয়ার জন্য।
আমার মনের কথা।
দেখা যাক কদ্দুর কি হয়। বিশ্বাস আছে কোন একদিন আসবে যেদিন এইসডের শত আক্রমণে মানুষকে কাবু করতে না পেরে এইডস নিজেই জান নিয়ে পালাতে বাধ্য হবে।
জ্ঞানের পরিধীকে বৃদ্ধি করার জন্য,তারপর আবার HIV VIRUS ও AIDS এর মত নিশ্চিত জীবন বিধংশী ব্যাধির প্রকৃতি ও অদুর ভবিষ্যতে এর চিকিৎসার আশা জনক বিষয়ের উপর জটিল বিষয়ের সাবলীল ভাষায় সবার জন্য সহজে বোধগম্য করে, উপযুক্ত নিবন্ধ হয়েছে।
ধন্যবাদ এরুপ একটি গুরুত্বপূর্ণ নিবন্ধ দেওয়ার জন্য।
দারুন খবর। এইডস আক্রান্তদের আশার আলোশেষ পর্যন্ত দেখা দিল।
ধন্যবাদ অভিজিৎ দাদা ।নতুন আশার বানী জানতে পারলাম আপনার লেখা পড়ে।
দাদা এবোলা আর প্রিয়ন নিয়ে কিছু লেখার জন্য অনুরোধ রাখছি আমি।এগুলোর উপর বাংলাতে ভাল কোন লেখা পাইনি।আপনি লিখলে, আমার মত আরো অনেকেই অনেক কিছু জানতে পারবে এই দুটি রোগ সম্পর্কে। অনুরোধটা বিবেচনায় রাখবেন।
(Y) (F)
লাল ঝান্ডা সারা জীবনের জন্য তুলে রাখতে হয়, যদি না লাল ঝান্ডাকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে দেবার মত ক্ষমতা থাকে।
এক একটা খবর শুনে-পড়ে-জেনে, উল্লসিত হয়ে উঠি; তারপর, এই নিজের দিকে তাকিয়ে ভাবি, চিকিৎসা বীমা কিনতে গিয়েও পারিনি, কি হবে আবিষ্কারের কাহিনী পড়ে। কারণ সমস্যাটা আমার আগেই থেকেই ছিল, তাই কেনার উপায় আমার নেই। এবার মর, মহান সব আবিষ্কারের খবর শুনেও, যেমন মরেছে আমার পরিচিত কিছু মানুষ; কারণ চিকিৎসা সুযোগ নেবার মত ক্ষমতাই তাদের নেই।
তবুও ভাল, যাদের ক্ষমতা আছে, তারা তো বেঁচে থাকতে পারবে।
আর যাদের ডলার নেই, তারাও তো বেঁচে থাকার জন্য একটা কিছু খুঁজে বেড়াবে, যার নাম হয়তো ‘লাল ঝান্ডা।’
লেখককে অসংখ্য ধন্যবাদ, ভাবনাগুলোকে উস্কে দেবার জন্য।
@স্বপন মাঝি, এখন এত খরচ, পরে নিশ্চয় খরচটা কমে আসবে।